বাংলার প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর মন্দিরে

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৬/০৮/২০১৫ - ৩:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কবি চন্দ্রাবতীর নাম শুনি সেই ছোটবেলাতেই। আমাদের কিশোরগঞ্জে “শুরূক” নামে একটা সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু ছিল (এখন বন্ধ)। আমার জীবনের প্রথম লেখা এই পত্রিকাতেই ছাপা হয়েছিল। যেই সংখ্যায় আমার লেখাটি ছাপা হয় সেই সংখ্যাতেই চন্দ্রাবতীর উপর একটা প্রবন্ধও ছাপা হয়েছিল। চন্দ্রাবতীর সাথে সেই আমার প্রথম পরিচয়।

তারপর অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ যতই বেড়েছে, চন্দ্রাবতীর প্রতি আগ্রহও ততই বেড়েছে। চন্দ্রাবতীর লেখা কবিতা, চন্দ্রাবতীকে নিয়ে লেখা কবিতা, চন্দ্রাবতীর রামায়নের বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ পড়েছি। চন্দ্রাবতীকে নিয়ে রচিত যাত্রাপালা আর নাটক দেখেছি। সময়ের সাথে সাথে চন্দ্রাবতী আমার মনকে আন্দোলিত করেছে, তাঁর ব্যক্তিত্ব আমাকে আকর্ষণ করেছে, তাঁর ট্র্যাজিক প্রেমের অমর কাহিনী আমার মনকে বিষণ্ণ করেছে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় তাঁর সমকালীন চিন্তাধারা আমাকে বিস্মিত করেছে। লাইলি-মজনুর প্রেম কাহিনী আমরা জানি, চন্দ্রাবতী-জয়ানন্দের প্রেম কাহিনী কয়জনে জানি? আমার নিজের জেলাতেই ছিল তাঁর নিবাস। তাই মনের ভিতর তাগিদ অনুভব করছি তাকে নিয়ে লিখবার। সবাইকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছি ইতিহাসের এক অনুচ্চারিত সময়ে ভ্রমণ করবার।

বলা হয়ে থাকে চন্দ্রাবতী বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি। সত্যিই কি তাই? বেশিরভাগ ইতিহাসবিদই চন্দ্রাবতীকে প্রথম বাঙালি মহিলা কবি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে থাকেন। কিছু বিরুদ্ধমতও যে নেই তা নয়। কারও কারও মতে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি খনা, দ্বিতীয় কবি রামী বা রজকিনী, তৃতীয় মাধবী এবং চতুর্থ কবি চন্দ্রাবতী। প্রথম মহিলা কবি হিসাবে চন্দ্রাবতীর যে সম্মান, তা বাংলাদেশে। পুরো বাংলা সাহিত্যে তার অবস্থান চতুর্থ।

খনা আমাদের কাছে পরিচিত খনা’র বচনের জন্য। তাঁর কাব্য জীবনের সময়কাল নিয়ে সন্দেহ আছে। রামী বা রজকিনী এবং মাধবী সত্যি সত্যি ছিলেন কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কবি চন্ডিদাসের নিষ্কামজ প্রেমের প্রেমিকা হিসাবে বিখ্যাত এই রামী ধোপানি। এই রজকবালা রামী একজন কবি ছিলেন বলে কিছু আলামত পাওয়া যায়। তবে, এগুলো কোনোটা নিরংকুশ সন্দেহ দূর করে পারে না তাঁর কবি হিসাবে অস্তিত্ব সম্পর্কে। আর তাছাড়া বাংলা সাহিত্যে এতজন চণ্ডিদাস আছে যে, ঠিক কোন চণ্ডিদাসের সাথে তিনি সম্পর্কিত ছিলেন সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া যায় না। মাধবীর ব্যাপারেও বিস্তারিত কিছু জানা যায় নি। সে কারণেই চন্দ্রাবতীকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবির স্বীকৃতি দিতে বহু লোকেই দ্বিধাহীন, সংকোচশীতলতাবিহীন । চন্দ্রাবতী শুধু প্রথম মহিলা কবিই নন, সৃষ্টির মান এবং পরিমাণের দিক দিয়ে মধ্য যুগের সেরা মহিলা কবিও তিনিই।

চন্দ্রাবতীর বাবাও ছিলেন একজন বিখ্যাত কবি। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নিদর্শন পদ্মপুরাণ এবং মনসামঙ্গলের কবি তিনি, কবি দ্বিজবংশী বা বংশীবদন। তিনি ভাসান গানের দল নিয়ে গান গেয়ে বেড়াতেন। সুকুমার সেন তাঁর বাঙ্গালা সাহিত্যের কথায় লিখেছেন,

পূর্ববঙ্গে রচিত বিস্তর মনসামঙ্গল কাব্য পাওয়া গিয়াছে। সে সবগুলির মধ্যে বংশীবদনের কাব্যই শ্রেষ্ঠ। সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত হইয়াও বংশীবদন কোথাও অযথা পাণ্ডিত্য প্রদর্শন করিতে চেষ্টা করেন নাই। অপরদিকে, ইহার কাব্য গ্রাম্যতা দোষ হইতে একেবারে মুক্ত।

দ্বিজ বংশীদাস কিশোরগঞ্জ জেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের খরস্রোতা ফুলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী পাতুয়ারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর লেখা মনসামঙ্গল ১৫৭৫ সালের দিকে শেষ হয়। কথিত আছে যে, মনসামঙ্গল রচনায় বংশীবদন চন্দ্রাবতীর সাহায্য পেয়েছিলেন। মনসামঙ্গল রচনার সময়ে চন্দ্রাবতীর বয়স কমপক্ষে পঁচিশ ছিল। সেই হিসাবে তিনি ১৫৫০ সালের দিকে জন্মেছিলেন বলে অনুমান করা যায়।

চন্দ্রাবতীর জীবনের ইতিহাস খুঁজতে গেলে আমাদের একটি উৎসের উপরই নির্ভর করতে হয়। সেটি হচ্ছে ‘মৈমনসিংহ গীতিকার’ শ্রী নয়ানচাঁদ ঘোষ রচিত ‘চন্দ্রাবতী পালা’। এই পালাতেই চন্দ্রাবতীর জীবনের করুণ ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে। এই পালাটিই বর্তমানে বাংলা সাহিত্যের চন্দ্রাবতীর জীবনীর তথ্যভিত্তিক লিখিত প্রামাণ্য দলিল। চন্দ্রাবতীর জন্মকথা বর্ণিত হয়েছে এইভাবে-

ধারাস্রোতে ফুলেশ্বরী নদী বহি যায়।
বসতি যাদবানন্দ করেন তথায়।।
ভট্টাচার্য্য বংশে জন্ম, অঞ্জনা ঘরণী।
বাঁশের পাল্লায় তালপাতার ছাউনি।।
ঘট বসাইয়া সদা পূজে মনসায়।
কোপ করি সেই হেতু লক্ষ্মী ছেড়ে যায়।।
দ্বিজবংশী পুত্র হৈল মনসার বরে।
ভাসান গাইয়া যিনি বিখ্যাত সংসারে।।
ঘরে নাই ধান-চাল, চালে নাই ছানি।
আকর ভেদিয়া পড়ে উচ্ছিলার পানি।।
ভাসান গাইয়া পিতা বেড়ান নগরে।
চাল-কড়ি যাহা পান আনি দেন ঘরে।।
বাড়ীতে দরিদ্র জালা কষ্টের কাহিনী।
তাঁর ঘরে জন্ম নিলা চন্দ্রা অভাগিনী।।

চন্দ্রাবতী নিজেকে অভাগিনী বলতেই পারেন। তাঁর জীবনের ট্র্যাজেডি গ্রিক পুরাণের ট্র্যাজেডিকেও হার মানায়। রোম্যান্টিক মনের অধিকারী চন্দ্রাবতীর বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া প্রেমের বিয়োগান্তক ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায় ‘চন্দ্রাবতী পালা’র ১২ টি অধ্যায়ের ৩৫৪ টি ছত্রে। নয়ানচাঁদ ঘোষের বর্ণনায় আছে,

ফুলেশ্বর নদীর তীর ঘেষা ছোট্ট পাতোয়াইর গ্রাম, সেই গ্রামে ছিল চন্দ্রাবতী নামের অপরূপ রূপসী এক বালিকা। বালিকা প্রতিদিন পুকুরের পাড়ে যেতো ফুল তুলতে, সেখানে একদিন তার সাথে দেখা হয়ে যায় জয়ানন্দ নামের এক কিশোরের। চন্দ্রাবতীর সঙ্গে বাল্যসখা জয়ানন্দের বন্ধুত্ব গভীর প্রেমে পরিণত হয়।

জয়ানন্দ নিজেও কবি ছিলেন। দ্বিজবংশী দাসের পদ্মপুরাণে চন্দ্রাবতী ও জয়ানন্দ দুইজনের কবিতাই রয়েছে। দুই পরিবারের সম্মতিতে জয়ানন্দ ও চন্দ্রাবতীর বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু এরই মাঝে ঘটে যায় এক নাটকীয় ঘটনা। জয়ানন্দ প্রেমে পড়ে আসমানি (মতান্তরে কমলা) নামের এক মুসলমান মেয়ের। যে রাতে চন্দ্রাবতীকে জয়ানন্দের বিয়ে করবার কথা, সেই দিনই জয়ানন্দ ধর্মত্যাগ করে আসমানিকে বিয়ে করে।

জয়ানন্দের এই হঠকারী আচরণ বিশাল এক আঘাত হয়ে আসে চন্দ্রাবতীর জন্য। অল্প বয়সের কোমল হৃদয় ভেঙে খান খান হয়ে যায় তাঁর। এই আঘাত সামলাতে শিবপূজায় নিজেকে উজাড় করে দেন তিনি। বাবার কাছে দুটো প্রার্থনা জানান। ফুলেশ্বরী নদীর তীরে একটি শিবমন্দির গড়ে দেওয়া এবং আজীবন কুমারী থাকার বাসনা। কন্যাবৎসল পিতা আদরের কন্যার দুটো আবদারই মেনে নেন।

অনুমতি দিয়া পিতা কয় কন্যার স্থানে
শিব পূজা কর আর লেখ রামায়ণে।

কিছুকাল পরে মোহ কেটে গেলে অনুতপ্ত জয়ানন্দ পুনরায় ফিরে আসে চন্দ্রাবতীর কাছে। তখন চরাচরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ করে চন্দ্রাবতী সন্ধ্যা আরতি এবং শিবের পূজায় মগ্ন। রুদ্ধদ্বারের বাইরে দাঁড়িয়ে জয়ানন্দ বারবার চন্দ্রাবতীকে নাম ধরে ডেকেও সাড়া পায় না। এই নীরবতাকে চন্দ্রাবতীর প্রত্যাখ্যানের ভাষা মনে করে ব্যর্থমনোরথ জয়ানন্দ লাল রঙের সন্ধ্যামালতি ফুল দিয়ে মন্দিরের দরোজায় ৪ ছত্রের একটি পদ লিখে সে স্থান ত্যাগ করে -

শৈশবকালের সঙ্গী তুমি যৌবনকালের সাথী
অপরাধ ক্ষমা কর তুমি চন্দ্রাবতী
পাপিষ্ঠ জানিয়ো মোরে না হইল সম্মত।
বিদায় মাগি চন্দ্রাবতী জনমের মতো।

পূজা শেষে মন্দিরের দরোজা খুলে চন্দ্রাবতী লেখাটি দেখতে পান। মন্দির অপবিত্র হয়েছে ভেবে মন্দির গাত্রে উৎকীর্ণ সে লেখা মুছে ফেলার জন্য তিনি নদীর ঘাটে জল আনতে গিয়ে দেখেন নদীর জলে ভাসছে জয়ানন্দের মৃতদেহ। এই ভয়াবহ শোকে পাথর হয়ে যান চন্দ্রাবতী।

আঁখিতে পলক নাহি মুখে নাই সে বাণী।
পাড়েতে খাড়াইয়া দেখে উমেদা কামিনী।।

চন্দ্রাবতীর কাহিনী এখানেই শেষ। জনশ্রুতি আছে ওই সময় তিনি রামায়ন লিখছিলেন। এই কষ্টের কারণে চন্দ্রাবতী আর কিছুই লিখতে পারেন নি। যে কারণে রামায়ন অসমাপ্ত থেকে যায়।

চন্দ্রাবতীর রামায়ণ মূলত একটি পালাবদ্ধ গীত। এ রামায়ণ ৩ খন্ডে মোট ১৯টি অধ্যায়ে রচিত হয়েছে। প্রথম খন্ড, জন্মলীলা। এখন্ডে রয়েছে ৮ টি অধ্যায়। দ্বিতীয় খন্ডের কোন নামকরণ করেননি চন্দ্রাবতী। এই খন্ডের ২ টি অধ্যায়ে যথাক্রমে সীতার বনবাসপূর্ব জীবনের কাহিনী এবং বনবাসকালীন সময়ের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। তৃতীয় খন্ডেরও কোন নামকরণ করেননি চন্দ্রাবতী। এই খন্ডের ৯ টি অধ্যায় যথাক্রমে সীতার বনবাসের সূচনা, সীতার বিরুদ্ধে কুকুয়ার চক্রান্ত, রামের কাছে সীতার বিরুদ্ধে কুকুয়ার মিথ্যা অভিযোগ, রাম কর্তৃক সীতাকে বনবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, সীতার বনবাস, মুনি বাল্মীকির আশ্রয়ে সীতা কর্তৃক লব ও কুশের জন্মদান, সীতা হনুমানের সাক্ষাৎ, রাম হনুমানের প্রবেশের বর্ননা এবং সীতার অগ্নিপরীক্ষা বর্ণিত হয়েছে।

নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে রামায়ণ রচনা করে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মূলে প্রথম কুঠারাঘাত করেন তিনি। সেই অর্থে চন্দ্রাবতী আমাদের সাহিত্যের প্রথম নারীবাদী কবি। বিষয়বস্তুর উপস্থাপনার গুণে চন্দ্রাবতীর এই রামায়ন আমাদের চমকে দেয়। কারণ, তাঁর রচনায় সীতা চরিত্রটি প্রাধান্য পেয়ে মুখ্য চরিত্রে পরিণত হয়েছে যার পাশে রাম চরিত্রটি পুরোপুরি ম্লান। সীতার মানসিকতাকে তিনি এক কালজয়ী চিন্তার আলোকে সুনিপুণভাবে ব্যাখা করেছেন, যেখানে নারী কেবল ব্যক্তি নয়, ব্যক্তিত্ব। পুরাণের খোলস থেকে বের করে সীতাকে তিনি নবজন্ম দিয়েছেন। সীতা এখানে দেবী নন, মানবী। সীতা চরিত্র উপস্থাপনের এই নবরীতি এবং নির্মানে আধুনিক ভাবনার মধ্য দিয়ে আমরা যে চন্দ্রাবতীকে পাই তিনি মূলত নারীবাদের প্রবক্তা। চন্দ্রাবতীর রামায়ণকে তাই সীতায়ন বললেও খুব একটা ভুল হবে না।

চন্দ্রাবতীর মৃত্যু নিয়ে সবাই অবশ্য একমত নন। নয়ানচাঁদ নিজেও তাঁর চন্দ্রাবতী পালাগানে চন্দ্রাবতীর মৃত্যু নিয়ে কিছু বলেন নি। কারো কারো মতে নদীর ঘাটে মৃত অবস্থায় জলে জয়ানন্দের লাশ ভাসতে দেখে তীব্র অনুশোচনায় চন্দ্রাবতীও পরবর্তীতে ফুলেশ্বরী নদীর জলে ঝাঁপিয়ে জয়ানন্দের অনুগামী হন। উইকিপিডিয়াতেও এই বিষয়টিই লেখা আছে। আবার কারো মতে, জয়ানন্দের জলে ডুবে আত্মহত্যা বা মৃত্যুর কিছুদিন পরপরই শোকাভিভূত চন্দ্রাবতী মর্মান্তিক আঘাত প্রাপ্ত হয়ে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। দীনেশ্চন্দ্র সেন মৈমনসিংহ গীতিকার ভূমিকায় লিখেছেন, “প্রবাদ এই যে, প্রেমাহতা চন্দ্রা জয়চন্দ্রের শব দর্শন করার অল্পকাল পরেই হৃদরোগে লীলা সংবরণ করেন।“ ব্রজেন্দ্রকুমার দে তাঁর মঞ্চনাটক ‘কবি চন্দ্রাবতী’-তে দেখিয়েছেন যে, শোক এবং অপমান থেকে বাঁচার জন্য চন্দ্রাবতী নিজেই ফুলেশ্বরীর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন। আনুমানিক ১৬০০ সালে চন্দ্রাবতী মৃত্যুবরণ করেন।

চন্দ্রাবতী এবং তাঁর রচনাবলীকে লোকগাথার স্তূপ থেকে উদ্ধার করে কয়েকশ বছরের ধুলোবালি সরিয়ে আধুনিক কালের পাঠক সমাজের কাছে নিয়ে আসেন প্রথমে ‘মৈমনসিংহ গীতিকার’ সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে। তিনি ১৩২০ বঙ্গাব্দে (১৯১৩) ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত ‘সৌরভ’ নামের একটি মাসিক পত্রিকার ফাল্গুন সংখ্যায় ‘মহিলা কবি চন্দ্রাবতী’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধটি পাঠ করে দীনেশচন্দ্র সেন কবি চন্দ্রাবতী সম্পর্কে প্রবল আগ্রহবোধ করেন। পরবর্তীকালে, দীনেশচন্দ্র সেন এবং চন্দ্রকুমার দে’র যৌথ প্রয়াসে লোকমুখে ছড়িয়ে থাকা চন্দ্রাবতীর লেখা অসংখ্য গান এবং অবশিষ্ট সৃষ্টিকর্ম উদ্ধার হয়। রামায়ন ছাড়াও ‘মলুয়া’ এবং ‘দস্যু কেনারামের পালা’ চন্দ্রাবতীর বিস্ময়কর কাব্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছে।

ইতিহাসের পাঠ আপাতত শেষ। চলুন ইতিহাসের এই উজ্জ্বল অধ্যায়ের সান্নিধ্যে কিছু সময় কাটিয়ে আসি।

চন্দ্রাবতীর মন্দির দেখতে হলে আপনাদের যেতে হবে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তরে পাতুয়ারী গ্রামে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই চমৎকার। শহরের শহীদি মসজিদের সামনে থেকে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন এবং তাড়াইল থানার উদ্দেশ্যে কিছুক্ষণ পরপরই ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছুটে যায়। যে কোন একটায় চড়ে বসুন। ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যেই জালালপুর বাজারে চলে আসবেন। রাস্তার ধারের ছোট্ট এই বাজারটিতে নেমে চা খেয়ে নিতে পারেন। কিছুদূর এগোলেই পথের নির্দেশ চোখে পড়বে।

বাকি রাস্তাটা হেঁটেও যেতে পারেন, আবার রিক্সাও নিতে পারেন। হেঁটে যাওয়াই ভাল। গ্রামের ভিতরকার দিগন্তবিস্তৃত সবুজের মাঝখানের মেঠো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে এমনিতেই আনমনা হয়ে পড়বেন। প্রায় ২০ মিনিট হাঁটবার পর দৃষ্টির সামনে উদ্ভাসিত হবে চন্দ্রাবতীর মন্দির। মন্দিরের সামনের পুকুর। সেই পুকুরে মন্দিরের প্রতিবিম্ব দেখে আপনি স্বাভাবিকভাবেই মুগ্ধ হবেন।

মূল মন্দিরের পাশেই ছোট আরেকটি মন্দির আছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী এই মন্দিরটি ছিল কবি দ্বিজবংশি দাসের।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পর্যটকদের জন্য একটা ছাউনিমত বানিয়ে দিয়েছে। শেষবার যখন চন্দ্রাবতীর মন্দিরে আসি তখন সম্ভবত অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। যশোরের এক ডাক্তার বন্ধু কিশোরগঞ্জ বেড়াতে এসেছিল। তাকে নিয়েই গিয়েছিলাম। প্রায় ১০ বছর পর আবার আসলাম। কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ল। যাত্রী ছাউনিটা আগে ছিল না, নতুন হয়েছে। একটা মুক্তমঞ্চও হয়েছে। মন্দিরের ময়লা রঙ পরিবর্তন হয়ে সাদা হয়েছে। আমেরিকান এম্বাসেডার আসার কথা ছিল। তাই নাকি এত গোছগাছ। ভালই হয়েছে। মন্দিরটা দেখতে ভালো লাগছিল।

ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে মাঝে মাঝে ভিআইপি’রা বেড়াতে আসলে খারাপ হয় না। এই উসিলায় কিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান তো চলে।

একটু ঘুরে মন্দিরের দরোজার সামনে আসতেই শরীরটা শিরশির করে উঠল। এই দরোজা দিয়েই চন্দ্রাবতী মন্দিরে প্রবেশ করতেন। এই মন্দিরে বসেই তিনি রামায়ন লিখেছিলেন ভাবা যায়?

মন্দিরের সামনেই একটা পুকুর। তাহলে ময়মনসিংহ গীতিকায় বর্ণিত সেই প্রমত্তা ফুলেশ্বরী নদী কোথায়? মন্দিরের এক পূজারী উত্তরটা দিলেন। কালের বিবর্তনে নদী অনেকটা দূরে সরে গেছে। নদীর জায়গায় এখন পুকুর আর ধানক্ষেত।

চন্দ্রাবতীর স্মৃতির প্রতি সন্মান জানিয়ে মন্দিরের পাশেই একটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এর বেশি কিছু করা হয়েছে কি না জানা নেই। অথচ বাংলার প্রথম মহিলা কবির গৌরবে তিনি গৌরবান্বিত।

চন্দ্রাবতীর নিবাস থেকে একটু ঘুরে আসা যাক। মন্দিরের কাছেই অনেক প্রাচীন একটা দোতলা বিল্ডিং।

অনেকের ধারণা এই বাড়ি দ্বিজবংশী দাসের। ধারণাটা ভুল। চন্দ্রাবতী পালাতেই উল্লেখ আছে দ্বিজবংশী অনেক গরীব ছিলেন।

দ্বিজবংশী পুত্র হৈল মনসার বরে।
ভাসান গাইয়া যিনি বিখ্যাত সংসারে।।
ঘরে নাই ধান-চাল, চালে নাই ছানি।
আকর ভেদিয়া পড়ে উচ্ছিলার পানি।।
ভাসান গাইয়া পিতা বেড়ান নগরে।
চাল-কড়ি যাহা পান আনি দেন ঘরে।।

অতএব গান গেয়ে যিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন, যার ঘরের চালে ছানি ছিল না সেই দ্বিজবংশী'র পক্ষে এই বাড়ি তৈরি করা সম্ভব ছিল না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে এই বাড়ি কার ছিল?

বাড়িটি ছিল তৎকালীন জমিদার নীলকণ্ঠ রায়ের। তাঁর নামেই পাশের নীলগঞ্জ বাজারটির নামকরণ করা হয়েছে। এই নীলগঞ্জ-ই জনপ্রিয় উপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদের নাটকের ‘সুখি নীলগঞ্জ’ গ্রাম। দ্বিজবংশী ছিলেন নীলকণ্ঠ রায়ের পারিবারিক পুরোহিত। নীলকণ্ঠ রায়ের সহযোগিতাতেই চন্দ্রাবতীর মন্দির দুইটি নির্মিত হয়েছিল। জনশ্রুতি মতে নীলকণ্ঠ জমিদার তাঁর বাড়িতে দ্বিজবংশী-কে আশ্রয় দিয়েছিলেন। অতএব এই বাড়িতে চন্দ্রাবতী থাকতেন সেটা আমরা ধরে নিতে পারি। বাড়িটির নির্মাণশৈলী কিন্তু চমৎকার।

দেশ বিভাগের পরপরই নীলকণ্ঠ রায় সপরিবারে ভারতের আসাম চলে যান। তাঁর কোন খোঁজ আর পাওয়া যায় নি। বাড়িটিতে এখন দুইটি পরিবার বাস করে। অর্ধেক অংশে থাকে একটি হিন্দু পরিবার। তারা নিজেদেরকে নীলকণ্ঠ রায়ের বংশধর হিসাবে দাবী করে। অন্য অর্ধেক অংশে থাকে একটি মুসলমান পরিবার। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল বলে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে পারি নি। তবে এর আগেরবার যখন এসেছিলাম তখন বাড়ির ভিতরে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। ভিতরের দরোজা এবং দেয়ালগুলোর অঙ্গসজ্জা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

উপরের ছবি দুটো গুগল থেকে নেওয়া। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় ফিরে চললাম। গ্রামের ভিতর গ্রামের ভিতর দিয়ে যখন ফিরছিলাম তখন চারপাশে আঁধার নেমেছে। সেই আঁধার কেটে উঁকি দিয়েছিল পূর্ণিমার চাঁদ। চাঁদের দিকে তাকিয়ে হঠাত করেই যেন ফিরে গিয়েছিলাম ১৬০০ সালের কোন এক পূর্ণিমার রাতে। যেখানে মন্দিরের পাশের পুকুরঘাটে বসে চন্দ্রাবতী জয়ানন্দের উদ্দেশ্যে গাইছে,

চাইরকোণা পুষ্কুনির পারে চম্পা নাগেশ্বর
ডাল ভাঙ্গ, পুষ্প তোল, কে তুমি নাগর?

আর জয়ানন্দ পুকুরের অপর পাশ থেক উত্তর দিচ্ছে -

তোমারে দেখিব আমি নয়ন ভরিয়া।
তোমারে লইব আমি হৃদয়ে তুলিয়া।

উপর থেকে পূর্ণিমার চাঁদ তার সবটুকু সৌন্দর্য ঢেলে দিচ্ছে এই যুগলের প্রতি। সে তো জানে, এই অমর প্রেমের কাব্য এখানেই ফুরোবে না। বরং তা দ্বীপ জ্বালিয়ে যাবে পৃথিবীর সকল প্রেমিক যুগলের জন্য। বহুকাল পরেও দূরদেশ থেকে লোকেরা এসে দেখে যাবে অমর প্রেমের এই তীর্থস্থান।

তথ্যসূত্রঃ
১. কবি চন্দ্রাবতী এবং মধ্যযুগের লোকমানস
২. ইতিহাসে উপেক্ষিত এক নিঃসঙ্গ দ্রাবিড়া-কবি চন্দ্রাবতী
৩. চন্দ্রকান্তি এক কবি চন্দ্রাবতী
৪. চন্দ্রাবতী সংবাদ
৫. চন্দ্রাবতী (ষোড়শ শতক)
৬. চন্দ্রাবতী - উইকিপিডিয়া

ফাহমিদুল হান্নান রূপক


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা এবং ছবিতে উত্তম জাঝা!

জমিদার নীলকণ্ঠ রায় যদি দ্বিজবংশীকে তাঁর বাড়িতে থাকার অনুমতি দেন, তাহলে আপনার টাইমলাইন অনুযায়ী ধরে নিতে হয় দুজনেই ষোড়শ শতকের ব্যক্তি। কিন্তু শেষে লিখেছেন,

দেশ বিভাগের পরপরই নীলকণ্ঠ রায় সপরিবারে ভারতের আসাম চলে যান।

ইনি কি সেই একই জমিদার নীলকণ্ঠ রায়, নাকি তাঁর বংশধর?

Emran

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্যাপারটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দেশ বিভাগের পরপর নীলকণ্ঠ রায়ের বংশধরেরা ভারতে চলে যায়।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

এ দেশে বছর চল্লিশ আগেও ভাসান যাত্রা বেশ জনপ্রিয় ছিল। জানিনা সেগুলো বংশীবদনেরই রচিত, নাকি পরবর্তী প্রজন্মের কারো। এখন তো যাত্রা পালাই নেই, ভাসান যাত্রা তো পরের কথা।
মন্দির দুটি এবং বিশেষত চন্দ্রাবতীর কথিত নিবাস, দেখে কেমন খটকা লাগে। আসলেই এগুলো অত প্রাচীন? নাকি পরবর্তীকালের কারো নির্মাণ?

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্দির এবং রাজবাড়ি দুটোই পুরাতন। এখন সংস্কার এবং রঙের কাজ করায় ভালো দেখাচ্ছে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই দেখেছি। একদম বিধ্বস্ত দেখাত। আগে কেমন দেখাত সেই ছবিটা দেখে নিন।

বর্তমান ছবিঃ

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

সন্দেশ এর ছবি

আপনার প্রথম ছবিটি দেখা না যাওয়ায় কোডটি সরিয়ে দেয়া হলো। আপনার সুবিধার্থে কোডটি এখানে দেয়া হলো।

https://fbcdn-sphotos-h-a.akamaihd.net/hphotos-ak-xtp1/v/t1.0-9/11150917_10153820602503642_928340409603148895_n.jpg?oh=93e4a594e9556a978cd0ec19f039650a&oe=55DABE2C&__gda__=1439316234_9642311f4cc799d527ee02b9f5e228b9

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি যেহেতু এডিট করতে পারছি না তাই সন্মানিত মডারেটরের সাহায্য চাইছি। প্রথম ছবিটার দুইটা লিঙ্ক দিয়ে দিলাম। যে কোন একটা ব্যবহার করে ছবিটা লেখার শুরুতে সংযুক্ত করে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
১ম লিঙ্কঃ
https://scontent-sin1-1.xx.fbcdn.net/hphotos-xpt1/v/t1.0-9/11150917_10153820602503642_928340409603148895_n.jpg?oh=73436c7c92030bc06961b20f252c9716&oe=5678F22C
২য় লিঙ্কঃ
http://i59.tinypic.com/2eapemp.jpg

প্রথম মন্তব্যে 'জবাব' দিতে গিয়ে ভুলে 'সম্পাদনা' তে ক্লিক করায় লেখাটা মুছে গেছে। সেখানে মন্তব্য করবার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভালো লেখা।

শিরোনামে প্রথম মহিলা কবি টাইপ বাক্য খুব জরুরি নয়। কবি চন্দ্রাবতীর মন্দিরে অথবা চন্দ্রাবতীর মন্দিরে লিখলেও চমৎকার, মেদহীন একটা শিরোনাম হতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

মতামতের জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তী লেখাগুলোতে যুতসই শিরোনামের বিষয়টা মাথায় রাখব।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনের কাছে কি পপকর্ণের ফ্যাক্টরি নি? চিন্তিত

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

খাইছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। রাম বিষ্ণুর সপ্তম অবতার। তো যিনি বিষ্ণুর অবতারকে নিয়ে লেখাটা জীবনের একটা ব্রত হিসেবে নিলেন তিনি আবার শিবমন্দির গড়ে শিবের আরাধনায় আত্মনিয়োগ করলেন! ব্যাপারটা কনফ্লিকটিং হয়ে গেল না? অন্তত ঐ আমলে তো শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণবদের ভূমিকা-অবস্থান-আচার অনেক বেশি স্পষ্ট ও পার্থক্যপূর্ণ ছিল। এটা নিয়ে এই পোস্টের লেখকের করার কিছু নেই, বরং আগ্রহীরা এটা নিয়ে ভাবতে ও খুঁজে দেখতে পারেন।

২। যারা মলুয়া পড়েছেন/দেখেছেন তারা জানেন সেখানেও নারীর প্রতি অবমাননাকর সিস্টেম এবং তার প্রতিবাদের কথা আছে। মলুয়া আমার যতদূর মনে আছে তাতে তার ঘটনার সাথে সীতার কিছু কিছু মিল আছে।

পোস্ট ভালো লেগেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

পোস্ট ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম। হাসি 'মলুয়া' নামে একটা বন্দনা গীতি আছে। সম্ভবত মলুয়া পালা আর মলুয়া বন্দনা গীতি আলাদা।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

পলাশ দত্ত এর ছবি

লেখাটায় ১, ২, ৩ বা একাধিক উপ-শিরোনাম থাকলে পড়তে ভালো হতো। চন্দ্রাবতীর বাড়িতে ১২/১৩ বছর আগে একবার গেছিলাম।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

অতিথি লেখক এর ছবি

সময় করতে পারলে এখন আরেকবার যান। সংস্কারের পর অনেক ভালো দেখাচ্ছে।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

তানিম এহসান এর ছবি

ভাল লাগলো। নিজের জেলা বলেই জানি, যথাযথ যত্ন নেয়ার চাইতে এইসব ফেলে না রেখে কাজে লাগানো হয় না কেন এই নিয়ে চিন্তা করার মানুষ-ও প্রচুর।

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক বলেছেন। অবশ্য এটা আমাদের জাতীয় চরিত্র বটে। ঐতিহ্যের প্রতি কবেই বা আমাদের ভালোবাসা ছিল বলুন। ইংরেজরা টেমস নদীকে কত সুন্দর করে সাজিয়েছে। আর আমরা দূষণে দূষণে বুড়িগঙ্গাকে মেরেই ফেলেছি।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো
হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

ঝিঁ ঝিঁ পোকা এর ছবি

ভাল লাগল ৷ ছবিতে উত্তম জাঝা!

-----ঝিঁ ঝিঁ পোকা

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।