পাই দিবসের শুভেচ্ছা!

শিক্ষানবিস এর ছবি
লিখেছেন শিক্ষানবিস (তারিখ: শুক্র, ১৪/০৩/২০০৮ - ৪:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাই
আজ বিশ্ব পাই দিবস। ১৪ই মার্চ পাই দিবস কেন হল, তা অনেকেই জানেন। ৩.১৪, মার্কিন নিয়মে পাইয়ের এই মানটি ১৪ই মার্চকে নির্দেশ করে। পাইয়ের এই আনুমানিক মানের তাৎপর্য মেনে প্রথম পাই দিবস পালন শুরু হয়েছিল আমেরিকার স্যান ফ্রানসিস্কোর একটি বিজ্ঞান জাদুঘরে। এক্সপ্লোরেটোরিয়াম নামের এই জাদুঘরে দিবসটি পালন শুরু করেছিলেন ল্যারি শ। শ'কেই তাই পাই দিবসের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ১৯৮৮ সালে পাই দিবস পালন শুরু হয়। সে হিসেবে এক্সপ্লোরেটোরিয়ামে এবার ২০তম আন্তজার্তাকি পাই দিবস পালিত হচ্ছে। আমরা সাধারণত কোন দিবস পালন শুরু করি রাত ১২:০০ টা'র পর থেকে। কিন্তু পাই দিবস পালন শুরু হয় রাত ১:৫৯ এ। কারণ বুঝতেই পারছেন, পাইয়ের মান ৩.১৪১৫৯...। এই সময়টিকে তাই পাই মিনিট বলা হয়। মানুষের পক্ষে এর থেকে সূক্ষ্মভাবে পাই দিবস পালন করা সম্ভব না। খুব বেশী হলে ১:৫৯:২৬ এ পালন শুরু করা যায়। কিন্তু কম্পিউটার আরও অনেক সূক্ষ্মভাবে পাই দিবস পালন করতে পারবে।

পাই নিয়ে একটা হেঁয়ালি বা প্যারাডক্সের উপস্থাপন করছি। পাই সংখ্যাটাই আসলে হেঁয়ালিপূর্ণ। তবে এইটা পুরোদস্তুর ব্যবহারিক হেঁয়ালি। ভবিষ্যতে কখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারের মাধ্যমে রোবো-মানবের জন্ম হলে তারা কখনই পাই দিবস পালন শুরু করতে পারবে না। কারণটা খুবই সোজা। পাইয়ের মান দশমিকের পর অসীম পর্যন্ত যায় এবং এর মধ্যে কোনরকম পৌনঃপুনিকতাও নেই। বেচারারা দশমিকের পর সংখ্যা বের করতে গিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে দেবে, যতদিন না মহাবিশ্বের মৃত্যু হয়। পাই সংখ্যাটা আমাদের মনে এমনই একটা মোহ ধরিয়ে দেয়। সীমার মধ্যে থেকেও অসীমের স্বাদ পাওয়া যায় পাই থেকে। অজানা বলেই পাই হয়তো এতোটা সুন্দর লাগে।

হেঁয়ালির কথাই যখন আসলো তখন আরেকটা কথা বলে ফেলি। বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত হল পাই। আজ থেকে ৪,০০০ বছর পূর্বে পাই বিষয়ে সচেতন হয় মানুষ। ব্যবিলনীয় ও মিশরীয়রা পাইয়ের ব্যাপারটা জানতো। গ্রিকরা পাই নামকরণটি করেছিল। সেই থেকেই পাইয়ের মান বের করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে মানুষ। ১৬১০ সালে এক জার্মান গণিতজ্ঞ দশমিকের পর ৩৫ ঘর পর্যন্ত নির্ণয় করেন। ১৭৮৯ সালে স্লোভেনিয়ার একজন ১৪০ ঘর পর্যন্ত, আর ১৮৭৩ সালে এক ইংরেজ শৌখিন গণিতজ্ঞ ২০ বছর সাধনা করে ৭০৭ ঘর পর্যন্ত নির্ণয় করে। পরে দেখা যায়, তার নির্ণয়কৃত সংখ্যা ৫২৮তম ঘর পর্যন্ত সঠিক, এরপরের সবই ভুল। ২০০২ সালে এক জাপানী গণিতজ্ঞ পাইয়ের বিশাল একটা মান বের করেছে। তার সংখ্যায় মোট ডিজিট ছিল ১,২৪১,১০০,০০০,০০০টি। অর্থাৎ ট্রিলিয়ন ঘর পর্যন্ত পাইয়ের আসন্ন মান নির্ণয় এখন কোন বিষয়ই না। এতো বিশাল মানগুলো দিয়ে কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের পরিধি নির্ণয় করতে পাইয়ের মান মাত্র ৪৩ ঘর পর্যন্ত নিলেই হয়। পরিধির এই মান একটি প্রোটনের আকারের মত সূক্ষ্ম হয়।

মাত্র ৪৩ ঘর দিয়েই আমাদের জানা সর্বাধিক পরিধিটা প্রোটনের আকারের মতো সূক্ষ্মতার সাথে মেপে ফেলা যাচ্ছে। তারপরও গণিতবিদদের আগ্রহের অন্ত নেই পাইয়ের মান নির্ণয়ে। এর শেষটা যেন দেখেই ছাড়বে তারা। মানুষ সবসময়ই অসীমকে নিজের মধ্যে অনুভব করেছে এবং অসীমকে জানার সে অদম্য স্পৃহার চাবিকাঠি হতে পারে পাই। পাইকে সবচাইতে রহস্যময় ও অদ্ভুত সুন্দর এক সংখ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এ জন্যই।

জ্যামিতির জগতে পাই আমাদেরকে একেবারে ধাঁধার মধ্যে ফেলে দেয়। এ বিষয়ে সবাই একমত যে, বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত হল পাই। কিন্তু, আপনাকে যদি বৃত্তের পরিধির নির্দিষ্ট মান দিয়ে দেয়া হয়, তাহলে পাইয়ের মান ব্যবহার করে সেই বৃত্তের ব্যাস বের করতে পারবেন কি? কিংবা ব্যাস দেয়া থাকলে পরিধির মান নির্ণয় করতে পারবেন? জীবনেও পারবেন না। কারণ পাইয়ের মানই আপনি জানেন না। এই অসংগতি কিন্তু বাস্তব জগত সম্বন্ধে আমাদের চিন্তাধারার অসংগতিকেই নির্দেশ করে। অসীমের জ্ঞান ছাড়া সংগতিপূর্ণ চিন্তাধারাটি বের করা সম্ভব না। সত্যি কথা বলতে, পরিপূর্ণ বৃত্ত বলতে কিছু নেই। পরিপূর্ণ কেন নয়, এবার বলছি,
বৃত্তের ব্যাস কিন্তু সম্পূর্ণ সূক্ষ্মভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না। কারণ এটা ইলেকট্রন, প্রোটন বা আরও ছোট কোয়ার্ক দিয়ে গঠিত। সুতরাং কখনই দৈর্ঘ্য পূর্ণরূপে নিণয় করা সম্ভব না। মানুষের পক্ষে সম্ভব না, কারণ তারা ত্রিমাত্রিক স্থানের বাসিন্দা। একমাত্রিক হলে কিন্তু পাইয়ের নির্দিষ্ট মান বের করা যেতো। এমনও তো হতে পারে, পাই মাত্রার জ্ঞান অর্জন করার চাবিকাঠি।

এর আগে বলেছিলাম, পাইয়ের মান ৪৩ ঘর পর্যন্ত ধরে পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের পরিধি নির্ণয় করলে তা প্রোটনের আকারের সমান সূক্ষ্ম হয়। আমরা যদি আরও সূক্ষ্ম পরিধি নির্ণয় করতে চাই তাহলে কিন্তু আরও ডিজিট নিতে হবে। কখনও মনে হয়, কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের জগতে বিশেষ কোন অবদান রাখতে পারে পাই। তবে এতে কোন সন্দেহ নেই, গণিত ও বিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্রে এখন পাইয়ের জয় জয়কার।

মহামতি পাইকে সম্ভাষণ জানাতে কি করছে এক্সপ্লোরেটোরিয়াম? এবারে তাই দেখা যাক:
১:০০ - পাই ধাঁধা দিবেন জনৈক পদার্থবিজ্ঞানী। উপস্থিত সবার জন্য।
১:৩০ - পাই শোভাযাত্রার জন্য সবাইকে জড়ো করা।
১:৫০ - শোভাযাত্রা শুরু হবে। সবাই পাই সঙ্গীত গাইবে।
২:০৫ - পাই দিবসের বিশেষ খাবার পরিবেশনা।
বিজ্ঞান জাদুঘরটির কেবল ম্যাকবিন থিয়েটারেই এই অনুষ্ঠানগুলো হবে। এছাড়া অন্য কয়েকটি স্থানে চলবে এটি।

একই সাথে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে পাই দিবস। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড পাই দিবস পালনে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে প্রথম থেকেই। গতকাল, অর্থাৎ ১৩ই মার্চ প্রথম আলোতে পাই নিয়ে এক অসাধারণ প্রবন্ধ লিখেছেন মুনির হাসান। তিনি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত আছেন। তবে দুঃখের বিষয়, এবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় পাই শোভাযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। মুনির হাসান কোন কারণ লিখেন নি তার প্রবন্ধে। তার প্রবন্ধ থেকে একটি পাইকাব্য তুলে দিচ্ছি এখানে:

How I need a drink,
alcoholic in nature (or of course)
after the heavy lectures
involving quantum mechanics

প্রথম লাইনটা ভাঙিয়ে দিলেই মাহাত্ম বুঝবেন, How (৩) I (১) need (৪) a (১) drink (৬)।

পাই নিয়ে আমাদের মাতামাতির কোন শেষ নেই যেন। অবশ্য এর শেষও চাই না আমরা। পাই রহস্যময় হলেও একটু একটু করে উদ্‌ঘাটিত হচ্ছে। আপনারাও পাই দিবসে মেতে থাকুন পাইয়ের সৌন্দর্য্যে। পরিশেষে কয়েকটা বিশেষ তথ্য সরবরাহ করছি:

দশমিকের পর ১০০ ঘর পর্যন্ত পাইয়ের মান:
π=3.141592653589793238462643383279502884197
169399375105820974944592307816406286208998
6280348253421170679

আপনি চাইলে নিচের তিনটি সূত্রের যে কোনটি দিয়ে পাইয়ের মান বের করা শুরু করতে পারেন। অনেক দূর পর্যন্ত সঠিক মান পাবেন:
π/2 = (2*2*4*4*6*6*8*8*...) / (1*3*3*5*5*7*7*9*...)
π/4 = 1 -1/3 + 1/5 - 1/7 + 1/9 - 1/11 + ...
π = 3 + 1/10 + 4/102 + 1/103 + 5/104 + 9/105 + ...

পুনশ্চঃ পাই দিবসের পাশাপাশি ১৪ই মার্চ আইনস্টাইনের জন্মদিন। সেই সাথে এ বছর প্রথমবারের মত পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক টক লাইক আ ফিজিসিস্ট দিবস। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো পদার্থবিজ্ঞানীর মত কথা বলতে। কারণ, যে কেউ পদার্থবিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো সহজ করে বুঝে নিতে পারে, বোঝাতেও পারে অন্যকে।


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

আমরাও হালকার উপরে ঝাপসাভাবে পাই দিবস পালন করছি।

আমি তো ভু-পদার্থবিদ (অপদার্থবিদ ও বলতে পারেন, তবে সাবধান গু-পদার্থবিদ না কিন্তু)। আমি কেমনে কথা বলবো?


কি মাঝি? ডরাইলা?

শিক্ষানবিস এর ছবি

ভূ-পদার্থবিদ হলে ভূ-পদার্থবিদের মতই কথা বলেন। আমরা ভূ-পদার্থবিজ্ঞানের জটিল কিছু জিনিস খুব সহজভাবে বুঝে ফেলি সেই সুযোগে।

অনিকেত এর ছবি

খুব ভালো হয়েছে লেখাটা।

শুভেচ্ছা রইল।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আপনার নিয়মিত বিজ্ঞান বিষয়ক লেখায় সমৃদ্ধ হচ্ছে সচলায়তন।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

দিগন্ত এর ছবি

আমি তো আমাদের হিসাবে পাই দিবস পালনের পক্ষে - ২২/৭ মানে ২২শে জুলাই হবে আমাদের পাই দিবস।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শিক্ষানবিস এর ছবি

পাইয়ের আসন্নীকৃত মানগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে ২২/৭ বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু, ২২/৭ কিন্তু দশমিকের পর মাত্র ৭ ঘর পর্যন্ত পাইয়ের সঠিক মান প্রদান করে। এর পরই গরবর হয়ে যায়। প্রকৃত হিসাবে পাই ২২/৭ এর থেকে ছোট। প্রথম আলোর প্রবন্ধটিতে মুনির হাসান চমৎকার একটি প্রমাণ দিয়েছেন। ক্যালকুলাস দিয়ে করা এই প্রমাণের শেষে দেখা যায়, 0 < (22/7 - π)। মাত্র ৭ ঘর পর্যন্ত সঠিক মানের বিষয়টা পরিত্যাগ করার সময় কিন্তু এসে গেছে। এজন্য আমার মনে হয় ২২/৭ ভুলে যাওয়াই উত্তম। ধারার মাধ্যমে পাইয়ের মান অনেক ঘর পর্যন্ত সঠিকভাবে পাওয় যায়।

দিগন্ত এর ছবি

২২/৭ সঠিক মান দেয় ৭ দশমিক স্হান অবধি আর ৩.১৪ হল ২ দশমিক স্থান অবধি। তাহলেই ভেবে দেখুন কোনটা বেশী ঠিক। ২২ শে জুলাই না ১৪ই মার্চ ?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শিক্ষানবিস এর ছবি

আপনার কাছে হার মানতে ইচ্ছে করছে খুব।
কিন্তু আন্তর্জাতিকতার কারণে ব্যাপারটা বাস্তবায়ন করা কষ্টকর বৈকি!!

দিগন্ত এর ছবি

অর্কুটে দেখেছিলাম এরকম একটা ব্যাপার।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হিমু এর ছবি

দিগন্তের বুদ্ধিটাও মন্দ না।

শিক্ষানবিস নিয়মিতভাবে চমৎকার পোস্টিং করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানের ওপর। প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করা হয়ে ওঠে না, কিন্তু আমি নিয়মিত পাঠক, এ কথা জানিয়ে রাখছি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

নিঘাত তিথি এর ছবি

চমৎকার লেখা।
"পাই দিবস" এবং "টক লাইক আ ফিজিসিস্ট" দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমরা কাল (১৪ তারিখ) পিজা-পাই খেয়ে পাই দিবস উদযাপন করব। গুগল, কম্পিউটার আর ম্যাথ-স্ট্যাট -এর স্পন্সরে আমাদের পাইক্লাবে আগামীকাল খানাপিনার আয়োজন করা হয়েছে।

শিক্ষানবিসের লেখায় বিপ্লব।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

মুহাম্মদ...
চালায়া যা...অসাধারণ...।
তবে দিগন্ত ভাইয়ের প্রস্তাবটা খুবই মনে ধরছে
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

স্বপ্নাহত এর ছবি

বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও সজ্ঞানে বিজ্ঞান বিষয়ক জিনিসপাতি খুব কমই পড়ি।
কিন্তু এইটা কেমন কেমন করে যেন পড়ে ফেললাম।টক লাইক আ ফিজিসিস্ট মনে হয় আমারে দিয়া হইবো তাইলে কি বল।

লেখাটাতো সেইরকম লাগছে।

আর... পরশু থাইকা না মিড এক্সাম? ফিজিসিস্ট এর মত কথা না বইলা আপাতত ভাল ছাত্রের মত পড়াশুনা স্টার্ট কর।
আমারেও কিছু পড়তে দাও।তোমার আর মহিব এর লেখার ঠ্যালায় তো ঠিক মত পড়াও হইতেসেনা।

দুনিয়ার সকল ফিজিসিস্টকে পাই দিবসের শুভেচ্ছা।

=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
বুকের মধ্যে আস্ত একটা নদী নিয়ে ঘুরি

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

শিক্ষানবিস এর ছবি

অবশ্যই, সবাই শুধু পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় কথা বলবো আজ। প্রমাণ হয়ে যাবে, পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো একেবারে সোজা। গাণিতিক জটিলতা বাদ দিলে মূল তত্ত্বে আসলেই কোন জটিলতা নেই।

রায়হান আবীর এর ছবি

পড়ে ফেললাম। আমিও হালকা পাতলা টক লাইক এ ফিজিসিস্ট দিবস পালন করা শুরু করেছি। যদিও বিজ্ঞানের 'ব' ও জানিনা...লেখাটা ভাল হয়েছে খুব...

---------------------------------
এসো খেলি নতুন এক খেলা
দু'দলের হেরে যাবার প্রতিযোগিতা...

শিক্ষানবিস এর ছবি

এইসব বললে হবে না ভাই। ক্লাস টুয়েল্‌ভ পর্যন্ত বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলি। মিস্ত্রিগিরি শুরু করলেও সেই বিজ্ঞানকে ভোলা যাবে না কিন্তু। তোর টক লাইক আ ফিজিসিস্ট দিবস পালন সফল হোক।

শেখ জলিল এর ছবি

লেখাটা ভালো হয়েছে। বিজ্ঞানবিষয়ক এরকম আরও লেখা চাই।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

বিপ্রতীপ এর ছবি

শুভ পাই দিবস !

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান…

রাগিব এর ছবি

প্রথম আলোতে কালকে কোন পাতায় বেরিয়েছে মুনির ভাইয়ের নিবন্ধটা? আমি মিস করে ফেলেছি ...

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

শিক্ষানবিস এর ছবি

১৪তম পাতায় গণিত ইশকুলে মুনির হাসানের প্রবন্ধটা এসেছে। তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলুন।

রাগিব এর ছবি

ধুর, অনলাইনে মনে হয় এই পাতাটা আসে না।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চমৎকার লাগলো।
অবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এমন সুখপাঠ্য লেখা আরও পড়তে চাই।
ধন্যবাদ।

শিক্ষানবিস এর ছবি

অবিজ্ঞানের ছাত্র আমরা কেউই নই।

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।

বিশ্ব তথা প্রকৃতিটাই হল বিজ্ঞান। বিজ্ঞান কিন্তু মানুষের সৃষ্টি না। বিজ্ঞান হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম অনুসন্ধানে মানুষের প্রচেষ্টার নাম। প্রকৃতির ছাত্র আমরা সবাই। মানুষ মাত্রই প্রকৃতির ছাত্র হতে বাধ্য।
সুতরাং, আর দেরী নয়, টক লাইক আ ফিজিসিস্ট।

রাগিব এর ছবি

পাই এর মান বের করার মজার বেশ কিছু পদ্ধতি আছে ... যেমন - কাগজে দুটো দাগ টেনে নিন, তার পর দূর থেকে একটা সুঁই ছুড়ে মারুন কাগজের উপরে। সুঁই এর দৈর্ঘ্য, দাগদুটোর দূরত্ব, আর অনেকবার ছুড়ে মারার সময় কতবার সুইটা কোনো দাগকে ছেদ করছে, এর উপরে ভিত্তি করে পাই এর মান বের করা যায়। ব্যাপারটা শুনে বিশ্বাস না হলেও আসলে এটা উনবিংশ শতকে আবিস্কৃত একটা পদ্ধতি।

(স্কুলে পড়ার সময়ে একটা বইতে পড়েছিলাম, তার পরে আমি হাজার খানেক বার পরীক্ষা চালিয়ে আসলেই দেখেছি, পাই এর মান বের করা যায় এর মাধ্যমে)।
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ফারুক হাসান এর ছবি

রাগিব ভাই, যতদূর মনে পড়ে- পাইয়ের মান বের করার এই পদ্ধতিটাই হচ্ছে মন্টি কার্লো ক্যালকুলেশন/সিম্যুলেশনের প্রথম উদাহরণ। ফরাসী বিজ্ঞানী বুফন এই পদ্ধতিতে পাইয়ের মান বের করেছিলেন।
পাইয়ের মান বের করার এরকম আরেকটা পদ্ধতি হচ্ছে, ডার্ট বোর্ড ব্যবহার করা। চোখ বন্ধ করে ডার্ট বোর্ডে তীর ছুড়লে আপনি যদি ৭০৯ বার বৃত্তাকার বোর্ডে নিশানা করতে সক্ষম হন, তাহলে বোর্ডের ব্যাস নিয়ে আঁকা একটা চতুর্ভুজের ভেতরে নিশানা করতে পারবেন স্বভাবতই তার চেয়ে বেশি (৯০০ বার)। সুতরাং পাইয়ের মান দাড়াচ্ছে ৪ গুনিতক (৭০৯/৯০০), যার মান হচ্ছে ৩.১৫১ (পাইয়ের আসল মানের বেশ কাছাকাছিই বলা যায়)।
আমি এখনও অবাক হই, এত অনিশ্চিতে ভরা একটা কাজের পৌণপুণিক ব্যবহারে কীভাবে প্রতিবার নিশ্চিতভাবে একই ফলাফল পাওয়া যায়!
দেখি, মন্টি কার্লো ক্যালকুলেশন নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে একটা।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

শিক্ষানবিস এর ছবি

সিম্পলি আশ্চর্যজনক

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো, সবাইকে পাই দিবসের শুভেচ্ছা । আপনারা কেউ ড্যারেন অ্যারোনফস্কির ( Darren Aronofsky ) 'পাই' মুভিটা দেখেছেন ? দারুন লেগেছিল !

- খেকশিয়াল

তীরন্দাজ এর ছবি

রোবো-মানবরা পাই দিবস পালন করতে পারবে না স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে পারলাম!

লেখাটি ভাল লাগলো খুব।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সবজান্তা এর ছবি

সবাইকে পাই দিবসের শুভেচ্ছা।

মজার ঘটণা মনে পড়ে গেল। তখন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। বন্ধুদের অধিকাংশই তখন গণিত নিয়ে অতটা মাথা ঘামায় না। উপরন্তু দেশে গণিত উৎসবের জোয়ারও সেভাবে আসেনি। আমি ইন্টারনেট থেকে শিখে tan series এ (pi/4) মান বসিয়ে, পাই এর মান বের করে বন্ধুদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলাম। সবাইকে বলেছিলাম, এটা আমি কাল রাত্রে বের করেছি।

অনেক দিন পর সেই স্মৃতি আবার মনে পড়লো।

টক লাইক আ ফিজিসিস্ট ডে তে কি লেখা যেতে পারে ভাবছি ? কাল আমার ভি এল এস আই পরীক্ষা আছে একটা, ভাবছি সেমিকন্ডাক্টর নিয়েই কিছু একটা লিখে ফেলি খাইছে
----------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

শিক্ষানবিস এর ছবি

আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আগে জল বসার আগ পর্যন্ত পাই খুবই ভালো জিনিস.....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

দ্রোহী এর ছবি

হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ —
অসাধারণ মন্তব্য।


কি মাঝি? ডরাইলা?

ফারুক হাসান এর ছবি

একেবারে হাটুবুদ্ধি পর্যবেক্ষণের একটু উপরের স্তরের পর্যবেক্ষণ!!
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

শিক্ষানবিস এর ছবি

প্রথম আলোতে মুনির হাসানের প্রবন্ধটা অনেকেই হয়তো পড়তে পারেননি। তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ বাংলা উইকিপিডিয়াতে এ বিষয়ে বেশ কিছু নিবন্ধ লিখেছেন মুনির হাসান। এখানে তিনটি লিংক দিলাম:

http://bn.wikipedia.org/wiki/পাই_দিবস
http://bn.wikipedia.org/wiki/পাই
http://bn.wikipedia.org/wiki/২২/৭_পাই-এর_চেয়ে_বড়_তার_প্রমাণ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।