মেয়েকথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৭/১২/২০১২ - ১২:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি বেশ কবার কিছু ব্লগে লিখতে যেয়ে মানুষের রোষানলে পরেছি । একবার ভেবেছিলাম আর লিখবই না কিন্তু বার বার আমার মানুষ মনটা আমাকে তাগাদা দেয় কিছু বলতে । অবাক হই আমাদের সামাজিক কাঠামো থেকে শুরু করে বড় বড় লেখা পড়া জানা মানুষদের মাঝে ছেলে-মেয়ের মঝের যে চরম বৈষম্য টানা সেটা দেখে আর তখন ই আমার ইচ্ছে করে কিছু বলি । আমি বিশেষ বিদ্যান কোন মানুষ নই। আমার সঙ্গে লেখাপড়া করা ছেলেমেয়েদের অনেকে আমার চাইতে ঢের বেশী লেখাপড়া করেছেন। আজকাল ফেস বুক এর যুগে সবার সাথে যোগাযোগের সুবাদে প্রতিদিন সবার খোঁজ খবর নিয়মিতই পাওয়া যায় আর সেই সাথে সবার মানষিকতার কিছুটা ধারনাও জোটে। যেমন কারা খুব ধর্ম পরায়ন তা বুঝি তাদের হিজাব পরা ছবি দেখে তার ধর্ম পরায়ন পোষ্ট আর নানা রকম ধর্মিয় ফ্যান পেইজের লাইক মারা দেখে। আবার যারা বেশ আধুনিক তাদের নানা পোষাকে তোলা ছবি দেখে তাদের সেন্স অফ হিউময়ার সম্বলিত পোষ্ট এবং ফ্যান পেইজ এর লাইকিং দেখে, আবার রাজাকার মানষিকতা বনাম স্বাধীনতা মানষিকতার ও দেখা মেলে এবং আমি জানতে পারি আমার কোন বন্ধু -আত্নিয়রা কোন মানষিকতার । যা লিখতে বসে এসব লিখছি সেখানে আসি। এরকম আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাপনে ঘরে-বাইরে্‌, কাজে, রাস্তায় দেখা মানুষ গুলির কথা চালচলনেও আন্দাজ করতে পারা যায় তাদের মানষিকতা । দুদিন আগে আমার এক বন্ধুর ফেসবুক পোষ্ট থেকে শুরু করি । সে সেয়ার করেছে একটি ম্যসেজ, সেখানে লেখা -
মহা নবী (সাঃ) বলেছেন "যে নারী তার অভিভাবক এর সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।"

অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে বিয়ে করতে হবে পরিবারের সান্তি এবং বাবা মা এর সাথে সুন্দর সম্পর্ক থাকলে এটাই কাম্য, কিন্তু সেটা কি শুধু মেয়েদের বেলায় বাতিল হবে আর ছেলেরা করলে ঠিক আছে? ব্যপারটা এরকম যে মেয়েরা আর ১৮ বছরের নিচের শিশুরা যা করে সেটাতে বুঝের অভাব আছে । আমি মেয়ে বলেই কি আমার কথাটা খুব লেগেছে? নাকি কথাটা আসলেও লাগবার মত । একজন ১৮ বছর বয়সের নারী বা পুরুষ যেই হোক নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় এরকম সিদ্ধান্ত একা নিতে পারে, সেটা আইন বলছে । আবার একজন মুসলিম ঘরের মেয়ে একটা হিন্দু ছেলেকে আইন অনুযায়ী বিয়ে করলে নাকি সে বিয়ে বেয়াইনি ধর্ম মতে । আর ছেলেরা করতে পারে তাতে মেয়ে বা তাদের সন্তান দের ধর্ম ছেলের ধর্ম হয়ে যায় বাই ডিফল্ট । এরকম আরও ব্যপার আছে ধর্মিয় মতে যেগুলি আমাকে খুব পীড়া দেয় কিন্তু আমি ধর্ম নিয়ে লিখতে বসিনি স্বাধারন জীবন যাপনের ক্ষেত্রে এরকম অনেক ব্যপার চোখে পরে । যে কোন ফর্ম ফিল আপ করতে গেলে বিশেষ করে মেয়েদের পুরুষ অভিভাবকের নাম লিখতে হয় । আবার স্কুলে বাচ্চারা ফর্ম ফিলাপ করে যাদের বাবা মারা যায় বা বাবা মা এর বিচ্ছেদ হয়ে গেছে তবুও সেই বাবার নাম লিখতে হয় কিন্তু যে মা সমস্ত দায় দায়িত্ব নিয়ে বাচ্চা পালে তার নাম দেয়া যায় না । মানে দাঁড়ায় মেয়েরা অভিভাবক হতে পারেনা কেননা তাদেরই সবখানে অভিভাবক লাগে ।
যৌন কর্মি গুলিকে আমরা কি ভয়ানক ঘৃ্নার চোখে দেখি অথচ এদেরকে যারা পয়সা দিয়ে কেনে তারা আমাদের মধ্যে মিশে থাকে ছদ্দ্যবেশে আমাদের কখনো মনে হয়না । ঐ যৌন কর্মি কি বেশী সত্যি এবং সাহসী নয়? সে অন্তত তার নিজের পরিচয় এ বাঁচে। সমাজের মানুষ গুলি ব্যবহার করে বলেই তারা সেই কাজ করে । সমাজকে সেই নষ্টামির দায় নিতে হয়না । যে সমাজে যৌন কেনা বেচা হয় সে সমাজ কে আঙ্গুল তোলেনা কেউ ।
আজকাল মা খালাদের মহলে শুনি "তোমরা তো ভাগ্যবতি, তোমাদের স্বামীরা ঘরের কাজে তোমাদের সাহায্য করে ার আমাদের সময় তারা হাত ধুয়ে ভাতও খেতে চাইতোনা , এমন ভাবে বলা যেন কাজটি একধরনের উচ্চ বংশিয় বা রাজকিয় কাজ।
আবার অনেক ছেলেরা যারা সংসারের কাজে মেয়েদের সাহায্য করে তারা বলে "কয় জনের স্বামী আছে যারা এরকম ঘরের কাজ করে?"
সত্যি আমরা আজকালের মেয়েরা অনেক ভাগ্যবতি যে আমাদের স্বামীরা আমাদের কাজ করতে দেন ,ঘরের কাজে সাহায্য করেন । এই কথা গুলি শুনতে কেমন অবাক লাগে । ঘরটা কি আমার একার? পড়ালেখা করে ঘরে বসে থাকাটা কি যুক্তির? এসব কি মেয়েদের কে কোন ফেবার করা? বাচ্চা লালন পালনের ৯০ ভাগ দায়ীত্ব মেয়েরা পালন করে থাকলেও নাম খানা তারা বাবার পাবে । বাচ্চারা মা এর দুধ খায়, মা এর পেটে থাকে তাই স্বভাবতই মা বেশী করবে সেখানে মা এর ক্রেডিট কি? বাবা যদী এক বেলা দেখে তো সেটা ক্রেডিট ।
বিয়ের পরে মেয়ে যখন বাবা মা এর বাড়ি বেড়াতে যাবে তখন গুনে গুনে থাকতে হবে আর ছেলেদের বাড়িতে যেয়ে মেয়েরা থাকবে সেটা স্বাভাবিক । এরকম কত যে সমাজের পুরুষ দের মন রেখে বানানো নিয়ম, যার বাইরে গেলে লোকে কথা বলবে এবং সেসব করলে পুরুষত্ত্ব ক্ষুন্য হবে ।
ক্লাশে একটা ছেলে যখন প্রথম হয় তখন সে তার নিজ গুনে হয় আর সেই প্রথম পদ টা যখন একটা মেয়ের হয় তখন সব ছেলেরা বলে হা ও তো স্যর দের কে চেহারা দেখিয়ে নাম্বার বেশী পেয়েছে, ওর তো মাথা ভালোনা সারাদিন পড়ে । অথবা অফিসের প্রোমশানটা মেয়েদের যোগ্যতায় না মেয়েদের চেহারা দেখে ছেলে বস রা খুশি হয়ে দিয়ে দেয় । আমি এও দেখেছি বস যখন মেয়ে তার নিচে কাজ করে যত পুরুষ সবাই ভাবে তাদের যোগ্যতা মেয়ে বসটার চাইতে বেশী এবং হাবে ভাবে নয় শুধু সরাসরি তারা খোলামেলা ভাবে অন্য সহকর্মিদের কাছে সেটা বলে, পিয়ন এবং ড্রাইভার পর্যন্ত সবারই এই সৎ সাহস থাকে যে তারা প্রকাশ করে তারা পুরুষ এবং মেয়ে যে কোন কার চাইতে বড় বা শক্তিশালি বা বেশী যোগ্য । আমি জানি আমার এই মতের সাথে অনেকেই এক মত হবেন না অন্তত বেশির ভাগ পুরুষরা কেননা তাদের লিংগের এই ভেদাভেদটি পোহাতে হয়না মানে তারা সব সময় অগ্রাধিকার এবং সুযোগটা বেশী পেয়ে থাকেন এবং সামাজিক অবকাঠামোটিও তাদের পক্ষে বানানো । সমাজ তো বটেই ধর্মে সয়ং আল্লাহ্‌ , ভগবান, গডও মেদেরকে সম মর্যাদার মানুষ হিসেবে স্বিকৃতি দেয়নি । মেয়েরা অপুর্ণ মানুষ হিসেবে সমাজের একটা অংশ হয়ে রয়ে গেছে । আমার লেখা আমি নিজে যখন পড়ছি আমার মনে হচ্ছে বেগম রোকেয়ার আমলের কথা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতাটা এই যে এই ২০১২ এর শেষে এসেও খুব পার্থক্য হয়নি । শুধু বাংলাদেশেই নয় পৃথিবীর কোথাও এত আধুনিকতার মাঝেও একটা মেয়ের জন্ম আর একটা ছেলের জন্মের মাঝে বিস্তর ফাঁক । আজো মানুষ মেয়ে সন্তান হলে খুশি হয়না , মেয়ে সন্তান হবে আগে থেকে জানলে এবর্সন করায় । আমেরিকার মত উন্নত দেশ যারা নিজেদের ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড ভাবে তারাও একজন কালো পুরুষ প্রেসিডেন্ট মেনে নিতে পারলেও একজন নারী প্রেসিডেন্ট মেনে নেবার মানষিকতা জন্মাতে পারেনি । এখনো বাবা মা এরা ছেলে মেয়েদের সম্পত্তি ভাগ সমান করতে পারেনি । কোন কোন ধর্মিয় আইন মতে মেয়েরা সম্পত্তির অধিকারিই নয় । আজও বাবা মা এরা ছেলে মেয়ে লেখা পড়া শিখিয়ে বড় করে ছেলেদের কাছে কিছু চাইলেও মেয়েদের কাছে থেকে কিছু আশা করেনা এমন কি কোন মেয়ে দিতে চাইলে তারা অস্বিকৃতি জানায় । মেয়ে তার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেছে কিনা অথবা স্বামী আবার এই নিয়ে কিছু বলবে কিনা তাও জিজ্ঞাসা করে যদিও জানে সেটা তার মেয়ের নিজের উপার্জনের টাকা । অথচ ব্যপারটা ছেলেদের বেলায় বাবা মা কে দিতেই হবে এমন বা বাবা মা এর দায়িত্ত্ব একা ছেলেদের । এখনো ছেলের ঘরের নাতিপুতি মেয়ের ঘরের নাতিপুতির অনেক পার্থক্য । মেয়েরা বংশ বিস্তারে ভুমিকা রাখলেও বংশ রক্ষায় মেয়েদের কোন স্থান নেই সেটা এক মাত্র ছেলেরাই পারে । স্বাধারন ব্যাপারগুলি প্রতিদিন সবাই চোখে দেখে এবং ফেস করে, এমন ভাবেই চলে এবং চলার আশাও রাখে । কত কি বদলে যায় এবং গেছেও কিন্তু অনেক মানুষ একই আবর্তে ঘুরতে থাকে । আমার খারাপ লাগে, দেখার চোখ বদলাতে আরও কত সময় লাগবে? মানুষ =পুরুষ আর মেয়ে মানুষ = মেয়ে । শুধু শরীরের ভেদাভেদে আত্নার দাসত্ত্ব । মনের বা আত্নার কি ছেলে মেয়ে থাকে? ঠিক এই সময়ে এসে আমি জানি আমার মত অনেক মেয়েই মানুষ হয়ে উঠতে হিমসিম খায় । কেননা এক কালে মেয়েদের কোন কথাই ছিলোনা, পড়া লেখা, চাকরি করা ছেলেদের পাশাপাশি, বাইরের জগতের সাথে জানা-শোনা, আজকালের পুরুষ সমাজ সেই কৃপা করেছে মেয়েদের প্রতি কিন্তু তাই বলে কি সব বদলে গেছে? পাশা পাশি দাড়াবার কথা বললেও পাশে দাঁড়ানো দেখবার মানষিকতাটা এখনো হয়ে ওঠেনি । তাই আমাদেরকে প্রায়ই শুনতে হ্‌ বাবা মা বলেন, তোমাকে আর তোমার ভাইকে আলাদা করে দেখে বড় করিনি বা স্বামী বলেন্‌তোমাকে চাকরি করতে দিচ্ছি, তোমার সংসারের কাজ করে দিচ্ছি, বাচ্চা পালতে সাহায্য করছি, শ্বশুর শ্বাশুড়ি গর্ব করে বলেন, আমরা আমাদের বউকে চাকরি করতে দিয়েছ্‌ প্রত্যেকের কোথায় একধরনের করুনার শুর বাজে, যেন তুমিতো আসলে এর হকদার না কিন্তু আমরা দয়া করে তোমাকে দিচ্ছি, আমরা অনেক মহান কারণ মেয়ে হিসেবে স্বাধারনতঃ তোমার এসব পাবার কথা না । শেষ করি, কেননা এসব আসলে বলার মত কথা মনে হয় না, কারই পছন্দের কথা নয় । আজকে জামাতের এক দল দেখলাম স্বাধিনতা দিবসের র‍্যলি বের করেছে এবং সেটাকে বাহবা দিয়ে ফেসবুকে মানুষ পোষ্ট দিচ্ছে, সেটাও গ্রহন যোগ্য । শিক্ষিত আধুনিক মানুষ বুঝেন এসব এর স্বপক্ষে বিপক্ষে লিখেন , বাহবা দেন বা গালা গালি করেন এবং আধুনিক মানষিকতার গর্বে বুক ফুলিয়ে বেড়ান, ন্যায় এবং সত্যের স্বাধক ভাবেন নিজেদের অথচ কিছু সত্যের কাছে এসে সেই আপনার চোখই এড়িয়ে যায় । আপনিও নির্বিকারে অসমতায় হারিয়ে যান ।
ইভা ফেরদৌস


মন্তব্য

সন্দেশ এর ছবি

প্রিয় ইভা ফেরদৌস,
আপনি একটি লেখায় অনেকগুলো বিষয় নিয়ে লিখেছেন। সেকারণে আপনার আলোচনাগুচ্ছেটি পরিপূর্ণতা পায়নি। বিষয়গুলোর প্রতিটি আরো যত্ন নিয়ে আলোচনার দাবী রাখে। নারী-পুরুষের বিভেদগুলো আপনার নিজের কিংবা পরিচিতের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং যুক্তি তর্কের সাথে আলাদা করে লিখলে একটি পজিটিভ অবদান রাখতে পারবে লেখাগুলো।

আপনার লেখাটি প্রকাশ করে আপনাকে উৎসাহ দেবার পাশাপাশি এই বিষয়গুলোতে আরো যত্নশীল লেখা পাবার বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে রাখলাম সচলায়তন থেকে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যাক, লেখাটা পড়তে পড়তে যেমন মন্তব্য করতে চেয়েছিলাম নিচে এসে দেখি সন্দেশ অমন মন্তব্য করে দিয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আমার অযত্নে গড়া লেখাটি প্রকাশ করবার জন্য ।
ইভা

রুমা এর ছবি

আপু আপনার কথা সম্পূর্ণ সত্য। আমরা মেয়েরা এখনো সেই পর্যায়ে যেতে পারিনি। এখনো ইউনিভার্সিটি তে পড়াশুনা করার জন্য আমাদের পরিবার থেকে রাজি হয়না, মেয়েদের পড়াশুনার চেয়ে বিয়ে দিয়ে দেয়াটা অনেক বেশী বুদ্ধিমানের কাজ মনে হয় পরিবারের কাছে। তারপর অনেক কষ্ট করে, অনেক অমতের পরে যখন একটা মেয়ে পড়াশুনা করে তখন আবার তার স্বামী অথবা তার পরিবার মেয়েটাকে চাকরী করতে দেয়না।

আমার কাছে মনে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না এই পুরুস্তান্ত্রিক সমাজের পুরুষগুলার মনের কোন পরিবর্তন হবে, ততক্ষন পর্যন্ত আমরা মেয়েরা যতই সচেতন হইনা আমাদের অধিকার নিয়ে, কিছুই হবেনা ! তারপরেও আমরা মেয়েরা অনেক সচেতন হয়েছি এখন আগের থেকে। এখন আমাদের মনেও অনেক স্বপ্ন। মনে অনেক আশা নিয়ে আছি দেখার জন্য যে ভবিষ্যতে কি হয় আমাদের সপ্নের !!!

ইভা এর ছবি

অনেক কিছুই বদলেছে এবং অনেক কিছুই বদলে যাবার অপেক্ষায় । বেগম রোকেয়ার মত কেউ একদিন যাত্রা শুরু করেছিলেন বলে আজকে আমরা পথ পেয়েছি হাটবার । অনেক সত্যি কথা বলে তসলিমা নাসরিনকে আজীবনের জন্য জন্মভুমি ছাড়তে হয়েছে । তসলিমা নাসরিন কিন্তু জিতে গেছেন কেননা তার কথা গুলি খুব বেশী সত্যি ছিলো । আমরা এখনো অনেক কিছুর দাসত্ব করি যেমন পুরোন মানসিকতার সামাজিক অবকাঠামোর । দাসত্ব করি ধর্মের । ধর্মিয় বিশ্বাস আমাদের এমনই অন্ধ করে দেয় যে আমাদের কাছে যুক্তির কোন মুল্যই থাকেনা । তবে আশা করা যায় খুব কাছের ভবিষ্যতে পৃথিবীতে এসব অন্ধ ধর্ম বিশ্বাস এবং গোড়ামি থাকবেনা ইতিমধ্যে অনেক মানুষের মাঝে থেকেই সেটা চলে গেছে । আমি সেই গোড়া লোকগুলির কথা বাদ দিয়ে গেছি কেননা তাদের কথা আগেই বলা হয়ে গেছে এবং মানুষ জানে সেটা ঠিক না । কিন্তু আধুনিক মানুষদের মাঝেও তাদের নিজেদের অজান্তে মেয়েদেরকে হেয় করবার ব্যাপারটা রয়ে গেছে । আমি যখন ইয়্যুনিভার্সিটিতে পড়ি আমার মনে আছে আমার ক্লাসমেট ছেলেদের অনেকেই আমাকে বলতো তোর এত পড়ালেখার চিন্তা করে কি হবে তুই তো কার ঘাড়ে আরাম করে বসে খাবি । কথাটা বন্ধুর হাসিচ্ছলে বলা হলেও আমার কাছে খুব অপমানের মনে হত । যেন আমার জন্ম হয়েছে আজীবন অন্যের পরিচয়ে পরিচিত হতে । আমি কিছু করতে পারি বা করা উচিৎ এটা যেন বিশ্বাস করা যায়না । আমি ২০০০ সালের পরের মানুষদের কথা বলছি কিন্তু । আবার মেয়েদেরও কিছু ব্যপার আছে যে তারা মেয়ে বলে সুবিধাও নিতে চাইবে আবার সম অধিকারের কথাও বলবে । সমঅধিকার মানে কিন্তু সমান সুবিধা পাওয়াও। মেয়েরা আবার মেয়ে দিবস বলে একটি দিন ঘোষনা করেছে । আমার কাছে বিষয়টা খুব অপমান জনক এবং যুক্তিহিন মনে হয় । বিশ্ব শিশু এবং নারী দিবস আছে কিন্তু বাকি ৩৬৫ দিনের ৩৬৪ দিন কি তবে পুরুষদের দিন? মেয়েরাও অনেকে নিজেকে মানুষ ভাবতে শেখেনি এখনো । এসব দিবস আর স্লোগান না নিজের নিজের জীবন কে পুর্নাঙ্গ করতে পারলেই মুক্তি মিলবে । নিজের অধিকার আদায় করতে সমপর্যায়ে যাবার যোগ্যতাও থাকতে হবে । এই যে আপনি রুমা এসে আমার পাশে দাড়ালেন এমন কয়টা মেয়ে দাঁড়াবে? বেশির ভাগ মেয়েরাই আসবেনা কেননা তারা নির্ভর করতে ভালবাসে আবার অধিকারের কথাও বলে । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

শামীম এর ছবি

আজ থেকে ২০ বছর আগেও এনিমেল প্লানেট বা ডিসকভারি টাইপের চ্যানেল দেখার সুযোগ ছিল না। এখন এই চ্যানেলগুলো দেখে কিছু ব্যাপারে আরো অনেকগুলো দৃষ্টিকোন থেকে ভাবনাচিন্তা করার খোরাক জুটে যায়। এই নারী-পুরুষের ব্যাপারটাও সেরকম কিছু খোরাক পায়। সিংহ, বাঘ, গরিলা ইত্যাদি প্রজাতিগুলোতে পুরুষ প্রধান গোত্র দেখা যায়। আবার পিঁপড়া, মৌমাছি এরকম আরো কিছু প্রাণীতে নারী প্রধান। আবার কোনো কোনো প্রাণী হয়তো আছে যেখানে উভয়েই সমানভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়।

কিছুদিন আগে, সচলায়তনেই আরেকটা পোস্টে (শিশুমানব-কৌস্তভ) এই বিষয়টার বিবর্তনের ধারাটা উঠে এসেছিলো দারুন ভাবে। এরকম আরও অনেক চিন্তাসূত্র আছে - যা থেকে অনেক সময় এই পরিনতি আবশ্যম্ভাবী মনে হয়। কিন্তু এদিকে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে বেশ দ্রুতই মানুষের জীবনধারায় অনেকগুলো পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে নারী-পুরুষের সম্পর্ক/নির্ভরশীলতা আরেকটা অন্যরকম ইকুইলিব্রিয়ামে গিয়েও কিছুটা সময় থেমে থাকতে পারে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইভা এর ছবি

বিবর্তনের ধারায় মানুষের মত উন্নত প্রাণীর আবির্ভাব । প্রাণী কুলে মানুষ সবচাইতে বুদ্ধিমান তারা নিজেদের কে পশুত্ত্ব থেকে মুক্ত করে ফেলেছে অনেক আগে । মানুষ আর অন্য প্রানীর পার্থক্য মানুষ টেনেছে অনেক আগে । প্রাণী কুলের পুরুষ প্রধান বা স্ত্রী প্রধান ব্যপার গুলি এক যায়গায় স্থির যেমন সিংহ, গরিলা্‌, বাঘ এদের সৃষ্টী কাল থেকে কর্মকাণ্ড এক যায়গায় বেধে আছে আবার মৌমাছির বেলাতেও তাই । মৌমাছিদের মৌচাক গড়া থেকে শুরু করে খাবার সংগ্রহ সব একই রকম ভাবেই চলে আসছে কিন্তু মানুষের বেলায় কি তাই? আদীম কাল থেকে মানুষ তার জীবন প্রনালী কত ভাবে বদলেছে । কেননা মানুষ এক মাত্র প্রাণী যার খাবার আর বংশ বিস্তারের বাইরেও মানসিক চাহিদা বলে একটা ব্যপার আছে । এজন্যই মানুষ সৃষ্টি করে চলেছে নানা কিছু আর জয় করে চলেছে একের পর এক অজানা । সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের অনেক কিছু ।

ফাহিম হাসান এর ছবি

প্রাণী কুলের পুরুষ প্রধান বা স্ত্রী প্রধান ব্যপার গুলি এক যায়গায় স্থির যেমন সিংহ, গরিলা্‌, বাঘ এদের সৃষ্টী কাল থেকে কর্মকাণ্ড এক যায়গায় বেধে আছে আবার মৌমাছির বেলাতেও তাই

অ্যানালজিটা ঠিক বুঝলাম না।

কেননা মানুষ এক মাত্র প্রাণী যার খাবার আর বংশ বিস্তারের বাইরেও মানসিক চাহিদা বলে একটা ব্যপার আছে ।

মানসিক চাহিদা অন্যান্য পশু-পাখিদেরও আছে। হাতি, শিম্পাঞ্জিরা রীতিমত সামাজিক এবং তাদের মানসিক বিকাশ নিয়ে প্রচুর গবেষণা আছে। শুরু জন্য জেন গুডালের Through a Window: 30 years observing the Gombe chimpanzees বইটা পড়ে দেখতে পারেন।

ইভা এর ছবি

প্রাণী কুলের পুরুষ প্রধান বা স্ত্রী প্রধান ব্যপার গুলি এক যায়গায় স্থির যেমন সিংহ, গরিলা্‌, বাঘ এদের সৃষ্টী কাল থেকে কর্মকাণ্ড এক যায়গায় বেধে আছে আবার মৌমাছির বেলাতেও তাই
বোঝাতে চেয়েছি পুরুষ প্রধান প্রানী সিংহ গরিলা বা বাঘ এরা আগে যা খেত এখনো তাই খায় এখন একই ভাবে ঘুমায় এবং বংশ বিস্তার করে যা মানুষের বেলায় অন্য রকম আগে মানুষ কাচা মাংস খেত এখন না না উপায়ে রান্না করে খায় গাছের নিচে ,গুহায় বসবাস করা মানুষ এখন দালান বানিয়ে থাকে এবং মানুষ লেখাপড়া করে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করে মানুষের সভ্যতায় অন্ধকার যুগ থেকে আলোর যুগে যাবার ব্যাপার দেখা যায় যা পশুদের মধ্যে নেই । মেয়েরা এক কালে লেখা পড়া করেনি এখন করছে বাইরে কাজ করেনি এখন করছে এসব পশুদের বেলায় এক যায়গায় ঠেকে আছে কোন পরিবর্তন দেখা যায়না ।
মানসিক চাহিদা অন্য পশুদের থাকলেও মানুষের মত করে নেই যততা আমি জানি । প্রসঙ্গে থাকবার উদ্দেশ্যে এবং খুব বেশি ইন্টারেস্ট পশুদের নিয়ে এই মুহুর্তে না থাকায় আপনার বইটি পড়তে পারছিনা বলে দুঃখিত । তবে আপনার বইটিতে মানসিক চাহিদা মেটাতে শিম্পাঞ্জিরা যদি মানুষের মত কিছু আবিষ্কার (যেমন টিভি, কম্পিউটার) করেছে এমন প্রমান থেকে থাকে তাহলে বলবেন খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার তাহলে , আমি এখনো বিষয়টি জানিই না তাহলে আমার জ্ঞানের লিমিটেশানস আছে এবং তা বাড়াতে বইটি খুঁজে পড়তে আমি কার্পন্য করবোনা । বিবর্তনের প্রসঙ্গটা খুব ইন্টারেস্টিং কিন্তু আমার লেখার সঙ্গে জড়াবার মত মনে করছিনা কেননা যে যায়গায় এসে বিবর্তনের ধারায় মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এবং নানা রকম developmet এ এই পর্যায়ের মানুষ আমি সেই বিষয়ে না বরং এই সময়টার ভিত্তিতে কথা বলছি । বিবর্তনের ধারায় আসা মানুষ এবং কি করে তারা পুরুষ লিঙ্গের মানুষের ইচ্ছায় চালিত সেই প্রসঙ্গে নয় ।
ধন্যবাদ

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমার কথাগুলো অনেকটা জ্ঞান দেওয়ার মত শোনাবে বলে দুঃখিত কিন্তু আপনার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রকৃতি থেকে যে উদাহরণগুলো টানছেন সেগুলো সম্পূর্ণ সঠিক নয়।

বোঝাতে চেয়েছি পুরুষ প্রধান প্রানী সিংহ গরিলা বা বাঘ এরা আগে যা খেত এখনো তাই খায় এখন একই ভাবে ঘুমায় এবং বংশ বিস্তার করে

প্রথম কথা হল - ব্যাপারটা তা না। সময়ের এবং পরিবেশের সাথে পশুদের খাদ্যাভাসে বিরাট পরিবর্তন আসে, এসেছে। এরা মোটেই একই ভাবে খায়, ঘুমায় না। মানুষকে বুদ্ধিমত্তার শীর্ষে উঠাতে এরকম ঢালাও স্টেইটমেন্ট আরো বিপদজনক। মানুষ অবশ্যই অন্য প্রাণীর চেয়ে বুদ্ধিমান, কিন্তু তার মানে এই না যে মানুষই একমাত্র প্রাণী যার দৈহিক ও সামাজিক ডেভেলপমেন্ট হয় - অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এই কথা খাটে।

সিংহ আবার পুরুষ প্রধান হল কবে থেকে? লায়ন প্রাইডে সিংহী শিকার করে, খাওয়ায়, বাচ্চার দেখভাল করে। মাউন্টেন গরিলা পুরুষ প্রধান কিন্তু বোনোবো মাতৃতান্ত্রিক।

এই সোশাল কম্পোজিসান বা রোল প্লেয়িং ও যে একদম এক জায়গায় স্থির তা না। এশিয়াটিক লায়ন (Panthera leo persica) প্রাইডে সিংহী - সিংহের দায়িত্ব বিভাজন এর সাথে কেনিয়ার Panthera leo nubica এর বেশ পার্থক্য আছে।

আমার মূল কথা হল - আপনার বক্তব্যের প্রয়োজনে যে উদাহরণ দিচ্ছেন সেগুলো আরেকটু যাচাই করে দিন। না হলে যুক্তিটা দুর্বল শোনায়।

---
আমি কিন্তু বিবর্তনের উল্লেখ করছি না (যদিও তা প্রাসঙ্গিক), শুধু ফ্যাক্টটুকু বলছি।

আমি এখনো বিষয়টি জানিই না তাহলে আমার জ্ঞানের লিমিটেশানস আছে এবং তা বাড়াতে বইটি খুঁজে পড়তে আমি কার্পন্য করবোনা

চলুক

ইভা এর ছবি

এই বিষয়টি নিয়ে আমি বক্তব্য বাড়াতে চাইনা কারন আমার মুল লেখার বিষয় এটা নয় আমি শামিম সাহেবে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে লিখেছিলাম সেখানে আপনি ডুকেছেন । আগেই বলেছি আমার জ্ঞান প্রানীকুলের ডেভলপমেণ্ট নিয়ে কম যা বোঝাতে চেয়েছি তার সার কথা মানুষ সবচাইতে উন্নত বুদ্ধি সম্পন্ন প্রানী বলে নিজেরা দাবী করে এবং তার স্বপক্ষে অনেক যুক্তি আছে । আমি বলিনি বাঘ সিংহ বা গড়িলার পুরুষ প্রধান হবার কথা শামিম সাহেবের থেকে বলেছি ।
বির্তন বাদ প্রাসঙ্গিক আমার লেখার সাথে? কি ভাবে আর কেন ব্যাক্ষ্যা করলে খুশি হব। তবে বলতে চাই বিবর্তনের ধারায় মানুষ যদি পুরুষ প্রধান হয়ে থাকে এবং পুরুষের সুবিধা চাহিদাকে কেন্দ্র করে সমজ অইনের সৃষ্টি হয়ে থাকে এই সময়ের প্রেক্ষিতে সেটা মানুষের চোখে অসমতা এবং প্রানী অধিকারে তা কি হতে পারে আমি জানিনা কিন্ত মানবাধিকারে এই অসমতা ভয়াবহ এবং মেনে নেবার মত না । আদিম কালে মানুষ সবল দুর্বল কে মেরে বেচে থাকতো এবং মানব সভ্যতার সেই দিন বদলে আজকে অনেক নিয়ম আইন মানুষ করে নিয়েছে । যার গায়ের শক্তি বেশী সে চাইলেই অন্যের খাবার বা সঙ্গিকে ছিনিয়ে নিতে পারেনা । মানুষ নিজেদের সুবিধার জন্যই এমন আইন করেছে তাতে দুর্বল সবল সবার অধিকার বজায় থাকে ।
"এই সোশাল কম্পোজিসান বা রোল প্লেয়িং ও যে একদম এক জায়গায় স্থির তা না। এশিয়াটিক লায়ন (Panthera leo persica) প্রাইডে সিংহী - সিংহের দায়িত্ব বিভাজন এর সাথে কেনিয়ার Panthera leo nubica এর বেশ পার্থক্য আছে। "
তথ্যের জন্য ধন্যবাদ

শামীম এর ছবি

আমি সম্ভবত ঠিকভাবে বুঝাতে পারি নাই। আপনার এই বক্তব্য আর আমার মন্তব্যের শেষ অংশটুকু আসলে একই।

ঘরে থেকেও এখন বাইরে যাওয়ার থেকে অধিক কাজ করা সম্ভব, অধিক তথ্য পাওয়া সম্ভব (মোবাইল ফোন, টিভি চ্যানেল, ইন্টারনেট ইত্যাদি)। ফলে সন্তান ধারণ এবং এ সংক্রান্ত কারণে অপেক্ষাকৃত ছোট সীমানার মধ্যে ঘোরাফেরা সীমাবদ্ধ করার ব্যাপারটা আর আগের মত নাই। ফোন, টিভি, ইন্টারনেট ঘরে বসেই অনেক দুর পর্যন্ত বরং আরও সুন্দরভাবে বিচরণ করতে দেয়, ফলে অভিজ্ঞতা লাভের জন্য তাঁর জগৎটাও অনেক বড় থাকে। যদিও এই সুযোগটা সকলের জন্য সমানভাবে লভ্য নয়, তারপরেও এটার বিস্তার অনেকের জন্যই নারী-পুরুষের মধ্যের যে নির্ভরশীলতা এবং প্রভাব - সেটার ডাইনামিক্সকে প্রভাবিত করবে।
উদাহরণস্বরূপ: নারী যদি ঘরে বসেই আউটসোর্সিং করে আয় করে তাহলে সন্তান ধারণ করার সময়েও তাঁর ক্যারিয়ার আগের মত ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, কোন পুরুষের উপরেও অর্থনৈতিক (তথা আদিকালের খাদ্য সংগ্রহ) সাপোর্টের জন্য তাঁকে নির্ভরশীল হতে হবে না।

ফলে এই সম্পর্কের এবং নির্ভরশীলতার সাম্যাবস্থা পরিবর্তন হয়ে আপনি যা চাচ্ছেন সেদিকে চলে যাবে/যাচ্ছে। এই ইকুয়িলিব্রিয়াম বা সাম্যাবস্থা পরিবর্তনের কথাই বলেছিলাম।

যা হোক, সকলেই এক রকম নয় -- সমস্ত পুরুষও নয়, সমস্ত নারীও নয়: কাজেই ঢালাও ব্র্যান্ডিং না করাই মনে হয় শ্রেয়। আর শ্রেষ্ঠ জীব কিন্তু শিক্ষার প্রভাবে পরিশীলিত হয়। সঠিক শিক্ষার অভাবে শ্রেষ্ঠ জীব-ই শ্রেষ্ঠ মৌলবাদী হয়ে উঠতে পারে। কাজেই সমস্যা সমাধানের জন্য ফোকাস কোথায় সেট করতে হবে সেটাও বিবেচ্য হতে পারে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইভা এর ছবি

আপনার লেখা কথাগুলি খুব যুক্তি সঙ্গত শুধু মাত্র পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টি কোন থেকে মানবতান্ত্রিক দৃষ্টি থেকে অসমতা ।
ধরুন আপনার আর আমার পকেটে সমান টাকা আছে । আমি এবং আপনি রেষ্টুরেন্টে খেতে গেলাম দুপুরের খাবার আর আপনি ছেলে বলে আপনাকে একটা মেনু দেয়া হল যাতে ১০০ ধরনের আইটেম আছে আর আমি মেয়ে বলে যে মেনু দেয়া হল তাতে বরাদ্দ শুধু করলা ভাজি, করলা ভর্তা করলার ঝোল কেননা সেটা স্বাস্থ্য সম্যত । আপনার তেমন একটা লাগবেনা এটা শুনে কিন্তু ঐ ১০০ রকম খাবারের মেনুটা আমার হাতে আর করলার মেনুটা আপনার হাতে যখন পরবে আপনি তখন বুঝতে পারবেন যে অসমতা কাকে বলে । ঘরে মানুষের অনেক কাজ থাকে । ঘরে বসে জ্ঞান অর্জনের কথাটা যে বলেছেন সেটাও এই যুগে সম্বব তাই বলে জ্ঞান লাভের জন্য মানুষ স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেয়নি কেননা সেটা একটা ডিসিপ্লিন । বাচ্চা ধারন বা জন্ম দেয়া কোন বেরিয়ার নয় । সবার শারীরিক অবস্থা এক নয় এটা সত্যি কিন্তু গর্ভবতি হওয়া মানে অসুস্থ্য বা স্থবিরতা না । গর্ভবতী অবস্থায় সব ধরনের স্বাভাবিক কাজ করা যায় । আর বাচ্চা লালন পালন শুধু মাত্র মায়ের দায়িত্বের মধ্যে পরেনা সমান দায়িত্ব বাবার ও কেননা সেই বাচ্চার জন্মের কারন এবং সেই বাচ্চার অভিভাবকত্ব ২ টার হকদার বাবা । বাচ্চাকে বাথরুম করানো থেকে শুরু করে ঘুম পারনো খাওয়ান সব মা এর সাথে সাথে বাবার কর্তব্যের অংশ আর যারা এটা করেন বাচ্চাদের সঙ্গে তাদের মানসিক সম্পর্ক অনেক গাঢ় হয়। । আউটসোর্সিং এর কাজ করবার জগ্যতা এবং কাজ পাবার পথ সব ক্ষেত্রের মেয়েদের থাকবেনা কেননা এমন অনেক বিষয়ে আমরা লেখা পড়া করি যেখানে আউটসোর্সিং সম্ভব নয় । তাতে কাজের ক্ষেত্র লিমিটেড হয়ে যায় । আর ঘড় যখন অফিস সেটা না ঘড় থাকে না অফিস থাকে ২ টাতেই সময় এবং মন দেয়া জটিল আকার ধারন করে । আপনি যখন অফিসে যান আপনার অফিসের কাজের পাশা পাশি আপনাকে দুপুরের খাবার রান্না করে খেতে বলা হলে সেই রান্নার সাথে আনুসঙ্গিক কাজ গুলি যেমন তরকারি কাটা, বাসন ধোয়া্‌ মসলা তৈরি কতটা সময় লাগবার কথা ভেবেছেন? আপনি কাজ করবেন কখন? মাথায় আর একটা বারতি দায়িত্বর বোঝা থাকবে । ঘরে বসে এই কাজ করাটাও খুব সহজ এবং তাতে জীবন সহজ হয়ে যায় ব্যপারটা ঠিক না । আমি নিজে তার প্রমান । ঘরে বসে আমি চেয়েছিলাম এরকম কিছু করতে কাজ যোগার করতে আমার যে সময় ব্যয় হোতো সেই সময় ব্যয় করে তার চাইতে অনেক বেশী পয়সা আমি উপার্জন করতে পারি রেগুলার জব করে । ঘরে বসে টিভি দেখে আর কম্পিউটার ঘেটে আমার শুধু বাজে সময় নষ্টো হোত । মানুষের যখন অনেক অবসর থাকে বেশির ভাব মানুষ তা আরাম আয়েসে কাটাতে চায় । আপনি যেভাবে বলছে সেটা দাঁড়ায় আধুনিক ভাবে গৃহবন্দি হওয়া । জেলে গেলেও মানুষ পড়তে পারে। জেলখানাতে অনেক বই আছে । কেউ যদই খুব পড়ুয়া হয় তাহলে নিরলস পড়বার সুযোগ আর চার পাশের বদার কানে না তোলবার মত সেফ যায়গা সেটা তাই বলে কেউ চাইবে জেলে যেতে? ডিসকভারি চ্যানেলের মত চ্যানেলে বাস্তব জীবন শেখা যায়না তা মানুষকে বাইরে যেয়ে দেখে শিখতে হয় । টিভিতে সমুদ্র দেখা আর সমুদ্রের পারে দাঁড়ানো আকাশ পাতাল পার্থক্য । আপনার বিবর্তন বাদের জ্ঞান দেখে ধারনা করতে পারি আপনি শিক্ষিত একজন মানুষ । পড়াশোনা জানেন । আপনি বলেছেন শিক্ষার অভাবে জীব শ্রেষ্ট মৌলবাদী হতে পারে কথাটা খুব সত্যি । কিন্তু মৌলবাদ ব্যপারটা বিস্তর । সেটা শুধু ধর্মের ক্ষেত্রে না সবক্ষেত্রেই আছে । যেমন পুরুষ আর নারীতে যে বৈষম্য তাতেও মৌলবাদ এবং আধুনিকবাদ আছে । ব্র্যান্ডিং করতে না চাইলেও ব্রান্ড যে তৈরী হয়ে আছে । চারপাশে তাকালেই ব্র্যন্ডিং চোখে পরে । যেমন আপনিও মেয়েদের কে শুধু মেয়ে করে দেখতে চাইছেন বিধায় একটা যায়গায় আটকে দিতে চাইছেন এবং বুঝতেও পারছেন না সেটা কি ভয়াবহ তাহলে এমন কথা লিখতেন না বোধ করি । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই মানুষকে সব দেয়না এবং উদার হতে শেখায়না আমরা যারা স্বল্প দুই কলম জ্ঞান নিজের মধ্যে ঢোকাই তারাই নিজেদের কে স্রেষ্ঠ ভাবতে শুরু করি আর এই ভাবনা আমাদের কে জ্ঞান আহরন থেকে দূরে সরিয়ে দেয় কেননা আমরা বোধ করি যা জানি যে কার চাইতে তা বেশী । ছোট একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করি আমার এক বন্ধু সে এবং তার স্ত্রি দুজনেই পি এইচ ডি করছেন । কথা প্রসঙ্গে একদিন তিনি বলছেন " আমরা সবার সাথে মিশিনা, সম মনা লোকদের সাথে চলি, আমার যারা সার্কেল সবাই পি এইচ ডি করছে তারা ছাত্র , ফালতু লোকজন না।" কথাটা বেশির ভাগ মানুষের কাছে গ্রোহনযোগ্য বলেই হয়ত তিনি এমন কথা জনসম্মুখে বলেন । আমার কাছে গ্রোহন যোগ্য মনে হল না কারন বিবিধ মানুষ ভিন্নি ভিন্নি পেশা , বর্ণের, সমাজের , দেশের, জাতির মানুষ প্রত্যেকের কাছেই শিখবার অনেক কিছু থাকে এবং এক এক জন এক এক ভাবে জ্ঞানি । শিখবার শেষ নেই এবং কাউকেই ছোট করে দেখবার নেই । কে জানে কোথায় এমন শিক্ষা আছে যা আমার জীবনের সবচাইতে বড় শিক্ষা হয়ে দাঁড়ায় এবং আমাকে পরিপুর্ন করে।
ধন্যবাদ আপনাকে ।

শামীম এর ছবি

এখন পর্যন্ত পুরুষগণ নারীর প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া সন্তান উৎপাদন তথা বংশ বৃদ্ধি তথা নিজের অস্তিত্বকে আরেকটু প্রলম্বিত করার প্রচেষ্টা নিতে পারে না। প্রতিটা জীবই নিজের অস্তিত্বকে প্রলম্বিত করতে চায়, তাই সন্তান তথা বংশ বিস্তার করতে চায়। সন্তানের মধ্যে প্রাকৃতিক নিয়মে বাবা-মা দুজনেরই জীন থাকে সমান ভাবে। আমার কন্যাই আমার প্রলম্বিত অস্তিত্ব - এটা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং নিজেকে নিজের নতুন রূপের বেড়ে ওঠার রোমাঞ্চকর সময় থেকে বঞ্চিত করতে চাইনা বলেই ওর মা'র চেয়ে আমার সাথে কন্যার সময় কাটে বেশি --- সেটা ওর পটি পরিষ্কার, গোসল দেয়া থেকে শুরু করে খাওয়া, টিভি দেখা, ঘুমানো পর্যন্ত - ওর জন্মের পরমূহুর্ত থেকেই চলছে। তবে আমার পেশাগত সীমাবদ্ধতার কারণে আমাকে অন্য কাজগুলোতে সময় দিতে হয়।

আমার ধারণা, সকলেই আমার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে চিন্তা করেনা। এছাড়া সকলের (পুরুষদের) কর্মজীবনে ফ্লেক্সিবল টাইমিং-এর সুবিধা থাকেনা। তাই হয়তো সন্তানের প্রতি তাদের এপ্রোচ ভিন্ন। কেউ যদি অনুভব করতে পারে সন্তানই তাঁর নতুন অস্তিত্ব, তাহলে সন্তান ছেড়ে বহির্মূখী হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। তবে মা যেহেতু প্রথম পর্যায়ে সন্তানকে নিজের শরীরে ধারণ করেন, তাই সন্তানের প্রতি তাঁর অনুভুতি গাঢ় হওয়াই স্বাভাবিক বলে মনে করি, আর তাই অবুঝ কিংবা কম বুঝদার পার্টনার সন্তান ফেলে শুধু ক্যারিয়ারের পেছনে লাগলেও মা সেটা পারেন না। --- কাজেই ঘরে থাকা আর সন্তানের জন্য রান্না বান্না করাকে আমি মেয়েদের দূর্বলতা ভাবি না, বরং ভাবি বেশি জ্ঞানময় চয়েস। যদি সন্তান না থাকে কিংবা সন্তানের বাবাও একই রকম জ্ঞানময় হন + স্ত্রীও বাইরের পেশায় সমান দক্ষ হন তাহলে বাইরে কাজ করা আর ঘরে কাজ করা দুটোই সমভাবে করা যেতে পারে।

অনেকের কাছেই ছেলে সন্তান বেশি আদরনীয়। শুধু মেন্ডেলের সূত্র পড়লেই হবে না, যতক্ষণ না একজন বুঝতে পারছেন মেয়ে সন্তান আর ছেলে সন্তান উভয়েই সমভাবে বাবা-মার জীন ধারণ/বহন করে ততদিন সমাজে এই রকম চলতে থাকতে পারে। আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখছি যে বর্তমান যুগে মেয়ে সন্তানই সারা জীবনে বাবা-মার বেশি খেয়াল রাখেন।

এবার আসছি মেনুর কথায়: আপনি কিন্তু মেনু নির্ধারকের কথাটা সরাসরি বলেননি। মেনুটা যেহেতু পুরুষ দিচ্ছে বা নিয়ন্ত্রণ করছে তাই তার প্রজাতির চয়েজ বেশি। আপনি নিজে যদি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হন, তখন আমি জানিনা আপনার নারী কর্মচারীদের সন্তান-ধারণ জনিত অনুপস্থিতিকে কীভাবে নিবেন, কিন্তু একজন পুঁজিবাদী ব্যবসায়ী কিন্তু এটাকে লস হিসেবেই গণ্য করবে (ব্যবসায়ী ব্যক্তিটি নিজে যদি নারী হয় তবুও এমনই মনে করার কথা)। যে কর্মী বেশি আউটপুট দিবে তাকেই তো আগে রাখবে --- একজন নারী যদি বেশি আউটপুট দেয় তাহলে তিনিই আগে যাবেন -- অন্তত মালিক যদি বুদ্ধিমান হন তাহলে তা-ই করবেন।

এবার আসছি সন্তান ধারণ করা কোনো অসুখ নয় প্রসঙ্গে। নামটা জেনে রাখুন: Hyperemesis gravidarum - আমার স্ত্রীর ছিল; যদিও এটা আক্রান্ত সন্তান সম্ভবার শতকার হার ০.২% মাত্র। আমার নিজের অনাগত সন্তান ও সংসারের খাতিরেই আমাকে ঘরে/হাসপাতালে বেশি সময় দিয়ে দিনের পর দিন অফিসে লো-পারফর্মেন্স দিতে হয়েছে।

শেষ কথা হল, এই যে ক্যারিয়ার এর ইনকাম এটা কি শুধু আমি কেন্দ্রীক?? আমার বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছুর দরকার নাই, শুধু আমার জন্য করলে এজন্য আমার এ্যাত পরিশ্রম করারও দরকার নাই। আমি আমার অস্তিত্বকে প্রলম্বিত করতে চাই, তাই সন্তান পালন করি -- আসলে আমি আমাকেই পালন করি। একই কথা সন্তানের মা'র জন্যও প্রযোজ্য। মা যদি বাইরে কাজ করলে সেটা এই ব্যাপারটাকে আরো সুন্দরভাবে করে (say বাবার চেয়ে সব দিক দিয়েই মা'র প্রফেশনাল যোগ্যতা বেশি) তাহলে বাবা ঘরে সন্তানকে বেশি সময় দিবে, মা বাইরে বেশি সময় দিবে। আমি নিজেই আমার বউ-কে বলি, তুমি যদি একটা ভাল চাকুরী কর, তাহলে আমি আমার কাজ কমিয়ে দিয়ে মেয়ের দেখা শোনা করবো, রান্না-বান্না করবো, ঘর গুছাবো। (এই রকম ঘটনা আমার খুব কাছের জনের ক্ষেত্রেই ঘটেছে)। বিলিভ ইট, আমার বাসায় কন্যার সান্নিধ্যে থেকে খেলাধুলা করতে অফিসের চেয়ে অ-নে-ক বেশি ভাল লাগে।

কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হল প্রাকৃতিক কারণেই আগে থেকে মেয়েরা ঘর কেন্দ্রীক, ছেলেরা বাহির কেন্দ্রীক। আমি ছেলে বলেই আমাকে ছেলের ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে - আমার অন্যটি বেছে নেয়ার তেমন একটা সুযোগ নাই। আশায় আছি কয়েকদিন পরেই আমার স্ত্রী-র মাস্টার্সের ডিফেন্স শেষ হবে, ও চাকুরীতে ঢুকবে -- আর আমিও আমার রেগুলার অথবা পার্টটাইম যে কোন একটা কাজ ছেড়ে ঘরে থাকা এনজয় করবো। হাসি

বাই দা ওয়ে: আমার বাসায় রান্না বান্না তেমন হয় না। বিদেশে থাকাকালে একসময়ে আমিই রান্না করতাম -- কিন্তু বউয়ের সেসব মুখে রুচে না দেখে আমার চাকুরী নট করে দিয়েছে। ওর রান্নার নেক ভাল - এটা ওর ঘোর বিরোধীও স্বীকার করে।

যে যেই কাজ ভাল পারে এবং পছন্দ করে করে তার সেটা করার সুযোগ থাকা উচিত। আমার খুব পরিচিত এক দম্পতিকে দেখেছি, ভাই রান্নাবান্না করতে খুবই পছন্দ করেন, এবং নিয়মিত ভাবেই করেন; ভাবী নিজেই ভাইয়ের রান্নার ফ্যান। বিদেশে যখন ছিলাম, তখন ভাইকে রান্না করতে দেখতাম --- তাহলে ভাবী কী করতো? উনি সেলাই, ছবি আঁকা এবং ভাইয়ের ড্রাইভার চোখ টিপি । ভাই গাড়ি চালাতে পারতেন না, ভাবী ওনাকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতো বিভিন্ন জায়গায়। ওনাদের সন্তান থাকলে ডাইনামিক্সটা কেমন হত সেটাই ভাবি।

বর্তমান সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়ায় এই সেটাপটাই লাগসই মনে হয়। কিন্তু যদি অন্য ধরণের সেটাপ অথবা মডেল পাওয়া যায় তাহলে হয়তো অন্য ধরণের ব্যালান্স সহ সমাজ তৈরী হবে। অন্য ধরণের বলতে বুঝাচ্ছি ধরুন: সন্তান রাষ্ট্রের -- আগের রাশিয়ার মত; কিংবা ম্যাট্রিক্সের মত সন্তান হওয়ার জন্য মায়ের গর্ভের দরকারই নাই। এই কয়দিন আগেই স্টেম সেল নিয়ে একটা দূর্দান্ত আবিষ্কারের জন্য নোবেল পেলেন একজন। অদুর ভবিষ্যতে নিজের জীবন প্রলম্বিত করার তাগিদে নতুন সন্তানের জন্য বিপরীত লিঙ্গের পার্টনারের দরকার হবে না বলেই মনে হয় ... স্টেম সেল থেকে ডলির মত ক্লোন তৈরী করে ফেলবে হয়তো। অবশ্যই তখন এই সমাজব্যবস্থার মত সাম্যাবস্থা থাকবে না।

--
কে কার সাথে মিশবে সেটা তার চয়েস। পিএইচডির (PhD = পার্মানেন্টলি হেড ড্যামেজড) সাথে ফালতু না হওয়ার কোন সম্পর্ক নাই। এটা একটা গবেষণামূলক ডিগ্রী -- এই ডিগ্রীধারী সেই গবেষণারত বিষয়ে নিঃসন্দেহে প্রচুর লেখাপড়া করেছেন, কিন্তু তাই বলে জীবনের সব দিকেই তিনি সবজান্তা বা বেশি জানেন সেটা নয়, বরং এক দিকে বেশি মনযোগ দিতে গিয়ে অন্য দিকগুলো ঠন্ ঠন্ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি মনে হয়। সাধারণত আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা লোকজন কোন একটা দলে ভিড়ে "মুই কি হনুরে" ভাব নিতে চায়।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইভা এর ছবি

শামীম সাহেব আপনার এই লম্বা লেখার উত্তর দেবার জন্য যথেষ্ট সময় করে উঠতে পারছিনা আমার দের মাস বয়সের এক মাত্র সন্তানটির কারণে । আপনার লেখার এবং যুক্তির কোন কিছুই ফেলেদেবার মত না । আমি জানি ঠিক আমাদের এই সময়টাতে এসে ছেলেদের মানসিকতা অনেক বদলে গেছে । সংসারের কাজে মেয়েদের সাহায্য করা থেকে শুরু করে নানা ভাবেই মানসিক ভাবে মেয়েদের পাশে থাকাড় প্রবনতা বেড়েছে কিন্তু জানেন কি আমাদের চারপাশের এমন কি আমাদের খুব কাছের ভাই, বোন আত্নীয় সবার জীবনে বিষয় গুলি এক ভাবে আসেনা । সেই পরিস্থিতিটা এখনো তৈরী হয়নি । কালদের যখন রাইটস দেয়া হল তার পর থেকে তাদের কে কাজে কর্মে এবং লেখা পড়ায় উৎসাহিত করবার জন্য কোটা তৈরী হয়েছে । সরকারী খাতে তো বটেই বেসরকারী খাতেও । যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত মেয়েদের উৎসাহিত করতে বা কাজে লেখাপড়ায় অংশ গ্রহনের জন্য অভ্যস্ত করতে যদি কোটা তৈরী হয় তাতে প্রবনতা যেমন বাড়বে তেমন আনুসাঙ্গিক যেগুলিকে আমরা অন্তরায় মনে করি যেমন আপনি বলেছেন একজন সফল পুঁজিবাদি ব্যবসায়ীর কথা যে কেন একজন মেয়েকে কাজে নেবে যেখানে একজন পুরুষ বেশী আউটপুট দিতে পারে ।
বিষয়টা এভাবে ব্যক্ষা করি
সরকারকে আমরা ট্যক্স দেই । কেন দেই? দেই যে সেই দেশে আমরা থাকি আমাদের ভালো মন্দের অনেক কিছু সরকার দেখে । সামগ্রীক ভাবে একটা দেশের জনগোষ্ঠির দায়ীত্ব তার সরকারের এ জন্য । এবার বলি কেন একটা মেয়েকে আইন করে চাকরীতে ঢোকবার ৫০ ভাগ কোঠা দিতে হবে এবং সেই সাথে মেয়েরা গর্ভ ধারন কালিন এবং বাচ্চা জন্মের পরে রিকভারি টাইম ছুটি পাবার অধিকার রাখবে । এর মাঝের কিছু সময় তাকে বেতন দেয়া হবে । এবং বেতন ছাড়াও কিছু বার্তি সময় দরকার হলে তাকে দেয়া হবে । কারন আমাদের সব দেশ সব সমাজের জন্য সন্তান জন্ম দেয়া এবং বংশবিস্তার করা জরুরী । এমন এক সময় আসবে হয়তো মেয়েরা এই কাজ থেকে নিজেকে যখন সরিয়ে নেবে বা করতে চাইবেনা তখন মানুষকে বংশ বিস্তারের জন্য টেষ্ট টিউব বেবি বা ক্লোনিং সম্ভব হলে সেটা করাতে হবে আর সেই খরচের কথা বিবেচনা করতে গেলে মা কে গর্ভ কালীন ছুটী দেয়ার সাথে তুলনা করলে খরচের মাত্রা গভকালিন ছুটী এবং মালিকের লস যোগ করলেও ক্রিত্তিম ভাবে বেবী বানানো আর তার লালন পালন অনেক বেশী খরচের হবে । মানুষ যদি বুদ্ধিমান হয়ে থাকে তাহলে দেশের আইন তৈরী হবে এভাবে যে মেয়েরা যে কোন প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক সংখায় কাজ করবার সুযোগ পাবে প্রতিটা ক্ষেত্রে । এই কালচারটা শুরু হওয়া দরকার যে কর্মজীবি মা এবং তাদের পরিবার সবাই মিলে ব্যাপারটিকে সফল করে তোলা । আপনি যে বলছেন যে বেশী ইনকাম করবে সে চাকরি করবে এবং যে কম ইনকাম সে বাচ্চা দেখবে । এমন অনেক পরিবার আছে যাদের দুজনে কাজ না করলে স্বাধারন জীবন চালানোর মত অর্থ উপার্জন হয়না তাদের ক্ষেত্রে কি বলবেন ? তা ছাড়া মানুষ বাবা মা এর সংসারে যেভাবে চেয়ে নিতে পারে এটা দাও ওটা দাও আর তার জন্য জবাবদিহিতা করতে হয়না বা করলেও সেটাতে আত্ন্য সন্মানে লাগেনা কিন্তু স্বামী স্ত্রী তে এমন হয় । সহজেই আমার যে জিনিসটি প্রয়োজন বা শখ অথবা আমি কাউকে কিছু দিতে চাই সে ক্ষেত্রে প্রতিটা সময় এক জনের কাছে চেয়ে নিতে হবে আবার কখনোবা কি করবে এই প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে এমন কি আমি দুটাকা ভিক্ষাও তার কাছে থেকে চেয়ে দেব । একজন স্বামী যদি ঘরে বসে থাকে আর স্ত্রী চাকরি করে তখন স্বামীটিকেও প্রতিটা সময় পয়সা চেয়ে নিতে হবে স্ত্রীর কাছে থেকে যখন কিনা সে নিজেও ইনকাম করবার ক্ষমতা রাখে । আপনি হয়ত বলবেন আন্ডারস্ট্যন্ডিং ভালো থাকলে চাইতে দোষ কি? কিন্তু সবার ক্ষেত্রে সম্পর্ক গুলি এক রকম থাকনা । আবার খুব খারাপ দিনের জন্য প্রিপারেশান নেয়ার ও ব্যাপার আছে । কেউ চিরদিন থাকেনা । হঠাত কর্মক্ষম ব্যক্তিটি মারা গেল অথবা দুজনের মধ্যে ছাড়া ছাড়ি হয়ে গেলে কিম্বা কেউ অক্ষম হয়ে গেলেন সে সব খারাপ সময়ের জন্য যে সব পরিবারে একজন ইনকাম করবার মত মানুষ থাকে তারা খুব বেশী বিপদ এবং কখনো কখনো ভয়াবহ সমস্যায় পরে যায় । মেয়েরা বাইরে যখন কাজ করবে তখন বাচ্চা লালন পালন এর জন্য ভালো যায়গা লাগবে সে ক্ষেত্রেও ভাল ব্যবস্থা তৈরী করতে হবে কেননা বাচ্চা গুলি সমাজের, দেশের তাই তাদের নিরাপত্তা এবং সঠিক বেড়ে ওঠার দায়ীত্ব শুধু একা পরিবার বাবা মা এর নয় । মোট কথা মেয়েরা বাইরে বা ঘরে বসে কাজ করবে যেখানেই করুক কিন্তু কাজ করবে এবং যে যে বিষয়ে লেখা পড়া করেছে বা কাজ করতে পছন্দ করে তার সেই বিষয়ে কাজ করা উচিৎ এবং একটা মেয়ে হলে তার সেই অধিকারটা থাকা জরুরি । আমার নিজের একটা কাজিন আছে যে খুব ভালো ছাত্রী ছিলো পড়াশোনা করেছে খুব ভালো একটা বিষয়ে কিন্তু তার স্বামীর ইচ্ছা এবং জবরদস্তির কারণে তাকে একটা কেজি স্কুলে মাষ্টারি করতে হচ্ছে যে জিনিস্টা সে কনদিন হতে চায়নি । কেজি স্কুলের চাকরী এ জন্য যে সে দুপুর ১২টার পরে বাড়ী চলে যেতে পারবে । প্রথমটাতে তার স্বামী রাজীই ছিলেন না জব করবার ব্যপারে আর তখন সে বাড়িতে বসে শুধু বোর হোতো । আপনি ভবিষ্যতে কি হবে তার কথা বলেছেন হয়তো এমন হবে কিন্তু আমি আজকের কথা বলছি ঠিক এখন বা আর কিছু পরে অধিকার থাকবে এইটুকুই নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা । মেয়েরা কাজ করবে তাতে অভিভাবক বাবা, ভাই, স্বামী এদের সম্মতি লাগবে । আমি মোটেই অরাজকতায় বিশ্বাসি একজন মানুষ নই । আমি কি করব না করব অবশ্যই আমার পরিবারের সাথে আলোচনা করব কিন্তু তাই বলে সিদ্ধান্ত কেঊ আমাকে চাপিয়ে দেবে সেটা মানব কেন? নারীবাদি অনেক বড় মাপের মানুষদের অনেকে সন্তান ধারন করতে অসম্মতি জানিয়েছেন, বিয়ে করেন নাই, ভেবেছেন এসব তাকে মেয়ে করে দাসত্বের দিকে ঠেলে দেয়নযেমন সিমোন দ্য বোভয়ার । কিন্তু আমি আমার জরায়ু এবং ডিম্বাশয়ের অধিকারি হওয়াটাকে কোন অস্বাভাবিকতা মনে করিনা এবং নিজেকে একজন মানুষ ভাবতে আমার ভালো লাগে যে মানুষের লিঙ্গটি স্ত্রী যে মা হতে পারে । ঠিক যেমন করে একজন পুরুষ তার পুরুষ লিঙ্গ থাকাটাকে অস্বাভাবিক ভাবেনা । আমি আর একটা লেখা আরো একটু বড় করে গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করব, ইচ্ছে আছে । ধন্যবাদ আপনাকে সাথে থাকবার জন্য আর আলোচনা করবার জন্য ।

রংতুলি এর ছবি

আপনার মূল বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ একমত! এই যুগে এসেও নারী-পুরুষের ভেদাভেদটা আসলে সমাজের মজ্জাগত ব্যাধির মতো রয়েই গেছে। হয়তো এর ধরণ বদলেছে কিছুটা। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনো অনেক শিক্ষিত, আধুনিক পরিবারেই মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশু বেশি কাম্য, এখনো প্রতিটা মেয়েকে জন্ম থেকে শুরু করে -- পরিবার, স্কুল, খেলার মাঠ, স্বামীর ঘর, কর্মক্ষেত্রে অসংখ্যবার পদে পদে না বলা অথবা চেপে রাখা বৈষম্যের শিকার হতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার যোগ্যতা প্রাপ্তিকে হেয় করা হয় শুধুমাত্র মেয়ে বলে।

অনেক ক্ষেত্রে আবার মেয়ে হওয়ার দরুন আলাদা কোটা বা সুবিধা দেয়া হয়, সেটাও আমার কাছে সমান করুণা বা অপমানের সামিল। মেয়ে হয়ে জন্মানো মানে প্রকৃতিগত কোন অপূর্ণতা বা বিকলাঙ্গতা নিয়ে জন্মানো নয় যার জন্যে অতিরিক্ত সুযোগসুবিধা বা অ্যাটেনশন প্রয়োজন। যারা ভাবে মেধা, মনন, বুদ্ধিবৃত্তি, সৃজনশীলতায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে তাদের বরং আমার কাছে মানসিক বিকারগ্রস্ত মনে হয়, আর যদি কেবল শক্তির মাপকাঠিতে কোনো প্রাণীর শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করা হয়, তবে পুরুষের চেয়ে ঢের শক্তিশালী প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাদেরই বা বাদ দেই কেনো?

আমি আসলে কাউকেই ছোট করতে চাই না, যা বলতে চাই তা হলো - কবে মানুষ মানুষকে কেবলমাত্র মানুষ হিসেবেই গ্রহণ করতে শিখবে, নারী বা পুরুষ পরিচয়ে নয়! অসহায় লাগে ইন্ডিয়ার মতো অনেক দেশেই ধর্মীয় ও সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে মেয়ে ভ্রূণ হত্যার প্রবণতা ও মাত্রা দেখে!

ইভা এর ছবি

শক্তির মাপকাঠিতে কোনো প্রাণীর শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করা হয়, তবে পুরুষের চেয়ে ঢের শক্তিশালী প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাদেরই বা বাদ দেই কেনো? ভালো বলেছেন । আমি জানি এমন মানুষ অনেক আছেন যারা ব্যপারটা বুঝতে পারেন সহজেই । আমি যাদের কথা বলেছি তারাও কিন্তু বেশ বুঝদার লোক । মেয়েদের সম অধিকারে তারা বিশ্বাস করে কিন্তু কার্য্যক্ষেত্রে নিজের ঘরে নিজের অজান্তে বৈষম্য একে রাখে । বুঝেও ঠিক না বুঝার একটা ভান করেন । বর্বর শ্রেনীর চাইতে আধুক শ্রেনীর মানুষ বেশী ভয়াবহ কেননা তারা শারীরিক ভাবে নির্যাতন ঘৃনা করেন কিন্তু মানসিক ভাবে যে নির্যাতন হয় সেটা বুঝতে চান না বা বুঝলেও মানতে চান না । আজকাল যেসব মেয়ে ছেলেদের পাশা পাশি কাধে কাধ মিলিয়ে সব করছে খোঁজ নিয়ে দেখবেন পদে পদে মানসিক ভাবে কতটা বিপর্যস্ত তাকে হতে হয় । অনেক কথা অনেক পরিস্থিতি দাঁড়ায় যা ব্যাক্ষ্যা করা বা বোঝানো যায়না । কেননা যার সঙ্গে হয় তার বোধেই কাজ করেনা যে দুজন মানুষ আলাদা কিছু নয় শুধু শারীরিক গড়ন ছাড়া । ধন্যবাদ আপনাকে!

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আপনার দেখার চোখ ভাল।
লেখার ব্যাপারে সন্দেশ তো বলেই দিয়েছে।

তবে একটা কথা, বানানের দিকে একটু খেয়াল রাখুন, নাহলে অনেক ভাল লেখাও পড়তে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়।
যেমন,

মানষিকতা > মানসিকতা
সান্তি > শান্তি
ধর্মিয় > ধর্মীয়
ভাগ্যবতি > ভাগ্যবতী
সহকর্মি > সহকর্মী
স্বাধিনতা > স্বাধীনতা

আশা রাখি, সচলের পাতায় নিয়মিত আপনার লেখা পাব।
ভালো থাকবেন।

ইভা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান পরামর্শের জন্য । আমার ভুল বানানের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থি । ছোট বেলা থেকেই বাংলা বানান টা আমাকে খুব বেশী মাত্রায় ভোগায় কেননা আমি যত চেষ্টাই করেছি এই জিনিস গুলি মনে রাখতে পারিনা । আমার লিমিটেশান হচ্ছে আমার বানান লেখা । তবে বই দেখে ঠিক করে দিতে পারতাম সময় স্বল্পতার জন্য তা সম্ভব হয়নি । তার উপরে আমার লেখালেখিটাতে বড় একটা গ্যপ পরেছে । আপনার মত বানান শুধরে দেবার মত পাশে কেউ থাকলে জিজ্ঞাসা করে ঠিক করে নিতে পারতাম তাহলে খুব সহজ হত । আমি লিখবো কিন্ত সচল আমার লিমিটেশান্স মাথায় রেখে আমাকে সচল রাখতে পারলে আমি নিশ্চিত যে বিষয় বস্তু আমি ভালো সাপ্লাই দেব ।

অতিথি লেখক এর ছবি

বৈষম্যের ব্যাপারটা চিরাচরিত, বৈষম্যের শিকার হওয়া মেয়েরা যখন মা হবেন তখন যদি তারা সবাই নিজ সন্তানদের মাঝে ডবল স্ট্যান্ডার্ড পরিহার করেন তাহলে ধীরে ধীরে এটা কমবে। আমাদের স্কুলগুলোতে নৈতিকতা হয়ত শিক্ষা দেয়া হয়, কিন্তু মানবিকতা শিক্ষা দেয়া হয়না।

অনেকগুলো বানানে ভুল দেখলাম, আশা করি এরপর থেকে যত্ন নিবেন।

''দিবাকর''

ইভা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে কষ্ট করে আমার ভুল বানানের লেখা পড়ার জন্য । মা একা সন্তানের মানসিক বেড়ে ওঠা কন্ট্রোল করেন না । মা যত চেষ্টাই করুক যে সন্তান তার বাবা কে এসব চর্চা করতে দেখবে সে কিছুটা হলেও তা নিজের মধ্যে নেবে আর এ কারনেই আমরা অনেক পিছিয়ে আছি এবং থাকব । বাবা এবং আশে পাশের পরিবেশ থেকে বাচ্চারা অনেক কিছু শেখে । যে পরিবারে কোন স্বামী তার স্ত্রীকে সঠিক সন্মান দেন না সেই পরিবারের সন্তানরাও মা কে বা মেয়েদের কে সঠিক সন্মান দিতে শেখেনা । তাদের ধারনা জন্মায় মা মানে দুর্বল শ্রেনির প্রানী বিশেষ, বোন মানে তার চাইতে অধিকারে কিছুটা পিছিয়ে থাকা কেউ এবং এক সময় বিয়ে করে স্ত্রী কে নিজের অধিনস্ত বাধ্য কেউ ট্রিট করতে শুরু করে । আমি খেয়াল করে দেখেছি যেসব ছেলেদের মাঝে এই ব্যপার গুলি থাকে তাদের বাবাদের বেশির ভাগ বাবারাই তাদের মা দের (স্ত্রী) কে খুব একটা সন্মান করেন না বা হেয় করে দেখেন ।

সাবেকা  এর ছবি

লেখাটা খানিকটা অগোছালো মনে হলেও আপনার ব্যক্তব্য বুঝতে আমার একটুও অসুবিধা হয় নি । আশা করি আরো লিখবেন চলুক

ইভা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আমার লেখাটিকে ঠিক আমি যেমন করে ভেবেছি তেমন করে বুঝে নেবার জন্য। আমার লেখাটা স্বার্থক ।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা সম্পর্কে ওপরে অনেকেই বলেছেন। একমত এই বিষয়ে যে, যত্ন দাবী করে এই প্রসঙ্গটি।লেখার মূল বিষয় স্পষ্ট এবং যৌক্তিক কারণেই সহমত পোষণ করছি। আশা করি সামনে লেখা পাবো আরো গোছানোভাবে। আসলে পুরুষতন্ত্রই ধর্ম এবং আইন যা আদি থেকে আজ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে আসছে। এ কারণে ধর্ম, রাষ্ট্রিয় আইন বা সামাজিক নৈতিকতার ভিতরে এর বাইরে কিছু খুঁজলে তা বোকামি ছাড়া কিছু না। অধিকারের ধর্মই হচ্ছে আদায় করে নিতে হয়। তাই আদায়ের প্রশ্নটা জরুরী। এখানে শ্রেনী প্রসঙ্গটাও জরুরী (এ বিষয়টাও দীর্ঘ আলোচনার দাবী রাখে)। যতদিন নারী নিজে তার শ্রেনীকে চিহ্নিত করতে না পারছে ততদিন পুরুষের বদান্যতার উপর, রুচির উপর, নৈতিকতার উপর অভিমান মিশ্রিত ক্ষোভ ঝেড়ে লাভ নেই। জায়গাটা নারীকেই রি করে নিতে হবে। ওখানে দু একজন পুরুষ পাশে থাকতে পারেন, নাও থাকতে পারেন। কিন্তু যুদ্ধটা পুরুষের না, বরং তার বিপরীতে।
ধন্যবাদ এরকম একটি বিষয়ে কথা বলার জন্যে।

স্বয়ম

ইভা এর ছবি

যুদ্ধটা মানব সভ্যতার মানুষের ! যারা নিজেকে শুধু নারী বা পুরুষ ভেবে আলাদা চোখে দেখেন আলাদা অধিকারের কথা বলেন সুবিধা নিতে চান তাদের বিরুদ্ধে । আমি কোন পুরুষকে করুনা করবার জন্য পাশে থাকবার কথা বলছিনা কারণ করুনার প্রয়োজন নেই আমি বলছি সচেতন মানুষদেরকে পাশে দাড়াতে যারা এই বৈষম্যটি বোঝেন যে কিছু মানুষের অধিকার ক্ষুন্য হচ্ছে । কথা সব মানুষ বলুক যাতে করে সম বন্টনের আইন তৈ্রী হয় এবং সেই আইন পালন হয় ঠিক মত । ঘরে ঘরে সচেতনতা তৈ্রী হোক যাতে করে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি না হয় । যাতে করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারি এবং মানব সভ্যতাকে আরও দূরে নিয়ে যেতে পারি । এই মানুষ গুলি (মেয়েরা) যেন মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ্য জীবন পায় অধিকার পায় এবংএকজন মানুষ ভাবতে পারে নিজেকে তাতে করে তারাও অবদান রাখতে পারে আমাদের সভ্যতার বিকাশে । আমি বলি আপনি ও বলেন তাতে করে যে লোকটি এমন করে সে বুঝতে পারে কাজটি ভুল কাজ এবং নিজেকে শুধরে নিতে পারে । সভাব বসতঃ বা পরিবারে চলে আসছে এই দেখে বড় হওয়া মানুষের হয়তো উপলব্ধি হয়না যে কাজটি ভুল কিন্তু আলোচনা হলে একজন শিক্ষিত মানুষ মাত্রই হয়ত দ্বিতীয়বার ভেবে দেখবেন তার নিজের পরিবারের সাথে নিজের কর্মকান্ডের সাথে মিলিয়ে দেখতে চাইবেন তাই সবাইকেই বলতে হবে । নতুন শতাব্দিতে মানষ অনেক নতুনত্ত্বের জোয়ারে ভাসবে তার মাঝে সকল মানুষের সমান অধিকার হবে মুখ্য এটাই কি আমাদের কাম্য নয় এই গ্লোবালাইজেশানের যুগে?
ধন্যবাদ আপনাকে ।

তাপস শর্মা এর ছবি

লেখার বক্তব্যটা স্পষ্ট হতে গিয়েও হল না নানা ত্রুটির কারণে

  • অসংখ্য কনফ্লিক্ট। যুক্তি দিতে গিয়ে অবস্থান ক্লিয়ার না হওয়া
  • সাবজেক্ট অনুযায়ী বিষয়গুলোকে আরও বেশী করে গভীরে গিয়ে আলোচনার অভাব
  • ভাষার সমস্যা
  • অসংখ্য বানান বিভ্রাট

০২

লেখার বক্তব্য নিয়ে কিছু না বলে 'The Second Sex' - Simone de Beauvoir ( 'দ্বিতীয় লিঙ্গ'- সিমোন দ্য বোভায়ার ) এর একটা অংশ কোট করলাম

''পুরুষের মুখে স্ত্রীলিঙ্গ কথাটি অবমাননাকর শোনায়, তবু পুরুষ তার পাশবিক স্বভাব সর্ম্পকে লজ্জিত হয় না; বরং কেউ যদি তার সম্পর্কে বলে: 'সে পুরুষ!' তখন সে গর্ববোধ করে। স্ত্রীলিঙ্গ শব্দটি অমর্যাদাকর, এ-কারণে নয় যে এটি জোর দেয় নারীর পাশবিকতার ওপর, বরং এজন্য যে এটি তাকে বন্দী ক'রে রাখে তার লিঙ্গের মধ্যে; আর এমনকি নিরীহ বোবা পশুর মধ্যেও লিঙ্গ ব্যাপারটি যে পুরুষের কাছে ঘৃণ্য ও ক্ষতিকর মনে হয়, তার মূলে আছে নারী, যে মানুষের মনে জাগিয়ে রাখে এক অস্বস্তিকর বৈরিতা।'' [ অনুবাদ- হুমায়ুন আজাদ ]

বদলে যাওয়া সময়ের কথা আমরা বলি ঠিকই। কিন্তু একবিংশ শতকের শূন্যের দশক পেরিয়েও আমাদের মানসিকতা কতটা বদলেছে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। আশেপাশে একটু চোখ রাখলেই নারীর হালচিত্রটা ভেসে উঠে তা বলে শেষ হবে না। ঘেন্না লাগে। সবটার জন্যেই যে পুরুষরাই একমাত্র দায়ী এমনটা নয় কিন্তু একেবারেই। এরমধ্যে নারীর নিস্পৃহতা অনেক অংশে দায়ী। দাবিয়ে রাখার মধ্যে নিজেকে দাবিয়ে রেখে দিতে দিতে নারী প্রতিবাদ করতেই ভুলে গেছে। অনেক অধিকার আদায় করে নিতে হয়। উনবিংশ শতকে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর মতো মানুষেরাই ( যদি বলেন পুরুষেরা ? ) নারীর জন্যে সমাজ সংস্কারে নেমেছিল। শরৎচন্দ্রের মতো লেখক তাঁর কলমে তুলে এনেছিল নারী নির্যাতন ও জাগরণের হালখাতা। .. এই সময়েও এ সোসাইটিতে অনেক পুরুষরাই নারীর অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেন। কিন্তু তার আগে নারীদেরই এই 'সেকেন্ড সেক্স' এর থট থেকে উপরে উঠে আসতে হবে। অধিকার কেউ দেয় না, কেড়ে নিতে হয় কিংবা ছিনিয়ে নিতে হয়

০৩

লেখার শুরুতে আপনি বলেছেন

আমি বেশ কবার কিছু ব্লগে লিখতে যেয়ে মানুষের রোষানলে পরেছি । একবার ভেবেছিলাম আর লিখবই না কিন্তু বার বার আমার মানুষ মনটা আমাকে তাগাদা দেয় কিছু বলতে । অবাক হই আমাদের সামাজিক কাঠামো থেকে শুরু করে বড় বড় লেখা পড়া জানা মানুষদের মাঝে ছেলে-মেয়ের মঝের যে চরম বৈষম্য টানা সেটা দেখে আর তখন ই আমার ইচ্ছে করে কিছু বলি ।

আপনি সচলায়তনে নির্দ্বিধায় নিজেকে প্রকাশ করুন। নিজের চিন্তাগুলিকে তুলে ধরুন। আপনার লেখা যদি ঠিক হয় তাহলে সচল আপনাকে নিরাশ করবে না। হয়তো সমালোচনা হবে, কিন্তু সেটা হবে বৈষয়িক। লেখার চেষ্টাকে স্বাগতম জানিয়ে গেলাম। হাত খুলে লিখতে থাকুন

ইভা এর ছবি

জ্বী জনাব শর্মা । প্রথমত আমি নিজেকে লেখক বলার ধৃষ্টতা করতে চাইনা ওটা আপনাদের মত গুনিজনদের জন্য থাক । সচলায়তনে বস্তুত পড়তেই এসেছিলাম কিন্তু যা হয় আর কি যে পাখি দেখে ঊড়তে ইচ্ছে করে কিন্তু আমি কি আর পাখি নাকি? আমি আমার কথা আর চারপাশে দেখা প্রসঙ্গ নিয়ে আমার মত করে বলতে চেয়ে্ছি । আপনার লেখার প্রথম অর্ধেক পড়ে আমার হাসি পেয়ে গেল । লেখাটি পোষ্ট করেছি পরথেকে শুরু করে ২/১ জন ছাড়া বাকি সবাই একই কথা নানা ভাবে বললেন । আমার মনে হচ্ছে আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি আর আমার ২য় সাময়ি পরীক্ষার খাতা দেখা শেষে সমাজ ক্লাসের মিস আমাকে ্টিচার্স কমন রুমে ডেকেছেন সাথে আছেন বাংলা স্যার । ভাই সত্যি ভয়াবহ ছিলো আমার জন্য আমার সাথের বাচ্চারা যখন পরীক্ষার আগের রাতে রিভিসান দেয় আমার বাবা মা আমাকে বানান প্রাকটিস করাতেন আর আমি কিছুতেই তা আয়ত্তে আনতে পারতাম না , খুব কষ্টে আমি পরীক্ষা দিতাম আর যথা রিতি পরীক্ষা শেষে টিচার রা ডেকে আপনারা যেমন বলছেন তেমন ধোলাই দিত আমাকে । আমার মত এমন বানান জ্ঞানহীন লেখকদের জন্য আপনারা একটা ব্যবস্থা নিতে পারেন যে রিভিউ করবার সময় আপনাদের সচলায়তনের মান রাখতে বানান গুলি একটু ঠিক করে দিলেন যেমনটা দেখেছি যখন খবরের কাগজে লেখা পাঠিয়েছি যেগুলি ছাপার যোগ্য ভেবেছেন তারা দেখেছি ছাপায় কি সুন্দর বানান ঠিক করে দিয়েছেন ।
হুমায়ুন আজাদের অনুবাদ করা বইটি পড়েছি কথা গুলি যদিও তার না তবুও অনুবাদটি খুব ভালো করেছেন এবং তিনি এমন একজন গুনি মানুষ বটে। ওনার লেখা অনেক বই আমি পড়েছি । ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল , পাকসার জামিন সাদ বাদ অস্বাধারন লেগেছে । তার সাথে আমার স্বাক্ষাতের কথাটা না বলে পারছিনা । আমি তখন মাত্র ক্লাস সেভেন এ পড়ি তখনও তাঁর লেখা কোন বই আমার পড়া হয়নি বা পড়বার কথাও না । মা এর সাথে বই মেলায় গিয়েছি আমি এবং আমার ভাই সঙ্গে আমার কাজিন কয়েকজন । হঠাৎ দেখি হুমায়ুন স্যার হেটে যাচ্ছেন একজনের সঙ্গে সামনে দিয়ে । আমি খুব ভালো করে না চিনলেও আমার কাজিন তাকে চেনে সে বলল এটা হুমায়ুন আজাদ অনেক বড় লেখক । আমি তাকে সালাম দিয়ে আটকালাম বললাম আমাকে কি একটা অটোগ্রাফ দেবেন? আমার আবার অটোগ্রাফ নেবার কোন খাতা ছিলোনা । উনি জিজ্ঞাসা করলেন কথায় নেবে? আমার হাতে হুমায়ুন আহমেদের একটা বই ছিলো সম্ভবতঃ ভুত ভৌতঃ ভুতং নাম আমি এগিয়ে দিয়ে বললাম এখানে দিন । উনি আমাকে বললেন এসব ফালতু বই এ আমি অটোগ্রাফ দেইনা এগুলি মানুষ কে কিচ্ছু শেখায় না । পরে খাতা নিয়ে আসবে অটোগ্রাফ নিতে এই বলে উনি চলে গেলেন । আমার আর কোনদিন ওনার কাছে থেকে অটোগ্রাফ নেয়া হয়নি কিন্তু খুব খারাপ মানসিকতার একটা ভয়ানক রকমের বাজে ব্যবহার কারি, অহংকারী মানুষ হিসেবে তিনি আমার কচি মনে স্থান করে নেন । তার প্রথম বই পড়েছি আমি কলেজে এসে । তার জন্য আমার এক বন্ধুর কাছে আমি খুব কৃতজ্ঞ। হুমায়ুন আজাদের ব্যক্তিত্ত্ব তখন আমাকে বদার করেনা আর ।
কথাটা এ কারণে লিখলাম যে হুমায়ুন আজাদ স্যরের কাছে যে বই খুব খারাপ আমি সেই লেখকের বই দিয়ে বড়দের বই পড়তে শিখেছি । এবং হুমায়ুন আহমেদ কে আমি সামনা সামনি দেখিনি কিন্তু এটা বলতে পারব যে তিনি এমন ছিলেন না, বা কোন স্বাধারন মানুষ বাচ্চাদের মনে কষ্ট দিয়ে কথা বলতে চায়না বা বলেনা এটা স্বাধারন ভদ্রতা যা হুমায়ুন স্যার পালন করতেন না । ভালো বা মন্দ দুটা দিক ই আছে এর । কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে , যার ব্যথা তার মত করে কেউ বুঝবেনা সেই বুঝ এক এক জনের এক এক রকম থাকে । আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ছেলে হলে আমার মানসিকতা টা কেমন হতে পারত? আমি কি মানুষ না হয়ে অন্য কিছু হয়ে যেতাম তবে? শরৎ বাবু বা রাজা রাম মোহন রায় সত্যের জন্য লড়াই কিরেছেন বা লিখেছেন তাই বলে করুনা করেন নাই মেয়েদের কে কোন । যা মিথ্যা আর অন্যয্য তা কনদিন টিকে থাকতে পারেনা বা টেকে না । অধিকার আদায়ের কথা বলেছেন? সেটা মেয়েরা প্রতিটা পা এ পা এ করে যাচ্ছইয়ে,আপনার পা টি ঐ রাস্তায় হাটেনা বিধায় আপনার বোঝার কথা না যে পারিপার্শিকতা কত খানি প্রভাব ফেলে । সারাক্ষণ নেগেটিভ আবর্তে পরে থাকার ঝক্ষি পোহাতে না হলে খুব সহজেই বলতে পারা যায় যুদ্ধের কথা অধিকার আদায়ের কথা । আপনি যা বলছেন তা আজকালকার সব মেয়েরাই কম বেশী করে যাচ্ছে । আর ঐ যে মেয়ে গুলি পারছেনা আমরা দুর্বল বলছি ধিক্কার দিচ্ছি ওদের মনটা আমাদের হুমায়ুন আজাদ স্যারের মত শক্ত হতে পারেনি যে বাচ্চাদের মনে আঘাত করে কথা বলতে পারবে । আর এই নরম মন গুলি আছে বলেই আপনাদের মা এত প্রিয় মানুষ বোন গুলি এত বেশী আপনাদের কে ফিল করে । অসুখে বিসুখে দুঃসময়ে আগে ঐ চেহারা গুলি ভাসে । ঐ মানুষ গুলির পারিপার্শিকতার প্রতি প্রচন্ড রকম বন্ডিং এর কারনেও মেয়েরা অনেক কিছু পারেনা । আর পারলে সেই মেয়েটার জীবন একাকিত্ত্ব বা কূৎসায় ভরে যায় । তসলিমা নাসরিনের মত অকুত ভয় একজন দুজন সেই দেশ ছেড়ে আপন জন ছেড়ে থাকার মত সৎ সাহস আর একাকিত্ত্ব মেনে নিলেও সবাই পারেনা, মেয়ে বা ছেলের অধিকার মানে তো সংঘাত করা বা যুদ্ধ না । ছেলেরা আমাকে অধিকার দেবেনা বলে আমার বাবা ,ভাই, স্বামী রাখবোনা একা হয়ে যাব এই কি তাহলে উপায় নাকি? একসাথে থেকে সবাই সবাইকে বুঝে চলা । সেখানে যুদ্ধ করতে হবে কেন অধিকারের জন্য? সামান্য ব্যাপারটা বুঝে নিতে এত কিসের সমস্যা ? আজকে আমি অধিকার চাইছি বাবার সম্পত্তির সমান অধিকার আর আমার বাবা যদি হন ধার্মিক একজন মানুষ উনি বনটন করবেন ধর্ম মতে আমি তাতে পাবো ৪ আনা আমার ভাই ৬ আনা। এখন অধিকার আদায়ের জন্য আমি কি করবো? আইন আমাকে হেল্প করতে পারছেনা তো আমি কি বাবার সাথে ভাই এর সাথে মারা মারি করে তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেব নাকি সেটা ঠিক হবে? এরকম অনেক ব্যপার আছে । যাই হোক দীর্ঘ বক্তিতা দিয়ে ফেললাম আপনার বানান ভুল সহ পড়তে বেশ ঝক্কি পোহাতে হবে এখন।
ধন্যবাদ!

তাপস শর্মা এর ছবি

এই নিন 'ঝক্কি পোহাতে' পোহাতে পড়েই ফেললাম। আমি আপনার মন্তব্য পড়ে আপনার মতো হাসলাম না কিন্তু। ঠিক আছে হাসি

প্রথমতঃ আমি আমার মন্তব্যে আপনার লেখার সমালোচনা করেছি। ব্যাক্তিগত নয়। আপনি সেটাকে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে ও লিঙ্গ বৈষম্যের চূড়ান্ত অবস্থানে ঠেলে নিয়ে গেছেন। সমালোচনা নিতেই পারলেন না; উপরন্তু নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ টেনে মূল পয়েন্ট থেকে দূরে ঠেলে নিয়ে গেছেন। আপনি লিখতে পারেন না সেটা আমার মন্তব্যে কোথায়ও ছিল না। এখানে কেউ বলেনি আপনি খারাপ লেখেন। বলা হয়েছে বিষয়ের দিক থেকে, ভাষার দিক থেকে, বানানের দিক থেকে আপনাকে সতর্ক হতে। এটাই তো কাম্য। তাই নয় কি?

দ্বিতীয়তঃ হুমায়ুন আজাদ এর লেখা কিংবা উনার আচরণগত দোষ ( আপনার মতে ) এবং হুমায়ূন আহমেদের লেখার গুণ নিয়ে কথা এখানে অপ্রাসঙ্গিক। সচলায়তনে এদের ভালো-মন্দ দিক নিয়ে অজস্ত্র আলোচনা হয়েছে। সেগুলি দেখতে পারেন। কিংবা এই দুই লেখককে নিয়ে আপনি একটা লেখা লিখুন, সেখানেই সেই আলোচনা করা যাবে

তৃতীয়তঃ আপনার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে আপনি পুরুষ মাত্রই একটা অবস্থান নিয়ে ফেলেছেন। তাই আমার কথা ও বক্তব্যকে কোর ভিও থেকে না নিয়ে আমাকে বানিয়ে দিয়েছেন পুরুষ এপোলজিস্ট। প্যাথেটিক

চতুর্থতঃ আপনি অবস্থান নিয়ে ফেলেছেন পুরুষ মাত্রই নারীর যাতনা বুঝেনা। এবং আপনি অধিকার আদায়ের লড়াইকে লিঙ্গ সংঘাত হিসেবে মেনে নিচ্ছেন। যা মোটেও ঠিক নয়

পঞ্চমতঃ ''সামান্য ব্যাপারটা বুঝে নিতে এত কিসের সমস্যা ?'' --- আছে। সমস্যাটা হল মানসিকতার। এটা একদিনে গড়ে উঠেনি। কয়েকশ বছর ধরে চলতে থাকা সমাজের পৈশাচিক বোধ এই যায়গায় ঠেলে দিয়েছে আমাদের। তাই যে 'কানা' চোখ খুলে পথ দেখেনা সেই যায়গায় ওদের পট্টিটা খুলেই দিতে হয়। এই যায়গাতেই অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই

ষষ্ঠতঃ আমি আপনাদের আইন নিয়ে খুব বেশী সচেতন নই। কারণ আমাদের ল ধর্মের দিক থেকে সম্পত্তির বা লিঙ্গ বৈষম্যের কথা বলেনা। তাই ব্যাপারটা জানিনা। আমাদের এখানে ল এবং সংবিধান নারী ও পুরুষ এর সমতার কথা বলে। এবং যেহেতু আপনাদেরটা এমন নয়, তাই সেটা আপনাদের আইন এর এবং সংবিধানের গলদ। সেই পরিবর্তনও আপনাদেরই আনতে হবে

০২

আপনার ভেতর একটা কাঁচা আবেগ আছে। লেখাতে, বক্তব্যে সেটা স্পষ্ট। এটা ধরে রাখেন, এবং কাজে লাগান সেটাকেই। আপনি ফ্রাস্টেটেড আছেন এই সমস্ত অসংগতি নিয়ে, সেটাকে কনভার্ট করুন নৈতিকতায়, দেখবেন হাল্কা লাগবে

০৩

বানান, ভাষায় আপনি দুর্বল। সেটা আপনি নিজের চেষ্টাতেই ঠিক করতে পারবেন। আপনার মাতৃভাষা যেহেতু বাংলা তাই এই সামান্য ত্রুটি শুধরে নিতে আপনার সমস্যা হবে না। একটা টিপস শুধু দিতে পারি - > আপনার আশেপাশের কাউকে দিয়ে লেখাটা প্রথমে পড়াবেন, তাহলে ত্রুটিগুলি চোখে পড়বে। -> অভ্রতে যদি লিখে থাকেন তাহলে অভ্র স্পেলচেকার এর অপশান আছে, এটা ব্যাবহার করলেও বানানের দিক থেকে প্রাথমিক অনেক ভুল শুধরে নিতে পারবেন। লেখার প্যারাগ্রাফগুলি দীর্ঘ করবেন না, গ্যাপ দিয়ে লিখুন

০৪

আপনার বক্তব্যকে আমি 'বক্তিতা' (বক্তৃতা ) হিসেবে নেই নি। কথা ও সংঘাত হিসেবেই নিলাম। নারীর কথাগুলি ওদেরই বলতে হবে। সচেতনতা ওদেরই তৈরি করতে হবে। আপনি লিখুন। যুক্তি দিয়ে লিখুন, বিশ্লেষণ করে লিখুন, গঠনগতভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথাগুলি লিখুন। দেখবেন সবাইকে পাশে পাবেন। মোদ্দা কথা হল - কথা বলুন, ফ্রাস্টেটেড হয়ে চুপ থাকলে আমার কোন ক্ষতি হবেনা; ক্ষতিটা আপনার/আপনাদের

ধুসর জলছবি এর ছবি

সমস্যাটা হল মানসিকতার। এটা একদিনে গড়ে উঠেনি। কয়েকশ বছর ধরে চলতে থাকা সমাজের পৈশাচিক বোধ এই যায়গায় ঠেলে দিয়েছে আমাদের। তাই যে 'কানা' চোখ খুলে পথ দেখেনা সেই যায়গায় ওদের পট্টিটা খুলেই দিতে হয়। এই যায়গাতেই অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই
নারীর কথাগুলি ওদেরই বলতে হবে। সচেতনতা ওদেরই তৈরি করতে হবে। আপনি লিখুন। যুক্তি দিয়ে লিখুন, বিশ্লেষণ করে লিখুন, গঠনগতভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথাগুলি লিখুন। দেখবেন সবাইকে পাশে পাবেন। মোদ্দা কথা হল - কথা বলুন, ফ্রাস্টেটেড হয়ে চুপ থাকলে আমার কোন ক্ষতি হবেনা; ক্ষতিটা আপনার/আপনাদের

সহমত। পড়তে পড়তে এ কথাগুলোই বলতে চাচ্ছিলাম।

ইভা এর ছবি

ক্ষতিটা মানব জাতির ! আমাদের আর আপনাদের বললে মাঝে একটা দেয়াল হয়ে যায় কথাটা মানুষের আর সেই মানুষ যতটা আপনি(পুরুষ) ততোটা আমিও (মেয়ে) । কথা সচেতন মানুষদের বলতে হবে যেমন করে বলে গেছেন রাজা রাম মোহন রায় , ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তারা নিজেদের পুরুষ নয় মানুষ ভেবেছেন তাই তারা মানুষের অধিকারের জন্য শুধু কথাই বলেন নাই লড়াই করেছেন । কালোদের যখন হেয় করে দেখা হতো সেই সমস্যা যদি শুধু কালোদের হতো তবে তাদের অধিকার পাবার কথা ছিলনা সেটা মানব জাতির সমস্যা হিসেবে যখন মানুষ বুঝেছে কালোদের কে অপশক্তি নয় মানুষ ভাবতে পেরেছে তখন তারা সম অধিকার পেয়েছে । মানুষকে নারী বা পুরুষ হিসেবে না মানুষ হিসেবে বুঝতে হবে এবং তখন ই অধিকার সমান হবার আশা করা যাবে ।
ধন্যবাদ আপনাকে এবং আপনিও মানুষ হিসেবে এই পথে পাশে থাকবেন আশা করি ।

ইভা এর ছবি

“প্রথমত: আমি আমার মন্তব্যে আপনার লেখার সমালোচনা করেছি। ব্যক্তিগত নয়। আপনি সেটাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও লিঙ্গ বৈষম্যের চূড়ান্ত অবস্থানে ঠেলে নিয়ে গেছেন। সমালোচনা নিতেই পারলেন না; উপরন্তু নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ টেনে মূল পয়েন্ট থেকে দূরে ঠেলে নিয়ে গেছেন। আপনি লিখতে পারেন না সেটা আমার মন্তব্যে কোথায়ও ছিল না। এখানে কেউ বলেনি আপনি খারাপ লেখেন। বলা হয়েছে বিষয়ের দিক থেকে, ভাষার দিক থেকে, বানানের দিক থেকে আপনাকে সতর্ক হতে। এটাই তো কাম্য। তাই নয় কি? "
আপনি যখন কথা গুলি আমার লেখা কে যা কিনা আমার সৃষ্টি তাকে নিয়ে বলছেন তখন তার সপক্ষে কথা বলা কি ব্যক্তিগত ভাবে নেয়া হয়ে যায়? আর সত্যি যদি ব্যক্তিগত ভাবে নিয়ে থাকি এমন প্রকাশ করে থাকে আমার লেখায় আমি তার জন্য দুঃখিত ,এভাবে প্রকাশের ইচ্ছে আমার ছিলনা । আমি একটু মজা করতে চেয়েছিলাম প্রথম অর্ধেক মন্তব্য নিয়ে । সমালোচনা নিতে পারিনি কথাটা মনে হয় ঠিক না কেননা আমার লেখার উদ্দেশ্যটা আলোচনা করা এবং দেখানো যে এই যায়গা গুলি ঠিক না । আমি নারীর অধিকার নয় মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছি যাদেরকে শুধু নারী হিসেবে দেখা হয় এবং আলাদা করে রাখা হয় । লিঙ্গের বৈষম্য আমার লেখায় না আমাদের চারপাশে আর সেটাই বলতে চেয়েছি আমি । বানান, ভাষা এবং গুছিয়ে লিখবার ব্যাপারে পরবর্তী লেখায় আমি চেষ্টা করব যেন পাঠকদের পড়তে সুবিধা হয় । স্বভাবতই আমি চাই আমার লেখার বিষয় বস্তু নিয়ে আলোচনা হোক আর আমি মনে হয়না পুরো পুরুষ জাতির উপরে হুমড়ি খেয়ে পরে আমার লেখাটা লিখেছি । আমি সেই সব মানুষদের মানসিকতার কথা লিখেছি যারা নিজেদের মানুষের চাইতে পুরুষ ভাবতে বেশি পছন্দ করেন এবং সেই পুরুষত্ব সব খানে দাখিল করতে জুলুম করে বেড়ান । আমার পাঠকদের মধ্যে পুরুষ লিঙ্গের পাঠকদের অনেকেই দায়ভার নিজেদের গায়ে মেখে নিয়ে ভাবেন আমি পুরো পুরুষ জাতিকে কথা বলছি । আপনি (পাঠক) যদি নিজেকে মানুষ ভাবেন এবং সুষ্ঠু অধিকার বণ্টনে বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে আমার লেখাটা আপনার উদ্দেশে আঙ্গুল তুলে করে নয় যারা এমনটা করে থাকেন তাদের কে উদ্দেশ্য করে ।
আপনার দ্বিতীয়তের মানে হুমায়ুন আজাদ কে নিয়ে আমি মেয়ে কথার আর একটা কিস্তি লিখবো আশা করি তাতে কি বুঝাতে কথা গুলি লিখেছি ব্যাক্ষ্যা করবো তাই এখন প্রসঙ্গটা ছেড়ে দিলাম ।
তৃতীয় এবং চতুর্থ কথাটা আপনি যে কারণে লিখেছেন সেটা ছিল আমি বলেছি আপনার পা ঐ রাস্তায় হাটেনা সম্ভবত এই প্রসঙ্গে এবং কথাটা যে সত্যি তা আপনি আপনার লেখাতেই বলেছেন "আমি আপনাদের আইন নিয়ে খুব বেশী সচেতন নই । কারণ আমাদের ল ধর্মের দিক থেকে সম্পত্তির বা লিঙ্গ বৈষম্যের কথা বলেনা । তাই ব্যাপারটা জানিনা । আমাদের এখানে ল এবং সংবিধান নারী ও পুরুষ এর সমতার কথা বলে । এবং যেহেতু আপনা-দেরটা এমন নয়, তাই সেটা আপনাদের আইন এর এবং সংবিধানের গলদ । সেই পরিবর্তনও আপনাদেরই আনতে হবে "
আপনাদের বলতে বাংলাদেশের মানুষদের বুঝিয়েছেন আশা করি । আর যদি তা না হয়ে নারীদের কে বলে থাকেন তাহলে আপনি নিজেও নিজেকে শুধু পুরুষ হিসেবে দেখেন বলে মনে হয় এই কোথায় । আর একটা কথা সেটা হল পৃথীবিতে এমন খুব কম দেশ আছে যেখানে সংবিধান এবং ল তে মেয়েদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে পারে । ল থাকলে ও তাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাবার মত নানা ফন্দিও আছে ধর্ম মত এবং ব্লা ব্লা অনেক কিছু । ভারতের কথাই ধরুন ল আছে কিন্তু কি তার ইমপ্লিমেন্টেশান কতটা তা কিছুদিন আগে আমির খানের একটা প্রোগ্রাম হয়েছিল তা দেখেই বোঝা যায় । ল থাকার সুবিধা আছে সত্যি কিন্তু সে পর্যন্ত যাবার সাধ্য এবং সুযোগ তা থেকে সুবিধা নেবার সামর্থ্য আর সময় কতজনের আছে?
লিঙ্গ সংঘাত হিসেবে আমি দেখিনি এবং কোথাও করতেও যাইনি লিঙ্গের সংঘাত কিন্তু মানুষ হিসেবে আমার অধিকারের যায়গায় আমি অনেক খানেই বঞ্চিত হয়েছি ।
আমার খুব ভালো লেগেছে আপনি একজন সচেতন সমালোচকের ভূমিকা নিয়েছেন আমার লেখার এবং যে সব যায়গা গুলি ধরিয়ে দিয়েছেন আমার জন্য তা খুব বড় মাপের উপকার । লেখা গুলি আপনার সাথে বা আপনার মত কার সাথে আলোচনা করে সাজাতে পারলে আমি খুব ভালো বোধ করতাম কিন্তু সেই সুযোগটি আমার নেই ।
আপনার ষষ্ঠত: পড়ে বুঝতে পারছি আপনি বাংলাদেশের নন । আমি নিজেও বাংলাদেশে থাকিনা । একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমার মনে হয় পৃথিবীর অধিকার বঞ্চিত মানুষের জন্য কথা বলা আমার দায়িত্ব এবং অন্য মানুষ যদি সেই ভাবে না ভেবে থাকে তাহলে সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার । আর একটা প্রসঙ্গের কথা বলি যে সারা বিশ্বেই কম এবং বেশী মাত্রায় লিঙ্গের বৈষম্যের শিকার মেয়েরা । আমেরিকার মত প্রথম বিশ্বেও ঠিক এই সময়ে এসে শুনলে অবাক হবেন এবং আমি জানিনা আপনি জানেন কি না যে এখানে সম পর্যায়ে এবং সম মর্যাদার পদে কাজ করা মেয়ে শিক্ষকের বেতন ছেলে শিক্ষকের চাইতে কম অনেক যায়গায় । আমি পরবর্তীতে আরও লিখব তথ্য এবং সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ম্যাটেরিয়ালস সহ ।
আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেবার জন্য ।

তিথীডোর এর ছবি

আমি শামিম সাহেবে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে লিখেছিলাম সেখানে আপনি ডুকেছেন

লেখাটি পোষ্ট করেছি পরথেকে শুরু করে ২/১ জন ছাড়া বাকি সবাই একই কথা নানা ভাবে বললেন। আমার মনে হচ্ছে আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি আর আমার ২য় সাময়ি পরীক্ষার খাতা দেখা শেষে সমাজ ক্লাসের মিস আমাকে ্টিচার্স কমন রুমে ডেকেছেন সাথে আছেন বাংলা স্যার।

লেখা নিয়ে মন্তব্য /মতামতের বিপরীতে এই ভাবে রূঢ় উত্তর দিলে/ পেলে তো মুশকিল!

আমি লিখবো কিন্ত সচল আমার লিমিটেশান্স মাথায় রেখে আমাকে সচল রাখতে পারলে আমি নিশ্চিত যে বিষয় বস্তু আমি ভালো সাপ্লাই দেব ।

কনফিডেন্ট ভঙ্গি। চলুক
লিখতে থাকুন।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ইভা এর ছবি

লইজ্জা লাগে

অমি_বন্যা এর ছবি

লেখা চালিয়ে যান। বক্তব্য ভালো ছিল।

ইভা এর ছবি

ধন্যবাদ!

অরফিয়াস এর ছবি

এই বিষয়ে লিখতে থাকুন। সময় নিয়ে যত্ন করে ভাবনাগুলো প্রকাশ করুন, সাথে থাকুক আপনার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো।
------------

এবার একটু ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করি, নিচে উল্লেখিত কিছু বিষয়ে লেখিকার প্রতিক্রিয়া আশা করছি-

ধরুন, সাধারণ পরিবহনে চলার পথে নারীর দেহে একজন পুরুষের স্পর্শ লাগলে, প্রতিক্রিয়ায় একজন নারীর প্রথমেই কোন চিন্তাটা মাথায় আসে? পুরুষের নোংরামি। কখনও কি এরকম ক্ষেত্রে "অসাবধানতা" কিংবা "গতিজড়তার স্বাভাবিক ক্রিয়া" এরকম কিছু মাথায় আসে?

লম্বা লাইনে "লেডিস ফার্স্ট" বলে এগিয়ে যাওয়া নারীদের মানসিকতাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

ছেলে-মেয়ে আলাদা সারি কিংবা কোন অনুষ্ঠানে/ক্ষেত্রে নির্ধারিত আলাদা বসার স্থান এই কর্মপদ্ধতিগুলোর ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য?

নারীদেরকে দর্শনীয় সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা সেটা ব্যবসাক্ষেত্রেই হোক কিংবা বিজ্ঞাপনেই হোক এক্ষেত্রে নারীদের সরব উপস্থিতি কি গ্রহণযোগ্য নাকি এটা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকেই সমর্থন করে?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ইভা এর ছবি

ধরুন, সাধারণ পরিবহনে চলার পথে নারীর দেহে একজন পুরুষের স্পর্শ লাগলে, প্রতিক্রিয়ায় একজন নারীর প্রথমেই কোন চিন্তাটা মাথায় আসে? পুরুষের নোংরামি। কখনও কি এরকম ক্ষেত্রে "অসাবধানতা" কিংবা "গতিজড়তার স্বাভাবিক ক্রিয়া" এরকম কিছু মাথায় আসে?
দেখুন আমি জানি সাধারণ একটা বাংলাদেশের মেয়ের জন্য উত্তরটা পুরুষের নোংরামি এই উত্তরটাই সবাই আসা করে যখন মেয়েটা আপনার হয় বা আপনার বোন হয় আপনার মা হয় আপনার প্রেমিকা হয় । আর মেয়েটা যখন আপনার সহযাত্রি তখন আপনার তখন যে উত্তরটা মাথায় আসে সেটা হল পরের দুইটা । এবার আমার দৃষ্টিকোন আর অভিজ্ঞতার কোথায় আসি । আমার জন্মের পর থেকে আমাকে নিজেকে যতটা না মানুষ ভেবে তার চাইতে অনেক বেশী একটা মেয়ে ভেবে সাবধানে বড় হতে বলা হয়েছে । সে ক্ষেত্রে আমি যখন ক্লাস এইটে উঠে গেলাম আমার বাইরে যেয়ে খেলাধুলা করা বন্ধ হয়ে গেল । আমি জেলখানার গরাদের ভেতর থেকে বাইরে তাকিয়ে থাকতাম বিকাল গুলিতে অথবা অনিচ্ছায় হারমনিয়াম নিয়ে ভ্যা ভ্যা করে গলা স্বাধতাম মা এর হুমুক মত । আর আমার ভাই কি মজা করে বাইরে খলত । এইভাবে মেয়ে হিসেবে বড় হতে হতে কেমন করে জানি পুরুষদের চোখ দেখবার একটা মন্ত্র শিখে ফেললাম এবং যতবারই ভাবতাম বুদ্ধি হবার পরে বা চোখ হবার পরে যে লোকটাকে নিয়ে যা ভাবছি তা যেন মিথ্যে হয় কিন্তু আসলে তা সত্যি হত । যেমন বাসে বসে আছি আমার বাবা নিচে নেমেছে আমাকে রেখে আমি দেখলাম এক ফেরি ওয়ালা গড়ীতে ঊঠলো দেখেই কেন যেন মনে হল সে কিছু একটা বাজে করবে যা আমার খারাপ লাগবে আর সত্যি তাই হল সে আমার সিটের কাছে এসে আমাকে যে কথা বলল আমাকে মেরে ফেললেও ঐ বাক্য আমি লিখতে পারবনা তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি । আমার তখনো চর মারা সাহসটা বা প্রতিবাদ করার সাহস অথবা আব্বু আম্মু কে এই কথা বলতে পারার সাহস কোনটাই ছলোনা । এবার আসি তখন ভার্সিটিতে পড়ি আমি আর আমার বান্ধবী নীলক্ষেতে গিয়েছি ফেরার পথে রিক্সা করতে আমরা রাস্তা পার হয়ে নিউ মার্কেটের দিকে যাব তো রাস্তার মাঝের আইল্যন্ডের উপরে যখন উঠেছি আমরা কোথা থকে এক লোক দৌড়ে এসে আমার বান্ধবীকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে ও প্রায় পড়ে যাচ্ছিলো দেখে আমি যেই পেছনে তাকিয়েছি আর যা দেখেছি তা আমার চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিলামনা কিছুতেই । কি করব মুহুর্তের জন্য ভেবে পাচ্ছিলাম না। । দেখলাম লোকটার প্যান্ট এর জিপার পুরো খোলা এবং সময়টা দুপুর ২/৩ টার মত হবে । এরকম ঘটোনা আমি বাবার জন্মে শুনিনাই । এরকম একজনকে চর মারার কথা ভেবে অথার আগেই সে গায়েব হয়ে গেল । এখন আমি যদি সহযাত্রির ধাক্কা খাই সেটা কি ধাক্কা তা বুঝবার কায়দা আমার জানা আছে । আমি এখন যে শহরে থাকি এখানে কিছুদিন আমি ট্রেনে যাতায়াত করেছি প্রচন্ড ভিড়ে ধাক্কাও খেয়েছি আর যে সময়টাতে ট্রেনে যাতায়াত করেছি যখন মানুষ ব্যস্ত ট্রেন ধরা নিয়ে সত্যি কথা বলতে সে ধাক্কাকে ইচ্ছা করে দেয়া ভাবার ফুরসত মেলেনি । ভাবতেই পারিনি এরকম সময়ে অযথা কেউ এমন করতে পারে । যেমন আমার ছেলে কলিগ এসে আমাকে হাগ দিলো প্রথম দিকে অস্বস্তি লাগতোএখনো আমি স্বাভাবিক হতে পারিনা কিন্তু এটাই স্বাভাবিক এখানে । ব্যপারটা বাংলাদেশে হলে নানা জনে নানা কথা বলতো । আর বাসে মেয়েদের গায়ে ধাক্কা মেরে সুখ নেবার কালচার আমাদের ঐ কন্টিনেন্টে এখনো আছে । মানুষ প্রথমটাতে অসাবধানে লেগেছে বা গতিজনিত কারণে লেগেছে বলেই ভাবে কিন্তু বার বার ঘটনাটা ঘটতে থাকে একই লোকের কাছে থেকে বা ধাক্কা মেয়ে সরি বলা দূরে থাক দাত বেড় করে যখন হাসে সেটা ইচ্ছাকৃত বুঝতে কারই বাকি থাকেনা । আর না বুঝে মানুষকে জাজ করা ব্যপারটা ঠিক না ।
লম্বা লাইনে "লেডিস ফার্স্ট" বলে এগিয়ে যাওয়া নারীদের মানসিকতাকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করবেন? খুব খারাপ এবং কোন কারন ছাড়া নিজেদেরকে পঙ্গু দলে ফেলে দেবার মত কাজ এটা । তবে হ্যা বাচ্চা সহ মেয়ে বা গর্ভবতী মেয়ে হলে এই সুবিধা পাওয়া খুব বেশী উচিৎ এবং সম ভাবে একজন বৃদ্ধ- বৃদ্ধা যে কোন শারীরিক প্রতিবন্ধি যে কারই অগ্রাধিকার থাকা উচিৎ সব খানে । এমন কি যে পুরুষটির সঙ্গে একটি শিশু থাকে তাকে বসবার অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি । অনুষ্ঠানে বসবার ব্যপার এটা কে কেমন মানিষিকতার তার উপরে নির্ভর করে । আমার মতে যে যেখানে বসতে চায় বা কমফোর্ট ফিল করে তেমন ব্যবস্থা থাকা ভালো ।
নারীদেরকে দর্শনীয় সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা সেটা ব্যবসাক্ষেত্রেই হোক কিংবা বিজ্ঞাপনেই হোক এক্ষেত্রে নারীদের সরব উপস্থিতি কি গ্রহণযোগ্য নাকি এটা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকেই সমর্থন করে? আপনার এই অংশের উত্তর দিতে গেলে অনেক কথা আসে চাহিদাটা পুরুষের যে সে নারীকে পন্য করে দেখতে চায় এবং সেটা সে কিনে নিতে চায় এখন কোন মেয়ে নিজের ইচ্ছায় সেই পেশায় গেলে বলার কি আছে । বাজার থাকলে পন্য থাকবে । একটা সময় ছিলো রাজা মহারাজারা বায়জিদের নাচ দেখতেন গান শুনতেন এবং তার জন্য আলাদা মহল ছিলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেখানে মেয়েরা যেতে পারত না আজকাল টিভি কম্পিউটার সবার ঘরে ঘরে সেই বায়জির নাচ গান আজ ঘরে ঘরে সবার আয়ত্তে এসে গেছে এবং দর্শক হিসেবে মেয়েরাও স্থান পেয়েছে । পন্যের ব্যবহার কারি হিসেবে নারী মডেলের পাশা পাশি পুরুষরাও মডেলিং করছে এবং নারী যেমন দেহের আকার আকৃতি ঠিক রাখতে ঘাম ঝড়াচ্ছে পুরুষ মডেল রাও মাসল বানাচ্ছে । এসব মিডিয়ার সৃষ্টি মিডিয়া কন্ট্রোল করছে অনেক ব্যপার । মডেল হতে হলে তার বডি থাকতে হবে লম্বা হতে হবে ব্লা ব্লা আর এসব স্বাধারন জীবনের আওতায় পরেনা । মানুষ ইম্প্রেস হয় অনেকে ফলো করতে চায় যুগের হাওয়ায় এসব একান্ত মানুষের ব্যক্তিগত ,কে কেমন করে দেখে বা নেয় তার উপর নির্ভর করে কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যেটাই হয় সেটা দাসত্ত্বের পর্যায়ে যাওটা ভালো না্‌, যেখানে মানুষের অধিকার ক্ষুন্য হয় অথবা মানুষের মনুষত্ত্ব লোপ পায় সে সবটাই মানব সভ্যতার জন্য খারাপ ।
একটা দশ বছরের বাচ্চা মেয়েকে ধরে এনে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে কারন ঐ দশ বছরের বাচ্চা কেনার খরিদ্দার আছে । যৌন কর্মি আছে কারন ক্ষদ্দের আছে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদেকে বাধ্য করা হয় এই পেশায় আসতে আর এই দায়ভার কার? কারা এর বাজার খুলেছেন? ব্যপারটা মিডিয়াতেও এমন । বার্বির মত ফিগার লাগবে কে বলেছে? সিম্পাঞ্জির মত বডি লাগবে কে বলেছে? আগে শোনা যেত মিডিয়ার মেয়েরা খারাপ এখন মানুষ মিডিয়ার মেয়েদের সন্মানের চোখে দেখে অনেকেই তাদের পরিবার তাদের পরিচয় দিয়ে গর্ব করে এখন । আমি দোষের কিছু দেখিনা বা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকে দোষাই না এর জন্য যতক্ষন পর্যন্তনা কারো অধিকার বঞ্ছিত হয়েছে অথবা কার উপরে জুলুম করা হচ্ছে তাকে বিক্রি করা হচ্ছে । বিশেষ করে শিশু যাদের বয়স আঠারো এর নিচে।

চন্দন এর ছবি

কান্দিস না রে বিন্দিয়া
কি আর হইবো কান্দিয়া

ভুল বানানে লেইখা যাইবি
দুঃখের কথা জান দিয়া

ইভা এর ছবি

সুপার লাইক আপনার কবিতাকে । হাততালি
কিন্তু ভাই আমি তো কান্দি নাই খামাখা কবিতাটারে টিস্যু বানাইলেন! লইজ্জা লাগে

নূসরাত  এর ছবি

ছোট ছোট প্যারা করে লিখুন। প্রতি প্যারায় একটা টপিক। এক প্যারা থেকে আরেক প্যারায় যেতে একটা ছোট্ট মিল রাখুন (যেমন আগের প্যারার শেষ লাইনের একটা শব্দ, বা ঐ প্যারার ভাবটারই আরো একটু বিস্তারণ)

বিষয়বস্তু ভালো, পরিবারপ্রথার সেট করা নিয়মে মেয়েদের ঘরে থাকতে হয়েছে। চাইলেই নিজের নিজের পরিবারে সেটা বদলে ফেলা যায়। অনেক দিন ধরে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চললে পুরুষরাও একসময় একই ধরণের অনুযোগ করবে।

ইভা এর ছবি

ধন্যবাদ এবং পরবর্তিতে ভাল লেখা দেবার চেষ্টা করবো ।

শাব্দিক এর ছবি

আপনার লেখার বক্তব্য বুঝতে সমস্যা হয়নি,কিন্তু মনে হচ্ছে খুব রেগে গিয়ে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজকে একগাদা কথা শুনিয়ে দিচ্ছেন।
আলাদাভাবে আলোচনা করলে ভাল হত। সন্দেশ প্রথমেই বলে দিয়েছে যদিও।
তবে লেখা থামে না যেন। লিখতে থাকুন, হাত খুলে মন খুলে।
ছোটখাট সমস্যাগুলি লিখতে লিখতে দূর হয়ে যাবে।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

ইভা এর ছবি

হাসি পুরুষ তান্ত্রিক সমাজকে কথা না শুনিয়ে আর পারা যাইছেনা যে!! হাহাহাহা ধন্যবাদ আপনাকে । পরবর্তি লেখাতে আশা করি কিছুটা বেশী আলোচনা করবো । সাহস দেবার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
ইভা

ধুসর জলছবি এর ছবি

লেখার মূল বক্তব্যের সাথে সহমত। আপনি আরও লিখুন,আর একটু গুছিয়ে, লেখা যেন না থামে।

ইভা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে।

মাথা ভালো-খারাপ যাই হোক পড়তে সবারই হয়। আর মেয়েরা ক্যাম্পাসে একটু বেশিই পড়ে -এটা তো দোষের কিছু না। আর যে দুষ্টু ছেলেরা মাথার দোহাই দিচ্ছে- ওদের ধরে এনে মগজাস্ত্রের পরীক্ষা নিলেই তো হয়!

নির্ঝর অলয়

ইভা এর ছবি

হাসি
ভালো বলেছেন । মেয়েরা ক্যাম্পাসে বেশি পড়ে সবার বেলায় ঠিক না যেমন আমি ছিলাম মহা ফাকিবাজ আড্ডাবাজ । ক্যাম্পাসে যেতাম ক্লাসের চাইতে আড্ডার বেশি টানে । আমার মত অনেক মেয়ে আছে আবার খুব পড়ুয়া ছেলের ও অভাব নেই ।
ধন্যবাদ

নির্ঝর অলয়  এর ছবি

তবে গড়পড়তা মেয়েরা পড়াশোনা বেশিই করে বলে আমার অভিজ্ঞতা। এতে হীনমন্যতার কিছু নেই। না পড়ে বুদ্ধি বেশি জাহির করার একটা ভুল প্রবণতা আমাদের দেশে আছে। অথচ আসলে পরিশ্রম প্রতিভার চেয়ে বেশি জরুরী এবং প্রতিভা একটি আপেক্ষিক শব্দ।

ফাঁকিবাজ মেয়ে কিন্তু খুব বিরল। আমার অজস্র মেয়ে সহপাঠীর মধ্যে কিন্তু একজনও ফাঁকিবাজের সন্ধান পাইনি! হাসি

নির্ঝর অলয়

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

লেখার মুল বক্তব্য বুঝতে সমস্যা হয়নি এবং সহমত। কিন্তু ঢালাওভাবে শুধু দোষ না দিয়ে যুক্তি দিয়ে একটি একটি পয়েন্ট ধরে গুছিয়ে লিখুন। একসাথে অনেক বিষয় চলে আসলে কোন বিষয়েই ফোকাস ঠিকমত হয়না। আসলে একটা কথা খুব সত্যি যে, অনেক ক্ষেত্রে, মেয়েদের সমস্যা মেয়েরা নিজেরাই বুঝতে চায়না। আত্মসম্মানের সীমানাটুকু অনেক মেয়ে নিজেই ভাঙে। সমস্যাটা আসলে মানসিকতার, ছেলেদের এবং সাথে সাথে কিছুটা মেয়েদেরও। অনেক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত মেয়ের কথাবার্তা এবং চিন্তা ভাবনা দেখলে অবাক হতে হয়।

এই যুগে এসেও নারী-পুরুষের ভেদাভেদটা আসলে সমাজের মজ্জাগত ব্যাধির মতো রয়েই গেছে। কিন্তু এর জন্য মেয়েদেরও দায়ভার রয়েছে। এখনও অনেক শিক্ষিত মেয়ে, ডাক্তার হিসেবে পুরুষ খোঁজে, শুধুমাত্র গাইনির ক্ষেত্রে মেয়ে ডাক্তার পছন্দ এবং এমন আরও অসংখ্য উদাহরন দেওয়া যাবে। জানি এবং বুঝিও এর পিছনে সমাজ দায়ী কিন্তু কোন শিক্ষিত মেয়ের এই ধরনের চিন্তা ভাবনা কোনভাবেই মানতে পারিনা। মানুষ যদি নিজের বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে না লাগায়, তাহলে কিভাবে হবে?

পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন অবশ্যই অবশ্যই প্রয়োজন তার সাথে সাথে মেয়েদের নিজেদেরও তাদের অধিকার এবং আত্মসম্মান নিয়ে সচেতন হতে হবে।
সচেতনতার বিকল্প নেই।
নারী কিংবা পুরুষ পরিচয়ে নয়, শুধু মানুষ পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই।
যাই হোক, আরও লিখুন।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ইভা এর ছবি

গুছিয়ে লেখা যাকে বলে সেটা আমি পার্নাকেসেটা সত্যি কিন্তু আপনি বলেছেন ঢালাও ভাবে আমি ছেলেদের দোষ দিয়েছি ব্যাপারটা মনে হয় ঠিক বলেন নাই আমি শুধু পয়েণ্ট আউট করেছি যেমন
মহা নবী (সাঃ) বলেছেন "যে নারী তার অভিভাবক এর সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।"

অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে বিয়ে করতে হবে পরিবারের সান্তি এবং বাবা মা এর সাথে সুন্দর সম্পর্ক থাকলে এটাই কাম্য, কিন্তু সেটা কি শুধু মেয়েদের বেলায় বাতিল হবে আর ছেলেরা করলে ঠিক আছে? ব্যপারটা এরকম যে মেয়েরা আর ১৮ বছরের নিচের শিশুরা যা করে সেটাতে বুঝের অভাব আছে । আমি মেয়ে বলেই কি আমার কথাটা খুব লেগেছে? নাকি কথাটা আসলেও লাগবার মত । একজন ১৮ বছর বয়সের নারী বা পুরুষ যেই হোক নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় এরকম সিদ্ধান্ত একা নিতে পারে, সেটা আইন বলছে ।
আমি কি কোথাও কাউকে দোষ দিয়েছি? এবার প্রসঙ্গে আসি তা হলো পয়েন্ট টা যে বলেছি স্বাধারন মানুষ মাত্রই পড়লেই বুঝে নেবে যে আলোচিত বিষয়টিতে যা যে রুপটি দেখছি সেটা উচিৎ না ।
সমস্যাটা শুধু পুরুষের সেভাবেও বলিনি যেমন
আজকাল মা খালাদের মহলে শুনি "তোমরা তো ভাগ্যবতি, তোমাদের স্বামীরা ঘরের কাজে তোমাদের সাহায্য করে ার আমাদের সময় তারা হাত ধুয়ে ভাতও খেতে চাইতোনা , এমন ভাবে বলা যেন কাজটি একধরনের উচ্চ বংশিয় বা রাজকিয় কাজ।
নিজেদের কে মানুষ ভাবার অভাব পুরুষ এবং নারী দুইজনের মাঝেই আছে বলে সমস্যাটি এত প্রকট।
েই যুগে এসেও নারী-পুরুষের ভেদাভেদটা আসলে সমাজের মজ্জাগত ব্যাধির মতো রয়েই গেছে। কিন্তু এর জন্য মেয়েদেরও দায়ভার রয়েছে। এখনও অনেক শিক্ষিত মেয়ে, ডাক্তার হিসেবে পুরুষ খোঁজে, শুধুমাত্র গাইনির ক্ষেত্রে মেয়ে ডাক্তার পছন্দ এবং এমন আরও অসংখ্য উদাহরন দেওয়া যাবে। জানি এবং বুঝিও এর পিছনে সমাজ দায়ী কিন্তু কোন শিক্ষিত মেয়ের এই ধরনের চিন্তা ভাবনা কোনভাবেই মানতে পারিনা। মানুষ যদি নিজের বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে না লাগায়, তাহলে কিভাবে হবে?
এই ব্যাপারে আপনি যা বলেছেন সেটা ১০০ ভাগ সমর্থন করি আমি । সমাজের অংশ পুরুষ এবং নারী দুইজনই তাই সমাজের কাঠামোটা দুইজনকে ভেবে দুইজনের সুবিধা দেখে হওয়া উচিৎ যা হয়ে আসেনি এবং সেই হবার প্রচেষ্টা আমরা করছি নিজেদের নিজেদের যায়গায় থেকে ক্ষুদ্র পরিসরে কিন্তু যখন এটা বড় ভাবে ঢালাও করে হবে এর আবেদন আরও বাড়বে তাই আমাদের সব খানে কথা বলা উচিৎ আলোচনা করা উচিৎ ।
ধন্যবাদ আপনাকে

অবনীল এর ছবি

আপনার হতাশা থেকে উৎসারিত আবেগি আপনার লেখনিশক্তি। একে জিইয়ে রেখে লিখতে থাকুন একের পর এক কোন রকম দ্বিধা না করে। লেখা সংক্রান্ত প্রাথমিক এবং স্বাভাবিক জড়তা এমনি কাটতে থাকবে। চার্লস বুকস্কির লেখক/লেখিকা হবার ব্যাপারে উদ্ধৃতিটা শুনেছেন নিশ্চই --
“unless it comes unasked out of your heart and your mind
and your mouth and your gut, don’t do it.”

ধন্যবাদ।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

ইভা এর ছবি

“unless it comes unasked out of your heart and your mind
and your mouth and your gut, don’t do it.” চলুক ভাল লাগলো ।

ঈপ্সিত আর চম্পাকলি এর ছবি

মেয়েরা কি কি পায়নি, পায়না সে কথা বলা জরুরি অবশ্যই। তবে সে কথা আশাপূর্ণা দেবী থেকে তসরিমা নাসরিন সবাই অল্প বিস্তর বলেছেন। কিন্তু কি কি পেয়েছে, কি পারে সে কথাও ভাববেন মাঝে মাঝে। নব্বই শতাংশ মেয়ে বলবেন বাইরের জগতে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা আর সন্তান পালনের মধ্যে নিত্য সঙ্ঘাত বাধে। একথা ঠিক মায়ের থেকে দুর্বল প্রাণী আর নেই। কিন্তু মায়ের থেকে শক্তিশালী প্রানীও আর নেই। মেয়েরা ঘরে বাইরে সমান ভাবে সামলাতে পারে কিন্তু পুরুষ পারে না। সিংগল ফাদার কথা টা আমেরিকাতেও খুব একটা শোনা যায় না। একথাটা মেনে নেওয়া মেয়েদের পক্ষে শ্লাঘার বিষয়, পুরুষের পক্ষে সন্মানজনক।
আমার চার বছরের মেয়ে কে বলেছিলাম "বাবা আর মা দুজনেই সনাম। দুজনেই ড্রাইভ করে , অফিস করে , বাসন মাজে , রান্না করে।" মেয়ে বলল "বাবা ন্যাপি চেঞ্জ করতে পারে না , মা পারে" এখোনো পর্‍্যন্ত ও কোনো কাজ খুঁজে পায়নি যেটা বাবা পারে কিন্তু মা পারে না। হাসি

লেখা চালিয়ে যান। অভ্রর স্পেলচেক্টা কাজে লাগান।

ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------

ইভা এর ছবি

চাইলে মানুষ মাত্রই সব পারে । কি কি পারেনা সেটা আমার লেখার বিষয় না কি কি পারতে দেয়া হয়না সেটা বিষয় । একটা পুরুষ লিঙ্গের মানুষের জন্য সবখানে বিচরন যত সহজ মেয়ের জন্য ততোটা নয় । আপনার মেয়ে যখন বলে মা সব পারে আর বাবা ন্যপি চেঞ্জ করতে পারেনা তখন কথাটা আপনার কাছে কোন অপারগতা মনে হয়না এবং আপনি এই অপারগতাটির জন্য একরকমের গর্ববোধ করেন এবং বেশির ভাগ পুরুষই তাই করবে কেননা আমাদের সামাজিকতায় আমরা এভাবেই শিখে বড় হয়েছি । ন্যপি চেঞ্জের মত কাজ মানের দিক দিয়ে নগন্য আমাদের চোখে । তাই বীর যে যুদ্ধ্য করে সে যত সন্মানের বা ইতিহাসের পাতা দখলের দাবীদার ন্যাপি ছেঞ্জ করে যে আপনার মা বা স্ত্রী তারা সেই স্থান কোনদিন দাবী করতে পারেনা এসব করে । কাজ গুলি যা বরাদ্দ্য মেয়েদের জন্য আর যার জন্য আমি আপনি মা মা করে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলি ভালবাসার কথা বলে বুক ভাসাই তার কোন কিছুর ই দাম পুরুষদের বীরত্বের কাজ গুলির কাছে কিছুই না । তাই পুরুষরা ইতিহাস হতে পারে , আবিষ্কারে নিজেকে বিষ্মিত করতে পারে মেয়েরা পারেনা । মেয়েরা অপর বা আদার হয়ে বেচে থাকে এবং এভাবেই চালিত আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ।
নব্বই শতাংশ মেয়ে বলবেন বাইরের জগতে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা আর সন্তান পালনের মধ্যে নিত্য সঙ্ঘাত বাধে। একথা ঠিক মায়ের থেকে দুর্বল প্রাণী আর নেই। কিন্তু মায়ের থেকে শক্তিশালী প্রানীও আর নেই। মেয়েরা ঘরে বাইরে সমান ভাবে সামলাতে পারে কিন্তু পুরুষ পারে না। সিংগল ফাদার কথা টা আমেরিকাতেও খুব একটা শোনা যায় না। একথাটা মেনে নেওয়া মেয়েদের পক্ষে শ্লাঘার বিষয়, পুরুষের পক্ষে সন্মানজনক । কথা গুলি ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ আপনাকে

বিপ্লব কুমার চমন এর ছবি

প্রথমেই আপনি স্বীকার করেছেন যে, আপনি অন্য কোথাও রোষানলে পড়েছিলেন। তবে এই লেখাটি পড়ে সমালোচনার সম্মুখীন না হবার কোন কারণ দেখছি না। বানান বিভ্রাট ও লেখার অসংলগ্নতা, অসামঞ্জস্যতার কথা আমার আগে অনেকেই বলেছেন। তবে সবচেয়ে যে ব্যাপারটি লক্ষণীয় তা হল, আপনার জানার পরিধি খুবই কম। সবাইকে সব জানতে হবে তার কোন বাধ্যবাধকতা নেই,তবে যে ব্যাপারটি বলতে বা লিখতে যাচ্ছেন তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাটা জরুরী। আপনার বক্তব্যে আমি নূতন কিছু পেলাম না, সবই তসলিমা বা অন্যান্য নারীবাদী লেখক-লেখিকারা ইতিমধ্যে বলে গিয়েছেন। তারপরেও নূতন করা বলা যায় যদি পর্যবেক্ষণ দৃষ্টি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা ভালো হয়। আমি লেখাটিতে তেমন কিছুই পেলাম না । যেমন, আপনি একটি ধর্মের একজন মহাপুরুষের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। আমার এই ধর্মটি সম্পর্কে জানা নেই। তবে আপনার সঠিক রেফারেন্সের অভাব, ঘটনা-কাল বিশ্লেষণের অভাব দেখলে উদ্ধৃতিটি সঠিক বলে মনে হয় না। অথচ এটি দিয়েই আপনি লেখাটি শুরু করেছেন। তাছাড়া শুধুমাত্র একটিমাত্র ধর্ম কেন? অন্যরা কি বলেছে? আপনি আসলে কি প্রমাণ করতে চাইলেন - পরিষ্কার বোঝা গেল না।

আর বাবা-মা শুধু মেয়ে নয়, তারা চায় তার ছেলে-মেয়ে দুজনেই তাদের কথা শুনুক। এটা কি তাদের খুব বড় অপরাধ? বিধর্মী বিয়েটা আইনসংগত ভাবে গ্রহণীয়, ধর্মীয় ভাবে নয়, তাই নয় কি? এটা সব ধর্মের বেলায় প্রযোজ্য। বিয়েটা নিষিদ্ধ নয়, তবে বাড়তি একটা ঝামেলা তো অবশ্যই হয়। ধরা যাক, একটা মুসলিম মেয়ে একটি হিন্দু ছেলেকে (আপনি এভাবেই উদাহরণ দিয়েছেন) বিয়ে করল, তাদের একটি সন্তান হল। সন্তানটিকে মসজিদ নাকি মন্দিরে পাঠানো হবে? বাসায় ঈদ হবে নাকি পুজো হবে? গরু/কচ্ছপ খাবে কি, খাবে না? আপনি হয়তবা বলবেন, দুটোই করবে। সেক্ষেত্রে আসলে জগাখিচুড়ি হয়ে যাবে, একটি নীতিতে সে চলতে পারবে না।
তবে নাস্তিক হলে কোন কথা নেই। এসব কারণেই বাব-মায়ের অসম্মতি থাকে। বাবা-মা-কে সন্তুষ্ট করে কেউ খারাপ আছে পাওয়া যাবে না, কিন্তু অসন্তুষ্ট করে শোচনীয় অবস্থায় আছে এমন অনেক উদাহরণ আছে।

আবার যৌন কর্মী বা সংসারের কাজ-কর্ম বা ক্লাসে প্রথম হওয়া নিয়েও আপনার কথা পরিষ্কার বোঝা গেল না। আবার নিয়ে এলেন সম্পত্তি বণ্টন, নারী প্রেসিডেন্ট, জামাত নিয়ে। আসলে আপনি কি বলতে চাইছেন?

ইভা এর ছবি

জনাব বিপ্লব কুমার ধন্যবাদ আপনাকে ।
লেখার সমালোচনা করবার জন্য যে লেখাটি নিয়ে সমালোচনা সেই লেখাটি অন্ততঃ দুইবার পড়ে দেখা উচিৎ তাতে বুঝে নিতে সুবিধা হয় কেননা আপনি মন্তব্য করবেন তার জন্য আপনার যথেষ্ট রকমের তথ্য লেখাটি থেকে বের করতে হবে । লেখা হিসেবে গুনগত মান থেকে আমার লেখা কোন পর্যায়ের তা পাঠকদের নির্ধারনের জন্য আমি ছেড়ে দিলাম আর পাঠকদের জন্য আমি চেষ্টা করব সামনে লেখার মানটা বাড়াতে পারি কিনা ।
আপনি আমার লেখাটি ভালো করে না পড়ে মন্তব্য করেছেন আপনার প্রথম অবজেকশানের প্রেক্ষিতে বলছি লেখাটা ধর্ম গ্রন্থের পর্যালোচনা নিয়ে নয় যে উক্তিটি ব্যবহার করেছি তার আগের এবং পরের বক্তব্য পড়ে নিলে বুঝতে পারবেন আশা করি । আপনার সুবিধার জন্য...
"দুদিন আগে আমার এক বন্ধুর ফেসবুক পোষ্ট থেকে শুরু করি । সে শেয়ার করেছে একটি ম্যাসেজ, সেখানে লেখা -
মহা নবী (সা:) বলেছেন "যে নারী তার অভিভাবক এর সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।"
অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে বিয়ে করতে হবে পরিবারের শান্তি এবং বাবা মা এর সাথে সুন্দর সম্পর্ক থাকলে এটাই কাম্য, কিন্তু সেটা কি শুধু মেয়েদের বেলায় বাতিল হবে আর ছেলেরা করলে ঠিক আছে? ব্যাপারটা এরকম যে মেয়েরা আর ১৮ বছরের নিচের শিশুরা যা করে সেটাতে বুঝের অভাব আছে । আমি মেয়ে বলেই কি আমার কথাটা খুব লেগেছে? নাকি কথাটা আসলেও লাগবার মত । একজন ১৮ বছর বয়সের নারী বা পুরুষ যেই হোক নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় এরকম সিদ্ধান্ত একা নিতে পারে, সেটা আইন বলছে । "
আপনার এই অংশ
"আর বাবা-মা শুধু মেয়ে নয়, তারা চায় তার ছেলে-মেয়ে দুজনেই তাদের কথা শুনুক। এটা কি তাদের খুব বড় অপরাধ? বিধর্মী বিয়েটা আইনসংগত ভাবে গ্রহণীয়, ধর্মীয় ভাবে নয়, তাই নয় কি? এটা সব ধর্মের বেলায় প্রযোজ্য। বিয়েটা নিষিদ্ধ নয়, তবে বাড়তি একটা ঝামেলা তো অবশ্যই হয়। ধরা যাক, একটা মুসলিম মেয়ে একটি হিন্দু ছেলেকে (আপনি এভাবেই উদাহরণ দিয়েছেন) বিয়ে করল, তাদের একটি সন্তান হল। সন্তানটিকে মসজিদ নাকি মন্দিরে পাঠানো হবে? বাসায় ঈদ হবে নাকি পুজো হবে? গরু/কচ্ছপ খাবে কি, খাবে না? আপনি হয়তবা বলবেন, দুটোই করবে। সেক্ষেত্রে আসলে জগাখিচুড়ি হয়ে যাবে, একটি নীতিতে সে চলতে পারবে না।
তবে নাস্তিক হলে কোন কথা নেই। এসব কারণেই বাব-মায়ের অসম্মতি থাকে। বাবা-মা-কে সন্তুষ্ট করে কেউ খারাপ আছে পাওয়া যাবে না, কিন্তু অসন্তুষ্ট করে শোচনীয় অবস্থায় আছে এমন অনেক উদাহরণ আছে।"
বাবা মা এর চাওয়া অপরাধ এমন কথা আমি বলিনি বরং বলেছে এটাই স্বাভাবিক । আপনার এই অংশের বক্তব্য প্রাসঙ্গিক কিভাবে আমি ঠিক বুঝলাম না কেননা আমার প্রসঙ্গটা হিন্দু মুসলিম বিয়ে নয় প্রসঙ্গটা মেয়ে আর ছেলের। ছেলে করলে ঠিক আর মেয়ে করলে ঠিক না কেন? আমাকে বলতে বাধ্য হতে হচ্ছে যে আপনি খুব খারাপ একজন পাঠক কিছু পড়বার ক্ষেত্রে আপনার মনোযোগ কম বরং আপনি আমাকে ইস্যু দার করিয়ে অযথা একটা কিছু লিখে বিব্রত করবার চেষ্টা করছেন ।
প্রসঙ্গটা যখন টেনেছেন তখন বলছি হিন্দু মুসলিম একটা ছেলে আর মেয়ে যখন ধর্মের গণ্ডি ছিরে বের হয়ে আসতে পারে তখন ই তাদের বিয়ে সম্ভব সে ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতি নিতি মানার প্রশ্নই ওঠেনা । কচ্ছপ , গরু, শুয়োর বা যে কোন প্রাণী খাবার ব্যাপারটা মানুষের রুচির মুসলিম বাড়িতে এমন আছে একজন গরু খায় আর একজন খায়না তাই বলে তারা সংসার করেনা? যে খায় সে খাবে আর যে খায়না সে খাবেনা ,কেউ কাউকে বাধ্য করছে না আর এসব ক্ষেত্রে বোঝাপড়াটা খুব জরুরি। হিন্দু মুসলিম ছেলে মেয়ের মাঝে বিয়ের পরে যদি ধর্ম পালনের প্রয়োজন আসে তাহলে এদের দুজনের মাঝে কোন মানসিক সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি বা আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর অভাব ধরে নেয়া যায় আর সে ক্ষেত্রে যে কোন সম্পর্কই সমান সমস্যার শুধু হিন্দু মুসলিম বা দুটো আলাদা ধর্মের মানুষের না যে কোন মানুষের ।
"বাবা-মা-কে সন্তুষ্ট করে কেউ খারাপ আছে পাওয়া যাবে না" কথাটা অনেক ক্ষেত্রে সত্যি আবার এমন অনেক আছে বাবা মা এর সন্তুষ্টের জন্য বলি হয়েছে । চোখ খুললে এমন অনেক উদাহরণ পাবেন বিশেষ করে মেয়েরা এর বড় অংশ ।
শেষ কথার উত্তর আমার লেখার শেষ অংশ টুকু কষ্ট করে আর একবার পড়ে নেবেন।
এবং আধুনিক মানসিকতার গর্বে বুক ফুলিয়ে বেড়ান, ন্যায় এবং সত্যের সাধক ভাবেন নিজেদের অথচ কিছু সত্যের কাছে এসে সেই আপনার চোখই এড়িয়ে যায় । আপনিও নির্বিকারে অসমতায় হারিয়ে যান ।
লেখাটি নারী পুরুষের অসমতা নিয়ে এবং আমি দুঃখিত আপনার মত পাঠকের কথা মাথায় রেখে লেখাটি আমি লিখতে পারিনি ।
ইভা ফেরদৌস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।