বলধরা

সোহেল ইমাম এর ছবি
লিখেছেন সোহেল ইমাম [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৪/০৩/২০১৭ - ৭:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

উঠোনের এক কোণেই দোতলার সিঁড়ি উঠেছে । সিঁড়ির নিচের ত্রিভুজাকৃতির খোপটাতেই খড়ির দু’টো চুলো। নানির সারাটা দিন কাটতো ওখানে বসেই। সকালের নাস্তা, দুপুরের ভাত, সন্ধ্যাতেই হয়ে যেত রাতের খাবারও। ভোরে ওখানে বসেই রুটি বেলতেন আর আমরা নানিকে কেন্দ্র করে অর্ধবৃত্তাকারে বসতাম নাস্তা করতে। গরম গরম রুটি চুলো থেকে সরাসরি কাঁসার থালায়। মাথার উপর উঠোনের অনেকটা জায়গা ধরে ছেয়ে ছিলো একটা পেয়ারা গাছের শাখা-প্রশাখা। বলধরাকে ওখানেই প্রথম দেখি। নানির সামনে গুটিশুটি মেরে বসে আছে। বয়স বেশি হবেনা তখন, হয়তো পাঁচ-ছয়, আমার বয়সীই প্রায়। সেদিন ভোরে উঠতে পারিনি, নাস্তা করতে এসে উঠোনেই দেখি ছেলেটাকে। বড় বড় চোখ, কিন্তু ভুরু দু’টোর ভঙ্গি চোখ দু’টোকে কেমন একটা স্থায়ী প্রশ্ন বোধক চাউনি দিয়েছে, যা দেখে মনে হবে চোখ দু’টোর মালিক ভাবছে ‘আচ্ছা, অবাক ব্যাপার কিন্তু কেমন করে এটা হলো’। এই জিজ্ঞাসায় কৌতুহলের চেয়েও একটা হতভম্ব হয়ে থাকার ব্যাপার থাকায় কারো বুঝতে বাঁকি ছিলোনা ছেলেটার বুদ্ধি শুদ্ধি বিশেষ নেই। নানি বললেন এ বলধরা। সত্যি আমি আর কোন নাম শুনিনি। ছোটমামারা ফুটবল খেলতেন। ভোরে উঠে প্র্যাকটিসে বেরিয়ে যেতেন কয়েক বন্ধু মিলে, সাথে থাকতো বলধরা। মাঠের বাইরে চলে গেলে ছেলেটা বল কুড়িয়ে এনে দিত। মামাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকতো, চা-বিস্কুট জুটে যেত। বাড়ি ফিরলে মামার পিছে পিছে এসে নানির তৈরী গরম গরম রুটিও জুটে যেত। বলধরাকে এভাবেই চিনি।
কয়েকজন বন্ধু মিলে মামাদের একটা ফুটবল টিম ছিলো। নাম ছিলো বেকার ওয়াগান। এই টিমের সাথে সাথেই থাকতো বলধরা। ফুটবল খেলায় অবশ্য মামারা বিশেষ সুবিধে করতে পারেননি। বয়স তখন তাদেরও কম ছিলো। অল্প বয়সের উৎসাহে টিম করা একটা ব্যাপার আর স্টেডিয়ামের তুখোড় খেলোয়াড়দের মুখোমুখি যুদ্ধে নামা ভিন্ন জিনিস। প্রথমবার টিমের জার্সি বানাবার সময় জানিনা কার বুদ্ধিতে তারা বানালেন কালো জার্সি। হয়তো কেউ ভেবেছিলো ভালো দেখাবে। ছোটচাচা খেলতেন বৈকালীসঙ্ঘে, খেলোয়াড় হিসেবে বেশ ভালো ছিলেন তাই ছোটমামাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতে তার বাধতোনা। বলতেন কালো জার্সি পরা ফকিরদের দল। তখন রেফারির ছিলো কালো পোষাক। মাঠে বিদঘুটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। বেকার ওয়াগান মাঠে নামলে রেফারিকে চেনা যাবে কি করে? সবই কালো পোষাক। হয় সর্টস বদলাতে হবে নয় জার্সি। বদলানোর মত বাড়তি ওসব কোথায়। সুতরাং যেভাবেই হোক কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে খেলা চালিয়ে নেওয়া হয়েছিলো। রেফারিকে চেনা সত্যিই দুস্কর হয়েছিলো। দর্শকদের মনে হচ্ছিলো এক দলে বারো জন খেলছে। কেউ কেউ হলফ করেও বলেছিলো তারা দেখেছে এই সুযোগে রেফারিও নাকি বলে দুবার লাথি মেরেছে। এ সব মিছে কথায় কান দেওয়ার সময় কারো অবশ্য ছিলোনা, কেননা বেকার ওয়াগান সেই প্রথম খেলায় ছয় গোল খেয়ে বাড়ি ফিরেছিলো। ছোটচাচার ভাষায় মামারা স্টেডিয়াম থেকে ফিরেছিলো চোরের মত চুপচাপ, মাটিতে মিশে যায় যায় ঠিক এরকম। শুধু বেয়াড়া বলধরা অনবরত চেঁচিয়ে চলেছিলো ‘বেকার ওয়াগান জিন্দাবাদ’। বলধরার জয়ধ্বনি সব সময়ই বজায় ছিলো কিন্তু বেকারওয়াগান পরেও কোন খেলাতেই বিশেষ কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি। শুধু প্রথমবার হারার পর যেমন নিস্তেজ হয়ে ফিরেছিলো সবাই, সেটা পরে কাটিয়ে উঠেছিলো। হারলেও হৈ হৈ করে, নাচানাচি করে এমন ভাবে পাড়ায় ফিরতেন মামারা যেন খেলায় জিতেছেন তারা। বারবার হেরে গেলেও মামারা খেলা ছাড়েননি অতএব বলধরাও সঙ্গেই থাকতো সব সময়। মামার বন্ধুদের কেউ কেউ বলধরাকে পুরনো কাপড় চোপড় যেমন দিতেন তেমন টুকরো টাকরা সাহায্যও চলতো। বলধরার মা মানুষের বাড়ি কাজ করে দিন গুজরান করতেন। বলধরা তার দ্বিতীয় ছেলে। তিন ছেলের মধ্যে এই হাবাগোবা ছেলেটাযে না খেয়ে বাড়ি ফেরেনা তাতেই তিনি সন্তুষ্ট।
সেই বলধরাকে অনেক দিন পর দেখলাম। অনেক গুলো বছর কেটে গেছে। চেহারা সুরত পাল্টে গেলেও সেই বড় বড় চোখ আর বিস্ময়মাখা প্রশ্নবোধক চাহুনির জন্যই বোধহয় বলধরাকে চিনতে কষ্ট হলোনা। ‘তুই বলধরা না!’ আচমকাই প্রশ্ন করি, জানি যে ভুল করছিনা। ‘আরে মামু তুমি!!’ সেও যে চিনেছে এটা দেখে ভালো লাগলো। ‘আয় চা খাই’, চায়ের স্টলের বেঞ্চে বসি ওকে নিয়ে। ‘চিনলি কি করে আমাকে, সে তো অনেক বছর?’
‘তুই বলধরা বুলে ডাকলি যে, আর তোক চিনবোনা এইটা একটা কথা বুললি।’
দায়সারা আলাপে যা হয় প্রশ্ন করতেই হয় কি করছে এখন। সেই প্রশ্নে কিন্তু বলধরা সহজ কোন উত্তর দিতে পারেনা। ‘মামু কাজ বুললেই কি আর কাজ হয়, চইলে যাছে একরকম। কামকাজ থাইকছে আবার থাইকছেনা।’ গল্প কিন্তু থামেনা। বহুদিন পর পুরনো একটা মানুষ পেয়ে বলধরাও বকতে থাকে প্রাণ খুলে। হাবা গোবা বলেই বলধরা বিশেষ ভালো কোন কাজ কর্মে জড়াতে পারেনি। কখনও চালের আড়তে, কখনও ধরাধরি করে সাহেববাজারের বড় বড় মুদির দোকান গুলোয় কাজ করেছে। ঠিকাদারীর কাজেও মাঝে মাঝে পাহারাদারের কাজ পায়। এসব করেই একরকম চালিয়ে নেয়। বিয়ে করেছিলো কিন্তু সে আরেক কাহিনি। বড়ভাইটা অনেক দিন হলো নিজের সংসার নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। ছোট ভাইটা কাজকর্ম ভালোই করে কিন্তু চালবাজ। কোন কাজেই বেশিদিন থাকেনা তবে কামাই মন্দ করেনা। সংসারের খরচ একরকম সেই চালায়। একটা সোমত্ত মেয়ে দেখেই বলধরার মা বিয়ে দিয়েছিলো, আশা ছিলো যে হাবাগোবা ছেলেটা ভালো হয়ে উঠবে। বলধরা কিন্তু বলধরার মতই থেকে গেছে। মাঝখান থেকে বউটাই পাল্টে গেলো। ছোট দেওরের সাথে ঠাট্টা তামাশা, অভিমানের কথা বার্তাতো চলতোই তার সাথেই আরো কিছু যোগ হয়ে গিয়েছিলো। হাবাগোবা বলেই হয়তো বলধরা বুঝলো দেরিতে। কিংবা আর সব কাহিনিতে যেমন হয় স্বামী বেচারাই সব শেষে বোঝে ঘরের বউ আর ঘরে নেই। বলধরার বউ অবশ্য ঘর ছাড়েনি, ঘরেই ছিলো তবে ছোট ভাইয়ের ঘরে। ঠিক কবে থেকে সম্পর্ক এদিকে মোড় নেয় বলধরা বলতে পারবেনা। কখনও একটু উষ্ণ কণ্ঠে হয়তো বলেছে ‘উই ঘরে এতকুন ধইরে কি কচ্ছিলি?’ বউ জবাব দেয়না হাসে মুখ টিপে, ভাতের থালা বের করে ভাত বাড়তে থাকে। মা এসে পড়ে কথা এগোয়না। ছোট ভাইটাই যে স্নো-পাউডার থেকে শুরু করে বউয়ের যাবতীয় টুকিটাকি কিনে দিচ্ছে এটাতেও সে আলাদা কিছু দেখেনি। দেবেইতো ছোটটার টাকা আছে, তারটাতো চালডালেই ফুরিয়ে যায়, কখনও আবার বাজার করার টাকাই থাকেনা। লোকজন কানা ঘুষা শুরু করলে বলধরা বোঝে সংসারের মানচিত্রে তাকে জানান না দিয়েই কিছু বদল ঘটে গেছে। তাকে ব্যাপরটা খুলে জানানোতে লোকজনের উৎসাহও কম ছিলোনা। মায়ের কাছে যখন বলধরা কেঁদে পড়েছে তখন মা তার মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বলেছে ‘কি করবি বাপ মেনে লে।’ মেনে নিয়েছে বলধরা। বউ যখন ছোটভাইটার সাথে রাগারাগি করে বাপের বাড়ি গিয়ে বসে থাকে তখন এই বলধরাই তাকে আনতে ছোটে। বাইরের মানুষকে বুঝতে দেবে কেন। বাইরের মানুষদের অবশ্য বুঝতে বাকি ছিলোনা। বউকে সাধ্য সাধনা করে বাড়ি ফিরিয়ে আনে বলধরা।
‘বুঝলি মামু সগলাই জাইনতো কেউ বুলেনি, আর বুললেই বা কি। কি কত্তে পাত্তু? বুলেনা কপালে আছে বাঁচবি কতি পালিয়ে।’ বলধরা তার বিস্ফোরিত চোখ দু’টো আমার দিকে ধরে রাখে। তার ভুরু দু’টো সেই আগের মতই তার চাহুনিকে প্রশ্নবোধক চিহ্নের মত তীক্ষ্ণ করে রেখেছে। যেন তীব্র কোন প্রশ্ন সে পৃথিবীর দিকে ছুড়ে দিয়ে অপেক্ষা করছে। উত্তর আসছেনা বলেই সে হতভম্ব।


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

কালো জার্সি পরে মাঠে খেলোয়াড় এবং রেফারি বলে লাথি ঠুকছে, দৃশ্যটা কল্পনা করে একচোট হেসে নিলেম। বল ধরে দেবার জন্যেই কী নাম বলধরা, নাকি এটা তার নাম? আপনার লেখায় আড়াল ভেঙে শব্দের একগাল হেসে নেবার ব্যাপারটা চমৎকার লাগলো। প্রতি প্যারার মাঝে গ্যাপ দিলে পড়তে/দেখতে আরাম লাগবে কিন্তু।
*
রিকশার নকশা নিয়ে লেখালিখি করেছিলেন যিনি আপনিই কী সে'ই ভাই? লেখালিখি চলুক ভ্রাতঃ!

*
সচলের অবস্হা এমন কেনু হলু বাপ! ঝিমাচ্ছে একমনে ইয়ে, মানে...

সোহেল ইমাম এর ছবি

হ্যা ভাই বল ধরে দেয় বলেই নাম হয়েছিল বলধরা, এটা তার নিজস্ব নাম ছিলোনা। বলধরা নামটিও তার শৈশবের সময়কালের মানুষ ছাড়া বেশি কেউ মনে রাখেনি। সে এখনও বেঁচে বর্তে আছে। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। রিকশার ছবি নিয়ে কিছু লেখা লেখি করেছি আপনার মনে আছে দেখে কৃতজ্ঞ বোধ করছি। ভালো লিখতে পারিনা কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে দেখছি সচলের লেখা গুলো অনড় হয়ে আছে। নতুন লেখা আসছেনা, পুরনো লেখা গুলোও নিচে নামছেনা তাই ভাবলাম একটু স্মৃতিচারণ করে একটু নড়াই। আপনার সাম্প্রতিক লেখাটা কিন্তু দারুন ভালো লেগেছে।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সচল কি? ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আয়নামতি এর ছবি

বেশ বুদ্ধি। আপনার মত সচলতুতো ভাই-বোনেরা লিখে প্রথম পাতার ঝিমধরায় কাঁপন আনলে বেশ হতো।

আর লইজ্জা দেবেন্না! দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ঢাকায় এককালে 'ম্যাক্সি' নামে টেম্পুর বড় ভাই গোছের গাড়ি ছিল। এখনো আছে কিনা জানি না। সেই ম্যাক্সির সামনেটা অনেক লম্বা, আগের দিনের মুড়ির টিনের মতো, কিন্তু পেছনে যাত্রী নেবার জায়গাটা দুম্‌ করে ছোট হয়ে গেছে। এই গল্পটা পড়ে অমন 'ম্যাক্সি' অনুভূতি হলো। যে আকারের ক্যানভাস নিয়ে গল্পটা শুরু হয়েছিল দুম্‌ করে সে ক্যানভাসটা গুটিয়ে ফেলা হলো, ঢাকাই বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যের মতো গড় গড় করে গোটা গল্পটা বলে দেয়া হলো। আপনি তো দূরপাল্লার দৌড়বিদ, এতো তাড়াতাড়ি পাল্লা খাটো করলেন কেন? গল্প আর চরিত্রগুলোকে স্বাভাবিকভাবে বাড়তে দিতেন! যাকগে, অভিযোগ আর করবো না, আগামী গল্পে এই খামতিটা পুষিয়ে দেবেন।

সোহেল ইমাম এর ছবি

ভাই গল্প ভালো লিখতে পারিনা। গল্প লিখতে চাইনি, স্মৃতিচারণ করতে চেয়েছি। জানি এই প্লট নিয়ে মোখলেস ভাই ভালো গল্প লিখতে পারতেন, আমার সে শক্তি বোধহয় নেই।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার স্মৃতিকথায় দুটো পর্ব। একটি আপনার স্মৃতি, অন্যটি বলধরা। আপনার স্মৃতিকথা যা লিখেছেন তা ঠিক থাকলেও বলধরার গল্পটা আরেকটু বিস্তৃত হতে পারতো। বলধরার মতো মানুষদের জীবন সম্পর্কে আমাদের খুব বেশী জানা হয় না। আপনি যেটুকু জেনেছেন তা দিয়ে আরেকটি বিস্তৃত গল্প লিখতে পারেন চাইলে। সেই গল্পটি অবশ্যই একটু মর্মস্পর্শী হবে কেননা যেটুকু লিখেছেন সেটাই কোথাও মন খারাপ করে দেয়। বলধরা এমন একটা অবিচারের শিকার যার কোন সমাধান তার কাছে নেই।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সোহেল ইমাম এর ছবি

আসলে গল্প লিখছি বলে ভাবিনি। অবশ্যই কাহিনিটার আরেকটু যত্ন নেওয়া দরকার ছিলো। যত্নটা নিতে পারিনি। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

লেখাটা খুলে পড়ার আগে বেশ খানিকটা সময় ধরে বোঝার চেষ্টা করলাম- বলধরা জিনিসটা কি হতে পারে? শেষে কূল কিনারা না পেয়ে পড়ে বুঝলাম। ব্যবহারিক নাম, খারাপ না।

স্বভাবতই বলধরা'র জন্য দুঃখ লাগলো। ওর প্রতি সবাই অবিচার করেছে, আপনিও। আপনার অবিচারটা হল- আপনি ওর প্রতি মনোযোগটা ধরে রাখতে পারেন নি। গুরুত্বহীন মানুষের সাথে খানিকক্ষণ কথা বলেছেন, এই তো যথেষ্ট! তারপর খুব শীঘ্রই তার প্রতি সমস্ত উৎসাহ হারিয়ে ফেলে ঝুপ করে লেখাটায় যবনিকা পতন ঘটিয়েছেন। আপনি নির্দয়! নিষ্ঠুর!!

আমি অবশ্য নিরাপদ দূরত্বে বসে তার প্রতি খানিকটা আগ্রহ বর্ষণ করছি। রাজশাহীর অখ্যাত সব রিক্সা পেইন্টারদের জন্য যেমন, তেমনি বলধরা'র জন্যও এক ধরনের খেজুরে মমত্ব অনুভব করছি। আহারে বলধরা! এ জগতে কেউ তোমায় মনুষ্য পদবাচ্য মনে করলো না, নিষ্ঠুর এই পৃথিবীতে কেউ তোমায় বুঝল না।

সোহেল ইমাম এর ছবি

ঠিকই বলেছেন। মাথা পেতে দোষ স্বীকার করে নিলাম। কিন্তু আপনার লেখা পাইনা বহুদিন। কলমের কালি শুকিয়ে না যায়। ভালো থাকবেন। সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্য আর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

তাহসিন রেজা এর ছবি

বলধরার জন্য কষ্ট লাগলো মন খারাপ

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

সোহেল ইমাম এর ছবি

হ্যা কষ্ট এখনও লাগে ওকে দেখলেই, ছন্নছাড়া মত হয়ে গেছে এখন।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখার স্টাইলে একটা পরিবর্তন এসেছে। পড়তে পড়তে মনে হয়েছে খুব সিজনড কারও লেখা পড়ছি, এবং পড়ার পর ভাবছি আরও খানিকক্ষণ পড়তে পারলে বেশ হতো।পরিবর্তনটা কি পরিকল্পনা প্রসূত, নাকি এসে গেলো সোহেল ইমাম?

---মোখলস হোসেন।

পুনশ্চঃ বিস্ফারিত হবার কথা

সোহেল ইমাম এর ছবি

ঠিক ভেবে চিন্তে লিখিনি। একটু অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিছুই পড়তে পারছিনা। ভাবলাম কিছু লিখি, সময়টা বড্ড অনড় আর পাথুরে হয়ে উঠেছে। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মোখলেস ভাই।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

এক লহমা এর ছবি

আমার কাছে এ লেখা অনবদ্য লেগেছে। ঠিকঠাক - বেশী না, কমও না। আর একবার পড়লাম - অসামান্য হয়েছে। পাঁচ তারা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সোহেল ইমাম এর ছবি

পড়ার জন্য, মন্তব্যের জন্য আর উৎসাহের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।