এশিয়ার শেষ সিংহেরা

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/০৯/২০১২ - ৬:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

10TH_ASIATIC_LION_141713f
[বিশ্রামরত সিংহ। ছবিসূত্র]

সিংহের প্রসঙ্গ এলেই আমাদের প্রথমে যেটা চিন্তায় আসে তাহলো তার রাজসিক ভঙ্গি। সিংহের সোনালী কেশর, তার দুলকি চালে রাজার ভঙ্গিতে হেঁটে চলা, শিকার ধরার সময় ক্ষিপ্র ভঙ্গি, এসবই একে শক্তি, ক্ষমতা ও অহংকারের প্রতীকে পরিণত করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই। সিংহকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহারের প্রচলন প্রাচীন সভ্যতা থেকেই। নানা জাতির অলংকার থেকে শুরু করে মুদ্রাতেও স্থান পেয়েছে সিংহের মুখায়ব। প্রাচীন রোম সাম্রাজ্যের মুদ্রা থেকে শুরু করে আমাদের এশিয়া মহাদেশের পারস্য, মোঘল, রাজপুত ইত্যাদি বিভিন্ন সময়ের শাসকদের পছন্দের প্রতীক হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়েছে।বাংলা ভাষায়ও "সিংহপুরুষ", "সিংহাসন" এই শব্দগুলো রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয় শক্তিমত্তা ও ক্ষমতার প্রসঙ্গে।

daciar
[প্রাচীন রোমান মুদ্রায় সিংহের প্রতিকৃতি]

dacia_etruscilla_r
[প্রাচীন রোমান মুদ্রায় সিংহের প্রতিকৃতি]

সিংহের প্রসঙ্গ এলেই আমাদের চিন্তায় চলে আসে আফ্রিকার বিস্তৃত বন অঞ্চলের ছবি, সাফারি আর বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সিংহের পরিবারের দৃশ্য। তবে সিংহের প্রজাতির উত্পত্তির সাথে আফ্রিকার নিবিড় সম্পর্ক থাকলেও আমাদের উপমহাদেশেই আছে একটি প্রজাতি যা প্রায় ১,০০,০০০ বছর আগে তার পূর্ব পুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে বসবাস শুরু করে এই অঞ্চলে। "এশিয়াটিক লায়ন" এর এই প্রজাতিটি বর্তমানে সিংহের সব থেকে দুর্লভ একটি প্রজাতি। এককালের প্রবল প্রতাপে বনের গহিনে রাজত্ব করে চলা এই প্রজাতিটির হাতে গোনা কিছু সংখ্যক সদস্য এখন জীবত আছে। বিলুপ্তপ্রায় এই প্রজাতিকে নিয়েই একটু জানার চেষ্টা এখানে।

অনেকেই ভেবে থাকে সিংহ প্রজাতির একমাত্র বিচরনক্ষেত্র হচ্ছে আফ্রিকা, এর কারণ আর কিছুই নয়, শিকারের নেশায় মানুষ বিপুল সংখ্যক সিংহ হত্যা করেছে বহুকাল ধরে, যার ফলে আফ্রিকা ছাড়া আর প্রায় সব মহাদেশেই এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে আর যেখানেও অবশিষ্ট আছে তারাও বিলুপ্তির পথে। একারণে উপমহাদেশে সিংহের প্রজাতি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা কম। এশিয়ার সিংহের প্রজাতিটি আফ্রিকান সিংহের একটি উপ-প্রজাতি। আফ্রিকান পূর্বপুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে এটি ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া মাইনর, আরব অঞ্চল বিশেষ করে পারস্য, ইরান, ভারত এদিকের অঞ্চলগুলোতে। অতীতে এই প্রজাতির সদস্য সংখ্যা যথেষ্ট থাকলেও নানাবিধ কারণে অন্যান্য অঞ্চলগুলো থেকে বিলুপ্ত হতে হতে এখন শুধুমাত্র ভারতের গুজরাট প্রদেশে অবস্থিত "গির অভয়ারণ্য" অঞ্চলে টিকে আছে মাত্র ৪১১টি প্রাণী। ১,৪৫০ বর্গকিলোমিটার এর এই অভয়ারণ্যটিকে পৃথিবীর অন্যতম স্পর্শকাতর অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলো।

আফ্রিকান সিংহের সাথে এশিয়াটিক লায়নের পার্থক্য সীমিত। দৈহিক গড়নে এশিয়াটিক লায়ন কিছুটা ছোট, কেশরও কিছুটা কম। এছাড়াও এদের জীবন-যাপনের ধরনে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। এশিয়াটিক লায়ন উচ্চতায় ৯০ সে.মি, এবং দৈর্ঘ্যে ২০০-২৮০ সে.মি এর মতো হয়ে থাকে। এদের ওজনও আফ্রিকান প্রজাতির থেকে কম, ২০০-২৭৫ কে.জি এর মধ্যে। জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে সিংহ সবসময়ই দলবদ্ধ ভাবে থাকতে পছন্দ করে, এদের এক একটি দলকে বলা হয় "প্রাইড"। আফ্রিকান সিংহের প্রজাতিতে এক একটি প্রাইডে ৪ থেকে ৬ জন স্ত্রী সদস্য এবং সাথে তাদের সন্তানরা থাকে। তবে এশিয়ার সিংহের প্রাইড কিছুটা কম সদস্য বিশিষ্ট হয়। এতে সর্বোচ্চ দুইজন নারী সদস্য থাকে আর সাথে তাদের সন্তানরা। পুরুষ সদস্যের সংখ্যা ২ থেকে ৩টি। আফ্রিকান প্রজাতির পুরুষ সিংহের মতো এদেরও কেশর আছে তবে পরিমানে কম। কিন্তু এশিয়াটিক লায়নের শরীরে লোমের পরিমান বেশি এবং ঘন। তবে ঘন রংয়ের কেশর খুব অল্পসংখ্যক পুরুষ সিংহের থাকে, ধারণা করা হয় এটি প্রজাতির মধ্যে আভিজাত্যের প্রতীক এবং নারী সিংহরাও প্রজননের সময় এধরনের সিংহকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এছাড়াও তাদের লেজের শেষে লোমের দৈর্ঘ্যও বেশি। এছাড়া খাদ্যাভাস এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য প্রায় একই।

Captive-Male-Lion-L
[পুরুষ এশিয়াটিক লায়ন]

asiatic-lion
[নারী এশিয়াটিক লায়ন]

lion mane chart_thumb[12]
[সিংহের কেশর এর পার্থক্য]

ভারতীয় উপমহাদেশে এক সময় সিংহের বিচরণক্ষেত্র ছিলো উত্তর ভারত থেকে শুরু করে পূর্বে বিহার পর্যন্ত নর্মদা নদীর তীর ঘেঁষে। কালক্রমে এই অঞ্চলগুলো থেকে সিংহের প্রজাতিটি বিলুপ্ত হতে হতে সব শেষে বর্তমানের গুজরাট প্রদেশে কিছুসংখ্যক টিকে থাকে। ঐতিহাসিক তথ্যানুযায়ী, বিহারে ১৮৪০, দিল্লীতে ১৮৩৪, ভাওয়ালপুরে ১৮৪২, পূর্ব ভিন্দ্যাস এবং বুন্দেলখন্ডে ১৮৬৫, মধ্য ভারত এবং রাজস্থানে ১৮৭০ এবং পশ্চিম আরাভালিতে ১৮৮০ সালের মধ্যে সিংহ বিলুপ্ত হয়ে যায়। সৌরাষ্ট্রতে ১৮৮৪ সালে সর্বশেষ সিংহ দেখা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

Map_Guj_Gir_NatPark_Sanctuary
[গুজরাটের গির অভয়ারণ্য]

১৯০১-১৯০৫ এর দুর্ভিক্ষ এবং মহামারীতে অনেক সিংহ বিলুপ্ত হয়। খাদ্যের জন্য এরা লোকালয়ে হানা দেয়া শুরু করে এবং গবাদিপশুর উপর হামলা করতে থাকে। এর জবাবে গ্রামবাসী সিংহ নিধন শুরু করে। তবে সিংহের বিলুপ্তপ্রায় এই প্রজাতিকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান ছিলো জুনাগড়ের নবাব এর। তিনি গ্রামবাসীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থার মাধ্যমে সিংহ নিধন বন্ধ করতে সক্ষম হন এবং ১৯০৪-১৯১১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে সিংহের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। নবাব ১৮ শতকের শেষের দিকে গির অঞ্চলে মাত্র এক ডজন সিংহের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছিলেন।তিনি সিংহ হত্যার প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং দর্শনার্থীদের জন্য নবারের দরবার থেকে অনুমতির পদ্ধতি শুরু করেন, যা ছিলো অত্যন্ত কঠোর। এছাড়াও গির অঞ্চলে তিনি সিংহের জন্য নিরাপদ একটি বিচরণক্ষেত্র গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে আবার সিংহ শিকার শুরু হয়, প্রতি বছর প্রায় ১২-১৩টি সিংহ শিকারের খবর পাওয়া যেতে থাকে। ১৯১১ এর পরে ব্রিটিশ প্রশাসন সিংহ শিকারে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং সেসময় জুনাগড়ের বন কর্মকর্তার হিসাব অনুযায়ী সেখানে মাত্র ২০টি সিংহ অবশিষ্ট ছিলো।

এশিয়াটিক লায়নের বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে লাগামছাড়া শিকার। বিপুল সংখ্যক সিংহ এভাবে হত্যা করা হয়। এছাড়াও খাদ্যাভাব আরও বড় একটি কারণ। খাদ্যের অভাবে এবং বিচরণক্ষেত্রের অপ্রতুলতার জন্য খুব দ্রুত বংশহ্রাস ঘটে এই প্রজাতির। তবে ১৯৩৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৮৭টি সিংহের সংখ্যা নথিবদ্ধ করা হয়। ১৯৬৫ সাল থেকে গির বনাঞ্চলকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে সিংহের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিকে রক্ষা করতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। ১৯৬৮ সালের ১৭৭টি সিংহের থেকে ২০০৫ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫৯টি। বর্তমানে দুর্লভ এই প্রজাতিটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪১১।

এশিয়াটিক লায়ন এর এই প্রজাতিটিকে কৃত্রিমভাবে বংশবিস্তারের চেষ্টা সফল হয়নি এখনও। এছাড়াও খুবই অল্পসংখ্যক সদস্যের মধ্যেই প্রজননের প্রচলন থাকায় এবং প্রজননের বিশুদ্ধতা রক্ষা করায় এদের সাথে অন্য প্রজাতির প্রজননের ক্ষেত্রে কোন সফলতা এখনও আসেনি। তাই পৃথিবীর দুর্লভ প্রানীদের মধ্যে এশিয়াটিক লায়ন অন্যতম।

সিংহের জীবন যাপন বৈচিত্রময়। এরা নিজেদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে থাকে, এমনকি শিকারও করে এক সাথে। এক একটা দলে ৩ জন পর্যন্ত পুরুষ সদস্য থাকে। কিন্তু শিকার হতে শুরু করে পরিশ্রমের সব কাজ করতে হয় নারী সদস্যদের। তবে পুরো দলের মধ্যে একজন পুরুষ নেতা থাকে, যে সম্পূর্ণ দলটি নিয়ন্ত্রণ করে। শিকারের ক্ষেত্রেও সিংহ দারুন নৈপুণ্যের পরিচয় দেয়। অনেক সময় দেখা যায়, দলের কিছু নারী সদস্য একটি শিকারকে তাড়া করে কোন একটি নির্দিষ্ট দিকে নিয়ে যায় যেখানে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা বাকি সদস্যরা শিকারটিকে অতর্কিতে আক্রমন করতে পারে। শিকারের ঘাড় ধরে ঝাঁকি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে কিংবা দাঁত দিয়ে মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়ে শিকারকে কাবু করে এরা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেও দলবদ্ধভাবে বিপদের মোকাবেলা করে সিংহরা, একদম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনিকদের মতো। পারিবারিক সম্পর্ক একটি দলের মধ্যে দারুন, পরিবারের নারী সদস্যরা মিলিতভাবে সন্তানদের পালন করে এবং দেখাশোনা করে।

images
[বিশ্রামরত অবস্থায় সিংহের একটি পরিবার]

বর্তমানে এশিয়াটিক লায়নের দুর্লভ এই প্রজাতিটির কৃত্রিমভাবে বংশবিস্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়াও গির অঞ্চলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অন্য আরেকটি অভয়ারন্যে কিছু সংখ্যক সিংহ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

এশিয়াটিক লায়ন প্রাচীন কাল থেকেই উপমহাদেশের নানা বৈচিত্র্যময় মাধ্যমে স্থান পেয়েছে। সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে এই প্রজাতির সিংহ প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এমনকি সম্রাট অশোক এর আমলে নির্মিত অশোকস্তম্ভতেও এই প্রজাতির চারটি সিংহের প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে। এই অশোকস্তম্ভের প্রতীক ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইতিহাসে সম্রাট অশোকই প্রথম ব্যক্তি যিনি সিংহ সংরক্ষণের ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শ্রীলংকার জাতীয় পতাকাতেও শোভা পায় সিংহের প্রতীক যা এই প্রজাতির। সিংহলি কথাটাও এসেছে এই সিংহ থেকেই। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এশিয়াটিক লায়নের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন শাসকের রাজত্বকালে।

national-emblem-of-india
[অশোকস্তম্ভ]

Sri-Lanka-Flag
[শ্রীলংকার জাতীয় পতাকা]

বিলুপ্তপ্রায় সিংহের এই প্রজাতিটি মানুষের নৃশংসতা এবং নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে আছে কোনমতে। অতি প্রাচীন একটি দুর্লভ প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষন করা মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের এই অঞ্চলগুলো থেকে নানা প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে পর্যাপ্ত সংরক্ষণের অভাবে এবং গুপ্ত চোরাচালানি ও শিকারীদের দৌরাত্ম্যে। বিলুপ্তপ্রায় প্রানীদের সংরক্ষণের মাধ্যমে এদের বংশবিস্তার নিঃশ্চিত করে এদের টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন। প্রয়োজন অভয়ারণ্য এবং উন্নত পদ্ধতির লালন-পালনের ব্যবস্থা। নয়তো এভাবেই একদিন পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যাবে এরা হয়তো সাথে সাথে একদিন আমরাও।

বনের রাজা সিংহ শুধু শিশুদের গল্পের বইয়ের পাতাতেই নয়, রাজত্ব করুক অরন্যে গহিনে দাপটের সাথে।

[সম্রাট অশোকের রাজত্বকালের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল সারনাথ ভ্রমণের সময়। সর্বশেষ অশোক স্তম্ভের ভগ্নাংশগুলো রক্ষিত আছে এখানে আর মূল অংশটি কাছের জাদুঘরে সেখানে ক্যামেরা নেয়া বারণ। এটিই ভারতের সংরক্ষিত একমাত্র অশোকস্তম্ভ। বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারে সারনাথের গুরুত্ব অপরিসীম। এখানেই গৌতম বুদ্ধ তাঁর দর্শন শিক্ষা দান করেন অনুসারীদের মাঝে। একটা বাগানও ছিলো গৌতম বুদ্ধের, এখানে তিনি হরিণ পালন করতেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য মঠ।

DSCN0144
[অশোকস্তম্ভের বেদীর ভগ্নাংশ। সারনাথ ভ্রমণের সময় তোলা।]

DSCN0161
[সারনাথ এর একাংশ। মঠের ধ্বংসাবশেষ]]

পাদটীকা


মন্তব্য

ধুসর গোধূলি এর ছবি
অরফিয়াস এর ছবি

বনের রাজা সিংহ। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

সিংহ কোন কালেই কিন্তু বনের রাজা ছিল না, সে থাকেই হয় মরুভূমি না হয় তৃণভূমিতে- কনরাড লোরেঞ্জ।

লেখা দারুণ--

অরফিয়াস এর ছবি

যতদুর দেখলাম, সিংহ সাধারনত বন এবং তৃণভূমির সমন্বয় পছন্দ করে বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে, যেখানে বাঘ পছন্দ করে বন এবং চিতাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বনকেই বিচরণক্ষেত্র হিসেবে প্রাধান্য দেয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সত্যপীর এর ছবি

মোগল আর ইংরেজ মিলা সিংহ মাইরা নাশ করে দিসে মন খারাপ , মোগল ছবিতে খালি রাজপুত্র আর তাদের বাপচাচার হাতীর পিঠে চড়ে সিংহ মারার ছবি, আর ইংরেজ অফিসারের শিকার বইয়ের পাতায় পাতায় শালাদের মরা সিংহের গায়ে একপা তুলে দেওয়া ছবি।

বাঘে গিজগিজ করা উপমহাদেশের সাহিত্য মিথলজি ছবি স্থাপত্য পতাকা সবজায়গায় হাজার হাজার বছর ধরে সিংহমামার দাপট কেন এইটা নিয়া একটা পোস্টের আবদার রাইখা গ্লাম।

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

রাজ-রাজাদের খামখেয়ালির জন্য অনেক প্রাণীই বিলুপ্তির পথে এগিয়েছে। বাঘ-সিংহ অন্যতম।

সিংহকে প্রাধান্য দেয়ার প্রধানত কারণ এর রাজকীয় ভঙ্গি। আর বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে কেশর থাকায় সিংহকে লাগেও অন্যরকম। এছাড়া এরা এই অঞ্চলে দুর্লভ। এই দুর্লভ হওয়ার কারণে সিংহের প্রতি আকর্ষণ এবং সম্মান দুটোই বেড়ে যায়।

Christy Ullrich এর মতে-

Lions have long been a symbol of power in India. More than 2,000 years ago Emperor Ashoka had images of lions engraved into a pillar at Sarnath, along with messages advocating nonviolence, tolerance, and respect for all living creatures. Ashoka may have been among the first rulers to advocate the protection of animals. Today India’s national emblem is based on the lions featured on Ashoka’s pillar.

Other kings and rulers in India also used the lion as a powerful symbol of their leadership. Although conservation was not their primary goal, the association between lion and ruler helped save the Asiatic lion from extinction.

দেখি চেষ্টা করবো, তবে ইতিহাস তো ভালো লেখেন আপনি। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ফাহিম হাসান এর ছবি

@সত্যপীর ভাই: রাজা-প্রজা নির্বিশেষেই শিকার চলত। খালি প্রজাদের ক্যামেরা ছিল না

নিচে তানভীর ভাইয়ের মন্তব্যটাও দ্রষ্টব্য

সত্যপীর এর ছবি

চলুক

..................................................................
#Banshibir.

ক্লোন৯৯ এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

ইন্টেরেস্টিং

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অরফিয়াস এর ছবি

হুমম ইন্টারেস্টিং।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সিংহ কেন পশুরাজ ? পশুরা কি এটা মানে ?

অরফিয়াস এর ছবি

সিংহকে তো পশুরাজ বলি আমরা, বনে তো এধরনের কোন নিয়ম নেই। সিংহের রাজকীয় ভাবভঙ্গির জন্যই হয়তো বলা হয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানভীর এর ছবি

চলুক

অশোকস্তম্ভে যে সিংহ বেছে নেয়া হয়েছে তার কারণ কিন্তু সিংহ সংরক্ষণ বা অশোকের ক্ষমতা বোঝানোর জন্য নয়। সিংহ বুদ্ধের একটি প্রতীকি রূপ। বুদ্ধের বাণী প্রচারকে তুলনা করা হয় 'সিংহ গর্জন' বা Lion's Roar নামে। বনে সিংহ গর্জন করে উঠলে অন্য প্রাণীরা সবাই যেমন তা শোনে, অশোকস্তম্ভের চার সিংহ বুদ্ধের বাণী পৃথিবীর চতুর্দিকে সবাইকে শোনার জন্য তা ছড়িয়ে দিচ্ছে- এ রকম কিছু একটা এ প্রতীকে বোঝানো হয়েছে। শ্রীলংকা বা অন্যান্য বৌদ্ধপ্রধান দেশ বা রাজাদেরও তাদের প্রতীকে সিংহ ব্যবহারের মূল কারণ এটা। Lion's Roar সম্পর্কে এখানে একটা ইন্টারেস্টিং আলোচনা পেলাম।

ফাহিম হাসান এর ছবি

চলুক বিষয়টা জানা ছিল না।

অরফিয়াস এর ছবি

অশোকস্তম্ভের জন্য সিংহ প্রতীক বেছে নেয়ার কারনটা আমিও জানতাম না। ভালো করেছেন তানভীর ভাই লিঙ্কটা দিয়ে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ফাহিম হাসান এর ছবি

বেশ গোছানো পোস্ট। জীবনে সামনাসামনি সিংহ দেখার সৌভাগ্য হয় নাই - বড়ই আফসোস

অরফিয়াস এর ছবি

গির অভয়ারন্য তো সামনেই ঘুরে আসেন। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাইদ এর ছবি

৪টি সিংহ বলা হয়, কিন্তু দেখা তো যায় ৩ টি... চিন্তিত

তানজিম এর ছবি

৪ টা একসাথে দেখতে হলে ঐ স্থম্ভের চূড়ায় চড়তে হবে দেঁতো হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

চূড়ায় চড়ার দরকার নাই। এমনিতেও বোঝা যায়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

সামনের দিক থেকে তো নেয়া হয়েছে ছবিটা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অমি_বন্যা  এর ছবি

সিংহ নিয়ে এত কিছু অজানা ছিল! আপনার সব লেখায় অনেক তথ্য সমৃদ্ধ হয়, এটাও ব্যতিক্রম হয়নি। উত্তম জাঝা!

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

songjukta  এর ছবি

উত্তম জাঝা!

অরফিয়াস এর ছবি

দেঁতো হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

সিংহনামা নাকি সিংহোপাখ্যান নাকি সিংহগাঁথা? সবগুলোই বলা যায়। লেখক অধ্যাবসায়ের প্রশংসা করি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও না-জানা তথ্য ওঠে এসেছে।

(মাঈনউদ্দিন মইনুল)

অরফিয়াস এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মাহবুব লীলেন এর ছবি


এশিয়ার শেষ সিংহ আর দেশ বিভাগের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়া গান্ধী-জিন্না-প্যাটেল হগ্গলেই গুজরাটি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গুজরাতে বর্তমান সিংহ নরেন্দ্র মোদীরে কি হিসাবের বাইরে রাখলেন? উনি এখন যা কিছু করছেন সেটাও কিন্তু ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অরফিয়াস এর ছবি

মোদীর উত্থানটা রহস্যময় হলেও লোকটা ভালোই এগিয়ে নিচ্ছে। এর পেছনে এখন রাষ্ট্রীয় সমর্থনও অনেক, অনেকেই চাইছে একে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী করতে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

হ। লীলেনদা, আছেন কেমন?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

যুমার এর ছবি

উত্তম জাঝা!

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।