পুঞ্জীভূত ঘটনাপুঞ্জ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৪/০৫/২০১৫ - ২:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘটনা ১-
ছোটবেলায় আব্বুর সাথে বাজারে যেতে বেশ ভালোবাসতাম। বাজারে গিয়ে বিবেচকের মতো সবজি পরখ করে দেখতাম। একবার টিপে টমেটো গেলে ফেলাতে ঐ মাতুব্বরিতে ভাঁটা পরে।
সাত বছর বয়সে একদিন এমনি বাজারে ঘুরছিলাম, পাশ দিয়ে যাবার সময় হঠাৎ একজন ভীষণভাবে আমার বুকে খামচে দিলো! আমি ঠিক বুঝতে পারিনি কী হলো! কিছুদূর যাবার পরে আবার মনে হলো সেইজনই ঘুরে এসে নিম্নাঙ্গে আঘাত করে গেলো। কেমন যেন ভয়ে কুঁকড়ে গেলাম, আব্বুকে চাপাচাপি করে বাসায় চলে আসলাম। এরপর আর কোনোদিন বাজারে যেতে চাইনি, গিয়েছি, হয়তো কেউ অনেক জোরাজুরি করলে। এই ব্যাপারটা কাউকে কখনো বলিনি, আসলে বুঝতেই পারিনি কী বলা উচিত!

ঘটনা ২-
এক মামা আসত বাসায়। ৯/১০ বছর বয়সের সময় একদিন একটা ঘরে আমাকে চেপে ধরে আদর করতে যেয়ে ঠোঁটে চুমু খায়। আমি জোর করে ছাড়িয়ে চলে আসি। কিন্তু এরপর থেকে বাড়িতে এলেই সে সুযোগ খুঁজে নিয়ে অমনটা করার চেষ্টা করত। আম্মুকে বলেছিলাম, কিন্তু আম্মু বলেছিলো “ওর কাছে যেও না”। আমি কোনো ভরসা পাইনি, জানি না আম্মু কেন ওভাবে উড়িয়ে দিয়েছিলো আমার কথা, হয়তো ছোটমানুষ কতকিছু বলে থাকে বলে গুরুত্ব দেয়নি। বড় বোন গুরুত্ব দিয়েছিলো, এরপর থেকে আপু বাসায় থাকলে আর ভয় পেতাম না।

ঘটনা ৩-
আমাদের বাসার বড়রা সম্ভবত একটু অতিরিক্ত মাত্রায়ই protective ছিলো আমাদের জন্যে। আমাদের মানুষ করার ব্যাপারে এবং নিরাপদ রাখার চেষ্টায় তাদের ঐ অতিরিক্ত রক্ষণশীল ভাবের কারনে sex সম্পর্কিত কোনো শিক্ষারই অস্তিত্ব ছিলো না। তাই বেশ বড় বয়স পর্যন্ত এ সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই ছিলো না বলতে গেলে।

তাই সেই নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে থাকার পরেও ১৪ বছর বয়সে পরিবারের নূতন একজন সদস্য যখন অশালীন আচরণ করতে থাকে এবং প্রতিনিয়ত তার অত্যাচার বাড়তে থাকে তখনো তেমন কিছুই বুঝতে পারিনি যে সে আসলে কেন এমন করছে বা কী করতে চাইছে! শুধু বুঝতে পারছিলাম এমনটা ঠিক নয়। বোনকে বলি, সে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রক্ষা করার, কিন্তু তার সে সময়ে খুব বেশি কিছু করার ক্ষমতা ছিলো না। কিংবা অতটা মানসিক পরিপক্কতাও ছিলো না। সে বরং এটা বলে যে এসব কথাগুলো কখনো আর কাউকে না বলতে! ঐ ব্যাপারটা মাকে বলিনি কিন্তু সে নিশ্চয়ই কিছু বুঝতে পেরেছিলো এবং অত্যন্ত বাজেভাবে তার সন্দেহটা প্রকাশ করেছিলো যে ‘আমার পিরিয়ড বন্ধ ক্যানো!’ যদিও কেন এভাবে এ প্রশ্ন করেছিলো বুঝতে পারিনি তখন, কিন্তু কিছুটা ধারণা করতে পেরেছিলাম। তাতেই নিজের ক্ষুদ্রতা, অবাঞ্ছিত মনে হওয়ার বোধগুলো আরো বেড়ে গিয়েছিলো। মা হয়তো চাইতেন তার সাথে আমি কিছু শেয়ার করি। কিন্তু আমার ভেতরে সেরকম ভরসার কোনো বোধ ছিলো না বা তিনি তৈরি করে দিতে পারেননি বলেই আমি কখনো তাকে কিছু বলতে পারিনি। যদিও খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম তবুও অন্তত যেটুকু বোনকে বলতাম সেটুকুও তাকে বলিনি কখনোই।

কৈশোর পর্যন্ত এসব ব্যাপারে বোন support দিয়েছে অনেক। অন্তত খুব আগলে রাখতো, সতর্ক থাকতো আমাকে নিয়ে। তবে এরপরে একদিন অবিশ্বাস করে বলেছিলো, ‘তোমার সাথেই কেন এত এসব হবে!’

এরপর থেকে তাকে বা কাউকে আর কখনো কিছু বলিনি, কেউ কখনো কোনো বাজে ব্যবহার করলে বা করতে এলে নিজেই তেড়ে গিয়েছি।
শুধু শৈশব-কৈশোরের ঐ মানসিক যন্ত্রণাটা থেকে বেরোতে পারিনি কখনো। এখনো মনে হয় জীবনে এই ঘটনাগুলো না থাকলেই কি চলতো না! মানুষকে আর বিশ্বাসই করতে শিখিনি কখনো।

কিছুদিন আগে বন্ধুদের এক আড্ডায় আমরা সবাই এমন কিছু কথা confess করছিলাম যা হয়তো কখনো কাউকে বলিনি। তখন বন্ধুদের মধ্যে এ কথাগুলোই উঠে এলো। কেউ শিক্ষকের কাছে বা কেউ হয়তো বাসার খুব পরিচিত কারো থেকেই এমন নানা অশালীন আচরণের শিকার হয়েছে! খুব বেশি ভয়াবহ বা কম, কিন্তু ঘটনাগুলো আছেই। অথচ আমরা সবাই এমন পরিবার থেকেই এসেছি যেখানে নিরাপত্তা বা সতর্কতার সেরকম কোন অভাব আসলে ছিলোই না!

কৈশোরে পরিবারের ভেতরের যে লোকটি আমার সাথে অশালীন ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিলো তার কন্যা সন্তানটি ১০ বছর পূর্ণ করলো। আমার খুব ভয় হয় সেই ফুলের মতো শিশুটিকে নিয়ে। সে কি তার বাবার থেকে নিরাপদ? শিশুটির মা জানে তার স্বামীকে, হয়তো সে লোকটিও এতোটা নিচে নামবে না, কিন্তু সত্যিই বিশ্বাস কি করা যায় ? লোকটি সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তি। এমন হয়তো হাজার মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অমানুষরা আছে যারা কোনো না কোনো শিশুর শৈশব-কৈশোরকে কলুষিত করে যাচ্ছে!
জীবনে কো্নোদিন আসলে এসব কথা প্রকাশ পায় না, পরিবার/সমাজ আমাদের সবকিছু গোপন করার শিক্ষাটা খুব ভালভাবেই দিয়ে দেয় কি না!

(নন্দিনী তিলোত্তমা)


মন্তব্য

ঈয়াসীন এর ছবি

ঐ শিশুটি হয়তো বাবার থেকে নিরাপদ কিন্তু তারও বিকৃত মানসিকতার আত্মীয় থাকতে পারে। যাইহোক, অভিভাবকের সঙ্গে দূরত্ব কমানোই সর্বোত্তম পন্থা। মা বাবার কাছে সবকিছু খুলে বলতে পারলে সমস্যা অনেকটা কমে যায়; সেক্ষেত্রে অভিভাবককেই এগিয়ে আসতে হবে সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পরক গড়ে তুলতে।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আজ ৪ টার সময় গণ সমাবেশ আছে শাহবাগে। দেশে থাকলে চলে আসুন। মোটামোটি ৭ টা পর্যন্ত চলবে। লেখার সাথে সাথে পথেও সরব থাকা জরুরি।

স্বয়ম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঘটনা ১ আর ২ নিয়ে অন্য লেখাগুলোতেও আলোচনা হয়েছে; আমি ঘটনা ৩ নিয়ে বলতে চাই।

কন্যাশিশুদেরকে পিউবার্টির আগেই যৌন বিষয়ক জ্ঞান না দেয়াটি শুধু অন্যায় নয়, বিশাল বিপদজনক। এভাবে বাবা-মা-অভিভাবকেরা তাদের একটু অস্বস্তি এড়াতে গিয়ে কন্যাশিশুদেরকে যৌন নিপীড়নের সহজ শিকার বানিয়ে ফেলেন। একই প্রকার শিক্ষা পুত্রকেও দিতে হবে। সেই সাথে পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে এই ক্ষেত্রে তার আচরণ কেমন হতে হবে।

আমাদের বাবা-মায়েরা যে ভুলগুলো করেছেন আমরা যেন সেই ভুলগুলো না করি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নোলক এর ছবি

বয়স এবং ম্যাচিওরিটি ধরে ধরে পিতামাতারা তাদের ছেলে ও মেয়েকে কোন বয়সে কী ধরনের শিক্ষা দিবেন, সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত লেখা দিতে পারেন কিন্তু। এতে অনেকেই উপকৃত হবে।

শিশিরকণা এর ছবি

এক একটা ঘটনা পড়ি আর কুকরে যাই। এখন এক বছরের ছেলেকেও ভাল আদর আর মন্দ আদর শেখানোর চেষ্টা করছি। মোটামুটি তার সাথে কথা কোন ব্যবহার পছন্দ না হলেই যেন চেচামেচি করে এইটুকুই শিক্ষা। এতে তাকে একটু বেশি স্বাধীনতা দেয়া হয়ে যায় সত্য, তাকে ডিসিপ্লিন শেখানো একটু সমস্যা হয়ে যাচ্ছে, তবে সেই পেইনটুকু নিতে রাজি আছি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

শিশিরকণা এর ছবি

আমরা আসলে সব কাপুরুষ। পিশাচগুলোর মুখোমুখি হবার সাহস নেই। তাই দুর্বল আক্রান্ত ব্যক্তিকেই আরও আক্রমণ করে তাকে হাপিস করে দিতে পারলেই ভাবি যাক, ঝামেলা চুকলো। কারণ সেটা করা সহজ। হয়ত পরিবারে যারা এমন করেন তারাও এসব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে এসেছেন, এবং চেপে যাওয়াই তাদের উপরেও সমাধান হিসেবে গছানো হয়েছিল। নাইলে এই সমাধান এত এস্টাবলিশড প্র্যাকটিস কেন?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তিথীডোর এর ছবি

আমার এক বাল্যবন্ধু কিছুদিন আগে সচলে লিখেছিলো এই ইস্যুতে। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, জীবনের বিশাল একটা অংশ একইভাবে যাপন করেছি। এতো কাছাকাছি থেকেও কোনদিন জানতে পারেনি যে অভিজ্ঞতার কথা, সেটা আজ এতো বছর পর যখন শুনলাম বা নীড়পাতায় আসার আগে খসড়া হিসেবে পড়লাম, আমি ঐদিন প্রায় সারারাত ঘুমোতে পারিনি। আমাদের পরিবারগুলো আমাদের এমন ভাবে বড় করেছে, বড় করছে-- আমরা বলতেই শিখি না কিছু মুখ ফুটে। যেটা সবচেয়ে সজোরে বলা উচিত, সেটাই চেপে যাই, যাচ্ছি।

পেম-ভালবাসা একসময় বিরাট ট্যাবুর ব্যাপার ছিল। মেয়ে লভে পড়েছে শুনলে ঠেসে মার দেওয়া হতো, ছেলের গায়েও যে হাত উঠতো না, এমন না। এখন সময় এতো বদলেছে, ছেলেমেয়ের পছন্দের কেউ আছে টের পেলে বেশিরভাগ বাবা-মা হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন--যাক বাবা, ঝামেলা কমলো, দায়িত্বও।
যৌন সন্ত্রাস নিয়ে এই ট্যাবুও কাটুক। সরব হন। বলুন, বোঝান, লিখুন।

আর সন্তানের নিরাপদ শৈশব নিশ্চিত করার মতো পর্যাপ্ত বোধ না থাকলে আর 'হিসসস, এসব কথা কাউকে বলো না' টাইপের বোধ খাকলে নিয়েন না বাচ্চাকাচ্চা, প্লিজ।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

স্বপ্নহারা এর ছবি

তোমার সাথেই কেন এত এসব হবে- তুমিই খারাপ, কই আমাদের তো হয় না!- এই কথাগুলো সবক্ষেত্রেই এত পরিচিত কেন!!! এবং এগুলো বলেন আমাদের আপনজনরাই, বলেন মেয়েরাই, মায়েরাই!!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

খুবই দুঃখজনক এই ব্যাপারগুলো। বারবার এই বিষয়গুলো পড়ছি আর হতাশায় ডুবে যাচ্ছি। মন খারাপ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

(১) আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারা যে শিশুরা, মেয়েরা সবচেয়ে বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হয় এই বিষয়টা জানতেই অনেক দিন লেগে গেছে। পুরুষ হয়ে জন্ম নিয়েই যে এই সমাজে একটা প্রিভিলেজড অবস্থান পেয়ে গেছি এটা উপলব্ধি করতে একটা বয়স পর্যন্ত আসতে হয়েছে। উল্টাদিকে একটা মেয়ে মেয়ে বা নারী হয়ে ওঠার অনেক আগেই বুঝতে পারে সে এমন একটা সমাজে জন্মেছে যেখানে তাকে প্রতিনিয়ত ঠেকতে হবে। নিজে যেহেতু এইসব অবস্থার মধ্যে পড়িনি, ব্যাপারটার ভয়াবহতা হয়ত উপলব্ধিও করতে পারব না।

(২) ডিনায়ালের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে আমাদের। এই সমস্যাগুলোর মূল অনেক গভীরে। মেয়েরা কেন অর্ধেক সম্পত্তি পায় এটা নিয়ে কথা বলতে গেলে বেশিরভাগ সময়েই যে যুক্তিটা শুনেছি সেটা হলো ইসলামে যেটুকু দেয়া হয়েছে সেটুকুই পায় না, আপনাদের কাজ খালি ইসলাম নিয়ে কথা বলা, হিন্দু ধর্মে মেয়েরা কী পায় শুনি? যদি বলা হয় নারী সাক্ষী পুরুষ সাক্ষীর অর্ধেক কেন? তখন উত্তর আসে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অর্ধেক, আল্লাহ আমাদের তৈরি করেছেন উনিই ভালো জানেন এরকম আইন আমাদের কেন দিয়েছেন। আমরা কম বুঝি এসব নিয়ে প্রশ্ন করা আমাদের ঠিক না। আর রাস্তাঘাটে নির্যাতনের শিকার মেয়েদের কাপড়চোপড় নিয়ে পর্দাপ্রথার দোহাই তো আছেই। এইসব কথার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ হওয়া দরকার। কোনো নির্যাতন বা বৈষম্যের পক্ষে কেউ যখনই সমাজ বা ধর্মের দোহাই দিবে তাকে নগদে প্রাপ্য বুঝে দিতে হবে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

টিউলিপ এর ছবি

আমাদের দেশে যৌনতাকে এত হাশ হাশ চুপ চুপ করার কারণে বাচ্চাদের (ছেলে মেয়ে নির্বিশেষেই) কি পরিমাণ যে ক্ষতি হয়, সেটা বলে বোঝানো যায় না। বাচ্চাদের নিয়মিত খারাপ স্পর্শ সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া উচিত আসলে, আর বয়সের সাথে সাথে সেই শিক্ষা আপডেট করা উচিত। হয় তো শুরু করতে একটু অকওয়ার্ড লাগবে, কিন্তু সেই সামান্য অস্বস্তির মূল্যে বাচ্চাটি যে সুস্থ শৈশবটা পাবে, তার মূল্য অনেক বেশি।

আর তোমার সাথেই কেন এমন হয় ভিকটিম ব্লেমিং-এর একটা খুব ভালো উপায়। এটা যে কোন মূল্যে প্রতিহত করা উচিত।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

খেকশিয়াল এর ছবি

আমি আসলে সহ্য করতে পারি না। পড়ছি আর কুঁকড়ে যাচ্ছি। ছোটবেলার দেখা কিছু পিশাচের কথা মনে পড়লো।

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রচন্ড লজ্জা লাগছে।

রাসিক রেজা নাহিয়েন

রানা মেহের এর ছবি

এরকম একেকটা লেখা পড়ি আর চোখে পানি আসে।
এভাবেই বড় হতে হতে আমরা ভুলেই যাই এগুলো আমাদের প্রাপ্য ছিলনা।
মা বাবাতো সাহায্য করেনই না, উল্টো দোষ দেন ভিক্টিমকে।

আমি নিজেরো একটা সন্তান আছে। ঠিক করে রেখেছি তাকে এমনভাবে বড় করবো যাতে কেউ তার প্রতি নোংরা দৃষ্টিতে তাকালেও সে যেন ছুটে এসে আমাকে বলতে পারে আর ওই লোককে চিনিয়ে দিতে পারে।

লেখা চলুক।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আয়নামতি এর ছবি

এসব ঘটনা যতই পড়ছি মনটা কেমন বিষাদে ভরে যাচ্ছে।
আমরা বলিউডের কত কী অনুকরণ করি। তাদের ফ্যাশন ঢংঢাং প্রায় সবই।
অথচ যেটা করলে আমাদের সবার জন্য ভালো হয় সেটা থেকে নজর সরিয়ে রাখি। এই অনুষ্ঠানের মতো কোনো অনুষ্ঠান কী হয়েছে আমাদের? হয়ে থাকলে ভালো। আজাইরা টক শো বাদ দিয়ে এরকম অনুষ্ঠান বেশি বেশি হওয়া দরকার।
এটাতে বাচ্চাদের তাদের প্রাইভেট পার্টস সম্পর্কে ধারণা দেয়াসহ এসব স্হান কেউ অযাচিতভাবে স্পর্শ করলে কী করতে হবে
সুন্দর করে বলা হচ্ছে। সচেতন হই আমরা, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ একটা জীবন দেবার ব্যাপারে সরবও হই।

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

ঐ ব্যাপারটা মাকে বলিনি কিন্তু সে নিশ্চয়ই কিছু বুঝতে পেরেছিলো এবং অত্যন্ত বাজেভাবে তার সন্দেহটা প্রকাশ করেছিলো যে ‘আমার পিরিয়ড বন্ধ ক্যানো!’ যদিও কেন এভাবে এ প্রশ্ন করেছিলো বুঝতে পারিনি তখন, কিন্তু কিছুটা ধারণা করতে পেরেছিলাম। তাতেই নিজের ক্ষুদ্রতা, অবাঞ্ছিত মনে হওয়ার বোধগুলো আরো বেড়ে গিয়েছিলো। মা হয়তো চাইতেন তার সাথে আমি কিছু শেয়ার করি। কিন্তু আমার ভেতরে সেরকম ভরসার কোনো বোধ ছিলো না বা তিনি তৈরি করে দিতে পারেননি বলেই আমি কখনো তাকে কিছু বলতে পারিনি। যদিও খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম তবুও অন্তত যেটুকু বোনকে বলতাম সেটুকুও তাকে বলিনি কখনোই।

এই সমাজে মায়েরাও মেয়ের প্রতি যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান না। ফলে মেয়েটির মানসিক যন্ত্রণা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে।

বৃষ্টি স্নাত কবি এর ছবি

আমি আপনার লেখার সব টুকু বুঝিনি। হয়তো আপনি ইচ্ছা করেই অস্পষ্ট রেখেছেন। কিন্তু আমাদের সবার মিলিত এই সমাজের অবক্ষয়গুলো বুঝতে সমস্যা হয়নি। আমি খুব দুঃখিত আমার সবটুকু কষ্টের জন্য।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।