এ্যাকাডেমিক পাবলিশিং-২

কুমার এর ছবি
লিখেছেন কুমার [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৩/০২/২০১২ - ৫:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাহিত্য লিখতে মঞ্চায়। সচল হইতে মঞ্চায়। কিন্তু ক্যাম্নে কি? একছুডো ভাইরে (বেয়াদ্দব কিন্তু আমার অতিপ্রিয়, লেখালেখির গুনবিশিষ্ট) প্রশ্ন করলাম-বলত কিভাবে লেখা শুরু করা যায়? ছোকরা কয় লিখুন, লিখে ফেলুন, যা মনে আসে লিখে ফেলুন। আমি প্রশ্ন করলাম তা কি নিয়ে লেখা যায় বলতো? ছোকরা হেসে বলে-লিটারেচার রিভিউ করেন, লিটারেচার রিভিউ। তারপর থেকে পড়া যে শুরু করলাম, পড়তেই আছি, পড়তেই আছি। পড়ি আর ভাবি, এত ভালো লেখা কি ভাবে সম্ভব? পড়তে পড়তে কত লেখকের লেখনীর সাথে পরিচয় হল তার ইয়ত্তা নেই, নতুন কতকিছু জানলাম তার হি্সাব নেই। কিন্তু যতই পড়ি, ততই ভিতরে ভিতরে কুকড়ে যাই, লেখার আগ্রহও হারিয়ে ফেলি। সাহস করে লেখা শুরু করলাম। গবেষণা আমার কম্ম নহে, ঐটা আপাতত আমার পেশা। আমার বাবা আমাকে ছোট বেলায় বলতেন ওরে দিয়ে চাষবাস ও হবে না, পানিতে গেলে ঠাণ্ডা লাগে। আবার আমার বাংলার জ্ঞান দেখে বলতেন ওর পেটে বোমা মারলেও একটা সাহিত্য বের হবে না। কাজেই মোমিন সাবধান!

গত পর্বে ডাঃ অনিল পট্টিকে নিয়ে লিখেছিলাম। আজকের গল্প জার্মান পদার্থবিদ “জ্যান হ্যান্ড্রিক শুন” (Jan Hendrik Schön) কে নিয়ে। ইনি একজন সত্যিকারের ডঃ, পিএইচডি ওয়ালা দেঁতো হাসি । জার্মান ভাষায় “শুন” অর্থ সুন্দর হলেও শুন যে কাজ করেছিলো তা মোটেই সুন্দর ছিল না। শুন ১৯৯৭ সনে জার্মানীর ইউনিভার্সিটি অফ কন্সট্যাঞ্জ (University of Konstanz) থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি অর্জন করেন। শুনের গবেষণার বিষয় ছিল অর্ধপরিবাহী বস্তু (Semiconductor material) নিয়ে। সুপরিবাহী (কন্ডাক্টিভ) আর কুপরিবাহী (ইন্সুলেটর) বস্তু নিয়ে সবার হয়ত সম্যক ধারনা আছে। সুপরিবাহীর প্রতিরোধক্ষমতা (রেজিষ্টান্স) কম থাকার কারণে ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়, কুপরিবাহী এর বিপরীত। মনে আছে তো ওহমের সুত্র? অর্ধপরিবাহীর অবস্থান এদের মাঝামাঝি। অর্ধপরিবাহীর সবচেয়ে বড় সুবিধা এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তা কিভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়? যেমন ধরুন, সিলিকন একটি অজৈব (ইনঅরগ্যানিক) কুপরিবাহী পদার্থ, এর স্ফটিকের (ক্রিস্টাল) মধ্যে অন্য কোন পদার্থ পরিমানমত জোরপূর্বক ঢুকিয়ে (একে ডোপিং বলে) সিলিকনকে চাহিদামাফিক পরিবাহী পদার্থে রূপ দেওয়া যায়, প্রয়োজনমত নিয়ন্ত্রণও করা যায়। আধুনিক ইলেকট্রনিক্স জগতের ভিত্তিই হল এই অর্ধপরিবাহীগুলো। কম্পিউটারের মাদারবোর্ড খুললে যে হাজার হাজার চিপ (আইসি, ট্রান্সিস্টর, ডায়োড, এলইডি, ক্যাপাসিটর) দেখা যায় এর সবই এই সেমিকন্ডাক্টর। সিলিকন হল সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত অর্ধপরিবাহী পদার্থ। সিলিকনের বহুল ব্যবহার থেকেই আমেরিকার “সিলিকন ভ্যালী”র এরকম নামকরণ, আমরা চিপ বানানোর কারিগর।

আজ যেমন দুনিয়াতে সবাই জৈব জৈব (অরগ্যানিক অরগ্যানিক) করে চিৎকার করে, পদার্থবিদ/প্রকৌশলীরাও চাইল জৈব পদার্থ (অরগ্যানিক অর কার্বোনেসিয়াস) দিয়ে চিপ তৈরী করতে। যেমন ভাবা তেমন কাজ, বানিয়েও ফেলল। জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরী চিপ খুব হালকা, সস্তা, নমনীয় এবং পরিবেশবান্ধব হল। কিন্তু সমস্যা একটা রয়েই গেল। চিপগুলোর প্রতিরোধক্ষমতা (রেজিষ্টান্স) কমানো সম্ভব হল না, ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহও কমই রয়ে গেল। এই প্রযুক্তি সফল হলে চিপের আকার এবং তৈরীর খরচ এতটাই কমানো সম্ভব হতো যা চিন্তারও বাইরে। হতে হতেও হইল না। একটা কারিগরি বাধা রয়েই গেল জৈব পদার্থ দিয়ে চিপ তৈরীর ক্ষেত্রে। হ্যান্ড্রিক শুনের কথা বলছিলাম। শুন পিএইচডি শেষ করার আগে সামার ইন্টার্ন হিসাবে বেল ল্যাবে (Bell Lab) কিছুদিন কাজ করেছিলেন, পরবর্তীতে পোষ্টডক (postdoc) হয়ে আবার ফিরে আসেন। আমাদের জাফর ইকবাল স্যার এই বেল ল্যাবের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেল কোরে (Bell Core) ছিলেন [বর্তমানে টেলিকোর্ডিয়া (Telecordia) নামে পরিচিত]। তো শুনের পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল জৈব পদার্থ দিয়ে চিপ তৈরীর এবং তার বানিজ্জিকীকরনের কারিগরি বাধা দূর করার। শুনের গবেষণালদ্ধ ফলাফলও ছিল আশ্চর্য রকমের ভালো। মাত্র ২৭ বছর বয়সে শুন নিজেকে একজন প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাবহারিক পদার্থবিদ (Experimental Physicist) হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন, অনেকের কাছে মনে হয়েছিল শুন ভবিষ্যতে বড় কিছু অর্জন করবেন, হয়ত বা নোবেল পুরস্কার। শুনের দাবী ইউনিভার্সিটি অফ কন্সট্যাঞ্জে প্রথম তিনি জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরী অর্ধপরিবাহী বস্তুর উচ্চ প্রতিরোধক্ষমতা (রেজিষ্টান্স) কমাতে সক্ষম হন, বেল ল্যাবেও তিনি একই ফলাফল প্রত্যক্ষ করেন। শুধু তাই নয়, তার গবেষণালদ্ধ ফলাফল থেকে মনে হয় জৈব পদার্থ দিয়ে উচ্চ মাত্রার সুপরিবাহী ( সুপার কন্ডাক্টিভ) তৈরীও খুব বেশী দূরে নয়।

তারপরের ঘটনা তো ইতিহাস। শুনের গবেষণালদ্ধ ফলাফল সায়েন্স, নেচার, ফিজিক্যাল রিভিউ, আডভাঞ্চড ম্যাটেরিয়াল প্রভৃতি নামকরা সাময়িকীতে প্রকাশ পায়। দেখা গেছে ২০০১ সনের প্রতি আট দিনে তার একটি করে আর্টিকেল ছাপা হয়েছে। পুরস্কারসরূপ বেল ল্যাবে তার চাকরী পাকা হল। জার্মানীর বিখ্যাত মাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সিটিউটে পরিচালক হওয়ার একটা লোভনীয় প্রস্তাবও তিনি ঐ সময়ে পেয়েছিলেন, শুন প্রস্তাবটি গ্রহন করবেন ভাবছিলেন। আগেই বলেছি সায়েন্টিফিক কম্মুনিটি হল বিশ্বনিন্দুক। অনেকের নাকি প্রথমেই সন্দেহ হয়েছিলো কোথাও একটা কিন্তু আছে, কেউ আগায় এসে প্রশ্ন তুলে নাই। এরপর কর্নেল ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক আগায় এসে প্রশ্ন তুলেন, বলেন তোমার ফলাফল টু গুড, ক্যাম্নে কি? আমি বুইড়া মানুষ এতদিনেও কিছু পাইলাম না, তোমারটা মানি না। তিনি তার স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এরপর আর অনেকে আগায় এসে প্রশ্ন তুলেন আরও অনেক অসংগতি নিয়ে।

২০০২ সনে বেল ল্যাব তদন্ত শুরু করে ঘটনার আড়ালের ঘটনা জানতে। তার বিরুদ্ধে ২৪ টি অভিযোগ আনা হয়, প্রমানিত হয় ১৬ টি। শুধু তাই নয়, দেখা যায় শুন কোন ল্যাব বুকে তার এক্সপেরিমেন্টাল রেকর্ড তো রাখেইনি, তার কম্পিউটারের সব এক্সপেরিমেন্টাল ডাটা ইচ্ছাকৃত ভাবে নষ্ট করে ফেলেছে, সাথে সাথে তার অরিজিনাল স্যাম্পলগুলোও নষ্ট করে ফেলেছে। বেল ল্যাব শুনকে চাকরীচ্যুত করে। শুনের আর্টিকেল গুলো রিট্রাকটেড করা হয়, তাদের মধ্যে সায়েন্স করে ৯ টি, নেচার ৭ টি, আডভাঞ্চড ম্যাটেরিয়াল ২ টি, আরও অনেক আর্টিকেল রিট্রাকটেড করা হয়। ইউনিভার্সিটি অফ কন্সট্যাঞ্জও শুনের কাজ নিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং শুভঙ্করের ফাঁকি দেখতে পায়। ২০০৪ সনে ইউনিভার্সিটি অফ কন্সট্যাঞ্জ শুনকে প্রদত্ত ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহার করে নেয়। শুন উল্টা ইউনিভার্সিটির নামে মামলা ঠুকে দেয়, কিন্তু লাভ হয় না। তার ডক্টরেট ডিগ্রি অফিসিয়ালী বাতিল করা হয়। বেল ল্যাবে শুনের ২০ জন গবেষণা সহযোগী (Collaborator) ছিলেন, তাদের গায়ে মশার কামড়ও পড়েনি। তাদের দাবী শুন নিজেই সব করতেন। দস্যু রত্নাকরের (পরে বাল্মীকি) কথা মনে আছে তো, পাপের ভাগ কেউ নেয় না।

এরপর থেকে খোজ দ্যা সার্চ দিয়েও শুনের কোন খোজ পাওয়া যায়নি। শুন নিজে স্বীকার করেছিলেন যে তার হয়ত কোথাও কোন ভুল হয়েছে। তার ভাষায় এক্সপেরিমেন্টালী এই ফলাফল পেলে আমার করার কি আছে? হয়ত কেউ কোন দিন/কোন কালে আমার ফলাফল পুনরুৎপাদন করতে পারবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত অজস্রবার চেষ্টার পরেও কেউ শুনের ফলাফলের ধারে কাছেও পৌছাতে পারেনি।

আগের পর্ব:
এ্যাকাডেমিক পাবলিশিং-১

(চলবে)

কুমার


মন্তব্য

সত্যপীর এর ছবি

তারাপদ রায়ের গল্পে এক পাঁড় জুয়াড়ী বলেছিল, ভাই লোকসান সহ্য হয় কিন্তু লাভ করে ওই টাকা লোকসান সহ্য হয়না। ওইরকম ডক্টরেট পেয়ে হারানোর ব্যথা ডক্টরেট না করার থেকেও বেশী। শুন ভাইয়ার জন্য দুঃখ হচ্ছে চিন্তিত

লিখায় পাঁচতারা। হাততালি

ইয়ে, পোস্টে ইমো না দিলে হয়না?

..................................................................
#Banshibir.

কুমার. এর ছবি

সত্যপীরভাই, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তারাপদ রায়ের গল্পটা ভালু পাইলাম।
ইমোটা ভুল করে ছুড়ে দিয়েছি, আঘাতও করে ফেলেছে, এই তীর ফেরানোর উপায় নেই অতিথির।

সত্যপীর এর ছবি

কোন ব্যাপার না, আপনের নৌকায় আমিও ছিলাম কয়দিন আগেও। অতিথি থাকার ব্যাপক যন্ত্রনা। এইরকম আর দুইটা লিখা নামান দেখবেন কি সুন্দর সচল হয়ে গেসেন। মডু ভাইয়া লুক ভাল।

..................................................................
#Banshibir.

কুমার. এর ছবি

সত্যপীরভাই, কইতাছেন দুইটাতেই হবে? ঐ কে আছিস তামুক সাঁজা।
মডুরা শুনছি ত্যালহারামী একেকটা, না হইলে প্রত্যেক লেখার সাথে সাথে [আবু হেনা রনি স্টাইলে] সচলায়তন নিয়ে একটা গুণকীত্তন জুড়ে দিতাম।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

সত্যপীর ভাই দুনিয়ার তাবৎ রাজাবাদশার লুঙ্গি খুলে দিয়ে সচল হইছেন। আপ্নে সব দুইনাম্বারীগুলার লুঙ্গি খুলতে থাকেন চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর এর ছবি

চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

সত্যপীর এর ছবি

সত্যপীরভাই, কইতাছেন দুইটাতেই হবে? ঐ কে আছিস তামুক সাঁজা।

ঐ আর কি, দুইটা বা দশটা। আমার এগারোটা লাগসিলো, আপনের কোয়ালিটির লিখা হইলে দুই চাইরটাই যথেষ্ট মনে হচ্ছে। পোস্ট দিয়া ফাডায়ালান।

..................................................................
#Banshibir.

কুমার. এর ছবি

সত্যপীরভাই, আপ্নে দেখাইলেন ঐ আমাদের গাঁও, তারপর বলছেন ১০/১১ মাইল।

সত্যপীর এর ছবি

আরে এইতো চলে আসছেন প্রায়, আর দেরি নাই।

..................................................................
#Banshibir.

দ্রোহী এর ছবি

হেন্ড্রিক শুনের জালিয়াতির কথা সে সময়কার ম্লেচ্ছ পত্রপত্রিকায় পড়েছিলাম।

ব্যাটা হেন্ড্রিক শুন বাংলাদেশে জন্মালে আর কোন ঝামেলাই হতো না। প্রিজমের প্রতিসরাংক নির্ণয় থেকে শুরু করে, সরল ও যৌগিক দোলকের সাহায্যে মাধ্যাকর্ষণের মান নির্ণয়, পারদের পৃষ্ঠটান নির্ণয় ইত্যাদি কত শত এক্সপেরিমেন্ট উল্টো দিক থেকে করে আসলাম শুধুমাত্র বেশি নাম্বারের আশায়। দেঁতো হাসি

কুমার. এর ছবি

দ্রোহীদা জব্বর বলেছেন হাততালি । কলেজের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

শিশিরকণা এর ছবি

রেজাল্ট মিলবে না মানে? মিলায়ে ছাড়ব। এই কারনে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ সৎভাবে করা সম্ভব হইল না আমারে দিয়ে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

কুমার. এর ছবি

এক্সপেরিমেন্টাল কাজ সৎভাবে করা সম্ভব হইল না আমারে দিয়ে

অ্যাঁ
শিশিরকণাপু, গল্পটা শুনতে চাই।

তাসনীম এর ছবি

এই রকম লেখা চালু থাকলে অতি দ্রুতই সচল হবেন।

শুনের কথা আমিও পত্রিকায় পড়েছিলাম। এই নিয়ে প্রাঞ্জল ভাষা লেখার জন্য ধন্যবাদ।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কুমার. এর ছবি

আশায় আছি। অনুপ্রেরণা এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই।

যাযাবর এর ছবি

অ্যাঁ

কুমার. এর ছবি

যাযাবরভাইকে অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আপনার লেখাদুটো পড়ে একটা ভিন্ন জগতের স্বাদ পেলাম ।
লেখার ধরণও খুব ভাল ।

চালিয়ে যান দাদা ।
অপেক্ষায় থাকলাম । পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

কুমার. এর ছবি

প্রদীপ্তময়দা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপানার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

নিটোল এর ছবি

খাসা লেখা!

_________________
[খোমাখাতা]

কুমার. এর ছবি

নিটোল ভাই, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

rabbani এর ছবি

" সিলিকন একটি অজৈব (ইনঅরগ্যানিক) কুপরিবাহী পদার্থ" ?? অর্ধপরিবাহী বুঝাতে চেয়েছেন?

লেখা চালিয়ে যান চলুক

কুমার. এর ছবি

সিলিকন একটি অজৈব (ইনঅরগ্যানিক) কুপরিবাহী পদার্থই, ডোপিং করে একে অর্ধপরিবাহী বানানো হয়।
রব্বানী ভাই, পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

টিউলিপ এর ছবি

ভাই, আসলে সিলিকন অর্ধপরিবাহীই বটে। যেসব পদার্থ অর্ধপরিবাহী, তাদের ক্ষেত্রেই ডোপিং করে পরিবাহিতা বাড়ানো যায়। কুপরিবাহী পদার্থকে তড়িৎ পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয় না কখনোই।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

কুমার. এর ছবি

টিউলিপু,

যেসব পদার্থ অর্ধপরিবাহী, তাদের ক্ষেত্রেই ডোপিং করে পরিবাহিতা বাড়ানো যায়

এটাই সঠিক। সম্পাদনার আপাতত সুযোগ নাই।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
কুমার. এর ছবি

রাজা ভাই, আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সাম্য এর ছবি

এক ফাঁকে চট করে আপনার আগের লেখাটাও পড়ে নিলাম। দুটো লেখাই ভাল লেগেছে।

কুমার. এর ছবি

সাম্য, আপনাকে অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

শিশিরকণা এর ছবি

২০০১ সনের প্রতি আট দিনে তার একটি করে আর্টিকেল ছাপা হয়েছে।

কস্কি মমিন! অনেকে ৮ বছর খেটেও একটা পেপার নামাতে পারে না। মিনিমাম ৮ মাস তো লাগেই...

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

বান্ধবী এর ছবি

চলুক

কুমার. এর ছবি

আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

কুমার. এর ছবি

আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

নীল রোদ্দুর এর ছবি

ভালো লিখেছেন, একটুস খানি সৎ হইলেই তো আর এমন করে জাত মান সব খোয়াতে হয় না।

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

কুমার. এর ছবি

ধন্যবাদ নীল রোদ্দুর।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল্লাগছে চলতে থাকুক পাব্লিশিং

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কুমার. এর ছবি

কবিভাই, আপনার ভাল্লাগছে দেখে আমারও বেজায় ভাল্লাগছে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দেখা গেছে ২০০১ সনের প্রতি আট দিনে তার একটি করে আর্টিকেল ছাপা হয়েছে।

ওরে! কোনো মানুষের পক্ষে তো এইটা সম্ভব না! মানে সৎভাবে আরকি!

পুরস্কারসরূপ বেল ল্যাবে তার চাকরী পাকা হল। জার্মানীর বিখ্যাত মাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সিটিউটে পরিচালক হওয়ার একটা লোভনীয় প্রস্তাবও তিনি ঐ সময়ে পেয়েছিলেন, শুন প্রস্তাবটি গ্রহন করবেন ভাবছিলেন।

এইখান থেকেই বোঝা যায় ব্যাটা কীরকম নাম করেছিল! মাক্স প্লাঙ্কের ডিরেক্টর! ওরে! তাও আবার পিএইচডি শেষ করার ক'বছরের মাথায়!!!

কর্নেল ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক আগায় এসে প্রশ্ন তুলেন, বলেন তোমার ফলাফল টু গুড, ক্যাম্নে কি?

হ। ব্যাটায় খানিকটা বোকা ছিল বোধহয়! ব্যাবজারিক বিজ্ঞানের ফলাফল ঝিলমিল করলে হয় সে মহাপ্রতিভা আর মহাভাগ্যবান নয়তো সে চোর!

দেখা যায় শুন কোন ল্যাব বুকে তার এক্সপেরিমেন্টাল রেকর্ড তো রাখেইনি, তার কম্পিউটারের সব এক্সপেরিমেন্টাল ডাটা ইচ্ছাকৃত ভাবে নষ্ট করে ফেলেছে, সাথে সাথে তার অরিজিনাল স্যাম্পলগুলোও নষ্ট করে ফেলেছে।

হো হো হো

নের আর্টিকেল গুলো রিট্রাকটেড করা হয়, তাদের মধ্যে সায়েন্স করে ৯ টি, নেচার ৭ টি, আডভাঞ্চড ম্যাটেরিয়াল ২ টি, আরও অনেক আর্টিকেল রিট্রাকটেড করা হয়।

একটা প্রশ্ন, এই বদের আর্টিকেল রিভিউ করে ছাপা হত না? সব ভালো পত্রিকাই তো রিভিউ করে! কেম্নেকী!

আপনে এতোদিন কই ছিলেন? লেখাটা পড়ে বহু আরাম পাইলাম। তাসনীম ভাই যখন বলছেন তখন আপনার সচল হইতে আর দেরি নাই। খালি গোটাকয়েক মন্তব্য আর হালিকয়েক লেখা ঝেড়ে দেন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কুমার. এর ছবি

অনার্যদা, বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। লেখার অনুপ্রেরণা পেলাম।
আরও কিছু যোগ করি। শুনের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে আরও কিছু ব্যাপার উঠে এসেছে। শুন কি পেশাগত জীবনে কোনো চাপের মধ্যে ছিল? অনেকে বলছে হ্যাঁ, শুন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ছিল। বেল ল্যাবে কাজ করা যেমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ, তেমনই প্রতিযোগিতামূলক ছিল শুনের গবেষণার বিষয়। কে কার আগে ভাল ফলাফল দেখাতে পারবে সেটা নিয়ে একটা প্রতিযোগিতাও ছিল। এটিই হয়ত শুনকে উদ্ভদ্ধ করেছিল।
সায়েন্স, নেচার তো পিয়ার রিভিউড চিন্তিত

রাগিব এর ছবি

দস্যু রত্নাকরের (পরে বাল্মীকি) কথা মনে আছে তো, পাপের ভাগ কেউ নেয় না।

বাংলাদেশে একটা ধারা খুব চালু, ছাত্ররা পেপার লিখে আনে, আর শিক্ষকেরা তার মধ্যে নাম জুড়ে দেয়। ছাত্রের কপাল ভালো হলে প্রথম লেখক হিসাবে স্বীকৃতি পেতেও পারে, তবে সাধারণত শিক্ষকেরাই নাম জুড়ে দেয় সবার আগে, কৃতিত্ব হাতাবার আর পদোন্নতি বাগাবার জন্য।

কিন্তু এহেন ধান্ধা ব্যাকফায়ার করে মাঝেসাঝে। কিছুদিন আগে একটা গবেষণাপত্র যাচাই করে দেখছিলাম এক সম্মেলনের জন্য। বাংলাদেশের নামকরা এক সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা শিক্ষকের নাম লেখকের তালিকায় আছে, কিন্তু প্রায় পুরো লেখাটাই নানা ম্যানুয়াল, বই, টিউটোরিয়াল থেকে কপিপেস্ট করে বানানো। শিক্ষক মহোদয়া এই লেখাটা আদৌ দেখেছেন কি না সন্দেহ, দেখে থাকলে কীভাবে অনুমোদন দিলেন, সেটাই প্রশ্ন।

লেখা এভাবে চুরি করাটাও একাডেমিক ফ্রড। আইট্রিপলই এর একটা গোপন ব্ল্যাকলিস্ট আছে। গুগলের কারণে হঠাৎ করে পেয়ে গেছিলাম। সেখানে তালিকা করে দেয়া আছে, নানা জনকে নানা লেখা চুরির দায়ে ২ বছর থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ২০ এ থাকা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি গবেষণাপত্র এভাবে যাচাই করতে গিয়ে লিটারেচার রিভিউ অংশে কাট পেস্ট ধরে ফেলেছিলাম। আমার উপদেষ্টা আবার খুব কড়া, লিখে পাঠালেন সম্মেলনের সভাপতিকে, এই পত্রটি উপেক্ষা করা হোক, আর তার সাথে সাথে ঐ ছাত্রদের উপদেষ্টা মহোদয়াকে জানিয়ে দেয়া হোক তার ছাত্রদের (কু)কীর্তির কথা। অবশ্য আগের অভিজ্ঞতার আলোকে আমার উপদেষ্টা এটাও জানিয়েছিলেন, একটি বৃহৎ দেশের ছাত্রদের এই প্রবণতা খুব বেশি, কারণ সেদেশে কারো লেখাকে এভাবে সরাসরি উদ্ধৃত করাটাকে স্বাভাবিক ধরা হয়।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

কুমার. এর ছবি

রাগিব ভাই, আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, সাথে সাথে ধন্যবাদ মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।

বাংলাদেশের নামকরা এক সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা শিক্ষকের নাম লেখকের তালিকায় আছে, কিন্তু প্রায় পুরো লেখাটাই নানা ম্যানুয়াল, বই, টিউটোরিয়াল থেকে কপিপেস্ট করে বানানো।

গবেষণাপত্র গৃহীত হলে ফার্স্ট অথরকেই তো সবচেয়ে বেশী কৃতিত্ব দেয়া হয়, ভুলের জন্যও তার দায়ী হওয়া উচিত।
কিছু শিক্ষককে দেখেছি কখনও গ্রাড স্টুডেন্টকে দিয়ে গবেষণাপত্র জমা দেওয়ায় না, নিজেই জমা দেয়। গ্রাড স্টুডেন্ট শুধুমাত্র সম্মেলনে উপস্তাপনার জন্য সারাংশ জমা দিতে পারে।

গৌতম এর ছবি

আপনার লেখার বিষয়বস্তু আগ্রহজাগানিয়া। আর আপনার লেখা প্রাঞ্জল।

দুটোকে যারা একসাথে মেশাতে পারে,তাদেরকে হিংসা করা সাধারণ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। তাই আপনাকে হিংসা করে গেলাম। আশা করি আরো হিংসা করার সুযোগ দেবেন।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

কুমার. এর ছবি

গৌতমদা, অনুপ্রেরণা পেলাম আপনার ভালো লেগেছে জেনে।

ঝরাপাতা এর ছবি

আরো জানতে চাই কুম্ভীলকদের কথা!!!!


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

কুমার. এর ছবি

আরও কিছুদিন এই সিরিজ চালাব। আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

"হাই প্রফাইল" চোর দের কাহিনী জেনে খুব পুলকিত.... দেঁতো হাসি

কুমার. এর ছবি

সৃষ্টিছাড়াভাই, আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমিও পুলকিত...। দেঁতো হাসি

রণদীপম বসু এর ছবি

কী রে ভাই ! আপনার অবস্থাও তো দেখি শুনের মতোই ! তয় উল্টা দিক থেকে !
শুরুতেই বললেন লিখতে জানেন না ! এরপর যা দেখালেন, কেমনে কী !! হা হা হা !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

কুমার. এর ছবি

রণদা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শিক্ষানবীশ হিসাবে আছি।

সাত্যকি. এর ছবি

লিখার প্রথমের বাড়তি অংশটুকু দয়া করে এরপর থেকে আর লিখবেন না। নীড়পাতায় ওইটুকু পড়ে নবিশ রাইটার ভেবে আরেকটু হলে স্কিপ করেই যাচ্ছিলাম আরকি !

ভাগ্য ভালো, এত চমৎকার একটা জোচ্চুরির গল্প মিস করে যেতাম নাহলে।
এরকম পুকুরচুরি যে করতে পারে, তাকে অবশ্যই সম্মানসূচক একটা ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়ে দেয়া উচিত।

কুমার. এর ছবি

সাত্যকিদা, আমি একদমই নবিশ। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

কুমার. এর ছবি

উদাস ভাই, আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- । খিচুড়ি খাইতে মঞ্চায়।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

বড়ই কাকতালীয় বিষয়, আমি নিজেও এখন ঐ জৈব-অর্ধপরিবাহী(organic semiconductor) নিয়ে মারামারি করছি। ঐ শুনের মত ৮ দিনে একটা করে পেপার নামিয়ে ফেলতে পারলে বেশ হত। চোখ টিপি

লেখা অতি উপাদেয় লাগল আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কুমার. এর ছবি

মেঘলা মানুষ, আরে বলেন কি? ভুলত্রুটি মাপ করে দিয়েন।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

একটা জায়গায় খটকা ছিল, সেটা টিউলিপ বলে দিয়েছেন। আর প্রথম প্যারাটা লেখার কোনই দরকার ছিল না। ঝরঝরে লেখার হাত আপনার। খুব ভাল লাগল হাসি

কুমার. এর ছবি

আনন্দীদি, টিউলিপুর কথাই সঠিক। অনেক ধন্যবাদ।

দময়ন্তী এর ছবি

দেঁতো হাসি
ব্যপ্পোক!

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কুমার. এর ছবি

ধন্যবাদ দমুদি।

কৌস্তুভ এর ছবি

হুম, চলুক। আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে কিছু লিখবোনে।

কুমার. এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভদা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।