মন্তব্যপোস্টঃ বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৬/২০০৮ - ১০:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[তানবীরা তালুকদারের পোস্ট ‘আমরা করব জয়ে’ বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে আকার বড় হয়ে যাওয়ায় আলাদা পোস্ট হিসেবে দিতে হল। ডাচদের সমুদ্র জয়ের কাহিনী যেমন দুর্দান্ত, তেমনি এটাও সত্য তারা শত শত বছর ধরে স্বাধীন ছিল (১৫৮১ সালে ডাচরা স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও স্পেনের সাথে ১৫৬৮ সালে শুরু হওয়া ‘আশি বছরের যুদ্ধ’ শেষ হওয়ার পর ১৬৪৮ সালে তারা কার্যত স্বাধীন হয়)। স্বাধীন দেশে নিজেদেরকে সমুদ্র এবং বন্যা থেকে রক্ষা করার জন্য শত বছরব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তারা নিতে পেরেছিল। আমাদের স্বাধীনতার বয়স মাত্র ৩৭ বছর। কাজেই ডাচদের সাথে আমাদের তুলনা করার বা এখনই আশাহত হবার মত কিছু নেই বলেই আমার ধারণা।]

ভৌগলিক দিক থেকে বন্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা নেদারল্যান্ডসের চাইতে একটু জটিল। ডাচদের জন্য সমুদ্রটাই ছিল বড় ফ্যাক্টর। কিন্তু আমাদের দেশে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে যে বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস হয়, তা হয় বেশ কয়েক বছর পরপর ঘূর্ণিঝড়ের সময়। কিন্তু প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশে যে বন্যাটা হয় তা হয় উত্তর দিকের নদীগুলো থেকে ধেয়ে আসা উপচে পড়া পানির কারণে। বাংলাদেশ সাইজে ছোট হলে কি হবে, এর উপর দিয়ে বিশাল এক এলাকার (যাকে বলা হয় catchment area) পানি প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে। নীচের ছবিতেই দেখুন গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা বেসিনের (যার আয়তন ১.৭ মিলিয়ন বর্গ কিমি) সব পানি ছোট্ট বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে পড়ছে। বন্যা না হয়ে আর যাবে কোথায়!

এখন সমুদ্র থেকে জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বাঁচতে যদি সমুদ্রে বাঁধ দেয়া হয় তবে তা উপর থেকে আসা এই পানি আটকে দিয়ে আরো বিশাল সমস্যার সৃষ্টি করবে। আমাদের দেশে প্রতি বছর যে বন্যা হয়, তার প্রধান কারণ হল বেসিনগুলোতে অতিবৃষ্টি হলে স্বাভাবিক প্রবাহের বাইরে অতিরিক্ত যে পানি নদীগুলো দিয়ে ঢুকে তা সহজে বের হবার রাস্তা পায় না। নদীগুলোতে ঠিক মতো ড্রেজিং করা হয় না বলে, নদী বেশী পরিমাণ পানি ধারণ করতে পারে না। ফলে আশেপাশের এলাকাগুলোতে পানি উপচে পড়ে।

নদীগুলোতে নিয়মিত ড্রেজিং করা বন্যা সমস্যার একটা ছোট সমাধান। কিন্তু নদীর পাড় বাধাঁই করে উঁচু করে বাঁধ দেয়া সাময়িক সমাধান হলেও কোন ভালো সমাধান কিনা বলতে পারছি না। আমেরিকাতেই দেখেন মিসিসিপি নদীতে বাঁধ দিয়েও বন্যা ঠেকাতে পারে নি। আইওয়া, ইন্ডিয়ানা, ইলিনয়তে শহরের পর শহর এখন বন্যায় ভেসে যাচ্ছে।
যত উঁচু বাঁধই দেয়া হোক না কেন, পানি নিষ্কাষণের জায়গা দেয়া না হলে তা একসময় ভেঙ্গে পড়বেই (বাঁধ বিষয়ে একটা চালু রসিকতা হল; পৃথিবীতে দুই ধরনের বাঁধ আছে- ১। ভেঙ্গে পড়ে গেছে ২। ভেঙ্গে পড়বে হাসি )। মিসিসিপি নদীর কথাই ধরি। গড়ে ২৪ ফুট উঁচু বাঁধ দেয়া হয়েছিল। কিছুদিন আগেও সেখানে পানি ছিল ৩৩ ফুট উঁচু এবং আরো বাড়ছিল। বাঁধ-টাধ সব ভেঙ্গে একাকার।

আমাদের দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রধান যে সমস্যাটা হল বেসিনগুলো অন্য দেশে অবস্থিত হওয়ায় কি পরিমাণ অতিরিক্ত পানি নদীগুলোতে প্রবাহিত হবে তা আগে থেকে জানার বা নিয়ন্ত্রণ করার কোন উপায় আমাদের হাতে নেই। ভারতে যখন বন্যা হয়, তখন তারা তখন সব পানি আমাদের উপর ছেড়ে দেয়। আবার অনাবৃষ্টির ফলে নদী-নালা যখন সব শুকিয়ে রাস্তা হয়ে যায়, তখন অন্যায্যভাবে পানি আটকে রাখে। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় ‘আন্তর্জাতিক নদী আইন’ অনুযায়ী ভারত যদিও তা করার অধিকার রাখে না, তবু বড় দেশ হিসাবে গায়ের জোরে এসব গাদ্দারি তারা করেই চলেছে। ফারাক্কা বাঁধ তার একটা উদাহরণ।

আমাদের এমন একটা মেকানিজম বের করতে হবে যা অতিবৃষ্টির সময় অতিরিক্ত পানিকে দ্রুত নিষ্কাশন করবে এবং কিছু পানি ধরেও রাখবে যা অনাবৃষ্টির সময় কাজে দেবে। এখন সেটা কিভাবে সম্ভব তার কার্যকরী উপায় দেশের প্রকৌশলীদেরকেই বের করতে হবে। গঙ্গো-কপোতাক্ষ প্রকল্পের (জি-কে ব্যারাজ) মতো সেচ প্রকল্প এই দেশেই আছে, যা নদী থেকে খালে-বিলে সেচের জন্য পানিকে নিষ্কাশন করে। এগুলোকে আরো আধুনিকায়ন করে কার্যকরী কিছু একটা করা যায় যা অতিরিক্ত পানি নদী থেকে সরিয়ে খালে বিলে শেষে সমুদ্রে নিষ্কাষণ করবে পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমের জন্যও পানি ধরে রাখবে। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে এই প্রকল্প পানির অভাবে বন্ধ থাকে! তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু না করে সবকিছু সমন্বিতভাবে করা প্রয়োজন। নচেৎ যশোরের ভবদহের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। (ভবদহে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা হয়েছিল পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্লুইস গেট ও পোল্ডার বসানোর ফলে)।

হাজার হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু এই বন্যার সাথেই বসবাস করে এসেছে। ছোটখাট বন্যা আমাদের জন্য উপকারীও বটে। আমাদের মাটি যে এত উর্বর, তা এই বন্যার সাথে আসা পলি পড়েই। কাজেই ডাচদের মত বন্যাকে একেবারে দুরমুশ দিয়ে ঠেকানোর পরিকল্পনা না করে কিভাবে বন্যাকে আমাদের কাজে লাগানো যায় সে উপায় বের করতে হবে। বন্যা প্রকৌশলের (বাঁধ ইত্যাদি) পাশাপাশি বন্যা ব্যবস্থাপনার দিকেও জোর দিতে হবে। বন্যাপ্রবণ এলাকায় ঘর-বাড়িগুলো বাধ্যতামূলকভাবে উঁচু করে তৈরী করতে হবে। আমাদের কৃষক ভাইরা এমনই দারুণ যে তারা বন্যার পানিতেও চাষাবাদের কৌশল আবিষ্কার করে ফেলেছে। কিছুদিন আগেই পত্রিকায় দেখলাম কচুরিপানায় চাষাবাদ পদ্ধতি। এগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।

তবে সমুদ্রের জলোছ্বাসের হাত থেকে বাঁচতে কি করা প্রয়োজন সেটাও জরুরীভাবে ভেবে দেখতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় অসংখ্য মানুষ এই জলোচ্ছ্বাস থেকেই মারা যায়। এক্ষেত্রে ডাচদের বুদ্ধি হয়তো কাজে লাগানো যায়। ডাচদের একটা জিনিষ আমার পছন্দ হয়েছে যেটাকে বলা হচ্ছে ‘ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন’। Maeslantkering নামে তারা একটা স্টর্ম সার্জ ব্যারিয়ার তৈরী করেছে যেটা স্বাভাবিক সময়ে খোলা থাকে ফলে পানি প্রবাহ ও অন্যান্য কাজ যথানিয়মে চলে; কিন্তু যখন ঝড় শুরু হয় এটা তখন আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যায় এবং জলোচ্ছ্বাসে বাধা দেয়। (ছবি- বাঁধ বন্ধ এবং খোলা অবস্থায়)

সমুদ্র উপকূলে এ রকম বাঁধ থাকলে আমাদের উপর থেকে আসা পানিও আটকাবে না, পরিবেশেও কোন প্রভাব পড়বে না, আবার জলোচ্ছ্বাসের সময় এই বাঁধ সেটা প্রতিরোধ করবে। ডাচদের বিশাল ডেলটা ওয়ার্ক্স যার প্রতি বছর শুধু রক্ষণাবেক্ষণ খরচই ৫০০ মিলিয়ন ডলার, এরকম বিশাল একটা প্রজেক্ট না করে বাংলাদেশের যেখানে জলোচ্ছ্বাসের প্রকোপ বেশী (যথা- চট্টগ্রাম এবং বরিশাল সমুদ্রউপকূল) সেখানে এই বাঁধ তৈরী করা যায়। যদিও এর খরচও কম হবার কথা না।

আর দক্ষিণ-পশ্চিমে আমাদের একটা ন্যাচারাল ব্যারিয়ার অর্থাৎ সুন্দরবন তো রয়েছেই। সিডরের সময়ই আমরা এর কার্যকারিতা দেখেছি। যদিও সহজ না, তবু বাঁচার স্বার্থেই এই সবুজ বেষ্টনীকে আরো বিস্তৃত করা প্রয়োজন। তবে এটাকে সেকেন্ড লাইন অফ ডিফেন্স ধরে নিয়ে সমুদ্রেই জলোচ্ছ্বাসকে বাধা দেয়ার জন্য পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন, কারণ আমাদের সমুদ্র উপকূলের মহীসোপান অগভীর হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের উচচতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী হয়। (এ পোস্টে মন্তব্যের অংশে এটা আলোচনা করা হয়েছিল)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল পড়ে।

আমাদের এমন একটা মেকানিজম বের করতে হবে যা অতিবৃষ্টির সময় অতিরিক্ত পানিকে দ্রুত নিষ্কাশন করবে এবং কিছু পানি ধরেও রাখবে যা অনাবৃষ্টির সময় কাজে দেবে।

আমি একটা উদ্ভট চিন্তা করতাম এক সময় জানি না কতটা যুক্তিযুক্ত চিন্তাটা। তার আগে বলে নেই আইডিয়াটা মাসুদ রানার কোন একটা বই পড়ে আসছিল, যেখানে ডিনামাইট দিয়ে কোন একটা বাধ ভেঙ্গে ফেলার এসাইনমেন্ট ছিল (বইটার নাম এখন মনে পড়ছে না)।

যাইহোক আইডিয়াটা হল বন্যা শুরু হবার আগেই আমাদের নালা সদৃশ নদীগুলোতে ডিনামাইট চার্জ করে বিশাল বিশাল গর্ত করতে হবে উজানের দিকে। ধরুন ১০, ২০ বা ৫০ মাইল পর পর এ রকম অনেক গুলো গর্ত করা হল যেখানে বন্যার পানি জমা হবে। তারপরও অনেক পানি থাকবে যেগুলাকে সরাসরি ভূ-পৃষ্ঠে চালান করে দেওয়া হবে ডিপ টিউবলের পাইপের মতই কিন্তু আকারে বড় হতে হবে, না হলে পলি পরে ভরাট হয়ে যাবে, কারণ অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের জন্য এখন ওখানে এক বিশাল গ্যাপ তৈরী হয়েছে ।

বাপ্পী

হিমু এর ছবি

যতদূর জানি, এরকম গর্ত করা হলে নদীর গতিস্রোত বিঘ্নিত হতে পারে। বরং নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় নিয়মিত ড্রেজিং করতে হবে। অ্যাকুইফারগুলি শনাক্ত করে ওয়াটার টেবল নতুন করে বাড়ানোর ব্যবস্থাটা বরং কার্যকরী হতে পারে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের কিছু কিছু অঞ্চলে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

তানভীর এর ছবি

বাপ্পী, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। গর্তের ব্যাপারে হিমুর সাথে একমত। নিয়মিত ড্রেজিং করাটাই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। তবে পাইপের ব্যাপারটা কিন্তু বাস্তবসম্মত। জি-কে ব্যারাজ প্রকল্পেই যতদূর জানি নদী থেকে পাম্প করে দূরবর্তী অনেক জায়গায় পাইপের মাধ্যমে সেচের জন্য পানি নিষ্কাশন করা হয়। এ ধরণের পাইপ বেশী পরিমাণে স্থাপন করে এগুলোকে বন্যার পানি নিষ্কাষণের কাজে লাগানো যায়।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সাদা মাথায় সোজা বাংলায় আমরা বুঝি নদীগুলোকে হাটুগভীর থেকে কোমরগভীর করলেই বন্যার ঝামেলা কমে যায়

তানভীর এর ছবি

জ়ি হ্যাঁ। সেই সাথে শাখা-প্রশাখাগুলোকে সচল রাখা, পানি বের হবার জায়গাগুলো সুগম করা ইত্যাদি ইত্যাদি হাসি

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

তানবীরা এর ছবি

আজকে আমাদের সময়ে একটা নিউজ আছে, এ শতাব্দীতেই নিশ্চিহ্ন হবে বাংলাদেশ। নিউজটা ডিটেইল পড়ে দেখলাম দুটো দেশ গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ ভ্যানিশ হবে তাহলো বাংলাদেশ আর নেদারল্যান্ডস। একেই বলে অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকাইয়া যায়।

৯৮ সালের বন্যার সময় আমি ডাচ টিভিতে বাংলাদেশের বন্যার কারন আর সমাধানের অনুষঠান গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতাম। সে সময় বাংলাদেশে এই বিষয়ে কর্মরত ডাচ ইঞ্জিনিয়াররা বাংলাদেশের বন্যা প্রতিরোধের এর এক বিশাল প্ল্যানিং দেখিয়েছেন যা তারা বিনামূল্যে বাংলাদেশের জন্য তৈরী করেছেন। আমরা সবাই জানি হুবহু একই পদ্ধতিতে হয়তো বাংলাদেশে কাংখিত সাফল্য আসবে না।

আমার এই লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো আন্তরিকতা, চেষ্টা আর ভালোবাসা দিয়ে অন্যরা প্রকৃতিকে জয় করতে পারে, আমরা কেনো পারছি না। আমি কোথাও লিখি নি যে আমাদেরকে অন্ধের মতো ডাচদেরকেই ফলো করতে হবে।

আর ফলো করার কি আছে? ঠিক করে ফুটবল খেলতে পারে না। বাংলাদেশ হারছে ভুটানের কাছে এগুলা রাশিয়ার কাছে। মাসতুতো ভাই।

তানভীর কে অসংখ্য ধন্যবাদ, এতো আন্তরিকতা নিয়ে পোস্ট দেয়ার জন্য।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানভীর এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনি পোস্ট দিলেন বলেই না একটু চিন্তার খোরাক পেলাম। আপনার লেখার মূল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছি। আমিও বিদেশে যাই দেখি সব দেশের সাথে তুলনা করতে ভালবাসি!

আমাদের সময়ে নিউজটা খুঁজে পেলাম না। একটা লিংক দিলে ভালো হতো। গ্লোবাল ওয়ার্মিং- ও একটা চিন্তার বিষয়। সমুদ্রের উচ্চতা বাড়তে থাকলে সেটা গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত ব্যাপার হবে।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

তানবীরা এর ছবি

http://amadershomoy.com/online/news.php?id=29063&sys=1

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

তানভীর এর ছবি

লিংকের জন্য ধন্যবাদ। এ লাইনে কিছুদিন কাজ করার কারণে এখন জানি যে এ ধরণের রিপোর্টের ওপর বেশী বিশ্বাস করতে হয় না। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর পক্ষে বা বিপক্ষের বেশীরভাগ গবেষণা/রিপোর্টই পলিটিক্যাল। বিশাল বাণিজ্য চলছে এখন এটা নিয়ে বাংলাদেশের মত দেশগুলোকে স্কেপগোট বানিয়ে (মানে গ্লোবাল ওয়ার্মিং হোক বা না হোক, ওরা বাংলাদেশের জন্য কিছুই করবে না, কিন্তু বাংলাদেশকে দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করবে)। নাসারজিম হ্যানসন যিনি আবার আল-গোরের বিজ্ঞান উপদেষ্টা - তার কাছ থেকে এ ধরণের রিপোর্ট আসাই স্বাভাবিক। বিজ্ঞানীরাও রাজনীতিকদের গোলাম হয়ে গেছে এখন। যতদূর মনে পড়ে এই হ্যানসনকে কিছুদিন আগে আমেরিকান সরকার শাসিয়েছিল গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে অতিরঞ্জনের কারণে। (আমেরিকান সরকার আবার গ্লোবাল ওয়ার্মিং কনসেপ্ট-এর ঘোর বিরোধী তাদের স্বার্থের কারণে। দুই দিকে দুই এক্সট্রিম, মাঝখানে আমরা খেলার পুতুল আর কি!)

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আর ফলো করার কি আছে? ঠিক করে ফুটবল খেলতে পারে না। বাংলাদেশ হারছে ভুটানের কাছে এগুলা রাশিয়ার কাছে। মাসতুতো ভাই।

এই লাইনটা দারূণ হইছে, একবারে বিপ্লবীয় দেঁতো হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

তানভীর এর ছবি

হ। তয় বাংলাদেশ ভুটানের লগে ড্র করছিল; ওই হারার মতই আর কি মন খারাপ

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ভাই তানভীর, মাঝেমধ্যে এই ধরনের লেখা লিখলে আমার মতো আনপড় মানুষরা কিছু জানা-বোঝার সুযোগ পায়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

তানভীর এর ছবি

উৎসাহ প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই। তবে এ ধরণের মন্তব্যে লজ্জাই পাই। কি লিখি না লিখি, ছাইপাশ সব, আপনার সিগনেচারটা এইখানে মানানসই- 'ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!' জঞ্জাল পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। হাসি

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

দিগন্ত এর ছবি

আমি একটাই ব্যাপার বুঝি এই জল/বন্যা/খরা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের এখনই কিছু একটা করা দরকার। সেটা ভুল করলেও চলবে, কারণ ভুল না করলে ঠিকটা কি বোঝার উপায় নেই। না করলে ঠিক-ভুল দুইই সমান দূরে থেকে যাবে বিপদের সময়ে। জল সমস্যা সারা পৃথিবীতেই গম্ভীর হতে চলেছে। অনিয়মিত মৌসুমী বৃষ্টিপাত ব্যাপারটাকে আরো ঘোরলো করে তুলবে ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তানভীর এর ছবি

ক্ষমতা নিয়েই কাড়াকাড়ি। বিজ্ঞজনদের এইসব নিয়ে ভাবার সময় কোথায়!

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ প্রযুক্তি অকার্যকর এবং প্রকৃতিবিরোধী বলে গণ্য হচ্ছে। আমাদের দেশে বাঁধের ব্যাপকতায় ডাচদেরই উতসাহ ছিল বেশি। এর বাইরে বিশ্বব্যাংক-এর ফ্যাপ কর্মসূচিতেও হাজার হাজার মাইল দীর্ঘ বাঁধ-স্লুইসগেট ইত্যাদি করা হয়। এমনকি উপকূলীয় অঞ্চলেও পোল্ডার ফেলে ফেলে সমুদ্রের পানি প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা হয়।
এসব যে কাঙ্খিত ফল দেয় নাই বছরওয়ারি বন্যা তার প্রমাণ। গোড়া থেকেই আমাদের নদীব্যবস্থাকে না বুঝেই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। আগের প্যারাডাইম ছিল যে, পানি ঢুকতে দেব না। এখনকার প্যারাডাইম হচ্ছে, পানি যদি ঢোকার মত হয় তাহলে ঢুকতে দিতে হবে। পানি আসা সমস্যা না, হাজার বছর ধরে এসেছে এবং তাতে অশেষ উপকার হয়েছে। সমস্যা হলো, পানি বেরতে না পারা। একের পর এক বাঁধ-সড়ক-সেতু ইত্যাদি করে বন্যার পানি এসে আর ছড়িয়ে পড়তে পারে না। ফলে বন্যা দীর্ঘায়ত হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে বাঁধ-পোল্ডার করায় সেখানে স্রোতের গতি কমে গেছে। ফলে পানিবাহিত পলি সমুদ্রে পড়ার আগেই নদীবক্ষে জমছে। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে নদীগর্ভ উঁচু হওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে।
বাংলাদেশ যেহেতু বড় বড় নদীর অববাহিকা অঞ্চল সেহেতু এখানে পানি আসবেই। কিন্তু আগে এত বাধা না থাকায় পানি সহজেই ছড়িয়ে পড়তো এবং অজস্র পথে নেমে যেত। এখন নেমে যাওয়ার পথে অসংখ্য প্রতিবন্ধক। এ ভুলটি হয় ব্রিটিশ আমলে। খেয়াল করবেন, এদেশের নদীগুলো উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত। আর রেল ও সড়কপথগুলো পূর্ব থেকে পশ্চিমে। ফলে অসংখ্য জায়গায় তারা পরস্পরকে কাটাকাটি করে। নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্থ হয় এবং তার স্বাভাবিক বিচলন বিকৃত হয়ে যায়। পাশাপাশি রাস্তা বা রেলের এপার ওপারে পানি চলাচলের জন্য যে হারে কালভার্ট থাকার কথা তা না রাখায় এপারে জলাবদ্ধতা আর ওপারে পানিশূণ্যতা দেখা যায়।
বাঁধ বা স্ট্রাকচারাল এডজাস্টমেন্টের সুবিধা হচ্ছে, এতে ঋণ করে ঘি খাওয়ার সুযোগ থাকে। নির্মাণ কাজে বিপুল দুর্নীতির সুযোগ থাকে এবং এই পদ্ধতি বিশ্বব্যাংক-প্রিয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ব্যর্থতার ওপর ড. স্বপন আদনানের বড় কাজ আছে (ইউপিএল প্রকাশনা)। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের নামে ব্যয়িত টাকার সিংহভাগই কনসালটেন্টরা এবং ঠিকাদার ও আমলা-রাজনীতিবিদরা নিয়ে গেছে এবং পানি ব্যবস্থার সর্বনাশ হয়েছে। ২০০০ সালে বিশ্ব বাঁধ কমিশনের তরফ থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পৃথিবীর অনেক কটি দেশের নানা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের বাঁধ নির্মাণে বিপুল ব্যয় এবং বিপুল অসুবিধার বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন।
দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণে এযাবত নির্মিত হয়েছে ৪৮২টিরও বেশি বড়-ছোট জলকাঠামো ও বাঁধ। আরো হচ্ছে। এদেশে জায়গায় জায়গায় বাঁধ-বিরোধী আন্দোলন হয়েছে এবং লোকজনের বাঁধ কেটে দেয়া এক পরিচিত ঘটনা। আশির দশকে বিশ্বব্যাংকের ফ্লাড এ্যাকশন প্লান ফ্যাপের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়, তা পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু ততদিনে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েছে। না হয়েছে বাঁধ না হয়েছে বাঁধের জঞ্জাল সরানো। আমরা কেবল অনুন্নয়নের শিকার নয় আমরা কু-উন্নয়নেরও শিকার।
বাংলাদেশে প্রবাহিত ৩০০টি নদীর কোনোটিরই উতপত্তিস্থল বাংলাদেশে নয়- ভারতে কিংবা নেপালে। নদীগুলির ভ্রমনপথের মাত্র ৭ শতাংশ এই দেশে। সুতরাং এ বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশ-নেপালের ত্রিদেশীয় সহযোগিতা মঞ্চ প্রতিষ্ঠা দরকার। কিন্তু ভারতের একতরফা আচরণের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক আদালতেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বা রায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। বড় প্রতিপক্ষের সঙ্গে সেটাই স্বাভাবিক।
আমার মনে হয়, ছোট কিন্তু মোক্ষম পানি-ব্যবস্থাপনা কাঠামো বেশি কাজের হবে বড় বাঁধের তুলনায়। আর আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য, জোয়ার-ভাটার গতি অব্যাহত রাখা এবং পানি নেমে যাওয়ার পরিসর সৃষ্টিতে উপকূলীয় বাঁধ বেশি কাজের হবার কথা নয়। পোল্ডারের কুফল তো দেখতেই পাচ্ছি। বেশি প্রয়োজন নদীর স্বাভাবিক গতিপথ এবং পানি নিষ্কাশন পথগুলোকে মুক্ত করা। নদীর দুই পাশে খাল ও কৃষি জমি থাকলে তা একদিকে পানি ধারণ করে রাখবে আবার উর্বরতাও বাড়াবে। নদীগুলোর নিয়মিত ডেজিং চাই। নদীপথগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ালে কেবলই সড়ক আর সেতু দিয়ে পানির প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করতে হয় না। আবার সাশ্রয়ও হয়।
নদী বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে আজ আমরা সেই নদী-হত্যা করে মার্তৃঘাতী হয়েছি। এর বিচার হওয়া দরকার।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

তানভীর এর ছবি

সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ ফারুক ওয়াসিফ। সবজান্তা নিকটা আসলে আপনারই হওয়া উচিত (আন্তরিকভাবেই বললাম)। সচলে এই নিক ভুল লোকে নিছে চোখ টিপি

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

কবীর এর ছবি

প্রথমেই মনে রাখা দরকার এখানে স্থায়ী সমাধান বলে কিছু নেই। ক্রমাগত নতুন নতুন টেকনোলজী এডাপ্ট করতে হবে। নিয়মিত নদী খনন আবশ্যক, সাথে দরকার দুই পাড় উঁচু করা ও তাতে সবুজ বেষ্টনী তৈরী করা। নতুবা খোয়াই এর বাঁধ ভেঙ্গে শায়েস্তাগঞ্জ শহর নিয়মিত ভেসে যাবার ঘটনা ঘটবে। বর্ষা মৌসুমে পাম্প করা জরুরী হলেও সমস্যা হচ্ছে পাম্প করার মত প্রয়োজনীয় পরিমান বিদ্যুত নেই। এক্ষেত্রে সোলার এনার্জীর সাহায্য নেয়া যেতে পারে। তবে বর্ষা মৌসুমে তা কতটুকু কাজে আসবে তা ভাবার বিষয়। নদীর পাশে জলাধার নির্মান করে অতিরিক্ত পানি সরানো যেতে পারে। তবে জলাধার নির্মান করার মত যথেষ্ঠ জমি নেই। ভূগর্ভস্থ পানি সব কাজে ব্যবহারের প্রবণতা না কমালে ওয়াটার টেবিলের ক্রম নিম্নমূখী প্রবণতা কমানো যাবে না। দেশ ক্রমাগত মরুকরণের দিকে যাবে। ইতিমধ্যে তৈরী হয়ে যাওয়া অপরিকল্পিত সড়ক ও রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে স্লুইসগেট, রেগুলেটর নির্মান করে অতিরিক্ত পানির ফ্রি-ফ্লোর সুযোগ তৈরী না করলে বন্যা ঠেকানো যাবে না।

আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রন, নদী শাসন, বাঁধ নির্মান ইত্যাদী প্রকল্পের বড় সীমাবদ্ধতা সমন্বিত পরিকল্পনার অভাব। বাংলাদেশে সত্তর ও আশির দশকে ডাচ আর সুইডিশ সরকারের করা প্রকল্পগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন তার সবই "স্বল্পকালীন বাস্তবায়ন প্রকল্প" -এর আওতায় করা। কোন মধ্য বা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা সেখানে নেই।

আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। তবে তা এলাকা ভেদে ভিন্ন হতে হবে।

বিল ডাকাতিয়া সংক্রান্ত প্রকল্প নিয়ে ডঃ স্বপন আদনানের রিপোর্টে সত্যের সাথে সাথে প্রতিযোগী কন্সালটেন্টদের এক হাত দেখে নেবার উহ্য প্রবণতা আছে। এতে অনেক সত্য চাপা পড়ে যায়, আবার অনেক অর্ধসত্যকে বড় করে দেখানো হয়। ১৯৯৫ সালে টিএসসিতে করা তাঁর ফ্যাপ বিষয়ক কর্মশালাটিতে উপস্থিত ছিলাম। তাতে দেখেছি জনগণকে নিজের মনমত বটীকা খাওয়ানোর প্রবণতা তাঁর মধ্যে আছে। তবু কিছু সত্য তুলে ধরার জন্য তাঁকে ধণ্যবাদ।

অতবড় কন্সালটেন্ট না হয়েও সচলায়তনের লেখক-পাঠকরা এবিষয়ে যে মতামত দিয়েছেন তা অনেক বেশী মূল্যবান। কারন, তাতে আন্তরিকতা আছে। কাউকে এক হাত দেখে নেবার উহ্য প্রবণতা নেই।

হিমু এর ছবি

শামীম ভাইয়ের এই পোস্টটি এ আলোচনায় কিছুটা প্রাসঙ্গিক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

তানভীর এর ছবি

কবীর সাহেব, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে এ নিয়ে লেখার অনুরোধ আমারো থাকল। বিস্তারিত লেখা বা কোন কিছুর সমাধান এখানে কেউ আশা করছে না; আপনার চিন্তা-ভাবনা, এ বিষয়ে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কী-এগুলোই না হয় আমাদের সাথে শেয়ার করুন। ফ্যাপ নিয়েও পোস্ট দিতে পারেন।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ কবীর, আপনি নিজে একটা লেখা দেন না।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

কবীর এর ছবি

প্রিয় ফারুক ওয়াসিফ, লেখার অনুরোধ করার জন্য ধণ্যবাদ। তবে এবিষয়ে বিস্তারিত লেখার মত যোগ্যতা আমার নেই। আমি বিশ্বাস করি সচলায়তনে এমন অনেক লেখক-পাঠক আছেন যাঁরা বাংলাদেশের ভিন্ন ভিন্ন এলাকার জন্য লাগসই এবং টেকসই সমাধান দেবার সামর্থ্য রাখেন। কিন্তু বিষয়টি যদি শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তবে তা নিয়ে বেশী কথা না বলাই ভালো। এতে শুধু আমাদের মনোকষ্টই বাড়বে।

শামীম এর ছবি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হিমু লিখেছেন:
শামীম ভাইয়ের এই পোস্টটি এ আলোচনায় কিছুটা প্রাসঙ্গিক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

পোস্ট পড়ে মন্তব্য ঝাড়ার আগেই চলে এসেছে।

বাংলাদেশের ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড-এ বাড়ীর ছাদের বৃষ্টির পানিকে স্টর্ম স্যূয়্যার কিংবা ভূ-গর্ভে দেয়ার জন্য সোক-পিট করতে বলা হয়েছে। (রেফারেন্স: BNBC 2006; 7.9.10, page: 11460)

বৃষ্টিপাতের অতিরিক্ত পানিকে এভাবে ভূগর্ভে ঢোকানো বেশ ভালো একটা পদ্ধতি। স্থানীয় জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান ছাড়াও এটা ভূ-গর্ভের পানিস্তরকে সমৃদ্ধ করবে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা আছে উদ্ধৃত ঐ পোস্টে।

এই ব্যাপারটা দেশের সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে দিলে নিঃসন্দেহে বৃষ্টির পানিতে হওয়া বন্যার প্রকোপ কমবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ভাটিতে অবস্থিত সাগর ছাড়াও অন্য একটা গন্তব্য (ভূ-গর্ভের পানিস্তর) উন্মুক্ত হওয়াতে দ্রুত পানি নেমে যাবে বলেই আমার মনে হয়।

এছাড়া পলি জমে জলপথের নাব্যতা হ্রাস রোধ করার জন্য পানি নিষ্কাশনের পদ্ধতিতে খোলা নালার পরিবর্তে consealed নালা ব্যবহার করতে হবে। ফলে ভূমিক্ষয়ের কারণে নদীতে পলি প্রবাহ কমে যাবে।

কনসিল্ড নালা অর্থ পানিকে সরাসরি প্রবাহিত না করে কোন ফিল্টার জাতীয় মাটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা। যেই নালা গুলো বাড়ীর/পাড়ার/এলাকার পানি নিষ্কাশিত করে সেগুলোর শেষমাথায় এবং কিছুদুর পর পর যদি জিওটেক্সটাইল + পাথর/ইট/বালুর সমন্বয়ে ফিল্টার দেয়াল তৈরী করা হয় তবে সেটা দিয়ে শুধু পানি বের হতে পারবে কিন্তু কোন পলি/মাটি যেতে পারবে না।

এতে সমস্যা হল যে ফিল্টার হওয়া বস্তুগুলো ওখানে জমা হয়ে পরবর্তী সময়ে প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করবে। তাই প্রতি বর্ষা মৌসুমের আগে এবং পরে (এবং বর্ষা মৌসুমে নির্দিষ্ট সময় পরপর) ওগুলোর ওপরে এবং উজানে জমা পলিগুলো কেটে ফেলতে হবে (মাটি বিক্রি একটা ভাল ব্যবসা) ।

বনায়নের পাশাপাশি এ ধরণের সমাধান একটি ব্যাপক ব্যাপার। সামাজিকভাবে সকলকে উদ্বুদ্ধ করা ছাড়া এটা সফল হবে না। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি খালে এরকম অর্ধভেদ্য দেয়াল দিয়ে কার্যকারীতা পরীক্ষা করা যেতে পারে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তানভীর এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম ভাই। আপনার আবর্জনা এক্সপেরিমেন্টের পাশাপাশি এই খালের এক্সপেরিমেন্টও শুরু করে দেন। প্রপোজাল দিলে কেউ না কেউ হয়তো ফান্ড দেবে। IWM - ইতাদি জায়গায় যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙ্গা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

Bangladeshi Talks এর ছবি

আমি বুঝি না......সরকারের কেন এখনো টনক নড়ছে না।

শিবু বসু এর ছবি

অনেক দেরি হয়ে গেল মনে হচ্ছে। তারপরও জল বিষয়ক যেকোন আলোচনায় আমার ব্যাপক আগ্রহ আছে। এর সম্পুরক বিষয় নিয়ে একাডেমিক পড়াশুনার চেস্টা করছি, তবে আমার আপাত আগ্রহ নগরায়ন কেন্দ্রিক। এই বিষয়ে যে কোন রেফারেন্স একান্ত দরকার, কেউ সাহায্য করতে পারলে আওয়াজ দিয়েন। একটা পোস্ট দেবার ইচ্ছা আছে, যদিও আগামী ২ মাসে তা অসম্ভব।
ধন্যবাদ লেখক ও সকল মন্তব্যকারিকে...............

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।