ব্রিটিশ জাদুঘরের প্রাচীন সংগ্রহশালার বিশেষ কক্ষে দাড়িয়ে আছি, সেখানে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘরটির সর্বাপেক্ষা প্রাচীন বস্ত তাঞ্জানিয়ার আদিমানুষের ব্যবহার করা ১৮ লক্ষ বছরের প্রাচীন প্রস্তরকুঠার আছে, ইউরোপের প্রাচীন ফরাসীদের তৈরি ম্যামথের দাঁতের তৈরি ১৩,৫০০ বছর আগের অপূর্ব শিল্পকর্ম আছে, এমন অনেক কিছুরই মাঝে ছিল এগার হাজার বছর আগে তৈরি আইন শাখ্রির যুগল (Ain Sakhri lovers ) ভাস্কর্য, এখন পর্যন্ত আমাদের জানা মতে এটি বিশ্বের প্রাচীনতম যৌনক্রীড়ার ভাস্কর্য। বেশ ভিড় সেটার সামনে, সবাই উঁকিঝুঁকি মেরে বোঝার চেষ্টা করছে যে আসলেই মানুষ দুইজন কী করছে। এমন সময় দেখি দুই পিচ্চি, বোঝা গেল ভাইবোন, মূর্তিটি দেখে অবিশ্বাসের স্বরে তাদের মাকে বলল- ১১,০০০ বছর আগের ভাস্কর্য এইটা! মা উল্টো প্রশ্ন করলেন, বলতো মানুষ ২টা কী করছে? বছর ছয়-সাতেকের পিচ্চি মেয়েটা মুখে আঙ্গুল পুরে মুহূর্তদুয়েক চিন্তা করে সুরেলা কণ্ঠে বলে উঠল- They are making babies !
( ছবিটি ব্রিটিশ জাদুঘরের ওয়েব পেজ থেকে নেওয়া)
তার মা বেশ খুশী হয়ে বললেন, বাহ, তুমি ধরতে পেরেছ! পরের প্রশ্ন করল ক্ষুদে দেবদূতটি, বেবী কোথায়? মা আবার উত্তর দিলেন- মায়ের গর্ভে, নির্দিষ্ট সময় পরে বাহির হবে, এই কয় মাস সে মায়ের পেটেই বেড়ে উঠবে।
তাদের কথোপকথনে আর মন নেই আমার, মনে পরে যাচ্ছে তার চেয়ে দ্বিগুণ বয়সেও বেবী কোথা থেকে আসে সেই রহস্যে হাবুডুবু খেয়েছি অসংখ্য দিনরাত্রি। শেষে স্কুলের বইতে আদিম মানুষের ছবি দেখিয়ে বড় ভাই বলেছিল সে নাকি ঐ আদিম মানুষ, বাবা-মা তাকে বন থেকে নিয়ে এসেছে সভ্য করবে বলে! আর আমি? কোত্থেকে এলাম? একবার শুনি আকাশ থেকে, একবার শুনি আল্লাহ দিয়েছি, আবার শুনি কুড়িয়ে পেয়েছে! আবার বন্ধুরাও একই কথা বলে! জীবন বড়ই জটিল দেখি!
সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছিল বিদ্যুৎ মিত্র নামের আড়ালে স্বয়ং কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা অসাধারণ এক বই যৌনসঙ্গম, যদিও তা পরবর্তীতে যৌন বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান নামে প্রকাশিত হয়, ফ্ল্যাপে লেখা ছিল কিশোরদের জন্য প্রকাশিত এক মনোরম সুখপাঠ্য বই। শুধু কিশোর কেন? কিশোরীদের জন্য কি ব্যাপারটা আলাদা? সেইখানে প্রাঞ্জল ভাষায় কাজীদা বলেছেন বইটি তিনি লিখেছেন বড় ছেলের জন্য, যৌনবিষয়ে সাধারণ বিষয়গুলো সেই সমাজে না জানার জন্য কৈশোর যেমন বিষময় হয়ে গিয়েছিল তার, যেন ছেলের ক্ষেত্রে তেমন না হয়, সে যেন স্বাভাবিক জ্ঞান এবং বোধ নিয়েই বেড়ে ওঠে সাবালকত্বের দিকে।
আমাদের রক্ষণশীল সমাজে সেক্সের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে জানার উপায় মাত্র ২টি, অকালপক্ক গৃহকর্মী অথবা ইঁচড়েপাকা বন্ধুবান্ধব। এবং প্রায় ১০০% ক্ষেত্রেই তারা নিজেরাই জানে ভুল, যেহেতু শিখেছেই ভুল, তার সাথে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আরেকটু রঙদার করে জানিয়ে দেয় নিজের বিশাল জ্ঞান- ভুলের পরিমাণ বাড়তেই থাকে জীবনের বেসিক একটি বিষয় নিয়ে। হয়ত পাড়ার মুদি দোকানদারের ছেলেটি নিজের সুবিশাল অভিজ্ঞতার ঝোলা খুলে ধরে মাঝে মাঝে কনডম বিক্রির সুবাদে, হয়ত পাড়ার বখাটে বড় ভাই অশ্লীল ভাবে কোন অভিজ্ঞতার কথা বলে চলে মুখে উদ্দামতা নিয়ে, হয়ত অসুস্থ কোন শিশুধর্ষকামীর হাতেই হয় এই ইন্সটিনক্টের হাতেখড়ি। ভুল সবই ভুল, তাহলে সঠিক পথে উত্তরণের উপায় কী?
শিক্ষা, একমাত্র বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, যা স্কুলে শেখানো হবে বাল্যকালের প্রয়োজনীয় বয়সে।
আমাদের সময়ের স্কুলের সিলেবাসে প্রায় কিছুই ছিল না এই নিয়ে, জীববিজ্ঞানের বইতে ক্লাস নাইট বা টেনে যাওবা ছিল, ক্লাসে সেটা এড়িয়ে যাওয়া হত। এইভাবে হেঁজিপেঁজি করে যৌনতাকে এড়িয়ে যাবার কিছু নেই, এড়িয়ে যাওয়া যায়-ও না। অন্তত বয়ঃসন্ধির আগেই বা সময়কালেই শারীরিক পরিবর্তনগুলো কেন হচ্ছে এবং সেগুলো যে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং শারীরিক সুস্থতারই পরিচায়ক তা বুঝিয়ে বলা উচিত নিজেদের মানসিক পীড়ন থেকে রক্ষা পাবার জন্য।
গার্হস্থ্যবিজ্ঞানের বইতে উঁকি দেবার সুযোগ তেমন হয় নি কো-এডুকেশন স্কুলে পড়া স্বত্বেও, বরং অন্যস্কুলের বড় ভাইরা সারাজীবন খুঁচিয়ে যেত- মেয়েদের সাথে ক্লাস করিস, খুব মজা না! মজার কী আছে! মেয়েদের সাথেই তো স্কুলে যাই, ক্লাস থ্রি পর্যন্ত একসাথে পড়লামও, টিফিনে চিল্লাপাল্লা করে লুকোচুরি খেললাম, এই নিয়ে অন্যরা ভেংচি কাটে কেন কে জানে! কিন্তু এখন জানি কেন তারা এমন মন্তব্য করত, যেহেতু আমাদের সমাজে ছেলেমেয়ের বন্ধুর হবার বা মেলামেশার সম্ভাবনা সবসময়ই খুব কম থাকে, অনেকটা বঞ্চনা থেকে, হয়ত ক্ষোভ থেকে, হয়ত ফ্রয়েডীয় দুঃখবোধ থেকেই এই ধরনের কথাগুলো আসে। যাই হোক, শুনেছি মেয়েদের শরীরের অন্যতম স্বাভাবিক জিনিস, শারীরিক সুস্থতার পরিচায়ক পিরিয়ডকে অনেক জায়গাতেই আবছা ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি কেন হয়, কিভাবে হয়, হলে কী করা উচিত সেগুলোর বিস্তৃত ব্যাখ্যাতে না যেয়ে একাধিক বইতে এমন উল্লেখও দেখেছি যে একে এক ধরনের অসুস্থতা বলেই দেখানো হয়েছে, এই সময়ে মেয়েরা যেন বাড়ীতেই থাকে, এটা না করে, সেটা না ধরে এমন ধারণাই চলে এসেছে অনেক দিন।
ধর্মবিষয়ক নানা বইতেও দেখেছি সরাসরি বলে হয়েছে পিরিয়ড বা ঋতুচক্র চলার সময়কে অপবিত্র কাল বলে সেই সময়ে সঙ্গমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, শরীর থেকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বেরিয়া যাওয়া রক্তকে খারাপ রক্ত বা অপবিত্র রক্ত বলা হয়েছে ( বাচ্চা গর্ভে থাকা অবস্থায় নারীর ঋতু বন্ধ থাকে দীর্ঘ সময়টুকু, সেই রক্ত দিয়ে বেড়ে ওঠে, পুষ্ট হয় গর্ভস্থ ভ্রূণ, জগতের সব মানুষই সেই তথাকথিত অপবিত্র রক্তের তৈরি তাহলে! এই ভ্রান্তিটুকু কেন যে কোন শিক্ষক অভিজ্ঞতা বা বইয়ের সাহায্যে ভেঙ্গে দেন নি তা এক অপার রহস্য!) গত মাসে এক ইরানি কিশোরী এসেছিল ফিনল্যান্ডের বাসায়, তার পরিবার সদ্য এসেছে এই দেশে, কথায় কথায় সে স্কুলের এক বান্ধবীকে জানাল যে প্রতি মাসে তার ভিতর থেকে রক্তপাত হয়, কেন হয় সে জানে না! মাঝে মাঝে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, কিন্তু তার মা-কে এগুলো বলা স্বত্বেও মা শুধু বলেছিলেন বাড়ীতে শুয়ে থাকতে, ব্যথা সহ্য করতে, এবং গ্রহণযোগ্য কোন ব্যাখ্যা দেন নি এই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কর্মের! ফলে মেয়েটি ভুগছিল বিষণ্ণতায় এবং হীনমন্যতায়। তার অভিজ্ঞতা শুনে মনে পড়ল বছর কয়েক আগে মধ্যরাতে আমার তাইওয়ানিজ বান্ধবী সুং ডর্মের দরজার করা নেড়ে বলেছিল তার ঋতুকালীন কিছু মেয়েলী সমস্যার কারণে প্রচণ্ড পেটব্যথা, যদি গাড়ী করে তাকে ঔষধের দোকানে নিয়ে যেতে পারি এই কারণে এসেছে সাহায্যের আশায়। প্রায় একই বয়সের দুই তরুণী কতটা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বেড়ে উঠেছে একই বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ উল্টো মানসিকতায়, একজন স্কুলের শিক্ষা থেকে জানে এটা স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক, আরেকজন ভয় পাচ্ছে যদি এটি তার অপূর্ণতা বা অসুস্থতা হয়।
ছেলেদেরও বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ের শুরু হওয়া ঘুমের মাঝে বীর্যপাতকে বলা হোত স্বপ্নদোষ! আরে বাবা একটা ১০০% প্রাকৃতিক কর্ম, এখানে দোষের কী আছে ! কিন্তু ঐ যে জ্ঞানের অভাব, সব বালক আমসি মুখে জানার, বোঝার চেষ্টা করে তার কী দোষ! সবজান্তা এক বন্ধু স্কাউট ক্যাম্পের তাবুতে বসে বলে সে শুনেছে আমরা ঘুমানোর সময়ে বেহেশতের পরীরা এসে যৌনকর্ম করে, যার ফলে আমাদের অজান্তেই থকথকে গাঢ় তরল বেরিয়ে আসে শরীর থেকে, যার স্পর্শে শূন্যে মিলিয়ে যায় পরীরা, এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নাই! আরেক দল ততদিনে আবিস্কার করে ফেলেছে নিজের চাক নিজেরই ভেঙ্গে মধু আহরণের উপায়, তাদেরও জ্ঞান বড় ভাইয়ের দল থেকে প্রাপ্ত, এর বাহিরে কিছু জানে না, তার উপর চাক ভাঙ্গার সেই উপায়কে নিষেধ করা হয় সবখানে- ধর্মের বই থেকে, হাতুড়ে ডাক্তারের চেম্বারে, তাহলে কী উপায়!
আমার সবচেয়ে নিরীহ বন্ধুটা একদিন সরল মুখে অবলীলায় বলে ফেলল তার স্বপ্নদোষ হয় না ( তার মানে তুই ব্যপক মৈথুন করিস, নিজের বা অন্যের সাথে_?), আবার রাগের মাথায় বলে ফেলল – সে মৈথুনও করে না! তখন তাকে বোঝানো হল, এই দুইটা জিনিস একবারে হওয়া সম্ভব না, যে কোন একটা হতেই হবে যদি তুমি স্বাভাবিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হও। এ অনেকটা একটা ড্রামের মত যেখানে পাইপ দিয়ে তরল আসতেই আছে, ফলে নির্দিষ্ট সময় পরে উপচে পড়বেই, নাকি? ব্যাখ্যা শুনে ছোকরা অবশ্য রণে ভঙ্গ দিয়ে বলল সে ভেবেছিল এই দুটার একটাও স্বীকার করলে তার চরিত্রের স্থলন নিয়ে কথা উঠবে! অথচ বিদ্যুৎ মিত্রের সেই অমূল্য বইটাতে ঠিকই লেখা ছিল ব্রহ্মচর্যের বুলি শুনিয়ে তুমি সেই সময়ের চিত্তকে শান্ত করতে পারবে না, উপায় খুব বেশী নেই তোমার ঢাকগুড়গুড় সমাজে।
চাণক্য সেনের বিখ্যাত বই পুত্র পিতাকে বইয়ের সেই পুত্র কেতুর মত বাবা তো আর সবাই পাচ্ছে না যে কিনা ছবি এবং তথ্যসহ স্বাভাবিক যৌনতা নিয়ে শিক্ষা দেবে নিজ পুত্র-কন্যাকে, অথচ সেটাই অনেক কাজের কাজ হত, অনেক শোভন হত, অনেক কৈশোর দুঃস্বপ্ন থেকে রক্ষা পেত সব ছেলে-মেয়েরা, শাপশাপান্ত আর করতে হতে না সেই ইঁচড়েপাকা বন্ধুদের ভুল তথ্য দিয়ে জীবন বিষময় করে তোলার জন্য।
ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা টানা ৩ বছর বিশ্বের সবচেয়ে সেরা বলে স্বীকৃতি পেয়েছে ( কলেজ লেভেল পর্যন্ত), সেখানে খবর নিয়ে জানলাম বয়ঃসন্ধির আগেই ছেলে-মেয়েরা স্কুলে জ্ঞান লাভ করে সেই সময়ের শারীরিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে। তারপরও যদি কারো বিশেষ সমস্যা হয়, বিশেষ করে হঠাৎ শিশুরা যখন সেক্স নিয়ে জানতে পারে তখন তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে, তাদের মনে হয় আমার গুরুজনরা এমন কাজ করতে পারে কি, আমার শিক্ষকেরা? নিশ্চয়ই না, কোথাও কোন ভুল হচ্ছে! আবার সঠিক তথ্য এবং সময়ের মাধ্যমেই জীবনরহস্য উদ্ঘাটিত হলে থিতিয়ে আসে ভুল আবেগের বহিঃপ্রকাশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নত সকল দেশেই এই নীতিই গ্রহণ করা হয়, তাই ঘুরে ফিরে কেতুর কথাই মনে আসে, যখন সে বলে সেক্স নামের সেই দানবের ডালপালা কিন্তু আমরাই ছেঁটে দিয়েছি একে নিয়ে ব্যপক প্রচার এবং গবেষণার ফলে, একে নিয়ে আমরা কথা বলি, একে আমরা উম্মুক্ত রাখি নীতি বজায় রেখেই, একাকী আঁধারে আমার মনে পশুর মত হানা দেয় না সে, এটুকু উম্মুক্ত করতে পেরেছে যৌনতাকে আমাদের প্রজন্ম।
এখানে একটা মহাগুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার- শিশুটি যদি বড় হয়ে সমকামী অথবা উভকামী বা কামহীন হয়? হয়ত মনে আছে হুমায়ূন আহমেদের মিসির আলীর একটি বই (সম্ভবত আমি এবং আমরা)য়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র তন্ময় নামের তরুণ ছিলেন বৃহন্নলা বা হিজড়া, কিন্তু তার এই প্রাকৃতিক কারণেই ছোটবেলায় নিজের মা তাকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করে, ফলে হীনমন্যতাবোধ থেকে সে পরিণত হয় এক ভয়াবহ সিরিয়াল খুনিতে। এই মহা গুরুত্বপূর্ণবিষয়ে জ্ঞানদান করা বাল্যকাল থেকেই জরুরী, মহাজরুরী।
আমার সমকামী মেক্সিকান ভাই ইসাইয়াস সেরণাকে লিখেছিলাম এই পোস্টে, সে নিজেও আমার মতই রক্ষণশীল সমাজে বড় হয়েছে, কাউকে বলতে পারে নি যে সে একজন সমকামী, তার জৈবিক আকর্ষণ একজন সমলিঙ্গের প্রতি, সমকামিতা কোন অপরাধ নয় এটা প্রাকৃতিক ব্যাপার ( বেশী জানতে চাইলে অভিজিৎ রায়ের লেখা সমকামিতা বইটা পড়ে দেখতে পারেন), কিন্তু একজন সমকামী শিশু কী ভাবে বড় হয় আমাদের সমাজে? তার মানসিক জগত কতটা সুস্থ থাকে? এক বন্ধুর আত্মীয়কে দেখেছিলাম, ৫০ ছুঁই ছুঁই লোকটি কেঁদে ফেলেছিলেন বলতে বলতে যে উনি সমকামী, কিন্তু সমাজের চাপে বিয়ে করেছিলেন, ৩ সন্তানের জনক, কিন্তু নিজেও সুখ পেলেন না সারাজীবন, সবচেয়ে বড় কথা তার স্ত্রীও কোনদিন সুখ পেল না। এই সমাজ কী উপকারে আসল তার পরিবারের?
আরেকটা ব্যাপার দেখেছি অনেকেই গুলিয়ে ফেলে- সমকামিতা এবং শিশুকামিতা। সমকামিতা কোন অপরাধ নয়, কিন্তু শিশুকামিতা, শিশুর উপরে যৌনঅত্যাচার করা ভয়াবহ ধরনের অপরাধ। হুমায়ূন আহমেদের ঘেঁটুপুত্র কমলা দেখে অনেকেই সমকাম বা উভকামকে বিকৃত রুচির বলে চিহ্নিত করেছেন, কিন্তু মূল বিষয়টা হচ্ছে শিশুকাম, একজন শিশুকে সেখানে নির্মম ধর্ষণ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। একজন শিশুকেই বেছে নিতে দেওয়া উচিত সে কী চায়, আপনি যদি ভ্যাটিকানের গির্জায়, তিব্বতের বৌদ্ধ গুম্ফায় বা বাংলাদেশের মাদ্রাসায় একজন অবুঝ শিশুকে নিপীড়ন করে যৌনতার ভুল শিক্ষা দেন, তার জীবন নষ্ট করে দেন অঙ্কুরেই- আপনার অপরাধ নরহত্যার সমতুল্য।
আর আমাদের সমাজে বিকৃত এই কামনার শিকারের সংখ্যা যে কত বেশী তার কোন লেখাজোখা নেই। বাংলাদেশের অধিকাংশ বন্ধুর ( ছেলে এবং মেয়ে) কাছেই শুনেছি শিশুকালে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে তারা নিজের অজান্তেই, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজের আত্মীয়ের কাছে। কেউ বেড়াতে এসেছে বাড়ীতে, দিলেন আপনার নিস্পাপ শিশুর সাথে এক বিছানায় থাকতে, হয়ত কেউ পশুর রূপে দিল তার দেহ –মনে আতংকের বীজ বুনে, যা সে কাউকে বলতে পারেনা, সারাজীবনই বয়ে চলে এক অদমনীয় আতংক নিয়ে। নিজের বাড়ন্ত শিশুকে অন্তত এটুকু শিক্ষা দিন যাতে কেউ অসভ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করলে যেন যে বলে এটা করবা না, এটা খারাপ, তুমি পচা। এই শিক্ষা দিতে নিজের শিশুর কাছে লজ্জার কিছু নেই, হয়ত এটাই তাকে রক্ষা করবে ভয়াবহ কোন ঘটনা থেকে।
এখন পর্যন্ত আমাদের সমাজে যৌনতা অবদমনের সমাজ, তা চলছে সবখানে, অথচ এই নিয়ে কথা প্রকাশ্যে বলা নিষেধ ( জনসংখ্যা এই কারণেই মনে হয় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে!), যেটা ছিল সারাবিশ্বেই, এখন সময়ের সাথে প্রাপ্তজ্ঞানের মাধ্যমে পরিবর্তিত হচ্ছি আমরা আলোর দিকে, ভারতের মত রক্ষণশীল সমাজেও বিবাহপূর্ব লিভটুগেদার বৈধ বলে রায় দিয়েছে আদালত, আমাদের দেশেও বাড়ছে নিজের পছন্দ মত জীবনসঙ্গী বেছে নেবার প্রবণতা। কিন্তু আমরা যেন মনে রাখি যে আমাদের সারা জীবনের শেকড় কিন্তু প্রোথিত আছে আমাদের শৈশবে, সেই শৈশব যেন কিছু কদর্য মানুষের আক্রমণে, ভুলে মানুষের শিক্ষায় নষ্ট না হয়। যৌনতার যে তথ্যগুলো জানা থাকা অতি জরুরী তা যেন জানতে পারে আমাদের পরের প্রজন্ম বিদ্যালয়ে এবং বাড়ীতে, সঠিক সময়েই।
মন্তব্য
আসলেই শৈশব থেকেই শেখা উচিত
--
রুদ্র সমুদ্র
ঠিক
facebook
আমার ভাগ্নের জন্মের সময় আমার বয়স ছিলো দশ। বাড়িতে আনার পর আমার প্রশ্ন ছিলো, 'ও যে ছেলে তা তোমরা বুঝলে কেম্নে? '
facebook
দুঃখের বিষয়, আজাইরা ট্যাবুর(সমকামীতাই বলেন, আর বাপ-মা-সমাজের অমতে "অবৈধ" প্রেমই বলেন) শিকার হয়ে আজ পর্যন্ত্য যতগুলা মানুষ সমাজের হাতে আপনার ওই বন্ধুর আত্মীয়ের মত একটি পোটেনশিয়ালি সুখী জীবন হারিয়েছে, অথবা আক্ষরিক অর্থেই প্রাণ হারিয়েছে, তাদের কারও মেটাফরিক ও আক্ষরিক হত্যার বিচার কখনও হবে না। একটা-দুইটা মানুষ অপরাধ করলে বিচার হয়, শত শত বা হাজারে হাজারে মানুষ অপরাধ করলেও বিচার হয়, কিন্তু সমাজ নিজেই অপরাধী হলে তখন অপরাধের বিচার করার ধারণাটারই অর্থহীন হয়ে পড়ে।
শুধু আশা করতে পারি যে ধীরে ধীরে ট্যাবুগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিলীন হয়ে যাবে। তার আগ পর্যন্ত্য যতগুলো অবদমিত মানুষ একটি মুক্ত, স্বাধীন জীবন যাপন করা হতে বঞ্চিত হবে, তাদের জন্য ব্যক্তিগত স্তরে সহায়তা ও সহানুভূতি প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
জ্ঞানের আলোতে ট্যাবু দূর হয়ে যাবে একদিন
facebook
facebook
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
facebook
যৌনতা আমাদের দেশে এতোটাই অবজ্ঞার চোখে দেখা হয় যে তা চিরকাল আঁধারেই থেকে যাচ্ছে । অথচ এটির অপব্যবহার আমাদের দেশে সর্বত্র । পরিবার থেকে শুরু করে স্কুল পর্যায়ে এই আঁধার কাটানোর উদ্যোগ নেয়া এখনি দরকার । অণু তারেককে ধন্যবাদ এই চমৎকার লেখাটির জন্য ।
যৌনতা কোথায় অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়! জনসংখ্যা দেখি বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে!
facebook
অত্যন্ত সুলিখিত পোস্ট! খুব দরকারী! কৃতজ্ঞতা!
মূল বিষয়ের পাশাপশি অনেক গুলো বিষয় অল্প করে চলে আসছে, সেগুলো নিয়েও স্বতন্ত্র পোস্ট আসতে পারে অণুদা।
অবশ্যই, সবাই লেখা শুরু করুন- নিজের অভিজ্ঞতা, বিষয় নিয়ে
facebook
সঠিক কথা বলেছেন মসীলক্ষণ পণ্ডিত।
হ
facebook
..................................................................
#Banshibir.
কী পড়েন পীরবাবা!
facebook
আপনের লেখা পড়ি. এইভাবে বেবি হয় কেউ এতদিন কয়নাই ক্যা?
..................................................................
#Banshibir.
facebook
ইংরেজীতে এবিষয়ে বাচ্চাদের জন্য খুবই দারুনভাবে বুঝিয়ে দিয়ে কিছু বই আছে। ছবিসহ বইগুলো পড়লে বড়দেরও অনেক ধারণা পরিস্কার হয়ে যায়। কানাডা-আমেরিকার পাবলিক লাইব্রেরীতে পাওয়া যায়। কেউ বাংলায় অনুবাদ করলে বেশ ভাল হয়। কয়েকটি বইতো প্রায় ৩০ টি ভাষায় অনুদিত। বাংলায় নেই। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে কেউ কি পাবলিশ করতে রাজি হবে? বা দেশে কি এরকম বইয়ের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা চালু হবে? খোদ আমেরিকাতেই রক্ষণশীলেরা এইধরনের বইকে পণর্োগ্রাফি ট্যাগ দিয়েছে।
হুম , দরকার তো সেই পর্যায়ের লোকদের হস্তক্ষেপ, যারা শিক্ষা বিভাগের সাথে জড়িত। খোঁজ নেওয়া দরকার
facebook
অনুবাদ করে ব্লগে পাবলিশ করেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
facebook
সেটা করা যায়। আমি একজনের সাথে কথা বলছি এবিষয়ে। দেখা যাক।
একটা প্রশ্নঃ সচলায়তনে অনুবাদ প্রকাশে কি মূল পাবলিশারের অনুমতি লাগে?
বাংলাদেশে কয়েক রকমের শিক্ষা ব্যাবস্থা প্রচলিত। শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া স্কুল কলেজগুলোতে একরকম। ইংলিশ মিডিয়ামগুলোতে আরেকরকম। মাদ্রাসাগুলোতে আরেকরকম। মাদ্রাসা সিস্টেমেও আবার কয়েক রকম আছে।
এবং সবগুলোই প্রায় স্বাধীন সার্বভৌম। ইংরেজি মাধ্যমে কী পড়ানো হচ্ছে, সেটা যেমন মনিটর করার কেউ নেই, তেমনি কওমী মাদ্রাসায় কী জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে সেটাও কেউ মনিটর করে না।
এর ফলে হরেক প্রজাতীর প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। এই বহুমাত্রিক শিক্ষা ব্যাবস্থার মধ্যে যৌন বিষয়ক কেন, কোনো বিষয়ক শিক্ষা দীক্ষাই সম্ভব না আসলে।
মূল সচেতনতাটা পরিবারেই রাখতে হবে। সন্তানকে খালি ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট বানাতে চাওয়া আর নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, চিত্রকলা, সাঁতার, কুংফু-কারাতে ইত্যাদি সব কিছু শিশুর কাঁধে তুলে তাদের জীবনটা জেড়বার করে দেওয়া মা'রা একটু এই বিষয়েও সচেতন হলে অনেক সমস্যাই মিটে যায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মূল সচেতনতাটা পরিবারেই রাখতে হবে।
facebook
খুবই জরুরী কথা।
facebook
দারুন পোষ্ট ভাইয়া, চিন্তাভাবনা গুলোকে গুছিয়ে লেখার জন্য এজন্যই আপনে বস ।
আরে না, রবিবারের দিন, কাজের ফাঁকে ফাঁকে লেখা, অনেক পয়েন্ট বাদ পড়েছে, কিন্তু অন্যরা লিখবেন আশা করি
facebook
আমাদের স্কুলে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা মাঝে মাঝে যৌনশিক্ষা বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করতো। আমি একবার এইডস বিষয়ক দেয়ালপত্রিকা তৈরি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবশ্য "যৌন" সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ই যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতেন - এমনকি শারিরীক শিক্ষা ক্লাসেও। আসলে তেমন প্রচার না থাকলেও, এ বিষয়টি নিয়ে অনেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। ইউনেস্কো, বাংলাদেশ স্কাউটস, এমনকি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরও যৌনশিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচী রয়েছে। দশ-পনের বছর আগে "National Adolescent Reproductive Health Policy" প্রণয়ন করারও একটি প্রচেষ্টা হয়েছিল। অবশ্য সাম্প্রতিক অগ্রগতি বা পরিস্থিতি নিয়ে আমার কোন ধারণা নেই।
যৌনশিক্ষা প্রচারের প্রধান প্রতিবন্ধকতা আমাদের সমাজের রক্ষণশীল মনোভাব। সবার ধারণা, এ সংক্রান্ত শিক্ষালাভ করে ছেলেমেয়েরা "বখে" যাবে।
স্বপ্নহারা মানব
অ, এমনিতে যেন বখে যাচ্ছে না !
facebook
এর গুরত্ব জানা আছে । কিন্তু কিভাবেপাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চাদের সুন্দর ও তাদের উপযোগী করে শেখানো যায় ?
তা নিয়ে অনেক বই আছে, ডকু আছে, প্রোগ্রাম আছে, কেবল জানা দ রকার
facebook
facebook
জামাত ক্ষমতায় আসলে আপনার জীবন শেষ।
খুব সুন্দর এবং জরুরী পোস্ট। ছেলে মেয়ের মধ্যে যে স্বভাবিক বন্ধুত্ব হতে পারে এটাই অনেকে মানতে পারে না।
রু
জামাত ক্ষমতায় আসছে না
facebook
একটি দারুন ব্যাপার নিয়ে লিখেছেন তারেক অনু।
একদম সঠিক। দেখুন এই যৌনশিক্ষা সম্পর্কে না জেনে উঠতি বয়সের ছেলেরা অনেক ভূল মেসেজ পেয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে ক্লাস এইটে পড়া এক ছাত্রের মুখ থেকে শুনলাম নিয়মিত মৈথুন না করলে বীর্য্য জমে জমে পাথর হয়ে যাবে এবং একসময় তার অন্ডকোষের ভেতর পাথর বড় হয়ে গিয়ে বড় ধরণের রোগে পড়েবে ! বেচারা ভয়ে বাসায় কিছু বলতেও পারে না। অথচ মৈথুনে শারিরীক সমস্যার সৃষ্টি হয়। কথাগুলো শুনে কি ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয় আমার সেদিন!! তারপর বেচারাকে অনেক বুঝিয়ে লাইনে আনতে হল।
যাইহোক বিষয়টি নিয়ে ভাববার সময় আনেক আগেই এসেছে, এখন সময় এটা নিয়ে কাজ করার, তা না হলে অদূর ভাবিষ্যতে কপালে খারাপ আছে। ধন্যবাদ অনু, বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।
facebook
আমার বাচ্চার বয়স দুই বছর ৭ মাস। আমাকে ও প্রশ্ন করেছিল আম্মু আমি কিভাবে তোমার কাছে আসছি? আমি ওকে বলেছি বাবা আর আম্মু মিলে আল্লাহ এর কাছে তোমাকে চাইসিলাম, তারপর আল্লাহ তোমাকে আম্মু পেটের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে। ুমি আম্মুর পেটের ভেতর যখন ছিলা তখন আম্মু জা খাইসি তুমিও তাই খাইস, আম্মু পেটের ভেতর তুমি ধিসুম দিসুম করস। তারপর একদিন ডাক্তার আনটি আর তিন্নি খালামনি মিলে আম্মুর পেট কেটে তোমাকে বেড় করসে। আমার মেয়ে যখন এই গুলা আমার মা বা শাশুড়ি বা কোনও বয়স্ক বেক্তির সামনে বলে তখন সবাই রে রে করে আসে আর আমাকে বলে এই তুকু বাচ্চার মাথায় আমি নাকি বাজে জিনিস ধুকাচ্চি। আমি কাউকেই এই ব্যাপারটা বুঝাতে পারিনা বাচ্চা কে ছোট বেলা থেকে আস্তে আস্তে এই বেপারগুলা জানানো উচিৎ।
facebook
খুবই চমৎকার লেখা। আমাদের পাঠ্যসূচীতে শিশুদের জন্য যৌনশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা দরকার খুব শীঘ্রই। আর যৌনতা সিংক্রান্ত ট্যাবু নিয়ে যেটা বললেন, সেই ব্যাপারে একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম এরকমঃ
facebook
ছোট বেলায় সমাজ বইয়ে পড়তাম বিনোদনের অভাবে নাকি জনসংখ্যা বাড়ে! আমাদের ম্যাম একদিন কিছুতেই ব্যাপারটা বোঝাতে পারেননি। শেষে নিজেদেরই জানতে হলো।
সত্য কথা!
facebook
ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আমাদের এক ডেঁপো বন্ধু ভয়ানক এক গুপ্তকথা শোনালো। এ পৃথিবীর বড়রা সবাই বিবাহের পর উহার মধ্যে ইহা প্রবৃষ্ট করে ইয়ে করে। সবাই? বলিস কি? খুবই মর্মাহত এক নাবালক বন্ধু জিজ্ঞেস করলো- আমাদের মৌলবি স্যারও? হ্যাঁ হ্যাঁ সব্বাই। ভয়ানক অবিশ্বাস এবং ক্ষুদ্ধতা বশতঃ নাবালক বন্ধুটি মৌলবি স্যারকে নালিশ জানালো, স্যার! স্যার!!..........। আমাদের সময়ে মৌলবি স্যারেরা খুবই টেরর টাইপের হতেন, ডেঁপো বন্ধুটির জন্য এখনও দুঃখ হয়।
facebook
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
পোস্টে
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
facebook
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
এখানে এলো কি করে মন্তব্য! নতুন করে আবার নিচে দিয়ে দিলাম
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
দারুন লিখেছেন। খুব ভাল লাগলো। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় যৌন এবং যৌনতা বিষয়ক শিক্ষার উপরে বিশেষ জোর দেয়া উচিত। এতে যৌনবিকৃতির পরিবর্তে সুস্থ ও স্বাভাবিক যৌন আচরন আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখায়
facebook
"এটা করবা না, এটা খারাপ, তুমি পচা। এই শিক্ষা দিতে নিজের শিশুর কাছে লজ্জার কিছু নেই, হয়ত এটাই তাকে রক্ষা করবে ভয়াবহ কোন ঘটনা থেক।" - খুব ভাল বলেছেন, ধন্যবাদ।
facebook
নিজেকে সতী সাধ্বী প্রমাণের চেষ্টায় অনেক মেয়েকে দেখেছি বিবাহ শাদির আগে জানেই না কেম্নে কী? কাছপিঠে কেউ আলাপ করলেও "ওমা, ছিঃ, নোংরা কথা শুনতে হয় না " বলে কানে হাত দিয়ে বসে থাকে। নিজেও বহুদিন এই গোত্র ভুক্ত ছিলাম
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
facebook
অণুদা বাংলায় পাওয়া যায় এমন কিছু বই এর নাম (যদি থাকে) লেখায় থাকলে ভাল হত। বিদ্যুৎ মিত্রের বইটা কি পাওয়া যায়?
১০/১২ বছর আগে "নিজেকে জানো" নামে একটা সিরিজ চালু হয়েছিল বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে মেয়েদের জন্য, ভালই ছিল, এখন কি অবস্থা জানিনা।
তালিকা হউক
facebook
যথাযথ যৌনশিক্ষার অভাবে ভ্রান্ত ধারনা থেকে অনেক সময় ভয়ঙ্কর কিছুও ঘটে যেতে পারে। তাছাড়া এই শিক্ষার অভাব মেয়ে ও ছেলেদের পরষ্পরকে বোঝার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
facebook
প্রয়োজনীয় লেখা। আমার মেয়ের বয়স এখন ৫, সে এখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে, যেমন "মা বাবু কেন শুধু বিয়ের পর হয় আগে কেন হয় না?" আসলে মা-বাবার উচিত বাচ্চাকে উলটাপাল্টা না বলে সহজবোধ্য করে বুঝিয়ে দেয়া। চমৎকার লেখার জন্য
facebook
জরুরী লেখা
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আপনার লেখা কুতায়!
facebook
দারুণ পোস্ট।
১১,০০০ বছর আগের ওটা কি আসলেই সঙ্গমের ভাস্কর্য নাকি স্রেফ পুরাতন একটা পাথরের মধ্যে এরকম আকার খুঁজে পেয়েছে কোনো প্রত্নতত্তবিদ, অনেকটা এখানে-সেখানে যীশুর ছবি খুঁজে পাবার মত।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
না না, আসলেই সঙ্গমের ভাস্কর্য । আরে ভাই সেই রুমে ১৩,৫০০ বছর আগের যে ভাস্কর্য আছে, দেখলে টাসকি খেতে হয় !
facebook
সমকামীদের ঘৃণা করা কোন কাজের কথা নয়। তবে সমকাম কখনও সমর্থনীয় নয়। কারন সমকাম কোন কিছু সৃষ্টি করে না। বরং নারী এবং পুরুষ সৃষ্টির আলাদা বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত প্রাকৃতিক প্রয়োজনকে অস্বীকার করে। সমকামের বিসতার এই পৃথিবীকে বন্ধাত্যের দিকে নিয়ে যাবে। নারী এবং পুরুষের সম্পর্ক পরস্পর পরিপূরক। যা কিছুই এ প্রাকৃতিক সম্পর্ককে অস্বীকার করে তা বর্জনীয়।
যেটা প্রাকৃতিক সেটাকে সমর্থন করা বা না করাই কিচ্ছু যায় আসে না। সবসময় মানুষসহ নানা প্রাণীর অল্প শতাংশ সমকামী ছিল, হাজার হাজার বছর ধরেই।
facebook
সমকামীতাও একটা প্রাকৃতিক বিষয়। কারন যারা করে এটা তাদের জিনের থাকে। সাম্প্রতিক গবেষনাতে কিন্তু তাই বলে। একটা বাচ্চা যেমন জন্ম থেকেই অটিস্টিক হয়, একজন সমকামী কিন্তু জন্ম থেকেই তার ভিতর এই জিনটা কাজ করতে থাকে, বড় হয়ে একটা সময়ে সে সমকামীতা বুঝতে পারে। এখানে তার বা আমাদের কিছুই করার নাই। অনেকের ভুল ধারনা আছে যে, সমকামীতা পশ্চিমা দেশের ফসল, এটা সঠিক না। মানব সৃষ্টির সেই প্রথম থেকেই কিন্তু সমকামীতা আছে। এটা হতে পারে জিনগত কোন ত্রুটি। একটা ভ্রুন হতে যেমন অটিজম দূর করা যায়না, সমকামিতাও যায় না।
দেশ বন্ধু
facebook
মনে আছে ক্লাস এইটে যখন পড়ি তখন আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে পাকা মেয়ে আমার প্রাণের বান্ধবীর কাছ থেকে বাবু কিভাবে হয় এই ঘটনা শুনে রীতিমত বাবা মা কে ঘৃণা করতে শুরু করেছিলাম। খুব অবাক হয়ে সেদিন ভেবেছিলাম আমার আব্বু আম্মু এতো (!) খারাপ! আর পিরিয়ড হলে আমি অছ্যুৎ হয়ে গেছি এই ধারণা তো এখনও রয়েই গেছে আমাদের সমাজের সবার মধ্যেই। শুধুমাত্র এই ব্যাপারটাই বা বলছি কেন? বিয়ের পর নতুন জিনিস জানতে পারলাম সেটা হচ্ছে শারীরিক সম্পর্কের পর গোসল না করে কোন কিছু ছোঁয়া যাবে না ধরা যাবে না তাহলে সংসারের আয় উন্নতি কমে যাবে আর বরের নাকি আয়ু কমে যাবে!
আশ্চর্য লাগে মাঝে মাঝে আমাদের মেয়েদের এতো বেশি অপবিত্র মনে করা হয় কেন?
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
কন্ট্রোলে রাখার জন্য। যাতে ব্যবহার করা যায় মর্জি মত
facebook
এটা এক ধরনের টাবু। তবে শিক্ষিত সমাজ এধরনের কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসছে।
facebook
কেন, abstinence-only sex education ভাল না? আমেরিকায় তো এটাই চলে!
facebook
এ বিষয়ে আমরা অন্ধ । সারা ঢাকা শহরতো সেক্স ও যৌন রোগে আক্রান্ত; সাইনবোর্ড দেখে মনে হয় পুরা জাতির যৌন ও সেক্স রোগের চিকিৎসা দরকার !
আর জাতি সেক্স মানেই জানে না, কিন্তু জনসংখ্যা জ্যামিতিক গতিতে বাড়ে!
facebook
সবার আগে ধর্মীয় গোঁড়ামি দূর করতে হবে, এটাই এখানে অন্যতম প্রধান সমস্যা। এটা দূর করতে পারলেই মানুষ বিজ্ঞানমুখী হবে, আর বিজ্ঞানমুখী হলেই এমন কুসংস্কার আর অন্ধকারাচ্ছন্নতা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। মানুষের জয় হবেই।
মাসুদ সজীব
facebook
অসাধারন একটা বিষয়ের উপরে লেখা।
আমাদের দেশে মানুষদের মাঝে যৌন বিষয়ে অসচেতনতা আছে, অল্পবয়সীদের মাঝে তো আরো বেশী। যেখানে বড়রাই এই বিষয়টা নিয়ে আড়ালে আবডালে লুকোচুরী করে, সেখানে অল্পবয়সীরা কোথা হতে শিখবে?
বিদ্যুৎ মিত্র নামের আড়ালে স্বয়ং কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা অসাধারণ এক বই যৌন বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান, আমার মনে করি আমাদের দেশের অল্প বয়সীদের এই বইটা পড়া উচিত, বড়দেরও পড়া উচিত। সেই আশির দশকের শেষের দিকের কথা, তখন আমি স্কুলে পড়ি এক অজপাড়া গ্রামে। আমার বড় ভাই তখন মেডিকেলে পড়ে, সে এই বইটা এনেছিল। তখন আমি, আমার বোন সবাই এটা পড়েছিলাম, স্কুলের বন্ধুদেরও পড়তে দিয়েছিলাম। বইটা পড়ার পরে অনেক অজানা বিষয় জেনে কুসংস্কার হতে মুক্তি পেয়েছিলাম।
আমাদের একটা বড় সমস্যা হলো, আমরা যৌন বিষয় নিয়ে খুব রাখধাক করি, কিন্তু এটা আমাদের শারিরীক প্রক্রিয়ার ভিতরেই পরে। আমরা শরীরের অনেক রোগ নিয়ে কথা বলতে পারি, কিন্তু আমাদের শারিরীক প্রক্রিয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে বা জানতে চাই না, ছোটদের এই বিষয় নিয়ে কিছুই জানতে দিতে বা শিখাতে চাই না। এটা যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেটাই আমরা লুকাতে চাই।
খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যৌনতার কারনেই কিন্তু আমরা এই দুনিয়াতে আসতে পারি, আমরা হাওয়া হতে আসি না। যে কারনে আমাদের জন্ম হয়, সেই বিষয়ের সব খুটি নাটি আমাদের ছোট বেলা হতেই জানা উচিত।
দেশ বন্ধু
যৌনতার কারনেই কিন্তু আমরা এই দুনিয়াতে আসতে পারি, আমরা হাওয়া হতে আসি না। যে কারনে আমাদের জন্ম হয়, সেই বিষয়ের সব খুটি নাটি আমাদের ছোট বেলা হতেই জানা উচিত।
কাজীদার লেখা বইটা পাঠ্য হওয়া উচিত স্কুলে
facebook
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
A Child Called 'It' পড়লাম একটু আগে। শেয়ার করতে ইচ্ছ হল।
- ইমতিয়াজ
নতুন মন্তব্য করুন