যোগাড়যন্তর
শিকড় উপড়ানো আর শিকড় গাঁথার দুই অসম্ভব কাজের টানাপোড়েনে দিন কাটে আমার। দেশ ছাড়ার পাঁচ বছর হয়ে গেলেও তাই ভোররাতের স্বপ্ন নিজের অস্তিত্বকে নড়বড়ে করে দেয়। মিষ্টি খাবার বালখিল্য স্বপ্নে গভীর নিশ্চিত ঘুম থেকে হঠাৎ করে হারিয়ে যাই অন্য সময়ে। ঘুম ভাঙতে ভাঙতে মনে হয় যেতে হবে হবিগঞ্জের বাণিজ্যিক এলাকার গোপাল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। কয়েক সেকেন্ড ধরে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার করে বুঝতে পারি আমি হবিগঞ্জে নেই। ধ্যুত্তেরি বলে গজরাতে থাকি, এখন আবার সায়েদাবাদে গিয়ে বাস ধরতে হবে। তারপর পুরোপুরি সজাগ হয়ে বুঝতে পারি ৫ বছর কেটে গেছে, আমি এখন ঢাকাতেও নেই। শোবার ঘরে স্তুপ করে রাখা জামা-কাপড়, কয়েকদিন ধরে জমানো কফির কাপ, বিশাল টেবিল সব হঠাৎ করে যেন নাই হয়ে যায়, আর আমি অন্ধকারে বসে থাকি স্তব্ধ হয়ে। ঘন্টাখানেক কাটলে, গৌরি সেনের অবতার ক্রেডিট কার্ডের উপর ভরসা করে সামারের শেষ তিন সপ্তাহের জন্য দেশে আসা-যাওয়ার টিকেট কিনে ফেলি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম গত এক বছর ধরে অভাবনীয় সাফল্যের সাথে খেলে নিজেদেরকে বিশ্বের প্রথম সারীর একটা দলে পরিণত করেছে। সাফল্যের পথ বেয়ে আসে নানা অবাঞ্চিত জঞ্জাল, আত্মঅহমিকার তোড়ে অনেক সময় সরে যায় মানবিকতার মুখোশ, আর বেরিয়ে আসে আমাদের আসল চরিত্র। বাংলাদেশ বনাম সাউথ আফ্রিকার মধ্যকার প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে কিছু দর্শক ডেল স্টেইনকে মৌখিক অপমান করার পাশাপাশি তার গায়ে মার্বেল ছুড়ে মেরেছে
১
ক্যালিফোর্নিয়ায় গাড়ী চালানো শিখে ভার্জিনিয়ায় গাড়ী চালানো হচ্ছে ফাইটার বিমান চালানোর শিক্ষা দিয়ে রিকশা চালানোর মত ব্যাপার। ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় ৭০ মাইল স্পিড লিমিটের রাস্তায় লোকে অহরহই ৯০/৯৫ এ উঠে যাচ্ছে, রাস্তার দ্রুততম গাড়ী না হলে এই জন্য পুলিশ খুব একটা ধরেও না। কিন্তু ভার্জিনিয়ার গল্প অন্য, এমনিতে বেশিরভাগই মাত্র দুই লেনের রাস্তা, স্পিড লিমিটও ৬৫ এর বেশি খুব একটা উঠে না, আর পুলিশ স্পিড লিমিটের দশ উপরে উঠলেই প্রায় নিশ্চিত ভাবে টিকেট ধরিয়ে দেয়। আর ক্যাম্পাস টাউনে থাকি বলে শহরের ভেতরে বেশিরভাগ সময় ২৫ মাইলের আশে পাশে চালাতে হয়।
বাস্তব আর ভার্চুয়াল জগৎ
ধরা যাক, দুর্ঘটনাগ্রস্থ এলাকায় পাঠানো রোবটের সাথে যোগাযোগ করে তাকে প্রতিনিয়ত নির্দেশ দিতে হবে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে। এখানে সমস্যা বেশ কয়েকটি। রোবট আর তার মানুষ চালকের মাঝের যোগাযোগের মাধ্যমটি খুবই অনির্ভরযোগ্য, কিছু ডাটা হারিয়ে যাবে, কিছু আসবে বিকৃত হয়ে। ধরা যাক রোবটটি মেল্টডাউনের সম্মুখীন হওয়া কোন পারমাণবিক কেন্দ্রের কোন কক্ষে গিয়ে কিছু একটা মেরামত করার চেষ্টা করছে। যেহেতু দুর্ঘটনার সম্মুখীন, কক্ষের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে কিছু জানার উপায় নেই যে রোবটটিকে আগে থেকে শিখিয়ে পড়িয়ে দেয়া যাবে। রোবট ধীরে ধীরে যখন চলাফেরা করতে থাকবে সে আশেপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে তার নানা সেন্সর দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সেটা মাস্টারকে পাঠাবে। চালকের কাজ সেই ডাটাকে বিশ্লেষণ করে রোবটের চারপাশকে বুঝে নিয়ে তাকে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কমান্ড পাঠানো। সেটা হতে পারে ডানে যাও, বামে যাও, স্ক্রুটা ঘুরাও এর মত সাধারণ কিছু কমান্ড।
ন্যাড়ার একবার পর্যন্ত বেলতলায় যাওয়ার নিয়ম আছে। আমার মাথাভরা চুল, একবারের ব্যাপারটা ঠিকমত বুঝি না। তাই বার বার স্কুলে ফিরে আসি আরো উচ্চশিক্ষিত হওয়ার জন্য। আর প্রতিবারই আগের চেয়ে বেশি করে নিশ্চিত হই মাথায় ধূসর পদার্থের অভাব সম্পর্কে। এছাড়া সবুজতর ঘাসের চিরন্তন খোঁজে ঘুরে মরাতো আছেই।
শিকারের শখ অনেকের, কিন্তু সাহস হাতে গোণা কয়েকজনের। যদিও শিকারের আত্মরক্ষার তেমন কোন উপায় নেই, তবুও বন্দুকের রিকয়েল কিংবা গুলির আলগা ফুলকি ছুটে পেলব ত্বকে দাগ বসিয়ে দিতে পারে। কিংবা কোমল মনের কেউ নিষ্ঠুর বলে ভর্ৎসনা করতে পারে। ইত্যাদি নানা ভয়ে বেশিরভাগ শিকারপিয়াসু দূরে দাঁড়িয়ে অন্যের শিকার দেখে ভিকারিয়াস আনন্দ পায়। তবে কেউ কেউ শিকারের দেহ নিথর হয়ে এলে লোকলজ্জা ও অস্ত্রের ভয় কাটিয়ে উঠে। তারাও অংশ নি
উচ্চশিক্ষার অকালসমাপ্তি করে একটা টিউবে মাস্টার্সের সার্টিফিকেট আর দুই লাগেজে স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তি ভরে বছর দুই আগে চ্যাপেল হিল ছেড়েছিলাম। সেই থেকে মোটামুটি অস্তিত্ব থেকে ইলোপ হয়ে গিয়েছিলাম। সব সময় পরিকল্পনা মত সবকিছু হলে যা হয়, অনাকাঙ্খিত ব্যার্থতা গ্রহণ করার সক্ষমতা গড়ে উঠে না। বিদেশ বিভূঁই, যেখানে পায়ের নিচের মাটি সতত সরণশীল, এই ব্যাপার শেখার আদর্শ পরিবেশ না। তাই গত দুই বছর নিজের মুখোমুখি
ভূমিকা
মহামতি জাতকের মতই ইতিহাসের নানা বাঁকে উদিত হয়েছেন মহামতি ম্যাগ্রোগিয়া। ইতিহাসের প্রেমিক মহামতি ত্রাক তাঁর সেই সব কীর্তি লিখে রেখেছেন ছাগচর্মে। সেই ছাগচর্মেগ্রন্থিত ইতিহাসের অসমাপ্ত চুম্বকাংশ এখানে।
জেনেসিস
শেরপা, অক্সিজেন মাস্ক, জীবন রক্ষাকারী গরম মুরগির স্যুপ, কয়েক পরতের উইন্টার জ্যাকেট ইত্যাদি ছাড়াই, শুধুমাত্র দুই বোতল পানি সম্বল করে শর্টস আর রানিং শ্যু পড়ে পর্বতের চূড়ায় এসে পৌঁছালাম। শ্রীমঙ্গলের সর্বোচ্চ পাহাড় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের শীর্ষ জয় করার পরে স্যান ডিয়েগোর অদূরে মেক্সিকো সীমান্তসংলগ্ন ছোট শহর ছোলা ভিস্তার সর্বোচ্চ পাহাড় স্যান মিগ্যুয়েলের চূড়া বিজয়। নিজের পায়ে হেঁটে জীবনের এই সর্বোচ্চ অর্জনে
গ্যালারির অগুণতি দর্শকের হাত, গাল, বুক, পিঠ আর জামায় ভর করে পাকিস্তানী পতাকা উড়ে। স্বাধীনতার মাসে, পাকিস্তানীদের চালানো গণহত্যা সূচনার মাসে এ দেখে জীবিত অনেকেরই তেমন প্রতিক্রিয়া হয় না, তবে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো ত্রিশ লাখ শহীদ আর চার লাখ ধর্ষিতার দীর্ঘশ্বাস মনুষ্যত্বের ছিটেফোঁটা থাকলেই টের পাওয়া যায়। একটা পুরো দেশতো আর অমানুষে ভরে যেতে পারে না, তাই স্বজাতির রক্তঋণ অস্বীকারকারী কুলাঙ্গারদের ভীড়ে