সপরিবারে জাতির জনক হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার চাই

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৮/২০১৪ - ৪:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রায় চার বছর আগে ২০১০ সালের অক্টোবরে সচলায়তনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনের ষড়যন্ত্রের বিচার নিয়ে একটি লেখা দিয়েছিলাম। লেখাটা অগাস্টে না দিয়ে অক্টোবরে দেয়ায় বোধকরি তখন বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কোন আলোচনা হয়নি। প্রায় চার বছর পার হলেও বিষয়টিতে এখনো কোন অগ্রগতি না হওয়ায় এটি নিয়ে আবার লেখার প্রয়োজন বোধ করছি। এই প্রসঙ্গে আমার ব্যাখ্যা ও অবস্থানের যেহেতু কোন পরিবর্তন হয়নি তাই বর্তমান লেখাটি আগের লেখার সাথে বহুলাংশে মিলে যাবে। এর জন্য পাঠকের কাছে আগাম ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

শোকাবহ অগাস্ট মাস আসলে দেখা যায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টরা মোটামুটি এরকমটা বলেন যে — আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছি,খুনীদের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে,কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে,বাকি খুনীদের খুঁজে বের করে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। কেউ কেউ এটাও বলেন — এতে এতদিন পর জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এই বক্তব্যটা দেবার সময় তাদের কারো কারো কণ্ঠে কিছুটা সন্তুষ্টির আভাস বোধ হয়। জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে না পারা ও হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে না পারা নিঃসন্দেহে জাতির জন্য কলঙ্কজনক। যে বিচারকার্যটি সম্পন্ন হয়েছে তাতে এটা হয়তো বলা যায় যে, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার পেছনে যে ষড়যন্ত্র ছিল সেটি উদঘাটিত হয়নি। সেই ষড়যন্ত্রের হোতাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। তাহলে আমরা কী করে দাবি করতে পারি যে আমরা কলঙ্কমুক্ত হয়েছি? এবং এইটুকুতে সন্তুষ্ট হবার মতো কিছু কি আছে?

যে কোন অপরাধ সংগঠনের পেছনে একটি উদ্দেশ্য থাকে। এক বা একাধিক ব্যক্তি অথবা গোষ্ঠি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া দেশের রাষ্ট্রপতি ও দেশের ইতিহাসের সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাকে হত্যার ঝুঁকি নেয়ার কথা না। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বারো জন আসামীর সবার সাথে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার পরিজনের এমন কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিলো না, যার দরুন তারা জোটবদ্ধভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ঝুঁকি নিতে পারে। সুতরাং এটি যে ক্ষুদ্র পর্যায়ে পরিকল্পিত কোন ব্যাপার নয়।

এই নৃশংস ঘটনাটি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ নয়। শেখ কামাল-শেখ মণি’র মতো প্রতিশ্রুতিশীল যুবনেতা, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের মতো রাজনীতিবিদ, শেখ রাসেল-সুকান্ত আবদুল্লাহ্‌-আরিফ সেরনিয়াবাতের মতো অবোধ শিশু, আরজু মণি’র মতো গর্ভবতী মা, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব-সুলতানা কামাল-রোজী জামালের মতো গৃহবধু, ঐ তিন বাসায় কর্মরত সাধারণ নাগরিকবৃন্দ এবং নিরাপত্তা কর্মীবৃন্দ, কর্তব্যরত সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল জামিল, শেখ জামাল-শেখ নাসেরসহ পরিবারের অন্য সদস্যবৃন্দকে গণহারে হত্যার ঘটনায় এখানে ষড়যন্ত্র যে কী ব্যাপক, বিস্তৃত ও গভীর তা আঁচ করা যায়। প্রকৃতির দিক দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য যে কোন রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যার ঘটনার চেয়ে বহু বহু গুণে নৃশংস, ব্যাপক ও জঘন্য।

এই হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পাই খুনীদেরকে বছরের পর বছর বিদেশে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। তাদের কেউ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী হতে পারেনি। খুনীদের একজন কেবল পতিত সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ১৯৮৮ সালের ভোট চুরির নির্বাচনে স্বল্পসময়ের জন্য এমপি হতে পেরেছিলো। বঙ্গবন্ধুর খুনীরা ক্ষমতার স্বাদ পায়নি,সমাজ বা রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। যাদের ফাঁসি হয়নি এখনো তাদেরকে মৃত্যুর পরওয়ানা মাথায় করে দেশে দেশে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। অর্থাৎ তাদের এই অপকর্মের বিশেষ সুফল তারা ভোগ করতে পারেনি। এই হত্যাকাণ্ডে না জড়ালে তারা এরচেয়ে সমৃদ্ধ,নিরাপদ ও সম্মানজনক জীবন যাপন করতে পারতো। তাহলে তারা এই ঝুঁকি নিতে গেল কেন? মূল ষড়যন্ত্রকারীরা সম্ভবত এদেরকে বড়সড় মূলা দেখিয়েছিল, কিন্তু পরে তাদেরকে প্রতিশ্রুত সুবিধা না দিয়ে পিঠটান দিয়েছে।

১৯৭৫-এর ১৫ই অগাস্ট পূর্ববর্তী বাংলাদেশ আর পরবর্তী বাংলাদেশের দিকে লক্ষ করলে এই হত্যাকাণ্ডটি দেশের ইতিহাসে, রাষ্ট্রের প্রকৃতিতে, রাজনীতির ধারায়, পরিবর্তনের লক্ষ্য ও প্রক্রিয়ায় কী বিপুল পরিবর্তন এনেছে সেটা বোঝা যায়। রাষ্ট্রের চরিত্রকে পাকিস্তানী ধারায় ফেরানো, রাজনৈতিক, সামাজিক সংস্কৃতিতে পেছন পথে হাঁটা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসন এবং তাদের শক্তি সংহতকরণ এর সবই সম্ভব হয়েছে এই হত্যাকাণ্ডটির ফলে। দফায় দফায় সামরিক শাসনের যাঁতাকলে দেশ ও জাতিকে নিষ্পেষণের সুযোগের পথ এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সুগম করা হয়েছে। একটি ধর্মনিরপেক্ষ, উদার, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল রাষ্ট্র গঠনের পথ এই হত্যাকাণ্ডটির মাধ্যমে রুদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং, ১৫ই অগাস্টের হত্যাকাণ্ড একটি হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া বা স্বল্পসংখ্যক নিম্নপদস্থ সামরিক অফিসারের কাণ্ড নয়। এর পেছনের গভীর ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফলাফল গত ৩৯ বছরে স্পষ্ট হয়ে গেছে।

আদালতে এই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে ঐ বারো জন হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিল। অর্থাৎ তারা হত্যা করেছে বা হত্যায় সহযোগিতা করেছে। এহেন অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এবং বিচারে তাই রায় হয়েছে — এনিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু এই বিচারপ্রক্রিয়ায় এটি স্পষ্ট হয়নি এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য কী ছিলো,মূল পরিকল্পনা কী ছিল,কাদের পরিকল্পনায় এটি ঘটেছে। দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পিছনে কী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলো সেটি স্পষ্ট হয়নি। এই ঘটনায় একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়,সেই সরকার উৎখাতের বিচার হয়নি। সামরিকবাহিনীর শৃঙ্খলাভঙ্গ, কর্তব্যরত সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তা হত্যা, রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা দলের সদস্যদের হত্যা, কামানের গোলা মেরে সাধারণ নাগরিক হত্যা, সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল এমন সব বিষয়েরও বিচার হয়নি। হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না গ্রহন, তাদেরকে রক্ষার্থে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারী, সশস্ত্রবাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা, দায়িত্বে অবহেলা, হত্যাকাণ্ড পরবর্তী অবৈধ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং সেই সরকারে অংশগ্রহন এসবেরও কোন বিচার হয়নি। এর জন্যই সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার হওয়া আবশ্যক। ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত পরিকল্পনা, এর সাথে কারা সংশ্লিষ্ট ছিল, ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য কী ছিল সব উদঘাটিত হওয়া প্রয়োজন।

আরো প্রয়োজন এই ঘটনার সাথে দেশের বাইরের কোন কোন শক্তি জড়িত ছিল তা উদঘাটন করা। হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কারো কারো আচরণ এটা স্পষ্ট করে যে, তারা এমন একটি ঘটনার অপেক্ষায় ছিল।

বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল বেনেফিশিয়ারীরা আজ নানা দলে মিশে গেছে, নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার ফল হিসাবে যারা রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,মন্ত্রী বা এমপি হয়েছিলো,যারা দূতাবাসে বা অন্যান্য সরকারী চাকুরীর সুবিধা পেয়েছিলো আজ তাদের কথা,তাদের নাম বিশেষ উচ্চারিত হয়না। যারা কর্তব্যকর্মে অবহেলা করে বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকের বুলেটের মুখে ঠেলে দিয়েছিল,যারা হত্যাকান্ড পরবর্তী সময়ে খুনীদের কার্যকলাপ ঠেকানো ও গ্রেফতারের উদ্যোগ নেয়নি, যারা খুনীদেরকে গ্রেফতারের বদলে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল,যারা খুনীদেরকে বছরের পর বছর বিদেশে অর্থ সাহায্য করে গিয়েছিল,যারা খুনীদেরকে দূতাবাসে চাকুরী দিয়েছিল বস্তুতঃ তাদের প্রত্যেকেই এই হত্যাকাণ্ডের দায় বহন করার কথা। কিন্তু সেকথা আজ খুব কমই উচ্চারিত হয়। বরং মাঝে মাঝে কাউকে কাউকে এসব কুকর্মের সহযোগীদের পক্ষে সাফাই গাইতেও দেখা যায়। বেশিরভাগ জন কেবল বাকী খুনীদের ফাঁসি কার্যকর করার ব্যাপারে জোর দেয়। এবিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে বাকি খুনীদের ফাঁসি কার্যকর করাটা জরুরী। তার মানে এই না যে সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা না করলেও চলবে। বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাকি বিষয়গুলোও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। নয়তো ভবিষ্যতে এমন অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।

আমাদের স্বাধীনতার জন্য,আত্মপরিচয়ের জন্য যে মানুষটার কাছে আমরা সবচেয়ে বেশি ঋণী সেই মানুষটাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচারের ব্যাপারে আমাদের উদাসীনতা এবং অন্যায় মেনে নেবার প্রবনতা আশ্চর্য রকমের। এনিয়ে কোনো উদ্যোগের কথা কেউ ভাবেনা। এই অবহেলা নিয়ে কোনো অনুশোচনা ও কলঙ্কবোধ আমাদেরকে তাড়িত করেনা।

এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া আবশ্যক। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে পরিচালিত করার লক্ষ্যে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধের লক্ষ্যে, অন্যায় করে পার পেয়ে যাবার ধৃষ্টতা বন্ধের লক্ষ্যে, স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন বন্ধের লক্ষ্যে সপরিবারে জাতির জনক হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার চাই।


মন্তব্য

শিশিরকণা এর ছবি

পান্ডবদা, প্রথম বাক্যেই খটকা লেগে গেল বলে না পড়েই মন্তব্য করছি, ২০১০ সাল কিভাবে ছয় বছর আগে হয়? কোথাও একটু গন্ডগোল হয়ে গেল কি হিসাবে?

অস্বস্তি জানান দিলাম। এবার পড়ি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। ওটা টাইপো ছিল। ঠিক করা হলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

পাণ্ডবদা, ঐ প্রথম অনুচ্ছেদ-এরই তৃতীয় বাক্যের গোড়ায় আছে "প্রায় ছয় বছর পার হলেও"। এটাও ঠিক করে নেয়া দরকার।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এটাও ঠিক করা হলো। ধন্যবাদ বস্‌!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

মন্তব্য ঠিক জায়গায় সরান হল।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ঈয়াসীন এর ছবি

বিচার শেষ করা না গেলেও, শাস্তি দেয়া না গেলেও সত্যটুকু উন্মোচিত হোক। রাজনৈতিক অভিসন্ধি, নেপথ্যের গোটা কাহিনী সকলে জানুক। নইলে 'কলঙ্কমুক্তি' শব্দটি বড্ড গালভরা মনে হয়।
লেখা এবং আকাঙ্ক্ষা উভয়ই চমৎকার। চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রথম কথা হচ্ছে বিচার হওয়া উচিত এটা প্রতিষ্ঠিত করা। তাহলে বিচার চাই এই দাবিটা প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন বিচারের আশায় মামলাও করা যাবে। বাকিটুকু হচ্ছে আইনকে অবাধে, নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া। সেটার জন্য ভিন্ন আন্দোলন।

আগে ন্যায়বিচার চাই। কলঙ্কমুক্তি হলো কিনা সেটা পরে ভাববার বিষয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দিনে খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেন, আমার মনে হয় ব্যপারটা শুধু রাজনৈতিক রেষারেষি নয়, ওইদিন আক্ষরিক অর্থেই, জিয়াউর রহমান, গোলাম আজম, অসংখ্য যুদ্ধাপরাধী আর খাৎনা করা বাংলাদেশের জন্মদিন। যারা এই হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করল তারা তেমনভাবে লাভবান হল না, যারা এই হত্যাকান্ডের সবচেয়ে বড় সুফল ভোগকারী তাদের এই ষড়যন্ত্রের সাথে যোগসাজোশ নেই এটা বিশ্বাস করাও কঠিন।

আর ঠিক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পরই যেসব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল সেটার কী কারন থাকতে পারে, এগুলাও তদন্ত হওয়া জরুরী।

সপরিবারে জাতির জনক হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার চাই

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মরুদ্যান এর ছবি

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দিনে খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করেন, আমার মনে হয় ব্যপারটা শুধু রাজনৈতিক রেষারেষি নয়, ওইদিন আক্ষরিক অর্থেই, জিয়াউর রহমান, গোলাম আজম, অসংখ্য যুদ্ধাপরাধী আর খাৎনা করা বাংলাদেশের জন্মদিন।

চলুক চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জন্মদিন সংক্রান্ত তোমার ধারণা একেবারে লাগসই! এই রূপকটার অর্থ মানুষকে বোঝানো দরকার।

দেশের বাইরের যোগসংযোগটা আবিষ্কার করা এজন্য জরুরী যে, এতে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হওয়া উচিত সেটা ঠিক করা যাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুবোধ অবোধ এর ছবি

ওইদিন আক্ষরিক অর্থেই, জিয়াউর রহমান, গোলাম আজম, অসংখ্য যুদ্ধাপরাধী আর খাৎনা করা বাংলাদেশের জন্মদিন।

শুধু খাৎনা করা বাংলাদেশ না কবি, সেদিন "রাজনীতিবিদ খালেদা জিয়ারও" জন্মদিন বৈকি। ১৫ অগাস্ট না হলে খালেদা জিয়া কেবল একজন মেজরের বউ হিসেবেই পরিচিত থাকতেন।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সেই হিসেবে খালেদা জিয়ার জন্মদিন সম্ভবত জিয়ার মৃত্যুর দিন

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

এক লহমা এর ছবি

চলুক
"এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য কী ছিলো, মূল পরিকল্পনা কী ছিল, কাদের পরিকল্পনায় এটি ঘটেছে। দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পিছনে কী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিলো সেটি স্পষ্ট" করার মত অবশ্য প্রয়োজনীয় কাজগুলি কেন আজো করা হ'ল না, সেটাও আমার কাছে অদ্ভুত লাগে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জেনারেল জিয়াউর রহমান, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, লিয়াকত আলী খান, জেনারেল জিয়াউল হক, বেনজীর ভুট্টো - এর মধ্যে কোন্‌ কোন্‌ হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য উদ্‌ঘাটিত হয়েছে? কোন কোন ক্ষেত্রে মিডিয়ার মাধ্যমে একটা বিশেষ ধারণা চাপিয়ে দেবার ঘটনাও ঘটেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

"- এর মধ্যে কোন্‌ কোন্‌ হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য উদ্‌ঘাটিত হয়েছে?" - ঠিক। আর এইখানেই চাপা পড়ে থাকে এই সব ঘটনার ষড়যন্ত্রের গভীর সূত্রগুলি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

রেজওয়ান এর ছবি

এই ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন এই জন্যে জরুরি যে ষড়যন্ত্রকারিরা আবারো তৎপর। এ সম্পর্কে আমাদের আসলে বেশি পড়তে হবে ও জানতে হবে। তাহলে হয়ত এ ব্যাপারে গণসচেতনতা তৈরি হবে। আমি কিছু লিঙ্ক শেয়ার করছি । আপনারাও পারলে করেন তাহলে এই পোস্টটি একটি রিসোর্স হয়ে উঠবে।

১) জিয়া জানতেন, কতখানি জানতেন...
http://www.somewhereinblog.net/blog/omipialblog/29032567
২) ইতিহাসের নৃশংসতম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান এবং মওলানা ভাসানীসহ ঘাতক চক্রের ভূমিকা
http://blog.priyo.com/2011/08/15/4292.html?page=791
৩) “ ইহারা কাহারা?” – “ইহারা অতিশয় বদমাইশ লোক!”
https://mongoldhoni.wordpress.com/2012/08/18/an-analysis-on-the-statements-of-cpb-leaders-mujahidul-islam-selim-and-manzurul-ahsan-khan-about-the-murder-of-sheikh-mujibur-rahman/#more-1200
৪) বঙ্গবন্ধু হত্যা মার্কিন দলিলে....
http://www.nagorikblog.com/node/9366
৫) বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ঐতিহাসিক বিচার ও রায়
https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%90%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%93-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F/262020943841919
৬) বঙ্গবন্ধু হত্যা ।। কিসিঞ্জারের সফর ছিল তাৎপর্যপূর্ণ
http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=1600&table=august2014&date=2014-08-14&page_id=1
৭) বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে (১-৫) http://shamsrafee.wordpress.com/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87/
৮) পনেরোই আগস্ট ॥ বাংলাদেশ বেতারে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের অপারেশন
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2014-08-11&ni=181599

উপরের লিঙ্ক গুলো নিয়ে কোন বক্তব্য বা সমালোচনা থাকলে তাও জানাবেন অনুগ্রহ করে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গুড জব বস্‌! অসংখ্য ধন্যবাদ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুবোধ অবোধ এর ছবি
সুবোধ অবোধ এর ছবি

লেখার সাথে একমত। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চলুক

নীড় সন্ধানী এর ছবি

১৫ আগষ্টের হত্যাকাণ্ডের আংশিক বিচার হয়েছে। সেই বিচারে জড়িত সকল ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সেনাবাহিনীর চেইন অব কমাণ্ড ভঙ্গ করে সমগ্র জাতিকে ধাপ্পা দিয়ে যে ঘটনাটা ঘটিয়েছে সেই ঘটনার আগপাশ তলা বিচার করতে গেলে এখনো জীবিত থাকা অনেক মহারথির চেয়ার নড়ে যাবে। কিন্তু যতদূর বুঝি এই বিচারের আর কোন নতুন অগ্রগতি হবে না। আদালতীয় বিচার না হলেও আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এটা উন্মোচন করতে হবে কারা কারা কোন কোন সমীকরণে এই হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। এরকম ঘটনা আবার ঘটাবে বলে কারা হুংকার দেয় আবারো, তাদের সাহসের উৎস কি? কারা তাদের পেছন থেকে রসদ যোগায়। শান্তিকালীন সময়েই এসব অশান্তির ষড়যন্ত্রের ভিত তৈরী হয়। এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে কোথাও না কোথাও, কোন না কোন গুপ্ত কক্ষে। সেই ট্রোজান হর্সদের রুখবার জন্য জাতিকে সঠিক তথ্যের আলোয় আলোকিত রাখতে হবে। রক্ষা করতে হবে এই প্রজন্মকে যাতে বিভ্রান্ত হতে না হয় তাদের।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হতাশ হবেন না বস্‌! প্রথমে কথা বলা, লেখা অব্যাহত রাখতে হবে যাতে একটা জনমত তৈরি হয়। এরপর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যেন সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি সরকারের বাইরে এই ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হবে যেন বিচার আদালতে উঠলে সহায়ক তথ্য সরবরাহ করা যায়।

অতীতের অপরাধের বিচার শুরু করলে ভবিষ্যতে অন্যায়ের পথ রূদ্ধ হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

পৃথিবীর ইতিহাসের এই বর্বরতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত বর্বর ক্ষমতা অর্জন করেছিল জিয়াউর রহমান। ইউটিউবে ফারুকের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায় যে, জিয়া বলেছিল, "গো এন্ড কিল হিম!"

বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল বেনেফিশিয়ারীরা আজ নানা দলে মিশে গেছে, নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার ফল হিসাবে যারা রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,মন্ত্রী বা এমপি হয়েছিলো,যারা দূতাবাসে বা অন্যান্য সরকারী চাকুরীর সুবিধা পেয়েছিলো আজ তাদের কথা,তাদের নাম বিশেষ উচ্চারিত হয়না। যারা কর্তব্যকর্মে অবহেলা করে বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকের বুলেটের মুখে ঠেলে দিয়েছিল,যারা হত্যাকান্ড পরবর্তী সময়ে খুনীদের কার্যকলাপ ঠেকানো ও গ্রেফতারের উদ্যোগ নেয়নি, যারা খুনীদেরকে গ্রেফতারের বদলে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল,যারা খুনীদেরকে বছরের পর বছর বিদেশে অর্থ সাহায্য করে গিয়েছিল,যারা খুনীদেরকে দূতাবাসে চাকুরী দিয়েছিল বস্তুতঃ তাদের প্রত্যেকেই এই হত্যাকাণ্ডের দায় বহন করার কথা। কিন্তু সেকথা আজ খুব কমই উচ্চারিত হয়। বরং মাঝে মাঝে কাউকে কাউকে এসব কুকর্মের সহযোগীদের পক্ষে সাফাই গাইতেও দেখা যায়। বেশিরভাগ জন কেবল বাকী খুনীদের ফাঁসি কার্যকর করার ব্যাপারে জোর দেয়। এবিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে বাকি খুনীদের ফাঁসি কার্যকর করাটা জরুরী। তার মানে এই না যে সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা না করলেও চলবে। বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাকি বিষয়গুলোও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। নয়তো ভবিষ্যতে এমন অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।

সম্পূর্ণ সহমত। এবং ৭৫ -৯৬ এবং তারপরও অত্যন্ত কৌশলে এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের পেছনে কিছু মিথ্যা ও খোঁড়া যুক্তি কিছু নির্বোধ তরুণকে বোঝানো হয়েছে। জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদ "দেয়াল" নামের একটা বটতলার পুঁথিতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন ভুল ধারনা দেবার অপপ্রয়াস করেছেন।

এই বিকৃত সমাজের দায়মুক্তি ও ন্যায়ের দিকে যাত্রার জন্যই এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিচার হওয়া প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমরা বরং ব্যাপারটাকে সিস্টেমেটিকভাবে ভাবি। কোন ব্যক্তিবিশেষ বা দলবিশেষের বিরুদ্ধে যে আমাদের অবস্থান নয় সেটা প্রথম থেকেই স্পষ্ট থাকা দরকার। নয়তো লক্ষ্য বিচ্যুত হবার এবং উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হবার সুযোগ থাকে। আমাদের কথা সহজ ও সরল। ষড়যন্ত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের বিচার করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হবে তাদের ব্যক্তি বা দলীয় পরিচয় যা-ই হোক না কেন তাদেরকে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।

এটা শুধু বঙ্গবন্ধু আর তার পরিবার-পরিজনকে হত্যা করা নয়। এটা গোটা দেশ ও জাতির ভবিষ্যত ধ্বংসের ষড়যন্ত্র।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাহসিন রেজা এর ছবি

আমরা যারা নতুন প্রজন্মের তারা এইটা পড়ে বড় হয়েছি যে বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীর কিছু "বিপথগামী" অফিসারের হাতে নিহত হয়েছেন। এভাবে পুরো ব্যাপারটাকে অতি সরলীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু এর ভেতরের ইতিহাস আমরা কিছু জানিনি, জানতে দেয়া হয়নি। আমরা যারা বাংলাদেশের ইতিহাস একটু পড়েছি তারা নাহয় কিছু জানতে পেরেছি কিংবা বুঝতে পেরেছি আরো কিছু জানার আছে! কিন্তু আমার যে বন্ধুর ইতিহাস পড়া স্কুলের বইয়ে সীমাবদ্ধ সে এখনো সেই বিভ্রান্তির মধ্যেই বাস করছে। আর বাংলাদেশের গণমাধ্যম গুলো থেকে তো একটা বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পাওয়া খুব কঠিন।

এই তথ্য বিকৃতির দায়মুক্তির জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিচার হওয়া প্রয়োজন যাতে এই প্রজন্মকে আর বিভ্রান্ত হতে না হয়।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঠিক! এই অতি সরলীকরণটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিচার হলে পরে পুরো ব্যাপারটা সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাসুদ সজীব এর ছবি

১৫ই আগষ্ট শুধু বাংলাদেশের স্থপতির হত্যাকান্ড নয় কিংবা তার পরিবারকে নিশংসভাবে হত্যা নয়। ১৫ই আগষ্ট মানে পাপিস্থান মনাদের ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ। কারা সেই পাপিস্থানের অনুচর? সেটি বুঝতে কি কাউকে আইনস্টাইন হতে হয়? না, হয় না, যে ব্যাক্তি হত্যাকারীদের বিদেশে দূত করে পাঠিয়েছিলো, ইনডিমিনটি আইন করে এই বিচার বন্ধ করেছিলো, রাজাকারদের দেশে পুর্নবহাল করেছিলো, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে ইসলাম জারি করেছিলো, জয় বাংলাকে সরিয়ে পাাকিস্থানি জিন্দাবাদের অনুলিপি বাংলাদেশ জিন্দাবাদ চালু করেছিলো, যার গোলাপি বউ সেই দিনে জন্মদিন প্রর্ত্যাবর্তন করেছে, সেই জিয়াই এই খুনের চক্রান্তের সাথে জড়িত এবং এই খুন থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা প্রাপ্ত। এছাড়া জড়িত তথাকথিত পূর্ণ্যস্থান(পাপিদের) বলে খ্যাত মধ্যযুগীয় বর্বর সকল আরব রাষ্ট্র, যারা শেখ মুজিবকে হত্যার পরের দিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, পাপিস্থান, এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বড় ভাই আমেরিকা। সেই পাপিস্থানমনাদের বংশধররা আজ সারা বাংলায় বিস্তৃত হয়ে গেছে, চারিদিকে এই শুয়োর পালের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।

এতো গেলো হত্যাকান্ড আর ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়া কিন্তু ওরা জানতো শুধু হত্যাকান্ড করে রাজাকারদের পুর্নবাসন করে বাংলাদেশকে বাঙলাস্থান করা যাবে না। তাই শুরু হলো মিথ্যাচার, ইতিহাস বিকৃতি। আর সেই মিথ্যাচারের প্রথম এবং অন্যতম ধাপ হলো শেখমুজিবকে মানুষের কাছে খারাপ প্রমাণ করে দেওয়া, তার পরিবারকে কলংকিত করা। বলতে কোন দ্বিধা নেই সেই প্রোপাগান্ডা সফল বাস্তবায়ন ঘটেছি। বাঙালির সুবিধাবাদী লোভী চরিত্রকে কাজে লাগিয়ে এরা এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবি, কলামিষ্ট, কবি ও লেখক সৃষ্টি করেছিলো যারা এই নীরবে কিংবা সরবে এই প্রোপাগান্ডাকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছে আর এর সাথে যোগ করে দিয়েছে ধর্মের আফিম। শেখ মুজিবর রহমানের অবদানে ভাগ বসাতে খুনী জিয়াকে তারা ঘোষক বানিয়েছে। তারা বাংলাদেশ চায়নি, চেয়েছে দেশটা হোক বাঙলাস্থান। ৭৫ এরপর টানা বিশটি বছর বাংলাদেশ হেঁটেছে বাঙলাস্থান হওয়ার পথে এবং বেশ সফলতার সাথে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে সেই পথে। এখনো আবার সুযোগ পেলে সেই প্রিয় পুরোনো পথেই নিয়ে যাবে তাদের অনুসারীরা, যেমনটা ২০০১-০৬ করেছিলো। তাই বিদেশে বসে আরামে দিন কাটানোর সুযোগ বন্ধ করে দিয়ে সরকারের উচিত এদের আইনের মুখো দাঁড় করানো। আর সেটা না করতে পারলে আরো একটা ১৫ই আগষ্ট আসতে পারে এই বাংলাদেশে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এটা যে নিছক একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল নয় এই ব্যাপারটা সবাইকে বুঝতে হবে। এই নৃশংস ঘটনার গুরুত্ব ব্যাপক বলেই এই বিচারটা হওয়া জরুরী।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধ্রুব আলম এর ছবি

আচ্ছা, পলাতক খুনীদের ব্যাপারে কি ইন্টারপোলের হুলিয়া আছে? যদি না থেকে থাকে তবে কেন নেই? আমি বিভিন্ন দেশের এম্বেসিতে গিয়ে দেখেছি, তাদের দেশের কিছু গুরুতর অপরাধী যারা বিদেশে পালিয়ে আছে, তাদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত বিবরণসহ একটি বোর্ড বা পোস্টার থাকে। এমন উদ্যোগ নেয়া উচিৎ।

লেখা উত্তম। চলুক

কল্যাণ এর ছবি

খুব দরকারি লেখা চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে পরিচালিত করার লক্ষ্যে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধের লক্ষ্যে, অন্যায় করে পার পেয়ে যাবার ধৃষ্টতা বন্ধের লক্ষ্যে, স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন বন্ধের লক্ষ্যে

সপরিবারে জাতির জনক হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার চাই।

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

দীনহিন এর ছবি

চলুক

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমেই এই প্রস্তাবনা উত্থাপনের জন্য গুরু গুরুচলুক

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগের আচরণও বিস্ময়কর ছিল তাই তারও নিশ্চয়ই চায়নি এই ষড়যন্ত্রে’র বিচার হোক। সম্ভবত শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছার জন্যই বিচার সম্পন্ন হয়েছে অন্যথায় তাও হতোনা এই ভণ্ডের দল তা হতে দিত না।
আমরা কথায় কথায় রাজপথে নেমে আসি আন্দোলন করি বা কোন সংগঠনের মাধ্যমে একটা জনমত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করি কিন্তু কই আমারা আমজনতা কেন তা করলামনা ?!!! ভয়ই যদি মূল কারন হয় তবে ৯৬’ পরবর্তী সময়ে তা করা কি অসম্ভব ছিল?
অথচ কথিত সুশীল শ্রেণীর সিংহভাগই আওয়ামীপন্থী যারা একথা ভুলেও একবার বলেনি শুধু ঘোষক-পাঠক এই ত্যানাই প্যাচিয়ে গেছেন। এই বদমাশগুলিকে সবার আগে দেশ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করা উচিত।
প্রকৃতপক্ষে আমরা সবাই যে যার অবস্থানে তাঁর উপর বর্তায় এমন সব কর্তব্য পালন করিনি তাই সবাই দায় থেকে বাঁচাতে শুধুই হত্যার বিচার চেয়েছি ষড়যন্ত্রের নয়।
তাই সত্যি যদি এই একটি ষড়যন্ত্রে’র বিচার আমরা সঠিকভাবে করতে পারি, তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য এত কাঠখড় পোড়াতে হবেনা, হেফাজত বা সাম্প্রদায়িকতার দানবের উত্থান হবেনা, বারবার এদেশে সামরিক দাপাদাপি হবেনা, অরাজনৈতিক লোকদের হাতে রাস্ট্র পরিচালিত হবেনা............। আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেই সকল প্রাণের বাংলাই প্রতিষ্ঠা পাবে যার জন্যে ৩০ লক্ষ প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিল।
রেজওয়ান ভাই খুবই ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন আমাদের সবাইকে এব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।

অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

হত্যার বিচার শুরু হতেই একুশ বছর, সেই বিচারের রায়ই এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা গেল না, তার উপর নতুন করে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিচার? আমাদের কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, সারা জীবন ধরে এই করে বেড়াব? এমনিতেই "না হক" শোকের ঠ্যালায় দেশে ঠিকমত কারো জন্মদিনটাও পালন করা যাচ্ছে না, কেক্কুক খাওয়ায় কিঞ্চিত অসুবিধা, তার উপর ষড়যন্ত্রের বিচার করতে গেলে তো খামাখা বহু নিরীহ নিরপরাধ মানুষের জীবন থেকে বহু প্রকার আনন্দের উপকরন গায়েব হয়ে যাবে। আমাদের জাতীয় জীবনে এমনিতেই মুসিবতের অন্ত নাই, ভারত আমাদের গ্রাস করতে সদা সচেষ্ট, বেশ কিছু মুমিন বান্দা ভিত্তিহীন যুদ্ধাপরাধের দায় মাথায় নিয়ে কারাগারে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাসারা-ইয়াহুদী চক্রান্তে এছলাম বিপন্ন। এইসব বাস্তব সমস্যাগুলো পাশ কাটিয়ে একটি বায়বীয় অভিযোগ উত্থাপনের মাধ্যমে জাতিকে বিভক্ত করার কি মানে? বাংলাদেশে যেমন কোন যুদ্ধাপরাধী নাই, তেমনি শেখ মুজিবের মৃত্যুতেও কোন ষড়যন্ত্র নাই। মৃত্যু কপালে লেখা ছিল, তাই ১৫ই আগস্টে ওনার মৃত্যু হয়েছে, বাকি সকল কিছু অছিলা মাত্র।

মাসুদ সজীব এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
গুল্লি গুল্লি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বিশদে একটি মন্তব্য লিখে আবার মুছে ফেললাম। ৭৫ পূর্ববর্তী সময়ে যে সব রাজনীতিবিদদের কর্মকান্ডের কারণে বঙ্গুবন্ধুকে অনেক কর্মকৌশল ও পন্থা গ্রহণ করতে হয়েছিল, যা পরবর্তীতে প্রশ্নবিদ্ধ এবং সমালোচিতও হয়েছিলো, তাঁদেরই কেউ কেউ এখন এই দলটির প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকের পদে অধিষ্ঠিত। বুঝি, রাজনীততিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। ক্ষমতায় থাকাটাই সম্ভবত শেষ কথা!
হ্যাঁ, তবে বিচার হোক বা নাহোক, বিচারের দাবিটাকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর বস্তুনিষ্ঠ (সত্য) ইতিহাস অবশ্যই উঠে আসা প্রয়োজন। এ প্রজন্মকে অন্তত সত্যটা জানাতে হবে, নইলে...।
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ষড়যন্ত্র-টন্ত্র সব ভুয়া কথা। ওনলি মক্সুদিল ইজ রিয়েল। অদ্যকার প্রথম আলু পাঠ করুন। তাহলে জানতে পারবেন তাজউদ্দীন-মনসুর আলী'র নেতৃত্বে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ কিভাবে শুধুমাত্র জেনারেল শফিউল্লাহ ও কর্ণেল জামিলের সহায়তায় কিছু ভাড়াটে খুনীর (নাম অনুল্লেখ্য) মাধ্যমে জনৈক শেখ মুজিবকে হত্যা করেন। ব্যাস, কাহিনি শেষ। এর আগেও কিছু নাই, পরেও না।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

শিশিরকণা এর ছবি

পুরো ইতিহাসে সফিঊল্লাহর ভূমিকা নিয়ে খুবই দ্বিধাগ্রস্ত। উনি সবখানেই আছেন, আবার কোনখানেই নাই। গতকাল কর্নেল জামিলের মেয়ে আফরোজা জামিলের একটা স্মৃতিচারণ পড়লাম। লিংক http://www.kalerkantho.com/home/printnews/393528
এখানে উনি বলছেন,
" ওপাশ থেকে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জামিল কই? জামিলকে দে।’ মা দ্রুত বাবাকে ডেকে দেন। ফোন রেখে উদ্বিগ্ন বাবা জানান, বঙ্গবন্ধুর বাসায় হামলা হয়েছে। এরপর সেনাপ্রধানসহ একাধিক পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন বাবা। সেনাপ্রধান (কে এম সফিউল্লাহ) ফোর্স পাঠাবেন বলে বাবাকে আশ্বস্ত করেন।”
আসলেই সফিউল্লাহ তখন কি করছিলেন?

** সচলের মন্তব্যের টুলবক্স দেখা যাচ্ছে না,লিংক ও কোটেশান ব্যবহার করতে পারলাম না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।