একটি গবেষণা মুখর দিন

সজল এর ছবি
লিখেছেন সজল (তারিখ: বুধ, ০২/১১/২০১১ - ৩:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্বভাব বিরুদ্ধ ব্যাপক কসরত করে গ্র্যাড স্কুলে ঢুকেছি, তারপর সবকিছু স্মুথলি চলার কথা। জিআরই, টোফেল, অনিচ্ছুক প্রফেসরদের কাছ থেকে রিকমেন্ডেশন আদায় এবং সবশেষে আটলান্টিক ইত্যাদি নানা সমুদ্র পেরিয়ে জ্ঞানার্জনের টানে সুদূর মার্কিন মুল্লুকে এসেছি, তাতেই মুগ্ধ হয়ে পিএইচডি সহ যা যা আমার করতে ইচ্ছা করে তার অনুমোদন দিয়ে দেয়া উচিত। কিন্তু মার্কিনিরা জাতি হিসাবে ভয়াবহ সন্দেহ পিশাচ, আমার মত “ভয়াবহ মেধাবী”কেও কিনা তাই কোয়ালিফায়ারের ব্যারিয়ার পেরিয়ে পিএইচডি যাত্রা করতে হবে!

আমাদের কোয়ালিফায়ার অবশ্য গাদা খানেক কোর্সের উপর রিটেন এক্সাম না, ভার্সিটিতে এক বছর কাটিয়ে ফেসবুকিং, কান্নাকাটি ইত্যাদির পাশাপাশি গবেষণা কতদূর করেছি তার একটা খতিয়ান দিতে হবে, শেষে ভাইবায় প্রফেসরদের ট্যাকল সফল ভাবে উৎরে যেতে পারলে অফিসিয়ালি পিএইচডি প্রোগ্রামের ছাত্র। সৎ ভাবে উত্তর দিতে গেলে বলতে হয়, টুকটাক কিছু চেষ্টা করলেও আদতে পাতে তুলার মত কিছুই করি নাই। কিন্তু আমরা জানি সততা নামের একটা জিনিস ন্যাচারাল হিস্টরি মিউজিয়ামের এক্সটিংট এক্সিবিটেই শুধু পাওয়া যায়। তাই সাজিয়ে গুছিয়ে একটা ডকুমেন্ট লিখার জন্য মাস দুয়েক ধরে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে, ডেডলাইনের ছয় দিন আগে সত্যি সত্যি লিখতে বসে গেলাম।

এই ছয় দিনের একদিন এই শনি বার। প্রফ প্রাথমিক খসড়ার উপর টক-ঝাল মন্তব্য করে পাঠিয়েছেন। এবার আমার উদ্দেশ্য দ্বিতীয় খসড়া তৈরী করে তার উইকএন্ড মাটি করা। মনে রাখতে হবে, শুধু প্রফরাই গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্টদের জীবনে নরক গুলজার করে এটা সত্যের এক পিঠ মাত্র। আমার মত অলস এবং সময়ের কাজ ‘সময়ে’ (ডেডলাইনের আগে আগে) করা ছাত্রের হাতে পড়লে প্রফরাও এই মর্ত্যলোকে নরক অবলোকন করেন সময়ে সময়ে।

শুক্রবার নানারকম কাজের চেষ্টা করে এবং নিজের জীবন নিয়ে লা-মিজারেবল এর সিকুয়েল লিখে ফেলা যায় কিনা ইত্যাদি মারফতি চিন্তা করে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত দুইটা বেজে গিয়েছিলো। সকালে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে তাই বারোটা। সামনে একটা লম্বা দিন, তাই মানসিক ভাবে তরতাজা থাকা চাই। গানের উপর টনিক নেই, তাই ঘন্টা-দুয়েক ধরে চলল গান শুনা। তারপর রেডি হয়ে ডিপার্টমেন্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা।

সাম্প্রতিক সাইকেল পতনের পর শরীরের কলকব্জা এখনো সাইকেল চালানোর মত অবস্থায় আসেনি এবং উইকএন্ডে বাস প্রায় চলেই না বলে হেঁটে হেঁটে গিরি লংঘনের সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রায় অসীম দৈর্ঘ্যের ক্যামেরন এভিনিউ পেরিয়ে ক্যাম্পাসের আশেপাশে আসতে আসতে টের পেলাম আমাদের টিমের আজকে নিজেদের মাঠে খেলা। চারদিকে সাজসাজ রব, এখানে সেখানে তাবু টানিয়ে কি ফ্র্যাটার্নিটি হাউজগুলোর সামনের কাঠের বেঞ্চে বসে বিয়ার হাতে জটলা। আমি বিরক্তির সাথে মনে মনে বলি, “আন্ডারগ্রেডস!”।

আমাদের টিমের নাম টার হীলস আর টিম মাসকট হচ্ছে ইউএনসি র্যা ম, শিং উচিয়ে তেড়ে আসা এক ভেঁড়া। অবশ্য স্টুডেন্ট স্টোরে যে স্যুভনির পাওয়া যায়, তাতে এই শিংওয়ালা ভেড়াকেই ভীষণ কিউট লাগে। আমার বিদগ্ধ মতামত হচ্ছে সব বিবাহিত লোকের প্রতীক হতে পারে এই কিউট ভেড়া। সে যাই হোক, আমি হচ্ছি “পুওর গ্র্যাড স্টুডেন্ট”, অবস্থার ফেরে পড়ে শিং ভেঙ্গে নিরীহ ভেড়া প্রজাতিতে রূপান্তরিত, তাই এই সব পেছনে ফেলে এগোই ডিপার্টমেন্টের দিকে। সবার মতই বলি “গো টার হীলস”, সাথে “হোয়্যারেভার ইউ ওয়ান্ট টু গো”!

কয়েকধাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে অফিসে ঢুকে মনে হলো আমি ভীষণ ক্লান্ত। কিন্তু অনেক কাজ, চাইলেই কি আর বিশ্রাম নেয়া যায়! অনেক কাজের চাপ থাকলে আমার সাধারণত শরীর খারাপ লাগে, ঘুম পায়, অনেক দিনের পুরনো নানা দুঃখ উঠে আসে। অফিসিয়ালি কাজ শুরুর আগে তাই মনটাকে স্থির করা চাই, ফেসবুকে একটু ঢু মেরে নিলে কেমন হয়! ফেসবুকের একটা লিংক ধরে লোপামুদ্রার গান শুনতে শুনতে হঠাৎ আটকে যাই “বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না” গানটিতে। তাইতো, যেখানে বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না, সেখানে রিপোর্ট লেখার মত তুচ্ছ দৈনন্দিন কাজ করার মানে! এভাবে পার হয় ঘন্টা দুয়েক।

এবার নিজেকে বললাম, “লং নাইট এহেড মেট, ইউ নীড রেস্ট”। আমাদের বিল্ডিং-এ গ্র্যাজুয়েট লাউঞ্জ নামের দুই রূমের একটা কমন রূম আছে। একটা রূমে টেবিলটেনিস থেকে শুরু করে নানা রকম খেলার ব্যবস্থা, বানরের খাঁচার দেয়ালে টানানো কলার ছবির মত, দেখা যায়, ধরা যায় না। অন্য রূমটাতে একটা বড় স্ক্রিনের টিভি আর দুইটা কাউচ। কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের একমাত্র কম্পিউটার বিহীন কর্নার। এত ফিরিস্তি দেয়ার কারণ, এই লাউঞ্জের দ্বিতীয় রূমটা সাধারণত রাতে আটকে যাওয়া কিংবা “সারাদিন আমি ম্যালা কাজ করছি” উপলব্ধি প্রাপ্ত ছাত্রদের ঘুমানোর জায়গা। ঘুমানোর জন্য অবশ্য এটা আমার প্রিয় জায়গা না, পাশের রূমে কেউ খেলতে আসলে ঘুমের দফারফা হয়ে যায়। কিন্তু এখন আর উপায় নেই, আমার প্রিয় কুইন কনফারেন্স রূমটা ইতিমধ্যে আরেকজন দখলে নিয়েছে।

দেড় কি দুই ঘন্টা “ন্যাপ” নেয়ার পরে মনে হলো, অনেক হয়েছে এবার কাজ শুরু করতে হবেই। কিন্তু তার আগে কিছু খেয়ে নিলে কি ভালো হত না? বের হতে গিয়ে দেখি গ্রুপের ডেইভের রূমে আলো জ্বলছে। আমিতো আর অসামাজিক না, তাই ওর রূমে ঢু মেরে যাওয়া উচিত। গিয়ে দেখি দুই মনিটরের সামনে দুই চোখ মেলে ও বসে আছে। এক মনিটরে নানা ডাইমেনশনের জ্যামিতিক বস্তু কাটাকাটি চলছে, আরেক মনিটরে তুষারপাতের মাঝে ফুটবল’ খেলে যাচ্ছে দুই কলেজ টিম। আমার মনে হলো, এই জন্যই এই ছেলেটা এত এত গবেষণা করে ফাটিয়ে দিচ্ছে, আমার একটা মাত্র মনিটর, তাতে তো আর কাজ-অকাজ দুইই করা যায় না।

খেয়ে ফিরে আসার পর ঘটনা ঘটেই গেলো, অর্থাৎ আমি সত্যি সত্যি রিপোর্ট নিয়ে বসে গেলাম। শুরুতে প্রফ আগের দিন অফিসে এসে রিপোর্ট নিয়ে কী কী বলে গিয়েছেন, সেটা মনে করার চেষ্টা করলাম। অবশ্য লাল কালিতে আংশিক দুর্বোধ্য হস্তাক্ষরে ওর কমেন্টগুলো লেখাই আছে। একটা জায়গা সম্পর্কে ওর কমেন্ট মনে পড়লো, “এই খানে জিনিসগুলো ভালোই লিখেছ, তবে তোমার ইংলিশ এখানে চপি”। এই চপি শব্দটা সে আমার রাইটিং সম্পর্কে প্রায়ই ব্যবহার করে, আমি অবশ্য এর অর্থ জানি না, তবে বুঝতে পারি মন্দ কথা। আর মন্দ কথা বলেই আর অর্থও দেখতে যাই না, যেমন অর্থ দেখতে চাইনি কলেজের প্রথম দিকে প্রথম পরিচয়েই এক বন্ধু এফ আদ্যাক্ষরের একটা শব্দ দেখিয়ে মানে জানি কিনা জানতে চেয়ে মিটি মিটি হাসছিল যখন।

যত সমস্যা গোড়াতেই, অর্থাৎ ইনট্রোডাকশনে। বাকিটা কমিটির লোকজন পড়ে দেখবে কিনা কে জানে। তাই আমার কাজটা যে কম্পিউটার সায়েন্সের সাথে সত্যি সত্যি সম্পর্কিত সেটা আরো ভালো ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। তারপর কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অংশটাতে গিয়ে পুরাই বেকুব হয়ে বসে রইলাম। একগাদা বই পড়ে যতটুকু বুঝেছিলাম, সেটাই নিজের ভাষায় লিখেছি। কিন্তু সবাই জানে কোয়ান্টাম অনিশ্চয়তার কথা, তাই নিজের লেখা পড়ে নিজেই আর বুঝতে পারলাম না কী বলতে চেয়েছি।

গাউসিয়ান থেকে কয়েকটা সুন্দর দেখে মলিকুলের ছবি তৈরী করে এনেছি, ডকুমেন্টের বর্তমান ছবিগুলোকে সরিয়ে বসানোর জন্য। গবেষণা একটি সিরিয়াস কাজ, তাই কয়দিন ধরে তল্পি তল্পা গুটিয়ে উবুন্টুতে কাজ করছি। লিনাক্স সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুব গভীর, কার্নেল পর্যন্ত সেটা পৌঁছায়, চাই কি দরকারে সিস্টেমকে ডাকাডাকি করতে পারি। কিন্তু সমস্যা হলো সারফেস লেভেলের জ্ঞান নিয়ে, যেমন একটা বিশাল সাইজের ছবিকে রিসাইজ এবং ক্রপ করে দরকার মত সাইজে আনা। ছবি এডিটিং নিয়ে আমার জ্ঞান মাইক্রোসফট পেইন্ট আর মাইক্রোসফট অফিস পিকচার ম্যানেজার পর্যন্ত।

বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের যেমন ছবি আঁকার নিজস্ব প্রিয় মাধ্যম থাকে, আমিও তেমনি পেইন্ট ছাড়া ছবি এডিটে যাই না। কিন্তু উবুন্টুতে এই রকম কোন অ্যাপ্লিকেশন আছে কিনা তা তো জানি না। তাই মশা মারতে কামান দাগার মত করে ছবি ক্রপ করতে গিম্প ইনস্টল করে ফেললাম। কিন্তু তারপর দেখি ক্রপ করে সেটাকে নতুন ছবি হিসেবে সেইভ করতে পারছি না। বুঝতে পারলাম, “রাত বাড়ছে, হাজার বছরের সেই পুরোনো রাত” (রাত বাড়লে মাথা কাজ করে না, তাই সহজ জিনিসও করতে গিয়েও তালগোল পাকিয়ে ফেলি)।

সদ্য হাতে খড়ি হওয়া লেটেকের সাথে ধস্তাধস্তি করি কিছুক্ষণ, ইতিমধ্যে বাংলার দামাল ছেলেরা ঢাকার মাঠে খেলতে নেমে গেছে। সাকিব টপাটপ উইকেট তুলে নিতে থাকলে আমিও টপাটপ প্রফের লাল কালির বেড়া ডিঙ্গিয়ে সামনে এগোতে থাকি।

কাজ শুরুর পর প্রায় ঘন্টা ছয়েক কেটে গেছে, রাত জেগে কাজ করলে বকশীবাজারে যাওয়ার একটা ব্যাপার ইনস্টিংকটের মাঝে ঢুকে গেছে। শূন্যের সামান্য নীচের তাপমাত্রায় বেরিয়ে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পাশের ক্যাফেতে খেতে গিয়ে শহীদ হওয়ার ইচ্ছা হলো না, তাই গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাখা ভেন্ডিং মেশিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রাউন্ড ফ্লোর আর একতলার লাউঞ্জ পুরা বিল্ডিং থেকে লকড আউট করে রাখা হয়। ন্যাড়া যেহেতু বেলতলায় বার বার যায় না, যাওয়ার আগে পকেট বার বার চেক করে নিলাম, সাথে ইলেকট্রনিক পাস নিয়েছি কিনা।

আমাদের গ্রাউন্ড ফ্লোর গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকার লোকেদের জন্য নরক বিশেষ, অর্থাৎ প্রচন্ড ঠান্ডা, এবং সেটা কৃত্রিম ভাবেই। ভেন্ডিং মেশিনের সামনে গিয়ে পপ কর্নের প্যাকেট দেখে গভীর দার্শনিক ভাবনায় ডুবে গেলাম, নিজের বর্তমান জীবন তো সিনেমার মতই (আর্টফিল্ম যদিও), সেটা উপভোগ করার জন্য পপকর্নের চেয়ে জুৎসই আর কী হতে পারে! তবে এর আগে একদিন কিনে টের পেয়েছিলাম এর মেয়াদ এক বছর আগেই পেরিয়ে গেছে, তাই চকলেট আর কুকি কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। চকলেটের নীচে তার আইটেম কোডের পাশে দাম লিখা আছে এক ডলার। এক ডলার ঢুকিয়ে কোড ঢুকালে নীচ দিয়ে প্যাকেটটা বের হয়ে আসার কথা। কিন্তু ডিসপ্লেতে দেখানো শুরু করলো ১.২৫ ডলার। রাত-বিরাতে আমাকে নিরূপায় পেয়ে পুজিবাদী দেশের টাকা খেকো মেশিন পর্যন্ত কালোবাজারি শুরু করে দিলো! আমি অস্ফুটে অভিশাপ দেই, ধ্বংস হোক এই পুঁজিবাদী দেশ, তবে ২০১৫ এর পরে।

দামাল ছেলেরা তখন ব্যাটিং শুরু করে দিয়েছে। তামিমের ধুম ধাড়াক্কা মার চলছেই। চকলেটে একটা কামড়, এক ওভার খেলা দেখার ফাঁকে একটা একটা করে লাল কালির ব্যবস্থা করে চলছি। আমার সেকেন্ড ড্রাফট তৈরী হতে হতে বাংলাদেশ ইনিংসে মড়ক শুরু হয়, কিন্তু তাতে ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক ভাব কমে না। সুকান্ত কি এমনই একটা ম্যাচ দেখতে দেখতেই লিখেছিলেন, “জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়ানোর নয়”?

রাত জেগে কাজ করছি, অথচ প্রফ জানল না, এর চেয়ে বড় পণ্ডশ্রম আর কিছুই হয় না।সকাল চারটার দিকে তাই তড়িঘড়ি করে সেকেন্ড ড্রাফটের সমাপ্তি ঘোষণা করে প্রফকে মেইল করে দিলাম। এবার বাসায় ফিরা যায়, কিন্তু ক্যাটস আই থেকে কেনা মিলিটারি ডিজাইনের যে জ্যাকেটটা কয়েকদিন ধরে গায়ে চড়িয়ে বেড়াচ্ছি তার ডিজাইনারের মাথায় আর যাই থাকুক শীত আটকানোর ব্যাপারটা ছিলো না। তাপমাত্রা এখনো শূন্যের উপরে পৌঁছায়নি, তাই আবারো গ্র্যাড লাউঞ্জে গেলাম ঘুমানোর জন্য। পাশের রমে গিয়ে তাপমাত্রা বাড়িয়ে নেয়া যায়, তার বদলে অনেক পুরনো একটা স্লিপিং ব্যাগ কম্বলের মত করে গায়ের উপর টেনে নিলাম। অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, এবার আর আমার নাকে কোন গন্ধ লাগছে না।

অ্যালার্ম দিয়েই ঘুমিয়েছিলাম, কিন্তু আমার ঘুমের মাঝে আমার ফোনের ব্যাটারি মৃত্যুবরণ করায় ঘুম থেকে উঠতে উঠতে বারোটা বেজে গেলো। নিজের অফিসে গিয়ে ইয়াহু ওয়েদারে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রী ফারেনহাইট দেখে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

লিফটে করে নামতে নামতে ফারেনহাইটকে সেলসিয়াসে নিয়ে আসল অবস্থাটা বুঝার একটা চেষ্টা করলাম। ৫০ থেকে ৩২ বাদ দিয়েই মনটা ভালো হয়ে গেলো, বাকি কাজ শুধু ১৮ কে ১.৮ দিয়ে ভাগ করা। কঠিন কঠিন জিনিস নিয়ে কাজ করতে করতে একটু কঠিন ভাগ করতে হলেই বেকায়দায় পড়ে যাই। একটা ‘সকাল’ এর থেকে ভালোভাবে কী করে শুরু হতে পারে!

রবিবার, যথারীতি কোন বাস নেই। অসীম দৈর্ঘ্যের ক্যামেরন অ্যাভিনিউ ধরে আবার শুরু করলাম হাঁটা। এভাবে শেষ হলো একটি গবেষণা মুখর দিন।


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

হুমম, ইমো এখনো কাজ করছে না বলে দিতে পারছি না।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ হে ইবনে বতুতা

মাউস দিয়ে ইমো টেস্টঃ ফেইলড মন খারাপ [কোলন বাম প্যারেনথেসিস ওয়ার্কস]

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

উচ্ছলা এর ছবি

পিএইচডি-র সবকটা ছাত্র চরম ফাঁকিবাজ! ফাঁকিবাজিতে এদেরকে নোবেল প্রাইজ দেয়া উচিৎ!

এনি ওয়ে, লেখা পড়ে বিমল আনন্দ পেয়েছি হাসি

সজল এর ছবি

পুরা পোস্ট জুড়ে এত এত কাজের বর্ণনা দিলাম, তাও ফাঁকিবাজ বললেন! অ্যাঁ

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কল্যাণF এর ছবি

দারুন

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ সচলের পাঠক পুলিশ!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কল্যাণF এর ছবি

আপনার যেরকম ভয়ংকর ব্যাস্ততার নমুনা দিলেন তার মাঝে আরো লেখা পড়ার আশা লতায় পাতায় ক্ষীণ হয়ে আসছে রে ভাই (দন্ত বিকাশ ইমো)

সজল এর ছবি

সাধারণত প্রচন্ড কাজের চাপে পড়লে ব্লগ লেখার আগ্রহ বেড়ে যায় দেঁতো হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

তাসনীম এর ছবি

এক সময়ে মিডওয়েস্টে থাকতাম। তখন ফারেনহাইটকে সেন্টিগ্রেডে কনভার্ট করে আঁতকে উঠতাম প্রতিদিন। একবার -৪০ এ নেমে গিয়েছিল। ওইদিন কনভার্ট করতে হয়নি।

লেখা ভালো লেগেছে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সজল এর ছবি

আমি ফোনের ওয়েদার অ্যাপ্লিকেশনে সেলসিয়াস সেট করে রেখেছি, এখনো সেলসিয়াস, কেজি, কিলোমিটারে আছি। অবশ্য ফারেনহাইট, পাউন্ড, মাইলের একটা ধারণা হয়ে গেছে।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার কম্পুতে, ওয়েদার.কমের কুকিতে, সর্বত্রই সেলসিয়াস সেট করা। এই পাষণ্ড দেশের সিস্টেম মানিয়ে নিতে বয়েই গেছে আমার!

স্বপ্নহারা এর ছবি

কানাডাতে সেলসিয়াসেই আছি হাসি কিলোমিটারেও...হাসি

কিন্তু কেনযে পাউন্ডে...মন খারাপ (তবে পাউন্ড সয়ে গেছে)

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

চরম উদাস এর ছবি

চমতকার। আপনার সেন্স অফ হিউমার দারুণ।

সজল এর ছবি

হু হু! এইবার সবাইকে বলে বেড়াব, দেখ ব্যাটা চরম উদাস সার্টিফাইড হিউমার নিয়া ঘুরে বেড়াই।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

গবেষণার ব্যাপকতার বর্ণনাও ব্যাপক হয়েছে।:)

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ ডাবল অরিত্র

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি

গ্র্যাড স্টুডেন্টদের মধ্যে দেখি অনেক মিল! দেঁতো হাসি আমিও সবচেয়ে বেশি প্রোডাক্টিভ থাকি ডেডলাইনের দুইদিন আগে।

আপনার রসিকতার ধরন যে আলাদা তা নিয়ে কৌস্তুভের সাথে একদফা আলোচনা আগেই হয়েছে, নানা পোস্টে এ কথাটা উল্লেখও করেছি। সত্যি, আমি এরকম হিউমারের মারাত্মক ভক্ত। slapstick humor আমার খুব বেশি ভাল লাগে না, বরঞ্চ এরকম আধা শুকনা - কিঞ্চিৎ ভাষার মোচড়ে - পোয়াটেক আঁতলামী আমার মন-পছন্দের জঁরা।

জাবেদুল আকবর  এর ছবি

গ্র্যাড স্টুডেন্টদের মধ্যে দেখি অনেক মিল! আমিও সবচেয়ে বেশি প্রোডাক্টিভ থাকি ডেডলাইনের দুইদিন আগে।

সাচা কথা হাসি

সজল এর ছবি

আপনার ফিডব্যাকের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সত্যি বলতে কি আপনি, কৌস্তুভ সহ কয়েকজন পিঠ চাপড়ে দেন বলেই, মাঝেই মাঝেই ভালো কিছু লিখতে পারি না, তাই আর লিখব না এই রকম ভাবনা আসার পরও লিখে যাচ্ছি। আঁতলামী মিশানো জোকসের একটাই সমস্যা, সবাই বুঝতে পারছে কিনা সেটা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারি না।

সহৃদয় মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি

ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই খুব সহজেই আপনার লেখার সাথে রিলেইট করতে পারবে, অন্যদের কথা বলা একটু মুশকিল।

আচ্ছা আরেকটা কথা

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন যেমন শুধু চারকোল দিয়ে ছবি আঁকতেন

উনি কিন্তু জলরঙে প্রচুর কাজ করেছেন, টেম্পেরা/এগ টেম্পেরায় তাঁর একটা নিজস্ব স্টাইলও আছে, দুর্ভিক্ষ সিরিজের কিছু ছবি খাগের কলমে করা হয়েছে। লেখার মজাটুকু নষ্ট হয় না, তবু খটকা রয়ে যায়।

সজল এর ছবি

জিনিসটা জানতামই না, ছোটবেলায় দুর্ভিক্ষ সিরিজের কিছু ছবি দেখা ছিলো শুধু। ধরিয়ে দিয়ে ভালো করেছেন, লাইনটা একটু বদলে দিলাম হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শিশিরকণা এর ছবি

গ্র্যাড স্টুডেন্টদের মধ্যে দেখি অনেক মিল! আমিও সবচেয়ে বেশি প্রোডাক্টিভ থাকি ডেডলাইনের দুইদিন আগে।

পি এইচ ডির শেষ পর্যায়ে এসে আমার প্রোডাক্টিভিটি শুরু হইত ডেডলাইনের দুই দিন পরে। এর মাঝে কম্পু ক্র্যাশ, ভাইরাস জ্বর নানান সমিস্যা হইত। দেঁতো হাসি এই করে করে থিসিস নামাইছি দুই সপ্তাহে মাত্র। :-*

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সজল এর ছবি

দুই সপ্তাহে থিসিস নামাইছেন! আপনার তো গ্র্যাড স্টুডেন্টদের জন্য পানি পড়া আর পায়ের ধুলার বিজনেসে নামা উচিত। এক আউন্স পায়ের ধুলা হাজার ডলার। দরীদ্র গ্র্যাড স্টুডেন্টদের জন্য স্পেশাল ডিসকাউন্ট।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

জাবেদুল আকবর  এর ছবি

আমার ডেইলি লাইফটাকে আপনার লেখার মাঝে খুজে পেলাম :)।

সজল এর ছবি

আমার ডেইলী লাইফ আরো বাজে ভাবে কাটে হাসি
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হাহ গবেষণা ... মন খারাপ( এই এক বছরে একটা জিনিসই বুঝলাম, এই কাম আমারে দিয়ে হবে না। তাই বাকি দিনগুলাও এরকম ফাঁকিবাজি করে কাটাব বলেই সিদ্ধান্ত নিলাম দেঁতো হাসি

লেখা যথারীতি (গুড়)

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
আমিতো মনে মনে বিরাট সিরিয়াস, কিন্তু কাজ করতে গেলেই কেন জানি মন বসে না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পাঠক এর ছবি

হাসি
অনবদ্য লেখা। ভালো লেগেছে। প্রফেসর এর প্রতিক্রিয়া পরবর্তী কোন পোস্ট কি আশা করতে পারি ?

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ পাঠক। আমার প্রফ লোক ভালো। আমি হাজার স্টূপিডিটি করলেও সে আমারে কড়া কথা শুনায় না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পপেল এর ছবি

লেখা ভাল হয়েছে। তোর কোয়াল কবে?

এই দেশে টেম্পারেচার কনভার্সন আমার মত নতুনদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ১.৮ দিয়ে ভাগ করা এড়াতে তাই ০.৫৫৫... দিয়ে গুণ করি, মানে আমি সিরিজ যোগ করি। তবে ডাটা যেরকম তাতে দুইটা টার্ম যোগ করলেই কাজ হয়।

বিজোড় হলে, যেমন, ৬৫ কে কনভার্ট করতে হলে, ৬৬ ধরতে হবে। ৩২ বিয়োগ দিলে থাকে ৩৪। তাকে দুই দিয়ে ভাগ করলে ১৭। অর্থাত ১৭+১.৭ = ১৮.৭ এর কাছাকাছি। যেহেতু আগেই ১ বেশি নিয়েছি, সো এখন এটাকে ১৮.৫ বলে চালিয়ে দেয়া যায়। (দুই ঘর যোগ করে ০.৫ একুরেসিতে ফ্লোর)

জোড় হলে, যেমন ৭৮ এর জন্য ৩২ বাদ দিলে ৪৬। এটাকে ৪৬+৪.৬+ ... = ৫১ বলা যায়। (দুই ঘর যোগ করে ০.৫ একুরেসিতে সিলিঙ)

সজল এর ছবি

হা হা, এই না হলে পপেল! ভালো পদ্ধতি। আমি অবশ্য ৩২ বাদ দিয়ে ঝামেলার সংখ্যা পেলে ২ দিয়ে ভাগ করে একটা কাছাকাছি তাপমাত্রা নিয়ে নেই। আর আইফোনতো আছেই সেলসিয়াসে তাপমাত্রা দেখানোর জন্য, বুইড়া মাথারে আর কত খাটানো যায় চোখ টিপি

গতকাল পেপার জমা দিলাম। ভাইভা হবে ডিসেম্বারে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

বিবাহিত লোকের প্রতীক হতে পারে ভেড়া, এবং আপনি এখন ভেড়া প্রজাতিতে রূপান্তরিত। এই দুটো কথার থেকে কী বোঝা যায়? অভিনন্দন জানান, পাঠকসকল! দেঁতো হাসি

সজল এর ছবি

এই কনফিউশন তৈরী হতে পারে বলেই না শিংটা ভেঙ্গে নিলাম দেঁতো হাসি
তাতে এই শিংওয়ালা ভেড়াকেই ভীষণ কিউট লাগে। আমার বিদগ্ধ মতামত হচ্ছে সব বিবাহিত লোকের প্রতীক হতে পারে এই কিউট ভেড়া। সে যাই হোক, আমি হচ্ছি “পুওর গ্র্যাড স্টুডেন্ট”, অবস্থার ফেরে পড়ে শিং ভেঙ্গে নিরীহ ভেড়া প্রজাতিতে রূপান্তরিত
যদিও অভিনন্দন পাইতে কি আর মন চায় না চোখ টিপি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

লেখা খুবই উপাদেয় হয়েছে।

নিজের বর্তমান জীবন তো সিনেমার মতই (আর্টফিল্ম যদিও),

রাত-বিরাতে আমাকে নিরূপায় পেয়ে পুজিবাদী দেশের টাকা খেকো মেশিন পর্যন্ত কালোবাজারি শুরু করে দিলো!

সদ্যই phdcomics এর মুভিটা দেখে ফিরলাম। কাল সকালে আমার প্রোজেক্ট প্রেজেন্টেশন পুরো গ্রুপের সামনে, কিন্তু রিপোর্ট সিমুলেশন কিছুই না করে মুভি দেখার পর নেটাচ্ছি, এই তো আদর্শ procrastination এর জীবন দেঁতো হাসি

আর আপনার কোয়ালসের জন্য আশীর্বাদ রইল। আপনে এমনিতেই ফাটাইন্না পোলা, তার উপর বামুনের আশীর্বাদ মিছা যাবে না নিশ্চয়ই। যদি যায়, বুঝতে হবে কমকাস্টের গণ্ডগোল ছিল, ঠিকমত পৌঁছয়নি... চোখ টিপি

সজল এর ছবি

গোমাতার মাংস ভক্ষণ করা বামুন, তার আশির্বাদে কী হবে তাতো জানাই আছে। রেজিস্ট্রেশন করেও পিএইচডি কমিকসের মুভিটা দেখতে যেতে পারি নাই কাজের চাপে, সেদিন বুঝতে পারলাম, পিএইচডি কমিকস হচ্ছে আসলে "জীবন থেকে নেয়া"।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শাব্দিক এর ছবি

আপনার লেখা আগে পড়েছি কি না মনে করতে পারলাম না। এই লেখা আর এতে দেয়া পুরোন লিঙ্ক টাও পড়লাম। দুটোই খুব ভাল লাগল। সরাসরি রম্য লেখার চেয়ে এধরনের লেখা ভাল লাগে।

আমি এরকম হিউমারের মারাত্মক ভক্ত। slapstick humor আমার খুব বেশি ভাল লাগে না, বরঞ্চ এরকম আধা শুকনা - কিঞ্চিৎ ভাষার মোচড়ে - পোয়াটেক আঁতলামী আমার মন-পছন্দের জঁরা।

ফাহিম হাসানের এই মন্তব্যের সাথে একমত।
অটো - লেখার পাশে লেখকের অন্য লেখাগুলো ইদানিং দেখা যাচ্ছে না

সজল এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ শাব্দিক।
অটঃ এটা মনে হয় সাময়িক ভাবে ডিজ্যাবল করে রাখা হয়েছে। যেকোন ব্লগের নীচে "লেখক এর ব্লগ" (এখানে যেমন "সজল এর ব্লগ") এ ক্লিক করলে তার লিখা সব ব্লগের পেজে নিয়ে যাবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাসেল আশরাফ এর ছবি

কবে যে একটা গবেষণা মুখর দিন পার করবো।

সজল এর ছবি

হে হে, দিল্লীকা লাড্ডু খাইতে এত ইচ্ছা!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দিহান এর ছবি

অনেক ভালো লাগে আপনার লেখা...

ইদানীং পৃথিবী অনুভব করে, একটা সূর্যে চলছেনা আর
এতো পাপ, অন্ধকার
ডজনখানেক সূর্য দরকার।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ দিহান। আমি এমনিতে মন্তব্য কম করি, কিন্তু আপনার প্রতিটা লেখাই বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ি।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ব্যাপক কষ্ট পাইলাম ভাই আপনের কষ্ট পইড়া। লেখাডা সেরাম হইছে।

সজল এর ছবি

কষ্ট পাইলেন কেন? চিন্তিত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাগিব এর ছবি

১)

@সজল, তাপমাত্রা ফারেনহাইট থেকে সেলসিয়ারে পাল্টানোর সহজ একটা অ্যাপ্রক্সিমেশন হলো,

৩০ বাদ দিয়ে অর্ধেক

জ্বর ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে, অন্তত আবহাওয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা নিখুঁতভাবে কতো, তা আসলে জানার দরকার পড়ে না। এই কারণেই এই সিস্টেমে আন্দাজ করা যায় কতটুকু ঠান্ডা বা গরম, মোটের উপরে।

আমিও এখন মেট্রিক সিস্টেমে চলি তাপমাত্রার ক্ষেত্রে অন্তত। অবশ্য জাতে ওঠার একটা ভালো টেকনিক এইখানে বলে দেই। বাংলাদেশের জমিরুদ্দিন আমেরিকায় যখন মিস্টার জনি সাজে, তখন খুব ভাব নিয়ে ফারেনহাইটে বলতে হয় তাপমাত্রা, যেমন "আজকে তো সিক্সটিফাইভ হবে, কালকে আবার ফর্টিতে নেমে যাবে"। আমার এই থিওরির কোনো ব্যতিক্রম দেখিনি। হাসি

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সজল এর ছবি

অ্যাপ্রক্সিমেশন টা পছন্দ হইলো। ৫০ এর জন্যতো একেবারে ঠিক ভ্যালুই দিয়ে দেয়।
ডিসেম্বারে দেশে গিয়েই জাতে উঠার টিপস কাজে লাগাতে হবে দেঁতো হাসি । আম্রিকা ঘুরে গিয়েও যদি জাতে না উঠতে পারলাম, তাইলে আর হলো কী!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মরুদ্যান এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে মনে হয় গবেষণার মত সহজ কাজ আর নাই... হাহাহা... কিন্তু আমার কাছে পড়াশুনা বরাবরই কঠিন লাগে মন খারাপ আপনার হিউমার ভাল লেগেছে।

সজল এর ছবি

গবেষণার মত সহজ কাজ মনে হয় আসলেই নেই, কঠিন কাজ হচ্ছে গবেষণার বিষয়বস্তু খুঁজে পাওয়া, অথবা অ্যাসাইন করা বিষয়ে আগ্রহ জন্মানো।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাগিব এর ছবি

২)

কোয়ালের জন্য শুভকামনা রইলো। ভুট্টাক্ষেত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়াল ছিলো দেড় ঘণ্টার অগ্নি পরীক্ষা। প্রপোজাল লিখতে হতো না। তবে দুইটা পেপার প্রেজেন্ট করতে হতো ৪০ মিনিটে, আর বাকি সময়টা তিন প্রফেসরের ভয়াবহ সব প্রশ্নাবলীর মোকাবেলা করতে হবে। সেই বৈতরণী পার হতে গিয়ে অর্ধেকের বেশি ছাত্রই প্রথমবারে ফেল করে বসে। দ্বিতীয়বার ফেল করলেই ইউনি থেকে পত্রপাঠ বহিষ্কার।

সেই অগ্নিপরীক্ষাটা অনেকটা নিচের ছবির মতোই।

কোয়ালের তুলনায় থিসিস ডিফেন্স অনেক সহজ মনে হয়েছে আমার কাছে। অন্তত কমিটির একজন (অ্যাডভাইজর) তো পক্ষে থাকার কথা থিওরেটিকালি। মৌখিক কোয়ালে সেই হিসাবে তিন জনেই যমদূতের মতো ফেল করার উসিলা খুঁজে। প্রচুর ছাত্রছাত্রীকে কোয়ালের রুম থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরুতে দেখেছি।

গুড লাক!!

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

আশালতা এর ছবি

ডরাইসি !!

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা ছিল ক্যান্ডিডেসি... যেহেতু ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চঃ প্যাথলজি, বায়োলজি, রেডিওলজি, ইলেক্ট্রিক্যাল, সিগন্যাল এন্ড ইমেজ প্রসেসিং, প্যাটার্ন রিকগনিশন...।সব মিলিয়ে বেড়াছেরা অবস্থা! তার উপর আমার সুপার আমারে খুব ভাল পাইতো...তাই উনি সব কট্টরপন্থী প্রফদের কমিটিতে নিছিলেন। বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি নিছিলাম তিন মাস ধরে। ৫ ঘন্টার রিটেন এক্সামের এক সপ্তাহ পর ২ ঘন্টার ইন্টারগ্যালাকটিক ওয়ারে ৩ জন প্রফ আমারে ক্ষতবিক্ষত করে দিল। (শুধু সুপার আর রেডিওলজিস্ট সাথে ছিল) ব্যাপকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে বের হলাম...আমি মোটামুটি শিওর হয়ে গেলাম যে আমার মত ছাগল দুনিয়াতে আর নাই মন খারাপ তবে সিংহের সাথে থাকি বলে সেই যাত্রা মাফ পেলাম হাসি

ডিফেন্স সেই তুলনায় নস্যি...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সজল এর ছবি

আমার অ্যাডভাইজররে দুই বার বলছি, আমার তো ভয় লাগে। সে বলছে, তোমার চিন্তা করার কিছু নাই, তবে সমস্যা হলো সেতো আর কমিটিতে থাকবে না। দেখা যাক, হাশরের ময়দানে কী হয়।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সজল এর ছবি

ভাইভা নিয়ে আমিও ভয়ে আছি, চেষ্টা করবো রিপোর্টে বলা প্রতিটা জিনিসের ডালপালা প্রশ্ন আগে থেকে গেস করে প্রিপারেশন নিয়ে যেতে। আর গ্রুপের সামনে দুই/তিন বার ড্রেস রিহার্সাল তো করবই। আশা করি, তারাই আমাকে আগে থেকে ধুয়ে দিবে, তাতে যদি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

কার্টুনটা দেখে মাস খানেক আগে হাসছিলাম, কালকে দেখে শিওরে উঠলাম। উইশের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সবজান্তা এর ছবি

মজা লাগলো লেখাটা পড়ে।

হিউমারের ক্ষেত্রে আমার মতামতও ফাহিম ভাইয়ের মতোই- ড্রাই হিউমার দারুণ লাগে। এমন লেখা আরো পড়তে আগ্রহী হাসি

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ সবজান্তা। লিখার চেষ্টা থাকবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নব্য পাঠক এর ছবি

তুমি দেখছি ভয়াবহ আনপ্রোডাক্টিভ...তাপমাত্রা দেখতে "আমারফোন" ইউজ কর। এ সংক্রান্ত ঝামেলা এড়াতে চাইলে অতিসত্বর কানাডায় পাড়ি জমাও। এখানে ভদ্দরনোকি কায়দায় কিলোমিটার, সেলসিয়াস এগুলো ব্যবহার হয়। যদিও বছরের একটা বড় সময় সেলসিয়াস "বিয়োগান্তক" রূপে বেজার মুখে দেখা লাগে...

সজল এর ছবি

আমারফোন না দেখে উপায় কী! অফিসে জানালা নাই, করিডোরে হাঁটলেও বাইরের কোন হদিস পাওয়া যায় না। তাই রোদ-বৃষ্টি-তুষারপাত ইত্যাদি দেখতে ইন্টারনেটের বিকল্প নাই।
আমাদের অবশ্য শূন্যের খুব বেশি নীচে নামে না, ওয়েদারের দিক দিয়ে আমার শহর একটা ভালো জায়গা। তুমিতো থাকো উত্তর মেরূতে দেঁতো হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাবারা, পড়াশোনা করো। বাল্যকাল বীজবপনের সময়, এই সময় যেই বীজ বুনিবে- তাহাই ভবিষ্যতে ... দেঁতো হাসি

আপনে দেখি আমার মতো পড়াশোনা করতে করতে মারা যাচ্ছেন। আহা, সকাল থেকে পড়তে পড়তে মারা গেলাম। চারটা পৃষ্ঠা পড়ে ফেলেছি...

চলুক
আরো আসুক।

সজল এর ছবি

অ্যাঁ! বাল্যকালেই বীজবপন!! চোখ টিপি
আমি আসলে পড়াশোনার চিন্তা করতে করতেই মারা গেলাম।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমার মত বুড়োও যখন আপনার আঁতলামী মিশানো জোকস বুঝতে পেরেছে তখন অন্যরাও পারবে বোধকরি। নিশ্চিন্তে লিখুন। খুব উপভোগ করলুম।

প্রৌঢ়ভাবনা

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ উৎসাহের জন্য।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

তিথীডোর এর ছবি

আজ দিনটা খ্রাপ, সকাল থেকে নানা ভেজালে আছি...
এটা পড়ে হেসে ফেললাম।
জিতা রহো। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সজল এর ছবি

কাউকে হাসাতে পারা খুবই ভালো কাজ, তাই আমিও খুশী হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

আশালতা এর ছবি

হে হে হেহে... সবাই খালি বলে পড়ি না, টরিনা...তাইলে দেশে এই যে বিদ্বানের ছড়াছড়ি এইগুলা কোত্থেকে আসে বলেন তো ?
আপনি তো তাও একটু মেক্টু পড়সেন, আমার সুপারভাইজর তো আমাকে খুঁজেই পায়না। কদিন পর পর ফোন দিয়ে বলে, তুমি কই থাকো, পড়াশুনা করোনা ব্যা ব্যা ব্যা...আমি সচল পাতা ক্লিক করতে করতে ফোনে বলি, স্যার, আমার ম্যালা সমিস্যা... হে হে হে...

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সজল এর ছবি

পড়তে তাও যেমন তেমন, লিখতে(একাডেমিক) আমার একেবারেই ভালো লাগে না। আমার সুপারভাইজারের সাথে আমার এমনিতেই তিনটা (২টা গ্রুপ, একটা ইন্ডিভিজ্যুয়াল) মিটিং থাকে সপ্তাহে। তার উপর কাছাকাছি অফিস হওয়ায় ধুমধাম চলে আসে রুমে। তারে "সমিস্যা" দেখানোর তেমন উপায় নাই মন খারাপ

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হো হো হো

পড়ে যা বুঝলাম, অধ্যাবসায়ে আমি আপনার নখের যোগ্যও না! ৬ দিন আগেই কাজ শুরু!!! অ্যাঁ
লেখা দারুণ। সিরিজ হিসেবে জ্বলতে থাকুক। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজল এর ছবি

আমার ডিপার্টমেন্টের অনেক বন্ধু দুই মাস আগে থেকে লিখা শুরু করেছে, আর আমি যেদিন শুরু করেছি তার একদিন আগে জমাও দিয়েছে অনেকে। PRP (Preliminary Research Presentation) তো, এর চেয়ে দেরীতে কাজ শুরু করাটা নিরাপদ হতো না খাইছে

তবে আমার অধ্যাবসায় আসলে অনতিক্রম্য, এই যেমন রবিবার সারাদিন ধরে কাজ শুরুর চেষ্টা করে শেষে সোমবার কাজ শুরু করছি চোখ টিপি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নোবেল এর ছবি

ঠিকমত ঘবেষণা চালাইয়া যাও সজল, তোমারে দিয়া হবে ।

সজল এর ছবি

থ্যাংকস নোবেলদা। না হয়ে উপায় আছে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রায়হান আবীর এর ছবি

অনেক অনেকদিন পর একটা মন মতো লেখা পড়লাম দেঁতো হাসি :D

সজল এর ছবি

দেঁতো হাসি
অনেক দিন লিখেন না, আবার লিখুন।
কমেন্ট করেই দেখি আপনার লিখা নীড়পাতায় হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নিবিড় এর ছবি
সজল এর ছবি

দেঁতো হাসি কমন পড়লো?

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

যুমার এর ছবি

ভাবছি,মলা ঢেলা মাছ বেশী করে খেতে হবে,এত্ত মজারু একটা লেখা এই দুই দিনেও ক্যান
চোখ এড়িয়ে গেল।
পড়ালেখাই জীবনের সবচেয়ে বড় "সমিস্যা"।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ যুমার।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

Sabbir Hasan এর ছবি

একদম ভাল লাগে নি...।।

সজল এর ছবি

দুঃখিত।
তবে কষ্ট করে পড়েছেন এই জন্য ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।