বাড়ি ফেরা

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/১১/২০০৮ - ২:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে আমার আসা হয়না বেশ অ-নে-ক দিন।
আসা যদিবা হয়, লগ-ইন করা হয় না।
আবছা চোখ বুলিয়ে চলে যাই।
কত লোক, কত হাসি,কত দুঃখ,কত গান......
'কত জন কত জেল্লা কত জমক'......
নাহ, কোনো কিছুই ভাল লাগে না।কিছুই না।

ডিসেম্বর 'ঘনিয়ে' আসছে। আমার মন খারাপের গতি ডিসেম্বরের এগিয়ে আসার সাথে সমানুপাতিক হারে বাড়ে। ডিসেম্বরকে কেন এত ভয় আমার?

ছেলেবেলা ডিসেম্বরে ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরুতো। কাজেই ভয়ের একটা কারন ছিল। সেই ছেলেবেলা তো কত আগে ধুসর হয়ে গেছে। ভয়টা কেন গেল না। এখন তো আমার পরীক্ষা নেই।

পরীক্ষা নেই---তাই ফলাফলও নেই--তাই ভয়ও নেই--উহু, এইখানটাতে এসেই ছন্দ পতন। ভয় আছে।ভয় আছে। ভাল করেই আছে।

কিসের ভয়? ভয় সকালে ওঠার। ভয় আবার নতুন একটা দিন শুরু করার। ভয় আরো একটা ব্যর্থ দিন কাটিয়ে দেবার। ফলাফলহীন, উদ্দেশ্যহীন,কীর্তিহীন----এসব নিয়ে বড় দীনহীন প্রতিদিন আমার।কিন্তু সেতো প্রতিদিনের ভয়। ডিসেম্বরের আলাদা মর্যাদাটা আসছে কোথথেকে?

ডিসেম্বর একটা যতিচিহ্ন। থেমে যাবার সময়। থমকে যাবার সময়। ঘাড়গুঁজে হিসেব করে দেখার সময়। গত এগারোটি মাস কি করেছি।কতটুকু অর্জন। অথবা শুধুই একটা জিজ্ঞাস্য--কোন অর্জন?

এসকল কিছু ছাপিয়ে ডিসেম্বর আমার ভয়ের মাস হয়ে আছে সম্পুর্ণ ভিন্ন কারনে।

অন্যদের কথা জানিনা। ডিসেম্বর আমার কাছে ঘরে ফেরার মাস। সারাটা বছর পথে প্রান্তরে কাঁকরে কংকরে দিন কাটানো শেষে ঘরে ফেরার সময়। সারাটা বছর যদি একটা দিন হয়---ডিসেম্বর তবে সন্ধ্যা।

আমার ভয়ের কারন আর কিছুই না---ঘরে ফিরতে না পারা। আমি কিছু পরিযায়ী পাখি কে দেখি।ফিরছে, তারা ফিরছে। এই ঘনিয়ে আসা মৃত্যুর চেয়েও শীতল দিন গুলির কাছ থেকে পালাচ্ছে তারা উষ্ণতর কিছু দিনের আশায়। কিছু পাখির মত মানুষ দেখি। হাসিমুখে বিদায় নিচ্ছে।ব্যস্তমুখে বিদায় নিচ্ছে।করুণ মুখে বিদায় নিচ্ছে।

কিন্তু বিদায় নিচ্ছে।

আফসোসে মাথা নাড়তে নাড়তে বলছে---বুঝলে,টিকিটের এত দাম! আর বউ-বাচ্চা নিয়ে দেশে যাওয়া যে কি ভীষন ঝক্কি---তুমি বুঝবে কি? ব্যাচেলর মানুষ। কোন দায়-দায়িত্ব নেই হে হে হে , বুঝলে, তোমাকে দেখে মাঝে মাঝে ভারী ঈর্ষা হয়-----

অনেক কষ্ট করে মুখে দুঃখের হাসি টেনে আনার ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে তারা বিদায় নেয়। কেউ কেউ আবার যাবার আগে এসে বলে,ভাইয়া দেশে যাচ্ছি, কিছু পাঠাবেন নাকি? কিছু আনতে হবে?

হাসিমুখে তাদের অভয় দেই। নাহ, নিতে হবে না কিছু। আনতেও হবে কিছু। আমার কাউকে দেবার কিছু নেই। পাবারও কিছু নেই।

আমার আছে শুধু থেকে যাওয়া।

আমার আছে দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী। পাহাড়ের মত ভারী এক একটা দিন শেষে, আমার ঘরে ফেরার কোন তাগাদা নেই।

কারন আমার এখানে কোন ঘর নেই।
একটা খুপরী আছে। যেখানে আমি প্রতিরাতে আটঘন্টার জন্য মারা যাই।

কেবল ইদানিং আমি একটা স্বপ্ন দেখছি।
একটা স্বপ্ন। বার বার ঘুরে ফিরে। প্রতিবার স্বপ্নটা তে একটু একটু করে আমি রঙ বদলাই। একটু একটু করে লাল-নীল কাগজে সাজাই।

অনেক আগে আমি এই পৃথিবীর এক কোনায় পড়ে থাকা ছোট্ট একটা গ্রামে ছিলাম। সে গ্রাম ছিল আর দশটা গ্রামের মতই সাধারন। আর দশটা বাংলাদেশের গ্রামের মতই বেশির ভাগ সময় কারেন্ট থাকত না। সে গাঁয়ে আমি যুবক ছিলাম। সে গাঁয়ে আমার সাথে চাঁদের আলোয় আরো কিছু যুবক ছিল। প্রতিটা সন্ধ্যায় অনিবার্য অন্ধকারের সাথে কিছু জোনাকি ছিল। আমরা তিনটে প্রানী বিশাল একটা খোলা মাঠে বেমানান তিনটা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে থাকতাম। তিনজনেই ভাবতাম--এ কোন নরকে আটকা পড়ে আছি আমরা?সারা পৃথিবীর কাছ থেকে কি অভিশাপে আমাদের এই দন্ডকারণ্যে নির্বাসন দেয়া হয়েছে? আমাদের মাঝে কেউ তো প্রমিথিউস নই---চুরি করে আনিনি দেবতার কোন ধন। তাহলে কেন প্রতিদিন জিউসের ঈগল এসে ছিড়ে নিচ্ছে আমাদের হৃদয়?
আমরা যখন আমাদের অস্ত্বিত্বের অস্তিত্ব নিয়ে এহেন ঘোরতর দ্বন্দের ধন্দে পড়ে আছি---তখন আমাদের পায়ের কাছে বসে বুড়ো নুরু মিয়া একমনে বলে যায় তার কেনা নতুন গরুর কথা।আমরা কেউ কিছু বলি না। নতুন গরুর আনন্দে নুরু মিয়ার ফোকলা মুখ দেখায় পৃথিবীর কোন সম্রাটের মত। নুরু মিয়ার এই সুখ আমাদের খুব অসহ্য ঠেকলে বেরিয়ে পড়তাম হাটার উদ্দেশ্যে। বিদ্যুত হীন গ্রামের পথে শহরের কিছু অন্ধ লোক পথ হাতড়ে বেড়ায়। মাঝে মাঝে পূর্নিমার রাতে যখন সরু একটা পথ ধরে উত্তরের মাঠে যেতাম, তখন ঘন বাঁশবনের মাঝে আমরা মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়াতাম।

নাহ পথ হারিয়ে নয়। সেই ঘন আর্দ্র অন্ধকার পথে মাঝে মাঝে বর্শার ফলার মত কিছু চাঁদের আলো এসে বিঁধেছে। অল্প একটু হাওয়ায় মাঝে মাঝে বাঁশ গুলো নড়ছে। আর সেই আলোর বর্শা গুলো থেকে থেকে ঝাপিয়ে পড়ছে অন্ধকারের বুকে।

আমরা আমাদের সকল দুঃখ ভুলে তাকিয়ে রইতাম। আমাদের মাঝে সবচেয়ে বকবক করা বশির ভাইও হঠাৎ করে প্রিন্সিপালের বদনাম করা বন্ধ করে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখতেন সেই আলো-ছায়ার খেলা।

কোন কোন রাতে আমি আর হায়দার ভাই বেরিয়ে পড়তাম গাঁয়ের পথে।
আমাদের এই সব রোমান্টিসিজম বশির ভাইয়ের কাছে যম ছিল। ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে বলতেন, তোমাদের সমস্যাটা কি জানো? তোমাদের সমস্যা হল---এই বলে কিভাবে নারীসঙ্গ পৃথিবীর যাবতীয় বোহেমিয়ানদের বয়ে যাওয়া জীবনকে কুলে নিয়ে আসে তার অশ্লীল কিছু বর্ননা শুরু করতেন। তার সে অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্যই বলতাম, আরে ভাই আমরা চা খেতে যাচ্ছি, গেলে চলেন। ঘুম হবে না এই ভয়ে বশির ভাই রয়ে যেতেন। আমরা দুই জন হাঁটা দিতাম।

অনেক গুলো দিনের মাঝে কেবল একটা দিনের কথা আমার খুব করে মনে পড়ে। সে সময়টা হেমন্তের শেষ দিক। গ্রামে যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, হেমন্তের একটা আলাদা ঘ্রান আছে। গাঁয়ের আনাচে-কানাচে বাতাসে ভর করে সেই ঘোর লাগা ঘ্রান।
এ ঘ্রান কি হেমন্তের কাটা ফসলের? নাকি ঘনিয়ে আসা শীতের? আমি ঠিক জানিনা। কিন্তু এত জীবন্ত, এত আপন করে নেয়া সে গন্ধ---যে আমাকে যদি আজো চোখ বেঁধে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়---আমি শুধু ঘ্রান শুঁকেই সুখে থাকব।

সে রাতে আমি আর হায়দার ভাই যথারীতি চা খাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে বেরিয়ে পড়েছি। আসল উদ্দেশ্য পুর্নিমার রাতে কিছু হাঁটাহাটি করা। হায়দার ভাই ইংরেজির লোক। জীবনানন্দকে গুলে খেয়েছেন। নিজেও চমৎকার কবিতা লেখেন। ভাল গাইতে জানেন। এক বর্ষার দুপুরে আমাকে তিনি রবীন্দ্রনাথের 'শাপ মোচন' পুরো গেয়ে শুনিয়েছিলেন। চোখ বন্ধ করে। সে এক অভিজ্ঞতা।

আমরা দুই জনে কি জানি একটা বিষয় নিয়ে আলাপ করতে করতে হাঁটছিলাম। চায়ের দোকানটা যেখানে, হায়দার ভাই সেখানে থামলেন না। আমাকে বললেন, চলেন আজ আপনারে নতুন একটা জায়গায় নিয়ে যাই। এই গন্ডগ্রামে আমি আছি প্রায় দুই বছর ধরে। কোন জায়গা আমার অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে---এটা বিশ্বাস করা কঠিন।

আমরা হাটতে থাকলাম----হাটতে থাকলাম---হাটতে থাকলাম
ঠিক যখন আমি হায়দার ভাইকে বলতে যাব যে, কি মিয়া চায়ের দোকান কই? পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াছ? ঠিক তখনই----

আমাদের মেঠো পথটা একটা মোড় নিল। মোড় ঘুরতেই আমি যা দেখলাম সেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

বিশাল একটা তেপান্তরের মাঠ যেন। ধান কাটা হয়ে যাওয়া মাঠ। তার ঠিক বুক বরাবর একটা ছোট আলপথ চলে গেছে বহুদূরে।এত ছোট আলপথ যে দুই জন পাশাপাশি হাঁটা যায় না। হেমন্তের সে রাতে খুব জ্যোৎস্না হয়েছিল। বহুদুরে যেখানে আলপথ শেষ হয়েছে---সেখানে এক বিরাট অশ্বত্থ গাছ। তার ছায়ায় একটা ছোট ঝুপড়ি--চায়ের দোকান। বেশ ঘন কুয়াশা নেমেছে। চাঁদের আলোয় সে কুয়াশা দেখাচ্ছে আকাশ থেকে গলে গলে পড়া রুপোলি মেঘ।

আমি হয়ত ঠিক বর্ননা করতে পারলাম না দৃশ্যটার।

আসলে সে অপার্থিব দৃশ্যের কোন বর্ননা হয় না। এই দৃশ্য সকলের দেখার ভাগ্যও হয় না। যারা দেখে---তারা জন্মের মত পাথর হয়ে যায়--হয়ে যায় আমার মত।

আমি জানি---কারন সেই রাতে সেই অপার উদার জোছনা রাতে কেবল আমি নই, হায়দার ভাই-ও স্থানুবৎ দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমরা নিশ্বাস ফেলতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছিলাম---যদি এই স্বপ্নদৃশ্য ভেঙ্গে যায়।

সেদিনের পরে আমি একটা শপথ নিয়েছিলাম। শপথ নিয়েছিলাম নিজের কাছে। সেইদিন থেকে ঠিক দশ বছর পর আমি এখানে ফিরব। কিন্তু একা নয়। আমার সাথে রইবে আমার সকল আপনজন। অল্প কিছু মানুষ যারা এই পৃথিবীতে আমাকে ভালবেসে দুর্বল করে দিয়েছেন--তাদের নিয়ে আমি এমনি আরেক জোছনা রাতে সেই খানে যেতে চাই। সেই জোছনা রাত হবে তাদের জন্যে আমার উপহার। যে অলৌকিক রাত আমাকে পাথর করেছিল---তাদের সামনে সেই রাত আমাকে মুক্তি দেবে!

দশটা বছরের মাঝে নয়টি বছর কেটে গেছে।

অল্প যে কিছু জন আমাকে বিনা প্রশ্নে বিনা তর্কে বুকে টেনে নিয়েছেন--তাদের অনেকেই গত হয়েছেন এ কয় বছরে। কিছু আপনজন
নীরবে আমার নামটা কেটে দিয়েছেন তাদের প্রিয় মানুষদের তালিকা থেকে।

প্রতিটা বছর ডিসেম্বরে আমি তাই ভারাক্রান্ত হই।

আমি কি আমার কাছে করা সেই প্রতিজ্ঞা রাখতে পারব? যেদিন আমার সময় হবে---যাদের নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, সেদিন তারা কি আমার হাত ধরবেন?

সবচেয়ে বড় কথা---সেই মাঠ, সেই অশ্বত্থ, সেই জোছনা কি আমার অপেক্ষায় বসে আছে? সভ্যতার নোংরা হাত হয়ত খুবলে দিয়েছে সে মাঠ, কেটে ফেলেছে সে মহীরুহ। জোছনা রাতে সেখানে হয়ত কেবল আমার প্রেতাত্না ঘুরে বেড়ায়---অনিঃশেষ স্বপ্নভঙ্গের বেদনা বুকে নিয়ে।


মন্তব্য

কীর্তিনাশা এর ছবি

অনিকেত দা,
দিলেন তো আমার মনটা খারাপ করে।
নাহ্ খুব তাড়াতাড়ি একবার গ্রামে ঘুরে আসতে হবে।

আপনি ভালো থাকবেন।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অনিকেত এর ছবি

ঘুরে আসো, কীর্তি...আসলেই ঘুরে আস।
দেখবে ভাল লাগবে।

রণদীপম বসু এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গেছি। কোনো মন্তব্য টন্তব্য করতে পারবো না।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিকেত এর ছবি

রণ'দা, ভাল থাকবেন।
আর আমরা যারা ভালো থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছি, তাদের মনে রাখবেন।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আজ রাতে পূর্নিমা আছে, গাড়ীতে তেল ভরা আছে, আমি রাতেই বেরুবো

...........................
Every Picture Tells a Story

অনিকেত এর ছবি

এই মুহুর্তে, আপনি আমার কাছে সবচাইতে ঈর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব!
ঘুরে আসুন-----

স্নিগ্ধা এর ছবি

আপনাকে যথারীতি একটা ঝাড়িমূলক মন্তব্য করবো বলেই লগ ইন করেছিলাম - তারপর ভাবলাম - না থাক্‌। আপনি কি আর শুধরাবেন ? হাসি

সবচেয়ে বড় কথা---সেই মাঠ, সেই অশ্বত্থ, সেই জোছনা কি আমার অপেক্ষায় বসে আছে? সভ্যতার নোংরা হাত হয়ত খুবলে দিয়েছে সে মাঠ, কেটে ফেলেছে সে মহীরুহ। জোছনা রাতে সেখানে হয়ত কেবল আমার প্রেতাত্না ঘুরে বেড়ায়---অনিঃশেষ স্বপ্নভঙ্গের বেদনা বুকে নিয়ে।

না থাকলে নেই, তাতে কি? নতুন কিছু হবে, নতুন কিছু থাকবে ........ তাই হয় ..... নাহলে বাঁচা সম্ভব হতো না -

অনিকেত এর ছবি

ঠিক কথা স্নিগ্ধা'পু।

কিন্তু আমি তো নতুন কিছু চাইনি। আমি তো চেয়েছি কিছু পরিচিত দৃশ্যের অংশ হতে। নতুন কিছু কি আর আমাকে সেই স্বস্তি, সে মুগ্ধতা দেবে?

আমাদের সব চাইতে বড় সমস্যা হল--আমরা কিছুতেই আটকে থাকিনা। যতক্ষন আমাদের জীবন--আমাদের কেবল অন্তহীন পথ-চলা।যত বড় ঝড় আসুক না কেন, ভাঙ্গা ঘরের ছাঁদ সরিয়ে পরের দিন সকালে আমাদের বেরুতে হয় জীবিকার সন্ধানে।

কী জীবন!!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

মনটা যেন কেমন করে দিলেন, অনিকেতদা।
আপনার অনুভূতিগুলো ভীষন ভীষন ছুঁয়ে গেলো আমাকে।
ভালো থাকুন।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অনিকেত এর ছবি

শিমুল,
ধন্যবাদ।

আপনিও ভাল থাকুন।

তারেক এর ছবি

কী আশ্চর্য জাদুময়তা আপনার লেখায়... আমার যে কয়বার গ্রামে যাওয়া বেশিরভাগই হেমন্তে... ঠিকই বলেছেন হেমন্তের ঘ্রাণ! আমার প্রায়ই মনে হত ভোরে কুয়াশায় ভেজা ন্যাড়া ধানখেতের মুড়ো, খড়ের ঘ্রাণের সাথে মিলে যায়... তবু আলাদা, একেবারেই নিজস্ব।
আপনি এই লেখাটা দিয়েই আমাকে পাথর করে দিয়েছিলেন কিছু সময়ের জন্য হাসি

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অনিকেত এর ছবি

ভাই তারেক,
আপনাকে কিছু লেখা মানেই যেন নিজেকে কিছু লেখা--আমার নামও তারেক কিনা।

আমার খুব ভাল লাগল এই দেখে, যে শুধু নামেই মিল থেমে থাকেনি। এই পৃথিবীতে শুধু আমি নই, আরো কেউ আছে যে 'হেমন্তের ঘ্রান' পায়।

ভালো থাকবেন।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

প্রিয়জনের সাথে সবচেয়ে বেশী মান- অভিমান হয় কখনো কখনো দূরত্ব ও তৈরী হয় । সময়ে আবার ঠিক হয়ে ও যায় ওটা নিয়ে কষ্ট পাওয়ার দরকার নেই অনিকেত।
স্নিগ্ধার মত আমি ও বলি সেই মাঠ ,সেই অশ্বত্থ, জোছনা না থাকলে কিই বা হবে ? অন্য জায়গা হয়ত থাকবে নতুন মহিমা নিয়ে ।
নতুন উদ্যমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ুন।সব ঠিক হয়ে যাবে।

অনিকেত এর ছবি

অনিন্দিতা, আপনাকে ধন্যবাদ।

অনিকেত এর ছবি

আজ এই লেখাটা দিয়ে খুব কষ্ট হতে লাগল মনে। কোন একজন আমাদের মাঝে নেই। যিনি বার বার আমাকে ধমকে দিয়ে গেছেন 'দুঃখী দুঃখী' লেখা না লেখার জন্য। নিষেধ করেছেন 'বিষাদের পয়গম্বর' না হবার জন্য।

জুবায়ের ভাই, সব কিছুই তো চলছে ঠিকই। কেবল দুঃখী লেখার জন্য আমাকে বকা দেবার আর কেউ নেই............

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনিকেত'দা, কিছুই বলার রাখলেন না! আমি ভাই কী পরিমাণ নাড়া খাইলাম ভেতরে, আপনার এই লেখা পড়ে, আপনাকে বলে বোঝাতে পারব না! অসম্ভব মন খারাপ হয়ে গেলো। একটুও বাড়ায়া বলতেসি না, অসাধারণ লিখসেন। আপনার কষ্ট যেন সংক্রমিত হলো আমার ভেতরেও। কেমন যেন খালি খালি লাগতেসে মন খারাপ

এমনটা মনে হওয়ার আরেকটা কারণ- ডিসেম্বর মাসটা কয়েকটা কারণে আমার কাছেও খুবই বিষন্নতার মাস। আমি নিজেও ফীল করতেসি, ডিসেম্বর আসতেছে...

সবকিছুর পরও, ভালো থাইকেন... ভালো থাকার চেষ্টা করেন...

অনিকেত এর ছবি

তুমিও ভাল থেকো বস।

নন্দিনী এর ছবি

মনটা অদ্ভুত রকম ছূঁয়ে গেলো ।

নন্দিনী

অনিকেত এর ছবি

ভালো থাকুন,নন্দিনী।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ

আলমগীর এর ছবি

ধইরা ক্যান্টিনের পাগারে একটা চুবানি দেয়া হইলে এই ব্যামো ছাড়তে পারে। দেশে যান, তারপরে বাকী কাজ।

নিঝুম এর ছবি

নস্টালজিয়া... হায়রে পুরানো দিন... আর ফেরা হয় না রে ভাই । কত বছর আগে যে শেষ গ্রামে গিয়েছিলাম...মনে নেই ।

অসাধারণ বর্ণন, চমত্‌কার লেখা ।
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এসব লেখা ক্যান লেখেন বস? মাইর খাবেন। মন খারাপ করিয়ে দ্যান শুধু। ধূর।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ

সবজান্তা এর ছবি

সেই আজ থেকে কতদিন আগে শেষ মামাবাড়ি গিয়েছিলাম... একটা সত্যিকারের গ্রামে। যেখানে ছিলো জোনাকি, ছিলো অন্ধকার, ছিলো না ডিশ এন্টেনা অথচ ছিলো ধান ক্ষেত ...

অনিকেত দা, বস কথাগুলি মনে না পড়ালে কি চলছিলো না !

লেখায় জাঝা।


অলমিতি বিস্তারেণ

s-s এর ছবি

এই হায়দার ভাই পাবলিক এর সাথে সত্ত্বর যোগাযোগ করতে হবে দেখছি।

জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আপনার লেখার পরতে পরতে যে বিষাদ জড়ানো থাকে আমি খুব অনুভব করি সেই বিষাদ। মাঝে মাঝে চুপচাপ আপনার লেখার শেষে অপর লেখায় চলে যাই। একই লেখা বারবার পড়। আমার অনেক অপূরন হয়ে থাকা চাওয়াগুলির কথা মনে করে আমি ঠিক যেমনটি কষ্ট পাই, না জেনেই আপনি সেই চাওয়াগুলো পূরন করার পরে কষ্ট পান আবার না পাওয়ার কষ্টে।

ভালো থাকবেন হে বিষাদের কবি। ভাল থাকবেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।