একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি
লিখেছেন অমি রহমান পিয়াল (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/১২/২০০৮ - ১০:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডেইলি স্টারে সজীব ওয়াজেদ জয়ের লেখা এই আর্টিকেলটা পড়লাম। তাড়াহুড়ো অনুবাদ। মতামত দেন।

গত বছর দুয়েক ধরেই আমরা রাজনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের নানা সুপারিশ শুনছি। সব বুড়ো নেতাদের ছুড়ে ফেলে নতুন করে শুরু করতে হবে। নতুন নীতিমালা করতে হবে। এবং অবশ্যই নতুন করে লিখতে হবে আমাদের সংবিধান যাতে সেই স্বপ্নরাজ্য বাস্তবায়ন করা যায়, যেখানে সবাই সুখে-শান্তিতে বাস করবে।

দু বছর ধরে আমাদের নেতা ও ব্যবসায়ীদের হেনস্থা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইনের চরম অপব্যবহার শেষে দেখা যাচ্ছে যে শতকরা ৯৬ ভাগ মানুষই গণতন্ত্রে ফিরতে মরিয়া। গত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সীমাহীন দূর্নীতিতে ভীষণরকম ক্ষতিগ্রস্থ আমাদের অর্থনীতিকে ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন একদল উচ্চশিক্ষিত লোক। এমনকি আমাদের রাজনীতিও ফিরে গেছে আগের জায়গাতেই। কথিত সেই বিপ্লব এখন মৃত।

প্রায়ই দেখি বিভিন্ন জায়গায় ছাপা হচ্ছে দেশের দুই বড়দলের মধ্যে আদতে কোনো তফাত নেই, দুই ‌'বেগম'ও একইরকম ইত্যাদি ইত্যাদি। লেখকদের বেশীর ভাগই ওই একই ঘরানার। বিশেষ কিছু সমালোচক এসব কথাকেই শ্লোগান মানছেন। যেন এসবের বাইরে আর কিছু বলার নেই তাদের।

ভূমিকার পরপরই এসব কথা কেনো বলছি? এজন্য বলছি যে দুপক্ষই বিপ্লব ঘটানোর জন্য তড়পাচ্ছেন। প্রথমে দেশে এবং এরপর রাজনৈতিক দলগুলোতে। সেনাবাহিনীর তরফে সর্বাত্মক চেষ্টার পরও দুটোর কোনটাই ঘটেনি। আমরা যারা রাজনীতি করি, তারাই শুধু কারণটা ধরতে পারি। স্রেফ ডিগ্রীর জোরে, এমনকি তা প্রিন্সটন বা অক্সফোর্ডের হলেও এসব অনুধাবন করা যায় না।

তাদের অজানা রহস্যটা হচ্ছে যা আমরা রাজনীতিকরা জানি- একমাত্র স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধেই বিপ্লব সম্ভব। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তা অকার্যকর। বিপ্লব তখনই সফল হয় যখন তাতে সাধারণ মানুষ যোগ দেয়। এটা ছাড়া সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলও তাদের সাংগঠনিক সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও বিপ্লবের ধারেকাছেও যেতে পারবে না। গণতন্ত্রে রদবদল ঘটানোর উপায় একটাই যার কার্যকর পরিভাষা হচ্ছে নির্বাচন।

গণতন্ত্রকে উন্নত করার একমাত্র উপায় হচ্ছে এর বিবর্তন ঘটানো। এটি হচ্ছে বিপ্লবের বিপরীত একটি প্রক্রিয়া যা ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদে ঘটে। প্রায়ই মনে হবে যে আসলে কোনো কিছুই বদলাচ্ছে না। তবে পরিবর্তনটা অবশ্যম্ভাবী, সেজন্য শুরুর পর যুতসই অনুষঙ্গও জরুরী। কারণ এজন্য দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতাও প্রয়োজন। নাহলে কিছুই হবে না।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে ক্রমবিকাশের এই ধারায় সেরারাই টিকে থেকে পরিকাঠামোর উৎকর্ষ ঘটায়। গণতন্ত্রে যেসব নেতা ও দল জনোন্নয়নে বেশী ভূমিকা রাখে তারাই স্থায়ী এবং আরো শক্তিশালী হয়। আর যারা ব্যর্থ, তারা আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে এবং একসময় গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক বিবর্তনের মূল কথা এটাই।

টিকে থাকার এই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ নিজের অসামান্য সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। সিকি শতাব্দী ধরে চলা আমাদের স্বাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে ত্যাগ স্বীকারকে গোনায় নাইবা নিলাম, কিন্তু নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার দলের শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতৃত্ব হারানোর ধাক্কা সয়েছে তারা। এরপর ১৫ বছর ধরে চলেছে স্বৈরশাসনের রাজনৈতিক দমনপীড়ন। ক্ষমতায় ফিরতে নির্বাচনে কারচুপি করে সফল বিএনপির দুটো মেয়াদ পার করতে হয়েছে তাদের। শেষমেষ দুবছর ধরে পরোক্ষ সেনাশাসনে দলটিকে ধ্বংসের জন্য দেশের ক্ষুরধার সব মস্তিষ্কপ্রসূত নানা পরিকল্পনার ধকলটাও সামলে টিকে গেছে তারা।

এই টিকে থাকার কারণ হচ্ছে গোটা সময়কালে ধীরগতিতে নিজের বিবর্তন ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রাকৃতিক বিবর্তনের মতোই অনেক ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। তারপরও এই পর্যায়কালে অর্জনও কম নয় তাদের। এসব সাফল্য ছিলো দেশের বেশীরভাগ মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নকে কেন্দ্র করে। এজন্যই আওয়ামী লীগ শুধু টিকেই যায়নি, একই সঙ্গে আরো শক্তিশালী হয়ে বেড়ে উঠেছে।

উদাহরন হিসেবে আমি একটি খাতে আমাদের সাফল্যকে তুলে ধরতে চাই- অর্থনীতি। এদেশের সিংহভাগ জনগনের সবচেয়ে বেশী উদ্বেগ এই খাতেই। যে অর্থনৈতিক সাফল্যটি জনগনের একটি বিশাল অংশকে প্রভাবিত করেছিলো তাহচ্ছে মুদ্রাস্ফিতি নিয়ন্ত্রণ। নব্বই দশকের শেষদিকে গোটা এশিয়া মহাদেশে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও আমরা মূদ্রাস্ফিতির হার শতকরা ১.৫৯ ভাগে ধরে রেখেছিলাম। প্রতি কেজি চালের দাম ছিল ১২ থেকে ১৫ টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো ধানে বাম্পার ফলনে ঘটেছিলো, আর সেই উদ্বৃতির উল্লেখযোগ্য অংশ রপ্তানী করতেও সক্ষম হয়েছিলাম আমরা। বলুন তো প্রথম কখন আমরা এই খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিলাম? সেটা ছিলো আমার নানা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম দফা শাসনে। বিএনপি সরকার প্রথম দফা ক্ষমতায় থাকাকালে সেই সাফল্য ছুঁতে তো পারেইনি, বরং দ্বিতীয়দফা ক্ষমতায় ফিরে উদ্বৃতির বদলে ঘাটতির জন্ম দিয়েছে। সুবাদে দাম বেড়েছে আরো।

এর পেছনে ভাগ্য বা সুযোগের অভাব দায়ী নয়। এটা ছিল আসলে দুটো দলের নীতির বৈপরীত্যের নীতির প্রত্যক্ষ ফল। আওয়ামী লীগ মনে করে খাদ্য একটি মৌলিক চাহিদা এবং তা সবার জন্য সুলভ হতে হবে। দেশের বাইরের ঘটনাবলীর প্র্রভাব আমাদের খাদ্যের উৎস এবং মূল্যের প্রভাবক হতে পারে না। এ কারণে আমরা কৃষকদের ও সার উৎপাদনে ভর্তূকি দিয়েছি এবং উৎপাদন বাড়াতে উন্নত বীজ ব্যবহারের মতো নতুন প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করেছি।

অন্যদিকে বিএনপির বিশ্বাস ছিলো যে আমরা বিশ্ববাজার থেকে চাল এবং সার কম দামে কিনতে পারবো, তাই কৃষকদের ভর্তূকি দেয়ার কোনো কারণ নেই। পাশাপাশি শাসকমহলের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ীকে এসব পণ্য আমদানীতে ফায়দা লুটার সুযোগ দিয়েছে তারা। পরিকল্পনাটা সাফল্য পাবে ততদিনই, যতদিন বিশ্ববাজারে পন্যের দাম কম থাকবে। কিন্তু বিশ্ববাজার সবসময়ই ওঠানামার মধ্যে থাকে এবং তা অনুমান করা দুঃসাধ্য। যদি এবং যখন সেখানে দাম বাড়ে, বাংলাদেশেও বাড়ে। ঘটেছেও ঠিক তাই।

অন্যসব অর্থনৈতিক খাতে সফল পরিকল্পনা এবং উন্নতির সিংহভাগ কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের। মোবাইল টেলিফোন নেটওয়ার্ককে বেসরকারীকরন করেছিলাম আমরা যা সেলুলার ফোনকে বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে সুলভ করে তুলেছে। পূর্ববর্তী বিএনপি সরকার তাদের একজন মন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলো এর একচেটিয়া ব্যবসা! সেজন্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ছিলো তা।

জ্বালানি উৎপাদন বেসরকারীকরণ করে এই খাতে উদ্বৃতি হয়েছিলো আমাদের। এবার পরবর্তী বিএনপি সরকার তা চরম ঘাটতিতে রূপ দিয়েছে। এই ঘাটতি ও সেইসঙ্গে তাদের সরকারের সীমাহীন দূর্নীতি মিলে আমাদের ব্যবসা-বানিজ্য ভীষণ ক্ষতিগ্রস্থ করেছে যার ফলস্বরূপ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের অর্থনীতিও।

সংবাদমাধ্যম, বিমান, ব্যাংক এরকম আরো অনেককিছুই বেসরকারীকরণ করেছিলো আওয়ামী লীগ। এর ফলে প্রতিযোগিতা বেড়েছে, বেড়েছে মান এবং ভোক্তারা এসব পরিসেবা পেয়েছে কম দামে। ব্যবসায়িক পরিমন্ডলে একটি ইতিবাচক পরিবেশের জন্ম নিয়েছিলো এত যা সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমৃদ্ধির সুযোগ করে দিয়েছে। সুবাদেই নতুন কাজের সুযোগ হয়েছে, বেকারত্ব কমেছে এবং বেড়েছে মধ্যবিত্তের সংখ্যা। মধ্যবিত্ত বাড়লে দেশের পন্যবাজারও বিস্তার নেয়। এতে ব্যবসায় মুনাফা বাড়ে এবং চক্রটা উর্ধ্বগতি পায়। আওয়ামী লীগের এই নীতি যদি ধরে রাখা হতো তাহলে আমাদের অর্থনীতিও ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হতো। দুর্ভাগ্য দেশের বেশীরভাগ মানুষের, তা ঘটেনি।

২০০১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে আপনারা যাই বলুন না কেনো, আমি বলবো সেবার আসলে দুদলই খুব কাছাকাছি অবস্থানে ছিলো। জনপ্রিয়তার বিচারে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুদলই ছিলো সমান-সমান। সবচেয়ে বড় কথা আওয়ামী লিগ মোটেও জনসমর্থন হারায়নি। বরং জিতে আসা আগের নির্বাচনেরচেয়ে বেড়েছিলো ভোটের সংখ্যা।

প্রকৃতির বিবর্তনের মতোই আওয়ামী লীগ এখন পরিবর্তনের মুখোমুখি। অনেক নতুন নেতা এবং সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী উঠে এসেছেন। এই রূপান্তর কারো নির্দেশে ঘটেনি। বরং এই নতুন প্রার্থীদের সবাই মাঠ পর্যায় থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। দলকে ধ্বংসের পরিকল্পনা সফলভাবে ঠেকিয়ে এই নতুন নেতৃত্ব উঠে এসেছেন দলীয় কর্মীদের সমীহ এবং সমর্থন নিয়ে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে এবং নেতৃত্বে উঠে এসেছেন তারা যারা দলের দুঃসময়ে এর অস্তিত্ব বাঁচাতে লড়েছেন। রাজনৈতিক বিবর্তনের আদর্শ উদাহরণ এটি যা দলের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। এখন দল আরো শক্তিশালী।

অর্থনীতি নিয়ে আলোচনাটায় ফিরে জানাচ্ছি আবারও একই কাজ করবে আওয়ামী লীগ। অর্থনৈতিক খাতে আমাদের নীতিকে আলোচিত সাফল্য বলেই মনে করি আমি। আসন্ন নির্বাচনে আমার বিশ্বাস আমরা জিতবো, আর জিতলে আগের চেয়ে ভালো কিছু করে দেখানোর আশা রাখি। অর্থনীতিকে আরো মুক্ত করে দেবো আমরা, তবে তা করবো পরিকল্পিতভাবে এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে। দলের নেত্রী ক্ষুধা, নিরক্ষরতা, জ্বালানী ঘাটতি ইত্যাদি দূর করার জন্য ‌'ভিশন ২০২০' নামে এক পরিকল্পনা পেশ করেছেন। এর বাস্তবায়ন শুধু সম্ভবই নয়, আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে একমাত্র আমাদের পক্ষেই তা সম্ভব।

আমাদের একমাত্র বাধা বিনিয়োগের সীমাবদ্ধতা। আমাদের উন্নতির জন্য বরাবরই দাতাদের কাছে হাত পাততে হয়েছে। এটা সম্ভবত আর প্রয়োজন হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আমাদের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের দিকে তাকান। মধ্যবিত্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বাড়বে। আর এর ফলে আমাদের নিজস্ব পুঁজিবাজার দিয়েই আমরা উন্নয়ণ প্রকল্পগুলোর বিশাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ ঘটাতে পারবো।

অবশ্য এটা নির্ভর করে বিনিয়োগের জন্য মধ্যবিত্তের হাতে যথেষ্ট অর্থ থাকার ওপর। সাবেক বিএনপি-জামাত জোট সরকার ও বর্তমান শাসনে দ্রব্যমূল্যের অব্যহত উর্দ্ধগতিতে বেহাল অবস্থায় আছে আমাদের মধ্যবিত্তরা। আমাদের অর্থনীতির চাকাকে আবারো পূর্ণশক্তিতে ঘুরানো জরুরী হয়ে পড়েছে। গত ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা বলছে একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে এই কাজটি সাফল্যের সঙ্গে করে দেখাতে।

বেসরকারীকরণ আমরা চালিয়ে যাবো তবে আরো নিয়ন্ত্রিতভাবে। আমাদের পরিকল্পিত পদক্ষেপের একটা উদাহরন হিসেবে আমি আদমজী পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বলতে চাই। আমার মাও এটা করতে চেয়েছিলেন, তবে শুধু বন্ধ করে দেয়ার বদলে তার পরিকল্পনা ছিলো এর কর্মচারীদের আগে পুনর্বাসন করা। কর্মচারীরা ছাড়াও সেই মিলকে ঘিরে একটি ছোটো প্রতিবেশ গড়ে উঠেছিলো। শ্রমিক-কর্মচারীদের পরিবার ছিলো যারা থাকতো সেখানে। তাদের পন্য ও অন্যান্য পরিসেবা দিতে চা-দোকান, মুদি খানা থেকে শুরু করে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ছিলো সেখানে। ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু শ্রমিকরাই নয়, এদের জীবনযাত্রাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রমিকের যদি আয় না থাকে, সে সদাই কিংবা কাপড় কেনার টাকা পাবে কোথায়। এভাবেই আদমজী বন্ধ করে বিশাল সংখ্যক মানুষকে কর্মহীন করে দেয়া হয়েছে।

মায়ের পরিকল্পনা ছিলো আগে ওই অঞ্চলে একটা বিকল্প শিল্পখাত গড়ে তোলা। পরিকল্পনায় স্টিল মিলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও যে কোনো একটি শিল্প কারখানা হলেও সমস্যা হতো না। আদমজী শ্রমিকদের সেই কারখানায় কাজ করার সুযোগ দেয়া হতো। আর তা চালু হওয়ার পর আদমজী বন্ধ করে দেয়া হতো। এর ফলে বেশীরভাগ শ্রমিকই চাকরীতে থাকতেন এবং আশপাশের ছোট ব্যবসায়ীরাও টিকে যেতেন।

বেসরকারীকরণে আমাদের পরিকল্পনার মূল অংশই হবে এ ধরণের পুনর্বাসন। যদিও এতে সরকারের ব্যয় কমবে না। এতে সময় বেশী লাগবে, কিন্তু তারপরও এতে সরকারী মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর কর্মচারীদের জন্য অনেক ভালো হবে। বিএনপির এমন কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। তারা স্রেফ সবাইকে ছাটাই করে দিয়েছে।

বেসরকারী খাতের সমৃদ্ধিতে সেখানে কাজের সুযোগ আরো বাড়বে যার পারিশ্রমিক সরকারী খাতের চেয়ে ভালো। এতে বেসরকারী খাতে যোগ দিতে উৎসাহী নতুন শ্রমিক বাড়বে। ভবিষ্যতে সরকারের আকার কমাতে সমর্থ হবো আমরা। এর অনেক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে আমলাতন্ত্র ও লাল ফাইলের দৌড়াত্ম থেকে রেহাই মিলবে সবার। এতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অন্য খাতগুলোয় কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো যাবে। সরকারী বেতন বাড়লে তাদের দূর্নীতি করার চাহিদা এবং সুযোগও কমবে। এতে দূর্নীতি কমিয়ে আনা যাবে।

গত দুবছর এবং এর আগেও সামরিক হস্তক্ষেপের সময় আমরা দেখেছি যে গণতন্ত্রকে দমিয়ে এবং লাগাতার গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দূর্নীতি কমানো যায় না। নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় দূর্নীতিও হয় লাগামছাড়া আর গত দুবছরে আমরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং সেনাবাহিনীতে দূর্নীতি আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে দেখেছি। এই মতামত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যারা দূর্নীতির বিরুদ্ধে ঢাকঢোল পিটিয়ে জেহাদে নেমেছিলো।

২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রতিবাদী আন্দোলনে নামায় নানা সমালোচনার জবাবে বলি, ভাবুন একবার, আওয়ামী লীগ তা না করলে বাংলাদেশের কি অবস্থা হতো? এখন ফের ক্ষমতায় বহাল থাকতো দূর্নীতিবাজ বিএনপি-জামাত সরকার। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা হতো আরো মারাত্মক। আর নিশ্চিতভাবেই পাঁচ বছর পর আরেকটি কারচূপির নির্বাচন দেখতে পেতাম আমরা।

দুটো দলকে এক পাল্লায় মাপতে গিয়ে লোকে ভুলে যায় দেশবাসী একবারই শুধু শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর দেখেছে- ২০০১ সালে আওয়ামী লিগের মেয়াদ শেষে। প্রতিবারই নির্বাচনে কারচুপির পথ ধরেছে বিএনপি। দুই দলের চরিত্রের মৌলিক পার্থক্য এটা। বিএনপি আমাদের আইন, সংবিধানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় যেতে এবং টাকা কামাতে আগ্রহী। প্রতিবারই তারা সেটা করেছে।

একমাত্র আওয়ামী লীগেরই রয়েছে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সদিচ্ছা ও দূরদৃষ্টি। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগই জনগনের মৌলিক অধিকার ও চাহিদার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। শুধু পরিবারের কারণে আমি আওয়ামী লীগের সমর্থক নই। আমি সেটা করি একটা ভরসা থেকে। বাংলাদেশের একমাত্র বড় এবং সত্যিকারে গণতান্ত্রিক দল এটি। নিশ্চিতভাবেই আভ্যন্তরীন গনতন্ত্র চর্চার কারণে মাঝেমাঝে ভুল সিদ্ধান্তও নিয়েছে তারা। সিংহভাগের সমর্থনে নেয়া সিদ্ধান্ত সবসময় কিন্তু সেরা নয়। যাহোক হাভার্ডে আমার এক অধ্যাপক বলেছিলেন- গণতন্ত্র হচ্ছে একমাত্র পদ্ধতি যেখানে সরকার নিজেকে শুধরানোর ক্ষমতা রাখে। আওয়ামী লীগের নিজেকে শুধরানোর ক্ষমতা আছে। বিএনপি ও জামাতের নেই।


মন্তব্য

ধ্রুব হাসান এর ছবি

আপাতত এই দীর্ঘ লেখা সম্পর্কে কোন বিস্তারিত মন্তব্য করছিনা, শুধু এটুকু বলি যদি জয়ের ভাষ্যনুযায়ী আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে তার উদ্ধৃত এই নিন্মোক্ত কথাটিতে বিশ্বাস রেখে কাজ করে তবে তা আশার কথা! দেখা যাক কোথাকার পানি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে!!

গণতন্ত্র হচ্ছে একমাত্র পদ্ধতি যেখানে সরকার নিজেকে শুধরানোর ক্ষমতা রাখে। আওয়ামী লিগের নিজেকে শুধরানোর ক্ষমতা আছে। বিএনপি ও জামাতের নেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

হার্ভাড লেখার ভুল গুলো থেকে জয় আস্তে আস্তে ভালোই লিখতে শুরু করছে। এট লিস্ট লিখতে তো পারে!

আলমগীর এর ছবি

জয় নিজেকে রাজনীতিক দাবী করছেন- এটা অবাক লাগছে।

৫ন‍ং প্যারার পর থেকে অনুবাদে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে।

আদমজীর বিকল্প কী করতে পারত সে সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট কথা আলীগ বলেছে বলে মনে পড়ে না। পুঁজিবাদীদের খুশী রাখতেই এখন তারা বেসকারীকরণ চালু রাখবে এমন বলছে।

শেখ হাসিনা সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কিন্তু কীভাবে সেটা করবেন সে ব্যপারে কিছু বলতে পারছেন না।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমাদের তো আশা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই !
আবারো আশায় বসতি গাড়লাম। দেখিনা, সেটাও আবার খেলাঘর হয়ে যায় কিনা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তানভীর এর ছবি

একমাত্র আওয়ামী লিগই পারে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে

জয়কে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকলে তার কাছেই জানতে চাইতাম- আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতলে তার মা হাসিনাকেই কেন বারবার প্রধানমন্ত্রী হতে হবে? আওয়ামী লীগে কি আর যোগ্য নেতা-নেত্রী নেই? কোন দলে গণতন্ত্র থাকলে তার চিত্র তো এরকম হবার কথা নয়। যে দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই, সেই দলের বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়া তো আকাশ-কুসুম কল্পনা মাত্র।

একই কথা বিএনপি-র বেলাতেও প্রযোজ্য অবশ্যই।

লেখক বলেছেন-‘আওয়ামী লিগের নিজেকে শুধরানোর ক্ষমতা আছে। বিএনপি ও জামাতের নেই’।

কই কখনো দেখলাম না তো! নির্বাচনে জিততে সুবিধামতো কখনো গোলাম আজমের সাথে, কখনো জংগী পীরের সাথে আবার এখন স্বৈরাচার এরশাদের সাথে আওয়ামী লীগই তো জোট বেঁধেছে। যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যেতে ও টাকা কামাতে বিএনপির মতো যে আপনারাও আগ্রহী- এ জোটগুলোতো তার সপক্ষেই কথা বলে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

শেখ হাসিনা বারবার প্রধানমন্ত্রী হলে সমস্যা কোথায় ..... আওয়ামী লীগকে যারা ভোট দিবেন তারা দলীয় সভানেত্রীকেই তো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইবেন ।

তানভীর এর ছবি

দলীয় সভানেত্রীই বা তাকে বারবার হতে হবে কেন? দলের বাকী সবার কি মেরুদন্ড ভাঙা?

আর একই ব্যক্তি বারবার প্রধানমন্ত্রী/সভানেত্রী হলে কি সমস্যা হয় বোঝেন না, নাকি বুঝতে চান না? একনায়কতন্ত্র আর এই রকম সিস্টেমের তথাকথিত 'গণতন্ত্রের' পার্থক্য কোথায়? জয় যে দেশে থাকেন, যেখানে রাজনীতির পাঠ নেন- সে দেশে কি তিনি এইরকম গণতন্ত্র দেখে আসছেন? নাকি বাংলাদেশ গরীব দেশ বলে, এইদেশের বেশীরভাগ লোক অশিক্ষিত বলে গণতন্ত্রের এই 'মডেল' বাংলাদেশে বেশি প্রযোজ্য?

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

গণতন্ত্র বিষয়টাই হলো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন। আওয়ামী লীগ দলটির অভ্যন্তরে সবাই শেখ হাসিনাকেই সভানেত্রী দেখতে চান...তাই তাকেই বার বার সভানেত্রী হতে হবে যতদিন তার দলের সদস্যরা চাইবেন।

আর একই ব্যক্তি বারবার প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হলে ক্ষতি কিছুই হয়না। বরং অনেক ক্ষেত্র ইতিবাচক হয়..যেমন -মালয়েশিয়া ।

তবে সবচেয়ে বড় কথা জনগন কি চায়। মানুষ যদি শেখ হাসিনা বা বেগম জিয়াকে বারবার প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায় তাহলে গণতন্ত্র বিশ্বাসীদের উিচত হবে মানুষের রায় কে শ্রদ্ধা করা।

যদিও বাংলাদেশের কথিত শিক্ষিত সমাজ নিজেদেরকেই পন্ডিত ভাবে... কারন তাদের ধারনা জনগন অশিক্ষিত.....তারা একাই শিক্ষিত।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একই ব্যক্তি একপদে বেশীদিন থাকলে সমস্যাগুলো:

১। ব্যক্তির মধ্যে ক্ষমতা ঢুকে পড়ে। পরিবারতন্ত্রে পরিনত হয় ব্যপারটা।

২। নতুন নেতা গড়ে উঠতে পারেনা। দেশ নতুন দিক নির্দেশনা পায় না।

৩। দলে একটা হতাশা দেখা দেয়। হাইরার্কি জুড়ে একই প্রথা চলতে থাকে বলে যোগ্য লোকরা সঠিক মর্যাদা পায় না। পুরো দলে পঁচন ধরে।

এই কারন যোগ্যতা, একমাত্র যোগ্যতাই হওয়া উচিৎ প্রধান মাপ কাঠি। একারনেই যুক্তরাষ্ট্রে বাধ্যতামূলক ভাবে দুবারের বেশী প্রেসিডেন্ট হতে পারে না। মালয়শিয়ার উদাহরন শুধুমাত্র একটা ব্যতিক্রম।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

তানভীর এর ছবি

মুর্শেদ সমস্যাগুলোর কথা লিখেছেন। তাই আর রাহা সুমনের মন্তব্যের জবাব দেই নি। তবে এখানে মনে হয় একটা জবাব দেয়া প্রয়োজন।

"গণতন্ত্র বিষয়টাই হলো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন"- এ কথা তারাই বলে যারা গণতন্ত্রের ধুয়া তুলে জনগণকে বোকা বানাতে চায়। আরে সংখ্যাগরিষ্ঠ চাইলেই কি দেশের মন্দির সব ভেঙে ফেলতে হবে নাকি? সংখ্যাগরিষ্ঠ চাইলেই রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে একটা ধর্ম সবার উপর চাপিয়ে দিতে হবে? আমেরিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক তো এখনো বিল ক্লিনটনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়। কই, পার্টি কি আর তাকে নমিনেশন দিচ্ছে? কইতে পারেন, সংবিধানে সুযোগ নাই দেখে দেয় না। কিন্তু এই সংবিধান কারা বানিয়েছে? সেদেশের রাজনীতিকরাই তো। আমাদের সংবিধান, দলের গঠনতন্ত্রে এরকম আইন থাকে না কেন? কারণ, হাসিনা-খালেদা আর তাদের ছানা-পোনারা যেন যুগ যুগ ধরে ক্ষমতায় গিয়ে দেশটা শুষে নিতে পারে- এই জন্য। গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নয়, বরং দেশের কল্যাণের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত আসার নামই গণতন্ত্র। হাসিনার বারবার সভানেত্রী হওয়ার পিছে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত থাকতে পারে, কিন্তু দেশের ক্ষতি বই কানাকড়ি কোন কল্যাণ নিহিত নাই। যদি কন আছে, আমার কিছু বলার নাই। হাসি

শিক্ষানবিস এর ছবি

জয় যে আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা মেশিনের চালকদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে তা বুঝে গেলাম। এর আগে হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউয়ের লেখাটাতেও প্রোপাগান্ডার ছাপ সুস্পষ্ট ছিল। "বেটার ইভিল" এর সূত্র খাটিয়ে আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করতে হচ্ছে। কিন্তু সমর্থনটাও হতে হবে সমালোচনামুখর।

জয়ের কথা বলার সুরের সাথে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনীতিবিদদের কথার খুব মিল আছে। আমি কি করেছি, ওরা কি করেনি, আমি কি করতে পারবো, ওরা কি করতে পারবে না। এটাই তিনি বলতে চাচ্ছেন। রাজনীতিবিদ না হয়েও তার এই অবস্থানটা লক্ষ্য করার মতো। আর প্রফেশনালদের মতই তিনি তথ্যসূত্র ছাড়া কথা বলছেন। দুই দলের শাসনামলে অর্থনীতি বা রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আমার সুস্পষ্ট ধারণা নাই। তাই তার কথা কতটুকু সত্যি সেটাই ধরতে পারছি না। সূত্র না থাকায় যাচাইও করতে পারছি না। তাই এই প্রসঙ্গ বাদ।

কিন্তু আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলা যেতে পারে। প্রথমেই জয়ের হার্ভার্ড লেখাটা প্রসঙ্গে বলে নিই। এই লেখার মাধ্যমে তিনি আওয়ামী লীগের ক্ষতিই করেছেন। একে তো তার লেখায় কোন কনক্রিট পরিকল্পনা ছিল না, তার উপর খুব নাজুক কথাবার্তা দিয়ে ভরা। জামাতপন্থীদের সাথে যোগাযোগ থাকায় তাদের অবস্থানটা জানি। তারা বলছে,
"জয়ের লেখাটা এবার চারদলীয় জোটের নির্বাচনী প্রচারণার হাতিয়ার।"
এটা এক বিরাট ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।

সেদিক দিয়ে ডেইলি স্টারের লেখাটা সেফ সাইডে আছে। অবশ্য হওয়ারই কথা। জয় হয়তো ভেবেছিলেন বিদেশের লেখা দেশের মানুষ অতো পড়বে না। দেশের লেখা সাইজে থাকলেই হলো। তার ধারণা ভুল ছিলো।
এখানেও কনক্রিট কোন পরিকল্পনা নেই। তবে কয়েকটা বিষয় অন্তত জানা গেছে:
- পরিকল্পিত বেসরকারীকরণ
- ব্যাপক আকারে পুনর্বাসন
- বিশ্ব বাজারের দিকে না তাকিয়ে যেকোন মূল্যেই হোক, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ
- মধ্যবিত্তের বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজস্ব পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ

এক্ষেত্রে দেশে দুর্নীতি ঠেকানোর প্রধান উপায় বেসরকারীকরণকেই বলা হয়েছে। এটা সাধারণীকরণ হয়ে গেল মনে হচ্ছে। দুর্নীতি ঠেকানোর অন্য কোন উপায় বলা নেই। বেসরকারীকরণ বাড়লে সরকারের আকার কমবে, আকার কমলে দুর্নীতিও কমবে। এই সূত্র কতটা কাজে দেবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই।

মোদ্দা কথা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে একটা কনক্রিট পরিকল্পনা হাজির করতে হবে। সেটা যেন এরকম রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা না হয়ে যায়। পরিকল্পনাটা হয়ত সাধারণ মানুষ বুঝবে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে তারা জেনে যাবে সে লীগের আসলেই সেরকম একটা পরিকল্পনা আছে। সেটা যে জয়কেই করতে হবে এমন কোন কথা নেই। লীগ জয়ের উপর এতো নির্ভর করছে কেন তা বোধগম্য নয়। তাকে তো এখনও রাজনীতিবিদ বলা যায় না। তারপরও যদি জয় এগিয়ে যেতে চান তাহলে অনুরোধ করবো, আপনি আপনার নিজের এই কথাটা প্রমাণ করুন:

শুধু পরিবারের কারণে আমি আওয়ামী লিগের সমর্থক নই। আমি সেটা করি একটা ভরসা থেকে।

এটা প্রমাণ করতে হবে সত্যিকারের যুক্তিপূর্ণ কথাবার্তা দিয়ে। প্রমাণ করতে গিয়ে আবার হার্ভার্ডের লেখার মতো হিতে বিপরীত যেন না হয়ে যায়।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"জয়ের লেখাটা এবার চারদলীয় জোটের নির্বাচনী প্রচারণার হাতিয়ার।"

আমারও আর্টিকেলটা পইড়া ঠিক এই কথাই মনে হইছে ... মনে হইলো ক্রিকেটে মাঝেমাঝে বোলাররা "আলু" (ইজি বল) ছুঁড়ে না ছক্কা খাওয়ার জন্য, জয় ঠিক সেই কাজটাই করছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এনকিদু এর ছবি

১.

আমরা যারা রাজনীতি করি, তারাই শুধু কারণটা ধরতে পারি। স্রেফ ডিগ্রীর জোরে, এমনকি তা প্রিন্সটন বা অক্সফোর্ডের হলেও এসব অনুধাবন করা যায় না।

তাদের অজানা রহস্যটা হচ্ছে যা আমরা রাজনীতিকরা জানি- একমাত্র স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধেই বিপ্লব সম্ভব।

এ আবার রাজনীতি করে নাকি, কবে থেকে ? কোন কালে দেশে কিছু করতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না । মনে হয় সমূদ্রের ঐপাশের ঐ সাদা মানুষদের দেশে কিছু একটা করে টরে । যাকগে, এর নিজের ডিগ্রীটা কোথাকার আর কোন বিষয়ে কেউ জানেন কি ? কৌতূহলী বোধ করছি ।

২.
আদমজী নিয়ে তো অনেক কথা লিখেছে দেখলাম । কিন্ত কোনটাই ঠিক কাজের কথা বলে মনে হল না । আদমজী নিয়ে যা কিছু লিখেছে, আমার চোখে তার সারমর্ম হল " বি,এন,পি'র জায়গায় আমরা ক্ষমতায় থাকলে আমরাও আদমজী বন্ধই করতাম " । বাকি সব হল তেতো বড়ির উপর চিনির আবরন ।

৩.
মা আর নানা'র কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছে দেখা যাচ্ছে । দল হিসেবে এখনো চিন্তা করতে শেখেনি । উনাদের কে এখনো "মা" আর "নানা" হিসেবেই দেখে এই পাবলিক । "নেত্রী" এবং "জাতির পিতা" হিসেবে না । এরে দিয়ে হবে না । " দেশের প্রধানমন্ত্রী আমার মা, জাতির পিতা আমার নানা " - চিন্তাভাবনা গুলো এইসব ধারনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় । বাংলাদেশকে মনে করে মায়ের দিক থেকে পাওয়া সম্পত্তি বা বিরাট জমিদারী যা কিনা মা পেয়েছে নানার কাছ থেকে । আর আমরা হলাম গিয়ে তার জমিদারীতে চাষা মজুর ইত্যাদি । গুষ্টি মারি শালাদের !

৪.

প্রায়ই দেখি বিভিন্ন জায়গায় ছাপা হচ্ছে দেশের দুই বড়দলের মধ্যে আদতে কোনো তফাত নেই, দুই ‌'বেগম'ও একইরকম ইত্যাদি ইত্যাদি।

কোন ভুল নাই - সব ঠিক কথা । উপরে ৩ নং পয়েন্ট যা লিখেছি তার কয়েকটি করে শব্দ ( অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষ্য পদ ) বদলে দিলে বি,এন,পি'র তারেকের ব্যাপারে কথাগুলো প্রযোজ্য হয়ে যাবে অনায়াসে ।

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ফাহিম এর ছবি

বাংলাদেশকে মনে করে মায়ের দিক থেকে পাওয়া সম্পত্তি বা বিরাট জমিদারী যা কিনা মা পেয়েছে নানার কাছ থেকে । আর আমরা হলাম গিয়ে তার জমিদারীতে চাষা মজুর ইত্যাদি ।

আওয়ামী জানেও না, শুধুমাত্র এই মনোবৃত্তির কারনে তারা কি পরিমান ভোট ও সমর্থন হারায়।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

পুরুজিত এর ছবি

এই লোককি বাংলা লিখতে পারে? তাইলে আমাদের কষ্ট করে অনুবাদ করতে হত না।

এনকিদু এর ছবি

বাংলা পারে না ? অ্যাঁ

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এইবার লক্ষণ আসলেই খারাপ। "বেটার ইভিল" তত্ত্বে আওয়ামী লীগ বেটার, সেটা আমরা জানি। দুই প্রধান দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের কিছু চারিত্রিক গুণাবলি আছে, সেটাও আমরা জানি। জানি দেখেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও হয়তো সমর্থন না করলেও ভোটটা ঠিকই দেই।

এখন আওয়ামী লীগ নিজেই এই দু'টো পয়েন্টকে ক্যাশ-আউট করতে চাওয়া খুব বাজে লক্ষণ। একটা দল নিজের যাবতীয় সৃজনশীলতা বর্জন করে হাত-পা বেচতে লাগলে এমনটাই হয়।

তবুও বলবো এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতলে তুলনামূলকভাবে ভাল। তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জয়-এর বাম হাত ঢুকানো থামানো দরকার। অনেক যোগ্য, উদ্যোগী, ও মেধাবী রাজনীতিক আছেন আওয়ামী লীগে। হাসিনার আমলে তাঁরা সামনে আসতে পারেননি। এবার গায়ের জোরে জয়কে আনলে আরো অনেকগুলো প্রজন্ম মার খাবে।

জয় হয়তো মানুষ ভাল হতে পারেন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র হতে পারেন, কিন্তু তাঁকে দিয়ে রাজনীতি হবে না। উজবুকের মত লেখালেখি করে আওয়ামী লীগের ব্র্যান্ড নষ্ট করার আগেই তাঁকে থামানো দরকার।

এনকিদু এর ছবি

থামানর উপায় টা কী ? আমরা সবাই মিলে যদি বলি " ভাই মাফ চাই, আপনি অফ যান " তাহলে কী সে শুনতে পাবে ? আর শুনতে পেলেও মানবে ?

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"বেটার ইভল" তত্বটা আসলে একটা রিডানড্যান্ট তত্ব .... এটা ঘুরেফিরে অন্ধসমর্থনের বেলা যে ফলাফল হতো সেটাই নিয়ে আসে ... কারণটা খুব সিম্পল, লীগ সাপোর্টাররা মনে করে লীগ বেটার ইভল, দল সাপোর্টাররা মনে করে দল বেটার ইভল ... ফলাফল হইলো, আমার ভোট আমি দিমু, যার লাইগা পাগল তারেই দিমু হাসি

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

জয় হয়তো মানুষ ভাল হতে পারেন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র হতে পারেন, কিন্তু তাঁকে দিয়ে রাজনীতি হবে না। ---- মনে পড়ে জয় যখন সস্ত্রীক বাংলাদেশে এসেছিলেন সম্ভবত হাওয়া ভবনের একজন মুখপাত্র একিট টিভি চ্যানেলে আর মুফতি আমিন এই মন্তব্য করিছেলন পল্টনের একটা মিটিং এ। আমিনী অবশ্য বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র হতে পারেন-- এ মন্তব্য টুকু করেননি।

উজবুকের মত লেখালেখি করে আওয়ামী লীগের ব্র্যান্ড নষ্ট করার আগেই তাঁকে থামানো দরকার।-- এ ধরনের মন্তব্য আগে সামহোয়ারইন- এ লক্ষ্য করতাম। এখানেও কি ওই চর্চা হবে ?

বিপ্রতীপ এর ছবি

প্রচলিত রাজনীতিবিদদের মতোই ভাষা, নতুন কিছু মনে হয়নি। কথাবার্তায় মনে হলো খুব শীঘ্রই সক্রিয় হবেন মাঠের রাজনীতিতে। তারেক রহমানের মতো হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসলে খুব একটা ভালো দেখাবে না, দলের অনেকেও সহজে মেনে নেবেন বলে মনে হয় না। বরং নিজের কাজের মাধ্যমে দলে অবস্থান তৈরি করতে পারলে সেটাই ভালো দেখাবে। সেটা সম্ভব কিনা কে জানে, চারপাশে তোষামোদকারীরা ঘিরে ধরবে...যেমনটা তারেক রহমানের ক্ষেত্রেও হয়েছে। এ থেকে বের না হতে পারলে যেই লাউ সেই কদুই থাকবে...

প্রকৃতির বিবর্তনের মতোই আওয়ামী লিগ এখন পরিবর্তনের মুখোমুখি।

খুঁজে দেখার মতো বিষয়...

@অমি ভাই,
লীগ বানানটা একটু দেখবেন কি?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

জয় এবং তার মা, দুজনেরই কথা বা লেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি যখন দেখি এরা আজব আজব পরিসংখ্যানগত তথ্য দিচ্ছে কোন রেফারেন্স ছাড়াই!!

যেমন উনি কিভাবে পরিমাপ করলেন যে দেশের ৯৬% লোকই গণতন্ত্রে ফিরতে মরিয়া!

আবার বললেন, আওয়ামী লীগ আমলে মুদ্রাস্ফীতি ছিলো ১.৫৯!!!
এইটা কোথা থেকে আনলেন তিনি!

অথচ [url]http://www.indexmundi.com/bangladesh/inflation_rate_(consumer_prices).html[/url] -- এখানে আইএমএফ বলছে সম্পূর্ণ অন্য কথা ...

১৯৯৬ এর অর্ধেক বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো, ২০০১ এর অর্ধেক বছর ক
ক্ষমতায় ছিলো ... কাজেই এই পেজের শেষের টেবল থেকে ৯৬এর মুদ্রাস্ফীতির অর্ধেক আর ২০০১ এর মুদ্রাস্ফীতির অর্ধেককে যোগ করে, আর বাকী চার বছর, মানে ৯৭, ৯৮,৯৯,২০০০ -- এই চার বছরের স্ফীতির হারকে যোগ করলে হয়, ২৪.৪৫, মানে গড় মুদ্রাস্ফীতি = ৪.৮৯ .... ১.৫৯ টা ঠিক আসলো কোথা থেকে? এখানে আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ্য, ৯৮ এ মুদ্রাস্ফীতি ছিলো ৮.৬৫, যা গত ১৩ বছরে ২য় সর্বোচ্চ (সর্বোচ্চ হলো এবছর ২০০৮ এ, ৯.৩)

অন্যদিকে বিএনপির ৫ বছরের (২০০২ থেকে ২০০৬), যদিও তারা ২০০১ এ দুমাস ক্ষমতায় ছিলো, এবং সেদুমাসের ভাগ তাদেরকে দিলে তাদের স্কোর আরো বেটার দেখায় ... তো, বিএনপির বেলায় যোগফলটা হলো ২৮.৭৭, গড় বৃদ্ধি ৫.৭৫!!

খুব কি আলাদা!!

লীগের ভাগ্য ভালো যে তাদের শেষ সময়ে মুদ্রাস্ফীতি কম ছিলো, বাঙালী সব ভুইলা যায় দ্রুত চোখ টিপি ... আর জোটের ভাগ্য খারাপ হইলো তাগোর সময়ে শেষদিকে মুদ্রাস্ফীতি টান মারছে চোখ টিপি ... তবে এখনকার মুদ্রাস্ফীতি পাবলিকরে জোট আমলের দুর্ভোগও ভুলাইয়া দিবে

প্রশ্ন যেইটা জাগে,আসলেই কি লীগ-বিএনপিতে ডিফারেন্স আছে!!!

তারচেয়েও বড় যেই প্রশ্নটা জাগে সেইটা হইলো, আসলেই কি অর্থনীতির উন্নয়নে সরকারের ভুমিকা আছে? ... আমার তো মনে হয় সেটা খুব নগণ্য, জানিনা অর্থনীতিবিদরা ভালো বলতে পারবেন
(একটু আগে হিসাবে ভুল করছিলাম, ঠিক করে দিলাম)
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

দিগন্ত এর ছবি

অর্থনীতিতে তেলের দামের ভূমিকা আসল। এর পাশে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামটাও রাখুন। ২০০১ অবধি তেলের দামও কম ছিল যে ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দ্রোহী এর ছবি

আমি সব দেখে শুনে ক্ষেপে গিয়ে বলি "লোল"


কী ব্লগার? ডরাইলা?

সুমন চৌধুরী এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি

এই ধরণের লেখায় আসলে মতামত দেওয়া খুব ক্লান্তিকর। আওয়ামী লীগ এইবারে যেই কয়টা বাড়তি ভোট পাবে সেগুলা হইল "বি.এন.পি.-জামাত'কে দেওয়া হবে না" ভোট। শুধুমাত্র চারদলীয় জোটরে আপাতত ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে এই ধরণের একটা অবস্থান থিকা ভাসমান ভোট গুলিরে আওয়ামী জোটের দিকে ঠেলা যায়। এর বাইরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি'র তুলনামূলক পেডান্টিক আলোচনা মূলা,বুটের ডাল একসাথে খাওয়াইয়া আসাদ গেট থিকা গাবতলীগামী জামপ্যাক্ট মিনিবাসের ভিতরে ঠেইলা দেয়।
জয় সাহেবের লেখাটা ডেইলি স্টারে ছাপা হইছে, কারণ সে সাবেক প্রধাণমন্ত্রীর পোলা আর শেখ মুজিবের নাতি।

আমার মনে হয় আর কিছু বলার নাই।



অজ্ঞাতবাস

বিপ্লব রহমান এর ছবি

লেখাটা পড়ে প্রথমে মন্তব্য করতে চেয়েছিলাম: হাসবো? চোখ টিপি
এখন সু. চৌ.র মন্তব্য পড়ে বলছি: একমত।।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ফাহিম এর ছবি

পুরোপুরি একমত।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

সু. চৌ @

জয় সাহেবের লেখাটা ডেইলি স্টারে ছাপা হইছে, কারণ সে সাবেক প্রধাণমন্ত্রীর পোলা আর শেখ মুজিবের নাতি। ---- এটা মনে হয় ঠিক না...... কারন ডেইলি স্টার এর উপ সম্পাদকীয় পাতা আর ফোরামে রেগুলার হার্ভার্ড.. অক্সফোর্ড সহ বিভিন্ন বিশ্বিবদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-গবেষকদের লেখা ছাপা হচেচ্ছ যাদের অনেকেরই রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আর ফোরামে জয়ের সাথে মাহি চৌধুরীর লেখাও ছাপা হয়েছে।

ফাহিম এর ছবি

আমরা যারা রাজনীতি করি

হাস্যকর

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

রাকিব হাসনাত সুমন এর ছবি

কেউ কেউ মনে কষ্ট পেতে পারেন....................... একমাত্র আওয়ামী লিগই পারে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে............এতেও হয়তো অনেকে একমত হবেননা......তারপরও বলতে হয়....................... বেছে নিতে হবে একটিকেই... হয় আওয়ামী লীগ অন্যথায় জামাত-বিএনপি। তাই কেউ (বিশেষ করে পন্ডিত গণ) অন্ধভাবে আওয়ামী সমর্থন করলে তাতে দলটির কোন লাভ না হলেও অন্ধভাবে আওয়ামী লীগের সমালোচনাও হবে জামাত-বিএনপির শক্তি.... যিনিই তা করুন না কেন।

ফাহিম এর ছবি

মানে কি? আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা যাবে না?

এক জনের সমালোচনা করলে আরেকজনের সুবিধা, এই যুক্তিতে সমালোচনা বন্ধ করে দিলে তো বোবা হয়ে বসে থাকা ছাড়া কোন রাস্তা রইলো না!

উপরের কোনটা অন্ধভাবে আওয়ামী লীগের সমালোচনা পরিস্কার করলে কৃতার্থ থাকতাম।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

কলম জিনিসটা কারো কারো হাতে দৃষ্টিকটু রকমের বেমানান লাগে ... ... !

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ইয়ে...আপনি কী বলতে চান আমি বুঝি নাই ..আপনি বুঝেছেন তো ?

অতিথি লেখক এর ছবি

যারে দেখতে নারী তার চলন বাঁকা- এই ধারনা থেকে বের হয়ে এসে লেখাটা পড়ার অনুরোধ করছি। একটা জিনিস খেয়াল করবেন বাংলাদেশে যারা রাজনীতি[?] করে তাদের মধ্যে কিন্তু লেখা লেখি করার কোন প্রবনতা নাই। পেটে বোম মারলে ও অনেকের কলম থেকে এক বিন্দু বের হবে না।

জয় লিখছে, অনেকেই সমালোচনা করছেন। কিন্তু সঠিক ভাবে লেখার ভুল ধরে দিচ্ছে কয়জন?

হার্ভাড এর লেখায় অনেক ত্রুটি ছিলো, সেটা আরিফ জেবতিক ধরে দিয়েছিলেন। খেয়াল করে দেখবেন হার্ভাড এর লেখার সমালোচনা জয় গ্রহন করেই ডি,এস এর লেখাটা লিখেছে। তাই এই লেখাটা আগের টার চেয়ে খারাপ নয়।

আমি বলবো, জয়ের চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, ” এটা আপনি ভুল লিখেছেন।” অথবা “এটা আপনার লেখা উচিত না” অথবা ” এটা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে”?

একটা লোক লিখতেছে, তারে সাহস দেন না রে ভাই! এভাবে দৌড়ানি দিলে তো লেখাই বন্ধ করে দিবে।

--

সুশান্ত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

@সুশান্ত দা

জয়ের ভুলগুলোঃ
১) অতি-সরলীকরণঃ গত লেখায়ই জয় যা ক্ষতি করার করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের সমস্যাগুলো তাঁর ধারণার চেয়েও জটিল। সমাধানগুলোও তাই অনেক সাবধানী হওয়া উচিত। চায়ের আসরে কিংবা দাওয়াতের পরে কট্টর আওয়ামী লীগাররা "সেনাবাহিনী", "মাদ্রাসা", "জামাত", ইত্যাদিকে মোটা দাগে দায়ী করে থাকে তাঁদের দুরবস্থার জন্য। এই লেখাগুলোও সেই স্টিরিওটাইপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।

২) অসতর্কতাঃ মৌলবাদী চক্র কতটা গোছানো, এবং তাদের প্রচারযন্ত্র কতটা কার্যকর, তা সবাই জানি। এই অবস্থায় জয়ের মত অবস্থানের কেউ তাদের হাতে এমন ব্রহ্মাস্ত্র তুলে দেওয়া খুবই বিপদজনক। তাঁর লেখনি দিয়ে জয় আওয়ামী লীগের চার আনা লাভের কারণ না হলেও বারো আনা ক্ষতি করছেন। রাজনৈতিক ব্যাপারে কিছু লিখতে হলে অনেক ধরণের ফাঁক-ফোকর বন্ধ করে নিতে হয় আগে। এতটা কাছা-ঢিলা লেখা ছেপে কেউ কোনদিন কিছু অর্জন করেনি।

৩) উত্তরাধিকারের রাজনীতিঃ জয় শুধুমাত্র তারেক জিয়ার উন্নত সংস্করণ হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে মনে হল। উত্তরাধিকারের সূত্রেই তিনি দেশটা নিতে চাইছেন বলে মনে হয়। কোন নীতি পরিবর্তণের কথা নেই, কোন নতুন দিক-নির্দেশনা নেই। শুধু "আমার মা" দিয়ে ভর্তি। একটা বারের জন্যও তো "মা" কথাটা আসা উচিত না কোন *রাজনৈতিক* লেখায়। আগেও বলেছি, আওয়ামী লীগে *অনেক* মেধাবী রাজনীতিক আছেন। তাঁদের ডিঙিয়ে জয়কে ঘাড়ে বসানোর এই প্রয়াস কি খুব জরুরী?

রাস্তার পাশে ছেলেপুলে দাঁড় করিয়ে রাখা থেকে শুরু করে নিজের মায়ের গুণকীর্তি পর্যন্ত সবই তো তারেক জিয়ার মতই! তারেক জিয়া তবু প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে দল গোছানোর কাজ করেছেন। জয়কেও আর সবার মতই নিচ থেকে উঠে আসা উচিত।

@রাকিব হাসনাত সুমন
দুঃখিত, আমি চাটুকার নই। আমি স্পষ্ট ভাবেই বলেছি, ভোট আওয়ামী লীগকেই দেওয়া উচিত। তবে তাই বলে আওয়ামী লীগের কোন ত্রুটি দেখিয়ে দেওয়া যাবে না, এ-ধরণের দাস-খত লিখে দেওয়ার বিপক্ষে। আওয়ামী লীগ যদি তেমনটাই চায়, তবে অহেতুক ভোট হারাবে।

আমার কাছে জয় বা আওয়ামী লীগের চেয়ে দেশ বড়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্ষমতাগ্রহণের জন্য জয় প্রস্তুত নন। সমর্থনের বেলায় "আওয়ামী লীগ" বলা হয়, কিন্তু সুনাম করতে গেলে কেন শুধু হাসিনায় এসে ঠেকে? কেউ কি একবার কিবরিয়া বা মতিয়ার কথা বলেন? এখন তো সব ডিঙিয়ে জয়ের প্রশংসা করে হচ্ছে। কেন এই চাটুকার-মনোবৃত্তি?

আমাদের বাড়ি মিরপুর। দেশের অন্য জায়গায় "সৎ", "যোগ্য", "শিক্ষিত" প্রার্থীর অভাব হলেও ঢাকার কোথাও তো সেই সমস্যা নেই। তবু কেন আওয়ামী লীগ এবারও কামাল আহমেদ মজুমদারের মত লোককে মনোনয়ন দিল? চোর, চরিত্রহীন, মাগীবাজ, সন্ত্রাসী এই লোককে মনোনয়ন দিয়ে আওয়ামী লীগ কী প্রমাণ করতে চাইছে?

জয় আবির্ভূত হচ্ছেন আওয়ামী লীগের উদ্ধারকর্তা হিসেবে। তাঁর কাছে কি এইসব ব্যাপারে কোন দিকনির্দেশনা পাওয়া গেছে? জয় লিখছেন, ভাল কথা। তিনি কি লেখার আগে আদৌ কারো সাথে কথা বলেছেন? মনে তো হচ্ছে না। দলের মুখপাত্র হিসেবে লিখলে সেটি করা তাঁর দায়িত্ব ছিল। যদি তিনি দল/দেশের দায়িত্বে জাবেনই, তবে কেন তাঁর সমালোচনা করলে তাঁকে আগলে রাখার জন্য এমন বুদ্ধিবৃত্তিক রক্ষণব্যুহ গড়ে তোলা?

আমি কতটা কট্টর ভাবে জামাত-বিরোধী মানুষ সেটা অনেকেই জানলে হয়তো আপনার জানা নেই। আমাকে অবলীলায় আমিনীরও অধম এবং সামু'র ছাগু-উটুদের সমতুল বলে ডাকার ব্যক্তিগত আক্রমণটুকু তাই গায়ে মাখলাম না। আশা করি পরবর্তীতে একটু ভেবে/জেনে লিখবেন। আপনার আর আমার আদর্শে তেমন কোন বিভেদ নেই, তবে আওয়ামী লীগ/হাসিনা/জয়ের প্রতি ভক্তিবোধে কিছুটা ফারাক আছে। সমমনাদের প্রতি এই ধরণের আচরণ আখেরে লাভের চেয়ে ক্ষতি করে বেশি।

বিপ্রতীপ এর ছবি

সুশান্তদা,
অনুৎসাহিত কিন্তু কেউ করছেন না...সত্যিকার পরিবর্তন চাইলে সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে ...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

অতিথি লেখক এর ছবি

ইশতি, হিমু ও বিপ্রকে অনেক ধন্যবাদ সুচিন্তিত মতামতের জন্য। ভালো লাগছে আলোচনায় অংশগ্রহন করে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

একটু আগের "মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা, ১৬ বছর পরও কি আপনার এই বক্তব্য অনুদিত হবে না?" শিরোনামের পোস্টটা কোথায় গেল?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।