[ইদানীং বিজ্ঞানের ভাব খুব বাড়ছে। জাকির নায়েকের মতন মিডিয়া ব্যাবসায়ীদের হাত ধরে এই ভদ্রলোক নির্বিবাদে ওয়াজ মাহফিলেও হাজির হন। গ্যালিলিও-ব্রুনো-হাইপেশিয়ার যুগটাই ভালো ছিল। চার্চের পছন্দ না তো পছন্দ না, ফুলস্টপ। এখন দিন বদলাইছে। এখনকার নানান চার্চের স্বত্বাধিকারীরা চুপচাপ নিজেদের গ্রন্থের অনুবাদ বদলে তাতে বিজ্ঞান ঢোকাবার চেষ্টা করছেন। এসব দেখে বিজ্ঞানুভূতি আহত হলেও কিচ্ছু করার নাই। সেটি, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের’ অনুভূতির বিপক্ষে। এনারা যেভাবে বিজ্ঞানকে অবলীলায় প্ল্যাস্টিক সার্জারী করে স্বীয় ‘অবিকৃত’ গ্রন্থে বিকৃতভাষ্য হিসেবে জুড়ে দেন তার বিরুদ্ধে কিছু বলা দুষ্কর। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল তাঁদের ধর্মের সাথে জিরাফ জুড়ে দেবার পদ্ধতিটা, কেননা এ পদ্ধতিতে যে কোনও বইয়ের যেকোনো চরণ থেকে আলাদীনের জিনির মতন পুটুস করে বিজ্ঞানের কিছু না কিছু বের করে আনা যায়। ভাবছি আপাতত আমাদের প্রিয় কবিরা কতটা ‘বিজ্ঞানময়’ সেটা লিখে রাখব। সিরিজের শিরোনাম অভিদা’র একটা লেখা থেকে ধার নেয়া। আজকে নির্মলেন্দু গুণের জন্মদিন, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহরও মৃত্যুদিন। জ্বলজ্যান্ত মানুষটাকে বিজ্ঞানময় করে তুলতে মন চাইল না। তাই শেষমেশ রুদ্রই থাক।]
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে সেই পুরানো শকুন[বাতাসে লাশের গন্ধ/উপদ্রুত উপকূল]
এটা অবশ্য সমাজবিজ্ঞান, তবু বিজ্ঞান তো!
এ কেমন ভ্রান্তি আমার
এলে মনে হয় দূরে স’রে আছো বহুদূরে
দূরত্বের পরিধি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে আকাশ
এলে মনে হয় অন্য রকম জল হাওয়া প্রকৃতি
অন্য ভূগোল বিষুব রেখারা সব অন্য অর্থবহ[এ কেমন ভ্রান্তি আমার/উপদ্রুত উপকূল]
হুমম, গ্লোবাল ওয়ার্মিং। পোলার আইস ক্যাপ গলে কিভাবে জলবায়ু বদলে যাচ্ছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। সমুদ্রপৃষ্ঠ কতটুকু বাড়বে, সেটা একেবার ন্যানোমিটার পর্যন্ত বলে দেয়া যায় এই শ্লোক থেকে, তাইনা?
তবু সেই পাথরের অন্তর থেকে
কেঁদে ওঠে একরাশ জলের আকুতি
ঝর্নার মত তারা নেমে যেতে চায় কিছু মাটির শরীরে[আমি সেই অভিমান/উপদ্রুত উপকূল]
সুপেয় পানির স্তর কিন্তু নেমে যাচ্ছে ধীরে ধীরে!
সঞ্চিত বারুদ বক্ষে তবু প্রয়োজন ছাড়া জ্বলিনা কখনো
জ্বলে ওঠা বারুদের নিজস্ব স্বভাব
স্বভাবের দোষে তাকে দূরে রাখে সতর্ক মানুষ
বিস্ফোরণ বুকে আছে, আমি তার নিয়ন্ত্রণ জানি[নিরাপদ দেশলাই/উপদ্রুত উপকূল]
এই কোবতে আমল করে ইয়াহুদী-নাছাড়ার নিরাপদ দেশলাই আবিষ্কার করে ফেলল, আর আপনারা বসে বসে করলেনটা কি, হুমম? তাছাড়া শেষ চরণে কি কবি গ্রেনেড আর মাইনের মূলসূত্র দিয়ে যান নি?
পাথর এবং পাখির মাঝে ফারাক বুঝতে সময় লাগে
বৃক্ষ এবং লতার মানে আজো আমি সবুজ বুঝি[পরিচয়/ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম]
কিভাবে ফসিল আর জীবিত প্রাণীর পার্থক্য করা হয়, বুঝলেন?
হারানো অতীত ছাড়া, ক্রমাগত ভবিষ্যৎ ছাড়া
মোর কোনো বর্তমান নেই
মোর কোনো মধ্যভাগ নেই
প্রতিটি মুহূর্ত এসে ভেঙ্গে পড়ে অতীতের জলে
প্রতিটি আগামী এসে ধ্বসে পড়ে অতীতের খাদে[নিখিলের অনন্ত অঙ্গন/ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম]
স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়ামের কি সুস্পষ্ট বর্ণনা, তাই না?
তিন ভাগ জলের নিকটে তবু কতটুকু শক্ত তার ঘাঁটি?
অন্যায় পাহাড় কবে ভাংতে আসবে ফুঁসে দুর্বিনীত জল?[২৯/মানুষের মানচিত্র]
একেবারে সুনামির ডিফারেন্সিয়াল ইকুয়েশন সমাধান করে দেয়া!
প্রকৃতির ভেতরে তাকাও, দ্যাখো, আলো এবং অন্ধকার দুটি পক্ষ
নিসর্গের ভেতরে তাকাও, দ্যাখো, পানি এবং মাটি দুটি পক্ষ
পৃথিবীর ভেতরে তাকাও, দ্যাখো, শোষিত এবং শোষক দুটি পক্ষ
মানুষের ভেতরে তাকাও, দ্যাখো, গরীব এবং বুর্জোয়া দুটি পক্ষ
এদেশের ভেতরে তাকাও, দ্যাখো, পঁচাশি এবং পনেরো দুটি পক্ষ[সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি/ছোবল]
পদার্থ এবং প্রতিপদার্থের কি পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা, আহা!
চিঠিগুলো রোজ চুরি হয়ে যায় শুধু
খালি খাম এসে জমে থাকে রাশি রাশি
সব খামেরাই তোমার ঠিকানা চেনে
একটি চিঠিও পায়না তোমার দেখা[চিঠিপত্রের গল্প/গল্প]
ই-মেইল হ্যাক হবার পাশাপাশি স্প্যাম-মেইলের যন্ত্রনার আগাম বানী!
যেভাবেই ভাঙো- দুজনাই শুধু ভাঙি
যেভাবেই ভাঙি- ভাঙি শুধু দুজনাই[সীমাবদ্ধ ভাংচুর/গল্প]
কিসের হেলা কোষ? ক্যান্সারের আবিষ্কার তো হল এখানে!
স্পর্শে ভেঙ্গে যাবো আমি
আলতো ছুঁয়ে দিলেই আমি ঝ’রে যাবো
স্মৃতিময় ম্লান মসলিন[ঘুমন্ত ঘুঙুর আমি বেজে উঠি/দিয়েছিলে সকল আকাশ]
টাচস্ক্রীন প্রযুক্তি? নাকি বায়োমেট্রিক সেন্সর আর লক?
তুমি আমার জীবন্ত ক্রাচ, তোমাকে চাই
বন্ধ ঘরের বাইরে যাবো তোমাকে চাই[ক্রাচ/মৌলিক মুখোশ]
এই কবিতার জ্ঞান চুরি করেই নাস্তিক বিজ্ঞানীরা স্টিফেন হকিং এর ঐ চেয়ারটা বানিয়েছেন।
তর্ক কোরো না ইবলিশ তবে চড়বে তোমার কাঁধে
মহৎ তারাই ধর্মের নামে করে যারা তেজারতি
অন্যের কাঁধে চড়ে যারা বাঁচে, পরগাছা তার নাম
স্বরণীয় তারা, অনুসরণীয়- তাদের পেছনে ছোটো[পারলৌকিক মুলো/এক গ্লাস অন্ধকার]
এই কবিতা থেকেই রিচার্ড ডকিন্স প্রমুখ একটি বিশেষ ভাইরাসের কথা বলেছেন।
২১.০৬.২০১৬
মন্তব্য
স্টিফেন হকিং এর চেয়ারটা দুর্দান্ত হয়েছে। ব্যাখ্যা গুলোয় আপনার আরো সরস উপস্থিতি আশা করছিলাম।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
রোজা-রমজানের দিনে এত রসারসি ভালু না। পরের বার, হপে!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তাহলে দায়ী কে, আমি?
অবশ্যই- অনুভূতি যার যার, রুদ্র সবার!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি একটা দুর্দান্ত মানব!
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
শইল্ডা ভালা? বহুদ্দিন পর আইলেন, খালি হাতে! গফ কো?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
শরীর ভালই সাক্ষী দাদা। বহুদিন পরপরই আসি। সময় আর সংসার খুব খারাপ জিনিস। গপ আছে, পচে মরছে।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
এত্ত ক্রিয়েটিভিটির রহস্য কি ভাইজান? পপকর্ণ?
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
রোজা-রমজানের দিনে পপ্পনের নাম লইতে নাই, মমিনেরা তেড়ে আসবে!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাক্ষীদা আইলো, দেইখলো এবং জয় করিলো
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
আঁই কি কইচ্চি!!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ফাটাফাটি !
মিতা চার্বাক
রুদ্র বরাবরই ফাটাফাটি!
[ আর কয়ডা লেখেন, আপনার কবিতা থেকেও বিজ্ঞান বাইর কইরা দিমু! ]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ভালো লাগলো।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
গুডরিডস
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন