"কেউ নেই, কিছু নেই; সূর্য নিভে গেছে"

রাফি এর ছবি
লিখেছেন রাফি (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০৩/২০০৯ - ৯:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

০১.
“হল” শব্দটা আমার কাছে বরাবরই মহান কিছু বলে মনে হত। ইমন ভাই যেদিন ভর্তি হবার পর জাবি’র হলে সাতদিন কাটিয়ে বাসায় এলেন সেদিন ফুপু “হল” কে হোস্টেল বলায় ভাইয়ার চোখেমুখে যে আহত ভঙ্গি দেখেছিলাম তার পর থেকে “হল” আমার কাছে স্বর্গরাজ্যের প্রতিশব্দ বলে মনে হত, যেখানে সারাদিন আড্ডা মারা যায়, যেকোন সময় খেলা যায়, ইচ্ছে হলে দিনরাত ঘুমানো যায়, ঘুমুতে ইচ্ছে না হলে সারারাত গান শোনা যায়। যেখানে থাকলে বিকেল বেলা বন্ধুর বাসায় গিয়ে ডাকাডাকি করতে হয় না, আমার প্রিয় বন্ধুরা থাকে আমার পাশে সারাক্ষণ। মাসখানিক পরপর বাসায় এসে ভাইয়া যে রকম আদর যত্ন পেতেন তাতে ‘পাইলট’ হবার স্বপ্নে ইস্তফা দিয়ে আমি সবার অজান্তেই জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে ফেলি- “বড় হয়ে আমাকে ‘হল’ এ থাকতে হবে”।

স্বপ্নের শুরুটা মর্মান্তিক; স্কুলজীবনের অসংখ্য বন্ধু আর অগুণতি শত্রু ফেলে ইট-কাঠের নগরীতে নির্জন জীবন কাটানো, সকালে ক্লাস, বিকেলে বন্ধ ঘরে শুয়ে থাকা; সন্ধ্যা থেকে হোমওয়ার্ক আর জমাট হয়ে আসা সুখস্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে সকাল সাতটার এলার্ম। তিনটা পরোটা আর একটা ডিম গিলে আবার সকালের ক্লাস। মানসিক বৈকল্যে শরীর যোগ দিল। ফার্ষ্ট ইয়ারের দুমাস যেতেই অসুস্থ হলাম; তিনমাস পর কলেজে ফিরে ঠাঁই হলো শেষ সারিতে। সারাক্ষণ মনে ভয় “ক্লাসভরতি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেপ সমস্ত কাগজ! আমি বাজে ছেলে, আমি লাস্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না।“

সময় তার নিয়মে কেটে গেল; কলেজের গণ্ডি পেরোলাম। আবার আমার প্রিয় শহর, আবার আমার প্রিয় সবকিছু।কিন্তু অনেক কিছুই অপ্রিয়! আমার চেনা সবকিছুই কেমন যেন অচেনা লাগে। প্রাইমারী’র যে স্যারকে আকাশের সমান উচুঁ মনে হত, উনাকে স্বাভাবিকের চেয়ে খাটো বলে মনে হয়। আমার বাসার সামনের যে রাস্তাটা পার হতে গিয়ে আমাকে রুদ্ধশ্বাস দৌড়াতে হয়েছে, সেটা এখন ছোট গলি বলে মনে হয়। স্কুলে যে স্যারটিকে মহাসুখী আর প্রতাপশালী বলে ভাবতাম, উনার জীবন সংগ্রামের অপ্রীতিকর দিকটিই এখন আমাকে খুব কষ্ট দেয়; যে বড় ভাইটি দুমাস আগেও বলে এসেছেন কলেজের exam ই সব তিনিও এখন অন্যসুরে কথা বলেন। বলেন এতদিনকার সবকিছুই গৌণ, মূখ্য হল সামনের admission test. বিশ্ববিদ্যালয়ভর্তি পরীক্ষা। “হল” এর কথায় আমার চোখ চকচক করে, খোঁজ নেই এদিক সেদিক। হ্যা; আবার এক হবো আমরা সবাই, সবার তীর একই দিকে তাক করা! তীর্থস্থান ঘুরে যাই; পরিচিত বড়ভাই আছেন, ওনার খোঁজে ‘হল’ আসি। আশেপাশের সবাইকে সম্ভাবনাময় আইনস্টাইন বলে মনে হয়; কাউকে কাউকে বিপ্লবী ছাত্রনেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল নক্ষত্র। আমাদের পণ দৃঢৃ হয়।

১৭ই মার্চ,২০০৪। আমি ‘হল’ এ উঠার অনুমতি পাই। সেদিন সন্ধ্যায় মেস্‌ থেকে আমার ট্রাংকটা আর তোষকবালিশ নিয়ে হাজির হই শেরেবাংলা হল এর গেস্টরুমে। বড়ভাইদের শিখিয়ে দেয়া একগাদা মিথ্যা কথা বলে সিট বাগাতে হয়। আগামী চার বছরের জন্য আমার ঠিকানা হয় ৩০৭, শেরেবাংলা হল; কিন্তু বেশিদিন থাকা হয় না সেখানে। ৭ই জুলাই ২০০৫ এ একই উইংস এর শেষ রুম ৩১২ তে উঠে আসি।এক রুমে একই ব্যাচের চারজন; স্বাধীন জীবন, ঠিক যেমনটা ভেবে এসেছি এতদিন।

আমি স্মৃতির ভেতর বাস করি, বেঁচে থাকি;৩১২ তে উঠবার দিনটার প্রতিটি ক্ষণ আমার মনে আছে। পূর্বসুরীর ছেড়ে যাওয়া জায়গাটুকুকে নিজের করে নিতে দিনভর কী প্রাণান্ত চেষ্টা! বেডটা কোথায় হলে ঘুম ভালো হবে? পড়ার টেবিলটা কোথায় বসলে আলোর কোন সমস্যা হবে না? লকার এর কোন তাকে কী রাখব? টেবিল এর উপর কলমদানীটা কেমন হবে? কত কল্পনা!কিন্তু এক টার্ম যেতেই বুঝে গেলাম নির্বিকার অগোছালো ভাবটাই আমার স্বপ্নের “হলজীবন”। একগাদা হরেক কিসিমের জিনিসের ভেতর থেকে কাংখিত বস্তুটি খুঁজে পাওয়ার আনন্দটুকু ততদিনে আমাকে গ্রাস করেছে। বিতৃষ্ণা ছাপিয়ে উঠেছে প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রথম ভালোলাগাটুকুকে; হলজীবন আর ক্যাম্পাস এর সময়টুকু বাদে বিশ্ববিদ্যালয়কে টর্চার সেল মনে হতে লাগল কয়েকটার্ম শেষেই। ক্যাম্পাসের বাইরে চরম মেধাবী চিহ্নিত অধিকাংশের বুকে তখন আশাভঙ্গের বেদনা।

০২.

আশা-হতাশার “হলজীবন” তার শেষ দেখার অপেক্ষায় দিন গুণছে। জুনিয়র ছেলেরা এখন বোধহয় আমাদের অচলই ভাবে, যে ছেলেটা আগে করিডোরে দেখা হলে চোখের পলকে সিগারেট লুকিয়ে ফেলত; সে এখন অন্যমনষ্কতার ভান করে। হলের গার্ড আমার দিকে এখন কেমন যেন করুণার দৃষ্টিতে তাকায়। বুঝতে পারি, মিলনমেলার শুরু আর শেষ দেখা তার চোখে নীরব সহানুভূতি। চার বছর কাটিয়ে যাওয়া ২৫ ফিট বাই ১৫ ফিট জায়গাটুকুতে আমি এই মাসটা শেষ হলে অবৈধ হয়ে যাব ভাবলেই, থেকে যাওয়ার একটা ছেলেমানুষী জেদ চাপে। যে দৃষ্টিতে সময় হবার পরও হল না ছাড়া বড়ভাইদের দিকে আমরা তাকিয়েছি এই পাঁচটা বছর, সে দৃষ্টিটা আমাকে বড় কুঁকড়ে দেয় তখন। চলে যেতে হবে; যাব। পাঁচ বছরে জমানো ডায়েরীর ১০০০ টা পাতা তো আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সময়কে বাঁধতে পারি বলেই তো আমরা মানুষ। মন খারাপ


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

চলুক

লেখাটা ছুঁয়ে গেল। ঢাকার ছেলে হওয়াতে আর বাসা ক্যাম্পাস থেকে মোটামুটি কাছেই হওয়ায় হলে সীট নেওয়া হয় নি, তবে আড্ডা মারার জন্য হলে থেকেছি বহু রাত।

চমৎকার স্মৃতিকাতর লেখা...


অলমিতি বিস্তারেণ

রাফি এর ছবি

ঢাকার ছেলেদের জন্য আমার মিশ্র একটা অনুভূতি হয়; কখনো কখনো ভাবি তোমরা মহা সুখে আছ; আবার কখনো কখনো হল লাইফ টা মিস্‌ করছ বলে মনে হয়।
তবে অনেককেই দেখেছি, second year বা থার্ড ইয়ার এ হলে উঠে এসেছে।
তবে আমাদের দিনগুলি ফুরিয়ে এল, এটা বড় কষ্টের।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রাফি এর ছবি

গুরু আমি কী জানি, আবুল হাসান রে জিগান।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

রায়হান আবীর এর ছবি

ব্যাপার না। আমাদেরও দিন আসতেছে। দশ বছরের হল জীবনের অবসান।

=============================

রাফি এর ছবি

তুমি ক্যাডেটের নাকি???
দশ বছরের হিসাবটা বুঝলাম না। চিন্তিত

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

রায়হান আবীর এর ছবি

হ।

এইবার হিসাব মিলছে চোখ টিপি

=============================

রাফি এর ছবি

দেখলা আমার কত বুদ্ধি হাসি
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

লাস্ট বেঞ্চে বসেও এখন আপনি বুয়েটের সিভিলের ফার্স্ট বয়, ফার্স্ট বেঞ্চে বসলে কী হতেন? দেঁতো হাসি

লেখাটা দুর্দান্ত লাগল। হল লাইফ আমারও অসম্ভব প্রিয় ছিল। সেই স্বাধীন জীবন এখন অনেক মিস করি। আপনি কেমন আছেন? আপনাকে দেখাই যায় না আজকাল। কই থাকেন!

রাফি এর ছবি

আমি ফার্ষ্ট বয় এইটা ঠিক আছে; তয় আমার আগে কিন্তু আরেকজন ফার্ষ্ট গার্ল আছে। হাসি
আছি মোটামুটি একরকম।

আপনাকে দেখাই যায় না আজকাল। কই থাকেন!

আমিও তো আপনারে দেখি না। বি.ডি.আর বিদ্রোহ এর আগ পর্যন্ত তো পুরোপুরি উধাও ছিলেন। এরপর মনে লয় আর্মির ভয়ে ফিরে আসছেন সচলে। চোখ টিপি

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আরিব্বাহ্, "ফার্স্ট বয়"-"ফার্স্ট গার্ল" - আপনাদের টক্কর তো মনে হয় বেশ ইন্টারেস্টিং। কাহিনী নাই কোন শেয়ার করার মতো? হাসি

ডিপার্টমেন্টে সেকেন্ড হলেও তো মনে হয় ফ্যাকাল্টিতে চান্স পাবেন, নাকি? তাহলে তো বুয়েটেই থাকতে পারবেন মনে হয়। প্রিয় ভার্সিটির সান্নিধ্যে আরো কিছু দিন কাটালেন না হয়...

জান বাঁচানো ফরজ। তাই মাঝে একটু গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হইসিল। কিন্তু তা ছাড়া তো আমি নিয়মিতই আসি এইখানে, আপনারেই তো দেখি না মন খারাপ

রাফি এর ছবি

ভার্সিটির সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ হয় কি না, এখনো বুঝতে পারছি না। চিন্তিত
তয় কাহিনী শোনার আশায় গুড়ে বালি; জানেনই তো আমি কাহিনীহীন মানুষ...।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অনীক আন্দালিব এর ছবি

আমার কম্পিউটারে একটা ছবি ফোল্ডার আছে, তিতুমীর ১০১০ এর তিন বছরের জীবনের। এখন যখনই দেখি, অজান্তেই একটা সময়ে চোখে পানি চলে আসে। সামনের মনিটর ঝাপসা হয়ে যায়।
হলের জীবনের বিতৃষ্ণা, ক্ষোভ, হতাশা ছাপিয়েও সেই মধুর স্মৃতিগুলোই কেন খালি বেঁচে থাকে?
===
অনীক আন্দালিব
http://www.jochhonabilashi.blogspot.com

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা ভালো বুদ্ধি দেই।
ফোল্ডারটা সিলেক্ট করে shift + delete চাপেন চোখ বন্ধ করে। দেখবেন বাঁশী ও বাঁশ দুই-ই গন কেইস।

বুদ্ধিটা এখন একটু নিষ্ঠুর মনে হইলেও লংরানে ব্যাপক ফলদায়ক। আপন অভিজ্ঞতা থাইকা কইতাছি। ঈমানে, বিদ্যা... ইত্যাদি ইত্যাদি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অনীক আন্দালিব এর ছবি

বাঁশি যে বড়ো বেশি কাতর করে, আমিও মনে মনে চোখ ঝাপসা করতেই চাই।

কিছু অশ্রু অবশ্যই ক্ষরণ প্রয়োজন! তখন অন্তত টের পাই যে বেঁচে আছি, এখনও ভিতরে নরম কোনও গৃহকোণ টিঁকে আছে। মুছে ফেললে তো বিরাট বোকামি হয়ে যাবে!

রাফি এর ছবি

আমার ফোল্ডার নাই, স্মৃতিই ভরসা। মন খারাপ
আন্দালিব ভাই কোন ব্যাচ??

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি হলে সবসময়ই বহিরাগত...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাফি এর ছবি

১৬ দিন পর থেকে আমিও ....

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সচল জাহিদ এর ছবি

রাফি
তুমিত আবার নস্টালজিয়ায় ফেলে দিলা, এমনিতেই কাজ কামে মন নাইরে ভাই। হলের কথা মনে হলেই সেই দিনগুলিকে বড় বেশী মনে পড়ে যায়, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল সেটি। আমার মনে আছে হল ছাড়ার সময়ের শেষ বক্তবব্যে আমি বলেছিলামঃ
'এই হলের প্রতিটি কণা, প্রতিটি কোনা আমি চিনি'

__________________________________
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাফি এর ছবি

স্মৃতিকাতরতা বড় ছোঁয়াচে রোগ।
স্যার, আপনি কোন হলে থাকতেন; কত নম্বর রুম??

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সচল জাহিদ এর ছবি

আমি ছিলাম নজরুল ইসলাম হল থুক্কু 'বয়লারে', প্রথমে ছিলাম জলন্ত আগ্নেয়গিরী মানে ৪২৯ নাম্বার রুমে ( হলে মনে হয় এই রকম গরম রুম আর দ্বিতীয়টা ছিলনা, আমরা মাঝে মাঝে ফ্লোরে পানি ছিটিয়ে দিতাম)। পরে অবশ্য ২০১ এর ক তে ছিলাম শেষ ৩ বছর।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাফি এর ছবি

কাকতালীয়ভাবে দু'টা রুমে আমার বেশ যাওয়া হত। ৪২৯ এ এলাকার এক বড় ভাই থাকতেন; লেভেল ১ এ প্রায়ই যেতাম।
আর ২০১/ক এ আমার ফ্রেন্ড থেকেছে গত টার্ম পর্যন্তও।
আপনাদের সময়ের কথা জানি না;তবে নজরুল হল কে আমার বুয়েট থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। একেবারে আলাদা জগত।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অমিত এর ছবি

আপনার ৪২৯ নম্বরে অনেকটা সময় কেটেছে আড্ডাবাজিতে। দুপুরগুলা সিরাম লাগতো।

রানা মেহের এর ছবি

সবে তো শুরু বিষন্নতা
আরো কত কিছু দেখবেন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

রাফি এর ছবি

ভাই,আপনার নামে অভিযোগ আছে।
ঐদিন আপনার এই লেখাটা পড়ে তাব্দা খেয়ে গেছি। আর লেখা কই???????
এইভাবে আমাদের ঠকানো একদম ঠিক হচ্ছে না।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অমি এর ছবি

ভাল্লাগ্লো...

রাফি এর ছবি

ভাল্লাগ্লো?
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

কনফুসিয়াস এর ছবি

লেখাটা খুব ভাল লাগলো।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

রাফি এর ছবি

ধন্যবাদ কনফু ভাই। আমার ব্লগে আপনারে দেখে ভাল্লাগ্লো খুব।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

রাগিব এর ছবি

নস্টালজিয়াতে আমিও পড়ে গেলাম। রশীদ হলে আমার ৫ বছরের জীবনের কথা মনে পড়লো, ৪০৮ রশীদ হল।

হল জীবন খুব মজার ছিলো, আমি ব্লগে এটা নিয়ে সিরিজ লিখেছিলাম,

http://www.sachalayatan.com/ragib/13937
http://www.sachalayatan.com/ragib/13990
http://www.sachalayatan.com/ragib/14107
http://www.sachalayatan.com/ragib/14376
http://www.sachalayatan.com/ragib/14564
http://www.sachalayatan.com/ragib/15183

এগুলো নিয়ে রীতিমত বই লেখা যাবে একটা।

হাসি

পরে দেখবে, শহীদ স্মৃতির খাবারের চাইতে হলের ফিস্ট খাওয়ার জন্য মন আনচান করছে হাসি
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রাফি এর ছবি

রাগিব ভাই, আপনার সিরিজটা পড়েছি আগেই। তানভীর ভাই লায়ন ভাইকে নিয়ে একটা লেখা দিয়েছিলেন, সেটাও।
তবে আমি একটা অনুরোধ করি; বুয়েট নিয়ে লেখাগুলো নিয়ে একটা ই-বুক করলে কেমন হয়?

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

এনকিদু এর ছবি

লেখা ভাল হয়েছে, চলুক

বুয়েট কে হয়ত খুব একটা মিস করবনা, মিস করব আমার হলকে ।

তুই তো দেখি খারাপ কিসিমের বড় ভাই । তোকে দেখে পোলাপান সিগারেট লুকাইত । ছি, ছি । উচিত সাজা হইছে তোর । তোর সামনে পোলাপানদের মিছিল করে বিড়ি খাওয়ার আয়োজন করানো দরকার । আমার উইং এ ছোট বড় সবাই আমার সাথে বসে বিড়ি খায় । আমি একবার একটা হুক্কা বানাইছিলাম, ঐটাও পর্যন্ত পোলাপানের কাছে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে গেল । তারপর ০৪ ব্যাচের পোলাপানকে দান করে দিলাম ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রাফি এর ছবি

খাইছে

তুই তো ব্যাটা এলেমদার লোক; এইটা তো দেইখা বুঝি নাই।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

টাচি... মন খারাপ

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

রাফি এর ছবি

মন খারাপ

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

রিজভী [অতিথি] এর ছবি

তোর লেখা দিন দিন খুব ভালো হচ্ছে...

রিজভী

--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

নীলকান্ত এর ছবি

হল জীবন সত্যি খুব মজার। বাসায় থাকি যদিও, তবু সহপাঠীদের কথায় বুঝতে পারি।
আর বছর খানেক পর আমার মনেও হয়তো এরকম এক সুর বেজে উঠবে।
আগের লেখা পড়তে বসলে মনে হয়, কেন যে লেখাগুলোর সময়ে সচলে ছিলাম না?

প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে


অলস সময়

মর্ম এর ছবি

হলজীবন পেয়েছি বলা যাবেনা আবার পাইনি বললেও ভুল হবে।

তবে জহুরুল হক হলে কাটানো ৭ মাস এক কথায় অনন্য।

অনাবাসিক ছিলাম, আবাসিক ও ছিলাম এ অল্প সময়ের জন্য- পেছনের মূল কারণ হলজীবনের স্বাদটুকু একটু চেখে নেয়া।

শুরু থেকে হলে থাকা বন্ধুদের মত ঘটনাবহুল ছিল না আমার হলজীবন, তবে যেটুকু আছে তা জীবনের ওপার পর্যন্ত হয়ত সঙ্গ দেবে, অন্ততঃ আমাকে।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।