আমরা মানুষ হবো কবে?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ০৭/০২/২০০৯ - ৪:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মহাজোটের বিশাল জয়ের পর সবাই আশা করছেন এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হবে। আর এ জন্য জাতীয় সংসদে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। আমরা এদিকে বিচারের দাবীতে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার বের করছি, কিন্তু আদৌ কি এতে কোন লাভ হচ্ছে?

গতকাল ও আজ ৫ ও ৬ই ফেব্রুয়ারী সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিল ছিল। এতে দেলোয়ার হোসেন সাইদী ও কামরুজ্জামান ওয়াজ ফরমাইয়্যাছেন।

আজকে রাতে ওয়াজ শেষ হবার পরের ছবিটা ছিল দেখার মতো। হাজার হাজার মানুষ সিলেটের বাইরে থেকে এসেছে ওয়াজ শোনার জন্য। চৌহাট্টা থেকে রিকাবীবাজার পর্যন্ত ছিল লোকেলোকারণ্য। চৌহাট্টা পয়েন্টে রিক্সায় বসে দেখলাম শুওরের বাচ্চা সাইদী পাজেরো গাড়িতে হেসে হেসে যাচ্ছে। আর অবাক হয়ে দেখলাম পয়েন্টের ট্রাফিক পুলিশ সাইদীকে সালাম ঠুকছে।
আমাদের এই গোলামীর স্বভাব যাবে কবে? আমাদের রিক্সা ড্রাইভার গাড়ীর আগে যেতে চাইছিল বলে ট্রাফিক পুলিশ তাকে থাপ্পড় মারলো। আর আমি এর প্রতিবাদও করতে পারলাম না?
ধিক্কার জানাই নিজেকে। আমি এটার প্রতিবাদ করতে পারিনি বলে। আমরা আসলেই সচেতন হবো কবে?
শান্ত


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে।

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ করো না , শান্ত।
সারাদেশে জামাতীদের আসলে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার সমর্থক গোষ্ঠী আছে। এবং এ গোষ্ঠীর আকার খুব একটা বৃহৎ নয়। আমার মনে হয় না গত ক'বছরে এদের জনপ্রিয়তা কোন অংশে বেড়েছে। তার একটা সাম্প্রতিক চিত্র তো আমাদের নির্বাচনেই দেখতে পেলাম, তাই না?

তুমি যা দেখেছ---সেটা হল মুলত 'জামাতী'-দের সমাবেশ। সেখানে 'সাধারন মানুষ' খুব কমই পাবে। জামাতীরা সংখ্যায় অল্প হলেও, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি--তারা অনেক সংগঠিত। তুমি আলেয়া মাদ্রাসার মাঠে শুধু একটা ছোট গোষ্ঠীর সংগঠিত সমাবেশ দেখেছ। আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে হাজার খানেক লোক জড় হলে সেটা রীতিমত 'জনবহুল' বলেই মনে হবে।

আমার মনে হয় না---এতে আমাদের হতাশ হবার কিছু আছে। বরং আমাদের খুশি হবার কারন হল এই যে, এখন আমাদের মাঝে তোমার মত অনেক 'শান্ত' আছে---তারা দিন গুনছে, তারা মুঠি পাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষায় আছে।
আজ হয়ত তুমি প্রতিবাদ করতে পারো নি। কাল পারবে। আর তখনই তুমি জন্ম দেবে আরো কিছু 'শান্ত'----

হাল ছেড়ো না----

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পোস্টের বক্তব্যের সাথে একমত না। ভালো লাগে নাই।

আমরা এদিকে বিচারের দাবীতে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার বের করছি, কিন্তু আদৌ কি এতে কোন লাভ হচ্ছে?

এ দাবী, এবং স্টিকার প্রচার মুদি দোকানের ব্যবসায় নয় যে সন্ধ্যায় এসে লাভ ক্ষতি হিসাব করতে হবে। এতদিন পরে এটা অনেক জরুরী এবং প্রক্রিয়াশীল একটি ইস্যু।

ওয়াজ শোনার জন্য যাওয়া আর ভোট/সমর্থন দেয়া এক কথা না।

ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশে 'আমরা' কবে 'মানুষ' হবো প্রশ্নটা মাত্রাতিরিক্ত।।

যে সচেতনতা তৈরিতে সবাই সমবেত হচ্ছে, সেটাকে এভাবে বিচারের চেষ্টা ভুল প্রয়াস।

সবজান্তা এর ছবি

শিমুল ভাই, আমার মনে হয় উনি আসলে হতাশা আর ক্ষোভের থেকে এ'কথাটা বলেছেন।

আক্ষরিক লাভ ক্ষতির কথা সম্ভবত উনি নিজেও ভাবেন না।


অলমিতি বিস্তারেণ

হেলাল এর ছবি

যত বড় অপরাধীই হোক গালাগালি আমি পছন্দ করিনা। কিন্ত দেইল্লা চুরাকে শুয়রের বাচ্চা গালিটা এত মজা পেলাম যে ইকনমি রিচেশনে চাকরি হারিয়েও শরীরটা আনন্দে ফুরফুরিয়ে উঠল। আমি শান্তকে শতকোটি ধন্যবাদ দিলাম।
তবে কথায় আছে না, খালি কলসি বাজে বেশী। ঐ সমাবেশে যত লোক দেখেছেন , তা যে কেবল শুধু সিলেটেরই না ,তা বলাইবাহুল্য। আমি নিশ্চিত জামাতিরা লোকানোর জায়গা খোজে পাবে না। তবে কুকুর গুলো দেশের বাহিরে না পালালেই হলো।

হেলাল এর ছবি

আনোয়ার সাদাত শিমুল ভাই ,বুঝলাম না আপনার বক্তব্যটা কি? আপনি জামাতকে চিনতে
ভুল করছেন নাকি, আমরা আপনাকে চিনতে ভুল করছি। তা না হলে বলতেন না
জামাতিদের ওয়াজ ও ভোট চাওয়া এক জিনেস না। তবে আপনার আপত্তি খুব মার্জিত
হয়েছে যা জামাতিদের হয়না।
দুঃখিত, আপনাকে ধন্যবাদ দিতে পারলাম না।

হিমু এর ছবি

তবে আপনার আপত্তি খুব মার্জিত
হয়েছে যা জামাতিদের হয়না।

হেলাল, আপনি কি এই কথার মাধ্যমে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে শিমুলকে জামাতি বলতে চাইলেন?

আপনাকে দু'টি প্রশ্ন বিবেচনা করতে অনুরোধ করি।

১. আপনি সচলায়তন কতদিন ধরে পড়েন?
২. আপনি শিমুলের লেখা কতদিন ধরে পড়েন?

আমার মনে হয় প্রশ্ন দু'টি নিয়ে ভাবলে আপনার ক্ষোভের প্রশমন ঘটবে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অতিথি লেখক হেলাল, সচলায়তনে স্বাগতম। শুরুতেই বলেছেন - "বুঝলাম না আপনার বক্তব্যটা কি?"
এটা যদি হয়ে থাকে, তবে একটা মন্তব্য করে জানতে চাইতে পারতেন আমি কী বলতে চেয়েছি। সেটা না করে আমাকে নিয়ে একরকম উপসংহারে গেলেন। আপত্তি নেই, এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে - সে আপনার চিন্তার স্বাধীনতা, কিন্তু আমাকে চিনতে না পারার সংশয়টা প্রকাশ করলেন সম্মিলিতভাবে, বহুবচনে বলেছেন - "আপনি জামাতকে চিনতে ভুল করছেন নাকি, আমরা আপনাকে চিনতে ভুল করছি।" কারা এই "আমরা", জনাব? আপনি জনাব 'হেলাল'এর সাথে আর কারা কারা আছেন এই প্রশ্ন উত্থাপনে?
আমার মার্জিত বোধ এবং তার সাথে জামাতিদের মিল খোঁজা কিংবা আমাকে আপনার ধন্যবাদ না দেয়ার প্রসংগ দেখে বলতে হয়, 'স্টার্ট ইয়্যুর ডে উইথ এ লাফ'। মন্দ না।

সহজ ভাষায় লিখার চেষ্টা করি সব সময়। আরও একবার করি এখন। যা বলতে চেয়েছি, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী অনেক আগে থেকে থাকলেও এবার নির্বাচনী ইস্যু হয়ে বেশ জোরেশোরে আলোচনায় এসেছে। একেবারে ফ্রেশ এক প্রজন্ম নানানভাবে এ দাবীতে একত্র হচ্ছে, যার একটি স্টিকার দিয়ে প্রচার। এবং সেটা নিয়ে এই পোস্টে বলা হয়েছে - "আমরা এদিকে বিচারের দাবীতে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার বের করছি, কিন্তু আদৌ কি এতে কোন লাভ হচ্ছে?"
যে প্রক্রিয়া এইমাত্র শুরু হলো স্টিকারে, লিখনিতে, প্রচারে; তার লাভ ক্ষতির হিসাব কোথাকার এক ওয়াজের প্রেক্ষিতে বিচার্য হবে কেনো? বাংলাদেশে যারা ওয়াজ শুনতে যায় তারা সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে আছে এমন সিদ্ধান্ত কতোটা বাস্তব? (ওয়াজ কালচার কেনো গড়ে উঠলো, কেনো মানুষ ওয়াজে যায়, কীভাবে এটাকে ঠেকানো যায়; সেটা নিয়ে আলাদা আলোচনা হতে পারে)।

সর্বোপরি একটি নিছক ব্যক্তিগত বোধকে 'আমরা' ট্যাগ করে 'মানুষ' হওয়ার শংকা জানানোতেই আমার তীব্র আপত্তি। (আমার আগের কমেন্টে আমরা এবং মানুষ শব্দদুটিকে কোট আন-কোট করাটা একটু 'খিয়াল' করে দেখতে পারেন।)

ভালো থাকেন, আপনি এবং 'আপনারা'।

রায়হান আবীর এর ছবি

হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে।

=============================

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই পোস্টে মন্তব্য দেয়ার ইচ্ছে ছিলনা। কারণ পোস্টের বক্তব্য অতি বালসুভল। একটা জনসভার মেজাজ টিপে পুরা জাতির উপর কনক্লুশন ড্র করার চেষ্টা।

একেকটা বিষয় একেকজন কিন্তু একেকভাবে দেখে, একেক মাত্রায় দেখে। যেমন ধরুন কেউ জামাতিদের পছন্দ করেননা বলে গালি দিতে ভালবাসেন। কেউ তাতে আনন্দও পেতে পারেন। আবার অনেকেই আছেন যারা ওদের পছন্দ করেননা, কিন্তু গালি দিতে অপছন্দ করেন। উপরন্ত, গালি দেয়া আর গালিময় বক্তব্য কিন্তু ভিন্ন বিষয়।

আপনার সুরে সুর মিলালেই যে আপনার পক্ষে তা ভাবা কিন্তু ভুল হতে পারে। ধরুন এই পোস্টে সচলায়তনের কেউ মন্তব্য করলনা। তাহলে কি সচলদের সম্পর্কে এধরনের বক্তব্য অন্য কোথাও লিখবেন?

শিমুলের মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে একজন সম্মানিত অতিথি যা বললেন তাতে পোস্ট-লেখকের চেয়ে তাঁকে বেশী হতাশ মনে হচ্ছে। তাঁদেরকে অনিকেত আর দ্রোহী'র মন্তব্য ভালো করে পড়ে নেবার আহবান করছি।

অম্লান অভি এর ছবি

হেলাল লিখেছেন:
আমি নিশ্চিত জামাতিরা লোকানোর জায়গা খোজে পাবে না। তবে কুকুর গুলো দেশের বাহিরে না পালালেই হলো।

কুকুর নয় কুত্তা বলাই ভালো। প্রার্থনা আপনার নিশ্চয়তা যেন পূর্ণতা পায়।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ সবাইকে।
শিমুল ভাই ও প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই, আমি মনে হয় আমার বক্তব্য ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি। ওয়াজ বা জনসভার সাথে আমার কোন ঝামেলা বা আপত্তি নেই। আমি “আমরা কবে মানুষ হবো” বলেছি কারণ ট্রাফিক পুলিশ এখনও ওদেরকে স্যালুট দেয়। এখনও রাজাকাররা পাজেরো গাড়িতে হেসে হেসে চলে আর এসবের আমরা কোন প্রতিবাদ করতে পারিনা। এখনও রাস্তা বন্ধ রেখে রাজাকারদের ওয়াজের অনুমতি দেয় প্রশাসন আর আমরা একটি নাট্যতসব করতে গেলে প্রশাসন থেকে বলে লোকাবলের অভাব। সাইদীর গাড়ি ঠিকভাবে যাওয়ার জন্য এক রিক্সা ড্রাইভার পুলিশের হাতে মার খায়। এই পুলিশ এই প্রশাসন এদের নিয়েইতো আমাদের জাতি। ওরা যদি এখনও এইভাবে গোলামী করে তাহলে কি মনে প্রশ্ন জাগে না? আর লাভ ক্ষতি বলতে আসলে আমি সবার সচেতনতাকে বোঝাতে চাইছি। এত কিছুর পরেও যদি দেখি প্রশাসন রাজাকারদের গোলামী করছে …………… তাহলে কি বলার আছে? আমি নিজেও এটার প্রতিবাদ জানাতে পারিনি। এটাকেও আমি এই কথার মাঝে বোঝাতে চেয়েছি।
হয়তো আমার শিরোনামটা ঠিকমতো দেয়া হয়নি। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা চাইছি। আর আমি হাল ছাড়ার লোক নই। আমি সবসময়ই একজন প্রচণ্ড আশাবাদী মানুষ। চেষ্টা থাকবে ভবিষ্যতেও এরকম থাকার।

শান্ত

অমিত আহমেদ এর ছবি

তাৎক্ষণিক ক্ষোভ থেকে দেয়া পোস্ট সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে। এমন পোস্টের আক্ষরিক অর্থ না ধরাই উত্তম। শান্তর জায়গায় আমি থাকলে আমারও রাগে গা চিড়বিড় করতো। তবে এই ওয়াজের ঘটনাটা খুব ছোট একটা অংশ - পুরো বাংলাদেশের মানুষকে ওই দেখে যাচাই করা ঠিক না। নির্বাচনে তো প্রমান হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ ওদের দুই পয়সা দাম দেয় না, হয়নি?

আরেকটা কথা, সব জায়গা থেকেই যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবি তুলতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমার একটা ছোট মন্তব্য, আপনার একটা ছোট পোস্ট, কিংবা হাজার হাজার স্টিকার... কোনো কিছুই মূল্যহীন নয় - এটা মনে রাখবেন।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

পলাশ দত্ত এর ছবি

আমরা আপনাকে চিনতে ভুল করছি

-এখানে আমরাটা কারা সেটা আপনি বলতে হবে হেলাল। এভাবে আমরা বলে নিজের মতের সঙ্গে আরো আরো মানুষের মতের মিল আছে- এমন ভাব নেয়া অন্যায়। এই আমরাটা কারা হেলাল?

======================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

অতিথি লেখক এর ছবি

এই তথাকথিত ধর্মপ্রেম বাংলার মানুষকে আর কতকাল অন্ধ করে রাখবে কে জানে?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।