কনফেশন অফ এ বুয়েট টিচার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২০/০৪/২০১২ - ১২:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যে লেখাটা লিখতে যাচ্ছি, সেটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত অভিমত। এর সাথে বুয়েট কর্তৃপক্ষ, বুয়েট শিক্ষক সমিতি, বা আমার নিজ বিভাগের কোনও সংশ্লিষ্টতা নাই।

বুয়েট এর যেদিন শিক্ষক হতে পেরেছিলাম, নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হয়েছিল। নিষ্কন্টক নিষ্কলুষ পরিবেশ, রাজনীতি মুক্ত এক অঙ্গন। দেশের দিন বদল, সরকার বদল ও সবশেষে বুয়েট এর প্রশাসনিক রদবদল হয়। এবং ফলাফল এখন মিডিয়া আর ফেসবুক এ নজর রাখলেই বোঝা যায়।

প্রথমেই আসি শিক্ষক সমিতির কথাতে । শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড আর শিক্ষকরা জাতির বিবেক বলে জানতাম। বুয়েট এর শিক্ষক সমিতির যখন সদস্য হই, তখন আশা ছিল যে এর সাধারণ সভা গুলিতে বুয়েট এর বিদ্যমান নানা সমস্যার কথা (যেমন ইচ্ছামতন পরীক্ষা পেছানো হয় কেন, একাডেমিক কার্যক্রম কী করে আরও উন্নত করা যায়) এসব নিয়ে আলোচনা হবে, আর আমরা contribute করতে পারব। বিধিবাম। শিক্ষক সমিতির সব সভাতে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো কোন শিক্ষকের বাসায় কবে চুরি হলো, কিংবা কে কোন পদ থেকে বঞ্চিত হলো – ইত্যাদি। কিছুটা অবাক হতে হয় যে শিক্ষক দের যে বিশ্ববিদ্যালয়তে পড়ান, তার একাডেমিক উত্কর্ষ সাধনে কী এতটুকু মাথাব্যাথা নাই? বর্তমানে শিক্ষক সমিতি VC পতনের আন্দোলনে উদ্যত। আমার কেন যেন মনে হয়, শিক্ষক সমিতি আসল সমস্যা কে উপেক্ষা করে খুব তুচ্ছ ইস্যু নিয়ে মাতামাতি করছে।

কামাল আহমেদ কে নিয়ম বহির্ভূত / নিয়মের অপপ্রয়োগ করে যে রেজিস্টার অফিস এ বসানোর জন্য শিক্ষক সমিতি আজ আন্দোলন রত, তিনি রেজিস্টার অফিসএর জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা। বুয়েট এর ফাস করা নথি দেখে যেটুকু বুঝলাম, তিনি এসব দুই নমবুরি না করলে ২০১৪ সালে নিয়ম মেনেই রেজিস্টার হতেন। রেজিস্টার এর যে পদ, সেটা শুধু ভাইস চ্যান্সেলর এর আজ্ঞা বহ হয়ে থাকা। তার নিজস্ব কোনও ক্ষমতা নাই। এরকম পদে একজন শিক্ষক কে বসানো মানেও আসলে তাকে অপমান করা। আমার ব্যক্তিগত অভিমত এমবিএ ডিগ্রি এধরনের প্রশাসনিক কাজে অধিক লাগসই। যা হোক শিক্ষক সমিতির সদস্য হিসেবে এই নিয়ম কে পাস কাটানোর প্রয়াসের বিরুদ্ধে আন্দোলন আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু আসলেই কী এটা বুয়েট এর প্রধান সমস্যা?
বুয়েট এক কালে রাজনীতি মুক্ত ছিল। কিন্তু সেদিন আজ গিয়েছে। রাজনৈতিক নেতা দের আস্ফালন এর কিচ্ছা কাহিনী ব্লগে, ফেসবুক এ গত ২ বছর ধরেই আসছে। কোনদিন দেখি নি শিক্ষক সমিতি তে এ নিয়ে একটি শব্দ কাউকে উচ্চারণ করতে। বুয়েট এর প্রধান ফটকে এক কালে ক্লাব বা সন্ধানী এর ব্যানার থাকতো। সেখানে আজ রাজনৈতিক অভিনন্দন আর অর্ধ শিক্ষিত নেতাদের হাস্যজ্জল মুখ দেখা যায়। এর পর আস্তে আস্তে তাদের গুণ্ডামির কাহিনী আসে। একজন ছাত্র কে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া বা মার পিট এর গল্প। শিক্ষক সমাজ নিশ্চুপ। ধীরে ধীরে তাদের সাহস বাড়তে বাড়তে এক সময় graduating ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর হাত গুড়িয়ে দেয় দুই রাজনৈতিক মদদ পুষ্ট পুচকে ছোড়া। পুরো বুয়েট এর ছাত্রদের যে আন্দোলোন হয়, তাতে শিক্ষকরা প্রকাশ্যে একটি টু শব্দ করেছেন কিনা সন্দেহ। বুয়েট কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে তাদের বহিষ্কার করেছে, তারা আবার আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে চলে এসেছে।

কিন্তু যে ছোট বিষাক্ত চারা গাছ গুলিকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করা যেত, আজ সেগুলি বেশ ভালই শিকড় গঠন করে নিয়েছে। শিক্ষক সমিতির strike এর মোকাবেলায় গদি প্রেমী প্রশাসন এখন সেই ছাত্র সংগঠন গুলির শরণাপন্ন। ফলাফল, কিছু নিচু শ্রেণীর পত্রিকায় বুয়েট এর শিক্ষকদের হিযবুত তাহরীর এর সদস্য পদ আছে বলে বুয়েট এর সেই সোনার ছেলেরা শিক্ষকদের বিরুধ্যে মিছিল করে। আগুনের আচ বোধয় এবার শিক্ষকদের ও গায়ে লাগছে একটু একটু। এই ধারায় চলতে থাকলে কোন ভবিষ্যতে আমরা আগাব? ভবিষ্যতে ক্লাস না করে পরীক্ষা না দিয়ে কোনও নেতা হয়তো এসে দাবি করবে যে তাকে এ+ নম্বর দেওয়া হোক। যদি না দেই তখন হয়তো সে আমাকে ছাগু অথবা হিজু জঙ্গি বানিয়ে রাস্তায় মিছিল করবে। কিংবা আরও অত্যাধুনিক পর্যায়ে আমার পা ভেঙে দিবে। এর পর ফলাফল পরিবর্তণ বা হুমকি ধমকি দিয়ে তারা প্রথম ফলাফল করে বুয়েট এর শিক্ষকতা পদও দখল করবে। down ward spiral এ একবার ঢুকলে তা অনুসরণ করে অধ:পতনে যাওয়া অনেক সহজ।

যদি এই পর্যায়ে বুয়েট নেমে যায়, তাহলেও কি নতুন ব্যাচ গুলির সেরারা প্রথম choice এ ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বুয়েট এ পড়তে আসবে? তখন বুয়েট আর দশটা ঘুনে খাওয়া প্রতিষ্ঠানের মতন ই ধুকে ধুকে মরতে থাকবে।

আমার মনে হয় বুয়েট এত টা নিচে নামার আগে আমাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। কিন্তু আসলেই, কি বা করার আছে আমাদের। নিচে নামবার যে লাইনে বুয়েট আজকে চলছে, তা কি কোনও ভাবে বন্ধ করার উপায় আছে?

২০০৯ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়েছিলাম। পরিসংখ্যান অনুযায়ী অন্তত বুয়েট এর ৬০% মানুষ ভোট দিয়েছে তাদের। এবং এখনো আমি মনে করি যে সম্প্রদায়িকতার মদদে পুষ্ট কোনও দলের থেকে তাদের শাসন শ্রেয়তর। কিন্তু তাদেরই ঝাণ্ডা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ এর শেষ নিষ্কলুষ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়টির ইজ্জত লুণ্ঠন দেখতে খুব কষ্ট হয়।

-- ব্র‏হ্মচারী
(মন্তব্যে নিশ্চই এই কথাটা বার বার আসবে, যে শিক্ষক সমিতির একজন সদস্য হিসেবে আমি নিজে সাধারণ সভায় এই কথা গুলি বলি নি কেন? ভালো প্রশ্ন। তবে মনে হয় না সেখানে আমি আর আমার গোত্রের ২-৩ জন ছাড়া কেউ কথা গুলি নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করবে।)


মন্তব্য

সাই দ এর ছবি

ভাই এই সব কথা সাহস করে হলেও আপনার শিক্ষক সমিতিতে বলা উচিত।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বুয়েটের শিক্ষকদের একটা বিরাট অংশ কোনো ছাত্রের ওপর খেপলে আগে স্টুডেন্ট নাম্বার জিজ্ঞেস করে বাঁশ রেডি করে। শিক্ষক সমিতির সভায় স্রোতের বিপরীতে সাহস দেখানো খুব সুবুদ্ধির কাজ না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শারেক শহিদ এর ছবি

পঁচন যখন শুরু হয়, তখন তা একসময় আর সবকিছুর শেষে মাথাকেও ধরে । যে অগস্ত্য সন্ধ্যার দিকে পুরো বাংলাদেশের যাত্রা, বুয়েট তার একটা অংশমাত্র । মাত্র দশ বছর আগেও যেমন দেশের সেরা মেধাবীদের প্রথম স্বপ্ন ছিল বুয়েট, আপনি কি মনে করেন, গত ৩/৪ বছরে, ব্যাপারটা তেমনি আছে ? আমার মনে হয় না । ধীরে ধীরে আর সবকিছুর মতই বুয়েট এক নন্দিত নরকে পরিনত হচ্ছে ।

হায় ! এই মৃত্যুর উপত্যকা আমার দেশ ।

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনার বক্তব্য ধরতে ব্যার্থ হয়েছি। আমি নিজেও বুয়েটে বছর চারেক শিক্ষকতা করেছি, বুয়েট শিক্ষক সমিতির এক সময়ে সম্পাদকও ( সম্ভবত প্রকাশনা সম্পাদক) ছিলাম। আমার কাছে কখনই মনে হয়নি শিক্ষক সমিতির বর্তমান আন্দোলন কোন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাতামাতি যা আপনি উল্লেখ করেছেন আপনার লেখায়।

আপনার লেখাটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি বিভ্রান্তমূলক অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি আমার কাছে। আপনি এই শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন আবার ভবিষ্যতে ক্লাস না করে পরীক্ষা না দিয়ে কোনও নেতা হয়তো এসে দাবি করবে যে তাকে এ+ নম্বর দেওয়া হোক এরকম সম্ভাবনাও করছেন। ভবিষ্যতে ফলাফল নিয়ে এমন যাতে না হয় সেজন্যইতো এই আন্দোলন তাই না।

আপনি বললেন বুয়েট এর ফাস করা নথি দেখে যেটুকু বুঝলাম, তিনি এসব দুই নমবুরি না করলে ২০১৪ সালে নিয়ম মেনেই রেজিস্টার হতেন। তাহলে যিনি নিয়মগত ভাবেই ২০১৪ সালে রেজিষ্ট্রার হবে তাকে কেন দুই বছর আগে সেই পদে আনা হলো। আপনার কি মনে হয় এই বিষয়ে শিক্ষকরা আপস করবেন?


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ইশতিয়াক এর ছবি

চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রেজিস্ট্রার ইস্যুই যদি মূল ইস্যু হয় তাহলে জাহিদ ভাই, আমিও বলবো, এটা ঠ্যাং ছেড়ে দিয়ে লাঠি ধরার মতো অবস্থা।

সচল জাহিদ এর ছবি

বস আপনারও অভিজ্ঞতা আছে আমারও আছে তাই জনেন হয়ত শিক্ষকদের পেশাগত জীবনে বিভিন্ন কার্যক্রমে ( যেমন শিক্ষাছুটি) রেজিষ্ট্রারের ভূমিকা কতটুকু। সেখানে যদি দলীয়করন ঢুকে তাহলে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে শিক্ষকেরাই।

তবে মূল ইস্যু আমার কাছে এটা ছাড়াও মনে হয়েছে রেজাল্ট ইস্যু। অন্তত শিক্ষক সমিতির সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিও দেখে তাই মনে হয়েছে।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তবে একটা কথা যোগ করতে চেয়েছিলাম, পরে করা হয়নি-- রেজিস্ট্রার (বা অন্য) ইস্যুতে হলেও একটা আন্দোলন দাঁড়িয়েছে যেটা 'হয়তো' বুয়েটকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সহায়ক হবে। ন্যাক্কারজনক দলীয়করণের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের এই অবস্থানে সমর্থন আছে। কিন্তু ভয় হয়, এটা চূড়ান্ত পতনের শুরু কিনা।

সাফি এর ছবি

জাহিদ ভাই, বুয়েটে ছাত্রদের আন্দোলন প্রায় সবসময়েই নিয়মিত ঘটনা। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষক সমিতির ভূমিকা কী থাকে? এটা নিয়ে কি তাদের সভায় আলোচনা, পক্ষে বিপক্ষে যাওয়া নিয়ে ভোটাভুটি বা অবস্থা নিরসনে পদক্ষেপ কী হতে পারে - এরকম কিছু থাকে?

সচল জাহিদ এর ছবি

সাফি এই পোষ্টের আলোচনা কিন্তু শিক্ষক সমিতির এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে, 'শিক্ষক বনাম ছাত্র' এই ইস্যু বরং থাকুক। আমার বক্তব্য ছিল এই পোষ্টের লেখক নিজেকে একজন শিক্ষক দাবী করে স্বনামে নয় বেনামীতে শিক্ষকদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে কিছু অসাড় মন্তব্য করেছেন যেটা আমার ভাল লাগেনি।

সামষ্টিক সিদ্ধান্ত বা মতাদর্শ জানিনা, বুয়েটে শেষ ছাত্র আন্দোলনের সফলতার পর আমার পরিচিত শিক্ষক মহলের যারা অন্তত ফেইসবুকে আছেন তাদের দেখেছি অন্তত আন্তরিক ভাবেই তারা ছাত্রদের ঐ আন্দোলনের সাফল্য ও যৌক্তিকতা নিয়ে মন্তব্য করেছেন বা উৎসাহ দিয়েছে। তবে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি শিক্ষক সমিতির সভায় মূলত শিক্ষকদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়েই আলোচনা হতে দেখেছি। সেরকম করে ছাত্রদের কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা আমি লক্ষ্য করিনি। হতে পারে আমি যেসময় শিক্ষক সমিতিতে ছিলাম সেসময় সেরকম কোন ইস্যু ছিলনা।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

কালো কাক এর ছবি

বুয়েটে শেষ ছাত্র আন্দোলনে হাতে গোণা দুইতিনজন ছাড়া কোন শিক্ষকের উপস্থিতি বা উৎসাহ ছিলো না। আমার ফেসবুক প্রোফাইলে নিয়মিত শিক্ষকদেরও সেইসময় এই ইস্যুতে কবির চেয়েও নিরব ভূমিকায় দেখেছি। আন্দোলনকারী ছাত্রদের জিজ্ঞেস করেও কোন শিক্ষক তাদের সাথে ছিলেন শুনিনি। সব ডিপার্টমেন্ট মিলিয়ে আমার নিজের বুয়েট শিক্ষক বন্ধু প্রায় ১০জন। তাদের কেউ আন্দোলন সমর্থন করে এমন কথাও বলেনি (অসমর্থন করে এমনও না, ছাত্রদের ব্যাপার ওরা বুঝবে- এমন দেখেছি ওদের মনোভাব)।

সাফি এর ছবি

শিক্ষক সমিতির যখন সদস্য হই, তখন আশা ছিল যে এর সাধারণ সভা গুলিতে বুয়েট এর বিদ্যমান নানা সমস্যার কথা (যেমন ইচ্ছামতন পরীক্ষা পেছানো হয় কেন, একাডেমিক কার্যক্রম কী করে আরও উন্নত করা যায়) এসব নিয়ে আলোচনা হবে, আর আমরা contribute করতে পারব। বিধিবাম। শিক্ষক সমিতির সব সভাতে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো কোন শিক্ষকের বাসায় কবে চুরি হলো, কিংবা কে কোন পদ থেকে বঞ্চিত হলো – ইত্যাদি।

লেখকের বক্তব্য মতে শিক্ষক সমিতির সভায়, মূলত ব্যক্তিগত আলোচনাই হয়, প্রতিষ্ঠানের ভাল-মন্দ নিয়ে আলোচনা হয়না। যেহেতু আপনিও তার সদস্য ছিলেন তাই জন্যই আপনার কাছে জানতে চাওয়া। পোস্টের মূল বক্তব্য বিষয়ে আপনার বক্তব্যে একমত। এই আলোচনা আর ভিন্ন পথে নিচ্ছিনা।

নুসায়ের এর ছবি

পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে পানি ঢেলে সেই আগুন না নিভায়ে তা'তে সিগারেট ধরাতে গেলেই গোল বাঁধে। সেই থেকে নিজের ঘরে আগুন লাগলে তখন চেঁচা-মেচি করে লাভ কি? বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষক সর্বোপরি প্রশাসনের উপলব্ধি করতে হবে, তারা ভিন-গ্রহে বসবাস করে না। বুয়েট বাংলাদেশেরই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘরের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব সমস্যা দেখে সবাই এতোদিন চোখ বুজে বসে ভবেছে, আমরা সবাই মহান-আমাদের সাথে এমনটা হবে না। আস্তে আস্তে ছাত্রদের মধ্যে গোলমাল হলে শিক্ষকরা ভেবেছেন তারা এর বাইরে থাকবেন। কিন্তু একই সমাজ-ব্যবস্থার ভেতরে থেকে আপনি এর কুফল ভোগ করা থেকে বাচঁতে পারেন না। রাজনীতি করলে সবাই রসাতলে গেল, সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেল, ধূমপান ও রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গন - '৯০ এর দশকে এই প্রচার করে দূর্নীতির রাস্তা প্রস্বস্ত করা হয়েছে। এখন সেই রাস্তা দিয়ে ঘরে-বাইরে সব স্থানে আবর্জনা ঢুকছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সাধারন ছাত্রদের পেটাচ্ছে, অমুকে ছাত্রলীগের নেতা, তমুকে নেতার ভাই - পুলিশকে বলতে যান, পুলিশ বলবে "আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোন ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ - লীগ আসে কেম্নে? এরা বিচ্ছিন্ন কেউ"। এখানে ছাত্রদের কোন সাধারন সমিতি নাই। ছোট একটা সমস্যা হলে যাবেন কার কাছে? ছাত্র উপদেষ্টার কাছে গেলে তিনি বলতে পারেন হল প্রোভোস্টের কাছে যেতে, প্রোভোস্ট আরেক জন কে দেখায় দিতে পারেন। আবার অনেক ছাত্রের সমস্যা হলে ৪-৫ জন মিলে ভিসির কাছে গেলে তিনি যদি বলেন, "তুমি কে? সব ছাত্রের কথাই তোমার কথা সেটা বুঝবো কেম্নে?" এইসবই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে দেখেন - আর কিছু না হোক ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবার জন্য একটা ছাত্র সংগঠন অন্ততঃ থাকে।

বুয়েট শিক্ষক সমিতির সদস্য ছিলাম এক বছর। যে পদে কেউ দাড়াতে চায় না, ধরে বেধে দাঁড়া করানো আপ্যায়ন সম্পাদকের পদ। শিক্ষকদের বাসার টয়লেটে পানি না থাকলে (এবং সেটা প্রশাসন ঠিক না করে দিলে) সেটা তিনি সভায় বলতেই পারেন। সমিতির উদ্দেশ্যই সেটা। কিন্তু সবাই বারে বারে এই জাতীয় সমস্যা নিয়ে কথা বলতে থাকলে সবার চিন্তা-ভাবনার লেভেল নিয়ে সন্দেহ যাগে। সেই সময় থেকেই রেজিস্ট্রার পদটি নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শুরু। বাকিটা নতুন করে বলবার কিছু নাই। ব্লগে চোখ রাখলে এসব কেচ্ছা কারো অজানা থাকবার না।

এখন শিক্ষক সমিতির সব সার্কুলারে দেখি বারে বারে বলা হচ্ছে, অমুক নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির পরিপন্থি ইত্যাদি। বুয়েটের অনেক কিছুই সংস্কৃতি মেনে চলা হয়। যেমন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যদি বলি - ধরা যাক আপনি আপনার ব্যাচে প্রথম হয়েছেন। আপনি মাস্টার্স করে সহকারী অধ্যাপক পদের (যারা সক্রিয় ভাবে অধ্যাপণা, গবেষণা করবেন) জন্য অ্যাপলাই করলেন। আপনার সাথে আরেকজন, যিনি সদ্য বিদেশ থেকে পিএইচডি করে (তার বিএস হয়তো বুয়েট থেকে না, অথবা বুয়েট থেকে হলেও তার বিএস এর রেজাল্ট হয়তো সে সময় শিক্ষক হবার জন্য যথেষ্ট ছিল না) এসে অ্যাপলাই করলেন। বুয়েটের প্রায় সব বিভাগের সংস্কৃতি বলবে আপনাকে ঐ পদে নিয়োগ (বা পদোন্নতি) দিতে। যদিও অন্য প্রার্থী হয়তো বেশি যোগ্য। একটা বিশ্ববিদ্যালয় এমন সব অদ্ভুত সংস্কৃতি মেনেই পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রুল-বুক (কালা-বই নামে এটা পরিচিত) কবে শেষ ছাপা হয়েছে জানি না (২০১০ পর্যন্ত আমি দেখি নাই)। নিয়ম যা আছে তার বেশিরভাগই ব্রিটিশ আমলে করা বলে শুনেছিলাম। সেগুলো নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নাই। নিয়ম সবার মুখে-মুখে তৈরি হয়। লেকচারার পদে নিয়োগ পেয়েছিলাম ২০০৮ এ। ২০১০ এ দেশের বাইরে পিএইচডি প্রোগ্রামে একটা স্কলারশিপ পেলাম (এমএস তখনো শেষ হয় নাই)। ছুটি পাওয়া যায় কিনা, সেটা কয় বছর, এ নিয়ে ব্যাপক দ্বিধা-দ্বন্দ। একেক লোক একেক কথা বলে। কেউ বলে এমএস শেষ না হলে ছুটির আবেদন করা যায় না। কেউ বলে লেকচারাররা ছুটি পায় না, আগে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে হয়। কেউ বলে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে এমএস লাগে, কেউ বলে না এমএস লাগে না দুই বছর চাকুরী করতে হয় কেবল। তার উপরে আরো ভয়, রেজিস্ট্রার ভবনের কর্মচারীরা নাকি লীগের লোক না হলে কাজ করে না, ছুটির দরখাস্ত গায়েব হয়ে যাবে ইত্যাদি কথা-বার্তা। এই করতে করতে মাস গেল, বিদেশ আসবার ২০ দিন আগে (জুলাইতে) দরখাস্ত করলাম (তদ্দিনে এমএস শেষ করে ফেলছি)। একটা ঝামেলা করতে হলো না, আসার দিন সকালে যাবতীয় কাগজ-পত্র হাতে পেলাম। যিনি সব কাজ করলেন, তাকে বলছিলাম আজ রাতে আমার ফ্লাইট, তিনি বললেন, "আপনি এতো পরে ছুটির আবেদন করলেন কেন? আর আপনি সহকারী অধ্যাপক পদেই বা আগে আবেদন করলেন না কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মতে তো আপনি এই আবেদন করার যোগ্য।" পরে বিদেশ এসে জানতে পারলাম আমি আসলেই সহকারী অধ্যাপক পদে আবেদন করতে পারতাম (যেহেতু তদ্দিনে আমি দুই বছর চাকুরী করে ফেলেছি), কিন্তু আমাদের বিভাগের সংস্কৃতি মতে এমএস শেষ করবার আগে (রেজাল্ট প্রকাশ হবার আগে) কেউ আবেদন করতে পারেন না (তার আবেদন পত্র বিভাগীয় প্রধান ভিসি বরাবর ফরোয়ার্ড করেন না)। তবে এর ব্যতিক্রম (কোন কোন বিভাগীয় প্রধানের প্রিয়-পাত্র/ছাত্র) যে নাই তাও না। খুজলে আসে-পাশের ব্যাচের কাউকেই পাই এখন, আর অনেক প্রশ্নের উত্তরও পেয়ে যাই সাথে সাথে। এই সংস্কৃতি মেনে চলার কি অর্থ কে জানে।

ভিসি-প্রোভিসির নিয়োগ নিয়ে এতো সোরগোল উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মেই আছে, এঁদের নিয়োগ সরকার-প্রধানের ইচ্ছায় হবে (সরকার চাইলে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেও ভিসি পদে নিয়োগ করতে পারেন, তবে চাইলে আমাকেও নিয়োগ দিতে পারেন কিনা সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে!)। এখন এরা পদত্যাগ করলে আগামী ভিসি/প্রোভিসি কে নিয়েও যে কারো সমস্যা থাকবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? গোড়াতেই যেখানে গলদ।

কল্যাণ এর ছবি

আমি একা প্রতিবাদ করে লাভ হবে না - এই ধারনা যদি আপনি করতে পারেন তাহলে কি আরোও ১০ জনে সেটাই মনে করে চুপ করে থাকছে না? বুয়েটের শিক্ষক যখন, তখন আপনি নিশ্চয় মেধাবী এবং চাকরীর জন্যে আপনার দুঃশ্চিন্তা না থাকারি কথা, তাহলে সাহস করে চাকরীর মায়া ত্যাগ করে একবার মুখটা খুলেই দেখুন না। এই সচলেই কিন্তু এমন লেখক আছেন যিনি নিজের স্বাধীন মতামত লিখিতভাবে প্রকাশে দ্বিধা করেননি, সেটা ছিল তার শিক্ষকের সরাসরি বিপক্ষে। আসুন কোদাল কে কোদাল বলি।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সৌরভ কবীর  এর ছবি

সহমত।

অন্যকেউ এর ছবি

সংখ্যার জোরই আজ বুয়েটে সবচেয়ে জরুরি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ত্রাসীর সংখ্যা কখনও মোট মানুষের আধা বা এক শতাংশ বোধহয় ছাড়ায় না। কিন্তু তারা থাকে দশজন একসাথে, আমরা থাকি একা। একা একজন মানুষ ভীত হয়ে থাকবেই, এটা অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু এটাও ঠিক যে সংখ্যাগরিষ্ঠতাটা কাজে লাগাতে পারলে পরিবর্তন আনতে পারার সম্ভাবনাটা বাড়ে।

আপনার মতো মানুষ আরও অনেকেই নিশ্চয়ই আছেন। সমমনাদের সাথে কথা বলুন। তাঁরা হয়তো আরও নতুন সব সমমনাদের কাছে কথাগুলো ছড়িয়ে দিতে পারবেন। আপনি যখন পরের সভায় কথা বলবেন, তখন এটা নিশ্চিত হবে যে আপনার কথার শেষে সমর্থনসূচক একটা গুঞ্জন শুনতে পাবে সবাই।

সচল জাহিদের সাথে কিছুটা একমত। বুয়েটের সবকিছু ঋণাত্মক না। শিক্ষকরা অন্য আন্দোলনে কিছু বলেননি বলে এখনকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না, এটা কোনও কাজের কথা না। আজকে একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে, আপনারা যারা নতুন, তারা একে আরও এগিয়ে নিয়ে যান। সবকিছু এখনও শেষ হয়ে যায় নাই।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

অনভিপ্রেত এর ছবি

আপনার সাথে একমত। ঘুরেফিরে ছাত্রদের মধ্যে এ প্রশ্নটা কিন্তু আসছেই,"এখন কেন?"

শিক্ষকেরা আমাদের বাবা-মার মত। কেন তাঁরা গৌতম দা'র সময়, ইষাণ ভাইয়ের সময়, চাঁদাবাজির সময় টুঁ শব্দ করেন না। কেন তখন ছাত্রদের একাই লড়াই করতে হয়? জানুয়ারির সেই আন্দোলনের জন্যে যে ২০ জন নিরপরাধ ছাত্রের রেজাল্ট আটকে গেছে, তার খোঁজ কি তাঁরা রাখেন? বা বহিষ্কৃতরা যে এখনো হলেই থাকে সেটা তাঁরা জানেন? সেই ২০ জনের জন্য কী একজন স্যারও সুপারিশ করবেন????

যাই হোক, বেটার লেট দ্যান নেভার! এ আন্দোলন সফল হোক। বুয়েট তার হারানো ঐতিহ্য (জ্বী, ওটা হারিয়েই গেছে ) ফিরে পাক।

সাফি এর ছবি

চলুক

জানুয়ারির সেই আন্দোলনের জন্যে যে ২০ জন নিরপরাধ ছাত্রের রেজাল্ট আটকে গেছে,

এই ব্যাপারটা জানা ছিলনা, একটু বিস্তারিত জানানো যায়?

Shazzad এর ছবি

ঐ আন্দোলনে ০৬ ব্যাচের যে ভাইয়ারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদেরকে ভিসি স্যার থ্রেট দেন-'সার্টিফিকেট নিতে তো আমাদের কাছেই আসবা...দেখে নেবো কেমন করে সার্টিফিকেট তোল'। এবার দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে নিন। বুয়েটে দলীয়করণ তো বহু আগে থেকেই চলছে এখন রেজাল্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ও শুরু হল।

অনভিপ্রেত এর ছবি

ব্যাপারটা শুধু থ্রেটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ০৬ ব্যাচের ২০ জনের রেজাল্ট আটকে দিয়ে বলা হচ্ছে তারা নাকি প্রোভিসির সাথে সে সময় অসদাচরণ করেছেন, এখন তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলে, নির্দোষ প্রমাণিত হলে তবেই তাদের গ্রেডশিট হাতে দেয়া হবে।

শুধু একবার কল্পনা করুন - এখন যাদের চাকরি পেয়ে যাওয়ার কথা, তারা ইন্টারভিউই দিতে পারছে না। তার ওপর ২০ জনের মধ্যে এমনও আছে, যে হয়তো ফেঁসে গিয়েছে অন্য কোন আন্দোলনকারীর সাথে ডাকনামের মিল থাকায়!!

ও আরেকটা কথা। ভিসি অফিস থেকে এটাও জানানো হয়েছে, শিক্ষকদের এ আন্দোলন চলাকালে কমিটি তদন্তে বসবে না। সোজা কথা -"নিজেরা বাঁচতে চাইলে স্যারগো আন্দোলন থামা"

ঘেন্নায় মুখে থুথু জমে যায়।

অন্যকেউ এর ছবি

জানুয়ারির সেই আন্দোলনের জন্যে যে ২০ জন নিরপরাধ ছাত্রের রেজাল্ট আটকে গেছে, তার খোঁজ কি তাঁরা রাখেন? বা বহিষ্কৃতরা যে এখনো হলেই থাকে সেটা তাঁরা জানেন? সেই ২০ জনের জন্য কী একজন স্যারও সুপারিশ করবেন?

চলুক চলুক

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বুয়েটে পোষ্য কোটা (http://www.sachalayatan.com/shashtha_pandava/20633) চালু করার মহানায়ক তো শিক্ষক সমিতিই ছিলো। উনারা নিজেদের স্বার্থে আঘাত না লাগলে মনে হয় না কোনো আন্দোলন করে সময় নষ্ট করবেন। বাঁশ বরাদ্দ সবসময়ই ছাত্রদের জন্য। এখন বুয়েটে ক্লাস বন্ধ করে উনারা বাঁশ অব্যাহত রেখেছেন। আগের ভিসি সম্ভবত শিক্ষক সমিতির আকামে সহযোগিতা করতো। পোষ্য কোটা আর বুয়েট প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি নাইট শিফট প্রায় চালু হয়ে যাচ্ছিলো। পাবলিকের ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে সেটা ঠেকানো যায়।

ভিসির নিয়োগও প্রায় সবসময়ই রাজনৈতিক। তবে রাজনৈতিক ইতিহাস থাকলেও কোয়ালিটির দিকে নজর দেয়া হয়। বর্তমান ভিসি নাকি কোয়ালিটিতেই ধরা।

আর হেলালী স্যারের বিষয়টা কি আপনি নিশ্চিত? আমি যতোটা ইনফর্মেশন পেলাম, তাতে উনার ছেলে নিশ্চিতভাবেই তালেবানী, হিজবুতি বা ওইটাইপের উগ্র রাজনৈতিক 'ইসলাম'-এর অনুসারী। ছেলের আদর্শ আবার বাবা! সমীকরণটা একটু জটিল।

আপনার পোস্টের কয়েকটা অনুমিতি ভুল আছে। যেমন, বুয়েটকে রাজনীতিবিহীন বলা। যাহোক, এগুলা নিয়ে পরে বিস্তারিত মন্তব্য দিবো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নুসায়ের এর ছবি

পোষ্য কোটা আর নাইট শিফট সংক্রান্ত তথ্যটি ঠিক নয়। এ প্রস্তাবের বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষক অবস্থান নেন (আমার জানা মতে প্রায় ২০০র অধিক শিক্ষক একটা পিটিশন সই করে আকাডেমিক কাউন্সিলে জমা দেন), এবং আকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিঙ এ তাদের ক্রমাগত প্রতিবাদের মুখে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা থেকে সরে আসা হয়। পাব্লিকের প্রতিবাদ এতে কতটুকু অংশ রেখেছে তা নিয়ে আমি সন্দিহান। বিশেষতঃ যখন এটা সরকারী সিদ্ধান্ত নয় (বা সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহনের সাথে জড়িতও নয়)।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পোষ্য কোটা আর নাইট শিফট সংক্রান্ত তথ্যটি ঠিক নয়।

আমি তো কোনো ভুল দেখছি না। 'শিক্ষক সমিতি'ই পোষ্য কোটার প্রস্তাব করে। এটা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে রূপরেখাও লিখিত আকারে প্রকাশিত হয়েছিলো। শিক্ষকদের কিছু অংশ এর বিপক্ষে অবস্থান নেন, পিটিশন দেন অনেক পরে।

আমার জানা মতে প্রায় ২০০র অধিক শিক্ষক একটা পিটিশন সই করে আকাডেমিক কাউন্সিলে জমা দেন

আপনার জানা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। স্পষ্টতই বুয়েটে অনেক শিক্ষকই আছেন, যারা বুয়েটের চিন্তাও করেন। তারা এ আকামের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু এটা ফ্যাক্ট যে, বুয়েট শিক্ষক সমিতি পোষ্য কোটা আর নাইট শিফটের খসড়া চূড়ান্ত করে ফেলে। এ থেকে আরো একটা প্রশ্ন আসে, তাহলো বুয়েট শিক্ষক সমিতি বুয়েট শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে কতোটা সফল।

পাব্লিকের প্রতিবাদ এতে কতটুকু অংশ রেখেছে তা নিয়ে আমি সন্দিহান।

আপনি সন্দিহান হলেও কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু পাবলিককে আলটিমেটলি সব 'কর্তৃপক্ষ'ই ডরায়। পোষ্য কোটা আর নাইট শিফট নিয়ে যে পরিমাণ প্রতিবাদ হয়েছে, আমার অভিজ্ঞতায় অন্য কোনো ইস্যুতে বুয়েটিয়ানরা এতোটা সক্রিয় হয় নাই। তাদের প্রতিবাদকে ফেলনা ভাবার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তানজিম এর ছবি

হেলালী স্যারের ছেলেকে ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি আমাদের জুনিওর হিসেবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হিজবুত তাহরির গোষ্ঠীর কিছু ছেলে ছিল যারা মূলত একটু চাল্লু টাইপের ছাত্রশিবিরের অনুসারী। এই ছেলে কোন ভাবেই তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় বলেই জানি। আপনার 'নিশ্চিত' ভাবেই প্রাপ্ত ইনফর্মেশন এর ভিত্তি জানাবেন কি?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপনার 'নিশ্চিত' ভাবেই প্রাপ্ত ইনফর্মেশন এর ভিত্তি জানাবেন কি?

এর ভিত্তি তার ফেসবুক প্রোফাইল ও ফেসবুকের মন্তব্য।

ফেসবুক প্রোফাইলে তার পলিটিক্যাল ভিউ: ইসলাম অ্যান্ড ওনলি ইসলাম।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে 'রাজনৈতিক' ইসলামের অনুসারী কারা, এটা সেল্ফ এক্সপ্লানেটরি।

এরপর তার ফেসবুক কমেন্ট দেখুন:
Kushal

যেটাকে বাংলা করলে দাঁড়ায়:

আমার লেখায় আবেগ থাকাই স্বাভাবিক। এটাও কি আপনার কাছে আজব মনে হচ্ছে? কিছু বলার নেই। বাবা টীচার হয়েছিলেন কিভাবে সেটা নিয়েও দেখি বিতর্ক আছে। হায় রে! কই যাই। যাই হোক বাবার গুণকীর্তন করতে চাচ্ছি না। নির্লজ্জের মতো অনেকটাই করেছি। বাট আমার পলিটিক্যাল ভিউ অলওয়েজ ইজ অ্যান্ড ওয়াজ ইসলাম। ইসলাম ইজ টোটালি এ পলিটিক্স। যারা এটা বিশ্বাস করেন না বা জানেন না, তারা মুসলিমই নন। অ্যান্ড আমি জামাতকেও ঘৃণা করি। অল্পবিদ্যা খুব ভয়ংকর ডিয়ার চন্দ্রবিন্দু। আমি আপনাকে শিক্ষিত করতে চাচ্ছি না। বাট আপনার নিজের ভালোর জন্যই আপনার রূচির উন্নতি প্রয়োজন। ভালো থাকবেন।

এই মন্তব্যটা সে করেছিলো যে মন্তব্যের প্রেক্ষেতি, তাহলো,

Chandra Bindu: কুশলের লেখায় আবেগ ছাড়া কিছু নাই। পত্রিকার রিপোর্টটা অত্যন্ত দুর্বল। সেটাকে যুক্তি দিয়ে তুলোধনা করতে পারতো। তা না করে শুধু আবেগই এসেছে তার নোটে। বিষয়টা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের না, সত্যের। কুশলের ফেসবুক প্রোফাইল বরং এই কেসে স্যারকে ঝামেলায় ফেলবে। ওখানে আছে Political Views only one way of life..islam.. মুসলমান হওয়া হিন্দু হওয়া বৌদ্ধ হওয়া খ্রিস্টান হওয়া নাস্তিক হওয়া দোষের কিছু না; কিন্তু সেটাকে পলিটিক্যালি ব্যবহার করলে ঝামেলা। বিশেষ করে স্যারের হিজবুত তাহিরী কানেকশন নিয়ে যেখানে কথা উঠছে, সেখানে এটা একটা নেগেটিভ দিক।

স্যারের শিক্ষক হওয়ার বিষয়ে ওই রিউমারটা আমিও শুনেছি। এজন্যই নিশ্চিত হতে চাইছি। রিউমারটা ছড়ানোর কারণ কি, তাও বুঝতে চাইছি। এটা নতুন রিউমার না। আমিই শুনেছি ১৫ বছর আগে।

পলিটিক্যাল ইসলাম প্লাস ইসলাম পুরোটাই পলিটিক্স প্লাস এটা না জানলেই অমুসলিম ঘোষণা - এই আকামটা কারা করে, তা নোতুন করে ব্যাখ্যার দরকার থাকলে বলবেন।

এখানে আরেকটা জিনিস লক্ষ্যনীয়। জামায়াতের সাথে জড়িত না থাকা বা জামায়াতকে ঘৃণা করাটা কোনো সার্টিফিকেট না। যেমন, আল-বাইয়্যিন্যাত (বলাকার কেস মনে আছে?) উঠতে বসতে জামায়াতকে গালি দেয়। কিন্তু তারা হিংস্রতায় কোনোভাবেই কম যায় না।

কুশলের প্রোফাইলে আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আছে। পিপল হু ইন্সপায়ারস মি: ড্যাড।

প্রো-৭১ বাবার ফ্যান ছেলে পলিটিক্যাল ইসলামের উগ্র সমর্থক হওয়া অসম্ভব না হলেও কষ্টকল্পনা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তানজিম এর ছবি

ধন্যবাদ, আপনার সন্দেহের কারণ পরিষ্কার করার জন্য।

গরীব মানুষ এর ছবি

মাকসুদ হেলালীকে আমি খুবই ভালো করে চিনি! এই শিক্ষক আমার অনেক গুলো ক্লাস পেয়েছিলেন, এবং আমাকে ভালো ভাবেই চিনে রেখেছিলেন, আমি সালাম দিলে তিনি আমার সালাম নিতেন না, এমন হয়েছে ক্লাসে শুধু আমাকেই প্রশ্ন করতেন এবং আটকানোর চেষ্টা করতেন। উদাহরনঃ আমাকে একদিন প্রশ্ন করলেন বেল্টের টেনশন নিয়ে, টেনশনের কারনে বেল্ট লম্বা হয়ে যায় তাহলে উপায় কি? আমি কইলাম স্যার বেল্ট কেটে অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলে দিয়ে আবার জোড়া দিলেই হলো। আমার উপর এমন রাগ করে উঠলো, ক্ষেপে এসে বললো কই দেখছো? আমি কইলাম আমার রাইস মিলে আমি এই করেই বেল্ট ব্যাবহার করি। আরো একটা উপায় হলো একটা এক্সট্রা পুলি লাগিয়ে টান করা, যাই হোক উনি একটু দমে গিয়ে বলেছিলেন রাইস মিলে একটা কট কট করে শব্দ হয় শুনেছো, আমি কইলাম স্যার রাইস মিলের হালারের যে শব্দ তাতে ঐটুকু প্রায় শোনায় যায় না। আর একদিন কি একটা জিজ্ঞেস করলেন, আমি পারি নাই, স্যার বললেন "শুধু রাজনীতি করলেই হবে?", আবার একদিন জিজ্ঞেস করলেন প্রশ্ন আমি উত্তর দিলাম, তিনি গালাগালি করে নিজে বুঝিয়ে দিলেন, আমি পরে আমাদের ক্ল্যাসের ফার্স্ট রে জিগায়লাম কি ভুল কইছিলাম? কইলো ভুল কস নাই ভুল করছিস রাজনীতি করে। এই হচ্ছে মাকসুদ হেলালী! কোন দিন রিকমেন্ডেশনের জন্য চিন্তা ও করিনা এই সব স্যারদের। যাই হোক একটা নতুন তথ্য দেই! মেকানিক্যালের অমলেশ স্যার বলেছিলো, ৭১ এ ৩০ লক্ষ মানুষ মরে নাই!?? মেজাজ এতো খারাপ হইছিলো সেদিন, কিন্তু ঐ যে বাঁশ, আমাকে বলে কয়ে বাঁশ দিতো কিছু শিক্ষক! এক শুয়োরের বাচ্চা আমারে পরপর সেশানালে "ডি" ধরায় দিছিলো! এই হচ্ছে বুয়েটের শিক্ষকরা! কিছু ভালো নাই তা নয়, তারা নিতান্তই নিরীহ, এই সব বালাছাল স্বার্থগত আন্দোলনেও তাদের দেখবেন না এইডা সিউর!

sohel এর ছবি

পোষ্য কোটা বিষয়ে পুরা শিক্ষক সমিতিকে দায়ি করা বোকার মত কাজ। ২০ জন সচল ‌যদি বলে মেহেরজান এর জন‌্য কিছু করা দরকার, অন‌্যদের প্রতিবাদের কারণে তা নাকোচ হয়, সেটার জন‌্য পুরা সচলকে দায়ি করার মত হবে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পোষ্য কোটা বিষয়ে পুরা শিক্ষক সমিতিকে দায়ি করা বোকার মত কাজ।

পুরা উলটা।
সচল ষষ্ঠপাণ্ডবের যে পোস্টের লিংক দিয়েছি, ওটা ভিজিট করলেই দেখতেন লেখা আছে,

বুয়েটের শিক্ষকদের সংগঠণ “বুয়েট শিক্ষক সমিতি” এব্যাপারে একটা কর্মপত্র তৈরী করেছেন খোদ উপাচার্য মহোদয়ের সহযোগিতায়। এনিয়ে তারা বুয়েটে একটা সেমিনারও করেছেন গত ১৭ই ডিসেম্বর, ২০০৮-এ। বিষয়টি এখন প্রায় চুড়ান্ত। শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা।

ওই কর্মপত্রে লেখা আছে,

D. ACKNOWLEDGEMENT
The Teachers' Association expresses their sincere gratitude to Prof. A M M Safiullah, Vice-Chancellor of BUET for his interest and encouragement to prepare this working paper.

এখানে অন্তত ২টা জিনিস উল্লেখযোগ্য:
১) কর্মপত্রটা শিক্ষক সমিতিই তৈরি করেছে। এখানে পুরো আর আধার প্রশ্ন নাই। শিক্ষক সমিতির ভেতরে কিভাবে এটা নির্ধারিত হয়েছে, গণতান্ত্রিক না স্বৈরতান্ত্রিক, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু এটা এসেছে 'শিক্ষক সমিতি'র পক্ষ থেকে। আরেকটা প্যারালেল উদাহরণ দেই, বুঝতে সুবিধা হবে। মনে করেন, জাতীয় নির্বাচনে আমি হাসিনারে ভোট দিলাম না, খালেদারে দিলাম। কিন্তু হাসিনা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলো। ওই সরকার তখন আমারও সরকার।

২) এই কর্মপত্র তৈরিতে আগের ভিসির ইন্টারেস্ট আর উৎসাহ ছিলো। বর্তমান ভিসি হারামজাদা হোক আর দেবদূত হোক, শিক্ষক সমিতির সাথে তার কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট এই চলমান ক্লাস বর্জনের একটা কারণ হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ইয়াসির এর ছবি

লেখাটিতে মনোবল হারিয়ে যাবার ব্যাপারটি খুব স্পষ্ট, আমি কিছুটা আতঙ্কিত এই ভেবে যে শিক্ষক সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কি একই ভাবে ভেঙে পড়েছেন?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

লেখাটা ফোকাসড হলনা। তবে আপনাকে স্বাগতম। এই বিষয় নিয়ে নিয়মিত লিখে যেতে পারেন। প্রাতিষ্ঠানিক কারেন্ট-এ্যাফেয়ার্স নিয়ে লেখাগুলো সার্বিকভাবে জনমত গড়তে সহায়ক হয় বলে মনে হচ্ছে।

Hasan এর ছবি

আপনার লেখাটি বিভ্রান্তিকর আর স্ববিরোধিতাইয় পূর্ণ। কামাল আহমেদ রেজিস্ট্রার অফিসের জেষ্ঠ্যতম কর্মকর্তা হলেই যে তাকে রেজিস্ট্রার নিয়োগ করতে হবে এমন কোন কথা নেই। যদি রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য যথাযথভাবে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হত আর যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যেত তাহলে তাকেই রেজিস্ট্রার নিয়োগ করা যেত। রেজিস্ট্রার পদটি মোটেও তুচ্ছ কোন পদ নয়, শিক্ষকদের তাদের চাকরি সংক্রান্ত যে কোন বিষয় নিয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। একটা উদাহরণ দেই, মাস্টার্স শেষ করে সহকারী অধ্যাপকের সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তখনকার ডেপুটি রেজিস্ট্রারের টালবাহানার কারণে আমার আর সহকারী অধ্যাপক হওয়া হয়ে উঠল না। যেহেতু কিছু দিনের মধ্যেই বিদেশে চলে আসব তাই ব্যাপারটাকে তখন খুব একটা গুরুত্ব দেই নাই। সুতরাং এরকম একটা পদে যাকে তাকে নিয়োগ দিলে শিক্ষকদের বিক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি? আপনি শিক্ষক হবার পরেও ব্যাপারটি ধরতে না পারলে বাকীদের অবস্থা কি তা সহজেই অনুমেয়।

বুয়েটের বর্তমান প্রশাসন যে বুয়েটকে কলুষিত করছে তা আপনার কথাতেই স্পষ্ট অথচ আপনার অভিযোগ এই প্রশাসনের পদত্যাগ চাচ্ছে যেই শিক্ষক সমিতি যেই শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। তারা কেন এতদিন টু শব্দটিও করে নাই তার কারণে আপনার এই ক্ষোভ। যতদূর বুঝি একটা রাজনৈতিক সরকারের নিয়োগ দেয়া ভিসি আর প্রোভিসির পদত্যাগ চাওয়া একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

“নিচে নামবার যে লাইনে বুয়েট আজকে চলছে, তা কি কোনও ভাবে বন্ধ করার উপায় আছে?” সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এই প্রার্থনা করা ছাড়া আর তো কোন উপায় দেখছি না।

ব্র‏হ্মচারী এর ছবি

সুতরাং এরকম একটা পদে যাকে তাকে নিয়োগ দিলে শিক্ষকদের বিক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি?

অবশ্যই স্বাভাবিক, এবং তার সাথে সাথে আমার ও উপরের অনেক মন্তব্যকারীর বক্তব্য কে সমর্থন করে যে শিক্ষকদের আতে ঘা না পড়লে তারা আন্দোলনে যায় না।

ফলাফল প্রকৌশলের বিরুদ্ধে আর ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে সমিতির অবস্থান ততটা শক্ত দেখি নি, যতটা ৬৫ বছর আর রেজিস্টার এর বিরুদ্ধে ছিল। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ মাত্র।

হাসিব এর ছবি

ফলাফল প্রকৌশলের বিরুদ্ধে আর ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে সমিতির অবস্থান ততটা শক্ত দেখি নি, যতটা ৬৫ বছর আর রেজিস্টার এর বিরুদ্ধে ছিল।

‌ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে কেন?

হাসান এর ছবি

রেজাল্ট পরিবর্তনের ব্যাপারটি নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে অবশ্যই আলোচনা হবার কথা। শিক্ষকদের প্রতিবাদের কারণেই ভিসি তদন্ত কমিটি করতে বাধ্য হয়। এই ধরনের একাডেমিক বিষয় নিয়ে শিক্ষক সমিতির সভায় আলোচনা হয়নি বলেই যে শিক্ষকরা এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করেনি বা তাদের অবস্থান নমনীয় ছিল তা ঠিক না।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপনার কথায় অনেকগুলো ভালো যুক্তি আছে। যেমন, রেজিস্ট্রারের নিয়োগের গুরুত্ব উদাহরণ দিয়ে খুব ভালোভাবে বুঝিয়েছেন।

যতদূর বুঝি একটা রাজনৈতিক সরকারের নিয়োগ দেয়া ভিসি আর প্রোভিসির পদত্যাগ চাওয়া একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

এখানে 'রাজনৈতিক সরকার' জিনিসটা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন? অরাজনৈতিক সরকারইবা কি?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসান এর ছবি

আসলে বলতে চেয়েছিলাম বর্তমান ভিসি আর প্রোভিসি আওয়ামী লীগের অত্যন্ত কাছের মানুষ। তাদের সাথে দলের যোগাযোগ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এতেও কোন সমস্যা ছিলনা, উনাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানের সম্মানকে সবার ঊদ্ধে স্থান দেয়া উচিত ছিল এটা না করেই উনারা ধরাটা খাইলেন। সরকার সবসময়ই রাজনৈতিক, সুতরাং এই নিয়ে বিতর্কের কিছু নাই।

মুস্তাফিজ এর ছবি

বুয়েটের অভ্যন্তরীন বিষয়ের প্যাচালে অংশ নিতে না পারায় দুঃখিত। আর শিক্ষক সমিতির বিষয় সেখানেই লেদানোই ভালো। যদি না পারেন তাহলে সার্টিফিকেট বেঁচে মুড়ি খান। আমার মতে সব ধরণের সমিতিই এক ধরণের সুবিধাবাদি চরিত্রের উদ্ভব ঘটায় যারা নিজেদের আঁতে ঘা না লাগা পর্যন্ত অন্যকোন বিষয়ে নাক গলায়না।

...........................
Every Picture Tells a Story

কল্যাণ এর ছবি

গুরু গুরু

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

Aktaruzzaman Aman এর ছবি

আমার কাছে পোস্টটিকে পরিকল্পিত অপপ্রচার মনে হচ্ছে। বিস্তারিত বলার প্রয়োজন দেখছিনা, কারণ আমার আগেই "সচল জাহিদ" ভাই এই নিয়ে বলেছেন।
লেখকের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনি আসলেই বুয়েট শিক্ষক হয়ে থাকলে আপনার পরিচয় দিন।

শহীদুল্লাহ এর ছবি

এই পোস্টটি অবশ্যই উদ্দেশ্যমূলক এবং আমাদের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে পরিচালনা করতে করা। বুয়েটের বিগত ছাত্র আন্দোলনের সময় (ঈশান) শিক্ষকদের পূর্ণ সমর্থন ছিল। সিএসই বিভাগের শিক্ষকরা সরাসরি ছাত্রদের সমর্থন দিয়েছেন। শিক্ষকরা কেন মাঠে নামলেন না সেটা একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়। ঐ সময় বুয়েটে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। উনারা যদি তখন উনাদের আন্দোলন নিয়ে তখন মাঠে নামতেন তাহলে পরীক্ষা শুরু করত্তে আরোও দেরি হত। তাতে একটি ব্যাচের বেরোতে আরোও হয়ত ৫-৬ মাস বেশি লেগে যেত যা উনারা চাননি। আরোও আগে যখন শিক্ষকরা উনাদের চাকুরীর বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলন করছিলেন তখনকার কথাও একটু বলি, সেই আন্দোলনের উদ্দেশ্যও কিন্তু ছিল বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত করা। চাকুরীর বয়স ছিল অন্যতম ইস্যু। কিন্তু মিডিয়ার কল্যানে আমরা জানলাম যে তাঁরা তাঁদের চাকুরীর বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনরত।

মাহবুব এর ছবি

সবার জানা উচিত শিক্ষক কমিউনিটিতে ভিসির সাপোর্টারও কিছু আছে। তাদের পক্ষ থেকে এমন লেখা আশা করা যেতেই পারে। কাজেই, এই লেখা নিয়া এতো আলোচনা না করাটাই শ্রেয়।

ব্র‏হ্মচারী এর ছবি

অবশ্যই আছে। তবে আমি ভিসি এর পক্ষ নিয়ে কথা বলি নি। শুধু এটুকু বলেছি জে এই আন্দোলনের মূল ফোকাসটা চাদাবাজি, দলীয়করন আর মাস্তানির বিরুদ্ধে হওয়াটা উচিত ছিল।

নাঈম এর ছবি

পোস্টের মুল ভাবের সাথে একমত। বুএটের শিক্ষকরা বরাবরি সুবিধাবাদি (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া), তাই আশ্চর্য হবার কোন কারন নাই যে নিজেদের আঁতে ঘা লাগার আগে পর্যন্ত তারা নাকে তেল দিয়া ঘুমাইছেন। আর প্রশাসনের স্বার্থে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের ব্যবহারও নতুন কিছু না [সনি আপুর আন্দোলনে বা পুজার ছুটি আন্দোলনে (সম্ভবতঃ ২০০৫ এ) ছাত্র দলের ভুমিকা]। আমার রুম্মেট '৯৫ ব্যাচের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তার কাছে শুনছি সাধারন ছাত্রদের কোন এক ইস্যু তে গেট আটকানোর ঘটনায় ভিসি ছাত্রলীগ কে ডেকে গেট খুলার ব্যবস্থা করতে বলেন।

যাই হোক মুল কথা হইতেছে, শিক্ষকদের বর্তমান আন্দোলনকে বুয়েট বাচাতে শিক্ষকদের প্রয়াস ভাবার কোন কারন নাই। আবার যারা ভাবতেসেন এর মাধ্যমে নতুন যুগের সূচনা হবে, এভরিথিং উইল স্টার্ট ফলিং ইন্টু প্লেসেসঃ স্টপ কিডিং ইউরসেল্ভস। ছাত্রদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে অনেক শিক্ষকের সমর্থন ছিল? হয়ত, কিন্তু নিস্ক্রীয় এই সমর্থন আসলে কট্টুক কাজের? বর্তমান ভিসি, প্রোভিসির পদত্যাগ জরুরি। কিন্তু শিক্ষকদেরও বুঝতে হবে, এটাই আল্টিমেট সমাধান না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।