বাংলার পথে – ২, দিবর দীঘি এবং তার রহস্যে মোড়া স্তম্ভ

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: শনি, ২৩/০৩/২০১৩ - ৪:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

IMG_9983

দিবর দীঘির কথা প্রথম জেনেছিলাম কোন এক খবরের কাগজ পড়ে, বিশাল এক জলাশয়ের মাঝে দাড়িয়ে আছে পাথরের এক সুউচ্চ স্তম্ভ, কিন্তু কারা সেই স্তম্ভের নির্মাতা, কিভাবে জলের মাঝে তা স্থাপন করা হল তার কোন সঠিক ইতিহাস ব্যাখ্যা করা ছিল না শুক্রবারের সাময়িকীটিতে। তাই চক্ষু-কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন করতে কদিন আগে বেরিয়ে পড়লাম চার চাকায় চেপে, মানে কিনা দুটি মোটর সাইকেলে আমরা পাঁচ জন ( অধমের সাথে উদয়, তার ছাত্র রুহুল, ফটোসাংবাদিক ইকবাল ভাই, চিরতরুণ অভিযাত্রী তোজাম ভাই) সত্যিকারের কাক ভোরে রওনা দিয়েছিলাম রাজশাহী থেকে। সারা দিন জগদল বিহার, মঙ্গলবাড়ী শিব মন্দির, ভীমের পান্টিসহ প্রাচীন বাংলার অসাধারণ সব ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখে বিকেলে ধুলো ধূসরিত পথে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে আত্রাই নদী পার হয়ে রওনা দিলাম দিবর দীঘির উদ্দেশ্যে, নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় ( পত্নীতলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৬ কিমি দূরে) ।

IMG_0047

গোধূলি হতে সামান্য বাকি, দেবদারু ছায়া ইতস্তত পথের দুই ধারে, সর্বাঙ্গের বরেন্দ্রভূমির লাল ধুলো মেখে যখন দীঘির পারে পৌঁছালাম, বহু বছর আগে খবরের কাগজে দেখা ছবিটি যেন লাফ দিয়ে চোখের সামনে মূর্ত হয়ে উঠল- বেশ বড়সড় একটা জলাধারের মাঝখানে উঁচু এক স্তম্ভ।

IMG_9969

জানা যায় এখন প্রায় বর্গাকারের হলেও একসময়ে এই প্রাচীন জলাশয়টির প্রত্যেক বাহু প্রায় ১০০০ মিটার দীর্ঘ ছিল, কয়েকশ বছর আগে কোণ প্রাকৃতিক কারণে এর পাড়গুলো ধসে পড়ে উঁচু কাকচর বা বকচরে রূপান্তরিত হয়ে শত শত একর কৃষিভূমিতে পরিণত হয়েছে এবং বিশাল সেই জলাধার আজ পরিণত হয়েছে ক্ষুদ্র দীঘিতে।

তখনো মহামূল্যবান খানিকটা সময় অবশিষ্ট ছিল তাই জনপ্রতি ১০ টাকার নৌকাতে চেপে বসলাম রহস্যময় স্তম্ভটিকে কাছ থেকে দেখার আশায়। ১৮০৭/০৮ সালে ডক্টর ফ্রান্সিস বুকানন এই অনুপম শিলাস্তম্ভটি সরজমিনে অবলোকন করে এর দৈর্ঘ্য ৩০,৭৫ ফুট হবে বলে উল্লেখ করেন, তার মতে অখণ্ড গ্রানাইটে নির্মিত এই স্তম্ভ। বাংলার প্রত্নসম্পদ নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বিখ্যাত জন, স্যার আলেকজান্ডার ক্যানিংহ্যাম ১৮৭৯ সালে স্তম্ভটি পরিদর্শন করে বলেন জলের উপরে এটি ১০ ফুট উঁচু ছিল, তার মতে জলের নিচে, জলাশয়ের তলদেশ অবধি এর দৈর্ঘ্য আরও ১২ ফিট এবং মাটির নিচে এটি ৮-১২ ফিট প্রোথিত ছিল। কাজেই, সম্পূর্ণ স্তম্ভটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৩০ ফুট ( ৯,০৯ মিটার), তার মতেও এটি অখণ্ড গ্রানাইট পাথরে নির্মিত।)।

IMG_9960

দীঘিটির কলেবর যেহেতু অনেক হ্রাস পেয়েছে, মাত্র কয়েক মিনিটেই মাঝামাঝি পৌঁছানো গেল মাঝির দক্ষতায়, গভীরতা একেবারেই কম, স্তম্ভের কাছে লগি দিয়ে মেপে দেখা গেল জল ১ মিটারের সামান্য বেশী গভীর, তবে নিচে কাদার রাজ্য।

বছর কয়েক আগে দীঘির জল নিষ্কাশন করে পুনঃখনন করে স্তম্ভটির যে সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া গেছে তা নিচের ছবিটির মত

IMG_4180

( ছবিটি নেওয়া হয়েছে আবুল কালাম মোহাম্মদ জাকারিয়ার বাঙলাদেশের প্রত্নসম্পদ বই থেকে, লেখার কিছু তথ্যও)

স্যার কানিংহ্যামের বর্ণনামতে স্তম্ভটিতে মোট ৯টি কোণ এবং এক কোণ থেকে অন্য কোণের দূরত্ব প্রায় ৩০ সেমি( ১২ ইঞ্চি), স্তম্ভের ঊর্ধ্বাংশে আছে পর পর ৩টি বলয়াকারের স্ফীত রেখা-অলঙ্করণ এবং তার উপরে আছে আমলকের অলঙ্করণ এবং শীর্ষদেশে আছে স্ফীতরেখার উপরে আমলকের অলঙ্করণের উপরে আছে উষ্ণীষ জাতীয় অলঙ্করণ। অনেক হিসেব কষে তিনি বলে গেছেন যে এ স্তম্ভের ব্যস হবে ৭৩ সেমি ( ২৯ ইঞ্চি)।

IMG_9981

স্তম্ভটির নিম্নদেশ খুবই দক্ষতার সাথে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি এবং স্থাপন করা হয়েছিল বলে এত শতাব্দী পরেও তা বিন্দুমাত্র হেলেনি এবং বরাবরের মত ঋজু অবস্থায়ই জলাশয়ের মাঝে দন্ডায়মান। ।

IMG_9996

স্তম্ভটির মাথায় যে বিহঙ্গকুল প্রায়শই বিশ্রামাগার এবং শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করে তার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেল পাথরের গায়ে সাদাটে শুকনো পদার্থ দেখে, এবং সেই দাবীকে আরও জোরালো করতেই যেন আমাদের চোখের সামনে সেই সিংহাসন অধিকার করে বসল এক বড় পানকৌড়ি ( Great Cormorant), তার পরপরই শুরু করল বিজয় সঙ্গীত গাওয়া!

IMG_0021

কিন্তু সুখ বেশীক্ষণ সয়ল না, সেই রণডমরু শুনে আরেক বড় পানকৌড়ি এসে প্রথম আগন্তককে উড়িয়ে দিয়ে জাকিয়ে বসল প্রস্তর আসনে।

IMG_0031

তখন আমরা আবার তীরের পথে, সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছিল বরেন্দ্রভূমির চাষাবাদের অনুপম বৈশিষ্ট্য – ধাপে ধাপে তৈরি কৃষিক্ষেত্র। যা দেখে এতদিন মনে হত ফিলিপাইন বা পেরুর কোন শস্যক্ষেত্রে তা দেখলাম পিতৃভূমিতে! ( এই নিয়ে পরে বড় কলেবরে লেখা আসিতেছে)
IMG_0039

কিন্তু কারা তৈরি করেছিল এই স্তম্ভ?

অনেকেই দীবর দীঘিকে ধীবর দিঘি বলে উল্লেখ করেন, এবং ধীবর অর্থাৎ কৈবর্ত বা মৎস্যজীবীদের নৃপতির সাথে এই স্তম্ভের ঐতিহাসিক যোগাযোগ আছে বলে মনে করে থাকেন, কিন্তু প্রমাণ সাপেক্ষে বলা যায় সেইসব ধারণা কেবলই গুজবমাত্র।

স্তম্ভটি সম্পূর্ণ গ্রানাইট পাথরে নির্মিত, এবং অবশ্যই নির্মাণের আগে আদি অবস্থায় এর ওজন বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশী ছিল। উপমহাদেশে গ্রানাইট পাথরের প্রাপ্তিস্থান সাধারণত মধ্য ও দক্ষিণ ভারতে। সেখান থেকে এত বড় আকৃতির পাথর স্থানীয় নৃপতির পক্ষে আনা আদৌ সম্ভবপর বলে মনেও হয় না। এবং কেবল কৈবর্ত নৃপতিরাই নয়, প্রব্ল ক্ষমতাশালী পাল বংশীয় রাজারাও তাদের প্রস্তরকর্ম সাধারণত বেলেপাথর দিয়েই করেছিলেন বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। এইসব বিচার করে স্যার কানিংহ্যাম সেই আমলেই বলেছিলেন- no single shaft of such a large stone as 30 feet in length and 3.5 feet in diameter has not yet been found of the later date than the time of Asoka and it seems to me quite possible that this may be one of the Asokas monoliths.

আমরা নতুন কোন তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত ধরে নিতে পারি এত বিরাট দিঘি খনন এবং দীঘির মাঝে সুবৃহৎ স্তম্ভ স্থাপন বিশেষ বিজয়কে চিরস্মরণীয় করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু কোন বিজয় উপলক্ষে এত বড় কীর্তি নির্মাণ করা হয়েছিল এবং কোথা থেকে এত বড় গ্রানাইট পাথর আনা হয়েছিল সে প্রশ্ন খুবই যুক্তিসঙ্গত।

IMG_0046

খুব সম্ভব দীঘি এবং স্তম্ভের আদিনামটি হারিয়ে যাওয়ার ফলে অনেক অনেক পরে এর নামকরণ করা হয়েছিল কিংবদন্তী ভিত্তিক। কী অপূর্ব বাংলার ইতিহাস, কত রহস্যের হাতছানি এর পরতে পরতে, চলার বাঁকে বাঁকে, ভাবতেই শিহরণ জাগে মনে, প্রাণে। সেই পুলক জাগা শিহরণ নিয়েই সম্ভবত সম্রাট অশোকের আমলে নির্মিত রহস্যময় স্তম্ভের দিকে শ্রদ্ধা ভরা দৃষ্টি বোলানোর পরপরই শুরু হল নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গোধূলিলগ্নে পথচলা।

বাংলার পথে- ১ মথুরাপুরের দেউল


মন্তব্য

MD. MUSTAFIZUR RAHMAN এর ছবি

ভালো লাগলো। চমৎকার ।

তারেক অণু এর ছবি
নীলম এর ছবি

দীবর দীঘিতে গিয়েছি অনেক ছোটবেলায়। বাবা-মায়ের সাথে ঘুরে বেড়াই তখন। সেই বয়সে এত বিশাল স্তম্ভ দেখে খুব অবাক হয়ে ছিলাম। মনে আছে ওটা একবার ছুঁয়ে দেখার জন্য অনেক বিরক্ত করেছিলাম বাবা-মা'কে!

যাই হোক, সম্ভবত কোন একটা লোককথা প্রচলিত ছিল স্তম্ভের মাথায় সোনার তৈরী একটা প্রদীপ থাকা বিষয়ক। আপনি শুনেছেন কিনা জানি না। আমি এত ছোটবেলায় শুনেছি যে নিজেরও ঠিকঠাক মনে নেই।

তারেক অণু এর ছবি

সবখানেই কিন্তু সোনাদানা নিয়ে এমন গুজব প্রচলিত আছে আমাদের অঞ্চলে!

কিষান এর ছবি

পরের লেখা তাড়াতাড়ি দিয়েন চলুক

তারেক অণু এর ছবি

অবশ্যই

হাসিব এর ছবি

এইটা অশোক স্তম্ভ না এইটা নিশ্চিত?

তারেক অণু এর ছবি

মানে? চিন্তিত

হাসিব এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

হুমম, অশোকের সময়ের স্তম্ভ বলা হচ্ছিল, দেখা যাক আরো কোন তথ্য মেলে কিনা

স্যাম এর ছবি

বাহ দারুন! দীবর দীঘিতে একটা স্তম্ভ আছে জানতাম শুধু - এবার আরো অনেক কিছু জানলাম । ধন্যবাদ।
কিন্তু রহস্যটা কি বলেনতো - পাখি, অন্য প্রানীকুল আর প্রকৃতি আপ্নারে এত বার বার অসাধারণ সব পোজ দেয় কিভাবে ?
পানকৌড়ির দুটো ছবিই সুন্দর ।

তারেক অণু এর ছবি

ওরা আমারে ভালবাসে, আমিও ওদের ভালবাসি লইজ্জা লাগে

আলাম সাব্বির এর ছবি

চমৎকার লিখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো । আরও নতুন লিখা চাই।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

অসম্ভব ভাল

তারেক অণু এর ছবি
আচার্য এর ছবি

"কত অজানারে জানাইলে তুমি....."
চমৎকার, পুরো পোস্টটাই! দারুণ লিখছেন!

============================
কত আর রবে দেশ রাহু গ্রাস কবলে?
সমূলে উপড়ে ফেলি দূর্নীতি সবলে।

তারেক অণু এর ছবি

চারপাশে যে কতই অজানা!

কৌস্তুভ এর ছবি

হাইলি সাসপিশাস!

তারেক অণু এর ছবি
কাজি মামুন এর ছবি

অসাধারণ, অণুদা, সত্যি অসাধারণ! অতি চমৎকারভাবে তুলে এনেছেন আমাদের দেশের এক না জানা প্রত্ন-সম্পদকে।

দুইটি প্রশ্ন:
১। বুকানন কি ৩,০৭৫ ফুট মেপেছিলেন এর দৈর্ঘ্য? নাকি ৩০.৭৫ ফুট? ক্যানিংহাম তো ৩০ ফুট বলেছেন।
২। এটি সংরক্ষণে প্রত্নদপ্তর কি কিছু করেছে? নাকি সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় আছে এটি?

তারেক অণু এর ছবি

৩০.৭৫ ফুটই তো!

তাদের সাইনবোর্ড আছে অন্তত, বাকীটা বলতে পারছি না

মন মাঝি এর ছবি

বাংলার ওবেলিস্ক মনে হচ্ছে!

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

চলুক

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

হুম,

রু  এর ছবি

অসাধারণ! এখনো দেশে?

তারেক অণু এর ছবি

আপাতত তুষার গলার অপেক্ষায় আছি হেলসিংকিতে

ব্যঙের ছাতা এর ছবি

এতদিন আপনার অভাব বোধ করছিলাম, আজ দুই পর্ব একসাথে পড়লাম।
পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম নিয়ে আচি আগামী পর্বগুলোর জন্য

তারেক অণু এর ছবি

আসিতেছে

সাত্যকি এর ছবি

দারুণ অণু। কত রহস্য এই বাংলায় !

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই

রংতুলি এর ছবি

কত রহস্য যে ছড়ানো আমার দেশটাতে! লেখা ভালো লাগলো, এজ ইউজুয়াল। চলুক

তারেক অণু এর ছবি

কত রহস্যের কিনার এখনো হইল না!

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অনেক কিছু জানা হলো। আর 'সাপাহর' নামটা পড়ে স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্ত হলাম। ছাত্রজীবনে আমার দুজন বন্ধু ছিল সাপাহারের। খুব শীঘ্রই যাবার ইচ্ছা রইল। চলুক

তারেক অণু এর ছবি
ধুম্রজাল এর ছবি

খুবই চমৎকার লেখনী।
ছোটবেলায় মেহরাব আলী( দিনাজপুর) এর লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পেতাম।
নিজে দেখে এসে লিখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

শুভেচ্ছা

অতিথি লেখক এর ছবি

সামহোয়ারইনে ব্লগার আকাশমাহমুদ০০৭ এর একটি লেখা থেকে:

দিবর দীঘির মধ্যস্থিত জয়স্তম্ভ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ৩টি পৃথক মত পাওয়া যায় :
 এক: দ্বিতীয় মহিপাল কে পরাজিত ও হত্যা করার সাফল্য কে স্মরণীয় করে রাখতে দিব্যক এ জয় স্তম্ভ নির্মান করেন ।দীনেশ চন্দ্র সেন “বৃহতৎ বঙ্গ” গ্রন্থে লিখেছেন – “কৈবর্তরাজ ভীমের খুল্ল পিতামহ দিব্বোক দ্বিতীয় মহিপাল কে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত করিয়া বিজয়োল্লাসে যে স্তম্ভ উথ্থাপিত করিয়াছিলেন তাহা এখনও রাজশাহী জেলার এক দীঘির উপরে মস্তক উত্তোলন করিয়া বিদ্যমান”। উল্লেখ্য পূর্বে নওগাঁ রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 দুই: দিব্যকের রাজত্ব কালে পাল যুবরাজ রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের চেষ্টা করে দিব্যক এর নিকট পরাজিত হন।দিব্যক এ সাফল্যের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে দীঘি মধ্যস্থিত এ স্তম্ভ নির্মান করেন।সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতের পরিচিতি পর্বে অনুবাদক বিজয় স্তম্ভ নির্মানের করন সম্পর্কে নিম্নলিখিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন : “ পূর্ববঙ্গের ভোজ বর্মার তাম্রশাসন হইতে জানা যায় দিব্যের বীরত্ব খ্যাতি তৎকালে উপমার বিষয় ছিল। অত্যল্পকালই বরেন্দ্রী দিব্যের রক্ষণাধীন থাকে। পূর্বোদ্ধৃত মনহলি লিপির ১৪শ শ্লোক ও রামচিরতের ১/২৯ শ্লোক একত্রে পাঠ করিলে জানা যায় দিব্যের রাজত্বকালে রামপাল (১০৮২ - ১১২৪) একবার পিতৃরাজ্য উদ্ধারে সচেষ্ট হইয়া ব্যর্থকাম হন। দিনাজপুর জেলার ( বর্তমানে নওগাঁ) দিবর দীঘি নামক জলাশয় ও তন্মধ্যস্থিত শিলাস্তম্ভ আজিও তাহার স্মৃতি রক্ষা করিতেছে”।

 তিন:ভীম এ স্তম্ভটি নির্মান করেন এবং পিতৃব্য স্মৃতি রক্ষার্থে স্তম্ভটি তাঁর নামে উৎসর্গ করেন। অধ্যাপক শিরিন আখতারের বিবরনে তার সমর্থন পাওয়া যায়। যে উদ্দেশ্যেই এ স্তম্ভটি নির্মিত হোক না কেন, এই দিবর দীঘি নামক জলাশয় ও তন্মধ্যস্থিত শিলাস্তম্ভটি দিব্যকের স্মৃতি অম্লান করে রেখেছে।

গোরা

তারেক অণু এর ছবি

এগুলো জনপ্রিয় মত সন্দেহ নাই, কিন্তু সত্য জানাটা বেশ মুশকিল।

অতিথি লেখক এর ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ফোকলোর ডেপার্টপেন্ট এর রিসার্স জন্য কিন্তু গোল্ড মাইন।নওগাঁতে কম বেশি ২০ এর অধিক বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্হান আছে (আমার লিস্ট মোতাবেক), তার অনেক গুলি এখনও আলোতে সেইভাবে আসেনি। আপনার প্রচেষ্টা খুবই আশা জাগানিয়া।

তারেক অণু এর ছবি
মাসুম আহমদ এর ছবি

দারুণ পোষ্ট
-------
মাসুম

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

খুব শীঘ্রই যাওয়ার ইচ্ছা আছে

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

জেনে আনন্দিত হলাম। ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।