ভালোবাসা!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২২/০৬/২০১৫ - ১:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্যার অনন্ত জলিলের ক্ষত বিক্ষত হৃদয় প্রশ্ন করে, What is Love? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এর উত্তর দিতে পারে না। অনন্ত জলিলের কাছ থেকে আইডিয়া নিয়ে লিখে ফেলেছে গান, তোমরা যে বল দিবসও রজনী, ভালোবাসা, ভালোবাসা, সখী ভালোবাসা কারে কয়? এদিকে ফেইসবুকে এক বন্ধুর লাইককৃত একটা পোস্ট দেখে আর অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়লাম ভালোবাসা কি এটা জানার জন্য।

পড়লাম The Art of Loving। শুরুতেই প্রশ্ন। ভালোবাসা কি আর্ট নাকি তথাকথিত পড়ে যাওয়া (falls into)? অন্নদাশংকর রায়ের আর্ট বইটা পড়ে যে কারো আর্ট সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন হয়ে যেতে বাধ্য। ব্যাপারটা বোঝানো যাক। আর্ট কি? এই যে তুমি কথা বলছো, ঘুরছো-ফিরছো, জীবন-যাপন করছো, আসলে বলতে গেলে তোমার জীবনের সবকিছুই আর্ট, যদি আর্টের মতো ( চোখ টিপি ) হয়। এখন ভালোবাসাটাও যদি আর্ট হয় তবে তো ওটাকে আয়ত্ত করতে হবে যেভাবে মানুষ গান না ছবি আঁকা শিখে। আর যদি বাকীটা হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরকি! দেঁতো হাসি


ছবিটা নেট থেকে নেয়া।

ভালোবাসা তো বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এই যেমন বাচ্চার প্রতি মায়ের ভালোবাসা। যে ভালোবাসা নিঃস্বার্থ সেটাই বুঝি এটা। (The Giving Tree গল্পটা বোধহয় এটা পারফেক্টলি বোঝাতে পারবে।) মা তার বাচ্চাকে ভালোবাসবেই না কেন? এটা স্বাভাবিক ব্যাপারই তো। কিন্তু প্রশ্ন এসে যায় ব্যাপারটার মধ্যে স্বার্থ আছে কি না?
Why Is Sex Fun? The Evolution of Human Sexuality বইয়ের আলোকে দেখা যাক। মনে কর, তুমি তোমার জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করলে। ওখানে কিন্তু তুমি তোমার অর্থই দিলে না শুধু তুমি কিন্তু তোমার মেধা, সময় সবকিছুই দিলে। তাহলে কি ওটার প্রতি তোমার আলাদা রকমের ভালোবাসা কাজ করবে না? মায়েদের ক্ষেত্রেও তাই হয়। এখন কথা হচ্ছে বাবারা কেন ঠিক ওভাবে তার বাচ্চাকে ভালোবাসে না? আসলে ব্যাপারটা ঠিক একভাবে দেখলে হবে না। বিবর্তনীয় বা সামাজিক যেই দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখা হোক না কেন, ভালোবাসার প্রকাশ বাবা আর মায়ের একরকম না। যেটা আসলে বলার, ব্যাপারটা মোটেই এরকম না যে, মা তার বাচ্চাকে বেশি ভালোবাসে কিন্তু বাবা না।

এখন বাচ্চার দৃষ্টিতে দেখা যাক, সে কেন তার মা-বাবাকে ভালোবাসে? অন্য অনেক প্রাণি থেকে মানুষের পার্থক্য হচ্ছে, মানুষ খুব অসহায় অবস্থায় জন্ম নেয় এবং সে অনেকগুলো বছর সে ওরকম অসহায়ই থেকে যায়। অতএব তার প্রয়োজন তার মা-বাবাকে। তাহলে কি প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই মানুষ তার বাবা-মাকে ভুলে যাবে?

মানুষ তার স্রষ্টাকেও ভালোবাসে। তাকে ভালোবাসার একটা কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। অনন্ত জীবনের ব্যাপার আছে, আছে স্বর্গের ব্যাপার। তাহলে কেন মানুষ তার স্রষ্টাকে ভালোবাসবে না? স্রষ্টা তো তার সৃষ্টির উপকারই করার কথা।
এবার লুসাই আদিবাসী গোষ্ঠীর কথা ধরা যাক। তারা পাথিয়ানের পূজা যতটা ভালোভাবে করে তারচেয়ে ঘটা করে করে অপদেবতার পূজা। কেননা পাথিয়ান তো আর মানুষের ক্ষতি করবে না।

মা-বাবা বা স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসার ক্ষেত্রে একটা প্রশ্ন এসেই যায়। উপকার পাচ্ছে বলেই কি ভালোবাসার প্রকাশ? প্রশ্নটা প্রশ্ন হয়েই থেকে যাকনা!

গ্রিক দেবতা নার্সিসাস। অসম্ভব সুন্দর। নিজের রূপের প্রশংসা শুনতে শুনতে নিজেকেই সে ভালোবেসে ফেলে। তার মধ্যে অহংকার জন্ম নেয়। সে তার আশেপাশের সব মানুষকে অবহেলা করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সবাই তাকে পরিত্যাগ করে।
এই যে নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসা, আমিত্ব নিয়ে থাকা, এটাকেই বলে নার্সিসিজ্‌ম। মানুষের মধ্যে কি নার্সিসিজ্‌ম দেখা যায় না? একটা কথা তো শোনাই যায়, মানুষ নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে।
নার্সিসিজ্‌ম প্রসঙ্গে আর না বলি। ওটা বেশিই নেগেটিভ।

সেলফ লাভ। এটা কেন? এটা কি অপরকে ভালবাসতে না পারার অক্ষমতা নাকি স্বার্থপরতা? নিজেকে কি ভালোবাসা যাবে না? এদিকে বাইবেলে (Old Testament) আছে, প্রতিবেশীকে সেভাবেই ভালোবাস যেভাবে তুমি নিজেকে ভালোবাস।

ইরোটিক লাভ। (সরি ডিয়ার, বইয়ে এটাই আছে।) এই ইরোটিক লাভের ব্যপারে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ কিভাবে নাক, কান, গলা, চোখ, মুখ, চুল দেখে ভালোবাসে? শয়তানী হাসি
মানুষ ইরোটিক লাভ কেন করে? বলা হয়, মানুষ যখন নিঃসঙ্গতা অনুভব করে তখন সে ভালোবাসার মানুষ খুঁজে বেড়ায়। এবং যদি সে সফল হয় তবে সে নির্ভরতা খুঁজে পায়। একটা ইউনিয়নশিপের মধ্যে আসে।
ইরোটিক লাভের ক্ষেত্রে যেটা আসে সেটা হচ্ছে যৌনতা। সম্পর্কের গভীরতা আসার আগে বা পরের ব্যাপার। ভালোবাসাটা কি শুধু সেক্সচুয়্যাল সেটিসফ্যাকশ্‌ন নাকি অন্য কিছু? ওয়েল, যেটাই হোক না কেন, ভালোবাসাটা অত্যন্ত পবিত্র কিছু।

To love somebody is not just a strong feeling — it is a decision, it is a judgment, it is a promise. If love were only a feeling, there would be no basis for the promise to love each other forever. A feeling comes and it may go. How can I judge that it will stay forever, when my act does not involve judgment and decision?

ভালোবাসাটা যখন অন্ধ বা ডমিনেটিং পর্যায়ে চলে যায় তখন সেটা হয়ে যায় ক্ষতিকারক। মা বা বাবা যখন তাদের বাচ্চার উপর ভালোবাসার আধিপত্য বিস্তার করে, যেটা অনেকটা সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন দেখা যায় সেই বাচ্চাটা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বাবা মা মনে করছে তারা তাদের বাচ্চাদের ভালোর জন্যই করছে। ভালোবেসেই তো করছে। কিন্তু সেটা কতটুকু ভালো? কিছুদিন আগে যে ছেলেটা এস. এস. সি. তে এ প্লাস না পেয়ে আত্মহত্যা করল, সেটা তো ওটারই ফল। ভালোবাস, তার উন্নতিও চাও। কিন্তু এভাবে নাকি অন্যভাবে?
আবার যখন দেখা যায় বাচ্চাটা ভালোবাসার অত্যাচার থেকে বেড়িয়ে আসে তখন কষ্ট পায় বাবা-মা ই। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের "ইচ্ছের গাছ" পড়লেই অনুভব করা যায় ব্যাপারটা। (ইয়ে আমি বইটা পড়িনি, মুভিটা দেখে ফেলেছি। -_- )

বাবা-মার মধ্যে যখন ভালোবাসার ঘাটতি থাকে তখন তাদের সম্পর্ক খারাপ বা তিক্ততার পর্যায়ে চলে যায়। তখন সেটার প্রভাব তাদের বাচ্চাদের উপরও পরে। বাচ্চাটা তখন একটা আলাদা জগতে বাস করতে থাকে। কল্পনার জগৎ। সে জগৎ থেকে সে বেড়িয়েও আসতে পারেনা অনেক সময়।
সম্পর্কের টানাপোড়নে জন্ম নেয় সেন্টিমেন্টাল লাভ। একটা মানুষ, সে আছে বর্তমানে। অথচ সে পড়ে আছে অতীতের স্বপ্নময় (ভালোবাসাময়) দিনে বা স্বপ্ন দেখছে ভবিষ্যতের। হুঁউ! (করুণা থেকেও এটা জন্ম নেয় অবশ্য।)

আবার বাবা বা মায়ের (যেকোন একজনের) নেওটা হয়ে থাকা (কেন হয়? ভালোবাসার অত্যাচারেই হয়।) বাচ্চাগুলোর কথা চিন্তা করা যাক। এটা অনেক সময় মাতৃতান্ত্রিকতা বা পিতৃতান্ত্রিকতা তৈরী করে দেয়। দেখা যায় এটা তার পরিপূর্ণ বয়সের জীবনেও এর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সে যেমনভাবে বেড়ে উঠেছে দেখা যায় সেও অন্যের সাথে সেরকম ব্যবহার করছে। তাছাড়া নানা মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাও দেখা দেয়।

এই বইটা অনেক পুরানো। ১৯৫৬ সালের। এই জন্যই হয়তো ক্রাশ নিয়ে কিছু নেই। :v ফেইসবুকের শ'য়ে শ'য়ে পেইজ দেখলে হয়তো আরো একটা চ্যাপ্টার লিখে ফেলতেন। যাইহোক কোয়ারাতে চমৎকার একটা উত্তর দেয়া আছে। প্রশ্ন ছিল ভালোবাসা আর ক্রাশের পার্থক্য কি?

এই বঙ্গদেশের সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপারটা হচ্ছে ছেলেমেয়ের স্বাভাবিক সম্পর্ককে (ইরোটিক) ভালোবাসার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। আমি তো একবার জ্ঞানী মার্কা উপদেশও পেয়েছিলাম।

আচ্ছা সেই প্রশ্নের তো উত্তর দেয়া হল না? ভালোবাসা কি আর্ট নাকি ওটাই? পড়ে যাওয়া? উত্তর পেতে হলে তো বই পড়তে হবে!

বইয়ের নামঃ The Art of Loving
লেখকঃ Erich Fromm
গুডরিডস লিংক!
ডাউনলোড লিংক!
এই বইয়ের কিছু কিছুর ব্যাপারে আমার আপত্তি আছে। তার কিছুই বলা হল না। এই নেগেটিভ রিভিউটা ভালো লেগেছে।

*** ***

প্রথম ছবিটা অপুর সংসার থেকে আর পরেরটা অপুর পাঁচালী থেকে নেয়া। আমার খুব প্রিয় দুইটা মুভি।
ইয়ে, কিছু বোঝাতে চাচ্ছি না। দেঁতো হাসি

বাই দ্য ওয়ে, প্রেমের ব্যাপারে হতাশ? তুমি বোধহয় কখনও রিক্সা/ট্যাক্সির পেছনে তাকাওনি! তাকালে দেখতে পেতে, 'হতাশ হইও না, যদি তুমি প্রেমিক হও'!!

আর মনটন খারাপ না করতে জনৈক একটা গান শুনতে বলেছে। হাসি

মেঘপিয়নের ব্যাগের ভেতর
মন খারাপের দিস্তা..
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়.
ব্যাকুল হলে তিস্তা !.!

আর কিভাবে ভালোবাসবে? এই রমজান উপলক্ষে বিশেষ ছাড়! বিনামূল্যে শিখে নিতে পার হালাল ভালোবাসাবাসি!

- ইমতিয়াজ হাসান!

পাদটীকা

  • ১. ছোট্ট একটা গল্প। কয়েক মিনিট লাগবে পড়া শেষ করতে। গুডরিডস এর রিভিউগুলো দারুণ। দৃষ্টিভঙ্গির রকমফের দেখতে ভালো লাগে যে!
    ডাউনলোড লিংক!
  • ২. বইটার নাম এমন (কারো কারো ভ্রু কুঁচকাতে পারে বইকি!) বলেই হয়তো লেখক ভূমিকায় মোটামুটি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন বইটার বিষয়বস্তুর ব্যাপারে। সাফাত ভাইয়ের এই রিভিউটা পড়া যেতে পারে।
  • ৩. এটা পেয়েছি আবদুস সাত্তারের লেখা কাছের মানুষ, আপন জন বই থেকে। বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী গোষ্ঠীর (বইয়ে উপজাতি শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে।) পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে এখানে। বাচ্চাদের বই। পাতায় পাতায় ছড়ানো শিল্পী হাশেম খানের আঁকা এবং তোলা ছবি।
  • ৪.
    মানুষের জন্য সম্পর্ক প্রয়োজন, বাঁধন নয়। সন্তানের প্রতি বাবা-মার কর্তব্য, বাবা-মার প্রতি সন্তানের কর্তব্য, শ্বশুর-শ্বাশুরীর প্রতি পুত্রবধূর কর্তব্য, স্বামী ও সংসারের প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য - এতসব কর্তব্যের বাঁঁধন দিয়ে মানুষের জীবনকে অহেতুক জটিল আর যন্ত্রণাময় করে তোলা হয়েছে। সন্তান-স্নেহের মত স্বতঃস্ফুর্ত ভালোবাসাকেও পবিত্র দায়িত্ব, কর্তব্য ইত্যাদি নাম দিয়ে কিরকম কমার্শিয়ালাইজ করে ফেলা হয়েছে... বৃদ্ধ পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের পবিত্র কর্তব্য ও দায়িত্বের কথা বলে মানুষের জীবন থেকে নির্মল ভালোবাসাকে পঙ্কিল করে তোলা হয়েছে। এতসব বাঁধনের খেলা না থাকাই ভালো। যা থাকবে তা হল, স্বতঃস্ফুর্ত ভালোবাসা, মমতা, দায়িত্ববোধ।

    জাহানারা ইমামের নয় এ মধুর খেলা উপন্যাস থেকে।

  • ৫. বইয়ে বলা আছে, ভালোবাসতে হলে নার্সিসিজ্‌ম ত্যাগ করতে হবে।
  • ৬. সেলফ লাভ এবং লাভ অব গড, এই দুই ভালোবাসা নিয়ে অনেক কিছু আছে। প্রাচীন থেকে আধুনিক নানা তার্কিকের কথা, নানা প্যারাডক্সের কথা। এ সম্বন্ধে এখানে বললে পড়ার মজা চলে যাবে।
  • ৭. এই যৌনতা নিয়ে অনেকের চুলকানি আছে। তারেক অণুর লেখাটা যে কেন তারা পড়ে না?

মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

ভাইটু এক তরফা ভালোবাসা বাদ গেছে তু!
মধ্যবিত্তের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারার ব্যাপারী, ন্যাকা বোকা নায়িকার স্রষ্টা এ সম্পর্কে বলেছেন

সত্যিকার ভালবাসাগুলো এক তরফা হয়। একপাশ থেকে একজন নিজের থেকে বেশি
ভালবেসে যাবে অন্যদিকে শূন্য, তবুও তারা খুব ভালবেসে যায়

বইয়ের নাম জান্তে চেয়ে লজ্জা দেবেন না।
ইহা আমি খোমাবই থেকে টুকলিফাই করেছি দেঁতো হাসি

পেমে ছ্যাচা খাওয়া পাবলিকের 'ভালোবাসা' কী? জনিত উত্তর কিন্তু বেশ অভিমানী। তার/তাদের ভাষ্য হলু

Love is a hypothetical entity invented by morons.

নিজে এই গোত্রের হলেও ইহাতে দ্বিমত পোষণ করি। চোখ টিপি অালুচনা চলুক। হুড়ো দিয়ে যাবার আগ্রহ থাকলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

১৯৫৬ সালে বোধহয় একতরফা ভালুবাসা ছিল না। :3

এটা পড়ে দেখেন! অশেষ নেকী হাসিল করেন এই রমজান মাসে। দেঁতো হাসি

ছ্যাকা প্রেমের ব্যাপারে শরৎবাবুকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে। ইয়ে আপনি আত্মা-টাত্মা নামাতে পারেন?

- ইমতিয়াজ

আয়নামতি এর ছবি

বললেই হলো ছিল না! সবই থাকে সমাজের গুপন স্তরে ঘাপটি দিয়ে।
দ্বিধা কিংবা ডরের কারণে সামনে আসতে পারিনাই এই যা।
আজকের মতো মুখরা সময়ের পাল্লায় ১৯৫৬ কে মাপলে হবে না হে!
নেকি হাসিলের দরকার আমার! পড়তে হবে তাই দেঁতো হাসি
রবিবুড়ো পারেন তাকে ডাকা হোক চোখ টিপি

আয়নামতি এর ছবি

আয়হায়! এই গ্রুপে যুগ দিতে হয় দেখি। পড়েটরে এত্ত আবেগ ভর করলো রে!
কিস্যু বলতে পারছিনে এখন। কান্না পাচ্ছে খুউপ। ওঁয়া ওঁয়া

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কিছু কিছু বুক রিভিউ আছে যেগুলো পড়লে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার খাতায় 'আবদুল্লাহ্‌ উপন্যাসের আলোকে তৎকালীন মুসলিম সমাজের অবস্থা বিস্তারিত বর্ণনা কর' জাতীয় প্রশ্নের উত্তর বলে মনে হয়। আপনার এই রিভিউটা (এবং আগেরটাও) সেই ধারার বাইরে - মজাদার, আগ্রহজাগানিয়া। বাড়তি লাভ হচ্ছে যে লিঙ্কগুলো দিলেন। তবে কেবল ভালো ভালো কথা বললেই তো হবে না, বইটার বা লেখকের সীমাবদ্ধতার কথাও বলতে হবে। আরো বলতে হবে লেখকের ভাবনার সাথে যেখানে আপনার ভাবনা টক্কর খায় সেসব নিয়ে।

বইয়ের রিভিউ সবাই লিখতে পারেন না, আপনি পারেন। নিয়মিত লিখে যান, বইয়ের রিভিউ বা অন্য কিছু।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

হুঁ টক্করের জায়গাগুলোয় হাত দেয়া উচিৎ ছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মনে হল, লেখক টিপিক্যাল পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে বের হতে পারেন নি। তবে এটাকে আমি বিবর্তনীয় বা সাইকোলজির দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেহেতু এ বিষয়ে আমার পড়ালেখা মোটেই নেই, সেহেতু ওটা বাদ দিলাম।

আয়নামতি এর ছবি

বোঝো! পাণ্ডবদার মন্তব্যটা পড়লাম। তারপর ক্যাট দেখে বোধগম্য হলো এটা একটা রিভিউ!
এরপর তো আর নিম্নমানের পাঠক হিসেবে না হে অকাটমূর্খ পাঠকের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া লাগে আমার গলায়। মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্যাট দেখে বোধগম্য হলো

বিড়াল!! অ্যাঁ

আমি অতি নিম্নমানের পাঠক! এরকম লেখা একটা টি-শার্ট পড়তে পারেন এখন থেকে। যা ফালতু বই পারেন আর লিখেন, বলার মত না!

- ইমতিয়াজ (নাম দেয়ার কথা মনেই থাকে না দেখি)

অতিথি লেখক এর ছবি

দায়সারা নয় খুব গুছিয়ে সাজান একটা লেখা পড়লাম। এত স্বল্প পরিসরে এরকম লেখা হয়না সচরাচর। ভালোবাসার প্রবল জ্যোৎস্না চলতে থাকুক।

---------------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/2015/06/sonnet-1.html

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রবল জ্যোৎস্না চললে তো সমস্যা। দেখা যাবে অন্যদিকে প্রবল অমবস্যা। চোখ টিপি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

খুব চমৎকার একটা রিভিউ পড়লাম। একটা বিস্তারিত কমেন্ট লিখেও ভুল করে ডিলিট করে ফেলেছি। পরে আবার লেখার চেষ্টা করবো। চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারও হয়েছিল এক-দুইবার এরকম। মেজাজ খারাপ হয়ে যায়, তাই না?

অতিথি লেখক এর ছবি

`‌What is love' প্রশ্নটা এখন আমাকেও তাড়া দিয়ে যাচ্ছে যে! অনন্ত জলিলের ঠিকনা দেন দিহি। এত্ত ভালো করে ভালবাসার কথা লেখার কী দরকারটাই বা আছিল আপনার???

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

জলিল ভাইয়ের ওয়েব সাইটের লিংক দিয়েছিলাম। এডমিন কমেন্ট গায়েব করে দিয়েছে। সম্ভবত নিজেই message দিয়ে দেখা করে এসেছে। খাইছে

- ইমতিয়াজ

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

ভালবাসার সংজ্ঞা কবে নাগাদ ঠিক জানতে পারব তা জানি না- তবে আপনার অস্থির এই বিশ্লেষণটা আগ্রহের সেই পারদকে আরেকটু উপরে নিয়ে গেছে.....এমন ঝরঝরে মধুর সাতকাহন অনেকদিন পড়া হয়নি!! চোখ টিপি

স্থিরচিত্রের মুভি দু'টো আমার অসম্ভব প্রিয়দের অন্যতম....প্রথমটায় মৃত্যুর খবর শোনার পর অপুর পাগলামী আর দ্বিতীয়টায় মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়িতে বউয়ের ব্যবহার্য ফেরত দিতে যাবার সময় অপুকে বড্ড অসহায় লাগে- করুণ মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

অভিজিৎ রায়ের ভালোবাসা কারে কয় পড়তে পারেন।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সাজানো-গোছানো সুখপ্রদ রিভিউ। পড়ে সুখ হলো।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

এক লহমা এর ছবি

লেখাটা পড়তে বড্ড খাটুনি গেল! একটা পোস্ট ত নয়, পোস্টের গাছ। তবে খাটুনিটা সার্থক। সময়টা ভাল কাটল। দেঁতো হাসি হাততালি

জাহানারা ইমাম-এর লেখা থেকে উদ্ধৃতিটি অসাধারণ!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

বইটা পড়েছিলাম লাইব্রেরি থেকে এনে। পুরো বইটা ঝকঝকে, দাগমুক্ত থাকলেও ওই ক'টা লাইন আন্ডারলাইন্ড ছিল।
অসাধারণ উক্তি, আমি কয়েকবার ব্যবহার করেছি।

মাসুদ সজীব এর ছবি

সচলে আপনি খুব একটা বোধহয় লিখেন নি কিন্তু আপনি যে বড় মাপের পাঠক সেটি গুডরিডসেই জানি। আমার গুটি কয়েক বন্ধুর মাঝে সেখানে আপনি একজন :)। আপনার লেখা রিভিউ সেখানে পড়েছি বলে মুগ্ধতায় ডুবে যাইনি, কারণ আমি জানি আপনি পড়ার পরিধি যেমন বিস্ময়কর তেমনি রিভিউ লেখার ক্ষমতাও দুর্দান্ত। তবে আপনি যে সচলের গুপ্ত পাঠক সেটা জানা ছিলো না। রিভিউ ছাড়া অন্য ধাঁচের/বিষয়ের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম। দেঁতো হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার ধারণা আপনি Wallflower। গুডরিডস এ আমি আপনার প্রথম বন্ধু ছিলাম। কি অসাধারণ লিখেন! বিশ্লেষণধর্মী লেখা। এত্তো ভালো লিখেন কিভাবে? ^_^

তিথীডোর এর ছবি

ইমতিয়াজ মিয়া, আমাকে মনে হয় ঠিক চিন্তারেন নাই এখনো। খিক খিক। খাইছে

সচলে নিয়মিত হচ্ছেন দেখে খুশি হলাম। শাখাওয়াতকেও ভজিয়ে-ভাজিয়ে নিয়ে আসতে পারলে হতো, পুলাটার লেখার ধার সেইরকম!
লিখতে থাকুন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

হে হে গড়াগড়ি দিয়া হাসি

কমেন্ট করতে পারতাম না বলে কি পড়তাম-ই না? আপনার ডাবল ডেকার রোড বলা দেখে আমারও সি আর বি 'র রোডটাকে ওভাবে বলা অভ্যেস হয়ে যাচ্ছে। (পাথরঘাটা আর বাতিঘর বাদে ওটাই আমার প্রিয় জায়গা ^_^ )

শাখাওয়াত ভাইকে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি। আমি যেভাবে আসলাম তাকেও সেভাবেই আনানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ আসবে কেউ আসবে না, তা হবে না, তা হবে না। দেঁতো হাসি

(You are supposed to know about it, I think) এখানে কমেন্ট করা যাচ্ছে না কেন দেখেন তো।

তিথীডোর এর ছবি

সচল নীতিমালা ভঙ্গের দরুণ উক্ত পোস্টটিতে কমেন্ট করার সুযোগ রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছিল বলিয়া।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তারেক অণু এর ছবি

ভালো লাগল-

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।