মুক্তি পেয়েও আরিফের ফেরারী যাপন

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি
লিখেছেন অমি রহমান পিয়াল (তারিখ: বুধ, ২৮/০৫/২০০৮ - ৫:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কার্টুনিস্ট হওয়ার স্বপ্ন আরিফ কখনোই দেখেনি। ছবি আঁকাটা তার নেহাতই শখের। ছোটো থাকতে কাঠি দিয়ে মাটিতে আকিবুকি, পরে পেন্সিল দিয়ে কাগজে। গ্রামের ছেলে রং কোথায় পাবে? কেইস্তা পাতা দিয়ে সবুজ, সন্ধ্যা মালতীর লালচে গোলাপী আর রান্নাঘর থেকে চুরি করা হলুদ তার রংয়ের ঘাটতি মেটাতো। কাঠিতে কাপড় পেচিয়ে চলতো আরিফের পেইন্টিং। প্রতি বছর পচিশে বৈশাখের জন্য অপেক্ষা তার। রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীতে শাহজাদপুর কুঠিবাড়িতে তিন দিনের এক মেলা বসে। পলিথিন কাগজে মুড়ে, কাঠ দিয়ে আটকে আরিফ তার শিল্পসম্ভার নিয়ে হাজির হতো সেখানে। সারাবছর জমানো পয়সা দিয়ে স্টল নিতো। কেউ ছবি কিনতে চাইলে বিক্রি করতো না, এগুলো ছিলো তার প্রাণের সম্পদ।

সব বদলে গেলো একটা বিজ্ঞাপনে। ২০০৪ সালে বিচ্ছু নামে একটা ফান ম্যাগাজিন পাঠকদের কাছে কার্টুন চাইলো। আরিফ এর আগে কখনো কার্টুন আঁকেনি। এবার আঁকলো, পাঠালো, আর সেটা ছাপাও হলো। গ্রামের ছেলের আঁকা কার্টুন একটা জাতীয় পত্রিকার সাময়ীকিতে ছাপা হয়েছে! আরিফ পুরো স্বর্গে! চেনা-অচেনা সবাইকেই সে দেখালো তার কীর্তি। সেইসঙ্গে পুরোদস্তর কার্টুনে মন দিলো। ‘উন্মাদ’ ও ‘আলপিন’-এর মতো বিখ্যাত ম্যাগাজিনগুলোতেও ঠাই পেলো তার আঁকা।

আরিফের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে ছোটো থাকতেই। আত্মীয়দের বাসাতেই তার বেড়ে ওঠা। পরিবারের একমাত্র ছেলে হিসেবে তাই উপার্জনের কথাও ভাবতে হয়। কিছু করতে, সেইসঙ্গে কার্টুনটাও ধরে রাখতে ঢাকায় চলে এলো আরিফ। চাচাতো ভাইয়ের মুদি দোকানে কাজ নিলো। মাগনা থাকা-খাওয়া আর সামান্য পকেট খরচ- আরিফ তাতেই খুশী। দুপুরের খাবার পর দোকান একটু ফাঁকা থাকে। সে সময়টায় চলে কার্টুন আঁকা। আর বাসায় ফেরার পর ঘুমানোর আগ পর্যন্ত।

এভাবেই একদিন খ্যাতিও চলে আসে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত এক কার্টুন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরষ্কার জেতে আরিফ। এরপর ডেইলি স্টার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের যৌথ আয়োজনে এক প্রতিযোগিতায় একদম প্রথম। রফিকুন্নবী (রনবী) ও শিশির ভট্টাচার্য্যরা অবাক হন জেনে যে আঁকাআঁকিতে কোনো ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই নেই আরিফের! এর মধ্যে প্রথম আলো টুন হান্টেও দুটো বিভাগে জয়ী হয় সে। তবে আলপিনের সম্পাদক সুমন্ত আসলাম জানিয়ে দেন সব জায়গায় কার্টুন পাঠালে হবে না, প্রথম আলোয় ছাপাতে হলে শুধু সেখানেই কার্টুন দিতে হবে। আরিফ মেনে নেয়, যোগ দেয় আলপিনের প্রদায়ক কার্টুনিস্টদের দলে।

মাসখানেক পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে আরিফের। রোজার মাস। আরিফের ইচ্ছে আঁকাআকি বাবদ অল্প যা কিছু পাওয়া যায় সেটা দিয়ে মা আর বোনের জন্য কিছু নিয়ে যাবে ঈদের ছুটিতে। এর মাঝেই আলপিনে ছাপা হলো আরিফের সেই কুখ্যাত কার্টুনটি। এক বৃদ্ধ লোক এক বাচ্চাকে তার নাম জিজ্ঞেস করছে। ছেলেটি নাম বলার পর লোকটি তাকে বকলো নামের আগে কেনো মোহাম্মদ (দঃ) লাগায়নি সে। এরপর তাকে তার কোলের বিড়ালটির কথা জিজ্ঞেস করলে ছেলেটি এবার বিড়ালের আগে মহানবীর নাম বসিয়ে উত্তর দিলো।

আলপিনের সেই সংখ্যাটি বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে গেলো চারদিকে। বায়তুল মোকাররমে একদল মৌলবাদী আলপিন পোড়ালো, প্রথম আলো সম্পাদক ও কার্টুনিস্ট আরিফের গ্রেপ্তার ও চরম শাস্তি দাবি করলো। প্রথম আলো প্রথম পাতায় ক্ষমা চেয়ে সম্পাদকীয় ছাপালো, আলপিন বন্ধ ও আরিফের কোনো কার্টুন না ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিলো। সম্পাদক মতিউর রহমান বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন, পার পেলো না আরিফ। ছয় মাস রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ধর্ম অবমাননার দায়ে জেল খেটে গত ২০ মার্চ অবশেষে মুক্তি পেয়েছে সে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়েছে তাকে। তার মুখ থেকেই চলুন শোনা যাক পুরা ব্যাপারটা।

এমন একটা কার্টুন আঁকার আইডিয়া কোথায় পেলেন? কেন আঁকলেন এটা?
আসলে আমি বুঝতে পারিনি এটা নিয়ে এত হৈ চৈ হবে। আমি সিরাজগঞ্জের ছেলে। আমাদের ওখানে এই কৌতুকটা খুবই প্রচলিত, ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। আমি শুধু একটু রূপান্তর করেছি। আসলে আমি চেয়েছিলাম আমাদের ধর্মীয় শিক্ষার অসম্পূর্ণতাটুকু তুলে ধরতে। মুরুব্বীরা আমাদের শেখান নামের আগে মোহাম্মদ ব্যবহার করতে। কিন্তু কার নামের আগে সেটা ব্যবহার করা যাবে, কোথায় যাবে না- সেটা তারা বলে দেন না। মুক্তি পাওয়ার পর আমি অবাক হয়েছি জেনে যে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কিশোর কণ্ঠ (নভেম্বর, ১৯৯৮ সংখ্যা) নামের একটা পত্রিকায় একই কৌতুক একটু অন্যভাবে ছাপা হয়েছে।

আপনি দেখেছেন সেটা?
হ্যাঁ, দেখেছি।

এরপর কি হলো?

গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর আমি কার্টুনটি আঁকি। আলপিনে তা ছাপা হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন বিকেলের দিকে এক সহ-প্রদায়ক আমাকে ফোন করে জানায় যে আমার কার্টুনটি নিয়ে নাকি খুব গন্ডগোল হচ্ছে। সে বাসে করে কোথায় যাচ্ছিলো, তাই পুরোটা খুলে বলতে পারেনি। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। ফোন করলাম আলপিন সম্পাদক সুমন্ত আসলাম ভাইকে। উনি বললেন দুঃশ্চিন্তা না করতে, সব ঠিক হয়ে যাবে। আর ফোন খোলা রাখতে বললেন আমাকে। সে রাতটা আমার নির্ঘুম কেটেছে।
পরদিন সকালে আমার চাচাতো ভাইকে খুলে বললাম ঘটনা। উনি আমাকে গা ঢাকা দিতে বললেন। এরপর সাংবাদিক টিপু সুলতান (আওয়ামী লীগ সাংসদ জয়নাল হাজারীর নির্যাতনে মৃত্যুর মুখে পড়া এই সাংবাদিক আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছিলেন) ভাইয়ের ফোন এলো। উনি বললেন সিআইডির গোয়েন্দারা আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি যেনো ভয় না পাই এবং উনাদের সহযোগিতা করি।

আপনি তখন কোথায়?

দোকানে। এরপর সিআইডি থেকে ফোন এলো, তারা আমার ঠিকানা জিজ্ঞেস করলেন। আমি বললাম। ঘণ্টাখানেক পর পুলিশের একটি জিপ এসে থামলো দোকানের সামনে। আমি তখন বাইরে দাঁড়িয়ে। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এসে আমার খোঁজ করলেন। পরিচয় দিয়ে বললাম আমিই আরিফ। উনি বললেন তার সঙ্গে জিপে উঠতে। আমাকে মিন্টু রোডে তাদের কার্যালয়ে যেতে হবে কিছু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এরপর ওয়ারল্যাসে কাকে যেন বললেন- ‌‌ওকে আমরা ধরেছি স্যার। আমি ভড়কে গেলাম। জিপে উঠতে উঠতে জানতে চাইলাম আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা। উনি বললেন যে আমাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি ফোন করতে চাইলাম আমার চাচাতো ভাইকে, কিন্তু উনি আমার মোবাইল নিয়ে নিলেন। একটু পর ফেরত দিলেন অবশ্য। আমি সুমন্ত ভাইকে একটা এসএমএস করলাম। উনি কোনো জবাব দেননি।

জেরার সময় কি আপনাকে মারধোর করা হয়েছে?

না, মোটেই না। আমাকে নিয়ে অফিসারটি উপরতালায় একজন বড় কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গেলেন। উনি তাকে বললেন- তোমাকে পুরস্কার দেয়া হবে। হয়তো আমার মতো একজন দাগী অপরাধীকে গ্রেপ্তার করার জন্য (হেসে)। আমার কাছে জানতে চাইলেন কেনো এমন কার্টুন আঁকলাম। আমি বললাম কেনো একেছি। এরপর আমাকে নীচতলায় নিয়ে যেতে নির্দেশ দিলেন। সেখানে আমাকে জেরা করা হলো, কয়েকজন অফিসার জানতে চাইলেন কার বুদ্ধিতে আমি কার্টুনটা একেছি।

কার বুদ্ধিতে মানে?

উনারা জানতে চাইলেন এটা আমাকে কে আঁকতে বলেছে। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কিংবা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বা আর কেউ এমন কোনো নির্দেশ দিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলেন। আমি জানালাম এটা একান্তই আমার আইডিয়া। সেইসঙ্গে আমি ক্ষমা চাইলাম অন্য সবার হয়ে। বললাম যা শাস্তি দেবার আমাকে দিন, এই কার্টুনের সঙ্গে কোনোভাবেই আর কেউ জড়িত নন।
এর মধ্যে নীচতলায় থাকতে আমি প্রথম আলোর প্রথম পাতাটি দেখেছি, সেখানে দেখলাম ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। আর বলা হয়েছে আমার কার্টুন আর কখনোই ছাপাবেন না তারা। ভাগ্যভালো যে সেখানে কয়েকজন আমার হয়ে কথা বলছিলেন। একজন আমার একটা ছবি প্রিন্টআউট এনে দেখালেন যেখানে আমি দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্টুন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার নিচ্ছি। আরেকজন বললেন আমি একজন উদীয়মান কার্টুনিস্ট যে একদিন খুব বিখ্যাত হবে।

তাহলে সেখানে তেমন কিছু ঘটেনি?

ভয় পাওয়ার মতো কিছু হয়নি। তবে একটা চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিলো। আমাকে তেজগাঁ থানায় হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। সেখানে যাওয়ার আগে একজন গোয়েন্দা অফিসার আমাকে তার রুমে নিয়ে গেলেন। তার কম্পিউটারে দেখালেন আমার পুরষ্কার পাওয়া কার্টুনগুলো। বললেন তার ভাই নাকি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালে চাকুরি করেন, তার কাছ থেকেই তিনি এগুলো সংগ্রহ করেছেন। এরপর আমাকে অনুরোধ করলেন একটা কার্টুন একে দিতে। আমি একটু বিব্রত হলাম। বললাম আমার মানসিক অবস্থা কার্টুন আঁকার মতো নয়। উনি পিড়াপিড়ি করতে লাগলেন যা খুশী একটা কিছু একে দিতে, উনি সেটা স্মৃতি হিসেবে রাখতে চান। অগত্যা আঁকলাম। একজন তরুণ ম্লান মুখে বসে আছে, আর অন্য একজন তার সঙ্গে কথা বলছে। ঠিক কার্টুন নয়, স্কেচ। তখনকার পরিস্থিতিটাই আমি কাগজে তুলে দিয়েছি। উনি খুব প্রশংসা করলেন সেটার। আমার সাক্ষর নিলেন।

এর মধ্যে কেউ যোগাযোগ করেনি?

না গোয়েন্দা অফিসে থাকতে কেউ করেনি। যখন আমাকে তেজগাঁ থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন আমার চাচাতো ভাই আর এক মামা ফোন করে অভয় দিলেন। বললেন আমাকে মুক্ত করার সবচেষ্টাই তারা করবেন। এরপর প্রথম আলোর আরেক সাংবাদিক ফোন করলেন। তিনি বললেন এনএসআই (জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা) থেকে আমাকে ফোন করা হবে। আমি যেন তাদের সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করি এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ঠিকঠাক উত্তর দিই।

তাহলে সিআইডির অভিজ্ঞতা তেমন ভয়ানক ছিলো না?

তা ঠিক। মানুষগুলো আসলেই ভালো। আমাকে যিনি তেজগাঁ নিয়ে যাচ্ছিলেন, উনি স্বান্তনা দিয়ে বললেন যে তার ধারণা আমি পরিস্থিতির শিকার। মনে হয় আমার গ্রাম্য চেহারা দেখেই তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে আমি নির্দোষ। উনারা দিনরাত অপরাধীর পেছনে ছোটেন, তাদের চোখে ঠিকই ধরা পড়ে কে অপরাধী।

থানায় কি হলো?

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আমাকে তেজগাঁ থানার ওসির কাছে বুঝিয়ে দিলেন। চলে যাওয়ার পরও তিনি আবার ফিরে এলেন আমাকে স্বান্তনা দিতে। বললেন ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে, আর থানার কর্মকর্তাদের অনুরোধ করলেন আমার উপর যেনো কোনো অত্যাচার না করা হয়। আমি ভীষণ অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম তার এই আচরণে। এরপর ওসি সাহেব আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কেনো আমি এমন একটা কার্টুন আঁকলাম। জানালেন আমার জীবনের উপর হুমকি থাকায় সরকার আমাকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এরপর উনি আমাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সই করতে বললেন। হাজতখানার পাশেই একটা টেবিলে নাম-ঠিকানা লেখাতে গেলাম। ঝামেলা শুরু হলো তখনই। একজন দারোগা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলেন। কয়েকজন সেপাই তার সঙ্গে যোগ দিলো।

তারা কি মারলো আপনাকে?
না, গায়ে হাত তুলেনি। তবে ধর্মের অবমাননা করেছি বলে চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ফেললো। এইসময় এনএসআই থেকে ফোন এলো। একজন অফিসার সেই আগের প্রশ্নগুলোই করলেন- কেনো একেছি, কার বুদ্ধিতে একেছি। বাকিদের উচ্চস্বরে গালাগালির মাঝে যতটা সম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রেখে আমি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলাম। এক পর্যায়ে ওই দারোগা আমার ফোনটি কেড়ে নিয়ে পকেটে রেখে দিলেন। আর ফেরত পাইনি। এরপর আমাকে হাজতে পোরা হলো। রোজা ছিলাম, তাই ইফতারি করলাম বাকি হাজতিদের সঙ্গে। এরপর আমাকে আলাদা হাজতে একা রাখা হলো।

সাংবাদিকরা যোগাযোগ করেছিলেন আপনার সঙ্গে?

না। আমি শুনেছি তারা থানায় এসেছিলেন। তবে কেউ আমার সঙ্গে দেখা করেননি। আমাকে নিরাপত্তা হেফাজতে আনা হয়েছে এটা তাদের দেখাতেই আমাকে আলাদা রাখা হয়েছিলো। পরে অবশ্য বদলে গেছে অভিযোগ।

বদলে গেছে মানে?
আমাকে যখন আদালত থেকে জেলে পাঠানো হলো, তখন জানলাম আমার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন তেজগাঁ থানার ওসি।

তার মানে দেশ ও জনগণের শত্রু?

সেরকমই অনেকটা।

মাঝে একটা কথা জানা হয়নি। আপনাকে এনএসআই জিজ্ঞাসাবাদ করার মাঝ পথে যোগাযোগ যে কেটে গেলো, এতে তারা কিছু মনে করেনি? আপনার সঙ্গে কি যোগাযোগ করেছিলেন তারা?
আমি সেটা জানি না। তবে দোষ তো আমার না। উনারা অবশ্য যোগাযোগ করেননি আর।

জেলে কি ঘটলো? মানে আপনার অভিজ্ঞতা কি রকম?

আমার উপর দুটো হামলার ঘটনা বাদ দিলে খুব একটা খারাপ কাটেনি সেখানে। অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তবে আমার মনটা খারাপ থাকতো। মাকে ছাড়া দুটো ঈদ কেটেছে আমার কারাগারে। এই কষ্টটাই আমাকে পোড়াতো।

হামলা! কি রকম?

জেলে নেয়ার পর আমাকে আমদানী ওয়ার্ডে রাখা হলো। মুখে মুখে খবর রটে গিয়েছিলো যে আমি এসেছি। ওখানে কয়েদিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকার একটা ব্যবস্থা আছে। এমনি এক মিথ্যে ঘোষনা দিয়ে আমাকে চেনানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর একদল লোক আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। লাথি-চড়-কিল-ঘুষি চলতেই থাকে। এরপর একজন বাঁশ দিয়ে পেটালো আমাকে। ঘণ্টাখানেক পর তারা আবার এলো। একজন পায়খানা থেকে কাঠি দিয়ে গু তুলে আমার মুখে ঘষে দিলো। আমি তখন রোজা। কষ্ট সহ্য করে মুখ ধুয়ে এলাম।

কেউ আটকায়নি? কারা ছিল তারা?

শুরুতে কেউ কিছু বলেনি। মারধোর চরম পর্যায়ে যাওয়ার পর অন্যরা আমাকে বাঁচিয়েছে। এরা ছিলো জেএমবির (জামাতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ) সদস্য।

কিভাবে বুঝলেন যে ওরা জেএমবির সদস্য?

আমি জিজ্ঞেস করে জেনেছি, পরে ওদের সঙ্গে কথাও বলেছি। সবাই জানে ওরা জেএমবি সদস্য।

কথাও বলেছেন?

ওরা আমাকে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখত। আমি কি করি, কোথায় যাই, কার সঙ্গে কথা বলি- সব নজরদারি করতো। কেউ কেউ আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করেছে। তাদের দলে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। আমি বলেছি দেবো (হেসে)।

দেবেন!
ওদের পিছু ছাড়াতে কিছু একটা বলা দরকার, তাই বলেছি।

দুটো হামলা বাদ দিলে আর কোনো সমস্যা হয়নি তাহলে?

হামলার ঘটনার পর আমাকে মনিহার ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানেও তারা হামলার চেষ্টা করেছিলো। এরপর আমাকে ছয়সেলে রাখা হয়। সেখানে আরাফাত রহমান কোকো (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে), অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী আবদুল আওয়াল মিন্টুকে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। নিরাপত্তার কারণে রোজার ঈদের নামাজ আমাকে জামাতে পড়তে দেয়া হয়নি, নিজের রুমে একা একা পড়েছি। কোরবানীর ঈদে অবশ্য জামাতেই পড়েছি।

বিখ্যাত লোকদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি?

বলার মতো কোনো ঘটনা না। সবাই আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। কোকো ভাই আমাকে হাদিস পড়িয়ে শোনাতেন, বলতেন কার্টুন আর না আঁকতে কারণ এটা নাকি মুসলমানদের জন্য হারাম। আনোয়ার স্যার আমাকে খুব আদর করতেন। আমাকে কাগজ-কলম দিয়েছিলেন ছবি আঁকতে। আওয়াল স্যার আমাকে একটা রেডিও দিয়েছিলেন খবর শুনতে। কিছুদিন পর আমাকে নব্বই সেলে পাঠানো হলো। মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি সেখানেই ছিলাম।

আপনার সঙ্গে কেউ দেখা করেনি? মামলার কি অবস্থা কিভাবে বুঝতেন?

রোজার ঈদের আগের দিন ব্যারিস্টার সারা হোসেন এসেছিলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমাকে উনি চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলেন। মুক্তি পাওয়ার কিছুদিন আগে থেকে আমার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ মেলে। তার আগ পর্যন্ত আদালতে আমাকে নিয়ে যাওয়া হতো, এরপর নিয়ে আসতো। কিন্তু কারো সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাইনি। এমনকি উকিলের সঙ্গেও না।

পরিস্থিতি বদলালো কিভাবে?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের পদত্যাগের পরপরই আমার মামলা ঘুরে যায়। প্রথম আলো থেকে আমাকে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করার জন্য একটি কাগজ পাঠিয়ে তাতে সই করতে বলা হয়। এরপর বেশ দ্রুতই এগুলো আমার মামলা। একপর্যায়ে আমাকে সব অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি দিয়ে মুক্তি দেয়া হয়।

বলতে চাইছেন আপনার এই অবস্থার জন্য মইনুল হোসেন দায়ী?

না, আমি মোটেই সেটা বলিনি। আমি শুধু আমার মামলার মোড় ঘুরে যাওয়ার সময়কালটা উল্লেখ করেছি, বাকিটা কাকতালীয়। আমার এই পরিস্থিতির জন্য আমি মোটেই কাউকে দায়ী বা অভিযুক্ত করতে চাই না। দেখুন সুমন্ত আসলাম ভাইতো এখন ইত্তেফাকে (ব্যারিস্টার মইনুলের পত্রিকা) চাকুরি করছেন। উনার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। উনি আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তাহলে এখন আপনার কি অবস্থা? কার্টুন আঁকেন আর?

অবশ্যই। আমি নিয়মিত অনুশীলন করি, কারণ আমি ভবিষ্যতেও আঁকতে চাই। যদিও আমার ধারণা কেউ সেগুলো ছাপবে না। তবে একদিন নিশ্চয়ই তারা ছাপবে। আমি তাদের বোঝাতে চাই যে আমি অন্যায়ের শিকার হয়েছি। তবে সাধারণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত। আমার লক্ষ্য খুব বড় কেউ হওয়া, যাতে আমাকে নিয়ে দেশবাসী গর্ব করতে পারে।

আপনি কি এখন নিরাপদ? জেএমবি আপনাকে কি ছেড়ে দিয়েছে বলে মনে করেন?
ওরা আমাকে ঘুমের মধ্যেও তাড়া করে। আমি সহজে কোথাও যাই না। কারো কাছে নিজেকে আরিফ বলে পরিচয় দিই না। তারপরও আমি স্বস্তিতে নেই। এরা যে কোনো কিছুই করতে পারে, আমাকে হত্যা করাটাও অসম্ভব না। ভয়ে আমি এখন দোকানেও বসি না।

আপনার এই সাক্ষাতকারটা ছাপালে আপনার কোনো ধরণের সমস্যা হবে বলে মনে করেন?

মনে হয় না। কারণ সরকার আমাকে মুখ না খুলতে কোনো নির্দেশ দেননি। তবে আপনি ছাড়া আমার সঙ্গে আর কেউ কথা বলতে চায়নি। আমি সবাইকে জানাতে চাই যে কাউকে বা কারো অনুভূতিকে আহত করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার কখনোই ছিলো না। হয়তো কোনদিন বড় কিছু করে আমি তাদের এবং আমার দেশকে প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করবো। আমার একমাত্র ভয় জেএমবিকে। তাদের মনে কি আছে জানি না। জেলে থাকতে একজন আমাকে বলেছিলো আমাকে যে হত্যা করবে তার জন্য নাকি বেহেশত নিশ্চিত। এরা বেহেশতের জন্য যে কোনো কিছুই করতে পারে।

শেষকথা : আরিফ বেকার নয় পুরোপুরি। নির্বাচন কমিশন তাকে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন প্রচারণায় ছবি আকার দায়িত্ব দিয়েছে। পারিশ্রমিক খারাপ পাবে না হয়তো আরিফ। কিন্তু সবার আগে দরকার তার নিরাপত্তা এবং পুনর্বাসন। আরিফ সেই দিনটিরই পথ চেয়ে।

ছবি : মুস্তাফিজ মামুন


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা কি সেই বিতর্কিত অন্ধকারেই ফিরে যাবো? আলোর বদলে অন্ধকার কেন আমাদের বারবার তাড়া করে ফিরবে? তাহলে কি JMB আছে? কিন্তু ফাঁসি যে হলো তারা কারা? আমি কাদের কথা বলছি?
-জুলিয়ান সিদ্দিকী

অমিত এর ছবি

অসাধারণ একটা কাজ হয়েছে।

সেইসঙ্গে আমি ক্ষমা চাইলাম অন্য সবার হয়ে। বললাম যা শাস্তি দেবার আমাকে দিন, এই কার্টুনের সঙ্গে কোনোভাবেই আর কেউ জড়িত নন।
এই কথাটা শোনার পর আমার বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে মতি মিয়ার করজোড়ে ক্ষমা ছাওয়ার ছবিটা ভেসে উঠল।মাঝে মাঝে আলো দেখানোর জন্য বিশাল মশালের দরকার হয় না, ম্যাচের একটা কাঠিই যথেষ্ট।

কোকো ভাই আমাকে হাদিস পড়িয়ে শোনাতেন, বলতেন কার্টুন আর না আঁকতে কারণ এটা নাকি মুসলমানদের জন্য হারাম।
লোকটা রসিক বটে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পিয়াল ভাই।
_
ক্ষমা করো আরিফ, তোমার জন্য মন খারাপ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি। অস্থির অসহায় সময়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আরিফ বিষয়ে জানার কৌতূহল ছিলো তীব্র। অমি রহমান পিয়ালকে অগণ্য ধন্যবাদ সভূমিকা সাক্ষাত্কারটির জন্য।

এখন প্রধানতম কামনা, আরিফ নিরাপদে থাকুন।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সৌরভ এর ছবি

কিছু বলবার নেই।
ক্ষোভ আর ঘৃণা সেই দায়ী মানুষগুলোর জন্যে। কূপমন্ডুকেরা কেড়ে নিয়েছে এই বাচ্চা ছেলেটার জীবনের অনেকটা সময়, মানসিকভাবে পঙ্গু করে দিয়ে গেছে তাকে আর আমাদের।

পিয়াল ভাই, পুরনো বস হিসেবে স্যালুট।
আমরা জেগে আছি এখনো।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নুশেরা তাজরীন এর ছবি

হায়রে দেশ, গরু মেরে আরিফকে এখন জুতা দেয়!
আরিফের সর্বাঙ্গীন নিরাপত্তা আর অমি রহমান পিয়ালের মঙ্গল কামনা করি।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

অমি রহমান পিয়াল আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ অজানা আরিফকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

......কারণ সরকার আমাকে মুখ না খুলতে কোনো নির্দেশ দেননি। তবে আপনি ছাড়া আমার সঙ্গে আর কেউ কথা বলতে চায়নি।

এটাই দুঃখ লাগে কি সাংবাদিক কি রাজনীতিবিদ কি আইনজীবি আমরা সবাই ইস্যু তৈরীতে সিদ্ধহস্ত কিন্তু সমাধানে কারো তেমন আগ্রহ দেখিনা! এমন কি আরিফের খবরগুলোও যেভাবে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে এড়িয়ে গেছেন তা অজুহাত ছাড়া আর কিইবা হতে পারে (আসলে আমরা এতো বেশী মশলা খেয়ে অভ্যস্ত যে স্পাইস ছাড়া ঠিক গিলতে পারিনা)!

সাংবাদিকরা যোগাযোগ করেছিলেন আপনার সঙ্গে?
না। আমি শুনেছি তারা থানায় এসেছিলেন। তবে কেউ আমার সঙ্গে দেখা করেননি।

আরিফ, আপনার জন্য থাকলো সাত সমুদ্র তের নদীর এপাড় থেকে উঞ্চ অভিবাদন। আপনি একদিন বড় হবেন...অনেক বড়! ......শুধু নিজের কাজটা করে যান ভাই...cheers!

আলমগীর এর ছবি

এ ছেলেটাকে দেশ থেকে তুলে আনা যায় না? আমি নিশ্চিত ইউরোপের যে কোন দেশ, বা অস্ট্রেলিয়া তাকে জীবনের নিশ্চায়তা দিতে আগ্রহী হবে। কার্টুন আঁকার আগে তো বেঁচে থাকা দরকার না কি?

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ভাই আমার মনে হয় এই ছেলেটা আমাদের সয়েলের প্রকৃত সন্তান; ওকে তুলে এনে শেকড় বিচ্ছিন্ন করে কি লাভ বলুন (যদি থাকাটা একে বারেই অসম্ভব না হয়ে উঠে!)! যে ছেলে মুদি দোখানে বসে কাজের ফাকেঁ ফাকেঁ প্রতিনিয়ত নিজের স্বপ্ন বুনে চলে সে আপনার আমার চাইতে মানসিকভাবে এবং ফিসিক্যালি অনেক ফিট; তাকে হত্যা করা অতোটা সহজ হবে না। উনি মিশে আছেন আমাদের সাধারনে, ঐ জায়গা থেকে কতিপয় বাষ্টার্ড JMB বা কোকো তাকে খুনের বা হাদিসের কোন দোহাই দিয়েও মনে হয়না সরাতে পারবেন।

cartoonist arif এর ছবি
এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সাক্ষাৎকারের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ পিয়াল ভাই। আরিফের সুদিন কামনা করি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

সবারই দেখছি দায়ীদের প্রতি ঘৃণা। আমি জানিনা অদৃশ্য, অজানা দায়ীদের প্রতি কিভাবে ঘৃণা জানাব। পুরো ঘটনাটা যে ঘটে গেল কাকে আমরা দায়ী করব। কোথা থেকে দায়ী করা শুরু করে কোথায় কার মাথায় দায়ভার চাপানো শেষ করা যাবে। ভাগ্য ভালো যে ছেলেটা শেষ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছে। জেলে জ্ঞানী! গুণী!দের উপদেশ বাণী শুনে এসেছে। এখন জেএমবির হাত থেকে বাঁচতে পারলে হয়। দেশে এখনও জেএমবি বহাল তবিয়তে আছে জেনে বিস্মিত হয়েছি। সমাজ যদি নিরাপত্তা না দিতে পারে সরকার দিতে পারবে না। সমাজে যে ঘুণ ধরেছে তা দু'একজনকে ফাঁসি দিয়ে যে সারানো যায় না তা স্পষ্ট।

অমি রহমানকে ধন্যবাদ।
জিজ্ঞাসু

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আরিফের নিরাপত্তাই সবচেয়ে বেশি দরকার। কে দেবে? তবু বলি, মঙ্গল হোক। এই দুর্দিন চিরকাল থাকবে না।

পিয়ালকে অভিবাদন অসাধারণ এই কাজটির জন্যে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সবজান্তা এর ছবি

ধন্যবাদ পিয়াল ভাই।

আরিফ নিজের থেকে না বললেও একটা ব্যাপারে আন্দাজ করা গিয়েছে, এই বক্তব্য থেকেঃ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের পদত্যাগের পরপরই আমার মামলা ঘুরে যায়।

এর পেছনে সরকারের এত নতজানু ভূমিকার পেছনে, আদৌ প্রথম আলো - ইত্তেফাকের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রতিদ্বন্দিতা বিশেষত বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে কিছু জড়িত আছে কিনা, সংশ্লিষ্টরাই বলতে পারবেন।

রাজায় রাজায় দেখা যাচ্ছে মিটমাট হয়েই যায়, সুমন্ত আসলামের খবরটা দেখে তেমনটাই বোধ হল।

পুনশ্চঃ পিয়াল ভাই, আপনার মেয়ে কেমন আছে ?


অলমিতি বিস্তারেণ

খেকশিয়াল এর ছবি

রাজায় রাজায় দেখা যাচ্ছে মিটমাট হয়েই যায়, সুমন্ত আসলামের খবরটা দেখে তেমনটাই বোধ হল

হাহা তা আর বলতে !

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

আকতার আহমেদ এর ছবি

অসাধারণ একটি কাজ হয়েছে এটা পিয়াল ভাই !
ধন্যবাদ আপনাকে
আমি এখনও বিশ্বাস করি - সুদিন আসবেই
আরিফের জন্য শুভ কামনা

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়তে পড়তে কখন যে চোখের কোনে এক ফোটা জল জমেছে বুঝতে পারিনি।

একজন পায়খানা থেকে কাঠি দিয়ে গু তুলে আমার মুখে ঘষে দিলো। আমি তখন রোজা।

মানুষ কত নিকৃস্ট হলে এমন কাজ করতে পারে আমার জানা নেই। বোয়ালদের কিছু হয় না।পুটিরাই চিরদিন ফাঁদে পরে। 'আলপিন' কিন্তু থেমে নেই শুধু মোড়ক পালটে 'রস+আলো' হয়েছে। শুধু থামিয়ে দেয়া হয়েছে আরিফকে মানসিক ভাবে। কিন্তু আরিফ আপনি থামবেন না।
আপনার জন্য শুভ কামনা করছি যেন আপনি নিরাপদ থাকতে পারেন।

অভী আগন্তুক
-----------------------------

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

ধন্যবাদ সবাইকে যারা কষ্ট করে এই দীর্ঘ লেখাটি পড়েছেন। কিছু ব্যাপার পরিষ্কার করা দরকার। অনেকের মতেই আরিফ একটা বিতর্কিত কাজ করেছে, কিন্তু হুজুগের তোড়ে কারো সময় হয়নি তার বক্তব্যটা শোনার। আমার মনে হয়েছে আরিফের কথাটাও সবার জানা উচিত। সে ক্ষমা চেয়েছে, কাউকে দায়ী না করে নিজের উপরই সব দোষ টেনে নিয়েছে। কিন্তু তার উপর দিয়ে ঝড়টা বয়ে গেছে তার আচটা কেউই পায়নি।
ছবি নিয়ে কারো আপত্তি থাকতে পারে। জেএমবি আরিফকে ভালো মতোই চেনে, তাই ছবি দেয়া না দেয়ায় তার অবস্থানের পরিবর্তন হবে না। ছবি তার অনুমতি নিয়েই প্রকাশিত। তাছাড়া মনে পড়ছে তার গ্রেপ্তারের পরপর একটা ছবির জন্য হন্য হয়ে ঘুরেছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। পাওয়া যায়নি। সবার শেষে বলতে চাই, এই সাক্ষাতকারটি নিয়েছি প্রায় এক মাস আগে। আরিফের মোটামুটি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবার পরই আমি এটা প্রকাশ করলাম। নয়তো আরো দেরি হতো।
আবারও ধন্যবাদ সবাইকে


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

আলমগীর এর ছবি

পিয়াল ভাই
ধন্যবাদ তার নিরাপত্তার ব্যাপারটা নিশ্চিত করার জন্য। ছেলেটা কী অন্যায় করেছে, ভুল করেছে আমি সে নিয়ে কোন কিছ চিন্তা করতেই নারাজ। ১৮ বছরের একটা ছেলের জন্য এ ধরনের অভিজ্ঞতা তাকে মেরে ফেলার চাইতে ভিন্ন কিছু নয়।

আমি ভয়ে ভয়ে আর একটা কথা বলতে চাই কে কীভাবে নেন জানিনা (আপত্তিকর দেখালে মুছে দিবেন)।

ওর আর্থিক অবস্থা বুঝতে পারছি সুবিধার না। নির্বাচন কমিশনের এটা সেটা করে কী পাবে তাও জানি না। ওরাই যে আবার আরেক প্যাঁচে তাকে ফেলবে না এটাও বিশ্বাস করি না। আর্থিকভাবে তার জন্য কিছু করা যায় কিনা, জানাবেন। অনেকে হাত বাড়াবে, বিশ্বাস।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ঘুরে দাঁড়াক এবং উঠে দাঁড়াক আরিফ আবার

আমাদের যে কী করার কথা ছিল সেটা মাঝেমাঝে আমাদের আঁতে ঘা মেরে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য পিয়াল ভাইকে ধন্যবাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

আরিফ কে চিনতাম না । তবে ঐ ঘটনার পরে মনে হয়েছিল - বেচারা নিরিহ প্রদায়ক কার্টুনিস্ট ফেঁসে গেল আর রুই-কাতলারা সব বহাল তবিয়তে রয়ে গেল। যাহ শালা জীবনের সব বাইস্কোপ তো দেখি একই রকম। সাংবাদিক, যারা কিনা জাতির বিবেক, সময়ের নির্ভিক সৈনিক, যাদের আমি ফেরেশতাদের চেয়েও এক আসমান উপরে বসাইয়া রাখতাম তারা কেমনে কিছু না বলে নিরবে সব সহ্য করলো?

ভাই আরিফ, আমি এক নিরীহ ছাপোষা কেরানী। বলাচলে দিন আনি দিন খাই। তোমার প্রতি নিখাদ ভালোবাসা আর শুভ কামনা ছাড়া আর কি দিতে পারি? তোমার স্বপ্ন সফল হোক, অনেক বড়ো হও তুমি। পৃথিবীর প্রায় সব বড় মানুষেরই বড় হবার পেছনে কোন না কোন কষ্ট কাজ করেছে। তোমার জীবনের এ আঘাতটাও হয়ে উঠুক তোমার বড় হবার উপজীব্য।
আর পিয়াল ভাই অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাকে ধন্যবাদ ও সালাম।

কির্তীনাশা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

একই আরিফরে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়া জেলা খাটাইলো... আবার সেই সরকারই তারে দিয়া এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণায় তারই আঁকা ব্যাবহার করে। প্রহসন আর কি...

এই লেখাটা পড়ার জন্য প্রায় ভোর পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম... শেষে না পাইরা ঘুমাইছি। ঘুম ভাইঙ্গা প্রথম কাজ করলাম এইটা পড়া...
মন্তব্যের আসলেও কিছু নাই...
ধন্যবাদ পিয়াল ভাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পিয়াল ভাই। কয়েকদিন আগে আমিও চিন্তা করতেছিলাম - কি হল কাটুনিস্ট অরিফের ? কোন পত্রিকাতে তো আর কিছু পাইলাম না ! মনে প্রশ্ন জাগলো , অন্য কোন সাংবাদিক হলে তো সংবাদপত্রগুলো চিল্লা ফাল্লা কইরা মাতায়া ফালায় তবে অরিফের বেলায় সবাই চুপ কেন? তারপর আবার নিজের মনেই প্রশ্ন , ধর্মীয় ব্যপারে সচলায়তন ও সামহোয়ারে কত কিছু তো পড়ি কই তাদের বিরুদ্বে তো মামলা বা ধর্মীয় মূল্যবোধে অবমাননার অভিযোগ উঠে না। ধন্যবাদ সচলায়তন কেও একমাত্র এখানে এসেই কাটুনিস্ট আরিফ এবং তার বির্তকিত কাটুন সমন্ধে জানতে পারলাম । তার আগে জানতামও না কি কাটুন আকাঁর কারণে আরিফ এত বিতকির্ত হয়েছেন।
রবিন

খেকশিয়াল এর ছবি

ধন্যবাদ অমি রহমান পিয়াল কে । আরিফের সর্বাঙ্গীন কল্যান কামনা করি । বাংলাদেশ এখনও একটা স্বপ্নমাত্র , সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দরকার আরিফের মত অনেক সরল মনের । এই সহজ সরল প্রাণগুলোতে সাহসের সঞ্চার হোক, এই কামনাই করি ।

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

বিপ্লব রহমান এর ছবি

আরিফের কাছে ক্ষমা।
ধিক প্রথম আলো, নতজানু সামরিক জান্তা।
ধন্যবাদ পিয়াল ভাই।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

রেনেট এর ছবি

কিছু বলার কোন ভাষা নেই।
আরিফের জন্য শুভকামনা।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হায় বেচারা !!! ইয়ে, মানে... আমি শুধু শুনেছিলাম কে যেন ইসলাম ধর্ম নিয়ে বাজে কার্টুন এঁকেছিল আর দেশে এ নিয়ে খুব হইচই হয়েছিল। এসব কিছুই জানতাম না, উনি যে জেলে গিয়েছেন তাও জানতাম না। ইয়ে, মানে...
ইসস কি আর বলব। অনেক ধন্যবাদ পিয়াল ভাইকে সব জানতে পারলাম এখন।
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

তীরন্দাজ এর ছবি

অমি রহমান পিয়ালকে অনেক ধন্যবাদ এই সাক্ষাতকারটির জন্যে।

আর কার্টুনিষ্ট আরিফের জন্যে সহমর্মিতা জানাই। আর জেএমবি কুকুরদের জন্যে ঘৃণা...!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

সবার শুভেচ্ছা কোচড় পেতে নিলাম। ধন্যবাদ আবারও


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

সুমন চৌধুরী এর ছবি

প্রত্যাশা থাকলো আরিফ আবারও কার্টুন করবে।
তাঁর জন্য শুভকামনা।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

‌দুর্ভাগা আরিফের জন্য সমবেদনা। হয়তো সে জানে কিংবা জানে না, তাকে নিয়ে কত বড় রাজনীতিটাই না হয়ে গেল! ব্যামো (ব্যারিস্টার মঈনুল) যাদের মুখপাত্র তাদের দরকার ছিল একটা তুষ, যা দিয়ে দাবানল লাগানো যাবে। আর অন্যপক্ষের দরকার ছিল একটা ঘটনা যাকে ব্যবহার করে, সরকারের সমালোচকদের কণ্ঠ আরেকটু রোধ করা যাবে।
এখন ইসলামওয়ালারা বলবে দেখো ইসলাম কত বিপন্ন, আর পশ্চিমাপন্থিরা বলবে, দ্যাখো বাংলাদেশে মুক্তচিন্তা ও প্রগতি মৌলবাদীদের দাপটে কত অসহায়। এ বলবে জেহাদ চাই, ও বলবে সন্ত্রাস দমন আইন ও বাহিনী চাই। এভাবে আমাদের গ্রামের ছেলে আরিফকে দাঁড় করানো হবে ডেনিশ কার্টুনিষ্টসহ যাবতীয় ইসলাম-বিদ্বেষীদের কাতারে। আর বুশ গং আরিফকে বাঁচানোর নামে বাংলাদেশকে আরো স্টিগমাটাইজ করে দেবে। পিয়ালের এই লেখা সত্যিকার আরিফ এবং তার অকথিত কাহিনী জানিয়ে এই চক্রের বাইরে কিছুটা হলেও যেতে সাহায্য করলো।
পিয়ালকে অভিবাদন।


মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শামীম এর ছবি

আমারও একই কথা মনে হয়েছিল।

কখনও এসব সমস্যায় লাশের দরকার হয়, কখনও দরকার হয় মুরতাদ ... ... বলির পাঠা হয় আরিফ বা অন্য কেউ।

অক্ষম সহমর্মিতা ছাড়া আরিফের জন্য কিছুই করার নাই আপাতত ... ... তবে প্রেরণা পেলাম।

ঘটনা তুলে আনার জন্য পিয়াল ভাইকে ধন্যবাদ।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তানবীরা এর ছবি

কোনদিন চোখে দেখিনি তবুও আরিফের জন্য প্রচন্ড মায়া অনুভব করি সব সময়। আশাকরি মানসিক কষ্ট একদিন ভুলতে পারবে।
পিয়ালকে অসনংখ্য ধন্যবাদ আরিফের খবরটা আমাদেরকে জানানোর জন্য।
ছবি আকার কাজ যারা দিয়েছেন, নিরাপততাও তাদেরই দেয়া উচিত। শুধু কাজ দিয়েই দায়িত্ব শেষ / এরানো করা যায় না

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

জাতি হিসেবে আমরা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, আরিফই তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ!
"মোরা একটি মুখের হাসির জন্য যুদ্ধ করি"...
আরিফের মুখের হাসি তাহলে কেড়ে নেয়া হল কেন?
আমার আর কিছুই বলার নেই... আরিফের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

শিক্ষানবিস এর ছবি

এরকম একটা সাক্ষাত্‌কারের খুব দরকার ছিল। অমি রহমান পিয়ালকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরিফের নিরাপদ এবং সফল ভবিষ্যত্‌ কামনা করছি।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই জীবনকে বড় নিষ্ঠুরভাবে চিনে নিতে হলো একটা বাচ্চা ছেলেকে। আরিফের সব ইচ্ছেই যেন পূর্ণতা পায়, ওর জন্য শুভকামনা।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অপ বাক এর ছবি

শেষ পর্যন্ত কোনো সংবাদপত্রই ছাপাতে রাজি হইলো না এই সাক্ষাৎকার?

নন্দিনী এর ছবি

আরিফের খবর জেনে ভাল লাগল। এই ছেলেটার কি হল, কোথায় আছে, কি করছে এই বিষয়গুলো জানার খুব ইচ্ছা ছিল। আশা করি সে তার নিজের ভবিষ্যত গড়ে নিতে পারবে। তার আঁকা কার্টুন নিয়ে আমাদের দেশের মিডিয়া যে ভূমিকা পালন করেছে, তা সত্যি ঘৃণার যোগ্য। খালি জে এম বি কে ঘৃণা করলেই সব কথা শেষ হয়ে যায়না- ফালতু একটা কার্টুন নিয়ে যে কান্ড করা হয়েছে, মোল্লাদের বিপরীতে দেশের মিডিয়া যদি দৃ• ভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াত আরিফের পক্ষে, তাহলে বাক স্বাধীনতার ইতিহাসে নিশ্চিত-ই সামান্য হলেও অগ্রগতি হত। তা না করে আমরা প্রতিটা বিষয়ে লক্ষ্য করি তথাকথিত প্রগতিশীল সাংবাদিকরাও পরোক্ষভাবে মোল্লাদের পক্ষে যায় এমন কাজ-ই করেন। দেশের সাধারণ মানুষ সবারই সব খেলা বুঝে, তাদের শুধু করার কিছু থাকে না...
ধন্যবাদ অমি রহমান পিয়ালকে।
আমি কি সাতরং এ এই সাক্ষাতকারটা পোষ্ট করতে পারি, প্লীজ?

নন্দিনী

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

আপত্তি নেই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

নন্দিনী এর ছবি

ধন্যবাদ ।
নন্দিনী

মুজিব মেহদী এর ছবি

পোস্টটা আমি সামহোয়্যারেই পড়ে এলাম, যা বলার ওখানে বলেছি। এখানে একটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই মাত্র। জেমএমবির '?'গুলো কেমন নিকৃষ্ট দেখুন। নিজেরা মুসলমান (!) হয়ে একজন নিরপরাধ রোজাদার মানুষের মুখে গু লেপে দিতে পারে যারা, এরা কোন প্রজাতির প্রাণী আসলে?

এক মিথ্যে ঘোষনা দিয়ে আমাকে চেনানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর একদল লোক আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। লাথি-চড়-কিল-ঘুষি চলতেই থাকে। এরপর একজন বাঁশ দিয়ে পেটালো আমাকে। ঘণ্টাখানেক পর তারা আবার এলো। একজন পায়খানা থেকে কাঠি দিয়ে গু তুলে আমার মুখে ঘষে দিলো। আমি তখন রোজা। কষ্ট সহ্য করে মুখ ধুয়ে এলাম।

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

দ্রোহী এর ছবি

সাক্ষাৎকারটির জন্য অমি রহমান পিয়াল ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।

পোড়া দেশের হতভাগা আরিফের জন্য করুনা আর পিশাচদের জন্য ঘৃনাটুকু ছাড়া কিছুই দেবার নেই। প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি সেই কবেই!!


কি মাঝি? ডরাইলা?

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

সারাদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সচলে আসার সময় পাই নি। এসে দেখি তুলকালাম কাণ্ড। বুঝলাম মন্তব্য করতে দেরী করে ফেলেছি। তবুও আমিও যে সবার সাথে শরীক, তার ঘোষণা দিতেই এই লেখা। আরিফের কাছে আমারও ক্ষমা চাওয়ার আছে। বলার আছে ভাই, ক্ষমা করে দাও আমাদের যারা দূর থেকে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই করতে পারি নি তোমার জন্য। আর পিয়াল ভাইকে অনেক অনেক শুভ কামনা, ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা, এ রকম একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য, যার মাধ্যমে অনেক অজানা জানলাম।

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

সামহোয়ারে এক ব্লগার মারফত আলপিনের সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক সুমন্ত আসলাম তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যা সচলদের জন্য তুলে দেয়া হলো :

রিয়াজ শাহেদ বলেছেন: সুমন্ত আসলাম তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমাকে, ব্যস্ত ছিলাম বলে কমেন্ট করতে দেরি হলো।

প্রথমে তিনি পিয়াল ভাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পোস্টটি করার জন্য। কমেন্টকারীদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন। কিছু মন্তব্যে তার সেসময়ের ভূমিকাকে ভন্ডামি বলা হয়েছে- এপ্রসঙ্গে সুমন্তদা মনে করছেন ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক, তাদের জায়গায় তিনি নিজে হলেও তাই মনে করতেন। সেসময় এমন অনেক অনেক ছোটখাটো ঘটনাই ঘটেছে যেগুলো একত্র না করলে হয়তো পুরো ব্যাপারটা ঠিক বোঝা যাবেনা। যেমন আরিফের করা এসএমএস-এর ব্যাপারটা। এপ্রসঙ্গে সুমন্তদার বক্তব্য হচ্ছে সেসময় আনিসুল হকের পরামর্শে তিনি মোবাইল বন্ধ রেখেছিলেন, এবং সেটা প্রায় মাসখানেকের জন্য বন্ধ ছিলো।

তিনি বলেছেন মানুষ হিসেবে উনার সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেই কঠিন সময়ে সীমাবদ্ধতাগুলোর ঊর্ধ্বে উঠতে তিনি পারেননি। তবে তিনি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি আরিফকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে; আরিফের সাথে যোগাযোগ করে তিনি বারবার অভয় দিচ্ছিলেন (যদিও নিজে ছিলেন প্রচন্ড ভয়ে)। আর আরিফ ছাড়া পাওয়ার পর তিনিই প্রথম তার সাথে যোগাযোগ করেন। উল্লেখ্য, দুজনার একই এলাকায় বাড়ি (সিরাজগঞ্জ), পরস্পরকে তারা বহু আগে থেকে চেনেন।

তার এবং আরিফের প্রতি করা প্রথম আলোর আচরণে তিনি অত্যন্ত বিরক্ত এবং হতাশ; সেসময় প্রথম আলোর উচিত ছিলো তার এই দুই কর্মীকে বুক দিয়ে আগলে রাখা, তা না করে পত্রিকাটি যা করেছে তাতে তিনি প্রথম আলো ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

সংক্ষেপে এই হলো সুমন্ত আসলামের প্রতিক্রিয়া; কেউ যেনো মনে না করে আমি তার পক্ষে এখানে এসে ওকালতি করছি, তার লেখা ভালো লাগে আমার, তাকে যতোটা দেখেছি বা তার লেখা যতোটা পড়েছি তাতে এই ইস্যুতে তার ভূমিকাটি রহস্যজনক লাগায় আমি তার সাথে যোগাযোগ করেছি, তিনি তার প্রতিক্রিয়া আমাকে জানিয়েছেন, আমি যথাসম্ভব অবিকৃত রেখে তার প্রতিক্রিয়া এখানে তুলে দিলাম।

ধন্যবাদ।


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

এই প্রসঙ্গে আরিফ ভিন্ন মত জানিয়ে বলেছেন ওই একবারই সুমন্ত তার ফোন ধরেছিলেন। বের হওয়ার পর নিজে থেকে সুমন্তের অফিসে গিয়ে দেখা করে আসেন তিনি, সুমন্ত তাকে সাদামাটা- ভালো থেকো বলে বিদায় করেছেন। এই পোস্ট পড়ার পর সুমন্ত তাকে ফোন করে এও বলেছেন তাকে এসএমএস করে জবাব না পাওয়ার ব্যাপারটি সাক্ষাতকারে উল্লেখ করা উচিত হয়নি। আরিফের জবাব- আমি আগাগোড়া সত্যিটাই শুধু বলেছি।


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

রায়হান আবীর এর ছবি

চরম পোস্ট...যারা আরিফ ভাইরে হুদাই হেনস্তা করছে তাদের জন্য বিশাল গালি মাথায় আসছে। ওই জোকটা তো সবাই শুনছে। আর বেচারা আইকা ভিলেন হয়ে গেল?
---------------------------------

অনিন্দিতা এর ছবি

আরিফের নিরাপদ জীবনের জন্য শুভ কামনা

স্নিগ্ধা এর ছবি

আরিফের জন্য শুভকামনা - অনেকদিন পর, অনেক বিখ্যাত হবার পর একদিন যেন পেছন ফিরে তাকিয়ে ছেলেটা পুরো ঘটনাটাকে করুণার দৃষ্টিতে দেখতে পারে - এটাই কামনা ......

অমি রহমান পিয়াল - অনেক ধন্যবাদ !

রানা মেহের এর ছবি

এতো ভালো একটা লেখা এতো দেরীতে পড়লাম।
অমি রহমান পিয়াল কে ধন্যবাদ।
আর আরিফ?
কী আর বলবো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শাবাব মুস্তাফা এর ছবি

জেলে নেয়ার পর আমাকে আমদানী ওয়ার্ডে রাখা হলো। মুখে মুখে খবর রটে গিয়েছিলো যে আমি এসেছি। ওখানে কয়েদিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকার একটা ব্যবস্থা আছে। এমনি এক মিথ্যে ঘোষনা দিয়ে আমাকে চেনানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর একদল লোক আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। লাথি-চড়-কিল-ঘুষি চলতেই থাকে। এরপর একজন বাঁশ দিয়ে পেটালো আমাকে। ঘণ্টাখানেক পর তারা আবার এলো। একজন পায়খানা থেকে কাঠি দিয়ে গু তুলে আমার মুখে ঘষে দিলো। আমি তখন রোজা। কষ্ট সহ্য করে মুখ ধুয়ে এলাম।

এই প্রসঙ্গে একটু কথা না বলে থাকতেই পারলাম না। জে এম বি -র লোকজনের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান যে কতখানি এবং ইসলামের নামে ভণ্ডামির আরেকটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাওয়া গেল।

একজন সত্যিকারের মুসলিম হই তবে আমাদের জন্য দুটো জিনিস মেনে চলা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। প্রথমত কুরআন, দ্বিতীয়ত সুন্নাহ; অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (স.) তার জীবদ্দশায় যা যা করেছেন, যা যা বলেছেন তার অনুসরণ। এর বাইরে যদি কেউ অন্য রকম কিছু করে যা কুরাআন বা সুন্নাহের পরিপন্থী তবে তা বর্জনীয়।
এইবার আসি মহানবী (স) আদর্শের কথায়। একটা মাত্র উদাহরণই এর সবটুকু ব্যাখ্যা করতে পারে। ঘটনা সবারই জানা, এক বুড়ি মহানবী (স.) এর পথা কাঁটা দিত। জবাবে মহানবী (স.) কি করেছেন? ডাণ্ডা হাতে গিয়ে বুড়ির মাথায় বাড়ি মেরেছিলেন? উল্টো একদিন পথে কাঁটা দেখতে না পেয়ে বুড়ির খোজ নিতে গেছেন। বুড়িকে অসুস্থ পেয়ে উল্টো তার সেবা করেছেন। কই তিনি তো বলেন নি, “বেটি বজ্জাত বুড়ি, আমি হলাম পুরো দুনিয়ার জন্য আল্লাহ্‌র নির্বাচিত নবী আর তুই আমার সাথে বজ্জাতি করেছিস! ঠিক হয়েছে, আল্লাহ তোকে উপযুকত শাস্তি দিয়েছে। এইবার তুই ধুঁকে ধুঁকে মর... ”
মহানবী (স) নাম বিকৃত করা তো আজকের সমস্যা নয়। এইরকম ঘটনা ঘটেছে তাঁর জীবদ্দশাতেই। এই রকম ব্যাপারে তিনি বরাবরই প্রো-অ্যাক্টিভ ছিলেন। মুসলিমদের তো তার আদর্শই অনুসরণ করার কথা।
মহানবী (স) এর নাম বিকৃত করা হল, আমাদের মুসলিমদের খারাপ লাগল। খুব স্বাভাবিক। কিন্তু তার পরের কাজগুলো যে আরো বেশি খারাপ করলাম সেইটার কি হবে?
মহানবী (স) আদর্শগুলো মানার ব্যাপারে লবডঙ্কা আর নাম নিয়ে এত হাউকাউ... বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড় আর কি... !!!
--------
উন্মাতাল তারুণ্য

সহজ এর ছবি

অমি রহমান পিয়াল কে ধন্যবাদ । আরিফের খবর জেনে ভাল লাগল। এই ছেলেটার কি হল, কোথায় আছে, কি করছে এই বিষয়গুলো জানার খুব ইচ্ছা ছিল।আরিফের সব ইচ্ছেই যেন পূর্ণতা পায়, ওর জন্য শুভকামনা।

ঝরাপাতা এর ছবি

পিয়াল ভাই, একটা কবিতা ছাড়েন। বহুদিন আপনার কোন কবিতা পড়ি না।


যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।