নীল কৃষ্ণচূড়া

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: শুক্র, ২৪/০৪/২০০৯ - ১:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় আমার সবচে’ অপছন্দের মাস কোনটি, তাহলে কোন কিছু না ভেবেই আমি বলতে পারবো – বৈশাখ মাস। ইংরেজী এপ্রিল-মে জুড়ে থাকা এই বাংলা মাসটি অপছন্দের একমাত্র কারণ এর তাপমাত্রা। বৈশাখের অসহনীয় গরম আমার মাথা খারাপ করে দেয়। বাইরে দিন-রাতে দাবদাহ, কখনো কখনো নিঃশ্বাস বন্ধ করা গুমোট গরম, দরদর করে ঘামে ভেজা শরীর, ঘরে লোড শেডিং – আমি মাথা ঠিক রাখার কোন কারণ খুঁজে পাই না। মাথা জ্যাম হয়ে থাকে, ভাল-মন্দ কিছু ভাবা যায় না, কারো সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলাও যায় না। আরো একটা কারণে বৈশাখ আমার অপছন্দের। এ’পর্যন্ত বড়সড় যতগুলো অসুখে পড়েছি সবই এই বৈশাখে। ঠিক এই মুহূর্তে প্রচুর জ্বর, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, অসম্ভব কাশি, শুকিয়ে যাওয়া গলা-বুক আর ঘোর লাগা চোখ নিয়ে লিখে যাচ্ছি। রক্তে ছুট লাগিয়েছে এজিথ্রোমাইসিন, প্যারাসিটামল আর রেনিটিডিন। তবু একটু ভালো থাকার আশায় লিখতে বসেছি। মাথা আর বুকটা যদি তাতে একটু হালকা হয়।

**************************

বৈশাখের ৭ তারিখে বেঙ্গল গ্যালারীতে জীবনানন্দ গবেষক, কবি, হার্ট সার্জন ভূমেন্দ্র গুহের এক ঘরোয়া আলোচনা সভা ছিল। আলোচনার বিষয়ঃ “জীবনানন্দ দাশের জীবন ও সাহিত্য”। আলোচনায় কবি ভূমেন্দ্র গুহ হতাশ করেননি। সত্তরোর্ধ এই তরুণ তাঁর মন্দ্রস্বরে কবি সম্পর্কে যা বললেন তার জানা ছিল সামান্যই। জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কে বা তাঁর জীবন সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণারও অবসান হল। রাফিবা তার কোন বন্ধুর ফোন নাম্বার জানা থাকলে ওকে ডাকা যেত। তাতে ওর অনেক পরিশ্রম কমে যেত। হতাশ হতে হয়েছে সেলিব্রেটি, জ্ঞানী, আর যশোপ্রার্থী-উপগ্রহ দর্শক-শ্রোতাদের আচরণে। এক শ্রেণীর অতি ব্যস্ত দর্শক আছেন যারা কিছুতেই নিজেদের মোবাইল ফোনটিকে অনুষ্ঠান চলাকালে বন্ধ বা সাইলেন্স মোডে রাখতে পারেন না। তাদের ফোন আসতেই থাকে, ফোন যেতেই থাকে, কথা আর ফুরায় না। এই অতি ব্যস্ত লোক-জন কেন যে এই সব হাবিজাবি আলোচনা সভায় আসেন বুঝতে পারি না। সেলিব্রেটি আর জ্ঞানীরা ততক্ষণই থাকেন যতক্ষণ তাদের কথা বলার সুযোগ থাকে বা টেলিভিশন কোম্পানীগুলোর ক্যামেরা সচল থাকে। প্রশ্ন করার নামে তারা শুরু করেন নির্লজ্জ আত্মকথন। নিজের বয়ান শেষ হলে ততোধিক নির্লজ্জের মত অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন। আলোচনাকারীর প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধা না দেখিয়েই এরা ব্যস্ত-সমস্ত হয়ে বেরিয়ে পড়েন। সেলিব্রেটি আর জ্ঞানীদের উপগ্রহ যারা তারাই যশোপ্রার্থী। প্রশ্ন করার সুযোগ পেলে কী যে বলে যান তাতে প্রশ্ন থই খুঁজে পায় না। “বিশেষণে সবই শেষ বলিতে না পারি/ জানো তো স্বামীর নাম নাহি ধরে নারী”। এরা এঁড়ে তর্ক জুড়তেও ওস্তাদ। আর আছে সাংঘাতিক সাংবাদিকের দল – স্থির আর সচল ক্যামেরা নিয়ে। এদের ফটো খেঁচার বিরাম নেই। তাতে আলোচক আর দর্শক যতই বিরক্ত হোন না কেন। হরেক রকম ক্যামেরার হরেক রকম গান। কোন কোনটা পিলে চমকে দেয় পর্যন্ত। এক সময় ক্লান্ত আলোচককে রক্ষার্থে অনুষ্ঠানের সভাপতি ত্রাতার ভূমিকায় নামেন। সবাইকে চা খাবার জন্য ডাকেন। বিনি পয়সার চা না খেয়ে বেঙ্গল থেকে বের হতে হতে ভাবলাম, “আশ্চর্য এক আলোচনা সভা দেখলাম-শুনলাম। শুদ্ধতম কবির জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনায় না তার কোন কবিতার বিষয় বা আঙ্গিক নিয়ে আলোচনা হল না। জ্ঞানী-গুণী কেউ এ’নিয়ে প্রশ্ন করলেন। এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া তাঁর ৭৮৮টি কবিতার কোনটাই নিয়ে কী কারো কোন প্রশ্ন নেই? অজানা কিছু নেই? নাকী সব দর্শক-শ্রোতাই পাণ্ডবের মত কবিতা-অজ্ঞ”! বাসায় পৌঁছুতে না পৌঁছুতে হু-হু করে জ্বর আসলো। অভিমানী কবি কী এই গো-মূর্খ পাণ্ডবের উপর কুপিত হলেন?

**************************

বৈশাখ নিয়ে আমার মধ্যে কিছু বৈপরীত্যও আছে। বৈশাখ এলে বড় বড় গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে যায়। আগুন-লাল কৃষ্ণচূড়া, হালকা লালে সাদার ছোপ মেশানো কৃষ্ণচূড়া, উজ্জ্বল হলুদ রাধাচূড়া, সোনালী রঙা সোনালু, জামরঙা জারুল, গোলাপীর মাঝে বেগুনী আভায় ক্যাসিয়া কত আর বলব। বাসা থেকে বেরুলে মিন্টো রোডের শুরুতে রাধাচূড়া দিয়ে শুরু, তারপর হেয়ার রোড ধরে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া আর জারুলে একাকার। ডানপাশে রমনারতো কথাই নেই। আরো সামনে মৎস্য ভবন ছাড়িয়ে পূর্ত ভবনের সামনে ক্যাসিয়া, আর ডানে বার কাউন্সিল লাইব্রেরী ধরে জারুল। আরো সামনে এগিয়ে গেলে ওসমানী মেমোরিয়ালের সামনে সোনালী আগুন লাগা কয়েক ডজন সোনালু আর কয়েকটা লাজুক ক্যাসিয়া। এরপর জিপিওর কোনে হালকা লালে সাদা মেশানো একা এক কৃষ্ণচূড়া। আবার রাজউক ভবনের পিছন দিকে কয়েকটা শিশু সোনালু। এরপর গন্তব্য চলে আসায় আর রঙের খেলা দেখা হয় না। আমার খুব ইচ্ছে করে এই শহরের ফুলেল গাছওয়ালা পথগুলো ধরে হাঁটতে। মিন্টো রোড, হেয়ার রোড, আব্দুল গনি রোড, তিন নেতার মাজারের সামনের রাস্তা, ক্রিসেন্ট রোড। আমি হাঁটব সকালের ঠাণ্ডা হাওয়ায়, বিকেলের ঝিরিঝিরি বাতাসে, সন্ধ্যার পড়ন্ত আলোয়, রাতের স্নিগ্ধতায়। কিন্তু আমার এসব রাস্তা ধরে হাঁটা হয় না। এসব রাস্তা দখল নিয়ে রাখে পুলিশ অথবা ছিনতাইকারী অথবা ভাসমান পতিতারা। আশ্চর্য এই শহরের পার্কগুলোও পুলিশ, ছিনতাইকারী আর পতিতাদের দখলে থাকে। তাহলে আমি দু’চোখ ভরে এই ফুলেল গাছগুলো কোথায় দেখবো? আমাকেও কী হতে হবে পুলিশ, ছিনতাইকারী বা পতিতার দালাল! মাঝেমাঝে হেয়ার রোড ধরে যেতে থাকলে বাতাস উঠলে আমি জানালার কাঁচ তুলে দিয়ে গাল চেপে রাখি। রাধাচূড়ার হলুদ বৃষ্টি ঝরে পড়ে জানালার কাঁচে। কাঁচের দেয়াল ভেদ করেও তার ভালোবাসার উষ্ণতা টের পাই।

**************************

জীবিকার জন্য আপনি যে পেশাই গ্রহন করুন না কেন, সেখানে আপনার পদ যাই হোকনা কেন, দেখবেন আপনার অনিবার্য অনুপস্থিতিতে কেউ আপনার কাজ করে রাখে না। আপনি বেড়াতে যান, অসুস্থ্য থাকুন, আর ঝামেলায়ই জড়ান, আপনার মাফ নেই। কর্মস্থলে ফিরলেই পাহাড় সমান কাজ আপনাকে চেপে ধরবে। যেন আপনাকে ছাড়া কিছুই ঠিকমত চলছিলনা। অথচ প্রতিষ্ঠানটি যদি আপনার নিজের না হয় তাহলে যে কোন সময় আপনার হাতে “your service is no more required….” ধরণের চিঠি ধরিয়ে দিতে পারে। তখন কিন্তু আপনার জীবন থমকে দাঁড়ানো ছাড়া আর কারো কিছু হয় না।

কর্মস্থলের কথা থাক, ওসব তো বানিজ্যিক সম্পর্কের ব্যাপার। ওখানে নিষ্ঠুরতাটা মানিয়ে যায়। কিন্তু অন্যখানে, যেখানে সম্পর্কটা শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর স্নেহের! সেখানেও আপনার কাজ কিন্তু আপনার জন্যই জমে থাকবে। আপনাকে ছাড়া এক মুহূর্তও সেখানে চলে না। অথচ আপনি অচল অথবা নিশ্চল হয়ে পড়লেও কিছুই থেমে থাকে না। স্নেহ আর ভালোবাসার হাতগুলো কিন্তু সময় কালে আপনার তপ্ত কপালে শীতলতার ছোঁয়া খুব কমই দিতে পারে। বিনি পয়সায় পাওয়া যায় সংসারে এমন সব অমূল্য জিনিষ আমরা কেন যেন দান করতে বড্ড কৃপন। যখন লেন-দেন সব চুকে যাবে তখন এসব ভেবে আর কী হবে?

“মানুষটা ম’রে গেলে যদি তাকে ওষুধের শিশি
কেউ দেয় – বিনি দামে – তবে কার লাভ-”

**************************

মহানগর নাট্যমঞ্চের আঙ্গিনার যে কোণটি বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পাতাল মার্কেটের সাথে মিলেছে সেখানে একটা কাঁঠাল গাছ ছিল। পাতাল মার্কেট নামের এই কুৎসিত, বীভৎস, মরণফাঁদটির সাথে জাতির জনকের পবিত্র নাম জড়ানো কেন দরকার হল ভেবে পাই না। যাকগে, একটা কাঁঠাল গাছের কথা বলছিলাম। গত বৈশাখে দেখি গাছটি ভর্তি কাঁঠাল, ছয় ইঞ্চি থেকে এক ফুট ব্যাসের আশ্চর্য সব গোল কাঁঠাল। আমরা জানি কাঁঠাল একটা মোটামুটি irregular shaped ফল। কিন্তু এমন গাছভর্তি regular shaped কাঁঠাল এই প্রথম আমার দেখা। প্রতিদিন যেতে আসতে গাছটিকে একবার করে দেখতাম। কাঁঠালগুলো পাকার অনেক আগেই একদিন দেখি কারা যেন সবগুলো কাঁঠাল কেটে নিয়ে গেছে। ফলশুন্য গাছটিকে দেখে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল। এরপর আশায় আশায় ছিলাম সামনের বৈশাখে আবার সেই আশ্চর্য কাঁঠালগুলো দেখবো। বৈশাখ আসতে আমার দু’চোখ আঁতি-পাঁতি করে গাছটিকে খোঁজে, কিন্তু আর পাই না। একদিন সকালের আলোয় ভালোভাবে দেখি গাছটিকে কারা যেন মুড়িয়ে কেটে নিয়ে গেছে। এমন ফলবান বৃক্ষ যারা কেটে ফেলতে পারে তারা নিশ্চয়ই অবলীলায় খুন করতে পারে একজন গর্ভবতী নারী, একজন সম্ভাবনাময় কিশোর বা একজন জ্ঞানী বৃদ্ধকে। এরা আমাদের চারপাশেই থাকে অথচ এদের চিনে নিতে পারি না কেন?

**************************

কাবাডী স্টেডিয়ামের ভবনগুলো যেখানে শেষ আর পল্টন ময়দানের যেখানে শুরু গত বৈশাখে গাছটিকে প্রথম সেখানে দেখেছিলাম। গাছটির আকার আকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার সাদৃশ্য অনেক, কিছুটা রেইনট্রীর সাথেও মেলে। পাতাগুলো কৃষ্ণচূড়ার মত যৌগিক পক্ষল। ফল দেখতে পাইনি তাই সেটা লিগিউম বা পড কিনা জানি না। তবে আমি ফুল দেখেছি। একীভূত যৌগিক বৃতিতে পাঁচটি মুক্ত দলের ফুল। ভেতরে পুংকেশর আর গর্ভকেশর যে যেখানে যেমন থাকার কথা। ফুল যে খুব ভালোভাবে দেখেছি তাও নয়। কারণ, হাতে নিয়ে দেখিনি। মোটামুটি কাছে গিয়ে পনের ফুট উচ্চতার ফুল যতটুকু ভালোভাবে দেখা যায়। ফুলের মিল আবার একটু ক্যাসিয়ার (Cassia Nodosa) সাথেও মিলে। আমার বিস্মৃতপ্রায় উদ্ভিদবিদ্যার জ্ঞান আর চোখের দেখায় যদি ভুল না থেকে থাকে। সবচে’ অবাক করা বিষয় হল ফুলের রঙ – ঘন নীল। ফুলগুলো আবার কৃষ্ণচূড়ার মত লাজুক না যে একটু বাতাস বইলে গাছের তলায় চাদর বিছিয়ে পড়ে থাকবে। বেশ কষ্ট সহিষ্ণু আর স্থায়ী ফুল। গত বৈশাখ থেকে শুরু করে জ্যৈষ্ঠের প্রায় শেষ পর্যন্ত ফুলগুলো টিকে ছিল। নাম-না-জানা এই ফুলের নাম আমি দিয়েছিলাম নীল কৃষ্ণচূড়া। আশা ছিল এই বৈশাখে নীল কৃষ্ণচূড়ার সাথে আবার দেখা হবে। কিন্তু আমরাতো অমন ভাগ্যবান না, তাই মাস কয়েক আগে দেখলাম ওখানে খেলার অনুপযুক্ত একটা বাস্কেটবলের মাঠ বানানো হয়েছে, আর সেটা বানাতে একমাত্র যে গাছটা কাটা পড়েছে সেটা নীল কৃষ্ণচূড়া। বাস্কেটবলের মাঠটাকে দেখলেই বোঝা যায় দখলের মানসিকতা থেকে বানানো। অবশ্য গোটা স্টেডিয়াম পাড়া জুড়েই চর দখলের সংস্কৃতি চোখে পড়ে। বাস্কেটবলের মাঠটা একটু অন্য জায়গায় করলে কী এমন ক্ষতি হত? কী ক্ষতি হত নীল কৃষ্ণচূড়াটাকে যদি হত্যা করা না হত? বাস্কেটবলের ঐ মাঠটা না হলে এ’দেশের বাস্কেটবলের ভবিষ্যত কী পরিমান ক্ষতিগ্রস্থ হত তা নির্ণয়ের জন্য ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। অমন অদরকারী দখলের কারণে আমার এই নিরব আনন্দের আলোটা কে কেন চিরদিনের জন্য নিভিয়ে দেয়া হল?


মন্তব্য

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

বৈশাখের অসহনীয় গরম আমার মাথা খারাপ করে দেয়। বাইরে দিন-রাতে দাবদাহ, কখনো কখনো নিঃশ্বাস বন্ধ করা গুমোট গরম, দরদর করে ঘামে ভেজা শরীর, ঘরে লোড শেডিং – আমি মাথা ঠিক রাখার কোন কারণ খুঁজে পাই না। মাথা জ্যাম হয়ে থাকে, ভাল-মন্দ কিছু ভাবা যায় না, কারো সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলাও যায় না।

এমন গরমে পড়লে রবি ঠাকুর "এসো হে বৈশাখ" লিখতেন কি আদৌ? চিন্তিত

ব্লগরব্লগর অতি উত্তম ও উপাদেয় হয়েছে। এই ধরনের লেখা কেন যে লিখতে পারি না! মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অসুন্দর কোন কিছু থেকেও সুন্দরকে ছেঁকে বের করার মন-প্রতিভা তো সবার থাকে না। গুরুদেবের সাথে কী আর আমাদের তুলনা চলে?

ভাগ্যিস এইসব হাবিজাবি লেখার চেষ্টা করেন না তাই আমরা নানা রঙের-নানা স্বাদের ছড়াগুলো পাই। এসব লিখলে ছড়াগুলো পেতাম কোথায়?

ব্লগরব্লগর আমারও আসে না। আজ নিতান্ত জ্বরের ঘোরে কীভাবে যেন এসে গেছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনার বর্ণিত নীল কৃষ্ণচূড়ার কথা শুনে মনে হচ্ছে নীল জ্যাকারান্ডা হতে পারে, তাই কি?

জ্যাকারান্ডার আরেকটা ভ্যারাইটি আছে, যার পাতা ফার্নের মতো, তাই সেটার কথা বলেন নি বলেই মনে হচ্ছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ওটি ব্লু জ্যাকারাণ্ডা নয়। ওর পুষ্প কৃষ্ণচূড়া বা ক্যাসিয়ার কাছাকাছি। জ্যাকারাণ্ডার পুষ্প কলকি ফুলের কাছাকাছি। ওর পাতা বলেছি যৌগিক পক্ষল, ইংরেজীতে একেই বলে fern type। তারমানে পাতার দিক দিয়ে সে আবার জ্যাকারাণ্ডার কাছাকাছি। জাতভাইদের মত এ আবার পর্ণমোচী নয়। আমার জ্ঞান বলে জ্যাকারাণ্ডার মত এও ফ্যাবেসি পরিবারের। এই রাবনের বংশ প্যাপেলিওনেসিদের নিয়েই যত নটঘট। এদের একটা থেকে আরেকটাকে আলাদা করা আমার কর্ম নয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

পোস্টটা পড়ে মন খারাপ হলো কিছুটা। এই শহরটা থেকে ভালো লাগার মতো সব কিছু সরিয়ে ফেলতে চায় কিছু অমানুষ।

অপ্রাসঙ্গিকঃ আমি সচল প্রকৃতিপ্রেমিককে দীর্ঘসময় আগে বাংলার ফুলের ওপরে বাংলায় একটি সচিত্র পুষ্পকোষ বা ফুলশনারি রচনার তাগিদ দিয়েছিলাম। তখনও সচল হয়নি, তখনও ফ্লিকার ছিলো না, সে এক বহুকাল আগের কথা। পরবর্তীতে তাঁকে একইভাবে পক্ষীকোষ বা পাখশনারি রচনার উসকানি দিয়েছি। সচলের সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে কিন্তু আমরা মারাত্মক একটা কিছু করে ফেলতে পারি পাখি বা ফুলের ওপরে। ইমেজ সার্ভিস দেবে ফ্লিকার, তথ্য যোগাবেন নিসর্গী সচল ও অতিথিরা। কেমন হয়?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মনে পড়ে ভাই, মনে পড়ে। সে অনেক দিন আগের কথা। তখন দেশে রাজা বাদশাহর রাজত্ব ছিল। আমি আপনার উস্কানির পরে একটা পাখি নিয়ে শুরু করছিলাম। (সচলে পাখশনারি যোগ করার সুবিধা প্রবর্তনের আগে অন্যকোথাও রাখা যেতে পারে-- সেকরকম কথাই হয়েছিল)। তারপর আর এগুনো হয়নাই। সময় পাওয়া যায়না, সুপারভাইজারের তাড়া--ইত্যাদিই মূল প্রতিবন্ধকতা। (আপনার মতো সব্যসাচি হলে কবেই নামিয়ে দিতুম।) তাছাড়া দেশে না থাকলে দেশের পাখির ছবি পাওয়া মুশকিল। আর (ভারতীয় বা বাংলাদেশী পাখির) ফিল্ডগাইড হাতের কাছে না থাকলেও সুবিধা হয়না। সালিম আলীর বইটা আমার গুনধর ছোটভাই কাকে যেন দান করে দিয়েছে। দেখি এবার নতুন ভার্সানটা আনাব। তারপরে জুলাইয়ের শেষ নাগাদ আস্তে ধীরে শুরু করব বলে মনস্থির করেছি।
...............................
নিসর্গ

হিমু এর ছবি

সচলে তো আপনি চাইলেই একটা ব-e খুলে ভুক্তি যোগ করতে পারেন। এই কাজটি প্রয়োজনে নিসর্গ আর বাংলা উইকিপিডিয়ার সাথে সমন্বয় করা যেতে পারে।

সচল ও অতিথিরা ফ্লিকারের এমবেড সুবিধার মাধ্যমে ছবি যোগ করতে পারবেন, আর টেক্সট যোগ করা তো ডালভাত।

এই পোস্টেই তিনজন উৎসাহী নিসর্গীর দেখা পাচ্ছি। আসুন আমরা কয়েকজন শুরু করে দেই, তারপর অন্যরাও ক্যান্টারবেরি টেইলসের মতো করে আমাদের সাথে যোগ দেবেন পথে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হিমু, খুবই ভালো হয়। সচলের বড় শক্তি হলো এর পাঠক। এতে প্রচার ভালো হবে। নিসর্গে আমি সেগুলো রাখতে চাই আমার প্যাশন হিসেবে (অবশ্যই সচলের নিয়ম মেনে)। আর ব্রাশআপ করে উইকিতে দেয়া যেতেই পারে জনমানুষের জন্য। আমি সাথে আছি এবং থাকবো। পান্ডবদাকে পেয়ে আর হিমুর মতো সর্ববিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তির উৎসাহ দেখে আশাবাদি হচ্ছি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই শহরটাতে ভালো লাগার মত প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে বলে মনে হয় না। এখনই প্রিয় জিনিষ-জায়গাগুলো হাতড়ে বেড়াতে হয়।

আমার যদি কখনো অনেক টাকা হয়, তাহলে আমি এই দেশের মাছ, কীট-পতঙ্গ, গাছ, ফল, ফুল, পাখি, প্রাণী, সরীসৃপ, ফসল, নৌকা, ঘর (বাসস্থান), পিঠা, তরকারি (curry), শাক, ভর্তা, গৃহস্থালী তৈজষপত্র এসব নিয়ে আলাদা আলাদা সচিত্র বিশ্বকোষ বের করার প্রকল্প নেব। কোন মহৎ সংস্থা বা সদাশয় সরকার এইসব বাজে কাজে সময়-অর্থ নষ্ট করবে বলে মনে হয় না। তার দরকারও নেই। আমি ছাড়া অন্য কেউ যদি তা করে ফেলে তাহলে তা আনন্দের ব্যাপার হবে। আর যদি আমি বা অন্য কেউই কাজগুলোর কোনটাই না করতে পারে তাহলে আফসোস নিয়ে মরব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পান্ডব দা, আপনার লেখাটা নষ্টালজিক করে দিল। আমরা কত কিছুকে হারাতে বসেছি। চোখের সামনে কিভাবে মিরপুর রোড পরিবর্তিত হয়ে সেটা এখন মার্কেট-রোড হলো, যেভাবে মানিকমিয়া এভিনিউয়ের আশেপাশ পরিবর্তিত হয়ে ন্যাম ভবনের নামে দালান উঠলো, চওড়া মানিকমিয়াটা ভেঙে রাজনৈতিক স্বার্থে মাঝখানে গাছ লাগিয়ে দেয়া হলো-- এসবই মনে পড়ে। অথচ বেশি দিন আগের কথা নয়, মাত্র ১৫-২০ বছর আগের কথা। সময় সবকিছুকেই পরিবর্তিত করে দেয়। আজকের যে ফুল-পাখি-বন-মাছ তা আগামী ৩০ বছরে কোথায় হারিয়ে যাবে সেটা ভেবেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। মনে পড়ে এই সেদিনও (৬বছর আগের কথা) বোটানিকে ৭০ প্রজাতির পাখি নিজে দেখেছি। ড. আলী রেজার সাথে একটা ট্রিপে গিয়ে শুনেছিলাম উনি বছর দশেক আগে বোটানিকে ১০০প্রজাতির পাখি রেকর্ড করেছিলেন। এসব এখনই গল্পের মতো শোনায়; অথচ জীবনের অনেক পথ হয়তো বাকী।
...............................
নিসর্গ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আহা, পিপি মানিক মিয়া আর বোটানিকের কথা বলে মনটাই খারাপ করে দিলেন। মানিক মিয়ার পাশে জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউটে কখনো গিয়েছিলেন? অদ্ভূত একটা জায়গা। সম্ভব হলে পরে এ'ব্যাপারে একটা পোস্ট দেব। ১৯৮৬ সালে ৪০ জনের একটা টীম নিয়ে বোটানিকের একটা ডিটেইলড স্টাডি করেছিলাম। সেই স্টাডি রিপোর্টের কথা জিজ্ঞেস করে এখন আর লজ্জা দেবেন না। সে ব্যাপারেও কিছু মনে থাকলে লেখার চেষ্টা করব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হায় হায়, কী যে বলেন, চিনবনা কেন? থাকতাম তল্লাবাগে-- সোবহানবাগ আর তল্লাবাগের একেবারে সীমান্তে। একপাশে এই জুট কলোনি। দেয়াল টপকে যেতে হতো সেখানে। কতো বিকেল কাটিয়েছি সেখানে ক্রিকেট খেলে। বছরের অনেকটা সময় সেখানে পাট লাগানো হতো বলে খেলা যেতোনা। তবে রোজার সময়ে কেনযেন খালি থাকতো। রোজা রেখেও এত এনার্জি যে কোথায় থেকে আসতো জানিনা, দিনমান ক্রিকেট চলতো সেখানে। জায়গাটা আসলেই অদ্ভুত ছিল। একটু ছমছমে ভাবও ছিল মনে হয়। সেই অগভীর পুকুরটার কী অবস্থা কে জানে! শেষের দিকে সিলভার কার্প মাছের চাষ করা হতো সেখানে।

বোটানিকের কথা, পাট গবেষণার কথা লিখুন। আমি অন্তত মিলিয়ে নেব আমার স্মৃতির হিসাবের সাথে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে যদি জুট রিসার্চের মাঠে ক্রিকেট খেলে থাকেন তাহলে হয়তো সেসময় আপনাকেও দেখেছি। সেই ক্রিকেট মাঠটাও গল্প করার মত, গর্ব করার মত একটা জিনিষ ছিল। সময় করতে পারলে ওসব গল্প করা যাবে।

বোটানিক নিয়ে পুরোনো কোন কথা বলার আগে মনে হয় একবার এখনকার বোটানিকটাকে স্টাডি করে আসা দরকার।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনি কে ভাই, বলেনতো? আরে ঐ সময়টাইতো স্বর্ণসময়। আমাদের ক্রিকেট টীমের সাথে সহসাই কেউ পেরে উঠতোনা। একবার কলাবাগানের হয়ে খেলতে আসা পাকিস্তানী ও শ্রীলংকান ক্রিকেটারদের নিয়েও প্রতিপক্ষ আমাদের সাথে জিততে পারেনি! আমরা এতটাই দূর্ধর্ষ আর ইউনাইটেড ছিলাম হাসি

স্নিগ্ধা এর ছবি

অশুভ-কামনার মতো শোনাবে, নাহলে বলতাম জ্বরের ঘোরে এরকম লেখা বের হলে আপনার প্রায়ই এমন জ্বর আসুক!

নীল রঙের ফুল আমার সবচাইতে প্রিয়! আপনার বর্ণিত নীল কৃষ্ণচূড়ার কথা পড়ে খুব আফসোস হচ্ছে, কখনও দেখি নি, আর দেখবোও না বলে -

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কী যেন কামনা করেছিলেন বুঝতে পারছিনা। আজ অবস্থা গতকালের চেয়ে খারাপ। তবু লিখতে বসতে যে পেরেছি তাও ভাল।

আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে বাংলাদেশের জলজ, wetland ও উভচর উদ্ভিদের একটা বড় অংশের ফুলের রঙ হয় নীল অথবা নীলের কাছাকাছি (আকাশী, হালকা বেগুনী)। কমপক্ষে তিন রকমের কচুরীপানা, কলমী, তিন রকমের শাপলা/পদ্ম ফুলের রঙ নীল। সে কী নীল, সে কী তার বৈচিত্র্য, সে কী তার রঙের বাহার সে কথা কিছুটা বলতে পারতো কেবল অরূপ, পিপি বা মুস্তাফিজ ভাইয়ের ক্যামেরা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

কেবল ফুলের ছবি নিয়ে একটা ই-বুক করলে কেমন হয়?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

খুবই ভালো হয়। প্রথমে বাংলা বর্ণনাক্রমানুসারে নামগুলো সাজিয়ে তার সাথে ইংরেজী আর বৈজ্ঞানিক নাম দিয়ে নির্ঘন্ট বানিয়ে ফেলতে হবে। তারপর প্রাপ্তিস্থান ও প্রাপ্তিকাল অনুসারে গ্রুপভাগ করে ফটুরে-দের হাতে কাজ ধরিয়ে দিতে হবে। ফুলের ছবি তোলার সময় গাছ, পাতা এবং সম্ভব হলে ফলের ছবিও তোলা উচিত। ফুলের ছবি এমনভাবে তুলতে হবে যেন তা থেকে ফুল সনাক্ত করা যায়। খুব কেতা করে, রঙ বদলে ছবি তোলার দরকার নেই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

আপনি আর প্রকৃতিপ্রেমিক তাহলে জোট বেঁধে সম্পাদনার দায়িত্বটুকু নিন। এটা একটা খুবই ভালো কাজ হবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

মূলত পাঠক এর ছবি

চমৎকার হয়। শুধু একটাই কথা, এন্ট্রি একটামাত্র হলে কোনটা ছেড়ে কোনটা পাঠাবো সেটা নিয়ে মাথা খারাপ হয়ে যাবে।

ফকির লালন এর ছবি

কৃষ্ণচূড়ার সাথে ছেলেবেলা জড়িয়ে আছে। তার পাপড়ি পড়ে থাকতো রাস্তায়, বৃষ্টির পর সেগুলো তুলে দেখতাম, পীচ ঢালা পথের সে অংশটুকু বারিধারায় ভেজেনি। অনেক দিন পর গাছের কথা পড়ে সে কথা মনে পড়লো, তাপাদহে আমার মনটা আপনার লেখায় ভিজে উঠলো।

গাছের কথা লিখুন, অনেক এবং প্রায়ই।

আচ্ছা, আমার একটা বহুদিনের ভাবনা শেয়ার করি। চীফ জাস্টিসের বাসার সামনে যে ফুটপাথটুকু ছিলো ( আছে এখনো?) সেখানে কি পায়রা পালা যায়না? সকাল বিকাল গম খাওয়ালেই ওরা নিয়মিত ওখানে থাকবে বলে আমার ধারনা। নাকি আমরা ধরে তাও খেয়ে ফেলবো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। গাছের কথা লিখতে তো চাই, কিন্তু লেখার ক্ষেত্রে আমার নবিশী শেষ হয়নি তো তাই চাইলেই খুশি মত লিখতে পারি না।

প্রধাণ বিচারপতির বাসার সামনের ফুটপাথ কেটে-কুটে নানা চেহারা করেও কিছু আছে। পায়রাকে গম খাওয়াবার কথা যা বললেন তা স্রেফ চেপে যান। আপনি ফকির মানুষ, শেষে আদালত অবমাননার মামলায় জড়িয়ে পড়বেন। এরচেয়ে আপনার ঢাকার বাসার ছাঁদ থাকলে সেখানে পায়রাকে গম-ছোলা-ভুট্টা যা খুশি খাওয়ান।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফকির লালন এর ছবি

গরীব দেশ নেপালের কাট্মুন্ডুতেও বহু পায়রা আছে পাব্লিক প্লেসে। আরো বহু দেশের বহু শহরে আছে এ রকম। পানির পাশে রাজহাসের দল আছে। ভারতে আই আই টি ক্যাম্পাসে হরিন দেখেছি। ঢাকা বা জ়াহাঙ্গীরনগর ইউনিতে কেন এমন হবেনা?

মন খারাপ হয়।

হিমু এর ছবি

পায়রা জিনিসটা কিন্তু সবসময় সুবিধার না। মিউনিখ শহরে প্রচুর পুরনো গীর্জা আর ভাস্কর্য আছে। আগে পায়রার দল হেগে ছারখার করে রাখতো বলে তারা পায়রার জন্য শহরের বাইরে খাবার ছিটিয়ে ছিটিয়ে শহর থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গেছে বেওয়ারিশ পায়রাদের। কাসেল শহরের কেন্দ্রস্থল কোয়নিগসপ্লাৎসে অনেক পায়রা আছে, মাঝে মাঝে এদের জ্বালায় হাঁটা দায়।

ঢাকা শহরে পায়রার সমাবেশের জন্যে উত্তম জায়গা হচ্ছে চন্দ্রিমা উদ্যান।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

নীল কৃষ্ণচূড়া নামটা দারুণ !
আমাদের স্কুলের রাস্তার একপাশ জুড়ে অসংখ্য জারুল গাছ ছিলো। ফুলগুলো যখন ফুটতো কি যে ভালো লাগতো। কয়েকমাস আগে কেটে ফেলেছে সব। মন খারাপ
লেখা নিদারুণ ভালো লাগলো, পান্ডব'দা।
ভালো হয়ে উঠুন।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাংলাদেশের গার্ডেন সিটি বগুড়া থেকে বের হলেই (অথবা ঢুকতে গেলেই) যে কোন পথে একসময় সার সার রক্তরাঙা শিমুল ফুল চোখে পড়ত। তারসাথে অদ্ভূত সুন্দর অথচ অচ্ছ্যুৎ মান্দার ফুলও চোখে পড়তো। এখনো কী সেগুলো আছে?

আহা, কতগুলো বৎসর পার হয়ে গেল, আমার আর বগুড়া যাওয়া হল না!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অমি এর ছবি

"আলোচনায় কবি ভূমেন্দ্র গুহ হতাশ করেননি। সত্তরোর্ধ এই তরুণ তাঁর মন্দ্রস্বরে কবি সম্পর্কে যা বললেন তার জানা ছিল সামান্যই। জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কে বা তাঁর জীবন সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণারও অবসান হল। রাফিবা তার কোন বন্ধুর ফোন নাম্বার জানা থাকলে ওকে ডাকা যেত। তাতে ওর অনেক পরিশ্রম কমে যেত।"

রাফির জীবনানন্দ দাশ প্রীতি নিয়ে কত ঠাট্টা করেছি, পরে ওর লেখাগুলা যখন মাথার উপর দিয়ে গেল তখন এর গভীরতা বুজেছি। যাই হোক, বেছারা রাফি এই প্রোগ্রামটার কথা শুনলে খুশিই হোতো।

রাফি আপাতত অন্তরজাল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন নামক জালে আচ্ছন্ন...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জীবনানন্দে নিমজ্জিত রাফি এর আগে কী জীবন নামক জালের বাইরে ছিল? আমি বুঝতে পারি সে এখন একটা ট্রানজিশন পিরিয়ড পার করছে। তবে চিন্তার কিছু নেই, জীবনানন্দের কবিতা যার মনে-মাথায় আছে সে সব গরলকেই অমৃতে পরিবর্তন করতে পারবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমি ভাবতেই নিজে নিজে খুব লজ্জাতুর হয়ে ওঠি যে, এই বাংলায় জন্মেও আমি ফুল, পাখি এবং গাছ চিনি না ! বইয়ের দোকান চোখে পড়লেই নজর রাখি এমন কোন বই দেখা যায় কিনা যেটাতে সব ফুল কিংবা পাখি কিংবা গাছের সচিত্র রঙিন ছবিসহ পরিচিতি মূলক উপকরণ থাকে।

সচলের উদ্যোগে এরকম একটা কাজ হিমু, পাণ্ডব দা' বা পিপি দা'র মতো ব্যক্তিরা যদি হাতে নেন এবং এতে মুস্তাফিজ ভাই, অরূপ দা'র মতো ছবিয়ালরা যদি যুক্ত হন, আমি নিশ্চিৎ আমার সুপ্ত ইচ্ছাটা তৃপ্ত হবার একটা উপায় খুঁজে পাবে।

পাণ্ডব দা, চমৎকার একটা লেখা দিলেন। মন খারাপ ও একই সাথে ভালো হয়ে ওঠার মতো। কামেল লোকেরা বোধ করি অসুস্থ হলেও সমান কর্মক্ষম ও সৃজনশীল থাকে। অভিনন্দন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কিছু মনে করবেন না রণ'দা, একটা বিষয়ে আপনার এবং আপনার মত আরো অনেকের ভুল ভাঙ্গাই। জীবনে যারা কিছুদিনের জন্য হলেও গ্রাম, শহরতলী, ছোট শহর বা এমন কি ঢাকার একটু খোলামেলা জায়গায় থেকেছেন তারাই অনেক উদ্ভিদ, পুষ্প এবং পাখি চেনেন। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আপনি নিজেই নিজের জানা গাছগুলোর নামের একটা তালিকা করুন কয়েকদিন ধরে। দেখতে পাবেন গাছের নাম কমপক্ষে একশো হয়ে গেছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রানা মেহের এর ছবি

আপনার লেখাটা অদ্ভুত সুন্দর
এতো এতো ফুল আর গাছের নাম পড়তেও ভালো লাগে

একসময় সিলেটের চৌহাট্টা থেকে স্টেডিয়ামের দিকে যেতে
সারি সারি গাছ ছিল
শিরিশ আকাশি বৃষ্টি শিরিশ
কি মুগ্ধতা ছিল দু পাশ জুড়ে
মহামান্য সাইফুর রহমান রাস্তা বড় করতে গিয়ে
তাদের হত্যা করেছেন। এমন কি প্রান্তিকের কাছে সোনালু গাছটাও

ইবুক করার প্রস্তাবে স্বাগত জানাই
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। আজ থেকে পঁচিশ বৎসর আগে প্রথম যখন সিলেটে যাই তখনই চোখে পড়েছিল এই জেলার ল্যাণ্ডস্কেপ অন্যরকম, এখানকার গাছও ভিন্ন রকম। অবাক হবার কিছু নেই যে দ্বিজেন শর্মার মত নিসর্গীর জন্ম এখানেই হবে।

নির্বোধ ও লোভীরা সবসময়ই ক্ষমতার কাছাকাছি চলে যেতে পারে। আর প্রকৃতি হচ্ছে তাদের প্রিয় শিকার।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

মিন্টো রোড, হেয়ার রোড, আব্দুল গনি রোড, তিন নেতার মাজারের সামনের রাস্তা, ক্রিসেন্ট রোড।
নিয়ে লেখা অংশটা পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম।
রাধাচূড়ার হলুদ বৃষ্টি ঝরে পড়ে জানালার কাঁচে। কাঁচের দেয়াল ভেদ করেও তার ভালোবাসার উষ্ণতা টের পাই।
- মনিটরের কাচ ভেদ করেও সে উষ্ণতার ছোঁয়া পাওয়া গেলো।

আসলেই অদ্ভুত সুন্দর লেখা। স্নিগ্ধার সঙ্গে সহমত - আপনার মাঝে মধ্যে জ্বর এলে মন্দ হয় না।

ই-বুকের কাজে কামলা লাগলে আওয়াজ দিয়েন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একবার আপনি ব্লু রিৎস মাউন্টেন ভ্রমণের কথা বলেছিলেন। আপনার বর্ণনাতেই আমি তখন তার সৌন্দর্য টের পাচ্ছিলাম। অথবা পশ্চিম লাফিয়েতের সেই বিষন্ন হ্রদটার কথা বলুন। কী যেন নাম? সেইন্ট ক্লেয়ার কী? জ্বর হবার দরকার নেই, লিখে ফেলুন না সেইসব গল্পগুলো।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রথম মাল্যবান এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডব ভাই, "যদি কখনো অনেক টাকা হয় তাহলে..." না ভেবে শুরু করুন না। কিছু তো হবেই, অনেক কিছুও হতে পারে।
আর, আমিও তো তল্লাবাগেই থাকতাম!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চেষ্টা করছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ফুল/গাছ সংক্রান্ত ই-বুকের খুঁটিনাটি দিয়ে একটা বিস্তারিত পোস্ট দেবার। তাহলে অনেক কিছুই আমাদের সবার মধ্যে আলোচনায় স্পষ্ট হতে থাকবে।

আমি তল্লাবাগে থাকতাম না। জুট রিসার্চে থাকতেন তৃতীয় পাণ্ডব আর অভিমন্যু। আরো কিছু বন্ধু-বান্ধব সেখানে আর আশ-পাশে থাকতেন। তাই জুট রিসার্চ একটা পছন্দের ঠেক ছিল।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

" বাংলাদেশের গার্ডেন সিটি বগুড়া "
পাণ্ডব ভাই আপনার এই কথা পড়ে আমার হাসি পাচ্ছে, কারণ ভাই "বাংলাদেশের গার্ডেন সিটি বগুড়া " এই কথা কখনও শুনিনি, পুরা বগুড়া খুজে কোন বাগান কখনও দেখিনি কখনও ছিলও না, আমার বাড়ী বগুড়ায়, আপিন কোখায় এতো বাগান দেখলেন আমাকে একটু দখাবেন কি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১৯৯১ সালেও আমি বগুড়া শহরে কমপক্ষে চারটি বড় বড় বাগান দেখেছি। উডবার্ন (নামটি কি ঠিক হল?), শহীদ মিনার, বগুড়া মোহাম্মদ আলীর বাড়ী এবং পলিটেকনিকে। বাগানগুলো যদি আজ টিকে না থাকে তাহলে তা কি আমার দোষ?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

বাগানের নাম wood burn হইলে ক্যামনে কী! চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ক্যামনে কী তা আমি কী করে বলব? আপনিতো বগুড়ার মানুষ, তথ্যে ভুল থাকলে তা সংশোধন করে দিন না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আপনার উল্লেখিত বাগানটি, যদ্দূর মনে পড়ছে, এডওয়ার্ড পার্ক নামে পরিচিত। আর পার্কের ভেতরে যে লাইব্রেরিটি আছে, সেটির নাম উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।