কয়েক বছর আগে গ্রামের রাস্তায় উল্টাদিক থেকে আসা একটা গরুকে বাঁচাতে গিয়ে গর্তে পড়ে যাই। শুনেছিলাম— আমার বোন বলছিল— রাস্তাটা গাড়ি চলার মতো বড় হয়েছে।
[পুরাতন ইমেইলে খুঁজে পাওয়া গেল। ৩০ মে ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যুদিবস]
৪৯ বছর বয়সে এবং সৃষ্টিশীল অবস্থায় ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যু নিঃসন্দেহে ভারতীয় চলচ্চিত্র ও ভারতীয় বাংলা ছবির জন্য আঘাত। সত্যজিৎ-মৃণাল-উত্তর জমানায় আন্তর্জাতিক আসরে ‘ভারতীয়’ ছবিকে গুছিয়ে তুলে ধরেন তিনি। ভারতের, বিশেষত পশ্চিম বাংলার, ‘স্বাধীন’ [ইন্ডি] চলচ্চিত্রকারদের উৎসাহ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যদিও তার নিজের ছবিগুলো ঠিক ‘স্বাধীন’ গোত্রের নয়।
মাসরুর আরেফিন ইলিয়াডের অনুবাদকের নোটে এক জায়গায় লিখছেন হোমারকে আক্ষরিক অনুবাদ করতে চাওয়ায় তাকে 'আত্মা হাড়গোড় ছেড়ে গেল' — এমন একটা অভিব্যক্তি লিখতে হইছে, যেটা বাংলাসুলভ না।
আত্মা দেহ ছাইড়া গেলে অধিক বাংলা হইত কিন্তু হোমারের অক্ষর পালন হইত না, যেহেতু গ্রীকে যা লিখছে, তাতে হাড্ডিই বুঝায়। as his spirit left his bones।
শেষবার ২ লাখ ডলার দাম উঠেছিল, কিন্তু মালটা ছিল আরও ছোট মিডিয়া হাউকাউ করছে ১ মিলিয়ন ১ মিলিয়ন বলে ১ মিলিয়ন না হোক, ২ লাখ ডলারও স্বপ্নে দেখা মুশকিল ১৬টা হান আমলে মটকা রাখা ছিল উদাম গুটিগুটি পায়ে এসে জনৈক দর্শনার্থী একটা তুলে নিল, আছাড় মারল, মাটির জিনিস, তাও ২ হাজার বছরের পুরাতন, চুরচুর হয়ে গেল
মৃতরা কী চায়? অদ্ভূত প্রশ্ন, কারণ জীবিতরা কী চায় এই প্রশ্নেরই উত্তর মিলে না। আর প্রশ্নটাও ঠিক অর্থপূর্ণও না। কত লোকে কত কিছু চায়। তার কী একটা উত্তর আছে? নাই। কিন্তু মৃতরা কী চায়, এমন প্রশ্নের পৃথিবীর সকল সংস্কৃতিতেই আবার একটা উত্তর পাওয়া যায়।
মৃতরা, কথিত আছে, চায় শান্তি। কিন্তু শান্তি জিনিসটাতো দৃশ্যমান না। মাপা কিংবা গোনাও যায় না। সুরতাং, বিবিধ সমাজের নিয়মনীতির দ্বারস্থ হলে জানা যাবে, মৃতরা চায় তাদের যথার্থ সৎকার হোক। নানা সমাজে নানা কালে সৎকারের বিচিত্র রীতি আছে। কিন্তু অন্তিমযাত্রা শান্তিপূর্ণ করবার দায়-দায়িত্ব মৃতর নিজস্ব সমাজের উপরই বর্তায়। প্রায় সমাজেই সাধারণত এটা সামাজিক দায়, কিন্তু আবার সমাজের সকল ব্যক্তির দায়িত্ব না। অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য সংখ্যার লোক পালন করলেই চলে। 'ফর্জে-কিফায়া' বলে মুসলমানদের ব্যাকরণে।
... যাইবার কালে নিয়তি এমন এক দান দিল। কেউ ভাবেও নাই। প্রথমে প্রচুর ধুয়া দেইখা বাইর হইলাম, বিয়াপক আনন্দের সহিত। দেখলাম তারা ভাগছে। তারপর দেখলাম, নাহ, একটারে রাইখা গেছে। সিনন। সে কয়, তারে নাকি তার লোকেরাই বলি দিতে চাইছিল, যেহেতু সে লুকাইতে পারছে, জীবিত এখন। ওকে। কিন্তু ঐটা কী!
[১]
'মেলাবেন তিনি ঝোড়ো হাওয়া আর/ পোড়োবাড়িটার/ ঐ ভাঙা দরজাটা/ মেলাবেন'। প্রথম আলোর বাজেট প্রতিবেদনে অমিয় চক্রবর্তীর দেখা মিলল। অমিয় ছাড়াও সেখানে উদ্ধৃত বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন আর ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট। বিশেষ প্রয়োজনে মার্কিন সরকারকে ডেকে আনা প্রথম আলোর স্বভাববিরুদ্ধ না। কিন্তু বাজেট বিশ্লষণে অস্তিত্ববাদীর মৌল সংকট-বিষয়ক কবিতার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজতে গেলে, আগে জানতে হবে তাদের দফতর আলো করে আছেন নিদেনপক্ষে আড়াইজন কবি। তারা কারণে-অকারণে সাহিত্য ডেকে আনেন।
তাই বাজেটের পরের দিন ছাপা হওয়া 'হুমায়ূন আহমেদের দেয়াল: সাহিত্যের সীমনা ও আদালতের দায়' খটকার জন্ম দেয়। লেখক সাজ্জাদ শরিফের আপত্তি '[হুমায়ূনের 'দেয়াল'] সাহিত্যের ['মধুর'] সীমা উপচে সমাজ-রাষ্ট্রের খোলা ময়দানে প্রবেশ করেছে'। কতগুলি পূর্বানুমান লক্ষ্য করি: সাহিত্যের সীমানা মধুর, সাহিত্য বদ্ধকাঠামো (যেহেতু সমাজ-রাষ্ট্রের 'খোলাত্ব' তাকে সাহিত্যের বিপরীতে দাঁড় করায়) এবং সমাজ-রাষ্ট্রের ময়দান খোলা, অর্থাৎ বদ্ধোকাঠামোয় সমাজ-রাষ্ট্র নাই।
আফসান চৌধুরি হাতেপায়ে লিখছেন। সবশেষটা পা দিয়ে লিখে থাকবেন। চৌধুরি সাহেবের পায়ের ধুলা।
উন্নয়ন বাণিজ্যে ভাড়াখাটা অন্যথায় সাংবাদিক পরিচয়ধারী চৌধুরি সাহেব সম্প্রতি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেছেন। বলেছেন, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ে গত পঞ্চাশ বছরে একজন চিন্তক বা থিংকারের জন্ম হয় নাই। হবেও না শিওর। পরপরই বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় থেকে স্কলার আশা করে না কেউ। চৌধুরি সাহেবকে চিন্তক বা স্কলারের (এদুইকে গুলিয়ে ফেলেছেন ইংরাজি বাগাড়ম্বরের এই পরাকাষ্ঠা) একটা তালিকা কেউ একজন ধরিয়ে দিতে পারেন। রাও ফরমান আলি প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেও চিন্তক কি স্কলারের একটা তালিকা করতে পেরেছিল, চৌধুরি সাহেব পারছেন না।
অর্থগ্রাফি শব্দটায় বাংলা নাই। গ্রিক অর্থস মানে শুদ্ধ। শুদ্ধ লিখার তন্ত্র হয় অর্থগ্রাফি। গ্রিক অর্থের সাথে বাংলা অর্থের যোগ দেয়া বিপজ্জনক নাও হতে পারে। যা কিছু তন্ত্র মোতাবেক শুদ্ধ না তা কিছুই অর্থহীন এমন প্রচারে এক দল লোক সকল সমাজেই মজুদ। তারা 'বাংলা' অর্থগ্রাফি করে কি?
শ্রীযুক্ত ফারুখ আহমেদের সমস্যা লেখ্যচরিত্রের না। তিনি একটি নিরীহ ফুলের নাম কেন বাংলায় নাই এই আক্ষেপসমেত অন্যথায় চমৎকার একটা ঘুলঘুলি রচনা করেছেন দৈনিক প্রথম আলোয়। ঘুলঘুলি দিয়ে বসন্তকাল চোখে পড়ে।
... একটা বিশেষ ধরণের বিরক্তি এই লেখা তৈরিতে উৎসাহী করেছে। এতে চলমান ভারতীয় পণ্য বর্জনের/ বয়কটের আহবানে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও এই ধরণের উদ্যোগের সামর্থ্য সম্পর্কে একধরণের মতামত দেয়া হয়েছে। বিচিত্র বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি লেখাটাকে কিছুটা দীর্ঘ করে তুলবে।
১. দুশ্চিন্তা/উদ্বেগ/বিরক্তির প্রেক্ষাপট
ইন্ডিয়ার সমালোচনা হলেই পাকিস্তানপ্রেমীরা খুশিতে গদগদ হয়ে পড়েন। বলে, 'দেখালা? হুদাই খালি পাকিস্তানরে গালি দেও'। ভারতে উৎপাদিত পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গ ওঠার পরেই দেখা যায় তারা আরো উত্তেজিত। ফেইসবুকে দেখলাম কেউ কেউ বলছে পাকিস্তানি রাজাকার যেমন আছে তেমন আছে ভারতীয় রাজাকার।