সুমন সুপান্থ এর ব্লগ

প্রতিদ্বন্দ্বী ( শেষপর্ব )

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: শনি, ২৩/০৫/২০০৯ - ৫:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শুরুর পর্ব
-------------------------------

এমন নয়, এই পথ আমার অচেনা, এর আগে যাই নি কোনদিন। রাত্রিযাপনের জন্য কিংবা জাল ফেলতে না হোক, নদীতে তো যাওয়া হয়েছেই বহুবার। স্কুলে যেতে হলেও অনেকটা এই পথ ধরেই যেতে হতো। কোন ভাবেই এটা অচেনা পথ নয় আমার জন্য। সেই মাঠ...গ্রামের শেষপ্রান্তে বড় পাকুরগাছ, তার বাঁ দিকে নেমে গেলে খালের পাশে সেই চীরচেনা ডাহুকের ডাক...অনতি দুরে স্কুলের মাঠে জেলেশিশু...


প্রতিদ্বন্দ্বী(পর্ব-১)

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: বুধ, ২০/০৫/২০০৯ - ৩:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাবার সঙ্গে আমি প্রথম যে দিন নদীতে যাই, আমার বয়স তখন চৌদ্দ ।
মা অবশ্য অনেক দিন থেকেই গাঁইগুঁই করছিলেন, ‘জ্যাইল্লার পোয়া, জাল বাইবো না তো পন্ডিত অইবো ! ছমছু মাস্টার অইবো !’ তীক্ষ্ণ, তীব্র সেই উপহাস । বাবা গিলে ফেলতেন সেটা অনায়াসে । পন্ডিত হওয়া, নিদেন পক্ষে এই এলাকার একমাত্র শিক্ষক সামসুদ্দীন মাস্টার ওরফে সমসু মাস্টারের মতো মেট্রিক পাস দিয়ে আশপাশ আলোকিত করে ফেলাও যে ধীবরপুত্রের জন্...


ঝিঁ ঝিঁ পোকা...ও জোনাকী, ঘুম ভাঙানি ডাকছো তুমি কাকে? এই লেখাটা পড়তে দিও মা'কে

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: রবি, ১০/০৫/২০০৯ - ৩:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

... শুধু কুয়াশা । ঘন হয়ে ঢেকে আছে চরাচর ! একর কয়েক ধানী জমি...ধান কেটে নিয়ে যাওয়ায় সুনসান,বিরান...তার উপর মাতালের হাহাকার নিয়ে তীব্র হয়ে পড়ে আছে অই কুয়াশাদল...সেটা পেরুতেই এতো ভয়...রাত তো নয়, সেই সকাল বেলা ! বুকের কাছে আমসিপারাটা খুব করে লেপ্টে রেখে, বার কয়েক জননীর দিকে তাকিয়ে তবু মিলে না ভরসা । মা বলছিলো 'আমি এই গাছটার নীচে দাঁড়ালাম । ক্ষণে ক্ষনে নাড়িয়ে যাবো । তুমি দেখবে গাছ নড়ছে , জানবে আম্ম...


রাত্রিদিনের রবীন্দ্রনাথ

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: শনি, ০৯/০৫/২০০৯ - ৬:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি দেখি ছায়া, তসবির, মাখামাখি লেপ্টানো মমতার কাজ
প্রতিদিনের ক্ষয় শেষে প্রষ্ফুটিত রহস্যপ্রবণ ওই ছবি
ক্রমশ আবছা হয়ে আসে ত্বকরেখা, হে রাজাধিরাজ
নিয়ত দিচ্ছো মুছে; আঙুলের ক্যারিসমায় বাজাচ্ছো ভৈরবী

আমি শুনি দূর গ্রামে মানুষের মৃত্যু হলে
ফুটছে কিছু তৃণফুল, তোমারই নামে গুরু হে
জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি এইসব গূঢ় কৌতুহলে
কারা যেন ফোটাচ্ছে হুল, বিষপ্রবনতা, দুরগামী রুহে

আমি আর কোথাও না ...


শুভ জন্মদিন তারেক, স্বপ্নগুলো সব আজ নতুন ডানা পাক...জন্ম পাক নিগূঢ় অবসাদের গৌরব

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০৪/২০০৯ - ৬:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দখিন বসন্তের হাওয়া এসে এই পরদেশে বলে যায় ফুটিয়াছে ফুল, তামাদি বর্ণের । সমুদ্দুর সাত, আর নদী কতো শতো;- তবু তার সঙ্গে একদিন, কবে জানি জানা শোনা হয়ে যায় ! বিষে বিষে নীল হয়ে গেলো সহজিয়া মাঠ, তার বেদনায় আকুল আমরা পরষ্পরই তখন যুগপথ 'অমল' সাজি । আর থাকে আমাদের এক বকুল দি’ ! শান্তি জাগানিয়া মেঘের প্রহর পেরিয়ে গেলে যে দেশ, তার নির্জনতম গ্রাম... সাধের শস্যের ভেতর, স্বপ্নের ভেতর মুখ তুলে নতুন এক আহলা...


জন্মের সকল ভার, এই জন্মের হাহাকার, তবু শুভ হোক আয়ূর কাহিনী- তোর জন্য জিফরান খালেদ

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০৩/২০০৯ - ৬:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুকের খুব কাছে মৃত পালক আর গোপনে জমানো হাহাকারের ভেতর, অযুত নিযুত বর্ষের শেষে কে তাঁকে ডেকেছিলো, হারানো আরেক কবির মতো- ''এবার তো প্রস্তুত রথ, ওঠো ওঠো জয়দ্রথ''
আর সে উঠেছিলো । উঠে লিখে গিয়েছিলো, লিখতে চেয়েছিলো গতজন্মের আয়ূকাহিনী তার !
ভ্রম জন্মের খেসারত দিয়ে লিখতে বসেছিলো রক্তময় সব পঙত্তি ! আমরা তাকে কবি বলতে চাই...
রাহুর বালক, আমরা তোমাকে অভিমন্যু বলে ডাকতে চাই
আমরা তোমাকে বলি শুভ এই ...


যাবতীয় জন্মসূত্র ভুলে

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: বুধ, ১৮/০৩/২০০৯ - ২:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একে একে ফিরছে অপহৃত সব তারারা নিজস্ব কক্ষপথে
গ্রামে গ্রামে রিক্ত ধূপবাতি, মঙ্গলঘট জ্বলে গেছে যথারীতি
আমাকে সাথে নেয় নি কেউ; শুয়ে শুয়ে তমসা তীরে
তাই নিজের রক্তপানে নেশাতুর, তোমাকে ডাকি দূরাগতা

সকল বিচ্ছিন্নতা শেষে আমদের নীলাক্ত গ্রামে
এইবার তো ফিরো ক্রন্দনশীলা, এই প্রণতি রক্তপ্রণামে

এতোদিন সকল সম্ভাবনায় নিজেকে ধরে গেছি বাজি
তোমার কান্নার উজানে ফুটেছে এদেশের পাতাবাহারে...


ঢাকো যতো না নয়ন দু'হাতে ...!

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: মঙ্গল, ১০/০২/২০০৯ - ৫:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আক্ষরিক অর্থেই ছলছল করছে এখন চোখ ! গলার কাছে আটকে আসছে ব্যাখাহীন এক ব্যথা ! বারো বছর খুব দীর্ঘ সময় নয় হয়তো, মহাকালের হিসেবে । অথবা খুব দীর্ঘ সময়ই, জীবন-মরণ উত্‌কণ্ঠার এই সময়ে । বারো বছরে বনলতা ইসকুলের বালিকারা, বধুঁ হয়ে ছেড়ে গেছে বর্ষাকাঠি গ্রাম...বারো বছরে দূর্গার শূন্যতা ভুলে অপু হয়তো বার কয়েক দেখে এসেছে কোলকাতা...সর্বজয়ার হাতে সকরুণ সাদা শাঁখায় হরিহরের মৃত্যচিহ্ন বসে গেছে ! কিংবা ...


এইখানে ধূলিধুসর-জন্মের বেদনা

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: বুধ, ২৮/০১/২০০৯ - ৩:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেই চীরচেনা ফ্রেমের ভেতর ঘন কুয়াশা ! মা’ ডাকছিলো ‘আয় বাবা , আয়...’ ! পৃথিবীর শেষ পাখি তখন বলছিলো-‘এভাবেই, এ-ভাবে একলা থাকা ভালো । মাঝে মাঝে ...’ মাঠভর্তি আবছা ভ্রম রেখে, হাড়ের ভেতর দিনযাপনের ভার রেখে, মগজে পাহাড় পুষে- গাইলো,
গাইলো-ই ‘বিরহের মেঘ ভেসে যায় অলকার পথে...’

জ্বলে গেলো মাঠ...জল নীল হলো বিষে ! হা ময়ুরাক্ষী...হা দামোদর ...জল , সে জল, এতো, কোথায় যায় ! বত্রিশ বছর ! এতো এতো বছর । বয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়...


একলা শরীর, মাঘ-নিশিথের হাওয়া

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: বুধ, ২১/০১/২০০৯ - ৩:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কে – লিখেছে চিঠি ভুল বানানে !
কে – শোধরে দিয়েছে অভিধান
কে – কে রেখেছে নগ্ন পৃষ্টা অক্ষরবিহীন
কে – প্রথম পড়েছে সে সারসত্য

কে – সব আরিফরি বেদনায়,
কে – আঙুল ডগায় জমিয়েছে পাপ
কে – পেতেছে দেহ অপ্রস্তুত জ্যোত্‌স্নায়
কে – ভেঙেছে রাত, মৃত্‌ কলসের কানা

কে – ছূঁড়েছে শরীর ঘিরে বৃষ্টিধারা অবিরাম
কে – নেভালো একলা দেউটি নির্দয় ফুত্‌কারে !