জাতীয় সঙ্গীত বিজাতীয়ভাবে গাওয়া কি আমাদের নাগরিক অধিকার?

মৃদুল আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন মৃদুল আহমেদ (তারিখ: শনি, ২২/১২/২০১২ - ১২:২০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সিনেমাহলে সিনেমা দেখতে গেলে একটা বিষয় নিয়ে আমার মনটা বড়ই খচখচ করতে থাকে। সিনেমার শুরুতেই বাংলাদেশের পতাকা উড়তে থাকে এবং ক্যারক্যারে আওয়াজ করে তারস্বরে বেজে ওঠে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। যেরকম ভৌতিকভাবে ‌আচমকা এই পর্বটা শুরু হয়, সেরকম ভৌতিকভাবেই শেষ হয়ে যায়। ধড়মড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া দর্শকরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচে যাওয়ার ভঙ্গিতে আবার ধড়াম করে শরীরটা ছেড়ে দেন সিটের ওপর! আমি এবং আমার মতোই কেউ কেউ নীরব বেদনা নিয়ে তাকিয়ে দেখি সেই সত্তরের দশকে ধারণ করা উড়তে থাকা বাংলাদেশের পতাকার বিবর্ণ মলিন ভিডিওচিত্র, কান পেতে শুনি প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের যুগে জাতীয় সঙ্গীতের কিচমিচখিচখিচ শব্দভরা অডিও...
অনেকবার ভেবেছি ছবি শুরুর আগে কেন এই দেশপ্রেমের পঙ্গু এবং বিবর্ণ পরাকাষ্ঠা? অবিলম্বে এটার পরিবর্তন হওয়া দরকার। ঠিক করেছি কেউ যখন বলছে না, আমিই বলব। এফডিসি আর প্রয়োজনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব, আমার আবেদনটা ভালো করে না শোনা পর্যন্ত। এর আগের হেনস্থা হাসিমুখেই মেনে নেব, স্বাধীন দেশে নিজের জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা ঠেকানোর জন্য দু-চারটা গলাধাক্কা খাওয়ার মতো গর্বিত অধিকার আমার আছে!
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের ক্ষেত্রেও একটা নির্র্দিষ্ট নিয়মাবলী থাকা উচিত। ছোটবেলা থেকেই স্কুলে দেখতে দেখতে বড় হয়েছি অত্যন্ত অখাদ্যভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, মোটা চিকন নানান গলায় যে যার পছন্দমতন সুরে সেই করুণ একঘেয়ে সমবেত আর্তচিৎকারে অংশ নেয়। অথচ এমনটা কিন্তু হবার কথা ছিল না। বুক শির শির করা আমাদের সবচে ভালোবাসার গানটাকে একটু একটু করে হত্যা করে চলেছি সেই কবে থেকে! কী হয় একটা অসাধারণ যন্ত্রসঙ্গীত আর গায়কী দিয়ে সরকারিভাবে একটা পরিবেশনা তৈরি করলে, যেটা সব জায়গায় বাজবে, যেটা শুনে আমাদের চোখে পানি চলে আসবে, আমরা গুনগুনিয়ে তার সাথে গলা মেলাব, স্বাধীন বাঙালি হয়েছি বলেই আমার স্বাধীনচেতা বেসুরো গলার হাঁড়িফাটা আওয়াজে জাতীয় সঙ্গীতের বারোটা বাজাব না!
কথাপ্রসঙ্গে চলেই আসে হাল আমলে গাওয়া আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের একটি পরিবেশনার কথা। ভিডিওর শুরুতেই দেখি কিছু সাদা চামড়ার মিউজিশিয়ান চেয়ারে বসে বসে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের সুর তুলছেন। তাই দেখে তৃতীয় বিশ্বের কালা আদমি আমাদের বুকের ভেতর একটা পুলক কাজ করতে শুরু করে। বাপ রে, কী সাঙ্ঘাতিক সম্মান! তারপর আসেন একজন ভদ্রমহিলা, যিনি শুরু করেন জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফ থেকে। দেখে মনে হল দেয়ালে ঠেস দিয়ে খুব আন্তরিকতা দিয়ে ঘরোয়াভাবে গানটা গাইবার চেষ্টা করেছেন তিনি। তাঁর এই আন্তরিক প্রচেষ্টা অনেকেরই হৃদয় হরণ করেছে এবং ফেসবুকে খুব বাহবা দেখছি গানটির জন্য। তবে নিজের কথাটা বলি, এরকম ঘরোয়াভাবে পরোয়াবিহীন জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশন আমার কাছে সুখদায়ক ঠেকে নি। সাদা চামড়ার মিউজিশিয়ান কেন দরকার, সেই যুক্তি বুঝি নি। আমার জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় কেন তারা চেয়ারে বসে আছে, তা ভেবে অপমানিত বোধ করেছি। শিল্পীর হালকা ঢঙের বিচিত্র পায়কীতে গান পরিবেশনার ধরন ভালো লাগে নি।
জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশনা কেমন হওয়া উচিত তা জানতে হামতাম করে এদিকওদিক দৌড়াদৌড়ির দরকার নেই, খুব হাতের কাছেই রয়েছে জহির রায়হানের “জীবন থেকে নেয়া” ছবিটি। ছবিটি নির্মাণের সময় তখনও এই গান জাতীয় সঙ্গীত হয়ে ওঠে নি। তবু সেখানে দেখুন কী আশ্চর্য মমতা আর শ্রদ্ধা নিয়ে গানটা গাওয়া হয়েছে, চিত্রায়ন করা হয়েছে। দেখুন আর দেখতে দেখতে আপনার বুকটা ভরে যাবে, ঝকঝকে ভিডিও, ফটফটে সাদা চামড়ার মিউজিশিয়ান আর চকচকে চোখে দেয়ালে ঠেস দিয়ে ঘরোয়া ভঙ্গিতে গান গাওয়া ছাড়াই।
জানি অনেকেই বলবেন, এই নতুন ঢঙে গাওয়া গানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি একটা ভালোবাসা তৈরি হবে নতুন প্রজন্মের। কিন্তু আমার কথা হল, বাচ্চা কিছুই খেতে চাচ্ছে না বলে তাকে চিপস কিনে দিতে রাজি নই আমি, ওতে রুচি আর স্বাস্থ্য দুটোই নষ্ট হয়! তাতে আমাকে "ওল্ড ফুল" বললে সানন্দে মেনে নেব! বার্ধক্যে ফুল হয়ে ফুটতে ভালোই লাগবে আমার!


মন্তব্য

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

দুর্দান্তভাবে সহমত মৃদুল ভাই। ভিডিওটা দেখার সময় আমারও এই কথাগুলি মনে হয়েছে। যার যেভাবে ইচ্ছা সে সেভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারে না।
ইদানিং দেখা যায় মানুষ আবেগের ঠেলায়ই হোক, অথবা অজ্ঞানতাবশেই হোক, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় বুকে হাত দেয়। এইটাও আমাদের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার নিয়ম নয়। এইভাবে চলতে থাকলে যে কোনদিন দেখা যাবে কোন এক র‍্যাপার এসে "ইয়ো ম্যান" দিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করেছে। সেই দিন দেখতে চাই না। তার আগেই সরকার অথবা সংশ্লিষ্ট কেউ এগিয়ে আসবে বলে আশা করি।
চলুক লেখা -গুড়- হয়েছে উত্তম জাঝা!

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ গৃহবাসী বাউল। নিয়মের বেড়াজালে বাঁধা উচিত নয় কিছুই। কিন্তু এটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ভাই, সচেতন হওয়ার তো দরকার আছে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সৈয়দ সাহেবের ভূত  এর ছবি

আপনি এটাকে একটি রবীন্দ্রসংগীত হিসেবে চিন্তা করে শুনুন। হয়ত আবহ সংগীতের নতুনত্বের মাধুরতা ধরতে পারবেন। আর যে সব বিদেশি সাদা চামড়া এগুলো বাজিয়েছে, এটা ত তাদের জাতীয় সংগীত নয়। আমরা ত আমেরিকার জাতীয় সংগীত শুনে দাড়িয়ে যাই না।

পৃথিবীর কোন দেশে কি জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য আলাদা নীতিমালা আছে?

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

এটিকে নিছক রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে ভাবতে পারছি না। প্রত্যেকদিনই কোনো না কোনো রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা হয়। সেগুলো শুনলে দাঁড়িয়ে যাই না, কিন্তু এই গান শুনলে দাঁড়িয়ে যাই। সুতরাং বুঝতে হবে যে, আলাদা একটা কিছু ব্যাপার আছে।
আমি অন্য দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাই নি বা বাজাই নি, গাইলে বা বাজালে দাঁড়িয়ে যেতাম। মন্দিরে ঢুকতে হলে যেমন আমিও স্যান্ডেল খুলে ঢুকি, ওটা আমার নিজের ধর্মস্থান না হলেও। যদিও আদপে আমি নাস্তিক গোছের মানুষ। আমার জাতীয় সঙ্গীত বাজাবার সময় কারো যদি বসে থাকতে ভালো লাগে, আমার দরকার নেই তেমন মিউজিশিয়ানের। এটা আমার একান্ত অহঙ্কার। সেটাতে কেউ গর্বিত বোধ করলে আমার কিছু করার নেই দুঃখিত হওয়া ছাড়া।
পৃথিবীর আর কোনো দেশে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের নীতিমালা আছে কিনা জানি না। কিন্তু আমাদের দেশে খুব দরকার। এত সুন্দর একটা জাতীয় সঙ্গীত বাচ্চাদের কাছে বিরক্তি আর অবহেলার বিষয়। অন্য দেশে নীতিমালা নিয়ে চিন্তা করে লাভ কী? সবসময় কি ওদের কাছ থেকেই আমাদের শিখতে হবে? আমরা একটা নীতিমালা করলে অন্য দেশগুলো হয়ত আমাদের কাছ থেকেই শিখবে। যেমন আমাদের ২১শে ফেব্রুয়ারি সারা পৃথিবীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রূপান্তরিত হয়েছে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

তানজিম এর ছবি

ভুল বললেন কথাটা। জাতীয় সঙ্গীত সে যে দেশেরই হোক না কেন দাঁড়িয়ে সন্মান দেখান হয় বলেই জানি। অলিম্পিক থেকে ফরমুলা ওয়ান সব জায়গাতেই দেখে এসেছি। আর অন্য দেশের জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে সন্মান না দেখনোর মাঝে কোন বীরত্ব আছে বলে জানি না। এটা বিভিন্ন জাতির মধ্যে সদ্ভাবের বহিঃপ্রকাশও বটে।
ক্ষ এর পরিবেশিত জাতীয় সঙ্গীতের ভার্সনটি ভাল লাগেনি।প্রথম ১০-১৫ সেকেন্ড দেখেই বন্ধ করে দিয়েছি, তাই পরে কি হয়েছে জানি না।
ফেসবুকে আরেকটা জিনিষ দেখলাম, জাতীয় পতাকার মাঝখানটা চিরে ফেলা হয়েছে নিচ থেকে ভেসে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর ছবির একাংশ। এসব খুবই আপত্তিকর যা কিছু অত্যুৎসাহী লোকজনের বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছুই না।

আবছায়া এর ছবি

গানের পরিবেশনটা আমারও ভালো লাগেনি, তাই পুরোটা শোনা হয়নি। তবে আমার একটা যুক্তি বলি, যারা গানটি পরিবেশন করেছে তারা হয়ত আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে নয় রবীন্দ্র সংগীতের একটা ভিন্ন রকম উপস্থাপন করতে চেয়েছে, তাই তারা বসেই বাজিয়েছে।।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের একজন মহান নেতা ছিলেন, তাঁর নাম শেখ মুজিব। তাঁকে কাছের প্রায় সবাই বলতেন মুজিব ভাই, জনসাধারণরা বলত শেখ মুজিব বা শেখ সাহেব। এখন তাঁকে সেভাবে বলা যাবে না। এখন তাঁর একদম কাছের মানুষরাও তাঁকে সম্বোধন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলে। এটা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে নয়, সবসময়ই বলেন।
সম্মানের জায়গাটা বুঝতে হবে। এটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, নিছকই রবীন্দ্রসঙ্গীত নয়। রবীন্দ্রনাথকে আমি ভালোবাসি শ্রদ্ধা করি, তাই বলে তাঁর সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে জড়িয়ে ধরতাম না, পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতাম। মেজাজটা বুঝতে হবে। এটাই কথা আর কি।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

চন্ডাল এর ছবি

আমার জাতীয় সঙ্গীত বাজাবার সময় কারো যদি বসে থাকতে ভালো লাগে, আমার দরকার নেই তেমন মিউজিশিয়ানের। এটা আমার একান্ত অহঙ্কার। সেটাতে কেউ গর্বিত বোধ করলে আমার কিছু করার নেই দুঃখিত হওয়া ছাড়া।

আপনি একটা কিছু ভাবে ভাবলেই যে সবাইকে একইভাবে ভাবতে হবে এমন কোন কথা নেই কিন্তু। জাতীয় সঙ্গীতের ব্যাপারে এরকম গোঁড়া রক্ষনশীল হবার মত কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। আপনি যখন একজন ভিনদেশীর কাছ থেকে আশা করবেন যে সব পরিস্থিতিতে আপনার জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাবে তখন সেখানে কিন্তু প্রশ্ন চলে আসে আপনি কয়টা দেশের জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান?
আমার জাতীয় সঙ্গীত আমার পরম সম্পদ, আমার পরম আত্মীয়। আমার জাতীয় সঙ্গীতকে আমি সম্মান জানাবো আমার স্বাধীনতার সত্তাকে আমি শ্রদ্ধা জানাতে। এটার সাথে আমার সম্পর্ক দায়িত্ব আর ভয়ের নয়, ভালবাসার। এই ভালবাসার বোধ থেকেই এই ভিডিওতে গানটাকে নতুন সঙ্গীতায়োজনে সামান্যতম সুরও বিকৃত না করে নতুনভাবে গাইবার চেষ্টা করেছে একটা তরুন ব্যান্ড। যেখানে জাতীয় সঙ্গীতের আজকের তরুনপ্রজন্মের সম্পর্ক দায়িত্ববোধের আর অবহেলার, সেখানে এই আয়োজন তাদের নতুন করে এর সৌন্দর্যকে আবিষ্কার করতে, অনুভব করতে উতসাহ যোগাচ্ছে। এরকম একটা আয়োজন আমার মতে তাই প্রশংসার দাবিদার। অনেকে অভিযোগ করছেন গানের পরিবেশন নিয়ে। জাতীয় সঙ্গীত মানেই তো ব্যাপারটা এমন নয় যে, তা শুধু মাঠে, পিটিতে, কুচকাওয়াজে, খেলার আগে তা শুনতে হবে, আমার ঘরের গৃহকোণে আমার মত করে আমার জাতীয় সঙ্গীতকে পাবার ইচ্ছার মধ্যে কোন ভুল নাই।
তবে সিনেমা হল বা অন্যত্র জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি যে অবহেলা আর অবমাননা, তার ব্যাপারে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। অবিলম্বে এসবের প্রতিকার হওয়া দরকার।

কালো কাক এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীতকে ভালোবেসে ইভা রহমান , শিরোনামহীন, মাকসুদ ও অন্যান্যরা 'নতুনভাবে' গাইবার চেষ্টা করলে কী হবে ভাবতেই ভয়ে হাত পা ...............

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমি তো কোথাও বলি নি, আমার কথা সবাইকে মানতেই হবে। লাঠি হাতে তো আমি তাড়া করি নি কাউকে। আমি তো বলেই দিয়েছি, "আমার দরকার নেই তেমন মিউজিশিয়ানের। এটা আমার একান্ত অহঙ্কার। সেটাতে কেউ গর্বিত বোধ করলে আমার কিছু করার নেই দুঃখিত হওয়া ছাড়া।"
এরপরও কেন এমন প্রশ্ন এল বুঝলাম না!
"আপনি যখন একজন ভিনদেশীর কাছ থেকে আশা করবেন যে সব পরিস্থিতিতে আপনার জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাবে তখন সেখানে কিন্তু প্রশ্ন চলে আসে আপনি কয়টা দেশের জাতীয় সঙ্গীতকে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান?"
কী মুশকিলের কথা। আমি তো আর কারো জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বা বাজাতে যাই নি। গাইতে বা বাজাতে গেলে দাঁড়াতাম নিশ্চয়! সেইটুকু সম্মানবোধ আমার আছে!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

চলুক

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ সাজ্জাদ সাজিদ।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

মৃদুল ভাই, সিনেমাহলের পঙ্গু ভিডিওর চেয়েও বেশি পঙ্গুত্ব চোখে পড়েছে দর্শকদের। জাতীয় পতাকা ওড়া অবস্থায় যে বসে পড়া যায় না, শতকরা পঁচানব্বই ভাগ দর্শক সেটা জানে না। কেউ কেউ সিটে বসে হাত নাড়বার কষ্টটা করে, কেউ তাও না? এ কেমন মূর্খতা?

আর যে জিনিসে দর্শকের মনোযোগ নেই, হও মালিকেরা উদ্যোগী হয়ে সেটার উন্নয়ন ঘটাবেন, এমন আশা আমি করি না।

আপনার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে যাবার ব্যাপারটা ছুঁয়ে গেল। আপনাকে ধন্যবাদ। যদি শেষপর্যন্ত বধিরগুলোর কানে কিছু সীসা ঢেলে আসতে পারেন, আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানবেন।

হালে প্রকাশিত জাতীয় সঙ্গীতের ভিডিও প্রসঙ্গে কিছু বলি। সব মিলিয়ে, আমার কাছে খারাপ লাগে নি। আপনার "ঘরোয়াভাবে পরোয়াবিহীন" কথাটি ভেবে দেখবার মত। বিজাতীয় বাদকদল বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাদনকালে বসে থাকলে আমাদের অপমান কেন হবে, আমি ঠিক বুঝতে পারি নি। তারা কি এটা করতে বাধ্য?

আমি অবশ্য পুরো ব্যাপারটিকে একটু অন্যভাবে দেখছি। একটি ব্যান্ডদল তাও তো পরিবেশনের চেষ্টা করেছে। আমাদের দেশে এত গায়ক গায়িকা, বাদক বাদিকা গত একচল্লিশ বছরে উন্নততর কিছু তৈরী করতে পারে নি, এই বেদনা কোথায় রাখি?

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

স্টুডিওতে বাজানোর সময় ভিন্ন ব্যাপার হতেই পারে। সব ইনস্ট্রুমেন্ট বসে বাজানো সম্ভব নয়। কিন্তু আমার জাতীয় সঙ্গীত কেউ সবার বসে বাজাচ্ছে, এটা আমি সহ্য করতে পারি না। এটা আমার গায়ে লাগে। আর কারো না লাগলে কিছু বলার নেই। মনে হয় এর চেয়ে না বাজানোই ভালো।
আমাদের দেশে কেউ সেইভাবে চেষ্টা করেন নি সত্য, কিন্তু কেউ না কেউ করবেন নিশ্চয়। ভালো মিউজিশিয়ান আমাদের দেশে আছে, উদ্যোগ নেয়ার মতো লোক বা কর্তৃপক্ষ নেই।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

তবলচি আর গিটারিস্ট দাঁড়িয়ে পারফর্ম করলে ভাল লাগত, তবে ড্রাম জিনিষটা বোধহয় দাঁড়িয়ে বাজানো যায় না। সে যাই হোক এক্ষেত্রে আমি ভিনদেশী পারফর্মারদের দোষ দেব না, আমার জাতীয় সঙ্গীত আমার কাছে কি সেটা নিশ্চই সে বুঝবে না, এটা তাদের কাছে শুধুই মিউজিক!! যে দুজন বাঙ্গালী পারফর্মার ছিল দলে তাদের উচিৎ ছিল এই বিষয়ে ভেবে দেখা।
চিত্রায়নের ক্ষেত্রে আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না, জহির রায়হানের কাজকে একক ধরে এদের নম্বর দিতে যাওয়া বোকামি। জহির রায়হান একজনই ছিলেন। আর ঘরোয়া পরিবেশে গান গাওয়ার ক্ষেত্রে আমি অস্বাভাবিক কিছু দেখি না।

এটা আমি লজ্জিত মস্তকে স্বীকার করে নিচ্ছি যে অনেক দিন পরে "ক্ষ" র বদৌলতে জাতীয় সঙ্গীত শুনলাম অনেক কয়বার, খুজলে আমার মত অসংখ্য মানুষকেই পাওয়া যাবে। শুধুমাত্র এই একটা কারনেই আমি তাদের বাহবা দেই, তবে জাতীয় সংগীত ২য় প্যারা থেকে শুরু করাটা আসলেই খুব দৃষ্টিকটু।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

পারফর্মারদের দোষ দেই না। ওটা আমাদেরই সমস্যা।
জহির রায়হান একজনই ছিলেন সত্য, সেই কারণেই তাঁকে অনুসরণ করা উচিত। চেষ্টা করা উচিত তাঁর মতো কাজ করার। আমি জহির রায়হান নই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকব নাকি?
ক্ষীয়র সুবাদে জাতীয় সঙ্গীত আমাদের শুনতে হয় তখনই, যখন সামনে পরিকল্পিত কোনো আয়োজন থাকে না। আমি সেই আয়োজনটার কথাই বলছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

চলুক

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য। সম্প্রতি ক্ষ নামের কার জানি গান দেখলাম ফেসবুকে অনেক শেয়ার্ড হচ্ছে। আমারও ভালো লাগেনি।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমারও না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

দুর্দান্ত এর ছবি

"জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের ক্ষেত্রেও একটা নির্র্দিষ্ট নিয়মাবলী থাকা উচিত।"

এই নিয়ম কে ঠিক করে দেবে? তার এই অধিকার কোত্থেকে এল?

ভাষা আর সংগীত অপরিবর্তিত থাকবে/বদলাবে মানুষের প্রয়োজন আর স্বাদের সাথে তাল মিলিয়ে। জাতীয়তাবাদী চিহ্নগুলোকে "একমাত্র-আদী-অকৃত্রিম" রাখবার দাবী জাতীয়তাবাদকে-মৌলবাদের কাছাকাছি নিয়ে যায়। আমি আমার দেশকে ভালবাসবো আমার মত করে, দেশের বেশীরভাগ মানুষ কোনটাকে কোশার মনে করল, তাতে আমার কি?

ঠিক আছে, ক্ষ - এর পরিবেশনা ভাল লাগেনি সবার, সেটা নিয়ে সমালোচনা হোক, সেটা ঠিক কি কারনে জাতীয় অনুভূতিকে খাটো করেছে, সেটা নিয়ে কথা হোক। কিন্তু তাদের পরিবেশনা ভাল লাগেনি বলে তো ক্ষ' র দেশপ্রেমের পরিমাপ করার অধিকার আমার নেই।

আমি এরকম নিরীক্ষা চালিয়ে যাবার পক্ষপাতি। আমি জানি বাংলাদেশ আর আমেরিকা এক জিনিস নয়, অথবা আমার সোনার বাংলা ও স্টার স্প্যাঙ্গেলড ব্যানার বা ক্ষ ও জিমি হেন্ড্রিক্সের কোন তুলনা নেই, কিন্তু তারপরেও এই পোস্টটি ৬৯ এর উডস্টকে জিমি হেন্ড্রিক্সের সেই লোম খাড়া করা গিটারবাদনের কথা মনে করিয়ে দিল। এর সমালোচনাও অনেক হয়েছিল।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

একমত। এইমাত্র মন্তব্য করে এসে দেখি আমার কথা আপনি বলে দিয়েছেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

১।
নিয়মাবলী ঠিক করবে সরকার। আমরা ভোট দিয়ে যাকে অধিকার দিয়েছি। দারুণ আবেগী করে কম্পোজিশন করবে জাতীয় সঙ্গীতকে, যেটা শুনলেই গায়ে কাঁটা দেবে, শরীর কাঁপবে, চোখে পানি আসতে বাধ্য, যেটা প্রতিদিন মুনলেও পুরনো হবে না। আর সেটাকে সরবরাহ করবে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, একটা ভালো সাউন্ড সিস্টেম বাধ্যতামূলক করবে। সেই গানটার সাথে গলা মেলাবে বাচ্চারা। একটা গান প্রতিদিন যথার্থভাবে শুনলে তার কথা আর সুর ভুল হবে না। পাশের দেশ ভারতেই কিন্তু ওদের জাতীয় সঙ্গীত এত দারুণ আয়োজনে বাজানো হয় যে বুকের ভেতর রোমাঞ্চ জাগে। ওটাও রবীন্দ্রসঙ্গীত।
২।
কিছু ক্ষেত্রে আমি মৌলবাদি। যেমন পাকিস্তানকে ঘৃণার ক্ষেত্রে। দেশপ্রেম সম্পূর্ণ একটা ব্যক্তিগত ব্যাপার, এটা অবশ্যই যার যার নিজের একান্ত অনুভূতি। তবে নিজের মনে গুনগুনিয়ে গাইতে গাইতে চোখ ভিজে ওঠা এক জিনিস আর আনুষ্ঠানিক পরিবেশনা আরেক জিনিস। সেটা আমরা সবার সামনে সবার জন্য গাই। আমি স্বাধীন মানুষ, ঘরে আমি যে পোশাক ইচ্ছে পরে বসে থাকি, কিন্তু বাইরে বেরোবার সময় তো যা ইচ্ছে তাই পরে বের হই না। ঘরে পোশাকে বাইরে বেরোতে আমার সমস্যা না থাকলেও দশজনের কথা ভেবেই ভদ্রস্থ পোশাকে বের হই। পোশাকের ক্ষেত্রে যদি এই যত্নটা আমরা দেখাতে পারি, জাতীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কেন নয়? কী দোষ করেছে সেই বেচারা?
৩।
ক্ষীয়র দেশপ্রেম নিয়ে সরাসরি কথা বোধহয় বলি নি। সাদা চামড়া দেখলে সন্দেহ জাগে, একটা গুরুত্ব আরোপ করার পুরনো প্রচেষ্টা কি? তারা যে গ্যাঁট হয়ে চেয়ারে বসেছিল, এত আমি আহত বোধ করেছি, সেটাই আগেই বললাম। পরিবেশনা ভালো লাগে নি আমার। আপনাদের কেমন লেগেছে আপনারা আলাপ করুন। আমার যা বলার ছিল লেখাতেই বলে দিয়েছি, বারে বারে কমেন্ট করা একটা অভিশাপের মতো মনে হয়।
৩।
পরীক্ষানিরীক্ষায় আমিও বিশ্বাসী। তবে গবেষকের কিছু যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। ক্রিকেট খেলার সময় গালে, ঠোঁটে, চোখেমুখে বাংলাদেশের পতাকার ট্যাটু গায়ে আঁকলে আমার মজাই লাগে, কিন্তু সেটা পরীক্ষানিরীক্ষার কারণে গাল ছেড়ে আরো বিভিন্ন দিকে রওনা দিলেই আপত্তির হাত তুলব।
৪।
আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

দুর্দান্ত এর ছবি

একটি মনোভাবকে আইন করে আরেকজনের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইবার যে মানসিকতা, তাতে আমার অরুচি আছে। সেটা ধর্মানুভূতি, জাতীয়তাবাদ, শিক্ষাব্যাবস্থা, অথবা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক যাই বলুন তাতেই। কিন্তু সেটা আমার একান্তই নিজের ভাবনা। অসুবিধা দেখা দেবে তখনই, যখন আমি আমার সংখ্যা গরিষ্ঠতার দোহাই দিয়ে আমার এই চাওয়া-রুচিবোধ গুলোকে বাকী সবার ওপরে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করবো।

পাইকারা গায়ের জোরে তাদের চিহ্নগুলোকে সিজদা করতে বলেছিল আমাদের, আমরা সেটা মানিনি। আমার মনে হয়না আমার পিতার প্রজন্ম যুদ্ধ করেছিল শুধু সেই চিহ্নগুলোর বিরুদ্ধে, তাদের যুদ্ধ ছিল 'এইগুলাকে সিজদা না করলে তুই হিন্দুস্তানের কুত্তা' এই মনোভাবের বিরুদ্ধেও। পিন্ডীর ইসলামি মৌলবাদীদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পেয়ে ঢাকার জাতীয়তাবাদী মৌলবাদের চিহ্নগুলোকে সিজদা করতে নিশ্চই আমাদের শহীদেরা রক্ত দেননি।

স্বাধীনতা মানে আসলেই স্বাধীনতা। যেখানে কাউকে সিজদা করতে হয়না। যেখানে আনুগত্য আসে মুক্তমন ও প্রেম থেকে। আর যাকে ভালবাসি - তাকে তার আসল নামে না ডাকলে যদি বেঈমানি হয়, তাহলে আর সে কেমনতর ভালবাসা?

আমাদের সংবিধানে বিসমিল্লাহ ছিলনা, কিন্তু রাষ্ট্র সেটাকে গায়ের জোরে বসিয়েছে, আর সরকার সেটাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। তাতে আমার কিছু এসে যায়নি। আমার দেশ ধর্মান্ধ নয়, এটা আমি জানি। ঠিক তেমনি আমার মনে হয় জাতীয় সংগীত (সেই সাথে জাতীয় ফুল, পশু ও ফলের মত জাতীয়তাবাদী চিহ্নগুলো) একটি জাতিরাষ্ট্রের শৈশবে যেভাবে জনমত গেঁথে দেয়ার প্রয়োজন, সেটা জাতীরাষ্ট্রের বয়োঃপ্রাপ্তিকালে আর দরকার হয়না।

আমাদের জাতীয় সংগীতের অর্কেস্ট্রেশানের মান রেকর্ডিং, সেটা কিন্তু বিবিসিতে করা - সেসময়ে বাদ্যযন্ত্রী ও কলাকুশলীদের কেউ কেউ সাদা-চামড়ার হয়ে থাকবেন বলে আমার সন্দেহ হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে সেনাবাহিনী যে সুর বাজায়, সেটা কিন্তু শান্তিনিকেতনি মেকি পিউরিটান ঢঙ্গে না, সেটা সেই পুরো দস্তুর 'বিজাতীয়' ব্রাস-ব্যান্ডেই। এগুলোকে কি আমাদের ফেলে দেয়া উচিত?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জাতীয় সংগীত ব‌্যাপারটা আইনের সাথে জড়িত। সেই আইন খাটে বাংলাদেশের নাগরিকদের বেলায়। বিষয়টা এইভাবে দেখলে অনেক কথা সহজ হয়ে যায়। এখানে অপ্রাসংগিক আলোচনা হচ্ছে।

দুর্দান্ত এর ছবি

জাতীয়সংগীত বিষয়ে আইনের দরকার আছে, বলতেছ?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আছে। কারণ কোন গানটা জাতীয়সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হবে সেইটা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইনের আওতাভুক্ত।

মন মাঝি এর ছবি

স্বাধীনতা মানে আসলেই স্বাধীনতা। যেখানে কাউকে সিজদা করতে হয়না। যেখানে আনুগত্য আসে মুক্তমন ও প্রেম থেকে।

চলুক চলুক

****************************************

savage_mountain এর ছবি

"এই নিয়ম কে ঠিক করে দেবে? তার এই অধিকার কোত্থেকে এল?"

রাষ্ট্র ঠিক করে দিবে। ঠিক যেভাবে রাষ্ট্র কে আমরা অধিকার দিয়েছি এই গান টাকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্ধারণ করার, সেই একই সূত্রে রাষ্ট্রের অধিকার থাকে এই গানের নিয়ম ঠিক করে দেবার।

"ভাষা আর সংগীত অপরিবর্তিত থাকবে/বদলাবে মানুষের প্রয়োজন আর স্বাদের সাথে তাল মিলিয়ে। জাতীয়তাবাদী চিহ্নগুলোকে "একমাত্র-আদী-অকৃত্রিম" রাখবার দাবী জাতীয়তাবাদকে-মৌলবাদের কাছাকাছি নিয়ে যায়। আমি আমার দেশকে ভালবাসবো আমার মত করে, দেশের বেশীরভাগ মানুষ কোনটাকে কোশার মনে করল, তাতে আমার কি?"

জাতীয় পতাকা বা জাতীয় সংগীত এর মূল উদ্দেস্য হচ্ছে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করা। আর যেকোনো প্রতীক এর বেলাতেই প্রমিতকরণ এর প্রশ্ন টা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নীতিগত ভাবে সেই প্রতিক গুলোকে গ্রহণ করে নেন, তাহলে সেই সাথে প্রমিতকরনটাও গ্রহণ করে নিতে হবে।

আমরা যদিও জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা কে "দেশের" বলে অভিহিত করি, বাস্তবে উভয়ই কিন্তু রাষ্ট্র দ্বারা নির্ধারিত। কাজেই এই দুইএ বিশ্বাস স্থাপন করা মাত্রই আপনি কিছুটা মৌলবাদী হয়ে যাচ্ছেন।:-)

দুর্দান্ত এর ছবি

আমি জাতীয়তাবাদ খুব একটা বুঝিনা ভাই। তাই জাতীয়তাবাদের চিহ্নাবলীর উদ্দেশ্যও আমার কাছে পরিস্কার না।

জাতীয় ফল কাঁঠাল - এটা খাওয়ার আগে কি আমার ওযু করা উচিত?

savage_mountain এর ছবি

"তাই জাতীয়তাবাদের চিহ্নাবলীর উদ্দেশ্যও আমার কাছে পরিস্কার না।"

উদ্দেশ্য হচ্ছে খুবই সংক্ষিপ্ত কিছু প্রতীক এর মাধ্যমে একটি দেশ বা জাতিকে identify করা। এখানে প্রতীক টার অন্তর্নিহিত গুনাবলী গুরুত্বপূর্ণ নয়। উক্ত দেশ ও জাতির সবাই এই প্রতীক ব্যবহারে সম্মতি দিয়েছে, এই সম্মতিটা গুরুত্বপূর্ণ। এইজন্যই বলেছি আপনি "যদি" সেই প্রতিক গুলোকে গ্রহণ করে নেন, তাহলে সেই সাথে প্রমিতকরনটাও মেনে নিতে হবে। কেননা প্রমিতকরণ এর সাথে সবার সম্মতির ব্যাপার জড়িত।

"জাতীয় ফল কাঁঠাল - এটা খাওয়ার আগে কি আমার ওযু করা উচিত?"

অজু করা অবশ্যই বাধ্যতামূলক নয়।

কিন্তু আপনি যখনই জাতীয় ফল কাঠাল, এই কথা বলে কাউকে কাঠাল দেখাতে যাবেন তখন আপনি সাধারণ আকার ও আকৃতির কাঠাল দেখাবেন। আপনি দুষ্প্রাপ্য আকৃতির (http://static6.depositphotos.com/1009329/621/i/450/dep_6211377-Small-jackfruit.jpg) বা জাতের কাঠাল দেখাবেন না।

কিন্তু কাউকে যদি ফল হিসেবে কাঠাল সম্পর্কে পরিচিতি দিতে যান তখন আপনি কাঠালের জাত, আকৃতি নিয়ে অনেক কথা বলতে পারেন, দশটা ছবি দেখাতে পারেন।

অবনীল এর ছবি

জাতীয় ফল কাঁঠাল - এটা খাওয়ার আগে কি আমার ওযু করা উচিত?

গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি গুল্লি

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

হিমু এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীত আর জাতীয় পতাকার সঙ্গে জাতীয় ফলমূলের পার্থক্য হচ্ছে, প্রথম দুইটার আনুষ্ঠানিক ব্যবহার আছে, এবং এই ব্যবহার একটা দেশের প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে। জাতীয় ফল বা জাতীয় মাছ খাওয়ার সময় কেউ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে না বা স্যালুটও করে না।

তবে আপনি যে জাতীয়তাবাদের চিহ্নাবলী বোঝেন না সেটা বোঝাতে পেরেছেন।

চিলতে রোদ এর ছবি

গুরু গুরু

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মৃদুলদা লেখাটার সাথে মোটাদাগে সহমত। তবে কিছুক্ষেত্রে ভিন্নমত প্রকাশ করছি। মতামতগুলো একান্তই আমার নিজস্ব উপলব্ধি।

১। আমি মনে করি কোথাও যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় তাহলে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে সেটার সঠিক সুর, কথা সব কিছু বজায় রেখে গাওয়া। বা সম্মান দেখানোর যে আনুষ্ঠানিকতা আছে সেটা যথাযথভাবে পালন করা। এ ব্যপারে দ্বিমত নেই। সিনেমার শুরুতে হেলাফেলাভাবে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর ব্যাপারটা অনেকেরই হঅয়ত খারাপ লেগেছে। আপনার উদ্যোগের অশেষ ধন্যবাদ জানাই।

২। কিন্তু কেউ যদি অনানুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে চায়, শুনতে চায়, সেখানে আমি এরকম নিয়ম বেঁধে দেয়াটাকে সাপোর্ট করতে পারছি না। আমি নিজেও কাজ করার সময় অনেক সময় জাতীয় সঙ্গীত শুনছি হয়ত। আমি কিন্তু তখন দাঁড়াচ্ছি না। কিন্তু সে কারণে আপনি বলতে পারেন না আমার দেশপ্রেম নেই বা জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধা নেই। একইভাবে আমি মনে করি ঠিক সেই কারণেই এটা ভুল সুরে গাওয়ার অধিকারও আমার আছে। আমার নিজের সুর সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। গান গাইতে গেলে নিজেরই হাসি পায়। কিন্তু সেই কারণে আমি আমার জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারব না? যদি একা বা কয়েকজন বন্ধু মিলে ভুল সুরে গিটারের সাথে জাতীয়সঙ্গীত গাই সেটা কি জাতীয়সঙ্গীতের অবমাননা হবে?

৩। সম্মান বা দেশপ্রেম শেষ পর্যন্ত দেখানোর চেয়ে ধারণ করার ব্যাপার, অনুভব করার ব্যাপার। 'ক্ষ' ব্যান্ডের গাওয়া জাতীয় সঙ্গীত আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে, এটুকু অস্বীকার করলে ভুল হবে। কিন্তু তাদের বাজানো এই ভার্সন অবশ্যই আমি কোন আনুষ্ঠানিক আয়োজনে হয়ত বাজাবো না, আমি সেখনে মূল সুর, কথা সব কিছু ঠিক আছে এমন কোন ভার্সনই বাজাতে চাইব।

৪। আমার পার্সোনাল অভিমত হল, দেশপ্রেম ব্যাপারটা অনেকটা প্রচলিত কোন ধর্মের মত যেন না হয়ে যায়, যেখানে আধ্যাতিক ব্যাপারটার চেয়ে রিচুয়ালিস্টিক ব্যাপারগুলোই বড় হয়ে পড়ে। আমি দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা প্রদর্শনের বিরোধী না। কিন্তু সেটার অন্যথা হলেই সেটাকে বাঁকা চোখে দেখার সুযোগ নেই বলেই মনে করি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার কথাগুলোর উত্তর ওপরের বিভিন্ন মন্তব্যে দিয়ে এসেছি। নতুন করে আর কিছু দেয়ার নেই। ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

savage_mountain এর ছবি

জাতীয় পতাকা নিয়ে আপনি কি মনে করেন? কেউ যদি symmetry চিন্তা করে ইচ্ছাকৃত ভাবে পতাকার লাল বৃত্তটি একেবার মধ্যে দিয়ে বানায়?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমার জাতীয় পতাকার মত টি-শার্ট আছে, পাঞ্জাবী আছে। আমরা মাথায় ব্যান্ড পড়ি বাংলাদেশের পতাকার রঙ্গের কাপড় দিয়ে, সেগুলোর কোনটাতেই অনুপাত ঠিক থাকে না। সেসব ক্ষেত্রে আমার কোন আপত্তি নেই। আপনার আপত্তিও আমি মানব না। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা কোথাও উত্তোলন করা হলে সেটার অনুপাত ঠিক হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। আমাদের অনেকের ফেসবুক প্রোফাইল বা কাভার পিকচারে দেখবেন অনেক সময়ই পতাকার ছবি থাকে সেটা সম্ভব নয় অনুপাত ঠিক রেখে করা। জাতীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও আমি একই কথা বলব। আনুষ্ঠানিকভাবে গাইলে অবশ্যই সুর কথা ঠিক রেখে গাইতে হবে (সেটা আমি আমার মনব্যেও বলেছি), কিন্তু কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজের মত করে গাইতে চান তাহলে আপনি বাঁধা দেবেন কেন? আমার তাল লয়ের জ্ঞান নেই, গলায় সুর নেই, তাই বলে আমাকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দেবেন না? গাইলেও সেটাকে ভিডিও করতে দেবেন না? করলেও সেটা আমার বন্ধুদেরকে দেখাতে দেবেন না? জাতীও সঙ্গীত শুধু সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ বা এলিটরাই গাইতে পারবেন? এই যে আপনি আমার জাতীয় সঙ্গীত গাইবার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন, গাইলেও সেটাকে ভিডিও বা শেয়ারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন, এই অধিকার আপনাকে আমি দেইনি। আমার গাওয়া গান আপনার ভাল না লাগতে পারে সেটা স্বচ্ছন্দে জানান, আমার গানের সুর তাল নিয়ে সমালোচনা করুন, আপত্তি নেই, কিন্তু গাইতে দেবেন না বা গাইলেও প্রচার করতে দেবেন না, ওই আবদার আমি মানছি না হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীলকান্ত এর ছবি

জাতীয় পতাকা কি জুতায় দেখছেন কখনও?দেখলে কি ব্যক্তি স্বাধীনতা হিসেবে উড়িয়ে দেবেন?
মৃদুল'দা এই কথাটিই বলছেন। কিছু তো একটা স্ট্যান্ডার্ড থাকতে হবে। এরকম করে যদি সব ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা বলে চালিয়ে দেন তাহলে তো দেশের নাম বাপের নাম নিজের নাম যা ইচ্ছা তাই করা যাবে।


অলস সময়

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

উদাহরণ টানার জন্যে স্পেক্ট্রামের এক্সট্রিম পয়েন্টের উদাহরণ দেয়া কোন কাজের কথা নয়। জাতীয় পতাকায় পা দিলে, লাথি দিলে অবমাননা হবে কিনা সেটা বোধহয় তর্কসাপেক্ষ না। পতাকা গায়ে দিলে অবমাননা হবে কিনা সেটা তর্কসাপেক্ষ। পতাকা পা দিয়ে মাড়ানোকে ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে চেয়েছি, আমার কমেন্ট পড়ে অ্যাটলিস্ট আমার মনে হল না! কোন দিকেই এক্সট্রিমিজম 'সম্ভবত' ভাল না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

savage_mountain এর ছবি

"আমাদের অনেকের ফেসবুক প্রোফাইল বা কাভার পিকচারে দেখবেন অনেক সময়ই পতাকার ছবি থাকে সেটা সম্ভব নয় অনুপাত ঠিক রেখে করা।"

কেন সম্ভব নয়? আমি নিজে কিছুদিন আগে জাতীয় পতাকা প্রোফাইল পিকচার হিসেবে দিয়েছিলাম। উপরে নিচে সাদা ফিলার দিয়ে।

গুগল এ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে খুজলে বেশ কয়েকটা ইমেজ পাবেন যেখানে বৃত্ত একেবারে মধ্যে। আমি আপনে নাহয় আসল অনুপাত জানি দেখে ঐসব ইমেজ ব্যবহার করবনা। কিন্তু একজন বিদেশী লোক সহজেই বিভ্রান্ত হবে। বিদেশী মানুষের কাছে নির্ভুল উপস্থাপন টাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি বলেই এই উদাহরণ দিচ্ছি।

"কিন্তু কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজের মত করে গাইতে চান তাহলে আপনি বাঁধা দেবেন কেন? আমার তাল লয়ের জ্ঞান নেই, গলায় সুর নেই, তাই বলে আমাকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দেবেন না? গাইলেও সেটাকে ভিডিও করতে দেবেন না? করলেও সেটা আমার বন্ধুদেরকে দেখাতে দেবেন না?"

জাতীয় সংগীত গাওয়া তে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। গাইতে গিয়ে ভুল হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু ব্যক্তি স্বাধীনতা নামে আপনি যে কাজটা করতে চাইছেন সেটা কিন্তু আপনার তাল লয় বা সুরের অভাবের জন্য না। আপনি সব ই জানেন তার পর ও আপনি ভিন্ন ভাবে করতে চাইছেন। যেহেতু বিষয়টা জাতীয় সংগীত, তাই নিরুত্সাহিত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই লেখার মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে বেশির ভাগ মন্তব্যকারী সেটা চাননা। হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ঠিকাছে, কথা আর না বাড়াই, নতুন কিছু আসছে না কোন পক্ষ থেকেই। মতামতের কিছু পার্থক্য থাকা দোষের কিছু নয়। ভাল থাকুন হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

savage_mountain এর ছবি

জাতীয় পতাকা নিয়ে আপনি কি মনে করেন? কেউ যদি symmetry চিন্তা করে ইচ্ছাকৃত ভাবে পতাকার লাল বৃত্তটি একেবারে মধ্যে দিয়ে বানায়?

ক্ষ নামক ব্যান্ড দলটি ঘরের মধ্যে যেভাবে খুশি গান টি গাক। কিন্তু তাদের ভার্সান তা ইউ টিউব এর মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে প্রচার/share করা ঠিক না।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ওপরে উত্তর দিয়েছি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অবনীল এর ছবি

দেশপ্রেম ব্যাপারটা অনেকটা প্রচলিত কোন ধর্মের মত যেন না হয়ে যায়, যেখানে আধ্যাতিক ব্যাপারটার চেয়ে রিচুয়ালিস্টিক ব্যাপারগুলোই বড় হয়ে পড়ে। আমি দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা প্রদর্শনের বিরোধী না। কিন্তু সেটার অন্যথা হলেই সেটাকে বাঁকা চোখে দেখার সুযোগ নেই বলেই মনে করি।

সহমত। ধর্মিয় মৌলবাদীতার মত জাতীয়তাবাদী মৌলবাদিতাও কিন্তু কম ক্ষতিকর নয়। হয়ত এ পোস্টের জন্য কথাটা অতিশয়োক্তি হয়ে গেল। জানি না। কিন্তু ব্যপারটা সকলের চিন্তায় আসুক এটাই কামনা।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

নাশতারান এর ছবি

ক্ষ'র পরিবেশনা দেখা হয়নি এখনো। তবে সিনেমার শুরুতে জাতীয় পতাকা আর সংগীতের জরাজীর্ণ দশা পীড়া দেয় প্রতিবারই। জাতীয় সঙ্গীত শুরু হলে অনেকেই দাঁড়ান না। আগে অবাক হতাম। এখন হই না। চারপাশে চোখ বুলালেই বোঝা যায় আমাদের আদবকায়দাবোধ দিনে দিনে কমছে বই বাড়ছে না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমি অবশ্য সবাইকে দাঁড়াতেই দেখি। তবে একটা দায়সারা ভঙ্গি থাকে সবার ভেতরেই। সেটা পীড়া দেয়। ব্যাপারটার মধ্যে আনন্দ আর অনুপ্রেরণা আনা উচিত।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

তারেক অণু এর ছবি

স হ ম ত

ম্যাক্স ইথার  এর ছবি

আমার পার্সোনাল অভিমত হল, দেশপ্রেম ব্যাপারটা অনেকটা প্রচলিত কোন ধর্মের মত যেন না হয়ে যায়, যেখানে আধ্যাতিক ব্যাপারটার চেয়ে রিচুয়ালিস্টিক ব্যাপারগুলোই বড় হয়ে পড়ে। আমি দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা প্রদর্শনের বিরোধী না। কিন্তু সেটার অন্যথা হলেই সেটাকে বাঁকা চোখে দেখার সুযোগ নেই বলেই মনে করি।

পুরোপুরি একমত ! ক্ষ ব্যান্ডের গানটি ভালো না লাগার কোনও কারন এখনো পাইনি। কারো কারো কাছে ভালো না লাগতেই পারে। কিন্তু আমার বিশ্বাস বেশিরভাগ বাঙ্গালিরই গানটি ভালো লাগবে। আর শুধুমাত্র জাতীয় সঙ্গীত বলেই অতটা বাছবিচার করাটা অবাস্তব ঠেকল। আমার ঘরে যদি আমি ভাললাগার বশেই গানটা বাজাই তাহলেও কি দাড়িয়ে শুনতে হবে ? আবার এখানে কোনও ভিনদেশী বাদ্য বাজালেই গাত্রদাহের কারন কি বুঝলাম না। আবার বসে বাদ্যযন্ত্র বাজালেও দোষের ? যাব্বাবা । রবীন্দ্রনাথকি তবে গানটি লেখার সময় দাড়িয়ে লিখেছিলেন ? নাকি তিনি জানতেন যে তার এইগানটি একসময় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে তাই এটিকে দাড়িয়ে লেখা উচিত ?

সেইসাথে ভালবাসা/সম্মানের অতিসজ্জে আমরা এটাও ভুলে যাই যে গানটি জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতও । একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচনের কারনে সেটিকে কি তার পূর্বের পরিচয় জলাঞ্জলি দিতে হবে ? এ কেমন কথা ?

দেশপ্রেমকে আরেক ধর্ম বানানর কোনও মানে হয়না। এতো বেশী রিতিরেওয়াজ আমাদের দেশপ্রেমিক বানানর চেয়ে বরং দেশপ্রেম বিমুখই করে তুলবে।

savage_mountain এর ছবি

"সেইসাথে ভালবাসা/সম্মানের অতিসজ্জে আমরা এটাও ভুলে যাই যে গানটি জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতও । একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচনের কারনে সেটিকে কি তার পূর্বের পরিচয় জলাঞ্জলি দিতে হবে ? এ কেমন কথা ?"

ধরুন আপনার নিকট এক বন্ধু দেশের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত । রাষ্ট্রীয় কোন অনুষ্ঠানে আপনি কিন্তু তাকে "কিরে দোস্ত, কেমন আসোস?" এই ভাবে সম্বোধন করতে পারেননা। ঘরের মধ্যে আপনি গানটি রবীন্দ্র সংগীত হিসেবে বার বার শুনতে পারেন। কিন্তু আপনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্য রবীন্দ্র সংগীতের সাথে আপনি যদি এইটাও বাজান, সেটা কি ঠিক হবে?

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার শ্লেষপূর্ণ মন্তব্য পড়ে আমার হাসি পেল। বুঝতে পেরেছি ক্ষীয়র পরিবেশনার বিপরীতে দুটো কথা বলায় আপনার কচি মনে বড্ড কষ্ট লেগেছে। তাই বলে বুড়ো রবীন্দ্রনাথকে খাড়া করে জাতীয় সঙ্গীত লিখতে পাঠিয়ে দিলেন? ভালো। শ্রদ্ধাবোধের ক্ষেত্রে আপনার মাপকাঠি নিয়ে কিঞ্চিৎ দ্বিধান্বিত হলাম ভ্রাত!
আপনার বিবিধ প্রশ্নের জবাব ওপরের বিভিন্ন মন্তব্যে পাবেন। একটা কথার উত্তর তারপরও দিতে হবে, রবীন্দ্রসঙ্গীত বলে নয়, বাংলাদেশ নামের একটা দেশ অনেক রক্তপাত, দুঃখ আর কষ্টের পর যে জন্ম নিয়েছে, সেই জন্মের সাথে জড়িত যে সঙ্গীতটা, তাকে হালকাভাবে দেখার আসলেই সুযোগ নেই। কথাটা আরেকবার মন দিয়ে পড়ুন। আসলেই সুযোগ নেই। জাতীয় সঙ্গীত আপনি ব্যক্তিগতভাবে শুয়ে বসে দাঁড়িয়ে এমন কি জগিং করতে করতেই শুনতে পারেন সমস্যা নেই। তবে সবাই মিলে যখন শুনবেন তখন আনুষ্ঠানিকতাটা বজায় রাখলে রাখলে আপনার সন্তানও সেটাকে সম্মান করতে শিখবে।
বিদেশি বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে আমি কিছু বলি নি, আবার পড়তে পারেন আমার লেখাটা। বিদেশি লোকজনকে এই ধরনের আয়োজনে দেখলে আমার মনে হয় নজর কাড়ার একটা প্রক্রিয়া।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সত্যপীর এর ছবি

"কচি মনে বড্ড কষ্ট" এই জায়গাটার কোন দরকার ছিলনা।

..................................................................
#Banshibir.

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

দুঃখিত এজন্য। রবীন্দ্রনাথ দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন, এই কথাটা খুব লেগেছিল। তাই শ্লেষটা বেরিয়ে এল। আমিও মানুষ তো, তাই।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ম্যাক্স ইথার  এর ছবি

শুধু বাংলাদেশ না, কোনও দেশের জাতীয় সঙ্গিতকেই হালকা ভাবে নেবার সুযোগ নেই। অনুষ্ঠানের সময় আনুষ্ঠানিকতা করায় কারো কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সমস্যাটা হয় যখন অনানুষ্ঠানিকতায় আনুস্থানিকতাকে বাধ্যতামুলক করার চেষ্টা করা হয়। ক্ষ'র পরিবেশনায় গানটি আমার চমৎকার লেগেছে। ভিডিওটি না দেখে শুধু গানটি শুনলে লেখকের বোধয় এতোটা আপত্তি তোলার সুযোগ থাকতোনা। সেক্ষেত্রে হয়তো তার অভিমত অনেকটাই ভিন্নমতের হতো। আমার প্রশ্নটা সেখানেই। একজন ভিনদেশি আমাদের জাতীয় সঙ্গীতে বসে বাদ্য বাজালে তাতে আমাদের জাতীয় সঙ্গিতের মান বিন্দুমাত্র আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে আমি মনে করিনা। সেজন্য তাকে দাড়িয়ে বাজাতে বলার অনুরধ করাটাও আমার কাছে দৃষ্টিকটু মনে হবে। সেইসাথে যে যেই পজিসনে বাজিয়ে সাবলীল বোধ করবেন তাকে সেভাবেই বাজাতে দেয়া উচিত, তা সে দেশিই হোক আর বিদেশিই হোক। মুল ব্যাপারটা এখানে সুরারোপের উপর। গানটির মুল সুর, মুল কথা ঠিক থাকলো কিনা সেটিই বরং বিবেচ্য বিষয়। কোনও বিষয় নিয়েই অতিরিক্ত শ্রদ্ধা/ভক্তির ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি মনে হয়।

মেঘা এর ছবি

মৃদুল ভাই নির্মমভাবে সত্যি বলেছেন আমরা স্কুলে জাতীয় সঙ্গীতের উপর মায়া ভালবাসা অনুভবের কোন সুযোগ পাই নি সবাই মিলে বিদঘুটে করে গাওয়ার জন্য! একটা সুন্দর পরিবেশন এখনো বোধ হয় নেই হাতের কাছে। দেশপ্রেম আছে আমাদের। জাতীয় সঙ্গীতের সাথে গাইতে গাইতে চোখে জল আসার মত অনুভূতি আমাদের আছে। তবে এমন চমৎকার পরিবেশন নেই বলেই হয়ত আমাদের এই আবেগ প্রকাশ পায় না। আমরা সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারটা জানি না বলে যেটা লিখেছেন সেখানে একটু বলতে চাই কোন বিষয়ে কেমন সম্মান দিতে হয় এটা আমরা আসলে কতটা জানি? জাতীয় পতাকার সম্মানের যে ব্যাপার আছে সেটা কি আমাদের জানা আছে? আমাদের নিজের দেশের প্রত্যেকটা ব্যাপারে অবহেলা আছে।

বিজাতীয় যারা গেয়েছেন তাদের দোষ দিতে পারছি না। রবীন্দ্র সঙ্গীত এটা। যে কেউ গাইতে পারে। আমাদের জন্য অনেক আলাদা ব্যাপার এটা কিন্তু ওদের জন্য না। আমার সোনার বাংলা গানটা যে এতো চমৎকার এই অনুভূতি আমাদের নেই আসলে। তাই এতদিন আমাদের এই আবেগ তাড়িত করে নি যতটা এখন করছে।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ঠিকই বলেছেন মেঘা। হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে যাই--

১। সিনেমা হলের সেই পুরানা দিনের পতাকার সাথে ঝনঝনে জাতীয় সংগীত আমার ভালই লাগে। একটা পুরানো পুরানো ভাব আছে ওতে। স্বীকার করছি, বেশ মিস করি।

২। জাতীয় সংগীত শুনলেই অটোমেটিক্যালি দাঁড়িয়ে যাই, কিংবা থেমে যাই। বাচ্চাদেরও সেটাই শেখাই। আশেপাশের মানুষদেরও শেখাই। অনেকেই জানে না; তারা হয়তো স্কুলে শেখেনি, কিংবা শেখার সুযোগ হয়নি।

৩। কোন অনুষ্ঠানে এটাকে রবীন্দ্র সংগীত হিসেবে বাজানো হচ্ছে এমন অভিজ্ঞতা আমার হয়নি-- তাই বলতে পারছি না সেক্ষেত্রে কী করতাম। তবে পরিস্থিতি বুঝে হয়তো বসেই থাকতাম। ভুলে দাঁড়িয়ে গেলেও লজ্জা হতনা অবশ্য। ঐ যে বললাম -- দাঁড়িয়ে যাওয়াটা ইন-বিল্ট।

৪। ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত জাতীয় সংগীত গেয়েছিলাম। রাজধানী শহরে আসার পরে ৮ম শ্রেনী থেকে কোনদিন স্কুলে জাতীয় সংগীত গাইতে হয়নি, কারণ এসেমব্লিই হতনা। সরকারী স্কুলেই পড়তাম, তাও আবার সংসদ ভবনের একেবারেই কাছে!

৫। অনেকদিন পরে লিখলেন সেজন্য দাঁড়িয়ে সম্মান জানালাম হাসি

৬। অনেকেই ধর্মের রিচুয়ালের সাথে তুলনা করে ধর্মের মতই সেটাকে দূরে রাখতে চাইলেন। যার যা ভালো লাগে সেটা করতেই পারেন। তবে ধর্মের রিচুয়ালের মূলে যেমন স্পিরিচুয়ালিটি আছে (যারা বোঝেন/মানেন/অনুভব করেন) তেমনি জাতীয় সংগীত শুনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার রিচুয়ালটাও স্বতস্ফূর্ত--যার মূলে আছে ৩০ লক্ষ শহীদের ত্যাগে অর্জিত পতাকার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশ। (পরিবার/প্রাইমারি স্কুল থেকে এমনটাই শিখেছি)।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পিপিদা, জাতীয়সঙ্গীত শুনলে দাঁড়িয়ে পড়ার ব্যপারটা আসলেই শ্রদ্ধা থেকেই আসে। যে কোন জায়গায় বা অনুষ্ঠানে আমি তাই করব, সবাইকে করতেও বলব (অনুরোধ করব)। কিন্তু মনে করেন আমি আমার ঘরে বসে বারবার শুনছি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত (আমার যেটা হয় মাঝে মাঝে একটা দুইটা গানের লুপে পড়ে যাই, বারবার শুনতে থাকি) সেক্ষেত্রে পুরা টাইম দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাপারটা হাস্যকর হয়ে যায় না?

ধর্মের সাথে তুলনা দেয়ার কারণ হল, ধর্মের রিচুয়ালের পেছনে স্পিরিচুয়ালিটিটাকেই আমি মূল মনে করি। কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বরং দেখি উল্টাটাই। আপনি একমত হবেন কিনা জানিনা, অধিকাংশ বাঙ্গালি মুস্লিম নামাযে যে সূরাগুলা পড়েন দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই তার অর্থ জানেনা বা চেষ্টাও করেন না জানার, সেখানে স্পিরিচুয়ালিটি কতটা আসে সেটা আমার বরাবরই সন্দেহ থেকে যায়। বিষয়টা তর্ক সাপেক্ষ আর এই পোস্টের মূল আলোচনার সাথে যায় না দেখে কথা বাড়াচ্ছি না। যেটা বলতে চাচ্ছি, রিচুয়াল ব্যাপারটা মন থেকেই আসলেই সেটা আমার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য। একইসাথে বলব, কারো ভেতরে যদি যথেষ্ট পরিমাণে থাকে যেটা থাকা উচিৎ আর সে যদি রিচুয়ালের ক্ষেত্রে অতটা মনযোগী না হয় আমি সেটার জন্যে তাঁকে গালি দিতে রাজি নই, বা কেউ গালি দিলেও আমার ভাল লাগবে না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঠিকই বলছেন-- ধর্ম আচার সর্বস্য হয়ে গেছে। স্পিরিচুয়ালিটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত।

বাসায় বসে শুনতে গেলে দাঁড়িয়ে যাওয়াটা হাস্যকর তো হবেই। কনটেক্সট উপর নির্ভর করবে।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার পাঁচ নাম্বার পয়েন্টটা পড়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি! আপনি মিয়া নীরব দুষ্টু আছেন!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অতিথি লেখক এর ছবি

মৃদুল ভাইয়ের মত অভিজ্ঞতা আমারও হয়েছে বিভিন্ন সিনেমা হলে। লেখাটা পড়ার পর থেকেই নেটে খোঁজা শুরু করলাম জাতীয় সঙ্গীত গাইবার জন্য সরকারী নিয়মাবলী আসলে কী এবং সেটা মানার ক্ষেত্রে কী পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। নেট ঘেঁটে যা পেলাম তা এখানে তুলে দিতে ইচ্ছা করছে।
প্রথমেই দেখি সংবিধানে কী আছে এ ব্যাপারে। মৃদুল ভাই সিনেমা হলের কথা বলেছেন বলে সেটাই আগে উল্লেখ করছি। ১৯৭২ এর ৩১ শে অক্টোবর জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় প্রতিক সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয় যা রাস্ট্রপতি জারি করেন (অর্ডার নং ১৩০, ১৯৭২)।

লিংক হল এইটা। http://bdlaws.minlaw.gov.bd/print_sections_all.php?id=418

আমি আইন কানুন ভালো বুঝিনা। তবে এই আদেশের ১ এর দুই নাম্বার পয়েন্টে এসে দেখলাম লেখা আছে

It extends to the whole of Bangladesh.

তাহলে কি ধরে নিচ্ছি যে যেকোন স্থানে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। আরো খুঁজতে থাকলাম। এরপর পেলাম Ministry of Public Administration এর ওয়েব সাইট। সেখানে নিয়ম-কানুন অনেক কিছুই লেখা আছে। তারমধ্যে ৫ নাম্বার পয়েন্টটা হল এরকম। আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি।

Singing of National Anthem by civilians - (1) The National Anthem may be sung on an occasion which, though not strictly ceremonial is significant because of the presence of any Minister. (2) In all schools, the day's work shall begin with the singing of the National Anthem. (3) Whenever the National Anthem is sung, the whole of it shall be sung.

লিংক হল - http://www.mopa.gov.bd/index.php?option=com_content&task=view&id=366&Itemid=381

এরপর আরো দেখলাম যে ৭ নং পয়েন্টে লেখা আছে The National Anthem shall be played only in accordance with the approved notation of the song.

ভালো কথা যে নোটেশন অনুসরণ করতে হবে। কোনই আপত্তি নাই। কিন্তু গোল বাধলো যখন এই নোটেশন খুঁজতে গেলাম। খুঁজতে গিয়ে কিছু অদ্ভুত কথা পেলাম। কি পেলাম সেটা তুলে দিচ্ছি।

“বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' গানটির প্রথম দশ লাইনকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই। আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করা হয় স্বাধীনতার পরে। ১৯৭২ সালের
১৩ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে স্বরলিপিসহ জাতীয় সংগীত বিল পাস হয়। পরে সংগীতজ্ঞ সমর দাসের (প্রয়াত) তত্ত্বাবধানে ব্রিটেনের বিবিসি স্টুডিও থেকে জাতীয় সংগীতের অর্কেস্ট্রেশন তৈরি করে আনা হয়। এই সুরই বাজানো হয় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে। কিন্তু অধিকাংশ শিল্পী জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় অনুমোদিত স্বরলিপি ও সুর অনুসরণ না করে তাঁরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত গায়কী অনুসরণ করছেন। ফলে জাতীয় সংগীত গাওয়ার ক্ষেত্রে দুুটি জায়গায় ভিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে। গানের 'চিরদিন তোমার আকাশ' অংশটি জাতীয় সংগীতের স্বরলিপি এবং তৈরি করা অর্কেস্টেশনে একবার আছে। কিন্তু শিল্পীরা গাওয়ার সময় একমাত্রা বিরতি দিয়ে দুইবার গেয়ে থাকেন।
'মা তোর মুখের বাণী' অংশে 'মুখের' শব্দটি প্রলম্বিত করে কখনোবা মাঝখানে নিঃশ্বাস নিয়ে অফবিটে 'বাণী' শব্দটি উচ্চারণ করেন শিল্পীরা। কিন্তু জাতীয় সংগীতের গৃহীত স্বরলিপিতে 'মুখের বাণী' এক সাথে রয়েছে। এই দুটি ক্ষেত্রে ভিন্নতার কারণে জাতীয় সংগীত অভিন্নভাবে গাওয়া হচ্ছে না। ফলে গাওয়ার সময় সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়েন। এমনকি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও একেক জায়গায় একেকভাবে গাওয়া হচ্ছে। চলতি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের খেলার শুরুতেও এই ভিন্নতা লক্ষ করা গেছে। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত দুটি খেলায় রাষ্ট্রীয় অনুমোদিত স্বরলিপি অনুসরণে জাতীয় সংগীত গাওয়া হলেও ঢাকার মিরপুরে অনুষ্ঠিত খেলাগুলোতে বিশ্বভারতীর সুরে গাওয়া হয়েছে।
বিশ্বভারতী শিল্পী সুচিত্রা মিত্রের গাওয়া গায়কীকে অনুমোদন করেছে বলে জানা গেছে। ছায়ানট ও রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের শিল্পীরা এই গায়কীকেই যথার্থ বলে মনে করেন এবং অনুসরণ করছেন। এই রীতি অনুসারে যাতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়, এর জন্য তাঁরা তৎপরও রয়েছেন। শিল্পীদের মধ্যে ভিন্নমতও প্রচলিত রয়েছে।
জাতীয় সংগীতের অর্কেস্টেশন অনুমোদনের সময়ই এর সুর নিয়ে ভিন্নমত সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়। সংগীতজ্ঞ আবদুল আহাদ (প্রয়াত) তাঁর আত্মজীবনী 'আসা-যাওয়ার পথের ধারে' (বাংলা একাডেমী, প্রকাশকাল : ডিসেম্বর ১৯৮৯) গ্রন্থে লিখেছেন, "আমাদের জাতীয় সংগীতটির অর্কেস্ট্রেশনের বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পড়ে বিভিন্ন সরকারি পর্যায়ে বাজানোর জন্য এবং যাতে মিলিটারি ব্যান্ডে বাজাতে পারে সেজন্য ব্র্যাসব্যান্ডে এই গানটির অর্কেস্ট্রেশন খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ... রেকর্ড হয়ে যাওয়ার পর কেমন রেকর্ডিং হলো তা শোনার জন্য একটি মিটিং ডাকা হয়েছিল রেকর্ডিংয়ের ছয় নম্বর স্টুডিওতে। মিটিংয়ে তথ্যমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন এবং দুজন সেক্রেটারি তৌফিক ইমাম ও মুজিবুল হক, স্থানীয় মিলিটারি ব্যান্ডের পরিচালক, সনজীদা খাতুন, জামিল চৌধুরী এবং আমি উপস্থিত ছিলাম। সমর দাসও উপস্থিত ছিল। 'সোনার বাংলা'র টেপটি বাজিয়ে শোনানো হলো এবং শোনার পর যে প্রতিক্রিয়া হলো তা বলার নয়। ঘোর আপত্তি উঠল যে, গানটির সুর বিকৃত করা হয়েছে। ...প্রথম দিনের মিটিং হৈচৈয়ের মধ্যে শেষ হয়ে গেল। কয়েক দিন পর আবার মিটিং ডাকা হলো। সে মিটিংয়েও একই অবস্থা। সবাই একবাক্যে বলল, সোনার বাংলার এই অর্কেস্ট্রেশন আমরা কিছুতেই অনুমোদন করব না। তাহেরউদ্দিন ঠাকুর আমাকে ডেকে নিয়ে রেডিও স্টেশনের একপ্রান্তে গিয়ে বললেন, 'আহাদ সাহেব, সরকারের অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে আর কিছু করা সম্ভব না, আপনি ঠিক আছে বলে দিন।' মন্ত্রীর অনুরোধ এবং সরকারের অবস্থা বিবেচনা করে আমাকে সম্মতি দিতে হলো।"

লিংক হল - http://tinyurl.com/caasap4

আমার কাছে এই তথ্যগুলো খুব অদ্ভুত লাগছে। আমরা জাতি হিসাবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের একটা মাপকাঠি পর্যন্ত ঠিক করতে পারিনি। আমরা শুধু ২০১০ সালে একটা আইন পাস করতে পেরেছি যেখানে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করলে শাস্তির বিঁধান রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই জাতীয় সঙ্গীত সঠিকভাবে গাইবার জন্য কী করতে হবে তার কিছুই এখনো ঠিক করা হয়নি।

ব্যান্ডের বিতর্কে যাবো না। কারণ এই ব্যাপারে আমাদের আইনকানুন যেহেতু এখনো একদম সঠিক দিক নির্দেশনা দিচ্ছে না কাজেই এটা সবার ব্যক্তিগতই থাকুক।

পরিশেষে বলতে চাই, দল, মত, ধর্ম বুঝি না। বাংলাদেশকে সুন্দর দেখতে চাই। সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চাই। দেশপ্রেম কথায় নয় কাজে থাকুক এই প্রত্যাশা।

আলোকিত-মন

মেঘা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

দুর্দান্ত এর ছবি

গুল্লি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আলোকিত-মন, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। খুবই মূল্যবান একটা মন্তব্য দিয়েছেন। এটা একটা পোস্ট আকারে এলেই বেশি ভালো হত। স্যালুট এবং আবারও ধন্যবাদ আপনাকে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অবনীল এর ছবি

আমার কাছে এই তথ্যগুলো খুব অদ্ভুত লাগছে। আমরা জাতি হিসাবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের একটা মাপকাঠি পর্যন্ত ঠিক করতে পারিনি। আমরা শুধু ২০১০ সালে একটা আইন পাস করতে পেরেছি যেখানে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করলে শাস্তির বিঁধান রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই জাতীয় সঙ্গীত সঠিকভাবে গাইবার জন্য কী করতে হবে তার কিছুই এখনো ঠিক করা হয়নি।

ব্যান্ডের বিতর্কে যাবো না। কারণ এই ব্যাপারে আমাদের আইনকানুন যেহেতু এখনো একদম সঠিক দিক নির্দেশনা দিচ্ছে না কাজেই এটা সবার ব্যক্তিগতই থাকুক।

একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ সেজন্যে।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক আলোকিত-মন, আপনার গঠনমূলক আলোচনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অনেক কিছুই জানতে পারলাম।

দল, মত, ধর্ম বুঝি না। বাংলাদেশকে সুন্দর দেখতে চাই। সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চাই। দেশপ্রেম কথায় নয় কাজে থাকুক এই প্রত্যাশা।

চলুক চলুক

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

কিষান এর ছবি

ক্ষ এর ভার্সনটা দেখলাম। অনেকেই দেখছি আবেগের আতিশয্যে ভেসে যাচ্ছে, এরকম সুন্দর জাতীয় সঙ্গীত নাকি আগে কখনো শোনে নি! আমার কাছে মনে হয়েছে গানটাতে আবেগের অভাব আছে। গায়িকার ভাবভঙ্গী কেমন কৃত্তিম। এর চেয়ে প্রাইমারী কিংবা হাইস্কুলে থাকতে সবাই যেমন গলা মিলিয়ে গাইতাম, তখন অনেক বেশি দরদ দিয়ে গাইতাম

তারপরও ক্ষ'কে কৃতিত্ব দিতে চাই। ওদের বেশিরভাগ যন্ত্রীই বিদেশী। তারা যথেষ্ট মমতা দিয়েই কাজটা করেছেন বলে মনে হলো। আর তাদের সুবাদেই জাতীয় সঙ্গীত আবার অনেকের মুখে মুখে উঠে এসেছে। এটা একেবারে খাটো করে দেখার বিষয় না

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

হুমম, একটা বিষয়ে অন্তত তাঁরা ধন্যবাদ পাবেন, তাঁরা না গাইলে সচলে আজ এই বিষয়টা আলোচনায় আসত না!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

রবীন এর ছবি

জিমি হেন্ড্রিক্সের স্টার স্প্যাঙ্গেলড ব্যানার শোনার সময় কয়জন বোমাবর্ষণ, চিৎকার এবং মেশিন গানের আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন?
মনোযোগ দিয়ে জিমির জ্যাম আবার শুনলে বুঝতে পারবেন, তার এক মিনিটের মতো পরে তিনি বাজান "ট্যাপ্স" এর একটি অংশ যা যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে বাজানো হয়, জিমি আপনাকে একটি সম্পুর্ন যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েক মিনিটের মধ্যে।
জাতীয় সঙ্গীতের এই ব্যাবহারের মানে কি তিনি দেশপ্রেমিক নন? আমি বিশ্বাস করি সবাই নিজের মতো করেই দেশপ্রেম দেখাক।
কিন্তু সিনেমা হলের অবস্থাটি অবশ্যই পরিবর্তন প্রয়োজন।
(জিমি হেন্ড্রিক্সের গানের কথাটি আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিল, আমি পরে গুগল অনুসন্ধান করে এর সত্যতা যাচাই করি।)

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ইদানিং একটা কথা আমরা সবাই বলে থাকি, "ধর্ম যার যার, উৎসব সবার"।
এক্ষেত্রেও আমি বলতে চাই, "দেশপ্রেম যার যার, জাতীয় সঙ্গীত সবার"। এমন কিছুই করা উচিত না যাতে অনেক মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লাগে। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে হলে মনে হয় বাসায় বসে করাই ভালো, সবার সামনে তুলে ধরলে একটা দায় এসে যায়। জাতীয় সঙ্গীতের ওপর পরীক্ষা চালাবার অধিকার নিয়ে এত কথা বলছি, কিন্তু অনেক মানুষের দেশাত্ববোধে আঘাত করার অধিকার আমাদের আছে কিনা সেটা নিয়ে একবারও ভাবছি না, কেমন হল ব্যাপারটা? হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মৃদুলদা এই ব্যাপারটি ধরতে পারছি না। কেউ দ্বিতীয় প্যারা থেকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করলে বা ভুল সুরে গাইলে (সেটা এক্সপেরিমেন্টাল হোক বা না জানার কারণে) বা সাদা বন্ধুদের নিয়ে গাইলে সেটাতে আমাদের দেশপ্রেমের অনুভূতি আহত হবে কেন? আমার ওদের ভার্সন ভাল না লাগ‌লে আমি সেটা বলতে পারি কিন্তু ওদের গাইতে দেব না, এই পয়েন্টটায় যুক্তির জায়গাটা ধরতে পারছি না। মানুষের ধর্মানুভূতির সেনসিটিভিটি নিয়ে অনেক হাসাহাসি হয়, বিড়ম্বনাও কম হয় না। দেশপ্রেম কি অতটা ঠুনকো অনুভূতি যে ভুল সুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হলে আমার দেশপ্রেমেনুভূতিতে আঘাত লাগবে? সেটা যে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের অফিসিয়াল ভার্সন না সেটা জানা থাকাটা জরুরী কিন্তু কারো সেটা শুনতে ভাল লাগাই যাবে না? কেউ যদি ব্যঙ্গ করে ভুল সুরে গায় বা ব্যঙ্গ করার জন্যে গায় সেক্ষত্রে কথা হতে পারে প্রতিবাদ হতে পারে বা হওয়া উচিৎ‌। কিন্তু উদ্দেশ্য না দেখে ঢালাওভাবে দোষারোপ করাটা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে বাড়াবাড়ি মনে হয়। আবারও বলছি, আমার কথাগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে গাওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তির্যক এর ছবি

সুদৃশ্য কালো হ্যাট , ধুলোমাখা বুটজোড়া দিয়ে যখন গানটির ভিডিও ক্লিপ শুরু হলো তখনই বোঝা গেল, বাকি গানটি কি হতে যাচ্ছে। গানটির নির্মাতা এবং পারফরমারদের আবেগ নিয়ে আমার প্রশ্ন নেই। কিন্তু অগভীর আবেগের অযাচিত বাহুল্যে আর দেখনদারির ঠেলায় গানটি আমাদের জাতীয় সংগীতের মুল মর্মস্থানটি স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূল গানটিতে যাকে বলে, বাংলার "এঁদো মাটির সোদা গন্ধ" পাওয়া যায়, নদীর পার দিয়ে হাটতে হাটতে বাতাসের দমকের শব্দ শোনা যায়। এভাবেই আমাদের জাতীয় সংগীত আমাদের জাতীয়তার স্বরূপ উন্মোচন করে, এটি শুধুই একটি ভালো গান নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু। গানটি উদাত্ত কন্ঠে সহজ স্বাভাবিক ভাবে গাওয়ার গান। ক্ষ-এর গানটিকে একটি রিমিক্স হিসেবেই ভাবা চলে যা হয়ত কিছুদিনের জন্য জনপ্রিয় হয়েছে সীমিত সংখ্যক মানুষের কাছে বা হয় নি। তবে এ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। যদি আসলেই শিল্পোত্তীর্ণ কিছু হয়ে থাকে, তাহলে অনেকদিন টিকে থাকবে গানটির এ ধরনের গায়কী, আর যদি শিল্পোত্তীর্ণ না হয় (যা ব্যক্তিগতভাবে মনে করি), তবে কিছুদিন পর হারিয়ে যাবে।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমিও তাই মনে করি। হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

স্পর্শ এর ছবি

ক্ষ-র গানটা শুনেই অস্বস্তি বোধ করছিলাম। ঠিক এই কথাগুলোই মনে হচ্ছিলো যেন! আপনি না লিখলে, আমিই লিখে ফেলতাম। সিনেমা হলের মলিন পতাকার ব্যাপারেও ভেবেছি অনেকদিন। এ নিয়ে আপনি কিছু করলে, সাথে আছি। চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার কথা শুনে ভালো লাগছে। সবার যখন নেতিবাচক মন্তব্য দেখছিলাম, বেশ মনমরা হয়ে গেছিলাম। হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সীমানা এর ছবি

অনেকেই বলছেন এটা রবীন্দ্র সংগীত, তাই যে কেউ ইচ্ছে করলে যে কোন ভাবে গাইতে পারেন। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে ক্ষ ব্যান্ড কিন্তু রবীন্দ্রনাথের "আমার সোনার বাংলা" গানটি পুরো গায়নি। তারা আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃত সেই "দশ" লাইনই গেয়েছে। এবং সেটা উল্টে পাল্টে। কিছু কিছু ব্যাপার আছে যেগুলো নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট না করাই ভাল। বাঙ্গালির অতি আবেগের এসব জায়গায় হাত দেওয়া ঠিক হব না। আজকে ক্ষ ব্যান্ড এভাবে গাইল, পড়শু ৎ, তার পরে ঞ, চ, ছ ব্যান্ড হয়ত রিমিক্স করবে, শেষ থেকে জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করবে অতি আবেগ দিয়ে। সেটা বোধহয় ঠিক হবে না। আমার কাছে আমাদের পুরনো, আদি, অকৃত্রিম জাতীয় সংগীতই ভাল, অনেক আবেগের, অনেক ভালবাসার, নতুন করে গাইবার কোন প্রয়োজন দেখি না।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ সীমানা। খুব সুন্দর বলেছেন। অল্প কথায় গুছিয়ে অনেককিছু। হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

লেখাটি ভালো লেগেছে। হাসি

একদা আমিও একটু লিখেছিলাম- মাননীয় মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত- দয়াকরে জাতীয় সঙ্গীতকে সন্মান করতে শিখুন

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়। সুরঞ্জিত পকেটে হাত দিয়েছিলেন সেদিন, তবে মনে হয় এরপর মাথায়ও হাত ছিল তার দীর্ঘসময়! হাসি সে ইতিহাস আপনি জানেন।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অরফিয়াস এর ছবি

হাজারো রবীন্দ্রসংগীত আর একটি দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত সুনির্দিষ্ট একটি রবীন্দ্রসংগীত, এদুটো বিষয়ের মাঝে পার্থক্য যাদের চোখে পড়েনা তাদের কিছু বলতে চাইনা।

আমি সংগীতজ্ঞ নই, তবে একদা গান শেখা এবং গাওয়ার কিঞ্চিত অভিজ্ঞতা আছে, "ক্ষ"-র পরিবেশনায় আমার ব্যক্তিগত ভাবে চরম আপত্তি আছে। একগাদা আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গ থাকলেই যে একটি গান শ্রুতিমধুর হয়না দেশের অধুনা সংগীত শিল্পীদের এটা বোঝার বয়স হয়েছে বলেই মনে করি।

সব কিছু বদলানো যায়না, এটা বোঝা উচিত। ইচ্ছে করলেই যেমন একটি দেশের পতাকার আধুনিকায়ন করা যায়না, বদলানো যায়না, যেমন খুশি তেমন ভাবে তার ব্যবহার করা যায় না, তেমনি একটি দেশের জাতীয় সংগীতকেও ইচ্ছেমত আধুনিকায়ন কিংবা ব্যবহার করা যায় না। তাহলে আর এত নিয়ম করে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কোন প্রয়োজন থাকতো না। জাতীয় পতাকা এবং সংগীত একটি স্বাধীন দেশ এবং জাতির পরিচায়ক, হঠাৎ আবেগে ভাসিয়ে দেয়ার বস্তু এদুটোর কোনটাই নয়।একটি জাতীয় সংগীত পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করতে হয়, রক্ত ঝড়াতে হয় তার মূল্য আর সকল সংগীতের সাথে একই মানদন্ডে পরিমাপ করা অন্যায়। আর সকল সংগীতকে আধুনিকায়ন প্রচেষ্টায় কিছু বলার না থাকলেও জাতীয় সংগীত এর এই ধরনের পরিবেশনায় আমার তীব্র আপত্তি আছে। সম্পূর্ণ প্রচেষ্টাটি ইনস্ট্রুমেন্টাল হলেও কথা ছিল কিন্তু হুট করে মাঝখান থেকে শুরু করে পরিবেশন করার যে ধরণ এটা আর যাই হোক এই ক্ষেত্রে মানতে পারলাম না।

জাতীয় সংগীত গাওয়ার একটি রীতি আছে, সম্মান করার একটি ঐতিহ্য আছে, সেটা কম বেশি একই ভাবে সব স্বাধীন দেশেই দেখা যায়। আমাদের দেশে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করার রীতি প্রচলিত। কোন অনুষ্ঠানে, কিংবা কোন জায়গায় অথবা সমবেত ভাবে কোন জায়গায় যখন এর পরিবেশন করা হয় দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন কর্তব্য। একজন নাগরিক ব্যক্তিগত ভাবে জাতীয় সংগীত নিজের মতো করে গাইতে পারেন কিন্তু অনুষ্ঠানে কিংবা কর্মকান্ড শুরুর প্রাক্কালে যখন গাওয়া হয় তখন আর ব্যাপরটি ব্যক্তিগত থাকেনা। তখন রীতি মেনেই গাওয়া উচিত।

একটি দেশের জাতীয় সংগীত কোন "ছেলের হাতের মোয়া" নয়, যাদের সময়ের সাথে এই সম্পর্কে ভাবাবেগের আধুনিকায়ন হয় তাদের- অফ যা

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

হাসি একদম মনের কথা। চলুক

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

"ক্ষ"-র পরিবেশনায় আমার ব্যক্তিগত ভাবে চরম আপত্তি আছে। একগাদা আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গ থাকলেই যে একটি গান শ্রুতিমধুর হয়না দেশের অধুনা সংগীত শিল্পীদের এটা বোঝার বয়স হয়েছে বলেই মনে করি।

ধরে নিলাম শ্রুতিমধুর না, কিন্তু কেউ শ্রুতিমধুর গান না গাইলে তাতে আপনার চরম আপত্তি থাকবে কেন? ইভা রাহমানের গানও তো জঘন্য, ইভা রাহমানের গান নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয় কিন্তু ইভা রাহমানের গান শ্রুতিমধুর না বলে 'চরম আপত্তি' থাকবে কেন? যুক্তির জায়গাটুকু ধরতে পারছি না!

একজন নাগরিক ব্যক্তিগত ভাবে জাতীয় সংগীত নিজের মতো করে গাইতে পারেন কিন্তু অনুষ্ঠানে কিংবা কর্মকান্ড শুরুর প্রাক্কালে যখন গাওয়া হয় তখন আর ব্যাপরটি ব্যক্তিগত থাকেনা। তখন রীতি মেনেই গাওয়া উচিত।

ঠিকাছে। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত ঠিকভাবে ঠিকসুরে গাওয়া উচিৎ কি না, এ ব্যপারে মনে হয় বিতর্ক নেই। এই পোস্টের বিতর্কটা বেশি হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে গাওয়া নিয়ে। 'ক্ষ' এর পরিবেশনায় আমি তো আনুষ্ঠানিকতার কিছু দেখলাম না, ঘরোয়া পরিবেশে গানটি গাওয়া হচ্ছে। গানের মানগত বা গুণগত বিশ্লেষণে যাবার মত জ্ঞান নেই, তবে ধরেও যদি নেই জঘন্য গেয়েছে, সেখানে 'তীব্র আপত্তি'র জায়গাটা বুঝতে পারলাম না।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

"ক্ষ"-র পরিবেশনায় আমার ব্যক্তিগত ভাবে চরম আপত্তি আছে।

যদি বেসুরো সংগীত চর্চা কারো ব্যক্তিগত অধিকার হয় তাহলে তার সম্পর্কে আপত্তি থাকাটা কি আমার ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে পড়েনা? প্রশ্ন আসতে পারে এই আপত্তির কারণে আমি কি কোন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি কিনা। আমার প্রতিক্রিয়াতে আমি অন্য যারা সাধুবাদ জানিয়ে সেটিকে প্রচারমাধ্যমে তুলে দিচ্ছেন আমি সেটি করছিনা। যদি সাধুবাদ জানিয়ে প্রচার করাটা অধিকারের পর্যায়ে পড়ে তাহলে আপত্তি জানিয়ে প্রচার না করাটাও আমি আমার অধিকার মনে করি।

এবার প্রশ্ন আসে যে সংগীতটির পরিবেশনায় কি কোন অবমূল্যায়ন হয়েছে কিনা। আমি মনে করি, "ক্ষ" অবশ্যই সেই মানসিকতা নিয়ে কাজটি করেনি কিন্তু তাই বলে যেহেতু এটি আমাদের জাতীয় সংগীত তাই এর আধুনিকায়ন করার যে প্রচেষ্টা কিংবা যে গায়কি সেটা আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমর্থনযোগ্য নয়।

ধরে নিলাম শ্রুতিমধুর না, কিন্তু কেউ শ্রুতিমধুর গান না গাইলে তাতে আপনার চরম আপত্তি থাকবে কেন?

নাহ শ্রুতিমধুর নয় তাতেই আপত্তি এরকম কিছু নয়, দেখুন লিখেছি- ""ক্ষ"-র পরিবেশনায় আমার ব্যক্তিগত ভাবে চরম আপত্তি আছে।" সেটি শুধুমাত্র সুরের জন্য নয়, আবেগের অভাব, তাদের যন্ত্রানুসঙ্গ এবং মাঝখান থেকে গানটি শুরু করা সবগুলো ঘিরেই। গান গাইতে না পারা কোন দোষের কিছুনা। কিন্তু যখন আপনি এরকম কোন কিছু নিয়ে কাজ করছেন যেটা যথেষ্ট গুরুতপূর্ণ তখন দায়িত্ববোধ বলে একটা ব্যাপার থাকে, সেদিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরি মনে করি।

ইভা রাহমানের গান নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয় কিন্তু ইভা রাহমানের গান শ্রুতিমধুর না বলে 'চরম আপত্তি' থাকবে কেন? যুক্তির জায়গাটুকু ধরতে পারছি না!

ইভা রহমান রবীন্দ্রসংগীত গেয়েছেন, সেটা শ্রুতিমধুর হয়নি তাতে আমি কোন আপত্তি প্রদর্শন করবোনা, করিনি, এখন পর্যন্ত সমালোচনাও করিনি। কিন্তু এখানে কথা হচ্ছে একটি সুনির্দিষ্ট রবীন্দ্রসংগীতকে নিয়ে যা আমাদের দেশে জাতীয় সংগীত এর মর্যাদা পেয়েছে। এই দুটো প্রসঙ্গ আপাতদৃষ্টিতে এক মনে হলেও মানদন্ড আলাদা, এই কথা পূর্বের মন্তব্যে প্রথমেই বলেছি।

'ক্ষ' এর পরিবেশনায় আমি তো আনুষ্ঠানিকতার কিছু দেখলাম না, ঘরোয়া পরিবেশে গানটি গাওয়া হচ্ছে।

এবার আপনার কথাটা আমি বুঝলাম না !! 'ক্ষ' এর পরিবেশনায় আনুষ্ঠানিকতা দেখেননি ঠিক কিভাবে? যেখানে পেশাদার বাদক আছেন, উন্নত বাদ্যযন্ত্র আছে, আছেন গায়িকা, আছে নির্মান করা গানের চিত্রায়ন, খুঁটিনাটি সব, সেখানে সেটি আপনার কাছে ঘরোয়া মনে হচ্ছে ?!! ঘরোয়া পরিবেশে গানের চিত্রায়নের উদাহরণ প্রচারমাধ্যমগুলোতে অজস্র আছে, সেগুলোর সাথে যদি এর কোন পার্থক্য নাই থাকে তাহলে তো মনে হয় আমিই ভুল দেখলাম !!

গানের মানগত বা গুণগত বিশ্লেষণে যাবার মত জ্ঞান নেই, তবে ধরেও যদি নেই জঘন্য গেয়েছে, সেখানে 'তীব্র আপত্তি'র জায়গাটা বুঝতে পারলাম না।

কবি, জানিনা আপত্তির কারনগুলো পরিষ্কার করতে পারলাম কিনা, যদি প্রশ্ন থাকে জানতে আগ্রহী। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ঠিকাছে। আপত্তি থাকা মানে যদি 'ভাল লাগেনি' এটা বুঝিয়ে থাকেন তাহলে কোন সমস্যা নেই আমার। আপনার মন্তব্যের টোনে আমার (নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশান) মনে হয়েছিল, এরকম গান গাইতে 'অ্যালাউ' করার ব্যপারে আপনার তীব্র আপত্তি আছে।

আমি 'ক্ষ' এর প্রচেষ্টাকে জাতীয় সঙ্গীতের আধুনিকায়নের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছি না। জাস্ট তাদের নিজেদের একটি ভার্সন হিসাবে দেখছি, আমি নিজে গাইলে সেটাও একটা ভিন্ন ভার্সন হয়ে যেতে পারে। অফিসিয়াল যে ভার্সন থাকবে যেটা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজানো হবে সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ ঠিক করবেন, এ ব্যপারে বোধহয় কারোই আপত্তি নেই (এতদূর লেখা আর কমেন্ট পড়ে যা মনে হল আরকি)।

'ক্ষ' এর পরিবেশনায় আনুষ্ঠানিকতা দেখিনি - যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলেছি সেটা একটু ব্যাখ্যা করি। ধরুণ স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত যখন গাওয়া হবে বা বাজানো হবে সেটা আমার মতে মূল সুর (official version determined by যথাযথ কর্তৃপক্ষ) অনুসরণ করে হতে হবে, বা কোন উৎসবে, কোন অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত বাঁজানো হলে বা বাঁজাতে হলে আমি মূল, অবিকৃত গানটাই শুনতে চাইব। 'ক্ষ' এর ঘরোয়া পরিবেশ বলতে বোঝাতে চেয়েছি, 'unofficial' পরিবেশ, এটা তাদের নিজস্ব পরিবেশনা, আমার বা আপনার ভাল না লাগার সুযোগ আছে, কিন্তু তারা ভুল সুরে গাইছে বলে 'গান গাইতে পারবে বা পারবে না' এই পয়েন্টে আপত্তির সুযোগ নেই বলেই মনে করি।

আর প্রচার করবেন কি করবেন না সেই অধিকার তো অবশ্যই আপনার। কিন্তু এখানে কেউ কেউ বলছেন যে প্রচার করা উচিৎ হবে কি হবে না, সেই ডিসিশান দিতে যাওয়াটা আমার বাড়াবাড়ি লেগেছে।

আর কিছু বলার নেই। ভাল থাকুন, পরিশ্রমী কোন লেখা আসুক হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

আসলে কাউকে গান গাইতে না করা তো সেই ব্যক্তির ব্যক্তি অধিকার লঙ্ঘন একইসাথে আমার অনধিকার চর্চা হবে। আমি খুব বেশি হলে আপত্তি জানাতে পারি, তাকে বলতে পারি আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে কাজটি করা উচিত হয়নি, তাকে পরামর্শ দিতে পারি, কিন্তু তাকে না গাইতে বাধ্য করতে পারিনা। তবে যদি তাতে রাষ্ট্রের নির্ধারিত আইন ভঙ্গ হয় তাহলে আমি বাধা দিতে পারি। যেহেতু এখনও আমাদের দেশে কোন সুনির্দিষ্ট আইন নেই এই ব্যাপারে, তাই এই বাধা প্রদানের ক্ষমতাও আমার সীমিত কিংবা নেই।

একটা খুব পুরনো নয় এরকম একটি উদাহরণ দেই, কয়েকমাস আগে ভারতে মুক্তি পাওয়া "সাংহাই" চলচ্চিত্রটিতে একটি গান ছিলো, "ভারত মাতা কি জয়, বলো জয়" এই গানটাতে স্তুতিমূলক বাক্য দিয়ে শুরু করলেও পরে ভারতের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছিল, এই গানে "ভারত মাতা" এই শব্দটি ব্যবহারে আপত্তি জানায় বেশ কিছু রাজনৈতিক দল, মামলা হয় এমনকি সেন্সর বোর্ডে আটকে যায় ছবি মুক্তির দিন।

ঠিক একই রকম প্রতিবাদ হয়েছিল এর আগে মুক্তি পাওয়া [ছবির নামটি মনে পড়ছেনা, মিডিয়ার ইয়েলো জার্নালিজম এর উপরে কাহিনী ছিল] অমিতাভ বচ্চন এবং রীতেশ দেশমুখ অভিনীত একটি চলচ্চিত্রের টাইটেল সং নিয়েও।

তো এই দুটি ক্ষেত্রে কোনটিতেই কিন্তু ভারতের জাতীয় সংগীত "জন গণ মন" ব্যবহার করা হয়নি, তারপরেও প্রতিবাদ হয়েছে কারণ প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য ছিল যে, ভারত দেশের নাম এবং মায়ের সমান তাই এর ব্যবহারে যদি কোন আপত্তিকর কিছু থাকে তাহলে সেটা প্রতিবাদযোগ্য। যদিও দুই ক্ষেত্রেই কোর্ট অভিযোগ নাকচ করে দেয়, তবুও প্রতিবাদ কিন্তু হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের দেশে কিন্তু এরকম কিছুই হয়নি, হবেও না। এতোটা কট্টর প্রতিক্রিয়া এখনও আমরা কেউই প্রদর্শন করিনি। কিন্তু আপত্তি উঠবে, কারণ আপত্তি উঠার মতো ব্যাপার তাই। ব্যক্তি মতামত এর ভিত্তিতে মোটাদাগে যদি পক্ষে বিভক্ত করা যায়, তাহলে দুটো পক্ষ পাবেন, একদল প্রচেষ্টার সমর্থন করবে আরেক দল বিরোধিতা করবে। কিন্তু সমর্থনের যদি যথেষ্ট কারণ থাকে তাহলে বিরোধিতারও যথেষ্ট কারণ আছে বৈকি। শুধু তাই না, যদি হাইপথেটিক্যাল সিনারিও কল্পনা করি, এই ধরনের প্রচেষ্টা কি পরবর্তিতে অন্যদের আরো বেশি কিছু উস্কানিমূলক কাজে আগ্রহী করবে কি করবে না এই আশংকা আমি উড়িয়ে দিবনা।

হয়তো অপ্রাসঙ্গিক তবুও একটা ঘটনার উল্লেখ করি- আগের জামাত-বিএনপি সরকারের সময় এক সভায় তাদের মন্ত্রী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আস্ফালন করেছিলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করা দরকার, এই দেশের জাতীয় সংগীত একজন হিন্দুর লেখা হবে কেন?

এটি একটি এক্সট্রিম ঘটনা। কিন্তু দেখুন জাতীয় সংগীতের পরিবর্তন করা প্রয়োজন এই মানসিকতা ঠিক কোন দিকে এগোবে সেটা আমি কিংবা আপনি ঠিক করে দিতে পারবনা। তাই আমার মতে এর পরিবর্তন করা দরকার এই মানসিকতাটি বা এর আধুনিকায়ন কিংবা শুধুই গান হিসেবে গাওয়া এই প্রচেষ্টাগুলো আপত্তিকর।

ধন্যবাদ আপনাকেও। ভালো থাকুন আর কবিতায় ফাঁকি হচ্ছে কিন্তু, কবি। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

এই মন্তব্যে চলুক চলুক চলুক

মন মাঝি এর ছবি

চলুক চমৎকার লেখা। তবে জাতীয় সঙ্গীতের অফিশিয়াল, এপ্রুভড ভার্শান নিয়েও কিন্তু খানিকটা বিতর্ক আছে বলে মনে হয়। জাতীয় সঙ্গীতের জাতীয় সঙ্গীত হয়ে উঠার প্রক্রিয়া ও অন্যান্য কিছু আমার অজানা দিক নিয়ে দারুন একটা নিবন্ধ এখানে পেলাম! এই পোস্টটা না আসলে এর সূত্র ধরে এসব জানাই হত না। সেজন্যেও লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ।

যাহোক, একটা প্রশ্ন হঠাৎ মাথায় আসল। আচ্ছা, কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত না থাকলে কি হয়? না হলে হয় না? আমাদের কোন জাতীয় সঙ্গীত না থাকলে কেমন হত? হাসি

****************************************

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

অফিশিয়াল ভার্শন করা প্রয়োজন। ঐ যে বলছিলাম, যেটা শুনলে হাত-পা কাঁপবে, শরীর শিরশির করবে, চোখে পানি আসবে আপনা থেকেই!
জাতীয় সঙ্গীত না থাকলে হবে না। এটা অনেকটা পিতৃপরিচয়ের মতোই। না থাকলে সম্মানহীন জীবন।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

খন্দকার আলমগীর হোসেন এর ছবি

জাতীয় সংগীতকে অবমাননার কোন পরিস্হিতিকে অবশ্যই "না।"

সিনেমা হলে একটা ধুম ধারাক্কা ছবির আগে কি পরে জাতীয় সংগীত কি খুব কি জরুরী? হিন্দি ছবিও আসছে শুনি। সেটাতেও কি জাতীয় সংগীত বাজবে?

পাশ্চাত্যে সিনেমা হলে আমার অভিজ্ঞতায় জাতীয় সংগীত নেই, নেই অবমাননার সুযোগও।

____________________________________________________________________
ইতিহাস পড়ি না, জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশকে প্রতিদিন যেভাবে দেখেছি, সেটাই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমারও আসলে মনে হয় না ছবির আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের খুব দরকার আছে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

তারেক অণু এর ছবি

আমারও আসলে মনে হয় না ছবির আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের খুব দরকার আছে।

আর্য এর ছবি

ভালবাসার জিনিসকে ভালবাসার জিনিস রাখাই বোধহয় ভাল। যখনই কোন ভালবাসার জিনিসের ওপর বিধি নিষেধ, এভাবে কোর না, ওভাবে কোর না, এভাবে না করলে থাপ্পড় খাবে কিন্তু, ওভাবে না বাজালে কানে ধরে দাড় করিয়ে দেব, ইত্যাদি চলে আসে তখনই সেটা ভালবাসার জিনিস থেকে দূরে চলে যেতে শুরু করে। হয়ে পড়ে নিতান্তই হোমওয়ার্কের মত।

আমাদের জাতীয় সংগীতের অতি অবশ্যি দাপ্তরিক রূপ থাকতে হবে, সেই রূপ অনুসরন করে সকল অফিসিয়াল স্থানে সেটা বাজাতেও হবে, কিন্তু তাই বলে আমার জাতীয় সংগীত আমি একটু অন্য যন্ত্র দিয়ে, কিংবা আমার ফ্যাকাসে চামড়ার বন্ধুদের দিয়ে বাজাতে পারবো না, বাজালেই জাতীয়-নিরাপত্তা-রক্ষীরা এসে আমাকে মার দিয়ে দেবে; এটা একটু বেশী বেশী হয়ে গেল। এই বেশী বেশী হয়ে গেলেই কোন একটা জিনিস মানুষের ভালবাসার স্থান থেকে বের হয়ে শুধুই একটা দ্বায়িত্বের স্থানে পরিনত হয়। আমরা কি চাই আমাদের এই অসাধারন জাতীয় সংগীত শুধুমাত্র দ্বায়িত্ব হয়ে থাকুক? আমাদের নতুন প্রজন্ম এটাকে চিনুক শুধুই পিটি প্যারেড, আর কুচকাওয়াজে গাওয়ার একটা অদ্ভুত গান হিসেবে? আমি কিন্তু চাই না। আমি নিজে প্রচুর রবীন্দ্র সংগীত শুনি, কিন্তু আমার আসেপাসের আমার চে ৪-৫ বছরের ছোট কাউকেই কখনো শুনি নি শুনতে। তারাও অন্তত ক্ষ-র কারনে আমাদের জাতীয় সংগীতটি একবার হলেও শুনছে। তাদের কেউ কেউ হয়ত সেখান থেকে আরেকটু এগিয়ে জহির রায়হানের ভার্সনটিও শুনছে। এইযে কেউ কেউ আরেকটু এগুচ্ছে, এটাই আমি মনে করি ক্ষ-র সার্থকতা।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার কথা কিছুটা সত্যি। ক্ষীয়র সুবাদে নতুনরা অনেকেই জাতীয় সঙ্গীত শুনছে। এটা আমাদেরই লজ্জা। কেন এমন হবে? এই গান তো আমাদের ঠোঁটস্থ থাকার কথা ছিল! তবে তাতে ক্ষীয়র প্রচেষ্টা জায়েজ হয়ে যায় এমন নয়।
ভালোবাসার জিনিস ভালোবাসারই থাকুক। আমিও আপনার কথাই বলছি। ভুল বুঝবেন না। বলছি সেই ভালোবাসাটা যেন নিয়ন্ত্রণহীন না হয়ে যায়। জবরদস্তির বিষয় এটা নয়, তবে সম্ভ্রমের বিষয় তো বটেই।
আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত দুজন সাদা বসে বসে বাজিয়েছেন, এই নিয়ে আমি দুর্বল একটা প্রতিবাদ জানিয়েছি বলে অনেকেই আমার ওপর খড়্গহস্ত। আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে আমরা এরকম একটা পরীক্ষানিরীক্ষা করলে দেখবেন ওরা আমাদের মতো অনলাইনে ব্লগ লিখে সময় নষ্ট করবে না, একবারে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে যাবে! হাসি

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

মন মাঝি এর ছবি

আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে আমরা এরকম একটা পরীক্ষানিরীক্ষা করলে দেখবেন ওরা আমাদের মতো অনলাইনে ব্লগ লিখে সময় নষ্ট করবে না, একবারে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে যাবে!

এইটা ভুল বললেন। আসলে কিছুই করবে না!

****************************************

সালাহউদ্দীন এর ছবি

ক্ষ-র গায়কের গায়কী , সুর, উচ্চারণ ভালো লেগেছে। পরিবেশনায় তারা ইচ্ছা করে অবমাননা করেছে বলেও মনে হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা শুনে ভালো লেগেছে। এত নিয়ম কানুন করে শ্রদ্ধা ভালোবাসা হয় না।

অবনীল এর ছবি

- জাতীয় সঙ্গীত বিজাতীয়ভাবে গাওয়া কি আমাদের নাগরিক অধিকার? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো হ্যা অবশই অধিকার। আমি কিভাবে আমার জাতীয় পরিচিতি কে উপলব্ধি করি সেটা প্রকাশের অধিকার অবশ্যি আমার আছে। তার জন্য আমি জাতীয় সংগীতকে ব্যবহার উপযুক্ত মনে করলে অবশ্যি করবো। নচিকেতার সারে জাহাসে আচ্ছা, হেন্ড্রিক্সের স্টার স্প্যাংগ্লড ব্যনার এসব সংগীত সেই সাক্ষ্যই বহন করে যে জাতীয় সংগীতের এরূপ ব্যবহারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ করা যায়।
- জাতীয় সঙ্গীত বিজাতীয়ভাবে গাওয়া কি আমাদের দাপ্তরিক অধিকার? না, কারন দাপ্তরিক ভাবে একটা নির্দিষ্ট কোড অফ কন্ডাক্ট মেনে আমাদেরকে উপস্থান করতে হবে, কারন জাতীয় সংগীত যদি আমারদের জাতীয় চেতনার পরিচায়ক হয়ে থাকে তাহলে সেটা সার্বজনিনভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে উপস্থাপিত হচ্ছে কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ন।
- ক্ষ কি জাতীয় সংগীত অবমাননা করেছে? আমার মনে হয় না, কারন তাদের পরিবেশনার কোন অংশে এটাকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগিত হিসেবে পরিচয় দেবার চেষ্টা করা হয়নি, বরং রবীন্দ্রসংগীত হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। অধিকন্তু এটা সেই নাগরিক অধিকারের পর্যায়ই পরে যায়।

ধন্যবাদ।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

হিমু এর ছবি

আচ্ছা, এখন কি স্কুলে বাচ্চারা অ্যাসেম্বলিতে জাতীয় সঙ্গীত গায় না?

আমি ক্ষ-এর গাওয়া গানটা দেখেছি, আমার কাছে শুনতে খারাপ লাগেনি। বিভিন্ন দেশের জাতীয় সঙ্গীত যখন সরাসরি বাজানো হয়, বাদনশিল্পীদের বসেই বাজাতে দেখেছি বলে মনে পড়ছে। ক্লাসিকাল গিটার বা চেলো দাঁড়িয়েও বাজানো যায়, তবে বসে বাজানো সহজ। আর পিয়ানো যদি ব্যবহার করা হয়, দাঁড়িয়ে বাজানো রীতিমতো মুশকিল হতে পারে। ক্ষ ব্যান্ডের সদস্যরাও মনে হয় অবাঙালি, নাকি?

ক্ষ-র কারণে যারা অনেকদিন পর জাতীয় সঙ্গীত শুনছেন, তাদের জন্য কেন যেন মায়া লাগছে। আশা করি বাচ্চাদের স্কুলে কেন প্রতিদিন অ্যাসেম্বলিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে না, তা নিয়ে শিগগীরই জোর কথাবার্তা হবে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ক্ষ-র কারণে যারা অনেকদিন পর জাতীয় সঙ্গীত শুনছেন, তাদের জন্য কেন যেন মায়া লাগছে।

জাতীয় সঙ্গীত তো আসলে শোনার জিনিস না, বরং হৃদয়ে পুষে রাখার একটা বিষয়। সন্দেহ আছে শতকরা কতজন বাঙ্গালী সঠিকভাবে জাতীয় সঙ্গীতের লিরিক জানে। তবে সব স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করা উচিত। এটা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেতে পারে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

হিমু এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীত শোনার জিনিস না, এটা পড়েও আমোদ পেলাম।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

লেখার ভুল হয়েছে। আসলে লেখা উচিত ছিলো 'শুধু শোনার জিনিস না, বরং হৃদয়ে পুষে রাখার একটা বিষয়'- তাইলে মনে হয় আর আমোদ পেতেন না। যাইহোক, আমি আপনার শেষ শব্দটার সাথে সম্পূর্ণ একমত। যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্কুলগুলোর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, তারাই সদিচ্ছা থাকলে বিষয়টা বাধ্যতামূলক করতে পারে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

savage_mountain এর ছবি

ক্ষ এর গাওয়া গান ভালো লেগে যেতেই পারে। এ আর রহমান চাইলে এই গানে আরো বেশি হৃদয় ছুয়ে যাওয়া সুরারোপ করতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ের সেই ধরনের কার্যক্রম কে উত্সাহিত করব কিনা? আমি মনে করি, করা ঠিক হবে না। দেশের জনগনের বিশাল একটা অংশ যদি মনে করে বর্তমান version টা বদলানো দরকার তখন এই ধরনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু aesthetics এর পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যে কেউ যখন খুশি করতে গেলে ভুল বুঝা বুঝি হবে।

ক্ষ এর গাওয়া গানে বাদ্য শিল্পী দের বসে থাকা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। তবে বাদ্য শিল্পীদের বসে থাকার দৃশ্যগুলো একটু ভিন্ন ভাবে দৃশ্যায়ন করলে "বসে থাকাটা" চোখে লাগতনা।

হিমু এর ছবি

আমার ধারণা বাংলাদেশে খুব মানুষই নোটেশন ফলো করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারবে। যারা পারেন, তারা গাইবেন, বাকিরা না গেয়ে শুনবেন বা রেকর্ড ছেড়ে বাজাবেন, এরকম প্রস্তাবও আমার কাছে ভালো লাগছে না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের শপথ পড়ানোর পর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার দৃশ্য দেখেছিলাম। এসথেটিক্সের পয়েন্ট অব ভিউ জিনিসটা কেমন আমি ঠিক জানি না, কিন্তু সেখানে মূলসুর থেকে ক্ষ-এর চেয়েও বহু দূরে গিয়ে গেয়েছেন তারা। কিন্তু তাতে কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। ক্ষ-এর ভিডিও দেখে বা গান শুনে যদি কেউ জাতীয় সঙ্গীতকে লঘুভাবে নেয়, সেটার দায় তো ক্ষ-এর না, মানুষের পরিবার ও শিক্ষায়তনের।

savage_mountain এর ছবি

নিজেদের যেকোনো আসরে গাওয়ার সময় উনিশ-বিশ এমনকি পনের-বিশ-পচিশ হলেও ঠিক আছে। কিন্তু আমার আপত্তি হলো সেই "পনের-বিশ-পচিশ" টাকে বিভিন্ন মাধ্যমে (বর্তমানে ইউ টিউব ও ফেইসবুক মাধ্যম হিসেবে সবচেয়ে শক্তিশালী) প্রচার/share করা। এভাবে যদি আমাদের জাতীয় সংগীত এর একাধিক ভার্সান অন্তর্জালে পাওয়া যায়, একজন ভিনদেশী মানুষ কোনো প্রয়োজনে আমাদের জাতীয় সংগীত খোজ করলে ভুল ভার্সান টাকে গ্রহণ করতে পারেন।

"১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের শপথ পড়ানোর পর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার দৃশ্য দেখেছিলাম। "

আমাদের জাতীয় সংগীতের স্বরলিপি তো ১৯৭২ (http://www.nationalanthems.me/bangladesh-amar-shonar-bangla/) সালে ঠিক করা হয়। কাজেই ১৯৭১ সালে গাওয়া ভার্সান টা নিয়ে তর্কের অবকাশ নেই।

হিমু এর ছবি

আপনি শেয়ার না করলেই কিন্তু কাজ হয়ে যায়। আমি ক্ষ-এর ভিডিওটা দেখেছি, কিন্তু শেয়ার করিনি। এখন আমি শেয়ার করতে চাই না বলে কি ক্ষ তার নিজের ফেসবুকে কনটেন্ট তোলা বন্ধ করে রাখবে? কতজনই তো কতকিছু গেয়ে আপ করে দিচ্ছে। গ্রহণ বা বর্জনের দায়িত্বটা আমাদের।

একজন ভিনদেশী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের খোঁজ সঠিকভাবে করলে সে ইউটিউবে না খুঁজে স্টাফ নোটেশনই খুঁজবে। কাতারে এশিয়ান শুটিং প্রতিযোগিতায় কাজাখস্তানের শুটার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কাতারি কর্তৃপক্ষ বোরাট সিনেমায় কাজাখস্তানের স্পুফ জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে দিয়েছিলো। ঐরকম বলদ বিদেশীদের কথা মাথায় রেখে যদি আমাদের কাজ করতে হয়, তাহলে তো মুশকিল।

মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭২ সালের পর আর জাতীয় সঙ্গীত গান না, এমনটাই কেন ভাবছেন?

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি


গ্রহণ বা বর্জনের দায়িত্বটা আমাদের।

চলুক

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

চলুক

savage_mountain এর ছবি

দুঃক্ষিত। আমি বোঝানোতে ভুল করেছি। প্রচার/share বলতে আমাদের প্রচার/share করা নয়। ক্ষ নামের ব্যান্ড গ্রুপ টি তাদের গাওয়া গান নিয়ে মিউসিক ভিডিও বানিয়েছে। তার মানে তারা তাদের এই মিউসিক ভিডিও তা প্রচার ও করতে চেয়েছে। আমি ওই টা বুঝিয়েছি। অবশ্য ক্ষ এর সদস্যদের যদি এই ভিডিও প্রচারের উদ্দেশ্য না থাকে, এবং কেউ তাদের ভিডিও চুরি করে তাদের অগোচরে ইউটিউব এ আপলোড করে থাকে তাইলে অন্য কথা।

কাতারের ঘটনাটা জানা ছিলনা। তবে আমি যেটা বলেছি, এই ঘটনা কিন্তু তার একটা ভালো উদাহরণ। স্টাফ নোটেশান কী জিনিস আগে জানতাম না। আপনার কাছেই জানলাম। এবং আমার মনে হয় বেশির ভাগ সাধারণ মানুষই জানেনা। তাদের জন্য ইউটিউব (ও ঐধরনের ওয়েবসাইট) ই ভরসা। আপনিই কিন্তু দেশের মানুষদের নিয়ে বলেছেন :
"আমার ধারণা বাংলাদেশে খুব মানুষই নোটেশন ফলো করে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারবে। যারা পারেন, তারা গাইবেন, বাকিরা না গেয়ে শুনবেন বা রেকর্ড ছেড়ে বাজাবেন, এরকম প্রস্তাবও আমার কাছে ভালো লাগছে না।"
আমিও তাই চাই। আমরা সবাই একটা উত্সকেই অনুসরণ করি এই ব্যাপারে।অনুসরণ করতে গিয়ে উনিশ-বিশ হোক, কিন্তু সেই উনিশ-বিশ কে যেন কেউ ভুল বসত অনুসরণ না করে সেটাও খেয়াল রাখি।
কাতারের ওই সব দায়ত্ব প্রাপ্ত লোকগুলো আসলেই বলদ। কিন্তু সাধারণ বিদেশীদের কাছে আমাদের দেশকে নির্ভুল ও সহজলভ্য ভাবে তুলে ধরাটাও আমাদের দায়িত্ব বৈকি।

আপনি ১৯৭১ সালের জাতীয় সংগীত গাওয়ার দৃশ্য দেখেছেন বলেই, ১৯৭১ এর কথা বলেছি। ১৯৭২ এ জাতীয় সংগীত এর স্বরলিপি নির্ধারিত হওয়ার পরে যদি আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা জাতীয় সংগীত গেয়ে থাকেন, তাহলে রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত ভার্সান টা গাওয়া উচিত বলেই মনে করি। এবং সেটা "রাষ্ট্র" বলে দিয়েছে দেখে শিরোধার্য সেই কারণে নয়, বরং রাষ্ট্রের সেই নির্ধারিত ভার্সান টা সবাই অনুসরণ করে, সেই কারণে।

হিমু এর ছবি

ক্ষ যে প্রচার করতে চেয়েছে, তা তো বোধগম্যই। কিন্তু তাদের প্রচারকাজটা কিন্তু আপনার-আমার ওপরও নির্ভরশীল। আমরা যদি সেই কাজে সাড়া না দিই, তাহলেই তো হয়।

আপনি যে জাতীয় সঙ্গীতের একটা প্রমিতরূপের চর্চা বা প্রসার চাইছেন, তাতে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু জাতীয় পতাকার ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটা যতোটা সহজে প্রমিতকরণ করা যায় (নির্দিষ্ট রঙের কাপড় আর পতাকার নকশার সরবরাহ সুলভ রেখে), জাতীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে সেটা একটু কঠিন, কারণ সকলে গান গাইতে পারে না। আর জাতীয় সঙ্গীতের প্রমিত সুরটি, আপনি জানেন কি না জানি না, এককালে প্রতিদিন বিটিভির অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে বাজানো হতো। এখনও বাজানো হয় কি না জানি না, সম্ভবত হয়। কেউ যদি জাতীয় সঙ্গীতের সঠিক সুর অনুসরণ করতে চায়, তার হাতের কাছে ক্ষ এর আগে সঠিক নির্দেশনা সুলভ।

আমি বলতে চাইছি, জাতীয় সঙ্গীতকে খুব কড়াকড়ির সাথে চর্চা করতে গেলে এর সাথে মানুষের সংযোগসূত্রটা ছিন্ন হবে। আমি জাতীয় সঙ্গীত গাইব, তাতে ভুল হলেও গাইব। অন্যের গাওয়া গান ছেড়ে দিয়ে কাঠের পুতুল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীতকে খুব কড়াকড়ির সাথে চর্চা করতে গেলে এর সাথে মানুষের সংযোগসূত্রটা ছিন্ন হবে। আমি জাতীয় সঙ্গীত গাইব, তাতে ভুল হলেও গাইব। অন্যের গাওয়া গান ছেড়ে দিয়ে কাঠের পুতুল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো না।

চলুক

খন্দকার আলমগীর হোসেন এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীতকে খুব কড়াকড়ির সাথে চর্চা করতে গেলে এর সাথে মানুষের সংযোগসূত্রটা ছিন্ন হবে। আমি জাতীয় সঙ্গীত গাইব, তাতে ভুল হলেও গাইব। অন্যের গাওয়া গান ছেড়ে দিয়ে কাঠের পুতুল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো না।

একমত

____________________________________________________________________
ইতিহাস পড়ি না, জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশকে প্রতিদিন যেভাবে দেখেছি, সেটাই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
সহমত। গান গাওয়ার অধিকার মানসিক মৌলিক অধিকার।

নির্ঝর অলয়

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

জাতীয় সঙ্গীতকে খুব কড়াকড়ির সাথে চর্চা করতে গেলে এর সাথে মানুষের সংযোগসূত্রটা ছিন্ন হবে। আমি জাতীয় সঙ্গীত গাইব, তাতে ভুল হলেও গাইব। অন্যের গাওয়া গান ছেড়ে দিয়ে কাঠের পুতুল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো না।

চলুক
ছোটতে স্কুলে যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হত, আমার গলায় সুর না থাকার কারনে অনেক সময় লজ্জায় গাইতাম না, চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতাম। কিন্তু কিছুটা বড় হয়ে যখন ঠিকমত বুঝতে পেরেছি, তখন থেকে আর গাইতে দ্বিধা করিনি, এটি তো আসলে প্রানের সঙ্গীত। আমার গলায় সুর বেঁকে যাবার জন্য অথবা ঠিকমত সুর না বসার জন্য আমি কেন গাইবনা আমার দেশের জাতীয় সঙ্গীত।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মন মাঝি এর ছবি

৭২-এ সরকার নির্ধারিত কথা, স্বরলিপি বা স্টাফ নোটেশানের সর্বত্রই খানিকটা বিকৃতির অভিযোগ আছে। অন্য মন্তব্যেও এর উল্লেখ আছে। মনে রাখা দরকার ৭২-এ এই গানের কপিরাইট হোল্ডার সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের সাক্সেসর বিশ্বভারতী ছিল। তাদের ভার্শানটাই আসলে মূল ও অথেন্টিক বা স্ট্যান্ডার্ড ভার্শান। আমার মনে হয় না তারা বাংলাদেশ সরকারকে এটা বিকৃত করার অনুমতি দিয়েছিল, বা সেটা করার অধিকার সরকারের আছে। সুতরাং এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, অর্থাৎ আমাদের অফিশিয়াল ভার্শানটাই যদি 'বিকৃত' হয় - তাহলে তো কারও বিরুদ্ধেই আর কোন বিকৃতির অভিযোগ আনা যায় না - কারন এটাকে স্ট্যন্ডার্ড ধরলে তখন রবীন্দ্রনাথের নিজেই বিকৃতিকারী হয়ে যান আর সেই সাথে তার নিয়োজিত অথরিটেটিভ বডি বিশ্বভারতী স্বীকৃত অথরিটেটিভ রূপটাও বিকৃত হয়ে যায়। কিছুই আর তখন মূল, অথেন্টিক, অথরিটেটিভ বা শিরোধার্য থাকে না। মোদ্দা কথায় যা বলতে চাচ্ছি তা হল - সবার আগে এটা একটা আর্টিস্টিক ক্রিয়েশন এবং ঐ আর্টিস্টের (এবং তার সাক্সেসরদের) ব্যক্তিক সম্পদ যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মেরও বহু আগে থেকে অস্তিত্ত্বশীল ও ক্রিয়াশীল। যদ্দুর বুঝি, তারা কিন্তু এটা সবাইকেই গাওয়ার জন্যই উম্মুক্ত করে দিয়েছেন এবং আমাদের অফিশিয়াল নিয়ম-কানুন/সুর/কথা/গায়নরীতি ইত্যাদি সেক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করেননি। তাদের অধিকারের কোন ভায়োলেশন হলে তারাই সে বিষয়ে আপত্তি জানানো বা কোন পদক্ষেপ নেয়ার অধিকারী। এটা নিয়ে আমাদের (বা কোন) রাষ্ট্র যা খুশি তাই করতে পারে না, সেই অধিকার তার নেই। বিকৃত না করে বড়জোর 'অফিশিয়াল অনুষ্ঠানাদির জন্য একটা অফিশিয়াল রূপ' নির্ধারণ করতে পারে হয়তো, কিন্তু তার বাইরে সেটা কে কিভাবে গাইবে তা নিয়ে আমার মনে হয় না রাষ্ট্রের কিছু বলার অধিকার আছে বা মাথা ঘামানোরও দরকার আছে। অনেকটা অফিশিয়াল অনুষ্ঠানে নির্ধারিত অফিশিয়াল পোশাকের মত। অফিস বা অফিশিয়াল অনুষ্ঠানের বাইরে আপনি স্যুট পরবেন না স্রেফ প্যান্ট-শার্ট বা পাজামা-পাঞ্জাবী পরবেন সে ব্যাপারে রাষ্ট্রের কিছু বলার নেই। আর্টিস্টিক ক্রিয়েশনকে রিজিড বুরোক্র্যাটিক বা আইনি কন্সট্রাকশনে রূপান্তরিত করার বা তার স্বাধীন সামাজিক-সাংস্কৃতিক এপ্রিসিয়েশন ও ইন্টারপ্রিটেশনে (প্রাসঙ্গিক মেধাস্বত্ব সাপেক্ষে) বাধা দেয়ার অধিকারও বোধহয় রাষ্ট্রের নেই। অন্তত সভ্য দেশে তা থাকা উচিত না। আরেকটা জিনিষ, ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা মনোভাব রাষ্ট্রের আশ্রয়ে সমষ্টির উপর চাপিয়ে দেয়া বা সেই চেষ্টা কিন্তু আসলে এক ধরণের ফ্যাসিবাদী লক্ষণ। এটা বর্জনীয়।

****************************************

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

savage_mountain এর ছবি

আপনাদের কেও কনভিন্স করতে পারতেসিনা। আবার একমত ও হতে পারতেসিনা। কি আর করা? মত পার্থক্য টা আপাতত থাকুক। হাসি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

গ্রহণ বা বর্জনের দায়িত্বটা আমাদের।

চলুক সেটাই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রংতুলি এর ছবি

ক্ষ-র কারণে যারা অনেকদিন পর জাতীয় সঙ্গীত শুনছেন, তাদের জন্য কেন যেন মায়া লাগছে।

'ক্ষ' এর কারণে আমি অনেকদিন পর জাতীয় সংগীত শুনলাম এবং নিজের জন্যেই মায়া লাগলো। যারা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছে তারা কেনো দাঁড়িয়ে না বাজিয়ে বসে বাজালো এমন প্রশ্ন মাথায় আসেনি, তবে যে মেয়েটি গানটি গেয়েছে সে বোধহয় দাঁড়িয়েই গেয়েছে। বেসুরে গাইলো, নাকি নিয়ম ভেঙ্গে গাই্লো সেটার চেয়ে গায়কী-র আবেদন বা আবেগটাই ছুঁয়ে গেল বেশী, হয়তো সেটা আমার জাতীয় সংগীত বলেই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

ক্ষ এর গানটি ভালো লাগেনি, কোথায় যেন কমতি ছিল, পরে মনে হল, আমি আসলে অভ্যস্ত নই আমার জাতীয় সংগীত এভাবে শুনতে এবং চিত্রায়ন দেখতে।

আমার জাতীয় সংগীত আমার কাছে অনেক আদরের, অনেক ভালবাসার।

ঈপ্সিত আর চম্পাকলি এর ছবি

জাতীয় সংগীতে জাতির অধিকার। শুধুমাত্র একজনের বেঁধে দেওয়া নিয়মে সকলে কাঠের পুতুলের মত দাঁড়িয়ে মুখ নাড়বে সেটাই কি কাম্য? তাহলে জাতীয় সংগীতের সাথে নাড়ির যোগ হবে কি করে? আমার ব্যাক্তিগত ভাবে ভারতবর্ষের জাতীয় সঙ্গীতের থেকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতটি বেশী ভালো লাগে যদিও দুটোই রবীন্দ্রনাথের রচনা। তার কারণ হল বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতটি শুনলে মনে হয় এ গান মাঠে , ঘাটে , নৌকা বাইতে বাইতে , চাষ করতে করতে , গৃহকর্ম করতে করতে , গাওয়া যায়। সবুজ ঘাসে মুখ ডুবিয়ে গাওয়া যায়। এগান শুধুমাত্র সৈন্য দলের জন্য রচিত হয়নি। ছাত্র , শিক্ষক , চাষী, মাঝি , মা , বোন সবার দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ পায় এই গানে। কাজেই সকলকে তাদের মত করে তাদের সকল কাজের মাঝে জাতীয় সংগীত গাইতে দেওয়াই শ্রেয়।

ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------

নিলয় নন্দী এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
দারুন বলেছেন। আমিও ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছিলাম।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

আনোয়ার এর ছবি

চলুক

নিলয় নন্দী এর ছবি

ঠিক এই কথাটাই বলতে চাইছিলাম।
যে গান আমাদের প্রাণের গহীনে বাজে তাকে কেন নিয়মের বেড়াজালে বাঁধতে যাব?

ক্ষ-য়ের গান আমি শুনেছি।
বুটজুতো ঠোকা বা বসে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মতো দু'একটা বিষয় সহনশীল মন নিয়ে মেনে নিলে এই গান তার অন্তর্নিহীত মাধুর্য নিয়ে ধরা পড়বে। আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে।
চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

গানটির আবহসঙ্গীত মন্দ হয়নি। তবে এ জাতীয় অশ্রাব্য বেসুরো গায়কী নিয়ে আলোচনার কোন প্রয়োজন নেই। সুরের সচ্চাই নেই এবং লাগানোর ধরণটিও বাংলা বাউল গানের মত না, উচ্চারণ ত্রুটিপূর্ণ। তবে এভাবে উল্টোপাল্টা গান গাওয়ার অধিকারও মানুষের আছে। আমার গায়কী ভালো লাগেনি, তাই প্রত্যাখ্যান করেছি। ওদিকে তুহীন ভাই কিন্তু "গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ" এর প্রাণটা ধরতে পেরেছেন। যেকোন বাংলা গান বাংলা প্রমিত বা মান উচ্চারণ অনুসরণ করেই গাইতে হবে, লোকগীতি গাইতে গেলে সেটাও আঞ্চলিকতার বিশুদ্ধতা রেখে গাইতে হবে। এসব না শিখে শ্রোতাদের সামনে গেয়ে লোক হাসানোর কোন মানে দেখি না। তবে কিনা আইন করে তো আর এসব বন্ধ করা যাবে না!

লেখকের বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতিসত্ত্বার প্রতি শ্রদ্ধাবোধকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

নির্ঝর অলয়

আনোয়ার এর ছবি

অশ্রাব্য বেসুরো গায়কী

এতোটাই খারাপ ছিলো কি?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সাথে একমত। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের বিকৃতি বর্জনীয়। তবে মন তো এক আজব চিড়িয়া। নীতিগত ভাবে এই "বিকৃতি"র বিরুদ্ধে হলেও আমার কাছে কিন্তু বেশ ভালো লেগেছে গান/পরিবেশনা। আমার মনের ভেতর প্রশ্ন জাগে যে, দেশের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করছে এমন একটা গানকে শুধু নীতির আক্ষরিক অনুবাদের কারণে সমালোচনা করি কীভাবে? এটা আমার ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্ব। এই সংগীত তো বেজে এসেছে বহু কাট-পিস চলচ্চিত্রের শুরুতে। এই পতাকা তো উড়েছে রাজাকারের গাড়িতে। সেই অবমাননা চুপ করে সয়েছি, আজকে স্রেফ দুই একটা বিট এদিক-ওদিক করার জন্য শিল্পীর সমালোচনা করবো? অন্যদিকে মনে হয় যে জাতীয় সংগীত তো এক এবং অদ্বিতীয়, এর সুরক্ষা প্রয়োজন।

মতামতের এই বিবর্তনের জন্য আমেরিকায় থাকা দায়ী হয়ে থাকতে পারে। এখানে প্রতিটি বড় অনুষ্ঠানের আগে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়, এবং প্রতিটিতেই শিল্পী নিজের মতো একটা রেন্ডিশন করেন। খেয়াল রাখা হয় যেন মূল সুর থেকে বড় কোনো ব্যত্যয় না ঘটে। এতে অনেকেই নিজের আবেগের স্বাক্ষর রাখতে পারেন নিজের পরিবেশনে। আমার কাছে ভালোই লাগে সেটা। একই কথা পতাকার রঙে তৈরি কাপড়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

তবে হ্যাঁ, একটা সময় আরও অনেক বেশি কঠোর এবং কট্টর ছিলো আমার অবস্থান।

ফাহিম হাসান এর ছবি
মৃত্যুময় ঈষৎ(অফলাইন) এর ছবি
হিমু এর ছবি

শ্রদ্ধেয় সাদি মহম্মদের সংজ্ঞামতে আরো কিছু দেশদ্রোহীর গাওয়া জাতীয় সঙ্গীত:

বাংলাদেশে বহু স্কুলে অ্যাসেম্বলি হয় না। হলেও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না, জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। ক্ষ-র ওপর ফালতু চোটপাট না করে শ্রদ্ধাভাজন মিতা হক, সাদি মহম্মদ ও খায়রুল আনাম শাকিল কি এ নিয়ে একটু সরব হবেন? রাজধানীর বাইরে তাদের চরণকমল ফেলতে বলছি না, ঢাকার স্কুলগুলো নিয়েই তারা একটু দেখবেন কি? তাঁদের সন্তানরা যে স্কুলে লেখাপড়া করছে, সেখানে কি শিশুরা ভোরে জাতীয় সঙ্গীত গায় (ঠিক বা ভুল সুরে)?

হাতি যেতে দেখেন না আর মশা দেখলে চটকানা মারেন।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

জ্ঞানী গুণী (গান বৈয়াকরণিক) মানুষের বোধ আবেগ বোধ হয় ভিন্ন, কারণ আমার মত মূর্খদের ঐ পরিবেশনায় গানটা দারুণ লেগেছিল। উনারা শত শত থ্রেট দিলেন, গলাচিপে ধরলেন কিন্তু গঠনমূলক বা টু দ্যা পয়েন্ট কোন সমালোচনা করলেন না! এই ধরণের মন্তব্যের কারণে তিনজন সম্মানিত শিল্পীকে ফেসবুকে গণধোলাই খাইতে দেখলাম, মনটা খারাপ হলো।

আমার জানামতে বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না।

হাতি যেতে দেখেন না আর মশা দেখলে চটকানা মারেন। চলুক

(গানটা মাঝখান থেকে শুরু করছে এইটা অবশ্য ভালো লাগে নাই!)


_____________________
Give Her Freedom!

মন মাঝি এর ছবি

- "এ কাজ যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হওয়া উচিত।"
- "এ গান বন্ধ করে দেওয়া উচিত।"
- এই কাজ দেশদ্রোহিতার সামিল।
- "যারা এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়া উচিত।"
- "মৌলবাদী গোষ্ঠীরও কাজ হতে পারে এটি।"
- "এদের এখনই প্রতিহত করা উচিত।"

-- এমন আরও কত কি! এদের কথা শুনলে মনে হয় বাংলাদেশে রবি বুড়োর নামে একটা 'রবীন্দ্র এসএস বাহিনি" বা "রবীন্দ্র ব্রাউনশার্ট বাহিনি" সত্যি সত্যি আছে। কিম্বা "জামায়াতে রবীন্দ্রনাথী"?

অন্তত এই ব্যাপারে পাগলা মাক্সুদভক্তদের কিছু কথা ('রবীন্দ্রসন্ত্রাসী') তখন একেবারে ফেলনা মনে হয় না, অন্যসময়ে তাদের নিয়ে যতই হাসিমশকরা করি না কেন। একটা গানের নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশনের জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে ফাঁসি দিয়ে দিতে হবে? বিদেশ থেকে বিদেশী নাগরিক ধরে এনে হলেও? রবীন্দ্রশিল্পী নামের এইসব গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল স্বঘোষিত ইজারাদার রবীন্দ্রবেনিয়াদের তার ছেঁড়া ফ্যাসিবাদী ছাগলামি কথাবার্তা শুনলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়, রবীন্দ্রনাথের সাবলাইম সৃষ্টিকর্মের এই জঘন্য পরিণতির কথা ভেবে দুঃখ হয়।
রবীন্দ্রনাথের অপমান যদি কেউ করে থাকে, সেটা 'ক্ষ' না, এই ছাগলগুলাই সেটা করছে!

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

আচ্ছা একটা কৌতূহল, শুনলাম এবং দেখলাম "ক্ষ" এর তবলাবাদক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। আমাদের জাতীয় সংগীত গাওয়ার ক্ষেত্রে একজন পাকিস্তানি বাদক এর অংশগ্রহন আমরা ঠিক কি দৃষ্টিতে দেখবো?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মন মাঝি এর ছবি

'আমরা' ঠিক কি দৃষ্টিতে দেখবো সেটা তো আমি বলতে পারছি না ভাই। আমি শুধু আমার কথাই বলতে পারি। ক্ষ-তে পাকিস্তানি আছে জানতাম না, আপনার কথায় জানলাম। আমার ওদের গানটাও ভাল লাগেনি, এই পাকিস্তানি থাকাটাও ভাল লাগেনি।

****************************************

দুর্দান্ত এর ছবি

বিডিনিউজের ঐ লেখাটায় নিজেদের বিলুপ্তির ভয়ে সন্ত্রস্ত কিছু মানুষের প্রলাপ পড়লাম। সাদী মোহাম্মদের লিপস্টিকের রাবিন্দ্রীকতা নিয়েও হয়তো কোন একদিন মিতা ও শাকিলেরা বক্তব্য় দেবেন।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

হলুদ সাংবাদিকতার আভাস পাচ্ছি।
[url=মিতা হকের বক্তব্য ]https://www.facebook.com/notes/mita-huq/khio/341547939294650[/url]
[url=ইরেশ জাকেরের বক্তব্য ]https://www.facebook.com/izaker/posts/10152480902910195[/url]


_____________________
Give Her Freedom!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

রাহুলের ‘ক্ষ’-র স্পর্ধা ও একটি প্রতিক্রিয়া- লেখাটি চোখে পড়লো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।