চাঁদের আলোয় একজন নিরাশ যুবক

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ১২/০৬/২০১৬ - ৮:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মেয়েটি পিছন থেকে আস্তে আস্তে হেঁটে কাছে এসে ডাক দিল, ভাইজান!

যুবকটি ফিরে না তাকিয়েই মাথা ঝাঁকাল অল্প, মুখে কিছু বলল না। মেয়েটি বসে পড়ল পাশে। কিছু সময় কেটে গেল চুপচাপ। উপরে মেঘমুক্ত আকাশ, হাল্কা বাতাস দিচ্ছে। চকচকে চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে বাগান। মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে সেই কখন! ভোর হবে কিছু পরেই। সাধারণত এই সময় এরকম বাইরে থাকলে আম্মি মানবতী কবর থেকে উঠে এসে বকে ফিরাতে নিয়ে আসেন, কিন্তু আজ এখনো তার সাড়া নেই। ভালই, ভাবে মেয়েটি। তারপর আচমকা সে জিজ্ঞাস করে,

আচ্ছা ভাইজান, আব্বাকে আপনি সত্যই ভাই বলে ডাকতেন?

বিষণ্ণ যুবকটি ফিক করে হেসে ফেলে বলে, হ্যাঁ তো!

চোখ কপালে তুলে মেয়েটি বলে, ছি ছি। কেন? আব্বাকে কেউ কোনদিন ভাইসাব বলে বুঝি?

যুবকটি খানিক গম্ভীর হয়ে পিছন ফিরে দেখে নিল আম্মি আসছে কিনা। তারপর বলল, ভাইসাব বলিনি তো। শাহ ভাই ডাকতাম।

কেন?

সে কুত্তার বাচ্চা আমার কোন বাবাগিরিটা করেছে কবে? জন্ম দিলেই বাবা হয় বুঝি? মাতালটা সারাদিন আরকেই তো ডুবে থাকত।

আরক আপনি খান নাই কোনদিন বুঝি?

হেসে যুবকটি বলল, ওরে। শাহ ভাইয়ের আরক আর আফিম খাওয়ার সাথে আমার তুলনা! তুই নিজেই তো দেখেছিস। মেহেরুন্নিসা বান্দিটা শাহ ভাইকে মদে চুর রেখে দেশ চালাত দেখিসনি?

মেহেরুন্নিসার কথায় মেয়েটির মুখ একটু শক্ত হয়ে আসল। বলল, ঐ মহিলার কথা ছেড়ে দিন। ছোটলোকের ঘরের ছোটলোক। কিন্তু তবুও ভাইজান, আব্বা বলে কথা।

আব্বার উপরে কে জানিস? আব্বার উপরে দাদা। আমাদের দাদার পছন্দ ছিলাম এই আমি। কথা ছিল দেশ আমিই চালাব। আমার বয়েস যখন মোটে সাত বছর তখন আস্ত মনসব দিয়েছিলেন আমাকে দাদাভাই। আস্ত মনসব। সাত বছর বয়েসে মনসবদার ছিলাম রে আমি। উড়িষ্যা তখন মাত্র দাদার হাতে এসেছে, সেই উড়িষ্যার ধনদৌলত আমাকেই দিয়ে দেন তিনি। মামাকে করে দেন আমার আতালিক।

চুপ করে শোনে মেয়েটি। আতালিক মানে অভিভাবক। হায় তাকে কেউ কোনদিন একটা শক্ত আতালিক বরাদ্দ করলনা, দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে ভাবে সে। আতালিকের সমর্থন থাকলে মেহেরুন্নিসাকে দুটো টাইট দেয়া যেত বটে। যুবকটি বলে চলে,

মামা মান সিংহ তখন উড়িষ্যা আর বাংলা দুই রাজ্যই চালাতেন। কাছেই এখান থেকে বেশী দূর না বাংলা উড়িষ্যা।

আচ্ছা।

হ্যাঁ। দাদা একবার কি বলেছিলেন জানিস? বলেছিলেন, আমি আমার নাতিদের আমার ছেলেদের থেকেও বেশী ভালোবাসি।

তাই বলে ছেলে বেঁচে থাকতে নাতি দেশ চালাতে পারে বুঝি?

আলবৎ পারে, গলা চড়িয়ে বলল যুবকটি, মাতাল অথর্ব বিবেচনাহীন ছেলের বদলে নাতি নিশ্চয়ই দেশ চালাতে পারে। এইরকম ছেলে বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়ার মধ্যে কী তফাৎ?

একটু কুঁকড়ে গেল মেয়েটি। তারপর ভয়ে ভয়ে বলল, যাক আব্বাজান মারা গিয়েছেন, শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন লাহোরে। আর বদনাম নাইবা করলেন।

বদনাম? হিসহিস করে বল যুবকটি, এইগুলা সত্য কথা। শাহ ভাই একটা জোচ্চর ছিল জানিস? সামান্য হাতির খেলাতেও সে জোচ্চুরি করত।

হাতির খেলা?

হ্যাঁ হাতির খেলা। আমার হাতিশালের সবচাইতে পাকা হাতি ছিল অপূর্ব। যেমন শক্তি তেমনই বুদ্ধি। দরবারি হাতির খেলায় শাহ ভাইয়ের লোক যখন দেখে তাদের হাতির সাথে আমার হাতি জিতে যাবে, তখন পিছন থেকে পাথর ছুঁড়ে আমার মাহুত আসমতের মাথা ফাটিয়ে দেয় আর অপূর্বকে জখম করে। ছিহ ছিহ। লজ্জা লাগে আমার এইসব ভাবতে। বদনাম! একশবার বদনাম করব চোরের বাচ্চা চোর। জোচ্চর মাতাল আফিংখোরটা বউয়ের লেহেঙ্গায় মাথা গুঁজে দেশ চালাত ভাবতেও গা ঘিনঘিন করছে আমার।

মাথা নিচু করে চুপ করে রইল মেয়েটি। তার পর আস্তে করে বলল, আব্বা সত্যিই আপনাকে অন্ধ করে দিয়েছিলেন ভাইজান?

জলভরা চোখে যুবকটি মেয়েটির হাত ধরে ফিসফিস করে বলল, লাহোরে আমাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে আমার বন্ধু হুসেন বেগ আর আব্দুর রহিমকে পশুর ছালে ভরে গাধায় চড়িয়ে সারা শহর ঘুরিয়েছিল জানিস? লাহোরের গনগণে গরমে সেই চামড়া শুকিয়ে গায়ে এঁটে মরে যায় হুসেন বেগ। আব্দুর রহিম বেঁচে যায় কোনরকম। এরা আমার দুই হাত ছিল বোন দুই হাত। সারা দুনিয়া যখন আমাকে ছেড়ে পালাচ্ছিল তখন আমার সামনে ঢাল নিয়ে দাঁড়িয়ে যেত এই হুসেন বেগ আর আব্দুর রহিম। তাদেরকে আমার চোখের সামনে অপমান করে মারা হয়। আর তারপর…

গলার কাছে একটা কষ্টের দলা আঁকড়ে আছে টের পায় মেয়েটি। সে ভাইয়ের হাত শক্ত করে ধরে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, ভাইজান!

ঢোঁক গিলে আরেকদিকে তাকায় যুবক। কান্নার মত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তার। বলে,

তারপর হাতির পিঠে শিকলবদ্ধ আমাকে চড়িয়ে লাহোরের বুলন্দ রাস্তায় বের হয় শুয়োরের বাচ্চা জমানা বেগ। দুই পাশে সারি সারি কাঠের খাম্বা। তাতে কাউকে ফাঁস দেওয়া হচ্ছে, কারুকে ফাঁস গলায় পরিয়ে হি হি করে হাসছে আমার দিকে তাকিয়ে সিপাই। কাউকে শুইয়ে দুই পা উঁচু করে ধরে পাছায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে বর্শা। কারা এরা জানিস? কারা? কাদেরকে এরকম যন্ত্রণা দিয়ে মারছে শাহ ভাই? এরা আমাকে সাহায্য করেছিল লাহোরে। বলেছিল, অথর্ব কুলাঙ্গার চাইনা তোমাকে চাই আমাদের শাসক হিসাবে। এরা আমাকে সিপাই দিয়েছিল ঘোড়া দিয়েছিল অর্থ দিয়েছিল ভাত দিয়েছিল। আর সেদিন আমি হেরে যাওয়ায় এদের পুত্র পরিবারের সামনে শূলে চড়ায় শাহ ভাই। হায় বোন, কী কানফাটা চিৎকার আমি দেখেছি। কী কানফাটা চিৎকার! সিপাইদের উপর হুকুম ছিল আমি আসার আগে যেন পুরো মারা না হয়, তাই তারা অপেক্ষা করে ছিল কখন আমার হাতি তাদের খাম্বার পাশ দিয়ে যায়। একজন একজন একজন করে তারা শূলে চড়িয়ে রাখে, ওহ কী অসহ্য যন্ত্রণা তাদের চোখে মুখে। মনে আছে এক আমীর তৈয়বউল্লাহ আমাকে নব্বইটা ঘোড়া দিয়েছিল, সেই তৈয়বউল্লাহ’র ভুঁড়ি বেরিয়ে ঝুলছিল। কী চিৎকার! কী চিৎকার! কী ভয়ানক এক দিন!

সেই দিনই কি আব্বা আপনাকে অন্ধ করে দেয়?

শ্বাস ফেলে মাথা নাড়ায় যুবক। না।

মেয়েটি বুঝতে পারে ভাই এ ব্যাপারে কথা বলতে চায়না। চুপ করে থাকে সে। পিতার হুকুমে পুত্রের চক্ষু উৎপাটনের এই পৈশাচিক গল্পে মুখ না নড়া স্বাভাবিক। দিনের বেলা যখন লোক জড়ো হয় এই খসরুবাগ বাগানে তখন তারা অন্ধ হবার গল্প ফলাও করে বলতে থাকে। কবরের নিচে শুয়ে এক ধরণের অসুস্থ কৌতুহল নিয়ে শোনে মেয়েটি। কেউ কেউ বলে পিতা জাহাঙ্গীরের হুকুমে ছেলের চোখ গরম শলাকা বিঁধিয়ে তুলে নেয়া হয়। কেউ বলে চোখের পাতা সেলাই করে দেবার কথা। অন্য অনেকে বলে চোখে বিষাক্ত তরল ঘষে আঁধি করে দেবার গল্প।

হঠাৎ একটু আঁধার হয়ে আসে বাগান। যুবকটি মাথা তুলে দেখে একখণ্ড মেঘ এসে চাঁদের আলো ঢেকে দিয়েছে। কী একটা বলতে গিয়ে দুই ভাই বোন টের পায়, পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে মা। আস্তে করে দুই ভাইবোন উঠে দাঁড়াল। অপরাধীর স্বরে মেয়েটি বলল, আম্মিজান!

রাজকুমারী মান বাঈ হেসে বললেন, অনেক তো গল্প হল দুজনে। ভোর হয়ে আসবে একটু পরেই সে খেয়াল আছে? চল চল শুতে চল। কেউ চলে আসবে এখনই।

বাধ্য ছেলেমেয়ের মত ভাইবোন নিথার বেগম এবং খসরু মীর্জা মায়ের পিছন পিছন খসরুবাগে যার যার কবরে গিয়ে শুয়ে পড়ল।


মন্তব্য

উৎস এর ছবি

দারুন। দারুন

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ উৎস। ভালো আছেন?

..................................................................
#Banshibir.

উৎস এর ছবি

জঙ্গি যেমন রেখেছে!!

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে সত্যপীর, খুব ভালো লেগেছে।

----মোখলেস হোসেন।

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার!

..................................................................
#Banshibir.

Emran  এর ছবি

অনেক দিন পরে লিখলেন! খসরুরে শেষ পর্যন্ত খুন করসিল খুররম - এই কথা কি ঠিক?

আর আপ্নের ইনকমপ্লিট গল্পগুলি শেষ করেন না ক্যান?

সত্যপীর এর ছবি

এই কথা ঠিক। নিরাশ যুবকের বাপ জাহাঙ্গীর তারে করছে অন্ধ আর ভাই শাজাহান করছে খুন। কঠিন জীবন।

উপরওয়ালা চাহে তো আগের গপ একদিন ফিনিশ হো যায়গা। আপাতত থাকুক।

..................................................................
#Banshibir.

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

এক নিমেষে পড়ে শেষ করলাম, চমতৎকার

সত্যপীর এর ছবি

এট্টুকখানি গল্প এক নিমেষেই শেষ হয়ে যাবার কথা খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

সোহেল ইমাম এর ছবি

অনেক দিন পর আপনার লেখা পেলাম। ভাবতে ইচ্ছে করছে এই লেখাটা আপনার লেখা উপন্যাসের একটা অংশ। এরকম একটা উপন্যাস কিন্তু দারুন হতো ভাই। কবর থেকে উঠে এসে স্মৃতি চারনের মাধ্যমে সময়টাকে আবার জীবনের দীর্ঘশ্বাসটাকেও কয়েকটা আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা, দারুন হতো। যে টুকরোটা দিলেন তাতে ক্ষিধে বেড়ে গেল।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সত্যপীর এর ছবি

নারে ভাই উপন্যাস বা বড়গল্প লেখার সময় এবং ধৈর্য নাই আপাতত। বেছতোতা আমাকে দেয়না ইত্যাদি। দূর ভবিষ্যতে কান্দাহারে মোগল সাফাভিদ পিটাপিটি নিয়া উপন্যাস একটা লিখবআশা রাখি, আপাতত হাত মকশো করে যাই আর কি।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো হয়েছে। লিখুন।

সাইয়িদ রফিকুল হক

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ভালো ছিলো।

একটা ছোট গল্পের ই-বুক হতে পারে আপনার এ ধরনের গল্পগুলো নিয়ে। ক্রমানুসারে যদি চরিত্রগুলোকে রেখে গল্পগুলো ই-বুকে সাজান, আর শেষে একটা নির্ঘন্ট- মানে কার পরে কে, কার পরিচয় কী-যদি থাকে, ইতিহাসের এক একটা সাম্রাজ্যের সহজ পাঠ হয়ে যেতে পারে সেটা।

সত্যপীর এর ছবি

নির্ঘন্টের বুদ্ধিটা জব্বর। এইটা কাজে দিবে ইবইতে আসলেই। ধন্যবাদ।

আকবরের আমল থেকে পাঁচটা মেজর প্রিন্স রেবেলিয়ন হইছিল মোগল বাদশার বিরুদ্ধে। সেলিম বনাম আকবর (১৫৯৯-১৬০৪), খসরু বনাম জাহাঙ্গীর (১৬০৬), খুররম বনাম জাহাঙ্গীর (১৬২২ - ১৬২৭), মুহম্মদ সুলতান বনাম আওরঙ্গজেব (১৬৫৯) এবং আকবর বনাম আওরঙ্গজেব (১৬৮১)। প্রত্যেকটাতেই বিদ্রোহী হারছে। এই হারু পাট্টি বিদ্রোহী রাজপুত্রগণ এবং আওরঙ্গজেব পরবর্তী ফরগটেন মোগলদের নিয়া খাবলা খাবলা গপ লেখার ইচ্ছা আছে। গোটা দশেক গপ দাঁড়ায় গেলে ইবই কইরা নির্ঘন্ট জুড়ে দিবনে বস।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

তবে কাহিনিগুলার মধ্যে একটু বৈচিত্র্য আইনেন পীরবাবা। যেমন এই গল্পটা এমনিতে চমেতকার হইলেও, অন্তর্নিহিত থীমটা বহুচর্চিত হওয়ার কারনে (এমনকি আপনার নিজের লেখাতেও) এর উপর কেমন যেন একটা পুনরাবৃত্তিমূলক একঘেয়েমিভাব ভর করেছে।

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

কেমন যেন একটা পুনরাবৃত্তিমূলক একঘেয়েমিভাব ভর করেছে।

ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট। হাইলাইটেড এলাকায় দুইটা শব্দ, পুনরাবৃত্তি এবং একঘেয়েমি। একে একে আসি। আমি ঘুরায় ফিরায় কয়েকটা টপিকেই লিখি। একটা ঘটনা/সময় টার্গেট করার পরে আমার সামনে কয়েকটা চয়েস থাকে। আমি সেইটা নিয়া একটা হাল্কা মেজাজের প্রবন্ধ নামাতে পারি, কবুতর ফারুকের আদলে প্রথম পুরুষে স্পাই থ্রিলার আদল দিতে পারি, জেনারেল গল্প লিখতে পারি, অথবা এই থীমে (যেখানে মূল চরিত্রের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় শেষে) একটা ছোটগল্প লিখতে পারি। এগুলাই মোটাদাগে আমার অ্যাভিনিউ। জেনারেল গল্প (যেমন ফাঁসুড়ে নামে একটা গল্প লিখেছিলাম) অথবা কবুতর ফারুক থীমের সাথে এই প্লটের সমস্যা হল, এই প্লটের চরিত্রেরা কাল্পনিক নয়। যখন ঐতিহাসিক চরিত্রের সমাহার থাকে, তখন আমি কবুতর ফারুক ব্যবহার করিনা এবং জেনারেল গল্পও এড়িয়ে চলি। তখন আমি লিখি প্রবন্ধ কিম্বা গল্প যেখানে চরিত্রের পরিচয় হবে ধীরে ধীরে।

এইটা আমার চয়েস বলতে পারেন। পুনরাবৃত্তির কৈফিয়ত। এইটে ভবিষ্যতেও হবার কথা। ইংরাজিতে বলে দেয়ার ইজ ওনলি সো মেনি ওয়েজ টু স্কিন এ ক্যাট। ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখার থীম ঘুরায় ফিরায় কয়েকটাই আমার জানা মতে।

তবে,

একঘেয়েমির অভিযোগ গুরুতর।এইটা নিয়া চিন্তার কারণ আছে। একঘেয়েমির কোন কৈফিয়ত নাই আমার কাছে আপাতত। একটু ভেবে দেখি গল্পের থীম একই কিম্বা কাছাকাছি রেখে কিভাবে আরেকটু বৈচিত্র আনা যায়।

সাইডনোটঃ এই গল্পের এন্ডিং টায় তেমন চমক নাই বলে হয়তো একঘেয়ে হয়ে গেছে। একটু ভেবে দেখি বস খাড়ান।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

খসরু মীর্যা এবং তার পরিবার, মানে তার মা, বোন, স্ত্রী, সন্তানেরা আসলে সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত রাজনীতির করুণ শিকার।

খসরুর মা রাজপুত হিন্দু, বাবা চাঘতাই সুন্নী মুসলিম। মায়ের পরিবার অম্বরের কাচওয়াহা রাজপরিবার, বাবার পরিবার তিমুরাইদ মুঘল পরিবার। তার মামা রাজা মান সিংহ তার দাদা আকবরের দরবারের ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। মান সিংহের নিজের সামরিক শক্তিও কম নয়। মাতামহ মহারাজা ভগবন্ত দাস অম্বরের শাসক। খসরুর শ্বশুর মীর্যা আযিয কোকা গুজরাতের গভর্নর, আকবরের দুধভাই এবং আকবরের দরবারের প্রভাবশালী ব্যক্তি।

পিতামহ আকবরের স্নেহধন্য হওয়াটা খসরুর প্রথম ও প্রধান দুর্ভাগ্য। কারণ, আকবরের উত্তরাধিকারের দৌড়ে খসরু তার অপদার্থ বাবা সেলিম ওরফে নূরউদদীন জাহাঙ্গীরের চেয়ে মেধা ও যোগ্যতায় সব সময় এগিয়ে ছিল। ফলে আকবর এক ধাপ ডিঙিয়ে তাকেই মনোনয়ন দিয়ে যেতে চেয়েছিল। এই কথাটা খসরুর সৎ মা মেহরউননিসা ওরফে নূর জাহানেরও জানা ছিল। নূর জাহান মুঘল পরিবারে আসতে বাধ্য হবার পর থেকে তার প্রধান লক্ষ্য ছিল দিল্লীর সিংহাসন। তাই নূর জাহানের ইচ্ছা ছিল শের আফগানের ঔরসজাত তার কন্যা লাড্‌লী বেগমের সাথে খসরুর বিয়ে দেয়া। খসরু এতে বেঁকে বসায় সে নূর জাহানের বিরাগভাজন হয় — এটা তার দ্বিতীয় দুর্ভাগ্য।

আকবরের এক স্ত্রী রুকাইয়্যা সুলতান বেগম হচ্ছে আকবরের কাকা হিন্দাল মীর্যার কন্যা। আকবরের আরেক স্ত্রী (বৈরাম খাঁর প্রাক্তন স্ত্রী) সালিমা সুলতান বেগম হচ্ছে আকবরের পিসী গুলরাঙ বেগমের কন্যা। অর্থাৎ এই দুই বেগম তিমুরাইদ মুঘল বংশের রক্তবহনকারী। আকবরের উত্তরাধিকার নির্ণয়ের হিসাবনিকাশে খসরুর নাম উঠে আসায় এই দুই মুঘল রাজকন্যা তিমুরাইদ ঐতিহ্য অনুযায়ী ‘পিতা জীবিত থাকতে পৌত্রের অভিষেক নয়’ নীতির পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। ফলে বিদ্যমান মুঘল বংশধরদের অধিকাংশ জাহাঙ্গীরের পক্ষে চলে যায়। খসরুর মা রাজকুমারী মান বাঈয়ের আফিম খেয়ে আত্মহত্যা করার পেছনে তার স্বামী ও পুত্রের ক্ষমতার দড়ি টানাটানির পাশাপাশি শাশুড়ীকুলের অব্যাহত চাপও কার্যকর ছিল।

আকবরের দরবারে রাজপুত ও স্থানীয়দের প্রভাবের কথা সর্বজনবিদিত। এখন আকবরের পরে যদি আধা-রাজপুত খসরু ক্ষমতায় আসে তাহলে রাজপুতরা আরও ক্ষমতাবান হবে ফলে প্রশাসনে পারসীদের এবং সামরিকবাহিনীতে আফগান ও মধ্য-এশীয়দের প্রভাব আরও হ্রাস পাবে। ফলে পারসী মীর্যা গিয়াস বেগ ওরফে ইতিমাতুদ্দৌলার পুত্র আসফ খান ও কন্যা নূর জাহান ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই দুই গ্রুপকে খসরুর বিপক্ষে টানার প্রয়াস পায়।

খসরু আকবরের মতোই সুন্নী ওলামাদের প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল। ফলে ক্ষমতাসংলগ্ন সুন্নী ওলামা গ্রুপ খসরুর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায়।

খসরু প্রথমবার পাঁচ মাস কারারুদ্ধ থাকার সময় সম্ভবত লম্বা পরিকল্পনা করত্র পারেনি। ফলে সে নূন্যতম শক্তিসঞ্চয় করার আগেই মাত্র ১১ দিনে নতুন গভর্নর দিলওয়ার খান পূর্ণ শক্তিতে লাহোরে পৌঁছে যায় এবং খসরুকে কাবুল-কান্দাহার থেকে সম্ভাব্য রিইনফোর্স করার পথ বন্ধ করে দেয়। খসরু যখন বিদ্রোহ করে তখন ভরা বর্ষাকাল। বর্ষায় উত্তর ভারতে খুব বেশি বৃষ্টি না হলেও পাঞ্জাবে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। ইরাবতী (রাভী) নদীর উত্তর তীরে যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন প্রবল বর্ষণে যুদ্ধক্ষেত্রে কাদাময় হয়ে যায়। একেতো খসরুর পক্ষ সংখ্যায় কম তার ওপর তারা কাদায় যুদ্ধ করতে অসমর্থ। অন্য দিকে দিলওয়ারের বাহিনী বড়, আরও পঞ্চাশ হাজার সৈন্য আগ্রা থেকে রওয়ানা দিয়েছে। তাছাড়া দিলওয়ারের বাহিনীতে স্থানীয় যোদ্ধারা আছে যারা কাদায় যুদ্ধ করতে সক্ষম। ফলে যুদ্ধে খসরুর হারাটা সময়ের ব্যাপার হয়ে যায় মাত্র।

খসরুর সহযোগীদের নির্মম অত্যাচার করে হত্যা করা ও খসরুকে সেটা দেখতে বাধ্য করাটা নতুন কিছু নয় আধা-মঙ্গোল চাঘতাই মুঘলদের রক্তের মধ্যে নৃশংস নির্মমতা বিদ্যমান। এই ধরনের নির্মমতা তারা আগেও করেছে, পরেও করেছে।

খসরু অন্ধ (অথবা প্রায় অন্ধ) ও নযরবন্দী হয়ে যাবার পরেও প্রাসাদের ভেতরে বাইরে তার প্রভাববলয় আছে এই সত্যটা সবাই জানতো। ফলে সিংহাসনের পরবর্তী দাবীদার খুর্‌রম ওরফে শাহ জাহান তাকে নিজের কাস্টডিতে এনে তার দাস রাজা বাহাদুরকে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করবে এটা স্বাভাবিক। শাহ জাহান তো নিজের সন্তানদের ছাড়া তার কোন ভাই বা ভাইয়ের সন্তানদের কাউকে রেহাই দেয়নি। এক শাহ জাহানের হাতে মুঘল বংশ মোটামুটি নির্বংশ হয়ে গেছে, বাকিটা তার পুত্র আওরঙ্গযেব সম্পন্ন করেছে।

সত্যপীর এর ছবি

অর্থাৎ এই দুই বেগম তিমুরাইদ মুঘল বংশের রক্তবহনকারী। আকবরের উত্তরাধিকার নির্ণয়ের হিসাবনিকাশে খসরুর নাম উঠে আসায় এই দুই মুঘল রাজকন্যা তিমুরাইদ ঐতিহ্য অনুযায়ী ‘পিতা জীবিত থাকতে পৌত্রের অভিষেক নয়’ নীতির পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়।

এখন খসরু এই দুই বেগমের একজনের পুত্র হইলে এনারা ছেলে-জীবিত-থাকতে-নাতি র কাছে গদি যাওয়া কি সাপোট করতেন? মাতাল চাতাল যাই হোক বাপ বইলা কথা। মেওয়াড়ের কোন এক রাজা নাসিরুদ্দিন তার বাপেরে হত্যা করে তখতে বসে, সেই নিয়া নাকি দেশে ঢি ঢি পইড়া গেছিল।

খসরু অন্ধ (অথবা প্রায় অন্ধ) ও নযরবন্দী হয়ে যাবার পরেও প্রাসাদের ভেতরে বাইরে তার প্রভাববলয় আছে এই সত্যটা সবাই জানতো।

কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু বলেন দেখি নূরজাহান এতোই ডেস্পারেট ছিল লাডলি বেগমের জন্য যে একটা কানা রাজকুমার ধইরা নিয়া আসে? খুররম নয় হিসাবে নাই, পারভেজ কী দুষ করল?

শাহ জাহান তো নিজের সন্তানদের ছাড়া তার কোন ভাই বা ভাইয়ের সন্তানদের কাউকে রেহাই দেয়নি।

একবারে লিটারেলি চাচা আপন প্রাণ বাঁচা হো হো হো

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

রুকাইয়্যা সুলতান বেগমের দুই পুত্র হাসান মীর্যা আর হুসাইন মীর্যা দু’জনেই অল্প বয়সে প্রয়াত, তাছাড়া কোন এক অজ্ঞাত কারণে খুর্‌রমের লালন পালনের ভার তার ওপর দেয়া হয়েছিল। খুর্‌রমের প্রতি বিশেষ স্নেহবশত রুকাইয়্যা সুলতান বেগম চেয়েছিল ভবিষ্যতে সে-ই সম্রাট হোক। খুর্‌রমের পথ খোলা রাখার জন্য তার অপদার্থ বাবার সিংহাসনে বসাটা দরকার ছিল। যেন খুর্‌রম লায়েক হওয়া মাত্র তার বাপকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারে। এতে তিমুরাইদ ঐতিহ্য বজায় থাকে আবার খুর্‌রমের ক্ষমতালাভের পথও সুগম হয়।

সালিমা সুলতান বেগম অপুত্রক ছিল। তার পালিত পুত্র (আকবরের সন্তান) সুলতান মুরাদ মীর্যা লিভার পঁচিয়ে অল্প বয়সে মারা না গেলে সালিমা তার পক্ষেই দাঁড়াতো। তাতে মুঘল ইতিহাস একটু অন্য রকম বাঁক খেতে পারতো। কারণ, সম্ভবত মুরাদ মীর্যা হচ্ছে প্রথম ভারতীয় রাজপুত্র যে ইউরোপীয় ও চৈনিক শিক্ষাগুরুর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেছে। তার শিক্ষকরা হচ্ছে আবুল ফযল, তৃতীয় দালাই লামা সোনম গ্যায়াৎসু, জেসুইট পাদ্রী আন্তোনিও দে মন্তসেরাত ও ফ্রান্সিসকো আক্যুয়াবিবা। মুরাদ মীর্যার মৃত্যুর পর সালিমা তার সৎ পুত্র সেলিমের পক্ষাবলম্বন করে। ঐ সময়ে আকবর ভার্সাস সেলিম ঠোকাঠুকিতে সে সেলিমকে বাঁচায়। ফলে সালিমার পক্ষে খসরুর পক্ষাবলম্বন করা সম্ভব ছিল না।

প্রশ্ন হচ্ছে খসরু যদি রুকাইয়্যা বা সালিমার স্বপুত্রজাত পৌত্র হতো তাহলে কী হতো? তাহলে কি তারা ঐতিহ্য ভাঙতে রাজী হতো? সম্ভবত না। সেক্ষেত্রে তারা প্রথমে নিজ পুত্রের ক্ষমতা লাভ নিশ্চিত করতো।

পারভিয মীর্যা মায়ের দিক দিয়ে পীর বংশের হলেও তার আচার-আচরণ ধার্মিকসুলভ ছিল না। অল্প বয়স থেকে মাদকাসক্তি, শিক্ষায় অনাগ্রহ, অসংযত আচরণ তাকে ক্ষমতার ইঁদুর দৌড়ে পিছিয়ে দিয়েছিল। নূর জাহানের মতো ধুরন্ধর পলিটিশিয়ান এমন খোঁড়া ঘোড়ার ওপর বাজী ধরার কথা না।

সত্যপীর এর ছবি

কারণ, সম্ভবত মুরাদ মীর্যা হচ্ছে প্রথম ভারতীয় রাজপুত্র যে ইউরোপীয় ও চৈনিক শিক্ষাগুরুর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেছে। তার শিক্ষকরা হচ্ছে আবুল ফযল, তৃতীয় দালাই লামা সোনম গ্যায়াৎসু, জেসুইট পাদ্রী আন্তোনিও দে মন্তসেরাত ও ফ্রান্সিসকো আক্যুয়াবিবা।

এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। বইপত্র থাকলে তর্জনী নির্দেশ করেন।

..................................................................
#Banshibir.

Dusam masud.rahman@gmail.com এর ছবি

লেখা ভাল হুইছে পিরসাব!! উত্তম জাঝা!
কয়েক প্যারা পড়ে বুঝতে পারছিলাম - মে বি খসরুর কাহিনি। কিন্তু শেষ প্যারা পড়ে চোখে পানি এসে গেল। ইয়ে, মানে...

আপনার অসমাপ্ত গল্প খোরাসান এর নেক্সট পর্ব কবে আসবে? আপনার পাতা বুকমার্ক করা আছে। সপ্তাহে একবার দেখি। যদি ইক্টু লেখেন।।।।।।।।।। লইজ্জা লাগে

সত্যপীর এর ছবি

আপনার পাতা বুকমার্ক করা আছে। সপ্তাহে একবার দেখি।

অ্যাঁ

খাইছে সত্যি নাকি?! আমার পাতা জেনারেলি সপ্তায় একবার দেখেন না খোরাসানের আপডেট সপ্তায় একবার দেখেন? ভয়ানক কথা শুনাইলেন।

পুরষ্কার হিসাবে পরের গল্পে দুষ্টচরিত্রে আপনের নাম মাসুদ ঢুকায় দিব ভাবতেছি চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

মাসুদ এর ছবি

লইজ্জা লাগে (এবার কিন্তু লজ্জা পাইতাসি কইলাম)!

গত বছর আপ্নার ব্লগপাতা আবিস্কারের পর গোগ্রাসে পড়ে গেছি, একাধিক বার। প্রথমে সবগুলা লেখা পরসি, এর পর পরসি কমেন্টসে আপ্নার রিপ্লাই! দেঁতো হাসি এখনো পড়ি।

আমার পাতা সত্তই ফি-হপ্তায় একবার দেখি। অফিসে লুকায়া পড়ি , ব্যাংকের কেরানিগিরির ফাকে। বাসায় দেখি রাতে, বাচ্চা ঘুমানোর পর। আপ্নার লেখা পড়ে অর্ণবের এ্যালবাম কিনলাম। এখন সেটা গাড়িতে বাজে।

আচ্ছা, সুবিধাবাদি 'সৌদি রাজ পরিবার' নিয়া একটা লেখা লেখেন না ক্যান? পরিবারের অনেক অজানা ইতিহাস জানা যাবে। কিছু মানুষের চোখও খুলে যাবে।

সত্যপীর এর ছবি

আমার লেখা পইড়া অর্ণবের অ্যালবাম কিনছেন? সাব্বাস! একটা ভালো কাজ হইল লেইখা। হে অর্ণব লিখে রেখো একফোঁটা ইত্যাদি।

সৌদি রাজপরিবার নিয়া আমার কোন মাথাব্যাথা নাই। মরুক হালারা। দূর আরবের ইতিহাস ডিটেল জানার বদলে বরং আমার গায়ে যাদের রক্ত তারা জীবিত থাকতে কি দেইখা গেছে আর কি কইরা গেছে, কী তারা খাইত আর কী গায়ে পিনতো সেইটা নিয়া আমার মূল কৌতূহল।

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

নিরাশ যুবকের জন্য বুকটা মোচর দিয়ে ওঠে। কিন্তু এটাও তো ঠিক, এই যুবকটিই যদি কোনমতে একবার গদিতে বসতে পারতো, তাহলে বাপ ভাই কাউকেই রেহাই দিত না। চোখ তো চোখ, কলিজাটাও টান দিয়া বাইর কইরা ফালাইত। তুর্কী মোগল রাজবংশে বড়ই কঠিন জীবন!

সত্যপীর এর ছবি

একশভাগ সত্য কথা। বাপ তার চউখ না নিলে সে বাপের চউখ নিত। ভাই তারে খুন না করলে সে ভাইয়ের জান নিত। নাথিং পারছোনাল ওনলি বিজিনেছ।

..................................................................
#Banshibir.

তানিম এহসান এর ছবি

হাসি

তিথীডোর এর ছবি

চমৎকার! চলুক
'বাদশাহ নামদার' পড়লাম ক'দিন আগে, কী অখাদ্য! বই না হোক, অন্তত ই-বুক হোক একটা, কী বলেন? হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সত্যপীর এর ছবি

কেন নয়?

..................................................................
#Banshibir.

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ঐ আমলে রাজারা বড়ই সাংঘাতিক ছিল। শাস্তিগুলা সেরকম নির্মম। আমরা অমুক বাদশাহ এই করছে, তমুক বাদশাহ ঐ করছেন বলে শুনি, কিন্তু এরা যে কতটা নৃশংস ছিল-সেটা খুব একটা জানা হয় না।

শুভেচ্ছা হাসি

সত্যপীর এর ছবি

রাজারা সব আমলেই সাংঘাতিক!

..................................................................
#Banshibir.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পয়লা বুঝতেই পারিনি এইটা মুঘলী গপ্প। কারণ চান্দের আলো- নিরাশা-যুবক এইশব্দগুলা কেন জানি মনে হয় মুঘলিয়ানার লগে যায় না...

০২
একটা লাইন মনে হয় একটু ঘইষা দেয়া লাগবে। মান সিংহ তো জাহাঙ্গীরের মামা আছিল; সম্পর্কে খসরুর নানা স্থানীয় হবে...

সত্যপীর এর ছবি

মান সিং জাহাঙ্গীরের মামা না তো। মান সিং আর রাজকুমারী মান বাঈ ছিল ভাই বোন। মান বাঈ হইল জাহাঙ্গীরের বউ, সে হিসাবে রাজা মান সিং খসরুর আপন মামা।

..................................................................
#Banshibir.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। আপনে ঠিকাছেন। আমি গুলায়া ফেলছিলাম

সত্যপীর এর ছবি

গণহারে ফ্যামিলির ভিতরে ভিতরে শাদী কইরা নাশ করলে কিডা মামা কিডা মামাত ভাই গুলায় যাওয়ারই কথা।

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

হ এইবার ঘুম দেই।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক সুন্দর হইছে
মাহবুবুর রহমান নোমানী

সত্যপীর এর ছবি

সাব্বাস!

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

অভ্যাসবশত ইটা রাখতে একটানে নিচে আইসা দেখি চলবে-টলবে নাই!
কি আর করুম উপরে উইঠা আবার পড়তে পড়তে নামলাম। উত্তম জাঝা!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।