সেই কলার উঁচু ছেলেটা (৩)

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি
লিখেছেন প্রদীপ্তময় সাহা [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৬/০৪/২০১২ - ১০:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পর্ব ১ ।। পর্ব ২
(আপনাদের দাবিতে এবারের পর্বটাকে একটু বড় করে পোষ্ট করলাম। আশা রাখি আপনাদের প্রশ্রয় থেকে বঞ্চিত হব না।)

পরবর্তী ঘটনায় যাবার আগে আমি একবার আমাদের শহর এবং স্কুল সম্বন্ধে একটু জানিয়ে রাখি। আমাদের শহরকে ঠিক শহর না বলে মফস্বল বলাই যুক্তিযুক্ত হবে। কোচবিহার জেলার প্রান্তবর্তী মহকুমা সদর, আমাদের তুফানগঞ্জ। গা ঘেঁসে আসাম আর বাংলাদেশ। একটু দূরেই ভূটান। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে রায়ডাক নদী। আর আমাদের এই ছোট্ট পৌরসভার অন্যতম গর্বের ধন আমাদের স্কুল – নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুল। ১৯১৬ সালে স্থাপিত কোচবিহারের মহারাজার নামাঙ্কিত এই স্কুলে একসময় পড়াশোনা করেছেন কিংবদন্তী লোকগীতি গায়ক জনাব আব্বাসঊদ্দীন। খুবই শান্তিপূর্ণ এই শহরে এই লেখা লেখা অবধি একটাও খুন বা ধর্ষণ হয়নি। সাম্রপদায়িক সম্প্রীতি হয়ে উঠেছে জীবনযাপনেরই অঙ্গ। মূলত হিন্দুপ্রধান শহর। কিন্তু শহরের একদম প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে মসজিদ। আমাদের স্কুলের দুপাশে একদিকে একটা শিব মন্দির আর আরেকদিকে মসজিদ। এই শহরের মানুষদের একটা বড় অংশ মাত্র এক প্রজন্ম আগেও ছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা। আর রয়েছেন কোচবিহারের আদি রাজবংশীরা। রাজবংশী ভাষার মর্যাদা এবং আলাদা কামতাপুর বা গ্রেটার কোচবিহার গঠন নিয়ে একটা চাপা উত্তেজনা তাই ছিল এবং আছে। কিন্তু তা কখনও সামাজিক সৌজন্যের পরিপন্থী হয়নি।

প্রতিবার বর্ষাকালে আমাদের রায়ডাক নদীতে বান আসত। নদীর চরে বসবাসকারী মানুষেরা তাদের গরু-বাছুর-ছাগল নিয়ে আমাদের স্কুল এবং অন্যান্য স্কুলগুলিতে শরণার্থী হয়ে আসত। দু-চারদিন পর সরকারী ব্যবস্থা এবং সাহায্য পেলে তারা চলে যেত। এতদিন আমার কাছে তাদের আগমন ছিল স্কুল ছুটি পাবার একটা ছুতো। কিন্তু সেবারের বন্যা ছিল ভয়াবহ। প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছিল বাঁধ ভেঙে শহরে জল ঢুকে যাবার কথা। একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছিল সকলের মনে। কিন্তু নাসিরকে দেখে মনে হল না সেসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত বলে। একদিন বিকেলে ও একটা প্রস্তাব রাখল। আমরা অবশ্যই তাতে সায় দিলাম। ঠিক হল আমরা সবাই বাড়ি থেকে চিঁড়া-গুড়-পাউরুটি এসব এনে স্কুলে আসা শরণার্থীদের বিলি করব। পাঠ্যবইয়ে পড়া মহাপুরুষদের মত নিজেকেও মহান প্রমাণ করার এই সুবর্ণ সুযোগ আমিও হাতছাড়া করিনি। কিন্তু দেখলাম নাসির নিজেই কিছু নিয়ে আসেনি। এতদিন ওকে দেখে আন্দাজ করেছিলাম ওদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এবারে জানলাম তা ‘ভাল নয়’ এর পর্যায়ে পড়ে না, বরং বলা চলে ‘সঙ্গীন’।

ওর বাবা হার্ট অ্যাটাক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। বাড়িতে বেকার দাদা, ছোট বোন, মা। ওরা থাকে মামার বাড়িতে। কাকারা সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে ওদের তাড়িয়ে দিয়েছে বছর সাতেক হল। দাদুর ড্রাইভারির টাকায় তিন মামা সহ ওদের সংসারটাও চলে। ওর বাবা অসুস্থ হবার আগে লটারি টিকিট বিক্রির চেষ্টা করত। টুকটাক খুব সামান্য কামাই হত। ওদের বাড়িতে একবেলা রান্না হলে পরের বেলার ঠিক থাকে না। মুখ গোমড়া করে বাড়ি ফিরে এলাম। খেতে বসে শুধু ওর কথা মনে হল। কিন্তু আমারও খিদে পেয়েছিল। তাই মহান হতে পারলাম না। খেয়ে নিলাম। কিন্তু মনে হচ্ছিল এটা ঠিক না। আমার কোন না কোন ভাবে ওকে সাহায্য করা দরকার। আমি এটুক জানতাম যে আমার টিফিনের পয়সা জমিয়ে ওর বাবার চিকিৎসার টাকা হবেনা। সব বন্ধুরা মিলে বাড়িতে বলে কিছু টাকা জোগাড় করলাম। কিন্তু তারপরদিন থেকে নাসিরের দেখা নেই।

কয়েকদিন পর বন্যা থামল। স্কুল চালু হল। কিন্তু নাসির বেপাত্তা। আমরা কেউ জানিনা ওর বাড়ি ঠিক কোথায়। শুধু জানি অনেক দূরে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে নাসির স্কুলে এল। জানলাম ওর বাবা আর নেই।

ওর চোখে কোন জল ছিল না। ছিল এক অদ্ভুত নির্লিপ্ততা। গভীর সেই ব্যাথাকে আত্মস্থ করে ও হয়ে গিয়েছিল শান্ত। ওকে কোন সান্ত্বনা দিইনি। দেওয়া উচিতও ছিল না। আর দেবার ভাষাও আমার জানা ছিল না। আর তার চেয়েও বড় কথা ওকে দেখে একবারও মনে হয়নি ওর সান্ত্বনার প্রয়োজন আছে বলে। আসলে হয়তো, ঠোকর খেতে খেতে যে বড় হয়, প্রতিটা হোঁচট তাকে আরও একটু শক্তিশালী করে।

এরপর নাসিরের পড়াশোনা সেখানেই শেষ হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তা হল না। ও পড়তে চাইল। ওর দাদা টিউশনি শুরু করল। আর ও একটা অদ্ভুত ধরনের কাজ হাতে নিল। গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে যাঁরা তাঁতের কাজ করতেন তাঁদের কাছ থেকে বাড়তি ছাঁট সুতো ও কিনে নিত অল্প দামে। তারপর সেগুলোকে একসাথে করে প্যাকেট করত। তা বিক্রি করত বিভিন্ন গ্যারেজ আর ড্রাইভারদের কাছে। সেই জট পাকানো সুতোগুলো নাকি মেশিনের বিভিন্ন পার্টস মোছামুছির কাজে ব্যবহৃত হত। তো এই করে ওর যে আয় হত তাতে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে নিত কোন রকমে। এদিকে যে স্যার নাসিরের নকল ধরে ওকে এক্সপেল করেছিলেন সেই নারায়ণ স্যার আমাদের পাশের বাড়িটা কিনে সেখানে পাকাপাকিভাবে চলে এলেন। আর আমার বাবার কাছ থেকে নাসিরের সব ঘটনা শুনে একদিন নাসিরকে ডেকে পাঠালেন। ওকে বোঝালেন। ও স্বীকার করল আর কোনদিন নকল করবে না। স্যারের মধ্যেও একরকম সহানুভূতি কাজ করছিল। এরপর থেকে স্পেসিমেন বই আর নোটসের জন্যে কখনও ওর অসুবিধে হয়নি। নাসিরকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, নারায়ণ স্যারকে দেখে ওর রাগ হয় কিনা। ও বলেছিল হয় না। ও অন্যায় করেছিল। তাই স্যার যেটা করেছিলেন তা ঠিকই করেছিলেন। আজ এত বছর পর আমি সেই অবাঞ্ছিত ঘটনাটার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারন তা না হলে আমি নাসিরকে পেতাম না। আর আমার জীবনটা পরিপূর্ণতা পেত না।

দেখতে দেখতে আমরা নাইনে উঠে গেলাম। নাসিরও সব বিষয়ে পাশ করে গেল। বলা হয়নি এর আগেই আমাদের মধ্যে গল্পের বই চালাচালি শুরু হয়ে গেছিল। এবারে যোগ হল একটা নতুন দুনিয়া। সায়েরি। আমাদের স্কুলে সংষ্কৃত আর ঊর্দু দুটো ভাষারই টিচার ছিলেন। সেভেন পর্যন্ত যেকোন একটা ভাষা শিখতে হত। ও হ্যাঁ হিন্দীও ছিল। আমি ওকে টুকটাক সংষ্কৃত শেখাতাম। আর ওর কাছ থেকে হিন্দী আর ঊর্দু শিখতাম। অবশ্য আমরা কেউই কোনটাতেই পণ্ডিত ছিলাম না। তবু উৎসাহের অভাব ছিল না। নাসিরের কাছে অনেক ঊর্দু সায়েরির কালেকশন ছিল। আমি সেগুলো মুখস্থ করার চেষ্টা শুরু করলাম। আর তৈরী হল মহম্মদ রফি, কিশোর কুমারের গানের ক্যাসেটের ধার করা। একটা অন্য দুনিয়া আমার সামনে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছিল। অবশ্য সব ক্রেডিট শুধু নাসিরেরই নয়। আমার হাত ধরে ও পেয়েছিল ফেলুদা, শঙ্কু, টিনটিন, রবীন্দ্র সঙ্গীত। আমার ভোলাভালা ভাল ছেলে ইমেজটা ধীরে ধীরে নড়বড়ে হয়ে উঠতে থাকল। ফার্স্ট থেকে লাস্ট সবাই আমার বন্ধু হয়ে গেল। আমার রেজাল্ট যেহেতু খারাপ হয়নি তাই স্যারেদের দিক থেকে আপত্তি ছিল না। আমাদের বন্ধুত্ব মোটামুটি বিখ্যাত হয়ে গেল। নাসির আর আগের মত উগ্র ছিল না। আমার জ্ঞানবর্ষণের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়াশোনাতেও মন দিল। কিভাবে যেন রটে গেল আমি নাকি নাসিরকে ভাল বানিয়েছি।

আসলে চারপাশের মানুষেরা সেটাকেই মেনে নিতে চান যেটা মেনে নিলে তাদের জানা ফর্মুলার খুব একটা অদল-বদল করতে হয় না। কিন্তু আসল কথাটা হল নাসিরই আমাকে মানুষ করেছিল। আগে ছিলাম মানুষের মডেল।

(চলবে)


মন্তব্য

rabbani এর ছবি

ভাল, চলুক

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

সাথে থাকুন।
আর খুব ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আপনার লেখার হাত দারুন।
চলুক।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

দাদা, মনে হচ্ছে শরীর একটু ভাল হয়েছে।

মন্তব্যের জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাহস পাচ্ছি। হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ইয়াসির এর ছবি

প্রথম প্যারাটি খুব আশাব্যাঞ্জক। শান্তি, সম্প্রীতির কথা শুনলে খুব ভালো লাগে। লেখা চলুক

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া।

জানিনা কতদিন এই গর্বটা ধরে রাখতে পারবে আমার শহর !
কিন্তু বিশ্বাস রাখি, চিরকাল পারবে।
একদিন গোটা বিশ্বই হয়ে উঠবে এরকম, এই স্বপ্ন দেখি।

মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুব ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।

এবিএম এর ছবি

আমাদের স্কুলের দুপাশে একদিকে একটা শিব মন্দির আর আরেকদিকে একটা মসজিদ

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন উদাহরনগুলো দেখলে ভালো লাগে ভীষণ। লেখা চলুক।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

সত্যি দারুন লাগে।
এখন আমি শিলিগুড়িতে থাকি। এখানে আমি একটা জায়গায় এমন দৃশ্য দেখেছি যা, কোথাও দেখিনি বা শুনিওনি।

মন্দির এবং মসজিদ একদম পাশাপাশি।
কী যে ভাল লাগে বলে বোঝাতে পারব না।
দেখি একদিন ছবি তুলে পোস্ট করতে পারি কিনা।

মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পথিক পরাণ এর ছবি

শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ১৫০ কি মি দক্ষিণে, বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলা শহরে একটা মন্দিরের বেদি ঘেঁষে বড় একটা মসজিদ আছে। সন্ধ্যায় মসজিদে আজানের পরপরই মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি বেজে যায় নিয়মমতো। এই মন্দিরে বেশ কয়েকবার দুর্গাপূজা দেখেছি।

মসজিদ মন্দিরের পাশেই একটা গির্জা বানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল বছর তিনেক আগে। উদ্যোগটা অবশ্য সফল হয় নি।
মন্দির মসজিদের ছবিটা পাবেন www.dclalmonirhat.gov.bd > প্রথম পাতায় পর্যটন ও ঐতিহ্য > দর্শনীয় স্থান > কালীবাড়ি মন্দির ও মসজিদ = এই খানে। (লিঙ্কটা নিচ্ছে না কেন যেন)

এইরকম আরও জায়গা আছে জেনে ভালো লাগলো।

--------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ---

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

দেখলাম ও পড়লাম।
সত্যি দারুন লাগল। চলুক

নিলয় নন্দী এর ছবি

ক্লাস সিক্স থেকে এইট অবধি সংস্কৃত ভাষাটা আমাকেও শিখতে হয়েছিল।
গোটাটাই গুলে খেয়ে নিয়েছি- তবে হরফগুলো ভুলি নি। দেঁতো হাসি
পরে দেখি হিন্দী পড়তে আর কোন সমস্যা হয় না।
যে কোন শিক্ষাই জীবনের যে কোন সময় কাজে লাগতে পারে, যদি প্রয়োজন হয়।

লেখা জবরদস্ত হচ্ছে। চলুক চলতে থাকুক।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নিলয়দা।
আমার অবস্থাও একদম আপনার মতই। দেঁতো হাসি

আচ্ছা, লেখার দৈর্ঘ্যটা এবারে কি ঠিক আছে?

মর্ম এর ছবি

১। পড়ে যাচ্ছি। লিখতে থাকুন।

২। কিছু বানান ভুল চোখে পড়ল- একটু দেখে নেবেন?

৩। খুঁতখুঁতে পাঠকের মতামত দেই একটু, আশা করি মনে নেবেন না- আত্মজীবনী হলেও লেখা 'আমি'-নির্ভর হয়ে যেতে থাকলে লেখা পড়তে গিয়ে ভাল লাগা কমে। নাসিরকে জানতে ভাল লাগছে, আপনাকেও- তবে মনে হল এ ব্যাপারে সতর্ক থাকাটাই হয়ত উচিৎ হবে-

৪। পরের লেখা আরো আরো আকর্ষনীয় হোক।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

তারেক অণু এর ছবি

চলুক
সাম্রপদায়িক সম্প্রিতী তো প্রশ্নাতীত। এই বাক্যটা যেখানে প্রয়োগ করেছেন তাতে কিন্তু ভুল বোঝার সম্ভাবনা অনেক বেশী, কারণ আগের বাক্যটি!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আমি কিন্তু বুঝি নাই দাদা । চিন্তিত
"খুবই শান্তিপূর্ণ এই শহরে এই লেখা লেখা অবধি একটাও খুন বা ধর্ষণ হয়নি।" এই লাইনের পর "সাম্রপদায়িক সম্প্রীতি তো প্রশ্নাতীত।" বললে তো এটাই বোঝায় যে সাম্রপদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে কোন সংশয় বা প্রশ্নের অবকাশ নেই।

তবু আপনি যখন বললেন নিশ্চই কিছু একটা খটমট আছে। হাসি

তাই বেশি প্যাচাল না পাইড়া লাইনটা একটু ঘুরাইয়া দিলাম।
এইবারে বলেন কেমন হইল? দেঁতো হাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

পড়ছেন জন্যে অশেষ ধন্যবাদ।
আর বানান ভুল যে দু-একটা চোখে পড়ল ঠিক করলাম।
তবু আপনি যদি কষ্ট করে আরেকবার দেখে বলেন, খুব ভাল হয়। চিন্তিত

আপনি খুঁতখুঁতে পাঠকের মন নিয়ে যা বলেছেন আমি তার সাথে একশভাগ সহমত পোষন করি।
আর মনে নেবার কোন প্রশ্নই নেই। হাসি

আপনাদের মতামতই তো আমার লেখাকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করবে।
আসলে এই লেখাটা আমার হৃদয়ের এত কাছের আর আমি এত আবেগের যে মাঝে মাঝে সেই আবেগে আর স্মৃতিচারণে সম্পৃক্ত হয়ে লেখনশৈলীর প্রতি অবহেলা করা হয়ে যাচ্ছে। এটা ঠিক না আমি জানি। আর কতটুকু 'আমি' ঠিক আর কতটুকু ভুল তার হিসেব খুব গোলমেলে। কিন্তু খুবই গুরূত্বপূর্ণ। চেষ্টা করব এটাকে ঠিক করার।

খুব সুন্দর এই গঠনমূলক সমালোচনার জন্যে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই লন লেখা -গুড়- হয়েছে

খুব ভাল থাকবেন আর পাশে থাকবেন।
শুভেচ্ছা।
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

বনের রাজা টারজান এর ছবি

আজকের পত্রিকায় একটা রিপোর্ট দেখলাম, শীর্ষেন্দু বাংলাদেশ এ, উনি বলেছেন "পাঠকের কথা চিন্তা করে লেখলে সর্বনাশ" ।।। নিজের জন্য লিখেন। হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

চমৎকার। চলুক জোরছে চলুকহাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

চলছে, চলবে। দেঁতো হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পথিক পরাণ এর ছবি

সুখপাঠ্য লেখনী। ভালো লাগলো।

অ ট-
আপনার মহকুমা শহরটি সম্ভবত আমাদের কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারি উপজেলার উত্তরে লাগোয়া।

দিনহাটার দিকে এসেছেন কখনো? দিনহাটার এদিকে ধরলা নামে একটা নদী আছে। এর উপর রেলের সেতুটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত চালু ছিল বলে জানি। বেঙ্গল আসাম রেলওয়ে ধরে এপথে আসাম যাওয়া যেত।

দিনহাটার কাছে এপারে মোগলহাট নামে একটি জায়গা আছে। আমাদের কিংবদন্তী নুরুলদিনের নামের সাথে এই জায়গাটি যুক্ত হয়ে আছে।

-----------------------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ---

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্যে।

আপনার অনুমান একদম ঠিক। আর দিনহাটা আমি গিয়েছি। আর যে ধরলা সেতুর কথা আপনি বললেন তা শুনেছি তবে দেখা হয়ে ওঠেনি। আর মোগলহাটের কথাও শুনেছি।

একদিন কত সহজেই এসব জায়গা দিয়ে যাতায়াত চলত।
ভাবলেই কেমন যেন একটা লাগে। মন খারাপ

সাথে থাকুন। ভাল থাকুন।

পথের ক্লান্তি এর ছবি

ভাল লাগছে। আগ্রহ নিয়ে পড়ছি নাসিরের গল্প:)

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার আর মন্তব্য করার জন্যে।

পরবর্তী পর্বগুলোতেও সাথে থাকুন।
আর খুব ভাল থাকুন।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

বন্দনা এর ছবি

লেখা আগাক তরতর করে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, লেখাটা পড়ার ও মন্তব্য করার জন্যে।

আপনার মন্তব্য অবশ্যই লেখা তরতর করে এগোনোর ইন্ধন জোগাবে। হাসি

খুব ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মুস্তাফিজ এর ছবি

চলুক। সিলিগুড়ির কথাও সুনতে চাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অবশ্যই শোনাব ভাইয়া।
তবে এই সিরিজে তার সুযোগ কম।

কিন্তু কথা দিলাম, শিলিগুড়ি নিয়ে একটা আলাদা পোষ্ট অবশ্যই দেব। হাসি

অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্যে।
ভাল থাকবেন।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। চলুক দাদা।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দাদা।
বলছেন যখন চলবে।

খুব ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।

ক্যাপ্টেন নিমো এর ছবি

ভালো লাগল। ছোটবেলার বন্ধুদের কথা মনে পড়ে গেলো

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

ছোটবেলার বন্ধুত্বের স্মৃতির ঘ্রাণই আলাদা।
মনটা অনেক দূরে কোথাও চলে যায়।

মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগল।
ভাল থাকবেন।

কর্ণজয় এর ছবি

সরল লেখাটি ভাল লেগেছে...

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল।

সাথে থাকুন।
ভাল থাকুন।

সাবেকা এর ছবি

ওমা ! এই নাকি বড় লেখা ! আরম্ভ করতে না করতেই ফুড়ুৎ করে শেষ হয়ে গেল হাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

কী বলেন আপনি !!! অ্যাঁ
সাড়ে পাঁচশো শব্দ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে নশো করলাম তাতেও ছোট !!! ইয়ে, মানে...

এইটা লেখা ভালোর প্রশংসা নাকি নিন্দা বুঝলাম না। দেঁতো হাসি

সাবেকা এর ছবি

করলাম প্রশংসা আর আপনি কি না নিন্দে খুঁজেন মন খারাপ

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

মাফি, মাফি, ভুল হইছে। গুরু গুরু
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
হাসি

সচল জাহিদ এর ছবি

মুগ্ধ হয়ে পড়ছি। চলুক প্রদীপ্ত।

চলুক চলুক চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দাদা সাথে থাকার জন্যে।

যখন ভাবলাম আর মন্তব্য আসবে না, তখন আপনার মন্তব্য এসে দিল খুশ
করে দিল। দেঁতো হাসি

খুব ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা।
আবার দেখা হবে পরের পর্বে। হাসি

কুমার এর ছবি

চলুক, ভাল হচ্ছে। দীপু নাম্বার টু'র আমেজ পাচ্ছি।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

ঠিকই বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিল আছে।

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
ভাল থাকবেন।

সত্যপীর এর ছবি

আর রয়েছেন কোচবিহারের আদি রাজবংশীরা। রাজবংশী ভাষার মর্যাদা এবং আলাদা কামতাপুর বা গ্রেটার কোচবিহার গঠন নিয়ে একটা চাপা উত্তেজনা তাই ছিল এবং আছে।

এই ব্যাপারটা নিয়ে জানতে চাই প্রদীপ্তদা। একটা পোস্ট ঝাড়েন। কামতাপুর আর গ্রেটার কোচবিহারের ব্যাপারটা কখনো শুনিনি।

আর লিখায় মন্তব্য করা হয়না কিন্তু পড়ছি মন দিয়ে।

..................................................................
#Banshibir.

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

পড়ছেন জেনে ভাল লাগল, ভরসাও পেলাম।

আর গ্রেটার কোচবিহার বা কামতাপুর ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্যই লিখব।
আসলে কোচবিহার তো ছিল একটা করদ রাজ্য। কখনই সরাসরি ইংরেজদের অধীনে ছিল না।
তাই ভারতে এর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কিছু ঝামেলা ছিল।
১৯৪৯ সালে কোচবিহার ভারতে অন্তঈভুক্ত হয়।
আর পশ্চিমবঙ্গের জেলা হয় ১৯ জানুয়ারী ১৯৫০ সালে।
তো, এই বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্তির জন্যে এই ভূতপূর্ব রাজ্যের কিছু এক্সট্রা সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য ছিল, মানে দেওয়া হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু আদতে সেটা হয়নি।

এই নিয়েই ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আর তা থেকেই আলাদা রাজ্য বা দেশের দাবি।

অবশ্যই লিখব এ নিয়ে। আগে এই সিরিজটা শেষ করি। হাসি

বনের রাজা টারজান এর ছবি

নাসির কে দেখতে চাই বেশী বেশী।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আসছে আসছে।

বনের রাজা টারজান এর ছবি

আপনার লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেও এরকম একটা লেখা গোছাচ্ছি । লইজ্জা লাগে দোয়া করবেন।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

অবশ্যই আমার শুভকামনা আপনার সাথে থাকবে।
আমার লেখা পড়ে আপনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন, এটা তো আমার কাছে বিরাট সম্মান।

খুব ভাল থাকুন আর সাথে থাকুন।
শুভেচ্ছা।
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অচল  এর ছবি

কি সুন্দর করে ছবি এঁকেছেন ভাই, মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ৮০ শেষের দিকে আমার স্কুল শুরু হয়ছিল, সেই পুরানো ছিমছাম জীবনের কথা এক লহমায় চোখের সামনে টেনে আনলেন। ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবনা।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আশির শেষের দিকেই আমারও স্কুলের শুরু। তাই হয়তো আপনি আরও ভাল করে সেই সময়টাকে ধরতে পারছেন। আপনার মন্তব্য অনেক ভাললাগা দিয়ে গেল। এই অণুপ্রেরণা নিয়েই আজ পঞ্চম পর্ব লিখতে শুরু করছি। কিন্তু আপনাকেও তো তবে ধন্যবাদ দিতে পারছি না।

তাই থাকল এই আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

কিছুদিন নিয়মিত পড়া থেকে পিছিয়ে পরেছিলাম। আজ থেকে শুরু করেছি।
এবার পরের পর্বে যাই হাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

ঝড়-বৃষ্টিতে নেট না থাকা আর নববর্ষে বাড়ি যাওয়ার কারনে আমিও কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছি।
আপনার মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগল।

পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
সাথে থাকুন।

আর খুব ভাল থাকুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।