আমাদের বাপ-দাদারা যে ভুল করেছে, আমরাও ঠিক একই ভুল করতে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৮/০৮/২০১১ - ২:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইউএনডিপি'তে কাজ করতাম মুনির হাসান স্যারের সাথে, তিনি ছিলেন আমার রিপোর্টিং বস। যারা বিডিওএসএন, ম্যাথ অলিম্পিয়াডের খোজ-খবর রাখেন তারা মুনির হাসান স্যারকে ভালোভাবেই চিনবেন। সদা হাসিমুখ, কাচা-পাকা গোফ-চুলের মুনির স্যার দেশকে নিয়ে খুব ভাবতেন, দেশের জন্য কোন কিছু করার জন্যই তার যতসব চিন্তা। কারণে -অকারণে সুযোগ পেলেই আমরা সবাই মিলে স্যারের সাথে আড্ডা মারা চেষ্টা করতাম, হাসি মাখা মুখে স্যার খুব সামান্য ব্যাপার গুলোও খুব আকর্ষনীয় ভাবে ব্যাখ্যা করতেন। স্যারের সাথে আমার বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় ট্যুরে যাবারও সুযোগ হয়েছিল। একটা ট্যুরে (খুব সম্ভবত খুলনা ট্যুর) জাফর স্যারও সাথে ছিল, সেই দিন রাতে আমরা সবাই মিলে জাফর স্যারকে ধরলাম ভূতের গল্প বলার জন্য।

সেইদিন রাতেই জাফর স্যারের ভূতের গল্প শুনতে শুনতে কেমন করে জানি দেশের রাজনীতি, দেশের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি প্রসঙ্গ চলে আসল। যারা ছিলাম, সবাই নিজেদের মতামত জাহির করেই যাচ্ছি, নিজেদেরকে সত্য প্রমান করার জন্য যতসব যুক্তি আওড়ে যাচ্ছি। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, যে যাই যুক্তি দেখাক না কেন, সবারই উপসংহার হয় দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মুন্ডুপাত করে। "ঐ বেটা একটা ভোদাই", "অমুক কোন কিছু জানে না", "তমুক মোটা মাথার লোক" ইত্যাদি ইত্যাদি।

এর মধ্যে মুনির স্যার খুব একটা কথা বলেছিল, "আমাদের বাপ-দাদারা বেক-বেন্চারদের কাছে রাজনীতিটাকে বর্গা দিয়ে যে মহা ভুল করেছে, আমরাও ঠিক একই ভুল করছি, বর্তমান প্রজন্মও যদি একই ভুল করে তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের আর কোন পথ থাকবে না।"

কথাটা তখন তেমন পাত্তা দেই নাই। কিন্তু দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে যা মনে হচ্ছে, মুনির স্যার কোন ভুল কথা বলেনি। ভার্সিটিতে যখন ভর্তি হই, মা-ভাই, স্কুলের স্যারেরা, পাড়া-প্রতিবেশিরা আমাকে পই পই করে বুঝি‌য়ে বলে দিয়েছিল, কোন মতেই যেন রাজনীতিতে না জড়াই, এইগুলো খুবই বাজে-নোংড়া ব্যাপার, রাজনীতিতে জড়ালে ভবিষ্যৎ অন্ধকার, আরও কত কি ইত্যাদি ইত্যাদি। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর এক বছরের মাথায় আমাদের বন্ধু শামীম রাজনৈতিক কলহের কারণে মারা যায়। অনেক বন্ধু বিভিন্নভাবে অপদস্ত হয়। তখন মনে মনে ভেবেছি, ঠিক কাজই করেছি রাজনীতি থেকে দূরে থেকে। কিন্তু আসলেই কি আমি ঠিক করেছিলাম? আমার বাপ-দাদাদের ভুলের মাশুল তো আমাকেই কেই শোধ করতে হবে, অন্য দেশ থেকে কেউ এসে তো সেটা শোধ করে দিয়ে যাবে না।

আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের ছোট বেলা থেকেই শিখানো হয় রাজনীতি খারাপ-নোংড়া জিনিষ, রাজনীতি থেকে নিজের ছেলে-মেয়েকে দূরে রাখতে মা-বাবারা খুবই তৎপর। আমার ছেলে-মেয়েরা ভাল, তাদের ভবিষ্যৎ আছে। তারা কেন রাজনীতি করবে, দেশে যদি ভালমত থাকতে না পারে, বিদেশে পাড়ি জমাবে, কিন্তু কোন মতেই তাদের রাজনীতি করা চলবে না। যেসব ছেলে-মেয়েরা ভাল না তারা গিয়ে রাজনীতি করুক, নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারুক। আদর্শ বাবা-মা হিসাবে ছেলে-মেয়ের জন্য এমন চিন্তা করাটা মোটেও অযৌক্তিক না, কিন্তু এইভাবে ছেলে-মেয়েদের রাজনীতি থেকে দূরে রেখে দেশের যে সর্বনাশ হচ্ছে, সেটাও চিন্তার বিষয়। তখনই প্রশ্ন আসে, ব্যক্তি স্বার্থ আগে না দেশের সমষ্টিগত স্বার্থ আগে?

আজকে দেশের এই অবস্থা দেখে আমার কেবল মুনির স্যারের কথাটাই বার বার মনে পড়ছে - আমাদের দাদারা, বাবারা যে ভুল করেছে, আমরাও ঠিক একই ভুল করতে যাচ্ছি।

বেশ কিছু কমন ডায়লগ আছে, যেমন - একটা রোগ তখনই মহামারি আকার ধারণ করে যখন এটা ধরা পরার সাথে সাথেই প্রতিকার না নেয়া হয়, একটা ভুল তখনই মারাত্মক আকার ধারণ করে যখন সেটার পুনরাবৃতি হতে থাকে। দেশের রাজনীতিবিদদের (এরা এমন বলেই তো রাজনীতিতে এসেছে, আপনার-আমার মত ব্লগ লিখছে/পড়ছে না) গালা-গাল দিয়ে, ঘরে বসে রাজা-উজির মেরে, খোমাখাতায় স্ট্যাটাস/মন্তব্যের বন্যা বইয়ে দিয়ে কোন লাভ হবে না, যদি না আমরা আমাদের চিন্তা-ভাবনা না বদলাই, নিজেদের ভুলগুলো স্বীকার করে সেগুলো শুধরানোর জন্য কাজ করি। আপনাকে একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আপনি যদি খুব সুন্দর, নিরাপদ একটা জীবন কাটাতে চান, আপনি যদি চান আপনার সন্তানের নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ভবিষ্যৎ, তাহলে এর জন্য আপনাকেই কাজ করতে হবে, চিন্তা করতে হবে, সচেতন হতে হবে এবং সর্বোপরি আপনাকেই এর জন্য মূল্য (আক্ষরিক অর্থে চিন্তা না করার অনুরোধ রইল) পরিশোধ করতে হবে।

--------------------------------------------
আমার দেশে সেই সোনার ছেলে কবে হবে,
কথায় না বড় হয়ে যে কাজে বড় হবে?
--------------------------------------------

===================
আমি জানি না,


মন্তব্য

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

লেখার মূল টোনের সাথে সম্পূর্ণ একমত মনীষ। আমরাও আসলে ঠিক একই ভুল করে যাচ্ছি । আমাদের দেশের এখন ঘুরে দাঁড়াতে হলে প্রয়োজন দেশের সবচেয়ে যোগ্য মানুষদের , তাজউদ্দীন আহমদের মত সংশপ্তক দেশপ্রেমিক মানুষদের একযোগে রাজনীতিতে নামা -- এর সমস্ত ঝুঁকিকে স্বীকার করে নিয়েই । এছাড়া আর কোনো পথ আমাদের সামনে সম্ভবত খোলা নেই ।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

guest_writer এর ছবি

এছাড়া আর কোনো পথ আমাদের সামনে সম্ভবত খোলা নেই।

কেউ মানুক আর না মানুক, এছাড়া আর কোন পথই খোলা নাই।

ধন্যবাদ মোস্তা ভাই।

========
আমি জানি না

হিমেল নাগ রানা এর ছবি

দূর্ভাগ্যজনকভাবে একমত হওয়া ছাড়া উপায় নাই! যতদিন আমরা রাজনীতি কে নোংরা বলে নর্দমায় ফেলে দেবো --- এর দাম আমাদেরই দিতে হবে - নর্দমার কাদা গায়ে মেখে!!

কিছু না কিছু করার তাগিদ অনুভব করছি -- কিন্তু কি করব বুঝতে পারছিনা!দমর কদ গয়ে মেখে!!

কিছু ন কিছু করর তগিদ অনুভব করছি -- কিন্তু কি করব বুঝতে পরছিন!

guest_writer এর ছবি

একটা মানুষের জীবনে পরিবার এবং সরকারের প্রভাব প্রসংগে বাস্তবে কি দেখা যাচ্ছে? পরিবার কি তার কর্তব্য ঠিক মত পালন করছে? সরকার কি তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম? বাংলাদেশের জন্য দুটোর উত্তরই 'না'। আমি এইজন্যই প্রস্তাব করেছি, পরিবার থেকেই রাজনীতি (সেটা হতে পারে দেশের জন্য, সমাজের জন্য, কোন একটা গোষ্ঠির জন্য), সচেতনতার বুনিয়াদটা গড়ে উঠুক। আসলে জনগণ সচেতন হলে, এইসমূহ সমস্যা নিমিষেই সমসধান করা যায়। সবশেষে একটা কথাই বলতে চাই রাজনীতি কখনোই নোংড়া না, আমারা এটাকে নোংড়া ভাবে দেখতে দেখতে, কিছু অসভ্য মানুষকে এটা নাড়াচাড়া করার সুযোগ দিয়ে এটাকে নোংড়া বানিয়ে ফেলেছি। এটাকে বিশুদ্ধ, পবিত্র করার দায়িত্ব আমরা কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারি না।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হিমেল দা।

=========
আমি জানি না

গগন২০১১ এর ছবি

খোমা খাতায়ও ভালো লোকের রাজনীতিতে আশা নিয়ে অনেক স্ট্যাটাস/মন্তব্যের বন্যা দেখেছি। কিন্তু সবাই কিছু আবেগ প্রবন উচ্চমার্গীয় কথা বলেই শেষ করে, কিন্তু কিভাবে এই অসুস্থ পরিবেশে সুস্থ রাজনীতি করা সম্ভব বলে না। আমার মত অনেকেই হয়ত সহমত জানিয়ে দিকভ্রান্তের মত কিছুদিন তর্ক করে এবং এক সময় আগের মতই তথাকথিত ভাল মানুষের মত কোন মতে জীবন পার করায় ব্যস্ত হয়ে পরে। অনুগ্রহ করে কিছু দিক নির্দেশনা দিবেন কি কেউ?

লেখককে ধন্যবাদ বিষয়টিকে সামনে আনার জন্য..................

guest_writer এর ছবি

--------------------------------------------
আমার দেশে সেই সোনার ছেলে কবে হবে,
কথায় না বড় হয়ে যে কাজে বড় হবে?
--------------------------------------------

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

========
আমি জানি না

শেহাব- এর ছবি

মন খারাপ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"One of the penalties for refusing to participate in politics is that you end up being governed by your inferiors" - Plato


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

রাজনীতি দুষ্ট লোকের খপ্পরে। মূলত এরশাদের আমলেই সবচেয়ে বেশী কলুষিত হয়েছে রাজনীতি। সেই দুষ্ট চক্র দিনের পর দিন চুড়ান্ত নষ্টের দিকে নিয়ে গেছে। এখন একে শুদ্ধ করার কোন উপায় নেই। কারন এই কলুষতা রাজনীতির শীর্ষস্থান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

কোন সুস্থ যুক্তিশীল মানুষ রাজনীতিতে নামতে গেলে তাকে অসীম ধৈর্যশীল এবং চুড়ান্ত হেনস্থা হবার মানসিক শক্তি রাখতে হবে, এমনকি জীবনটাও বেঘোরে বিসর্জন দেয়ার প্রস্তুতি থাকবে হবে। এবং সেই জীবন দিয়েও তিনি শহীদের সম্মান পাবেন না। এরকম বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকে থাকার সংগ্রামে যদি কয়েকশো কিংবা কয়েক হাজার সুস্থ মানুষ রাজনীতিতে টিকে যায়, সেটা বড়জোর হতে পারবে নির্মল সেনের সাম্যবাদী দল। যে দল কখনো কিং মেকার হবে না, এবং দেশকে পরিবর্তনের কোন স্বপ্ন দেখাতে পারবে না।

তাহলে? আমাদেরকে কি একটা অলৌকিক বিপ্লবের সন্ধান করতে হবে? অথবা চুড়ান্ত ধ্বংসের প্রার্থনা, যাতে সব নষ্টবীজ বিলুপ্ত হয় চিরতরে।

আপাততঃ সুস্থ রাজনীতির কোন সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ এই রাজনীতি আগাছার চাষ করে, যাতে কেবল গোখাদ্য সরবরাহ অক্ষুন্ন থাকে, তারা জানে গরুদের চালনা করা কতো সহজ।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ভীতুর ডিম এর ছবি

আমাদের বাপ-দাদারা বেক-বেন্চারদের কাছে রাজনীতিটাকে বর্গা দিয়ে যে মহা ভুল করেছে, আমরাও ঠিক একই ভুল করছি, বর্তমান প্রজন্মও যদি একই ভুল করে তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের আর কোন পথ থাকবে না।

ছেলে মেয়েরা ফেসবুকে পলিটিকাল ভিউস এ লিখে রাখে "উই হ্যাইট পলিটিক্স", আজব কেস! যে পলিটিক্সকে যত বেশি hate করবে সে তত স্মার্ট......

guest_writer এর ছবি

আজিব পোলাপাইনের আজিব চিন্তা-ভাবনা রেগে টং

========
আমি জানি না

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

সুস্থ ও সৎ রাজনীতি থাকলে আসলে রাজনীতিতে অংশ নেওয়াই যায়। সমস্যা হল এই জিনিসটাই নাই। আসলে আমাদের নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে। তবে শুধু দল করলে তো হবে না, দেশের সর্বত্র তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরী করতে হবে, সব এলাকা থেকেই সমমনা সদস্য লাগবে। তবে দৃপ্ত শপথে সবাই এগিয়ে আসলে সবই সম্ভব!!!!


_____________________
Give Her Freedom!

দ্বিতীয় সুবর্ণরেখা এর ছবি

লাভ নাই লাভ নাই......আমাদের আলোচনা ব্লগ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে এবং আমরা আবারো রাজনীতি থেকে দূরেই পালাবো। আমরা কথা বলতে বা সত্য কথায় 'মুণ্ডুপাত' করতে বড়ই পারদর্শী, কাজ করতে বড়ই অলস। আর প্রয়োজন ই বা কি! আমরা কোনমতে পার পেয়ে গেলেই হলনা?
হুমায়ূন আহমেদ এর 'মাতাল হাওয়া' পড়েছেন? এরপর ও রাজনীতি? বাপ বাপ... আমিও পালাবো, আপনিও ব্লগ ফেলে পালাবেন...
দেশমাতা আবারো নীরবে দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন...

guest_writer এর ছবি

তবুও আমি আশাবাদী। যে বাঙালি শুন্য হাতে বিশাল সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারে, সে বাঙালি জাতির জন্য অসম্ভব কিছু নাই।

-----------------------------
মানুষ তার আশার সমান বড়
-----------------------------

========
আমি জানি না

রণদীপম বসু এর ছবি

মুনির হাসান ভাই'র একটা খোমা দিয়ে দিলাম। আসলেই চমৎকার মানুষ !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

উপরের ছবিটা মনে হয় চাপা হয়ে গেছে ! আবার চেষ্টা করি...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা ! মুনির ভাই'র কাছে মাফ চাই !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

guest_writer এর ছবি

হা হা হা ! মুনির ভাই'র কাছে মাফ চাই !!

আমি যতদূর স্যারকে দেখেছি, স্যার এইসব ব্যাপারে কোন কিছু মনে করে না চোখ টিপি

স্বাধীন এর ছবি

লেখার মূল বক্তব্যের সাথে সহমত। সরাসরি রাজনীতিতে নামা বা সেই আন্দোলনে সক্রিয় বা সমর্থনা জানানো ছাড়া এই অবস্থা থেকে পরিত্রান নেই। অনেকেই ভাবি যে রাজনীতি সচেতন হতে হলে রাজপথে নামতে হবে। কথাটি সত্য নয় আমার মতে। মুক্তিযুদ্ধ কি সবাই অস্ত্র নিয়ে করেছিলো? তা নয়। সরাসরি যুদ্ধের বাহিরেও অনেকে যুদ্ধ করেছেন। অনেকে করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সরাসরি সহায়তা করে। যারা সেটা করতে পারেননি তারা অন্তত সাপোর্ট করেছেন মুক্তিযুদ্ধকে। যারা এর বিরোধিতা করেছেন তাদেরকেই আমরা রাজাকার বলি। এভাবে রাজনীতিতে সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে তা নয়। যে যার সাধ্য মতো সহায়তা/সমর্থন দেওয়াটাও অনেক বড়। আমাদের সমস্যা যে সবাই রাজনীতি বিমুখ হয়ে গেছি। ধর্ম নিয়ে মানুষ আলোচনা করতে যেমন অনাগ্রহী, তেমনি রাজনীতি নিয়েও কোন আলোচনা করতে আগ্রহী, যেন রাজনীতি কোন এক অছ্যুৎ বিষয়। আমাদের এই রাজনৈতিক বিমুখতাই আজকের এই পরিণতির জন্যে দায়ী বললে ভুল বলা হবে কি? আসুন সবাই রাজনীতি সচেতন হই। এটা নিয়ে উম্মুক্ত আলোচনা করি। রাজনীতি কোন গোপন গন্ধম নয় যা খেলে অভিশপ্ত হতে হবে। যারা পরিবর্তনে দৃঢ়বদ্ধ তারা এই পেইজটাতে যোগদান করুন। আপনাদের মতো অনেকেই এই পেইজে যুক্ত হয়েছে।

guest_writer এর ছবি

মুনির স‌্যার খোমা খাতায় নতুন একটি মন্তব্য করেছেন:

মেধারী শিক্ষার্থীরা যতদিন "য পলায়তি স জীবতি' তত্ত্ব জীবনের মূলমন্ত্র ভাববে, ততোদিন চূড়ান্ত বিজয় অধরা থেকে যাবে।

সত্য কথা, খাটি কথা।

========
আমি জানি না

দুর্দান্ত এর ছবি

আমরা কেন ধারণা করে নেই যে বাংলাদেশের ক্লাসরুমে নেতৃত্ব শেখায়, এবং প্রথম সারির মেধাবী ছাত্র মানেই প্রথম সারির রাজনঐতিক নেতা?

নিরেট মেরিটোক্রেসির ফসল যখন রাজনীতিতে যায়, তখন তার ফল কি হয় সেটা আমরা ম-খা আলমগীর বা হ ত ইমাম দের দিয়ে কিছুটা আন্তাজ করতে পারি।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

নিরেট মেরিটোক্রেসির ফসল যখন রাজনীতিতে যায়, তখন তার ফল কি হয় সেটা আমরা ম-খা আলমগীর বা হ ত ইমাম দের দিয়ে কিছুটা আন্তাজ করতে পারি।

উদাহরনটা যুইতের হয়নাই।

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

দুর্দান্ত এর ছবি

যুইতটা ধরাইয়া দেন। এই দুইজন দেশের শিক্ষাব্যাবস্থার ফসল না, এরা তাদের মেরিটের কারনে উপরে উঠে নাই, নাকি এরা 'ভাল' রাজনীতিক নেতা?

guest_writer এর ছবি

নিরেট মেরিটোক্রেসির ফসল যখন রাজনীতিতে যায়, তখন তার ফল কি হয় সেটা আমরা ম-খা আলমগীর বা হ ত ইমাম দের দিয়ে কিছুটা আন্তাজ করতে পারি।

মেধাবী বলতে কি শুধু ক্লাশে/পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়া? মানতে পারলাম না। আমি বেশ কয়েকজনকে ব্যক্তিগতভাবে জানি যাদের পরীক্ষায় পাশ করতেই জীবন তামা-তামা হয়ে যেত। সেই কয়েকজনের মধ্যে কয়েকজন এখন গুগল, মাইক্রোসফটের মত কোম্পানিতে কাজ করছে। এখানে এটা বলার অবকাশ নাই যে তারা মামা-চাচা ধরে চাকরিগুলা পাইছে।

আসলে, মেধাকে শুধু ক্লাশে/পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়া দিয়ে বিচার করলে মেধার অবমাননা করা হবে। আর মেধার সাথে চরিত্র, সততা, আদর্শ, দেশপ্রেম, দায়িত্বশীলতা, অন‌্যের প্রতি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এি সবগুলোর সমন্বয় ঘটলেই ভাল, যোগ্য রাজনীতিবিদ হওয়া সম্ভব।

আশা করি ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন।

========
আমি জানি না

নতুন একজন এর ছবি

ইসলাম ধর্মে একটা কথা আছে। তা হল " যে জাতি যেমণ আল্লাহ তাদের তেমনই শাসক দেয়"। আমাদের দেশের জন্য এই কথাটা খুব ভাল খাটে। আপনি নিজে অনেক চাইলে্ও ভাল কিছু করতে পারবেন না কারণ আপনার উপর নিচ ডান বামের সবাই খারাপ। নির্বাচনে তো না ভোট ছিল। আমরা কতজন তার ব্যবহার করেছি বলুন।

M. A. H. Mamun এর ছবি

দুই, চার কলম পড়তে বা লিখতে পারলেই হয় না। রাজনীতি অনেক জটিল ও বিশাল ব্যাপার। নজরুল,লালনকে নিয়েও গবেষণা করা যায়। তাদের সার্টিফিকেট ছিল না কিন্তু তাদেরকে পড়ে সার্টিফিকেট পেতে হয়। খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে নি কিন্তু দেশ চালিয়েছে। কই দেশে তো শিক্ষিত লোক কম নেই, তারা কোথায় ছিল? প্রত্যেক আমলেই কিছু ভালো কাজও হয়েছে। আমাদের সমস্যা, আমরা সম্মান দাতে ভুলে যাই।

কেউ কারও জন্য সব কিছু তৈরি করে রাখে না। কিছুটা হলেও তৈরি করে নিতে হয়।

ঢা. বি. থেকে মাস্টার্স পাস করলাম। ছাত্র হিসেবে একদিনও তো ভোট দিতে পারলাম না। অথচ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরাও ভোট দিতে পারে। কই আমি তো কিছু করলাম না। মেরুদন্ডহীনের মতো কাটিয়ে দিলাম। কত ছেলে মেয়ে ভারসিটিতে কুকুর বিড়ালের মতো মরে। কিন্তু এর জন্য তো কেউ মরলো না।

এদেশের ছাত্রসমাজ আজ সিলমারা (সার্টিফিকেটধারী) গণ্ডমূর্খ। এমনকি কেউ আছো এই কথার প্রতিবাদ করে আমায় একটা কষিয়ে চড় মেরে যাবে। আমি সেদিনের অপেক্ষায় রইলাম।

guest_writer এর ছবি

রাজনীতিতে নামার পর সবাই চেঞ্জ হয়, নামার আগে এসব বড় বড় কথা সবাই জানে / বলে । আমি আজ পর্যন্ত এমন কোনও রাজনীতিবিদ দেখিনি যে এই হিংসা হানাহানির রাজনীতির বিপক্ষে কথা না বলে । কিন্তু কাজের বেলা সবাই তথৈবচ, স্বল্প রিসোর্স আর হাজারো মুখ থাকলে যা হয় আর কি, বস্তুত নিজেরা (প্রাইভেট সেক্টর) উন্নতিই স্বনির্ভর অর্থনৈতিক মুক্তি আর রাজনৈতিক উন্নতির মূল শর্ত ।

শামীম3701 এর ছবি

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতি আছে কিছু বন্ধুকে নিয়ে। রাজনীতি কি তাই বুঝতাম না, কিন্তু আশ্চর্য ব্যপার হচ্ছে ক্লাসের ঘাড় মোটা ছেলেটা ঠিকই বুঝতো! আমার বয়সি একটি ছেলের হাতে দেশি রিভল্বার দেখে কলিজা শুকিয়ে গিয়েছিলো। একই পরিবেশে মানুষ হওয়া আমার সেই বন্ধুকে অবশ্যই কেউ রাজনৈতিক দীক্ষা দেয়নি তখনো। কিন্তু মোদ্দা কথা হচ্ছে সে ব্যকবেঞ্চার কিন্তু এলাকার "বড় ভাই"দের সাথে আরামসে চলে ফিরে বেড়াতো।
আমাদের রাজনীতি সেই শৈশব থেকেই কলুষিত হয়ে আছে। রিভল্বার হাতের সেই সহপাঠিকে তার বাপ শক্ত পিটুনি দেয়নি এলাকার ভেগাবন্ডদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে, ফ্রন্টবেঞ্চার আমাকে আমার বাবাও রাজনীতি বিষয়ে সচেতন হতে বলেন নি। এই চক্র কোনদিন শেষ হবে কিনা জানিনা। কিন্তু জাহানারা ঈমামের মত মাতা আর কয় জনই বা আছে আমাদের দেশে যারা ছেলেকে যুদ্ধে যাবার জন্য সাজিয়ে দিবে?

guest_writer এর ছবি

এইখানেই পরিবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ছেলে/মেয়েটিকে কোন ভাল কোনটা মন্দ বুঝাতে পারেনি। আমার পরিবার আমাকে বুঝাতে পেরেছে, তাই আমি এখন দুর্নীতি মুক্ত।

আপনার মত একই রকম বেশ কিছু ব্যকবেঞ্চার বন্ধু আমারও ছিল, এখনও অবশ্য আছে, কিন্তু তাদেরকে বন্ধু বলার চেয়ে পরিচিত বলতে বেশি স্বাছ্যন্দ বোধ করি।

========
আমি জানি না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।