একটা কলা, দুটা হবনবস্ আর ইন্টারন্যাশনাল ষ্টুডেন্ট-আছেন কেউ?

মির্জা এর ছবি
লিখেছেন মির্জা (তারিখ: বুধ, ০৭/০৫/২০০৮ - ১:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা কলা আর হব্-নব্স্ নামের দুটা চরম রুঠা বিস্কিট।
অনেকপুরনো দিনের একটা ইংরেজি সিনেমায় দৃশ্যটা দেখছিলাম। ছেলেটা ওর সাথের ছেলেমেয়েদেরকে হাসতে হাসতে বলছিল শরীর ঠিক রাখতে হবেতো তাই একবেলা এইসব খেয়ে থাকি, শুধু সকালে হেভি ব্রেকফাষ্ট আর রাতে আবার হালকা কিছু। ওর সাথের বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েরা চোখ বড় বড় করে তথাকথিত ‘’WOW look’’ দিয়ে বলল এইজন্যেই তুমি এত ওয়েইট লুজ করেছো! আসল কথা হল ছেলেটার পক্ষে দুপুরের খাবারের জন্যে এর চেয়ে বেশি বরাদ্দ করা সম্ভব না।

ঘটনাটা দেখেই হঠাত ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের কথা মনে পড়লো, মনে পরল আমার নিজের কথা।

গত দু সপ্তাহ আগের কথা এটা। এই বিষয়টা নিয়ে কেখার কিছু নেই। আজ মনে হল বিরাট বিরাট স্বপ্ন নিয়ে আমার মত যারা দেশ ছেড়েছেন একসয় এবং যাদের স্বপ্ন ভংগ হতে বেশি সময় লেগেছে আব লাগেনি তাদের মধ্যে কতজন যে অগুনতি দুপুর এই শরীর ঠিক রাখার দোহাই দিয়ে বা অন্য যে কোন অযুহাতে পয়সার অভাবে না খেয়ে থেখেছেন .........খুদার কষ্ট আসলেই খুব বড় কষ্ট। তখন সব কিছুই খেতে ইচ্ছা করতো! যে ইংলিশ খাবার জীবনেও মুখে দিব না, তখন মনে হত ইস হয়ত ঐ খাবারটা খুব মজার হবে! (ধনীর দুলাল এবং দুলালীরা এইসব বুঝবেন না সো......)
রেষ্টুরেন্ট-এ ওয়েটার হিসেবে কাজ করি বলে রাতে খাবারটা পেট ভরে খাই; কিংবা শীতে-বৃষ্টিতে ঠায় দাঁড়িয়ে লন্ডন পেপার বা লন্ডন লাইট বিলি করতে করতে বাঙ্গালি কাউকে দেখেফেলার লজ্জা, পায়ের ব্যাথার কষ্ট না-কি ক্ষুদার কষ্ট......কোনটা বেশি বুঝতে পারিনা। তবে আমার মত যাদের অভিগ্যতা......যাদের এটা বলতে লজ্জা নেই আসুন শেয়ার করি*...........................।

*দেশে গিয়ে আমরা অনেকেই আবার আমাদের এই কষ্টের কথা বলতে চাই না। সেখানে আমরা সবাই ল্যাপটপ কাধে পিডিএ হাতে দেশের ইন্টারনেট স্পীড ষ্টীল ব্লাডি স্লো এই অভিযোগে মশগুল......দামি-দামি ফাষ্টফুড শপে নিজের সদ্য পাওয়া credit card-দিতে একটা তীব্র সুখ অনুভব করি। সো সেই দলের কেউ আবার প্লিজ মাইন্ড করেন না, আমাদের জগতে না হয় এইবার আপনাদের প্রবেশ নিষেধ


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

চাক্কুটা একদম জায়গামত মারলেন, ব্রাদার। আমিও আছি আপনার পথেই। দুর্দশার কথা কত বলবো আর। "খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে, কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে!"

ধ্রুব হাসান এর ছবি

কিতা ভাই হারায়া গেলেন কই? এখন রুটিন লাইফ পেয়ে বাসায় এসে ব্লগ ছাড়েন না? এসব সত্য কষ্টগুলো করেও লোকজনরে শান্তিতে থাকতে দিবেন না দেখি! কষ্টও কর আবার স্বীকারও কর! যারা দেশে গিয়ে একটু ভাব নিতে চাই, নিতে দিন; তাও যদি একটু শান্তি মেলে...! আপনার খবরউবর কিতা? আমরারে ভুলিয়া গেছোইন্‌নি কিতা?

মির্জা এর ছবি

হয়ঃ
টেক্সট ম্যাসেজ পড়তে হবে
না হয়ঃ
ভয়েস ম্যাসেজ শুনতে হবে
তা না হলে ফোন ধরতে হবে।
এর বাইরে যোগাযোগটা করব কিভাবে?

ধ্রুব হাসান এর ছবি

দুঃখিতরে ভাই উত্তর দিছি, পইরা দেইখেন। আমার সিলেটি অনেক ইমপ্রুভ করেছে না?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

অইত্তো নায়রে , অইত্তো নায় ;
ইতা অত সুজা নায় ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

কেনে অইত্তো নায় কেনে? চেষ্টা(এর কোন আঞ্চলিক শব্দ আছে নাকি?) করিলে/ লাগিয়া থাকিলে কি না অয়? আমি নিরাশ নাই। (সরি ভাই, ভুল হইলে মাফ করে দিয়েন। আমার আসলেই বিভিন্ন দেশের তো বটেই বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার প্রতিও একধরনের টান কাজ করে। ঐ টান থেকে এবং মানুষগুলোর আরো কাছাকাছি যেতে যদি কোন ভাষা কিছুটা হলেও রপ্ত করতেই হয় তো আমি মহা আনন্দে যে কাজটা করতে চাই।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আমি আপনাদের জগতের না তবু খুব কমেন্ট করতে ইচ্ছে করল। আপনার কথা শুনে খুবই কষ্ট লাগল মন খারাপ । এমন সময় তো সব সময় থাকবেনা। কষ্টের পরই আসে সুখ। আর যারা আসলেই পড়াশোনা করে স্টুডেন্ট লাইফ তাদের খুব একটা মজার হয়না, পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। আমি যেমন ১ম ইয়ার এ কিচ্ছু পড়িনি তাই ইউনিভারসিটির ঐ সময়টা দারুন ছিল, পরে যখন সিরিয়াস হয়ে যাই তখন এমন অনেক সময় গেছে যখন ব্যস্ততার জন্য দিনে মাত্র একবার খেয়ে থেকেছি, যদিও টাকার জন্য না।
কষ্ট করে যান আমি সিওর আপনি এর ফল পাবেন।
------------------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ধ্রুব হাসান এর ছবি

হা হা হা...বেশ মজা পেলাম। এসব কাহিনী রনি মীর্জার ৫ বছর আগের তো হবেই। জানিনা এখানে তার হয়ে পোদ্দারি মারাটা ঠিক হচ্ছে কিনা? সে এখন বেশ বহাল তবিয়তেই আছে, ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (TFL)-এর মিডিয়া বিভাগে বেশ ভালো পোষ্টে কাজ করে (@রনি ভাই জিজ্ঞেস না করে কথা বলে ফেললাম, বেশী গালাগালি কইরেননা কিন্তু) । কিন্তু সে এখনো তার পুরোনো কষ্টের কথা মনে রাখে আর আমাদের মতো যারা হাফ সেটেলড্‌ তাদের দুঃখে দুঃখিত হয়, এই আর কি! সো ফল সে পেয়েই গেছে (ভাবী মানে রনি ভাইয়ের বৌ যদি বাংলা পড়তে পারতো তো বেশ মজা পেত পোষ্টটা পড়ে)......হা হা হা।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হা হা হা ।। তাহলে আর আমি সরি ফিল করছি না। আমি আমার কষ্ট উঠায়ে নিলাম খাইছে
আমার কমেন্টটা তাইলে এখনকার স্টুডেন্টদের জন্য
----------------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মির্জা এর ছবি

হুমায়ুন আহম্মেদের উপন্যাসে মাঝে মাঝে কিছু অতি বড়লোক ''অসম্ভব রুপবতি ধরনের ভাল'' ছেলে/মেয়ের কথা থাকে, আপনার মন্তব্য পরে, বিশেষ করে যেভাবে আপনি আমাদের কষ্টটা যে অনেষ্টলি শেয়ার করতে চেয়েছেন তার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।

এক মহিলা অতি দরিদ্র এক কয়লা কুড়ানি মহিলাকে দেখে নিজের হাতের আর কানের হীরার দুলের কথা ভেবে সঙ্কুচিত হয়ে না-কি ভেবেছিল...হীরা আর কয়লা-দাম ভিন্ন কিন্তু মূলতো একই-কার্বন। পয়সার অভাবে নে খেয়ে থাকা, কিংবা প্রচন্ড শীতে বৃষ্টির মধ্যে পেপার বিলি করার কষ্ট (কিংবা মানসিক কষ্ট) ব লে বোঝানো সম্ভব না। আমি কখনো পেপার বিলি করিনি কিন্তু যখন আমাদের দেশের কাউকে সঙ্কুচিত হতে দেখি তখন.........
আবারো ধন্যবাদ আপনার অনেষ্ট সহমর্মিতার জন্যে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আপনার এত্ত সুন্দর কমেন্ট আর এত্তবড় উপমায় সত্যিই কিছু বলার নাই, খুব লজ্জায় ফেলে দিলেন। লইজ্জা লাগে
আসলে পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাট টুকিটাকি কাজ করাটা কোনও ব্যাপার না। এটাতো আর পার্মানেন্ট কিছুনা নিজেকে কিছুদিন সাপোর্ট করার জন্যই, তাই ওভাবে ভাবলেই কারো কিছু মনে হবেনা।
-----------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মির্জা এর ছবি

সবই...কোন অসুবিইধা নেই...।তবে পাচ বছর অনেক বেশি বলে ফেলেছিস...অনেক

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার কষ্টের গল্প আরেকটু বলেন শুনি। আমারটা না হয় আরেকদিন বলব।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শুধু বিদেশেই কষ্ট? আমরা দেশে বইসা বুঝি কষ্ট কম করছি? ঢাকা কলেজে তিন ট্যাকা দিয়া বার্গার পাওয়া যাইতো... আর এক টাকা দিয়া লেবু চা... সেই খায়া দিন পার... মাঝে মাঝে বেশি খিদা লাগলে একটা সিঙ্গারা। সিগারেট কিনতে না পারার অজুহাতে বিড়ি খাইছি... এই ঢাকা শহরে বইসাই...
বাপের কাছে ট্যাকা চাইলে যদি বলে থিয়েটার বাদ দিয়া বেশি কইরা লেখাপড়া করতে? এই ভয়ে যে কত কষ্ট করছি।
রিক্সাও বিলাসিতা ছিলো... শিল্পকলা একাডেমিতে সারাদিনের ওয়ার্কশপ সাইরা বাসভাড়া না থাকায় সেগুনবাগিচা থেকা গাবতলী ফিরছি হাঁইটা... মাঝে মাঝে শাহবাগেই বা ঢাবির কোনও হলে থাইকা গেছি... আরো শুনবেন? তাইলে আলাদা ব্লগ খুলতে হইবো... হা হা হা হা... অতীতের কথা ভাইব্যা একটা কষ্টমিশ্রিত সুখ... অবশ্য লোকজনরে বলতে পারি... দেখ বেটা... কত স্ট্রাগল করছি জীবনে খালি থিয়েটারের লাইগ্যা______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মির্জা এর ছবি

থিয়েটারের মজাইতো আলাদা.........থিয়েটারের বাইরে সোজা ভাষায় ঝাড়ুদার হয়ে ঝাড়ু দেয়ার মাঝে কোন সুখ নাইরে ভাই......। দেশের কষ্টের সাথে যে সুখ (মনে করেন আপানার নাটকের শো-যেমন সুখের তার সাথে কি কিছুর তুল না হয়?)

সৌরভ এর ছবি

চলুক!


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নজমুল আলবাব এর ছবি

বন্ধ হোক। এইসব ভাল্লাগেনা।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মির্জা এর ছবি

বড়ভাই, তুই ভুল বুঝেছিস।
এটা আসলে দুঃখের বা হতাশার পোষ্ট না। আমি বা আমরা আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং যেভাবে আছি এটা তারই অংশ, শুধু নিঃঙ্কোচে, বিনা বাধায় বলতে পারার গল্প

তীরন্দাজ এর ছবি

আমার অবস্থা আপনার মতো এতোটা কঠিন নয় এখন আর। তবে সে পথ পেরুতে হয়েছে নিদারুনভাবেই।

আসলে কষ্ট আর আনন্দ নদীর দুই পারেই পাশাপাশি বিরাজমান। আমরা নিজেরা নিজেরটাই স্বাভাবিকভাবেই বেশী অনুভব করি।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কি যে কমু দু:খের কথা.....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ধুসর গোধূলি এর ছবি
পলাশ এর ছবি

মির্জা ভাই
পুরান কথা মনে করায়া দিলেন
আমার পুরা ছাত্র জীবন ব্যাগে নুডলস এর প্যাকেট আর বাটি নিয়া ঘুরছি ।
দুপুরে এক প্যাকেট আর বিকেলে ক্লাশ শেষ হইলে আরেক প্যাকেট খেয়ে ছুটতাম ব্যাংক এ ।
অফিস করতে না ! ভুল বুইঝেন না
ব্যাংক এর টয়লেট ক্লিন করতে ।
তিন ঘন্টায় দশটা ফ্লোরের ৬০টা টয়লেট
তিন বছরে কোনোদিনই ৬০টা পুরা করতে পারি নাই ।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এক নেপালি দাদা ছিলেন সুপারভাইজার
প্রতিদিনই কাজ শুরুর আগে একটা ব্রিফিং দিতেন পুর্বদিন কোন কোন ফ্লোর আমি বাকি রেখে এসেছি আর মেম সাহেব রা উনাকে ডেকে নিয়ে কি বলেছেন ।
উইক এন্ড , ইস্টার , ক্রিসমাস , নিউইয়ার এই গুলি আমার কাছে বড় আদরের মনে হইত কারন শুধু ছুটি র জন্য না
কারন এইসব দিনে ক্লিনিং কামলা মারতে পারলে রেট বেশি পাওয়া যেত ।
নিউইয়ারস এ অপেরা হাউসের সামনে সবাই যখন ফায়ার ওয়ার্কস দেখে আমি তখন পাবলিকের ফালায়া দেয়া বিয়ারের বোতল কুড়াই বা বিনের ব্যাগ চেঞ্জ করি ।
ঈদের আগের দিন রাত্রে সারা রাত কুলিগিরি কইরা যখন আমি আর আমার আরেক ফ্রেন্ড নামজ শেষ কইরা কোলাকুলি করতে গেলাম কেমিস্ট্রিত মাস্টার্স সেই ফ্রেন্ড রিতিমত হাউমাউ কইরা কান্না শুরু কইরা দিছিলো তার দেখা দেখি আমাদের মত আর যারা ছাত্র ছিলেন তাদের চোখও ভিজা দেখতে পেয়েছিলাম
জানিনা উনারাও আমাদেরই মত ছিলেন কিনা
তবে
মির্জা ভাই দেশে গিয়া না
বিদেশে বইয়া থাইকাই
এই ঝাপটা পার হইলেই অনেকে ভুইলা যায় এইসব কাহিনি
উল্টা যারা উনাদের এই কাহিনি জানেন তাদের এভয়েড কইরা চলেন ।
অন্যদের এইরকম দেখলে সংক্ষেপে উনারা বলেন আমরাও এমন স্ট্রাগল করছি কোনো ব্যাপার না সব ঠিক হইয়া যাবে ।

মির্জা এর ছবি

যারা ভুলে যায় তাদের প্রতি করুনা.........তবে ভাই আপনি সত্যি-সত্যি আমার মনটা খারাপ করে দিয়েছেন! ইউনিভার্সিটির সবাই যাবে ক্রিষ্টমাস পার্টিতে আমিও যাব...খুব শখ করে নাম লেখাতে গিয়ে দেখি প্রায় ২৫ পাউন্ড লাগবে!!! বললাম আমি আসছি.........মুখ বুজে কারো সাথে দেখা আ করে পুরো ক্রিষ্টমাস-নিউ ইয়ার পার করে দিলাম......

২০০১ সালের ঈদ। দেশ থেকে ফোনে বোন জানতে চাইল কেমন মজা করছি
------সেইদিনই জীবনে প্রথম একজন ঈদের নামেজের পর আমার পরিচয় দিয়েছিল...
এনার নাম রনি আমাদের মিসবাহ ভাইর রেষ্টুরেন্ট-এর নতুন ওয়েটার!

বোনকে বললাম হেভি মজা হচ্ছে......

মুশফিকা মুমু এর ছবি

মন খারাপ জীবনের জন্য স্ট্রাগল করছেন এটা ছারাতো অন্য কোন সান্তনা নাই। আপনি তাহলে সিডনির।
------------------------------------------------
মূর্ছনা কেটে গেছে সুর
জোছনা ছড়ায় বেদনা, হৃদয় আনমনা ... চির চেনা তুমি অচেনা।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আধা প্যাকেট নুডলসের উপর পুরো রাত কাটিয়ে ভোর করে দিলাম। ঘুমাতে যাবার আগে মনে হল এই পোস্টে আরেকবার ঢুঁ মেরে যাই! কষ্টের গল্প নিয়ে একটা ই-বুক করলে কিন্তু মন্দ হয় না।

যাক, সবার কথার শেষ কথা, পরীক্ষা শেষ। এক মাস পর রান্না করবো আজকে। ছাত্রজীবন!! হাসি

-------------------------------------
হারে রে রে রে রে আমায় রাখবে ধরে কে রে?

মির্জা এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ। পরিশিষ্টের পরিশিষ্ট হিসেবে কিছু কথাঃ
এই লেখাটি আমার কোন দুঃখের লেখা নয়, এইসব নিয়েই আমি, আমার পরের বছর যে এসেছে সে....।এবছর যে আসবে সেও......

বাংলাদেশের এক আর্মির কর্নেলের ছেলে এসেছিল University of Essex a undergrad-করতে, ছেলেটা 'করতাসি' 'যাইতেসিলাম' 'একটু ড্রিঙ্ক করতাসিলাম' টাইপের বাংলা বলে। ছেলেটার মা আমাদের হাত ধরে বলে গিয়েছিল আমার ছেলেটাকে একটু দেখ বাবা, বলতে বলতে ভদ্রমহিলা কেদে ফেলেছিলেন। দেখা হলে আমি হায় হ্যালো বলতাম, ছেলেটা তেমন পাত্তা দিত না। একদিন আমার রুমমেট বলল, ভাই আমরা রেষ্টুরেন্টে কাজ করিতো তাই ও আমাদের পছন্দ করে না, আমি একদিন বলতে শুনেছি, বাদ দেন ওর সাথে কি দরকার কথা বলার।
ইচ্ছা করছিল বলি ঐ হারামজাদা তোর মা এত ভাল তুই কোথা থেকে -----তোর বাপ সরকারি চাকরি করে বছরে ৮হাজার পাউন্ড কোর্স ফি আর সপ্তাহে তোকে ১০০ পাউন্ড ঘর ভাড়া দেয় কোথা থেকে? আমিতো ভাল রেষ্টূরেন্টে কাজ করি তোর বাপতো শালা চোর!
আমার ভিতরে জমে থাকা সেই ক্ষোভটা হয়ত এই লেখায় ভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেয়েছি, সেই জন্যে ক্ষমা চাইছি।

নিঝুম এর ছবি

"কষ্টের পরেই সুখ আসে" এই জাতীয় অর্থহীন কথা আমার আজকাল ভাল্লাগেনা। মারফি'র সূত্র আর এইখানে কাজ করে না। কথা হইল আশে পাশের ধনী'র পোলাপানগো রে দেইখা মাঝে মধ্যে রাগ লাগে। অই মূহুর্তটাতেই মনে হয় এদের বাপও সুখে ছিল এরাও থাকবো। আর আমরা হাভাতে পাবলিক এই দিক সেদিক কোলরয়েড কনার মত দৌড়ামু।দৌড়াইতেই থাকমু।ব্রাউনীয় গতি আর কি...

এইসব দেইখা শুইনা, একসময় প্রচন্ড বেদনায় শপথ নিমু,নাহ্‌ " আমাকে বড় হতেই হবে" এই টাইপ। আসলে কিছুই হয় না। একটা সময় ( তথাকথিত সুখের সময়) আবিষ্কার করি এখন আর শক্তি নাই,সব শক্তি কাম্লাতেই শেষ করে ফেলেছি। কষ্টে অর্জিত শিক্ষা একটা সান্তনা বটে!!! সে তো সান্তনাই।

ওইসব পোলাপানরা ছুটতেই থাকে...ছুটতেই থাকে...বাপের রাইখা যাওয়া শক্তি সহ।

আমরা দেখি। দেখতেই থাকি...
---------------------------------------------------------
শেষ কথা যা হোলো না...বুঝে নিও নিছক কল্পনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

রেনেট এর ছবি

প্রবাসী ছাত্রদের যারা একা থাকে, তাদের সবার কাহিনী বোধহয় একই।
আমাদের সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, তাই আমরা বিদেশে আসি।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হায়!

কবি এর ছবি

সবচেয়ে কষ্ট হয় তাদের যাদেরকে বোঝানো হয় যে পার্ট টাইম চাকুরী দিয়া (Tuition+Living) সবই পুষিয়ে যাবে।

অনেকে না বুঝে আবার অনেকে বিদেশ নামক বস্তুর নির্ঘুম স্বপনে বিদেশ চলেই আসে। পরে যখন সত্যকার বাস্তবতার মুখে পড়তে হয় তখন সব বিস্বাদ লাগে।

তুলিরেখা এর ছবি

কম খাইয়া থাকা, বাইছা বাইছা খুব সাবধানে সস্তা জিনিস কিনা, ভারী কাজের কষ্ট সব হেইপারে আর হোইপারে আমাগো লাহান গরীবের লিগা একই। তবে একখান কথা আছে। দ্যাশে বাড়ীর বাইরে বাইরইলে বেশীরভাগ জায়গাতেই কোনো বাথরুমের ব্যবস্থা নাই (পুরুষরা এই কষ্ট বুঝবেন না),বিদেশে সেই অসুবিধা নাই। এইটা একটা বিরাট রিলিফ।
তারপরে বাকী সব তো উপরওলা ভরসা, আমাদের সংগ্রাম কোনো না কোনোভাবে চলবেই, প্রবল সংগ্রাম শেষে আর্থিক কষ্ট দূর হলে আসবে আধিভৌতিক দুঃখ, তা ও দূর হলে থাকবে আধ্যাত্মিক কষ্ট, এরে কয় ত্রিতাপ, নির্বাণের আগে মুক্তি কোথা?
হাবিজাবি কইতাছি, মাফ দিয়েন।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।