শাহ্‌বাগের টুকরো গল্প

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০২/২০১৩ - ৩:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

ফেব্রুয়ারী মাসে আমার প্রতিদিনের রুটিন বছরের বাকি মাসগুলোর চেয়ে আলাদা। যেদিন সন্ধ্যায় জরুরী কোন কাজ থাকে না, সেদিন অফিস থেকে ফেরার পথে দোয়েল চত্ত্বরে গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। ধীরেসুস্থে বইমেলার দক্ষিণ গেট দিয়ে ঢুকে শিববাড়ির মোড়ে উঁকি দেই। বেশিরভাগ দিন সেখানে সচলদের কারো না কারো দেখা মেলেই। তাদের কারো দেখা পেলে তেলেভাজা-চা খেয়ে মূল প্রবেশপথ দিয়ে মেলায় ঢুকে পড়ি। শিববাড়ির মোড়ে কেউ না থাকলেও অসুবিধা নেই। লিটিলম্যাগ চত্ত্বর, বর্ধমান হাউসের সিঁড়ি, পুকুরের পশ্চিমপাড় অথবা শুদ্ধস্বরের স্টলের সামনে কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবেই। আস্তে আস্তে একজন-দু’জন করে আড্ডা জমে যায়। অসচল বন্ধুরাও সাথে জুটে যান। আড্ডা ভাঙতে ভাঙতেও আর ভাঙে না। একসময় মেলার সময় ফুরোয়। তখন দলবেঁধে সবাই শাহ্‌বাগের দিকে হাঁটতে থাকি। টিএসসির মোড়ে আবারো চা খাওয়া হয়। শাহ্‌বাগে চলে আসলে কে কার সাথে যাবে এটা নিয়ে কথা হয়। যে যার যার গন্তব্যে রওয়ানা হয়ে যাই। ঘড়ির কাঁটা তখন দশটা ছুঁই ছুঁই করে। ফেব্রুয়ারীর আটাশ (ঊনত্রিশ) দিনের মধ্যে কম করে হলেও পনের দিনের রুটিন এই থাকে। ছুটির দিন হলে দুপুর তিনটায় বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে সেই যে মেলায় ঢুকি ফিরতে ফিরতে আবার রাত দশটা।

এবারের ফেব্রুয়ারীতে অমনটা হতে পারেনি এখনও। মাসের শুরু থেকে হরতালের ঠেলায় জমে যাওয়া কাজের চাপে ফুরসত মেলে না। মেলার পথ অধরা থেকে যায়। শুক্রবারেও অবসর পাই না। হরতালের কারণে আজকাল শুক্রবারগুলোতেও স্কুল খোলা থাকে। তাই আমি তো দূরে থাক্‌ বাবানও ছুটি পায় না। মেলা থেকে প্রিয়জনদের ফোন আসে, “দাদা আসবেন না”? নিরূপায় আমি অপারগতা জানাই। ভাবি এই সপ্তাহটা শেষ হোক, আমিও আমার স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে যাবো। কিন্তু তার আগেই চলে আসে ৫ই ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার। সেদিন থেকে কী যে হলো সেটা সারা দুনিয়া জানে। আর সেজন্য অফিসফেরত আমার পথ দোয়েল চত্ত্বরের দিকে না গিয়ে শাহ্‌বাগের দিকে বেঁকে গেলো।

এখন অফিস থেকে ফেরার সময় কখনো হেঁটে, কখনো রিক্‌শায়, কখনো বাসে করে মৎস্য ভবন বা রূপসী বাংলার মোড় পর্যন্ত যেতে পারলেই হলো; বাকি পথটুকু হেঁটে সোজা অগ্নিগর্ভে প্রবেশ।

উপরের গল্পটা কেবল আমার একার নয়। আমার মতো শত-সহস্র সাধারণ মানুষ, যারা জীবিকার প্রয়োজনে দশটা-ছয়টা অফিসে-কারখানায়-দোকানে-ফুটপাথে প্রাণপাত করেন, তারা যখনই সময়-সুযোগ পাচ্ছেন তখনই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এই অগ্নিগর্ভে প্রবেশ করেন। এই অগ্নি শুধু শাহ্‌বাগে নয়, সারা দেশেই জ্বলছে। দেশের বাইরে পৃথিবীর নানা প্রান্তে যেখানেই বাংলাদেশের মানুষ আছে সেখানেই আগুন জ্বলে উঠছে।

২.

লোকটার বয়স কতো হবে? পঞ্চাশ তো নিশ্চিতভাবেই পেরিয়েছে তবে ষাট হয়নি বোধহয়। তার মুখভর্তি দাঁড়ির বেশিরভাগ সাদা। মাথার চুলের অবস্থাও অমনই হবার কথা, সেটা দেখা যাচ্ছে না টুপির কারণে। পরণের পাজামা-পাঞ্জাবীর রঙ সন্ধ্যার আধো আলোয় ভালো করে বোঝা যায় না, তবে রোদে জ্বলে কোথাও কোথাও যে তা ফ্যাকাশে হয়ে এসেছে সেটা বোঝা যায়। কিছুক্ষণ ধরে এই গ্রুপ ওই গ্রুপের কাছে ঘুরে শেষে একটা গ্রুপকে তার মনে ধরলো। এই গ্রুপটা ক্রুশের মতো একটা লম্বা লাঠিতে একটা কুশপুত্তলিকাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নিয়ে এসেছে। একটু দ্বিধা নিয়ে প্রৌঢ় গ্রুপটাতে ঢুকে পড়েন। তাকে দেখেই গ্রুপের এক তরুণ চেঁচিয়ে বলে, “আঙ্কেল, আপনার জুতাটা খুলে এইটাকে দুইটা মারেন”। মুহূর্তের মধ্যে প্রৌঢ়ের খোলস থেকে এক তরুণ বের হয়ে আসে। পা থেকে জুতা খুলে তিনি প্রবল আক্রোশে কুশপুত্তলিকাটিকে পেটাতে থাকেন। গ্রুপের তরুণরা গগণবিদারী শ্লোগান দিয়ে ওঠে,

“ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই!
কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই!!”

একাত্তরে এই লোকটার বয়স হয়তো বারো-তেরো বছর ছিল। বেয়াল্লিশ বছর পর আবার তিনি অমন বয়সে ফিরে যান। এক পায়ের জুতা হাতে উঁচু করে ধরে নাচতে নাচতে সবার সাথে তিনিও চেঁচিয়ে ওঠেন,

“ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই!
কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই!!”

৩.

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূবালী ব্যাংকের সামনে এক তরুণী মোবাইল কানে কার সঙ্গে যেন কথা বলছে। ওপাশের কথা শুনতে না পেলেও বুঝতে অসুবিধা হয় না।

- তুমি কোথায়?
- ...................
- বারডেম কোনটা? আমি এই জায়গার কোন কিছুর নাম জানি না।
- ...................
- আমি ওদিকে যাবো কী করে, এদিকে যা ভীড় আর অন্ধকারও হয়ে এসেছে। তুমি আসো।
- ...................
- আমি কোথায় কী করে বলবো? আমি কি এই জায়গার নাম জানি?
- ...................
- পেছনের বিল্ডিং-এ লেখা পূবালী ব্যাংক।
- ...................
- তুমি তাড়াতাড়ি আসো। আমার ভয় করছে।

ফোনের উলটো দিক থেকে হয়তো নিশ্চিত করা হয় — সে আসছে। ভয়ার্ত মুখ নিয়ে তরুণী দাঁড়িয়ে তার অপেক্ষা করে। পাশ থেকে এক ভদ্রমহিলা বলেন,

- এখানে সারা রাতই মানুষ থাকে। এখানে কোন ভয় নাই। দেখছেন না রাস্তায় কতো মেয়ে! বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ফ্যামেলিগুলোও এসেছে!

সবার দিকে তাকিয়ে তরুণী অভয় পাবার চেষ্টা করে। আমরা জানি, কিছুক্ষণের মধ্যেই এই তরুণীর সব ভয় কেটে যাবে। সেও জনস্রোতে মিশে গিয়ে দৃপ্তকণ্ঠে শ্লোগান দেবে। আমাদের এই জানাটা কাল্পনিক নয়। শাহ্‌বাগে চোখের সামনে প্রতি মুহূর্তে এমন শত শত গল্প ঘটতে দেখছি।

৪.

ঢাকার দক্ষিণ বা পূর্ব দিক থেকে আগত উত্তর বা পশ্চিম দিকগামী বাসগুলো আজকাল কোন পথ ধরে গন্তব্যে যাবে সেটা কেউ জানে না। পুরানো পল্টনে সিগন্যালে বাস থামতে সহযাত্রী নারীর জিজ্ঞাসা,

- বাস কোনদিক দিয়ে যাবে?
- প্রেসক্লাবের দিকে ফাঁকা পেলে মৎস্য ভবন হয়ে যাবে, নয়তো বিজয়নগর-কাকরাইল হয়ে রূপসী বাংলার দিকে যাবে।
- তাহলে শাহ্‌বাগ যেতে কোথায় নামবো?
- মৎস্য ভবন দিয়ে গেলে ওখানে নেমে হেঁটে বা রিক্‌শায় যাবেন। আর কাকরাইল হয়ে গেলে রূপসী বাংলায় নামবেন।

বাস বিজয়নগরের দিকে ঘুরে যায় — মৎস্য ভবনে নামার উপায় থাকে না। সেন্ট মেরী’স ক্যাথেড্রালের সামনে এসে বাস রূপসী বাংলার দিকে না গিয়ে মগবাজারের দিকে ছুটতে থাকে। সহযাত্রী বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন।

- এখন তাহলে কোথায় নামবো?
- মিন্টো রোডের মাথায় বা অফিসার্স ক্লাবের সামনে নেমে যেতে পারেন। সেখান থেকে হেঁটে বা রিক্‌শায় শাহ্‌বাগ।

সাথে দুই বাচ্চা নিয়ে আসা আরেক নারী বলেন,

- না, না! ওখানে নামবেন না। ওদিকের রাস্তা অন্ধকার আর নির্জন। আপনি বসে থাকুন। বাস বাংলা মোটর আসলে সেখানে নেমে হেঁটে যাবেন।
- শাহ্‌বাগে যাবো বলে আজ অফিস থেকে দেরি করে বের হয়েছি। অফিসের বাসে না উঠে এই বাসে উঠেছি। এখন এই বাস কোন দিকে চল্‌লো! বন্ধুরা সব রূপসী বাংলার সামনে থাকবে বলেছিলো।
- বাংলা মোটর থেকে সহজে রূপসী বাংলায় পৌঁছে যেতে পারবেন। বন্ধুদের বলে দিন বাস ঘুরে যাচ্ছে, আপনার পৌঁছুতে একটু দেরি হবে।

অফিসার্স ক্লাবের সামনে বাস আসলে আমি নেমে শাহ্‌বাগের দিকে পা চালাই। শাহ্‌বাগ যেতে প্রত্যাশী নারী বাংলা মোটরের জন্য বসে থাকেন। আমি জানি, রুট ভিন্ন হলেও আমাদের গন্তব্য এক। অচিরেই আমরা একই জনস্রোতে মিশে যাবো - যে জনস্রোত সারা বাংলার মানুষের আকাঙ্খাকে ধারণ করে প্রতি মুহূর্তে গর্জে উঠছে। আমরা নিশ্চিতভাবে শাহ্‌বাগে পৌঁছে যাবো। কেবল, একটু আগে আর পরে।

৫.

মহল্লার সব্‌জীর দোকানের পাশে রাস্তার ওপর মাংস বিক্রির অস্থায়ী ব্যবস্থা। সবজী বাছতে বাছতে এই দুই দোকানের বিক্রেতাদের কথোপকথন শুনি।

- শাহ্‌বাগ গেসিলি?
- হ। কাইল দুইটা বাজে গেসিলাম, ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা সাতটা।
- দোকান ফালায়া গেসিলি?
- ছোট বাইরে বহায়া গেসিলাম। ঠ্যাকা দিয়া রাখসে।
- দোফরে গেসিলি ক্যা?
- হুনছিলাম দোফরের দিগে শাহ্‌বাগে মানুষ কইম্যা যায়। হের লেইগা দোফরে খাইয়্যাঐ গেসিলাম গা।
- আইজ যাবি না?
- হ, যামু। দোকান বদ্দ কইরা রাইতে যামু। তুই যাবি না?
- হ, আর এক পিস্‌ গোস্‌ আছে। এইটা ব্যাচা অইলেই যামু গা।

এই মানুষগুলোর পরিচয় কতোজনে জানে? অথচ কতো সহজে জ্ঞানপাপীরা এদের গায়ে ড্রাগঅ্যাডিক্ট, গাঁজাখোর, নাস্তিক, আওয়ামী লীগের ভাড়াটে এমনসব ট্যাগ লাগিয়ে দেয়! শাহ্‌বাগে যাবার ভাড়াটা কেউ এদের দেয় না। সেখানে শ্লোগান দেবার জন্য কোন টাকাও এরা পায় না। দিনের কাজে এক ঘন্টা কামাই দিলে তাদের এক ঘন্টার আয়ই মাটি। অথচ নিজের কাজ ফেলে, নিজের রোজগার মাটি করে এরা শাহ্‌বাগের আন্দোলনে অংশ নিতে যায়। কীসের টানে তারা সেখানে যায় জ্ঞানপাপীরা কি তা উপলব্ধি করতে পারে?

৬.

দৈনিক বাংলার মোড়ে বাস একটু স্লো হতে একদল তরুণ জোর করে বাসে উঠে পড়ে। বাসে সীট নেই বা এই বাসে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাবে না - এমনসব কথা তারা পাত্তা দেয় না। কন্ডাকটর ভাড়া চাইতে তারা মাথাপিছু দুই টাকা করে ভাড়া সাধে। কন্ডাকটর হা হা করে ওঠে,

- এইটা কী দিলেন? যাইবেন কই?
- শাহ্‌বাগ যামু।
- এই গাড়িত দশ ট্যাকার কমে ভাড়া নাই।
- আমরা ইস্টাপ। দুই ট্যাকা কইরা যে দিসি হেঐ বেশি।
- সবতে ইস্টাপ? কোন গাড়ির?
- আট নম্বরের।
- কী কর? কন্টেকটরি? (সম্বোধন আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছে)
- না, আমরা সবতে হেলপার।
- শাহ্‌বাগ যাও কী করতে?
- আরে কয় কী! শাহ্‌বাগ আবার যায় কী করতে! সোলোগান দিমু, গান গামু, নাচ্‌মু, রাজাকারগো ফাঁসি চাইমু।

এই পর্যায়ে আলোচনায় আমি ঢুকে পড়ি। জিজ্ঞেস করি,

- সারা রাত থাকবেন?
- আরে নাহ্‌! কাম আছে না! এই দেড়-দুই গন্টা থাকমু। হের পর আবার কামে যামু।
- কাজের সময়ে শাহ্‌বাগ যাচ্ছেন, ছুটি পেলেন?
- ছুট্টি কি আর এমতে দ্যায়? কম ডিউটি করনের লেইগা নাস্তার ট্যাকাটা কাইট্টা রাখবো।

ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) হান্নান শাহ্‌দের মতো লোকেরা এই মানুষগুলোর কাছে কোনদিন পৌঁছাতে পারেনি, তাই তাদের কাছে শাহ্‌বাগকে সাজানো নাটক বলে মনে হয়।


মন্তব্য

সাজ্জাদ সাজিদ এর ছবি

অসাধারণ, চলুক আরো টুকরো গল্প।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যারা শাহ্‌বাগে বা দেশের অন্যত্র অনুরূপ সমাবেশে যাচ্ছেন তাদের প্রত্যেকেই এমন গল্প লিখতে পারেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পাণ্ডব'দা,
ঢাকার বাইরে চাকুরির সুবাদে শাহবাগ কে মিস করেছি প্রচন্ডভাবে। গত শুক্রবারে ছিলাম, তখনকার একটা ঘটনা শেয়ার করিঃ আমাদের বন্ধুদের বড় একটা চক্র থাকায় অনেকেই যাবার পথে আমাদের সাথে দু-চারটা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন, এরমাঝে এক লুঙি পড়া চাচা ছিলেন প্রায় ৩ ঘন্টা। বয়স্ক মানুষ। চলে যাবার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বৃত্তান্ত, বললেন মিরপুরের এক কোম্পানির পিওন। সারা সপ্তাহ ছুটি নাই দেখে শুক্রবারে এসেছেন। যাবার আগে খুব মুখ কাচুমাচু করে লুঙ্গির কোঁচা থেকে একমুঠো আমলকী আর কয়েকটা নাবিস্কো টফি হাতে ধরায় দিয়ে বললেন- "বাবারা, আমার তো এর থেকে বেশি সামর্থ্য নাই, তোমরা একটু ভাগ করে নিও"। চশমা খুলে চোখটা মুছতে না মুছতেই চাচা ভিড়ের মঝে মিশে গেলেন। মৌখিক না হোক, অন্তত চৌখিক ধন্যবাদ টুকু দেবারও সুযোগ পেলাম না... ... ...

... ... হান্নান-মামুদের জন্য করুণা। এমন স্বাদের আমলকী তারা জীবনেও খেতে পাবেন না।

অচল এর ছবি

গুরু গুরু

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার বলা ঘটনাটির মতো আরো অনেক এমন ঘটনার কথা এ'কয়দিনে শুনেছি। আমি এতে অবাক হইনি। ১৯৭১ সালে এভাবেই কি বাংলাদেশের মানুষ নিজের সর্বস্ব দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল না!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পান্ডব'দা,
আগে তো শুধু বাবা-চাচাদের কাছে শুনতাম... কিংবা বইতে পড়তাম...... কিন্তু নিজের চোখে দেখে (খালি এই একটা না, আরো অনেক গুলো দেঁতো হাসি ) সত্যিই অন্যরকম লাগে...

সবারই নিশ্চয় এমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে... সবাইকেই অনুরোধ... লিখে রাখুন... এগুলোই ইতিহাস...

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

অসাধারণ বর্ণনা - চলুক পান্ডব'দা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চোখ-কান খোলা রাখছি। জানানোর মতো কিছু পেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্যাম এর ছবি

এ এক অন্য বাংলাদেশ - বুকের ভেতরে থাকা আসল বাংলাদেশটা আজ দৃশ্যমান।
সুলিখিত টুকরো গল্পগুলো এ সময়ের চিত্র অসাধারণ ভাবে তুলে ধরেছে - আর শেষ টা? হান্নান শাহ্‌রা এ লেখার কাছেও কোনদিন পৌছাবেনা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হান্নান শাহ্‌দের কাছে কেউ পৌঁছাতে পারে না। হান্নান শাহ্‌রাও কারো কাছে পৌঁছাতে পারে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই আন্দোলনটার বা জাগরণটার দরকার ছিল। বাংলার প্রত্যেকটা মানুষই যে বুখের ভেতর এক টুকরো বাংলাদেশ সযত্নে লালন করে রাখে সেটা দেখে নিজের ভেতরে লালন করে রাখা বাংলাদেশটা আরও সবুজ হয়ে উঠছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যখনই দরকার হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ জান লড়িয়ে আন্দোলন করে গেছে। সুযোগসন্ধানীরা হয়তো সুযোগ নিয়েছে, কিন্তু জনগণ কারো সাথে বেঈমানী করেনি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

সমাবেশের আকার, আবেগের উচ্চতা ও গণসংহতির দিক এই আন্দোলনের সাথে ৫২-৯০ এর স্বৈরাচারি খেদানোর আন্দোলন ও বিজয়োল্লাসের মিলগুলো সহজবোধ্য়। তবে যেটা আলাদা করে আমাদের মনে রাখতে হবে যে বাংলাদেশে এটাই সরাসরি জনমত প্রকাশের মাধ্য়মে সরকারের জবাবদিহীতা আদায়ের একেবারে প্রথম অথবা অনেক বড় ঘটনাগুলোর একটা। বাংলাদেশের সরকার জনগণের অধিনস্ত, এর নজির স্থাপন করতে পারা জাতি হিসাবে আমাদের একটি নতুন দক্ষতা।

রায় প্রকাশের পরপর যারা অবস্থান কর্মসূচী দিয়েছিল, শাহবাগে মোমবাতি জালিয়েছিল, এমনিতেই মানবসম্পদরুগ্ন ট্রাইবুনালের ওপরে ওদের এই সরব অনাস্থা প্রকারান্তরে জামায়াতের কাজ সহজ করছিল, এটা ওরা বুঝতে পারছেনা কেন - এই যুক্তিতে আমি ওদের বেকুব ও বলদ বলে তিরস্কার করেছিলাম। এর মাত্র কয়েকদিনের মাথায় হেগ এ আন্তরজাতিক আদালতে সামনে পরিবারবন্ধুসজন নিয়ে যখন লাকি'র কাছে শেখা 'ক-তে কাদার মোল্লা, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার' বলে গলা ফাটাতে ফাটাতে দেখলাম আমি নিজেও কত বড় "বেকুব ও বলদ" !!

উচ্ছলা এর ছবি
ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রথম অনুচ্ছেদের সাথে সহমত। দেশে গণতন্ত্রের চর্চ্চা যথাযথভাবে হয় না বলে শেষপর্যন্ত মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের যাবতীয় মনযোগ মসনদের দিকে নিবদ্ধ না করে জনগণের দিকে নিবদ্ধ করলে তাদের কথা শুনতে পেতো, তাদের অবস্থা বুঝতে পারতো। সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার চর্চ্চা গড়ে উঠুক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ টির সাথে আমার অবস্থা মিলে গেছে হাসি

দীপ্ত এর ছবি

আপনার লেখার এই মানুষগুলোই এখনও দেশ নিয়ে আমাকে আশাবাদি রাখে। নিজেকে ভাগ্যবান ভাবছি যে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলন দেখার সৌভাগ্য হল। আর কষ্ট পাচ্ছি বাইরে থেকে সরাসরি আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে না পেরে।
একটা অনুরোধ, ছোট ছোট এই অভিজ্ঞতাগুলো কি এখানে আপডেট করবেন? যারা যাচ্ছেন, সবাই মিলেই। গণমানুষের অকৃত্রিম আবেগের একটা লিখিত সংকলন থাকা দরকার।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমিও অনুরোধ করছি, যার যা অভিজ্ঞতা আছে তা লিখে ফেলুন - অন্যদের জানান। তাহলে পরে কোন সুযোগসন্ধানী জনগণের অর্জন ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে পার পাবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Ehsan  এর ছবি

চেতনা জেগে থাকুক পাহারায় থাকুক সব সময়
সব অপ্ রাধের বিরুধে
আমার নিজের মত সরকারি প্রভাব মুক্ত বিচার বিভাগ দাবি করা উচিত
জাতে রাজনিতি প্রভাব না করতে পারে কন সরকারের আমলে
তা সরকার চাইলে এখনি করতে পারে।।।।
রাজাকার সরকারি দলের আশ্রয়ে জাতে বাচতে না পারে।।।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিচার বিভাগ তো সরকারের অংশ। একে সরকারের প্রভাবমুক্ত করবেন কীভাবে?

হ্যাঁ, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বত্র অন্যায়-অবৈধ হস্তক্ষেপ বা প্রভাব খাটানো বন্ধ করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

উচ্ছলা এর ছবি

চলুক
মন-প্রাণ ভয়ঙ্কর বূভুক্ষ হয়ে আছে বাংলার মাটিতে গিয়ে একটু খানি দাঁড়াবার জন্য। আরও টুকরো গল্প বলুন। আরও বেশি বেশি মাটির মানুষগুলোর খোঁজ-খবর জানান।

দুর্দান্ত এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

টেক্সাসে আপনারা কী করলেন সেই গল্পটা আমাদের জানান। দেশের বাইরের আন্দোলনও তো এই আন্দোলনের অংশ। আমরা যে যেখানেই থাকিনা কেন আমাদের বুকজুড়ে তো শুধু বাংলাদেশ। সব কোন থেকে আমরা জানিয়ে দেবো - এই দেশ তোমার আমার, ঘাতক রাজাকারের না!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Sulman এর ছবি

আপনার লেখা োনেক ভালো লাগলো। াজ মোনে হোয় বিঢেসে াসা বিশাল ভুল হোয়ে গেসে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিদেশ যাওয়া ভুল হবে কেন? আপনার মন-মাথায় বাংলাদেশ বিরাজ করলে প্রবাসে থেকেই দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

একটা কেমন অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছে, মানুষের জেগে ওঠা দেখলে মনে হয় এমনই হয়। এতদূর থেকে শুনেই এমন হচ্ছে, কাছে থাকলে, উপস্থিত থাকলে না জানি কী হতো। ঐ যেখানে "ভদ্রমহিলা বলেন, " এখানে সারা রাতই মানুষ থাকে। এখানে কোন ভয় নাই। দেখছেন না রাস্তায় কতো মেয়ে! বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ফ্যামেলিগুলোও এসেছে!" কী একটা পবিত্র আগুনের ছোঁয়া পাই, মানুষের ভিতরের আগুন যা সব অন্ধকার দূর করে।
জয় হোক, জয় হোক মানুষের।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সত্যি, শাহ্‌বাগে এক পা এক পা করে ঢুকি আর নিজের সারা শরীরে রক্তের নাচন অনুভব করি। আমাদের তখন বয়স-শারিরীক সীমাবদ্ধতা-সামাজিক অবস্থান কিছুই আর মনে থাকে না। শাহ্‌বাগে নিজের চারপাশে আমরা অসংখ্য খাঁটি মানুষ দেখতে পাই। আমাদের সব ভয় দূর হয়ে যায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাংলার সব পথ এসে মিশেছে শাহবাগে এসে...
গোটা পৃথিবীটাই এখন শাহবাগ হয়ে গেছে..

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গোটা পৃথিবীর যেখানেই আমরা আছি সেখানেই এক একটা শাহ্‌বাগ তৈরি হয়ে গেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

অথচ এটাকে কেউ কেউ সাজানো নাটক বলে। তাদের জন্য তীব্র ধিক্কার

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঘরে বসে নাটক, নাটক বলে না চেঁচিয়ে তারা একবার শাহ্‌বাগে এসে সত্যটা দেখে যাক।

জানি, এর পরেও তারা মিথ্যাচার করেই যাবে। তবু নিজের মনে তারা জানতে পারবে তারা কতো বড় মিথ্যুক, কতো বড় বেঈমান।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তাহমিনা এর ছবি

অসাধারণ বর্ণনা, টুকরো গল্প চলুক দাদা। এই বাংলাদেশটা আজ দৃশ্যমান। শুধু আফসোস হয় এই আন্দোলোন কেন ডিসেম্বর/জানুয়ারী মাসে হয়নি তখন দেশে ছিলাম আমিও যোগ দিতে পারতাম। টরেন্টো থেকে আমরা আছি শাহাবাগের সাথে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শুনলাম টরেন্টোতেও নাকি আন্দোলন হয়েছে। সেই গল্প আমাদের জানান। ছবি পোস্টান। আফসোস্‌ করবেন না। আপনি যেখানে আছেন, সেখান থেকেই এই আন্দোলনে অংশ নিতে পারবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চেষ্টা করে যাবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

onogh এর ছবি

যুগে যুগে দেশের ক্রান্তি কালে কখনো তাকে আমরা দেখি নাই| তাকে দেখা গেছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ধান্দায়| কোথায় আপনি আমাদের মসিহ ড: ইউনুস?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অনঘ, শাহ্‌বাগে কি মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার (ঋণ পাবার অধিকার) ক্ষুণ্ন হবার বিষয়ে আন্দোলন করছে? যদি সেটা না হয় তাহলে তিনি কেন সময় নষ্ট করতে শাহ্‌বাগে আসবেন? তিনি কি আপনার মতো ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো মানুষ?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

এখানে সারা রাতই মানুষ থাকে।

হ্যাঁ, অমানুষগুলোর জায়গা এখানে নেই। চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জানোয়ারগুলোর জন্য জায়গা নির্ধারিত হয়ে গেছে বস্‌! তাদেরকে অবিলম্বে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পুতুল এর ছবি

আপনি শাহবাগের ব্যাপ্তিটি সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরলেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পথেই ছিলাম। আফসোস এবার শাহবাগে থাকতে পারলাম না! কাদের মোল্লার রায়টার ভাল দিক হল; এই রকম রায় না হলে বাংলার মানুষ বুঝতেই পারতো না যে, রাজাকারদের দিন শেষ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি শাহ্‌বাগে নেই কে বললো! মিউনিখে কি আরেকটা শাহ্‌বাগ গড়ে তোলা যাবে না?

এটা ঠিক যে, কাদের মোল্লার এমন রায় না হলে এমন আন্দোলন হতো না। তবে সেটাকে আমি ভালো বলে মানতে পারি না। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করার আগেই সরকারের উচিত ছিল এর স্বপক্ষে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা। এই আন্দোলনে জনমতটা এখন শুধু তৈরিই হয়নি, সাথে নিজেদের দাবিটাও সরকারকে বুঝিয়ে দিতে পারছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ক্লোন৯৯ এর ছবি

চলুক গুরু গুরু

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনিও আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের জানান।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ক্লোন৯৯ এর ছবি

অবশ্যই জানাবো

নীড় সন্ধানী এর ছবি

নব্বইয়ের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের বুকের মধ্যে যে দ্রিম দ্রিম শব্দটা শুনতে পেতাম অনেক বছর পর সেই শব্দটা আবারো শুনতে পাচ্ছি।

শাহবাগ জাগরণ বাংলাদেশে দীর্ঘকাল একটা বিস্ময় হয়ে থাকবে। ত্রিশের তরুণ এরকম আরেকটি গনজাগরণের স্বাক্ষী হবে কিনা সন্দেহ। যারা একাত্তরে ছিলাম না, কিংবা একেবারে শিশু ছিলাম, তারা এই জাগরণে অংশ নিয়ে ভাগ্যবান বলে ভাবছি। এবার আমরা নিশ্চয়ই দেশকে রাজাকারমুক্ত করতে পারবো।

জামাত শিবিরের এখন কোন উপায় নাই। হয় রাজনীতি গুটিয়ে বাড়ি গিয়ে বসে থাকতে হবে, নইলে বিএনপির সাথে মিশে যেতে হবে। তবে তার বাইরে যদি নাশকতার পথে এগিয়ে যায়, তাহলে তাদের মরণ নিশ্চিত। বাংলাদেশের মানুষ সবগুলো জামাতী প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে। লুকানোর জন্য একটা গর্তও নিরাপদ থাকবে না তাদের জন্য এই ঘনবসতির দেশে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

জামায়াত-শিবির বিএনপিতে মিশে যাবে কি বস্‌, বিএনপিই এখন বৃহত্তর জামায়াতে ইসলামীর জাতীয়তাবাদী শাখা হয়ে গেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

হো হো হো চলুক

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

কী বলছেন??

আজ রুহুল কবীর রিজভি বি,এন,পির পক্ষে বলেছেন -"ক্ষমতায় এলে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করবেন।" - এটা পড়ে দুটো কথা মনে হয়

১। এ কাজ করলে তো জিয়াউর রহমানের পূণ্য স্মৃতির উদ্দেশ্যে বেইমানি করা হবে। কারণ গো,আজমের নাগরিকত্ব, নিজামীকে ফিরিয়ে আনা, শাহ আজিজ, আব্দুল আলীম, জাদু মিয়াকে মন্ত্রী করা এসব নস্ট্যালজিয়ার তবে কী হবে?

২। সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই পৃথিবী!!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কাঠমান্ডুতে একটা টেন্ডার ইভাল্যুয়েশন মিটিং হচ্ছিলো কাল। আমি কিন্তু যথাসময়েই কর্মবিরতি দিলাম।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চমৎকার! আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন শাহ্‌বাগ আমাদের মননে, প্রতিবাদ আমাদের আচরণে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নিলয় নন্দী এর ছবি

শাহবাগ নিয়ে অনেক গল্প জমা আছে।
কিছু লিখতে ইচ্ছে করে না।
মনে হয় যা-ই লিখি না কেন, এই আগুনের কাছে সব ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার ভাবনায় একটু ভুল আছে। এখন অনুভূতি টাটকা থাকতে লিখে ফেলুন। এগুলো ইতিহাসের অংশ। আমরা সবাই লিখলে একটা ঘটনার সত্য বয়ানটা জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে। তখন কোন হারামজাদা এসে নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস রচনা করতে পারবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুন্তাসীর মুহাম্মাদ আসীফ এর ছবি

একজন ভিক্ষুক যে সারাদিন ভিক্ষা করে তার সৈই টাকা বা একজন রিক্শাওয়ালা তার সারাদিনের কামাই যখন শাহবাগের তরুনদের জন্য বিলিয়ে দেয় তা বোঝা বা বিস্শাস করার ক্ষমতা আমদের বিরুধি দলের নেতাদের নেই, কারন যারা সারাজিবন VGF Card এর গম চুরি করে বা ত্রানের টাকা লুট করে প্রাসাদ গড়েছেন। তাদের সেই উপল্বধি হবার নয়, কারন তাদের সেই বোধশক্তি অনেক আগেই মরে গেছে। হান্নান শাহ এর বাইরের কৈউ নয় তাইতো তিনি এ গনজোয়ারের মধ্যে বিভিন্ন ষরযন্ত্রের গন্ধ খুজেন। যারা কোনোদিন জনগনের কাছেই ছিলেননা তারা কিভাবে বুঝবে?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটা মৌলিক প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের রাজনীতিবিদদের আয়ের উৎস কী? তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ আছে যারা কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নন্‌। খুব কম পার্টি আছে যারা তাদের সার্বক্ষণিক নেতা-কর্মীদের ভাতা দেয়। তাহলে বাকিরা কীভাবে চলেন? এর উত্তরের মধ্যেই তাদের আচরণের প্রকৃতি নির্ভর করে। তাদের আরেকটা সীমাবদ্ধতা হচ্ছে গণবিচ্ছিন্নতা। সব সময় চাটুকার পরিবেষ্টিত হয়ে থাকলে জনগণের কণ্ঠ আর শুনতে পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের কাতারে এসে না দাঁড়ালে কি আর জনগণের ভাষা বোঝা যায়?

সংসদ নির্বাচনের সময় তাদের দেয়া হলফনামাগুলোতে সম্পদ আর আয়ের কলামগুলো খেয়াল করলে শুভঙ্করের ফাঁকিগুলো আরো স্পষ্ট হয়। এনবিআর তাদের ট্যাক্স ফাইলের সাথে জীবনযাত্রার মান মিলালে অনেক সত্য বের হয়ে আসবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

যেসব রাজনীতিবিদ বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালক হয়েছে তাদের হলফনামাগুলো শুধু চেক করে দেখো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চেক করলে কী পাওয়া যাবে সেটা আমরা জানি। হলফনামার সাথে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের মিল থাকলেও বাস্তবের সম্পদের সাথে তার মিল কখনোই পাওয়া যাবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

এই টুকরো কথনগুলোই আগামী দিনে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বেঁচে থাকবে। ধন্যবাদ পাণ্ডবদা আপনার অতুলনীয় প্রয়াসটির জন্য।

আরও লেখা আসুক। প্রত্যক্ষদর্শী সবার অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ হয়ে থাকুক সচলের পাতায় পাতায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনাদের ওখানে কোন সমাবেশ হয়নি? হয়ে থাকলে সেটার কথা আমাদের জানান।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

পাণ্ডবদা,

জনসমুদ্রের অসামান্য খণ্ডচিত্র। আমি গতকাল দেখলাম এক অভাবনীয় দৃশ্য। দুই তরুণী চারুকলা ইন্সটিটিউটের ফুটপাথ ধরে এগিয়ে আসছে টি,এস,সির দিকে। একজনের কণ্ঠে স্লোগান- আরেকজনের কণ্ঠে ধুয়ো-

"জয় বাংলা--
জয় বাংলা।
তোমার আমার ঠিকানা-
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-
রাজাকারের ঠাঁই নাই-
আমার সোনার বাংলায়।"

বাংলার প্রতিটি মুক্তিকামী মানুষ আজ বিদ্রোহের মূর্ত প্রতীক। আ,স,ম হান্নান, গবা ফখরুল যতই গলাবাজি করুক এই জনস্রোতকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

সংগ্রাম চিরজীবি হোক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পাবলিককে হয়তো সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত করা যাবে, তবে দীর্ঘমেয়াদে বোকা বানানো যাবে না। যাদের দাঁড়াবার আর জায়গা নেই তারা প্রলাপ বকবেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শমীক এর ছবি

ভালো লাগল লেখাটা। খালি একটা জায়গায় চোখ আটকে গেল। ড্রাগঅ্যাডিক্ট গাঁজাখোর ইত্যাদির সঙ্গে নাস্তিকদের এক লাইনে বসানো কেন? নাস্তিকরা কি ড্রাগঅ্যাডিক্টদের সঙ্গে এক ক্যাটেগরিতে পড়ে?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ড্রাগঅ্যাডিক্ট গাঁজাখোর ইত্যাদির সঙ্গে নাস্তিকদের এক লাইনে বসানো কেন?

- এক লাইনে আমি বসাইনি, যারা বসিয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। বলাই বাহুল্য তারা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুন্তাসীর মুহাম্মাদ আসীফ এর ছবি

গত ১৬.০২.২০১৩ তারিখে আমার বাসার খালা (কাজের বুয়া) কাজে আসে নাই, পরদিন তিনি এসে যা বলল তার সারম্রম হচ্ছে সে শাহবাগ গিয়েছিল কিন্তু সবাইকে তিনি মিথ্যা বলেছে কারন যদি তিনি সত্য বলে তবে তাকে বাসা থেকে যেতে দেবেনা। তার কোন এক বাসা (যেখানে তিনি কাজ করে) তাদের সাথে তিনি শাহবাগ গিয়েছে।রাত ১১ পরযন্ত ছিল। তার আভিজ্ঞতা বরন্না করতে গিয়ে তার চোখ অসশ্রু সজল হয়ে উঠে , বলেন হঠাত কথা থেকে যেন কতগুল চিপ্সের পাকেট এসে তার গায়ে পরে, তিনি তার পাসের একছেলেকে পাকেট্টা দিতে চাইলে সেই ছেলেটা বলে আপনি খান এটা আপনার, নিজে না খেয়ে আমাকে খেতে দিল। খালাগো না গেলে জিবনেও বুঝতামনা যে এটা সত্যি আরেকটা মুকতিযুদ্ধ। এভাবেই সবাই শাহবাগকে সম্ৃদধ করেছে। কার সাধ্য আমাদের এই গনজোয়ার রোখে।জয় বাংলা,জয় জনতা,জয় প্রযনমো চত্তর।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"কাজের বুয়া" নয় "গৃহকর্মী"।

যারা শাহ্‌বাগ আন্দোলন নিয়ে নোংরা কথা ছড়ায় তাদের সরাসরি জিজ্ঞেস করতে হবে, "আপনি কি শাহ্‌বাগে গিয়ে ছিলেন? কখন গিয়েছিলেন? গিয়ে কী দেখেছেন"? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলেই তাদের মিথ্যাচারের স্বরূপ ফুটে উঠবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।