পরিবেশ: ধূলাবালি দিয়ে দুষিত বায়ু

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: রবি, ০৪/১২/২০১১ - ৫:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সপ্তাহখানেক আগে শিক্ষাসফরে মাওয়া যেতে হয়েছিলো। পথের মধ্যে নির্মানাধীন যাত্রাবাড়ি গুলিস্থান উড়াল রাস্তার অংশটুকু পার হতে হয়েছিল। ঐ এলাকায় বাতাস ধূলাবালি দিয়ে ভর্তি - এক অসহ্য অসভ্য অবস্থা; অথচ আমি প্রায় নিশ্চিত যে ঐ প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময়ে নির্মানকালে এই ধরণের বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে অঙ্গীকারনামা দেয়া হয়েছিল - এই ধরণের অঙ্গীকারনামা ছাড়া কোন প্রকল্পই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায় না। একই রকম ধূলা ধুসরিত কাজ কারবার দেখা যায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের নির্মানাধীন হাতিরঝিল প্রকল্পেও। অথচ কঠোরভাবে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলার বৈশিষ্টের অধিকারীদের (অন্ততপক্ষে সেনাবাহিনীর এমনই প্রোপাগান্ডা) কাছ থেকে এমনটা কাম্য নয়।

আমার ভাইয়েরা, মা, ভাইয়ের বউ, চাচা, ফুফু সকলেই ঢাকায় থাকে এবং ভেন্টোলিনের গ্রাহক - অর্থাৎ অ্যাজমা রোগী। অ্যাজমা রোগীর প্রশ্বাসের সাথে গলার ভেতর দিয়ে যখন ধূলিকণা ঢুকতে থাকে তখন সেটা ঠেকানোর জন্য শরীর ঐ পথ সংকুচিত করে বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে; তাই শীতকালে বা ধূলাবালিতে অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাই ঢাকার ধূলিধূসরিত বাতাসের বদলে অন্য কোন জায়গার (মফস্বল শহর, গ্রাম) কম ধূলিকণাযুক্ত অপেক্ষাকৃত ভাল বাতাসে তাঁদের কষ্ট কম হওয়াই স্বাভাবিক। এয়ার কন্ডিশনারে ধূলিবালি ফিল্টার হয়ে যায় বলে সেখানেও ওনারা ভাল থাকেন।

কিছুদিন আগে একটা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য দায়ী দানাদার পদার্থগুলোর শতকরা ৩০ ভাগই ইটভাটার ধোঁয়া থেকে আসে বলে দেখেছিলাম। অবশ্য সেই প্রবন্ধ প্রকাশের সময়ে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার কিংবা হাতিরঝিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। বর্তমানে দূষণকারী ইটভাটাগুলো বন্ধ করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বেশ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি, যা সামগ্রীকভাবে উপকারী হবে বলেই আশা করি। তবে অন্য উৎসগুলোও নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হলে এবং নিজের মধ্যে সভ্য মানুষের সচেতনতা না জন্ম নিলে এই দূষণের থাবা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এস্থান ত্যাগ করে সভ্য দেশে চলে যাওয়া ছাড়া গতি থাকবে না।

বাতাসে যে সকল সমস্যার কারণে আমরা অসুবিধায় থাকি সেগুলোকে পদার্থগুলোর ভৌত অবস্থার ভিত্তিতে মূলত: দুইভাগে ভাগ করা যায় - দানাদার (particulates) ও গ্যাস (gas)। গ্যাসীয় দূষণ চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে। ১৯৮৪ সালে ভারতের ভূপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার গ্যাস দূর্ঘটনার কথা নিশ্চয়ই মানুষ ভুলে নাই - এই ঘটনায় প্রায় ৪০০০ মানুষ মারা গিয়েছিলো। ঐ দূর্ঘটনায় বাতাসের চেয়ে ভারী গ্যাস মিথাইল আইসোসায়ানেট ছড়িয়ে পড়েছিলো। আমাদের বিভিন্ন কারখানায় কয়লা ও অন্যান্য জ্বালানী পুড়ালে তা থেকে বাতাসে সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইড গ্যাস নির্গত হতে পারে, এই গ্যাসসমূহ বাষ্প বা অন্য কোন জলীয় অংশের সংস্পর্শে সালফিউরিক এসিড বা নাইট্রিক এসিডের মত এসিড উৎপন্ন করে। তাই তা একদিকে যেমন এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে অন্যদিকে ওরকম গ্যাসে শ্বাস প্রশ্বাস নিলে ফুসফুসের ঝিল্লিতে প্রদাহ হয় (ভেজা কোষের সংস্পর্শে এসিড তৈরী হয় বলে)। একইভাবে দূষিত বায়ুতে মানুষের চোখ জ্বালা করা ছাড়াও অন্য অনেক রকম অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।

বায়ুদূষণে দায়ী দানাদার পদার্থগুলো কঠিন বা তরল হতে পারে। দানাদার পদার্থগুলো ধূলাবালি (dust) হতে পারে যা বড় বড় পাথর বা অন্য কঠিন পদার্থ ভেঙ্গে গুড়া গুড়া হওয়ার ফলে উৎপন্ন হয়; ধোঁয়া (smoke) হতে পারে যা কার্বনভিত্তিক বিভিন্ন জ্বালানী পুড়ানোর ফলে কারখানা, বাসাবাড়ি বা গাড়ি থেকে উৎপন্ন হতে পারে; ছাই জাতীয় পদার্থ (fly ash) হতে পারে; ফিউম (fume) বা রাসায়নিক বাষ্প ঘনীভবনে তৈরী দানা হতে পারে। এছাড়া তরল দানাদার পদার্থ হিসেবে কূয়াশার (mist) কথা বলা যেতে পারে যা পানির বাষ্প ঘনীভবনের মাধ্যমে তৈরী হয় আর দৃষ্টিসীমাকে কমিয়ে দিয়ে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে বিভিন্ন দূর্ঘটনার আশংকা বাড়িয়ে দেয়; তরল পদার্থকে বাতাসের চাপে স্প্রে (spray) আকারেও বাতাসে ছাড়া হয় বিশেষত বিভিন্ন কীটনাশক হিসেবে যা উদ্দিষ্ট কীট ছাড়াও অন্য প্রাণীদের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বাতাসে দানাদার পদার্থ থাকলে তা দৃষ্টিসীমা কমিয়ে দেয়। কুয়াশার কারণে বিভিন্ন সময়ে গাড়ি এবং নৌ দূর্ঘটনার খবর কিংবা যাত্রায় অতিরিক্ত সময় লাগার অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে অজানা নয়। এছাড়া ধূলিকণাগুলো চলমান যন্ত্রাংশের মধ্যে জমা হলে ঘর্ষণজনিত অতিরিক্ত ক্ষয় ও তাপ উৎপন্ন হয়ে যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়। কিছুদিন আগে আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে পুরা ইউরোপে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো এমন কারণেই। সোভিয়েট ইউনিয়নের চেরনবিল পারমানবিক দূর্ঘটনার ফলে ধোঁয়ার মাধ্যমে তেজষ্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল।

আমাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি এবং যন্ত্রপাতির ঘর্ষণজনিত ক্ষয় বাড়িয়ে দেয়া ছাড়াও দানাদার পদার্থগুলো গাছের পাতার উপর জমলে সেই পাতার সালোক সংশ্লেষণ অনেক কমে যায়, ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যহত হয়, ফসলের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। এছাড়া ঐ দানাদার পদার্থের রাসায়নিক ধর্মের কারণে এটা ধারণ করা অংশে অনাকাঙ্খিত রাসায়নিক বিক্রিয়াও ঘটতে পারে। ইটভাটার এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এলাকায় বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষের ফলন কমে যাওয়ার রিপোর্ট এদেশের পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে। বায়ুদূষণের ফলে পরিচ্ছন্নতার সমস্যার কথা নতুন করে বলার কিছু নাই, ঢাকায় একটা কাপড় ১ দিন ব্যবহার করে না ধুয়ে আরেকবার ব্যবহার করা যায় না অথচ জাপানে এক সপ্তাহেও শার্টের কলার বা হাতাগুলোতে ময়লা জমতো না। জামাকাপড়, পর্দা, আসবাবপত্র, বইপত্র আর জানালার গ্রীল, ঘরের মেঝে এগুলো নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে ধূলিময় স্থানে অনেক বেশি সময় এবং শ্রম খরচ করতে হয়।

কোন এলাকায় কতটুকু বায়ুদূষণ হচ্ছে সেটা ওখানকার আসবাবপত্রের উপর প্রতিদিন জমে থাকা ধূলাবালি খালিচোখে দেখেই সহজে অনুমান করা যায়; এক এলাকা হতে অপর এলাকার পার্থক্যও এভাবে তুলনা করা যায়। তবে বাতাসের নমুনা সংগ্রহের জন্য ল্যাবরেটরীর পদ্ধতিও আছে। তবে সেই পদ্ধতি বেশ ঝামেলাজনক -- বিশালাকার যন্ত্র গাড়িতে টেনে নিয়ে যেতে হয়, আর সেই সংগ্রাহক ফিল্টারের ভেতর দিয়ে নির্দিষ্ট বেগে বাতাস টানতে হয় টানা ৮ ঘন্টা; ফলে সাথে জেনারেটরও নিয়ে যেতে হয়, এরপর নমুনা পরীক্ষাগারে এনে পরীক্ষা করতে হয়। বায়ুদূষণের এরকম চুলচেরা পরিমাপ করা যথেষ্ট ব্যয়বহুল এবং অচিন্তনীয়। আর এতে দীর্ঘমেয়াদী দূষণের প্রকৃতি বুঝতে চাইলে নিয়মিত এবং বিরতিহীনভাবে পরিমাপ করা দরকার। ঢাকা শহরে বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এমন নমুনা সংগ্রাহক চালু আছে। কোন এলাকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপাত্ত (বিভিন্ন বছরে নির্দিষ্ট কিছু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা, রোগী ভর্তির সংখ্যা, ঔষধ বিক্রির পরিমান ইত্যাদি) বিশ্লেষণ করলেও ঐ এলাকায় বায়ু দূষণের প্রকোপ বোঝা যেতে পারে। তবে, আরেকটা বিকল্প পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি হল প্রাকৃতিক নির্দেশক (ecological indicator) ব্যবহার করা। কিছু কিছু প্রাণী ও উদ্ভিদ ওখানকার পরিবেশের সামান্য পরিবর্তনের ফলে আক্রান্ত হয় এবং সেটা দেখা যায়। যেমন কিছু মাছ আছে যারা পানির গুণগত মান সামান্য খারাপ হলেই সেই এলাকা থেকে ভেগে যায় - এই ধরণের মাছকে খাবার পানির জলাধারে রেখে জলাধারের প্রবেশ পথের আশেপাশে ওগুলোর গতিবিধি রেডার দিয়ে লক্ষ্য করা হয় (সবসময় পানি পরীক্ষা করার চেয়ে এটা অনেক কম খরচের); কখনও মাছ জলাশয়ের পানি প্রবেশ পথ থেকে পালিয়ে গেলে সাথে সাথে পরীক্ষার জন্য পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। একই ভাবে কিছু গাছ/লতাগুল্ম আছে যাদের বৃদ্ধি, পাতার আকার, রঙ ইত্যাদি বৈশিষ্ট বায়ু দূষণের সাথে সাথে প্রতিক্রিয়ায় পরিবর্তন হয়ে যায়। ব্যাংকক শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাতাসের গুনাগুণ পর্যবেক্ষণের জন্য এরকম কিছু গাছ লাগানো হয়েছে।

মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ফলে সৃষ্ট দানাদার পদার্থ দিয়ে বায়ু দূষণ এর উৎসেই ঠেকানো খুব কঠিন কিছু নয়। কারখানার দানাদার কনা যুক্ত ধোঁয়াকে সরাসরি চিমনীতে আসতে না দিয়ে পানি ভর্তি একটা লম্বা হাউজের উপর দিয়ে প্রবাহিত করে তারপর চিমনীতে আসতে দিলে স্বাভাবিক অভিকর্ষ বলের কারণেই বেশিরভাগ দানাদার পদার্থ পানিতে পড়ে যাবে। পানির উপর একবার পড়ে গেলে ভেজা কনাটা অনেক ভারী হয়ে যায় বলে সেটা আবার বাতাসে ফেরৎ আসতে পারে না। ঠিক এই উপায়টা অনুসরণ করে ইদানিং বেশ কিছু ইটভাটা (২০০+) কাজ করছে বাংলাদেশে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে নতুন ইটভাটা তৈরী না করে সামান্য খরচেই (পানির হাউজ ও সংযোগকারী পাইপের জন্য) পুরাতন ইটভাটাগুলো থেকে দূষণ কমানো সম্ভব।

বিভিন্ন নির্মাণস্থলে কাঁচা রাস্তা থেকে এবং জমিয়ে রাখা নির্মাণ সামগ্রী (বালু, মাটি) বাতাসে ছড়িয়ে যেন না পড়ে সেজন্য এর প্রশমন ব্যবস্থা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের ফরমেই দেয়া আছে (বাংলা ফর্ম, চেকবক্সে টিক দিতে হয়)। কাঁচা রাস্তা থেকে ধূলা উড়া রোধে কম গতিতে গাড়ি চালানো ছাড়াও নিয়মিত পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখার উপায়টা পৃথিবীর সব সভ্য জায়গাতেই মানা হয়। এজন্য অত্যন্ত বিশুদ্ধ ও পানযোগ্য পানি ব্যবহার করার প্রয়োজন নাই। অথচ পানির অভাব নাই এমন দেশেও হাতিরঝিল লেকপাড়ে কিংবা যাত্রাবাড়ির উড়াল সড়ক নির্মানস্থলে ধূলিময় নারকীয় অবস্থা ভোগ করতে হচ্ছে সকলকে। এছাড়া মাটি বা বালুর মত নির্মাণ সামগ্রী জমিয়ে রাখার স্থলের চারপাশে বায়ু প্রবাহ থেকে রক্ষার জন্য উঁচু বেড়া দিতে হয়। বালু বা মাটি পরিবহণের ট্রাকগুলোকো ত্রিপল দিয়ে ঢেকে নিতে হয়।

বাসাবাড়িতে ধূলার উপদ্রব থেকে কিছুটা সুরক্ষা পেতে গাছপালার আবরণ একটা চমৎকার পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি হতে পারে। গাছপালা সূর্যের তাপ শোষণ করে গরম থেকে রক্ষা করা ছাড়াও এর ঘন সন্নিবেশিত পাতাগুলো ধূলিকণা থিতিয়ে জমা হওয়ার জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে কাজ করে, যা পরবর্তী বৃষ্টিতে (বা স্প্রে করে পানি দিলে) ধুয়ে নেমে যাবে। প্রতি বর্গমিটার ঝোপে এভাবে বছরে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ধূলাবালি বায়ু থেকে দুর হতে পারে। ফলে বায়ুপ্রবাহ গাছের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর এর তাপ ও ধূলাবালি অনেক কমে যায়। প্রধাণ সড়কগুলোর মত গলিগুলোও যদি নিয়মিত ঝাড়ু দিয়ে এর মাটিগুলো সরিয়ে ফেলা হয় তাহলেও ধূলাবালির উপদ্রব অনেক কমে যাবে।

সহায়ক তথ্যসূত্র সমূহ:
পরিবেশ দূষণের শিকার হলে প্রতিকার প্রার্থণার আবেদনপত্র: http://www.doe-bd.org/form1_B.pdf
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য ভবনের প্রাথমিক সমীক্ষার চেকলিস্ট: http://www.doe-bd.org/iee_building.pdf
কারখানার পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার চেকলিস্ট: http://www.doe-bd.org/emp_format_industries.pdf
অ্যাজমা: http://en.wikipedia.org/wiki/Asthma
ইটভাটা সংক্রান্ত আইনকানুন: http://www.doe-bd.org/Major_decisions_on_Brick_Fields_to_conserve_the_environment.pdf
ভূপালের দূর্ঘটনা: http://en.wikipedia.org/wiki/Bhopal_disaster
আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি: http://en.wikipedia.org/wiki/2011_eruption_of_Grimsvotn
চেরনোবিল দূর্ঘটনা: http://en.wikipedia.org/wiki/Chernobyl_disaster
প্রাকৃতিক নির্দেশক:
http://en.wikipedia.org/wiki/Indicator_plant#ii.29_Sensitivity_to_air_pollution
http://en.wikipedia.org/wiki/Bioindicator#Plant_indicators
http://en.wikipedia.org/wiki/Lichen#Air_pollution


মন্তব্য

অন্যকেউ এর ছবি

চমৎকার লেখা। চলুক

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

শামীম এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। সাথে সচলায়তনকে চমৎকার ফন্ট আর লেখার সিস্টেমের জন্যও ধন্যবাদ।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পাবলিক ইনটারেস্ট লিটিগেশন বলে কী যেন একটা আছে না? হাইকোর্টে রীট দিতে কি টাকা লাগে?

শামীম এর ছবি

খাইছেরে ... ... আমিতো দুধ-ভাত ... এ্যাত কিছু জানিনা।

তবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থরা আবেদন করতে পারেন --- তথ্যসূত্রের প্রথম লিংকটাই সেটার আবেদন ফর্ম; ওটা পূরণ করতে কোন টেকনিক্যাল জ্ঞানের প্রয়োজন হবে না বলেই মনে হল। যা লাগে --
১। ক্ষতিগ্রস্থ বা ক্ষতির আশংকাগ্রস্থ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম
২। ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণ
৩। ক্ষতির/সম্ভাব্য ক্ষতির বিবরণ
৪। ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার স্থান
৫। ক্ষতির সময় .....
৬। ক্ষতি ঘটানোর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গ/প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির নাম ঠিকানা
৭। প্রার্থিত প্রতিকার

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম ভাই। পরিবেশ নিয়ে এই জাতীয় লেখাগুলো ( পানি দূষণ, মাটি দূষণ )ক্রমান্বয়ে আরো লিখবেন আশা করি। বাংলাদেশে কোন পরিবেশগত ছাড়পত্র পাবার পরে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় সেটার কোন তদারকি করা হয় কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শামীম এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ। কতগুলো লেখার ড্রাফট প্রায় বছরখানেক ধরে নেটবুকে আধাআধি হয়ে আছে। ওগুলো এই মাসেই ছাড়ার ইচ্ছা। এই সেমিস্টার শেষে আশা করছি লেখাগুলো শেষ করার মত চাপমুক্ত থাকবো।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আশালতা এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। পড়ে ভালো লাগলো, কিন্তু মুশকিল হল এইরকম কঠিন সত্যিগুলো যখন লেখা হয়ে সামনে চলে আসে তখন কেন যেন মন খারাপ হয়ে যায়, হতাশ লাগতে থাকে। ঢাকায় বাস করা বা এখানকার রাস্তায় বেরনো একটা অত্যাচারের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে প্রায়, কোনভাবে এই অবস্থার উত্তরণ ঘটবে এমন কোন কুল কিনারা দেখতে পাইনা।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

শামীম এর ছবি

সত্যি কথা বলতে কি, পরিবেশ বিষয়ে লেখাপড়া করা সত্বেও এই ধরণের দূষণগুলো যে খুব বেশি চেষ্টা ছাড়াই মোটামুটি সহজে প্রতিকার করা সম্ভব সেটাই কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমার উপলব্ধিতেই ছিল না। আমার ধারণা, এরকম অভিজ্ঞতা আরো আছে। দূষণের শিকার এবং দূষণকারক অনেকের হয়তো জানাই নাই যে এটা একটা দূষণ, এর প্রতিকার এভাবে হয়। তাই যতটুকু বুঝতে পারছি তা জানানোর জন্য মাতৃভাষায় লেখালেখি। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা অদুর ভবিষ্যতে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরীতে সকলের সহায়ক হবে বলে আশা করি।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

Latif Hossain এর ছবি

এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা অদুর ভবিষ্যতে দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরীতে সকলের সহায়ক হবে বলে আশা করি।

চলুক

লেট লতিফ এর ছবি

এই শহরের জনসংখ্যা কিছুদিন পরই িহসেব করতে হবে বর্গমিটারে। বর্গমাইলে হিসেব করলে কুল কিনারা আরো দূরে সরে যাবে, ভাই। জোর করে তো লোকজন বের করে দেয়া যাবেনা। সব কিছুর গোরায় - যথার্থ এবং ফলপ্রসু প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ হলেই এত ফ্লাইওভার ইত্যাদির সার্কাসও লাগতোনা। অন্যান্য ইসু্যগুলো যার যার জায়গায় বসে েযত। যাদের একাজটি করার কথা তাদের "ঐকান্তিক" এবং সীমাহীন লোভের কারনেই এটা সম্ভব হচ্ছেনা। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরন িনয়ে িমডিয়া এবং সবাইকেই অপেক্ষাকৃত নীরব মনে হচ্ছে আজকাল। মুশকিল ...

সাফি এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ লেখা। একটা প্রশ্ন, বাতাস আর্দ্র না শুষ্ক সেই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কি বাতাসের কণা ধারন ক্ষমতা হ্রাস বৃদ্ধি পায়? আমি থাকি যে শহরে, এখানে বাতাসের আর্দ্রতা প্রায় সারা বছরই ২০% এর নীচে থাকে। অথচ চারিদিকে মরুভূমির কারণে বাতাসে ধূলার পরিমাণও প্রচুর। কিন্তু এই শহরের গোড়াপত্তনের অন্যতম কারণ ছিল, টিবিরোগীদের এক হাসপাতাল। এও শুনেছি, এই আবহাওয়ার কারণেই এই জায়গায় টিবি রোগীরা অন্য জায়গা থেকে অনেক স্বাচ্ছ্বন্দবোধ করবে। কারণটা কী?

শামীম এর ছবি

বাতাসের আদ্রতা সাধারণ ভাবে স্বাচ্ছন্দ বোধ করার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া আদ্রতার সাথে কিছু অনুজীব/ছত্রাকের উপস্থিতির/অনুপস্থিতির সম্পর্ক থাকে, কারণ নির্দিষ্ট স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ বা আদ্রতা ছাড়া অনেক জীবানু টিকতে পারে না। তবে টিবি রোগীরা ঠিক কোন কারণে অপর স্থান থেকে বেশি ভাল বোধ করবে সেটা বুঝতে আমার আরেকটু পড়ালেখা করা লাগবে। আশা করছি এই বিষয়ে অভিজ্ঞ কোন পাঠক আমাদের সাথে তাঁর জানাটুকু শেয়ার করবেন।

স্বাভাবিক অবস্থায় অন্য চলকগুলো একইরকম থাকলে কত পরিমান কণা কতক্ষণ বাতাসে ভাসমান থাকবে সেটা কণার ভর এবং বাতাসের বেগের উপর সরাসরি নির্ভরশীল। অবশ্য এ বিষয়ে আমার গভীর জানাশোনা নাই। তবে মনে হচ্ছে, বাতাসে কণা ধারণ ক্ষমতা ইতিমধ্যেই থাকা কণার পরিমাণের ব্যস্তানুপাতিক হওয়ার কথা - অন্ততপক্ষে পানির মধ্যে পলি ধারণ ক্ষমতা এবং পলিমুক্ত পানিতে অতিরিক্ত মাটি ক্ষয় হয়ে আসার ব্যাপারটা অমন .... আর বাতাসও আরেকটা তরল (fluid), কাজেই এর কাজ কারবার ওরকম হতে পারে।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হিমু এর ছবি

ফ্লুইডের বাংলা প্রবাহী।

শামীম এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক অণু এর ছবি
Latif Hossain এর ছবি

প্রশংসনীয়, চমৎকার!! প্রয়োজনীয় লিংকগুলোও িদয়েছেন। ভুক্তভোগী হিসেবে কিছু তো জানাই িছলো, আরো জানা হলো। ধন্যবাদ অনেক। তারপরও প্রশ্ন থেকে যায় "বিড়ালের গলায় ঘন্টা বঁাধবে কে?"
এই িবষয়গুলোর প্রতিকারে কারা কাজ করছেন? এনজিও এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তথ্য বা লিংক েপলে স্বস্তি পেতাম। আগাম ধন্যবাদ আবারো আপনার সময় আর শ্রম িদয়ে সব শেয়ার করার জন্য।

শামীম এর ছবি

আমি জানি না ‌এখনই ব্যক্তিগত ভাবে কারো মার্ মার্ কাট্ কাট্ করা দরকার কি না। আমার ধারণা, প্রজেক্টের সাথে জড়িত অনেকেই এই ব্যাপারগুলো সমাধানকল্পে প্রকল্প যে অঙ্গীকার করেছে সেটাই জানে না। সচেতনতা একটা বড় অস্ত্র হতে পারে। কারণ মানুষ সচেতন হলেই এ নিয়ে কথা উঠবে, পেপার পত্রিকায় চিঠিপত্র যাবে, এই সমস্যাকে ফোকাস করে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতেও প্রতিবেদন হবে ... ... ... ... সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙ্গবে না। চোখ টিপি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

চমৎকার লাগলো।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভাল লেগেছে

উচ্ছলা এর ছবি

খুব ভাল লাগলো পড়তে, জানতে।

শামীম এর ছবি

উৎসাহবাচক মন্তব্যের জন্য আপনাদেরকেও ধন্যবাদ @ তারেক অণু, শুভাশীষ দাশ, ফাহিম হাসান এবং উচ্ছলা।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হিমু এর ছবি

শামীম ভাই, আপনার তত্ত্বাবধানে কি আন্ডারগ্র্যাড থিসিস করে ছাত্রেরা? যদি করে, তাহলে আপনি তাদের দিয়ে ইন্টারেস্টিং সব গবেষণার কাজ করিয়ে নিতে পারেন কিন্তু।

শামীম এর ছবি

হ্যাঁ করে। কিছু ইন্টারেস্টিং কাজ করাচ্ছি, আর কিছু আছে যেগুলো এই লেভেলে করানোর মত ল্যাবরেটরী ব্যাকআপ নাই। আশা করি ওগুলোর ফলাফল নিয়ে লিখবো সামনে। কিছু ছাত্রকে দিয়ে ইটভাটার উপর কাজ করিয়েছি, একজন প্রাক্তন ছাত্র বর্তমানে ডুয়েটে মাস্টার্স করছে - সে পানির উপরে সেডিমেন্টেশন করানোর আইডিয়াটা নিয়ে গেছে, হয়তো কাজে লাগানোর মত ফান্ড পাবে।

এছাড়া সাধারণ সস্তা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে তাপ সাশ্রয়ী গ্যাসের চূলা তৈরী করিয়েছি যাতে সাধারণ চূলার চেয়ে মোটামুটি ২৫% কম গ্যাসেই পানি ফুটানো গেছে (আসল রান্নার ক্ষেত্রে আরো বেশি সাশ্রয় হওয়ার কথা) - এখন ওটার দীর্ঘমেয়াদী (long term durability) পরীক্ষা শুরু করবো। ঢাকাতেই কিছু বাসায় ইতিমধ্যেই সিলিন্ডারের গ্যাস (এলপিজি) দিয়ে রান্না করতে হয় - সেরকম কয়েকটা বাসায় দিব।

বুড়িগঙ্গার পানি বাতাসের বুদবুদ দিয়ে কতটুকু পরিশোধন করা যায় সেটার জন্য একটা গ্রুপ কাজ করছিলো, কিন্তু DO মিটার (Dissolved oxygen meter) নষ্ট হয়ে যাওয়াতে সেটা অনেকদিন বন্ধ। ইদানিং মিটার কেনা হয়েছে - হয়তো ওটা আরেকটু আগে বাড়াতে পারবো।

আর্সেনিক দুরকরার ইউনিটের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আরেকটা কাজ করিয়েছিলাম। ওটা দিয়ে এখনই পেপার হবে না। তবে মজার এবং ভাল ফলাফল পাওয়া গেছে।

এছাড়া বর্তমানে আরো কয়েকটা আইডিয়ার উপর কাজ শুরু করিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হল এদেশে গবেষণা টাইপের জিনিষের জন্য যে ধরণের পরিবেশ দরকার সেটা পাওয়া যায় না। পুরা সময়েই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ, ক্লাস নেয়া, পরীক্ষার খাতা দেখা করতে করতেই জীবন শেষ ... ...

আরেকটা সমস্যা হল, যেই লেভেলের ডেটা চাই সেই লেভেলের কাজের পরিকল্পনা করতে পারছি না .... ঐ কাজে সময় দিতে পারছি না।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নুভান এর ছবি

ভালো লাগলো শামীম ভাই। একটা কথা, শিল্প-কারখানার ইটিপি থেকে যেই পানি গুলো নিষ্কাশিত হয় সেগুলোকে সরাসরি নদীতে ফেলে পরিবেশ দুষণ না করে, এই ধুলো গুলোকে সেটল্ড করার কাজে লাগানো যেতে পারে!

শামীম এর ছবি

আমি যতগুলো ইটিপি দেখেছি এ পর্যন্ত সেগুলোর পরিশ্রুত নদীর এখনকার পানির চেয়ে অনেক-অনেক ভাল মানের পানি। ইটিপির পানি নদী দূষণ করে না -- আর দূষণ ঠেকানোর জন্যই ইটিপিগুলো করা হয়েছে। ইটিপি না থাকলেই বরং পরিবেশের খবর খারাপ। ঐ পানিগুলোকে শুধু প্রজেক্ট এলাকা পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যাওয়াটাই সমস্যা .... হাসি

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নুভান এর ছবি

কিন্তু ভাইয়া সমস্যাটি অন্য জায়গায়। অধিকাংশ ফ্যাক্টরির ইটিপি বন্ধ থাকে, আর তারা দুষিত পানি বাইপাস করে নদী-নালায় ফেলে দেয়। শুধু কমপ্লায়েন্স অডিটের সময় তারা ইটিপি চালু করে ( এজন্য পরিদর্শনের সময় ভালো মানের ডিসচার্জড পানি পাওয়া যায়)। দ্বিতীয়ত, ইটিপির রিপোর্ট যেগুলো পাওয়া যায়, বেশীরভাগ-ই ম্যানিপুলেটেড। যেহেতু খুব কম সংখ্যাক অডিট টিমের কাছে বহনযোগ্য টিডিএস, টিএসএস, ডিও মিটার আছে, আর বিওডি/সিওডি এনালিটিক্যাল ল্যাব ছাড়া মাপা সম্ভব নয় (বহনযোগ্য মিটারের দামও অনেক বেশী); তারা ল্যাবে পাঠানোর সময় অন্য কোন ইটিপি বা পরিষ্কার পানি মিশিয়ে লঘু দ্রবণ তৈরী করে ল্যাবে পরীক্ষা করতে পাঠায়, আর তাই ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফল বেশ ভালো আসে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে, আমি ২-১ টি অতি ভালো টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি ছাড়া যতগুলোতে বহণযোগ্য পরিমাপক যন্ত্র দিয়ে ওদের ইটিপি-র ডিসচার্জড পানির গুণগত মান পরীক্ষা করেছি, সেগুলো ওদের টেস্ট রিপোর্টের ধারের কাছ দিয়েও যায়নি। আর এ কারনেই বললাম, ইটিপির পানি পরিবেশ দুষন করছে। আরেকটি কথা, বেশিরভাগ ইটিপির ডিজাইন ঠিক মতন করা হয়নি। তাই ওগুলো আন্ডার ক্যাপাসিটিতে চলছে, আর কেমিক্যাল ডোজিং এর মাত্রাও অপারেটরদের জানা নেই। ডিওই-র ইটিপি নীতিমালায় ডিসচার্জড পানির রং এর ব্যাপারে খুব জোড় দিয়ে কিছু বলা নেই (ফ্যাকটরী মালিকদের দাবী)। আর তাই ঘন থিকথিকে পানি তারা অকপটে নদীতে ছেড়ে দিচ্ছে! শীতলক্ষ্যা আর বালু নদীর অবস্থা দেখলেই বোঝা যায় ভাইয়া।

হিমু এর ছবি

ইটিপিগুলিতে কি ডেটা-লগার বসানোর কোনো উপায় আছে? এর যাবতীয় অপারেশনের ডেটা যদি লগিঙের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে হয়তো কমপ্লায়েন্স অডিটকে আরেকটু যথাযথ করা যেতো।

নুভান, সময় পেলে ইটিপি নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি স্বতন্ত্র পোস্ট দিন সচলে।

শামীম এর ছবি

চিন্তার বিষয় মন খারাপ । আমার ধারণা ছিল র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং করা হয়।

তবে একটা আশার কথা শোনাই। মাস দেড়েক আগে আমার একটা থিসিস গ্রুপ ডায়িং কারখানার ইটিপির উপর কাজ শেষ করে প্রেজেন্টেশন করলো। সরাসরি ওখানকার পদ্ধতি পরিবর্তন করিয়ে দেখলাম প্রচলিত ভাবে সেকেন্ডারী ট্রিটমেন্টে গোবর গাঁজিয়ে ব্যাকটেরিয়ার বীজ দেয়া হয়; কিন্তু এর বদলে কোন বায়োটেক কম্পানী থেকে ঐ ধরণের বৈশিষ্টের বর্জ্য পানির জন্য বিশেষায়িত ব্যাকটেরিয়া কিনে ব্যবহার করা যায়। এতে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে সামগ্রীক পরিচলন খরচ ৬ ভাগের এক ভাগে নেমে আসে কারণ, অথচ পরিশোধিত পরিশ্রুতের গুণগত মানও প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে ভাল হয়। এই খরচ কমানোর হিসাবটায় কম স্ল্যাজ হ্যান্ডলিং জনিত সুবিধাটা বিবেচনা করা হয়নি ... ... ওটা বিবেচনা করলে সুবিধা আরও বেশি।

কারখানার মালিকরা এরকম বিশেষায়িত ব্যাকটেরিয়া বীজ ব্যবহার করলে খরচ কমবে আর খরচের কারণে ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাও কমবে (আশা করা যায়)। আমাদের এখানেও কোন বায়োটেক কোম্পানী খুললে খরচ আরো কমে আসতে পারে, কারণ এখন ঐ প্রোডাক্ট (বায়োক্লিন) ভারত থেকে আমদানী করতে হয়।

আপনার অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে লেখার আশায় থাকলাম।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নুভান এর ছবি

শামীম ভাই ও হিমু ভাই, ইটিপির ব্যাপারে আমার গবেষণালব্ধ জ্ঞান সীমিত পর্যায়ে, কিন্তু অভিজ্ঞতালব্ধ কিছু জ্ঞান রয়েছে, সেগুলো নিয়ে একটি ব্লগ লিখবার ইচ্ছে আছে ভবিষ্যতে। কারখানার মালিকেরা ইটিপি-কে তাদের উৎপাদনের একটি অংশ হিসেবে ধর্তব্যের মধ্যে গ্রহণ করে না তাই তারা ইটিপি-কে একটু খরুচে খাত হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য তারা এর পেছনে খুব বেশী অর্থ যোগান দিতে রাজি নয়। আর তারা শুধুই লভ্যাংশের কথা চিন্তা করে, পরিবেশের কথা সভা-সেমিনারে বিদেশী ক্রেতা (তাদের ভাষায়ঃ বায়ার)-দের খুশী করার জন্য বলে থাকে কিন্তু বাস্তবিক চিত্র সম্পুর্ণ উল্টো। এসব নিয়ে আর ইটিপির কিছু কারিগরী খুটিনাটি বিষয় নিয়ে একটি ব্লগ লিখবার আশা রাখি। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।