বিজ্ঞাপনের গল্প

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ২৬/০২/২০১০ - ১২:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিজ্ঞাপনটা অনেকটা এই রকম।

একদল বিদেশি নারী পুরুষ বাংলাদেশি পোষাকে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাচ্ছেন। সবাই নিজের ভাষায় ধন্যবাদ জানালেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে, সবশেষে একজন পুরুষ ইংরেজীতে বললেন, থ্যাঙ্ক ইউ বাংলাদেশ।

এরপর গায়েবি আওয়াজ, নিজের ভাষায় কথা বলুন, একটেল থেকে পাঁচটি FnF নম্বরে, প্রতি মিনিট মাত্র ৬৮ পয়সা।

মোবাইল কোম্পানীগুলো অনেক কিছুতে স্পন্সর করে, ওরা জব তৈরি করছে, ছাত্রদের র‌্যাগ ডে পয়সা দিচ্ছে, ক্রিকেট খেলাতে পয়সা দিচ্ছে, সুন্দর রুচিশীল মোড়কে নিজের জিনিস বিক্রি। কিন্তু ইতিহাস নিয়ে ওদের বিজ্ঞাপনগুলোকে অশ্লীল বলব। আমরা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি এগুলো। কিন্তু যদি উপরের বিজ্ঞাপনটা অন্য কোন প্রোডাক্টের হত...আসুন নীচে একই বিজ্ঞাপনের কাল্পনিক অন্য রূপ দেখি।

একদল বিদেশি নারী পুরুষ বাংলাদেশি পোষাকে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাচ্ছেন। সবাই নিজের ভাষায় ধন্যবাদ জানালেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে, সবশেষে একজন পুরুষ ইংরেজীতে বললেন, থ্যাঙ্ক ইউ বাংলাদেশ।

এরপর গায়েবি আওয়াজ...

প্রাণ ম্যাংগো বার ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র দুই টাকা প্যাকেট।

অথবা

প্যান্থার কনডম, অর্ধেকদামে এই ভাষার মাসে।

অথবা

স্মার্ট মেয়েদের পছন্দ সেনোরা, ২০% কমে শুধু এই মাসে।

অথবা

শহীদ দিবসের প্রথম প্রহরে, আলমের এক নম্বর পঁচা সাবান দিয়ে ধোয়া কাপড় পরুন।

অথবা

মেদ ভুঁড়ি কি করি? আসুন শুকিয়ে যাই এই ভাষার মাসেই।

উপরের যেকোন একটা বিজ্ঞাপন আসলেই কিন্তু মারামারি লেগে যেত। শুধু মোবাইল কোম্পানীগুলোর দেশ ও জাতির ইতিহাস নিয়ে বিজ্ঞাপন আমাদের চোখে লাগে না, কিংবা চোখে সয়ে গেছে ওদের বেনিয়াপনা। শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস সবগুলো জাতীয় দিবসে ওরা শ্রদ্ধা জানাবে, এর পরপরই বেচবে ওদের কলিং প্ল্যান।

কেউ ওদের বলবে যে, কিছু কিছু জিনিস বিজ্ঞাপনের বাইরে থাকা উচিত, একটা জাতির ইতিহাস তার সবচেয়ে মর্যাদার জিনিস, এটা দেখিয়ে পণ্য না বেচলেই ভালো।

###


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের উপরে রেগুলেশন নেই এখনো। এটা আনা জরুরী হয়ে পড়ছে।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

এইসব কর্পোরেট বেনিয়ারা তাদের হাই-ফাই কর্পোরেট কালচার নিয়ে থাকলেই তো পারে। আমাদের নিজস্বতায় হাত দেয় কেনো?? আমরা হাভাতে বাঙ্গালীরা তো আর ওদের নাইটক্লাবের বেলেল্লা ডিস্কোতে ওদের সাথে ঘাপলিং করতে যাই না !!

এই শালারা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চেয়েও খারাপ।

===============================================
রাজাকার ইস্যুতে
'মানবতা' মুছে ফেলো
টয়লেট টিস্যুতে
(আকতার আহমেদ)

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

অতিথি লেখক এর ছবি

এরা হল আধুনিক যুগের ইস্ট বাংলাদেশ কোম্পানী। যা ইচ্ছা তাই করে,আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি।
-স্নিগ্ধা করবী

তিথীডোর এর ছবি

"মার জন্য এবার একটা মোবাইল নিয়ে যাচ্ছি", ইমোশনাল টাচ দিয়ে গ্রামীণফোন মনোযোগ আকর্ষণ করে দর্শকদের.. প্রথমবারের মতো!
পরবর্তীতে বাংলালিংক পরিবর্তনের ধুয়া তোলে...
কিন্তু এখন ব্যাপারটা যথেচ্ছাচারে দাঁড়িয়েছে রেগে টং

দেশপ্রেমের ভুয়া মোড়কে বানিজ্যের নোংরা বিস্তার বন্ধ করা চাই শিগগিরই!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

"মার জন্য এবার একটা মোবাইল নিয়ে যাচ্ছি", ইমোশনাল টাচ দিয়ে গ্রামীণফোন মনোযোগ আকর্ষণ করে দর্শকদের.. প্রথমবারের মতো!
পরবর্তীতে বাংলালিংক পরিবর্তনের ধুয়া তোলে...
কিন্তু এখন ব্যাপারটা যথেচ্ছাচারে দাঁড়িয়েছে রেগে টং

দেশপ্রেমের ভুয়া মোড়কে বানিজ্যের নোংরা বিস্তার বন্ধ করা চাই শিগগিরই!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

অটঃ এবার তোমার নেট লাইন বদলানো উচিৎ খাইছে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তিথীডোর এর ছবি

ইয়ে, মানে...
তা ঠিক!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হোহোহোহোহোহো...

_________________________________________

সেরিওজা

তিথীডোর এর ছবি

রেগে টং

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

রেগে টং

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হাহাহা...

মজাটা ধরতে পেরে হেব্বী মজা লাগতেসে...

তিথীডোর্বস !!!!

_________________________________________

সেরিওজা

হিমু এর ছবি

আমার মনে হয়, আমাদের আসলে অন্যভাবে প্রতিবাদ জানানো শুরু করা উচিত। জিএসএম অপারেটররা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটা বিরাট পরিবর্তন এনেছে সত্য, আমরা এবং আমাদের ভাইবেরাদাররা তাদের কল্যাণে চাকরিবাকর পাই এবং খেয়েপরে বাঁচি সত্য, দেশ তাদের কাছ থেকে বড় রাজস্ব পায় সত্য, কিন্তু এগুলো তারা দয়া করে আমাদের দেয় না। তারা আমাদের জব দিতে বাধ্য, বিদেশ থেকে কর্মী পকেটে করে তারা নিয়ে আসতে পারবে না। তারা রাজস্বও দিতে বাধ্য, এটা তারা বাবার গাঁইট থেকে ভিক্ষা দিচ্ছে না আমাদেরে। এবং তারা আমাদের জাতীয় শ্রদ্ধা ও মর্যাদার প্রতীকগুলোকে যথোপযুক্ত শ্রদ্ধা ও মর্যাদা দেখাতে বাধ্য।

আমার মনে হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের হাতে একটা অপশন আছে, সেটা হচ্ছে এরকম অশালীন ব্র্যান্ডিং ও বিজ্ঞাপন কার্যক্রম চলতে থাকলে মোবাইল টক টাইম রেশনিং করা। তারা শহীদ দিবসে ইতিহাস বিকৃতি করছে, আগামী এক মাস আমরা তাদের সার্ভিস ব্যবহার থেকে বিরত থাকবো বা কম কথা বলবো। অন্য কোনো সার্ভিস ব্যবহার করবো। যে ঘাপলা করবে, তাকেই বর্জন করবো।

এরকম মৌন প্রত্যুত্তর যখন কেবল এদের রেভিনিউতে আঁচড় কাটবে, কেবল তখনই তারা শিক্ষা পাবে। তার আগে নয়।

আমাদের স্লোগান হওয়া উচিত, আমার টাকা আমার ফোন, আমার কথা আগে শোন।

প্রশ্ন একটাই, সেটা করতে পারি কি না আমরা।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

উত্তম প্রস্তাব। তবে এটা কার্যকর যারা করবে, তাদের বহুলাংশের কাছে এফএনএফের ১০ পয়সা বাঁচানো ভাষাকে পোঁ* মারা থেকে রক্ষার চেয়ে বেশি জরুরি।

আফসোস লাগে এটাই, যখন পোলাপাইন এই সব ফাজলামিকে মাথায় তুলে নাচে!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

হিমু এর ছবি

এই ১০ পয়সা ছাড়কে তো স্বাগত জানাই। কিন্তু সেটা উপস্থাপনের একটা লছম তো আছে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দারুন পোস্ট তাসনীম ভাই, আমার ধারনা বাংরেজি পোলাপাইন খায় বলে অ্যাডগুলোকে এভাবে করা হয়, অ্যাডটা দেখি নাই, তবে বর্ননা শুনেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। বাংরেজি নিয়ে আগেও অনেক কথা হয়েছে, তাই সেই পথে আর পা বাড়ালাম না, আপনার পরের উপমাগুলো না দিলেও যথেষ্ট ছিল আমার জন্যে অ্যাডটা, এগুলা বানায় কে? দেশি কেউ নাকি বাইরে থেকে হয়ে আসে?

তবে, এদের প্রতিবাদ না করা পর্যন্ত এরা এভাবেই চালাতে থাকবে, কিন্তু কোন কার্যকরী কিছু ভেবে পেলাম না, যেটা সহজে সবাই পালন করে এদের শিক্ষা দিতে পারে।

আমাদের একটা "জন স্টুয়ার্ট" দরকার
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটেলের এই এডটা এইমাত্র দেখলাম চ্যানেল আইতে।

আমাদের দেশের টিভিগুলোতে কি এমন কোনো উপস্থাপক নেই যারা একটা অনুষ্ঠান করবে, সেখানে এইসব বেনিয়াদের আছোলা বাঁশটা দেয়া হবে। আমাদের চোখের পরে সেঁটে থাকা ঠুলিটা সরিয়ে দিতে পারবে হাস্যরসের মাধ্যমে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

আপনার আর সাইফের সাথে একমত। জন স্টুয়্যার্টের মত কেউ থাকলে আসলেই ভালো হত।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বাউলিয়ানা এর ছবি

হানিফ সংকেত ইত্যাদিতে অনেক স্যাটায়ার উপস্থাপন করেন।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে সেগুলো খালি রস-কৌতুক হিসেবেই মানুষ গ্রহন করে, তারপর ভুলে যায়।

দুর্দান্ত এর ছবি

আমার বক্তব্যের অনেকটাই হিমুর মন্তব্যে এসে গেছে।
আমি বলতে চাই, কর্পোরেটের কাজ কর্পোরেট করে যাচ্ছে। নীতিমালা বা তার প্রয়োগ নেই, তাই তার সুযোগ নিচ্ছে, যেমন আমরা সবাই নেই, ট্যাক্স ফাঁকি দেই, বাসায় অন্যের শিশুকে দিয়ে ঘর মোছাই, আরেকজন মানুষের টানা গাড়িতে করে মাইলের পর মাইল হাওয়া খেয়ে আসি। কর্পোরেটের গুষ্টি উদ্ধার করে কিসসুটি হবে না গো।
আমাদেরকেই বদলে যেতে হবে।

তাসনীম এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আমার মতে বিজ্ঞাপনের স্কোপ কতদূর পর্যন্ত হওয়া উচিত সেটার একটা সরকারী নীতিমালা থাকা উচিত, খুব সহজেই জাতীয় দিবসগুলো বিজ্ঞাপনের কবলমুক্ত রাখা যায়। আমি যতটুকু দেখেছি তাতে মনে হয় অল্প কিছু কোম্পানী ছাড়া আর কেউ ইতিহাস নিয়ে বেসাতি করছে না।

এদেরকে টাইট দেওয়ার কাজটা খুব কঠিন হবে কি?

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমি তো বিজ্ঞাপনটার কোনো মানেই বুঝলাম না!
কী বলতে চাইল, সেটা তো স্পষ্ট হল না। বড়ই সস্তা বিজ্ঞাপন। কয়টা বিদেশি মানুষ সংগ্রহ করে শহীদ মিনারের সামনে দাঁড় করিয়ে মনে হয় ভিজ্যুয়ালি একটা ধাক্কা লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
দেশাত্ববোধ তো বহু দূরের কথা, বিজ্ঞাপন হিসেবেই তো এটা অতি নিম্ন মানের! আমি বিজ্ঞাপন প্রশিক্ষণ স্কুলের বুড়ো টিচার হলে এই ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার যোগানদাতা ক্রিয়েটিভের (!) বাড়ি গিয়ে বেতিয়ে পাছা লাল করে দিয়ে আসতাম।
প্রসঙ্গত জানাই, বিজ্ঞাপনের জগতে আমি ভ্রমণ করে এসেছি বছর তিনেক, এই তো সেদিন ছাড়লাম। আর ফিরে যাবার ইচ্ছে নেই।
বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানে একটা টেলিকম কোম্পানিকে তেলের খনি সমতুল্য মূল্য দেয়া হয়। একটা টেলিকমের কাজ পাওয়া মানে 'এইবার কপাল খুলল রে' ব্যাপারস্যাপার! দৌড়াদৌড়ি, হইচই।
একটেল-এর অনেক অনেক প্রেস অ্যাড আমার করা, অনেক বস্তাপচা সস্তা লাইন পাবেন সেখানে। কারণটা কী? একটেল ওটাই চায়। তাদের সংযোগ ব্যবহারকারীদের কাছে তারা পৌঁছাতে চায় রগরগেভাবেই। সেই নির্দেশ দিয়েই ব্যাটারা কাজ পাঠায় আমাদের কাছে। ঐ রগরগে লাইন লিখে না দিলে ঐ কাজ চলে যাবে আবার প্রতিযোগী আরেক বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানের হাতে।
তারপরও আমি প্রাণান্ত করেছি এদেরকে ভালো কিছু খাওয়াতে। এরা খাবে না।
এদের টার্গেট সেইসব মোবাইলপ্রেমী পোলাপান, যারা কোনো কাজকাম করে না, সারাদিন খালি সেলফোন টেপাটেপি করে, কম পয়সায় কথা বলে দুনিয়া জয়ের আনন্দ উপভোগ করে... এরাই তো তাদের আসল কাস্টমার!
ঘুরেফিরে কিন্তু সব টেলিকমেই একই ব্যাপার চলছে!
আর দেশাত্ববোধ নিয়ে এদের বিজ্ঞাপন বানানো একটা হাস্যকর ব্যাপার হয়ে উঠছে। আপনার কমবেশি সবাই নিশ্চয় পাগলা দাশু পড়েছেন? একটা গল্প ছিল না এরকম, কবিতার ব্যামো বা এই টাইপ? স্কুলে ইন্সপেক্টর আসবে, একবার কে যেন ইন্সপেক্টরকে কবিতা পড়ে শুনিয়ে সোনার কলম উপহার পেয়েছিল, তাই এবারও সবাই যে যার কবিতা পড়ে শোনানোর জন্য অপেক্ষা করছে, প্রত্যেকের পকেটে খসখস করছে কাগজ, কিন্তু শ্যামলাল ভালো কবিতা লেখে, অন্য কারো আগেই সে যদি কবিতা পড়ে সোনার কলম নিয়ে নেয়? সেই ভয়ে ইন্সপেক্টর ঘরে ঢোকামাত্র সবাই তারস্বরে যে যার কবিতা নিয়ে চেঁচিয়ে উঠল, ইন্সপেক্টর তো মাথা ঘুরে বসে পড়লেন! দোতলার ছাদে একটা বেড়াল ঘুমুচ্ছিল, সেটা হাত-পা ছুঁড়ে ধড়ফড় করে ছাদ থেকে নিচে পড়ে গেল!
বাংলাদেশের কোনো একটা বিশেষ দিবস এলেই টেলিকমগুলোর মধ্যে একটা হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সেরকম। কে কার আগে কবিতা পাঠ করে ইন্সপেক্টরের সোনার কলম জিতে নেবে? সারাবছর ৫৩ পয়সা বা ৪১ পয়সা মিনিটের মারামারি করে পরে সেই ভাঙ্গা গলায় কি আর দেশের গান আসে?
আর এর মাঝখানে আমাদের অবস্থা হয়েছে সেই দোতলার ছাদ থেকে হাত-পা ছুঁড়ে ধড়ফড় করে পড়ে যাওয়া বেড়ালটার মতো!

এই বিষয়ক নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত। সরকার চাইলেই পারে। মনে রাখা ভালো, ডিজুসের অনেক বিলবোর্ড কিন্তু অপসংস্কৃতির অভিযোগে নামিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিল গ্রামীণ ফোন। অল্প কদিন আগেই এক ড্রিঙ্কসের বিশাল বিশাল বিলবোর্ডে ড্রিঙ্কস ধরা হাত বাড়িয়ে থাকা এক রূপসীর উন্মুক্ত বগল ঢাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
তাহলে এখানে সমস্যা কোথায়?
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

হিমু এর ছবি
বিলীন অরণ্য [অতিথি] এর ছবি

খুবই ভালো বলেছেন। বিজ্ঞাপনের শালীনতা থাকুক এটাই প্রত্যাশা।

তাসনীম এর ছবি

মৃদুল ভাই মন্তব্যে চলুক...

ভেতরের ব্যাপারটা না জানলে বুঝতে পারতাম না, সস্তা দেশপ্রেমের শানে নূযূল...বিজ্ঞাপনটার মানে আমিও বুঝি নাই, এই থিমে আলমের পঁচা সাবান থেকে শুরু করে আমিন জুয়েলার্স পর্যন্ত এড বানাতে পারে, শুধু লাস্টের কথা গুলো বদলে দিলেই হয়।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

মৃদুল দা, উত্তম মন্তব্য। কৌতুহলও বাড়লো - কি ধরণের রগরগে লাইন চায় একটেল ওদের বিজ্ঞাপনে? দুই একটা উদাহরণ দিয়েন।

আর ঢাকা গেসিলাম, কিন্তু বগল দেখলাম না। দেঁতো হাসি
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

তারাপ কোয়াস  [অতিথি] এর ছবি

চমৎকার পোষ্ট সেইসাথে হিমু এবং মৃদুল আহমেদ এর মন্তব্য গুরু গুরু গুরু গুরু

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

উচিৎ কথা বলছেন দাদা। আপনের এই পোস্ট গ্রুপে লিংকায়িত করলাম।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

একলব্য [অতিথি] এর ছবি

বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানে একটা টেলিকম কোম্পানিকে তেলের খনি সমতুল্য মূল্য দেয়া হয়। একটা টেলিকমের কাজ পাওয়া মানে 'এইবার কপাল খুলল রে' ব্যাপারস্যাপার! দৌড়াদৌড়ি, হইচই।

স্বাভাবিক, কারন গত কয়েক বছর যাবৎ টেলিকম কোম্পানি গুলা সবচেয়ে বেশি ইনভেষ্ট করছে বিজ্ঞাপনে।২০০৭ সালে বিজ্ঞাপনে সবচেয়ে বেশি ইনভেষ্ট করা প্রথ্ম ছয়টির মধ্যে পাঁচটি ছিল, টেলিকম কোম্পানি।http:////www.thedailystar.net/story.php?nid=25715

দুঃখিত, ভিন্ন প্রস‍‍‍‌‌ংগে মন্তব্য করার জন্য।

চমৎ্কার পোষ্ট।হিমু ভাইয়ের স্লোগান এবং মৃদুল ভাইয়ের মন্তব্য এ ++

দুর্দান্ত এর ছবি

কারন গত কয়েক বছর যাবৎ টেলিকম কোম্পানি গুলা সবচেয়ে বেশি ইনভেষ্ট করছে বিজ্ঞাপনে।

বিজ্ঞাপন বানিজ্যে টেলিকম কিভাবে বিনীয়োগ (ইনভেস্টমেন্ট) করল এটা একটু বুঝিয়ে বললে উপকৃত হই।

হিসাববিজ্ঞানের আলোকে দেখলে টেলিকম কোম্পানির খাতায় বিজ্ঞাপনকে বানিজ্য পরিচালনা খরচ হিসাবেই দেখা যাবে, অন্তত শুল্কযোগ্য আয় কম দেখাতে হলেও তারা বিজ্ঞাপনকে ক্যাপিটালাইজ করবে না (মানে যে বছরের খরচ সেই শুল্কবছরের হিসাবেই থাকবে, আগে বা পরে দেখা যাবে না)। অনেক বিজ্ঞাপন সংস্থার নিজের প্রডাকশন হাউজ নেই। সেক্ষেত্র তাদের সম্পদ বলতে শুধু চেয়ার টেবিল আর কম্পিউটার গুলোই। তাদের আয়ের সিংহভাগটাই যায় ঘুষ, মালিকের মুনাফা, প্রডাকশান হাউজের খরচা আর শিল্পী-কর্মচারীর বেতন (এই ক্রমেই মনে হয়)। এখানে বক্তব্য হল যে টাকা আসে ও চলে যায়, বিনীয়োগ হয় না।

যদি বিজ্ঞাপন বানিজ্যে সরাসরি বিনীয়োগ বলে কিছু থেকে থাকে, সেটা আছে প্রডাকশন হাউজগুলিতে। বাংলাদেশে অডিওভিডিও প্রডাকশন বানিজ্য এখনো পরিস্কারভাবে চিহ্নিত শুল্কআওতায় নয় বলে এখানে সাদা টাকার বিনীয়োগ অতটা হয় না। আমার জানা মতে বেশিরভাগ বিজ্ঞাপন সংস্থা ও প্রডাকশন হাউজের লগ্নীকার (মানে সুযোগ্য ও নীতিবান, চরিত্রবান মালিকের সেই রহস্যঘেরা বিজনেস পার্টনারটি/রা) আসছে চোরাকারবারী ও অন্তত একটির ক্ষেত্রে আন্ডএপার্টমেন্ট ও গার্মেন্টস শিল্পের কালো টাকা থেকে। এখানে বলতে চাইছি যে, বাংলাদেশের আরসব অনিয়মিত সেবাখাত এর মত প্রডাকশান হাউজগুলিতেও কাঁড়ি কাঁড়ি কালো টাকা অতি যত্ন সহকারে ধোলাই করা হয়। (টেলিকম একটি নিয়ন্ত্রিত সেবাখাত অন্যদিকে ক্লিনিক-বিউটি পার্লার-ভিওয়াইপি গুলোকে অনিয়মিত/অনিয়ন্ত্রিত বলছি)।

বিজ্ঞাপন খাতে কিছু লোকের চাকরি হয়, নতুন শিল্পী তৈরী হয় এটা ঠিক। কিন্তু বাংলাদেশে এই লাইনে করে খেয়ে সাদা টাকার শিল্পপতি হয়েছে এমন কারো নাম বলতে পারেন? (এখানে দয়া করে যাকের-আরা চৌধুরীদের মত মোটা বেতনের চাকুরে কে শিল্পপতি ভেবে ভুল করবেন না) গত দশকে টেলিকমের কোটি-অর্বুদ টাকার হাতবদল হবার পরেও যেখানে একটি সুস্থ টেকসই শিল্পখাত আজকেও তৈরী হল না, সেখানে শুষ্ঠু বিনীয়োগ এসেছে কেন বলছেন, একটু বুঝিয়ে বলুন।

নৈষাদ এর ছবি

আমি অবশ্য একটেলের সেই বিজ্ঞাপনটা দেখি নাই। তবে লেখা থেকে বিজ্ঞাপনটা কী বুঝাতে চেয়েছে তা খুব একটা বুঝতে পারলাম বলে মনে হল না। হয়ত ২১ নিয়ে আমাদের অনুভূতিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করা হয়েছে – কিছুটা সস্তা উপায়ে।

চমৎকার মন্তব্যগুলি পড়লাম। আমরা ক্রেতার প্রেক্ষিতটা দেখলাম, একজন ঝানু বিজ্ঞাপন নির্মাতার প্রেক্ষিতটা দেখলাম (মৃদূল আহমেদ)। আমি কর্পোরেটের পক্ষ থেকে দেখতে চেষ্টা করি।

অবশ্য বলে রাখা ভাল, কিছুদিন আগে আলোচনায় আসা বিজ্ঞাপন সহ বাংলাদেশে প্রচারিত বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে আমি সচলায়তনের অন্যান্য অনেকের সাথে সহমত পোষণ করি। তারমধ্যে সবচেয়ে উপরে আছে গায়ের শ্যামলা রং ফর্সা হলে জীবন বদলে যায় জাতীয় একটা বিজ্ঞাপন। আমিও মনে করি বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের উপরে রেগুলেশন আনা জরুরী হয়ে পড়ছে।

এক।

একটা কর্পোরেটের যারা বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করে (সাধারনত মার্কেটিং কমিউনিকেশন), তারা প্রাথমিক ভাবে একটা থিম কিংবা কমপিটেটিভ অ্যাডভান্টেজ প্রচার করতে চায় (কখনও একটা ট্যাগ লাইন) । তারা যায় বিজ্ঞাপন নির্মাতার কাছে। বিজ্ঞাপনের আইডিয়াটা নিয়ে আসে বিজ্ঞাপন নির্মাতারা, তারাই এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ। কর্পোরেটেরও কিন্তু একটা নিজস্ব গাইডলাইন থাকে। দুইটা পয়েন্ট এখানে গুরুত্বপূর্ণ – এক, বিজ্ঞাপনের জন্য কর্পোরেটে কিন্তু অনেক টাকা খরচ করতে প্রস্তুত (মৃদূল আহমেদের মন্তব্য দেখুন), কারণ বিজ্ঞাপনের সাথে ব্যবসার সরাসরি সম্পর্ক তারা দেখেছে। দুই, বিজ্ঞাপনটা তাদের জন্য ক্ষতিকর হোক তা কখনও তারা কখনই চায় না। আমাদের এই সুযোগটা নেয়া উচিত।

এসকল বিজ্ঞাপনে সাধারনত সিনিয়ার ম্যানেজমেন্টের অ্যাপ্রুভ্যাল লাগে না। মার্কেট কমিউনিকেশন এবং সিইওই যথেষ্ট। অনেক ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে মার্কেটিং কমিউনিকেশন কিংবা বিজ্ঞাপন নির্মাতারা বুঝতেই পারেনা এখানে কোন সমস্যা আছে। (যেমনঃ গ্রামীণের ৩০ মিনিটের প্রোগ্রামটা)। তাহলে সমাধান কী?

কাস্টমারের পক্ষ থেকে কী করা যায় হিমু বলেছে। মিডিয়া/কিংবা মিডিয়াতে কেউ কিছু বলার সাহস নেই, বুঝতেই পারছেন। (মিডিয়ার ভুমিকা নিয়ে একটা চমৎকার উদাহরণ আছে, কিন্তু আমি দিতে পারছি না)। আপনি মনে করলে কোর্টে যেতে পারেন (পাব্লিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন)। কিন্তু হয়ত কোর্ট হয়ত আপানার কেইস নিবে না।

সমাধান হল রেগুলেসন। দেখুন একসময়ের সরকারকে সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ দেয়া কর্পোরেট বিএটির বিজ্ঞাপন কিন্তু সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। অথবা জন্ম-নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর বিজ্ঞাপন (!!?)।

দুই।

কর্পোরেটকে বেনিয়া/ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে তুলনা করা হচ্ছে। কোন ভুল নেই। তখন বা এখন – কর্পোরেটের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে – বটম লাইন, টাকা রোজগার করা। কিন্তু তাই বলে প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করাতে গেলে আমি দুটা সমস্যা দেখি। প্রথমত ‘বিদেশি কোম্পানি এদেশে এসে ব্যবসা করা বন্ধ করতে হবে’ সে চেষ্টা করা তো ‘ইন্টারনেটে ক্ষতিকর সাইট আছে ইন্টারনেট বাংলাদেশে বন্ধ করা উচিত’ এভাবেই দেখা যায়। বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট আসার জন্য প্রতিটা সরকার চেষ্টা করে গেছে। কিন্তু সরকারের যেটা নিশ্চিত করতে হবে, সেটা হল বিদেশি কোম্পানিকে সরকারের নিয়মে খেলা। সরকারকে দেখতে হবে কিভাবে এটার বেস্ট ইউজ করা যায়।

আরেকটা প্রেক্ষিত আছে, বিদেশি কোম্পানিকে শুধু দোষ দিয়ে আমারা আমাদের ব্যার্থতাকেও কিন্তু ঢেকে ফেলছি। বেক্সিমকো একসময় সবচেয়ে বেশি ম্যানেজার তৈরী করেছে বাংলাদেশে। ৮০ এবং ৯০ দশকে ভাল ছাত্ররা বেক্সিমকোতে যোগ দিতে চেষ্টা করত। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় conglomerate ছিল বেক্সিমকো। এখন বেক্সিমকোতে ফার্মাই একমাত্র cash-cow। এত গেল প্রাইভেট সেক্টর। সরকারি সেক্টারের কথা বলি, একেটেলের বর্তমান দুই পার্টনার কিন্তু মালয়েশিয়া এবং জাপানের সরকারি কোম্পানি।

ভারতে, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে খুব ভাল সুবিধা দেয় এমন একটা wholly owned British subsidiary এর কিছু পরিবর্তনের সময় আমি জড়িত ছিলাম। আমি দেখেছি সেই কোম্পানি থেকে লোকজন একটা পুরোপুরি ভারতীয় কোম্পানিতে চলে যাচ্ছে, ব্রিটিশ কোম্পানিটা ধরে রাখতে পারছে না। কেন? দেশপ্রেম। দুঃখিত, ভারতীয় কোম্পানিটা নিজেকে সেইভাবে দাঁড় করিয়েছে।

গ্রামীণ ফোনের বিজ্ঞাপনের সেই লেখাটিতে কানেক্টেড-১০০ বলে একটা তত্ত্ব প্রকাশ করা হয়েছে। খুব ভাল লেগেছে আমার – আহা যদি সত্যি হত। মূল কথাটা হল কানেক্টেড–৫ ও নেই। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠান গুলি যে অনেকগুলি কারণের জন্য একসময় ধরা খায় তার একটা হল সেই তথাকথিত কানেকশন থিওরীর প্রযোগ। কানেকশনের দরকার কেন? দরকার প্রফেশন্যাল দের। আর বাকিতো আছেই – মানি টকস।

বেনিয়া থিওরীতে ফিরে আসি আবার। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি সাথে আমাদের বর্তমান বেনিয়াদের আবার কিছুটা পার্থক্য আছে। ইউনিলিভার ৫০ এর দশকে যা করতে পারত, এখন তা করতে পারে না। বাংলাদেশে কোন একটা সমস্যা হলে পৃথিবীর সব-দেশে এটার খবর হবে, ব্যবসাতে ইম্পেক্ট হবে। শুধু দেশে না, সারা পৃথিবীতে। সবচেয়ে বড় কথা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রভাব পরবে। সুতরাং কর্পোরেটগুলি কিন্তু চাপে থাকে। পান থেকে চুন খসলে মোটা বেতনধারী সিনিয়্যার ম্যানেজমেন্টকে কিন্তু একদিনের নোটিশে গুডবাই।

আরেকটা উদাহরণ। জেমস ফিনলে পিএলসি আমার শোনা সবচেয়ে পুরানো মাল্টিন্যাশানেল বাংলাদেশে। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে খুব মিল ছিল (একটা মজার উদাহরণ, ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানিতে furlough বলে একটা ছুটির ব্যবস্থা ছিল, ফিনলেতেও কিন্তু ৮০/৯০ দশকে এটা ছিল, একদম একই কন্সেপ্ট)। ফিনলে পরিবর্তন করেনি নিজেকে। ফিনলের অস্তিত্ব নেই বাংলাদেশ। মজার কথা, যুক্তরাজ্যে অনেকের কাছে জানতে চেয়েছি, বলে – ফিনলে কী? কী করে?

আমি শুধু অন্য প্রক্ষিত গুলি দেখাতে চেষ্টা করলাম...। খুব দ্রুত মন্তব্যের জন্য ভুল থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।

তাসনীম এর ছবি

একটেলের এই বিজ্ঞাপনটা মিনিংলেস। এভাবে শহীদ মিনার দেখায়ে জিনিস বেচার চেষ্টাটা অশ্লীল। এই ছাড়টা আমরা শুধু মোবাইল কোম্পানিগুলোকেই দিচ্ছি, অন্য কেউ করার সাহস পায় নি এখনও।


প্রথমত ‘বিদেশি কোম্পানি এদেশে এসে ব্যবসা করা বন্ধ করতে হবে’ সে চেষ্টা করা তো ‘ইন্টারনেটে ক্ষতিকর সাইট আছে ইন্টারনেট বাংলাদেশে বন্ধ করা উচিত’ এভাবেই দেখা যায়। বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট আসার জন্য প্রতিটা সরকার চেষ্টা করে গেছে। কিন্তু সরকারের যেটা নিশ্চিত করতে হবে, সেটা হল বিদেশি কোম্পানিকে সরকারের নিয়মে খেলা। সরকারকে দেখতে হবে কিভাবে এটার বেস্ট ইউজ করা যায়।

সহমত।

কর্পোরেট ওয়ার্ড অনেকের মত আমার নিজেরও রুটি রুজি জোগায়, বন্ধ নয় ওদের অপরেশসন রেগুলেট করতে হবে। ব্যবসা ঠিকমত রেগুলেট না করেই কিন্তু আজ আঙ্কেল স্যাম এই ক্রেডিস সংকটে পড়েছে। ব্যবসার মূলনীতি পয়সা বানানো, এই নীতিতে আমার বিরোধ নেই, কিন্তু সেটা যেকোন মূল্যে নয়, করতে হবে ফেয়ারলি।

ধন্যবাদ নৈষাদ আপনাকে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

একলব্য [অতিথি] এর ছবি

"বিনিয়োগ" শব্দটি আমার মন্তব্যে, আমি " টেলিকম কোম্পানিগুলোর নিজস্ব প্রচারের জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে" সেটা বোঝাতে চেয়েছি।যা দুর্দান্ত ভাইয়া তার মন্তব্যে বলেছেন।

হিসাববিজ্ঞানের আলোকে দেখলে টেলিকম কোম্পানির খাতায় বিজ্ঞাপনকে বানিজ্য পরিচালনা খরচ হিসাবেই দেখা যাবে

ভুল শব্দ প্রয়োগ করে, বিভ্রান্তি সৃ্ষ্টি করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

আমার পূর্বের মন্তব্যের মূ্লবক্তব্য ছিল, বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে টেলিকম কোম্পানিগুলোর কাজ পাওয়া খুবই গুরুত্ব্পূর্ণ, কারন তারা অনেক বেশি খরচ করে বিজ্ঞাপনের পেছনে।

বাংলাদেশে এই লাইনে করে খেয়ে সাদা টাকার শিল্পপতি হয়েছে এমন কারো নাম বলতে পারেন?

না, পারছিনা। বাংলাদেশের বেশ প্রাচীন বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান বিটপী এর কর্ণধার জনাব রেজা আলি কে কি এই কাতারে ফেলা যায়??

বিটপীর কোন ওয়েব সাইট পেলাম না। ৪০ বৎসর পূর্তিতে নিউ এইজ এর রিপোর্ট এবং ফেইস বুক লিংক

বিভ্রান্তি সৃ্ষ্টি করার জন্য আবারও আন্তরিকভাবে দুঃখিত

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।