ঝালমুড়ি : বেঁচে থাকুক ইতিহাস

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: শুক্র, ০৯/০৪/২০১০ - ২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলায় তেজগাঁ স্টেশনে হাঁটতে যাওয়া ছিল একটা নিয়মিত ঘটনা। মানুষ দেখতে আমার বরাবরই ভালো লাগে, স্টেশন মানেই বারো ভূতের জায়গা, নানান কিসিমের বদলোকও আছে সেখানে আবার গ্রাম থেকে সদ্য আসা নিরীহ ভালো মানুষও কম নয়। স্টেশনে অনেক রকম লোকজন থাকায় নানান মনোরঞ্জনের ব্যাপার থাকত, আমার সবচেয়ে পছন্দের ছিল বানরের খেলা। বানরকে তার মনিব বলত মুক্তিরা (মুক্তিবাহিনী) কিভাবে ভাঙ্গা ব্রীজ পার হয় তা দেখাও দেখি, বানরও লাঠি নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে মুক্তিদের মত ব্রীজ পার হয়ে যেত। মুক্তিরা তখনও জাতীয় বীর ওদের গল্প মানুষের মুখে মুখে ফেরে, ইতিহাস মনে হয় বেঁচে থাকে দেশের সাধারন মানুষের এইসব ছোটখাট ব্যাপারে, অফসেটে ছাপা চকচকে মোটা ইতিহাসের বইয়ের মলাটের ভেতর নয়। একটি নিয়মিত ও নিষ্ঠুর সেনাবাহিনীকে রুখে দেওয়া সেই দেশের সাহসী লোকের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের যেই চেতনাটা থাকা উচিত ছিল সেটা আজ নিশ্চিতভাবেই নেই। ইতিহাস কিভাবে ভুলানোর চেষ্টা করা হয়েছে তা আমি নিজের চোখেই দেখেছি, সেটা নিয়ে আমি স্মৃতির শহরের একটা লেখাও লিখেছি। এই বিষয়ে আমার আরো কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে এই লেখাটা।

কয়েকদিন আগে এক আলাপচারিতায় একজন জুনিয়র বন্ধু জিজ্ঞেস করেছিল যে মুক্তিযুদ্ধে শহীদেরা কি মূলত হিন্দু? এইসব প্রশ্নে আর বিস্ময় বা রাগ হয় না, আমি বোঝার চেষ্টা করি কারণটা কি, হয়ত আমরা এর প্রতিকার এখনো করতে পারব। এই জুনিয়র ছেলেটা কোন দল বা মতের সংগে যুক্ত নয়, কোন ফ্যাসিবাদী ইসলামী দলের এজেন্ডা নিয়েও আসেনি। আর দশজনের মত সে একজন আমজনতা। সাধারণ মানুষ ইতিহাসের চেয়ে চালের দাম নিয়েই বেশি চিন্তা করেন, তাই করা উচিত হয়ত। তাঁরা ইলিয়াস কাঞ্চন আর পপির নাম জানেন, কিন্তু বীর শ্রেষ্ঠদের নাম জানার প্রয়োজন বোধ করেন না। আমজনতা দেওয়ালে পিঠ না ঠেকলে রাস্তায় নামেন না, দুনিয়ার প্রায় সব দেশের মানুষই এই রকম, তাহলে শুধু আমরাই কেন এত মন ভোলা হলাম? জাতিগতভাবে আমরা কি আত্মসম্মানহীন নাকি আমরা বড়ই বিস্মৃতিপরায়ণ? ইরাকের যুদ্ধ কেন শুরু হয়েছিল সেটা এরই মধ্যে অনেক মার্কিনী ভুলে গেছে, কিন্তু আব্রাহাম লিংকনের গেইটিসবার্গের ভাষণ এখনও অক্ষয়। লজ্জার ইতিহাস ভোলার কারণ থাকতে পারে কিন্তু গৌরবের গাঁথা ভুলব কেন?

ইতিহাসের রক্ষক কারা? ইতিহাসের ধারক ও বাহকই বা কারা? ইতিহাস ভুলে যাওয়ার দায়টা কাদের? আমার মতে ইতিহাসের রক্ষক বা প্রতিপালক হচ্ছে রাষ্ট্র, অনেকটা পরিবারের বাবার মত। পরিবারের বাবার কাজ হচ্ছে সন্তানকে দাদার নামসহ ফ্যামিলি ট্রির সম্বন্ধে একটা ধারনা দেওয়া, বাবা যদি এই কাজটা না করেন তাহলে সন্তানকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এই সামান্য তথ্যগুলো পেতে হবে, গুগল সার্চ টার্চ করতে হতে পারে। কয়জন সন্তান এই কাজ করবে? কয়জন সন্তান পরিবারের ইতিহাস ও সম্মান রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে, তৈরি করবে ব্লগ আর ওয়েবসাইট? খুব বেশি নয়। ইতিহাসকে প্রতিপালন করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া রাষ্ট্রের অনেকগুলো কাজের মধ্যে অন্যতম। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের কোন সরকার সেই কাজ করেনি, একটা ইতিহাসের যত বড়ই ব্যপ্তি হোক না কেন, সেটাও কিন্তু আস্তে আস্তে বিস্মৃতিতে চলে যায়। কোন জাতিরই ক্যাশ (Cache) মেমরি খুব বিশাল নয়।সরকারের প্রয়োজন সেটাকে একটু একটু করে লালন করা যেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যেন তার মূল সুরটা ধারন করতে পারে। আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র বিদুৎ আর ফোনের বাণিজ্য করে; সরকার ব্যবসা করলে সেই ব্যবসার সার্ভিস কি হতে পারে তা দেশের লোডশেডিং আর ল্যান্ড লাইনের হাল দেখলেই বোঝা যায়। ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানী, যাদের ফোন সার্ভিস দেওয়ার কাজ দেওয়া হয়েছিল, তাদের বিজ্ঞাপন দেখলে মনে হয় ইতিহাসের রক্ষক হয়েছে তারাই। যেই দেশে সরকার ফোন বেচে আর ফোন কোম্পানী বেচে ইতিহাস, সেদেশের ফোন সার্ভিস আর ইতিহাস দুটোই বেশ মরচে ধরা হয়।

ইতিহাসের বাহক অবশ্যই সাধারন মানুষ। আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে যতই জ্ঞানী হই না কেন আমাদের জাতিগত জ্ঞান আর বুদ্ধি হোমার সিম্পসনের মানেরই। এটা সব দেশের বেলাতেই সত্য। আমরা টিভি দেখে, দশ মিনিট খবরে কাগজ পড়ে, গান শুনে আর গল্পগুজব করেই জ্ঞান পেতে চাই, ওয়েবসাইট আর বইপত্র ঘাঁটাঘাঁটি আমাদের পোষায় না। ছাব্বিশে মার্চ আর ষোলই ডিসেম্বর ইতিহাস গনমাধ্যমে আসে হেভি ডোজে, আমজনতা আবার হাই ডোজ বেশিক্ষণ রাখতে পারে না। সাধারন লোকের দরকার ইতিহাস অল্প ডোজে অনেক অনেক দিন ধরে। ঠিক যেই উপায়ে ইতিহাস তস্করের দল লুট করেছে জাতীয় সম্মান দীর্ঘদিন ধরে, ঠিক তার বিপরীত পথেই আস্তে আস্তে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে মুক্তিযুদ্ধকে। আজ থেকে চল্লিশ পয়তাল্লিশ বছর আগেও আমেরিকাতে বর্ণবাদ ছিল ব্যাপকভাবে বিশেষত দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে। এই দক্ষিন দিকে এতগুলো বছর কাটিয়েও আমি মারাত্মক কোন বর্ণবাদের সম্মুখীন হই নি। এই অল্প সময়ে কিভাবে স্যাম চাচা তার ভাস্তেদের শেখালেন কালোদের ঢিল মারা যে অন্যায় কাজ? আইনতো আছেই কিন্তু আইন করেই কি পুরোটা সম্ভব হয়েছে? মনে হয় না। স্কুলের ছোট বাচ্চাদের কারিক্যুলাম, বই পত্র, টিভি কার্টুনে কালো বাচ্চা (মেক্সিক্যান, চাইনিজ এবং এখন ভারতীয়) ঢুকিয়ে ঢুকিয়ে মনের ভেতরে গেঁথে দেওয়া হয়েছে যে সব মানুষই সমান। এইজন্যই এদেশে তরুনদের মধ্যে বর্ণবাদ বয়স্কদের চেয়ে কম। মানুষের মনে উপনিবেশ গড়ার কাজটা সরকার বাহাদুরের চেয়ে আর ভালো কেউ পারে না। উনারা যদি ফোন আর বিদুৎতের সমস্যটা মুক্তবাজারের হাতে ছেড়ে দেন আর যদি স্কুলের একদম নীচু ক্লাস থেকে অল্প ডোজে বাচ্চাদের জন্য ইতিহাস ব্লেন্ড করে দেন গল্পের আকারে তবে আমরা অনেক আত্মসম্মানী একটা জাতি পাব সামনের দিনগুলোতে, আর হ্যাঁ ফোন আর বিদুৎতের সমস্যারও অনেকখানি উত্তরণ হবে বলেই আমার ধারনা। তবে সুশাসন কিছুটা হলেও দরকার নইলে ইতিহাসও তেতো লাগতে পারে।

ইতিহাস নিয়ে লুকোচুরি কমদিন হয়নি। কিন্তু দিন পাল্টেছে, এখন প্রযুক্তির জোয়ারে তথ্যকে আটকে রাখতে পারে না কোন স্বৈরাচার বা গণতান্ত্রিক রাজপুরুষ। আমাদের নেতারাও বুঝে ফেলেছেন এই সত্য যদিও মাঝেমাঝে কোন উল্লুক ইউটিউব পর্যন্ত আটকে দিতে চায়। এখন যদি সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে টেনে তোলার, তাহলে ভবিষ্যতের অনেক অনাচার মনে হয় বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রথম প্রজন্মকে দৃষ্টিহীন বানিয়েছি, একটা একটা করে উদাহরণ দেখিয়েছি যে রাজাকার হলে কতটা “ফ্রিঞ্জ বেনেফিট” আর মুক্তিযোদ্ধা হলে না খেয়ে থাকা। লক্ষ খুনের হত্যার বিচার না করে বুঝিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশে মানুষের দাম কত সস্তা, অন্যায় করে পার পাওয়া কত সোজা। এই দেশে নব্য রাজাকার তৈরি হবে না তো কোথায় হবে?

এটা একটা অনিয়মিত সিরিজ হবে, বিচ্ছিন্ন ভাবনাগুলো প্রকাশ করার অপচেষ্টা মাত্র। মুক্তিযুদ্ধ থেকে হিন্দি ছবির নায়ক আমির আলী (আমার বাবা কখনো কোন নায়কের নাম মনে রাখতে পারতেন না ; ইদানীং আমারো একই সমস্যা শুরু হয়েছে) নিয়ে আলোচনা সবই করব এইখানে। আরো দুটো সিরিজ চলছে এখন, এই নিয়ে তিন নম্বর, মাথায় আরেকটা ঘুরছে। সচলে অনেকেই লেখায় ঋণখেলাপী হয়েছেন (জুবায়ের ভাই একবার একটা তালিকা দিয়েছিলেন এর) এই ভরসায় শুরু করলাম। দেখা যাক কি হয়।
###


মন্তব্য

অমিত এর ছবি

চলুক

রেনেট এর ছবি

সাথে আছি
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঝালমুড়ি খেতে এসে দেখি ইতিহাস হয়ে গেছি... চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ, সবাইকে..."অনিয়মিত" চলবে আশাকরি হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কাকুল কায়েশ এর ছবি

তাসনীম ভাই, খুব ভাল লাগল আপনার এই লেখাটা। 'ঝালমুড়ি' সিরিজটা চলুক নিয়মিতভাবে!
আচ্ছা বস, আমির আলীটা কে আবার? আমির খানের নাম ভুলে গেছেন, বলতে চাচ্ছেন?? গড়াগড়ি দিয়া হাসি

========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

আমার বাবা প্রায়ই .নায়ক নায়িকাদের নাম ভুলে যেতেন। আমির খান হয়ে যেত আমির আলী, শ্রীদেবীকে বলতেন ভদ্রমহিলা হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মামুন হক এর ছবি

সাথে আছি, থাকবো। সিরিজ চলুক স্যার হাসি

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নাশতারান এর ছবি

ঝালমুড়ি খুব ভালবাসি। শিরোনাম দেখে তাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম। ভেবেছিলাম ঝালমুড়ির ইতিহাস নিয়ে কিছু লিখবেন। এ প্রজন্ম পিজা, পাস্তা খেতে খেতে ঝালমুড়িকে ভুলে যেতে বসেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। হো হো হো

ঢুকে দেখি কাহিনি অন্য।

ইতিহাসকে জিইয়ে রাখার সক্রিয় প্রয়াস আসলে কতখানি আছে জানি না। স্কুলে যখন ছিলাম সে সময় রিটন ভাই ছোটদের কাগজ বের করতেন। ওটা বেশ শক্তিশালী একটা মাধ্যম ছিলো শিশু-কিশোরদের ইতিহাস বিস্মৃতি থেকে তুলে আনার ব্যাপারে।

একুশে ফেব্রুয়ারি, ছাব্বিশে মার্চ, ষোলই ডিসেম্বর এখন অবুদ্ধিজীবীদের জন্য কেবলমাত্র ছুটির দিন, ঘোরাফেরার দিন। আগেও হয়তো তাই ছিলো। কর্পোরেট সংস্কৃতির কল্যাণে এখন এটা বেশ একটা উৎসবের আমেজ পেয়েছে। থিম ভিত্তিক সাজপোশাকে ডেটিং, ফটোসেশন ইত্যাদি। এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে ঘটে যাওয়া তান্ডব এই উৎসবমুখরতারই নমুনা।

[ বানান বিষয়ক পাকনামিঃ সাধারণ, গণমাধ্যমে, তরুণ ]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বানানাপা,

তান্ডব> তাণ্ডব দেঁতো হাসি

একটা প্রশ্ন, আপনি টাইপো ধরেন না মনে হয়।

নাশতারান এর ছবি

তান্ডব আর তাণ্ডবের পার্থক্যই তো জানতাম না! Smiley
লেখার সময় ন হলে বড় করে আর ণ হলে ছোট করে লিখি।

আমি যে কী ধরি আর কী ধরি না নিজেই জানি না। যেগুলো চোখে লাগে সেগুলো বলি। কিছু কিছু ফসকে যায়। Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তাসনীম এর ছবি

শিরোনামটা একটু মিসলিডিং হয়ে গেছে মনে হয়, অন্তত এই লেখাটার জন্য। বানানগুলোর জন্য ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তাসনীম এর ছবি

শিরোনামটা একটু মিসলিডিং হয়ে গেছে মনে হয়, অন্তত এই লেখাটার জন্য। বানানগুলোর জন্য ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বাউলিয়ানা এর ছবি

১।
একবার কিভাবে যেন আবিষ্কার করলাম, একটা নির্দিষ্ট ঝালমুড়িওয়ালা থেকে ঝালমুড়ি কিনলে তার ঠোঙ্গায় অসাধারন হস্তাক্ষরের লেখা থাকে। এত সুন্দর যে আমি শুধু ঐ হাতের লেখার ষ্টাইলটা দেখার জন্য ঝালমুড়ি কিনতাম। যদিও ঠোঙ্গার এক পৃষ্ঠায় তেমন কিছু লেখা থাকত না, কিন্তু প্রায়ই একটা ইংরেজী রচনার কিছু অংশ বা একটা বাংলা বড় প্রশ্নের উত্তর লেখা থাকত।

২।

বানরকে তার মনিব বলত মুক্তিরা (মুক্তিবাহিনী) কিভাবে ভাঙ্গা ব্রীজ পার হয় তা দেখাও দেখি, বানরও লাঠি নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে মুক্তিদের মত ব্রীজ পার হয়ে যেত।

ব্যাপারটা দারুন লাগল। আমি ছোট বেলায় বানরের খেলা, ভালুকের খেলা এগুলো দেখতাম। কখনও অবশ্য এমন শুনিনি। তবে কোন এক আজব কারনে বেশিরভাগ বানর আর ভালুকের নাম হতো "বাহাদুর"।

৩।
সিরিজ অনিয়মিত হলেও চলুক।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আমি ছোট বেলায় বানরের খেলা, ভালুকের খেলা এগুলো দেখতাম। কখনও অবশ্য এমন শুনিনি।

এর কারণ ইতিহাস আস্তে আস্তে হারিয়ে যায় লালন না করলে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মূলত পাঠক এর ছবি

ঝালমুড়ি ভেলপুরি রেলগাড়ি, সবই ভালো।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

>কাহিনী

চলুক

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

_প্রজাপতি এর ছবি

তাসনীম ভাই আপনার লেখা আমার বরাবরই ভালো লাগে।

এই সিরিজের পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ।
-------------------------------------------------
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ প্রজাপতি।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তাসনীম এর ছবি

আমি নিক এবং আইপি ব্যানের পক্ষে নই। "পথেপথিক" ব্যান হওয়ার মত কিছু করেন নি। অন্তত আমার এই ব্লগে।

মন্তব্যগুলো রিলেভেন্ট নয় ঠিকই, কিন্তু মডারেশন পার হয়েই এসেছে ওগুলো। মডুদের ভুলে আসলে মুছে দিতে পারেন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

নাহ এগুলো থাকুক। বিশুদ্ধ বিনোদন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শরতশিশির এর ছবি

মুর্শেদ, এখন পর্যন্ত হয়তো আমরা ক'জন বলেছি মাত্র। এরপর যদি অন্যরা আসে এবং আগেরবারের মতো হয়, তখন কিন্তু ব্যাপারটা মাত্রা ছাড়া হয়ে যাবে। আমি আমার আশঙ্কার কথাটা জানিয়ে গেলাম শুধু কারণ রিপিটেইশান দেখতে আমি (এবং বিশেষ করে, এই পোস্টে) আগ্রহী নই। হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঠিকি বলেছেন। আমি দেখছি বিষয়টা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শরতশিশির এর ছবি

হে, হে - আপনার জন্য খালি উপরের মন্তব্যটুকু দ্রষ্টব্য। ''লেজ দেখে যায় চেনা'', তাই না? চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

নিবিড় এর ছবি
তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুর্দান্ত এর ছবি

সুচিন্তিত ও সুলিখিত পোস্ট। সঠিক ঐতিহাসিক তথ্য সহযলব্ধ করতেই হবে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, এর নায়ক ও খলনায়কদের পরিস্কার করে চেনাতে হবে। সহমত। স্কুলের টেক্সট বই আর গনমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে সঠিক ইতিহাস প্রচার করা যেতে পারে। সরকারকেও, বেসরকারি প্রচেষ্টাতেও। নতুন প্রজন্মকে তথ্য দেয়া ও সচেতনতা বাড়ানো , মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের সার্বভোমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা সেখানো জরুরী।

তবে একটা কথা। একটি প্রজন্মকে আগের প্রজন্মের মত দেশপ্রেমী হতে বাধ্য করার প্রচেষ্টা ধর্মীয় মৌলবাদের মতই বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। আমাদের আগের প্রজন্ম চাইতো আমরা ধার্মিক হই। তাই স্কুলের টেক্সট বই আর গনমাধ্যমে যাকে বলে ধুমাইয়া ধর্মপ্রচার করা হয়েছে। সেটা কি ভাল হয়েছে? আমরা তথ্য সহজলভ্য করতে পারি, কিন্তু সেখান থেকে নতুন প্রজন্ম কি নেবে আর কি ফেলে দেবে, সেটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

---
মার্কিন বর্ণবাদ নিয়ে যে প্রগতির কথা আপনি বলছেন, তাতে কিছু সত্য আছে। লিঞ্চিং হচ্ছে না, কালো-সাদাতে এক বাসে চলছে, রাষ্ট্রপ্রধান ও কালো। কিন্তু এটাও তো সত্য যে সারা আমেরিকায় যতজন কালো লোক কলেজে যায়, তার চাইতেও ঢের বেশী কালো লোক জেলের ভেতরে থাকে। সাদা লোকেরা বন্দুক-তামাক-মদ টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে বড় সুপার মার্কেট খুলে বিক্রী করতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি একজন কালো র্যাপার টিভিতে শুধু 'গান' 'ডোপ' এই শব্দগুলো উচ্চারন করা মাত্র বিপদে পড়ে।
----
যেই দেশে সরকার ফোন বেচে আর ফোন কোম্পানী বেচে ইতিহাস, সেদেশের ফোন সার্ভিস আর ইতিহাস দুটোই বেশ মরচে ধরা হয়।

আমেরিকায় শুনেছি ৪ জুলাই বেশ বড় বানিজ্যের সময়। মল সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে প্লেবয়,বাডওয়াইজার এ দিনে বেশ বড় বড় সব দেশপ্রেমী শ্লোগানে বানিজ্য করে। এগুলোতে আমেরিকার ইতিহাসের কোন অপমান হয় কি না, বলতে পারছি না, তবে এই দেশপ্রেমের লেবেলটি সাটলে যে বিক্রী বাড়ে এটা নিশ্চিত। আমেরিকায় হয় বলে সেটাই সঠিক তাও বলছি না। বলতে চাইছি যে দেশপ্রেম নিয়ে বানিজ্যের প্রশ্নে একটি ডিম-আগে-না-মুর্গী' বিতর্ক প্রযোজ্য। এই দেশপ্রেম এর তকমা এঁটে আমাদের দেশে সাবান-টেলিফোন-গুড়ামশলা বিক্রী হচ্ছে - এটি নতুন কোন (ধরে নেই বেঠিক) দেশপ্রেমের ধারনা দেয়, নাকি মানুষের মনে যে দেশপ্রেম আগে থেকেই আছে সেটাকে ব্যাবহার করে, সেটা যদি কেউ খোলাসা করে দিতে পারতো, ভাল হত। আগে 'পরকালে নেকি হাসিল হইবে' এই বলে মাইকিং করলে পাবলিকের ট্যাঁক ঢিলে করা যেত, সেটা সম্ভব হত কারন আমরা স্বীকার করি আর নাই করি, জাতী হিসাবে আমরা ধর্মভীরু। আমারতো মনে হয় আমাদের দেশত্ববোধ বেশ টনটনে বলেই আজকাল স্বাধীনতা-একুশ বলে সাবান-গুড়া মশলা বেচা যায়।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

তবে একটা কথা। একটি প্রজন্মকে আগের প্রজন্মের মত দেশপ্রেমী হতে বাধ্য করার প্রচেষ্টা ধর্মীয় মৌলবাদের মতই বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। আমাদের আগের প্রজন্ম চাইতো আমরা ধার্মিক হই।

দেশপ্রেমী হতে বাধ্য নয়, শুধু সঠিক ইতিহাস জানা দরকার। ছোটবেলা থেকে শিখলে সেটা অনেক গভীরে ঢুকে।

কিন্তু এটাও তো সত্য যে সারা আমেরিকায় যতজন কালো লোক কলেজে যায়, তার চাইতেও ঢের বেশী কালো লোক জেলের ভেতরে থাকে। সাদা লোকেরা বন্দুক-তামাক-মদ টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে বড় সুপার মার্কেট খুলে বিক্রী করতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি একজন কালো র্যাপার টিভিতে শুধু 'গান' 'ডোপ' এই শব্দগুলো উচ্চারন করা মাত্র বিপদে পড়ে।

বর্ণবাদ পুরো উচ্ছেদ হয়নি, কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে এসেছে অল্পদিনেই। আফ্রিক্যান আমেরিকানদের কলেজে পড়ার সুযোগ কিন্তু কম নেই। আমরা বাংলাদেশ থেকে সামান্য কয়টা ডলার নিয়ে এসে এদেশে পড়াশুনা চালাতে যদি পারি তবে আফ্রিক্যান আমেরিকানদেরও পারা উচিত। প্রচুর সরকারী সুবিধা আছে ওদের। এই জন্য বর্ণবাদকে পুরো দোষ দেওয়া যায় না।

আমেরিকায় শুনেছি ৪ জুলাই বেশ বড় বানিজ্যের সময়। মল সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে প্লেবয়,বাডওয়াইজার এ দিনে বেশ বড় বড় সব দেশপ্রেমী শ্লোগানে বানিজ্য করে।

দেশপ্রেমী শ্লোগান বেশি দেখিনি, কিন্তু অনেক পণ্য আসে সত্যি। মার্কিন পতাকার ছবি দেওয়া আন্ডারওয়্যার তার একটি। কিন্তু দেশের মোবাইল ফোনের মত ইতিহাস বেচা বিজ্ঞাপন বা দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট এদেশে কেউ করেনি বলেই আমার ধারনা। এরা নিজেদের ইতিহাস মোটামুটি জানে, তাই শেখাতে হয় না বেশি।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুর্দান্ত এর ছবি

বর্ণবাদ পুরো উচ্ছেদ হয়নি, কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে এসেছে অল্পদিনেই।

সহনীয়তা একটি আপেক্ষিক বিষয়। বাংলাদেশে আজতক রাজাকারদের সহ্য করা হয়েছে, তাই বলে তো বলা যাবে না যে রাজাকার নির্মুল হয়েছে। মাথার ওপরে পানি এক ইঞ্চি যা, একশো ফুটও তাই। আমেরিকায় বর্ণবাদ এর অবনতি নিয়ে জাতিসঙ্ঘ সাম্প্রতিক প্রতিবেদন দেখুন এখানে।

এরা নিজেদের ইতিহাস মোটামুটি জানে, তাই শেখাতে হয় না বেশি।
এটাও ঠিক সত্য কথা হল না। তারা নিজেদের ইতিহাসের একটি সংস্করন জানে। ম্যাঙ্গো আমেরিকান এখনো ইন্ডিয়ানদের ভিলেন আর জন ওয়েইনকে হিরো ভাবে। ভিয়েতনাম, কোরিয়ার আমেরিকানদের অনাচারের গল্পও নিশ্চয়ই প্রাথমিক স্কুলের পাঠসূচীতে নেই। আর জানতে পেলাম যে কলেজ পড়ুয়া আমেরিকানদের শতকরা ৭৬% গেটিসবার্গ ঘোষনার উত্তর ঠিক করে দিতে পারে না। বিস্তারিত পড়ুন এখানে।

যদি আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের তুলনা না করতে চান, তাহলে ভিয়েতনাম বা কিউবার বা ঘানার মত দেশগুলোর সাথে তুলনা করা হোক। তবে সেটা করার আগেও বোধকরি আমাদের দেশে একটি ছোটখাটো সামাজিক পরিবর্তন আসতে হবে। প্রশ্ন হল, এই সামাজিক পরিবর্তন কি হঠাত ক্রান্তি বা এক/দুই প্রজন্মে আসে?

আপনার লেখার বিষয়টি ভাল লেগেছে তাই বিতর্ক করছি, আশা করি ভুল বুঝবেন না।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

সহনীয়তা একটি আপেক্ষিক বিষয়। বাংলাদেশে আজতক রাজাকারদের সহ্য করা হয়েছে, তাই বলে তো বলা যাবে না যে রাজাকার নির্মুল হয়েছে।
-- --
-- --
আর জানতে পেলাম যে কলেজ পড়ুয়া আমেরিকানদের শতকরা ৭৬% গেটিসবার্গ ঘোষনার উত্তর ঠিক করে দিতে পারে না।

আমেরিকার উদাহরণ এসেছে মানুষের মনোজগতে উপনিবেশ প্রসংগে। আমি কোন স্ট্যাটিস্টিক্সে যাইনি, আমার কাছে এই দেশকে বর্ণবাদী মনে হয় না। দেশের সাধারণ মানুষ আর রাষ্ট্রযন্ত্রের কার্যকলাপ এক নয়। এটা আমেরিকার জন্যও সত্যই বাংলাদেশের জন্যও তাই। বাংলাদেশে রাজাকারের উত্থান হয়েছে কিন্তু তা বলে দেশের সব মানুষকে রাজাকার বলা যায় না।

গেইটিসবার্গ ঘোষণার কথা আমিও মাস্টার্স করার সময় শুনি, সহপাঠি বন্ধুদের কাছ থেকেই। অনেকেই দেখতাম মুখস্থ বলতে পারে এটা।

আমি আপনার দেওয়া কোন লিংক অস্বীকার করছি না কিন্তু আমার কোন লেখাই স্ট্যাসিস্টিক্যাল ফ্যাক্টের উপর ভিত্তি করে লেখা নয় বরং আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উপর।

ভিয়েতনাম, কোরিয়ার আমেরিকানদের অনাচারের গল্পও নিশ্চয়ই প্রাথমিক স্কুলের পাঠসূচীতে নেই।

ওদের না থাকারই কথা, এটা ওদের গৌরবের গল্প না। আমার পয়েন্টটা সেইখানেই, আমরা কেন আমাদের গৌরবটা ভুলে যাব।

তবে সেটা করার আগেও বোধকরি আমাদের দেশে একটি ছোটখাটো সামাজিক পরিবর্তন আসতে হবে। প্রশ্ন হল, এই সামাজিক পরিবর্তন কি হঠাত ক্রান্তি বা এক/দুই প্রজন্মে আসে?

এই পরিবর্তনটা আনতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা কয়েকটা প্রজন্মকে ধারন করতে হবে। একটা জাতির নিজের পেছনটা জানা খুব দরকার, বর্তমানটা অতীতেরই একটা প্রজেকশন। রাষ্ট্রীয় একটা পৃষ্ঠপোষকতা দরকার ম্যাস জনসাধারণকে ইতিহাস শেখাতে হলে।

আপনার লেখার বিষয়টি ভাল লেগেছে তাই বিতর্ক করছি, আশা করি ভুল বুঝবেন না।

অবশ্যই নয়।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

তাসনীম ভাইয়া,পড়তে খুব ভাল লাগলো।চরম সত্য কথা সব গুলো।

মিতু
রিফাত জাহান মিতু

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ মিতু।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চমৎকার লেখা। সিরিজ অনিয়মিত হলেও চলুক। (যদিও আশা থাকবে নিয়মিত যেনো চলে) হাসি

তাসনীম এর ছবি

চলবে আশাকরি, বিভিন্ন বিষয়ে লিখব।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

পড়লাম। ভালো লাগলো। তোমার লেখার ধরণ বদলাচ্ছে আস্তে আস্তে। মনে হচ্ছে খোলোস ছাড়িয়ে আসল তুমি বেড়িয়ে আসছো।

--------------------------------------------------------------------------------

শরতশিশির এর ছবি

সহমত। আমি বলেছি সেটা তাসনীম ভাইকে!

কি এখন বিশ্বাস হলো তো? চোখ টিপি

অফটপিকঃ ভাবি, আমি আপনাকে ফোন করেছিলাম। নাম্বারটা ভুলে সেইভ করি নি, তাই তাসনীম ভাইয়ের কাছে আবার চেলাম কিছুক্ষণ আগে। পেলেই ফোন করবো। হাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

তাসনীম এর ছবি

তাইতো দেখছি চোখ টিপি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাবী।

মনে হচ্ছে খোলোস ছাড়িয়ে আসল তুমি বেড়িয়ে আসছো।

সেই আসল আমিটা কি ভালো না খারাপ? চোখ টিপি

আমিও শিশুপালন বন্ধ করে অন্য কিছু লিখতে চাচ্ছি, লোকে টাইপ ক্যাস্ট করে দিবে। তাছাড়া বাসায় শিশুপালন ব্লগেও শিশুপালন, আর পারি না হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বর্ষা এর ছবি

"বানরকে তার মনিব বলত মুক্তিরা (মুক্তিবাহিনী) কিভাবে ভাঙ্গা ব্রীজ পার হয় তা দেখাও দেখি, বানরও লাঠি নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে মুক্তিদের মত ব্রীজ পার হয়ে যেত। "---- ব্যাপারটা জানতাম না এবং দারুন লাগল।

বিষন্ন সুরের আত্মকথন ----চলুক।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বর্ষা ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মৃত্তিকা এর ছবি

আপনার বিশ্লেষণ খুব ভালো লাগলো। আপনার লেখা বরাবরই ভালো লাগে কিন্তু সব সময় পড়া বা মন্তব্য দেয়া সম্ভব হয় না।
উদ্ধৃতিঃ
"উনারা যদি ফোন আর বিদুৎতের সমস্যটা মুক্তবাজারের হাতে ছেড়ে দেন আর যদি স্কুলের একদম নীচু ক্লাস থেকে অল্প ডোজে বাচ্চাদের জন্য ইতিহাস ব্লেন্ড করে দেন গল্পের আকারে তবে আমরা অনেক আত্মসম্মানী একটা জাতি পাব সামনের দিনগুলোতে"
-সহমত।
লিখুন এই সিরিজ এবং আপনার স্মৃতির শহর।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ মৃত্তিকা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

লেখা ভাল অনেকেই বলেছেন। সেদিকে আর না যাই। কিছু পয়েন্ট দেখি।

১। ফোন আর বিদ্যুৎ সরকারের হাতে দেয়ায় বেহাল দশা, আবার মুক্তবাজারে দিলে তারা ইতিহাসে হাত রাখতে যায়। তাহলে উত্তরণের পথ …

২। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের দেশের দুটো প্রধান দল ব্যক্তিগত করে ফেলেছে। এরা পালাক্রমে মসনদে বসছে। এদের হাতে ইতিহাস টেনে তোলার দায়িত্ব দিলে নিজেদের মতো করে টেনে তুলবে। ফলে উত্তরণের পথ এখানে ও আসে না।

৩। আমাদের সমস্যা হচ্ছে হেজামোনির সমস্যা। শেখ মুজিবকে একা আওয়ামী লীগের সম্পত্তিতে পরিণত করা উচিত নয়। একাত্তরে জিয়ার অবদান সেইরকম বি.এন.পি. –এর একার নয়। একাত্তর পরবর্তী শেখ মুজিব এবং জিয়ার রাজনৈতিক দলের অধীনে ঘটা রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসা উচিত।রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ইতিহাসের কলংক ঢেকে রাখার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা। যেহেতু সরকার মানেই এই দুটি দলের মিউজিক্যাল চেয়ার – তাই দুই দলের উচিত রাজনৈতিক পীর-তত্ত্ব আপসারণ করা। ইতিহাসকে নির্মোহ হতে দিলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই- এটা বুঝে নেয়া জরুরি। আর যুদ্ধাপরাধের শাস্তি এতোদিন হয় নাই। এটাই যথেষ্ঠ লজ্জার। এই লজ্জা আর দীর্ঘস্থায়ী করার দরকার একদমই নেই।

৪।আম্রিকায় বর্ণবাদ পুরাপুরি যায় নাই। প্রতিপক্ষ পাল্টাতে পারে। আগে ছিল আফ্রো-আম্রিকানরা, এখন মুসলমানেরা। আর দক্ষিণে গরীবদের মধ্যে আফ্রো-আম্রিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ (দুর্দান্ত ভাই কিছুটা ব্যাখ্যা করেছেন)। আম্রিকান আম-জনতাকে এক্কেবারে অরাজনৈতিক মনে করাও ভ্রান্ত ধারমা।

৫। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র শিবির নিষিদ্ধ করা উচিত। এদের প্রধান সারির নেতারা যুদ্ধাপরাধের সাথে সরাসরি যুক্ত। ইতিহাস ভুলে যাওয়ানোতে এদের অবদান কম নয়। নব্য রাজাকার তৈরির মেশিন এই দল। এতে কোন দ্বিমত নাই। এদের রাজনীতি বন্ধ করতে পারলে সুফল আসবে তাড়াতাড়ি।

পয়েন্টগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ শুভাশীষ।

১। ফোন আর বিদ্যুৎ সরকারের হাতে দেয়ায় বেহাল দশা, আবার মুক্তবাজারে দিলে তারা ইতিহাসে হাত রাখতে যায়। তাহলে উত্তরণের পথ …

হাত রাখতে দিবে না, ব্যবসায়ীদের উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। লাগাম ছাড়া ব্যবসার জন্য আজকে মার্কিনীদের এই দশা।

২। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের দেশের দুটো প্রধান দল ব্যক্তিগত করে ফেলেছে। এরা পালাক্রমে মসনদে বসছে। এদের হাতে ইতিহাস টেনে তোলার দায়িত্ব দিলে নিজেদের মতো করে টেনে তুলবে। ফলে উত্তরণের পথ এখানে ও আসে না।

শুধু ইতিহাস নয় পুরো দেশের দায়িত্বই এদের হাতে। বাইরে থেকে কেউ ঠিক করবে না এদের যতক্ষণ পর্যন্ত ভেতরের চাপে এরা না শুধরায়।

৩। আমাদের সমস্যা হচ্ছে হেজামোনির সমস্যা। শেখ মুজিবকে একা আওয়ামী লীগের সম্পত্তিতে পরিণত করা উচিত নয়। একাত্তরে জিয়ার অবদান সেইরকম বি.এন.পি. –এর একার নয়। একাত্তর পরবর্তী শেখ মুজিব এবং জিয়ার রাজনৈতিক দলের অধীনে ঘটা রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসা উচিত।রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ইতিহাসের কলংক ঢেকে রাখার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা। যেহেতু সরকার মানেই এই দুটি দলের মিউজিক্যাল চেয়ার – তাই দুই দলের উচিত রাজনৈতিক পীর-তত্ত্ব আপসারণ করা। ইতিহাসকে নির্মোহ হতে দিলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই- এটা বুঝে নেয়া জরুরি। আর যুদ্ধাপরাধের শাস্তি এতোদিন হয় নাই। এটাই যথেষ্ঠ লজ্জার। এই লজ্জা আর দীর্ঘস্থায়ী করার দরকার একদমই নেই।

সহমত।

৪।আম্রিকায় বর্ণবাদ পুরাপুরি যায় নাই। প্রতিপক্ষ পাল্টাতে পারে। আগে ছিল আফ্রো-আম্রিকানরা, এখন মুসলমানেরা। আর দক্ষিণে গরীবদের মধ্যে আফ্রো-আম্রিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ (দুর্দান্ত ভাই কিছুটা ব্যাখ্যা করেছেন)। আম্রিকান আম-জনতাকে এক্কেবারে অরাজনৈতিক মনে করাও ভ্রান্ত ধারমা।

আমেরিকাতে বর্ণবাদ যায় নি, সেটা আমিও মনে করি। কিন্তু এখনো বিপদসীমার অনেক নীচে বলেই আমার ধারনা।

৫। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র শিবির নিষিদ্ধ করা উচিত। এদের প্রধান সারির নেতারা যুদ্ধাপরাধের সাথে সরাসরি যুক্ত। ইতিহাস ভুলে যাওয়ানোতে এদের অবদান কম নয়। নব্য রাজাকার তৈরির মেশিন এই দল। এতে কোন দ্বিমত নাই। এদের রাজনীতি বন্ধ করতে পারলে সুফল আসবে তাড়াতাড়ি।

সহমত।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।