মনে কিছু নিয়েন না

নীলকান্ত এর ছবি
লিখেছেন নীলকান্ত (তারিখ: শুক্র, ২০/০৬/২০১৪ - ৪:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলে লেখা শুরু ২০১০ সালের ১৪ এপ্রিল।

তারিখ মনে আছে কারণ কোন কাজ না থাকায় সেদিন বাসাতেই ছিলাম। ঘরকুনো এই আমি তখন অধিকাংশ সময় নেটে আর টিভি দেখে কাটাই। নেটের লাইনের গতি তখন আমার ১৬ কিলোবাইট, একটা গান ডাউনলোড দিয়ে তখন ঘন্টা বসে থাকি, এমন অবস্থা।

সময় বদলাইছে। কাল রাতে নেটের স্পিড দেখে মাথা খারাপ হবার যোগাড়। ১২৫৪ কিলোবাইট স্পিডে সিনেমা ৫ মিনিটে নেমে গেল! ভাল লাগার কথা।
কিন্তু ভালো আমার লাগলো না। কারণ গত কয়েকদিন ধরে অনেক বিষয়ে মেজাজ খারাপ, অনেক কিছু ভেবে মন চিন্তিত।
এর একটা বিষয় হয়তো সচল।

স্পিড বাড়লেও আগের মত সচলে আমি আর ঢুঁকি না। উপরের ঘরকুনো সেই আমি আর ঘরকুনো নেই, আমি আর গান ডাউনলোড করি না, লাইভ স্ট্রিমে শুনি। এবং আমি সচলে আর ঘণ্টার পর ঘন্টা কাটাই না। আমার মতো অনেকে আর ব্লগে সময় দেন না। কেন সময় দেয় না/দেই না সে প্রশ্ন করা জায়েজ হলেও, প্রশ্ন কইরেন না। সৎ উত্তর আসা টাফ হবে।

আগে একটা পোস্ট দিয়ে বসে থাকতাম, কখন একটা কমেন্ট আসবে, আগে দেখতাম কে কি পোস্ট করলো। কখন নতুন পোস্ট আইলো, তা নিয়ে আলোচনা, স্মালোচনা, তুমুল সব আড্ডা।

সত্যি বলতে কি যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, কোথা থেকে আজকের এই আমি, সে উত্তরে সচলের কিঞ্চিত হলেও ভূমিকা আছে, অংশটা খারাপ হতে পারে আবার ভালও হতে পারে। কিন্তু আছে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় বই পুস্তকে যে লেখা দেখতাম, 'মুক্ত মনের বর্হিপ্রকাশ ঘটায়, বিশ্ববিদ্যালয়' তার টিকিটাও পাই নাই আমি। ক্লাস করছি প্রথম দুই বছর (যদিও সাড়ে তিন বছর ক্লাস করছি সেসন জটে), ক্লাসে গেছি এটেন্ডেন্স দিতে, পরীক্ষায় বসছি পাস করতে। কিছু শিখছি বলে নিজের মনে হয়নাই। স্বপ্ন দেখতাম পড়া শেষ করে কোনমতে একটা চাকরি নিব নাহয় টিউশনি করাব। টিউশনি করায়ে ঢাকা শহরে আরামে থাকা যায়।

কিন্তু সমস্যা ছিল আসলে মনের কিছু খোরাক দরকার হয়। অনেকে বলবেন এক্ষেত্রে প্রেমের কথা, প্রেম করলেই তো চলে, আর কি চাই। প্রেমের বাইরেও মন অনেক কিছু ভাবে, আমারও ভাবতো। এবং অন্য অনেক কথার মতো সেগুলো যেকোন জায়গায় বলতে আমি পারতাম না। রাজনৈতিক কথা ছিল, আমার কিছু অবজারভেশন ছিল। আর ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি যত ভাল বন্ধুই হোক না কেন, এই সব না বলতে পারা বিষয়গুলোতে কথা বলতে গেলেই বন্ধুত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়। এরকম হারানো বন্ধুর সংখ্যা অত্যধিক, গোনা যাবে না।

তো ব্লগ লেখা দেখে মনে হইছিল, না এই একটা জায়গা যেখানে আমি এসব কথা একটু হলেও বলতে পারি। ব্লগের সাথে যদিও পরিচয় সচলায়তন দিয়ে না। শুরু হইছিল, যা কিছু ভাল, তাই আলু'র হাত ধরে। প্রথম একটা পোস্ট দিসিলাম, পুরাই ফ্লপ একটা পোস্ট, পোস্টের টাইটেল ছিল এক-দুই টাকার ব্যবসা, ফ্লেক্সিলোড নিয়ে। তেনারা এক-দুই টাকা বেশী নিয়ে যে ব্যবসাটা করে, সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কি নেওয়া যায়। আমি বরং ঐটা লেখার পর আরও বিপদে পড়ে যাই। মানুষজন এসে কমেন্ট করে, উদ্ভট সব কমেন্ট। যদিও তাদের মতে, আমার পোস্টটাই উদ্ভট ছিল। দুনিয়ার কত টাকা গায়েব হইতেছে, আমি আছি এক-দুই টাকা নিয়ে!

তো যাই হোক, এরপর সিদ্ধান্ত নিসলাম, আর যাই হোক লেখবো না। পড়াই ভাল, মাঝে মাঝে কমেন্ট করবো। অন্তত আলোচনায় অংশ নেওয় যাবে। তো বাদ সাধলো, বুনোহাঁসের সচলে দেওয়া এক কমেন্ট। কোন একভাবে সেইটার লিংকে গিয়ে ঝগড়া করছিলাম, বিষয় একদমই খেয়াল নাই। এরপর রাগ করে অতিথি একাউন্ট করা, আর সচলে লেখালেখি শুরু।

তো সেই থেকে শুরু। তারপর প্রথম সচল আড্ডায় যাই, ২০১০ এ। কলেজ বন্ধু সুহান তখন পুরোদস্তুর ব্লগার। সবাই এক নামে চেনে। ওর কাছে থেকে গল্প শুনে একদিন চলে গেলাম আড্ডায়। স্কুলের বড় ভাই থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই, সেদিন সবার সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আমাকে সচল। আড্ডার পর একদিন হঠাৎ করে বাস থেকে নামবার সময় দেখা হয় সবজান্তার সাথে। সেইখান থেকে কোঞ্চিপা। এরপর বাকিটা ইতিহাস।

সচলের সাথে সিলেট যাওয়া, আড্ডা দেওয়া, অপু ভাইয়ের সাথে পরিচয়, হাসান ভাইকে দেখা, উজানগাও-এর ক্যাম্পাসে যাওয়া-সুন্দর একটা ট্রিপ ছিল সেটা। ওহ, সেই একবারই কেবল আলমগীর ভাইয়ের সাথে দেখা হইছে। আর হবে কিনা জানি না।

আসলটাই তো বলিনি। কোঞ্চিপার বাসিন্দাদের সাথে কক্সবাজার ট্যুর। ১৩ বছর পর। পুরা ইনানি থেকে টেকনাফ হাঁটার প্ল্যান। হাঁটা শুরু করার পর প্রথম ১০ মিনিট ভাবছিলাম কেনো যে আইছি! এরপর ঝুপঝাপ বৃষ্টি, ডাবল রংধনু, বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের জয়, সব মিলিয়ে অসাধারণ সুন্দর এক বিকেলে সমুদ্র সৈকতে হাঁটা।

এরপর এনকিদু ভাইয়ের সাথে গাওগ্রামে সাইকেল চালিয়ে বেড়ানো, নজু ভাইয়ের বাসায় রাতের পর রাত আড্ডা, সারা বিকেল পাণ্ডবদা'র জ্ঞানগর্ভ আলোচনা শোনা, টুটুল ভাইয়ের বই নিয়ে কথা, অনিন্দ্যদা'র বাসায় সচল আড্ডা, বই মেলার সচলাড্ডা-মাথার মধ্যে একের পর এক স্মৃতি আসতেই থাকে, আসতেই থাকে।

এই মার্চে দেখা হলো মুস্তাফিজ ভাইয়ের সাথে। আবার কবে দেখা হবে জানি না।

উপরের মানুষগুলোর অনেককেই আর জীবনে দেখবো না, দেখার সম্ভাবনা নেই। তবে মানুষগুলো অন্যরকম কিছু ভাবতো, সবার চেয়ে একটা অংশ হলেও অন্যরকম। আমি তাই হয়তো মাঝে মাঝে তাদের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হই। মাঝে মাঝে এগুলো, ওগুলো, সেগুলোও দেখি।

আসল কথায় আসি। ২০১০-১১-১২ এর দিকে সচলাড্ডা, লেখালিখি আর সারাদিন সচলে থাকা। সুজনদা'র ক্যারিক্যাচার; আরিফ ভাই, নৈষাদ ভাই রণদা, সিমন ভাই, সুমনদা'র লেখা, অনার্য সঙ্গীতের জৈবিক ব্লগ (কোলন ডি)। এই ছিল জীবন, অনেকটা মুক্ত জীবন। অনেক কিছু চিন্তা করতে শিখছি এইখান থেকেই। সত্যি বলছি। কেউ কিছু বললে, তা মাথা পেতে না নিয়ে পালটা প্রশ্ন করতে শিখছি।

এখন আর ওপরে বলা লোকদের অনেকে ব্লগ লেখে না। কেমন জানি লাগে, ভাবতে যে এই মানুষগুলো হারিয়ে গেছে। অন্তত লেখার দিক থেকে। একটু আগে প্রত্যেকটা নাম ধরে ধরে দেখলাম কে কবে শেষ লিখেছে। নাই বা বললাম তারিখগুলো।

মন খারাপ হয়, বয়স বাড়তেছে ভাবতে। আগের অনেক কিছু বদলে যাচ্ছে ভাবতে। দুনিয়ার নিয়ম—বদলানো, তাই বলে সব বদলালে নিজেকে অচেনা লাগে।

সচলায়তনের জন্মদিন আসছে সামনে। আশা করি এই মানুষগুলোর যে যেখানেই আছেন, একটা করে লেখা দিবেন সচলে।

সচলের ইংরেজি সাইটটার দশা দেখেও খারাপ লাগে। আমার মতে ওখানেও কাজ করবার আছে আমাদের। আশা করবো যারা সচলকে এক সময় সারাদিন প্রাণবন্ত রাখতেন, তারা আবার কিছু একটা করবেন। প্রতিদিন দরকার নেই, সপ্তাহে একটা করে পোস্টই নাহয়, নাহলে মাসে একটা। জানলাম কি হচ্ছে আপনাদের জীবনে, আশেপাশে অথবা চিন্তায়।

মনে কিছু নিয়েন না, আমি নিয়মিত এই বিষয়টাতে সেন্টু খাই। তবে আজকে সাহস করে লিখে ফেললাম। সাহস দানের জন্য পাণ্ডবদা'কে ধন্যবাদ। লেখায় ভুল থাকতে পারে, একটু আগে ৩ ঘন্টার কম্প্রিহেনসিভ দিয়া আইছি। মাথা ঘুরতেছে। তবু আজকে পরীক্ষা দেওয়ার সময় মাথায় ঘুরতেছিল-আজকে পোস্ট দিবোই। দিলাম।

ভাল থাইকেন সবাই।


মন্তব্য

স্পর্শ এর ছবি

চলুক

নীলাকান্ত নামটা কিন্তু চেনা চেনা ঠ্যাকে না। নিক পরিবর্তন?


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নীলকান্ত এর ছবি


অলস সময়

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আইতাছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

কোনদিন কেউ আমাকে হিংসুটে বলে নাই কিন্তু আজকে খুব হিংসা হচ্ছে। এতোগুলো গুণী মানুষের সাথে আপনি এত ভালো আর মজার সময় কাটিয়েছেন মন খারাপ

ফাহিমা দিলশাদ

দীনহিন এর ছবি

আমার মতো অনেকে আর ব্লগে সময় দেন না।

কেন দেন না? আগ্রহের পরিসমাপ্তি? নাকি, এখন আর ব্লগ পড়ে না মানুষ আগের মত? ফেসবুকের দৌরাত্ম্য??

আপনি যে সচলকে কতটা ভালবাসেন, তা আপনার লেখাতেই স্পষ্ট, আর আপনাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত, আপনি পান্ডবদার বক্তব্য শুনার সুযোগ পেয়েছেন, হাসান ভাইয়ের টিমে ভ্রমণ করতে পেরেছেন, এইগুলি বিশাল প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে!

যাই হোক, আপনার আর্জির সাথে সহমত, আসছে জন্মদিনে সকল সচল যেন অন্তত কলম ধরেন, সেই অনুরোধ থাকল।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

নীলকান্ত এর ছবি

ও ভাই, ঐ লাইনের পরের লাইনটা পড়েন একটু কষ্ট করে। কেন আসি না/আসে না সেইটা আমার কাছে এই মুহূর্তে প্রধান জিনিস মনে হয় না। আর সেইটা জানার মানেও হয় না। হাসি


অলস সময়

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

আমি সচলে আপনার তুলনায় বেশ নতুন। গত বছর ফেব্রুয়ারীর সেই আগুন ঝরা নতুন দিনে সচলে আমার আসা। আসাধারন সব মানুষ, অসাধারন সব লেখার সাথে পরিচয় হয়। নিজের চেনা জগতের চেয়ে এই জগৎ ছিলো অনেক বেশি মুক্ত, যেখানে আমি নির্ভয়ে সব কথা বলতে পেরেছি। নানান লেখায় দারুন সব আলোচনায় অংশগ্রহন করেছি, লেখালেখি করিনি কিন্তু অংশগ্রহন ছিলো প্রচুর। কমল ভাই, ইশতিয়াক রউফ, সাক্ষী দা, অনার্য দা, মোর্শেদ ভাই, ত্রিমাত্রিক কবি, পান্ডব দা সহ আরো অসংখ্য প্রিয় সচলের অংশগ্রহনে সচলতায়তন সত্যি প্রাণবন্ত ছিলো। ২০১৩ এর এমন কোনদিন যায়নি আমি সচলে আসিনি। কিন্তু এখন উনাদের কাউকে তেমন একটা দেখি না, এখন খুব কম পোষ্টেই আলোচনাা জমে ওঠে। ফলে কিছুটা হতাশায় আমিও এখন সচলে কম আসি। সবার অংশগ্রহনে সচল আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক এমন প্রত্যাশাই করি।

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

মাসুদ সজীব-এর মত আমার-ও সচল-এ আসা হয়েছিল গত বছর ফেব্রুয়ারীর সেই আগুন-ঝরা দিনগুলোতে। মনে হয়েছিল অনেক লম্বা একটা সুড়ঙ্গের শেষে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছিল এখানেই এসে জড়ো হয়েছে সেই মানুষগুলো যাদের প্রতীক্ষায় যুগের পর যুগ অপেক্ষায় থাকতে লাগে। এই মানুষগুলোকে আমি চোখের দেখা দেখি নি কখনো, হয়ত দেখবও না কোনদিন; চলে যাবে, তাতেও চলে যাবে আমার, যদি এদের চিন্তা-চেতনাগুলোর কিছুটাও ছোঁয়া পেতে পারি। তাই, সেই মানুষদের উপস্থিতি কমে যেতে দেখলে মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়। বুঝি, আমাদের মাঝখানে পুরনো সচলরা তাদের সেই পুরান দিনগুলোর আমেজ খুঁজে পান না, পাওয়া সম্ভব ও নয়। আর, তারা নিজেরাও নিজেদের জীবন নিয়ে নানাভাবে ব্যস্ত হয়ে গেছেন, ব্লগে সক্রিয় থাকার মত সময় গেছে কমে, তারপরে আবার এসে গেছে প্রায় সর্বগ্রাসী খোমাখাতা (কে প্রথম ব্যবহার করেছিল এই চমৎকার শব্দটা! বুনোহাঁস বলেছিলেন আমার মতই তিনিও এই সচলায়তনে এসেই এই শব্দের সন্ধান পান হাসি )। তাই, শুধুই তীর্থের কাকের মত অপেক্ষায় থাকি যদি কখনো তাদের কোন লেখা দেন তারা। আপনার এই লেখায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের অনেকেই আবারো এসে পড়বেন এখানে, আপনিও নিজেই নিজেকে উৎসাহিত করে হাজির হয়ে যাবেন ঘন ঘন, গমগম করে উঠবে সচলায়তন, এই আকাঙ্খা আর আশায় থাকলাম। অনেক শুভেচ্ছা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

'খোমাখাতা' শব্দটির আবিষ্কারক সম্ভবত এই ভদ্রলোক। উনার ব্লগ পড়ে দেখুন। কপাল চাপড়াবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

ধন্যবাদ পান্ডবদা। ঠিক, সুমন চৌধুরীর ঐ পোস্ট-টায় সংসারে এক সন্ন্যাসী (তারিখ: শুক্র, ১১/০৭/২০০৮ - ৯:৩৭পূর্বাহ্ন) অট্টহাসি সহ জানিয়েছিল যে সে ফেসবুকের বাংলা করেছে “খোমা-খাতা”। আসলে এর আগে যে পোস্ট-টা পড়েছিলাম, বুনোহাঁস-এর এই পোস্ট(http://en.sachalayatan.com/bunohaash/29324)-এ, তানবীরা আর রায়হান আবীর-এর ২৭, ২৮ আর ২৯ নং মন্তব্য চালাচালি থেকে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছান যায়নি যে এই চমৎকার অনুবাদ-টা ঠিক কখন কিভাবে শুরু হল। আপনার উল্লিখিত পোস্ট-টায় ব্যাপারটার নিষ্পত্তি হ’ল মনে হচ্ছে।

সন্ন্যাসী-র লেখা আমি মাঝে মাঝে পড়েছি। পুরাই মাথা নষ্ট। হাসি কিন্তু এঁকে যে আর পাওয়া যায় না, সেটা কেনু, কেনু, কেনু? টাকা দিয়ে যা যা কেনা যায় উনি কি এখন সেই সব নিয়েই ব্যস্ত হয়ে থাকতে বাধ্য হয়ে পড়েছেন? মন খারাপ

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তিথীডোর এর ছবি

১.

আমার সচলযাত্রার শুরু কবে?

২০০৯এ। আনোয়ার সাদাত শিমূল ভাইয়ের বদান্যতায়। একটা লিঙ্ক শেয়ার করেছিলেন ফেসবুকে, সচলের জন্মদিন ছিল সেদিন। ব্লগিং এবং বাংলা ব্লগিঙের সঙ্গে পরিচয় সেইসূত্রে। আর কোথাও লিখিনি, লিখিনা।

নিবন্ধন করি সেই অক্টোবরের চব্বিশে। তারিখ মনে নেই, প্রোফাইল দেখে বলছি। ওডিনদার একটা লেখায় প্রথম মন্তব্য করা। সপ্তাহখানেকের মাথাতেই বোধহয় প্রথম লেখা দিই।

আর পড়েছি?
বলতে গেলে সব। পাঠক হিসেবে কোনকালেই মন্দ নই। নীড়পাতা ঘেঁটেঘেঁটে আর সচলগ ধরেধরে একদম সূচনা থেকে সমাপ্তিকালের প্রায় সব সচলের প্রায় সব লেখাই বোধহয় আমার পড়া। তখন গ্রাড শেষ প্রায়, ব্যাঙ্কে শিক্ষানবিশি চলছে। হাতে অবসরের কমতি ছিলনা। আগ্রহের তো নয়ই।

পড়ায় আগ্রহের খামতি আসলে এখনো নেই। রসদে আছে।
আগের সেই নিয়মিত লিখিয়েরা কই? তেমন টানটান মিথস্ক্রিয়ার লেখাই বা কই যেখানে শততম মন্তব্য পেরিয়ে তর্ক বা খুনসুটি চলবে?

২.

কোন আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক সচলাড্ডায় যাইনি একবারও। দেখা হয়নি অনেকের সঙ্গেই, কখনো।
এবং হয়তো কখনোই হবেনা।

দেখা, পরিচয় এবং ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বহুজনের সঙ্গে। চট্টগ্রামের বাতিঘর গ্রন্থবিপণী থেকে শুরু করে ঢাকার মধ্যমা চষে বেড়ানো হয়েছে সচলা জুয়েইরিযাহ মউ আর সুমিমা ইয়াসমিনকে নিয়ে।

গত ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগের সেই সময়টায় জামালখান প্রেসক্লাবের সামনে নিয়মিত দেখা হতো সচল সুমাদ্রীদা এবং মহাস্থবির জাতকের সঙ্গে। লিফটে দেখা হওয়ার পর জানতে পেরেছিলাম সচল নীড়সন্ধানী আসলে কে! বংশী আর স্যাক্সোফোনবাদক রাহিন হায়দারের সঙ্গে দেখা হয়েছে একুশে বইমেলায়, সচলা তারানা শব্দ একটুর জন্য বাদ পড়ে গেছেন সেদিনও। মণিকা রশিদ, তারেক, সবজান্তা, অণু তারেক, সুহান রিজওয়ান, মেঘা, রায়হান আবীর,স্পর্শ... এক বা একাধিক দেখেছি আজিজে,মেলায় কিংবা বইপড়ুয়াদের আড্ডায়।

ছুটিতে দেশে এসে চকলেট খাইয়ে গেছেন সচলা জোহরা ফেরদৌসী, ডাকে পাঠিয়েছেন বন্দনা।
আর বই? হাতেহাতে সেই ঢাকা কিংবা কলকাতা থেকে পাঠিয়েছেন আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ি, কৌস্তুভ, নজরুল ভাই। আহা, নিধিটাকে দেখার শখ ছিল!

বুনোহাঁসের সঙ্গে ঝটিতি সাক্ষাৎ দেশ ছেড়ে আসার কিছু আগে।
সচলা আশালতার সঙ্গে সরাসরি দেখা হলোনা যদিও। প্রাচীনতম পরিচিত সচল রেশনুভার বাসায় হামলা (ভাবীর ওপর আর কী) করার প্ল্যান কষা হয়েছিল যুগলে, সময়াভাবে হলো না আর।
অদেখাই রয়ে গেছেন স্বঘোষিত প্রেমিকা সচলা সুলতানা পারভীন শিমুল। হায় পেম, সোনালি ডানার পেম/ এই ভিজে মেঘের দুপুরে ইত্যাদি ইত্যাদি...

ষষ্ঠ পাণ্ডবের সঙ্গে দেখা হয়নি কখনো। ভাগ্যিস, খোদা মেহেরবান! এনারে ডরাই!

চমৎকার অভিজ্ঞতা ছিল স্মৃতির শহর ই-বুক টিমে কাজ করাটা।

সচল অতন্দ্র প্রহরীর সঙ্গে মোলাকাত একাধিকবার, এই ভদ্রলোকের কাছে বহুসূত্রে আমি ব্যক্তিগত ভাবেই ঋণী।

আর সচল তাসনীম ভাইয়ার কাছে তো এ জীবনে কৃতজ্ঞতার সীমা-পরিসীমা নেই। পরীর ছানাদুটোর সঙ্গে অস্টিনে সামারের ছুটিটা কাটাব বলে এতো লাফঝাঁপ দিলাম, সে আর হলো কই!

নির্বাসনযাত্রার আগে সবচাইতে বড় সারপ্রাইজটা সচল মর্ম ভাইয়ের দেওয়া। সেই ঘুরেফিরে সচলায়তনের কাছেই ফিরে আসা আর কী।

গত পাঁচ বছরের জীবনের অনেকটুকু গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে আছে সচলায়তন। আগামি পাঁচ বছর জুড়েও এভাবেই থাকবে, হয়তো।
সেই সচলায়তনকে খুব মিস করি, যতই তাড়া থাকুক যে নীড়পাতায় সকালে ঘুম ভেঙেই চোখ পাততাম অন্তত মিনিট দশেকের জন্যে।

অন্তত জাহিদ হোসেন, পরিবর্তনশীল, আরণ্যক সৌরভ--এই তিনজনকে টেনে-হিঁচড়ে (দরকারে মাথায় রিভলভার ধরে) ফিরিয়ে আনা যায়না?

৩.

পোস্টটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অন্তত একজন তো লিখলো।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মন মাঝি এর ছবি

আগের সেই নিয়মিত লিখিয়েরা কই? তেমন টানটান মিথস্ক্রিয়ার লেখাই বা কই যেখানে শততম মন্তব্য পেরিয়ে তর্ক বা খুনসুটি চলবে?

এসব তো দূরের কথা, এমনকি নীরব-নিষ্ক্রিয় লগায়িত সদস্য-সংখ্যাও তো এখন দেখি কমতে কমতে প্রায় শূন্যের দিকে ধাবমান হয় মাঝেমধ্যেই। বিশেষ করে গত কয়েক হপ্তা ধরে। ১ দিন - ২ দিন পরেও একেকটা কমেন্ট পড়ে। কেমন যেন খা খা করছে। আমি এমনটা আগে দেখিনি।

****************************************

তিথীডোর এর ছবি

ঠিক। মন খারাপ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কখনো না দেখে, কখনো ফোনে কথা না বলে, কখনো চ্যাট না করে কেউ যে আমাকে ভয় পায় এটা এই প্রথম জানলাম। এতে আমি কি আনন্দিত হবো, নাকি দুঃখ পাবো সেটা বুঝতে পারছি না।

একবার বড় বেলায় দশ-বারো জন বন্ধু মিলে শিশুপার্কের ট্রেনে ঊঠেছিলাম। একদম সামনের সিটে আমাদের এক বন্ধুর পাশে একটা ৮/৯ বছরের বাচ্চা ছিল। বন্ধুটা বাচ্চাটার সাথে গল্প করছে, তার সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করছে। স্বাভাবিকভাবে একসময় প্রশ্ন করা হলো, বড় হয়ে তুমি কী হতে চাও। উত্তরে বাচ্চাটা যে পেশার নাম বলেছিল আমরা সবাই সেই পেশার মানুষ ছিলাম। বাচ্চাটাকে সেই তথ্য জানাতে সে একটু বিস্ময় আর একটু অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি যখন কোন সচলাড্ডায় যাই বা কোন সচলকে সাক্ষাত করি তখন আমিও অমন বিস্ময় আর অবিশ্বাস নিয়ে ভাবি, ইনি একজন লেখক/লেখিকা! কী অবলীলায় ইনি বিস্ময়কর সব লেখা নামান!!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তিথীডোর এর ছবি

ইয়ে মানে, দলছুট বলেছিলেন ডরাইলেই ডর। [মাথা চুলকানোর ইমো]
আমি অপর পাণ্ডব যুধিষ্ঠিরকেও এককালে ডরাতুম।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক চলুক

--আরাফ করিম

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পোস্ট পড়ে সেই গানটা মনে পড়ে গেল অবধারিতভাবেই। আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম খাইছে

ইদানীং সচলের অচলাবস্থা বিষয়ে কয়েকটা অবজার্ভেশান।
১. পূর্ণ সচলের চেয়ে অতিথিদের লেখা বেশী, মন্তব্য বেশী, অংশগ্রহন বেশী।
২. কয়েক বছর আগের মতো কোন পোস্টে আড্ডা জমে দই হয় না।
৩. আড্ডারু কিছু সচল বিয়ে করে ফেলেছে অথবা নেটসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন অথবা ফেসবুকাচ্ছন্ন।
৪. ক্যাচাল না থাকলে আড্ডা জমে না।
৫. সবাই স্মার্ট হয়ে গেছে। ব্লগিং এর মতো অকাজে সময় দিতে চায় না

অতএব, যে যাই বলুক, কিছু মনে নিয়েন না। দেঁতো হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দীনহিন এর ছবি

ইদানীং সচলের অচলাবস্থা বিষয়ে কয়েকটা অবজার্ভেশান।
১. পূর্ণ সচলের চেয়ে অতিথিদের লেখা বেশী, মন্তব্য বেশী, অংশগ্রহন বেশী।

অতিথিরা বেশী অংশগ্রহণ করে বলেই সচলের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে? আপনি অবশ্য অনেক কারণের একটি হিসেবে উল্লেখ করেছেন একে।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

তিথীডোর এর ছবি

অতিথিরা বেশী অংশগ্রহণ করে বলেই সচলের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে?

মাফ করবেন, উল্টো বুঝলি রাম হয়ে গেল প্রশ্নটা। আমার মনে হয় না সচলের অচলাবস্থার জন্য অতিথিদের দায়ী করার মতো ইঙ্গিত এটা। পূর্ণ বা অর্ধ-সচলদের তুলনায় অতিথিদের নানা ধরনের অংশগ্রহণ এখন বেশি, এটাই ছিল অবজার্ভেশানের পয়েন্ট। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দীনহিন এর ছবি

উল্টো বুঝার জন্য দুঃখিত, তিথী! কেন যে উল্টা-পাল্টা বুঝি, মনে হয় মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

মর্ম এর ছবি

কথাগুলো মনে ঘুরছে অনেকদিন ধরে, আমার মত আরও অনেকের মতই হয়ত- লিখে ফেললেন বলে আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।

নীড় সন্ধানী রীতিমত পয়েন্ট করে বলেছেন, আরও কখানা পয়েন্ট যোগ করে দেই-

১। লেখার বৈচিত্র কমে গেছে

২। মন্তব্যের বৈচিত্র কমে গেছে

৩। লেখাই হোক, আর কমেন্ট- বিষয়ের উপর দ্বিমত প্রকাশ কমে গেছে

৪। 'সিরিয়াস' লেখা বেশি। এককালে মুখ গোমড়া করে এখানে এসে মুখে হাসি ঝোলাতে হত, এখন উল্টোটাই বেশি হয়

৫। ২০১০ থেকেই দেখছি, লেখক 'নিউওক্লিয়াস' থাকেন কজন- হিমু, তাসনীম, মাহবুব মোর্শেদ, মুখফোড়, আশালতা, আনোয়ার সাদাত শিমুল, পান্থ রহমান রেজা, সুজঞ্চৌ, সুমঞ্চৌ, মূলত পাঠক, ষষ্ঠ পান্ডব, তারেক আজিজ, নজমুল আলবাব - এক একজনের লেখার ধরণ এক এক রকম, সে মিশেলটা রীতিমত অতুলনীয়, পাঠক হিসেবে আমি আর কোথাও পাইনি। এখন সে দায় বুঝি তারেক অণু আর চরম উদাস-এর উপর ঠেকেছে, নতুন এসেছেন অনেকে, কিন্তু 'একই পাতায়' ১০টা লেখার ৭-৮ টা লেখাতেই অবাক মুগ্ধতার ব্যাপারটা আর অত হয় না।

৬। আড্ডাপোস্ট হয়ে যেত কারো কারো পোস্ট- নজরুল ইসলাম, ধুসর গোধুলী, দুষ্ট বালিকা, যাযাবব ব্যাকপ্যাকয়ার, আশা লতা, অতন্দ্র প্রহরী, বুনোহাঁস, তিথীডোর, কৌস্তূভ, সজল, অপছন্দনীয়- এমন কী এঁদের পোস্টেও (মানে কালে ভদ্রে লিখে ফেলেন যখন!) আজকাল ফাঁকা দেখি কমেন্টের ঘর, অবাক লাগে!

৭। ফেসবুকে নিজের প্রোফাইল বা কোন কোন গ্রুপে কিন্তু অনেকে সচলকেই সচল দেখি, তাঁদের সাথে মিথষ্ক্রিয়া চালান যাঁরা তাঁদের অনেকেও সচল- তাঁদের কাছে সচলের গুরুত্ব 'লেখার জায়গা' হিসেবে কমেছে বলেই ধারণা করি। সচলের অভিভাবকেরা কারণ খোঁজায় নামতে পারেন।

৮। লেখক বলি, আর পাঠক। গ্রুপ করেই আসেন আর যান। কিছুদিন সচল থেকে অচল হয়ে যাওয়াই ধারা। 'লেখক' গ্রুপে টান পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে, আর 'নীরব পাঠক' নিয়ে সচলের পুরানো সমস্যাটা আরো গাঢ় লাগছে এখন।

৯। আর জীবনসঙ্গীর ব্যাপারটাও দেখতে হয় চোখ টিপি সঙ্গী সচল ছাড়তে রাজী না কাজেই নিজে সচল হয়ে যাওয়ার অনেক উদাহরণ আছে। মনে হচ্ছে 'নন-সচল'রা ইদানীং এই ব্যাপারে 'সাফল্যের চাবিকাঠি' খুঁজে পেয়ে গেছেন খাইছে

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মন মাঝি এর ছবি

২০১০ থেকেই দেখছি, লেখক 'নিউওক্লিয়াস' থাকেন কজন- হিমু, তাসনীম, মাহবুব মোর্শেদ, মুখফোড়, আশালতা, আনোয়ার সাদাত শিমুল, পান্থ রহমান রেজা, সুজঞ্চৌ, সুমঞ্চৌ, মূলত পাঠক, ষষ্ঠ পান্ডব, তারেক আজিজ, নজমুল আলবাব - এক একজনের লেখার ধরণ এক এক রকম, সে মিশেলটা রীতিমত অতুলনীয়, পাঠক হিসেবে আমি আর কোথাও পাইনি। এখন সে দায় বুঝি তারেক অণু আর চরম উদাস-এর উপর ঠেকেছে, নতুন এসেছেন অনেকে, কিন্তু 'একই পাতায়' ১০টা লেখার ৭-৮ টা লেখাতেই অবাক মুগ্ধতার ব্যাপারটা আর অত হয় না।

এই তালিকায় আমি শুভাশীষ দাশ আর ধ্রুব বর্ণন - আমার প্রিয় দুই লেখককেও যোগ করব। এদেরও অনেকদিন দেখছি না। আর - তারেক অণু আর চরম উদাস-এর কথা বললেন, লেখা বাদ্দেন, এই দুইজনকে তো কয়েক হপ্তা ধরে লগাইতেই দেখতেছি না। শুধু এরাই না, গত কয়েক হপ্তা ধরে হঠাৎ করেই যেন নতুন-পুরান আরও অনেককেই দেখছি না। ব্যাপারটা কি বুঝতেছি না। সবাই কি সচলাড্ডা দিতে একযোগে মঙ্গলগ্রহে চলে গেলেন, নাকি সবারই ঠিক একসাথেই ব্লগিং-এ আগ্রহ কমে গেছে? এই মাত্র কয়েক হপ্তা আগেও মনে হয় সাধারণত গড়ে ১২-১৩ জনকে অন্তত লগায়িত দেখতাম, অথচ এখন ৫-৬ জনের বেশি দেখি না। সেটাও আবার একটু পরে পরেই ২-১ -এর দিকে ধাবিত হচ্ছে। ০ অবশ্য এখনও চোখে পড়েনি। তবে যে কোন সময় সেই আশংকাও থাকছে।

তবে সবাই ডুব দিলেও যে হিমশৈল সচলসমুদ্রের সাইডবারে অতন্দ্র বাতিঘরের মত নিয়মিত মাথাচাড়া দিয়ে থাকতেন, তাকেও ইদানিং দেখছি খুব কম। ইনার সাম্প্রতিক অনিয়মিতাই কি অন্যদের উপর প্রভাব ফেলছে? লিঞ্চপিন কথাটি কি তার ক্ষেত্রে খাটে?

****************************************

তিথীডোর এর ছবি

আরো একটা ব্যাপার লক্ষণীয়। চাল্লু
মিঁয়াও লেখকের মনোযোগ কমে গেছে। একটা মন্তব্যে কত্তগুলো টাইপো! ধিক ধিক!
পান্ডব > পাণ্ডব, ধুসর গোধুলী> ধূসর গোধূলি, যাযাবব ব্যাকপ্যাকয়ার>, যাযাবর ব্যাকপ্যাকার, কৌস্তূভ> কৌস্তুভ... ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমরা কি এরকম মর্মবেতার নমুনা চেয়েছিলাম! অ্যাঁ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মর্ম এর ছবি

আমাদের যে 'বানানাপা' ছিল এককালে, লেখায় লেখায় জনগণের 'বানাম্ভুল' ধরে জনগণের অশেষ উপকার সাধন করত, এটা কি এ যুগের পাঠকদের (এমন কী লেখকদের ও) দেখানো যেত! এই জন্যই না ভুল করা! ভুল নেই, তো দেখানোও নেই! দেঁতো হাসি

ফুটনোটঃ নামগুলো ভুল করায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত। 'কমেন্ট' হলেও সাবধান হওয়া উচিত ছিল। ইয়ে, মানে... পরে টের পেয়েছি 'নিউক্লিয়াস' লিস্টে কজন বাদ পড়ে গেছেন- আশা করি সেজন্য কেউ কিছু মনে করেননি- এত এত যেন নিয়মিত ভাল লিখতেন, এখন লেখেন না, চট করে মনে করাও মুশকিল চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মর্ম এর ছবি

নয়টার পর দশ নম্বর পয়েন্টটা মথায় এল- তাই মনে হল লিখে যাই-

১০। কিছু পাঠক ছিলেন যাঁরা পড়তেন আর মন্তব্য করতেন, লিখতেন অল্প। কেবল মন্তব্যের জোরেই তাঁরা পরিচিত ছিলেন বেশ- শরৎ শিশির, কল্যাণ- এমনকি 'হাচল' অবধি হয়ে গেছেন মন্তব্যের জোরেই। এমন পাঠকও আজকাল অত চোখে পড়ে না।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

অতিথি লেখক এর ছবি

তবে কি দুঃসময়টা আমি আসার পরেই!
আগে সচলায়তন এ ঢুকে কোনটার আগে কোনটা পড়বো ভেবে অস্থির হয়ে যেতাম।
এখনও সব পড়ি। তবে ভালোলাগা লেখকদের লেখা খুঁজি আরো বেশী।

আমি আশাবাদী মানুষ। আমি জানি সচলায়তন আবার ফুলে ফেঁপে উঠবে অসাধারণ সব লেখা দিয়ে।
একদিন আমিও কোন এক আড্ডায় পেয়ে যাবো না দেখা তবে লেখায় পরিচিত কোন 'সচল' কে।
তাঁর হাতটি জড়িয়ে ধরে আমার ভালো লাগাটুকু জানিয়ে দেবো।
এক জীবনে বেশী কিছু চাওয়ার সাধ নেই আমার।

সকলের সন্মিলিত আংশগ্রহণে সচলায়তন ছড়িয়ে পড়ুক দিগবিদিক।
সবার জন্য শুভকামনা।

----------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

নীলকান্ত দা, সচলে প্রথম পোষ্টটা পড়লাম এইমাত্র। আপনাকে দিয়েই শুরু। জানিনা এখানে আমার ভবিষ্যৎ কি, দোয়া রাখবেন। ভালো থাকুন। হাসি ত্রিশিল

অতিথি লেখক এর ছবি

সচলের আড্ডায় বস্তে ইচ্ছা করছে খুব। এমন আড্ডায় বসে সময় ভুলে গল্প করেছে যারা, নিঃসন্দেহে তারা ভাগ্যবান। নিশাচর জীব।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ঘোরাঘুরি নিয়ে লেখতাম, ঘোরাঘুরি হয়, লেখা হয়না। সময় পাইনা। সময় পেলেও লেখা শেষ হয়না। অনেকগুলা কাহিনী আধাআধি হয়ে আছে, শেষ করা হয়না।
আর একবার গা ঝাড়া দিব ভাবলেও শুধু আড়মোড়াই সাড়।

...........................
Every Picture Tells a Story

তিথীডোর এর ছবি

ক্যানাডা আসার সুযোগ থাকলে মাতিস সমেত আপনাকে অ্যায়সা ঝাঁকুনি দেয়ার বন্দোবস্ত করতাম, চব্বিশ ঘন্টা পরপর পোস্ট দিতেন। রেগে টং
আফসোস, গরীব ইশটুডেন..হাতে পয়সা নাই।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এখন তো চিন্তায় ফেলে দিলেন, ব্লগে কেন আসি?
আমি যখন খুঊউউব টেনশনে থাকি, তখন ব্লগে বেশি আসি।

হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি তো নিয়মিত লিখি !! অন্যদের জরিমানা হোক।

এক লহমা এর ছবি

চলুক একমত। দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক
ভাল /জরুরী লেখা, বিষয় - এখনো পাই, পড়ি, তবে মন্তব্য মিস করি।
দ্রোহী, ধুগোর নাম ডান দিকে দেখলেই ক্লিক - অনেক লেখা মন্তব্য ধরেই পড়া হয়ে গেছে।
হিমু ভাই, পান্ডব দা কে এখনো ডানে পাওয়া যায় মাঝে মাঝে, জানা হয় অনেক কিছু।
সব লিখতে গেলে আমারটা তিথীডোরের মন্তব্যকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ... বাদ দেই।
গত এক বছরে যারা নতুন লিখছেন সাথে পুরনোরা - সবার আরো অংশগ্রহণ বাড়ুক - শুভকামনা!

নাশতারান এর ছবি

কোন মন্তব্যে কী নিয়ে ঝগড়া হয়েছিলো আমিও মনে করতে পারছি না। বুড়ো হচ্ছি আসলেই। সচলায়তন যে আমাকে কতকিছু দিয়েছে হিসেব করে মেলানো মুশকিল। বেশ কিছু ড্রাফট পড়ে আছে। অনেক আগের। এখন ধরলে সূত্র ধরতে পারব কি না জানি না। নিজেকে স্বার্থপর মনে হয়।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।