সিলেটী লস্কর - ২

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ০৩/০৯/২০১২ - ১:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(প্রথম পর্বের পর)

ষাটের দশকে মুক্তবাজার অর্থনীতি বিশ্বময় ছড়িয়ে যাবার ফলে ব্রিটেনে ভারতীয় খাবার জনপ্রিয় হবার পথ আরো সুগম হয়। একদিকে দেখা গেল এশিয়াতে নতুন সৃষ্ট কিছু দেশে প্রচুর পরিমাণ গরীব মানুষের যেকোন উপায়ে টাকা রোজগারের ধান্দা... তারা কাজের পরিবেশ, কঘন্টা খাটতে হবে, গতর খাটাতে হবে কিনা ইত্যাদি উপেক্ষা করে টাকা কামাতেই উৎসুক ছিল। এর সাথে যুক্ত হল ব্রিটেনের শিল্পখাতের সম্প্রসারন, তাদের প্রচুর লেবার দরকার ছিল। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ এর মাঝে ব্রিটেনের ইমিগ্রেশন আইনে পরিবর্তন আনা হয়। বাংলাদেশীরা এর ফলে ব্রিটিশ পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করতে পারল, আর ইউকে তে প্রতিষ্ঠিত লোকেদের তাদের পরিবারকে উড়িয়ে আনার অনুমতি মিলল।

কাজ ছিল চতুর্দিকেই। পাঞ্জাবের পাকিস্তানিরা ম্যানচেস্টার আর ব্র্যাডফোর্ডের উত্তরের শহরগুলোয় থানা গাড়ল কাপড়ের কলগুলোয় রাতের শিফটে কাজ নেবার জন্য। রাতে নারীশ্রমিকদের কাজ করা নিষিদ্ধ ছিল, আর সাদারা কাপড়ের কলে কাজ করাকে মেয়েদের কাজ হিসেবেই দেখত। ফলে রাতের শিফটে কাজ করার লোক তেমন ছিল না। ঐ একই কারণে খাবার প্রক্রিয়াকরণ, প্লাস্টিক, রাবার ইত্যাদি পশ্চিম লন্ডনের কারখানাগুলিতেও শ্রমিকে টান পড়েছিল। কারখানাগুলি ভারতে পেপারে বড় করে বিজ্ঞাপন দিল কাজের জন্য, আর ষাটের দশকের মধ্যভাগ আসতে আসতে দেখা গেল সাউথহলের ১২ শতাংশ লোক উপমহাদেশ থেকে আগত। টাওয়ার হ্যামলেটে বাংলাদেশীর দল ঝুটা কাপড়ের কলে কাজ নিল, এই কাজ সাদারা খুবই ঘেন্নার চোখে দেখত। বার্মিংহ্যামের ধাতব ও গাড়ির কারখানাগুলোতেও কাজ নিল উপমহাদেশের শ্রমিক। এভাবে দ্রুত বর্ধমান বাংলাদেশী সিলেটীর দলে যুক্ত হল পাঞ্জাবি শিখ আর মুসলমান, গুজরাটি এবং পাকিস্তানি। ৭০ এর দশকে যুক্ত হল আফ্রিকান কেনিয়া আর উগান্ডা হতে আগত ভারতীয় বংশোদ্ভুত মানুষ।

এই ইমিগ্র্যান্টের দলের আগমনে ইয়ুস্টন ষ্টেশনের কাছে ড্রামন্ড স্ট্রিটে অবস্থিত লিটিল ইন্ডিয়া জমে উঠল। এইখানে এশিয়ান মুদির দোকানে পাওয়া যেতে থাকল তিতা করলা আর তাজা ইলিশ মাছ, বাংলাদেশীদের জন্য। দেশে উৎপন্ন খাবার খাওয়া বাংলাদেশীদের জন্য খুবই গুরুত্বের ব্যাপার, এতে করে তারা দেশের বাইরে থেকেও দেশের আবহটা ধরে রাখতে চেষ্টা করে। আম্বালা সুইটস সাপ্লাই করতে থাকে দুধ থেকে তৈরি বরফি, বুট বাদাম আর চিনি দিয়ে তৈরি লাড্ডু আর স্বাদু গোলাপজলের সিরাপে ভেজানো মুখে-দিলেই-গলে-যায় টাইপ দুগ্ধজাত পুর দিয়ে তৈরি গোলাপজাম। এই ড্রামন্ড স্ট্রিটেই পাঠক বংশের লোক (বর্তমানে তাদের পণ্য পাটাক’স নামে সুপরিচিত) তাদের প্রথম ব্রিটিশ দোকান খোলে যেখানে সবজি, মশলা, সামোসা আর বয়ামভর্তি রান্নার পেস্ট আর আচার পাওয়া যেত। এই গুজরাতি পাঠক পরিবার কেনিয়া থেকে আগত, সেখানে তারা মিষ্টির দোকান চালাত। ফরমাইকা টপের টেবিল আর স্টেনলেস স্টিলের কাপ প্লেট বাটিঘটিসজ্জিত রেস্টুরেন্ট “দি দিওয়ানি ভেলপুরি হাউস” বম্বের অফিসক্যান্টিনের আবহ নিয়ে আসে লন্ডনে, ব্রিটেনে নিরামিষ খাবার জনপ্রিয় করে তোলার জন্য এরা পুরষ্কার অবধি পেয়েছে।

ভারতীয় খাবারের জমজমাট ব্যবসার পেছনে আরেকটা কারণ ছিল স্বাদের পরিবর্তন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ হতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবধি ইংরেজদের প্লেটে নিয়মিত ছিল মাংস, সাথে আলু গাজর বা বাঁধাকপি সিদ্ধ। ১৮৯০ সালে বেহরামজি মালাবারি লন্ডন বেড়াতে এসে লক্ষ্য করেন, “খাবারের ব্যাপারে এদের যেমন বাজে উদ্ভাবনশক্তি তেমনই অকেজো এদের স্বাদেন্দ্রীয়। ইংরেজের ডিনার মানেই একবারে সাদামাটা ব্যাপার। এদের পাচকেরা খাবারের স্বাদবর্ধনের কিছু জানেনা, লবণ মশলা কিছুই ঠিকঠাক দিতে শেখেনি, খাবারের বৈচিত্র্য নিয়ে এদের জ্ঞান অল্প আর সবই এদের কেমন অগোছালো।” মোটাদাগে ইংরেজ খানা মানেই ছিল মাংস দেওয়া স্যুপ কিংবা মাংস কিংবা দুইটি “সবজি”। অলিভ ওয়েল ছিল ওষুধ, এ যে রান্নাতেও দেওয়া যায় তা ছিল তাদের ধারণার বাইরে।

ভিক্টোরিয়ান ব্রিটেনে একটা ধারণার চল ছিল যে কারি হল “অত্যন্ত মশলাদার ও সম্মানিত ইংরেজ পাকস্থলীর পক্ষে নিম্নমানের”। কারির গন্ধ নিয়েও তাদের অভিযোগ ছিল, পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে তাদের ভারতীয় খাবার বানানো মানে ছিল স্ট্যু এর মধ্যে দুই ছিটা কারি পাউডার মেশানো। এই কারি হয় সাদা ভাতের মাঝে গর্ত করে ঢেলে পরিবেশন করা হত অথবা চামচে করে ভাতের উপর ঢেলে দেয়া হত, তবে বেশীরভাগ ঘরে কারি ভাতের বদলে আলু আর সবজির সাথে খাওয়া হত। ভাত যে পুডিং বানানো ছাড়া অন্য খাবারেও ব্যবহৃত হতে পারে তা অনেক ইংরেজ গৃহিণীরই ধারণার বাইরে ছিল। আলুভাজা (ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ) এর সাথেও কারি খেত অনেক ইংরেজ, এর কারণ সিলেটীদের দোকানে যে ফিশ অ্যান্ড চিপস দেয়া হত সেখানে তারা ভাতের সাথে খাওয়ার বদলে কারিকে সস মনে করে তাতে ডুবিয়ে ফ্রাইজ খাওয়া শিখেছিল।

ষাট আর সত্তুর এর দশকে ইংরেজ কারির সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপারটি ছিল এতে চাটনি আর ফলের ব্যবহার। রম্যব্যক্তিত্ব জেরেমি হার্ডি কৌতুক করে বলেছিলেন সাদা মায়েরা (হোয়াইট মাদার্স) কারিতে আনারস, আপেলের পাশাপাশি জ্যামজেলিও দিয়ে থাকেন। কথা পুরা মিথ্যা নয়। ১৯১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান হাউসহোল্ড গাইড বইতে লেখা ছিল কারিতে রুবার্ব আর কলার পাশাপাশি “এক চামচ জ্যাম দেওয়া যেতে পারে আপেল না থাকলে”। খুবানি (অ্যাপ্রিকট) এর জ্যামও কারিতে চলতো দেদারসে, ১৯৫৩ সালে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অভিষেক অনুষ্ঠানে রাণীর পাতে খুবানির জ্যাম দিয়ে তৈরি মুর্গির কারি দেওয়া হয়। ঠান্ডা মুর্গির মাংস, মেয়োনেজ, কারি পাউডার, খুবানির জ্যাম কি আমের চাটনি, আর মাঝেমধ্যে ক্রীম, মিহি করে কাটা গাজর আর আনারস দিয়ে প্রস্তুত কারি ছিল টিপিক্যাল অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ডিশ।

১৯৭০ সালের একটি কারির রেসিপিঃ
১ পাউন্ড মাংসের ফালি লম্বা করে কাটা (কিমা হলেও চলবে)
২ টি সেলেরি, ফালি করে কাটা
১ টেবিলচামচ করে সয়া সস, সাদা ভিনেগার, তেল, বাদামি চিনি
১ কাপ পানি
২ টি রসুনের কোয়া (আস্ত)
২ চাচামচ কারি পাউডার
১/৪ চাচামচ করে আদাবাটা, দারচিনি আর হার্বস
৩ চাচামচ ফলের চাটনি
১/২ কাপ আঙুর (বিচিহীন)
৩/৪ কাপ টমেটো জুস
লবণ, গোলমরিচ
১ বা ২ ফালি আনারস (তাজা অথবা ক্যানড)
বড় সসপ্যানে তেল গরম করুন। সেলেরি আর মাংস ভাজুন যতক্ষণ না মাংস বাদামী রঙ হয়। কারি পাউডার যোগ করে নেড়েচেড়ে দিন ও ৩ মিনিট রাঁধুন। মশলা, টমেটো জুস, চাটনি, সয়া সস, ভিনেগার আর চিনি যোগ করে দিন এবার। ভালো মত নেড়েচেড়ে বাকিগুলোও ঢেলে দিন পাত্রে। ঢেকে দমে রাখুন মিনিট পঞ্চাশ। গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন। ৪ থেকে ৬ জনের খাবার হবে।

এই সব ট্র্যাডিশনের ব্যাপক পরিবর্তন এল ষাট আর সত্তুর দশকে। সেক্স, ড্রাগস আর রক অ্যান্ড রোলের সাথে মানুষের খাবারেও এল বিপ্লব। ব্রিটেনের মানুষ ভ্রমণে বাজেট বাড়িয়ে দিল, আর বিভিন্ন দেশ ঘুরে তাদের তৈরি হল বিভিন্ন দেশের খাবারের ব্যাপারে উৎসাহ। রেস্টুরেন্ট ব্যবসাতেও এল নতুনত্বের ছোঁয়া, লিটিল ইতালির রেস্টুরেন্টগুলো ঢেলে সাজালো তাদের অন্দর। হাল্কা আলোর ব্যবস্থা হল, কড়া লাল টেবলক্লথের উপর খালি কিয়ান্তির বোতলকে করা হল মোমদান। ইতালিয়ানরা অল্প অল্প করে তাদের স্প্যাগেত্তিতে অলিভ অয়েল আর রসুন দেয়া শুরু করলো।

সিলেটীরা যুগের হাওয়া বুঝে নতুন নতুন রেস্টুরেন্ট খুলতে শুরু করল আর খাবারের গুণগত মানের দিকে নজর দিল। নবাব আলি তার কার্ডিফের ক্যালকাটা রেস্টুরেন্ট তার এক বন্ধুকে দিয়েছিলেন, সে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। তখন প্লেইমিথ এ বেঙ্গল নামে এক নতুন রেস্টুরেন্ট খোলেন নবাব। রাসেল স্কয়ারে “দ্যা করাচি” রেস্টুরেন্ট খোলেন হাজি সিরাজুল ইসলাম, পরে মার্চমন্ট স্ট্রিটে আরেকটি বড় শাখা খোলা হয় যেন কাস্টমারকে লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে না হয়। পরে এইটে তিনি বিক্রি করে গ্লেন্ডাওয়ার প্লেস আর চেলসিতে কিনে নেন “মোতি মহল”। ১৯৭০ সালের দিকে ব্রিটেনে ভারতীয় রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ছিল প্রায় দুহাজার।

ব্রিটেনে বসবাসরত উপমহাদেশের অধিকাংশ লোক রেস্টুরেন্টের ভারতীয় খাবারকে ভারতীয়, পাকিস্তানি বা বাংলাদেশী কোনটাই মনে করত না। ষাট শতকের প্রথমার্ধে মার্গারেট ওর ডিয়াস তার এক ভারতীয় বন্ধুকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান। সেই বন্ধু খেয়ে বলেন “ভারতে আমরা এগুলি কোনটাই খাই না”। তিনি পরের কয়দিন ওয়েস্টবোর্ন গ্রোভের ভারতিয় রেস্টুরেন্ট গুলোয় খেয়ে ধরার চেষ্টা করেন ব্যাপারটা। তিনি দেখেন পাচকেরা ছিল অনভিজ্ঞ আর তারা খালি শর্টকাট খুঁজত। এছাড়া ইংরেজদের উন্নাসিকতাও এরূপ রান্নার কারণ বটে। রসুন লোকে সহ্যই করতে পারত না, এমনকি ধনেপাতাও তারা পছন্দ করত না। পাচকেরা ঝালহীন ক্রিমি কারি রাঁধত যেখানে মরিচ গোলমরিচ ছিলনা বললেই হয়।

হাজি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “অবশ্যই এই খাবার সিলেটের মত না, সেখানে আমরা ব্যবহার করি সব তাজা জিনিস। এইটে বিরাট ব্যাপার, তাজা মাছ মাংস সব্জির স্বাদই আলাদা।” তিনি নিজের রেস্টুরেন্টের খাবার কখনোই খেতেন না, বাসায় নিজে পাক করে খেতেন। কিন্তু লন্ডনে রেস্টুরেন্টে খেয়ে বড় হওয়া প্রজন্ম রেস্টুরেন্টের খাবারকেই ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় খাবার মনে করত, হাজি সিরাজুল ইসলামের ছেলে ঘরে পাক হওয়া খাবারের চেয়ে রেস্টুরেন্টের খাবারই পছন্দ করত বেশি। পুরো এক প্রজন্ম খদ্দের আর এমনকি দ্বিতীয় প্রজন্মের উপমহাদেশের লোকের কাছে ভিন্দালু আর ধানসাক, তড়কা ডাল আর বম্বে পটেটোই আসল ভারতীয় খাবার।

শমশের ওয়াদুদ ষাটের দশকের শেষ দিকে এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে কানেটিকাটের ফেয়ারফিল্ডে যান। উনার হোস্ট ফ্যামিলি তাকে নিউ ইয়র্কের এক ভারতীয় রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান যেন তার আপন আপন লাগে। সেটি ছিল কাশ্মীর নামে এক রেস্টুরেন্ট, বাংলাদেশী মালিকানায় চালিত। ঐখানে খেয়ে শমশেরের প্রায় বমি চলে আসে, এতোই জঘন্য খাবার। ভারতীয় কোন খাবারের সাথেই এর মিল খুঁজে পাননি তিনি। বছরখানেক পরে আমেরিকায় আবার এসে টেকনিক্যাল পড়াশুনার লাইনে না গিয়ে তিনি স্থির করে রেস্টুরেন্ট খুলবেন নিউ ইয়র্কে। লেক্সিংটন অ্যাভিনিউ আর এইটি সেকেন্ড স্ট্রিটের উপর তার সেই রেস্টুরেন্ট “নির্ভানা” এর এমনই সুনাম হয় যে সেখানে খেতে এসেছিলেন রবি শংকর আর বিটলস এর মত মহাতারকা।

(চলবে)

লিজি কলিংহ্যাম রচিত “Curry: A Tale of Cooks and Conquerors” এর কিছু অংশের ছায়ানুবাদ।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

যথারীতি উত্তম/ জাঝা লেখা ! আপনার সিরিজটার ক্ষতিকর দিক হচ্ছে পড়ার পরই ফ্রিজে খাবার দাবারের তল্লাশি চালাতে হয়।

-এক জোনাকি

সত্যপীর এর ছবি

আসল কথা হৈল, আমার ফ্রিজ গড়ের মাঠ দেখেই খানাপিনা নিয়ে লিখতেসি। যার মনে যা টাইপ ব্যাপার মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি সারা ফ্রিজ খুঁজে এক স্লাইস বাসি পিৎজা ছাড়া "কিস্‌সু" পাইলাম না, কবে যে পরীক্ষাটা শেষ হবে আর কবে যে একটু আলু ভর্তা-ডিম ভাজি-মরিচ ভর্তা দিয়ে মাখাইয়া জুখাইয়া ভাত খাব ইয়ে, মানে...

লেখায় (গুড়) ।

--বেচারাথেরিয়াম

সত্যপীর এর ছবি

পরীক্ষা শেষ হইলে নতুন পরীক্ষা আইব। পরীক্ষার অভাব কি। ভাত তরকারি এখনই রাইন্ধা খাই লান।

..................................................................
#Banshibir.

কড়িকাঠুরে এর ছবি

উপমহাদেশের আদি খাবারেও তো মশলার ব্যবহার কম ছিল- তাই কি? কিন্তু ষাট-সত্তর দশকে পাবলিক চৌদ্দশ শতকের উপমহাদেশীয় খাবার খাইলো ইংলণ্ড গিয়া... ইয়ে, মানে...

'নির্ভানা" রেস্টুরেন্টে রবি শংকর- বিটলস...

সত্যপীর এর ছবি

হ বিচিত্র দুনিয়া। কখন যে কুন্টা হিট হয়...

..................................................................
#Banshibir.

কড়িকাঠুরে এর ছবি

ধানসাক, ইয়ে- মনে করছিলাম ধান শাক- গড়াগড়ি দিয়া হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
খুব ভাল লাগছে এই সিরিজটা।
শুধু খানাপিনার নামগুলা দেখে কষ্ট পাইতেসি মন খারাপ

-- ঠুটা বাইগা

সত্যপীর এর ছবি

মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

দুর্দান্ত এর ছবি

ভিন্দালু আর ধান্সাক, এই দুইটা খাবার ব্রিটিশ, পার্সি বা পর্তুগীজ প্রভাবের বাইরে কেউ চিনবে কিনা সন্দেহ।
একজন পর্তুগীজকে "ভিন্দালু"র কথা জিজ্ঞেসে করুন, সে বলে ভিন্দালু বা (carne de) vinha-da-alhos - মূলত প্রচুর পরিমানে শুকনো মরিচ সহকারে মদ ও রসুনে রান্না কষানো শুয়োরের গোস্ত। সাদা বা দেশী লন্ডনির কাছে ভিন্দালু হল আলু ওয়ালা একটা লালচে কারির নাম।
একজন ইরানি জরথ্রুষ্টিয় বা ভারতীয় পার্সিকে ধান্সাকের কথা জিজ্ঞেস করুন, সে যে খাবারটার কথা বলবে সেটা অনেকটা ধানসিড়ির 'ডাল-খাসি' র মত, যেখানে শাক-সব্জি অপশনাল। অথচ ব্রিকলেনে যে ধানসাক খেয়েছি সেটা পালংশাকে ভর্তি, ডালকে মনে হয়েছে অপশনাল।

সত্যপীর এর ছবি

ভিন্দালু আর পর্তুগীজদের ভারতে আনা অন্যান্য খাবার অভ্যাস নিয়ে বিরাট চ্যাপ্টার আসে এই বইতে। এতই বড় যে অনুবাদে হাত দিতে সাহস হইল না। হয়তো পরে একসময় চেষ্টা দিমু।

..................................................................
#Banshibir.

সাবেকা  এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পড়ছি সিরিজটা চলুক

সত্যপীর এর ছবি

হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

খাওয়া-খাইদ্যের লেখা সবসময় ভালা পাই দেঁতো হাসি । "ইউ র‍্যাং মি লর্ড?" নামের একখান বৃটিশ সিট্‌কম দেখছিলাম। ঐখানে লর্ডগো ট্র্যাডিশনাল ম্যানুর ভালো নমুনা আছে। মোটেই সুবিধার না ঐসব।

--
খাইশুই

সত্যপীর এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

..................................................................
#Banshibir.

ধুসর জলছবি এর ছবি

নিকটা পছন্দ হইছ। দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হে হে। এই দুইটা ছাড়া অন্য কোন কামে আগ্রহ পায় না এইরকম লোকের সংখ্যা বহুত। এইসব লোকজনই নিকটা পছন্দ করতাছে। চাল্লু

--
খাইশুই

ধুসর জলছবি এর ছবি

হো হো হো বড়ই সত্য ভাষণ লইজ্জা লাগে

শাব্দিক এর ছবি

আপ্নে মহা বদ লোক, যাই নিয়েই লেখা শুরু করেন ক্যাম্নে ক্যাম্নে 'গরুর রচনা' র মত খানাপিনায় আইসা পড়েন।
আচ্ছা কারি পাউডার ব্যাপারটা কি?

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সত্যপীর এর ছবি

খানাপিনা ছাড়া দুইন্যায় আছেটা কি?

..................................................................
#Banshibir.

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আজ যে দ্রুত শেষ হয়ে গেলো পর্বটি। মন খারাপ

আপনার অনুবাদ একদম প্রাণ জল করে দেবার মত হয়েছে হাসি (এখানে একটা খাবারের ইমো হবে যা দেখে সবাই -- ফেলবে)

সত্যপীর এর ছবি

দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে যাতে ফ্রিজ খুলতে না হয় তাই খাওয়া নিয়ে বসলাম হাসি

সত্যপীর এর ছবি

ভালো বুদ্ধি।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

এই পর্ব পড়েও মনে প্রশ্নের উদ্রেক হল। ১৯৫৬-৫৮ সালে বাংলাদেশী বলে কিছু ছিলো না। পূর্ব আর পশ্চিম দুটোর মানুষই ছিল পাকিস্তানি। আপনার কথায় বোঝা গেল আপনি এই পূর্বের লোকজনের কথা বুঝিয়েছেন। কিন্তু বৃটেনের ঐ ইমিগ্রেশন আইনে কি পূর্ব পাকিস্তানিদের জন্য আলাদা কোন ব্যবস্থা ছিল? আর বর্তমান সময়ে লণ্ডন শহরে পাকিস্তানিদের সাথে সিলেটিদের সম্পর্কটা কেমন?

দ্রোণ মৈত্র

সত্যপীর এর ছবি

জ্বী কলিংহ্যাম পূব বাংলার লোকের কথাই বুঝিয়েছেন। বর্তমানে পাকিস্তানিদের সাথে সিলেটিদের কেমন সম্পর্ক বলতে পারলামনা ঠিক।

..................................................................
#Banshibir.

যুমার এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। চলুক

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ যুমার।

..................................................................
#Banshibir.

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আপনি যে রেসিপিটা দিয়েছেন, ভাবছি ঐ ভাবে একটা কারি ট্রাই করে দেখি। তবে মজা না হলে খবর আছে। হা, হা।

সত্যপীর এর ছবি

ইয়ে, ইংরেজদের রেসিপি সাবধানে ফলো কইরেন, যাকে বলে প্রসিড উইথ কশন ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

ধুসর জলছবি এর ছবি

পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে তাদের ভারতীয় খাবার বানানো মানে ছিল স্ট্যু এর মধ্যে দুই ছিটা কারি পাউডার মেশানো।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি এই বুদ্ধি নিয়া এরা দুনিয়া শাসন করল কেম্নে?

সত্যপীর এর ছবি

শয়তানী বুদ্ধি পয়দা হৈতে কারি পাউডার লাগেনা (ফতোয়া-এ-সত্যপীর)।

..................................................................
#Banshibir.

ধুসর জলছবি এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি বরং কারি পাউডার বেশী খাইয়াই মনে হয় বড় শয়তান হইছে।

সত্যপীর এর ছবি

খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

কারির রেসিপিটা দেখে ভয় পাইছি, এই রান্না আদৌ মুখে দেয়ার যোগ্য কিনা সন্দেহ আছে! ভিন্দালু আর ধানসাক না কি কইলেন, এগুলা চিনি না! খাইছে

তবে লেখা টেস্টি হইছে.. হাসি

.........
রংতুলি

সত্যপীর এর ছবি

হে হে, ভিন্দালু ধানসাক আমরা কেউই চিনি না, খালি লন্ডনিরা চিনে চোখ টিপি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক চলুক।

---দিফিও

সত্যপীর এর ছবি

হাসি

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

ধুর ভাই, মধ্য রাতে আপনার রান্নার পোস্ট আর পড়ুম না। ইয়ে, বাড়ীতে প্রধান পাচক কে?

সত্যপীর এর ছবি

বাড়িতে আসলেই বুঝবেন চোখ টিপি

..................................................................
#Banshibir.

achena এর ছবি

খিদার মধ‌্যে আবার আপনার রেসিপির পোস্ট। পেটে তো ছুচোর ডন লাফালাফি শুরু করে দিল ওঁয়া ওঁয়া

যাহোক লেখা চলতে থাকুক।

সানি

সত্যপীর এর ছবি

লাফালাফির আপডেট কি? থামসে না এখনো চলমান?

..................................................................
#Banshibir.

নিলয় নন্দী এর ছবি

বাড়িতে যথেষ্ট সংখ্যক চিপসের প্যাকেট মজুত রাখতে হবে।
আপনি পোস্ট দিয়েছেন দেখলেই -প্যাকেট খোল-সত্যপীর পড়।
পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

সত্যপীর এর ছবি

পরের পর্বে শেষ করে দিচ্ছি। তারপর থেকে শুধু শুষ্কং কাষ্ঠং পোস্টের গ্যারান্টি দিলাম।

..................................................................
#Banshibir.

উচ্ছলা এর ছবি

লেখায় পাঁচ তারা দিয়ে গেলাম। (যা করেছি, ন্যায্য করেছি)

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ ন্যায্য বেগম।

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।