শিশুপালনঃ শেষ পর্ব

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বুধ, ১৫/১০/২০১৪ - ৯:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পৃথিবীর পাঠশালাঃ

"ক্যান উই গো টু ডিজনিল্যান্ড ফর মাই বার্থডে?"

"নারে মা...হাতে টাকা নেই একদম..."

"আব্বু ক্যান আই গেট অ্যান আইপ্যাড?"

"নাহ...ওই টাকার সমস্যা..."

"হাও অ্যাবাউট অ্যান আইপড টাচ?"

"টাকা বড় ইয়ে..." মিনমিন করে আমাকে জানাতেই হয়।

প্রায় প্রতিটি দাবীতেই আমাকে না বলতে হয়। সংসার চালানো প্রায় সরকার পরিচালনার মতো কাজ, বিরোধীদের প্রতিটি দাবিই নাকচ করে দিতে হয়। এছাড়াও অর্থমন্ত্রী হওয়াটা আমার কাছে প্রায়ই অর্থহীন মনে হয়। আয়ের সাথে ব্যয়ের সমন্বয় ঘটানোর চেয়ে মাঝে মাঝে আমার মনে হয় পরমাণু ভেঙে ফেলাটাও কম কঠিন কাজ।

"তোমার টাকার সমস্যা থাকলে তুমি ব্যাংকে যাও না কেন?"

"ব্যাংক গেলে কি হবে?"

"ব্যাংক তোমাকে টাকা দিবে, ব্যাংক সবাইকেই টাকা দেয়..."

একটু আলাপ করে বুঝতে পারলাম যে ব্যাংক সম্বন্ধের মেয়েদের ধারণা প্রায় অভিনয় সম্বন্ধে অনন্ত জলিলের ধারণার মতোই। ওদের মতে ব্যাংকে টাকার বস্তা আছে, ওইখানে গেলে যার যা খুশি সেটা নিয়ে আসা যায়, সেটা দিয়ে যেটা ইচ্ছে সেটাই কেনা যায়। যদিও বাংলাদেশের অনেক ব্যাংক তাদের টাকার বস্তা অনেকের জন্যই খুলে রেখেছে কিন্তু আসল ব্যাপারটা তো ভিন্ন।

আমি বলতে বাধ্য হলাম যে অর্থনীতি দাতা হাতেমতাইয়ের নীতিতে চলে না। সেটার চাকা ঘুরাতে হলে সকাল বিকাল কাজ করতে হয়, মোটামুটি দৌড়ের উপরে থাকতে হয়। এত কিছু করার পরেও স্টক মার্কেট নামে একটা দুর্বোধ্য বাজার আছে সেটার উঠানামার জন্য কিছু দোয়াদরূদও পড়তে হয়।

অর্থোপার্জন জটিল এক কাজ। এই পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি জীবিত ও সুস্থ মনুষ্যসন্তানকে এই নিয়ে জীবনের কোন না কোন সময় প্রচুর হ্যাপার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। সম্ভবত এর ভেতর দিয়ে ওদেরকেও যেতে হবে কোন একদিন। আমরাই এই মার্কেটপ্লেসের নিয়ম তৈরি করেছি, এই বাজারে মানুষ ছাড়া আর অন্য কোন প্রাণীই সঙ্গত কারণে প্রবেশ করে নি, কেননা এইখানে একবার ঢুকলে আর বের হওয়ার পথ নেই।

"ইউ মিন তুমি তোমার টাকাই ব্যাংকে রাখো? আর ওরা তোমার টাকা দিয়েই ব্যবসা করে এবং তোমাকে বেশি কিছু দেয় না...দিজ ইজ নট ফেয়ার...নট ফেয়ার অ্যাট অল। আই ডোন্ট লাইক ইট...নেভার গো টু অ্যা ব্যাংক এভার..."

মেয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। পুরো ব্যাংকিং খাত সে "নট ফেয়ার" বলে এক কথায় নাকচ করে দেয়।

পুরো ব্যাপারটা আমার কাছেও "নট ফেয়ার" মনে হয়। এই মার্কেটপ্লেসের যাবতীয় অবদান ওর বিষণ্ণতার সামনে এসে ম্লান হয়ে যায়। বড় হয়ে চাকরি-বাকরি করতে হবে, দিনরাত পরিশ্রম করতে হবে এবং এরপরেও অনেক মূলাই অধরা রয়ে যাবে। এর কোন মানে হয়?

টাকা খরচের হাজারটা পথ থাকলেও টাকা উপার্জনের পথের সীমাবদ্ধতাগুলো আমাকেও বিমর্ষ করে দেয়।

অর্থনীতি ব্যাপারটাই একটা "নট ফেয়ার" জিনিস।

পৃথিবীর পাঠশালার প্রথমপাঠই হচ্ছে এটা।

প্রকৃতির পাঠশালাঃ

আমাদের বাসাতে প্রায়ই একটা বিড়াল আসে। নাম হচ্ছে গর্ডি। প্রতিবেশির বিড়াল। প্রায় সকালে আমরা খাওয়ার টেবিলে বসলে বিড়ালটাকে দেখতে পাই। আমাদের বাসার চরম বিড়ালপ্রেমী ব্যক্তি হচ্ছে আমার ছোট মেয়ে।

গর্ডি আসলেই সে Aww করে শব্দ করে। এইটার অর্থ আমাকে বুঝিয়েছে সে - "কিউট স্টাফ" দেখলে এইটা বলতে হয়। শুধু বিড়াল না সে প্রাণীজগতের প্রায় সবাইকে দেখলেই আপ্লুত হয়।

বৃষ্টি হলে একটা গম্ভীর ব্যাঙ বাসার সামনের শেডে আশ্রয় নেয়, ওটার নাম হচ্ছে ফ্রগি-ওয়াগি, গাছের শুঁয়োপোকার নাম হচ্ছে ফাজি-ওয়াজি...এদের সবাইকে সে "মাদার নেচার" মনে করে।

গর্ডি সাধারণত বাসার পেছনে চুপচাপ বসে থাকে। কিন্তু সেইদিন ছিল ব্যতিক্রম। কোথা থেকে একটা ছোট ইঁদুর ঢুকে পড়েছিল। গর্ডি তাকে খেলার ছলে আক্রমণ করছিল। গর্ডির সাথে সেই ইঁদুরের মোলাকাত ছিল অসম যুদ্ধ, ইঁদুরটা যতবারই পালাতে চাইছিল ততবারই গর্ডি তার পথ আটকে দিচ্ছিল। টম আর জেরির যুদ্ধ আমি গত চল্লিশ বছর ধরে দেখছি, সেইখানে কোনদিন বিড়ালকে জিততে দেখিনি। বাস্তবতা আর ইচ্ছাপূরণ এক জিনিস নয় সেটাই প্রমাণিত হলো।

বাচ্চাদের ধারণা ছিল "মাদার নেচার" এক এবং অখন্ড স্বত্ত্বা। সেইখানে মোটামুটি সবার সাথে সবারই ভাব থাকে। মাদার নেচার ভার্সেস মাদার নেচার ফাইট সাধারণত দেখা যায় না, আমি একবার ভেবেছিলাম ইঁদুরটাকে বাঁচাবো, কিন্তু ততক্ষণে গর্ডি ইঁদুরটাকে আহত করে ফেলেছে, ওটাকে বাঁচানো মানে সেটার কষ্টকে বাড়ানোই হবে। সকালের মাখন আর জেলি মাখানো টোস্টও একটু একটু বিস্বাদ লাগলো - রোমান সম্রাটদের গ্ল্যাডিয়েটরদের লড়াই দেখতে দেখতে কি মাঝে মাঝে বিবমিষা হতো?

আমাকে ওরা জিজ্ঞেস করল বিড়ালটা ইঁদুরটা খাবে নাকি? ইঁদুরটা হেভেনে যাবে কিনা? পঞ্চত্বপ্রাপ্তির পর ইঁদুরের ডানা গজাবে নাকি? বিড়াল ইঁদুর খাওয়ার জন্য মারে বলে মনে হয় না, গর্ডিও খেলার ছলেই হত্যাকান্ড চালাচ্ছিল। আমি কুকুরের হাতে(?) বিড়াল হত্যাকান্ডও দেখেছি।

সম্ভবত দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার এবং আধিপত্য বিস্তার মাদার নেচারেরই কোডিং এর অংশ - এই পিটাপিটিময় জগতে শেষ পর্যন্ত যোগ্যতমের জয় হয়। সবাই মিলেমিশে থাকাটা অলীক, অবাস্তব এবং কিছুটা প্রকৃতি বিরুদ্ধ একটা ব্যাপার। সঙ্গত কারনেই এই যুক্তিগুলোও আমার বড় মেয়ের কাছে "নট ফেয়ার" মনে হল।

আমরাও মাদার নেচারের অংশ। শার্ট-প্যান্ট পরলেই ভদ্রলোক হওয়া যায় না - ঢাকা শহরের রিকশাওয়ালারা কবেই শিখিয়েছে এই আপ্তবাক্য। সুতরাং মনুষ্য সমাজও যে গর্ডির দূরবর্তী মামাতো ভাই সেই সন্দেহ আমার নেই। আমরা মানুষের সমতা তৈরির আইন করি, সমান অধিকারের আইন করি...কিন্তু দিনশেষে যেই লাউ সেই কদু...সবলের জয়ই সর্বত্র হয়। আমরা যেটা না সেটা কখনোই সামষ্টিকভাবে অর্জন করতে পারি না।

শিশুপালন করতে গিয়ে প্রকৃতি এবং মানুষ দুই পাঠশালার শিক্ষাই আমার কাছেও ইদানিং প্রায়ই অগ্রহণযোগ্য মনে হয়। লিটল প্রিন্স গল্পের সেই বালক যুবরাজের মতো বড়দের জগৎটা আমার কাছেও দুর্বোধ্য ঠেকে।

নট ফেয়ার। নট ফেয়ার। নট ফেয়ার।

মিথ্যে কথাঃ

"আব্বু হোয়াই ডু ইউ ওয়াচ নিউজ এভরি ডে?"

প্রতিদিনই খবর দেখা নিয়ে শুধু বাচ্চা নয় ওদের মা-ও মাঝে মাঝে আপত্তি করে। প্রতিদিন একই জিনিস দেখার মানে কি? আমি নিজেও ভাবিত হই। তবুও অফিস থেকে ফিরে টিভি খুলে না বসলে শান্তি পাই না। প্রায়ই বড় মেয়ে আমার সঙ্গী হয়।

খবর মানেই দুর্ঘটনা। টিভি খুলতেই প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকার এক অর্ধেক বিধ্বস্ত বাসা দেখলাম। সেই বাসার বেআব্রু দশার কারণে একটা ঘরের পুরোটাই চোখে পড়ল। আমাদের চোখ আটকে গেল ঘরের দেওয়ালে কার্টুন চরিত্র ডোরা দ্য এক্সপ্লোরারের একটি পোস্টারে। আমাদের বাসাতেও এই রকম একটা পোস্টার ছিল। তিন-চার বছর বয়েস পর্যন্ত বাচ্চারা ডোরার ভক্ত থাকে। এরপরে ওদের রুচি বদলে যায়। অর্থাৎ ওই ঘরটা কোন বাচ্চার, সম্ভবত মেয়ে বাচ্চার, কেননা ওরাই ডোরার বেশি ভক্ত।

মেয়েও আমার সাথে নিউজ দেখে। ব্যাপারটা সেও লক্ষ্য করে।

"আব্বু হোয়াট হ্যাপেন্ড টু দ্য গার্ল? একটু ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করে মেয়ে - ইজ শি ডেড?"

আমি নিজেও একই কথা ভাবছিলাম, ওই ঘরের মেয়েটার কি হলো?

"প্লিজ টেল মি দ্যাট দে আর নট কিলিং চিল্ড্রেন..." মেয়ের কন্ঠে ভয়ের সুর।

আমি মনে মনে আমি পাহাড় জমাই। সপরিবারে প্রতি বছর একবার উঁচু কোন পাহাড়ে উঠি। পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা পাহাড়টা ৬ মাইলের চেয়ে একটু কম লম্বা। উত্তর, দক্ষিণ,পূর্ব বা পশ্চিম যে কোন দিকে ৬ মাইল গেলে প্রকৃতির কিছুই বদলায় না। কিন্তু উপরের দিকে সামান্য উঠলেই পৃথিবীর চেহারা পালটে যায়। উষ্ণতা কমে আসে, মেঘের আনাগোনা পড়শীর বাড়ির মতো হাতের স্পর্শের কাছে এসে যায়।

যে কোন পাহাড়ের উপর থেকে নিচের পৃথিবীটা প্রায় অচেনা হয়ে যায়, কেমন শান্তি শান্তি একটা জায়গা মনে হয়। বিমানের জানালা দিয়ে দেখা শহরগুলো দেখেও একই অনুভূতি হয়, মনে হয় ওইখানে কোন সমস্যা নেই, কোলাহল নেই, ক্রন্দন নেই।

আমার বড় মেয়ে পরীতে বিশ্বাস করে। শুধু পরী না, মারমেইড, পিটার প্যান, সান্তা ক্লজ, ইউনিকর্ন প্রতিটি জিনিসের উপর ওর আস্থা অবিচল। ওর ছোট বোন অবশ্য এদের প্রত্যেকের ব্যাপারেই সন্দিহান। এতো কিছুতে বিশ্বাস করাটা ইংরেজিতে যেটাকে বলে...নাইভ। এতে পৃথিবী প্রায় স্বপ্ন দৃশ্যের মতো সুন্দর হয়ে যায়। অনেকটা উঁচু পাহাড় বা বিমান থেকে দেখা পৃথিবীর মতো। পৃথিবীর বাইরে দিয়ে যদি কোন এলিয়েন মহাকাশযান নিয়ে যেতে যেতে এক ঝলক সবুজ পৃথিবী দেখে - তাহলে নিশ্চিতভাবেই সে খুবই ভুল ধারনা নিয়ে তার নিজ দেশে ফেরৎ যাবে।

বাস্তবে পৃথিবী বড় খতরনাক জায়গা। প্রতি দিনই গাজাতে প্রায় নিয়তির মতো নেমে আসছে ইজরায়েলি বোমা। সেই নিয়তিতে স্বপ্ন না দেখেই পৃথিবী ছাড়তে হয় ওদের বয়েসি বাচ্চাদেকেও।

মানুষের ভালোবাসা খুবই সীমিত, যেন নিজের বর্ণ, গোত্র, সামাজিক অবস্থান, পরিবার ছাড়া আর কারো জন্যই কোন কিছু বরাদ্দ নেই। আমরা অন্য বর্নের, অন্য ধর্মের,অন্য সমাজের, অন্য দেশের মানুষকে ঘৃণা করি, হাতে অস্ত্র থাকলে কোন ছুতাতে সেটা ব্যবহার করতেও দ্বিধা করি না। প্রকৃতির দেওয়া ঘৃণা আর এই মার্কেটপ্লেসের অবিষ্কারের কল্যাণে নির্মমতায় আমরা পৃথিবীর অন্য যেকোন প্রাণীকে পেছনে ফেলে দিয়েছি।

শৈশব স্বপ্নময় হওয়ার কথা, যেন পরিণত বয়েসে এসে সেই শৈশবের ওম গালে মাখা যায়। কিন্তু যেই শৈশব স্মৃতি আধপোড়া এবং ধ্বংসস্তুপ হয়ে যাওয়া ঘরবাড়িরের, সেটা নিশ্চিতভাবে আরো আরো অনেক বড় ঘৃণা নিয়ে আসবে।

"ড্যাডি প্লিজ টেল মি দ্যাট দে আর নট কিলিং চিল্ড্রেন..."

আমি বিপন্নবোধ করি। সত্যটা পাশ কাটাতে না চাইলেও মাঝে মাঝে মনে হয় মিথ্যা বলারও দরকার আছে।

"নো- হু ক্যান ডু সাচ অ্যা থিং..." একটু দম নিয়ে আমি ওকে জানিয়ে দেই।

আশ্বস্ত হয়ে মেয়ে তার আপন জগতে ফিরে আসে।

টিভিটা বন্ধ করে দেই আমি। প্রতিদিনই মনে হয় খবর দেখা বন্ধ করে দেব।

এই পৃথিবী অসহ্য জটিল লাগে।

ভালোবাসা ও তার অন্য পিঠঃ

"আব্বু উই উইল হ্যাভ অ্যা ওয়াক্স মিউজিয়াম ডে নেক্সট উইক..."

ব্যাপারটা আমার বুঝতে সময় লাগলো। ক্লাসের ছাত্র ও ছাত্রীদের বিখ্যাত কারো মোমের মূর্তি সেজে থাকতে হবে। পায়ের সামনের সুইচে চাপ দিলে মোমের মূর্তি কথা বলে উঠবে। ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজেদের পছন্দের বিখ্যাত মানুষ নিয়ে গবেষণা করে তথ্য সংগ্রহ করবে, পায়ের কাছের অদৃশ্য সুইচে চাপ দিলে ওরা সেই তথ্যগুলোই মানুষকে দেবে। গবেষণা নামক জিনিসটা আনন্দের মোড়কে ঢুকানোর লক্ষ্যে শিক্ষিকা এই আয়োজন করেছেন। অভিভাবকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সেই গবেষণালব্ধ তথ্যগুলো শোনার জন্য।

আমার মেয়ের গবেষণার বিষয় ছিল হেলেন কেলার। আমি মাদাম কুরি হতে বলেছিলাম - কিন্তু দুইবার নোবেল প্রাইজের পিছনে কোন আগ্রহ না দেখিয়ে মেয়ে হেলেন কেলারকেই বেছে নিলো। তাতেও আমি খুশি, উনিও মহান একজন মানুষ।

ওয়াক্স মিউজিয়াম ডে'তে আমি ওদের ক্লাসের প্রতিটি ক্যারেক্টারের সুইচে চাপ দিয়েছি। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে, কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্র ও ছাত্রীরা সবাই নিয়ে নিজ বর্ণের চরিত্র - মার্টিন লুথার কিং, রোজা পার্ক, মোহাম্মদ আলি,লায়লা আলি, মাইকেল জর্ডন - শ্বেতাঙ্গ ছাত্র ছাত্রীরা নিয়েছে ওয়াল্ট ডিজনি, জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস এডিসন। কেউই ফ্লোর ক্রস করেনি।

চরিত্র বাছার ব্যাপারে টিচারের হাত ছিল না। কিন্তু বাবা-মার ভূমিকা ছিল। অ্যাফ্রিক্যান আমেরিকানরা চান যে তাঁর মেয়ে রোজা পার্ক বা মার্টিন লুথার কিংকে জানুক...ককেশিয়ানরা টমাস এডিসনকে স্মরণ করলেও হয়তো রোজা পার্কের কথা ভুলে যান বেমালুম - ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই আমাদের নিজেদের বর্ণ বা গোত্রের মানুষের প্রতি একটু বেশিই পক্ষপাতদুষ্ট - সেইটাই স্বাভাবিক, সেটাই আমরা শিশুদের শেখাই, এইভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে আসছে।

ঠিক সেই একই কারণেই হয়ত বড় হয়ে সাদা মানুষ সাদা মানুষকেই ভালোবাসে, কালো মানুষ আরেকজন কালো মানুষকে, মুসলমান আরেক মুসলমানকে...ঠিক আছে...কিন্তু নিজের গোত্রের প্রতি পক্ষপাতের উল্টো পিঠে যে ঘৃণা, মৌলবাদ, মুর্দাবাদ আছে - সে সবই তো সংক্রামক এবং অন্য লোকের শেখানো।

দেবতা থেকে শয়তান - আমরা কেই বা নিজের শেখানো জীবনযাপন করি?

দেয়ালঃ

"আব্বু মরে গেলে মানুষ কেন আকাশের তারা হয়ে যায়"?

অনেক অনেক বছর আগে এক লোডশেডিং এর রাতে আম্মা ছাদে বসে আমাকে বলেছিলেন মানুষ মরে গেলে নাকি আকাশের তারা হয়ে যায়। আমি সেই কথা বিশ্বাস করলেও মনে হয়েছিল সেই ক্ষেত্রে আকাশে অনেক অনেক বেশি তারা থাকা উচিত।

আমার এক স্কুলের এক বন্ধু বলেছিল আকাশের তারা গুলো নাকি স্বর্গের দেওয়ালের ফুটো, টিমটিম করে জ্বলতে থাকা তারা খুব নরম আলো তাই এতো স্বর্গীয়!!! স্বর্গের মতো জায়গাতে ফুটোফাটা থাকতে পারে এই আবিষ্কারে মনটা একটু দমে গিয়েছিল।

বড় হয়ে আমি কার্ল স্যাগান নামের একজন বেরসিক লোকের দেখা পাই। সেই লোকের মতে এই মহাবিশ্বে অযুত-নিযুত তারা আছে। সম্ভবত এই পৃথিবীর প্রতিটি মৃত মানুষকে একটি করে তারা দেওয়ার পরেও অনেক অবশিষ্ট থেকে যাবে। আরেকটা ব্যাপার - আমরা নাকি সবাই তারার মালমশলা দিয়েই তৈরি। প্রাচীনকাল থেকেই রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা ওদের সাথে এক অদৃশ্য মেলবন্ধন করে ফেলেছে। সুতরাং এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলে দূরের কোন তারা হওয়া যাবে এই অবিশ্বাস্য তথ্য হয়ত আমরা আমাদের রক্তের মধ্যেই বহন করছি।

"ডু ইউ নো উইচ স্টার ইজ ইউর মাম?"

আমার মা-ও এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন - দূর কোন দেশে। আকাশে এতো এতো তারা আমরা খুঁজে পাই না নতুন সেই তারাটি কোথায়।

মাঝে মাঝে গভীর রাতের বৃষ্টির শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। অনেকদূরে পড়া বাজের শব্দে মেয়ে ভয় পেয়ে আমার গা ঘেঁষে শুয়ে পড়ে। ঘুম জড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করে...

"ওয়ান ডে উইল ইউ বি অ্যা স্টার অলসো, ক্যান আই বি নেক্সট টু ইউ হোয়েন আই বিকাম অ্যা স্টার?"

"ডু ইউ মিস ইউর মা?"

"আর ইউ স্টিল স্যাড?"

"আব্বু স্কুইরেলরা বৃষ্টি হলে কোথায় যায়?"

"অ্যানিমেলদের ফ্রিজ নেই কেন?"

"হোয়াই ডু পিপল গেট ওল্ড অ্যান্ড ডাই ওয়ান ডে?"

শৈশব আমার কাছে একটা রূপকথার বাগানের মতো মনে হয়। সেই বাগানের শেষ প্রান্তে এক বিশাল দেয়াল আছে। সেই দেওয়ালের ওপারেই আছে বাস্তবতা, বড়দের কঠিন জগৎ। এই পাড়ে যদি রূপকথা থাকে তাহলে ওইদিকটা ভীষণ খটমটে শুকনো গদ্য। সম্ভব হলে এই দিকটাতেই থাকা উচিত। কিন্তু সেই ব্যবস্থা নেই। জীবনের জটিলতা ওদের জন্যেও অপেক্ষা করছে, পিটার প্যানকেও এক সময়ে বড় হতে হয়। সবাইকেই একদিন শৈশবের দেওয়াল টপকাতে হয়। দিনে দিনে আমি টের পাই সেই দেওয়ালটা চলে আসছে ওদের কাছাকাছি।

"আব্বু হোয়াট হ্যাপেন্ড টু দ্য স্নেইক নেইমড মিস্টার ব্রাউন দ্যাট লিভড ইন ইউর অফিস?"

মিস্টার ব্রাউন আমার অফিসের সামনে বাস করা বাদামী রঙের একটা সাপ। আমার অনেক গল্পের নায়ক ছিল সে। আমরা আকাশের তারার গল্প করি, আমার মায়ের গল্প করি, গাছের উপর হাঁটতে থাকা কাঠবিড়ালির গল্প করি, বিড়ালদের নিয়ে গল্প করি। দেওয়ালের ওইদিকের পৃথিবীতে বোমা পড়ে, মানুষ মারা যায়, দারিদ্র্য এসে স্বপ্ন ভুলিয়ে দেয়, ক্ষুধা, তৃষ্ণা আর কষ্ট প্রতিদিন নতুন নতুন রাজ্য দখল করে।

আমি নিজেও দেয়ালের অন্যদিকের ক্লান্ত মানুষ, মাঝে মাঝে এইখানে এসে ঠাঁই নেই ক্ষণিকের আনন্দের জন্য।

দেয়ালের এই দিকে আমাদের দিন কেটে যায়, পৃথিবীর লাভ, ক্ষতি, নির্মমতা, অশ্লীলতা, নীচতা আমাদের স্পর্শ করে না। এক যাদুমন্ত্রবলে হঠাৎ করেই যেন আমি দ্বিতীয় শৈশবের দেখা পেয়ে যাই...শিশুদের বড় হওয়া দেখা এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা।

আমার নিজের শৈশবটাও তাই যেন ফিরে ফিরে আসে সময়ে এবং অসময়ে।

"All grown-ups were once children... but only few of them remember it.”

“ It is only with the heart that one can see rightly. What is essential is invisible to the eye."

Antoine de Saint-Exupéry, The Little Prince

##############################


মন্তব্য

আরিফ হাসান এর ছবি

চমৎকার লেখা! প্রত্যেকটা গল্পই হৃদয় স্পর্শ করেছে....কোথায় যেনো মিল খুঁজে পেলাম! কি জানি....প্রবাসী বলেই হয়তো. "সো ট্রু"। ভালো থাকুক লেখক আর তাঁর কন‌্যারা।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ আরিফ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তারেক অণু এর ছবি

আজকেই Antoine de Saint-Exupéry এর অন্য একটা বই সংগ্রহ করলাম। পড়ার অপেক্ষায় আছি-

নট ফেয়ার

তাসনীম এর ছবি

কোন বইটা? আরেকটা ব্যাপার এই ভদ্রলোকের নামের সঠিক উচ্চারণটা কি হবে?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

মনে হয় 'আঁতোয়ান দ্য সন্তেগজুপেরি' (র = হ+খ+র ফলা)

তাসনীম এর ছবি

কী কঠিন!!!

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নীলকমলিনী এর ছবি

শেষ পর্ব কেন? এখনো আরো অনেক গল্প বাকী আছে যে. লেখাটা বরাবরের মত যারপরনাই ভালো.
The Little Prince আমার প্রিয় বইয়ের একটি. আশি সালে যখন আসি সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম. মেয়েদের জন্যে ভালবাসা.

তাসনীম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। এই সিরিজটা গত দুই বছর চালাতে পারিনি। সময় বড় সংকীর্ণ। এইবেলা থামা দরকার।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সত্যপীর এর ছবি

দেয়ালের এপারে তো আরো কিছুদিন পিচ্চিগুলোর আছে, সিরিজ খতম কেন? চলুক। শেষ পর্ব দিয়ে দিয়েছেন ভাল কথা, এইবার পাদটীকা ১ পাদটীকা ২ সিরিজ শুরু করেন। শিশুপালন চলুক।

..................................................................
#Banshibir.

তাসনীম এর ছবি

কাহিল হয়ে গেছি ভাই। সিরিজের একটা ভার থাকে, খেলাপি হওয়ার ভয়ও থাকে। টুকটাক লিখব হয়ত অন্যান্য জায়গাতে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রিক্তা এর ছবি

শেষ পর্ব দেখে মনটা দমে গেছিলো। পড়া শেষ করে মনে হল এরচেয়ে ভালো শেষ হতে পারতো না গুরু গুরু । বাবুটা হওয়ার আগে আগে শিশুপালন রিভিশন দিয়ে নিয়েছিলাম। এখন আপাতত রূপকথার জগতে বিচরণ করার ছুটিতে আছি। পৃথিবীতে একজন যে আমি মোটা বা চিকন, সাদা না কালো কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে আমাকে তার রূপকথার জগতের সর্বময় কর্ত্রী করে নিয়ে সারাদিন আমার আশায় বসে থাকে এইটা ভাবলে পৃথিবীকে বেশ লাগে। বাচ্চাটার কাছে আবার শিখতেছি আনন্দ খুব ছোটখাট সাধারণ বিষয়ের মধ্যে থাকে।

সিরিজ তো শেষ, কিন্তু এক্সম্যানের মত প্রিকোয়েল করা যায় না কিছু? অথবা গেস্ট আপ্যারেন্স?

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

তাসনীম এর ছবি

টুকটাক অন্য লেখাতে আসতে পারে কিছু। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের জন্য শুভেচ্ছা রইল।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সম্ভবত অনেক ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন, পর্বটা শেষ করবার। কাজেই এ বিষয়ে আর কিছু নাই বলি। তবে হ্যা, সচলে লেখা যেন চালু থাকে। তা না হলে সব হারিয়ে যাবে যে! আপনার ও আপনার পরিবারের প্রতি রইল শুভেচ্ছা। ভাল থাকুন। আনন্দে থাকুন। আর হ্যাঁ, আপনার মেেয়েদের জীবন সার্থক, সুন্দর, আনন্দময় হোক। হাসি

তাসনীম এর ছবি

আপনিও ভালো থাকুন। অনেক ধন্যবাদ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

এবার ই-বুক বের করেন।
আমি-আমরা তো আছিই। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

ওইটাও অনেক কষ্টের কাজ হাসি ইনফ্যাক্ট তোমাদের কষ্টটা আরও বেশি সেই ক্ষেত্রে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শিশিরকণা এর ছবি

ঠিক করেছি পিচ্চিকে ফেয়ারনেস শেখাবো না। এই দুনিয়াতে ফেয়ার বলে কিছু নেই। বরং সহমর্মিতা শেখাবো। নিজেকে অন্যের জুতোয় কল্পনা করে অন্যকে বুঝতে চেষ্টা করার আর সেইমতন ব্যবহার করার শিক্ষা দিব। আজ কারও প্রতি নিষ্ঠুর হতে হলে একদিন ঘুরে এসে সেই দায় আমাকেই মেটাতে হবে অন্যভাবে সেইটা মাথায় রেখে যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়া শিখাবো। কিভাবে শিখাবো, জানি না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

চলুক

তাসনীম এর ছবি

পৃথিবীতে যে ফেয়ারনেস নেই সেটা আসলে শিখাতে হয় না, বাচ্চারা একসময়েই টের পেয়ে যায়। সেখান থেকেই বড় হওয়ার শুরু, এর আগে পর্যন্ত রূপকথা।

শুভেচ্ছা রইল তোমাদের জন্য।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনি যেন একটা লটো পেয়ে যান সেই কামনা করছি। (যদিও লটো পাবার প্রথম শর্ত টিকেট কেনা, সেটা হয়ে ওঠা একটু দুষ্কর)। তাহলে অফিস বাদ্দিয়ে লেখালেখিতে আরেকটু সময় দিতে পারবেন।

শিশুপালন থেমে যাক এটা চাচ্ছি না। বাকি আপনার বিবেচনা।
রাজকন্যাদের জন্য শুভেচ্ছা।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যটা আগে দেখিনি। আমি এখনও পর্যন্ত কোন লটারির টিকেট কিনি নি, সবচেয়ে কঠিন কাজটাই বাকি হাসি ধন্যবাদ ইয়াসির।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

যে কোন পাহাড়ের উপর থেকে নিচের পৃথিবীটা প্রায় অচেনা হয়ে যায়, কেমন শান্তি শান্তি একটা জায়গা মনে হয়। বিমানের জানালা দিয়ে দেখা শহরগুলো দেখেও একই অনুভূতি হয়, মনে হয় ওইখানে কোন সমস্যা নেই, কোলাহল নেই, ক্রন্দন নেই।

তাসনীম, কন্যাদেরকে আমার পক্ষ থেকে আদর পৌঁছে দেবেন।

আসলেই এই পৃথিবী খুব একটা খতরনাক জায়গা। প্রায়শঃই মনে হয়, প্রেম-এর চেয়ে অপ্রেম বেশী, ভালবাসার চেয়ে ঘৃনা বেশী, গোলাপের চেয়ে বোমারু বিমান বেশী। তারপরেও, একটাই পৃথিবী আর একটাই জীবন। তাই লেখালেখি জারী থাকুক...শিশুপালন সিরিজ শেষ হতে পারে। কিন্তু, শিশুদের চোখে বিশ্ব দেখা নিয়ে লেখা চলুক।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ, আদর পৌঁছে দেব। ভালো থাকুন।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেঘলা মানুষ এর ছবি

পৃথিবীটা বড় অদ্ভুত জায়গা। এটা যে ঘুরছে, চলছে সেটাই বরং অবাক করে আমাকে।
ভাল থাকুন আপনি, আপনার কন্যারা, আপনার পরিবার।

জগতের সকল প্রাণী সুখি হোক। (যদিও তা হবার নয়, তবে আশা করতে দোষ কি?)

শুভেচ্ছা হাসি

তাসনীম এর ছবি

আশা করতে দোষ নেই কোন। ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

এক লহমা এর ছবি

"অ্যাফ্রিক্যান আমেরিকানরা চান যে তাঁর মেয়ে রোজা পার্ক বা মার্টিন লুথার কিংকে জানুক...ককেশিয়ানরা টমাস এডিসনকে স্মরণ করলেও হয়তো রোজা পার্কের কথা ভুলে যান বেমালুম - ভেতরে ভেতরে আমরা সবাই আমাদের নিজেদের বর্ণ বা গোত্রের মানুষের প্রতি একটু বেশিই পক্ষপাতদুষ্ট - সেইটাই স্বাভাবিক, সেটাই আমরা শিশুদের শেখাই, এইভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে আসছে।

ঠিক সেই একই কারণেই হয়ত বড় হয়ে সাদা মানুষ সাদা মানুষকেই ভালোবাসে, কালো মানুষ আরেকজন কালো মানুষকে, মুসলমান আরেক মুসলমানকে...ঠিক আছে...কিন্তু নিজের গোত্রের প্রতি পক্ষপাতের উল্টো পিঠে যে ঘৃণা, মৌলবাদ, মুর্দাবাদ আছে - সে সবই তো সংক্রামক এবং অন্য লোকের শেখানো।"
- যথার্থ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এক লহমা।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

শেষ হয়ে গেল, একটা বই বের করা যায় নাকি দেখেন তাসনীম ভাই।

গোঁসাইবাবু

তাসনীম এর ছবি

দেখা যাক। ধন্যবাদ গোঁসাইবাবু।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

M. Zakir Hossain এর ছবি

অসাধারন ! মন ছুঁয়ে গেল।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ জাকির হোসেন।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মর্ম এর ছবি

সত্যি বলতে কি, অভ্যাসের বশে সকাল সকাল সচলে এসে একটা দুটো লেখা পড়ে গেলেও সেই দিনরাত এখানে পড়ে যাওয়ার অভ্যাস নেই, যাঁদের লেখা পড়াটা অভ্যাস ছিল তাঁরাও শীতনিদ্রা দিচ্ছেন, মাঝে মাঝে একবার দুবার এসে হাই তোলেন।

এ খরার মধ্যেও যে লেখাগুলোর শিরোনামটা দেখামাত্র এখনো মন চনমনে হয় তার মধ্যে এক এই 'শিশুপালন'। পছন্দের আরো একটা সুতো ছেঁড়ার রায় দিয়েই দিলেন।

থাকত নয়, কী আর হত! অন্ততঃ হঠাৎ পেয়ে যাওয়ার আশাটা তো থাকত। মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

তাসনীম এর ছবি

লেখা বন্ধ করার ঘোষণাতো দেই নি হাসি অন্যান্য লেখা চালু থাকবে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শান্ত এর ছবি

"শেষ পর্ব" লেখাটা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আপনার লেখা সবসমই সুখপাঠ্য। এটাও তেমনি।

মেয়েদেরকে আদর পৌছে দিবেন। আমার মেয়েটাও দেখতে দেখতে ৩বছর হয়ে গেলো। প্রতিদিন তার শত শত প্রশ্ন। আসলে শিশুপালন উপভোগ করতে পারলে এর থেকে মজার আর কোন কাজ নেই। বাচ্চারা অদ্ভুত সুন্দর। ঈশ্বর পৃথিবীর সব বাচ্চাদেরকে সুন্দর ভবিষ্যত দান করুন।

__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ সুপ্রিয়, শুভেচ্ছা রইল আপনাদের জন্য।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মরুদ্যান এর ছবি

হাততালি হাততালি

সিরিজ চললে আরো বেশি খুশি হইতাম! তারপরও যেহেতু বলসেন শেষ, ভাবনা চিন্তা কইরাই বলসেন নিশ্চয়ই!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ মরুদ্যান।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

স্পর্শ এর ছবি

একি! মেয়েরা বড় হয়ে গেল বুঝি?

দারুণ একটা সিরিজ। হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তাসনীম এর ছবি

বড় হওয়ার পথে হাসি ধন্যবাদ স্পর্শ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর জলছবি এর ছবি

রুপকথার জগৎ থেকে বের হব না হব না করেও শেষ পর্যন্ত কবে যেন বের হয়ে গিয়েছিলাম। মেয়েটি হওয়ার পর গত কয়েক মাস ধরে আবার নতুন করে সেই জগতের স্বাদ পাচ্ছি।

শিশুদের বড় হওয়া দেখা এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা

আসলেই তাই। হাসি :-)

এই সিরিজ টা শেষ হয়ে গেল ভেবে একটু মন খারাপ হচ্ছে. মন খারাপ

তাসনীম এর ছবি

আপনাদের জন্য অনেক শুভেচ্ছা। এই ধরণের সিরিজ এখন আপনিই শুরু করে দিতে পারবেন।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

সিরিজ শুরু করে দিন আফামণি।
..উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দীপ্ত এর ছবি

শিশুপালন পড়া শুরু করার পর থেকে প্রতিটি লেখার অপেক্ষা করেছি। লেখা পড়ে ভেবেছি, অপূর্ব আনন্দ পেয়েছি, অন্যকে পড়তে বলেছি। প্রতীক্ষায় থাকতাম এমন একটা সিরিজ। শেষ পর্ব দেখে কেমন একটা খারাপ লাগা ভর করল - ডুবে আছি এমন কোন বই ঝুপ করে শেষ হয়ে গেলে যেমন লাগে, তেমন।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ। সময় পাচ্ছিলাম না, ইনফ্যাক্ট সব কিছুতেই ইদানিং তাড়াহুড়া। ভালো লাগা জানানোর জন্য ধন্যবাদ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তাসনীম ভাই,
শিশুপালনের শেষ পর্বে এসে আপনি বড়ই মুন্সীয়ানার সাথে বড়দের বেশ ক'টি কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করালেন। ধা করে অন্নদাশংকরের চারটি লাইন মাথায় এলো,

“তেলের শিশি ভাঙল বলে, খুকুর পরে রাগ করো।
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা - ভারত ভেঙে ভাগ করো! তার বেলা?
ভাঙছ প্রদেশ ভাঙছ জেলা - জমিজমা ঘরবাড়ী
পাটের আড়ৎ ধানের গোলা - কারখানা আর রেলগাড়ী! - তার বেলা?”

বড় হয়ে চাকরি-বাকরি করতে হবে, দিনরাত পরিশ্রম করতে হবে এবং এরপরেও অনেক মূলাই অধরা রয়ে যাবে। এর কোন মানে হয়?

মানুষ হয়ে বেঁচে থাকবার জন্যে সব মুলো ধরবার প্রয়োজন যে নেই এটা মনে-প্রাণে নিজে উপলব্ধি করা ও শিশুকে বোঝানো দুই-ই বড় কঠিন কাজ।

বেড়ালের খেলাচ্ছলে ইদুর-সংহারের ঘটনায় এই উপলব্ধি হলো যে, 'টম এন্ড জেরি' কিম্বা 'সুবিনয় মুস্তাফী' নিছক কল্পিত প্রতিশোধ!

মেয়েরা বড় হচ্ছে, সবকটি ইন্দ্রিয়ের কান ও হৃদয়ের জানালা সবটুকু খুলে দিয়ে তাদের পড়তে পারছেন, একজন বাবার এর থেকে বেশি পাওয়া আর কি আছে বলুন!

অসাধারণ আপনার লেখা, অনন্য আপনার হৃদয়-বীক্ষণ!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তাসনীম এর ছবি

আপনাকে সদয় মন্তব্যের জন্যও অনেক অনেক ধন্যবাদ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

শেষ হয়ে গেল? ইট ইজ নট ফেয়ার! মন খারাপ
ব্যাপার না, পিচ্চিও আছে, আপনেও আছেন। হাসি
এইবার নয়া সিরিজ ধরেন "পিতৃত্ববেলাঃ ২য় পর্ব" পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তাসনীম এর ছবি

হাসি অন্যান্য লেখালেখি চলবে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কী দরকার ছিলো এসব লেখার। সময়টা চলে যায় কত দ্রুত! একদিন সবাই বড় হয়ে যায়। শৈশব আর ফিরে আসেনা।

আমার মেয়েরও ধারণা ছিল ব্যাংকে গেলেই বুঝি টাকা পাওয়া যায়, হা হা।

তাসনীম এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

পড়তে পড়তে আমি বেশ কিছু কথা লিখবো ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন আর কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না। মেয়েরা বড় হলে ওদেরকে এই লেখাগুলো পড়তে দিয়েন। তারা সঠিক আর অন্যায়ের পার্থক্য করতে জানে এমন মানুষ হিসেবে বড় হয়ে উঠবে এই দোয়া করি।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

মেয়েরা তো বাংলা পড়তে পারে না হাসি সঠিক আর অন্যায়ের পার্থক্য করতে পারা খুব কঠিন কাজ, প্রায় সময়েই দুটোর বিভাজন ঠিক সাদাকালো না, তবুও হৃদয়ের অনুশাসন মেনে চললে মোটামুটি ঠিক কাজটা করা যায়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাইদ এর ছবি

"আব্বাগো আর ফাইরতেছিনা" লেখা তাহলে শেষ। মনটা খারাপ হয়েছে কিন্তু এবার মনে হল এরপর আপনি লিখবেন "জীবন নট ফেয়ার" নামে একটা সিরিয়াল।
আপনার মেয়েরা সবসময় ভাল থাকুক। এই কামনা করি।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যে জন্য ধন্যবাদ সাইদ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মাসুদ সজীব এর ছবি

জীবন মানেই বোধহয় স্মৃতিঘর, আর স্মৃতি মানেই বোধহয় দুরন্ত শৈশব আর ভয়ডরহীন কৈশোর। ভালোথাকুক আপনার কন্যারা, ভালোথাকুক তাদের অসাধারণ বাবা টা হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

তাসনীম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মাসুদ সজীব।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রংতুলি এর ছবি

এরচেয়ে সুন্দর শেষ আগে কোথাও পড়েছি কি না মনে করতে পারছি না! বাবা’র এই লেখাগুলো পড়ার জন্যে হলেও মেয়েদের বাংলা পড়তে শেখা উচিৎ। ওদের জন্যে অনেক অনেক ভালোবাসা! হাসি

তাসনীম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রংতুলি।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লেখা নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই - বরাবরের মতো অনবদ্য। এবং সবচে' ভালো করেছেন সিরিজটা বাচ্চাদের এই বয়সে এসে শেষ করেছেন। এরপর বাচ্চারা আরো কঠিন কঠিন প্রশ্ন করা শুরু করবে, যেগুলোর উত্তর দিতে আপনি হিমশিম খেয়ে যাবেন।

অটঃ আমি প্রায়ই ভাবি দুই যুগ আগেও কি আপনি এমন লেখা লিখতেন? যদি লিখে থাকেন তাহলে তখন জানতে পারিনি কেন?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ হে পাণ্ডব।

আমি দুই যুগ আগে লেখার কথা চিন্তাও করি নি, যদিও সময়টা তখন আমার পক্ষেই ছিল। সুতরাং লিখলে কিরকম হতো সেটা বলা মুশকিল। সত্য কথা বলতে গেলে ২০০৯ সালে হঠাৎ এক অসুস্থতার পরে লেখার কথা মাথায় আসে, লিখতে বসে দেখলাম যে লেখালেখি আসলে একটা মানসিক ব্যায়াম, এতে মনের প্রশান্তি বাড়ে। এই রকম আরও কিছু মেন্টাল এক্সারসাইজ আছে। লেখার মধ্যে আত্মপ্রকাশের আনন্দ আছে মানুষের কাছে পৌঁছানোর একটা আনন্দ আছে। দুই যুগ আগে সেই ব্যাপারগুলো জানতাম না। লিভ এন্ড লার্ন, মাঝে মাঝে মনে হয় শিক্ষা সম্পূর্ণ করার জন্য দুইশ বছর বাঁচা উচিত।

তবে আমি যখন স্কুলে পড়তাম একদম নিচের দিকের ক্লাসে, তখন মাঝে মাঝে খাতার মধ্যে লিখতাম। আমার মা মনে আমার সেই লেখাগুলোর একমাত্র পাঠক ছিলেন। এসএসসিতে বাংলা প্রথম পত্রের নোট নিজেই তৈরি করেছিলাম। মোটামুটি সহজ ভাষার নোট - তার ফলাফল হচ্ছে বাংলা প্রথম পত্রে প্রায় ফেল করার দশা। স্কুলের স্যারেরা পরীক্ষার খাতায় কেন যেন সহজিয়া ভাষা ব্যবহার করাটা পছন্দ করেন না।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

সিরিজটা প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাম। অতি সম্প্রতি প্রথমবারের মত এক মেয়ের বাবা হয়েছি, আশা সিরিজটা অনেক কাজে দেবে। কয়েকটা পর্ব পড়ে মনে হল, এত কষ্ট সহ্য করতে হবে জেনেও ন্যাড়া বারবারই বেলতলায় যেতে চায়। আপনার রাজকন্যাদের জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

সজীব

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নজমুল আলবাব এর ছবি

এবার প্রশ্নের শুরু। সেসব নিয়েও লিখুন। এটাও কম কঠিন সময় না। বাপ যে গুগল মামুর থেকে অনেক অনেক অনেক কম জানে, আমার সেইকাল শুরু হয়ে গেছে। আপনারো হলো বলে।

শুভ আব্বাগিরি

তাসনীম এর ছবি

হাসি ঠিক এই কারণেই সিরিজ শেষ। ষষ্ঠপাণ্ডবও তাই বলেছে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

নট ফেয়ার! মন খারাপ

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তাসনীম এর ছবি

থামতে তো হয় এক সময়ে হাসি

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

গতকালটা আমার কোন কাজ ছিলনা। বসে বসে এই সিরিজটার ইবুক তৈরী করে ফেলেছি। দেঁতো হাসি

ডাউনলোড লিংক

-ইমতিয়াজ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।