চায়ের কাপে গল্পঃ টিপ

পরিবর্তনশীল এর ছবি
লিখেছেন পরিবর্তনশীল (তারিখ: শনি, ১২/০৪/২০০৮ - ৬:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ঘটনা কিংবা চরিত্র সব নিছক কল্পনা মাত্র]

১.

আমার শোবার ঘরের জানালা সবসময় বন্ধ থাকে। বাবা বলেন...
- মাইয়া মাইনষের ঘরের জানালা খোলা রাখা ঠিক না... খারাপ নজর পড়ে।
কাঁচের জানালা বন্ধ থাকলেও ভেতর থেকে আকাশ দেখা যায়। কিন্তু আমার ঘরের জানালা কাঠের। আমি রাতের বেলা মন খারাপ হলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না।
গতবছর সাহস করে একদিন জানালা খুলেছিলাম। কিন্তু বাবা কীভাবে যেন বুঝে গেলেন। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ কে যেন পেছন থেকে আমার চুল ধরে টানল। আমার আত্না কেঁপে উঠেছিল। বাবা আমার চুল ধরে টানতে লাগলেন...
- হারামজাদী... তুই আমার মাইয়া না।
মা ছুটে আসলেন...
- মাইয়াটারে মাইরা ফেলবা তো।
বাবা হুংকার দিয়ে বলে উঠলেন...
- এইরকম রঙিলা মাইয়া আমার দরকার নাই।
সে রাতে আমি অনেক কেঁদেছিলাম। জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরের পৃথিবী থেকে কোন রহস্যময় আলো আমার জলমাখা চোখে এসে পড়েনি।

বাবা আমাদের পাড়ার মসজিদের ইমাম সাহেব। আর আমি ইমাম সাহেবের একমাত্র মেয়ে। পাড়ার লোকজন আমার বাবা- মসজিদের ইমাম সাহেবকে খুব শ্রদ্ধা করে। রাস্তাঘাটে দেখা হলেই সালাম দেয়। আমি চিন্তা করে দেখেছি- আমি আমার বাবাকে তেমন একটা শ্রদ্ধা করি না। যে মানুষ আমার চোখের সামনে রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ ছিঁড়ে ফেলেছিল- আর বলেছিল... এসব বেধর্মীদের বই টই বাড়িতে যেন আর কখনো না দেখি...তাকে কেন যেন আমার শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করে না। যে মানুষটা আমার স্কলারশীপের টাকা দিয়ে কেনা ক্যাসেট প্লেয়ারটা বাইরে ফেলে দিয়েছিল- তাকে আমার কেন যেন শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করে না। তবে মানুষটাকে আমি খুব বেশি ভয় পাই।

এই মুহুর্তে আমি কলেজের খাতার ভেতরে রেখে একটা বই পড়ছি। আমার প্রিয় লেখক বিভূতিভূষণের ''দৃষ্টিপ্রদীপ''। কী সুন্দর একটা গল্প! পড়তে পড়তে কখন দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে- বুঝতে পারি না। আজ দুপুরে বইটা দেওয়ার সময় তারেক বলেছে...
- বইটা চাঁদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে পড়বি।
তারেকের কথায় আমি হেসে দিয়েছিলাম। পাগলটা এত অদ্ভুত সব কথা বলে।
- গাধা। চাঁদের দিকে তাকিয়ে বই পড়ব কিভাবে?
তারেক খুব স্বাভাবিকভাবেই বলে...
- আছে। নিয়ম আছে। অবশ্য সবাই পারে না। শিখিয়ে দেওয়া লাগে।
- আমাকে শেখা।
তারেক মুখ নেড়ে বলতে থাকে...
- এখন শেখানো যাবে না। এই দুপুর বেলা চাঁদ কই পাব?
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিলাম। তারেকের সাথে আমার কোনদিন চাঁদের আলোয় কথা বলা হবে না!
এরপর তারেক আমাকে অন্য একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম...
- কী এখানে?
তারেক রহস্যের একটা ভঙ্গি করল...
- বলত কী? দেখি তোর কেমন বুদ্ধি?
আমি প্যাকেটটা নেড়েচেড়ে দেখলাম। তারপর হেসে বললাম...
- হুঁ। বুঝতে পেরেছি। শাড়ী।
তারেক বলল...
- সাথে আরেকটা জিনিস আছে।
- কী?
- টিপ... আগামীকাল পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে... লাল একটা টিপ পরে আসবি...

আমার মন খারাপ হয়ে গেল। আমার লাল পাড়ের শাড়ী আর লাল টিপ পরে কলেজে আসা হবে না। তারেককে বললাম...
- আমার বাবার কথা তো তোকে বলেছি।
তারেক এমন ভাব করল যেন- এটা কোন ব্যাপার না। বলল...
- আরে। বলবি স্পেশাল ক্লাস আছে।
আমি মাথা নীচু করে থাকলাম কিছুক্ষণ। শাড়ীর প্যাকেট আর বই খুব সাবধানে ব্যাগে লুকিয়ে রেখে বাড়ি ফিরে আসলাম।

২.

কলেজের কমন রুমকে আজ আমাদের শাড়ী রুম বলা যাবে। সব মেয়েরা শাড়ী পরছে। সবাই তো আর নিজে নিজে শাড়ী পরতে পারে না। যারা ভালো পারে তারা সবাইকে পরিয়ে দিচ্ছে। শাড়ী পরে আমি কমন রুম থেকে বের হলাম। বুকটা ধ্বক ধ্বক করতেই আছে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কিছু বলিনি। আজ যে পহেলা বৈশাখের ছুটি সেটা বাবা খেয়াল করে নি। কিন্তু বাবার যখন খেয়াল হবে... তখন?
স্টেজের ওদিকে তারেক দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে তারেক ছুটে আসল...
- তুই কী মানুষ নাকি পরী? তোর চুলগুলো কী সুন্দর তুই জানিস?
একটা ব্যাপার আমার মনে হল। তারেক আজ প্রথম আমার চুল দেখল। আমার চুল সবসময় কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে। বাবা বলে... চুল হইল মাইয়া মাইনষের সবচেয়ে ফাঁন্দা জায়গা... দুনিয়ার খারাপ জ্বীন চুলে বাসা বাঁধে... খবরদার চুল কখনো খোলা রাখবি না। সবসময় ঢাইকা রাখবি...
তারেক বলল...
- তোর চুল ধরে দেখতে ইচ্ছে করছে!
আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম... তারেক বলছে...
- ও আচ্ছা! টিপ কই?
আমি তারেকের দিকে টিপের পাতাটা বাড়িয়ে দিলাম...
- আমি কখনো টিপ দিই নাই... কিভাবে দিতে হয় জানি না।
তারেক আমার কপালে টিপ পরিয়ে দিল। কপালে তারেকের হাতের ছোঁয়া পেয়ে মনে হল... আমি যেন সত্যি সত্যি পরী হয়ে গিয়েছি... তারেকের হাত ধরে পরীদের রাজ্যে উড়ে যাচ্ছি। হঠাৎ তারেক বলল...
- কী রে বোকা? কাঁদছিস কেন?
তারেক আমার চুলে হাত রাখল...
- এখন যদি একবার আয়নায় নিজেকে দেখতি তাহলে তুই কাঁদতে পারতি না। এমন সুন্দর একটা মুখে কান্না মানায়?

ঠিক তখনই আমার আকাশ কেঁপে উঠল। কলেজের গেটে বাবাকে দেখতে পেলাম। বাবাও আমাকে দেখলেন। এরপরের দৃশ্যগুলো যেন কিছুটা ঘোরের মধ্যেই ঘটল। বাবা আমার চুল টেনে ধরলেন। টানতে টানতে আমাকে কলেজের বাইরে নিয়ে গেলেন। তরু...বিন্তি সবাই আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করল। তারেকের কণ্ঠ শোনা গেল...
- আঙ্কেল। সানজি'র কোন দোষ নেই... আমিই জোর করে ওকে এনেছি...
বাবা কোন কথা বললেন না। আমি ঝাপসা ভাবে কলেজ - কলেজের মানুষগুলোকে দেখলাম। লজ্জায়... ক্রোধে আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল।

রিকশায় উঠিয়ে বাবা আমার কপালে টিপটার দিকে তাকালেন... যেন ছোবল দিয়ে টিপটা নিয়ে ফেললেন... বললেন...
- বিধর্মী হইবার শখ হইছে না? খাড়া বাসায় যাইয়া নিই...

৩.

রাত বারোটার মত বাজে।
আমি বালিশে মু্খ চেপে শুয়ে আছি। ভয়ংকর কষ্টের কোন মুহুর্তে- কষ্টে মাখা চোখদুটির জন্য বালিশের মত আশ্রয় -পৃথিবীতে আর কোথাও নেই।
আজ দিনটা কেমন একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যে কাটল। বাবার কথাগুলো এখনো কানে লেগে আছে... মেট্রিকের পরেই বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছিলেন। শুধুমাত্র মা'র কারণেই বাবা আমাকে কলেজে ভর্তি করালেন। কত নিয়ম কানুনের মধ্যে আমার কলেজে যাওয়া। আজ বাবা আমার কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবেন... বললেন। আমি কোন প্রতিবাদ করিনি। কিংবা কিভাবে প্রতিবাদ করতে হয়- সেটা আমার জানা নেই।

হঠাৎ আমার মধ্যে কিছু একটা হয়ে গেল। কেউ যেন আমাকে কানে কানে বলছে... এত ভয় পেলে চলে? এত ভয় পেলে চলে... আমি বিছানায় বসলাম। তারেকের কথাটা মনে হল... এত সুন্দর মুখে কী কান্না মানায়?... আয়নায় আমার নিজের মুখ দেখতে ইচ্ছে হল... কিন্তু আমার ঘরে কোন আয়না নেই...

আমি টেবিলের ড্রয়ার খুলে ব্লেড বের করলাম। তারপর ব্লেড দিয়ে কপালে রক্তের একটা টিপ আঁকলাম। আমার কেন জানি না- ভয়ংকর আনন্দ হচ্ছে। এই রাতে জানালা খুলে আমি আকাশ দেখব। চাঁদ-তারারা অবাক হয়ে আমার কপালের টিপ দেখুক। দেখি আমার এই টিপ মুছে দেবার কার সাধ্য আছে ।

কপালের রক্তের টিপ নিয়ে আমি জানালা খুললাম।

অবাক হয়ে দেখলাম জানালার বাইরে তারেক দাঁড়িয়ে আছে। চাঁদের আলো তারেকের মুখে আর আমার কপালের টিপে এসে পড়ছে।

তারেকের দিকে তাকিয়ে আমি হাসলাম...
- আমাকে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বই পড়া শিখিয়ে দে!


মন্তব্য

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আমার পড়া সেরা গল্পগুলোর মাঝে অন্যতম। কষ্টও পেলাম খুব। কিন্তু এই নীল নীল কষ্টগুলো আমাদের কতো পরিচিত!

আমাকে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বই পড়া শিখিয়ে দে!

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পরিবর্তনশীল এর ছবি

কিন্তু এই নীল নীল কষ্টগুলো আমাদের কতো পরিচিত!

খাঁটি কথা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পুরুষ গল্পকারের জন্য একজন নারীর মনস্তত্ব পাঠ ও তার অধ্যয়ন নিঃসন্দেহে সাহসী কাজ ।
পরিবর্তনশীল'- সেই সাহসটুকু করলেন,করলেন বেশ মুন্সীয়ানায় ।

অভিনন্দন গল্পকারকে ।

xxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxx
...অথবা সময় ছিলো;আমারই অস্তিত্ব ছিলোনা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভয় লাগছিল। তবুও লিখে ফেললাম।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার হয়েছে!! মোল্লা বাপটাকে ছেড়ে কিছু লিখলেন না কেন.... দেঁতো হাসি

কল্পনা আক্তার
কল্পনাআক্তার@হটমেইল.কম

..................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ছেড়ে নাকি ঝেড়ে?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

স্বপ্নাহত এর ছবি

চায়ের কাপ একটা শেষ হবার আগেই দেখি তোর আরেকটা গল্প এসে হাজির। ইয়ে, মানে...

জাঝা

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

হো হো হো
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

পরিবর্তনশীল এর ছবি

শুনে ভালো লাগসে!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

কনফুসিয়াস এর ছবি

পাঁচ তারা।
আর কোন কথা নাই!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আপনার ভালো লাগসে জেনে আমার খুব ভালো লাওগতেসে।
থাঙ্কু তারেক ভাই।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্পটা পড়ে প্রথমে একবার মন্তব্য লিখেছিলাম, কেন যে আসে নি, নাকি কিছু লিখলাম যাতে মডারেশন হয়ে বাদ গেল বুঝতেছি না।

এবার আর বেশি কিছু লিখব না, তোরে আমার প্রিয় লেখকের তালিকায় ১ নম্বরে রাখলাম।

-------------
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা

পরিবর্তনশীল এর ছবি

তোরে আমার প্রিয় লেখকের তালিকায় ১ নম্বরে রাখলাম।

হো হো হো
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

শিক্ষানবিস এর ছবি

ভয়ংকর মুগ্ধ হলাম।
বাস্তবতার খুব কাছাকাছি। "গল্পগুচ্ছ" ছিড়ে ফেলাটা আমার জীবনে দেখা একটা ঘটনার সাথে মিলে গেল।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভয়ংকর মুগ্ধ হলাম।

ভয়ের কথা!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

ওয়াও! কি সুন্দর লেখা! এত কোমল করে মেয়েদের মনের কথা কিভাবে লিখলেন রে ভাই? এককথায় অপূর্ব! পড়ার পর অনেকক্ষণ ঝিম মেরে বসে ছিলাম।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

পড়ার পর অনেকক্ষণ ঝিম মেরে বসে ছিলাম।

সরি দেঁতো হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍মুগ্ধ হলাম।
সচলায়তনে সুগল্পকারদের সমাবেশে সুখবোধ প্রবল হচ্ছে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নিজেকে জয় করার অর্থ বিজয় না পরাজয়? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পরিবর্তনশীল এর ছবি

সচলায়তনে সুগল্পকারদের সমাবেশে সুখবোধ প্রবল হচ্ছে।

একমত
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর ঘোর-লাগানো গল্প।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

পরিবর্তনশীল এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর বিশেষণটা আমার খুব ভালো লাগে।

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অমিত আহমেদ এর ছবি

এটা মহিবুল কবিরের সেরা গল্প সো ফার। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। মনটা ভালো হয়ে যায় এমন গল্প পড়লে। আরও কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল মুগ্ধতা এত বেশি যে পারলাম না। প্রিয় পোস্টে অ্যাডিত হলো।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

পরিবর্তনশীল এর ছবি

দেখলেন তো! নামের বানানটা এবার আর ভুল হয় নাই।

আরও কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল মুগ্ধতা এত বেশি যে পারলাম না। প্রিয় পোস্টে অ্যাডিত হলো।

ফাঁকিবাজি! হো হো হো
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

এত ভালো লাগলো যে কি বলবো!
তবে মেয়েটাকে খুব সুন্দর ফুটিয়েছেন।
-নিরিবিলি

পরিবর্তনশীল এর ছবি

থাক! কিছু বলা লাগবে না! দেঁতো হাসি
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অনিন্দিতা এর ছবি

এই আলীমের ঘরে জালিম মেয়েটা কোেত্থকে আসল?
পরিবর্তনশীলের আগের গল্পটা আমাকে কাদিঁয়েছিল । আর এবার একদম শোধ বোধ!
নতুন বছরে এরকম আরও ভাল গল্প পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা

পরিবর্তনশীল এর ছবি

শুভেচ্ছা বিনয়ের সাথে নিলাম
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর গল্প ! খুবই ভাল লাগলো !

- খেকশিয়াল

পরিবর্তনশীল এর ছবি

থাঙ্কু শিয়াল ভাই!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

থার্ড আই এর ছবি

এই ব্লগে বেশ কয়েকজন মেয়ে ব্লগার আছেন, মেয়েদের আনন্দ বেদনা, কষ্ট আর সীমাবদ্ধতার দিনলিপি তাদেরই কলমে উঠে আসার কথা ছিলো...কিন্তু খুব কম সচলের কলমেই সেটি উঠে এসেছে...পরিবর্তনশীলের এই লেখা নিশ্চই তাদের অনুপ্রানীত করবে।

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

হে হে
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নিঘাত তিথি এর ছবি

হাসি
মেয়েরা মেয়েদের আনন্দ বেদনা, কষ্ট আর সীমাবদ্ধতার কথা অনেককাল লিখেছে, এখনও লিখছে। বরং এই আধুনিক (!) সময়ে আধুনিক পুরুষরাই বরং চেষ্টা করতে পারে বিপরীত লিংগ নিয়ে লিখতে। তারচেয়েও ভালো হয় যেকোন লেখক তা সে ছেলে হোক কি মেয়ে, কোন গন্ডি বা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে না ভেবে নিজেদের ইচ্ছামত যেকোন কিছু লিখলে।

আমি বুঝি না কেন মেয়ে লেখকদের কাছে এরকম প্রত্যাশা থাকতে পারে যে তাদের নিজেদের মেয়েলি অনুভূতি নিয়ে লিখতেই হবে?! সেইসব অনুভূতি তাদের লিখায় আসতেও পারে, নাও আসতে পারে। বাধ্যবাধকতা নেই তো! বা এই বিষয়ে না লিখাটা তো কোনভাবে মেয়েলেখকের লেখক হিসেবে অপরিপূর্ণতাও হতে পারে না। নাকি?
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ধুসর গোধূলি এর ছবি
পরিবর্তনশীল এর ছবি

ডর করে? কেন?
তাড়াতাড়ি খুইলা কন?
আপনার ডর করলে তো ডরের কথা...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধরছে !

নিঘাত তিথি এর ছবি

সুন্দর গল্প। অনেক সুন্দর করেই গল্পের প্রধান চরিত্রটি এবং তার মনস্তত্ত্ব ফুটিয়ে তুলেছো।
তবে... ভালো লেগেছে বলেই বলছি, আরেকটু কি থাকলে যেন গল্প হিসেবে পরিপূর্ণতা পেতো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আপু... এইবার মন খুলে ভুলগুলোর কথা- সীমাবদ্ধতাগুলোর কথা বলেন... প্লীজ। না বললে আমি সত্যি সত্যি রাগ করব! বলেন...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নিঘাত তিথি এর ছবি

আগে ধন্যবাদ দিয়ে নেই, আগের মন্তব্যে রাগ না করে বরং উলটো না বললেই রাগ করবে বলেছো বলে। খুবই পজিটিভ।

আমি একটু সামগ্রিকভাবে বলি?
পরিবর্তনশীলের গল্পের প্লটগুলো দেখে আমি খুব উচ্ছসিত হই। এত দ্রুত এত থিম তোমার মাথায় আসে এবং তুমি খুব সৎ , উদ্যমী একজন লেখকের মত সেই থিমগুলোকে যত্ন করে গল্পে প্রতিস্থাপন কর, এটা দেখতেও খুব ভালো লাগে। পড়তে ভালো লাগে। এই গল্পটাও তাই। কিন্তু শিল্পে একটা ব্যাপার হয় কি জানো? অনুভব বলে একটা বোধ ভেতরে নাড়া দেয়। এরকম অনেক বিমুর্ত পেইন্টিং আমি দেখে মুগ্ধ হই, যা কেন ভালো লেগেছে বুঝি না, কিন্তু এটুকু জানি যে ভালো লেগেছে। আবার কোনটায় অন্যরকম হয়। যেকোন শিল্পের পেছনে শিল্পীর অনেক সময়, চিন্তা, সাধনা কাজ করে। তোমার সুন্দর প্লটের সুন্দর গল্পগুলো পড়ে আমার মনে হয়েছে, সম্পূর্ণ গল্পটি আরো শক্ত করে গাঁথা যেতো। কিছু কিছু বাহুল্য বাদ দেয়া যেতো, কিছু কিছু যোগ করা যেতো। সেটা কি রকম জিজ্ঞেস করলে বলব না এজন্য যে সেই "কি রকম"টা পরিবর্তনশীলের নিজেরই ধরন হতে হবে, আমার নয়।

তুমি অনেক লিখছো, ভালো লিখছো। এই রকম করে করেই অভিজ্ঞতায় তোমার নিজস্ব একটি ধরন গড়ে উঠবে বিশ্বাস করি, যেখানে অভিজ্ঞতার মিশেল থাকবে পরিপূর্ণতায়। আপাতত লিখতে থাকো অনেক অনেক, এটাই দরকার। একজন গড়ে উঠতে থাকা সম্ভাবনাময় লেখক পরিবর্তনশীলের জন্য আমার অনেক শুভকামণা রইলো।

পুনশ্চঃ আমি বিশিষ্ট কোন লেখক নই। তবে বিশিষ্ট পাঠক। পাঠকের দৃষ্টিকোন থেকে নিজের কথাগুলো বলে গ্যাছি। এ-ই।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

প্রথমেই আপনার মন্তব্যে (বিপ্লব) দিয়ে নিই।

প্রথমে একটু অহংকারের সাথেই বলি... আমি নিজের মাঝে একজনকে খুঁজে পেয়েছি। সে একজনটা লেখক... সে একজনটা গল্পকার। হো হো হো

এবং আমার সবচে বড় সমস্যা হল... কোন একটা প্লট মাথায় আসলে মাথা থেকে বের করে দেয়ার একটা ছেলেমানুষী আমার মধ্যে কাজ করে। এর কারণ বোধহয় লেখার প্রতি যে সত্যিকারের মমতাটা গড়ে ওঠা উচিত সেটা এখনো আমার মধ্যে আসছে না। এবং আমি এটাও বিশ্বাস করি যে... নিজের লেখার জন্য মমতাটা আমার মধ্যে আসবেই।

একজন গড়ে উঠতে থাকা সম্ভাবনাময় লেখক পরিবর্তনশীলের জন্য আমার অনেক শুভকামণা রইলো।

আপনারা যারা আছেন... তারা যদি আরো বেশি বেশি সমালোচনা করেন... তাহলে খুব তাড়াতাড়ি সেই সময়টা আসবে।

অনেক আগে থেকে আমার একটা স্বপ্ন আছে... আমি বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী পড়ে যেরকম থ হয়ে ছিলাম... আমি যাযাবরের দৃষ্টিপাত পড়ে যেরকম পাগল হয়ে গিয়েছিলাম... সেরকম আমার লেখাও একদিন হবে।
নিজের ওপর আমার আস্থা আছে... আমি পারব।

কিন্তু একটা শর্ত আছে... আরো খোলাখুলি মন্তব্য করবেন... ঠিক আছে?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কপালের রক্তের টিপ নিয়ে আমি জানালা খুললাম।

প্রতিটি ঘুরে দাঁড়ানোতেই কোনো না কোনোভাবে লেগে থাকে রক্তের ছাপ...

দুর্ধর্ষ একটা গল্প
অভিনন্দন
অভিনন্দন
অভিনন্দন....

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

তারেক এর ছবি

অসাধারণ লেগেছে। কালই পড়েছিলাম গল্পটা। সময়াভাবে মন্তব্য করা হয়ে ওঠেনি।
যাযাবর ভাল লাগে জেনে ভাল লাগলো। একটা সময় ঝিম ধরে গিয়েছিল যাযাবর পড়ে। দৃষ্টিপাত, জনান্তিক...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

দুঃখ একটাই লোকটা বেশিদিন লিখতে পারল না। অবশ্য যা লিখেছে তা হাজার বছর পড়া যায়!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতিথি লেখক এর ছবি

তুই কি আসলেই জানিস যে তুই কতটা ভাল লিখিস?

ঘাস ফড়িং

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি আগে লেখছিলাম, আমার ডর করে।
আপনার বক্তব্যটা সেই ভাবনাটার শ্যাডো। গড গিফটেড এই মেধা থেকে যদি বঞ্চিত হয়ে যাই আমরা, মুগ্ধ পাঠকেরা- ভয়টা সেখানেই।

গুরু, লিখতে থাকেন। মেধাটা খিয়াল কইরা। ডর করে গো গুরু ডর করে খালি!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এমন করে যদি কেউ উৎসাহ দেয়... আমি ভালো লিখতে বাধ্য।
ধন্যবাদ গুরু আর ইমন।
ইমন আশা করি নিয়মিত হবি!!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর এই গল্পটা আমি এত দেরীতে পড়লাম !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ধন্যবাদ, শিমুল আপা

---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।