===========================
আপেল-ঘ্রাণে ম্রিয়মান হয়ে গেছে বাকি সব হেমন্ত
হেমন্ত স্মৃতিতে ঘুমঘুম
পানের বরজে রাতের ছায়া লুকোচুরি খেলে অক্লান্ত
ক্লান্ত ঘর আছে নিঝুম
আপেলে অটুট থাকে স্পর্শের লিপি, নরম অক্ষর
এক কালি ও পাঁচ কলমে আঁকি আপন স্বাক্ষর
হাতে যদি তোলা একটি সিঁড়ির অবয়ব
অবয়ব আমার জানে মালতীর গন্ধ সব
আপেল গঠনে মেঘ আছে থোকা থোকা
চাঁদের ভস্ম কার কাড়ে নজর
মৌনতার ঘরে দু'জন রই চুপচাপ
পানের বরজ...
০
ঘুম নিয়ন্ত্রণক যন্ত্রটার কাঁটা প্রায় শূন্য ছুঁইছুঁই করছে। আর পাঁচ সেকেন্ড বাকি।
মহাজাগতিক তরঙ্গ, বর্হি-আক্রমণ ইত্যাদি নিরোধক দশ ইঞ্চি কাঁচের শামিয়ানার ওপারে বিচ্ছুরিত আলোর অরণ্য। একটা উল্কা ঈগল হয়ে ঠোঁকরে যেতে চায় নিরাপত্তা-কাঁচ; নিজে পুড়ে খাক হয়ে যায় নিমেষেই।
১
ধীরে ধীরে চোখ মেলে সে।
ঘুম নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটা অনেক কাজের- বিশেষ করে অর্ণবের মতো নিদ্রাহীনতায় ভোগা মানবদের জ...
========================================
০
প্রথমে ভেবেছিলাম অ-আ-ক-খ ইত্যাদি অনুচ্ছেদে লিখব। কয়দিন পর অক্ষর ফুরিয়ে যাবে। সে বিবেচনায় সঙখ্যাবাচক অনুচ্ছেদ। ০। শূন্য থেকে এসে শূন্যে মিলাবে একটি নদী।
আমি এসব লিখতে চাই নি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে, আমাকে বাধ্য করেছেন। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।
১
শব্দ রসায়নে নিষ্ক্রিয়। পদার্থে ক্ষয়িঞ্চু, ব্যবহারে বিবর্তিত। মানুষ শব্দের ঈশ্বর। ঈশ্বর ও তার সৃষ্টি পরষ্পরক...
অ
লোকটি দাঁড়ির ফাঁকে রোদের লুকোচুরি নিয়ে সূর্যে এসে দাঁড়ায়। রোদে শরীর রাখে।
খালি গা থেকে উড়ে যায় কতকগুলো ঘামের চিল। একবার মেঘের শ্রীটা দেখে নিয়ে পা বাড়ায় সে- যেতে হবে ঝুপড়ি দোকানে; বেলা হয়ে আসছে- বারটার পরে কলিমমিস্ত্রি আর চা করে না। কলিমমিস্ত্রি চায়ের কারিগর, কাঠের না। অথচ তার দোকানের মন্দার কাঠের বেঞ্চিতে বসলে আরাম লাগে- গরমকালে স্রোতেলা জলে স্নান দিলে যেমন লাগে সেরকম। বসে ব...
খুব অযৌন দেখি তোমার চুলের সংসার,
ঘুমের শুদ্ধিপত্র।
বিছানায় অঙ্কিত ফুলগুলোর আলগা ছেড়ে
সহাস্যে মুদে আসে রাতের চোখ,
মশারীর ভিতর তোমার বুকের 'পরে সুতোর শিল্পায়ন
দেখি। পাশ ফিরে ঘুমাতে গেলে উচ্ছন্ন সৈনিকের
বুটের শব্দ নিয়ে ছিঁড়ে যায় বোতামের জমাট।
কাল আমাকে আবার সুঁই-সুতোর বিজন নিয়ে বসতে হবে-
অথচ বোতামফুলের রঙঘ্রাণ ভুলে গেছি!
শার্সিতে রোদের বিতরণ দেখে হয়তো
কাল সকালে
স্লেটে শিশু...
আমি তাকে দেখতে যাই পাতার সংকলনে,
সফেন মেঘের অন্নে;
খামার উজানে দিয়ে দিই রাতুল দোয়েল।
আশাবরী সুর নিয়ে অনেক শহরের নাল হাঁটে
হাঁটে অজস্র ঘৌড়ার পা; পাঞ্জাবীর খুঁটে ঝুলে
থাকে সূর্য!
রোদের শরাব পানে হয়ে গেছি শিমের রঙনেশা
আমার হাতে নৃত্য করে নিদাঘ দুপুর
কাঁধে সোডিয়াম-বাতির ঝুনঝুন।
তার পাতার সংকলনে জানিয়ে দিই শহরের শ্লোক।
এখানে রোদ জমে আলোর নদী হয়ে যাচ্ছে। আমরা গতরাতের কুয়াশার চাদর খুলে ঝাঁপি দিই, ঝাঁপি দিই বিবস্ত্র শরীরে। জলের ওম লেগে আসে আস্তিনে, চোখে, মুখে, নাকে। আমরা হাঁপি খাই। মাছের ঘ্রাণ নিয়ে অটুট হয়ে আছে কয়েকটি শালুক। আমরা তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়াই। রোদের গল্প শুনি।
আমরা শুভালক্ষ্মীর জলে সিনানে।
দূরবর্তী মাঠে স্তনমতো হয়ে আছে একটি বট; তাহার শাখাহাড়ে, পাতার গোপনে কতগুলো শালিক খেলা করে বাতাসের...
হুইসেল বাজিয়ে নিলীকা চুষে নিচ্ছে সমস্ত বিকেল,
আমি পুড়ে যাচ্ছি, পুড়ে যাচ্ছে ফিঙেশিস্!
লাউ পাতার নরোম নরোম দেখিয়ে নিলীকা কেড়ে
নিচ্ছে জোনাকনদীসন্ধ্যে;
অভিমানে নারিকেল পাতায় আঁছড় কাটে একটি দোয়েল-
একটি দোয়েল।
খুব সন্তোপণে আমরা পিছনে ফিরে যাই
পিছনে উঠে আসে নিরুদ্দেশ মাঠ
আর আইলের অচিন।
জন্মান্ধ হয়ে খুঁড়ে গেছি পাতার জংশন,
মেঠো ছত্রাক কান্না।
পদ্মফুলের আস্তিনে সূর্যের পরশ সুবঁধ...
অন্য কোথাও আমার অস্তিত্ব ছিল, তাই তোমাদের যকৃতে কোন নিমের ক্ষেত বুনে দেই নি।
জলে স্বচ্ছন্দ হয়ে গেছি
পাতায় ভেসে ভেসে শুভালক্ষ্মী
জলে শরীর খুলে আছি
কাহার দৃষ্টিতে ডাকে মীনআঁখি
মুঠোমুঠো ছইয়ের কোমল
গেঁথে নিয়েছি জলভ্রমণে,
ক্ষেতের দোয়েল মখমল
বাতাসে ডুবি দেয় সন্তরণে;
আমি দোয়েলছায়ার মর্মর
জলে আঁকি তোমার শরীর
তুমি নক্ষত্র হও, আমি নিমের ক্ষেত বুনে দিব।
জ্বর এলে খোকাটে হয়ে যাই, উলট-পালট শুয়ে থাকি সারা বিছানা। আধ খোলা চোখে বিছানায় কাঁথা-কম্বলের রাজ্য বিস্তার দেখি! আমার সিথানে এক ফালি জানালা, খানিক উঁচুতে; পূর্বমুখী বলে বিকালের ঘ্রাণ টানার সময় আমি সাঁঝের কোমরের গন্ধ পাই- আমার সুখ হয়। আজ কেবল জ্বরের সংস্পর্শে ঘোর- নিউরনে ক্রমশ স্থান-দাবীদার একটি শিরীষের পত্র, আমি রেখা টানি তাতে; আমার সুখ হয়।
ঘরের তাপমাত্রা এই কড়াইয়ে-বেগুন-ভাজার মতো...