অণোরণীয়ান থেকে মহতোমহীয়ান(৩)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: মঙ্গল, ১৪/০৪/২০০৯ - ৯:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মহাবিশ্বের প্রসারন টসারণ নিয়ে বলতে গেলে আমাদের এই বুড়ো আইনস্টাইন আর তাঁর জেনেরাল রিলেটিভিটি লাগবেই৷ এটাই লার্জ স্কেলে মহাবিশ্ব বর্ণনার সবচেয়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে ভালো থিওরি৷ যদিও এই থিওরিতে কতগুলো সিঙ্গুলারিটি আছে যেখানে তত্ত্বটি আর চলে না, তবে সেখানে কোন্ সূত্র চলবে এখনো জানা নেই৷ প্রচন্ড ঘনত্বে বা অত্যন্ত ক্ষুদ্র সাইজে কোয়ান্টাম লাগাতে হবে, সেই তত্ত্বের এখনো ক্লাসিকালধর্মী জেনেরাল রিলেটিভিটির সঙ্গে আড়ি৷ কিভাবে এদের মধ্যে মিলমিশ ঘটানো হবে তা এখনো জানা নেই, তবে খুব লড়ছেন বিজ্ঞানীরা, দিনরাত লড়ছেন৷ আপাতত এইটি মানে এই জাঁদরেল জেনেরালকে আঁকড়েই আমাদের এগোতে হবে৷

জেনারেল রিলেটিভিটি হলো স্পেশালের জেনেরালাইজড ভার্সন, অনেক সম্প্রসারিত৷ এতে সমস্ত রেফারেন্স ফ্রেমেদেরই নেয়া হলো, ত্বরিত বা ত্বরণহীন৷ সমস্ত ফ্রেমেই পদার্থবিদ্যার সূত্র সমূহ একই থাকবে এই বলা হয়েছিলো এই থিওরিতে৷

এর গাণিতিক ভিত্তি বেশ জটিল, কিন্তু ধারনাটা কথায় বলা সম্ভব৷ স্পেশাল ও জেনেরাল রিলেটিভিটি অনুসারে স্পেস আর টাইমের মধ্যে মিলমিশ ঘটিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে স্পেসটাইম কন্টিনিউয়াম৷ এই মহাবিশ্বে যা কিছু ইভেন্ট সবই ঘটছে স্পেসটাইম কন্টিনিউয়ামের কোনো না কোনো বিন্দুতে৷ এদের মধ্যে যে পার্থক্য তা হলো ds2= -c2dt2+dr2 পিথাগোরাসের সূত্র, কিন্তু এতে টাইম ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে,সময়ের সঙ্গে আলোর বেগ c দিয়ে গুণ করে নিয়ে ইউনিটের সামাল দেয়া হয়েছে৷

তো, আইনস্টাইনএর তত্ত্ব কইলো সমস্ত বস্তু যার মাস বা ভর আছে, তা এই স্পেসটাইম কন্টিনুয়ামে তৈরী করে খোঁদল যারে এই এরা বলেন স্পেসটাইম কার্ভেচার৷ তারই ফলে আশেপাশের সরলরেখায় চলা বস্তুদের পথকে মনে হয় বক্রপথ, আসলে কিন্তু ওরা সোজাপথেই চলে৷ গ্রাভিটেশন বলে যাকে আমরা বলি তা হলো গিয়ে এই স্পেসটাইমের কার্ভেচারের ফলে বস্তুদের চলার পথ বেঁকে যায় বলে৷ অর্থাত্ এই গ্রাভিটেশন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বা স্ট্রংবা উইক ফোর্সের মতন কোনো ফোর্স নয়, এটা স্রেফ স্পেসটাইমের একটা প্রপার্টি৷

এত বৈপ্লবিক তত্ত্বকে লোকে প্রথমে নিতে চায় নি৷ কিন্তু পরে আলোর বেঁকে যাওয়া দেখে তবে মেনেছে৷ এখন তো গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং বলে একটা গবেষণার ক্ষেত্রই খুলে গেছে এই আলোর বেঁকে যাওয়া নিয়ে৷

ক্লাসিকাল নিউটনিয়ান গ্রাভিটেশনে বলা হয় গ্রাভিটেশন হলো গিয়ে ফোর্স যা কিনা ভরযুক্ত বস্তুদের উপরে প্রযোজ্য৷ এই মহাকর্ষবল এদের ভরের গুণফলের সমানুপাতী আর দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতী৷ কিন্তু আলো যার রেস্টমাস নেই, সে ফোটন বা ওয়েভ যেভাবেই দেখিনা কেন, সেটা কিছুতেই নিউটনীয় মহাকর্ষ অনুভব করবে না৷ কিন্তু আইনস্টাইনের জেনেরাল রিলেটিভিটি অনুযায়ী গ্রাভিটেশন তো বল নয়, স্পেসটাইমে তৈরী হওয়া কার্ভেচার! সেই কার্ভেচারে আলো পড়লে তার পথও যাবে বেঁকে!
ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটন পুর্ণ সূর্যগ্রহণের সময়ের সূর্যের কাছের তারার ছবি নিয়ে দেখিয়ে দিলেন তারার আলোর পথ গিয়েছে বেঁকে৷ তাছাড়া বুধগ্রহের অপসূর মেপেও আইনস্টাইনেরই সমর্থন পাওয়া গেলো! এখন তো গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং নিয়ে কত কাজই হচ্ছে প্রত্যেকদিন!

গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং থেকেই তো সমর্থন পাওয়া গেলো না দেখা ডার্ক ম্যাটারের! দেখা গেলো আইনস্টাইন রিং৷ খুউব দূরের গ্যালাক্সিদের একাধিক ইমেজ দেখা গেলো যা আগে যায় নি!

আসলে এই গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং জিনিসটা কি? ধরা যাক কোনো খুব দূরের, দশ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের আলোক-উত্স থেকে আলো আসছে আমাদের দিকে৷ এই উত্স আর আমাদের মাঝখানে রয়েছে একটা খুব ম্যাসিভ গ্যালাক্সিপুঞ্জ! দূরের আলো এর পাশ দিয়ে আসার সময় এই ম্যাসিভ গ্যালাক্সিপুঞ্জের দ্বারা তৈরী হওয়া স্পেসটাইমের কার্ভেচারে পড়বে আর বেঁকে যাবে৷ অনেকটা লেন্সের মধ্য দিয়ে আসার সময় যেমন আলো বেঁকে যায় আর সেই যাওয়া আলোকে অনুসরণ না করতে পেরে আমরা সোজা দেখি আর একাধিক ইমেজ দেখি৷ এপ্রায় ঠিক সেইরকম ব্যাপার, তবে এক্ষেত্রে লেন্সের কাজটা করছে স্পেসটাইমের কার্ভেচার! ফোরগ্রাউন্ডের গ্যালাক্সিপুঞ্জের ডানপাশ বাঁপাশ দিয়ে বেঁকে আসা দূরের উত্সের আলো যখন আমাদের টেলিস্কোপে পড়বে তখন টেলিস্কোপ একাধিক ইমেজ দেখাবে ঐ দূরতর বস্তুর৷ এখানে ডায়াগ্রাম দিয়ে দেখাতে পারলে সুবিধে হতো আমাদের বুঝতে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে এত ভালোভাবে অ্যালাইন্ড থাকে যে পুরো একটা রিং দেখা যায় দূরের উত্সের ইমেজের, ঐ ফোরগ্রাউন্ড গ্যালাক্সির চারপাশ জুড়ে৷ একে বলে আইনস্টাইন রিং।

কতটা বেঁকে গেলো আলো তা মেপে অংক কষে বার করা যায় ঐ ম্যাসিভ বস্তুটি, যে লেন্সের কাজ করলো তার ভর( mass )কত৷এই দেখতে গিয়ে লোকে তাজ্জব! দেখা গেলো ঐ গ্যালাক্সিপুঞ্জে যত গ্যালাকসি দেখা যাচ্ছে তাদের ভরটর সব যোগটোগ দিয়ে যা পাওয়া যাচ্ছে তা লেন্সিং থেকে ক্যালকুলেট করা ভরের চেয়ে অনেক অনেক কম৷

তখনি সন্দেহ হলো তাহলে কি যা দেখা যাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশী ভর আছে অন্য কিছুতে? ব্রাইট অংশগুলোই সব নয়? অনেক ডার্ক ম্যাসিভ অংশ আছে যা কিনা কোনো ই এম ওয়েভ পাঠায় না? কিন্তু গ্র্যাভিটি তো লুকাতে পারবে না! ম্যাস থাকলেই স্পেসটাইমে কার্ভেচার তৈরী হবে! আগে সত্তরের দশকে গ্যালাক্সিদের রোটেশন কার্ভ থেকেও সন্দেহ হয়েছিলো যে হয়তো ডার্ক ম্যাটার আছে, এখন এই লেন্সিং থেকে ধারণাটা আরো জোরদার হলো৷


মন্তব্য

শেহাব [অতিথি] এর ছবি

ভাল লেগেছে!

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

Tusar এর ছবি

আপনার এই সিরিজের লেখাগুলা চমতকার। Science Fiction আমার সবসময় ফেভারিট। Brief History of Time বইটা কয়েকবার পরেছি। পুরাপুরি বুঝিনা কিন্তু ভালো লাগে। আশাকরি এই সিরিজেও টাইম নিয়ে কিছু থাকবে।

তুলিরেখা এর ছবি

থাকবে তুষার, ইচছা আছে সবই অল্প অল্প করে দেবার। তবে কিনা সময়াভাবে অনেক সময় ইচছা থাকলেও অনেক কিছু করা হয় না। আর পাঠকদের বোর করতে চাই না বলে অনেক সময় থেমে যাই।
আপনার ভালো লাগায় ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

শিক্ষানবিস এর ছবি

খুব ভাল আগাচ্ছে। মহাকর্ষীয় লেন্সিং এর ব্যাপারটা জেনে বিস্মিত হয়েছিলাম। এখানে পড়ে আবারও ভাল লাগল। গত বছর দ্বৈত আইনস্টাইন বলয় খুঁজে পাওয়া নিয়ে একটা খবর পড়েছিলাম। ঐটা বাংলায় লিখেও রেখেছিলাম। এইখানে আছে:
http://bigganpuri.wordpress.com/2008/02/21/dual-einstein-ring/

বুধ গ্রহের অনুসূর আগায় নাকি অপসূর আগায়। আমি তো অনুসূর আগায় বলে জানতাম। অবশ্য অনুসূর আগালে কি অপসূরেরও আগানোর কথা? প্যাচ লেগে যাচ্ছে। আমার কিন্তু মনে হচ্ছে শুধু অনুসূরেরই আগানোর কথা।

আচ্ছা জেনারেল রিলেটিভিটির ম্যাথ তথা ডিফারেনশিয়াল জিওমেট্রি বুঝতে হলে কি থেকে শুরু করা উচিত? টিপস দ্যান।

-------------------------------------------------------------------------
আমার এখনও জন্ম হয়নি। খুব চেষ্টা করছি জন্মাতে। কিন্তু পৃথিবী বলছে, সে আমাকে নেবে না।

তুলিরেখা এর ছবি

মহাকর্ষীয় লেন্সিং সত্যি ওয়ান্ডারফুল ব্যাপার।
অনুসূর আগালে অপসূর কিকরে থেমে থাকবে?
আপনি কি মাইসনার,থর্ন, হুইলারের জেনারেল রিলেটিভিটি বইটা দেখেছেন? খুবই ভালো বই। অঙ্কগুলোর জন্য অবশ্য শুটজ ( Bernard F. Schutz) এর বইটিও ভালো।
http://www.amazon.com/First-Course-General-Relativity/dp/0521277035/ref=ed_oe_p
তবে কিনা একজন ভালো শিক্ষক থাকলে সবচেয়ে ভালো যিনি ছাত্র কোথাও ঠেকে গেলে বোর্ডে করে করে দেখাবেন। মাঝে মাঝে নানা মজার কথা বলবেন, ক্লান্ত হয়ে গেলে ছাত্রের সাথে চা-ঝালমুড়ি খেতে যাবেন। হাসি
এইখানেই মানুষ-শিক্ষকের সার্থকতা।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

শিক্ষানবিস এর ছবি

হুম, MTW-দের বইটার নাম শুনেছি অনেক। জোগাড় করতে হবে। সেরকম শিক্ষক পাওয়ার সৌভাগ্য হল না এখনও। ভবিষ্যতে হবে কি-না কে জানে।
তা ঠিক, অনুসূর আগালে অপসূর কেন আটকে থাকবে?

-------------------------------------------------------------------------
আমার এখনও জন্ম হয়নি। খুব চেষ্টা করছি জন্মাতে। কিন্তু পৃথিবী বলছে, সে আমাকে নেবে না।

মূলত পাঠক এর ছবি

বুঝি কম-ই, কিন্তু পড়তে মন্দ লাগে না। হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ মূলত পাঠক, আপনি খুবই সহৃদয় পাঠক।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

বজলুর রহমান এর ছবি

মাখের বিস্ময়কর ইন্টুইটিভ সূত্রের সাথে রীমানীয় গণিতের জিওডেসিক সমীকরণের (যা তিন মাত্রায় বহু আগে থেকেই প্রচলিত) মিলনই হলো মিডিয়ার জনপ্রিয় সাধারণ আপেক্ষিক তত্ব।

স্বল্প দূরত্বে এর কোন চিহ্ন নেই।
মহাকর্ষীয় তরঙ্গও অধরা রয়ে গেছে।
স্ট্রিং তাত্ত্বিকদের গলাবাজি সত্ত্বেও কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে এর অসঙ্গতি দূর হয় নি।

তুলিরেখা এর ছবি

এক্কেবারে ঠিক কইছেন। কি আর কমু? এরা গলাবাজি কইরা কইরা গলা ভাইঙ্গা ফালাইলো, এখন পুরুষ হাঁসের মতন আওয়াজ বাইরয় গলা দিয়া। হাসি ----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

তবে স্বল্প দূরত্বে যে একেবারে নাই তা না। এই যে এদের জিপিএস সিস্টেম, এতে জেনেরাল রিলেটিভিটি লাগে।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

৪ এর পরে ৩ পরলাম।
তৃষ্না বাড়তে বাড়তে আকাশে গিয়ে ঠেকলো তো!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ

দিগন্ত এর ছবি

auto

আমার এ নিয়ে একটা প্রশ্ন আছে। লেন্সিং সত্যি হলে আমরা আকাশে তাকিয়ে যত তারা দেখতে পাই বাস্তবে হয়ত তত তারা নেই মহাবিশ্বে। তাই না? একেকটি তারার একাধিক প্রতিবিম্ব দেখার কথা, এবং দূরত্ব মাপলে তাদের আলাদা দূরত্ব পাওয়াও সম্ভব। তাই নয়?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

একটা সুন্দর ভিডিও দেখেছিলাম লেন্সিং নিয়ে। শেয়ার করলাম।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তুলিরেখা এর ছবি

খুব সুন্দর ফোটো। অনেক ধন্যবাদ রইলো।
হাবল টেলিস্কোপ যে উপকার করেছে মানুষের বলে শেষ করা যাবে না।

খালি চোখে আকাশে যে তারা দেখি সেগুলি সবই ছায়াপথের তারা, মিল্কিওয়ের বাইরের জিনিস বলতে দেখা যায় দুখানা ম্যাগেলানিক ক্লাউড(ক্ষুদ্র দুটি গ্যালাক্সি) আর অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি। এদের মধ্যেকার তারাটারা দেখতে গেলে ভালো রেজোলেউশানওয়ালা টেলিস্কোপ লাগে। তার বেশী দূরের জিনিস দেখতে গেলেও। আর এই মহাকর্ষীয় লেন্সিং হতে যতদূরের ব্যাপার দরকার ততদূরের জিনিস খালিচোখে দেখা যায় না। তাই রাত আকাশের তারাগুলো সবই রিয়েল, লেন্সিং এর জন্য তৈরী হওয়া একাধিক ইমেজ না।
তাই তো হাবলযুগের আগে লেন্সিং এর খুব ভালো কিছু পাওয়া যায় নি।

-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

হিমু এর ছবি

আমি আপনার লেখা পড়তে গিয়ে যেসব জায়গায় হোঁচট খেলাম, সেগুলো আপনাকে জানাই। আপনার লেখার খোঁচ ধরা আমার উদ্দেশ্য নয়, পাঠক হিসেবে একটা প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির গড়মিলের কথা জানানোই মুখ্য প্রয়াস।

  • আপনার লেখায় ইংরেজি শব্দগুলো পড়তে ঠিক আরাম হয় না। এ কথা সত্য যে অনেক শব্দের সঠিক পরিভাষা নেই, কিংবা খুব খটমটে পরিভাষা আছে, তারপরও ইংরেজি অনেকখানি ছেঁটে ফেলা সম্ভব।

  • সামান্য কিছু গণিত আর আঁকজোক যোগ করা গেলে খুবই চমৎকার হতো।

আপেক্ষিকতা নিয়েই একটা আলাদা সিরিজ করা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে। এ ব্যাপারটাকে একেবারে জল করে বুঝিয়ে একটা লেখায় হাত দেবেন নাকি?

এই সিরিজটা পড়তে পড়তে মনে হলো, বাংলায় পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কে লেখা একটা খুব আকর্ষণীয় বই বড় প্রয়োজন কিশোর পাঠকপাঠিকার জন্যে। সেই বয়সী পাঠকদের জন্যে, যে বয়সে তারা একটা কিছু হবে বলে জেদ ধরে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তুলিরেখা এর ছবি

আরে দেখতেই পাই নি। আসলে অনেক আগের লেখায় কমেন্ট আসলে বুঝতে পারিনা। সবদিন তো পুরানো লেখা খুলে দেখা হয় না! দেরি হলো বলে দুঃখিত।
আপনার সমালোচনা খুবই গঠনমূলক, এরকম আসা খুবই দরকারি।
আপনার প্রত্যেক পয়েন্টই ভাবার মত। ইংরেজী প্রসঙ্গে আপনার কথা কিছুটা ঠিক, অনেক শব্দ বাংলায় দেওয়া যায়। আমার আসলে অনেক শব্দ অসাবধানে ঢুকে গেছে, ই এম ওয়েভ না বলে অনায়াসে তড়িচচুম্বকীয় তরঙ্গ বলা যেতো। কিন্তু আমার নিজের মনে হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে শব্দটা রেখে দেয়াই ভালো। ইংরেজী শব্দটা তখন একটা সংজ্ঞায়িত ব্যাপার, জোর করে কন্টিনুয়ামকে সাংতত্যক করে দেয়ার কি কোনো দরকার আছে?

কিশোরকিশোরীদের জন্য সহজ করে লেখা আধুনিক পদার্থবিদ্যা বইয়ের ব্যাপারটা নিয়ে সত্যি ভাবা দরকার। বাংলায় এই ধরনের বই খুব দরকার। উপভোগ্য করে লেখা হলে বহু ছেলেমেয়ে উত্‌সাহী হবে, অনেকেই ক্লাসে ভজঘট বোরিং ব্যাপার দেখে আর বিজ্ঞান পড়ার উত্‌সাহ পায় না।
আপনাকে আবারও ধনবাদ।

----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।