সচল থাকুন সচলায়তনেই

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: মঙ্গল, ০৩/০৭/২০০৭ - ১১:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিজের ইচ্ছামত যা খুশি লেখার জন্যই আমি ব্লগাই। কিন্তু হট্টগোল শুরু হওয়ায় পুরনো বাড়িতে লেখা বাদ দিয়েছি অনেকদিন। সচল চালু হওয়ার পর দুটো লেখা পোস্ট্ করে এসেছিলাম। সচল এখন পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত। আগের বাড়িতে লেখা দেয়ার বড় কোনো ইচ্ছা আমার হয় না।

পুরনো জায়গাটায় এখন যেসব অদ্ভুতুড়ে লেখালেখি হয় তার মাঝে দু-একটা ভালো লেখা কোথায় ডুব দিয়ে থাকে তা বিশেষ চোখে পড়ে না। সচল-এ অবস্থাটা ঠিক বিপরীত। কম ব্লগার। ভালো লেখা। লক্ষ করার বিষয়, এই প্ল্যাটফর্মের কারণে ব্লগাররা আগের চেয়ে নিজের লেখার প্রতি অনেক বেশি যত্নবান। নতুন সৃজনশীল দিকেও ঝুঁকছেন কেউ কেউ (উদাহরণ দাদৈতিহাসিক)। সচলায়তন থেকে আমাদের মূল আশাটা এরকমই ছিল।

অতি-আঁতেল হলে ভিন্ন কথা, সাধারণভাবে লেখকরা চান তাদের লেখা বেশি পাঠকরা পড়ুক। রোমা রোঁলা আশা করেছিলেন বাংলার চাষীরা একদিন রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে গেয়ে চাষ-বাস করবে। সুতরাং লেখকরা তাদের লেখা একাধিক জায়গায় দিতে চাইবেন, সেই স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে পত্র-পত্রিকার নর্মটা আমরা মনে রাখতে পারি; একসাথে লেখা দুই পত্রিকায় পাঠানো যায় না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকাশ না হলে তবে অন্য কোথাও পাঠানোটাই রীতিসম্মত। ব্লগের ক্ষেত্রে সে কথা খাটে না বলে যুক্তি দেয়া যেতে পারে। আর বিষয়টা এ পর্যায়ে লেখকের হাতে ছেড়ে দেয়া ছাড়া কর্তৃপক্ষেরও কিছু বলার অবস্থা নাই।

এক্ষেত্রে নিজের মতটাই আমি বলতে পারি। নিজের জন্য আমি রেখেছি সচলায়তন। ঐ পুরনো হট্টগোলে আমি গিয়ে পড়তে চাই না। সচলায়তনের কথা জানিয়ে দেয়ার পর এখন আর সেখানে গিয়ে লেখা দেয়ার শক্ত কোনো যুক্তি নাই। ওই বাড়ির বৈঠকখানা যত বড়ই হোক, আমার মেয়ের বিয়ে আমি আমার উঠানেই দিতে চাই।

মেহরুন নামে যে পাঠকের কথা শেষ ব্লগে বলেছিলাম, সে সচলায়তনে পড়তে এসেছিল তার প্রিয় ব্লগারের লেখা সেখানে পায়নি বলে। তার প্রিয় ব্লগার হাসান মোরশেদ মনে হয় ইদানিং অন্য কোথাও লেখা দেননি। দিলেও সেই পাঠকের চোখে পড়েনি। পাঠককে যদি আমরা অবজ্ঞা না করি তবে পাঠক তার প্রিয় লেখকের পথের চিহ্ন খুঁজে এখানে আসবেন তা নিশ্চিত।

জেবতিক আরিফ সচলায়তনকে আদর্শের জায়গা থেকে দেখছেন। তিনি নিজের অবস্থান, লড়াকু মনোভাব ও স্বকীয়তার বিষয়ে আপোষে যেতে নারাজ। সচলায়তনের প্রতি তার ভালবাসা এখন দায়িত্বের পর্যায়ে চলে এসেছে। আমি তার সাথে একশত ভাগ একমত। যেমন একমত অলৌকিক হাসান বা অন্যান্যরা।

আমি মনে করি এখন আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এসময় মনোযোগটা পড়ালেখার দিকেই রাখা উচিত। বৈকালিক টাংকিবাজিটা কিছুদিন বাদ রাখলে পরীক্ষাটায় ভালো করা যাবে। ঐ বাড়ি আমাদেরকে সরস ফাজলামির সুযোগ দিয়েছে অনেক। কিন্তু সচলায়তন আমাদেরকে এমন কিছু দিতে পারবে যা নিয়ে আমরা ভবিষ্যতে গর্ব করতে পারবো। আমরা কিছু ভালো লেখক, পাঠক, সমালোচক ও বোদ্ধাকে এখানে পরিপক্ক হতে দেখবো। এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত থাকার আনন্দ ডোবায় ব্যাঙাচিকে ঢিল ছুঁড়ে পাওয়া আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি সুদূরপ্রসারি।

সচলায়তনেই থাকুন। সচল থাকুন।


মন্তব্য

হযবরল এর ছবি

পরিবেশ লেখার মানোন্নয়নে উদ্বুদ্ধ করে, যেটা সচলায়তন করছে। আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

হযবরল, যদিও নিজে তেমন কিছু লিখছি না। তবু অন্যদের লেখায় ও চিন্তায় সচলায়তনের সুস্থ পরিবেশের ছাপ পড়ছে। এটা খুব খুব ভাল খবর।
-----------------------------------------------
গাধারে সাবান দিয়া গোসল দেয়ানোটা গাধাপ্রীতির উজ্জ্বল নমুনা হতে পারে; তবে ফলাফল পূর্বেই অনুমান করা সম্ভব, গাধার চামড়ার ক্ষতি আর সাবানের অপচয়।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হযবরল এর ছবি

আশে পাশের সবাই যখন যত্ন নিয়ে ধারালো এবং রসালো লিখা লিখে তখন আপনা-আপনিই নিজের লেখার প্রতি দায়িত্ববোধ আরো বেড়ে যায়। সচলায়তনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো এটা। সেটা সফল হতে যাচ্ছে। এটা ধরে রাখার কাজ ও লেখক এবং পাঠককে সম্মিলিত ভাবে করতে হবে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সহজ করে মনের কথা।একমত,পুরোটাই।

-----------------------------------
কিস্তিমাতের যুদ্ধ শেষে,সাদাকালো ঘুটিগুলো এক বাক্সেই ফেরত যাবে...

আরশাদ রহমান এর ছবি

একমত। তবে আবার এও মনে হয় যে ওই যায়গাটা ধর্মান্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীর হাতে ছেড়ে দিচ্ছি। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ না করলে তাদের স্পর্ধা দিনে দিনে বাড়বেই। অবশ্য পাঠকরা যেদিন নিশ্চিত হবে যে ব্লগটা কারা চালাচ্ছে এবং ব্লগারদের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেদিন কেউ প্রতিবাদ না করলেও চলবে কেননা বেশির ভাগ পাঠকরা তাদেরকে বর্জন করবে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কাজের কথা: শোমচৌদা, আপনার মনেহয় আমাকে একটা লেখা পাঠানোর কথা ছিলো।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

আড্ডাবাজ এর ছবি

আসুন আমরা কন্ঠভোটে বক্তব্য সচল রাখি। সহমত সহকারে ধন্যবাদ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

কথিত আছে পরীক্ষার সময় প্রেম চ্যাগাইয়া উঠে..তবুও ফাইনাল বইলা কথা ....পরীক্ষা শেষে মাসখানেক টাঙ্কি...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

একমত।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

শামীম এর ছবি

সম্ভবত এটা পাঠকদেরকে জানানোর একটা স্ট্রাটেজি। আপাতত কয়েকটি লেখা ওখানে দিয়ে (সেটা যুগপৎভাবে না হয়ে, একদিন পরে দিলে ভালো হয়) প্রথমেই লিখে দেয়া উচিৎ, লেখাটি গতকাল সচলায়তনে (লিংক থাকবে) প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। তাহলে কিছু পাঠক যারা জানতেন না তাঁরা চলে আসবেন। যেহেতু লেখাটা এখানেই আগে প্রকাশিত হয়... কাজেই এখানেই আসবেন নিয়মিত। পরবর্তীতে ওখানে প্রকাশ করা বন্ধ করে দিলেই হবে।

====
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

অলৌকিক হাসান, আপনার মতটা অনেকেরই মত। অন্য যারা দোটানায় আছেন তাদের বুঝা উচিত তাদের লেখার যথেষ্ট পাঠক এখানে আছেন। এবং পুরনো জায়গায় লেখা না গেলে তাদের সত্যিকার পাঠকরা এখানেই উঁকি দিয়ে পড়ে নেবেন।

তবে এই লেখাটা বা পোস্টটা সবার অন্তত: একবার পড়া উচিত। আমাদের সবার জন্য এটা খুব জরুরি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কারিগরগন,দয়া করে এই পোষ্টকে স্টিকি করে দিন ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ঝরাপাতা এর ছবি

আমারো সামহয়্যারে লেখার ইচ্ছে মরে গেছে। কয়দিন আগে থেকেই ভাবছি পুরোপুরি সচলায়তনে মনোনিবেশ করবো। তবে আড্ডাবাজ আর অমি রহমান পিয়াল যেন সামহয়্যারেও পোস্টান।
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

সামহোয়ারে আমি আমার মুক্তিযুদ্ধের দলিলগুলো দিয়ে যাব। সচলায়তনে আমি আর যা লেখা দিচ্ছি তা এখন সামহোয়ারে দিচ্ছি না। সাইট খোলার আগে দিয়েছি। তবে নিচে লেখা থাকে যে সচলায়তনে প্রকাশিত

..................................

তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই লেখাটার সাথে বিন্দুমাত্র দ্বিমত নেই।

ভাস্কর এর ছবি

সামহোয়্যার ছাইড়া আসনের পরেই মূলতঃ আমি দাওয়াতটা পাইছিলাম সচলায়তনের বৈঠকখানায়। এখন আমি ডেডিকেটেড সচল...কিন্তু শোহেইল ভাইয়ের ভাবনা আর জেবতিকের স্ট্র্যটেজি নিয়া আমার প্রশ্ন আছে।

লেখক কই লিখবো, কি লিখবো এই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের পক্ষপাতি আমি না...লেখা নিয়ম কইরা না ছাপতে পারেন কর্তৃপক্ষ...লেখা মুইছা দিতে পারেন সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা ভঙ্গ করলে...কিন্তু তারে জোর কইরা আদতেই ভালো লিখান যায় কি না সেই বিষয়ে আমার প্রশ্ন আছে।

আর জেবতিক আরিফের ডিফিট দিতে হইবো টাইপ অ্যাটিচিউডটাও আমার একটু চোখে লাগছে...সামহোয়্যার নিয়া কেন সচলায়তনরে ভাবতে হইবো...সে নিজের গতিতেই চলতে পারে...

সামহোয়্যার ইনের লগেতো সচলের এমনেই অনেক পার্থক্য আছে...এই পর্থক্য খুব স্বাভাবিক ভাবেই দৃশ্যমান হইবো...সেই প্রত্যাশায়...


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

কারুবাসনা এর ছবি

বাপ রে। এত ভেবে লিখি না। ভাববার কত কি আসে।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভাবলে লেখা উবে যাবে ..ভাববেন না..আমিও ভাবি না..হাসি
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হযবরল এর ছবি

কুল থাকতে হবে দাদা।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

দেখেশুনে মনে হচ্ছে, এবার আমার আত্মপক্ষ সমর্থনের পালা। আরিফ জেবতিক ও অমি রহমান পিয়াল তাঁদেরটা দিয়ে ফেলেছেন। সামহোয়্যার ও সচলায়তনে যুগপৎ লেখার বাকি আসামীদের মধ্যে আমিও যেহেতু আছি, অনিচ্ছায় হলেও আমার বলার দায় আছে। দায় বোধ করার কারণ একটিমাত্র এবং তা হলো সচলায়তনের অনেক সদস্য বিষয়টি অপছন্দ করছেন, এমনকি ইঙ্গিতে কিছু অভিযোগ-অনুযোগও শোনা গেলো।

সচলায়তনের উদ্যোগ-আয়োজনের সঙ্গে আমার কিছুমাত্র যোগাযোগ ছিলো না। পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়ার পর অনেকটা আকস্মিকভাবেই আমি আমন্ত্রিত হই। আমি গোড়া থেকেই বলে এসেছি, আমি এখানে যোগ দিচ্ছি বলে সামহোয়্যার ছেড়ে দেবো, তা কিন্তু নয়। সচলায়তনে আমার প্রথম পোস্টটিও ছিলো সেই প্রসঙ্গেই, যদিও হালকা চালে হাসিঠাট্টার মেজাজে লেখা। সেই লেখার মন্তব্যে সমর্থন দিয়েছিলেন এমন কেউ কেউ অবস্থান বদলেছেন। তাতে সমস্যা নেই, সময়ের প্রয়োজনে তা বদলাতেই পারে।

কৈফিয়ত দিতে হবে, কখনো ভাবিনি। কিন্তু স্পষ্ট করেই জানাতে চাই, আমার অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত।

এ বছরের গোড়ায় জানুয়ারিতে সামহোয়্যার-এ যোগ দেওয়ার আগে কোনো ব্লগে আমার কোনো উপস্থিতি ছিলো না। বস্তুত, ব্লগ সম্পর্কে বিশেষ পরিষ্কার ধারণাও ছিলো না, কারিগরি বিষয়ে আমি কিছু প্রতিবন্ধী টাইপের বলে। সচলায়তনের আমন্ত্রণ আসার আগে সামহোয়্যার-এর পরিবেশ খুবই অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, যার বিবরণ নতুন করে দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না। মায়ের কাছে মামাবাড়ির গল্পের মতো শোনাবে। কারণ, সচলায়তনের অনেকেই সামহোয়্যার-এ ছিলেন একেবারে গোড়া থেকে। সেই অপরিচ্ছন্ন অবস্থা সেখানে এখনো কিছুমাত্র বদলায়নি, তা-ও সবাই জানেন।

এর আগে আরিফ জেবতিকের একটি পোস্টে আমার দেওয়া ব্যাখ্যার সূত্র ধরে বলি, আমি যেহেতু লেখালেখি করি এবং করতে চাই, সচলায়তন এবং সামহোয়্যার দুটিই আমার কাছে প্ল্যাটফরম। এটা তো এখন স্পষ্ট যে এই দুই জায়গার পাঠকচিরত্রও বেশ খানিকটা আলাদা। কিন্তু আমি আমার লেখা শুধুমাত্র নিজের বা নিজের পরিবার ও বন্ধুবর্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখায় বিশ্বাসী নই। আমার চেষ্টা যতো বেশিসংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছানো যায়। জনপ্রিয় হওয়ার জন্যে নয় (আমি মনে করি না, যে কেউ চাইলেই জনপ্রিয় হতে পারেন)।

ব্লগে লেখার যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয় তা হলো এর ইন্টারঅ্যাকটিভ চরিত্র। মঞ্চের অভিনেতারা যে আনন্দ ভোগ করেন, অনেকটা সেরকম আর কি। পাঠকের প্রতিক্রিয়ায় লেখার ভালোমন্দ যাচাই করা সম্ভব হয়। সেই পাঠক যদি ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর হন, আরো ভালো।

কেউ একজন বললেন, একই লেখা দুই পত্রিকায় ছাপতে দেওয়া যেমন অনৈতিক, তেমনি একই লেখা সচলায়তন ও সামহোয়্যার-এ প্রকাশ করা সমর্থনযোগ্য নয়। ওপরে ওপরে মন্তব্যটি ঠিকই আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, এটা বোঝাও জরুরি যে, মুদ্রিত পত্রিকা এবং ইন্টারনেট-নির্ভর ব্লগ (অথবা বলা হোক অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটি)একটি সম্পূর্ণ আলাদা মাধ্যম এবং এখানে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ বিশেষ নেই।

বছর দুয়েক আগে একটি নামকরা বাংলা ওয়েবজিনের সম্পাদক আমার কাছে লেখা চাইলেন। শর্ত দিলেন, লেখাটি মুদ্রিত বা বৈদ্যুতিন যে কোনো মাধ্যমে অপ্রকাশিত হতে হবে। আমি তাঁর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ছুটি চেয়ে নিয়েছি। যদিও আগে প্রকাশিত লেখা তাঁকে দিলে তা জানা ও নির্ণয় করার কোনো উপায়ই তাঁর ছিলো না। আমি ওই অসততা করতে প্রস্তুত ছিলাম না। সবচেয়ে বড়ো কথা, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাটি আমার ভালো লাগেনি বলে সম্মত হতে পারিনি।

কৈফিয়ত অনেক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। আমার শেষ কথা এই, সামহোয়্যার-এর জন্যে আলাদা কোনো প্রেম যেমন আমার নেই, সচলায়তনেও আমি মাথাটি গচ্ছিত করে রাখতে অসম্মত। প্রয়োজনে দুই জায়গাতেই লেখা বন্ধ করে দিতে আমার কিছুমাত্র দ্বিধা হবে না। ব্লগে লেখা আমার জীবনের মোক্ষ নয়, ব্লগ নয় আমার জন্যে লভ্য একমাত্র মাধ্যম। ব্লগের জীবন আমার মাত্র ছ'মাসের। সুতরাং শেকড় বেশিদূর ছড়ায়নি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এইবার আর ভাল্লাগতেছে না। কৈফিয়ত দেওয়ার কিছু নাই। আমি দুই জাগাতেই লিখুম। কোন জাগায় কি লিখুম এইটা আমার বিষয়।ব্যাপারটা এর বাইরে গেলেই আর মজা লাগে না....
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সুমন, আমার কথাও তাই। কিন্তু অনেক ইশারা-ইঙ্গিত দেখেশুনে কৈফিয়ত দিতে হলো। এটি লিখতে আমারও মজা লাগেনি, তা-ও জানিয়ে রাখি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমার মনে হয়েছে এটা একটা রিকোয়েস্ট টাইপের। সচলায়তনরে সচল করার একটা আলোচনা বা ইন্সপিরেশনের মতো। এইটাকে নিগেটিভলী নেয়ার কিছু নাই। লেখার সর্বস্বত্ত্ব এবং প্রকাশনার দায়ভার এবং সিদ্ধান্ত লেখকেরই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শামীম এর ছবি

ভালো বলেছেন। চলুক

====
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

"সামহোয়্যার-এর জন্যে আলাদা কোনো প্রেম যেমন আমার নেই, সচলায়তনেও আমি মাথাটি গচ্ছিত করে রাখতে অসম্মত। প্রয়োজনে দুই জায়গাতেই লেখা বন্ধ করে দিতে আমার কিছুমাত্র দ্বিধা হবে না। ব্লগে লেখা আমার জীবনের মোক্ষ নয়, ব্লগ নয় আমার জন্যে লভ্য একমাত্র মাধ্যম।"

এ কথাটি ভালো লেগেছে খুব।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ধন্যবাদ, শিমুল।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অরূপ এর ছবি

জুবায়ের ভাই,
খুবই লজ্জিত আপনি মন্তব্য দেখে। নীতিগতভাবে আমরা কখনওই এরকম আটকে রাখার পক্ষপাতি নই। আপনি কৈফিয়ত দিতেও বাধ্য নন। শোমচৌ এর লেখা তার নিজ মতের প্রতিফলন এবং তা লেখা কিছুটা অনুরোধের সুরে। লেখক তার লেখা কোথায় প্রকাশ করবেন সেই ধৃষ্টতায় আমরা যাচ্ছি না হাসি

-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মাহবুব মুর্শেদ ও অরূপ, ধন্যবাদ আপনাদের মতামতের জন্য। কিন্তু এই পোস্টটি যখন স্টিকি করা হয় (চোখে যখন না পড়ে উপায়ই নেই) তখন তার সঙ্গে সচলায়নের সমর্থন অনুমান করে নিলে খুব ভুল হয় কি?

আমি খুবই দুঃখিত আমার নিজের প্রতিক্রিয়ায়। হয়তো পুরো ব্যাপরটাই খুব অপ্রত্যাশিত বলে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অরূপ এর ছবি

জুবায়ের ভাই,
মোটেও ভুল হয় না। স্টিকি করে তাই আবার আনস্টিকি করা হয়েছে। করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী মন খারাপ

-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

কখন স্টিকি হলো কখন বা আঠা খুলে গেল বুঝলাম না।
দ্বিতীয়ত, আজ আমি নিশ্চিত হলাম, অনেকেই মনোযোগ দিয়ে লেখেন কিন্তু মনোযোগ দিয়ে পড়েন না।
আমার এই লেখাটা মূলত: আরিফ জেবতিকের একটু কড়া লড়াকু মনোভাব ও সিদ্ধান্তকে হালকা করে তোলার জন্য ছিল।
কে কোথায় লিখবেন বা এখানে লিখলে ওখানে লেখা যাবে না এরকম কোনো কথা পুরো লেখাটায় নেই।
আমি শুধু আমার মতটাই বলি বলে আমি নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। তবে এই সিদ্ধান্ত জানানোর আগ পর্যন্ত আমার লেখা দুই জায়গাতেই গেছে।

সে যাক, এই আলোচনা এখানেই থামা উচিত।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।