তবে কেন আমরা হব এক নম্বর?

রেজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন রেজওয়ান (তারিখ: রবি, ০৬/০৯/২০০৯ - ২:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের ২০০৮ সালের দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের অবস্থা ১০ম (১৪৭) আর ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা ১৫তম (১২৬)। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ ছিল যুগ্মভাবে প্রথম (১৫৮) আর ইন্দোনেশিয়া ষষ্ঠ (১৩৭)।

অর্থাৎ ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের সার্টিফিকেট অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ার দুর্নীতির অবস্থা বাংলাদেশ থেকে অনেক ভাল। এখন আপনাদের আমার কিছু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বলি। ইন্দোনেশিয়ায় আসার পর আমার কিছু টার্গেট ছিল: প্রথমত: একটি ব্যান্ক একাউন্ট খোলা, ভিসা বাড়িয়ে থাকার অনুমতি যোগাড় করা, আর জার্মানী থেকে পাঠানো সংসারের কিছু সামগ্রী পোর্ট থেকে ছাড়ানো। প্রায় দুমাস হতে চলল এর একটি মাত্র করতে পেরেছি, অর্থাৎ থাকার অনুমতিটুকু (একটি বছর মেয়াদী ভিসা মাত্র), আর বাকী সব এখনও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকা পড়েছে। মাল এসে পোর্টে রয়েছে - ডেমারেজ বাড়ছে, আর আমরা কোন এক সরকারী কর্মকর্তার একটি সীল ও সইয়ের জন্যে বসে আছি।

বাংলাদেশই দুর্নীতির আখড়া এই বিশ্বাস যাদের আছে তাদের জন্যে আমার গল্প বলি। স্বল্প মেয়াদী থাকার অনুমতি পত্র (কিতাস) এর ফর্ম ফিল আপ করে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি ও ছবি সহ জমা দেবার পরে সেটা আবার ফেরত আসল। কারণ নতুন ফর্ম এসেছে। তো আমাদের কেন পুরোনো ফর্ম দেয়া হল আগে? জানা গেল ওটি ঠিক জায়গা থেকে আনা হয় নি। কিছু অসাধু লোক পুরোনোটি বিক্রি করে তাই দুর্নীতি দমনের জন্যে নতুন ফর্ম ছাপানো হয়েছে যা দেয়া হচ্ছে বিনা পয়সায়। এরপর তা জমা দেবার পর ফেরত এল কারণ ছবি নাকি ঠিক হয় নি, লাল ব্যাকগ্রাউন্ড লাগবে (আগেরবার জমা দেবার সময় বললেই পারত)। আবার ছবি তৈরি করে দিয়ে আসা হল, এভাবে এক সপ্তাহ পা্র হয়ে গেল। তার পর সব চুপচাপ। মেসেন্জারকে পাঠানো হয় খোঁজ নিতে আর বলে তারা নাকি জানাবে। কিন্তু সেই পাথর তো আর নড়ে না। এবার শরণাপন্ন হলাম স্থানীয় প্রবাসী বাঙ্গালীদের কাছে। তারা বলল পয়সা ছাড়া তো কিছু হবে না।

এখানে কোন কাজ করানোর জন্যে ইন্দোনেশীয়ার ভাষা জানা খুবই জরুরী - কারন অনেকেই ইংরেজী জানে না। তাই ইন্দোনেশিয়ান মেসেন্জারকেই টাকা দিয়ে পাঠালাম। সে এরপর দিনে দিনে ফিরিস্তি দেয় কিভাবে এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে ফাইল নড়ে। প্রথমে আপনি একটি ফাইল কিনে এক টেবিলে জমা দেবেন। সাথে থাকবে একটা সাদা খামে গিফ্ট। তারপর হুজুরের মর্জি হলে (আর ক্রমাগত ফলোআপের পরে) সে আপনার কাগজের উপর কাজ করে পাশের টেবিলে স্থানান্তরের জন্যে একটি চিঠি দেবে। সেটি টাইপ করতে নিশ্চয়ই অনেক কাজ কারণ মেসেন্জার তা করানোর জন্যে সারাদিন সেখানেই বসে থাকে। তারপর সেই চিঠি পাশের টেবিলে না গিয়ে মেসেন্জারের কাছে আসে। সে এনে আমাদের দেখায় যে কাজ হচ্ছে। পরের দিন আবার পাশের টেবিলে নতুন ফাইল কিনে খামসহ কাগজপত্র জমা পরে। এভাবেই কাজ আগাতে থাকে ইন্দোনেশিয়ার নিজস্ব গতিতে। সবশেষে প্রায় মাসখানেক পার করে সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ আসল যখন একজন পরিচিতজন সেই অফিসে কি কাজে গিয়েছিলেন - তিনি জায়গা মত কিছু টাকা দিয়ে বের করে নিয়ে আসলেন ভিসাটুকু। তার বক্তব্য আমাদের মেসেন্জার নিশ্চয়ই পর্যাপ্ত টাকা দেয় নি, কিছু পকেটে পুরেছে, না হলে এত সময় লাগার কথা নয়।

ইন্দোনেশিয়ার দুর্নীতির ব্যাপারটি বুঝতে হলে একটু পেছনের ইতিহাস ঘাঁটতে হবে। দেশটিতে এতকাল শাসন করে গেছে ঔপনিবেশিক শাসকদের হাতের পুতুল, সামরিক নেতা ও কিছু স্বৈরশাসক, এবং তাদের সর্ব শেষজন, সুহার্তো যিনি ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত শাসন করে গেছেন। সুহার্তোকে ধরা হয় বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্নীতিবাজ নেতা হিসেবে।

দেশটিতে পাবলিক সার্ভিসের কোন ধারণাই ছিল না এত দিন এবং গণতান্ত্রিক দেশ এবং জনগণই সর্ব ক্ষমতার উৎস এই সংস্কৃতি এখনও লোকজনের রক্তে গেড়ে বসে নি। দেশটিতে সরকারী চাকুরি মানে হচ্ছে খুবই মর্যাদার ব্যাপার এবং এর সাথে অনেক সুবিধা আপনা আপনি আসে। এই সব সুবিধার মধ্যে আছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের কাছ থেকে উপঢৌকন (মনে রাখবেন ঘুষ কিন্তু ওরা কখনও বলে না, বলে গিফ্ট), এবং সরকারী সম্পদ নয়ছয় করার অব্যক্ত অধিকার।

সুহার্তোর সবচেয়ে বড় উত্তরাধিকার হচ্ছে এই দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া। না দিয়েও উপায় ছিল না। তার শাসনামলে তার নিকট আত্মীয় থেকে দুরতম আত্মীয় পর্যন্ত সবাইকে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদে বসানো হয়েছিল । বিভিন্ন বেদরকারী মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সরকারী অনুমোদনের আওতায় এনে তিনি তার আত্মীয় স্বজনকে প্রভূত অর্থ কামানোর সুযোগ করে দেন। সুহার্তো পুত্রের যে সব দুর্নীতির কথা এবং তার বিদেশে থকা সম্পদের কথা শুনেছি সে তুলনায় আমাদের দেশের রাজকুমারেরা ছিঁচকে চোর।

১৯৯০ সালে তার ঘোষিত নিউ অর্ডার এর বৈশিষ্ট্য ছিল সিভিল সোসাইটির প্রভাব কমানো, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমলাতন্ত্রের ভেতরে ঢুকানো ইত্যাদি। আর ঐতিহ্যগতভাবে দেশটিতে আমলাদের সাধারণ মনোভাব হচ্ছে দেশের অন্যান্য লোকদের চেয়ে তারা বেশী মর্যাদাপূর্ণ। যত উঁচু আমলা তত বেশী মর্যাদার, তত বেশী ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার কাছে কোন সেবা চাওয়া তার কাছে ভিক্ষা চাওয়ার মত এবং অবশ্যই তার কাছে সেই অনুরোধের সাথে আপনার সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী একটি গিফ্ট কাম্য (একটি খামভর্তি টাকা সেই গিফটের সাধারণ ধরণ)। আপনি যদি কোন উপঢৌকনের প্রস্তাব না করেন তাহলে সেটি অবমাননাকর হিসেবে ধরা হবে এবং আপনার কাজে প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে সেই প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত হবে।

আমাদের দেশের মতই এদেশেও দাড়ি টুপীর ছড়াছড়ি না থাকলেও অনেকেই ধর্মীয় আচারে রত (নামাজ রোজা) এবং প্রচুর মসজিদ। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম রোজার সময় হয়তো ওরা ঘুষ নেবে না, তাহলে কি এ মাসে কোন কাজ হবে না। উত্তর মিলেছে আরে ঘুষ কেন বলেন? এটি তো ওদের কাছে গিফ্ট মাত্র, আপনি খুশী হয়ে আপনার কাজের জন্যে দিচ্ছেন, ওরা তো চাচ্ছে না! এটিতে ধর্মে কি বাঁধা(??) ?

সবচেয়ে দু:খজনক ব্যাপারটি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার সাধারণ জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে এই উপঢৌকনের সংস্কৃতিকে মেনে নেয়। একজন সরকারী কর্মচারীকে একটি রুটিন কাজের জন্যে উপঢৌকন না দেয়াকে তাকে অসম্মান করা মনে করে। আমার এখনও জানা হয় নি ওদের সরকারী কর্মকর্তাদের মূল বেতন কি স্ট্যান্ডার্ডের। কিন্তু এদেশে অনেকেরই লাইফস্টাইল দেখে মনে হয় বেতনভোগী কর্মচারীরা এই জীবনযাত্রা কোনদিনই পোষাতে পারবে না। এখানে ১০ টাকার নুডলস খেয়ে কারও একবেলা কাটে আর কেউ ফ্রেস জ্যুস খায় ১৫০ টাকা দিয়ে।

ইন্দোনেশিয়াতে এখনও পুলিশের চাকুরী পাওয়ার যোগ্যতা নির্ভর করে বাবা-মার সচ্ছলতার উপর (অবশ্য এটি ভাল ইনভেস্টমেন্ট, দ্রুতই টাকা উঠে আসে)।

তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে যে দুর্নীতি দমনের প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে সুহার্তো পরবর্তী সরকারগুলো। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন (কেপিকে) বেশ কিছু উচ্চপদস্থ আমলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু এর পরিচালককে এক মার্ডার কেসে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে প্রতিশোধ হিসেবে।

এখানে বৈদ্যুতিক মিটার রিডিং নেয়া হয় ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তুলে। বেশ কিছু সরকারী অফিসে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো আছে উপঢৌকন সংস্কৃতি রোধের জন্যে (যদিও শুনেছি সেসব স্থানে কাজ দ্রুত আদায় হয় বাড়ীতে উপঢৌকন পৌঁছানোর মাধ্যমে)।

আমাদের দেশেও দুর্নীতি আছে কিন্তু সেটি কি এই লেভেলে? কিন্তু ট্রান্সপ্যারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের মতে গত দশকে বাংলাদেশ বারংবার দুর্নীতিতে ১ নম্বর হয়েছে। আমার কিন্তু তাদের স্ট্যাটিস্টিক্সে একদম ভরসা উঠে গেছে।


মন্তব্য

রায়হান আবীর এর ছবি

বাংলাদেশ কেন প্রথম হয় এই নিয়ে একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম। মূল বক্তব্য হলো, বাংলাদেশে প্রচুর সংবাদপত্র। এরা সবাই যা ইচ্ছে তাই রিপোর্ট করে (কিংবা যা ঘটে প্রতিনিয়ত সবই সংবাদপত্রের পাতায় চলে আসে)। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এইধরণের সকল রিপোর্ট জমা করে এবং কোন ধরণের ভ্যারিফিকেশন ছাড়াই সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দেয়। যার ফলে সূচকের এই অবস্থা থাকে।

ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা তো ভয়াবহ!!


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

এনকিদু এর ছবি

আমি একটা কথা অনেক দিন ধরে বলি, সচলেও বেশ কয়েকবার লিখেছি । এখন আবারো লিখছি ।

সব শালাই চোর, দোষ হয় খালি বাঙ্গালির ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আপনার ইন্দোনেশিয়া বাস মঙ্গলময় হউক। আমীন!
.....................................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

রাগিব এর ছবি

ট্রান্সপারেন্সির তালিকাটা ঠিক দুর্নীতির নয়, বরং corruption perception অর্থাৎ "দুর্নীতি হয় বলে সবার ধারণা" এই টাইপের। মানে দেশের ভিতরের ও বাইরের ব্যবসায়ীদের ধারণা কেমন তাই আসে ওখানে।

উইকি থেকে, "To form this index, TI compiles surveys that ask businessmen and analysts, both in and outside the countries they are analyzing, their perceptions of how corrupt a country is."

কাজেই সব সময়েই ট্রান্সপারেন্সির এই তালিকার স্বচ্ছতা ও সত্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

গৌতম এর ছবি

ট্রান্সপারেন্সির তালিকার বিষয়ে যা বলার রাগিব ভাই-ই বলে দিয়েছেন। এই তালিকায় মূলত মানুষের পারসেপশনটাকেই বিবেচনা করা হয়। ফলে এটাকে সত্য ধরে নিয়ে যেমন কিছু করা ঠিক না, আবার একে উপেক্ষা করাও ঠিক না। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মানুষের পারসেপশন সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়।

ইন্দোনেশিয়ার মানুষ এটাকে দুর্নীতি না ভাবলে টিআইবির তালিকায় এদের উপরে উঠা কঠিন (?) হবে।

তবে বিশ্বব্যাংক এবং আইডিবি যেভাবে ঘুষকে 'স্পিড মানি' হিসেবে দেখানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাতে ইন্দোনেশিয়ানদের দোষ দেই ক্যাম্নে?

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মার্শাল ল'র মাধ্যমে উন্নয়নের মডেল হিসাবে ইন্দোনেশিয়াকে যারা মনে করেন তারা এই বিষয়ে কী বলেন?



অজ্ঞাতবাস

মামুন হক এর ছবি

ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা আসলেই ভয়াবহ। টুক টাক বেশ কিছু অভিজ্ঞতা জমছে ভান্ডারে। আলাদা পোস্ট দিব কিনা ভাবছি।

রেজওয়ান এর ছবি

নিশ্চয়ই, সাথে সাউথইস্ট এশিয়ার আরও কিছু দেশের তুলনা। তাহলে বোঝা যাবে আমাদের দেশের দুর্নীতি কোন পর্যায়ে।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

অনিকেত এর ছবি

আমার প্রশ্ন হলো---আমরা যখন জানিই যে 'টি আই বি' এই ধরনের একটা প্রশ্নযোগ্য পদ্ধতি অনুসরণ করে, তাহলে আমরা কেন আরো বড় পরিসরে এর প্রতিবাদ করছি না?

দ্বিতীত প্রশ্নটা হল TIB-এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে। এই লিস্টিতে দেখলাম আমাদের দেশের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য প্রথিতযশা সুশীল সমাজের সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন---- বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের আব্দুল্লাহ আবু সায়িদ, এডভোকেট সুলতানা কামাল, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম সহ আরো অনেকে। প্রশ্নটা হল-----এদের যতটুকু জানি-চিনি বেশির ভাগই সৎ মানুষ বলেই বিশ্বাস করি। তারা কেন দিনের পর দিন এই রকম প্রশ্নবিদ্ধ একটা প্রক্রিয়ায় সায় দিয়ে যাচ্ছেন??? তারা কি আসলেই বিশ্বাস করেন ওদের এই 'পারসেপশন' ভিত্তিক প্রক্রিয়ায়?

রাগিব এর ছবি

বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে আমার ধারণা বিশেষ ভালো না। সুবিধাপার্টিগিরি করাতে কেউ পিছিয়ে নাই। আর দুনিয়ার কাছে দেশকে খারাপস্য খারাপ বলে নিজের যদি সুবিধা হয়, এক লাফে এদের অনেকেই সেটা করবেন, এবং করেও আসছেন।

ট্রান্সপারেন্সির করাপশন পারসেপশন কি দেশী নাকি বিদেশী ব্যবসায়ীদের "ধারণা"র উপরে হয়, তা জানতে ইচ্ছা করে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অমিত এর ছবি

রাগিব ভাই, আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশটা যদি কিছু উদাহরণসহ আলাদা পোস্ট হিসাবে দেন, তাহলে মনে হয় আলোচনার একটা উল্লেখযোগ্য বিষয় পাওয়া যাবে।

ঢালাওভাবে বুদ্ধিজীবীদের সুবিধাবাদী (!!!) বলার ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন থেকেই গেল।

s-s এর ছবি

দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠনিকীকরণ ছাড়াও ওরা আসল উন্নতিটা কোথায় করছে এটা নিয়ে আপনার লেখায় আলোকপাত দেখতে চাই। শুভাশীষ।

রেজওয়ান এর ছবি
অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আসলে এই ইস্যুটা জামাতের সাথে টিপাইমুখী বাঁধের আন্দোলনে শরীক হওয়া কিংবা আরেকটু সীমিত অর্থে যুদ্ধাপরাধীর বিচারে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার মতোই বিপজ্জনক সমস্যা। অন্য কোনো দেশ, সেটা আমেরিকা হোক আর ইন্দোনেশিয়া হোক, দুর্ণীতিতে এগিয়ে আছে জেনে আত্মপ্রসাদ লাভ বা দুর্ণীতি নিয়ে কথা বলায় শিথিলতা এলে তখন আমাদের দুর্ণীতিবাজরাই লাভবান হয়। ভিন দেশের মিডিয়ায় যেমন দেশের দুর্ণীতির কথা বলা আমারও পছন্দ না; কারণ আমাদের সমস্যা তারা এসে সমাধান করবে না; একইভাবে দুর্ণীতির ক্ষেত্রে তুলনার কথা এলে খারাপের চেয়ে ভালোর সাথে তুলনাটাই বেশি হাইলাইট করা দরকার।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

জি.এম.তানিম এর ছবি

আমার অভিমতও অনেকটা একই রকম। অন্য একটা দেশে দুর্ণীতি আমার দেশের থেকে বেশি হয়, এর মানে এই না যে আমার দেশের দুর্ণীতিবাজদের সব পাপ মোচন হয়ে গেলো। নিজের দেশের দুর্ণীতিদমনে তাই আমাদের সব সময়েই সোচ্চার হতে হবে। আমি চাই না আমার দেশ দুর্ণীতিতে এক নম্বরে থাকুক কোন র‌্যাঙ্কিংয়েই। তবে এর থেকে বেশি চাই প্রকৃতঅর্থেই দুর্ণীতি কমে যাক দেশ থেকে।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

অনিকেত এর ছবি

চলুক

তানবীরা এর ছবি

ইন্দোনেশিয়া যেয়ে সরকারী চাকুরী নিতে চাইইইইই
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।