দেশবিরোধীদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রত্যাহার করা হোক

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শনি, ০৩/০১/২০০৯ - ২:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্বাধীনতা পদক

ক্রান্তিকাল পার হয়ে দেশ এখন নতুন চেতনায় উজ্জীবিত। বাংলাদেশের যেন এ এক নতুন যাত্রা। যেন স্বাধীনতার পর প্রথম কয়েক বছর ছিল একটা ফলস্ স্টার্ট। আবার নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে জাতি এসে দাঁড়িয়েছে রানিং মার্কে। আবার শুরু হবে ছুটে চলা। নতুন উদ্দীপনায় – পরিশুদ্ধ চেতনায়।

যাত্রা শুরুর আগে জাতি পেছনের ভুলগুলো শুধরে নিতে চায়। ঘরের শত্রু আর বাইরের শত্রুদের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে জাতির যাত্রাকে হুমকিমুক্ত রাখতে চায়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে রায় দিয়ে জাতি এখন আয়োজন করছে তাদের বিচারের। এখান থেকেই শুরু হবে নবতর যাত্রা। যেন ক্ষমার সুযোগ নিয়ে পেছন থেকে জাতির পিঠে ছুরিকাঘাত করতে না পারে এসব শ্বাপদেরা। জাতির নবযাত্রা হতে পারে নিষ্কন্টক।

তাদের বিচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। কিন্তু এখানেই জনগণ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব শেষ নয়। এই বিচারের পক্ষে আমাদের দাঁড়াতে হবে আরো সচেতনভাবে। কাজ করতে হবে তথ্য সংগ্রহ, প্রমাণ উপস্থাপন, অভিযোগ প্রণয়নের জন্য। যাতে আইনের ফাঁক গলে পার না পেয়ে যায় জাতির শত্রুরা।

যুদ্ধাপরাধীদের পাশাপাশি দেশকে – জাতির ইতিহাসকে - কলংকমুক্ত করার সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেয়ার এখন সুবর্ণ সময়। জাতির লজ্জাকে ধুয়ে মুছে সাফ করার এ এক বিরাট সুযোগ।

এই ধারাবাহিকতায় আমার প্রস্তাব হলো :- স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক সরকার বিভিন্ন সময় দেশদ্রোহী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদেরকে যেসব রাষ্ট্রীয় সম্মান বা পদক দিয়েছে – সেগুলো বাতিল করা হোক।

একটি জাতির জন্য এর চেয়ে লজ্জার কী আছে যে এদেশের স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, রাষ্ট্রপতি পদক পেয়েছে এমন সব কুখ্যাত দেশবিরোধীরা যারা এ দেশের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না। যারা এ দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অস্ত্র ধরেছে হ্ত্যা করেছে নিরস্ত্র মানুষকে – আবার তারাই রাষ্ট্র কর্তৃক পুরষ্কৃত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে – এই লজ্জা নিয়ে এই ক্ষতচিহ্ন বুকে নিয়ে দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। দেশের ইতিহাসের পাতা থেকে এসব কলংকময় পদক্ষেপগুলো মুছে ফেলার উদ্যোগ দরকার এখনই।

আসুন এই দাবীর পক্ষে আমাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করে তুলি। শর্ষিণার পীর বা আসকার ইবনে শাইখের মত ঘাতক দালালদের নামের কালিমা থেকে রাষ্ট্রীয় পদকগুলোকে মুক্ত করি। দেশ ও দেশের ইতিহাসকে করি আরো উজ্জ্বল।

বি: দ্র: কোনো সতীর্থ সচলের কাছে রাষ্ট্রীয় পদক পাওয়া এসব দেশবিরোধী ব্যক্তিদের নামগুলো থাকলে দয়া করে তা এই পোস্টের মন্তব্যে তুলে দিন।


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ভালো উদ্যোগ। তবে পদক প্রত্যাহারের আগে তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো বেশি দরকার। কারণ, সেটাই আসল কাজ। পদক নিয়ে ক্যাচালে আসল কাজ কেঁচে যেতে পারে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাজা দিয়ে তারপর সাজাপ্রাপ্ত বলে পদক প্রত্যাহার অনেক অনেক ইজি হবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নি:সন্দেহে একটা সময় সাপেক্ষ বিষয়। মাত্র উদ্যোগ শুরু হয়েছে। শেষ হতে কতদিন বা বছর লাগবে তা আগাম বলা সম্ভব নয়।
কিন্তু এই কাজটা অনেক সহজ। তাছাড়া তাওয়া গরম থাকতেই রুটি সেঁকে নিতে হয়। ঠান্ডা তাওয়ায় কাজ হবে না। প্রতিঘাতের এখনই সময়।

যারা পদক পেয়েছেন তাদের সবাই হয়তো যুদ্ধপরাধের সাথে সংযুক্ত নন কিন্তু ১৯৭১-এ স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং এই পদক্ষেপ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টিকে আরো পোক্ত করবে, দুর্বল নয়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যারা পদক পেয়েছেন তাদের সবাই হয়তো যুদ্ধপরাধের সাথে সংযুক্ত নন কিন্তু ১৯৭১-এ স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা রেখেছিলেন।

শোহেইল ভাই, এখানে 'যুদ্ধাপরাধী' আর 'স্বাধীনতাবিরোধী'র মধ্যে পার্থক্য কি? মনে করেন, গোলাম আযম স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো। তার বিরুদ্ধে হত্যা বা অত্যাচারের প্রমাণ না পাওয়া গেলে তাকে কি যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হিমু এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

একটি জাতির জন্য এর চেয়ে লজ্জার কী আছে যে এদেশের স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, রাষ্ট্রপতি পদক পেয়েছে এমন সব কুখ্যাত দেশবিরোধীরা যারা এ দেশের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না।

সত্যিই ...... !!

অনিকেত এর ছবি

সম্পুর্ন সহমত............

রাগিব এর ছবি

১) চরমোনাইয়ের পীরকে এরশাদ স্বাধীনতা পুরস্কার দিয়েছিলো।

* (এটা শর্ষিনার পীরও হতে পারে। সুমন ভাই বলার পরে মনে হলো। হুমায়ুন আহমেদ বা জাফর ইকবাল এদের কোনো এক জন সে সময়ে প্রচন্ড দুঃখ করে লেখালেখি করেছিলেন এটা নিয়ে)।

** (একটু ভুল ছিলো, এটা হবে "জিয়া"। ১৯৮০ সালে শর্ষিনার পীর আবু জাফর মোঃ সালেহকে জিয়াউর রহমান "শিক্ষা খাতে অবদানের জন্য" স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার দেন। কী রঙ্গ .... )

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হুম জিয়াউর রহমানেরই কাজ। তিনি শর্ষিনারই পীর। ১৯৭৯ বা ৮০ সালে একুশে পদক পেয়েছিলেন।



অজ্ঞাতবাস

মুস্তাফিজ এর ছবি

পীর পাইছিলো শিক্ষায় ১৯৮০ সালে
এইলিস্টে এমন অনেকে আছে যার শুরু মাহবুবুল আলম চাষী কে দিয়া (১৯৭৭ সালে ক্ষেত্র পল্লী উন্নয়ন)
এর পর আরো আছে, এই মূহূর্তে যাদের নাম মনে পড়ছে
ফররূখ আহমেদ
অলি আহাদ মুক্তিযুদ্ধে আসামান্য (!) অবদানের জন্য
বদ্‌ চৌধুরী চিকিত্‌সা শ্রাস্তে অবদানের জন্য
র‌্যাব সামাজিক উন্নয়নের জন্য
এমন অনেকের প্রাপ্তি নিয়া সেসময় অনেকেই বিক্ষুব্ধ ছিলো

...........................
Every Picture Tells a Story

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পোস্ট গুল্লি

অফ টপিক, শর্ষিনার পীর আছে না গেছে? মানে দোজখে আর কি....



অজ্ঞাতবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বিচারকার্য বিলম্বিত হওয়ার কারণ কি বিগ সি? সব তথ্য-প্রমাণ তো হাতেই আছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। তারপরেও কেনো দেরী হবে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

থার্ড আই এর ছবি

শোমচৌ'র দাবীর সাথে একমত পোষন করছি।
পাশাপাশি আমার একটা বিষয়ে সন্দেহ প্রবল হয়ে উঠেছে। রাজাকার গুলা নিশ্চই তাদের পার্সপোট ঠিক ঠাক করতাছে, তাহাদের প্রিয় দেশ পাকিস্তানে স্বপ্নের আবাসন গড়ে তোলার জন্য। সীমান্তে নজরদারী বাড়ানোর উদ্যেগ নিতে হবে। নতুবা যাদের বিচারের জন্য এতো আয়োজন সব ভেস্তে যাবে।

--------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মৃন্ময় আহমেদ এর ছবি

সহমতের জোয়ারে ভেসে যাক সকল কুটিলতা।

====================
অনিকেত প্রান্তরে ভেসে বেড়াই

'

=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা

রানা মেহের এর ছবি

অচ্ছুত বলাইয়ের সাথে সহমত।

দেশের জাতীয় পুরস্কার নিয়ে এমনিতেই অনেক বিতর্ক আছে।
এমন অনেকেই আছেন যাদের অবস্থান স্বাধীনতার পক্ষে হলেও পুরস্কার পাবার যোগ্যতা ছিলো সরকার বা কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ।
এখন পদক নিয়ে কথা উঠলে হয়তো আরো অনেক বিতর্ক উঠবে যা ধীর করে দেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া।

তাদের বিচারটা শুরু হোক অন্তত। একবার অপরাধী প্রমানীত হলে পদক প্রত্যাহার করতে একদিনও লাগবেনা।

সচলের পরিবেশ টা খুব ভালো লাগছে এখন। প্রতিদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে চমতকার সব লেখা - দুর্দান্ত সব আইডিয়া আসছে। খুব ভালো লাগছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একবার মনে আছে রানা মেহের, এইতো বছর আড়াই-তিনেক আগে! একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে মুজাহীদকে হাতে ধরে টেনে স্টেজে উঠিয়েছিলো ফালু। চিন্তা করেন, মুজাহীদ অতিথি হয়ে একুশে পদক বিতরণ করছে পদকপ্রাপ্তদের মাঝে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ভেরিফিল্মিবয় এর ছবি

মইত্যা নিজামীও রাষ্ট্রীয় কিংবা অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো একটা পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিল। একটু খোঁজ নেন।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

পোস্টের সাথে সহমত,
তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রয়োজন সবার আগে।
বিচার প্রক্রিয়া ধীর হলে সব ভেস্তে যাবে,
বিচার প্রক্রিয়া তরান্বিত করা কঠিন কোন কাজ না।
দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
ক্ষমতাশীলদের সততা দরকার এ বিষয়ে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস কোন বিদেশি শক্তি এ বিষয়ে নেতিবাচক নাক গলাতেও আসবে না।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমিও তাই বলি। বিচারটা দরকার আগে।
তবে এর গতি ধীর হলে আদৌ কোনো লাভ হবে কিনা...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি চাই সংসদ ভবন চত্বর থেকে শাহ আজিজের কবর তুলে ফেলা হোক। দৈবভাবে যেকোন একজন সাধারণ মানুষের লাশ দাফন করলেও খুশি হব, তবে চাই না একজন রাজাকারের লাশ থাকুক আমার দেশের সংসদে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

শুধু আজিজ না, সবুর খান ও তো ঐ সংসদ ভবনের গোরস্থান দিয়া দোজখে গেছে। আর আছে যাদু মিয়ার (মশিউর রহমান) কবর। মনে আছে অনেক আগে পোলাপান (আমি না) ঐ গোরস্তানের সাইনবোর্ডের উপরে দোজখস্থান লেখা ব্যানার টানাইছিলো, এর পর থেইকা ওখানে পুলিশ পাহাড়া।

...........................
Every Picture Tells a Story

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

পদক পরে বাতিল করার সুযোগ পাওয়া যাবে। আগে দরকার ওদের বিচার। বিচার হলে এমনিতেই পদক বাতিল হয়ে যাবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

পোস্টের সঙ্গে পুরো একমত। রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত স্বাধীনতাবিরোধীগো আগে চিহ্নিত করতে হইব,তারপর হেগো বিচার করতে হইব এবং শেষে তাগো নামের তালিকা থিকে উৎখাত করতে হইব।
(মহসীন রেজা)

ইরতেজা এর ছবি

শুধুমাত্র দেশবিরোধীদের কেন? জামাত বিনপি সরকারের আমলের যেভাবে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার দলীয়করন এবং আত্মীকরণ করা হয়েছে। সেই সব চাটুকার, দলীয় নেতা এবং আত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রত্যাহার করা উচিত।

১৯৯৫ সালে সমাজসেবা ক্যাটাগরিতে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার পেয়েছেন বেগম সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু । তার একমাত্র পরিচয় তিনি তারেক জিয়ার শাশুড়ি।
________________________
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই

_____________________________
টুইটার

আরিফ জেবতিক এর ছবি

১৯৯৫ সালে সমাজসেবা ক্যাটাগরিতে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার পেয়েছেন বেগম সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ।

কস্কী মোমিন !!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।