".....আমারে দেব না ভুলিতে"

রাফি এর ছবি
লিখেছেন রাফি (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৭/০৮/২০০৯ - ১:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জগতে কিছু কিছু মানুষকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে পাঠানো হয়; স্রষ্টা নিজে পক্ষপাত করেন সে সমস্ত লোকদের হয়ে। কাজী নজরুল ইসলাম তেমনই একজন; বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আর কোন কবি এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি । নজরুলই একমাত্র কবি যাকে নিয়ে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে খেটে খাওয়া মানুষের সাথেও আলাপ করা যায়, ক্ষেত্রবিশেষে অভিনব সব তথ্যও মেলে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে। নজরুলের জনপ্রিয়তার পথে শিক্ষা আর সাহিত্যজ্ঞান কোন বাধাই নয়।

নজরুলের ধর্মীয় পরিচয় এবং রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে বড় ধরণের বিতর্ক আছে। যদি কোন কবির সাহিত্যকর্মকে তার ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসের উদাহরণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়, তাহলে সেটা বড় ধরণের ধাক্কা খাবে তাঁর সৃষ্টি ঘেঁটে দেখলে। একই কবি লিখে গেছেন.........
"মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই...."
অন্যদিকে
"ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাত্রী'র!"
একদিকে রচনা করেছেন শ্যামা সঙ্গীত অন্যদিকে ঈদের আগমণী সঙ্গীত, রমজানের ঐ রোজার শেষে.... যা ছাড়া বাঙ্গালি মুসলমানের ঈদের আনন্দ হয়ত একহাজার বছর পরেও পূর্ণ হবে না।

কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)

যে নজরুল তার কবিতায়, প্রবন্ধে আর চিঠিতে মানুষে মানুষে সম্পর্কের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে গেছেন,মানুষের ভালবাসা পাননি বলে হাহাকার করে গেছেন অসংখ্য ব্যক্তিগত চিঠিতে, সেই নজরুলের ব্যক্তি আচরণ ছিল রহস্যময়। "আনন্দময়ীর আগমনে" কবিতার জন্য আলিপুর জেলে বন্দী থাকা অবস্থায় ছেলের খবর পেয়ে বহুদূর থেকে ছুটে আসা মা জাহেদা খাতুনের সাথে যে নজরুল দেখা করেননি, জেলগেট থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন জন্মদাত্রী মা'কে; সেই নজরুল মাতৃস্থানীয়া বিরজাসুন্দরী দেবীর হাতে কমলা'র রস পান করে অনশন ভঙ্গ করেছিলেন। পরবর্তীতে মা’য়ের সাথে আর দেখাও করেননি।

নজরুলকে নিয়ে যে কোন লেখা পড়লেই একটা কবিতা খুব মনে পড়ে আমার। নজরুলের লেখায় তাঁর ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়ে পরস্পরবিরোধী যে সমস্ত উপাদান ছড়িয়ে আছে, কবি নিজেও তা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন। "বিদ্রোহী", "মানুষ" বা "সাম্যবাদী" যে কোনটিকেই তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি বলা হোক না কেন; নজরুলের এই কবিতাটা আমার মতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

নিজেকে নিয়ে কবিতা বড় কবিরা খুব বেশি লিখেননি, সেদিক দিয়েও এ কবিতাটা ভিন্ন মাত্রার দাবিদার। তার চেয়ে বড় কথা নজরুল চরিত্র বিশ্লেষণ করতে সমালোচকদের প্রাণান্তকর চেষ্টায় পেরেক ঠুকে দিয়ে গেছেন কবি এই একটি কবিতার মাধ্যমে।

-----------------------------------
আমার কৈফিয়ত

বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’,
কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে, মুখ বুঁজে তাই সই সবি!
কেহ বলে, ‘তুমি ভবিষ্যতে যে
ঠাঁই পাবে কবি, ভবীর সাথে হে!
যেমন বেরোয় রবির হাতে সে চিরকেলে-বাণী, কই কবি?’
দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই, শুধু প্রভাতের ভৈরবী!

কবি-বন্ধুরা হতাশ হইয়া মোর লেখা পড়ে শ্বাস ফেলে!
বলে, কেজো ক্রমে হচ্ছে অকেজো পলিটিক্সের পাশ ঠেলে’।
পড়ে নাকো বই, বয়ে গেছে ওটা।
কেহ বলে, বৌ’য়ে গিলিয়াছে গোটা।
কেহ বলে, মাটি হ’ল হয়ে মোটা, জেলে ব’সে শুধু তাস খেলে!
কেহ বলে, তুই জেলে ছিলি ভালো ফের যেন তুই যাস জেলে!

গুরু ক’ন, তুই করেছিস শুরু তলোয়ার দিয়ে দাড়ি চাঁছা!
প্রতি শনিবারই চিঠিতে প্রেয়সী গালি দেন, ‘তুমি হাঁড়িচাঁচা!’
আমি বলি, ‘প্রিয়ে, হাটে ভাঙি হাঁড়ি!’
অমনি বন্ধ চিঠি তাড়াতাড়ি।
সব ছেড়ে দিয়ে করিলাম বিয়ে, হিন্দুরা ক’ন, আড়ি চাচা!’
যবন না আমি কাফের; ভাবিয়া খুঁজি টিকি দাড়ি, নাড়ি কাছা!

মৌ-লোভী যত মৌলভী আর ‘ মোল্-লা’রা ক’ন হাত নেড়ে’,
‘দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবে দাও পাজিটার জাত মেরে!
ফতোয়া দিলাম- কাফের কাজী ও,
যদিও শহীদ হইতে রাজী ও!
‘আমপারা’-পড়া হাম-বড়া মোরা এখনো বেড়াই ভাত মেরে!
হিন্দুরা ভাবে,‘ পার্শী-শব্দে কবিতা লেখে, ও পা’ত-নেড়ে!’

আনকোরা যত ননভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী।
‘ভায়োলেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি!
‘এটা অহিংস’, বিপ্লবী ভাবে,
‘নয় চড়কার গান কেন গা’বে?’
গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কনফুসি!
স্বরাজীরা ভাবে নারাজী, নারাজীরা ভাবে তাহাদের অঙ্কুশি!

নর ভাবে, আমি বড় নারী-ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী-বিদ্বেষী!
‘বিলেত ফেরো নি?’ প্রবাসী-বন্ধু ক’ন, ‘এই তব বিদ্যে, ছি!’
ভক্তরা বলে, ‘নবযুগ-রবি!’-
যুগের না হই, হজুগের কবি
বটি তো রে দাদা, আমি মনে ভাবি, আর ক’ষে কষি হৃদ্-পেশী,
দু’কানে চশমা আঁটিয়া ঘুমানু, দিব্যি হ’তেছে নিদ্ বেশী!


কী যে লিখি ছাই মাথা ও মুণ্ডু আমিই কি বুঝি তার কিছু?
হাত উঁচু আর হ’ল না’ত ভাই, তাই লিখি ক’রে ঘাড় নিচু!
বন্ধু! তোমরা দিলে নাকো’ দাম,
রাজ-সরকার রেখেছেন মান!
যাহা কিছু লিখি অমূল্য ব’লে অ-মূল্যে নেন! আর কিছু
শুনেছ কি, হুঁ হুঁ, ফিরিছে রাজার প্রহরী সদাই কার পিছু?

বন্ধু! তুমি ত দেখেছ আমায় আমার মনের মন্দিরে,
হাড় কালি হ’ল শাসাতে নারিনু তবু পোড়া মন-বন্দীরে!
যতবার বাঁধি ছেঁড়ে সে শিকল,
মেরে মেরে তারে করিনু বিকল,
তবু যদি কথা শোনে সে পাগল! মানিল না রবি-গান্ধীরে।
হঠাৎ জাগিয়া বাঘ খুঁজে ফেরে নিশার আঁধারে বন চিরে’!


আমি বলি, ওরে কথা শোন্ ক্ষ্যাপা, দিব্যি আছিস্ খোশ্-হালে!
প্রায় ‘হাফ’-নেতা হ’য়ে উঠেছিস্, এবার এ দাঁও ফসকালে
‘ফুল’-নেতা আর হবিনে যে হায়!
বক্তৃতা দিয়া কাঁদিতে সভায়
গুঁড়ায়ে লঙ্কা পকেটেতে বোকা এই বেলা ঢোকা! সেই তালে
নিস্ তোর ফুটো ঘরটাও ছেয়ে, নয় পস্তাবি শেষকালে।


বোঝে নাকো যে সে চারণের বেশে, ফেরে দেশে দেশে গান গেয়ে,
গান শুনে সবে ভাবে, ভাবনা কী! দিন যাবে এবে পান খেয়ে!
রবে নাকো ম্যালেরিয়া মহামারী,
স্বরাজ আসিছে চ’ড়ে জুড়ি-গাড়ী,
চাঁদা চাই, তারা ক্ষুধার অন্ন এনে দেয়, কাঁদে ছেলে-মেয়ে।
মাতা কয়, ওরে চুপ্ হতভাগা, স্বরাজ আসে যে, দেখ্ চেয়ে!


ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন,
বেলা ব’য়ে যায়, খায়নি ক’ বাছা, কচি পেটে তার জ্বলে আগুন।
কেঁদে ছুটে আসি পাগলের প্রায়,
স্বরাজের নেশা কোথা ছুটে যায়!
কেঁদে বলি, ওগো ভগবান তুমি আজিও আছো কি? কালি ও চুন
কেন ওঠে নাকো তাহাদের গালে, যারা খায় এই শিশুর খুন?


আমরা তো জানি, স্বরাজ আনিতে পোড়া বার্তাকু এনেছি খাস!
কত শত কোটি ক্ষুধিত শিশুর ক্ষুধা নিঙাড়িয়া, কাড়িয়া গ্রাস
এলো কোটি টাকা, এলো না স্বরাজ!
টাকা দিতে নারে ভুখারি সমাজ।
মা’র বুক হ’তে ছেলে কেড়ে খায়, মোরা বলি, বাঘ, খাও হে ঘাস!
হেরিনু, জননী মাগিছে ভিক্ষা ঢেকে রেখে ঘরে ছেলের লাশ!


বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না, বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে।
রক্ত ঝরাতে পারি’নাতো একা,
তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,
বড় কথা, বড় ভাব আসে না মাথায়, বন্ধু, বড় দুখে!
অমর কাব্য তোমরা লিখিও, বন্ধু, যাহারা আছ সুখে!


পরোয়া করি না, বাঁচি বা না-বাঁচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে,
মাথায় উপরে জ্বলিছেন রবি, রয়েছে সোনার শত ছেলে।
প্রার্থনা ক’রো যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস,
যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ!

[সর্বহারা: কাজী নজরুল ইসলাম]
-----------------------

প্রয়াণ দিবসে জাতীয় কবি’র প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ উইকিপিডিয়া


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই লেখাটার দরকার ছিলো আজ। আপনাকে ধন্যবাদ।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

শ্রদ্ধাঞ্জলি কবি; ভালো থাকেন।

মামুন হক এর ছবি

বড় কথা, বড় ভাব আসে না মাথায়, বন্ধু, বড় দুখে!
অমর কাব্য তোমরা লিখিও, বন্ধু, যাহারা আছ সুখে!

---নজরুল বলছেন এ কথা!!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ রাফি ভাই এই লেখাটার জন্যে। ... সচলে এই বিদ্রোহী কবিকে নিয়ে আরো কোন লেখার লিঙ্ক কারো কাছে আছে কি ??

কবির একটা কবিতা ছিলো ক্লাস নাইনে। উমর ফারুক (রঃ)। সিলেবাসের কবিতা- কিন্তু এত্তো ভালো লেগেছিলো, যে মুখস্থই করে ফেলেছিলাম।

... কবির জন্যে শ্রদ্ধা।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ওই কবিতা আমারো পুরাই মুখস্ত ছিলো।

রাফি এর ছবি

যতগুলো পেলাম ......

পিপিদা'র পোস্ট এখানে আর এখানে, দৃশা'পার পোস্ট আরেকটা পোস্ট

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনার এই লেখাটির জন্যে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফিরোজ জামান চৌধুরী এর ছবি

খুবই ভালো লাগল লেখাটি পড়ে।
ধন্যবাদ রাফি।

ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।

স্বপ্নাহত এর ছবি

চলুক

কবিতাটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।

---------------------------------

তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্‌ পাটুস্‌ চাও?!

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সময়োপযোগী এবং দরকারী এই পোস্টটার জন্য অনেক ধন্যবাদ, রাফি। পোস্টের শুরুর লাইনটার সাথে ভীষণভাবে একমত।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

প্রয়াণ দিবসে জাতীয় কবি’র প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আমিও
খুব ভালো লাগল লেখা রাফি হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

s-s এর ছবি

দারুণ লাগলো, রাফি। বিদ্যুচ্চমকের মতো মনে পড়ে গ্যালো দু'টো লাইন; নজরুলকে ধর্মের আবরণে ঢাকতে চায় যারা চায় তাদের জন্য বড়সড় একটা ধাক্কা -
"সেরেক পশুর ক্ষুধা নিয়ে হেথা মেলে নরনারী যত
সেই কামনার সন্তান মোরা তবু গর্ব কত!"
কি অবলীলায় জ্বলন্ত শব্দাবলী বেরিয়েছে তাঁর কলমে, ভেবে বিস্মিত হই! এবং আজও তা অদ্ভুতভাবে প্রাসঙ্গিক- তা ভাবলেও।

রাফি এর ছবি

সাম্যবাদী'র অধীনে যতগুলো কবিতা আছে, সবগুলোই গা শিহরিত করার মত।
নজরুল এর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল, যাকে যা দিয়ে বললে বুকে বাজবে তিনি তা দিয়েই বলেছেন; যেমন রোগী তেমন চিকিৎসা।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

পুতুল এর ছবি

লন্ডনে এক বাংলাদেশী দোকানে ঢুকলাম বাংলা লেখার বিজয় কিনতে;
গান, ভিডিও সব পাওয়া যায় ঐ দোকানে। তখন একটা সিডি বাজছে
গোলাম আযম কবি নজরুলের কর্ম জীবন নিয়ে বালোচনা করছেন।
মুখ গোমরা করে বের হয়ে এলাম।

তখন মনে হয়েছিল সত্যিই কি সব নষ্টদের দখলে গেল!
কেনরে কবি খালি হলিরে চোখের বালি! গানটা অনেক নজরুল গীতির মত শতবার শুনেও পুরানো হয়নি।
ভাগ্যিস আপনি পোষ্টটা দিয়েছেন, না হলে আজকের দিনটা আমার মনে পড়তো না!
আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

রাফি এর ছবি

খাইছে, গোলাম আজম নজরুলরে নিয়া মাথা ঘামায় জানতাম না তো।
জোগাড় করে শুনতে হবে...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

হিমু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কালকে একবার ভাবলাম একটা ব্যানার করে ফলি, পরে আর করা হলো না।

শিরোনামের গানটা যতোবারই শুনি ততোবারই কেমন জানি হয়ে যায় ভেতরে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই ভালো লাগল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। কবির প্রতি শ্রদ্ধা।

নৈশী ।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ রাফি এই লেখাটা দেবার জন্যে।

নজরুল কত বড় কবি বা কত বড় সুরকার কিংবা বাংলা সাহিত্যে তাঁর কী অবদান---সেসব নিয়ে অন্যেরা কুট-কচালি করুক---আমি শুধু এইটা জানিঃ তাঁর মত এমন জাত-পাত-ধর্মের উপরে উঠতে পেরেছেন খুব কম লোকই। আর শুধু লেখনীর মাঝে নয়, তাঁর সারাটা জীবনই হয়ে আছে এই ধারণার উজ্জ্বল স্লোগান।

ভাল থাকো সাম্যের কবি
ভাল থাকো চির প্রেমিক কবি--

ভাল থাকো!

রাফি এর ছবি

ভাল থাকো সাম্যের কবি
ভাল থাকো চির প্রেমিক কবি--

অনিকেত দা,ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য...

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

ভুতুম এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

কোয়েলিয়া এর ছবি

ছোটো বেলায় নজরুলের একটা গান শিখেছিলাম, "তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় নাতো প্রভু"। গানটা বহুদিন শোনা হয় না। গানের সঞ্চারিটা মনে গেঁথে আছে:

"ঝরে যে ফুল ধুলায়, জানি হয় না কভু হারা
ওই ঝরা ফুলে নেয় যে জনম তরুন তরুর চারা"

রাফি এর ছবি

আমার একটা সমস্যা হচ্ছে নজরুল আর রবীন্দ্রসঙ্গীতএর কথা ঠিক মনে রাখতে পারি না; সুর শুনলে ঠিকঠাক মনে পড়ে কিন্তু কথা শুনলে অন্ধকারে হাতড়াতে হয়।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য...।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অনিকেত এর ছবি

কবি নজরুলের ছেলে কাজী সব্যসাচীর একটা আবৃত্তি এখানে দিলামঃ

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় কবিকে নিয়ে লেখা ভালো লাগলো।

কবির প্রতি শ্রদ্ধান্জলী। লেখককে ধন্যবাদ।

স্বাধীন এর ছবি

শ্রদ্ধাঞ্জলি রইল কবির জন্য।
ধন্যবাদ রইল লেখকের জন্য। লেখাটি খুব সুন্দর হয়েছে।

সচল জাহিদ এর ছবি

একবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ অডিটরিয়ামে প্ল্যানচেট বিতর্ক হয়েছিল। একই মঞ্চে একেকজন খ্যাতিমান বিতার্তিক একেকজন বিশেষ মানুষের আত্মাকে ভর করে এসেছিলেন। সুদীপ দা নজরুলকে ধারণ করে এসে ( সুদীপ রঞ্জন দেব) শুরু করলেন এই ভাবে,

'আমি নরক থেকে এসেছি '। মূল বক্তব্য ছিল এইটাই, যে নজরুল সব ধর্মেরই গান গেয়ে গেছেন আর সেই সাথে সব ধর্মের আলিঙ্গনের কথাও বলেছেন তাই তার মৃত্যুর পর দেবদূতরা ভুল করেনি তাকে নিয়ে গেছে নরকে।

এই ধর্মনিরপেক্ষতা কবিকে দিয়েছিল মানুষের আরো কাছে এনে। আজকের এই দিনে কবির স্মরণের এই লেখাটির জন্য তাই অসংখ্য সাধুবাদ জানাই রাফিকে ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাফি এর ছবি

নজরুল এর জীবন এত বৈচিত্র্যে ভরপুর যে তার জীবনী পাঠ করতে গেলে তাল রাখা মুশকিল হয়ে যায়। সমাজ, ধর্ম আর রাজনীতির অসঙ্গতিগুলো'র শিকড়ে আঘাত হেনেছিলেন নজরুল।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ স্যার।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

তানবীরা এর ছবি

শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলাম।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

_প্রজাপতি এর ছবি

শ্রদ্ধা
ধন্যবাদ রাফি লেখাটার জন্য।

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

দৃশা এর ছবি

খুব ইচ্ছা ছিল এই দিনে একখানা পোস্ট দিব... কিন্তু যে কোন কারনেই হউক আর দিতে পারি নাই।
আপনে দিয়েছেন দেখ খুব ভালো লাগলো। লেখাটাও ভাল হয়েছে খুব। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আর গুরুকে জানাই শ্রদ্ধা।

দৃশা

রাফি এর ছবি

হুমম, আমিও আপনার পোস্টের অপেক্ষা করছিলাম,
ব্যাপার্না পরের বার ...
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

দৃশা এর ছবি

কারো কাছে যদি নজরুলের 'টিকি আর টুপিতে লেগেছে দ্বন্দ্ব বচন যুদ্ধ ঘোর' গানটা থেকে থাকে এখানে শেয়ার করার অনুরোধ জানিয়ে গেলাম।

দৃশা

রাফি এর ছবি

আলবাব ভাই, পিপিদা, মামুন ভাই, তীরুদা, ফিরোজ় ভাই , স্বপ্নাহত, প্রহরী ভাই, মুমু 'পা, ধূগো'দা, নৈশী, ভুতুম'দা, নাম না জানা অতিথি লেখক, তানবীরা'পু, প্রজাপতি
আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

অনিকেত দা কে সব্যসাচী'র অডিওটার জন্য আর হিমু ভাইকে গানটা শেয়ার করার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন সবাই.. হাসি

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।