আল জাজিরার গোলাম আজম

রায়হান আবীর এর ছবি
লিখেছেন রায়হান আবীর (তারিখ: শুক্র, ১৭/০২/২০১২ - ১:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেদিন সকালে নাশতার টেবিলে বসে দেখি পেপার নাই। হকার দিতে ভুলে গিয়েছে। প্রিয় দুই বড় ভাইয়ের কালের কণ্ঠের ক্রীড়া পাতায় সাংবাদিক হিসেবে থাকার সুবাদে প্রথম থেকেই আমাদের বাসায় কালু পত্রিকা চলে আলুকে বাদ দিয়ে। যাই হোক, সকালে উঠে আমি কালের কণ্ঠ পত্রিকা না পেয়ে মন খ্রাপ করলাম, আমার মনে হলো সকালে পেপার না পড়লে দিন শুরু করলে সেটাকে দিন না বলে অন্যকিছু বলা উচিত।

আমরা তাই আলু, কালু পত্রিকা পড়ি। কিংবা রাতে বাসার চ্যানেলে সময় টিভির সংবাদ দেখি, আঁতেলরা অনেক সময় দেখে বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা। আমরা অনলাইনে বিডিনিউজ পড়ি, বিবিসি পড়ি। ক্যানো পড়ি? ব্যক্তি মানুষ হিসেবে আমরা আসলে একটা ক্ষুদ্র জায়গায় বিচরণ করি, চারপাশে কী হচ্ছে খোঁজ খবর রাখার জন্য আমাদের পত্রিকা পড়তে হয়, খবর দেখতে হয়। এইসব খবর দেখে আমরা চারপাশের সবকিছু বিচার বিবেচনা করি, খবর দেখে আমরা হরতালের খবর জানি, সেনাবাহিনীর আভ্যন্তরীণ ক্যু এর কথা জানি।

তো এই জিনিসগুলা আমাদের জানানোর মহান দায়িত্ব যারা পালন করছেন, মানব সভ্যতায় তাদের মিডিয়া বলা হয়। আরও স্পেসিফিক অর্থে আমরা না হয় এদের নাম দেই 'মূল ধারার মিডিয়া'।, যেহেতু এখন ব্লগ, টুইটার, ফেসবুকের মতো বিষয়ও এই সভ্যতায় উপস্থিত।

একটা বিষয় মজার না? এই মিডিয়ার হাতে কিন্তু আমরা আমাদের বেশ বড় একটা আস্থা দিয়ে রেখেছি। আমরা ধরে নিয়েছি নিজের দেশে ঘটে যাওয়া, দেশের বাইরে দুনিয়ার আনাচে কানাচে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার মধ্যে কোন ঘটনাটি আমাদের 'জানা দরকার'- সেটি মিডিয়া সঠিকভাবে নির্বাচিত করবে আমাদের জন্য- অতঃপর আমরা দেখবো, জানবো। আমরা ধরেই নিয়েছি মিডিয়া আমাদের এই আস্থার উপর পূর্ণ শ্রদ্ধা পোষণ করে সুচারু দায়িত্ব পালন করবে, কিন্তু দুনিয়া তো এভাবে চলেনা। আমরা ভাবতে চাই, দুনিয়ার এভাবে চলা উচিত কিন্তু দুনিয়া এভাবে চলেনা।

প্রতিদিন খবরে কাগজে কতো খবর পড়ি। ঐখানে ঐ হৈছে, ঐখানে ঐ সন্ত্রাসী গ্রুপ ঐ ভালো গ্রুপের দশজনকে হত্যা করেছে, ঐখানে ঐ বিজ্ঞানী এইটা আবিষ্কার করছে, এইখানে সেই হৈছে। আমরা পড়ি, কিন্তু পড়ার সময় আমরা কতজন কল্পনা করি, আমরা যা পড়ছি তা আদৌ ঠিক কিনা। আমাদের সামনে খবরটি তুলে এনেছেন যে সংবাদকর্মী তিনি ব্যাপারটা ঠিকমতো বুঝে লিখেছেন নাকি অবুঝে লিখেছেন, সংবাদটি তিনি দেখেছেন নাকি লোকের মুখে শুনেছেন তা আমাদের জানার উপায় থাকেনা। কিন্তু আবারও মানুষের মতো করে আমরা ভাবতে চাই, সংবাদকর্মী সঠিকভাবে খবরটি সংগ্রহ করে, সঠিকভাবে বিষয়টি পড়ে, সঠিকভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু ভাবনায় কী আসে যায়।

ল্যাবে বছর দুয়েক আগে একটা এক্সিবিশন হলো। প্রথমআলো বেশ ভালো কভারেজ দিলো। যিনি সংবাদ সংগ্রহ করতে এসেছিলেন, তাকে আমি তথ্য দিয়ে সাহায্য করলাম। মৌখিক, লিখিত। রাতে ফোনে কয়েকবার তথ্য কনফার্ম করলাম, পরেরদিন অসংখ্য ভুল সমেত এক রিপোর্ট হাজির। একটাই মজা, আমাদের খবর হওয়াতে আমরা বাজে এবং বিচ্ছিরি ভুলগুলো ধরতে পেরেছিলাম, বাকীরা পারেনি, তারা সেই লেখা শেয়ার করেছে, আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছে।

এরপর থেকে ল্যাবের বিভিন্ন খবর নিয়ে পত্রিকায় মাঝে মাঝে রিপোর্ট এসেছে প্রত্যেকটাই মহা ভুলে পরিপূর্ণ। সাম্প্রতিক একটা ঘটনা ইন্টারেস্টিং। ইউনেস্কোর ফান্ডিং এ আমাদের ল্যাবের তত্ত্বাবধানে সূর্যের তাপে পানি বিশুদ্ধ করার একটা ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে। মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, ডিপ টিউবওয়েল ব্যবহারকে অনুৎসাহিত করে, সারফেস ওয়াটার অর্থাৎ নদী, খাল, পুকুরের পানি জীবাণুমুক্ত করে পান করাকে উৎসাহিত করা। কারণ সারফেস ওয়াটারে আর্সেনিক থাকেনা, জীবাণু থাকে। সূর্যের তাপে সেই জীবাণুগুলো মারা সম্ভব, গবেষণা সেটা নিয়েই হচ্ছে। তো এই ক্যাম্পেইন উপলক্ষে কয়েকদিন আগে একটা অনুষ্ঠান হলো শিক্ষামন্ত্রীকে সভাপতি করে। পরেরদিন প্রত্যেকটা পেপারেই অনুষ্ঠান নিয়ে খবর আসলো।

অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার, আসলেই অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার এই কারণে যে সকল পত্রিকার শিরোনাম, সূর্যের তাপে আর্সেনিক দূর করার পন্থা আবিষ্কার করলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কী অপমানজনক ব্যাপার। সূর্যের তাপে আর্সেনিক দূর হবে কীভাবে? আমাদের ক্যাম্পেইনের মূল বিষয়ই তো হৈলো ভাই আর্সেনিক দূর করার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ কইরা গবেষণার কী দরকার, আর্সেনিক আছে এমন পানি ব্যবহার না করে অন্য পানি ব্যবহার করলেই হয় যেখানে ভিন্ন উৎসের পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। আর হ্যারা লিখলো কী!

নিজেদের খবরগুলোয় ভুলের মাত্রা দেখি আমি অন্য খবরগুলোর কথা ভাবি। না জানি সেগুলোর কী অবস্থা। আমরা আস্থা রেখেছি, কিছু আস্থাটা কার ওপর সেটা জেনে রাখাও বোধহয় ভালো।

এই তো গেলো তথ্যগত ভুল। দৃষ্টিভঙ্গির অত্যাচারের কথা, নির্দিষ্ট ঘটনা চেপে যাওয়া, ইচ্ছে করে ঘটনা ম্যানিপুলেট করে প্রকাশ করা সবকিছুই তো হয় মিডিয়াতে। আর এইসকল ভুলভাল তথ্য কানে নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকি।

এতো কথা ক্যান মনে হলো? মনে হলো, আল জাজিরার এই ভিডিওটা দেখে। ভিডিওটার কী দেখে মনে হলো সেটা লেখাটায় নাই, ভিডিওটা ভালো না মন্দ সেটাও বলা নেই। ভিডিওটা দেখে আমি শুধু ভাবলাম পৃথিবীর অন্য প্রান্তের একজন মানুষের কথা, যার কাছে বৈশ্বিক সংবাদ মানে আল-জাজিরা, যিনি আল-জাজিরার উপর আস্থা রেখেছেন, যার কাছে বাংলাদেশ মানে আল-জাজিরার চোখে বাংলাদেশ।


মন্তব্য

সচল জাহিদ এর ছবি

ফেইসবুকে এইটা নিয়েই কথা হচ্ছিল। লেখার জন্য ধন্যবাদ রায়হান। ধিক্কার এই একপেশে সাংবাদিকতার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনার ওয়াল থেকেই প্রথম দেখেছিলাম ভাইয়া...

চরম উদাস এর ছবি

ফটকার দল সব। ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমরা সব্বাই ফটকা, আমাদেরই ফটকামীর রাজত্বে ... মন খারাপ

হাসিব এর ছবি

হেডিঙে ভুল আছে। সহিহ কায়দায় হেডিংটা হবে এরকম -

\"আল জাজিরার গোয়ার্গাজম\"

রায়হান আবীর এর ছবি

গুল্লি

সাফি এর ছবি

চলুক

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফলাইন) এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

গুল্লি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
রায়হান আবীর এর ছবি

ধন্যবাদ সবুজ পাহাড়ের রাজা।

হিমু এর ছবি

আজকে আলুতে আসছে, প্রবল তুষারপাতে রাশিয়ার সাগর জমে গেছে। "তুষারপাতের কারণে সাগর জমে যায়", কথাটা "বৃষ্টির কারণে জোয়ার হয়"-এর মতো। যে লিখেছে খবরটা, আমি তার বদনাম করতে চাই না। এসএসসি পাশ বা এইচএসসি পাশ বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের এইসব পেপারে প্রদায়ক হিসেবে অক্ষরশ্রমিকের কাজ করানো হয়। তাদের জানার খামতি থাকতে পারে। কিন্তু ঐ পাতাটা দেখার জন্য একজন কেষ্টুবিষ্টু মাথাভারি লোক থাকার কথা, যে জানে, সাগর জমে তাপমাত্রা পানির হিমাঙ্কের বেশ কিছুটা নিচে নামার পর, এর সাথে তুষারপাতের সম্পর্ক নাই। তুষারপাত না হলেও সাগর জমতে পারে, টলটলে সাগরের ওপরেও তুষার পড়তে পারে যদি তুষারবাহী মেঘ হিমাঙ্কের ওপরে থাকা সাগরের ওপর তুষার ঝরায়।

এই যে আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ ভুলগুলো একটা জাতীয় দৈনিক করে চলেছে, এটা কি ঠিক? বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিজ্ঞান পড়েছেন এমন কাউকে বিজ্ঞান সাংবাদিকতার দায়িত্ব দিলে কি খুব বেশি পয়সা বের হয়ে যাবে তাদের পকেট থেকে?

এগুলো হয় কারণ এরা সিম্পলি কেয়ার করে না। এরা পাঠককে, পাবলিককে বলদ ভাবে, ভাবে যা গিলাবে এরা লোকে তা-ই গিলবে। এই প্রদায়করা কিছুদিন পত্রিকা অফিসে যাতায়াত করেই নিজেরে সাংবাদিক ভাবা এবং পরিচয় দেয়া শুরু করে, আর পার্ট নিতে থাকে ডানে বামে। আর এদের দোষ দিয়ে লাভ কী, খোদ উপসম্পাদকেরই তো ফুট-মিটারে গণ্ডগোল লেগে যায়, তাদের সবচেয়ে দামড়া কলামলেখক আয়ারল্যাণ্ডকে স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার দেশ বলে কলাম চালায় দেয় উপসম্পাদকীয় পাতায়।

কে জানে, হয়তো যেই ছেলে বা মেয়ে নাটকসিনেমার স্ক্যাণ্ডাল কাভার করে, তারেই পাঠায় বইমেলায়, তারেই পাঠায় বিজ্ঞানমেলায়। তার কাছে সবকিছুই নাটকসিনেমার স্ক্যাণ্ডালের মতো, কিছু কথা লাগে, কিছু ছবি লাগে, আগার সাথে বগা জোড়া দিয়ে একটা জিনিস নামায় ফেলে। বিজ্ঞান নিয়ে সতর্ক রিপোর্টিং যে একটা স্কিল এবং জ্ঞানের ব্যাপার, এইটা তো ওর বসেরাই জানে না, ও বেচারা আর কী করবে?

গণিত অলিম্পিয়াডের কান্ধে বন্দুক রেখে নিজেদের ব্র্যাণ্ডিং চালায় যায়, অথচ নিজেদের প্রদায়ক বিভাগীয় সম্পাদকরে সামান্য বিজ্ঞান শিখাইতে পারে না, এরা আবার পত্রিকা চালায়। ভাত পায় না চা খায় হোণ্ডা হাঁকড়ায় হাগতে যায়।

তারেক অণু এর ছবি

আলুর উটপাখির ব্যাপারে তো আগেই বলছিলাম, এখানে যেটা বলতে চাই তা হল স্কুলে পড়ার সময় এমন অনেক ফালতু তথ্য মাথায় গেড়ে বসেছিল খবরের কাগজের কল্যাণে, সেগুলো ঝেটিয়ে দূর করা এখনো চলছে।
এখন নেটের যুগ, ব্যাটারা কি লেখার আগে একবার দেখে নিতে পারে না তথ্য গুলো নিরেট কি না !

অন্য কথা না বাড়ায়, নিজের নামেই একাধিক খবরের কাগজে পড়লাম তারেক অণু ও ইনাম আল হক অ্যান্টার্কটিকা এবং দক্ষিণ মেরু গিয়েছে। আসল সত্য হচ্ছে, আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ দক্ষিণ মেরু যান নাই, আমরা দুই জন পুরো উলটো জায়গা মানে উত্তর মেরু গিয়েছিলাম। আরেক কাগজে অবিকল এই লাইনগুলি ছিল,- তারা কুকুরের পিঠে চেপে উত্তর মেরুবিন্দুতে যান, কুকুরগুলো খুব ভদ্র, এরা কামড়াকামড়ি করে না ! অ্যাঁ কিসের মধ্যে কি !
আর আলুর হিমালয় ব্যবসা নিয়ে মুখ খুলছিনা এখনো, কিন্তু যে কোন দিন বাজারে মটকা ভেঙ্গে দিব কইয়া রাখলাম।

ashraf  এর ছবি

আমার জানামতে ইনি গিএছিলেন: http://ashiquzzaman.net/

হিমু এর ছবি

অ্যান্টার্কটিকা আর দক্ষিণ মেরুর মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। দক্ষিণ মেরু অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের একেবারে দুর্গম কেন্দ্রে। সেখানে কোনো বাংলাদেশী গিয়েছেন কি? অ্যান্টার্কটিকায় তো হাছান মাহমুদও গেলো সেদিন।

তারেক অণু এর ছবি

একটু না হিম্ভাই, ভাল পার্থক্য আছে। শীতের অ্যান্টার্কটিকা ইউরোপের চেয়ে বড়, কাজেই চিলি আর আর্জেন্টিনার কাছের অ্যান্টার্কটিকা পেনিনিসুলাতে পা দেওয়া আর দক্ষিণ মেরু যাওয়ার কথা অনেকটা ইস্তাম্বুল এসে প্যারিস যাওয়ার মত শোনাবে।
এখন পর্যন্ত দক্ষিণ মেরুতে বাংলাদেশে কেউ যান নাই। যদিও খবরের কাগজে অ্যান্টার্কটিকা ঘুরে আসা একাধিক জনের কাহিনীই কুমেরু জড়িয়ে ছাপা হয়েছে। অনেক সাংবাদিকেরই এই পার্থক্য জানার সময়টুকুও নাই। আশা রাখি অদূর ভবিষ্যতেই এই অপূর্ণতা দূর হবে।

হিমু এর ছবি

একটা পেঙ্গুইনের ডিম আনতে পারবেন? একজনকে সেইটার উপর আইলাবিউ লিখে দিতাম।

রায়হান আবীর এর ছবি

তারেক অনু ভাই, ইন্টারনেট আবার কী যাই মাইরি!

রায়হান আবীর এর ছবি

কে জানে, হয়তো যেই ছেলে বা মেয়ে নাটকসিনেমার স্ক্যাণ্ডাল কাভার করে, তারেই পাঠায় বইমেলায়, তারেই পাঠায় বিজ্ঞানমেলায়। তার কাছে সবকিছুই নাটকসিনেমার স্ক্যাণ্ডালের মতো, কিছু কথা লাগে, কিছু ছবি লাগে, আগার সাথে বগা জোড়া দিয়ে একটা জিনিস নামায় ফেলে।

দৃষ্টিভঙ্গীগত পার্থক্যের যেকোনো বিষয় যে পুরো ভিন্ন একটা জগাখিচুড়ি হতে পারে কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু এরা অলটাইম নিজেদের চেয়ে পাবলিকরে ভুদাই মনে করে, তাই নিজের লেখা প্রতিটি অক্ষরকে নির্দ্ধিধায় স্বর্ণাক্ষর চিন্তা করে
অনেক জ্ঞান বিতরণ করে ফেললাম সে আনন্দে স্বমেহনে লিপ্ত থাকে। আর কিছু বলার নাই।

মন মাঝি এর ছবি

এসএসসি পাশ বা এইচএসসি পাশ বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের এইসব পেপারে প্রদায়ক হিসেবে অক্ষরশ্রমিকের কাজ করানো হয়

আলুর কথা জানি না, কিন্তু ডেইলি স্টারে মোটামুটি "কেষ্টুবিষ্টু মাথাভারি লোক" পর্যায়েই একজন ইন্টারমিডিয়েট পাশ চিনি। এটা মনে হয় কোন ব্যাপারই না তাদের জন্য। "বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিজ্ঞান পড়েছেন এমন কাউকে বিজ্ঞান সাংবাদিকতা" ? হাহ্‌.... এমন একজনকে চিনতাম যিনি বিজ্ঞান বিষয়েও হাত চালাতেন অথচ "ওজন" আর "ভরের" (mass/weight) পার্থক্য পর্যন্ত জানতেন না, এমনকি বুঝিয়ে বলার পরও তার মাথা দিয়ে ঢোকানো যায় নি। এটাতো এইট-নাইনের পোলাপাইনরাও জানে তাই না? সুতরাং শুধু বাচ্চাকাচ্চাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই!

****************************************

হিমু এর ছবি

এই ডেইলি স্টারেই আবার একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের "আন্তর্জাতিক মান" বজায় রাখার ব্যাপারে সিরাম গুরুগম্ভীর সব লেখা ছাপায়। তোরা ব্যাটা আগে নিজেদের কাগজের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত কর। তারপরে আন্তর্জাতিক মান কপচাইতে আসিস।

হাসিব এর ছবি

ঐ পেপারে এক ম্যাগাজিনেন সমপাদক আছে যে নিজের আপন ভাইয়ের নামে চাকরি করে হাসি ঞলিবারলরা মনে হয় এদিকেও লিবারেল।

guest_writter এর ছবি

গুরু গুরু

নিটোল এর ছবি

চলুক

_________________
[খোমাখাতা]

রায়হান আবীর এর ছবি

ধন্যবাদ নিটোল।

নিঃসঙ্গ পৃথিবী এর ছবি

চলুক

রায়হান আবীর এর ছবি

ধন্যবাদ নিঃসঙ্গ পৃথিবী।

দিগন্ত এর ছবি

আল জাজিরা তো কয়েকদিন আগেই লিবিয়াতে আক্রমণের স্বপক্ষে অনেক কথাবার্তা লিখেছে। কাতার আর আমিরাত গাদ্দাফির বিরুদ্ধে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ন্যাটোবাহিনীকে সহায়তাও করেছে। আল জাজিরা তাতে সমর্থন দিয়েছে। এদের কাছ থেকে কি ভাবে নিরপেক্ষ রিপোর্ট আশা করতে পারি?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রায়হান আবীর এর ছবি

কারও কাছ থেকেই নিরপেক্ষ তো দূরের কথা বস্তুনিষ্ট রিপোর্টও আশা করার উপায় নেই।

সামিয়া এর ছবি

পত্রিকায় বেশ আলোড়ন তুলেছিল এরম দুটো ঘটনায় ব্যক্তিগত ভাবে জড়িত ছিলাম। তথ্য কিভাবে উল্টায় যায় তা নিজের ঘটনা যখন পত্রিকায় আসে, তখন বোঝা যায়। এর পর থেকে পত্রিকার একটা পুরো বাক্যও বিশ্বাস হয় না। আস্থাটা অনেক আগেই মরে গেছে।

রায়হান আবীর এর ছবি

সেইটাই। ব্যক্তিগত ঘটনার দিলে তাকালে এদের ব্লান্ডারিং কতোটা পৈশাচিক, এদের রিপোর্ট কতোটা দায়িত্বজ্ঞানহীন সেটা ভালো মতো বোঝা যায়।

উচ্ছলা এর ছবি

ভিডিও ক্লীপের প্রথম বাক্যটি শুনে সেই যে বুকফাটা ক্রন্দন শুরু হয়েছে আমার! গোলামের শোকে আজ আমি রাগ করে মাটিতে ভাত খাব মন খারাপ

রায়হান আবীর এর ছবি

আবেগী রিপোর্ট।

দ্রোহী এর ছবি

ইউরোপে নাৎসী শব্দটা উচ্চারণ করলেই ধরে পুটু মারা দেয়। আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধীরা টিভিতে প্রাইমটাইমে সাক্ষাৎকার দেয়। তাই আমাদের জন্য এর চাইতে ভাল কিছু তো হওয়ার কথা না। হওয়া উচিত না। কথায় আছে, যেমন কুকুর তেমন মুগুর। আমাদের মতো কুকুরদের জন্য এইটাই সই।

আল জাজিরা একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাদের কাজ সংবাদ বিক্রি করা। জামায়াত টাকা দিলে তারা জামায়াতের গান গাইবে। তারা জানে জামায়াতের গান গাইলে কোন রিস্ক নাই। কিন্তু নাৎসীদের গান গাইলে পুটু মারা খাবে তাই টাকা দিয়েও নাৎসীদের গান দুনিয়ার কাউকে দিয়ে গাওয়ানো যায় না।

এই রিপোর্টটা যদি গোলাম আযমের রিপোর্টের মতো করে করা হতো তাহলে আল জাজিরার অবস্থা কী হতো একবার ভেবে দেখেন। হাঙ্গেরির এই লোকটাকে যদিও বিচারে দোষী প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি কিন্তু আল জাজিরা সে বিষয়ে নিশ্চুপ। কিন্তু গোলাম আযমকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে তারা কেন্দে জারেজার।

রায়হান আবীর এর ছবি

বাল-জাজিরা।

অন্যকেউ এর ছবি

গোয়া জমের নিষ্পাপ বাচ্চাটির মুখ এখন বৈদেশি সংবাদমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যাচ্ছে বোধ হয়। য়্যুট্যুবে তার হৃদয়গ্রাহী ভিড্যুও এর আগে দেখেছিলাম। জাজিরা পার্টি কি গোয়াজমের নিষ্পাপ চেহারা জাস্টিফাই করার জন্য গোয়া-উৎপাদিত বাচ্চার চেয়ে ভালো কিছু পায় নাই?

তবে এইটা সরকারের জন্য একটা বার্তা হওয়া উচিত। জামায়াতি শুওরছানাদের হাত কতদূর যায়, এটা উপলব্ধি করার পরে, এদেরকে এর পরেও ক্রমাগত আপাত-উপেক্ষা করে যাওয়া হবে কিনা, এটা তারা ভেবে দেখতে পারে। আর তাও যদি মোটা মাথায় না ঢোকে, তাহলে পরবর্তীতে জামায়াত ওদেরই পুটুতে প্রবেশ করবে, এটা নিশ্চিত।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

রায়হান আবীর এর ছবি

জামায়াত আগামীবার আম্লীগ না, আমাদের সবার পুটু দিয়েই প্রবেশ করবে।

সজল এর ছবি

আল জাজিরার সমস্যা কী! আরব বিশ্ব এই চল্লিশ বছরে একটুও বদলায়নি, আর তেমনি হয়েছে তাদের মিডিয়া!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্রোহী এর ছবি

আল জাজিরার মালিকানা কাতারভিত্তিও হলেও তাদের সবকিছুই "বিটিশ"।

রায়হান আবীর এর ছবি

আরব বিশ্ব এই চল্লিশ বছরে একটুও বদলায়নি

চল্লিশ বছর কেবল? চোখ টিপি

মন মাঝি এর ছবি

ভিডিওটা দেখতে পারছি না।

****************************************

রায়হান আবীর এর ছবি

মেসেজ দেখাচ্ছে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তাপস শর্মা এর ছবি

ভালো লিখেছেন। তবে ভিডিওটা সরিয়ে ফেলায় দেখা হল না।

তবে যে ম্যাসেজটি দিতে চেয়েছেন তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চলুক

জিজ্ঞাসু এর ছবি

ভিডিওটা মুছে ফেলা হয়েছে।
আমরা বিদেশের সংবাদের গুরুত্ব দিয়ে আসছি অনেক দিন ধরেই। বিবিসি, ভয়েস্ অব আমেরিকা, আল জাজিরা সবই এর মধ্যে আছে। তবে বিদেশী মিডিয়ায় সব সংবাদই যে সঠিক পাওয়া যাবে না তা আপনার লেখা থেকে স্পষ্ট। যেখানে দেশের সাংবাদিকরাই একটি তথ্যকে কেমন ডিসটোর্শনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। বায়াস্ড্ হয়। সেখানে আল জাজিরায় আমাদের দেশের নিউজ বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার ক্ষেত্রে আরও কত ধাপ ফিল্টার পার করতে হবে তা প্রশ্নাতীত।
আমাদের দেশে বর্তমান যুগেও অনেক পেশাতে যেতেই লাইসেন্স লাগে না। পাশ্চাত্যে কিন্তু তেমন না। ছিপ দিয়ে মাছ ধরবেন তারও লাইসেন্স নাও। সাংবাদিকতা করতে দৌড়ঝাঁপ করার যোগ্যতার পাশাপাশি কিছু বেসিক জ্ঞানের দরকার হয়। সেটা মূলত হাইস্কুল লেভেলের জ্ঞান। অর্থাৎ ১২ ক্লাস পর্যন্ত শিক্ষা। তারপর যেটা দরকার সেটা ট্রেনিং। ট্রেনিং থেকে সাংবাদিক নানা কায়দাকানুন শেখে, আইন শেখে, দায়িত্বশীলতা শেখে। কিন্তু আমাদের দেশে দৌড়ঝাঁপ করতে পারলেই সাংবাদিক হয়ে যায়। সেকারণেই ল্যাবের রিপোর্টে তথ্যগত ভুল থেকে গেছে।
সমাজ যতই আধুনিক হোক না কেন, পাঠক সমাজের যোগ্যতা আনুপাতিক হারে আগের মতই আছে। অর্থাৎ সচেতন পাঠক বনাম অসচেতন পাঠকের অনুপাত আগের মতই। তাই সাংবাদিকতার মান আরও উন্নত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এভাবেই চলতো।
এভাবেই চলছে।

হয়তো-

এভাবেই চলবে। মন খারাপ

তানিম এহসান এর ছবি

শেয়ার দিলাম। ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে শুনে খানিকটা শান্তিপাওয়া গেলো। সব জায়গাতেই দেখি ক্রমাগত ঝাড়ুদেয়া দরকার হয়ে যায় ....

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুণ একটা লেখা চলুক

সত্যানন্দ এর ছবি

_ _ _হুমমম_ _ _ _ মাস ছয়েক আগে সিনেট ভবনে একটা সেমিনার হইল_ _ _ সত্যেন বোসের উপর_ _ _ রেডিও'র এক প্রমীলা সাংবাদিক জাঁদরেল কাউকে খুজে না পেয়ে আমার মত টেনেটুনে পাস করা ছাত্রের সাক্ষাৎকার নিতে উঠে পড়ে লাগল _ _ _ (অবশ্য আমার বন্ধুদের ও ষড়যন্ত্র ছিল)_ _ _ যাই হোক আধা ঘন্টা তারে বোস-আইন্সটাইন তত্ত্ব বোঝানোর পরে সাংবাদিক সাহেবার উপলব্ধি হল - "দুনিয়া দুই ধরনের কণা দ্বারা গঠিত, একটার নাম বোসন, সেইটা বোস আবিষ্কার করেছেন"_ _ _ আক্কেল গুড়ুম হয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না আমার_ _ _ _ ঐদিকে সেমিনার অর্ধেক শেষ_ _ _ _ _

তাজ এর ছবি

যারা ভিডিওটা দেখতে চাচ্ছেন তারা এই পোস্টটা দেখতে পারেন। কিছু বাড়তি তথ্যও আছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।