এলোচিন্তা ১: আবদুস সালাম, সারাবিশ্বে সমাদৃত, নিজগৃহে নিপীড়িত জ্ঞান-তাপস

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: রবি, ২৭/০৬/২০১০ - ১১:১১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের সংসদ আহমেদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম হিসাবে সরকারীভাবে ঘোষণা করে। রীতিমত আইনে লিপিবদ্ধ করে দেয়া হয় এটা। এর প্রতিবাদে পদার্থবিজ্ঞানী ডঃ আবদুস সালাম চলে যান স্বেচ্ছা নির্বাসনে। মুশকিল হয় যখন ১৯৭৯ সালে আবদুস সালাম নোবেল পুরস্কার পেয়ে বসেন। ধর্মান্ধ জেনারেল জিয়া তখন ক্ষমতায়, সংবিধান পালটে আহমেদীয়াদের উপরে খড়গহস্তে চালাচ্ছেন নিপীড়ন, সেই জেনারেল জিয়াকেই টিভিতে কাষ্ঠ হাসি দিয়ে আবদুস সালামের পাশে দাঁড়াতে হয়। কাটমোল্লাদের খুশি করতে অবশ্য জিয়া কাঁচি নিয়ে নেমে পড়েন, যেখানেই আবদুস সালাম ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত কোনো শব্দ উচ্চারণ করেন তাঁর ভাষণে, কেটে দেয়া হয় সেটা।

auto
(ছবি, CERN-এ সালামের নামে রাখা হয়েছে রাস্তার নাম)

প্রচন্ড প্রতিভাবান আবদুস সালাম ম্যাট্রিক পাস করেন মাত্র ১৪ বছর বয়সে। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ নম্বর পান তিনি। ইতালির ত্রিয়েস্তে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার গবেষণাকেন্দ্র। শেলডন গ্লাসো আর স্টিভেন উইনবার্গের সাথে ১৯৭৯ সালে পদার্থে নোবেল পান সালাম, মৌলিক কণিকার দুর্বল নিউক্লীয় বল ও তড়িৎচুম্বকীয় বলকে একীকরণের তত্ত্ব ও দুর্বল তড়িৎ প্রবাহের উপরে তাঁদের কাজের জন্য। নোবেল পুরস্কারের ঘোষণায় বলা হয়,

"... for their contributions to the theory of the unified weak and electromagnetic interaction between elementary particles, including inter alla the prediction of the weak neutral current."

নোবেল পেয়েও কেবল ধর্মের কারণে আবদুস সালাম ছিলেন পাকিস্তানে উপেক্ষিত। সারা বিশ্বের কাছে সম্মাননা পেলেও লাহোরে তাঁর নিজের বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মান দেয়নি কোনো। দায়সারা গোছের একটা ডাকটিকিট পাকিস্তান সরকার প্রকাশ করেছে বটে, কিন্তু মৃত্যুর পরেও ছাড়েনি তাঁকে। ১৯৯৬ সালে অক্সফোর্ডে মারা যান সালাম। কবর হয় রাবওয়া শহরে। পাকিস্তান সরকারের আক্রোশের শিকার এই শহরের নাম সরকারী খাতায় পালটে চেনাব নগর করে দেয়া হয়েছে ততোদিনে, কারণ একটাই, এখানে আহমেদীয়া সম্প্রদায়ের বাস।

auto

সালামের কবরের এপিটাফে লেখা ছিলো, "FIRST MUSLIM NOBEL LAUREATE"। সালামের মৃত্যুর দুই বছর পরে এই এপিটাফটিও রেহাই পায়নি। স্থানীয় এক ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মুছে ফেলা হয় "MUSLIM" শব্দটি, এপিটাফের শূন্যস্থানে এখন কেবলই লেখা রয়েছে,

"FIRST     NOBEL LAUREATE"

(ছবিতে ক্লিক করে মূল লেখাটি দেখে নিন)

ধর্মান্ধতার আক্রোশ এখনো রেহাই দেয়নি প্রফেসর সালামকে, মৃত্যুর এতো পরেও। ২০০৬ সালে সালামের মৃত্যুর ১০ম বার্ষিকীতে পাকিস্তানের ডেইলি টাইমসে তাই দুঃখ করে লেখা হয়,

Pakistan needs to feel guilty about what it has done to the greatest scientist it ever produced in comparison to the lionisation of Dr AQ Khan who has brought ignominy and the label of ‘rogue state’ to Pakistan by selling the country’s nuclear technology for personal gain. Can we redeem ourselves by doing something in Dr Salam’s memory on this 10th anniversary of his passing that would please his soul and cleanse ours?

এতো বঞ্চনার পরেও সালাম ছিলেন দেশপ্রেমিক, দেশ ছেড়ে চলে যেতে হলেও নোবেল পুরস্কারের অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তাঁর এই সম্মানকে তাঁর দেশের সম্মান বলে তুলে ধরেছেন। তবে সালামের চোখে পদার্থবিজ্ঞান ছিলো সার্বজনীন, সারা বিশ্বের সব দেশের জ্ঞানপিপাসু বিজ্ঞানীদের পরিশ্রমের ফল, সালামের ভাষায়,

"The creation of Physics is the shared heritage of all mankind. East and West, North and South have equally participated in it. " Nobel prize Banquet speech

(ছবি - উইকিপিডিয়া)


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

- আব্দুস সালামের মতো বিজ্ঞানী জন্ম দিতে পারা শুধু পাকিস্তান কেন পৃথিবীর যেকোন দেশের জন্য কাঙ্খিত । তবে নিজদেশ পাকিস্তানে তার এই দশা দুঃখজনক। পাকিস্তানে আহমদিয়া ইস্যু নিয়ে একধরনের সাম্প্রদায়িক হিংসার চল আছে । ডেইলি টাইমসে দুঃখ করে এটা ওটা লিখলেও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে এই হিংসার আবেদন অনেক বেশি । দু'টো উদাহরণ দেই -
১. পাকিস্তানে পাসপোর্ট করার সময় ধর্ম মুসলিম হলে একটা ডিক্ল্যারেশন দিতে হয় । ওটা পেস্ট করছি এখানে -

iii) I consider Mirza Ghulam Ahmad Quadiani to be an imposter Nabi & also consider his followers whether belonging to t he Lahori or Quadiani Group to be Non-Muslim. সূত্র

পাকিস্তানি স্টুডেন্টদের সাথে কথা বলে দেখেছি এটা নিয়ে ওরা দারুণ সন্তুষ্ট ও গর্বিত !
২. জার্মানিতে আমি যেই শহরে থাকি সেখানে দেখেছি পাকিস্তানিদের দু'টো গ্রুপ । এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের সাথে কথা বলা বা কোন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ করে । ওদের একটা কাদিয়ানি আরেকটা বাকিরা । এমনকি গ্রাজুয়েশন করা স্টুডেন্টরাও এই বিভেদটা সিরিয়াসলি মেনে চলে ।

- তবে একটা কথা । যে যত বড় কান্ডারিই হোক হত্যার অস্ত্র বানানোর উৎসবে যোগ দেয়া কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধার চোখে দেখি না । সেটা আব্দুস সালামের মতো শতাব্দির সেরা প্রতিভাবানদের একজন হলেও না ।

দিগন্ত এর ছবি

যে যত বড় কান্ডারিই হোক হত্যার অস্ত্র বানানোর উৎসবে যোগ দেয়া কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধার চোখে দেখি না । সেটা আব্দুস সালামের মতো শতাব্দির সেরা প্রতিভাবানদের একজন হলেও না ।

এইটা নিয়ে বিস্তারে আলোচনা হলে ভাল হয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

যুগে যুগে এই ধর্মীয় গোঁড়ামি চলে এসেছে। হাইপেশিয়া থেকে শুরু করে ডঃ আবদুস সালাম এবং বাংলাদেশের ডঃ হুমায়ুন আজাদ - কেউই বাদ জাননি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ যদি এখন পুরষ্কার পান তাহলেও একই অবস্থা হবে।

একটা ধর্মীয় লেবাসে একটা দেশ কতখানি ক্ষতিকর হতে পারে সেটার প্রমান পাকিস্থান। আমার অবশ্য একটা বিষয়ে অবাক লাগে, ধর্মীয় অনুশাসন থেকে পরিচালিত হয়েও পশ্চিমা বিশ্ব অনেক এগিয়েছে। ধর্মীয় লেবাস গায়ে থাকলেও আমেরিকান কনজার্ভেটিভরা অনেকখানি উদার। কিন্তু উল্টো ব্যাপার ঘটেছে ইসলামী বিশ্বে। কনজার্ভেটিভরা যেন আরো বেশী কনজার্ভেটিভ হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।

অবশ্য গানস, জার্মস এন্ড স্টিলস বইতে জ্যারেড ডায়মন্ডস এর কারন গুলো খানিকটা ইঙ্গিত করেছেন। উনি ধর্মকে জড়াননি। কিন্তু প্রকৃতির প্রতিবন্ধকতা কিভাবে টেকনলজিকে আগিয়ে নিয়ে যায় সেটা আলোচনা করেছেন। প্রকৃতির প্রতিবন্ধকতা না থাকলে আকামে সময় নষ্ট করার কোন বাঁধা থাকে না। তাই ধর্মীয় গোঁড়ামির মত পশ্চাদমুখী কাজ করে যাচ্ছে উপমহাদেশের লোকগুলি।

আমার মন্তব্যের আসলে কোন উপসংহার নেই। আছে কেবল দুঃখপ্রকাশ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ! মতামত একেবারে মিল্যা গেল! গানস, জার্মস এন্ড স্টিল বইটা আমিও খুব ভালু পাই। এক অধ্যায় বোধহয় বাংলায় অনুবাদ করাও আছে ইন্টারনেটে। তবে আরেকটা কথা কই রিলিজিয়াস ডগমার সমাধান রিলিজিয়নের ভেতরে থেকে করা খুব কঠিন। ডকিন্সীয় ফর্মুলা ছাড়া গতি নেই মনে হচ্ছে!
পথিক রহমান

সজারু এর ছবি

জন্মই ওনার আজন্ম পাপ।
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

স্মৃতি যদি খুব বেশী প্রতারণা না করে তাহলে মনে পড়ছে এই বিজ্ঞানী যেদিন বাংলাদেশে এসেছিলেন (কী একটা পুরস্কার নিতে) সেদিন তৎকালীন বিরোধী দল হরতাল ডেকেছিল।

রাগিব এর ছবি

কিন্তু দুইটা কি সম্পর্কিত, মানে আবদুস সালামের দেশে আশার কারণে কি হরতাল ডাকা হয়েছিলো? দুইটা সম্ভবত সম্পর্কিত না, তাই না?

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সম্পর্কিত না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। তবুও সাম্প্রতিক হরতাল আর এই পোস্ট দেখে ব্যাপারটা মনে পড়ে গেল তাই শেয়ার করলাম কেউ হয়তো আলো ফেলতে পারবে এটা ভেবে। হয়তো সেই সময় আমার কাছে ব্যাপারটা খারাপ লেগেছিল তাই এখনো সেটা মনে রেখেছি।

শিশিরকণা [অতিথি] এর ছবি

আমাদের শেখ হাসিনা ফুপুর স্বামী ওয়াজেদ আলী মিয়া সম্ভবত আব্দুস সালামের ছাত্র হিসেবে পি এইচ ডি করেছেন। গত বছর উনি মারা যাওয়ার পর বিভিন্ন পত্রিকার জীবনীর মধ্যে তথ্যটা দেখেছিলাম। ১৯৬৩ সালের দিকে যে সময় আব্দুস সালাম তড়িৎচুম্বকীয় তত্ব নিয়ে কাজ করছিলেন সে সময় তার ছাত্র হিসেবে কাজ করছিলেন ওয়াজেদ আলী মিয়া। সুতরাং নোবেল জয়ী এই আবিষ্কারে একজন বঙ্গসন্তানেরও কিঞ্চিৎ ভূমিকা আছে বলা যায়। মনে হয় স্ত্রীর উপর অনেকটা অভিমান করেই যেন তিনি চিরকাল আড়ালে থেকে গেলেন। পত্রিকাগুলোও শোকগাথায় লিখল, " দেশ রত্ন শেখ হাসিনার স্বামী..." কে যে আসলে দেশ রত্ন কেউ ভালমত চিনল ও না।

তড়িৎ চুম্বকীয় তত্বের উপর ওয়াজেদ আলী মিয়ার রচিত একটি উচ্চমানের টেক্সটবুক আছে।

যে যত বড় কান্ডারিই হোক হত্যার অস্ত্র বানানোর উৎসবে যোগ দেয়া
কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধার চোখে দেখি না

কোন বিজ্ঞানীই বোধ হয় মানুষ হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে আবিষ্কারের নেশায় মাতে না। সায়েন্স এর অ্যাপ্লিকেশনে অনেক সময়ই আর বিজ্ঞানীর হাত থাকে না। ধরুন কেউ আবিষ্কার করেছে , ইলেক্ট্রিক শক দিলে হার্ট আবার চালু করা যায়। এই তথ্য ব্যবহার করে কত জীবন বাচানো হয়। এখন এই বিজ্ঞানের তথ্য ব্যবহার করে যে ইলেক্ট্রিক চেয়ার বানিয়েছে, সমস্যা তো তার, বিজ্ঞানীর না।

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

"তবে একটা কথা । যে যত বড় কান্ডারিই হোক হত্যার অস্ত্র বানানোর উৎসবে যোগ দেয়া কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধার চোখে দেখি না । সেটা আব্দুস সালামের মতো শতাব্দির সেরা প্রতিভাবানদের একজন হলেও না"

আবদুস সালামের কাজের সাথে "অস্ত্র বানানোর" কোনো সম্পর্ক নেই। "দুর্বল নিউক্লীয় বল ও তড়িৎচুম্বকীয় বল" মানেই এটম বোমা নয়। নেচার এর ফান্ডামেনটাল একটা বিষয় নতুন কিছু জানা, গবেষনা করা যেটা সালাম করেছে। এটম বোমা বাদ দিলে আর সব বোমাই কিন্তু কেমিক্যালস দিয়ে বানানো, সেজন্য কি মেনডেলিভ বা ল্যাভয়েসিয়ে কে অশ্রদ্ধা করব? কখনো এটা হয়ত এভাবে কারো মাথায়ই আসেনা কারন এটা আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু নিউক্লীয় বল বললেই শুধু বোমার কথা মনে আসে, এটা ভুল।

এই কথাটা এ কিউ খানকে নিয়ে বললে ১০০% ঠিক ছিল। সালামের বেলায় একদমই না।

"ওয়াজেদ আলী মিয়া সম্ভবত আব্দুস সালামের ছাত্র হিসেবে পি এইচ ডি করেছেন।" না - উনি সালামের আন্ডারে করেন নি। ইমপেরিয়াল কলেজ যেখানে সালাম ছিলেন সেখান থেকেও নয়। তবে নিউক্লীয়ার ফিজিক্সেই করেছেন, আর ইটালিতে আবদুস সালাম সেন্টারের ফেলো ছিলেন, সে হিসেবে হয়ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

সালাম বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন, ১৯৮০, ১৯৮৬/৮৭, ১৯৯২।

রাগিব এর ছবি

সম্ভবত হাসিব ভাই একথা বলেছেন পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্পের প্রারম্ভে আবদুস সালামের ভূমিকার কথা ভেবে। ১৯৭২ হতে ৭৪ পর্যন্ত পাকিস্তানের এই প্রকল্পের জন্য পদার্থবিদদের জড়ো করতে সালামের ভূমিকা আছে বলে তাঁর জীবনীতে লেখা আছে।

উইকিপিডিয়া থেকে,


In 1972, Government of Pakistan learned about the India's nuclear weapon program. The then Prime Minister of Pakistan, Zulfikar Ali Bhutto, formed a group of nuclear scientists and engineers, initially headed by Salam. He closely collaborated with his noted colleague and long-associated friend, Mr. Munir Ahmad Khan, in the field of nuclear technology in Pakistan.

In December 1972, two theoretical physicists working at the ICTP were asked by Salam to report to noted Pakistani nuclear scientist, Munir Ahmad Khan (late), then-PAEC chairman[14]. This marked the beginning of the “Theoretical Physics Group" or TPG. The TPG, in PAEC, was assigned to develop the theoretical designs Pakistan's nuclear weapon devices. The TPG team under the leadership of Riazuddin, who is also Salam's distinguished student, completed the work on the theoretical design of the Nuclear weapon device by 1977[14].

ধরা যেতে পারে, এটুকুর বাইরে আর খুব বেশি "অবদান" সালামের ছিলো না। এমনিতেই ১৯৭৪ থেকে তিনি পাকিস্তান ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। কাজেই যোগাযোগ করিয়ে দেয়া ছাড়া পারমাণবিক বোমা বানাবার খুব একটা দায় তাঁর ঘাড়ে দেয়া সম্ভবত চলে না।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

আচ্ছা Weinnberg কে কি বাংলায় "ভাইনবার্গ" লেখাটা সঠিক না?

দুর্দান্ত এর ছবি

নোবেল পেয়েও কেবল ধর্মের কারণে আবদুস সালাম ছিলেন পাকিস্তানে উপেক্ষিত।

আইয়ুব খানের আমলে পাকিস্তানে সালামের অবস্থান বেশ সম্মান ও প্রতিপত্তিরই ছিল। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ছিলেন। আইয়ুব খানের পৃষ্টপোশকতায় পাকিস্তানের প্রতি তার অবদানগুলোর পুরোটাই ঘটেছে পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্বপাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশের প্রতি আলাদা করে তিনি কিছু করেছেন বলে আমি জানিনা।

সে যাই হোক। একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীর আলাদা করে বাংলাদেশের প্রতি দরদ আশা করি না। সমগ্র মানুষের কল্যানে তার ইতিবাচক অবদানটাই মূখ্য হওয়া উচিত।

হয়তো পাকিস্তানের বৃহত্তর স্বার্থেই তিনি ততকালীক হুন্তার সাথে বিরোধে যান নি - অথবা হয়তো পূর্ব পাকিস্তান প্রশ্নে তিনি হুন্তার সাথে একমত ছিলেন। করন যাই হোক ৭১ এ তার 'খদ্দের' পাকিস্তান সরকার/রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে যে অপরাধ ও অনাচার ঘটাচ্ছে, তা জানার পরেও জনসম্মুখে তিনি তার কোন প্রতিবাদ করেননি। ৭১ এ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সরাসরি বিরোধীতা করেছেন, এরকম তথ্য আমার কাছে নেই, কিন্তু আমাদের প্রতিপক্ষকে তিনি তার মেধা ও পরিশ্রম দিয়েছেন এটা পরিস্কার।

আইয়ুব-টিক্কা-ভুট্টোর মদদদার এই পাকিস্তানীর গুনগানে ভরা এরকম পোস্ট সচলায়তনে প্রকাশ করায় আমি আপত্তি জানালাম।

রাগিব এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ১ দাগাতে ভুলবেন না কিন্তু। হাসি

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

দুর্দান্ত এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ। মন্তব্যে যা লিখেছি তাতে অসত্য/ভুল কিছু থাকলে বলুন, শুধরে নেই। পাকিস্তানী হলেই গালগাল করা যায়, এটা যেমন আমার অবস্থান নয়, ঠিক তেমনি ৭১ এ পাকিস্তান হুন্তার 'প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা' র চেহারা সচলায়তনের প্রথম পাতায় দেখতে চাই না।

রাগিব এর ছবি

আমি কিন্তু ঠাট্টা করে এক দিতে বলিনি, বরং আপনার আপত্তির সাথে সাথে যথোপযুক্ত রেটিং করতেও অনুরোধ জানিয়েছি।

--

আপাত দৃষ্টিতে সালামের ছবির প্রতি আপনার আক্রোশ তাঁর পাকিস্তানী জাতীয়তাটাই মনে হচ্ছে। সালাম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গণহত্যার সমর্থক ছিলেন, এমন লিংক আপনিও দেননি, এবং আদৌ দিতে পারবেন না বলেই আমার বিশ্বাস। সেটা যদি সত্যি হয়, তবে আপনার আপত্তির মূলে একটাই কারণ, সালামের গায়ে পাকিস্তানী জাতীয়তার তকমা এঁটে দেয়া, আর সেটার কারণেই তাঁকে ঘৃণা করা।

আপনার মন্তব্যের জবাব আর দিতে ইচ্ছে হয়নি শুরুতে, কিন্তু এবার একটু লিখছি। আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে, আপনার ধারণা আবদুস সালাম রীতিমত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের নীলনকশা বানাচ্ছিলেন, কিংবা ইয়াহিয়া খান/ভুট্টোর সাথে বসে বাঙালিদের হত্যা করার ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন! "প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা"র কাজটা কী, এ সম্পর্কে আপনার ধারণা কী রকম, জানতে ইচ্ছে হয়। যুদ্ধ প্ল্যানিং? পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হয়ে সাফাই গাওয়া? আপনার কাছে সম্ভবত সালামের এই সংক্রান্ত "অপতৎপরতার" রেফারেন্স রয়েছে, সেগুলো একটু দেখতে চাই।

---

ডঃ সালামের হয়ে সাফাই গাইবার কোনো কারণ আমি দেখি না, তবুও -

প্রথমতঃ, ডঃ আবদুস সালাম তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের পদার্থবিদদের জন্য কিছুই করেননি, এই তথ্যটি ঠিক নয়। সালামের আইসিটিপি এবং থার্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস এ বেশ কয়েকজন বাঙালি পদার্থবিদ সালামের অধীনে গবেষণা করেছেন, যাদের মধ্যে মরহুম ডঃ ওয়াজেদ মিঞাও রয়েছেন।

১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশের জন্য আবদুস সালামের কী করার বাধ্যবাধকতা ছিলো তা আমার জানা নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে পদার্থবিদ্যার বিস্তারে সালাম ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাইট ঘাঁটলে চোখে পড়ে, সেখানকার অনেকজন শিক্ষকের উচ্চতর শিক্ষাই হয়েছে আইসিটিপিতে। ঢাবির এই বিভাগের সাথে ডঃ সালামের এই গবেষণাগারের প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েই সম্পর্ক ছিলো

দ্বিতীয়তঃ সালাম ১৯৫৬ সাল থেকে ইম্পেরিয়াল কলেজ, লন্ডনের অধ্যাপক ছিলেন। এই অবস্থায় তিনি বাংলাদেশী বিরোধী তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন, এই দাবিটা কি হাস্যকর রকমের উদ্ভট নয়? প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টার চেহারা আপনি কেনো দেখতে চান না, মানে তাঁর কী অপতৎপরতা আপনার এই ঘৃণার কারণ?

--

যাহোক, আপনার আপত্তি এই কথাগুলোয় পাল্টাবেনা, তাতে আমার সমস্যা নেই। ডঃ সালামকে তাঁর জীবদ্দশায় "কাদিয়ানী" বলে পাকিস্তানীরা ঘৃণা করেছে, আপনি এখন করছেন "পাকিস্তানী" হিসাবে (তাঁর কাজকর্ম মুখ্য নয়, ট্যাগগুলোই মুখ্য)। সালাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, সেরকম কোনো লিংক আপনি দিতে পারবেন না, কিন্তু তাতে সমস্যা নেই, "ব্যাটা তো পাকিস্তানী"/"সরকারী পদবী ছিলো", ব্যস, ট্যাগিং করে ফেললেন এবং ঘৃণার তালিকায় ঢুকিয়ে দিলেন সাথে সাথে। এ জন্যই আপনার মন্তব্যের জবাব দিয়ে লাভ নেই, বরং ১ দাগানোর জন্য অনুরোধ করেছি, যাতে মনের ঝালটা by proxy ভালো করে ঝাড়তে পেরে ভারমুক্ত হন।

--

সচলায়তনের প্রথম পাতায় বিজ্ঞানী আবদুস সালামের উপরে লেখা পোস্ট কাম্য না হলে সাদা/লাল মডুদের সবিনয়ে অনুরোধ জানাই, এই পোস্ট সচলায়তনের ডাটাবেইজ থেকে অবিলম্বে মুছে দিতে। রাবওয়ার সেই ম্যাজিস্ট্রেট সফল হয়েছিলো সালামের উপরে তার ঘৃণা প্রকাশে, বাটালি দিয়ে এপিটাফ গুঁড়িয়ে দিয়ে, এখানেও তবে তাই হোক।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দুর্দান্ত ভাই,

একটু অফটপিক।

পাকিস্তানি লেখক একবাল আহমেদের ‘Confronting Empire' বইটা নিয়ে একটা রিভিউ লিখছি।

প্রথম পাতায় দেয়া যাবে?

-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

দুর্দান্ত এর ছবি

আগে আপনার এই অনুমতিপ্রার্থনাটিকে কেন একটি উস্কানি বলা যাবে না, সেটি পরিস্কার করুন।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

উস্কানিমূলক কোনো প্রশ্ন ছিল না।

একবাল আহমেদের পরিচয় তিনি পাকিস্তানি। আবার তিনি ভালো থিয়োরিস্ট। এন্টি-ওয়ার মুভমেন্ট নিয়ে তাঁর দেদার কাজ আছে। একাত্তরের যুদ্ধ নিয়ে তাঁর কিঞ্চিৎ কলাম ও পড়েছি।

Confronting Empire বই নিয়ে রিভিউ লেখা হলে একই ট্যাগিং আসতে পারে কারণ তিনি পাকিস্তানি আর পুরা পৃথিবীর যুদ্ধ-হাঙ্গামা নিয়ে এতো কিছু করেছেন কিন্তু একাত্তর নিয়ে বেশি সরব নন-তাই পরিষ্কার হতে চাইলাম।

-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

দুর্দান্ত এর ছবি

একবাল আহমেদের পরিচয় তিনি পাকিস্তানি।

একবাল আহমেদ ততটাই পাকিস্তানী, ঠিক নজরুল যতটা বাংলাদেশী।
লিখুন না, তখন মন্তব্য করা যাবে। তবে একবাল যেমন যদ্ধপরাধের বিরুদ্ধে তার অবস্থান কাজে প্রমান করেছে, সালামের ব্যাপারে তেমনটি দেখি কোথায়?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শুভাশীষ,
একবাল আহমদ পড়ে কি আপনার মনে হয়নি- পাকিস্তানী নয় একজন বিহারী হিসেবে পাকিস্তানী শাসকদের তিনি অভিযুক্ত করছেন বিহারীদের 'বলির পাঠা' বানানোর জন্য?
তিনি পাকিস্তানী শাসকদের নিন্দা করছেন বটে বাঙ্গালী গনহত্যা'র জন্য অপরদিকে বাঙ্গালীদের ও দোষারোপ করছেন বিহারীদের হত্যার জন্য।

অনেক আগের পড়া। তবে সম্ভবতঃ আমার মুল্যায়ন ভুল নয়।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মোরশেদ ভাই,

হ্যাঁ, বিহারি পাকিস্তানি হিসেবে। উনার জন্ম অবশ্য ভারতের বিহারে।

আলজেরিয়ায় ফাঁনোর সহযোদ্ধা ছিলেন একবাল আহমেদ-এই কথা জানার পর উনার ব্যাপারে আমার আগ্রহ জন্মায়। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখি উনার জীবন পুরোই সিনেমাটিক।

শৈশবে তাঁর পাশে শোয়া বাবাকে জমি সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে খুন করা হয়। প্রিন্সটন থেকে ডক্টরেট করার পর আলজেরিয়ায় যান। পরে আমেরিকায় ফিরে এসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা করেন। ১৯৭১ সালে আমেরিকায় হেনরি কিসিঞ্জারকে অপহরণ করানোর এক কান্‌স্পিরেসি থিয়োরিতে তিনি আটক হন। পরে মুক্তি পান।

Confronting Empire নামের সাক্ষাৎকারের বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন এডোয়ার্ড সায়ীদ।

এইগুলা জাস্ট তথ্য। তো'য়ের কিছু নাই চোখ টিপি

আপনি যা বলেছেন উনার Letter to a Pakistani Diplomat পড়লে ধারণা পাওয়া যাবে। যদি কখনো একবাল আহমেদকে নিয়ে পোস্টাই বিস্তারিত আলোচনার আশা রাখি।


---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ওনার 'সিনেমাটিক' জীবন নিয়ে আমার-তো'য়ের কিছু নাই তো

তবে-'তো' আছে পরে।
একবাল আহমেদ এর এই বিখ্যাত চিঠির কথাই বলছিলাম। তার দ্বিতীয় পয়েন্টটি ঠিকাছে তো?

The army intervened only after the Bengali nationalists had started killing West Pakistani residents in East Pakistan and the minority Bihari refugees from India;

এখানে যথোপযুক্ত না হলে একবাল আহমেদ নিয়ে আলাদা পোষ্ট দেন। কথা বলি।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনি যেটা কোট করলেন সেটা তো একবাল আহমেদের পয়েন্ট ছিল না। পাকিস্তানি কিছু অফিসারের পয়েন্ট। এর উত্তর দেয়ার জন্য উনি Letter to a Pakistani Diplomat লিখেন।

আপনার কোট করা অফিসারদের পয়েন্টের উত্তর করেছেন একবাল আহমেদ।

I know that I shall be condemned for my position. For someone who is facing a serious trial in America, it is not easy to confront one’s own government. Yet it is not possible for me to oppose American crimes in Southeast Asia or Indian occupation of Kashmir while accepting the crimes that my government is committing against the people of East Pakistan. Although I mourn the death of Biharis by Bengali vigilantes, and condemn the irresponsibilities of the Awami League, I am not willing to equate their actions with that of the government and the criminal acts of an organized, professional army.

According to reliable reports, which were not challenged by the government, no more than 10,000 persons were killed or wounded by Bengali nationalists in the riots against the Biharis. At the beginning of August, however, West Pakistan military authorities issued a white paper which claimed that 100,000 people were killed by the Bengali opposition. These and other exaggerated claims in the white paper were obviously intended to justify trials and possible death sentences for opposition leaders. ...

I know that the army did not intervene in East Pakistan to stop the killing of non-Bengalis, which went on for three weeks while the generals pretended to seek extra-parliamentary deals with the politicians. Saving civilian lives was not the motive behind the vast repressionsthat have already cost countless Pakistanis their lives and property and forced millions to flee to India. Unequal bartering of brutalities is not a function of responsible government. The very fact that this military regime seeks justification for its behavior by referring to the excesses of the Awami League and the aroused masses is a measure of the steep decline in the civic standards of our army and civil services. Above all, criminality is not a commercial proposition: one cannot deposit the crimes of one into the account of another.

অন্যের কথা একবাল আহমেদের ঘাড়ে চাপালে কথা কীভাবে এগোবে?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনি আলাদা পোষ্ট দেন।
একবাল আহমদ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছিলেন, কিসিঞ্জারকে অপহরনের চক্রান্তে মামলা মোকাবেলা করেছেন, পাকিস্তান সামরিকতন্ত্রের ও বিরোধিতা করেছেন অথচ যথেষ্ট পরিমান বিহারী জাতীয়তাবাদী ও ছিলেন।
বাংলাদেশের গনহত্যায় যে বিহারীরা সানন্দে পাকিস্তান আর্মীর অংশীদার ছিলো, একবাল আহমদের ভাষ্যে তাদেরকে বেশ নির্দোষই ঠেকে।
একদিকে পাকসেনাবাহিনীকে যেমন বাঙ্গালী হত্যার জন্য অভিযুক্ত করেন, অপরদিকে একই মাত্রায় না হলেও বাঙ্গালীদের ও দায়ি করেন বিহারী হত্যার জন্য। অথচ বিহারীরা ও যে গনহত্যার অংশীদার ছিলো সেটা যথেষ্ট অনুল্লেখ থেকে যায়।

বিহারী জাতিগোষ্ঠীর এই বুদ্ধিজীবিকে যতোটা না কমিউনিষ্ট তার চেয়ে বেশী জাতীয়তাবাদীই ঠেকে।

যদি বলেন লিংক দেন, এই মুহুর্তে পারবোনা। ইন্টারনেট মাথায় রেখে সবসময় পড়া হয়না।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

একজন বিজ্ঞানীকে শুধু মুসলিম/ কাদিয়ানী/ পাকিস্তানী ট্যাগ দিয়ে তাকে অপমান করা একেবারেই উচিত নয়। যদি এমন হত যে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি কোন গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিল সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান পুরো মানবজাতির সম্পদ। রাগিব ভাই এর সাথে সহমত।

অতিথি লেখক এর ছবি

একজন বিজ্ঞানীকে শুধু মুসলিম/ কাদিয়ানী/ পাকিস্তানী ট্যাগ দিয়ে তাকে অপমান করা একেবারেই উচিত নয়। যদি এমন হত যে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি কোন গণহত্যা বা যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিল সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান পুরো মানবজাতির সম্পদ। রাগিব ভাই এর সাথে সহমত।
পথিক রহমান

দুর্দান্ত এর ছবি

আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে, আপনার ধারণা আবদুস সালাম রীতিমত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানের নীলনকশা বানাচ্ছিলেন, কিংবা ইয়াহিয়া খান/ভুট্টোর সাথে বসে বাঙালিদের হত্যা করার ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন! "প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা"র কাজটা কী, এ সম্পর্কে আপনার ধারণা কী রকম, জানতে ইচ্ছে হয়।

আপনার মন্তব্য পড়লাম। এবার একটু আমার সাথে ভাবুন

ক) সালাম আইয়ুব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো সরকারের বেতন ভোগী কর্মচারী ছিল।
খ) সালাম যতদিন এ পদে বহাল ছিল, ততদিন পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না। সালাম একটি একনায়ক অগণতান্ত্রিক ও যুদ্ধপরাধি সামরিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিল।
গ) সালাম পাকিস্তানে যেসব স্থাপনার প্রতিষ্ঠা/পরিচালনা করেছে, সেগুলো গোড়া থেকেই পাকিস্তান সামরিক সরকারের অধিনস্ত ছিল, এখনো আছে।
ঘ) পাকিস্তানের ভেতরে সালামের করা সকল গবেষনাই পাক-হুন্তার সামরিক উচ্চাশাকে বাস্তবায়নের উদ্যেশ্যে করা।

আমাকে বলুন এর কোনটিতে আপনি কোন অপরাধ দেখেন না? পেটের দায় তো তার ছিল না বলেই জানি। তাহলে ৭১ তার দেশ ও সরকার এতবড় অনাচার করে যাচ্ছে, তিনি তার প্রতিবাদ করলেন না কেন?

এভাবে ভাবুন, সালাম প্রাক ১৯৭১ অবিভক্ত পাকিস্তানের অন্যতম প্রাজ্ঞ ব্যাক্তিত্ব। শিক্ষিত মহলে সবাই তাকে চেনে, আর সামরিক মহলের গণ্যমান্য সকলেই তার কথা মানে। সুতরাং তিনি যা বলবেন ও করবেন, তার একটি বড় ওজন পাকিস্তানের সরকার, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও সামরিক বাহিনীর কাছে ছিল। তিনি তার সেই ওজনটি কেন ব্যাবহার করলেন না? সামরিক হুন্তার সাথে নীতিগত ঐক্যমত না থাকলে সালামের মত একজন বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কেন এসব যুদ্ধপরাধীর এত ঘনিষ্ট হবেন, এবং তাদের সামরিক পরিকল্পনায় প্রধান বৈজ্ঞানিকের ভুমিকা পালন করবেন?

এবার আমাকে বলুন আপনার কথা। আপনি নিজে একজন সনামধন্য প্রকৌশলী - বৈজ্ঞানিক। তর্কের খাতিরে ধরে নিন আগামিকাল বাংলাদেশে আরেকটি সামরিক সরকার চেপে বসল এবং তারা দেশের একটি অংশে পরিকল্পিত ভাবে জেনোসাইড শুরু করল, পাশাপাশি তারা বাংলাদেশকে বিশ্বময়দানে একটি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নত 'হাব' করেও গড়ে তুলতে চাইল। এসময়ে আপনি সেই সরকারের এক জেনারেলের কাছ থেকে একটি নিমন্ত্রন পেলেন - তারা আপনাকে তাদের সেই প্রকল্পের প্রধান করতে চায়।

আপনি কি সে কাজটি নেবেন?

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

"ঘ) পাকিস্তানের ভেতরে সালামের করা সকল গবেষনাই পাক-হুন্তার সামরিক উচ্চাশাকে বাস্তবায়নের উদ্যেশ্যে করা।"

ভাই দুর্দান্ত, শুধু যুক্তির খাতিরে যুক্তি নয়। আমি নিচে একটা কমেন্ট লিখেছি, পারলে সময় করে তার উত্তর দিবেন।
আর আপনার কিছু কমেন্ট পড়ে মনে হচ্ছে উনি কি করেছেন না করেছেন তা সবকিছুই আপনি জানেন - "শিক্ষিত মহলে সবাই তাকে চেনে, আর সামরিক মহলের গণ্যমান্য সকলেই তার কথা মানে।" - হাস্যকর, তাই যদি হয় তাহলে কেন উনি নিজ দেশ থেকে বিতারিত হলেন। মানুষ নোবেল পেলে বিখ্যাত হয়। তার মেনে এই না যে তার নোবেল পরবর্তি সেই প্রভাব/খ্যাতি কে আপনি পেছনে প্রজেক্ট করতে পারেন, আর বলতে পারেন, হ্যা ৫ বছর বয়স থেকে সালামকে সবাই শুনত।

"পাকিস্তানের ভেতরে সালামের করা সকল গবেষনাই পাক-হুন্তার সামরিক উচ্চাশাকে বাস্তবায়নের উদ্যেশ্যে করা।"
সালাম কোনোই গবেষনা করেননি পাকিস্তানে। সায়েন্স পলিসি নিয়েই কাজ ছিল। সামরিক/বেসামরিক সরকার নিয়ে এখন মানুষ যা ভাবে, তখন কি সেভাবে ভাবত? ব্রিটিশ দের কাছ থেকে নিজেদের দেশ পেয়েছে এটা নিয়েই হয়ত খুশি ছিল।

"তর্কের খাতিরে ধরে নিন আগামিকাল বাংলাদেশে আরেকটি সামরিক সরকার চেপে বসল এবং তারা দেশের একটি অংশে পরিকল্পিত ভাবে জেনোসাইড শুরু করল, পাশাপাশি তারা বাংলাদেশকে বিশ্বময়দানে একটি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নত 'হাব' করেও গড়ে তুলতে চাইল।"
পাহাড়ি আদিবাসিরা হয়ত বলবে বাংলাদেশ সেটা যুগ যুগ ধরে করেছে, এখনো করেছে, সামরিক বা গণতান্ত্রিক সব সরকারের সময়েই, আর আপনি বা আমরা বা আপনারা কেনো বিদেশে বসে গবেষনা করছি, বা দেশের বেতনভোগী কর্মকর্তাদের বা পাট জেনোম আবিষ্কারকদের কথাই ভাবেন? বা আমেরিকার কথাই ভাবুন, এরা সারা দুনিয়াতে যা করে, বা ৭১ এ যে ভুমিকা পালন করেছে, এখানে কি কোনো বাংলাদেশীর গবেষনা বা কাজ করতে আশা উচিত? আপনি যেহেতু যুক্তি দেখাতে ভালবাসেন, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কাম্য।

যাই হোক এখানে যেহেতু একজন পাকিস্তানিকে নিয়ে কথা হচ্ছে, যে কোনো যুক্তিই ভিন্নভাবে টেনে নেয়া যায়।

দয়া করে আপনি আমার নিচের এক কমেন্টের উত্তর দেবেন আশাকরি। আপনি কি ৯০ এর দশকে পত্রিকাতে লিখতেন? কারন সালামের ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অনারারি ডক্টরেট পাওয়ার সময়ে এ রকম কথা পেপারে পড়েছিলাম।

দুর্দান্ত এর ছবি

হাস্যকর, তাই যদি হয় তাহলে কেন উনি নিজ দেশ থেকে বিতারিত হলেন।

তিনি বিতাড়িত হয়েছিলেন একথা কেন বলছেন? তিনি কি ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষনার পরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাননি?

এবার প্রশ্ন করুন, ১৯৭৪ সালের ঘোষনায় তিনি দেশ ছাড়তে পারলেন, কিন্ত ১৯৭১ সালে ঘটনায় তিনি অবিচল রইলেন। কেন?

রাগিব এর ছবি

প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টার কাজটা আপনার ধারণা অনুযায়ী কী, তা এখনো বলেননি। আর বলতে পারেননি, ইয়াহিয়া সরকারের হয়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে সালাম কী করেছেন, বলেছেন। কারণ আপনি আদৌ এটা বলতে পারবেন না, শুরুতে বলে ফেলা কথাকে চালিয়ে যাবার জন্য এখন কিছু দুর্বল যুক্তি উপস্থাপন করে চলেছেন।

ক) সালাম আইয়ুব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো সরকারের বেতন ভোগী কর্মচারী ছিল।

ব্যস, এটাই তাঁর দোষ? ঢাবির হাজার কয়েক শিক্ষক "আইয়ুব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো সরকারের বেতন ভোগী কর্মচারী" ছিলেন না? (যদিও প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টার পদটি গালভরা শোনায়, আদৌ কয় রূপি বেতন ছিলো, সন্দেহ, সালাম সে সময় ইম্পেরিয়াল কলেজের "বেতনভূক" অধ্যাপক ছিলেন)। আপনার পরিবারের কথা জানি না, আমার বাবা ৬৯ থেকে সরকারী চাকুরিতে ছিলেন, মামা ছিলেন ঐরকম সময় থেকেই, তাঁরাও "বেতনভোগী"ই ছিলেন, বিনা বেতনে চাকুরি করতেন না। এখন সেটাও তাহলে তাঁদের সবার মহাপাপ?

খ) সালাম যতদিন এ পদে বহাল ছিল, ততদিন পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না। সালাম একটি একনায়ক অগণতান্ত্রিক ও যুদ্ধপরাধি সামরিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিল।

পাকিস্তানে ১৯৫৪ হতে ১৯৭২ পর্যন্ত সামরিক সরকার ছিলো। আপনি সে সময়ের যতো বাঙালি বিজ্ঞানীর কথা বলতে পারবেন, সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করলে সব ব্যাটাই "যুদ্ধপরাধি সামরিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিল।"

বাংলাদেশে ১৯৭৫-১৯৯০ পর্যন্ত অগণতান্ত্রিক সামরিক সরকার ছিলো। এই সরকারের আমলে দেশে কি বিজ্ঞানচর্চা করাটা সরকারের সমর্থন করা? দেশে সেসময় গুটিকয় বিজ্ঞানী যাঁরা ছিলেন, তারা কি জিয়া-এরশাদের তাঁবেদার ছিলেন বলে মনে করেন? আপনার (কু)যুক্তিমতে কিন্তু তা-ই।

তবে আপনার লেখার ভাবখানা দেখে আবারও মনে হচ্ছে, আপনার মাথার মধ্যে একটা ছবি মনে হয়ে গেঁথে আছে, সালাম রাইফেল হাতে ইয়াহিয়া খানের আদেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, অথবা বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা তৈরী করছেন। অন্তত আপনার উপরের এই বাক্যটিতে এটাই মনে হচ্ছে।

গ) সালাম পাকিস্তানে যেসব স্থাপনার প্রতিষ্ঠা/পরিচালনা করেছে, সেগুলো গোড়া থেকেই পাকিস্তান সামরিক সরকারের অধিনস্ত ছিল, এখনো আছে।

তাই নাকি? দুই একটার নাম বলেন। ICTP বা TWAS গুলোও কি পাকিস্তানী সরকারের কালো হাতের কাজ নাকি? (পাকিস্তানের পারমাণবিক প্রকল্পের কথা বলবেন জানি, কিন্তু সেটাকে সালামের হাতে "প্রতিষ্ঠিত" বলাটা বাড়িয়ে বলা হবে)।

ঘ) পাকিস্তানের ভেতরে সালামের করা সকল গবেষনাই পাক-হুন্তার সামরিক উচ্চাশাকে বাস্তবায়নের উদ্যেশ্যে করা।

হা হা হা, তার মানে বলতে চাচ্ছেন, সালাম পাকিস্তানী সামরিক সরকারের উচ্চাশার জন্য ইলেক্ট্রো-উইক থিওরি বানিয়েছিলেন!! তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার মৌলিক এই গবেষণাটি করা ছিলো ইয়াহিয়া খানের স্বপ্ন!!! নোবেল পুরস্কারের মেডেলের সোনা বেচে পাকিস্তান অস্ত্র কিনেছে? হাসি এই মন্তব্যের জবাব নেই!


এবার আমাকে বলুন আপনার কথা। আপনি নিজে একজন সনামধন্য প্রকৌশলী - বৈজ্ঞানিক। তর্কের খাতিরে ধরে নিন আগামিকাল বাংলাদেশে আরেকটি সামরিক সরকার চেপে বসল এবং তারা দেশের একটি অংশে পরিকল্পিত ভাবে জেনোসাইড শুরু করল, পাশাপাশি তারা বাংলাদেশকে বিশ্বময়দানে একটি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নত 'হাব' করেও গড়ে তুলতে চাইল। এসময়ে আপনি সেই সরকারের এক জেনারেলের কাছ থেকে একটি নিমন্ত্রন পেলেন - তারা আপনাকে তাদের সেই প্রকল্পের প্রধান করতে চায়।

তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, ১৯৮০র দশকে বাংলাদেশে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী কারো কোনো সরকারী জায়গায় গবেষণা করাটা মহা পাপ? আদিবাসী নিধনের প্রতিবাদ তাঁরা কেনো করেননি? আশির দশকে শিশু ছিলাম, কিন্তু তার পরেও যতটুকু মনে পড়ে, সে সময়ে দেশে দেশে গবেষণা বন্ধ হয়নি, আর সেসময়ে গবেষণা করা কাউকে আপনি এরশাদের ডান হাত খেতাবও দিচ্ছেন না।

(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ - আমি বুশ সরকারের বেতনভূক কর্মচারী ছিলাম, মানে অন্তত আঙ্কেল স্যামের পয়সায় বেতন পেয়েছি। তা সত্ত্বেও ইরাক যুদ্ধের নীলনকশা প্রণয়নের সাথে আমার চৌদ্দ গুষ্টির কোনোই সম্পর্ক নেই হাসি )।

----------------

গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঢালাও ট্যাগিং যে সব জায়গায় এ্যাপ্লাই করা যায়না সেটা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারিনা। দুর্দান্ত-রাগিবের মন্তব্যে-প্রতিমন্তব্যে সেটা বেশ পরিস্কার।

দুর্দান্ত এর ছবি

চলুক

স্পর্শ এর ছবি

"এতে অবাক হবার কিছুই নেই যে, বেশির ভাগ পাকিস্তানী জানেই না, তাদের দেশের একমাত্র নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ডক্টর আবদুস সালাম কোন অবদানের জন্য নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। কিন্তু তাদের অনেকেই বিগ ব্যাং থিওরির কথা কীভাবে তাদের পবিত্র গ্রন্থে আগে থেকেই লেখা ছিলো, সে বিষয়ে হারুন ইয়াহিয়া বা মরিস বুসাইল্লি মত ভণ্ডদের কথা ফটাফট কোট করতে পারবে।"
- নাদিম এফ. পারাছা


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, এইটা আমার পড়া সেরা কমেন্ট!
হা হা হা ,ইমো ক্যাম্নে দিমু?
পথিক রহমান

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

৯২ সালে যখন আবদুস সালাম বাংলাদেশে আসেন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ডক্টরেট নিতে তখনও এ রকম কিছু লেখা আমি পড়েছিলাম, যেখানে উনার পাকিস্তানি হওয়া নিয়ে অনেকের আপত্তি ছিল। কিন্তু পেপারে ঐ লেখাগুলো ছিল সাংবাদিকদের। যারা বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেন তারা এর আন্তর্জাতিক দিকটা বুঝতে পারেন, তাই সালামের ব্যাপারে কোনো বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর নেগেটিভ ধারনা আমি দেখিনি। যখন ভারতে/এ দেশে সিপাহী বিপ্লবে হাজার হাজার/লাখ লাখ ভারতীয় মারা যায় ১৮৫৭ তে, তখন ব্রিটেনে মাইকেল ফ্যারাডে সরকারি অনুদানে ইলেকট্রিসিটি নিয়ে কাজ করে গেছেন। আজকের প্রতিটা পাওয়ার প্লান্ট তার ইনডাকশন মেথডে কাজ করে। আমরা ফ্যারাডের এই অবদানকে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি, কখনো কি বলেছি উনি কেনো তখন প্রতিবাদ করেননি, বা এরকম কিছু। একজন বিজ্ঞানীর কি করার power আছে সেটা ভেবে দেখা উচিত, তাদের কি কাজ সেটা বুঝতে হবে।

তবে তারা কোনো কিছুকে সরাসরি সাপোর্ট করেছেন কিনা সেটা দেখার বিষয়। সালাম কি ৭১ এ টিক্কা খান গংদের কে সেটা করেছেন? আমার জানামতে উনি করেন নি। একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর লেখায় পড়েছিলাম, ৭১ এ সালাম ইমপেরিয়াল কলেজে থাকাকালীন তার ও তার পরিবারের খোজখবর নিয়েছিলেন।

আমি যতদুর জানি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের অনেকেই সালামের বন্ধু/কলিগ ছিল, যেমন ঢাকা ইউনিভার্সিটির এ এম হারুন অর রশীদ, বাংলাদেশের সেরা পদার্থবিদ। এ রকম তিরিশ চল্লিশ জন বা তারো বেশি যারা ইটালিতে ICTP তে কাজ করেছেন। এরা কি কখনো সালামকে নেগেটিভ ভাবে দেখেছেন, তাদের লেখায় কখনোই সেটা দেখিনি, বরং এর উল্টোটাই। যদি সেটা না হয় তবে অন্যরা কেনো সেটা করবেন? থার্ড ওয়ার্ল্ড এ বিজ্ঞান প্রচারের জন্য সালামের অবদান যে কোনো বিজ্ঞানীর চেয়ে বেশি। ইটালিতে ICTP, এটা মুলত থার্ড ওয়ার্ল্ড বিজ্ঞানীদের জন্য বানানো সেন্টার, ইউনেসকো ফানডেড, সালামই এটার প্রতিষ্ঠাতা, হাজার হাজার থার্ড ওয়ার্ল্ড বিজ্ঞানীদের এটা সুযোগ দিয়েছে রিসার্চের। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের কয়েকশত বিজ্ঞানী/ছাত্র ওখানে গেছেন রিসার্চের কাজে।

থার্ড ওয়ার্ল্ড এ বিজ্ঞান প্রচারের জন্য সালাম পাগলের মত ঘুরে বেরিয়েছেন। বিজ্ঞান বাজেট বারানোর জন্য সব সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সালামের পরামর্শে/চেষ্টায় হয়েছিল ৯০ এর শুরুতে, এর আগে এটা education এর অধীনে ছিল, আলাদা কোনো মন্ত্রনালয় ছিল না। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীমহলে আবদুস সালাম একজন অতীব সন্মানের আসনে আছেন যদিও তিনি পাকিস্তানি ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে উনি হীনমন্যতার উর্ধে ছিলেন, তাই সবার ভালবাসা পেয়েছেন।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি পদার্থবিজ্ঞান সত্যেন বোসের জন্য বিখ্যাত ছিল। সালাম ক্যারিয়ারের শুরুতে এখানে কাজ পেতে আবেদন করেছিলেন। উনাকে নেয়া হয়নি, পান্জাব ইউনিভার্সিটিতে পরে কাজ পেয়েছিলেন। এটা ১৯৯২ সালে ঢাকা ইউনিভার্সিটির অনারারি ডক্টরেট নেয়ার সময় উনি আক্ষেপ করেছিলেন।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সালামের পরামর্শে/চেষ্টায় হয়েছিল ৯০ এর শুরুতে

ভালো।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দুর্দান্ত এর ছবি

সালাম কি ৭১ এ টিক্কা খান গংদের কে সেটা করেছেন? আমার জানামতে উনি করেন নি।

আপনার এই 'জানামতের' ভিত্তিটি প্রকাশ করবেন কি?

রাগিব এর ছবি

দুর্দান্ত, আপনার হাতে সম্ভবত সালামের কালো হাতের কার্যক্রমের দলিল আছে। সালাম ইয়াহিয়া খানের সহচর, বাঙালিদের হত্যাতে সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছেন, রাইফেল হাতে ঢাবিতে আক্রমণ করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি :)। এই ব্রেকিং নিউজের দলিলটি দেখতে আগ্রহী, আপনিই কৌতুহলটা মিটিয়ে দিন না কেনো!

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

দুর্দান্ত এর ছবি

আমার হাতে কোন প্রমান নেই।
কিন্তু আইয়ুব-ইয়াহিয়া-ভুট্টোর কিছু ভাল ভাল কাজের কিছু নজির নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে, যেসব ভাল কাজে সালাম তাদের উপদেশ দিয়েছিলেন?

রাগিব এর ছবি

সালামের কালোহাত সম্পর্কে আপনার হাতে কোনো প্রমাণ নেই, অথচ সালামকে ইয়াহিয়া খানের সহযোগী বানিয়ে দিলেন এক নিমেষে! হাসি সত্যিটা অবশেষে স্বীকার করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রাসেল [অতিথি] এর ছবি

আপনার এই 'জানামতের' ভিত্তিটি প্রকাশ করবেন কি?

আমার 'জানামতের ভিত্তি' হল ওপেন লিটারেচার যেটা আপনি আমি সবাই যেকোনো বই, পত্রিকা, ওয়েব থেকে যতটা জানতে পারি - আবদুস সালাম পাকিস্তানী ছিলেন এটা আমাদের কাছে তার একটা নেগেটিভ দিক, কিন্তু এর বাইরে আমি কোথাও বাংগালীদের সাথে তার কোনো খারাপ ধারনা, বিদ্বেষ বা ৭১ এ ইন্ধন যোগানো, তার সম্পর্কে আমি কোনো বাংলা বা ইংরেজি লেখায় এ ধরনের আমি কিছু পড়িনি। তার সম্পর্কে অনেক লেখা এবং তার বইও আমি পড়েছি, Ideals and Realities, যেটা মুলত পদার্থবিজ্ঞানের কিছু লেকচার আর দরিদ্র বিশ্ব কিভাবে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে উন্নতি করবে সেটা নিয়ে লেখা। ইসরাইলের এক আর্মি কর্নেল ও নামী পদার্থবিজ্ঞানী (কোয়ার্ক মডেলের অন্যতম প্রবক্তা), পরে মন্ত্রী/কনসারভেটিভ পলিটিসিয়ান Yuval Neeman ও সালামের আন্ডারে পি এইচ ডি করেছেন, এবং সালামের বিভিন্ন উদারতার কথা বলেছেন। বিজ্ঞান জাতীয়তার উর্ধ্বে।

এখানে মনে রাখা উচিত, কোনো কিছু নেগেটিভ বললে সেটাকেই প্রমান দিতে হয়। তাই আপনারই উচিত নেগেটিভ প্রমান দেয়া।

সালাম বাংগালী ছিলেন না। সুতরাং তিনি আমাদের চেতনাকে বা বন্চনাকে পুরোপুরি বুঝতে পারবেন সেটা আমি আশা করি না। তবে উনি এটাকে কোনো রকম হেয় করেছেন বা বিরুদ্ধে ইন্ধন দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই।

বিভিন্ন মানুষের মতের ভিন্নতা থাকে তাদের অবস্থান বা ইনফরমেশন অনুসারে, তাই আমি বলব আপনার বা অনেকের মতের ভিন্নতা থাকাটা দোষের কিছু নয়। যেমন মুহম্মদ ইউনুস কেও দেখছি অনেকে দেখতে পারেন না - নিজ দেশে সমালোচিত, বিদেশে সমাদ্ত। তবে সবকিছুতে নমনিয়, যুক্তি, উদারমনা ভাবটাই কাম্য।

নুভান এর ছবি

@রাসেল, আমি আপনাকে অনুরোধ করব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনিদের স্মৃতিচারণ নিয়ে লেখা একটি বই "আমারে তুমি অশেষ করেছ" পড়তে। ওখানে একজন পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্রীর স্মৃতিচারণ দেয়া আছে যিনি কিনা ইম্পেরিয়াল কলেজে ১৯৭১ সালে ডঃ সালামের অধীনে পিএইচডি করছিলেন। একাত্তরে পাকিস্তানীদের হামলার পরপর-ই উক্ত বাংলাদেশী ছাত্রীকে ডঃ সালাম ডেকে সমবেদনা প্রকাশ করেন ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর এহেন জঘন্য কৃতকর্মের জন্য তিনি তাদের কঠোর সমালোচনা করেন।

সরলীকরণ খুবই খারাপ জিনিস। অন্তত মহান জ্ঞান তাপসদের এই ঢালাও ভাবে সরলীকরণ থেকে দূরে রাখুন।

দূরের তেপান্তর  [অতিথি] এর ছবি

পোষ্টটি ভাল লেগেছে।
আর তাঁকে বিজ্ঞানী হিসাবেই দেখি।
অবাক করা ব্যাপার হল, যে পুরস্কারের জন্য বিশ্ব একজনকে স্বীকৃতি দেয় সে অর্থ এসেছিল ডিনামাইড থেকে! তাতে ক্ষতির চেয়ে বরং সভ্যতার লাভ হয়েছে বেশী বা তা এগিয়েছে।

দূরের তেপান্তর

স্পর্শ এর ছবি

রাগিব ভাই, আপনার 'এলোচিন্তাই' এমন গোছানো!!
নিষ্ফল মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যে সময় নষ্ট না করে পরের পর্বটা লিখে ফেলুন। অধীর আগ্রহে আগ্রহী পাঠক প্রস্তুত। হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

দুর্দান্ত এর ছবি

নাগরিকত্ব বা এমন বাহ্যিক বিচারে কাউকে ঘৃণা বা গালাগালের বিপরীতেই যে আমার অবস্থান, সচলায়তনে আমার লেখা ও মন্তব্য পড়ে দেখলে সেটার প্রমান পাওয়া যেতে পারে।

জানিনা আমি পেরেছি কি না, কিন্তু মন্তব্যকারিরা ঠিক ঠিক পরিস্কার করে দিয়েছেন যেঃ

'পাকিস্তানী মানেই যুদ্ধপরাধী নয়। পাকিস্তানী হলেই তাকে ঢালাওভাবে গালাগাল করা যায় না।'

রাগিব ভাই ক্ষমা করবেন। আপনি ও আপনার মত যারা আমার নির্বুদ্ধিতায় ভরা গোঁয়ার-তথ্যশূণ্য মন্তব্যগুলোতে ধৈর্য্য নিয়ে যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, তাদের ধন্যবাদ। যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আমাদের কথোপকথনটি থাকুক, কে জানে কখন আবার আরেকটি ঢালাও গালাগালের ঘটনা ঘটে যায়?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এইটা রিভার্স গেইম আগেই সন্দেহ করেছিলাম। হাসি
একজন দুইজন ব্যতিক্রমকে উদাহরণ বানিয়ে ঢালাওভাবে পাকিগুণমুগ্ধ পোস্টের* বন্যায় মানবতার পলি জমে জমে সুজলা-সুফলা হোক সচলায়তন।

* এই পোস্ট পাকিগুণমুগ্ধ না, পাকিচরিত্র প্রকাশক।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দুর্দান্ত এর ছবি

একজন দুইজন ব্যতিক্রমকে উদাহরণ বানিয়ে ঢালাওভাবে পাকিগুণমুগ্ধ পোস্টের* বন্যায় মানবতার পলি জমে জমে সুজলা-সুফলা হোক সচলায়তন।

বলাইদা, আমাদের ভাবনাটি খুব বেশী দুরের নয়। সালাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু করেছে কি না, এর যেমন আমি কোন প্রমান দিতে পারিনি, ঠিক তেমনি পাকিস্তানের বেশীরভাগ নারী ও শিশুরা ৭১ এ, এর আগে ও তারপরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু করেছে কি না সে প্রমান দেবার আগে তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা বা ঢালাও ভাবে তাদের গালাগাল দেয়া যায় না। সালামের সাথে এসব যুদ্ধপরাধের প্রমানহীন নারী ও শিশুর তফাত একটাই, সালাম নবেল পুরস্কার পেয়েছে, সে একজন বড় মানুষ।

পাকিগুনমুগ্ধ হবার কোন কারন ঘটেনি। দু/একজন পাকিস্তান বংশোদ্ভুত বাংলাদেশী বা বাঙালী বংশোদ্ভুত পাকিস্তানী - যাদের আমি ছোটবেলা থেকে জানি, তাদের কেউ কেউ ৭১ এ পাকিস্তানের কর্মকান্ডে লজ্জ্বিত। লাহোর বা করাচিতে আমি যাইনি। কিন্তু ইউরোপের কিছু কিছু আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যে গুটিকয় পাকিস্তানী তরুন ফটোগ্রাফার, লেখক, শিল্পী, নাট্যকারদের সাথে কথা হয়েছে, তারা অকপটে অনেকেই ৭১ নিয়ে তাদের আগের প্রজন্মকে প্রশ্ন করছে। এদের সংখ্যাটি নিশ্চয়ই 'একজন দুইজন' এর চাইতে বেশী; তবে এরা যে ব্যাতিক্রম - আর আর যারা যুদ্ধপরাধ করেছে, যারা এই যুদ্ধপরাধের সমর্থন করে, এরাই যে পাকিস্তানের মূল ধারা - এই ধারনার প্রমান কি?

আমি ভাবতে চাই, পাকিস্তানে কিছু লোক বাংলাদেশে যুদ্ধপরাধ করেছে - এবং বর্তমানে কিছু লোক সে যুদ্ধপরাধকে সমর্থন করে। সচলায়ত থেকে সুনির্দিষ্ট ভাবে এদের বিরুদ্ধে কথা বলা হোক, ধিক্কার জানানো হোক। যারা আমাদের মতই পাকিস্তানী সামরিক ও জমিদারী প্রথার শিকার, ঢালাওভাবে পাকিস্তানীদের 'মা** *দি' বললে যে এই নিরীহ মানুষদেরও গালাগাল দেয়া হয়, এবং এরকম ঢালাও গালাগালটি যে সচলায়তনের নীতিবিরুদ্ধ হয়েছে, সেটা মেনে নেয়া হোক।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দুর্দান্ত ভাই, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাকিস্তানের 'কিছু লোক' না, তারা সমগ্র পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করে। সুতরাং বাংলাদেশে যখন সেই সেনাবাহিনী গণহত্যা চালায়, তখন সেটা পাকিস্তানের তরফ থেকে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়, পাকিস্তানের মুষ্টিমেয় কিছু লোকের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ হয় না।

-- এই কথা যদি আপনি মানেন, তাইলে আপনার ওপরের মন্তব্যের অসারতা আর আমাকে নোতুন করে বলতে হবে না। আর এটা যদি না মানেন, তাইলে আপনার সাথে এই বিষয়ে আলাপ চালাইয়া কোনো কিনারা হবে না, আমি অফ।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হিমু এর ছবি
দুর্দান্ত এর ছবি

শতভাগ প্রাসঙ্গিক। আইয়ুব-ইয়াহিয়া-টিক্কা-ভুট্টোর সমর্থক/সহযোগীরা সবাই চুলোয় যেতে পারে। ৭১ এ যারা যুদ্ধপরাধ ঘটিয়েছে, তাদের যে সন্তানেরা সত্য জানতে চায়না, সত্য জেনেও প্রকাশ্যে অনুশোচনা করেনি, তারাও তাদের বাবাদের সাথে একই চুলোয় যেতে পারে।

আবার রাগিব ভাইয়ের করা ওপরের ৮.১.১.১.৪.২ মন্তব্যটিও প্রাসঙ্গিক হতে পারে।

" পাকিস্তানে ১৯৫৪ হতে ১৯৭২ পর্যন্ত সামরিক সরকার ছিলো। আপনি সে সময়ের যতো বাঙালি বিজ্ঞানীর কথা বলতে পারবেন, সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করলে সব ব্যাটাই "যুদ্ধপরাধি সামরিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিল।"

হিমু এর ছবি

আপনি বলেছেন,

যখন বাবার পাপের ক্ষমতার ওমে সন্তান হাত তাতায়, সেখানে সেখানে বাবা আর সন্তানকে একই পাপের পাপী মনে করি।

তাহলে কি পূর্বসূরীর পাপের নীরব বা সরব সমর্থক, কিংবা সে সম্পর্কে মন্তব্যে বিরত জনগোষ্ঠীকে পূর্বসূরীর পাপের জন্যে পাপী বলে ভাবা যেতে পারে?

আর ইয়োরোপে ঘরোয়া আসরে দুয়েকজন সুশিক্ষিত পাকিস্তানীর মিনমিন করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অতীত কীর্তির সমালোচনা কি গোটা পাকিস্তানী জাতিকে দায়মুক্তি দিতে পারে?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

দুর্দান্ত এর ছবি

তাহলে কি পূর্বসূরীর পাপের নীরব বা সরব সমর্থক

সরব সমর্থকের বেলায় একমত। ওপরের আলোচনায় নিশ্চই দেখা যাচ্ছে নীরবতা মানেই সমর্থন নয়। যেমন ড সালাম নিরব ছিলেন, কিন্তু তাকে যুদ্ধপরাধের দায়ে দায়ী করতে আমরা প্রস্তুত নই। সালামের মত, বা পরনির্ভর শিশু/কোন কোন নারী/আসুস্থ মানুষের নিরবতাকেও সমর্থন বলতে পারছি না।

ইয়োরোপে ঘরোয়া আসরে দুয়েকজন সুশিক্ষিত পাকিস্তানীর মিনমিন করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অতীত কীর্তির সমালোচনা কি গোটা পাকিস্তানী জাতিকে দায়মুক্তি দিতে পারে?

দু একজনের মিনমিন করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অতীত কীর্তির সমালোচনা করে পাকিস্তানী যুদ্ধপরাধীদের দায়মুক্তি হতে পারে না। আর
এই 'গোটা পাকিস্তানী জাতির' মধ্যে যে শিশুটি আজকে জন্মালো তার দায়বদ্ধতা কি?

রাগিব এর ছবি

ঝিকে মেরে বৌকে শেখানোর এই রিভার্স গেইম ভালো লাগলো না একদমই।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এইটা কেমন কথা হল!

হাসান [অতিথি] এর ছবি

আব্দুস সালাম প্রকাশ্যে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছেন এমনটা জানা যায়না।তথ্য প্রমান দিতে পারবো না, শুধু স্মৃতিই ভরসা, সেইখান থেকে হাতড়ে ছোট্ট একটা তথ্য জানাতে পারি।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা যিনি ৭১'সালে ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ২৫শে মার্চের সেই কালোরাতের পরে ঐ কলেজের শিক্ষক আবদুস সালাম তাঁকে ডেকে বলেছিলেন" পাকিস্তানী আর্মি তোমাদের উপরে যা করেছে তার জন্য আমি একজন পাকিস্থানি হিসেবে লজ্জিত"। এইটা একান্তই ব্যাক্তিগত প্রতিক্রিয়া সেই অর্থে তাঁর মতামত হিসেবে ধরা যাবেনা।

এই লেখাটি ডেইলীস্টারে পড়েছিলাম এবং ডেইলীস্টারের আর্কাইভ খুঁজলে পাওয়া যেতে পারে।

একবাল আহমেদ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লেখক এবং একটিভিষ্ট হিসেবে ভিয়েতনাম এবং আলজেরিয়ার মুক্তিসংগ্রামে চরম সোচ্চার হলে একাত্তর তাঁর ভুমিকা অনুল্লেখ্য।তবে তিনি জেনোসাইডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন।

২৫ শে মার্চের আগে চট্টগ্রামে এক জাতিগত দাংগায় শতাধিক বিহারী মারা যায় এবং সেই দাংগায় অনেক বিহারি নারী, শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়( এসম্পর্কে অতিথী'সচল সাইফ শহীদের লেখা পাবেন ক্যাটেড কলেজ ব্লগে; সেখানে বলা আছে তিনি নিজে এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী)।সেই হত বিহারিদের মধ্যে একবাল আহমেদের আত্মীয়স্বজন ছিলো, এটা তিনি তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন। হাসান মোর্শেদ
সে চিঠিটার উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেটাতে ঔ ঘটনার প্রত্যক্ষ প্রভাব আছে হয়তোবা।তবু এমন অনুসরণীয় একটিভিষ্টের শুধু একটি ঘটনা দ্বারা তাড়িত হওয়াটা (সামগ্রিক বিষয়টা বিবেচনায় না এনে) হতাশাব্যন্জক।

একবাল আহমেদ বিহারী হলেও তিনি নিজের পাকিস্তানী পরিচয়কেই তুলে ধরতেন।শেষেরদিকে ইসলামাবাদে থাকতেন এবং সেইখানেই তাকে সমাধিস্ত করা হয়।

বিজ্ঞানীদের মানবিক-রাজনৈতিক এথিক্স থাকাটা আমার মতে আবশ্যকীয়।কিন্তু পরিতাপের বিষয় অনেক বিজ্ঞানীর কাজকর্মে সেটা খুঁজে পাওয়া যায়না।

তবে দুর্দান্ত'র মত করে খুঁজলে ঠগ বাছতে গা উজাড় হয়ে যাবে। স্বয়ং আইনস্টাইন নব প্রতিষ্ঠিত ইজরায়েল রাষ্ট্রের জন্য অর্থ সংগ্রহে ইউরোপ আমেরিকায় ইউনি'তে লেকচার দিয়ে বেড়িয়েছেন; নব প্রতিষ্ঠিত সেই রাষ্ট্রের অনেক আগ্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে সমালোচনা তো দূরের কথা।ইতালিয়ান ইহুদী এনরিকো ফার্মি তাঁর দেশ থেকে আম্রিকায় পালিয়ে গিয়ে সেখানে পারমানবিক বোমা বানিয়েছেন।অথচ সলিড স্টেইটে ম্যাটেরিয়ালসে "ফার্মি লেভেল" হিসেবে এক শক্তিস্তরের নামকরন করে বিজ্ঞানে তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
দুর্দান্ত, হাসিব ভাই যেমন বলেছেন ব্যাক্তিগতভাবে কোন বিজ্ঞানীকে আমি বা আপনি শ্রদ্ধা না জানাতেই পারি, কিন্তু অন্যকেউ তাকে নিয়ে লিখলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে, কিংবা তাকে আপনার মত করেই দেখতে হবে, এইটা স্রেফ গোয়ার্তুমি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।