সাহিত্যআমজাদ

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: সোম, ১২/০৪/২০১০ - ৯:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমজাদ আলি উসখুস করছে দেখে ভালো লাগে তাঁর। করুক, আরো উসখুস করুক।

আমজাদ আলি গলা খাঁকারি দিয়ে তাকায় বাম পাশের এক চিলতে বারান্দার দিকে। সেখানে স্তুপ করে রাখা আছে নানা ফলমূল, পা-বাঁধা দু'টি রাজহাঁস, একটি চটের ব্যাগে দু'টি প্রকাণ্ড চিতল মাছ। আমজাদের খাদেম চিকন আলি বসে আছে বারান্দায়, উপহারসামগ্রীর পাশে, এদিকে পিঠ দিয়ে। তার মাথার ওপর কুণ্ডলী পাকিয়ে ওপরে উঠছে ধোঁয়া।

রমণ সুমহান সোফায় আরো নড়েচড়ে বসেন। "আমজাদ আলি সাহেব, ফলমূলগুলি কি নিজে কিনলেননি?"

আমজাদ চমকে ওঠে, গলা খাঁকরে বলে, "জ্বি ... মানে ... আঙ্গুর তরমুজ আর বাঙ্গি আমার মুরিদানের যোগাড় করা। আম আর লিচু আমিই কিন্না আনছি।"

রমণ সুমহান প্রশান্ত চোখে তাকান বারান্দার দিকে। প্রচুর ফলমূল। ফ্রুট সালাদ বানাতে হবে।

"রাজহাঁস পাইলেন কই?" তিনি প্রশ্ন করেন।

"জ্বি ... পাশের গেরামের সামাদের বাবারে জ্বিনে ধরছে ... সে বাপরে লইয়া আইছে ... আমার খাদেম মনজিল কইল কীরে সামাইদ্যা, তগো বাড়িত না রাজআস আছে চাইড্যা ... দুইডা লইয়ায় ... জ্বিন কি য়্যাম্নে য়্যাম্নে ছুডে রে?"

রমণ সুমহানের মুখে খুশির আলো ফোটে। "দুইটা রাজহাঁস দিলো আপনারে, দুইটাই আপনি আমার জন্য নিয়াসছেন? বাহ!"

"চিতল মাছও আনছি!" আমজাদ আলি তাড়াতাড়ি বলে।

রমণ সুমহান মুখ ব্যাদান করেন হাসির চাপে। "খুব খুশি হইছি আমজাদ সাহেব, খুব খুশি হইছি। আপনি মানীর মান রাখতে জানেন।"

আমজাদ আলি এতক্ষণে তেলতেলে একটা হাসি হাসে। "স্যার ... আমার দিকে যদি একটু রহমত ...।"

রমণ সুমহান হাসেন। "হবে, হবে। মুশকিলে যখন পড়ছেন, আহসানও একটা হবে। ... আপনি তো আবার আধ্যাত্মিক জগতের মানুষ, বুঝেনই তো এইসব!"

আমজাদ আলি গামছা দিয়ে মুখের ঘাম মোছে। মাথার ওপর ঘুরছে চার ব্লেডের ফ্যান, তারপরও গরম কাটছে না। খাসনগরে তার বাড়িতে কখনোই এত গরম পড়ে না, যেমনটা পড়েছে এই ঢাকা শহরে। এখানে মানুষ থাকে কীভাবে?

রমণ সুমহান একটু ঝুঁকে বসেন, হাতে একটা প্যাড আর পেনসিল।

"আমজাদ আলি, আপনি তো শাকসব্জি বিক্রি করতেন, তাই না?"

আমজাদ মাথা নাড়ে। "হ ... ভ্যানে কইরা লাউশাক, কচুশাক, মুলাশাক, লালশাক, মিষ্টিকুমড়া, পটল, চিচিঙ্গা, লাউ এডি বিক্রি করতাম গঞ্জে।"

রমণ সুমহানের মুখে সহানুভূতির ছাপ পড়ে। "বাহ। খুব ভালো। ব্যবসা করা ভালো। নবীজিও ব্যবসা করতেন। সুবহানাল্লাহ। তো শাকসবজি বিক্রি করা বাদ দিয়া আধ্যাত্মিক লাইনে ঢুইকা পড়লেন যে?"

আমজাদ আলি কিছু বলে না, তাকায় বারান্দার দিকে। চিকন আলি মনে হয় নতুন একটা বিড়ি ধরিয়েছে।

রমণ সুমহান ছাড়েন না আমজাদকে, "কী হইল?"

আমজাদ নিরাসক্ত গলায় বলে, "হ ঢুকলাম। আধ্যাত্মিক জগতে ঢুকার তরিকা পাইলাম। ঢুইকা পড়লাম।"

রমণ সুমহান খবরের কাগজ তুলে নেন। তাতে ছাপা হয়েছে ছবি, ঘটনার বিবরণ। তিনি বলেন, "আপনি নাকি দুইটা নিরপরাধ দুধের বাচ্চারে নিয়া ফুটবল খেলছেন?"

আমজাদ আলির মুখে একটা সূক্ষ্ম হাসি ফুটে ওঠে, যে কোনো সুস্থ লোক সে হাসি দেখলে আতঙ্কিত হতে বাধ্য। জোব্বার পকেট থেকে একটা নেভির প্যাকেট বের করে সে।

রমণ সুমহান হাত তুলে থামাতে চান ট্রাফিক পুলিশের মতো, "ঘরে ধূমপান নিষেধ।"

আমজাদ আবার তাকায় বারান্দায় বসা চিকন আলির দিকে, তার দৃষ্টি অনুসরণ করে রমণ সুমহানও তাকান বারান্দার দিকে। আমজাদের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে তিনি দেখেন, আমজাদের মুখে হাসি অদৃশ্য, সেখানে ফুটে উঠেছে আবছা মিনতি, আর প্রকট ভ্রুকুটি। রমণ সুমহান দূর থেকে চিতল মাছের প্রস্থ অনুমানের চেষ্টা করেন, তারপর প্রশ্রয়ের হাসি ফুটিয়ে তোলেন মুখে।

আমজাদ সিগারেটে আগুন সংযোগ করে ম্যাচ জ্বেলে, রমণ সুমহান ছাইদানি বের করে আনেন টেবিলের নিচ থেকে, সেটা ঠেলে দেন আমজাদের দিকে। "ছাই ফালাইতে হইলে এইখানে ফালাইবেন।" চিতল মাছের প্রস্থ আর রাজহাঁসের হঠাৎ কককককক শব্দের ঝঙ্কারকে ছাপিয়ে রমণ সুমহানের কণ্ঠস্বর কঠিন হয়ে ওঠে। আমজাদ সায় দেয় মাথা নেড়ে, পাতলা অশ্লীল হাসিটা আবার তার মুখে ফুটে উঠেছে।

"সবই আল্লাহর ইশারা। উনি বলে দেন, কোন রোগীর জন্য কী করতে হবে।" আমজাদ হাসিমুখে বলে। "খালি কি ফুটবলের মতো শট দিছি? মাটিতে ফালাইয়া পাড়াইছি। পাও বাইন্ধা ঝুলাইয়া রাখছি। পাও ধইরা ঘুরাইছি।"

রমণ সুমহান নোট করেন প্যাডে খসখস করে, মুখে চাপা হাসি।

আমজাদ বলে, "সবই খোদার ইশারায় বুঝি। বুঝলেন না?"

রমণ সুমহান বলেন, "বুঝছি। আধ্যাত্মিক জগতের কারবার। তবে বুঝতে পারছি সবই। ... আপনি দেখি মেয়েছেলে রুগীর লগে নাচানাচিও করেন? এইটা কেমন ইশারা?"

আমজাদের হাসিটা চেশায়ার বেড়ালের হাসির ছায়ায় ঢুকে পড়ে যেন। "জ্বিনে ধরে তাদের। পেত্নীতে ধরে। জ্বিন ভূত পেত্নী মেয়েছেলেদের উপর পেরায়ই আছর করে। তাদের নাচায়। জামাকাপড় খুইলা ফালায়। তখন মাঝে মাঝে জ্বিনের সাথে নাচতে হয়।"

রমণ সুমহান নোট করতে করতে বলেন, "ছবিতে যে দেখলাম মোটা লাঠি দিয়া পিটাইতেছেন?"

আমজাদ গামছা দিয়ে মুখের লালা মোছে হাসির ফাঁকে। "সব জ্বিন কি আর নাচলে আছর ছাড়ে? কিছু জ্বিনের দরকার মাইর। মাইর দিলে কাম হয়।"

"কুয়েত গেছিলেন নাকি? পেপারে যে লিখলো?"

আমজাদ আলি মাথা নাড়ে। "অনেক আগে গেছিলাম, চইলা আসছি।

রমণ সুমহান কুয়েত নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন করেন না। তিনি পেন্সিলটা দুই আঙুলে নাড়াচাড়া করতে করতে বলেন, "ডাবপড়া, ডিমপড়া, তেলপড়াও শুরু কইরা দিছেন দেখি?"

আমজাদ আলি মাথা ঝাঁকায়। "সবাই আল্লার দান। আল্লাহ আমারে একটা জিনিস দিছেন। সেইটার কুদরত আর দশজনে ভোগ করুক, এইটাই চাই। আর কিছু না। অন্য ধান্ধা নাই।"

রমণ সুমহান প্রশান্ত মুখে বলেন, "আপনের বাড়ির কোণাতেই নাকি এইসবের দোকান বসাইছে আপনের মায়ের পেটের ভাই? আর চাস্তো-মামাতো ভাইদের দিয়া নাকি ১০ টেকা, ৫০ টেকা, ১০০ টেকা কইরা তোল্লা আদায় করতেছেন? সবই তো লিখছে দেখি পেপারে!"

টাকার প্রসঙ্গ উঠতেই আমজাদ আলি সতর্ক হয়ে যায়। বারান্দার দিকে তাকায় সে আবারও। তারপর বলে, "ছেমরাগুলি অনেক খাটাখাটনি করে। সংসার আছে তাগো। আমি আল্লাহর পথে আছি, তারা আমার পথে আছে। তাদের পেটের দিকে যদি না দেখি, তাইলে ক্যাম্নে ...।" তার স্বর আস্তে আস্তে নৈঃশব্দ্যের আড়ালে ঢাকা পড়ে।

রমণ সুমহান এবার প্যাড নামিয়ে রাখেন টেবিলের ওপর। তারপর ধীরে ধীরে ঘাড় ঘোরান বারান্দার দিকে। সেখানে স্তুপ হয়ে আছে ফল, মাছ, পাখি, চিকন আলির বিড়ির ধোঁয়া, চিকন আলি নিজে।

আমজাদ আলি জোর দিয়ে বলে, "কিন্তু আমার দিকে তো একটু দেখতে হয়।"

রমণ সুমহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। "আমি কথা বলবো।"

আমজাদ আলি বলেন, "খালি কথাই বলবেন? লিখবেন না কিছু?"

রমণ সুমহান বলেন, "লিখবো। কিন্তু ...।"

আমজাদ আলি একটু শক্ত হয়ে যায়। "জ্বে?"

রমণ সুমহান কিছুক্ষণ স্থিরচোখে তাকিয়ে থাকেন আমজাদের দিকে। তারপর হাসেন।

আমজাদ আলির শিরদাঁড়াটা হঠাৎ ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সে ঢোঁক গেলে।

"বেপারি সাহেব, আপনাকে আবারও আসতে হবে।" রমণ সুমহান মুখে আমজাদ আলির হাসি নিয়ে বলেন। "নিজে আসতে না চাইলে আপনার খাদেমরে পাঠাবেন। ফলমূলের সিজন এখন। চিতল মাছ আমি পছন্দ করি। হাঁসের সিজন যদিও শেষ, তারপরও খারাপ না। আইসেন আবার। আমি দেখতেছি কী লেখা যায়।"

আমজাদ আলি টের পায়, লোকে তাকে বেপারি ডাকলেও, তার সামনে বসে থাকা এই লেখাপড়া জানা লোকটা আরো বড় বেপারি। সে বোঝে, আজকের মতো আলাপ এখানেই শেষ। সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় আমজাদ আলি। টাকাপয়সার প্রসঙ্গ আর না ওঠাতেই বরং স্বস্তিবোধ করছে সে।

সংক্ষিপ্ত ধমক খেয়ে চিকন আলি তার খালাতো ভাইকে অনুসরণ করে। বারান্দায় জমে থাকে বিড়ির ধোঁয়া, তার নিচে ফুটে থাকে চিকন আলির অবয়ব।

রমণ সুমহান দরজা লাগিয়ে এসে প্যাড তুলে নেন হাতে।

লিখবেন তিনি, আমজাদের হয় অবশ্যই লিখবেন। লিখবেন আমজাদের মনে তরল ভয়ের কথা, যে ভয় তাকে তাড়িয়ে ফিরছে বছরের পর বছর। মধ্যপ্রাচ্যফেরত দরিদ্র শ্রমিক আমজাদ আলিকে কেন দেশে ফিরে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করতে হয়? আলো ফেলতে হবে এ অন্ধকার জায়গাতেও, ফুটিয়ে তুলতে হবে কুয়েতফেরত শ্রমিকের যন্ত্রণার কথা। লিখতে হবে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রম-রাজনীতির খাঁজভাঁজ নিয়ে, আমজাদ বেপারির আগে বলতে হবে আদম বেপারির কথা। তিন প্যারা সে কথা লিখবার পর লিখতে হবে দেশে সবজির অগ্নিমূল্যের কথা, কীভাবে পদে পদে তার দাম বাড়ায় ফড়িয়া-দালালেরা, অসহায় আমজাদ বেপারিদের ভ্যানে সবুজ লাউশাক আর লাল লালশাকের লাল-সবুজ যে আক্রান্ত, সে নিয়ে কথা বলতে হবে, একফাঁকে বলতে হবে সীমান্তে বিএসএফের হাতে নিহত আমজাদের মতো নিরীহ মানুষের করুণ মৃত্যুর কথা। সমাজ কি পারছে আমজাদদের রক্ষা করতে? পারছে না। নিম্নবর্গীয়পনার দিকে কারো নজর নেই। সবাই মাথা ঘামাচ্ছে যার যার বিষফোঁড়া নিয়ে। ভালো মুসলমান আর খারাপ মুসলমান নিয়ে আরো একটু কথা বলতে হবে এ ব্যাপারে। তারপর আবারও বলতে হবে তরল ভয়ের কথা। অনলাইন ফ্যানাটিকেরা খুনী ভাড়া করে দিনের পর দিন লাশের পর লাশ ফেলে দিচ্ছে, সেদিকে নজর না দিয়ে দু'টি শিশুর চিকিৎসার রহমফের নিয়ে কি সমাজের মাথা ঘামানো মানায়? কত কত ভুল চিকিৎসা হচ্ছে প্রতিদিন, প্যাথলজি টেস্ট ল্যাবগুলোতে কত কারসাজি, কত বড় বড় হাসপাতালে কত বড় বড় সমস্যা, সেদিকে বরং আগে মনোযোগ দেয়া জরুরি। চিত্রনায়ক মান্নার মৃত্যুর কোনো সুরাহা হলো না, বস্তির লোকদের হৃদয়ের রাজা চিকিৎসাবিভ্রাটে মারা গেলেন, তার সমাধান আগে পেতে হবে। দরিদ্র, নিরন্ন আমজাদদের ফাঁসানোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাদের হাতে আছে। আমাদের বুঝতে হবে, এই কবিরাজ, এই হাকিম, এই পীর ... এরাও একটি সমান্তরাল ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছে সমাজে। এদের মুখাপেক্ষী কোটি কোটি মানুষ, কোটি কোটি ভোটার। এই ভোটাররাই দুর্নীতিবাজ লোকজনকে ভোট দিয়ে এমপি বানায়, তাদের মধ্যে কেউ কেউ মন্ত্রী হয়। আবার এরাই নির্মাণ করে পীর, দরবেশ, আউলিয়া। আমজাদ যদি পীর হয়, তার এলাকার মানুষ সে পীরের নির্মাতা, মুর্শিদ। চিকিৎসা সেবা পৌঁছানোর আগে আমজাদদের নামে সত্যমিথ্যা গুজব রটানো তাই মিডিয়ার দায়িত্বশীলতার পরিচয় হতে পারে না। তাই আমজাদকে দোষী না করে তাকাতে হবে কড়াইল বস্তির ইলিয়াস আলির দিকে, মোমেনা বেগমের দিকে, খদেজার মায়ের দিকে। এদের পরিচয় পাবেন পাঠক, আগামী কলামে।

রমণ সুমহান হাঁপিয়ে ওঠেন পয়েন্টগুলো লিখতে লিখতে। মনটা খচখচ করে ওঠে তাঁর। টাকা না চাওয়া কি ঠিক হলো? এ কথা সত্য যে ভাড়া খাটার জন্যে দীর্ঘদিন জাল পেতে বসে আছেন তিনি, তাই বলে শেষ পর্যন্ত কলাটামূলাটাকচুটা? বড় রাজনৈতিক দল বা কর্পোরেট কি যোগাযোগ করবে না শেষ পর্যন্ত? জামাতের উম্মু আবদুলের ওপর বেশি ভরসা করতে পারেন না তিনি।

বারান্দায় আবার ডেকে ওঠে রাজহাঁসটা, চিতল মাছ দু'টো চুপচাপ ফলের মতোই নিথর হয়ে পড়ে থাকে, কানে আসে অস্পষ্ট মাছির গুঞ্জন।

না, আমজাদের কাছে টাকা চাইতে পারেননি তিনি শেষ পর্যন্ত। কোথায় যেন নিজের সাথে আমজাদের মিল খুঁজে পেয়েছেন রমণ সুমহান। একসময় তিনিও কবিতা লিখতেন, এখন ডালদার্শনিকতায় মন দিয়েছেন, কবিতার হিন্দু মুসলমান খুঁজে বের করেন ফেসবুকে, আমজাদ যেমন সবজি বিক্রি ছেড়ে অসুস্থ মহিলাদের পেটায়। আমজাদের হয়ে লড়ে যায় তার চামচারা, আমজাদ চিকিৎসার নামে স্যাডিজম চরিতার্থ করে যায়, আমজাদ ওষুধের নামে হাজির করে ডাবপড়া, তেলপড়া, আমজাদ ভেট নিয়ে হাজির হয় তারচেয়ে বড় দুর্বৃত্তের আশ্রয় নিতে, আমজাদ শেষ পর্যন্ত গলা ফাটিয়ে দাবি করে যায় সে আধ্যাত্মিক লাইনের লোক, আল্লাহ তাকে পথ দেখায়।

আমজাদের সাথে কী আশ্চর্য সাদৃশ্য তাঁর জীবনের!

রমণ সুমহান বিড়বিড় করেন। ইদানীং সিনেমা দেখছেন, গোল্ডমেম্বারে অস্টিন পাওয়ারসকে ছুঁড়ে দেয়া ডক্টর ঈভল এর চ্যালেঞ্জ উঠে আসে তাঁর ঠোঁটে, "উই আর নট সো ডিফরেন্ট, ইউ অ্যান্ড আই!"

রমণ সুমহান আচমকা হাসেন। না, আমজাদ এখনও পিছিয়ে আছে তাঁর চেয়ে।

রমণ সুমহান উঠে চলে যান ভেতরের ঘরে, কম্পিউটারের কাছে। লেখাটা শেষ করে শাহজাদ ভাইয়ের কাছে পাঠাতে হবে। তবে হাসিটা রয়ে যায় প্যাড-পেন্সিলের কাছে, চেশায়ার বেড়ালের হাসির মতোই।


মন্তব্য

সাইফ তাহসিন এর ছবি

রমণ সুমহান গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
ডিসক্লেইমার খুলাম, পাইলাম না, গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
বিয়াফক জটিল লাগল লেখাটা

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

এই খবরের সাথে কোন মিলই নাই: http://prothom-alo.com/detail/date/2010-04-12/news/55967

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

রেনেট এর ছবি

কি ভয়ংকর! মানুষ সেধে সেধে পিটানি খেতে যায় কেন কে জানে!
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সবচেয়ে হাস্যকর হল থানার ওসির বক্তব্য, উনারা কিছুই শুনেন নাই, তদন্ত করে দেখতে হবে। জানতে ইচ্ছা করে, কত বখরা পাইছিল ওসি সাহেব?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

আমার আড়াই মাস বয়সী দুইটা মেয়ে আছে, খবরটা দেখে শিউরে উঠলাম। কুত্তার বাচ্চা ভণ্ড পীররে ডালকুত্তা দিয়ে খাওয়ানো উচিত।

বেজন্মার মাথায় সবুজ পাগড়ী, চরমোনাইর ট্রেড মার্ক। চরমোনাই , শর্ষিনা এরা সবাই ৭১ সালে একজোট হয়ে রাজাকারি করছে। এখন আসছে পরহেজগারি দেখাইতে।

আধ্যাত্মিকতার ছিটেফোঁটাও নাই এদের কার্যকলাপে, আমি বরিশালের ছেলে হওয়ায় খুব কাছ থেকে দেখেছি এদের। ধুর মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল।

অন টপিকঃ গল্প ভালো হয়েছে, তবে আরেকটু ঝাঁঝাঁলো হলে খুশী হতাম, একটু ডিপ্লোম্যাটিক ফ্লেভার রয়ে গেছে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

[[ছবিগুলো সরিয়ে দিলাম]]

শতদল সরকারকে এরকম একটা বিষয় সামনে তুলে আনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মামুন হক এর ছবি

মুর্শেদ ভাইকে অনুরোধ করছি শিশু নির্যাতনের ছবিগুলো মুছে দিতে। এগুলো আমাকে অসুস্থ করে দিচ্ছে, প্লিজ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

দুঃখিত।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মামুন হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার অনেক অনুরোধ অতীতে আমি রাখি নাই, কিন্তু আপনি আমার অনুরোধ এক কথায় মেনে নিয়ে দেখিয়ে দিলেন মানুষ হিসেবে আপনি কতটা সংবেদনশীল এবং উঁচু মাপের। আমি আক্ষরিক অর্থেই ভীষণ বিচলিত বোধ করছিলাম ছবিগুলো দেখে।

ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা রইলো এক সদ্য পিতার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিগুলা দেখে গা গুলাচ্ছে। এতটুকু বাচ্চার উপরে এইরকম কি করে করে মানুষ?! মানুষ কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে?! ঈশ্বর বলে যদি কিছু থেকেই থাকে, সে কি এতই অন্ধ যে এইগুলা দেখেও দেখে না?!

============
আশাহত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ছোটবেলায় পড়া একটা লাইন মনে পড়ে গেল,

"আইকনের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় লুঠেরার মুখ সেইন্টের মুখের মত"।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মূলত পাঠক এর ছবি

ভয়ানক!!

ধন্যবাদ হিমু, এমন বিষয় নিয়ে লেখার জন্য। আপনার গল্পের সমাপ্তি প্রায় সবসময়ই আমাকে ঈর্ষাণ্বিত করে, এবারেও ব্যতিক্রম হলো না। চেশায়ার ক্যাটের হাসি বহুল ব্যবহৃত, তাও এমন উপযোগ ভাবি নি আগে। অসাধারণ!

নৈষাদ এর ছবি

এই ফেব্রুয়ারীর চমৎকার এক সকালে রমনা বটমূলে গিয়ে দেখি আধ্যাত্মিক লাইনের একজন ডেরা বানিয়ে বসা... পুলিশ ভাইদের আধ্যাত্মিক লাইনের জ্ঞানদান করছে...। ... রমণ সু... মেনি বার্ডস...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- রমণ সুমহান নামটা প্রথমবার বেশ নির্দোষ একটা নাম বলেই ঠাহর হচ্ছিলো, কিন্তু দ্বিতীয় বার উচ্চারণেই টনটনে মস্তিষ্ক ব্যাটা ফশ করে ধরে ফেললো! আর তার পরেই হাসতে হাসতে পেদে দেয়ার অবস্থা! হো হো হো

ফেসবুকে বলছিলাম আমজাদ মিয়ার ব্যাপারে। তাকে অবিলম্বে মানসিক হাসপাতালে সোপর্দ করা উচিৎ। যদি সে মানসিক ভারসাম্য না-ও হয়ে থাকে তাহলে তাকে আচ্ছামতো পিটিয়ে তারপর মানসিক ভারসাম্যহীন করে পরে তাকে মানসিক হাসপাতালে গিয়ে রেখে আসা উচিৎ।

তবে রমণ সুমহানকে অতোদূর নেয়ার দরকার দেখি না। শুধু শুধু জাতীয় সম্পদের অপচয় করা হবে তাহলে। তারচে বরং তাকে কান ধরে ময়লার ডিপোতে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হোক। সে ময়লার ডিপোতে হাতরে ময়লা খুঁজতে থাকুক।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

রমণ সুমহানের তরিকা ধর্তে পাইর‌্যা... পুরাই হাহাপগে...

এইমাত্র পেপার থেকে চাক্ষুষ পড়লাম খবরটা, বলার নাই কিসু...

_________________________________________

সেরিওজা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাড়িতে প্রথম আলো রাখিনা অনেকদিন। তাই প্রথমে বুঝতে পারিনি। রমণ সুমহান পড়েই হাহাপগে ছিলাম।
তারপর মামুর লিঙ্ক ধরে প্রথম আলো দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলাম...
এইগুলারে কুত্তা দিয়া রমণ করানো উচিত...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার খাসনগর গ্রামের সেই ভণ্ড পীর আমজাদ হোসেন বেপারিকে পুলিশ আজ সোমবার সকালে গ্রেপ্তার করেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজদিখান থানার পুলিশ তাঁকে তাঁর আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করে।

http://prothom-alo.com/detail/date/2010-04-12/news/56044

নাশতারান এর ছবি

রমণ সুমহানকে চিনতে একটু সময় লাগলো। Smiley

আমাদের গৃহকর্মী সকাল বেলা খবরের কাগজ হাতে ছুটে এলো। সে বুঝতে পারছিলো না ব্যাপারটা কী। আম্মু দেখেই আঁতকে উঠে কাগজটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো।

আমজাদ লোকটা পুরোপুরি বিকারগ্রস্ত। এর উপযুক্ত চিকিৎসা প্রয়োজন।



স্যাডিজম > সেইডিজম, মার্কস ডি সেইড এর নামানুসারে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হিমু এর ছবি

মাঘকি দ্য সাদ ... তবে সেইডিজম ঠিকাছে। আরো কিছু পরিবর্তন করবো লেখাটায়, তখন বানানটাও ঠিক করে নেবো। ধন্যবাদ।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নাশতারান এর ছবি

আমার জানামতে "মাঘকি দ্য সাদ" ফ্রেঞ্চ উচ্চারণ, ইংরেজিতে "মার্কস ডি সেইড"। সেইড থেকেই সেইডিজম, সেইডিস্ট।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মৃত্তিকা এর ছবি

গল্প চলুক
গ্রেপ্তার হয়েছে পড়ে ভালো লাগলো!

তেপান্তর [অতিথি] এর ছবি

(মতামতের কোন অংশ অশোভন মনে হলে প্রকাশ করার দরকার নেই)
লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছিল আধুনিক ওয়ালিউল্লাহ পড়তেছি।

মামুন ভাইয়ের মতামতের সাথে একমত। আর চাই, নরপশুটার উপযুক্ত বিচার হোক।

৫-৬ বছর আগে একটা ইমেইল পেয়েছিলাম- যার দৃশ্যগুলো ছিল হোটেলে **মাংস ভক্ষণ। (পুরোটাই যদিও বানানো ছিল)- আমার বমি আসছিল ওই ছবিগুলো দেখে। প্রায় ১ বছর ঐ অসুস্থ দৃশ্য আমার করোটির ভিতর যন্ত্রণা দিয়েছিল। মনে মনে সেই ইমেইল পাঠানো বন্ধুকে গালি দেই এখনও।

আজ পত্রিকায় এই ছবিগুলো দেখে একই অনুভূতি হল। পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে সবাই/অনেকেই ধন্যবাদ দিবেন, জানি। কিন্তু প্রমাণের জন্য ধর্ষণ দৃশ্য কি তাহলে পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে? শুধু রিপোর্ট যথেষ্ঠ নয়! সম্পাদকেরও কোন দায়বদ্ধতা নেই!

বেশ কয়েক বছর পূ্র্বে মিরপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ/সিংহ-এর আক্রমনে নিহত এক শিশুর ছবি পত্রিকার প্রথম পাতায় এসেছিল। এসব দেখে মনে হয়, সম্পাদকেরা ধরেই নিয়েছে যে, পত্রিকা পাঠকমাত্রই ১৮+।

তেপান্তর

সাফি এর ছবি

লেখা পড়েতো কিছুই বুঝলামনা, টেক্সুয়াল কন্টেক্সট আর সোশ্যালাইযেশন এর উপরে একটু পড়াশোনা করে আবার পড়বনি

হিমু এর ছবি

রমণ সুমহানের কথা আর কাজ বুঝতে গেলে তোকে অঅঅঅনেক পড়াশুনো কত্তে হবে। শুনলাম কোন এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি এসব পড়াশুনোর জন্য দ্দীণূবিদ্যা নামে একটা ডিপার্টমেন্ট খোলা হচ্ছে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মুস্তাফিজ এর ছবি

সকালে পত্রিকা হাতে নিয়ে ঘটনাটা পড়ার পর আমার কেন জানি হিমুর কথাই মনে হয়েছিলো। সত্যি বলছি জানিনা কেন।

...........................
Every Picture Tells a Story

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমারও মুস্তাফিজ ভাই। চিন্তিত

মনেহয় আমজাদ আলি বেপারির সাথে হিমুর এইসব উপঢৌকণ পাওয়া কলাটা-মূলাটা-লাউটা-রাজহাঁসটার টেন্ডার নিয়ে গিয়ানজাম হইছে। তাছাড়া, সেও নাকি বেপারি সাহেবের উঠানে সরিষার তেলের ব্যবসা করতে চেয়েছিলো, কিন্তু বেপারির মার পেটের সহোদরের উপরের মহলে বেশ জানাশোনা থাকায় লটারির মাধ্যমে সেই দোকানের বরাদ্দ আর হিমু পায় নাই।

এইদিকে সরিষার তেল বেচে বেপারির সহোদর বাড়িতে একটা টিনশেড দালান দিয়ে ফেললো। মধুমতি মডেল টাউনে নাকি একটা প্লট কেনার কথাও ভাবছিলো। সেদিন নাকি একটা সেকেন্ড হ্যান্ড টয়োটা করোলাও দেখে আসছে। তার আবার বিবাহেরও কথা বার্তা প্রায় পাকা। পাত্রী গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে পড়ে। কথিত আছে হিমু এই বালিকারে ছোট বেলায় প্রেম নিবেদন করে আচ্ছা করে বকা খাইছিলো!

সব মিলায়ে বুঝলেন, পরিস্থিতি ভীষণ ঘাপলাময়। নাইলে হিমু সচলে পোস্ট দেয়ার সাথে সাথেই পুলিশ গিয়ে বেপারি সাহেবকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে আসবে কেনো ধরে? আপনিই বলেন! আমার তো বিরাট সন্দো হচ্ছে, হিমু মনে হয় পুলিশেরও লোক! চোখ টিপি

ঐদিকে আবার জোর গুজব উঠেছে। মহান কলামিস্ট রমণ সুমহান নাকি খোয়াবে কী কী পেয়ে গিয়েছেন। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠেই নাকি একটা নেংটি পরে মুন্সিগঞ্জের দিকে হানড্রেড মিটার স্প্রিন্টে লৌড় লাগিয়েছেন। এখন আবার তিনি নিজেকে রমণ পীর দাবী না করে বসলেই হয়! হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তিথীডোর এর ছবি

আজ পত্রিকা দিয়েছে অনেক দেরীতে... না দিলেই বোধহয় ভালো হতো!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শরতশিশির এর ছবি

চলুক

আমার ক্ষমতা থাকলে বেটাকে আমি শূলে চড়িয়ে দিতাম। সবচেয়ে কষ্ট লেগেছে বাচ্চাদের কথা মনে করে। আশা করি তাদের সুচিকিৎসা হবে কারণ মানসিক, শারীরিক দুইদিক থেকেই প্রচন্ড ধকল গেছে। কী দিন পড়ে গেলো যে এ-ও আমাদের দেখতে হলো! মন খারাপ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

কাকুল কায়েশ এর ছবি

সেরকম বাঁশ দেয়া গেছে রমন সুমহানকে! হাততালি

যাই হোক, প্রথম আলো থেকে খবরটা দেখে খুব খারাপ লাগল! কেন জানি মনে হচ্ছে ভবিষ্যতে আর কিছু দেখেই কখনো বিস্মিত হব না; যা দেখলাম, এর চাইতে খারাপ তো আর কিছু হতে পারে না যে বিস্মিত হব! সবকিছুই খুব সহজ-স্বাভাবিক লাগবে আর কদিন পর থেকেই!
ব্র্যাভো বাংলাদেশ!

========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

লীন এর ছবি

কিছুই বলার নেই।

______________________________________
লিনলিপি

______________________________________
লীন

রানা [অতিথি] এর ছবি

কয়েক ঘন্টা আগে খবরটা পড়ার পর থেকেই মাথা খারাপের মত লাগছিল, বিশেষ করে ছবিগুলো দেখে। আমার নিজের বাচ্চাকে লাথি মেরে মেরে মাটিতে গড়ালে/ উল্টো করে বেধে রাখলে/ তার গায়ের উপর দাড়ালে, আমি আর ভাবতাম না।

বদমায়েশটা গ্রেফতার হয়েছে শুনে মনটা যে কি পরিমাণ ভাল লাগলো বুঝাতে পারবো না। এর আর এর সাথীদের দরকার শক্ত পিটা।

খালি মনে হচ্ছে বাচ্চাদু'টি কেমন আছে। এই ধকল সইতে পারছেতো ছোট্ট শরীর? আশা করি সেটা প্রথম আলো আমাদের শীঘ্রই জানাবে।

সৌরভ এর ছবি

লেখাটা চমৎকার। না, মহামতি দীনুকে পচানোর জন্যে নয়। দীনু পচে গেছে, তাকে আর পচিয়ে লাভ নেই। ধন্যবাদ আমজাদ আলীকে তুলে আনার জন্যে।

মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা বোধহয় ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষে ভর্তি একটা জাতি হয়ে যাচ্ছি। মানুষ মেরে গাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা, পুড়িয়ে ফেলা, মেরে আবার ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখা এইসব এখন অনেক গা-সওয়া হয়ে গেছে। তার তুলনায় আমজাদ আলী যেন কিছুই না।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

মানুষ হিসেবে আমিও মনে হয় দিন দিন বিকারগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছি! নাহলে এই শুয়োরটার ছবি দেখে একে খালি হাতে ছিঁড়ে ফেলার ইচ্ছা হবে কেন আমার? আমি এর ফাঁসি দাবী করতে পারতাম, মানসিক হাসপাতালে দেবার কথা বলতে পারতাম, কিন্তু না...ইচ্ছা হলো নিজের হাতে শাস্তি দেবার! নিজের সহিংস ইচ্ছা দেখে আজকাল নিজেই ভয় পাই... এই অসুস্থ মানুষগুলো আস্তে ধীরে আমাকেও কেমন জানি পশু বানিয়ে ফেলছে... ইয়ে, মানে...

এই লোকের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বলদগুলো আর রিপোর্টারকেও মারতে মন চাইলো... মাথা ঠান্ডা হচ্ছেনা কোনওমতেই... ফটোগ্রাফারই বা কী করে ছবি তুলতে পারলো এই অসভ্যটাকে বাধা না দিয়ে? জানিনা ঠিক কী ইচ্ছা করছে...এই খবর প্রকাশের জন্যে তাদের ধন্যবাদ দিতে না কী ছোট্ট সোনাগুলোকে অত্যাচারে বাধা না দেবার জন্যে এদের চাবুকপেটা করতে...! ইয়ে, মানে...

দুঃখিত হিমুদা... খবরের কাগজ পড়িনা বলে খবরটা দেখা হয়নাই আজকে...সন্ন্যাসীদার কাছে শুনে খবরটা পড়লাম, তারপর থেকে মাথামুথা পুরো আউলা... রাগের চোটে আপনার লেখার প্রতিও সুবিচার করতে পারলাম না! ইয়ে, মানে... মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

হিমু এর ছবি

আমজাদ আর সাহিত্যআমজাদদের কীর্তিকলাপের নিরব দর্শকের অভাব হয় না। ফটোগ্রাফার বাধা দিতে গেলে তাকে হয়তো চামচারা প্রথমে ঠ্যাঙাতো, তারপর ক্ষমা চাইতে বাধ্য করতো।

খবরে পড়লাম পীরের ওষুধ পীরের ওপর কিছুটা প্রয়োগ করা হয়েছে। তাকে আর তার চামচা-মাতবরদের আরো কয়েকদিন এই ওষুধের ওপর রাখা হোক, এই কামনা করি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

বর্ষা এর ছবি

দুষ্ট বালিকা,
ঠিক আমার মনের কথাটই বলেছো, কিভাবে ফটোগ্রাফার ঐ বাচ্চাকে অত্যাচার করার ছবি তুলতে পারলো বাধা না দিয়ে, আর আশেপাশের লোকগুলোর মাথায়ও নিশ্চয় সমস্যা আছে।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- সবার মাথায় সমস্যা আছে, এটা ভাবার আগে নিজের মাথায় সামান্য একটা হিসাব আনা জরুরী বর্ষা।

এই ফটোগ্রাফার বাধা না দিয়ে ফটোগুলো তুলতে পেরেছিলো বলেই ফটো ছাপা হওয়ার একদিনের মধ্যে আমজাদ বেপারিকে লাল দালানে ঢুকানো গেছে।

এখন চিন্তা করে দেখো, সেই ফটোগ্রাফার যদি ক্যামেরা ব্যাগে ঢুকিয়ে আমজাদ বেপারিকে বাধা দিতো, তার সাথে গায়ে সরিষার তেল মেখে হাডুডু খেলতে নেমে যেতো, কী হতো তাহলে?

ক) আমজাদের খাদিমরা ফটোগ্রাফারকে বাধা দিতো।
খ) পীরকে অপমান করার দায়ে খাদেমরা তাকে পীরনাস্তিক বানাতো।
গ) আশেপাশের সরল মনের মানুষগুলোকে ফটোগ্রাফারের বিরুদ্ধে আনতো একটা জেহাদী, মজিদীয় বক্তৃতা দিয়ে।
ঘ) ফটোগ্রাফার পাইকারী দরে কিল খেয়ে হাসপাতালে অবস্থান নিতো।
ঙ) থানা হতো, পুলিশ হতো, রিপোর্ট হতো পেপারে।
চ) বিরাট একটা প্রক্রিয়া শুরু হতো আমজাদ বেপারির অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে।
ছ) এর মধ্যে আমজাদ বেপারি আরও ডজন খানেক শিশুদের চিকিৎসা করে যেতো!

এইগুলা এড়ানো গেছে কেবল ফটোগ্রাফারের মাথায় কিঞ্চিৎ সমস্যা ছিলো বলেই। নাইলে আমজাদ বেপারি এখনো বহাল তবিয়তে তার চিকিৎসা চালিয়ে যেতো।

কখনো কখনো সমস্যাযুক্ত মানুষের দরকার আছে, বুঝলা ব্যাপারটা? হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ফারুক হাসান এর ছবি

সোমবার আসলেই আমি দৌড়ের উপ্রে থাকি, সাপ্তাহিক মিটিং থাকে। তাই খবরটা পড়া হলো দেরিতে। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে কোনো মানুষের পক্ষে এই ধরণের কাজ করা সম্ভব। একটা কুকুরের বাচ্চাকেও লাথি দিতে মানুষ দুইবার ভাববে, সেখানে শিশুদেরকে এই পাশবিক অত্যাচার কীভাবে করলো পাষন্ডটা? এই লোকের চামড়া ছিলে ঝুলায়া রাখা উচিৎ।

আর গল্প ভালো হয়েছে। একদম অনলাইন ফ্যানাটিকের মত কাকে যেন খুন করলেন চোখ টিপি

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আমি ছাড়া আর কেউ কি গল্পটা পড়ে প্রথমে "রমণ সুমহান"কে "রেহমান সোবহান" মনে করেছিলেন? হায় লজ্জা!

হিমু এর ছবি

ছি ছি ছি। কলসী আছে ঘরে? দড়ি? ধারেকাছে পুশকুনি?

রমণ সুমহানকে রমণ সুমহানই ভাবুন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মেয়ে [অতিথি] এর ছবি

গতকাল অর্ধেক গল্প পড়ে ভাগসি। কিছুতেই রমণ সুমহান মানে আর বুঝি না । আজকে পড়তে পড়তে শেষে দেখি সব কিলিয়ার হয়ে গেলো দেঁতো হাসি
আপনি অত্যন্ত বিপদজ়নক লোক।

কী কমু [অতিথি] এর ছবি

চমত্কার গল্প। রমণ সুমহানকে চট করে চেনা যায়, চেনা যায় জামাতের উম্মু আবদুলদেরও (বুদ্ধিমান পাঠক, শব্দদুটোর ইংরেজি করুন, পেয়ে যাবেন মাদারচোরদের), রমণ সুমহানদের উগরে দেওয়া সব বস্তুই যে চোখ বুঁজে ছাপিয়ে দেন শাহজাদ সাহেবের মত শরীফ লোকেরা, সেও বেশ বোঝা গেল। বাকী রইল কেবল ছোলেম উল্লা খানদের প্রসঙ্গ। একসময় বরবাদ মার্জাররাও ছিলেন এ দলে। এঁরা সবকিছুর খতনা যাচাই করে মুসলমানত্ব খুজেঁ দেখেন, অপ্রাসঙ্গিকভাবে আরবী ফারসি প্রয়োগ করে শব্দে এছলামের হালুয়া মেখে নেন (এঁরা সমৃদ্ধ বলতে লজ্জা পান, বলেন দৌলতমান্দ্)। শেষবিচারে এঁরা যে সকলেই এক একজন সাহিত্যআমজাদ, হিমু সেটা সাবলীল গল্পচ্ছলে জানিয়ে দিলেন। হিমুর উদ্দেশ্যে আবারও টুপি নামিয়ে নিলাম।

হিমু এর ছবি
সাফি এর ছবি

কালুর রিপোর্ট পড়লাম। আলুতে অতিরঞ্জন হতে পারে তবে নিশ্চয়ই পুরোটা নয়। বরং বাচ্চার মায়ের কথা পড়ে মনে হলো চিকন আলীরা যেয়ে কড়কে দিয়েছে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মূল রিপোর্টের চেয়ে এই ফলোআপ রিপোর্টটি বেশি আকর্ষণীয়। 'অতিরঞ্জিত' শব্দটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার লক্ষণীয়। পীরের বাচ্চা যে আকাম করেছে, তা ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে এই 'অতিরঞ্জিত' শব্দটি দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মারা গেছে, নাকি ৩ লাখ, সেই বিতর্কের মতোই ধোঁয়াটে প্রতিবেদন লিখেছে কালের কণ্ঠ। নেক্সট ফলোআপে দেখা যেতে পারে, মতি মিঞা আমজাদ পীরের হাতেপায়ে ধরে ক্ষমা চাইছে এবং কবির হোসেনের ৬ মাসের জেল।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হিমু এর ছবি

নেক্সট ফলোআপটা অসম্ভব কিছুই না।

তবে জনকণ্ঠে কবির হোসেন আর শতদল সরকার সম্পর্কে ভিন্নমত এসেছে আবার।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমার যা মনে হয় তা হলো ফটোগ্রাফারকে অনেক সময় নানা কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়, সে হয়তো সেটাই নিয়েছে। তবে প্রথম আলোর রিপোর্ট অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে। বিশেষ করে পা দিয়ে পাড়ানোর ঘটনা এবং চড়কির মতো বাচ্চা ঘুরানো এসব মনে হয় অতিরঞ্জিত। বরং জনকন্ঠের লিংকের রিপোর্টটা গ্রহণযোগ্য। ফটোগ্রাফারের আরিফ-দশা না হলেই হয়।

হিমু এর ছবি

আলু ফলোআপ করেছে, তবে এবার প্রতিবেদক পাল্টে গেছে, তানভীর হাসান।

অতিরঞ্জন যদি হয়েও থাকে, ফোটোগ্রাফারের প্ররোচনাতেও যদি শিশুদুটিকে পা ধরে ঘোরানো হয় বা উল্টো করে ঝোলানো হয় বা পেটের ওপর ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো হয় এক সেকেন্ডের জন্যেও, তাহলেও এই পীর বাবাজিকে পিটিয়ে ভর্তা করা উচিত।

সাংবাদিক আর ফোটোসাংবাদিক দু'জনের ওপর অন্য পত্রিকাগুলো ফলোআপ করুক।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

দ্রোহী এর ছবি

সবকিছুই আমজাদদের অধিকারে চলে যাবে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মোবাইল ফোনে পড়ছিলাম। তাওয়া গরম হইলে এরকম কিছু লিখতো নিশ্চয় ঃ)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।