যত্রতত্র কয়েকছত্র ০১ > সাযযাদ কাদিরের সঙ্গে

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি
লিখেছেন লুৎফর রহমান রিটন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৬/২০০৯ - ১২:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সত্তুরের দশক। ছড়াকার হবার বিরাট স্বপ্ন-বাসনা আর বিশাল প্রজেক্ট-পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছি।একটাই কাজ সারা দিনমান—ছড়া পড়া, ছড়া লেখা আর ছড়া নিয়ে বিস্তর চিন্তা-ভাবনা করা।আমার পৃথিবীটা তখন ছড়াময়।কেউ কেউ ধরাকে সরা জ্ঞান করে,আর আমি ধরাকে ছড়া জ্ঞান করি।আমার সামনে পেছনে ডানে বাঁয়ে সর্বত্র ছড়ানো ছিটানো ছড়া আর ছড়া।আমি জেগে থাকি ছড়া নিয়ে।ছড়াও জেগে থাকে আমার সঙ্গে। আমি ঘুমুতে যাই ছড়া নিয়ে। ছড়াও ঘুমোয় আমার সঙ্গে।একদিন মনে হলো--পত্রিকার পাতায় বিরামহীন ভাবে শুধু ছড়া লিখলেই তো হবে না, ছড়ার সংকলন মানে লিটল ম্যাগও বের করতে হবে।তো এইরকম মহৎ চিন্তার বাস্তবায়নে কোমর বেঁধে নেমে পড়লাম।
ছড়াকার আর সম্পাদক হতে গিয়ে নানান রকমের পাবলিকের হাতে কতো যে নাস্তানাবুদ হলাম তা শুধু আল্লামাবুদ জানে। অবজ্ঞা অনাদর অবহেলা আর অপমানের ঝোলা কাঁধে নিয়েও নির্বিকার আমি হতে চেয়েছি তবুও একজন ছড়াকারই। অপমানের জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে জ্বলতে জ্বলতে ছড়া ফেরি করতে করতে করতে করতে অবশেষে একদিন হয়ে উঠলাম সত্যিকারের ছড়ার ফেরিঅলা।আমার সেইসব দিনরাত্রির আনন্দ বেদনার কাব্য এইখানে...।
সকালে ইন্টারনেটে ফেসবুকে পরিভ্রমণকালে হঠাৎ দেখা পেলাম সাযযাদ কাদিরের।কবি তিনি।আমার সঙ্গে তাঁর খুবই চমৎকার সম্পর্ক।আশি-নব্বুইয়ের দশকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছাদে কিংবা লনে কতো যে আড্ডা দিয়েছি তাঁর সঙ্গে!বাংলা বানানের ক্ষেত্রে এবং বাংলা প্রুফ দেখার ক্ষেত্রে তিনি এক অনন্য প্রতিভা।আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারও আমাকে বলেছেন যে “সাযযাদ হচ্ছে প্রুফ দেখার বিষয়ে নাম্বার ওয়ান।” কেন্দ্রের ছাদে আমি আর সাযযাদ ভাই মাঝে মধ্যেই হিন্দি গানের আন্ত্যক্ষরী খেলতাম।হিন্দি ফিল্মের পুরনো দিনের গান থেকে শুরু করে সাম্প্রতিকতম যাবতীয় হিট গান আমার মতো তাঁরও ঠোঁটস্থ ছিলো। আজকের কাহিনীর অন্যতম প্রধান কুশীলব এই সাযযাদ কাদির।
সত্তুরের সূচনায় যখন আমি সদ্যতরুণ এক ছড়াকার, ছড়া সংকলন বের করার মহান কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার সেই টগবগ করা প্রবল উত্তেজনার মুহূর্তে একদিন সংবাদের খেলাঘরের পাতায় কাক বিষয়ে দারূণ একটা ছড়া পড়ে রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বিশেষ করে বিষয়ের কারণে। ছড়ার রচয়িতা হিশেবে লেখা আছে সাযযাদ কাদিরের নাম।এই নামে কোনো ছড়াকার আছে তা আমার জানা ছিলোনা।সিদ্ধান্ত নিলাম—এই লোকের একটা ছড়া নিতেই হবে সংকলনে।সংবাদে খোঁজ নিয়ে জানলাম, তিনি সাপ্তাহিক বিচিত্রায় কাজ করেন।হ্যাঁ, বিচিত্রার প্রিন্টার্স লাইনে তাঁর নামটি তো দেখেছি।ওয়ান ফাইন মর্নিং আমি রওনা হয়ে গেলাম বিচিত্রা অভিমুখে।ডিআইটি রোডের দৈনিক বাংলা ভবনের পাঁচ কিংবা ছয় তলায় বিচিত্রা অফিস।
আমি সাযযাদ কাদিরকে কখনো দেখিনি।তাই তাঁর চেহারা চিনি না।বিচিত্রার পিওন আমাকে দেখিয়ে দিলো—অই যে অই টেবিলে যে বসা সেই স্যারের নামঅই সাযযাদ কাদির।
খুবই ছোট্ট একটা টেবিলের ওপাশে ঝুঁকে পড়ে কিছু একটা লিখছিলেন তিনি নিউজপ্রিন্টের প্যাডে।আমি পায়ে পায়ে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।সালাম দিলাম।চশমার ফাঁক গলিয়ে একঝলক তাকালেন তিনি আমার দিকে,কিন্তু সালামের জবাব দিলেন না।আমি আবারো সালাম দিলাম।তিনি আবারো তাকালেন এবং এবারো চশমার ফাঁক গলিয়েই,সরাসরি নয়।চেহারায় খুব বিরক্তি এনে বললেন—কি চাই? আমি খুবই বিনয়ের সঙ্গে বললাম—আমার নাম অমুক,আমি অমুক নামে একটা ছড়া সংকলন বের করতে যাচ্ছি,আপনার একটা ছড়া যদি......আমার কথা শেষ হতে না দিয়েই তিনি লেখার ব্যস্ততায় ফিরে যেতে যেতে বললেন—আমি ছড়া লিখিনা।আমি বললাম—কিন্তু সংবাদের খেলাঘর পাতায় কাক বিষয়ে আপনার অসাধারণ একটা ছড়া......আমার কথা শেষ হতে দিলেন না তিনি এবারো।খুব দ্রুততায় নিউজপ্রিন্টের প্যাডে মনোনিবেশ করে ডান হাতের বলপেন দিয়ে কিছু একটা লিখতে চাওয়ার ভঙ্গি করে বাঁ হাতটা উঁচিয়ে ধরে মাছি তাড়ানোর মতো কব্জি নাড়াতে লাগলেন তিনি আমার উদ্দেশে।এবং এটা করলেন তিনি আমার দিকে না তাকিয়েই।
বিস্মিত হতভম্ব আমি দাঁড়িয়ে আছি,কয়েক সেকেন্ড মাত্র, কিন্তু একেকটা সেকেন্ড এতো দীর্ঘ......মাছি তাড়াতে তাড়াতে আমার দিকে না তাকিয়েই তিনি বললেন—যাও।এইবার তাঁর কব্জিটা থামলো কিন্তু সেটার একটি আঙুল আমাকে দরোজা নির্দেশ করলো।
খুব দ্রুত বিচিত্রার কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দেখি—পা আমার হাঁটতে চায়না,ওরাও ক্লান্ত অপমানের ভারে।এলিভেটর না নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছি তাও। দৈনিক বাংলার আধা প্রশস্ত সিঁড়িটা কেমন বিকট আকারের প্রশস্ত হয়ে উঠলো যেনো।সিঁড়ির এক একটা স্টেপ-এ এতো বিশাল গ্যাপ!বারবার মুছি, চোখ তবু বারবার ঝাপসা হয়ে আসে....!

বারো তেরো বছর পর।

১৯৯০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের কঠোর তত্তাবধানে আমার সম্পাদনায় তিন খণ্ডে প্রকাশিত হলো বাংলাদেশের নির্বাচিত ছড়া। শিশুতোষ, হাস্যরসাত্মক আর রাজনৈতিক ছড়া দিয়ে তিনটি খণ্ড সাজানো। সোনারোদে ঝলমল এক বিকেলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চত্বর লাগোয়া গলিটায় হাঁটতে হাঁটতে আমি আর কবি সাযযাদ কাদির হিন্দি+বাংলা আন্ত্যক্ষরী খেলছি।সাযযাদ ভাই সিগারেট ফুঁকছিলেন খুবই আয়েসী ভংগিতে। খেলা থামিয়ে আচানক বললেন—বাংলাদেশের নির্বাচিত ছড়া সম্পাদনা করছো দেখলাম।
--জ্বি সাযযাদ ভাই।
--তিনটা খণ্ডই সায়ীদ ভাই আমারে দিছে।
--জ্বি সাযযাদ ভাই।
--কিন্তু বিস্মিত হইয়া লক্ষ্য করলাম এই সংকলনে আমার ছড়া তুমি রাখো নাই।
এতোক্ষণ পর এইবার আমার বিস্ময়ের পালা শুরু হলো। আমি মহাবিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম—আপনার ছড়া!আপনার ছড়া রাখবো কিভাবে?আপনি কি ছড়া লেখেন নাকি?
--অই যে তুমি খুব পছন্দ করছিলা, তোমার মনে নাই! সংবাদে ছাপা হইছিলো কাক নিয়া আমার একটা ছড়া,বলতে বলতে তিনি মুখস্ত শুনিয়ে দিলেন তাঁর সেই ছড়াটা। আমি বললাম—সাযযাদ ভাই আর ইউ ক্রেজি? আপনের মাথা ঠিক আছে তো?
সাযযাদ ভাই কিছুটা হতচকিত--মানে?
--মানে আপনের মাথা খারাপ হয় নাই তো?
--এইখানে মাথা খারাপের কথা আসলো ক্যান?
--সাযযাদ ভাই, আপনে দুই বাংলার প্রখ্যাত একজন ছড়াকারের সাথে কথা কইতাছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কটা এইখানে গুলাইয়া ফালাইয়েন না প্লিজ।আমার মতোন একজন ছড়াকার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটা সংকলন সম্পাদনা করলে আপনে তাতে থাকনের চিন্তাটা করেন কোন যোগ্যতায়?
--তুমি আমার যোগ্যতা নিয়া প্রশ্ন করতাছো?
--হ্যাঁ, করতাছি। কবিতায় আপনে যাই হন না ক্যান ছড়ার ক্ষেত্রে আপনে গোণাগুণতিতে পড়েন না। কয়টা ছড়া লিখছেন? ছড়ার বই আছে আপনের?
--বই নাই, কিন্তু লিখছি।তিন চাইরটা লিখছি।
--আপনের সাহস তো কম না সাযযাদ ভাই!তিন চাইরটা ছড়া লেইখ্যাই আমার সম্পাদিত সংকলনে যা কিনা বাংলাদেশের ছড়ার প্রতিনিধিত্ব করে, আপনে থাকনের চিন্তা করতাছেন!তাইলে তো আমিও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টরে গিয়া জিগাইতে পারি আমারে অরা ন্যাশনাল টিমে ন্যায় না ক্যান? জীবনে দুইচাইরবার ফুটবল তো আমিও খেলছিলাম।
জ্বলন্ত সিগারেট তাঁর হাতে, কিন্তু সিগারেট ফুঁকতে ভুলে গেলেন সাযযাদ ভাই। মাছের দৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন, তারপর খুবই মন্থর পদক্ষেপে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গলি পেছনে ফেলে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউর দিকে হাঁটা ধরলেন কবি সাযযাদ কাদির।
অপমানের ভারে তাঁর পদযুগলকেও আমার ভীষণ ক্লান্ত মনে হলো।


মন্তব্য

... এর ছবি

বাপরে!
রিটন ভাই, আপনিতো দেখি কঠিন হৃদয়ের ছড়াকার। মন খারাপ

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ঠিক কথা। তবে সবার ক্ষেত্রে আমার হৃদয় কঠিন নয়। জীবনে কোথাও কোথাও কঠিন হওয়া লাগে রে ভাই।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

বেশ লাগল। শিক্ষনীয়।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

পড়লাম ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

বুঝলাম।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সজারু এর ছবি

কবি সাযযাদ কাদির্কে লেখার শুরুতে য্যামনে আকাশে তুলছেন..... তার্পর আবার আপনার লগে যা কর্ছে কৈলেন , তাতে মনটা খারাপ হয়ে গেছিলো..... তবে শেষটা পৈড়া খুব ফুর্তি লাগছে..... খুবৈ শিক্ষনীয়।
_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

..... খুবৈ শিক্ষনীয়।

হ, খুবৈ......

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

কীর্তিনাশা এর ছবি

ইহাকেই কয় - টিট ফর ট্যাট,

বাঙলায় - ইটকেল মারসত কি পাটকেল খাইসত ! দেঁতো হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ইটকেল মারসত কি পাটকেল খাইসত !

পাটকেল মারসত কি ইটকেল খাইসত!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

আহা!

কিন্তু বস, লিখতেই কি আর ছড়াকার হওয়া যায়?
অনেকে লিখতেই থাকে, কিন্তু সত্যিকারের ছড়াকার হয়ে ওঠেন না। আবার অনেকে দুই চারটা লিখেই কাঁপিয়ে দেন (দেন কি? শিওর নাহ্)।

যদি ঐদিন উনি আপনারে একটা ছড়া লিখে দিতেন তাইলে কি পাশা উল্টে যেতো? নাকি ভালো ছড়াকার হওয়ার পাশাপাশি অনেক ছড়া লিখাটাও একটা শর্ত?

নিছক কৌতূহল থেকে জানতে চাইলাম হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

যদি ঐদিন উনি আপনারে একটা ছড়া লিখে দিতেন তাইলে কি পাশা উল্টে যেতো?

যেতো না।
তোমার সব কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে আমার ভালো লাগতো কিন্তু এতো কথা কম্পোজ কইরা দিবো কে?

আমার পরের লেখাগুলোয় প্রসংগক্রমে এগুলো এমনিতেই আসবে বলে মনে হয়।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

রিটন ভাই সিরিজ লেখা শুরু করছে... তালিয়া... কিন্তু চা খাওয়া নিষেধ... চোখ টিপি

আপনার ঘটনা পড়ে হাসতে হাসতে শেষ আমি।

তবে আমার জীবনে এইরকম একটা ঘটনা আছে।
নব্বইয়ে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে টিএসসির এক অনুষ্ঠানে প্রথম সুবর্ণা ফরিদীকে দেখি। বালক আমি তখন তাদের মহা ফ্যান। অটোগ্রাফ চাইলাম, পাত্তাই দিলো না, এমনি করে হাতের ইশারায় বিদায় করে দিলো। খুব গায়ে লাগছিলো।
তার ১৬ বছর পরে কক্সবাজারে এক শুটিংয়ে দেখা গেলো আমি পরিচালক আর সুবর্ণা আপা অভিনেতা, একই নাটকে ফরিদী ভাইও ছিলো। এখন দুজনের সাথেই আমার খুব খাতির। কখনো তাদের বলা হয় নাই। একদিন মওকামতো ফরিদী ভাইরে গল্পটা প্রথম বলবো বলে রেখে দিছিলাম।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

খাইছে,সিরিজ লিখতে গেলে চা খাওয়া নিষেধ নাকি? আমি তো চা খাইতে খাইতেই লিখলাম এইটা!

এখন দুজনের সাথেই আমার খুব খাতির। কখনো তাদের বলা হয় নাই।

বইলা ফালাও জলদি। দেখবা কীঈঈঈঈঈঈ শান্তি!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

পলাশ দত্ত এর ছবি

খাইছে,সিরিজ লিখতে গেলে চা খাওয়া নিষেধ নাকি?

না, রিটন ভাই চা খাওয়া নিষেধ না। তবে হিমুর সঙ্গে অথবা হিমুর মতো চা খাওয়া নিষেধ। চোখ টিপি
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

কেনো পলাশ, চায়ের সঙ্গে হিমু য়্যাল্কোহল মেশায় নাকি?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

পলাশ দত্ত এর ছবি

না। আমি তো এইখানে নবীন মানুষ। তবে সচলশ্রুতি আছে যে হিমু বেশ কয়েকবার সিরিজ শুরু করে চা খেতে গিয়েছিলেন। তারপর? তিনি আর ফিরে আসেননি। হাসি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

উজানগাঁ এর ছবি

--সাযযাদ ভাই, আপনে দুই বাংলার প্রখ্যাত একজন ছড়াকারের সাথে কথা কইতাছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কটা এইখানে গুলাইয়া ফালাইয়েন না প্লিজ।আমার মতোন একজন ছড়াকার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটা সংকলন সম্পাদনা করলে আপনে তাতে থাকনের চিন্তাটা করেন কোন যোগ্যতায়?

রিটন ভাই, আপনে আসলেই কঠিন হৃদয়ের লোক। এই কথা মুখের উপর কইলেন ক্যামনে !

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনে আসলেই কঠিন হৃদয়ের লোক। এই কথা মুখের উপর কইলেন ক্যামনে !

এই কথা মুখের উপর কইতে আমাকে একটা যুগ যে অপেক্ষা করতে হলো!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সেল্যুট! দেঁতো হাসি


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

অলাইকুম সেল্যুট!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

রিটন....
বড় টেটন...........
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আমার ভাত মারনের চেষ্টা কইরেন না মিয়া। তাইলে কিন্তু আমিও ছবি তোলা শুরু করে দেবো.........

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অনার্য্য সঙ্গীত [অতিথি] এর ছবি

২০০১ সালে আমি আজকের কাগজে কাজ করতাম। সেখানেই ফান ম্যাগাজিন ফাটাফাটি'তে আপনার লেখা প্রকাশিত হত। আমি মনে মনে ভাবতাম আহারে, এঁকে কে সামনা সামনি দেখা না জানি কেমন ভয়ঙ্কর একটা ব্যপার হবে!
আপনার লেখাটা পড়ে সেই পুরোনো ফিলিংসটা আবার পেলাম আজ...

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

খাইছে আমি তো নিজের ইমেজ প্রায় ভিলেনের কাছাকাছি নিয়ে গেছি!
ভাইরে আপনি আমাকে যতোটা ডেঞ্জারাস ভাবছেন আমি ঠিক ততোটা নই। আমি অনেকটা নারকেলের মতো। বাইরেটা শক্ত। ভেতরটা নরম.........

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নাহার মনিকা এর ছবি

রিটন ভাই,
আপনার বাসায় অতিথি দুষ্টের হদ্দ বাচ্চাকে বাপমায়ের সামনে থেকে আদর করে পাশের ঘরে নিয়ে টাইট দিয়ে শান্ত করে দেয়ার মজার গল্পটা এইখানে একদিন বইলেন প্লিজ!

স্নিগ্ধা এর ছবি

ইসসস, যা আমি করতে চাই কিন্তু পারি না, রিটন ভাই দেখি সাকসেসফুলি সেটাই করেন! দেঁতো হাসি

এ প্রসঙ্গে আমার একটা বন্ধুর কথা বলি, সে বেশ কমবয়স থেকেই তার দুষ্টু (ব্যাপারটা একটু আপেক্ষিক যদিও!) বাচ্চা কাজিনরা বাসায় আসলে কোণায় নিয়ে গিয়ে কান ধরায় দাঁড় করায় রাখতো। ওর খালা একদিন হঠাৎ দেখে ফেলে নাকি বলসিলেন - "আজকে বুঝলাম তোদের বাসায় আসার কথা শুনলেই ও কেন এরকম করে!!!"

আমার সেই বন্ধুর নিজের ছেলেটা যেমন লক্ষ্মী, তেমন বুদ্ধিমান হইসে, মা'কে একটুও জ্বালায় না - আর এইসব দেখে দেখেই বুঝি আসলে কর্মফল বলে কিচ্ছুই নাই!

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ইয়েস স্নিগ্ধা, বিধ্বংসী বাচ্চাকাচ্চা টাইট দেয়ার কায়দা কানুন আমার জানা আছে হেহ্‌ হেহ্‌ হেহ্‌......

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ভালো কথা মনে করিয়ে দিয়েছো তো মনিকা।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জি.এম.তানিম এর ছবি

কোল্ড ব্লাডেড ছড়াকার! খাইছে
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

কোল্ড ব্লাডেড ছড়াকার!

কিন্তু ঘটনা তো রক্ত গরমের ইংগিতই দিচ্ছে...!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জি.এম.তানিম এর ছবি

মাঝের ১২ ১৩ বছর কিছু না বলে থাকাটা তো মনে হচ্ছে ঠান্ডা মাথারই পরিচায়ক!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আরে তাই তো!
মানলাম,তানিমই সঠিক। আমার আগের মন্তব্য ঘ্যাঁচাং......

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

স্পর্শ এর ছবি

আপনার সেই সময়ের 'স্পিরিট' অনুভব করতে পারলাম কিছুটা। স্বপ্ন দেখা এবং তার জন্য এতটা সংগ্রাম! যুবক বয়স চলছে আমারো। কই, এমন তো পারিনা!
চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

থ্যাংক্স আমার স্পিরিটটা ধরতে পারার জন্য।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হিমু এর ছবি

শোধবোধ হাসি

আমার এরকম কোন অভিজ্ঞতা নাই। বড় বড় লোকজনের কাছে কোন অনুরোধ নিয়ে যাই নাই, যেই দুয়েকজনের কাছে গিয়েছিলাম, তাঁরা তখন হতাশ করলেও কোন দুর্ব্যবহার করেননি।

রিটন ভাইয়ের ছত্র চলমান থাকুক। পরের পর্বের অপেক্ষায় দাঁত মেজে রাখলাম।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

শোধবোধ ।

হ্যাঁ,শোধবোধ।
তুমি ভাগ্যবান।

আচ্ছা হিমু তোমরা কয়েকজন একসঙ্গে কয়েকটা সিরিজ লেখো কি ভাবে! আমি তো মনে হচ্ছে এক পর্ব লিখেই কাহিল হয়ে গেলাম......

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

হিমু এর ছবি

লেবুর ঠান্ডা শরবত খেয়ে পরের পর্বটা লিখতে বসে পড়েন রিটন ভাই দেঁতো হাসি । এই আইয়ামে কাহিলিয়াতকে জয় করতেই হবে!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

বাহ্‌,আমি কাহিল তাই আইয়ামে কাহিলিয়াত!
তোমার এই বাক্যটাতেই তো এক ডজন লেবু আছে হিমু! শরবতের আর দরকার কি!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

... [অতিথি] এর ছবি

আর লোক পাইলেন না !
হিমু ভাইরে জিগাইছেন, সিরিজ ক্যাম্নে কন্টিনিউ করে !!!!
গড়াগড়ি দিয়া হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হুমম।

দময়ন্তী এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভারী শান্তি পেলাম৷ ন্যায্য উত্তর দিতে পারার আনন্দটা অদ্ভুত৷
চলুক
-----------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

লেখাটা লিখে আমিও শান্তি পেয়েছি ভাই। আসলেই এই আনন্দটা অদ্ভুত। ধন্যবাদ আপনাকে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নিবিড় এর ছবি

সিরিজটা অবশ্যই চালাতে হবে। হঠাৎ বন্ধ করলে চলবে না।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আমিও নিবিড়ভাবে সেটাই চাই।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

দ্রোহী এর ছবি

খাইছে রে!!!!!!!!!!!!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এহ হে... এমন করে গোড়ালির উপর থেকে কেটে দিলেন বেচারাকে? দুঃখই হচ্ছে তাঁর কথা ভেবে। মন খারাপ

এই লেখাটা পড়ে কেউ খেয়াল করছে না যে রিটন ভাইয়ের গানের প্রতিভা আছে? আন্ত্যক্ষরি লাগবে না, যেকোন রকম কিছুই গেয়ে শোনান!

সাইফ এর ছবি

কেউ কেউ ধরাকে সরা জ্ঞান করে,আর আমি ধরাকে ছড়া জ্ঞান করি।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

চরম , আপনার তুলনা আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না, ৪ বার পড়লাম, আপনার লেখাটা, আরো ৪ বার পরতে মন চায়। আপনার পদধুলী নিতে মন্চায় হাসি

আপনার ছড়া!আপনার ছড়া রাখবো কিভাবে?আপনি কি ছড়া লেখেন নাকি?

উনার মনে তখন চলতেছে, কস্কি মমিন!
তবে, এধরনের কিছু উনার আশা করা উচিত ছিল, এবং

অপমানের ভারে তাঁর পদযুগলকেও আমার ভীষণ ক্লান্ত মনে হলো।
ছিল তার উপযুক্ত পুরষ্কার।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।