পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড়িরা কি দূরে সরে যাচ্ছে?

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: শনি, ১৫/১০/২০১১ - ১০:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছুটি এলেই মনটা পালাই পালাই করে কিন্তু আলস্যের কারনে কোথাও যাওয়া হয়না। এবার পুজোর ছুটিতে আড়মোড়া ভেঙ্গে সপরিবারে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি বেরিয়ে এলাম। আমার জন্যে ব্যাপারটি ছিল উত্তেজনাকর, কারন হিল্লি দিল্লি করার সুযোগ হলেও দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া দেশের ভেতরের এই সবুজ ও নীলের পাহাড়-হ্রদের মেলা।

এ অঞ্চলের সৌন্দর্য নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই (ছবি দ্রষ্টব্য: রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান)। আমাদের সফরসঙ্গী পরিবারের কর্তাটি বললেন দেখুন এইরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে মানুষ অনেক পয়সা খরচ করে বিদেশে যায়। তবে বাস্তব হচ্ছে যে পার্বত্য চট্টগ্রাম দিনে দিনে তার রুপ হারাচ্ছে। পর্যটন ও বসতি বাড়ার সাথে পাহাড় কেটে বানানো হচ্ছে বাড়িঘর, হোটেল-রিসোর্ট। বাশ ও সেগুন গাছের গুড়ি ভর্তি সারি সারি ট্রাক তো নিজ চোখেই দেখলাম রাস্তায়। পাহাড় থেকে খাদ্যাভাবে জনপদে নেমে আসে হাতির পাল এমন শুনেছি, কাপ্তাই লেকে আর আগের মত মাছ পাওয়া যায় না। হায় কে কার খবর রাখে।

সত্যিই এগুলো খবর হয় না। খবর হয় না যখন সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাহাড়ি-বাঙ্গালী নির্বিশেষে চাঁদা তোলে বা অপহরণ করে, পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয়ের উপর হামলা করে। খবর হয়না যখন পাহাড়িদের জীবন, বসতি নিয়ে রাজনীতি করে জ্ঞানপাপী মানুষ আর তাদের এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাই কেড়ে নেয়। খবর হয় না যখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী (বিশেষ করে পুলিশ) টাকার জন্যে নিপীড়িতের পাশে না এসে নির্যাতনকারীর পাশে এসে দাড়ায়। খবর হয় না যখন কল্পনা চাকমারা হারিয়ে যায়। খবর হয়না যখন খাগড়াছড়ির ১৯২টি কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্পের শতভাগ টাকা মেরে দেয় রাজনৈতিক নেতারা যার মধ্যে অধিকাংশই পাহাড়ি। নিজেদের রক্ত নিজেরাই খেয়ে কুমীর বনে যায় (উদাহরণ: ইউনিপের নামে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উদ্দীপন চাকমা)।

খবর হয় যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকা মানুষ রুখে দাড়ায় এবং নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। খবর হয় যখন শান্তিরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী দুপক্ষের মধ্যে এসে দাড়ায় এবং লোক মারা যায়। খবর হয় যখন পাহাড়ি দুইপক্ষ নিজেদের রক্তে গা ভাসায় আর নিরীহ জনগনকে ত্রাসের রাজ্যে রাখে। খবর হয় যখন আদিবাসী নামকরণ নিয়ে সরকারের মনোভাব প্রতিষ্ঠায় অদ্ভুত সব যুক্তি দেখানো হয়।

এসবের মাঝে একটি জিনিষ আমরা ভুলে যাচ্ছি - তিন পার্বত্য জেলার ১৪টি উপজাতির মনে কি খেলা করছে। এই মূহুর্তে তারা আর বাঙ্গালী দের বিশ্বাস করছে না, এই মূহুর্তে তারা নিজেদের দেশের ভেতরে অবাঞ্ছিত ভাবছে। সংবিধানে আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে ডাকা বিক্ষোভে দুর্গম অঞ্চল থেকে চার ঘন্টা হেটে বর্ষীয়ান পাহাড়ি যোগ দিয়েছেন। তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এরপর হয়ত শান্তিচুক্তি রদ হয়ে আবার সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হবে। কিন্তু এমন তো কথা ছিল না।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন এবং মানবেন্দ্র লারমা স্বায়ত্তশাসন সহ বিভিন্ন উপজাতির দাবী তুলে ধরলে তিনি বলেন "তোরা সব বাঙ্গালী হইয়া যা"। ১৯৭৩ সালে সংসদের কাছে তার আহ্বানেও সাড়া দেওয়া হয় না। ফলশ্রুতিতে ১৯৭৪ সালে এম এন লারমা জনসংহতি সমিতির একটি সশস্ত্র গ্রুপ গঠন করেন, যা পরে শান্তিবাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে এবং পরে তারা অত্র অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ১৯৮১ সালে শান্তিবাহিনী দ্বিধাবিভক্ত হয় এবং ১৯৮৩ সালে বিপক্ষ দলের হাতে মানবেন্দ্র মারা যান। তবে তার অনুজ সন্তু লারমার নেতৃত্বে শান্তিবাহিনী গেরিলা যুদ্ধ অব্যহত রাখে। জিয়া এবং এরশাদ সরকারের আমলে শান্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী এবং আশির দশকে উপজাতিদের উপর নির্লজ্জ্ব হত্যাকান্ড চালানো হয়। কোন সরকারের আমলেই এইসব হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। এছাড়া গ্রেপ্তার, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মানবাধিকার কর্মীদের হেনস্থা করা, যৌন নিপীড়ন প্রভৃতি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে নিয়মিতই। সাথে সাথে শান্তিবাহিনীরও অনুরূপ মানবাধিকার লংঘনের মূল্য দিতে হয়েছে পাহাড়ি-বাঙ্গালি উভয়কেই।

এরশাদের আমলে ১৯৮২-৮৩ সালে ২৬ হাজারের ও বেশী ছিন্নমূল ও ভাঙ্গনের ফলে উদ্বাস্তু পরিবারকে চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় পুনর্বাসনের জন্যে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি পরিবারের স্থান হয় খাগড়াছড়িতে। আশির দশকের শেষের দিকে তাদের উপর ‘শান্তিবাহিনী’র হামলার ঘটনা বাড়তে থাকলে সেখান থেকে লোকজনকে সেনাক্যাম্প সংলগ্ন ৮১টি গুচ্ছগ্রামে স্থানান্তর করা হয়।

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর সম্পাদিত আওয়ামী লীগের শান্তিচুক্তি নিশ্চয়ই এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। এ অবস্থায় আনতে কি পরিমান রাজনৈতিক গণসংযোগ করতে হয়েছে তা অনুমেয়। শান্তিচুক্তির পর তিন পর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আশির দশকের তুলনায় বর্তমানে অর্ধেকের কম সেনাক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে। বর্তমানে যা হচ্ছে তাতে উল্টোস্রোত দেখা যাচ্ছে আর সরকারেরও মাথা ব্যাথা নেই।

শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর প্রায় দুই হাজার সশস্ত্র সদস্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তবে প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে একটি দল চুক্তি মানতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবীতে ১৯৯৮ সালে গঠন করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। এই বিভাজন অবশ্য জেএসএসকে দমাতে পারেনি এবং তারা দাপটেই কার্যক্রম চালিয়েছে খাগড়াছড়ি অঞ্চল ছাড়া যেখানে বেশীরভাগ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ ছিল ইউপিডিএফ এর। কিন্তু ২০০৬ সালের জরুরী সরকারের সময় সন্তু লারমার একক নেতৃত্ব থেকে দল বাঁচাতে সংস্কারের দাবীতে জনসংহতি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠন করে বেশ কিছু প্রতিবাদী নেতারা। এদের মধ্যে আছেন সন্তু লারমার ঘনিষ্ট সহকর্মী রূপায়ন দেওয়ান, তাতিন্দ্র লাল চাকমা পেলে, সুধাসিন্ধু খীসা, চন্দ্রশেখর চাকমা,শক্তিমান চাকমা প্রমূখ এবং তারা দলের নাম দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএনলারমা)। এই বিভাজনে লাভ হয় ইউপিডিএফ এর যার নমুনা দেখা যাচ্ছে এবারকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে - অনেক অঞ্চলে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।

বর্তমানে গতানুগতিক রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা একেবারে তলানীতে এসে ঠেকেছে। বিএনপি বরাবরই সেটেলার ভোটব্যাংক ভিত্তিক একটি দল, কাজেই ভবিষ্যতে তাদের ভোট পাবার চান্স কম। ভাড়াটে পাহাড়ী নেতা দিয়ে তারা এতদিন পার পেলেও যেহেতু তারা শান্তিচুক্তি ও সেনা প্রত্যাহারের বিরোধীতা (আওয়ামী লীগ একটি ব্রিগেড এবং ৩৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করে ২০০৯ সালে এবং এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পিটিশন করে তারা) করেছে সব সময়, তাদের আর গ্রহণযোগ্যতা নেই।

আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা এখন বিশ্বাস ঘাতকের পর্যায়ে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপুমনি আদিবাসী দিবসে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সংহতি প্রকাশ করেন। আর সেই তিনিই এবছর থেকে তিন পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের আদিবাসী সম্বোধন করতে বারণ করেছেন এবং বলেছেন বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই; বিভিন্ন উপজাতি আছে। তার এই অবস্থান পরিবর্তন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ফলশ্রুতিতে হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। আদিবাসী নিয়ে দেশী-বিদেশী যে বৃহত্তর রাজনীতি চলছে তা সামাল দিতেই যদি সরকারের এই পদক্ষেপ হয় তাহলে বলতে হয় এই পদক্ষেপটি চতুরতার সাথে নেয়া হয়নি। এই একটি ইস্যুকে পুজি করে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অনেককে তাদের চেতনায় সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। পার্বত্য অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যর্থতা সম্পর্কে নতুন করে বলার নেই। জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সকল নেতারাই ঠিকাদারিতে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আগে উন্নয়ন কার্যক্রমের ৭০ ভাগ লোক পেত এখন পুরোটাই যায় তাদের পেটে। পাহাড়িরা তাদের কেন বিশ্বাস করবে?

পার্বত্য উপজেলাগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষার হার ভাল। সরকারী স্কুল ছাড়াও ব্র্যাক ও অন্যান্য বেসরকারী স্কুল রয়েছে। আমি প্রচুর ছেলেমেয়েকে দেখেছি স্কুল ড্রেস পড়ে রাস্তায় হাটতে। কিন্তু উচ্চশিক্ষার হার কম - হাতে গোনা গুটিকয়েক কলেজ এবং কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এই অঞ্চলে নেই কোন বিশ্ববিদ্যালয় - প্রধানমন্ত্রী হাসিনা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিলেও পাহাড়িদের একপক্ষ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফলে সেটি এখনও পরিকল্পনা পর্যায়েই আছে। পাহাড়িদের উচ্চশিক্ষার জন্যে তাই বাইরে যেতে হয়। আর উচ্চ শিক্ষিতদের চাকুরির উপায় কি? নেই কোন কলকারখানা, উল্লেখযোগ্য বেসরকারী বাণিজ্য। তাই একমাত্র কাজ মিলে এনজিও বা সাহায্য সংস্থার অফিসে।

এরপর রয়েছে সাহায্য সংস্থা/এনজিওর দৌরাত্ম্য। এই সব সংস্থায় উচ্চশিক্ষিত ইউপিডিএফ এর কর্মীরা অনায়াসে কাজ পাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ইএনডিপির ২০১৩ পর্যন্ত প্রকল্প রয়েছে হাজার কোটি টাকার। তাদের স্বাস্থ্য কর্মসূচি গুলো খুবই উপযোগী (এবং অকার্যকর সরকারী স্বাস্থ্য সেবার বিকল্প) কিন্তু উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন কমিউনিটিকে তারা ৪ লাখ করে অনুদান দিচ্ছে যা রিপোর্ট মোতাবেক ইউপিডিএফ এর কর্মীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে ইউপিডিএফ সকল মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ফলে কিছু পাহাড়ি কাজ কর্ম বাদ দিয়ে দানে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে এবং তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে লাগানো যাচ্ছে।

অনেক এনজিওদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। মানবাধিকারের ইস্যুকে পুঁজি করে সব দোষ সরকারের ঘাড়ে, শান্তিচুক্তির উপর অথবা সুযোগ বুঝে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে চাপিয়ে দিলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? পাহাড়ের সমস্যার শতভাগ বহিরাগত বা সেনাদের দ্বারা উদ্ভুত নয় আর পাহাড়ের রাজনীতিতেও বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সমীকরণটা ভিন্ন- দুর্নীতিতে পাহাড়ি নেতারাও পিছিয়ে নেই আর ইউপিডিএফ-জেএসএস এর সংঘাত অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। যেখানে ভূমি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শিক্ষার দিক থেকে বহিরাগতরা পিছিয়ে, সেখানে কিছুসংখ্যক ভূমি সন্ত্রাসীদের জন্যে এসব দরিদ্র মানুষকে ঢালাওভাবে রাজনৈতিক গিনিপিগ বানানো হচ্ছে। এটি হচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি যা খেলছে সব পক্ষই।

এদেশ পাহাড়ি-বাঙ্গালি সবার। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন কোনো জনপদ নয় - একে গড়ে তুলতে হবে পাহাড়ি-বাঙ্গালি মিলেই। পাহাড়ি-বাঙ্গালি বা জাতি-উপজাতি কেন্দ্রিক বৈষম্য থাকা চলবে না। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে, উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়ন ইত্যাদি চালিয়ে যেতে হবে। পাহাড়িদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি শ্রদ্ধা শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারে। অথচ সেটা করার জন্যে একসাথে কাজ করার পূর্বশর্ত - পরস্পর বিশ্বাসটুকু হারিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক পরিস্থিতি। পাহাড়িরা শান্তি চুক্তিতে একটি ভুয়া প্রতিশ্রুতি ভাবছে। প্রতিনিয়তই নানা গুজব মানুষকে বিচলিত ও আতঙ্কিত করে। স্থানীয় সূত্রমতে আগামী যে কোন নির্বাচনে এলাকায় একচ্ছত্রভাবে পাহাড়িদের জয় হবে, ইতোমধ্যেই যার আলামত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাওয়া গিয়েছে। এখানে পুরো ১৯৭১ এর ফর্মুলার সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে। বহিরাগতদের অত্যাচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন, পাহাড়িদের অধিকার আদায়ের লড়াই, আর নিজভূমে মেজরিটি (যেমন ১৯৭০ এর নির্বাচনে পশ্চিম পাকিস্তানী কোন দল জিততে পারেনি এ বঙ্গে) এই স্ক্রিপ্টটি মিলে যাচ্ছে। এর সমাধান বা তাদের আপন করার কোন পরিকল্পনা নেই সরকারের বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের। তারা আদিবাসী নামকরণ ইস্যুতে তাদের দুরে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের ধারনা সেনাবাহিনীর বুলেটের নীচেই সব ঠিক থাকবে - এভাবে সেনাবাহিনীকেও সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এর পরিণতি কি হবে তা আমরা জানি।

ফলে পাহাড়িরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে আমাদের দুরত্ব তৈরি হচ্ছে। এই দূরত্ব ঘুচাতে এবং পাহাড়িদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সাধারণ মানুষেরা কি করতে পারি?

ছবি: 
10/07/2007 - 12:15am

মন্তব্য

আশফাক আহমেদ এর ছবি

চমৎকার লেখা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউ যখন এ সমস্যার সমাধান করলো না, তখন এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ কী? আবারও রক্তক্ষয়ী কিছু?

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

রেজওয়ান এর ছবি

এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নির্ধারন করবে এখানকার তরুণরা্। আশা করি তারা বিচক্ষণতার পরিচয় দেবে। ইতিমধ্যেই ফেসবুক ও ব্লগ ব্যবহার করে তাদের উপর অন্যায় অবিচারের কথা জানাচ্ছে।

কল্যাণF এর ছবি

চলুক

তানিম এহসান এর ছবি

পাহাড় জাগুক, বহুদিন পাহাড়ী বন্ধুদের প্রাণ খুলে হাসতে দেখিনা। পাহাড় জাগুক!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মন খারাপ

নিটোল. এর ছবি

দারূণ লেখা! চলুক

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক

ফাহিম হাসান এর ছবি

শিরোনামে একটা বানান ভুল আছে - "দূরে"

লেখার মধ্যে দূরত্ব বানানটাও ভুল রয়ে গিয়েছে।

আপনার লেখাটা ভাল লেগেছে। মূল কথার সাথে একমত।

রেজওয়ান এর ছবি

ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেবার জন্যে।

উচ্ছলা এর ছবি

তথ্যবহুল সচেতনতামূলক লেখাটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ চলুক

সাফি এর ছবি

চলুক

রেজওয়ান এর ছবি

পাহাড় জাগুক। সবাইকে ধন্যবাদ।

রেবেকা এর ছবি

বাংলাদেশের হিন্দুদের সাথেও মুসলমানদের দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে। হিন্দুরা মুসলমানদেরকে আর আগের মত বিশ্বাস করতে পারছে না। আমরাও সংখ্যাগরিষ্টের অহংকারে তাদের মন বোঝার চেষ্টা করছি না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।