ইউরোপিয়ান মেয়ে এবং প্রেম-বাণিজ্য

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/০৫/২০১০ - ৫:৪৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইউরোপিয়ান মেয়েরা বৌ হিসেবে কতটা আকর্ষনীয়া সেটা জানি না, তবে বাদামী চামড়ার ছেলেদের কাছে “বিয়ের বাজার”-এ তাদের বিশেষ সুনাম অন্য কারণে। আজকের কথা নয়, আরো কয়েক যুগ আগে থেকেই ইউরোপ-এ্যামেরিকায় সাদা মেয়ে বিয়ে করা নাগরিকত্ব পাবার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে। ধীরেধীরে সময় বদলাতে শুরু করলে এবং এ ধরণের বিয়ের হার বাড়তে লাগলে দেশগুলোর ইমিগ্রেশনের টনক নড়তে শুরু করে। তারপর তারা যে কোন উপায়ে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে থাকে। এ বিষয়কে উপজীব্য করে হলিউড-বলিউডে প্রচুর চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। হাজার হাজার ডলার-পাউন্ড-ইউরো খরচ করে কন্ট্রাক্টে বিয়ে করে ধরা খেয়ে একূল-ওকূল দুকূল হারাতে দেখেছি অনেক বঙ্গদেশীয় বালকদের। তবে আজকের লেখার বিষয়বস্তু ভিন্ন – টাকার বিনিময়ে বিয়ে নয় বরং ভালোবাসার বিনিময়ে বিয়ে। প্রেম এখানে পণ্য, প্রেম এখানে বাণিজ্য।

সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে খুব বেশী চোখে পড়ছে আমাদের চামড়ার ছেলেদের সাদা মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। বিষয়টা যে শুধু আমার একারই চোখে পড়ছে তা নয়, পরিচিত মহলে আরো কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানলাম তারাও লক্ষ্য করেছেন। বলাবাহুল্য, এতজনের চোখে পড়লে সেটা ঠুলি পরে বসে থাকা ইমিগ্রেশনের চোখেও পড়তে বাধ্য এবং শেষ পর্যন্ত পড়েছেও। এরপর যখন সম্প্রতি ইউরোপিয়ান (আরো স্পষ্ট করে বললে ইস্ট ইউরোপিয়ান) দেশগুলোর মেয়েদের বিয়ে করা ছেলেদের পরিসংখ্যান ধরে টান দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, সেখানে বেরিয়েছে দারুণ এক চিত্র। সাম্প্রতিক সময়ে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডে ইউরোপিয়ান মেয়েদের বিয়ে করা ছেলেদের তালিকায় যে দেশটি সবার উপরে আছে তাদের নাম “পাকিস্থান”।

পাকিস্থানীদের আমি ঢালাও ভাবে গালি দেব না। তাদের দেশে তারা কেমন আমি সেটা জানি না; এমন কী কোন দিন আমি পাকিস্থানে যাইও নি। অতএব ঢালাও ভাবে গালি দেয়াটা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। তবে আমার গত পৌনে তিন বছরের আয়ারল্যান্ড জীবনে যা দেখেছি তাতে অন্তত এখানে আসা পাকিস্থানীদের আমার কাছে মনে হয়েছে শেয়ালের মত ধূর্ত। স্বার্থের জন্যে তারা যা যা প্রয়োজন সব করতে পারে। তাদের ভণ্ডামির একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি। তারা বিয়ার খায় না কারণ ইসলামে মদ খাওয়া বারণ। তবে তারা নাইট ক্লাবে যায়, মেয়েদের সাথে ডেইট করে এবং যথাসময়ে সেক্সও করে। তাদের মতে সেক্স হচ্ছে একটা জৈবিক চাহিদা যা মানুষ হিসেবে মেটাতে হবেই। এটা যদি করে তাহলে ইসলামের চোখে মাফ পাওয়া যাবে কিন্তু মদ খেলে নয়। তাদের যুক্তিতে আমি মুগ্ধ(!) হই, বাকরুদ্ধ হই। এই যুক্তিটা একজন বা দুজন দেখালে একটা কথা হতো। কিন্তু অবাক করা বিষয়, এখানে প্রায় পুরো পাকি তরুণ কমিউনিটি এটা বিশ্বাস করে! পাকিদের পাশাপাশি উত্তর ভারতীয় ছেলেরাও এমন হয়। বিশেষতঃ পাঞ্জাবের ছেলেরা। দক্ষিণ ভারতীয় ছেলেরা, পশ্চিমবঙ্গের ছেলেরা এবং বাংলাদেশী ছেলেরাও এখানে অবাধ সেক্স লাইফ কাটায় – তবে তারা কেউ পাকিদের মত এক সহজে ইউরোপিয়ান মেয়েদের সাথে মিশে যেতে পারে না বা এত সহজে ওয়ান-নাইট-স্ট্যান্ড করতে পারে না।

পরবর্তী প্রশ্ন আসবে, কেন পারে না? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উত্তরটা দিচ্ছি। নাইট ক্লাবে গিয়ে “ফাজলামী”–“দুষ্টামী”–“শয়তানী” আমি নিজেও করেছি। কিন্তু একটা পর্যায়ের পর ডিগনিটিতে বাধতে শুরু করে। কিন্তু পাকিরা এই পর্যায়টা খুব সহজে পার হয়ে যায়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশেরই এক ছোট ভাই ছিল – নাফিস। একদিন ড্যান্স ফ্লোরে ব্রাজিলিয়ান একটা গ্রুপের সাথে এক হয়ে নাচছি। হঠাৎ দেখি নাফিস বিয়ারের গ্লাস হাতে নিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে পুরো ফ্লোরটাকে দেখছে, বিশেষতঃ জোড়ায় জোড়ায় আলিঙ্গনাবদ্ধ জুটি যাদের দেখলে মনে হবে প্রেম উপচে পড়ছে অথচ তাদের পরিচয়ের সময়কাল মাত্র পাঁচ মিনিট। জিজ্ঞেস করলাম, “কী হয়েছে?” উত্তরে নফিস বলল, “ভাইয়া, নির্লজ্জ হতে হবে। তা না হলে একটা সীমার পর আর এগিয়ে যাওয়া যাবে না। এ্যাপ্রোচ করতে হবে, এগিয়ে গিয়ে মেয়েদের শরীরে আলতো ভাবে হাত দিতে হবে। দশটা মেয়েকে এ্যাপ্রোচ করলে একটা মেয়ে পটবে। সেটাই লাভ। অপমানবোধ থাকলে নাইট ক্লাবে মেয়ে পটানো সম্ভব না।” বলাবাহুল্য, এই তত্ত্বটা পাকিরা অনেক আগেই আবিষ্কার করে ফেলেছিল।

তবে এ ধরণের ছেলেদের স্ট্যানবাজি ওয়ান-নাইট-স্ট্যান্ড এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি বরং তারা এটাকে নিয়ে গিয়েছে অন্য এক পর্যায়ে। টাকা দিয়ে বিয়ে করার পরিবর্তে প্রেম দিয়ে বিয়ে করা। এতে সুবিধা তিনটা – প্রথমতঃ টাকা লাগছে না বলে পুরো প্রক্রিয়াটা প্রায় ফ্রিতে সম্পন্ন হচ্ছে। তাছাড়া মেয়ে হঠাৎ করে উল্টা পথে হাঁটা দিলে শুধু সময়টাই অপচয় হবে, হাজার হাজার ইউরো গচ্চা যাবার ভয় নেই। দ্বিতীয়তঃ ইমিগ্রেশনের আটকানোর কোন পথ খোলা থাকছে না। তৃতীয়তঃ এই সুযোগে বেশ “মাস্তি” করে নেয়ার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এই প্রতারণার ফাঁদে মূলতঃ পড়ছে ইস্ট ইউরোপিয়ান মেয়েরা। এরা একটু আবেগপ্রবণ হয়। গরীব দেশের মেয়ে হওয়ার কারণে তারা এখানে এসেছে নূতন জীবনের সন্ধানে। তাদের যদি একটু প্রেম-ভালোবাসা দেখানো যায়, তারা সহজে গলে যায়। দশজনকে দেখালে যদি একজন গলে, সেই তো লাভ – এটাই যে নীতি। প্রেম বাণিজ্যের ধারক এবং বাহক পাকিরা, সাথে কিছু ভারতীয় এবং বাংলাদেশী ছেলেরা এ কাজটা দারুণ ভাবে করছে ইউরোপিয়ান পাসপোর্ট পাবার জন্যে। পরে পাসপোর্টটা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে মেয়েটাকে ছুড়ে ফেলে নিজের মনের মত মেয়ে বিয়ে করে নিচ্ছে। তার উপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান সুবিধাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। লিথুনিয়া, লাটভিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরী – যে দেশেরই মেয়ে বিয়ে করা হোক না কেন আইরিশ পাসপোর্ট এর জন্যে আবেদন করতে পারবে। আর আইরিশ পাসপোর্ট মানে সোনার খনি হাতে পাওয়া কেননা এই পাসপোর্ট দিয়ে অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডায় বিনা ওয়ার্ক পারমিটে কাজ করা এবং থাকা যায়। এক কথায় আইরিশ পাসপোর্ট নর্থ আটলান্টিকের উভয় পাড় একজন মানুষের জন্যে উন্মুক্ত করে দেয়। আর সেটা পাবার জন্যেই তারা মরিয়া।

এখানে খুব দেখা যায় কালোদের সাথে সাদা মেয়েদের ঘুরতে। এর পেছনের অন্তর্নিহিত কারণ বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রই বুঝে নিতে পারবেন। ছোটছোট টিন এইজ মেয়েরা পর্যন্ত নোংরা কালোদের সাথে যা যা খোলা রাস্তায় করে, তারপর বদ্ধ কামরায় তাদের উন্মাদনা কোন পর্যায়ে পৌছায় সেটা সহজে কল্পনা করে নেয়া যায়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক বাংলাদেশী ছাত্র ধ্রুব প্রায় আফসোস করে বলতো আমরা হচ্ছি “মিডল ক্লাস” – না সাদা, না কালো। এজন্যে আমাদের পাত্তা নেই। কিন্তু বর্তমানে যা হচ্ছে তাতে “পাত্তা নেই” আর বলা যায় না। সম্ভবত সাদা মেয়েরা ভাবতে শুরু করেছে উপমহাদেশীয় ছেলেরা বিছানায় উন্মাতাল না হতে পারলেও ভালোবাসার ক্ষেত্রে তারা কালোদের থেকে অনেক এগিয়ে। যতই যা কিছু প্রত্যাশা করুক না কেন, প্রতিটা মেয়ের সম্ভবত ভালোবাসা পাওয়ার একটা আকাঙ্ক্ষা সব সময় মনে সুপ্ত থাকে। আর তাদের সেই কোমল সুপ্ত আকাঙ্ক্ষার ফায়দা তুলতে শুরু করেছে পাকিরা। কয়েকদিন আগের ঘটনা। হেঁটে যাচ্ছি ডাবলিন শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত ব্রিজ – ও' কনেল ব্রিজ – এর উপর দিয়ে। হঠাৎ কানে আসে একটা মেয়ের কণ্ঠস্বর, “তুমি জানো না, তুমি আমার জীবনটা কতটা বদলে দিয়েছো। আমি এত সুখ জীবনে পাই নি। আমি কী করে তোমাকে বোঝাবো?....”। মেয়েটা ইংরেজী বলতে পারে না, আবার ইংরেজী ছাড়া ভাব প্রকাশের উপায় নেই। প্রচণ্ড কষ্ট করে, ভয়াবহ ভাঙ্গাভাঙ্গা ইংরেজীতে কথাগুলো বলছিল মেয়েটা। অথচ পাশের ছেলেটা একটা কথাও বলছিল না। সাথে সাথে আমি নিশ্চিৎ হয়ে যাই সাথে উপমহাদেশীয় ছেলে আছে। তাই হাটার গতি কমিয়ে দেই। এরপর ফোনটা বের করে, যেন কেউ কল করেছে তাই থামছি এভাবে, ব্রিজের পাশে দাঁড়াই। সাথে সাথে চোখাচুখি হয় ছেলেটার সাথে। চোখ নাকি মনের আয়না। যদি তাই হয়, তবে সেই চোখে আমি “চোর” দেখতে পেয়েছিলাম। সাথে সাথে তাদের পিছু নেই। শক্ত করে হাত চেপে ধরে মেয়েটা কথা বলেই যাচ্ছে আর ছেলেটা বারবার ঘুরে পেছন ফিরে তাকায়, আমি আছি কিনা সেটা দেখতে! আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি, এত কুণ্ঠা কেন ছেলেটার মনে? এই কুণ্ঠা কিন্তু এই একবারই নয়, আরো অনেকবার দেখেছি। এরকম অগুনতি উদাহরণ দিতে পারবো শুধু মুভি দেখার সময়ের। কোন এক বিচিত্র কারণে সাদা মেয়ে পাশে থাকলে এবং আমাদের দেখলেই ছেলেগুলো ছটফট করতে শুরু করে। বারবার তাকায় এটা দেখতে যে আমরা তাকাচ্ছি কিনা। মনের মধ্যে যদি চোর না থাকে তাহলে এটাতো হওয়ার কথা নয়। সেদিন ব্যাঙ্কে গেলাম। একটা বাদামী ছেলের সাথে সাদা মেয়ে। মেয়েটা অনেক দুষ্টামী করছিল। কিন্তু আমাদের দেখার সাথে সাথে ছেলেটা আড়ষ্ট হয়ে গেলো। মেয়েটা এত ন্যাকামী করে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে দুষ্টামী করছে অথচ সে বারবার আমাদের দেখে। আমরা কি FBI থেকে এসেছি নাকি? আজব!

তবে এর অর্থ কিন্তু এই না যে আমি বলছি না বাদামী চামড়ার ছেলেরা সাদা মেয়েদের সত্যি ভালোবাসে না। আমারই পরিচিত এক বাংলাদেশী জুটি আছে যারা প্রচণ্ড সুখি এবং তাদের সম্পর্কে আমি কোন সমস্যা দেখি নি। ছেলেটা কখনও মেয়েটাকে তার ধর্ম ছাড়তে বলে নি অথবা কোন বিষয়ে জোর করে নি। অথচ সেই পোলিশ মেয়ের মুখ থেকেই শুনেছি তার বান্ধবীরা কী করে নির্যাতিত হয়েছে পাকিদের হাতে। তার এক বান্ধবীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্যে রীতিমত শারীরিক নির্যাতন করতো সেই পাকি। এজন্যে পোলিশ কমিউনিটিতে এখন ধীরেধীরে এটা ছড়িয়ে গিয়েছে যে পাকি মাত্রই “লম্পট”, “বদ” এবং “ধর্মান্ধ” হয়। কিছু দিন আগে একটা কলেজে বসে গল্প করছিলাম। হঠাৎ এক ছেলে আসলো ভর্তি হতে। ফর্সা, লম্বা, জিম করা পেটানো শরীর। প্রথমে দেখলে মনে হয় পাকি যদিও পরে পাসপোর্ট দেখে বুঝি ভারতীয়, সম্ভবত পাঞ্জাবী। কলেজ কর্তৃপক্ষ যখন তার কাছে ইমিগ্রেশন কার্ড (আয়ারল্যান্ডে সবাইকে ইমিগ্রেশন থেকে একটা কার্ড দেয় যেখানে ছাপানো এবং চিপের মাধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে) চাইলো তখন সে তাল বাহানা শুরু করলো। এরপর দেখা গেলো তার ইমিগ্রেশন কার্ডই নেই। তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে চার মাস আগে। সে এই সময়টা এখানে অবৈধ ভাবে থাকছে। এমন কি তার কাছে পুরানো ইমিগ্রেশন কার্ডও নেই, সেটা পুলিশ নিয়ে গিয়েছে! কেন পুলিশ নিলো? রহস্যের গন্ধ পেয়ে এগিয়ে গেলাম। তারপর একে একে বের হতে শুরু করলো না না কাহিনী। ছেলে একটা অপ্রাপ্ত বয়স্ক পোলিশ মেয়ের সাথে লিভ টুগেদার করতো। কোন ভাবে পুলিশ সেটা টের পেয়ে তাকে ধরে। এখন সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সে নাকি বড় উকিল ধরেছে। পুলিশকে সে দেখিয়ে দেবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কথায় বলে চোরের মা বড় গলা। সেদিন দেখলামও।

তবে বাংলাদেশীরাও যে ধোয়া তুলসী পাতা, তা কিন্তু না। অন্তত দুটো উদাহরণ আমার চোখের সামনে দেখা যেখানে আমাদের জাতিগত ভাবে অপমানিত হতে হয়েছে। আমি একটা হাঙ্গেরীয়ান যুগল (মার্থা এবং পিটার)-এর সাথে বাসা শেয়ার করতাম। মেয়েটা আমাকে প্রায়ই বলতো তার বান্ধবী একটা বাংলাদেশী ছেলের সাথে লিভ টুগেদার করছে। উপমহাদেশের ছেলেদের মত এত ভালো ছেলে আর হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি ব্যাপক ভয়ে থাকতাম। একদিন শুনলাম ছেলেটা মেয়েটাকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। মেয়েটা দারুণ উত্তেজিত। অনাগত আনন্দের কথা চিন্তা করে সে তখনই পুলকিত হচ্ছিল। এক সময় তারা বাংলাদেশে গেলো। সেখানে মেয়েটা ছেলেটার মায়ের অকথ্য ব্যবহারে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হলো প্রথমে। তারপর বাংলাদেশের গরমে সে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেয়েটাকে হাসপাতালে ফেলে ছেলে এবং তার পরিবার বেশ কিছু দিনের জন্যে পুরোই গায়েব হয়ে যায়। এরপর অনেক যন্ত্রণা ভোগ করে এবং ছেলেটাকে হাতে-পায়ে ধরে শেষ পর্যন্ত মেয়েটা আয়ার‌ল্যান্ডে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। এরপর মেয়েটা ঘোষণা করলো, “বাংলাদেশের মত খারাপ জাতি আর নেই। এদের ভুলেও বিয়ে করবা না।”

দ্বিতীয় উদাহরণে কোন নাম উল্লেখ করবো না কারণ এটা এখানে ব্যাপক আলোড়িত ঘটনা এবং ভদ্রমহিলা আমার কলিগ। ভদ্রলোক তরুণ নন, বরং কিছুটা বয়স্কই। পটিয়েছে সরাসরি শিক্ষিত আইরিশ মেয়েকে। বিয়ের পর একটা মেয়ে হয়েছে। সুখের সংসার। কিন্তু যখনই তার পাসপোর্টটা হয়ে গেলো, সাথে সাথে অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। স্ত্রীকে ভালোবাসাতো দূরে থাক, এখন নূন্যতম সম্মানও করে না। মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে অনেক চেষ্টা করছে – বাংলাদেশে তার মায়ের স্ট্রোক হচ্ছে, হার্ট এ্যাটাক হচ্ছে আরো কত কী। প্রত্যেকটা কথা শুনলে বোঝা যায় মিথ্যা। ভদ্রমহিলা আমার কাছে বার কয়েক পরামর্শ চেয়েছিলেন। আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছু বলতে পারি নি।

আমি স্বীকার করছি আমার দেয়া উদাহরণগুলো থেকে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছালে সেটা অতি মাত্রায় সরলীকরণ করা হয়ে যাবে। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে এই বিচ্ছিন্ন উদাহরণগুলোই মানুষের মনে একটা জাতির প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টিতে যথেষ্ট। প্রেমকে পাকিদের নেত্রীত্বে কিছু বাদামী করেছে বাণিজ্যের উপকরণ। প্রেম নাও, পাসপোর্ট দাও – এই আজ তাদের স্লোগান। সুস্থ চিন্তার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গড়ার যে প্রবণতা সেটা যেন আয়ারল্যান্ডে একদমই মরে যাচ্ছে দিনদিন। আজ পাকিদের লাম্পট্যের কারণে ঢালাও ভাবে দোষী করা হচ্ছে উপমহাদেশের ছেলেদের। তাদের দেখে আবার উৎসাহীও হচ্ছে বাংলাদেশের ছেলেরা। “পাকিরা পারলে আমরা কেন পরবো না” ধরণের একটা অসুস্থ পাল্লা দেয়ার মানসিকতা দেখা যাচ্ছে খোদ আমাদের মধ্যে। কিন্তু কেন? কী হবে এভাবে পাসপোর্ট নিয়ে? জীবনের কি সবটাই ঐ লাল রঙ্গের বইটার জন্যে তুলে রাখা? জীবনে কি আর কোনই লক্ষ্য নেই? পাকিরা বড় বড় ধর্মের কথা বলে। কিন্তু কখনও এটা বলে না যে কথায় আছে, মন ভাঙ্গা উপাসনালয় ভাঙ্গার সমান। সেটাকে ভেঙ্গে এবং পণ্য বানিয়ে আর যাই করা হোক, জীবনে কোন দিন শান্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

লেখাটা শেষ করবো একটা অনুরোধ দিয়ে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ছেলে প্রতি বছর বিদেশে পড়তে আসছে। সুন্দর ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করছে তারা। প্রত্যাশা করি তাদের চিন্তা যেন সেই লক্ষ্যেই অটুট থাকে। তাদের প্রতি অনুরোধ, আমাদের কাজ দিয়ে আমরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে না পারি, অন্তত যেন ম্লান না করে ফেলি সেদিকে যেন লক্ষ্য রাখা হয় সব সময়।

২০ মে ২০১০
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।


মন্তব্য

অনিন্দ্য এর ছবি

"ছোটছোট টিন এইজ মেয়েরা পর্যন্ত নোংরা কালোদের সাথে যা যা খোলা রাস্তায় করে"-নোংরা কালো মানে কী? আপনার পুরো লেখাতেই গাত্রবর্ণের বর্ণনা এবং তা দিয়ে ট্যাগিং করে ফেলাটা বেশ চোখে পড়ে।এটা আমার বোঝার ভুলও হতে পারে।

তবে পোস্টের মূল বক্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করছি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

কিছু কিছু কালো আছে যারা খুব নোংরা হয়। আপনাকে যদি ভদ্রভাবে হাগ করতে আসে, তবুও বাঁধবে আপনার। তাদের বুঝিয়েছি। এটা বলতে পুরো কালো জাতিকে বোঝাই নি।

আর লেখার বিষয়বস্তুটাই তো বর্ণ নিয়ে। বর্ণ কোন অস্পৃশ্য বিষয় নয়। সাদা-কালো-বাদামী -- এগুলো খুব সাধারণ বিষয়। বর্ণবাদ তখন আসবে যখন বর্ণের কারণে বৈষম্য সৃষ্টি হয়। আমার লেখায় কি তা কখনও মনে হয়েছে?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কোন সেন্সে নোংরা হয়? আপনার রুচির সাথে পার্থক্য থাকলেই সেটা নোংরা!!!!! খুবই আহত বোধ করলাম!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

s-s এর ছবি

আপনার যদি বোঝার ক্ষমতা না থাকে এই লেখাটি দিয়ে বর্ণের কারণে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে কী'না, তাহলে আপনার সাথে কথা বলা বৃথা। ধরুন,আমার পোলিশ বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমি রাস্তা দিয়ে খুব ঘনিষ্ঠ ভাবে হেঁটে যাচ্ছি, চুমুটুমুও খাচ্ছি। আপনার চোখে সেটা হবে "একটা কালো মেয়েকে সাদা একটা ছেলে কিভাবে নষ্ট করছে! না জানি এরা বদ্ধ ঘরে আরো কোনো উন্মাদনায় মেতে উঠবে। কালো মেয়েটার ডিগ্নিটিতে একটুও বাধলো না? আশ্চর্য!" এভাবে আমার পিছু পিছু আসতে থাকলে আমিও তো আপনাকে এড়িয়ে যাবো। তখন কি আমার মনোভাবও আপনার কাছে চোর চোর লাগবে না? উপমহাদেশীয় লোকজনের দৃষ্টি আপনার মতো হলে,আর তারা কেউ "সাদা" আমার সাথে আছে দেখেই পিছু নিতে শুরু করলে আমি তো এড়িয়ে যাবোই।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

s-s ভাই, আমি অবশ্যই আপনার যুক্তি শুনবো। আমার আগের লেখার কমেন্টগুলো দেখবেন। আমি যদি দেখি আমি ভুল করছি, সেটা স্বীকার করতে আমি কুণ্ঠাবোধ করি না। এমন কি এই লেখাতেও আমি যখন দেখেছি সবাই আমার ভুলটা ধরিয়ে দিচ্ছে তখন বুঝলাম সবাই ভুল আমি একা সঠিক, এমনটা হবে না। ভুলটা আমারই হচ্ছে। তাই আমি ক্ষমাপ্রর্থনাও করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে লেখা দিলে লেখার ধরণটা আরো পরিণত করে নিতে পারবো।

শুভেচ্ছা রইলো।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

নোংরা কালো!
নিয়াজ ভাই,
গায়ের রং কোনো কোয়ালিটি নয়। জাস্ট একটা এট্রিবিউট! লেখার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হলেও আপনার লেখায় সাম্প্রদায়িক ব্যাপার খুব খারাপ লাগল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মাহবুব ভাই, প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ করছি যদি আমি আহত করে থাকি। আমার এডিট করার ক্ষমতা নেই, তা না হলে আমি পরিবর্তন করতাম আপনাদের মন্তব্যের পর।

তবে আমি কেন লিখেছি কথাটা সেটা ব্যাখ্যা করছি:

'নোংরা' এবং 'কালো' -- এই শব্দ দুটো আমি এক সাথে ব্যবহার করি নি। অর্থাৎ কালোদের আমি নোংরা বলি নি। কালো শব্দটা ব্যবহার করেছি তাদের বিশেষ অঙ্গের আকৃতির কারণে। মেয়েদের মধ্যে ধারণা কাজ করে কালো ছেলেদের সেক্স পাওয়ার অন্যদের তুলনায় বেশি। সে জন্যে তাদের কালোদের প্রতি আকৃষ্ট হতে দেখা যায়।

আর নোংরা বলতে বুঝিয়েছি জাঙ্গিদের যারা মদ্যপ, নেশাগ্রস্থ এবং প্রচণ্ড শারীরিক ভাবে অপরিচ্ছন্ন হয়। মেয়েরা কালোদের প্রতি এতটাই মোহ গ্রস্থ থাকে যে এ ধরনের জাঙ্কিদের সাথেও একান্তে মিশতে তাদের বাধে না।

আশা করি আমি বোঝাতে পেরেছি কি বলতে চেয়েছি। শব্দটা 'নোংরা কালোর' পরিবর্তে 'কালো জাঙ্কি' করে দিতে পারেন।

স্নিগ্ধা এর ছবি

এখানে খুব দেখা যায় কালোদের সাথে সাদা মেয়েদের ঘুরতে। এর পেছনের অন্তর্নিহিত কারণ বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রই বুঝে নিতে পারবেন। ছোটছোট টিন এইজ মেয়েরা পর্যন্ত নোংরা কালোদের সাথে যা যা খোলা রাস্তায় করে, তারপর বদ্ধ কামরায় তাদের উন্মাদনা কোন পর্যায়ে পৌছায় সেটা সহজে কল্পনা করে নেয়া যায়।

আমি বুদ্ধিমান নই, আমি বুঝতে পারিনি। কী কারণ?!

মুর্শেদ দেখলাম আগেই আপত্তি জানিয়েছেন, আমিও জানাচ্ছি - "নোংরা কালো"??!!

বদ্ধ কামরায় উম্মাদনা উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছুনো 'খারাপ' নাকি?! আর, বদ্ধ কামরায় কে আকাশ্চুম্বী উম্মাদনা প্র্যাক্টিস করলো, আর কে শুধুই চোখে চোখ রেখে বসে রইলো, সেটা একেবারেই বদ্ধ কামরা-বাসীদের ব্যাপার নয় কি?

আর ছেলেটা বারবার ঘুরে পেছন ফিরে তাকায়, আমি আছি কিনা সেটা দেখতে! আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি, এত কুণ্ঠা কেন ছেলেটার মনে?

আমি যদি আমার প্রেমিক/প্রেমিকা'র সাথে বাইরে ঘুরতে থাকা অবস্থায় উপমহাদেশীয় কাউকে আমাদের খেয়াল করতে বা অনুসরণ করতে দেখতাম, আমিও আড়ষ্ট হয়ে যেতাম। আপনি হতেন না?

ভদ্রমহিলা আমার কাছে বার কয়েক পরামর্শ চেয়েছিলেন। আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছু বলতে পারি নি।

কেন পারেন নি? ওই ভদ্রলোকের সাথে আপনার সামাজিক পর্যায়ে ওঠাবসা/পরিচিতি আছে বলে? তাহলে, এই ব্লগ লেখার মানে কী?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নোংরা কালোর ব্যাখ্যাটা আগেই দিয়েছি। অতএব সেটা আর উল্লেখ করলাম না।

সেই ভদ্রমহিলাকে আমি কিছু বলতে পারি নি কারণ তাকে একটাই পরামর্শ দিতে পারতাম, সেটা হলো "আপনার স্বামী আপনার সাথে প্রতারণা করছেন।" তার মুখের দিকে তাকিয়ে সেটা বলা সম্ভব হয় নি।

শুভেচ্ছা রইলো।

s-s এর ছবি

আপনার লেখাটার কোন্‌ জায়গায় স্টেরিওটাইপড আর রেসিস্ট লেগেছে দাগানো শুরু করেছিলাম, তারপর দেখলাম পুরো লেখাটাই সেই দোষে দুষ্ট। তারপরেও কয়েকটা জায়গাঃ
এখানে খুব দেখা যায় কালোদের সাথে সাদা মেয়েদের ঘুরতে। এর পেছনের অন্তর্নিহিত কারণ বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রই বুঝে নিতে পারবেন।
প্রায় আফসোস করে বলতো আমরা হচ্ছি “মিডল ক্লাস” – না সাদা, না কালো। এজন্যে আমাদের পাত্তা নেই। কিন্তু বর্তমানে যা হচ্ছে তাতে “পাত্তা নেই” আর বলা যায় না।
আজ পাকিদের লাম্পট্যের কারণে ঢালাও ভাবে দোষী করা হচ্ছে উপমহাদেশের ছেলেদের। তাদের দেখে আবার উৎসাহীও হচ্ছে বাংলাদেশের ছেলেরা। “পাকিরা পারলে আমরা কেন পরবো না” ধরণের একটা অসুস্থ পাল্লা দেয়ার মানসিকতা দেখা যাচ্ছে খোদ আমাদের মধ্যে।

পরবর্তী প্রশ্ন আসবে, কেন পারে না? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উত্তরটা দিচ্ছি। নাইট ক্লাবে গিয়ে “ফাজলামী”–“দুষ্টামী”–“শয়তানী” আমি নিজেও করেছি। কিন্তু একটা পর্যায়ের পর ডিগনিটিতে বাধতে শুরু করে। কিন্তু পাকিরা এই পর্যায়টা খুব সহজে পার হয়ে যায়।

বাঙালিদের "ডিগনিটি"তে বাধার ব্যাপারটা অনেকটা আঙুর ফল টকের মতো লাগলো।
কালোদের সাথে সাদারা ঘুরলে প্রব্লেম কোথায়?আমি বুদ্ধিমান পাঠক নই হয়তো, বুঝলাম না।
আমারা না সাদা না কালো, আমরা কি হলে বা নিজেদের ঠিক কি ভাবলে "ডিগ্নিটি"বজায় নাইট ক্লাবে যাওয়া যাবে বা "সাদা" মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে?
পাকিরা পারলে আমরা কেন পারবো না- সেটা তো আপনি বলেই দিলেন- ডিগ্নিটি আর কি কি সব যেন?
উপমহাদেশের ছেলে মানে কি? গায়ের রং কালো বাদামী আর নন-ইংলিশ-পোলিশ অ্যাক্সেন্ট? নাকি বিছানায় অপারদর্শিতা? নাকি প্রেমে পারদর্শিতা?

আপনার বিষয়বস্তু যতটাই গুরুত্বপূর্ণ। লেখার ভঙ্গী ঠিক ততটাই সংকীর্ণ স্টিরিওটাইপে ভর্তি। স্যরি।
একটু মনকে উদার করুন। উদার ভাবে সবাইকে মানুষ ভেবে লিখুন। তাদের খারাপ কাজ গুলোকে নিন্দা করুন, পোলিশ, কালো , পাকি বা উপমহাদেশীয় ট্যাগ দিয়ে নয়।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

পরামর্শের জন্যে ধন্যবাদ। চেষ্টা করবো।

অনিন্দ্য এর ছবি

"আপনার বিষয়বস্তু যতটাই গুরুত্বপূর্ণ।" - আসলেই তাই।লেখার বিষয়বস্তু ভাবানোর মতো হলেও প্রকাশভঙ্গীর কারণে সবাই এখন সেটা নিয়েই কথা বলছেন এবং আমিও বলেছি। অথচ ব্যাপারটা এমন হতো না যদি লেখক ট্যাগিং এর ব্যাপারটা মাথা থেকে সরিয়ে তারপর লিখতে বসতেন।

যে কোন প্রকারে এমনকি নিজের সমস্ত মূল্যবোধকে বিকিয়ে দিয়ে কোন মতে একটা ইউরোপিয়ান পাসপোর্ট যোগাড় করার প্রচেষ্টাকে তীব্র ধিক্কার।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অনিন্দ্য ভাই, আমি বুঝতে পারছি বিষয়টা আমি যেভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছি সেটা অপরিণত লেখার ধরণের জন্যে প্রকাশ করতে পারি নি। তবে এটা জেনে ভালো লাগছে যে আপনি আমার মূল বক্তব্যটা আমার অপরিণত লেখার মাঝ থেকে বের করে নিতে পেরেছেন।

যে কোন প্রকারে এমনকি নিজের সমস্ত মূল্যবোধকে বিকিয়ে দিয়ে কোন মতে একটা ইউরোপিয়ান পাসপোর্ট যোগাড় করার প্রচেষ্টাকে তীব্র ধিক্কার।

আমি ঠিক এই বিষয়টাকেই হাইলাইট করতে চেয়েছিলাম যদিও হাইলাইট করে ফেলেছি অন্য কিছু। মন খারাপ

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

লেখার বক্তব্য, ধরণ বা বিষয়বস্তু যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। লেখাটা আমি সততার সাথে লিখেছি, এতটুকু বলতে পারবো। যা যেভাবে দেখেছি, সেভাবেই লিখেছি। আমার দেখার ভঙ্গি সংকীর্ণ হতে পারে। সেটি ধরিয়ে দিলে ভবিষ্যতে আরো যত্ন নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো।

স্নিগ্ধা এর ছবি

নিয়াজ মোর্শেদ,

লেখাটা আপনি সততার সাথে যে লিখেছেন, পড়লে সেটা টের পাওয়া যায়। এবং, সেজন্য অবশ্যই আপনার সাধুবাদ প্রাপ্য হয়। আপনার আগের লেখাগুলো থেকে জানি, বা মনে হয়েছে, আপনি একজন যথেষ্ট মানবিক বোধ সম্পন্ন, সংবেদনশীল মানুষ। হয়তো সেকারণেই আমি এই লেখাটা পড়ে এতোটা বিস্মিত এবং বিরক্ত হয়েছি। দেখুন, দৃষ্টিভঙ্গি বা উদারতা আপেক্ষিক, আমার কাছে আপনার যে কথাগুলো অনুদার মনে হয়েছে সেটা আপনার বা অনেকের কাছেই না হতে পারে। সেটা নিয়ে আমি আপত্তি জানাই নি, আমার দ্বিমত প্রকাশ করেছি। যথেষ্ট শক্তভাবেই করেছি। সে হিসেবে আঘাত হয়তো আপনারই পাওয়ার কথা, আমাদের নয়।

আমি আপত্তি জানিয়েছি আপনার যে শব্দবন্ধতে, সেটা পড়লে আপনি 'কালো মানেই নোংরা' এরকম মনোভাব পোষণ করেন বলে পাঠকের মনে হয়। আপনি বলেছেন আপনি সব কালোকেই তা মনে করেন না, কিছু কালো, যারা জাঙ্কি এবং বাহ্যিকভাবে নোংরা, তাদের বুঝিয়েছেন। এখানে আমার একটা প্রশ্ন - আয়ারল্যান্ডে অপরিচ্ছন্ন সাদা কি একদমই নেই? তাদের প্রতি মেয়েরা প্রকাশ্যে শারীরিক প্রেম প্রকাশ করে না? করে থাকলে, আপনার সেকথাটাও লেখা উচিত ছিলো।

কালোদের সেক্স পাওয়ার যদি বেশি থেকেও থাকে, এবং তাতে মেয়েরা যদি কালোদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ও, আমি এতে একটুও খারাপ বা দোষের কিছু দেখি না। কমবয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে আপনি যা বোঝাতে চেয়েছেন, সেটা খুব সম্ভবত - এতো কমবয়সে ওই মেয়েগুলো 'প্রকাশ্যে' এরকম '(পাবলিক) ডিসপ্লে অফ এ্যফেকশন' করতে দ্বিধাবোধ করছে না দেখে আপনি চিন্তিত/বিরক্ত। তার ওপর আবার সেটা করছে কিনা কালো জাঙ্কিদের সাথে। এবং, এখানে আবারও প্রশ্ন করি - সাদা বা অন্যান্য গাত্রবর্ণের জাঙ্কিদের সাথে করলে সেটা নিয়েও কি আপনি সমান চিন্তিত?

আমিও (আমার মেয়ে, অথবা) কোন মেয়ে কোন রকম জাঙ্কি'র সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেই ভীত হবো - তবে, একদম স্বাস্থ্যগত কারণে। বদ্ধ কামরায় উম্মাদনার মাত্রা নিয়ে নিজের মেয়ে হলেও একটুও চিন্তিত হবো না - কারণ, যৌন ক্রিয়া শান্তভাবেই করুক, অথবা উম্মাদ হয়েই করুক, এইচ আই ভি বা যে কোন এস টি ডি সংক্রমণ হওয়ার জন্য কর্মটুকুই যথেষ্ট। কিন্তু, আপনার লেখা ঐ অংশটুকু পড়লে মনে হয় টিন এইজে মেয়েরা যে এধরণের কাজ করছে, সেটা নিয়েই আপনার মূল আপত্তি।

বর্ণ নিয়ে লেখা অবশ্যই খারাপ নয়, আপনার বক্তব্য অতি সরলীকরণ মনে হতে পারে বলে আপনি পাঠককে সাবধানও করে দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরও আপনার পুরো লেখাটা পড়ে আমার আপনাকে তুলনামূলকভাবে কিছুটা রক্ষণশীল এবং 'এরা এই করে, আর ওরা ওরকম হয়' এধরণের দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী বলে মনে হয়েছে। আমিও হয়তো কোন কোন দিকে রক্ষণশীল, অন্য কারুর তুলনায়।

আবারও বলছি, এইসব দৃষ্টিভঙ্গি একদমই ব্যক্তিনির্ভর। আপনাকে তাই আমি আপনার কোন মতবাদের জন্য দোষ দিতে পারি না, আপনার প্রকাশভঙ্গি নিয়ে আপত্তি জানাতে পারি আর আমার দ্বিমতের জায়গাগুলোই শুধু প্রকাশ করতে পারি।

পাঠকের প্রতিক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার জন্য ধন্যবাদ হাসি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

স্নিগ্ধা, আবারো আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি সুন্দর মন্তব্যের জন্যে। আমি কিন্তু আপনার মন্তব্যে আহত হই নি। আমি আপনার মন্তব্য পড়ে বুঝতে পেরেছি আপনি খুব বিরক্ত হয়েছেন। কিন্তু তবুও আপনি গঠনমূলক মন্তব্য করে আমার ভুল ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সেজন্যে আপনারও সাধুবাদ প্রাপ্য।

আমি আপনার এই মন্তব্যের কিছু প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি এখানে:

আয়ারল্যান্ডে অপরিচ্ছন্ন সাদা কি একদমই নেই? তাদের প্রতি মেয়েরা প্রকাশ্যে শারীরিক প্রেম প্রকাশ করে না? করে থাকলে, আপনার সেকথাটাও লেখা উচিত ছিলো।

আয়ারল্যান্ডে সম্ভবত ৯০ শতাংশ জাঙ্গিই সাদা। তাদের সাথেও একই ধরণের কর্মকান্ড করছে। কিন্তু আমি কালোদের কথা বলার সময় উদাহরণটা দিচ্ছিলাম। সাদা-কালো ভেদে জাঙ্কি মাত্রই আয়ারল্যান্ডের একটা সমস্যা। এটার সমাধানে খোদ সরকার এখন উদ্যোগ নিয়েছে। রি-থিংকিং আওয়ার ড্রিংকিং নামে একটা উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া ড্রাগ থেকে তরুন সমাজকে বাঁচাতে আরেকটা দারুণ উদ্যোগ আছে ওদের। লিঙ্কটা খুঁজে পেলে শেয়ার করবো।

জাঙ্গি বিষয়ে আমার খুব বাজে বাজে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে। সেটা নিয়ে আরেকদিন লিখবো।

সাদা বা অন্যান্য গাত্রবর্ণের জাঙ্কিদের সাথে করলে সেটা নিয়েও কি আপনি সমান চিন্তিত?

আমিতো বটেই, আইরিশ সরকারও চিন্তিত। কয়েক মাস আগে মেট্রো হ্যারাল্ড পত্রিকায় একটা রিপোর্ট বের হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে এক পরিসংখ্যানে জানা যায় ১৫-২০ বছরের তরুনীরা সর্বশেষ পনের বারের মধ্যে অন্তত পাঁচ বার মনেই করতে পারে নি তারা কার সাথে সেক্স করেছে। আন-প্ল্যান্ড প্রেগনেনসি এবং এইডস এখানে আইরিশ সরকারের মূল ভয়। তাই তারা এই বিষয়টা নিয়েও এখন চিন্তিত। এখানে তাদের কিছু কাজের তথ্য পাবেন।

এই বিষয়গুলোকে আমি একদমই হাইলাইট করতে চাই নি লেখাটায়। আমার লেখার মূল বিষয় ছিল পাকিস্থানি কিছু ছেলের মেয়েদের মন নিয়ে খেলা এবং তাদের দেখে আমাদের বাংলাদেশীরাও উৎসাহী হওয়া। তবে আমার লেখার ত্রুটির কারণে আমি সেটা ঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারি নি।

আবারও আপনাকে শুভেচ্ছা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

লেখাটা ভাল্লাগলো না। নোংরা কালো পড়েই মুখ তিতা হয়ে গেল।

কিছু কিছু কালো আছে যারা খুব নোংরা হয়। আপনাকে যদি ভদ্রভাবে হাগ করতে আসে, তবুও বাঁধবে আপনার। তাদের বুঝিয়েছি। এটা বলতে পুরো কালো জাতিকে বোঝাই নি।

এই ব্যাখ্যা দেখে আরো তব্দা খেলাম।

-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

সাবিহ ওমর এর ছবি

হায় হায় আমার রুমান্তিক ক্যারিয়ার বর্ণহীন হয়ে গেল মন খারাপ :( মন খারাপ

রানা মেহের এর ছবি

আপনার লেখা যদি উপমহাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকতো, মেনে নিতাম।
কালো ছেলে - সাদা মেয়ে জাতীয় জিনিসপত্র পড়ে খারাপ লাগলো।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

লেখার বিষয়টাই ছিল সাদা মেয়েদের বাদামী ছেলে বিশেষত পাকিস্থানী ছেলেদের দ্বারা প্রতারিত হওয়া (সব সময় নয়, তবে ইদানিং বেশী হচ্ছে)। কালোর বিষয়টা নেহাতই লেখার সময় চলে এসেছে। তার সাথে এই লেখার কোন সরাসরি যোগসূত্রতা নেই। তবুও দুঃখ প্রকাশ করছি।

শরতশিশির এর ছবি

আমি পরে এসে এখানে কমেন্ট করবো। আমার আমেরিকান-ইউরোপিয়ান বান্ধবীরা যে উপমহাদেশের ছেলেদের রেইসিস্ট, কাওয়ার্ড আর সুবিধাবাদী বলে, সেটার বেশ ভালো একটা উদাহরণ এই লেখাটার পেছনে কিছু মানসিকতা! খুব অবাক হলাম, আসলেই!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

স্নিগ্ধা এর ছবি

শরতশিশির, আপনার আমেরিকান-ইউরোপিয়ান বান্ধবীরা যদি উপমহাদেশের ছেলেদের রেইসিস্ট, কাওয়ার্ড আর সুবিধাবাদী বলে - তাহলে সেটাও কিন্তু ঢালাওভাবে সরলীকৃত এবং বর্ণবাদী মন্তব্য!

"লেখাটার পেছনে মানসিকতা" বলতে আপনি কি লেখকের মানসিকতা বুঝিয়েছেন, নাকি লেখায় উল্লিখিতি ঐসব ছেলেদের মানসিকতা বুঝিয়েছেন?

শরতশিশির এর ছবি

না, স্নিগ্ধা আপা, ঢালাওভাবে না। বলার পেছনে বেশ ভাল ভাল কারণ আছে, এই প্রেমঘটিত ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে। আমি নিজেও বেশ বিরক্ত চোখের সামনে এসব হতে দেখে।

বোথ! হাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমার আমেরিকান-ইউরোপিয়ান বান্ধবীরা যে উপমহাদেশের ছেলেদের রেইসিস্ট, কাওয়ার্ড আর সুবিধাবাদী বলে, সেটার বেশ ভালো একটা উদাহরণ এই লেখাটার পেছনে কিছু মানসিকতা! খুব অবাক হলাম, আসলেই

শরতশিশির, আমার মানসিকতাটা বলছি। আমি যদি কখনও কোন সাদা মেয়েকে ভালোবাসি, তাকে আমি বিয়ে করবো, তবে সেটা পাসপোর্টের জন্যে নয়। ভালোবাসার জন্যে। আমি বিরক্ত হই যখন দেখি কেউ পাসপোর্টের জন্যে একটা সাদা মেয়েকে বিয়ে করে এবং পাসপোর্ট পাবার পর সেই মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে এবং ফলস্বরুপ জাতিগত ভাবে গাল শুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আমার এই লেখার পুরোটাই সাদা মেয়েদের প্রতি অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ স্বরুপ লেখা।

হরফ এর ছবি

সকালটা বেশ তেতো হয়ে গেল আপনার "চিন্তাভাবনা" পড়ে। আমার যা বক্তব্য ছিল তা দেখছি অন্যরা আগেই বলে দিয়েছেন, তাই স্রেফ একটা ফিডব্যাক দিয়ে যাই। উপমহাদেশ থেকে ঠিক কতজন প্রতিবছর পশ্চিম গোলার্ধে আসে আপনি জানেন? আপনি তার কতজনকেই বা চেনেন/দেখেছেন বলুন যে আপনার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জ্ঞানবান হবো? এইটা হল আপনার লেখার স্ট্র্যাটেজিক মিস্টেক ।ভবিষ্যতে যখন-ই এইজাতীয় রেসিস্ট, কালচারালি বায়াস্ড "চিন্তাভাবনা" মূলক লেখা লিখবেন তখন চেষ্টা করবেন সেগুলি মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্য স্ট্যাটিসটিকস দিয়ে ব্যাপ-আপ করার।
-----------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এ বিষয়ে কিছু রেফারেন্স একটু পর পোস্ট করবো। পরামর্শের জন্যে ধন্যবাদ।

দ্রোহী এর ছবি

লেখার বিষয়বস্তু পছন্দ হয়নি।

যেথা যার মজে মন,
কিবা হাঁড়ি কিবা ডোম!

বিয়ে/সম্পর্ক/ভালোবাসার সীমারেখা কোন কিছু দিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব না।

অহেতুক এর ছবি

যারা নিয়াজকে রেসিস্ট, বর্ণবাদী টাইপে ভাবতে চাইছেন তারা এ লেখাটি কালো-সাদা, বর্ণবিদ্বেষী এসব বাইরে রেখে একটু রিরাইট করে দেখাবেন? পোস্টের এক তৃতীয়াংশ হলেও হবে।

হরফ এর ছবি

অহেতুক, উইকিপিডিয়া থেকে তুলে দিলাম কাছাকাছি একটি লেখা।
উদাহরণস্বরূপ এই নিন :

"According to France's 1999 Census, 38% and 34% of male and female married immigrants, respectively, are intermarried. The highest intermarriate rate was for European immigrants, mainly Spanish and Italian, nearly 50% of whom have had intermarriages. 30% of North African immigrants and 20% of Portuguese immigrants have also had intermarriages. The lowest intermarriage rate was for Turkish immigrants, with 14% for married males and 4% for married females."
http://en.wikipedia.org/wiki/Interracial_marriage

এবার থ্যাংকু বলুন হাসি
------------------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

অহেতুক এর ছবি

সেটাই। নিয়াজ পারত উইকি থেকে কিংবা আয়ারল্যাণ্ডের কোনো পত্রিকা থেকে এরকম পরিসংখ্যান টাইপ আর্টিকেল বঙ্গানুবাদ করে দিতে। বোকা ছেলে, এবার সামলাক বর্ণবাদীর ঠ্যালা।

'নোংরা কালো' পড়ে আমি বুঝলাম ওরকম ব্ল্যাক ম্যান যার ময়লাজ্যাকেট-প্যান্ট দুটোই জড়াজড়ি করে ঝুলঝুল করছে। কেডসের অবস্থা যাচ্ছে তাই। মাথায় ঝরি লাগানো ক্যাপ, চোখে বিশাল মারকারি সানগ্লাস, হাতে বিয়ার। সিগারেট জ্বালিয়ে একটা শাদা মেয়েকে (আচ্ছা হোয়াইট গার্লকে কী বলব?) জড়িয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে।

সবার মন্তব্য পড়ে দেখছি ভুল বুঝেছি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমি আসলে রেসিজম বা এধরণের কিছু এখানে আনতে চাই নি তবে অসতর্কতার জন্যে এবং অপরিণত লেখার কারণে চলে এসেছে। তবুও আপনি বিষয়টি প্রথমে যেভাবে দেখেছেন, আসলে লেখার সময় আমি অনেকটা সেভাবেই ভেবে লিখেছি। পরে বুঝতে পেরেছি এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে লেখার সময় আরো সাবধানী হতে হবে।

শুভেচ্ছা রইলো।

মামুন হক এর ছবি

আগাগোড়া অস্বস্তি নিয়ে লেখাটা পড়লাম। ব্যাখ্যা দিতে ইচ্ছে করছে না। ভাই আগামীতে এ ধরনের সোশিও-কালচারাল অ্যানালাইসিস করার আগে, জাজমেন্টাল মনটারে একটু ছুটি দিয়ে বসলে ভালো করবেন। আর হ্যা, পড়াশোনার পরিধি আরেকটু বাড়ালেও মন্দ হবে না। জটিল জটিল কিছু বিষয়ে একেবারে একচোখা নাইভের মতো কিছু কথা বললেন।

দুঃখজনক। ভবিষ্যতে আপনার কাছ থেকে বস্তুনিষ্ঠ এবং পাঠযোগ্য লেখা আশা করছি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মামুন ভাই, ভবিষ্যতে সতর্ক হবো এবং পাঠযোগ্য লেখা দেয়ার সর্বাত্বক চেষ্টা করবো। শুভেচ্ছা রইলো।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

লেখাটির কয়েকটি তথ্য নিয়ে একটু বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছি-

(১) আপনি নন-ইউরোপীয়ান হয়ে যদি কোন ইউরোপীয়ান নাগরিকের (নন আইরিশ) সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন/ লিভ টুগেদার করেন তাহলে আয়ারল্যান্ডে অনির্দিষ্ট-সময়কাল কাজ করতে পারবেন আপনার স্পাউজের কল্যানে। কিন্তু নন আইরিশ বিয়ে করার জন্য আইরিশ পাসপোর্ট পাওয়া যাবে? ব্যাপারটা আমার বেশী বেশী মনে হচ্ছে - এটা একটু চেক করে দেখবেন কাইন্ডলি ? আমি যতদূর জানি শুধু আইরিশ বিয়ে করলেই এই দেশীয় পাসপোর্ট পাওয়া যায়। (ওয়ার্ক পরমিটের কথা বাদ দিয়ে)

(২) ইউরোপের অনেকগুলো দেশের লোকেরা বিনা ভিসায় ৯০/১৮০ দিনের জন্য আমেরিকা/ অস্ট্রেলিয়া/ কানাডায় বেড়াতে যেতে পারে। আবার আমেরিকান/ কানাডান/ অজি পাসপোর্টধারীরাও ইউরোপের প্রায় সবদেশেই একইভাবে বিনা-ভিসায় আসতে পারে। কিন্তু আইরিশ পাসপোর্ট থাকলে আমেরিকা/ কানাডায় বিনা ওয়ার্ক পারমিটে কাজ করা যাবে (বা ভাইস ভার্সা) - এটার কোন লিংক আছে কি ভাই আপনার কাছে?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এ বিষয়ে আমি তথ্যসূত্র খুঁজতে শুরু করেছি। পেয়ে গেলে এখানে পোস্ট করবো।

শুভেচ্ছা রইলো।

দিগন্ত এর ছবি

একই প্রশ্ন আমারও। আচ্ছা এই দুটো উপপাদ্য ভুল হলে লেখাটার মূল বিষয় নিয়ে আলোচনাটা অন্যরকম হয়ে যায়।

লেখকের লেখায় আরেকরকম বর্ণান্ধতার নির্দেশিকা আছে, কেন ইউরোপীয় দেশগুলো অ-ইউরোপীয়দের ইমিগ্রেশনে আলাদাভাবে দেখে? এটা কি বর্ণবাদ নয়?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

২ নম্বরটা ভুল নয় কেননা আমার আইরশ বন্ধুরা এ্যামেরিকা গিয়ে কাজ করে। ৯০ দিনের জন্যে একটানা কাজ করতে পারে। এরপর আবার কোথাও ঘুরতে এ্যামেরিকা থেকে বের হয়ে যায় এবং তারপর ঢুকলে আবার ৯০ দিন কাজ করতে পারে। এটাকে এবার আইরিশ সরকার ২ বছরে নেয়ার জন্যে লবিং শুরু করেছে (টিভিতে দেখেছি)।

১ নম্বরটা জানতে হবে। একজন বাংলাদেশী ভাই পোলিশ বিয়ে করেছেন এবং পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করেছেন। কী করে সেটা তিনি করলেন সেটা জেনে এখানে জানাবো।

যদি এই দুটো ভুলও হয়, তবুও লেখার উপপাদ্য এতটুকু বদলাবে না। ইইউ-এর পাসপোর্ট পেয়ে গেলে সে ইইউর যেকোন দেশে থাকতে এবং কাজ করতে পারবে। এ্যামেরিকা-ক্যানাডা এখানে বিরিয়ানীর সাথে বোরহানী। খুব বেশি হলে বোরহানীটা মিস হবে।

লেখকের লেখায় আরেকরকম বর্ণান্ধতার নির্দেশিকা আছে

হলিউড চলচিত্র সুপার ব্যাড-এর কথা মনে পড়লো!

দুর্দান্ত এর ছবি

আইরিশ নাগরিকত্ব পেতে হলে আইরিশ নাগরিককেই বিয়ে করতে হবে, সেটাও নানান শর্ত মানার পরে। নিচে আইরিশ অভিবাসন অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন পড়ে দেখুনঃ

" If you are married to an Irish citizen and living in the island of Ireland, you may meet special conditions for naturalisation based on that marriage if:
• You are of full age (i.e. eighteen years or older, or married if younger than eighteen).
• You are of good character.
• You are married to your Irish citizen spouse for a period of not less than 3 years.
• Your marriage is recognised under the laws of the State as subsisting.
• You and your Irish citizen spouse are living together as husband and wife and your Irish spouse submits to the Minister an affidavit in the prescribed form to that effect.
• You have had immediately before the date of the application a period of one year’s continuous residence in the island of Ireland, and
• You have had, during the 4 years immediately preceding that period, a total residence in the island of Ireland amounting to 2 years.
• You intend in good faith to continue to reside in the island of Ireland after naturalisation and
• You make a declaration of fidelity to the nation and loyalty to the State (see below for the point in the process at which this is required)."

এক ই ইউ দেশের নাগরিকের অ-ইউরোপীয় স্বামী/স্ত্রীকে আরেক ই ইউ দেশের নাগরিকত্ব দানের নিয়মটির কথা আপনার কাছে প্রথম শুনলাম, এবং অবিশ্বাস করলাম।

একজন বাংলাদেশী ভাই পোলিশ বিয়ে করেছেন এবং পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করেছেন।

শুরুতেই খোজ নেয়া যেতে পারে পোলিশ বংশোদ্ভুত সেই ভদ্রমহিলার বর্তমান নাগরিকত্ব কি। পোল্যান্ডে জন্মেছে বলেই, আর পোল্যান্ড ই ইউ এর অন্তর্গত বলে যে তিনি আইরিশ নাগরিকত্ব নেননি, সেটা কেন ভাবছেন?

দিগন্ত এর ছবি

আপনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে ভারতীয়রাও একটানা ৯০ দিন কাজ করে, কানাডা হয়ে আবার ভিসা রিনিউ করিয়ে নিয়ে এসে আবার কাজ করে। এটা বি-ওয়ান ভিসাকে না মেনে করা বে-আইনী কাজ। দেশে সব কোম্পানীই এভাবে লোক পাঠায় - বিশেষত যখন পাঁচ-ছ'মাসের কাজ থাকে।

মাল্টিন্যাশনালদের ক্ষেত্রে আরো সহজ ব্যাপারটা। টাকাটাও দেয় ডলার টাকায় রূপান্তর করিয়ে - অর্থাৎ দেশে। বিদেশে থাকাকালে নিজের টাকায় চালাতে হয়, অথবা কোম্পানীর থেকে Advance নিয়ে। থাকা খাওয়া কোম্পানী দেয় - সাপ্তাহিক হিসাবে reimburse করে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তাসনীম এর ছবি

আমেরিকার ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের তথ্য এখানে পাবেন।

http://en.wikipedia.org/wiki/Visa_Waiver_Program
http://travel.state.gov/visa/temp/without/without_1990.html

যতদূর জানি ভিসা ওয়েভার শুধু ভ্রমণের জন্য, এটা নিয়ে আসলে আমেরিকাতে বৈধভাবে কাজ করা যায় না। কিন্তু এটার ভায়োলেশন মনে হয় বেশ ব্যাপক, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামায় বলে মনে হয় না।

নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে ট্যুরিস্টদের ঘোরার জন্য এক ধরনের রিকশা আছে, আমাদের রিকশাওয়ালা ছিল সার্বিয়ান। প্রতিবছর সে সামারে রিকশা চালাতে আসে। সে বলেছিল যে অনেকেই আসে একাজে।

এছাড়া মিডওয়েস্টে গাড়িতে করে আইসক্রিম বেচার কাজ করতেও দেখেছি ইউরোপ থেকে আগত ছাত্রদের। দেশিভাইদের মাধ্যমে শর্ট টার্ম কাজ রেডি করেই আসে ওরা, নইলে তিন মাসে কাজ খুঁজে পয়সা তুলতে বেশ কষ্টই হবে।

এজন্যে পোলিশ কমিউনিটিতে এখন ধীরেধীরে এটা ছড়িয়ে গিয়েছে যে পাকি মাত্রই “লম্পট”, “বদ” এবং “ধর্মান্ধ” হয়।

পাকিস্তানিদের নিয়ে আমার নিজের ধারণাও তাই। পোলিশদের বোধদয়ের জন্য ওদেরকে সাধুবাদ।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রিফাত [অতিথি] এর ছবি

নিয়াজ ভাই,

যথেস্ট নেগেতিভ মন্তব্য পেয়েছেন এরিমধ্যে এই পোস্টএর জন্য। ঝাড়ি ও খেয়েছেন ভালই। আমি র ঝাড়ির লিস্ট বাড়াবো না। তবে একটা কথা বলি, লেখার বিষয়বস্তু বাস্তব নিষ্ঠ। সেইজন্য ধন্যবাদ। বিষয় ভাল লাগ্‌লেও লেখার স্টাইল ভাল লাগেনি। আর একটা কথা, ইউরোপিয়ানরা বা আমেরিকানরা সাদা, আফ্রিকান্‌রা কালো, আর আমরা কি???? ক্যারামেল।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমরা বাদামী। তাছাড়া 'অহেতুক' ভাই যে লিঙ্কটা শেয়ার করেছেন সেখানেও দেখাচ্ছে আমরা আসলে কী। ইউকে-তে যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ্যাপ্লাই করার সময় এই ফরমটা পূরণ করতে হয়। এ্যামেরিকা এবং ক্যানাডাতেও এরকম একটা ফর্ম পূরণ করেছি কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে।

অহেতুক এর ছবি

[img=auto]Image and video hosting by TinyPic[/img]

Image and video hosting by TinyPic

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এই ফর্মটা দিব বলে ভাবছিলাম। কিন্তু তার আগেই আপনি আপ করায় অনেক ধন্যবাদ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কোনো দেশের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না এমন আচরণে আমি সমালোচনা করতে পারি না। ইউরোপীয়ান পাসপোর্ট আর ভারতীয় উপমহাদেশের পাসপোর্টের যে সুবিধা-অসুবিধার বৈষম্য, তা আপনিও কিছুটা বলেছেন। এই অসুবিধাকে কাটাতে কেউ যদি পাসপোর্ট পাওয়ার সোজা রাস্তাটা বেছে নেয়, তাহলে তাকে দোষ দেয়া যায় না। প্রেমের সততা নির্ধারণের বিষয়টা দ্বিপাক্ষিক, তৃতীয় পক্ষ হয়ে সেটাকে বিচারের আওতায় আনা টাফ।

আর বিয়ে করলেই আজীবন থাকতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। এদিকটা দেখার দায়িত্ব ইউরোপীয়ান দেশগুলোর নীতিনির্ধারকদের। এই নীতি নির্ধারনের ভিতরের প্যাঁচগুলোও অনেক সময় এরকম আচরণে বাধ্য করে। আপনি বা আমি স্টুডেন্ট হিসেবে বিদেশে এসে এখানে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ইজি, তারপরেও ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে দৌঁড়ের ওপরে থাকতে হয়; আর যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড অপেক্ষাকৃত অসুবিধাজনক, তাদের অবস্থা চিন্তা করে দেখবেন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

স্নিগ্ধা এর ছবি

অছ্যুৎ বলাই, আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে আইনের চোখে অপরাধ না হতে পারে, কিন্তু তাই বলে কি সমালোচনার বাইরে চলে যায়? নৈতিকতা বা মানবিকতার কী হবে? পাসপোর্ট পাওয়ার অসুবিধা কাটানোর জন্য কেউ কেউ যে সোজা রাস্তাটা বেছে নিচ্ছে সেটাতে যদি দুপক্ষই সম্মত থাকে, কিচ্ছু বলার নেই। কিন্তু, একপক্ষকে যদি প্রতারণা করা হয়, আমার চোখে সেটা অবশ্যই দোষের।

এমন নয় যে মেয়েরা এমন কাজ করে না। টাকা কিংবা পাসপোর্টের কারণে মেয়েরাও বিয়ে করে। অন্যপক্ষ যদি সেটা বুঝেও সম্মত থাকে, অথবা জানুক না জানুক, পরে জানলেও তার কিছু না যায় আসে - কোন কথাই নেই। আর, সেটা না হলে - ঐ মেয়েরাও একইভাবে অনৈতিক/প্রতারণামূলক কাজ করে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

স্নিগ্ধাদি, প্রতারণাও কিন্তু আইনি বিষয়। নীতি থেকে আইনের উৎপত্তি; কিন্তু সমষ্টির নীতিকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে গেলে আইনই তার মাপকাঠি। আইনের মাধ্যমেই তাই নীতির প্রকাশ করতে হয়। যেমন, জার্মানিতে বিয়ে করার সাথে সাথে পাসপোর্ট পাওয়া যায় না, অন্তত ৩ বছর ঘর-সংসার করতে হয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

তিন বছরের নিয়মটা জার্মানীর মত আয়ার‌ল্যান্ডেও আছে। কিন্তু পাসপোর্টটা পেয়ে যাওয়ার পর তারা অন্য রূপ দেখাতে শুরু করে। আমি মূলতঃ এই বিষয়টার বিরোধীতা করে লেখাটা লিখেছি।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সব সময় কি আইনই শেষ কথা? একজনের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে বিয়ে করে যদি পাসপোর্টটা হাতিয়ে নেয়া হয় এবং এর পর তার সাথে আর সম্পর্ক না রাখা হয়, এটাকে কি সমর্থন করা যায়?

নাশতারান এর ছবি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী,

পোস্ট পড়লাম। উপরের সব মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যও পড়লাম।

বিদেশি পাসপোর্টের আশায় উপমহাদেশের ছেলেরা প্রেমের ফাঁদে ফেলছে বিদেশিনীদের। উপমহাদেশের ছেলেরা তাদের চিরাচরিত আবেগী সংস্কৃতিবশত মেয়ে পটাতে ওস্তাদ। সেই ফাঁদে পা দিচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্ক সাদা মেয়েরা। স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে ছেলেরা তাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

লেখার মূল বক্তব্য এ-ই। এর বাইরে সাদা-কালো-বাদামি নিয়ে যেসব কথাবার্তা এসেছে সেগুলো সম্ভবত রক্ষণশীল সংস্কারবশত। ওরা খারাপ, আমি ভালো বোঝাতে গিয়ে বেশ আত্মঘাতী কথাবার্তা বলে ফেলেছেন। না বুঝেই বলেছেন।

সম্পর্কের ব্যাপারগুলো খুব জটিল মনে হয় আমার কাছে। জীবনে মাত্র একবার দুই বন্ধুর হৃদয়ঘটিত সমস্যার সুরাহা করতে গিয়েছিলাম। শেষমেষ তাদের ঝামেলা মিটে গেছে, আমি জান হাতে নিয়ে কোনোমতে পালিয়ে বেঁচেছি। এরপর থেকে কানে ধরেছি। ভালোবাসা, বিয়ে এসব ব্যাপারে কে কী করলো, কী করলো না, কেন করলো, কেন করলো না এগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করব না।

এদেশের যে ছেলে বাইরে গিয়ে পাসপোর্টের জন্য প্রেম করে, সে এদেশে থাকলে মেয়ের বাপের পয়সার জন্য প্রেম করত। মানুষের কিছু মৌলিক স্বভাব কখনোই বদলায় না। শিক্ষা দিয়ে খানিকটা রেখেঢেকে রাখা যায়। সময়ে সময়ে সেটাও বেরিয়ে পড়ে। আপনার খারাপ লেগেছে, কারণ আপনি বোঝেন। যে বোঝে না তাকে আপনি বোঝাতে পারবেন না শত চেষ্টা করলেও। তাই সে চেষ্টা করতে গিয়ে কারো ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ না করাই ভালো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

বুনোহাঁস ভাই, আমারও অবস্থা এখন কানে ধরার মত। মন খারাপ মনে হচ্ছে কোন দুঃখে লিখতে গিয়েছিলাম এই টপিকে। এত সমালোচনা হবে বুঝতে পারলে লিখতাম না। ভবীষ্যতে এ ধরণের টপিক এড়িয়ে যাবো।

চমৎকার মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।

লাল-মডু এর ছবি

সচলায়তনে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ভঙ্গী গ্রহণযোগ্য নয়। আপনার লেখা পরিবর্তন করতে চাইলে পরিবর্তিত লেখা contact এট sachal বরাবর ইমেইল করতে পারেন। এক্ষেত্রে অতীত উদাহরণ স্মর্তব্য।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমার এই লেখাটা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ভঙ্গী নিয়ে লেখা নয়। এখানে কোন ধর্মকে নিয়ে কটুক্তিও আমি করি নি। যে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে - অর্থাৎ 'নোংরা কালো' শব্দটা, সেটা একটা ভুল বোঝাবোঝি যা আমি মাহবুব মুর্শেদ ভাই এর মন্তব্যের নিচে ব্যাখ্যা করেছি। যদি সচলায়তনের মডারেশন প্যানেল মনে করেন যে শব্দটা ওভাবে থাকা উচিত নয়, আমি লেখাটার আরেকটা পরিবর্তিত ভার্সন মেইল করে দেব উপরে দেয়া ইমেইল এ্যাড্রেসে।

লেখাটা যেহেতু ইন্টাররেসিয়াল ম্যারেজ নিয়ে, তাই বর্ণের উল্লেখ আমাকে বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে। যেমন সাদা মেয়ে অথবা বাদামী ছেলে শব্দগুলো ব্রিটিশ আইলস-এ অফিস-আদালত-বিশ্ববিদ্যালয়ের ডকুমেন্টে প্রচলিত। আশা করছি এই শব্দগুলোর জন্যে লেখাটা বর্ণবাদের দায়ে দোষী হবে না।

আপনাদের স্বীদ্ধান্তের অপেক্ষায় রইলাম।

কালো-মডু এর ছবি

শুধু ওই শব্দ দুটি নয়, বরং আপনার পুরো দৃষ্টিভঙ্গীর অনেকখানি আপত্তিকর মনে হয়েছে। লেখার মূল বিষয় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিষয়টি সেনসিটিভ এবং যতটুকু মনোযোগের দাবী করে ততটুকু মনোযোগ দেয়া হয়নি। উপরন্তু বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যে আপনার অবস্থান আরো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

এতো গুলো মন্তব্যকারী আপনার দৃষ্টিভঙ্গীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরও যদি আপনি আপনার লেখার সমস্যা বুঝতে না পারেন তাহলে বিপদ। হয় সত্যি সত্যি আপনার দৃষ্টিভঙ্গী সাম্প্রদায়িক নাহয় আপনি ভুল অ্যাপ্রোচে আলোচ্য বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনাকে এখন বেছে নিতে হবে আপনি কী করতে চান।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি আমার ভুলটা ধরতে পেরেছি। যে বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি এসেছে, সেগুলো বাদ দিয়ে এবং কিছু রেফারেন্স যুক্ত করে লেখাটাকে রিরাইট করে আমি আজ রাতে বা কাল সকালের মধ্যে ইমেইল করবো। রিরাইটটা আজই করতে পারতাম, কিন্তু আজ সারা দিন খুব ব্যস্ত কাটবে। আশা করি এতটুকু সময় সচলের লেখক হিসেবে সচল আমাকে দেবে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমার লেখাটায় আমি মূলতঃ যে বিষয়টাকে হাইলাইট করতে চেয়ে ছিলাম সেটা হচ্ছে বিয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট পাওয়া। এক্ষেত্রে পাকিস্থানীরা এখানে সবার আগে রয়েছে। সে বিষয়ে কিছু রেফারেন্স শেয়ার করছি। আরেকটা বিষয়, আমার লেখার মূল উদ্দেশ্য পাকিস্থানীদের বোঝানো নয়। তারা গোল্লায় গেলেও আমার কিছু যায় আসে না (ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই জাতিটাকে পছন্দ করি না। এই সংকীর্ণতা থেকে বের হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না)। তবে তাদের কর্মকাণ্ডে আমাদের গাল শুনতে হয় বলে খারাপ লাগে - এটা তারই মৌন প্রতিবাদ।

লিঙ্কগুলো এখানে দিচ্ছি:
১।
Ireland Latest Victim of Pakistani Bogus Marriage Scam

২।
Ireland: Reports on Marriage of Convenience Scam

উপরের দুটো রিপোর্ট ২০১০ সনের। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন কোন জাতিটার নাম প্রথমেই এবং বারবার ঘুরে ফিরে আসছে।

এই দুটো লিঙ্ক পুরোনো।
৩।
EU to look into “fake marriage” immigration loophole

৪।
Pakistan is a `Chick Magnet’

দিগন্ত এর ছবি

লিঙ্কগুলোর কোনোটাই প্রথম শ্রেণীর নিউস মিডিয়া থেকে নেওয়া নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অমিত এর ছবি

আর কিছু না হোক, "কালো" শব্দটার বিবিধ ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

অমিত লিখেছেন:
আর কিছু না হোক, "কালো" শব্দটার বিবিধ ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

একটা প্যারায় মাত্র চারবার ব্যবহৃত কালো শব্দটা আপনাকে মুগ্ধ করলো, অথচ এতবার ব্যবহৃত পাকি শব্দটা এবং তাদের কর্মকাণ্ড আপনাকে এতটুকু নাড়ালো না? এবার আমার মুগ্ধ হওয়ার পালা। হাসি

অমিত এর ছবি

চারবার না, "কালো শব্দটা ব্যবহার করেছি তাদের বিশেষ অঙ্গের আকৃতির কারণে"- এই একটিবারের জন্যই আমি আসলে মুগ্ধ। আর তার সংগে যখন নোংরা শব্দটা যোগ করা হল, তখন আসলে অনুভূতিটা হয় বেয়ন্ড মুগ্ধতা।

অমিত এর ছবি

আর পাকিদের কর্মকান্ডে আমার আসলে কোনও অনুভূতিই হয় নি। ইংল্যান্ড অথবা ইউরোপিয়ান কোনও দেশ বলে হয়ত ওরা চক্ষুলজ্জায় বিয়ে করছে। নাহলে রেপ করত, আর তারপর রেপড হওয়ার অপরাধে মেয়েগুলাকে পাথর ছুড়ে হত্যা করত। এই হল পাকিদের নিয়ে আমার ধারণা।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

সহমত।

আমারও অনুভুতি হতো না, কিন্তু কষ্ট পাই যখন দেখি আমাদের ছেলেরা ওদের অনুসরণ করতে চায়। ওরা অনুসরণযোগ্য কোন জাতিই নয়।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

আমার মনে হয় না লেখাটায় বর্ণবাদ ফুটে উঠেছে। তবে বোঝা যায় লেখক সচেতনতা ও দূরদর্শীতার পরিচয় দেন নি শব্দচয়ন ও মনোভাব প্রকাশের জন্য। ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম: তিনি একটা বিষয়কে তুলে ধরতে চাচ্ছেন কিন্তু সামগ্রিকভাবে কীভাবে তুলে ধরবেন তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত।

"কালো" বা ব্ল্যাক'কে মনে হয় না বর্ণবাদি শব্দ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বরং এটাকে একটা জেন্ডার বা সম্প্রদায়কে নিয়ে বলতে বোঝানো হয়। যেমন আমরা প্রায় বলি ব্ল্যাক আমেরিকান, ফার্স্ট নেশন ইত্যাদি। কিন্তু তার পূর্বে "নোংরা" বিশেষণের আবির্ভাব মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যায়। এই লেখার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।

নিয়াজ মোর্শেদ, আপনার উচিত ছিলো সামাজিক ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন তথ্যাবলি নিয়ে সামগ্রিকভাবে পোস্ট দেয়া। ফলে ভুল বোঝাবুঝি হতো না।

তবে লেখাটি পাঠে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন জাগলো। উইকি ঘাঁটতে হবে।

==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আশরাফ ভাই, প্রথমেই অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে লেখাটা পড়ে গঠনমূলক মন্তব্যের জন্যে। আমি কিছু আর্টিকেলের লিঙ্ক শেয়ার করেছি (এখনও মডারেশন পেরিয়ে আসে নি) আপনার মন্তব্যের ঠিক উপরেই। সেখানে একটু চোখ বোলালে দেখতে পাবেন চিত্রটা এখানে কেমন হচ্ছে দিন দিন।

শুভেচ্ছা রইলো।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

তেমন কিছু বলব না, শুধু একটা কথাই বলি, টপিকটা একটু স্পর্শকাতর।

নারী-মদের ব্যাপারে যেটা বললেন, সেটা কিন্তু মদ-শুয়োরের মাংসের ক্ষেত্রেও খাটে। কিন্তু এইসব একটু সাবধানে বলতে হয় হাসি

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

শামীম এর ছবি

লেখাটাতে আমার কোনো সমস্যা হয় নাই। "নোংরা কালো" কথাটা পড়ার সময় একটু ধাক্কা খেলেও কয়েক সেকেন্ড পরই ওটা যে অপরিচ্ছন্নতাকে বুঝিয়েছে, সেটা অনুমান করে নিয়েছিলাম। কারণ, একজন সচল লেখক কখনই কালোদেরকে ঢালাওভাবে নোংরা-মানসিকতার এমন রেসিস্ট মন্তব্য করবেন না বলে বিশ্বাস করি। যা হোক, ব্যাপারটা পরবর্তীতে লেখকও মন্তব্যের মাধ্যমে বলে দিয়েছেন। তবে একই ভাবে, নোংরা সাদাদের নিয়েও তুলনীয় মন্তব্য থাকলে বিষয়টার ব্যালেন্স ভালো হত বলে মনে হয়।

কিছু মন্তব্য দেখলাম অত্যন্ত সংবেদনশীলতার বহিঃপ্রকাশ। নিজে অতটা সংবেদনশীল নয় বলে (কারণ: সংসার করতে গেলে অত সংবেদনশীল হওয়া দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকারক) লেখাটা খারাপ লাগেনি; মূল বক্তব্য বুঝতেও অসুবিধা হয়নি (আমার ধারণা মূল বক্তব্য ধরতে পেরেছি চোখ টিপি ... বোঝাটা ভুলও হতে পারে খাইছে )।

এখন বিদেশি পাসপোর্টের জন্য বিবাহের ব্যাপারে নিজের কিছু জানা শেয়ার করি। ইউরোপ আমেরিকার চেয়ে জাপান এ বিষয়ে খুবই কড়া। এরা জাতিগত মিশ্রন চায় না। জাপানী মেয়ে বিয়ে করলে পাসপোর্ট পাওয়া যায় - সম্ভবত জাপানি পাসপোর্ট পাওয়ার এটাই একমাত্র উপায়; কিন্তু যদি কোনো কারণে বিয়ে না টেকে (বিচ্ছেদ/মৃত্যূ) তাহলে পাসপোর্টও বাতিল হয়ে যায়। ১০ বছর নিয়মিত ট্যাক্স দিয়ে জাপানে থাকলে বিয়ে ছাড়াই পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়; কিন্তু পাসপোর্ট দেশীই থাকবে। আবার মনবসু স্কলারশীপধারীদের সরকারী বৃত্তি বলে ট্যাক্স=শূণ্য। তাই এই সময়টুকু ট্যাক্স দেয়া হয়েছে বলে ধরা হয় না ... কাজেই শর্টকাট কোনো উপায় রাখেনি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ধূ্সর সপ্নগুলো [অতিথি] এর ছবি

নিয়াজ ভাই,
সুন্দর, চিন্তাশীল একটা লেখা পড়ে ভাল লাগল, আপনাকে এই জন্য ধন্যবাদ।

আপনার লেখাটা পড়ে একটা জিনিস চিন্তা করে দেখালাম, যে বিষয় আপনি হাইলাইট করতছেন তার কারনটা মূলত মূল্যবোধ এর অবক্ষয়। মূল্যবোধ এর অভাব ই পাকিদের এই গুলো করতে বাধা দেয় না কিন্তু আপনাকে বা আর দশ জন কে দিচ্ছে। ওয়েস্টার্ন সংস্কৃতি দেখে দেখে আমাদের ইয়াং জেনারেশন তা অডপ্ট করছে, এবং দূঃসংবাদ হলেও এটা সত্যি যে, বাংলাদেশ এর ইয়াং জেনারেশন এর মধ্যেও এর সংক্রমন রেইট বাড়ছে।

শামীম ভাই, জ়াপানী রা এই অপসংস্কৃতির মধ্যে নিজেদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য এরকম কড়া নিয়ম করেছে।

ধূ্সর সপ্নগুলো

ন্যাশ এর ছবি

ওয়েস্টার্ন সংস্কৃতি কেন অপসংস্কৃতি বুঝিয়ে বলবেন? আপনার কথাটায় পুরো না হলেও কিছুটা ধর্মান্ধতার গন্ধ পাচ্ছি।

রাত্রি এর ছবি

প্রথমে লেখাটি পড়ে আমারো অনেক কিছূ বলার ছিল। পরবর্তিতে দেখি অনেকেই অনেক কথা বলেছে। তাই আমি আর নতুন করে কিছু বলছি না। সম্ভবত এ ধরনের লেখা আপনার প্রথম ছিল। এ কারনেই লেখাটি ত্রুটিযুক্ত। আশা করি আপনার ভুল গুলো বুঝতে পেরেছেন। সর্বশেষ কথা, আপনার মূল বিষয়বস্তু আমার ভালো লেগেছে। মানুষ দিন দিন মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে !

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখার স্পিরিট যদি পাসপোর্ট হাসিলের জন্যে যে প্রেম-বিবাহ-বাণিজ্য হয়, তার বিরুদ্ধে, তবে একমত। যদিও শব্দচয়ন এবং আর্টিকুলেশন যথেষ্ট আপত্তিকর বলে করা যেতে পারে, যথেষ্ঠ ভূল বোঝাবুভির সৃষ্টি ইতোমধ্যেই হয়েছে।

পাসপোর্ট হাসিলের জন্যে বিয়ে-বানিজ্য, আজ আর নতুন কোনও বিষয় না। টাকা বা প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে, দুটোই অনেক পুরোনো ইস্যু। তবে ইস্ট ইউরোপিয়ান মেয়েদের বিয়ের ব্যাপারে আপনার অবজার্ভেশন সঠিক। আমার বিলাতপ্রবাসী কিছু পাকিস্তানী বন্ধুরা এটা স্বীকার করে। ইস্ট ইউরোপিয়ান মেয়েদের ইকোনোমিক ভালনারেবিলিটি মূলত ওদের এই রাস্তায় নিয়ে আসে। ওদের কনভিন্স করা বেশ সহজ। আমার কর্মজীবনে অনেক পাকিস্তানীর সাথে পরিচয় হয়েছে এবং ওদের চরিত্র সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছি। পাকিস্তানী ছেলেরা প্রচন্ড কামুক এবং ওরা কাম চরিতার্থ করার জন্যে ডেসপারেট হতে পারে, অনৈতিক কাজ করতেও ওদের বাধে না। আমার পাকিস্তানী এক্স-বসের জবানিতেই শুনুন-

আমরা তখন (৯০এর দশকে) লন্ডনে কিছু পাকিস্তানী ছাত্র একটা দোতলা বাড়িতে মেস সিস্টেমে থাকি। মেস ম্যানেজার একজন পাকিস্তানী আদুভাই। এক সন্ধ্যায় এক ইস্ট ইউরোপিয়ান যুবতি ছোট্ট একটা বাচ্চা কোলে নিয়ে এসে বাচ্চার খাবার কেনার জন্যে কিছু সাহায্য চাইলো। আদুভাই তাকে হেল্প করার কথা বলে মেসের ভিতরে তার রুমে নিয়ে এসে ফ্রিজ থেকে দুধ বের করে বাচ্চাকে খেতে দিতে বললো। বাচ্চা ঘুমিয়ে পড়তেই আদুভাই এবং মেয়েটা কামলীলায় মেতে উঠলো যা চললো ভোররাত পর্যন্ত। এরপর মেয়েটা আদুভাইয়ের দেওয়া সামান্য কিছু টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলো। এরপর থেকে প্রায় প্রতিরাতে সেই মেয়েটা আসতে লাগলো এবং মাঝে মাঝেই তার অন্য বান্ধবীদেরকে সাথে আনতে লাগলো আদুভাই এবং অন্যান্য আগ্রহী মেস মেম্বারদের জন্যে। তারপর হঠাৎ করেই মেয়েটা আমাদের মেসে আসা বন্ধ করে দিলো ..........

যৌন বিষয়ে জ্ঞ্যানার্জনের আগ্রহ আছে আমার। বিভিন্ন দেশ ঘুরে বা বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে মিশে কিছু ধারণা পাই। কালো মাত্রই যে বিশাল অঙ্গের বা অসীম যৌনক্ষমতার অধিকারী-এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত একটা ধারণা। বিশেষত আফ্রিকান কালোদের ক্ষেত্রে এতথ্য সামান্যই সত্য।

যাইহোক নিয়াজ ভাই, লেখা চালিয়ে যান। সমালোচনাগুলো থেকে আপনার 'নিড ইমপ্রুভমেন্ট' যায়গাগুলো চিহ্নিত করে আরো সুন্দর লেখা লিখতে থাকেন। এধরণের লেখা লেখার আগে সতর্কতার সাথে নিশ্চিত করেন যেন আপনা আর্টিকুলেশন পাঠকদের সামনে আপনাকে একজন রেসিস্ট হিসেবে দাঁড় করিয়ে না দেয়।

রাতঃস্মরণীয়

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

কালো মাত্রই যে বিশাল অঙ্গের বা অসীম যৌনক্ষমতার অধিকারী-এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত একটা ধারণা। বিশেষত আফ্রিকান কালোদের ক্ষেত্রে এতথ্য সামান্যই সত্য।

কস্কি মমিন!

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

নিরলিপ্তমন এর ছবি

মূল লেখা ও মন্তব্য পড়ে একটা প্রচলিত বাক্য মনে পড়ে গেল-
"সত্য কথা একটূ নিরামিষ ও বাঁকা শোনাই বৈকী " ।
যারা চিন্তাশীল পাঠক, তারা লেখকের লেখার ভাবার্থ টা বুঝবেন এমনিতেই যে লেখক তার কথা গূলোতে যদি তথাকথিত বর্ণ বাদী শব্দ ব্যাবহার না করতেন তবে তার মনে ঐ প্রতারকদের প্রতি ক্ষোভটা যথাযথ ভাবে প্রকাশিত হতনা । একটি আম এর ঝুড়িতে ৪০ টি আমের মাঝে যদি ৩০ টি ই পচে যায় , সে ক্ষেত্রে পুরো আমের ঝুড়িটি কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পায় ?
এখানে বর্ণবাদ এর প্রশ্ন ক্যান আসে ?
তাই সকল বিরোধিতাকারীর কাছে আমার আবেদন, সব সময় চেষ্টা করবেন লেখার মূল ভাব উপলবব্ধি করার।
সেটা না করে যদি ছোটো ছোটো কিছু ভূল ধরে সে গুলো নিয়ে টানাটানি করে সময় নষ্ট করেন, তবে বলবো যে আপনার মনটাই সংকীর্ণ , লেখকের মন নয় ।
ব্লগ পড়ে ভাবার্থ বুঝতে শিখুন, ঝগড়া করতে নয় ।
যদি এতটাই ভাষাবিদ হয়ে থাকেন, তাহলে বার বার লেখক এর লেখার অংশ বিশেষ উল্লেখ না করে, একই কথা গুলোর সংশোধনী রূপটা লিখলেই পারতেন ।
তাহলে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মত দেয়া মন্তব্য গুলো পড়ে সময়ই নষ্ট না করে অনেকই আরও দু একটা লেখা বেশি পড়তে পারবে।
লেখার মাঝে ভূল থাকলে সে জন্য লেখক কে আহত করে নিজের সংকীর্ণতার পরিচয় না দিয়ে আপনার মতামত টা লিখে লেখার ধারাবাহিকটা রক্ষা করুণ ।
ব্লগ সাইট কে প্রাণবন্ত করুন, ধ্বংস নয় ।।

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

আমাদের কাজ দিয়ে আমরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে না পারি, অন্তত যেন ম্লান না করে ফেলি সেদিকে যেন লক্ষ্য রাখা হয় সব সময়।

চলুক

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।