টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট-৫

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ৩০/০৭/২০০৯ - ২:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকের পর্বে থাকছেঃ বাংলাদেশে টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাবঃএকটি সমন্বিত বিশ্লেষন মূলক আলোচনা (প্রথম অংশ)

আমার দ্বিতীয় পর্বে বাঁধের উজানে ও ভাটিতে কিছু সাধারন প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি। পরবর্তীতে তৃতীয় ও চতুর্থ পর্বে গবেষণাধর্মী তিনটি রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলাদেশে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে আমি সার্বিক ভাবে সব কিছুকে সমন্বয়ের চেষ্টা করব সেই সাথে বাংলাদেশের কয়েকজন পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞের মতামত ও নিজের কিছু চিন্তাভাবনার প্রকাশ ঘটাবো বলে আশা পোষণ করছি। তবে বলে রাখি আমি টিপাইমুখ বাঁধের উজানে প্রভাব নিয়ে কোন আলোকপাত করবনা কারন বাংলাদেশে এই বাঁধের ভাটিতে। আমি এই পর্বের শুরুতেই ধন্যবাদ জানাতে চাচ্ছি মোস্তফা ভাই (সচলের স্বাধীন) ও জোবায়ের ভাইকে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পানিসম্পদে পিএইচডি করছি বলে প্রায়শই আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। এই লেখাটির শুরু থেকে তাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা প্রশংসার দাবী রাখে সেই সাথে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহে মোস্তফা ভাইয়ের সাহায্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দাবী রাখে।

বর্ষাকালে প্রবাহ হ্রাসের ফলে বন্যার প্রকোপ হ্রাস কতটা যুক্তিযুক্ত ও ইতিবাচকঃ

FAP 6, IWM কিংবা টিপাইমুখ প্রকল্পের EIA রিপোর্টে যেটি প্রথমেই উঠে এসেছে তা হলো বাঁধের কারনে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের হ্রাস এর বিষয়টি। FAP 6 এর রিপোর্টে বলা হয়েছে বাঁধের কারনে বর্ষা মৌসুমে অমলসিদে পানির সর্বোচ্চ প্রবাহ ২৫% কমবে আর পানির পরিমান ২০% কমবে, অন্যদিকে IWM এর রিপোর্টে (অপ্রকাশিত) উঠে এসেছে যে জুন, জুলাই আগষ্ট আর সেপ্টেম্বরে পানির প্রবাহ হ্রাস পাবে যথাক্রমে ১০%, ২৩%, ১৬%, ১৫% অর্থাৎ এই চার মাসে গড়ে ১৬% প্রবাহ কমবে। একই চিত্র দেখা যাই ভারতের EIA রিপোর্টে, যেখানে ৩০% প্রবাহ হ্রাসের কথা বলা হয়েছে। এই পানি প্রবাহ হ্রাসের কথা বলে যুক্তি দেয়া হচ্ছে যে এর ফলে ভাটিতে অর্থাৎ বাংলাদেশে ফ্ল্যাশ ফ্লাড কমবে এবং সিলেট ও মৌলভীবাজার এলাকা সহ বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল বন্যা মুক্ত হবে। বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটি এক বাক্যে বলা যায়না। এখানে প্রসংগত কিছু জিনিস চলে আসেঃ

  • প্রথমতঃ বন্যা আসলে কি কমবে ?

    বাংলাদেশের বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ আইনুন নিশাত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ,

    "বরাক নদীর ভাটির দিকের অঞ্চল সিলেটের হাওড় এলাকায় বর্ষার শুরুতে আগাম বন্যা হয় আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি কমে আসে।টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের পর বর্ষার শুরুতে রিজার্ভারে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন পড়বে আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এর ফলে বর্ষার শুরুতে বন্যা কমে আসতে পারে আবার বর্ষার শেষে বন্যার প্রকোপ বাড়তে পারে।এর প্রভাব বাংলাদেশের উপরেও পড়বে"[৪]।

    অর্থাৎ বন্যা মুক্ত হবার যে কথা বলা হচ্ছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়, যেটি হতে পারে তা হলো বন্যার স্বাভাবিক সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

    আরো যে বিষয়টি গুরুত্ত্বপূর্ণ তা হলো বাঁধের কারনে এর উজানে জলাধারে সব পলি সঞ্চিত হবে। যে পানি বের হয়ে আসবে তাকে এক কথায় বলা যায় " Hungry Water" বাংলায় যার প্রতিশব্দ হতে পারে রাক্ষুসী পানি। এই পানি পলিমুক্ত বলে এর পলিধারন ক্ষমতা অনেক বেশী আর তাই এটি বাঁধের ভাটিতে ১০০ থেকে ১৫০ কিমি ব্যাপী ব্যাপক নদী ক্ষয়ের সৃষ্টি করবে।বাংলাদেশ বাঁধের ২০০ কিমি ভাটিতে থাকায় এই বিপুল পরিমান পলি বরাক নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। কিন্তু পানির প্রবাহ তুলনামূলক ভাবে কমে যাওয়ায় পলি বহন করার ক্ষমতা কমে যাবে, এবং তা সুরমা ও কুশিয়ারার বুকে জমা হবে। এতে নদীর নাব্যতা ও গভীরতা হ্রাস পাবে। সেক্ষেত্রে আগে যেটা স্বাভাবিক বর্ষাকালীন প্রবাহ ছিল প্রকারান্তরে তা বন্যা আকারে আসতে পারে এই এলাকায়।

  • দ্বিতীয়তঃ যদি ধরেই নেই যে বাঁধের ফলে সিলেট আর মৌলভীবাজার এলাকা বন্যামুক্ত হবে সেখানেও প্রশ্ন আসে, এই তথাকথিত বন্যামুক্ত হওয়া কতটা ইতিবাচক?

    এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ জহির উদ্দীন চৌধুরীর মন্তব্য বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্যঃ

    " সাধারণভাবে আমরা ধরে নেই যে বন্যার সময় যদি পানি কমানো যায় এবং শুষ্ক মৌসুমে যখন পানির পরিমান কম থাকে তখন পানির সরবরাহ বাড়ানো যায় তা খুবই ভাল একটি বিষয়। সে বিবেচনা থেকেই ভারত টিপাইমুখ বাঁধের পেছনে তাদের যুক্তি হিসেবে এই বিষয়টি তুলে ধরেছে।কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের একটি অনন্য বৌশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রয়েছে বিশাল জলাভুমি ও অসংখ্য হাওড়। এর একটি নিজস্ব ইকোসিস্টেম রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে এখানে বর্ষার সময় পানি বাড়বে, বন্যা হবে ও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকা শুকিয়ে যাবে, এর উপর ভিত্তি করেই সেখানকার ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। ফলে বন্যার পানি কমা বা শুষ্ক মৌসুমে পানি বেশী পাওয়ার যে আশ্বাস ভারত দিচ্ছে তা এই এলাকার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে[৩]।"

    আমরা জানি বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল অর্থাৎ মেঘনা-সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকার একটি সতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে আর তা হলো এর হাওড়গুলি। বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে ছোট বড় মোট ৪১১ টি হাওড় প্রায় ৮০০০ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে অবস্থিত যা কিনা বাংলাদেশের এই অঞ্চলের মোট ক্ষেত্রফলের শতকরা ২৫ ভাগ।

    haor

    এই হাওড়গুলির কিছু হচ্ছে 'রাইপেরিয়ান জলাভুমি' (উপরের ছবি দেখুন)অর্থাৎ যেগুলো প্লাবনভূমিতে অবস্থিত। এগুলো নদীর সাথে সরাসরি যুক্ত বলে নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি বা কমের সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে প্রভাবিত হয়।আবার কিছু আছে 'নন-রাইপেরিয়ান জলাভূমি' যা আসলে পানির যোগান পায় আশে পাশের নদী থেকে ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ থেকে।এখন বর্ষাকালে পানির প্রবাহ কমে গেলে রাইপেরিয়ান হাওড়গুলিতে পানি যাবেনা এবং সেই সাথে ভূগর্ভস্থ প্রবাহ কমে যাওয়ায় নন-রাইপেরিয়ান হাওড়গুলিও পানি পাবেনা।বৃষ্টির পানি থেকে একমাত্র নন-রাইপেরিয়ান জলাভূমিগুলি পানির যোগান পেতে পারে কিন্তু তাও এই হাওড়গুলির আয়তনের তুলনায় নগন্য।

    এই হাওড় এলাকার রয়েছে এক বিচিত্র বাস্তুতন্ত্র।এই হাওড়গুলি বর্ষা মৌসুমে দেখতে অনেকটা সমুদ্রের মত হয় এবং বন্যার পানি সরে গেলে তা জলজ প্রাণী বিশেষ করে নিভিন্ন প্রজাতির মাছের অভয়াশ্রমে পরিনত হয়। যেহেতু বছরের একটি বিশেষ সময় ধরে এই হাওড় এলাকা জলপূর্ন থাকে তাই এলাকার মানুষদের জন্য মৎস্য শিকার অন্যতম প্রধান পেশা।

    বাঁধের কারনে বন্যার সময় পানি না আসায় এই হাওড়গুলি একসময় ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাবে সেই সাথে বিলুপ্ত হবে বেশ কিছু প্রজাতি। এই এলাকার মানুষদের তখন বর্ষা মৌসুমে জীবিকার জন্য অন্য কোন পথ বেছে নিয়ে হবে।

শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহ বৃদ্ধি কতটা ইতিবাচক আর কতটা নেতিবাচকঃ

টিপাইমুখ বাঁধের কারনে শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে বলা হচ্ছে। FAP 6 এর রিপোর্ট অনুযায়ী অমলসিদে পানির সর্বোচ্চ প্রবাহ শতকরা ১০০ ভাগ থেকে ২০০ ভাগ বাড়বে এবং পানির পরিমান শতকরা ৬০ ভাগ বেড়ে যাবে অন্যদিকে টিপাইমুখ প্রকল্পের EIA রিপোর্টেও বলা আছে বাঁধের কারনে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ ১১০% বেড়ে যাবে। এখন এই বর্ধিত পানি কি আমাদের জন্য আশীর্বাদ না কি অভিশাপ সেটা গবেষণার দাবী রাখে।

FAP 6 এর রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে এই বর্ধিত প্রবাহের ফলে নৌচলাচল, সেচ ও মৎস্য চাষ বৃদ্ধি ঘটবে কিন্তু কিছু কিছু এলাকা থেকে পানি নিষ্কাশন ব্যহত হবে। ভারতের দাবী এই বর্ধিত পানি দিয়ে রবি শস্য ফলানো যাবে, অবশ্য সেটি কোথায় তা উল্লেখ নেই তবে ধারনা করা যায় তা আসলে ফুলেরতল ব্যারেজের সাথে সম্পর্ক যুক্ত।

তবে যে বিষয়টি খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ তা হলো বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের এই হাওড়গুলি শুষ্ক মৌসুমে যখন শুকিয়ে যায় তখন কৃষকরা সেখানে বোরো ধান বপন করে যা এই অঞ্চলের একমাত্র ফসল। এই ধান বর্ষা আসার আগেই ঘরে উঠে যা এই লোক গুলির বছরের একমাত্র শর্করার যোগান দেয়।বাঁধের কারনে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ বেড়ে গেলে এই এলাকার চাষাবাদ ব্যহত হবার আশঙ্কা আছে। ডঃ জহির উদ্দিন চৌধুরীও তার সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টি আলোক পাত করেছেন[৩]

আর যদি ধরেও নেই যে এই বর্ধিত প্রবাহ চাষাবাদের জমিকে খুব বেশী প্লাবিত করবেনা সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন থেকে যায়। এই জমিগুলো বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ায় বিপুল পরিমান পলি জমে। এখন বর্ষা মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় তা আগের মত আর প্লাবিত হবেনা ফলে জমিগুলো তাদের উর্বরতা হারাবে।

অতি শুষ্ক মৌসুমে কি হবে ?

ভারত যা বলে আসছে তার সব কিছুই আসলে গড় প্রবাহের উপর ভিত্তি করে। কখনো কখনো পর্যায়ক্রমে কিছু বছর থাকে যেখানে যেসময় পানির প্রবাহ স্বাভাবিক গড় প্রবাহ থেকে অনেক কমে যায়। আমার প্রাপ্ত তথ্য মতে বরাক অববাহিকায় ১৯৭৯-১৯৮১ পর্যন্ত এরকম একটি পর্যায় গিয়েছে যেখানে শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে পানির অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম ছিল। টিপাইমুখ বাঁধ হবার পরে এরকম একটি সময় আবার যদি আসে সেক্ষেত্রে বাঁধের উজানে জলাধারের পানির স্তর কমে যাবে।

reservoir

ছবিসুত্রঃ Dam design and operation to optimize fish production in impounded river basins

পানিবিদ্যুৎ প্রকলের জলাধারের একটি প্রস্থচ্ছেদ লক্ষ্য করুন উপরের চিত্রে। এখানে জলাধারের পানির স্তর যদি সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের (Firm Production) জন্য প্রয়োজনীয় লেভেলের চেয়ে নিচে নেমে যায় ( Critical level) সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা। এই পরিস্থিতিতে শুষ্ক মৌসুমে বাঁধের টারবাইন থেকে যে পরিমান পানি ভাটিতে প্রবাহিত হবে তা বাঁধ পূর্ব পরিস্থিতির সাথে তুলনা করলে অনেক অনেক কম। এই অতি শুষ্ক মৌসুমের কারনে জলাধারের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পরবর্তী বর্ষা মৌসুমে লক্ষ্য থাকবে বেশী পরিমান পানি সঞ্চয় করার যা প্রকারান্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাবে এবং সেই সাথে বর্ষা মৌসুমে ভাটিতে পানির প্রবাহ আরো কমে যাবে। এই পরিস্থিতি তিন চার মৌসুম ধরে চললে তা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে বাংলাদেশে।


( চলবে )

আগামী পর্বে থাকবেঃ টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব নিয়ে একটি সমন্বিত বিশ্লেষন মূলক আলোচনা (বাকী অংশ)

তথ্যসুত্রঃ
[১] উইকিপিডিয়া

[২]Environment Impact Assessment (EIA) of Tipaimukh HE(M) Project, submitted for North Eastern Electric Power Corporation Limited (NEEPCO)

[৩] ডঃ জ়হির উদ্দিন চৌধুরী, ১২ জুলাই ২০০৯, ‘বরাক নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করা হলে তা হবে বিপদ জনক’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।

[৪] ডঃ আইনুন নিশাত, ২৮ জুন ২০০৯, ‘দুই দেশেই টিপাইমুখ বাঁধের পরিবেশগত প্রভাবের জরিপ চালাতে হবে’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।

[৫] ডঃ আসিফ নজরুল, ৫ জুলাই ২০০৯, ‘পিনাক রঞ্জনের ছোট ভুল, আমাদের বড় ভুল’ প্রথম আলো।

[৬] এম এ কাসেম,৬ জুলাই ২০০৯, ‘টিপাইমুখঃ যে কথা কেউ বলছেনা’প্রথম আলো।

[৭] ডঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ‘টিপাইমুখ বাঁধঃ কিছু শর্ত মানলে কম ক্ষতিকর হতে পারে’ প্রথম আলো।

[৮] Dr.Sara Bennett, Mujib Huq and Dr. David Mclean,1994, ‘Initial Environmental Evaluation, Appendix to the Northeast RegionalWater Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6 ( IEE NERP FAP 6)’,Final Version.

[৯] Ma A Matin, 7 February 2006, ‘Another Farakka ? No, Tipaimukh Dam is different’ The Daily Star.

[১০] The Ecology of Dams

[১১]মোঃ গোলাম্ কিববিয়া " ISSUE-GAINING PUBLIC ACCEPTANCE FOR LARGE DAMS ON INTERNATIONAL RIVERS: THE CASE OF TIPAIMUKH DAM IN INDIA AND CONCERNS IN LOWER RIPARIAN", সেপ্টেম্বর ২০০৫, United Nations Environment Programme (UNEP) কতৃক আয়োজিত Dams and Development Project শীর্ষক কর্মশালা, নাইরবি, কেনিয়া।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি
গৌরীশ রায় [অতিথি] এর ছবি

আপনার এই সিরিজ না পড়লে অনেক বিষয় কখনই জানতে পারতে পারতাম না ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

বন্যা মুক্ত হবার যে কথা বলা হচ্ছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়, যেটি হতে পারে তা হলো বন্যার স্বাভাবিক সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

বন্যা কি সত্যিই মুক্ত হওয়া সম্ভব? বন্যা কমানো যেতে পারে। যে ক্ষেত্রগুলোর কথা বলা হচ্ছে সেইরকম ঘটলে তো এখনও বন্যা হবে। ঠিক নয়? সুতরাং বন্যার frequency কমানো সম্ভব, কিন্তু দমানো সম্ভব নয়। জলাধার শুধু একটা বাফার যুক্ত করে সিস্টেমে। আরো কথা হল, বাঁধের জলাধারের জল বেড়ে শেষ মৌসুমের বন্যার প্রাবল্য সাধারণ বন্যার থেকে অনেক বেশী হবে। তবে এই বন্যা বাংলাদেশের থেকে ভারতকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

কিন্তু পানির প্রবাহ তুলনামূলক ভাবে কমে যাওয়ায় পলি বহন করার ক্ষমতা কমে যাবে, এবং তা সুরমা ও কুশিয়ারার বুকে জমা হবে।

এই ব্যাপারটা পৃথিবীর সর্বত্র অন্যররকম ঘটে। ইয়াংসী নদীতে বদ্বীপের আয়তন কমে গেছে, মিশরেও তাই। বাংলাদেশে আলাদা কেন হবে? এটা অবশ্য আপনি বলেছেন IWM সিমুলেশন স্টাডির ফলাফল।

আর যদি ধরেও নেই যে এই বর্ধিত প্রবাহ চাষাবাদের জমিকে খুব বেশী প্লাবিত করবেনা সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন থেকে যায়। এই জমিগুলো বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ায় বিপুল পরিমান পলি জমে। এখন বর্ষা মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় তা আগের মত আর প্লাবিত হবেনা ফলে জমিগুলো তাদের উর্বরতা হারাবে।

চাষের জন্য কোনটা বেশী ভাল? সেচের জল না মাটির উর্বরতা? ধানের হেক্টরপ্রতি উৎপাদন কোথায় বেশী? শুষ্ক কিন্তু সেচের জল পাওয়া মিশরে বা ইরাকে না উর্বর বাংলাদেশ/ভারতের গাঙ্গেয় অববাহিকায়?

বোরো চাষের বিষয়ে একটা জিনিস মনে রাখা দরকার, বর্তমানে বোরো চাষ হাওড়ের জলাভূমির বাস্তুতন্ত্রের সবথেকে বড় শত্রু। বন্যা বন্ধ হয়ে গেলে গোটা হাওড়ই চাষের জমিতে পরিণত হবার সম্ভাবনা আছে।

এই পরিস্থিতি তিন চার মৌসুম ধরে চললে তা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে বাংলাদেশে।

তিন চার মরসুম ধরে শুষ্ক থাকলে এমনিতেই তো খারাপ অবস্থায় যাবে, বাঁধের প্রভাবে আলাদা কি হবে বুঝছি না। ভাটিতে ভারতের চাষের জলও মিলবে না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

বন্যা কি সত্যিই মুক্ত হওয়া সম্ভব? বন্যা কমানো যেতে পারে

দিগন্ত এটাত আমি মানি আর মানি বলেইত বলছি ভারত বাঁধের কথা বলে বাংলাদেশকে বন্যা নিয়ন্ত্রনের যে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছে যা সঠিক নয়।

আপনার কাছে একটি প্রশ্ন রাখি, এই বাঁধ বাংলাদেশের জন্য কি উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক দিক নিয়ে আসবে বলতে পারেন?? আমিতো খুঁজে পাইনা তাহলে কিভাবে এই প্রকল্পকে সমর্থন করব ??

এই ব্যাপারটা পৃথিবীর সর্বত্র অন্যররকম ঘটে। ইয়াংসী নদীতে বদ্বীপের আয়তন কমে গেছে, মিশরেও তাই।

আপনার এই উদাহরনটি আরেকটু ব্যখ্যা করবেন আশা করি এবং পারলে তথ্যসুত্র দিয়ে। এইস ক্ষেত্রেও কি উজানে বাঁধ ছিল ? একটি হলো প্রাকৃতিক পরিবর্তন আরেকটি কৃত্রিম। প্রকৃতি কোন কিছু পরিবর্তন করলে তা রোধ করার উপায় আমাদের নেই কিন্তু মানুষের প্রস্তাবিত পরিবর্তনত আমরা রোধ করতে পারি।


এটা অবশ্য আপনি বলেছেন IWM সিমুলেশন স্টাডির ফলাফল

দিগন্ত আমি গত পর্বের আপনার প্রশ্নের মন্তব্যেই কিন্তু বলেছি IWM এর রিপোর্টটিতেও যা করা হয়েছে তা হলো একটি " Conceptual Impact Assesment of Morphology" অর্থাৎ পরিমানগত ভাবে সেটি বের করা হয়নি। পরিমানগতভাবে পলির বন্টন, প্রবাহ এইসব নিয়ে গবেষণা করতে চাইলে তাতে ব্যাপকভাবে ভারতের সহযোগীতা প্রয়োজন কারন উজানের সব উপাত্তের একমাত্র উৎস ভারত।সুতরাং আবারো বলছি এটা সিমুলেশন স্টাডি না।

চাষের জন্য কোনটা বেশী ভাল? সেচের জল না মাটির উর্বরতা?

দুটোই প্রয়োজন। আগে যেটা হত বর্ষা মৌসুমে হাওড় কানায় কানায় পূর্ণ হত। সেই পানি অনেকটা শুকিয়ে গেলে তার কাছা কাছি জমিতে কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে অঘ্রানের শেষ (নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি) পর্যন্ত বীজতলায় বীজ বোনা হয়।হাওড়ের এই জমানো পানি থেকেই বোরো ধানের সেচ কার্য চলে। এখন বর্ষা মৌসুমে পানি হাওড়ে কম আসবে সুতরাং সেই পানি অনেক আগে শুকিয়ে যাবে। ফলে বোরো ধান চাষীরা ন আপাবে পলিযুক্ত উর্বর মাটি আর না পাবে সেচের পানি।


বর্তমানে বোরো চাষ হাওড়ের জলাভূমির বাস্তুতন্ত্রের সবথেকে বড় শত্রু

আরো বিশদ ব্যখ্যা আশা করছি এবং পারলে তথ্যসুত্র সহ।

তিন চার মরসুম ধরে শুষ্ক থাকলে এমনিতেই তো খারাপ অবস্থায় যাবে, বাঁধের প্রভাবে আলাদা কি হবে বুঝছি না।

আমি বিষয়টা নিচে বিশদ ব্যখ্যা করলামঃ

ধরুন ( আসলে এটি কার্যকারনে সত্য) ১৯৭৯-১৯৮১ তিনটি পর পর অতিশুষ্ক বছর। এর মধ্যে ১৯৭৯ সাল সবচাইতে শুষ্ক যাকে আমরা ক্রিটিকাল বছর বলতে পারি।এখন এই ক্রিটিকাল বছরে বিদ্যুতের ফার্ম জেনারেশন বজায় রাখতে গেলে জলাধারের পানির স্তর "ক্রিটিকাল মিনিমাম লেভেল" ( মূল লেখার চিত্রটি দেখুন) বা আরও কাছাকাছি পর্যন্ত নিয়ে আসতে হবে।অর্থাৎ জলাধারটি পরবর্তী বর্ষা মৌসুমে (১৯৮০) যাচ্ছে কিন্তু একটি 'ক্রিটিকাল স্টোরেজ' নিয়ে।এখন এই বর্ষা মৌসুম তুলনামূলকভাবে শুষ্ক হলে বর্ষা মৌসুমে সাধারনত জলাধারটি সেই স্তরে পৌছায় মৌসুম শেষে সেই স্তরে যাবেনা। ফলে পরবর্তী শুষ্ক মৌসুমে আর ফার্ম বিদ্যুৎ জেনারেশনের জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকবেনা। ফলে বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ফার্ম জেনারেশন থেকে কমাতে হবে আর সেক্ষেত্রে ভাটিতে প্রবাহ কমে যাবে। এখন এই পরিস্থিতি আরো দুই বছর যদি চলে তাহবে বিষয়টা কি হবে এবার ভেবে দেখুন।


-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

এই বাঁধ বাংলাদেশের জন্য কি উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক দিক নিয়ে আসবে বলতে পারেন?

শেষ অংশের পরে আলোচনা করব।

বন্যা নিয়ন্ত্রনের যে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছে যা সঠিক নয়।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, কিন্তু বন্যার হার ও প্রাবল্য কমানো সম্ভব। দামোদরে একই ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করার পরে ১২ বছরে একবার বন্যা হয় - যেটা আগে বছরে একবার হত। আরো বড় ব্যাপার জলাধারের জলের লেভেল যেহেতু নিয়মিত জানা থাকে, তাই বন্যার আগে আর্লি ওয়ার্নিং দেওয়া হয় - তাই এই বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়। এই ব্যবস্থার অর্থকরী লাভ আছে বলেই বাংলাদেশেও এম্ব্যাঙ্কমেন্ট দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হয় (এম্ব্যাঙ্কমেন্টও কিন্তু বন্যা নির্মূল করে না, হার ও প্রাবল্য কমিয়ে দেয়)। বন্যা একেবারে নির্মূল করা গাঙ্গেয় অববাহিকায় প্রায় অসম্ভব।

আপনার এই উদাহরনটি আরেকটু ব্যখ্যা করবেন আশা করি এবং পারলে তথ্যসুত্র দিয়ে।

- এটা আমি আগে দিয়েছিলাম। ইয়াংসী নদীর পলি থ্রি গর্জেস ড্যামে আটকা পড়ে যায় তাই চিনে ব-দ্বীপের আয়তন কমছে। আপনার ব্যাখ্যা অনুসারে তার আয়তন বাড়ার কথা কারণ বাঁধের পলিমুক্ত জল বেশী ক্ষয় করে বেশী পলি এনে বদ্বীপে জমা করার কথা। কিন্তু নতুন ক্ষয়ীভূত পলির পরিমাণ বাঁধের আগে জমা পলির থেকে কম - তাই মোটের ওপর পলি কমে যায়। পৃথিবীর প্রায় সব বাঁধেই এরকম প্রভাব দেখা যায় বলে WCD দাবী জানিয়েছে। কেন IWM এর রিপোর্টে আলাদা হচ্ছে সেটা বুঝছি না।

ফলে বোরো ধান চাষীরা ন আপাবে পলিযুক্ত উর্বর মাটি আর না পাবে সেচের পানি।

- সেচের জল আসবে হাওড় ও নদী থেকেই কারণ যে অঞ্চলের হাওড়গুলো শুকিয়ে যাওয়ার কথা সেগুলো নদীর স্বাভাবিক প্লাবনভূমিতে অবস্থিত - নদীর পাশেই হওয়ার কথা। বাকি হাওড়গুলোতে প্রভাব পড়ার কথা নয় কারণ সেগুলো বৃষ্টির জলে পুষ্ট। তবে এই অবস্থারও উন্নতি করা যায় কৃত্রিম বন্যার ব্যবস্থা করে (আগের লেখার কমেন্ট দেখুন)।

মিশরের ধান উৎপাদন হেক্টরপ্রতি ফলন ১০ মেট্রিক টন যেখানে ভারত বা বাংলাদেশের ৪ মেট্রিক টনের আশেপাশে। মিশরে কিন্তু বন্যা বাঁধ দিয়েই দমন করা হয়েছে। সেখানে সেচের জলেই চাষ হচ্ছে। লক্ষ্যণীয় সেখানেও জলাভূমিগুলো শুকিয়ে গেছে, বন্যার পলিও আসে না। একি ঘটনা পাঞ্জাবেও (ভারত ও পাকিস্তান) ঘটেছে।

হাওড়ের কৃষি নিয়ে একটা লিঙ্ক (বই) দেব, পড়বেন। সেটা নিয়েও কমেন্ট লিখব পরে।

আরো বিশদ ব্যখ্যা আশা করছি এবং পারলে তথ্যসুত্র সহ।

- বাংলাপেডিয়া
"In the past century or so, when the population pressure was less, most of the rim-lands of the haors remained as cultivable wasteland and was used for extensive grazing in the dry season. As population increased, boro cultivation expanded onto these marginal lands leading to a large area being drained. Thus, the very existences of these wetlands are now threatened. "

এখন এই পরিস্থিতি আরো দুই বছর যদি চলে তাহবে বিষয়টা কি হবে এবার ভেবে দেখুন।

বুঝলাম। এটা বাঁধের অপারেশনাল ব্যাপার। আমি আগেই বলেছি সহযোগিতার জন্য যদি কোথাও বিদ্যুত উৎপাদন কমাতে হয় সেই প্রস্তাব বাংলাদেশ থেকে দেওয়া উচিত। এটা সহযোগিতার প্রশ্ন, সহযোগিতা হলে এই সমস্যা থাকে না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

ইয়াংসী নদীর পলি থ্রি গর্জেস ড্যামে আটকা পড়ে যায় তাই চিনে ব-দ্বীপের আয়তন কমছে।

দিগন্ত আমি মূল প্রবন্ধটি পড়েছি। লিঙ্কটিও দিলাম এইখানে

এখানে যা আছে তা হলো বাঁধ যে পরিমান পলি আটকে দিচ্ছে সেই পরিমান পলি ভাটির নদীক্ষয় দ্বারা পূরন হচ্ছেনা ফলে পলির নেট পরিমান কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে টিপাইমুখের পরিস্থিতির সাথে এর পার্থক্যগুলি আগে ব্যখ্যা করি। নিচের দুটি চিত্র লক্ষ্য করুন, প্রথমটি ইয়াংসী নদী আর পরেরটি বাংলাদেশের নদী সিস্টেমঃ

2007gl029472-p01_enh

ছবিসুত্রঃ S. L. Yang, J. Zhang, and X. J. Xu, "Influence of the Three Gorges Dam on downstream delivery of sediment and its environmental implications, Yangtze River", GEOPHYSICAL RESEARCH LETTERS, VOL. 34, 2007

Bangladesh_LOC_1996_map

ছবিসুত্রঃ উইকিমিডিয়া কমনস

এবার কিছু বিষয় লক্ষ্য করুনঃ

  • চীনের ইয়াংসী নদীর ক্ষেত্রে Three Georges Dam এর আগে আরো তিনটি বাঁধ আছে ( প্রথম চিত্র) সুতরাং এই নদীতে এমনিতেই পলির পরিমান কমে যাবার কথা।

  • Three Georges Dam থেকে পূর্ব চীন সাগরে পতিত হবার আগ পর্যন্ত এই নদীর এমন কোন উল্লেখযোগ্য উপনদী নেই যা কিনা এতে পলি যোগ করতে পারে, অন্যদিকে বরাক নদী বাংলাদেশে পরবর্তীতে যখন মেঘনা নদীতে পরিনত হয় তার সাথে চাঁদপুরে যুক্ত হয় ব্রহ্মপুত্র আর গঙ্গার মিলিত ধারা যেখানে ব্রহ্মপুত্র পৃথিবীর অধিক পলি বহনকারী নদীগুলোর মধ্যে একটি।

  • টিপাইমুখ বাঁধের পরে যে ব্যাপক নদীক্ষয় হবে সেই পরিমান পলি বহন হয়ে আসতে আসতেই তা ব্রহ্মপুত্র আর গঙ্গার মিলিত ধারার সাথে মিশবে অন্যদিকে ইয়াংসী নদীর ক্ষেত্রে দুই তৃতীয়াংশ পলি বাঁধে সঞ্চিত হবার পরে আর একমাত্র ভটির নদী ক্ষয় ছাড়া আর কোন পলির উৎস নেই। সেই সাথে বাঁধের কারনে ইয়াংসী নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় বাঁধের পর পরই ভাটিতে নদী ক্ষয় ছাড়া এর পরবর্তীতে এই নদী দ্বারা নদীক্ষয়ের সুযোগও কমে যাচ্ছে।

  • দূরত্বের কথাও যদি ধরি ইয়াংসী নদীকে বাঁধের পরে আরো ১৩০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হয়েছে কোন উল্লেখযোগ্য পলি উৎস ছাড়া অন্যদিকে বারাক নদী এর অনেক কম দূরত্ব পাড়ি দিয়েই কিন্তু মেঘনা-পদ্মার মিলিত ধারাকে পেয়েছে।

সুতরাং এই সব বিচারে কোন মতেই ইয়াংসী নদীর Three Georges Dam এর সাথে এই টিপাইমুখ বাঁধের তূলনা চলেনা।

বাকী উত্তরগুলি পরের মন্তব্যে দিচ্ছি।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

ইয়াংসী নদীটা কিন্তু একটা উদাহরণ ছিল। মূল ব্যাপারটা উইকিতে পড়েছি।

টিপাইমুখ বাঁধের পরে যে ব্যাপক নদীক্ষয় হবে সেই পরিমান পলি বহন হয়ে আসতে আসতেই তা ব্রহ্মপুত্র আর গঙ্গার মিলিত ধারার সাথে মিশবে

তারমানে পলির পরিমাণ বাড়ছে আগের তুলনায়? ধরা যাক আপনি টিপাইমুখ থেকে ৪০০ কিমি দূরে বরাক পড়ছে ব্রহ্মপুত্রে। তাহলে আপনার মতে এর মধ্যে প্রথম ২০০ কিমিতে ক্ষয়ের ফলে নদী আগের তুলনায় বেশী পলি পাচ্ছে (এমনকি টিপাইমুখের আগের পলি জমা পড়ে যাওয়া সত্ত্বেও)। তাহলে আপনার মনে হয় ইয়াংসী নদীতে ৪০০ কিমি দূরে স্টাডি করলে (সেডিমেন্টেশন রেট মাপলে) আগের থেকে বেশী পলি আসবে (ক্ষয়ের ফলে)? ব্রহ্মপুত্রের সেডিমেন্ট কিন্তু অপরিবর্তিত থাকছে। তাই মিলিত হবার পরের পার্থক্যটা মেঘনা/বরাকের পার্থক্য থেকেই আসে।

দুটো নদীর পার্থক্য বুঝলাম কিন্তু কেন আলাদা সেডিমেন্ট করবে তা বুঝলাম না।

নীল নদ, মেকং, ভোল্টা, দানিয়ুব, সেনেগাল, মিসিসিপি, রোন - সব ক্ষেত্রেই কিন্তু ব-দ্বীপের আয়তন কমছে। আলাদা করে লিঙ্ক দিচ্ছি না কিন্তু সার্চ করলে পাবেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

দিগন্ত এই সব কিছুই কিন্তু নদী-প্রকৌশলগত ধারনা। আসল হিসেব কষতে গেলে অনেক কিছুর উপর এই পরিমান নির্ভর করে, যেমনঃ পলির আকার, পানির প্রবাহ মাত্রা, নদীর নাব্যতা, নদীপাড়ের মাটির বৈশিষ্ট্য এবং আরো অনেক কিছু। তার পরও পলিবহনের হার গানতিক মডেল দিয়ে পরিমাপ করা অনেক জটিল।

এখানে যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় তা হল আমি বলেছি বাঁধের পর পরই ভাটিতে যে বিপুল পরিমান নদীক্ষয় হবে তাতে বারাক নদীতে টিপাইমুখ বাঁধ থেকে ২০০ কিমি( ধরা যাক) দূরে আগে যে পরিমান পলি সঞ্চিত হত এখন তার থেকে বেশী হবে কারন বর্ষাকালে নদীর প্রবাহ কম সুতরাং পলি বহন ক্ষমতা কম কিন্তু পলির যোগান কিন্তু ঠিকই নদীক্ষয় থেকে আসছে। আর বাংলাদেশে পুরোপুরি সমতল ভূমি বলে এখানে নদীর নাব্যতা এমনিতেই অনেক কম। সেক্ষেত্রে পানির প্রবাহও যদি কমে যায় তাহলে ক্ষয়কৃত পলি ভাটিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া নদীর পক্ষে আসলেই কষ্টসাধ্য আর যেখানে বাংলাদেশে এসেই বরাক নদী দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে সেক্ষেত্রে এর ক্ষয়কৃত পলি কনফ্লুয়েন্সে জমাটাই স্বাভাবিক।

তবে উপরের সব কিছুই নদী-প্রকৌশগত ধারনা যা কিনা এক অঞ্চল বা দেশ থেকে অন্য অঞ্চল না দেশে পরিবর্তিত হতে পারে কারন জায়গা ভেদে মাটির বৈশিষ্ট্য বহুলাংশে পরিবর্তিত হয়।

----------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

দিগন্ত এই সব কিছুই কিন্তু নদী-প্রকৌশলগত ধারনা।

- একমত। এজন্যই যৌথ উদ্যোগে পরিবেশ প্রভাবের সমীক্ষা হওয়া উচিত। তাতে পুরো তথ্য হাতে নিয়ে কাজ করা যায়।

আর বাংলাদেশে পুরোপুরি সমতল ভূমি বলে এখানে নদীর নাব্যতা এমনিতেই অনেক কম।

- এইটা আপনি কি নিশ্চিত? আমি টিপাইমুখের EIA তে দেখেছি যত নদী ভাটির দিকে এগোচ্ছে তত তার সেফ ক্যারিং ক্যাপাসিটি বেড়ে চলেছে। সে কারণেই নদী চওড়া হতে থাকে, কোথাও কোথাও শাখানদীও জন্ম দেয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

আমি টিপাইমুখের EIA তে দেখেছি যত নদী ভাটির দিকে এগোচ্ছে তত তার সেফ ক্যারিং ক্যাপাসিটি বেড়ে চলেছে। সে কারণেই নদী চওড়া হতে থাকে, কোথাও কোথাও শাখানদীও জন্ম দেয়।

দিগন্ত নাব্যতা কমে বলেইত আস্তে আস্তে ভাটির দিকে নদীর প্রস্থ বাড়ে আর গভীরতা কমে। লক্ষ্য করুন কিছু জিনিস কে নগন্য ধরে,

নদীর গতিবেগ= ধ্রুবক*[(গভীরতা)^২/৩]*[(নাব্যতা)^১/২]

ভাটির দিকে নদীর নাব্যতা ও গভীরতা কমে ।সুতরাং নাব্যতা কমলে উপরের সুত্রনাসারে নদীর গতিবেগ কমবে

অপরদিকে প্রবাহ = গতিবেগ*গভীরতা*প্রস্থ (সাধারন ভাবে)

পানিসম্পদের একটি তত্ত্ব হলো,

উজান থেকে আসা প্রবাহ=ভাটিতে যাওয়া প্রবাহ ( ধরে নিয়ে যে কোন প্রবাহ কমে যাচ্ছেনা)

সুতরাং প্রবাহ ধ্রুব ধরলে, ভাটিতে গতিবেগ কমে গেলে এর প্রস্থকে বাড়তে হবেই। এজন্যই ভাটিতে যেহেতু নাব্যতা কমে তাই নদী ধীরে ধীতে ভাটির দিকে প্রস্থে বাড়ে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

দুঃখিত সেফ ক্যারিং ক্যাপাসিটি আর নাব্যতা এক জিনিস নয়। আমার ভুল হাসি ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

"এখানে যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় ..."

কালকে আলোচনার পরে আমি চিনের বিষয়টা নিয়ে পেপার পড়লাম (আপনার দেওয়া লিঙ্কটার জন্য লগইন করতে লাগে মন খারাপ )। এখানে একটা ছবি দিলাম তাতে দেখতে পারেন কিভাবে ইয়াংসীর ওপর একেকটা বাঁধ তৈরীর সাথে সাথে সমগ্র নদী অববাহিকায় পলির পরিমাণ কমে যাচ্ছে (৫০০-১০০০ কিমি দূরত্বে মাপা)। দ্বিতীয় ছবিতে টোপোগ্রাফির ম্যাপ পাবেন। (আরো ভাল টোপোগ্রাফির ম্যাপের জন্য ছবিতে দেওয়া লিঙ্ক দেখতে পারেন) এতে দেখতে পারেন কিভাবে ইয়াংসী নদীতে অনেকগুলো উপনদী এসে মিশেছে ও চিনের ব-দ্বীপ অঞ্চল বাংলাদেশের মতই সমতল নাব্যতা এখানেও কমই হবার কথা।

auto

auto

তবে উপরের সব কিছুই নদী-প্রকৌশগত ধারনা যা কিনা এক অঞ্চল বা দেশ থেকে অন্য অঞ্চল না দেশে পরিবর্তিত হতে পারে কারন জায়গা ভেদে মাটির বৈশিষ্ট্য বহুলাংশে পরিবর্তিত হয়।

- সহমত। এটার জন্যই সিমুলেশন স্টাডি করতে হয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

দিগন্ত ইয়াংসী নদীর এই উপনদীগুলো লক্ষ্য করুন, দুই দিকের উঁচু ভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে অববাহিকাতে এসে মিশেছে। এই উপনদী গুলোর সাথে মেঘনার সাথে গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্রএর নদীসঙ্গমের তুলনা হয়না। ব্রহ্মপুত্র পৃথিবীর সর্বোচ্চ পলি বহন কারী নদীগুলোর মধ্যে একটি।

এছাড়া ইয়াংসী নদীর এই উপনদীগুলো সাথে লেক সিস্টেম যুক্ত। লেক সিস্টেমে নদীগুলো উৎপন্ন হয়ে অববাহিকাতে লেকে পরিনত হয় ফলে তার পলি এমনিতেই কমে যায় কারন লেকে তা জমা হয়। সেই লেক থেকে আবার নদীগুল বের হয়। আমার ল্যাবে আমার পাশেই বসে চাইনিজ এক পেয়ে, সেও পানিসম্পদে পিএইচডি করছে আমার মত। ওর সাথে আলোচনা করেও একই রকম তথ্য পেলাম।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

উপনদী কিভাবে ব্যাপারটাকে প্রভাবিত করছে এটাই বুঝলাম না। ইয়াংসী নদীতে একের পর এক বাঁধে পলি বাহন কমেছে। এখানে মেঘনা ব্রহ্মপুত্রে আসা অবধি কমবে (?), তারপরে বাড়বে? এটা নিয়ে আলোচনার জন্য সবশেষে আলাদা কমেন্ট করলাম।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

আমি যেটা বোঝাতে চেষ্টা করেছি তা হলো আমার ধারনা টিপাইমুখ বাঁধের কারনে সুরমা ও কুশিয়ারাতে পলি বাড়বে কারন যেপরিমান নদীক্ষয় হবে বাঁধের ১০০-২০০ কিমি ভাটিতে সেই পলি জমা হবে চাঁদপুরের আগ পর্যন্ত।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অমিত এর ছবি

তবে এই বন্যা বাংলাদেশের থেকে ভারতকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এই তুলনামূলক ক্ষতির ব্যাপারটা যেই ডেটা থেকে বের করলেন সেটা একটু শেয়ার করবেন ? আর সেটা যদি সত্যিও হয়, তো ?

দিগন্ত এর ছবি

অবশ্যই হাসি ...
EIA রিপোর্টে Safe Carrying Capacity গুলো দেখুন। যত ভাটির দিকে যাওয়া যায় তত বেড়ে যায়। সুতরাং জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলে যে বন্যা হবে তা ভাটির দিকে কমে আসবে। যেমন, বাঁধ ভেঙে গেলে যে বন্যা হবে তা শিলচরে ৫-৭ মিটার উঁচু বন্যা সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশে এলে সেই বন্যা আড়াই মিটার হবে।

আর সেটা যদি সত্যিও হয়, তো ?

সত্যি হলে ভারতের বরাক উপত্যকার লোকজনে যে কারণে বাঁধের সমর্থক - সেটা সর্বৈব ভুল। বাঁধ থেকে আদৌ বন্যা নিয়ন্ত্রণ হয় না ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অমিত এর ছবি

তুলনামূলক বিচারে কার ক্ষতি কত, সেই ব্যাপারটা এখানে অপ্রযোজ্য যেহেতু এটা কোন যৌথ প্রকল্প নয়।আর ভারতের বরাক উপত্যকার লোকজন নিশ্চয়ই ভারতের থেকে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে বেশি, এটা ভেবে এই প্রকল্পকে সমর্থন করেনি ! তাই তাদের সমর্থনের অসারতা বোঝাতে চাইলে ভারতেই বন্যার কিরকম পরিবর্তন হতে পারে সেটা বললেই চলত, বাংলাদেশকে টেনে আনার দরকার ছিল না।

দিগন্ত এর ছবি

তুলনামূলক বিচার গুরুত্বপূর্ণ কারণ যদি শেষ বর্ষায় বন্যা হয়ই তাহলে ভারতের লোকসান বেশী। শেষ বর্ষায় জলাধার থেকে জল ছেড়ে দিতে বাধ্য হলে এরকম ঘটনা ঘটে থাকে। সুতরাং ভারত নিজের স্বার্থেই বাঁধের পরিচালনা ঠিকভাবে করবে। কিন্তু এই ঘটনা রেগুলার হবার সম্ভাবনা কম বলেই বন্যা কার্যত নিয়ন্ত্রণ হয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সিরিজটার একটা কপি সংসদীয় কমিটিকে পাঠানো যায়? তাঁদের উপর ভরসা কম। আদৌ কোনো হোমওয়ার্ক করে গেছেন কিনা কে জানে!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এটা তারা পড়বে ভাবছেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রেজওয়ান এর ছবি

পড়বেন কিনা তা একটি ঘটনা বললেই বুঝতে পারবেন। সংসদ সদস্যদের রাষ্ট্রীয় একটি ভিজিট হচ্ছে ইউরোপীয় একটি দেশে। সেখানে দুতাবাস থেকে বেশ আগে থেকেই আলোচনার বিষয়বস্তু ও ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে টকিং পয়েন্টস দেয়া হয়েছে। তবে মূল আলোচনায় দুতাবাস থেকে কেউ ছিল না। আলোচনা শেষে তারা দুতাবাসে এসে সবাইকে একহাত নিলেন। আপনারা বসে বসে কি করেন? আপনারা মিটিং এ ছিলেন না কেন? পরে জানা গেল ওনারা কিছুই বলতে পারেন নি। আলোচ্য বিষয়বস্তু সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞ। তাদের যখন বলা হলো যে এ সবই টকিং পয়েন্টস এ দেয়া হয়েছে - তখন বলা হল কি লিখেন এসব কিছু বোঝা যায় না। আপনারা কালকের মিটিং এর জন্যে সব টকিং পয়েন্টস বাংলায় করে আমাদের দেন যত রাত হোক (ইংরেজী পারে না!)।

পরেরদিন মিটিং এ অবস্থা তথৈবচ - সবাই আমতা আমতা করে - কেউ কিছু বলতে পারে না - কারন বাংলা লেখাও পড়ে আসে নি। খালি দুতাবাসের লোকের দিকে তাকায় যে তারাই সব প্রশ্নের উত্তর দেবে। এদের দিয়ে আর কি আশা করা যায়?

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

তারা কেন দোভাষী নিয়োগ করে না? দোভাষী নিয়োগ করা তো অসম্মানের কিছু নয়। মাহমুদ আহমাদিনেজাদ (আমি লোকটাকে পছন্দ করি না, কিন্তু তার আত্মসম্মানবোধ টনটনে এবং অনুসরণীয়) ফারসি ছাড়া কথা বলে না কোথাও, একজন দোভাষী তার কথা সংশ্লিষ্ট বিদেশী ভাষায় অনুবাদ করে দেয়। এতে ছোট হবার কিছু নেই। সমস্যা হচ্ছে যদি মাতৃভাষাতেও বলার কিছু না থাকে।

তবে এই যে বিদেশে সফরে গিয়ে অপ্রস্তুত থাকা, এর চেয়ে বড় বিড়ম্বনা আর হয় না। প্রয়োজনে সাংসদদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য বছরে সীমিত ভাতা দেয়া হোক, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে তারা যেন কাজ পণ্ড না করে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হায় রে কপাল...

সচল জাহিদ এর ছবি

টিপাইমুখ বাঁধ সফরে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক এর কথা শুনে পিন্ডি জলে যাচ্ছেঃ

"টিপাইমুখ বাঁধটি যদি সেচ প্রকল্প হয় তাহলে তা অবশ্যই ক্ষতিকর হবে, এর বিরোধিতা জাতীয়ভাবে করা উচিৎ।কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে আরো সমীক্ষা চালিয়ে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে (প্রথম আলোঃ ৩০ জুলাই)"

এরা সেই পথেই হাঁটছে যে পথে ভারত হাঁটাতে চাইছে। ভারত সবসময় বলছে তারা সেচ প্রকল্প করবেনা এবং সেটা বলে ভারত এই প্রকল্পটির একটি ছাড়পত্র চাইছে।এই একই ভাবে পরীক্ষামুলক ভাবে চালনোর নাম করে ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল। টিপাইমুখ সেচ প্রকল্পই হোক বা বিদ্যুৎ প্রকল্প হোক তা বাংলাদেশের জন্য শুভ কিছু বয়ে আনবেনা। বাংলাদেশ কেন ভারতের EIA রিপোর্টের কথা তুলছেনা এবং বলছেনা যে কেন তারা তাদের স্টাডিতে বাংলাদেশে কথা বিবেচনা করে নাই??

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দূর্দান্ত... ফেসবুকে তুলে দিলাম... এইটার প্রচার জরুরী...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ নজু ভাই।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চমৎকার স্যার । খুবই ভালো। সিরিজ়টা একবার পুরোটা একসাথে পড়েছি। তাই অস্পষ্টতা অনেক কেটেছে।
পরের পর্বগুলোর আশায় রইলাম...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

সচল জাহিদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সুহান।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ভিন্ন চিন্তা এর ছবি

টিপাইমুখ জল বিদ্যুৎ প্রকল্প এক মহা পরিকল্পনার ক্ষুদ্রাংশ।যে মহা পরিকল্পনার সাথে বর্তমান বিশ্বের বিপর্যথ ব্যাকিং পুজির স্বার্থ জড়িত।

টিপাই মুখ বাঁধের প্রভাব কে যদি সেই সামগ্রিক মহাপরিকল্পনার সাথে একিভুত করে দেখা না হয় , তবে আসন্ন বিপদের সরূপ বুঝা যাবে না।পড়ুন:
Mountains of Concrete:

www.internationalrivers.org/files/IR_Himalayas_rev.pdf

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ, চমৎকার লিঙ্ক। ভালমত পরে পড়ব, এখন চোখ বুলিয়ে নিলাম।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

স্বাধীন এর ছবি

আচ্ছা ইন্ডিয়ার কাছে জলবিদ্যুত ছাড়া আর কি কি বিকল্প আছে বিদ্যুতের জন্য। লেখায় সেটা নিয়ে কিছু আলোচনা হতে পারে। ইন্ডিয়াতো আমেরিকার সাথে নিউক্লিয়ার এনার্জি নিয়ে চুক্তি করেছে দেখলাম। দিগন্ত এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন মনে হয়।

বিদ্যুতের সমস্যা যদি তার অন্যখাত হতে মেটাতে পারে তবে শুধু বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধের প্রয়োজন হবে না। তবে তাদের চিন্তা যদি সেঁচ প্রকল্প হয় তবে ভিন্ন কথা। আমার মনে হয় তাঁদের সেঁচের চিন্তা আছেই এবং থাকবে। আমাদের আপাতত বলছে তাঁরা সেঁচ প্রকল্প করবে না, কিন্তু সেটা তাঁরা করবে।

সচল জাহিদ এর ছবি

এটা নিয়ে আমি দিগন্ত ভালই আলোচনা করেছি এই লেখার দ্বিতীয় পর্বে সম্ভবত।দিগন্তের মতে এটি মূলতঃ বন্যা নিয়ন্ত্রন এবং বাড়তি হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদন। আসলে FAP 6 এর রিপোর্টে এটিকে Tipaimukh Hydroelectric Dam/Kachar Irrigation Project হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি আপনার সাথে একমত ভারত এখন যাই বলুকনা কেন তারা সেচ প্রকল্প করেই ছাড়বে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

বাঁধের নিজস্ব ক্ষতিগুলো ছাড়া সেচ প্রকল্প হওয়াতে আলাদা কি কি ক্ষতি হতে পারে? এই সেচ প্রকল্পে আপনার দেওয়া উপাত্ত অনুসারে ৫০ কিউমেক জল লাগার কথা। তা শুখা মরসুমে বাড়তি জলের থেকে অনেক বেশী।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

দিগন্ত কিছু বিষয় কিন্তু পরিষ্কার আমি আগেই করেছি আবারো করছিঃ

১) এই হিসাব বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজের জন্য প্রযোজ্য। আমি আগের লেখাতেই বলছি এই পানির পরিমান কি কি জিনিসের উপর নির্ভর করে।

২) আজকে ভারত বলছে এক লক্ষ্য বিশ হেক্টর পাঁচ বছর পর সেটা যে বাড়িয়ে করেক গুণ করবেনা তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

৩) প্রকৌশলীরা সবসময় 'Worst Case Scenario" নিয়ে কাজ করে। সেই ক্ষেত্রে অতিশুষ্ক মৌসুমের যে প্রভাব আমি এই পর্বে লিখেছি এর সাথে ব্যারেজের পানি অপসারন যদি সুক্ত হয় তার পরিনাম কি হবে ?

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

১) কোনোটাই খুব একটা আলাদা নয় তিস্তা ব্যারেজের থেকে, বরাক উপত্যকায় কম জল লাগার কথা বরং কারণ আর্দ্রতা বেশী।
২) করতে পারবেনা। কারণ বরাক উপত্যকায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২,২০,০০০ হেক্টর। এর মধ্যে অনেকটা আছে সমতলের ওপরে মানে জল সেখানে নিতে হলে পাম্প করে তুলতে হবে। যদি পাম্প করেও নেওয়া যায় তাহলেও বেড়ে ৯০ কিউমেক জল হল। জল যদি এই ২,২০,০০০ হেক্টর জমির থেকে বাইরে নিতে হয় তাহলে আবার ৭০০মিটার উঁচু পাহাড় পেরোতে হবে।
৩) অবশ্যই এটার রিস্ক থাকবে ... এটার জন্য আলাদা সহযোগিতা দরকার হবে।

জলের একটা শেয়ার নিশ্চয় ভারতেরও প্রাপ্য হাসি equitable sharing অনুসারে। তবে সেটা আপনার সমর্থন করার কারণ নেই, কারণ গরমকালে ভাটির কাছে সবসময় উজান থেকে যত বেশী জল আসে তত ভাল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অমিত এর ছবি

"জলের একটা শেয়ার নিশ্চয় ভারতেরও প্রাপ্য equitable sharing অনুসারে। তবে সেটা আপনার সমর্থন করার কারণ নেই, কারণ গরমকালে ভাটির কাছে সবসময় উজান থেকে যত বেশী জল আসে তত ভাল।"

সমর্থন না করার একমাত্র কারণ আসলে গরমকালে ভাটি বা উজানের পানির পার্থক্য না। হাস্যমুখে যেভাবে equitable sharing এর জোকটা করলেন, ঐটাও।

দিগন্ত এর ছবি

আমি কিন্তু জোক করিনি। এ নিয়ে আমি আগেও লিখেছি। তবে আপনি আঘাত পেয়ে থাকলে আমি সত্যিই দুঃখিত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম নিউক্লিয়ার বর্জ্য নিতে অস্বীকার করায় এই অঞ্চলে কোনো পরমাণু-বিদ্যুত কেন্দ্র হবে না। নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টের ক্ষতি কিন্তু কম কিছু নয় - প্ল্যান্টে এক ঘন্টার একটা ভুল বাঁধের পঞ্চাশ বছরের ক্ষতির সমতুল্য।

তবে বিদ্যুতের অনেক বিকল্প আছে - ভবিষ্যতেও হতে পারে (উত্তর-পূর্ব ভারত/নেপাল বা ভুটানে সৌর বা বায়ুশক্তির সম্ভাবনা কম যদিও)। বন্যা তার থেকে বড় সমস্যা। এর একটা দিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতির ক্রমবর্ধমান হিসাব, অন্য সমস্যা বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে গেলেই পরিবেশের ক্ষতির সম্ভাবনা।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লেখা। দৈনিক পেপারে ছাপালে ভাল হবে। বাকিটুকু পড়ার আশায় রইলাম।

কানা বাবা

দিগন্ত এর ছবি

নদীতে বাঁধ দিলে বাঁধের পেছনে সব সেডিমেন্ট আটকা পড়ে যায় বলে নদীর বাহিত পলি কমে যায়। কিন্তু বাহিত পলি ছাড়া নদী অনেক বেশী ক্ষয়কারী হয়ে ওঠে। নতুন ক্ষয়কারী পলির পরিমাণ সাধারণত আগে আটকা পড়ে যাওয়া পলির তুলনায় কম হয় কারণ নদী কিছুটা ক্ষয় করে পলি সংগ্রহ করলে আবার তার ক্ষয়কারী ক্ষমতাও হ্রাস পেতে থাকে। দুয়ের সম্মিলিত প্রভাবে নদীর মোট পলির পরিমাণ কমে।

এর উদাহরণ দেখা যায় ইয়াংসী নদীতে।
auto

প্রথম ছবির ধাপগুলো দেখুন - কিভাবে পলি আসা কমে গেছে। লেখার ব্যাখ্যা অনুসারে -
১) ১৯৫০-১৯৮৬ - ক্রমাগত পলি বেড়েছে।
২) ১৯৮৭ - পলি কমা শুরু করে কারণ একটি উপনদী জিয়ালিং-এ অনেক বাঁধ তৈরী হতে থাকে। একই সময়ে উজানের প্রথম স্টেশনেও পলি আসার হার কমতে থাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ প্রকল্পের কারণে। ১৯৯৭ সালের পরে এই হার আরও কমতে থাকে কারণ উজানে অনেক গাছ লাগানো শুরু হয়।
৩) ২০০১ সালে উজানে আরো বাঁধ ও বনসৃজন প্রকল্পের কারণে আরো পলি আসা কমতে থাকে। একই সময়ে ডংটিং লেকে পলি জমার কারণে ভাটিতেও পলি কমতে থাকে। শাশি ও হাঙ্কৌ এর মধ্যের স্লোপ বেশী থেকে কম হয়ে যায়। (আপনার বন্ধুর লেকে পলি জমার বক্তব্য সঠিক এখানে - TGD র আগে পর্যন্ত)
৪) ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে ইচিং স্টেশনে (বাঁধের ঠিক পরেই) অনেকখানি পলি আসা কমে যায় TGD -এর কারণে। লক্ষ্যণীয়, ভাটিতে অনেকটা দূরে কিন্তু পলি আসার হার অতটা কমে নি। এর কারণ Hungry water ক্ষয় বাড়িয়ে অনেকটাই পলি বেশী সঞ্চয় করেছে। (ইচিং আর শাশির মধ্যে এ কারণে স্লোপ বেড়ে গেছে, লেকেও ক্ষয় বেড়ে গেছে তাই শাশি ও হাঙ্কৌ এর মধ্যের স্লোপ আবার বেড়ে যায় - TGD এর পরে লেকেও সেডিমেন্ট কমে গেছে)। কিন্তু সবের সম্মিলিত প্রভাবে বছর বছর পলি আসা ব-দ্বীপ অঞ্চলে কমেই গেছে।

ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় পলির হার কমে যায় উজানে বনসৃজন করে ও বাঁধের কারণে। এই ব্যাপারটা অবশ্যই আলাদা হতে পারে স্থানভেদে - মাটির প্রকৃতি ও টোপোগ্রাফির ওপর নির্ভর করে কিন্তু মূল বিষয় মোটের ওপর পৃথিবীর সব নদীতেই একই রকম (উদাহরণ ইন্টারনেটে পাচ্ছি অনেক, উইকিতেও আছে)। আলাদা হলে তাও সিমুলেশন স্টাডি করে বের করা সম্ভব।

auto

উপনদীর প্রভাব এক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকছে। ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা আগের মতই পলি আনছে - আমার দাবী অনুসারে মেঘনা আগের থেকে কম পলি আনবে। ব-দ্বীপে কোনোকিছুই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। তবে মেঘনা বা তার আগে সুরমা-কুশিয়ারায় ভূমিক্ষয় অনেকটা বাড়তে পারে। ভূমিক্ষয় আরো কমানো সম্ভব দুই পাড়ে গাছ লাগিয়ে।

এবারে আপনি বলুন কোথায় কিভাবে সেডিমেন্ট বাড়ার কথা? আমি যা বুঝেছি আপনার মতে বরাকের বাঁধে আটক পলির কারণে যে ক্ষয় হবে তাতে আগের থেকে বেশী পলি আসার কথা বলেছেন। এখানে সেরকম ঘটছে না। ক্ষয় বাড়ছে বটে কিন্তু ক্ষয়ের পরেও পলি আগের থেকে কমই থাকছে (ক্ষয়ের পরে পলি যদি আগের মত হয়ে যায় তাহলে ক্ষয় তো আবার আগের লেভেলে চলে যাবে ... পলি বেশী হচ্ছে কি ভাবে?)। দ্বিতীয়ত বনসৃজন করেও পলির পরিমাণ কমানো হয়েছে। এতে নদীর তলদেশে ক্ষয় বাড়লেও মোটের ওপর প্রভাব ঋণাত্বক।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

ক্ষয়ের পরে পলি যদি আগের মত হয়ে যায় তাহলে ক্ষয় তো আবার আগের লেভেলে চলে যাবে ... পলি বেশী হচ্ছে কি ভাবে?

এখানে লক্ষ্যনীয় হচ্ছে যেখানে ক্ষয় হচ্ছে যেখানেত আর পলি সঞ্চয় হচ্ছেনা। সুতরাং আগের লেভেলে যাচ্ছে কিভাবে ??

এখানে যে বিষয়টি গুরুত্ব্বপুর্ণ তা হলো বাঁধের কারনে নদীতে প্রবাহ কমে যাওয়ায় পলি যাই আসুকনা কেন তা নদীর বুকে সঞ্চিত হবার হার বাড়তে পারে কারন নদীর গতিবেগ কমে যাবে। আপনি যে গ্রাফটি দেখিয়েছেন তা হলো পলি বহনের হার, যা কিনা বেড লোড আর সাসপেন্ডেট লোডের সমষ্টি। নদীর বেড লেভেলের কোন পরিবর্তন হচ্ছে কিনা সেটাত দেখা যাচ্ছেনা। ধরুন পলি আসছে আগের থেকে কম কিন্তু সঞ্চয়ের হার যদি আগের থেকে বেশী হয় সেক্ষেত্রে নদীর বেড লেভেল বেড়ে যেতে পারে যা কিনা নদীর নাব্যতা কমিয়ে দিতে পারে বা নদীর শাখা নদীগুলোর মুখ বন্ধ করে দিতে পারে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

আপনি একটা উদাহরণ দিন না, তাহলে বোঝা সহজ হয়। বাঁধের পরে ভাটিতে নদীর নাব্যতা কমে গেছে - এর উদাহরণ।

আপনি লিঙ্কে গিয়ে দেখতে পারেন ইয়াংসী নদীতে বাঁধ পরবর্তী গভীরতা বাড়ার চার্টও দেওয়া আছে। আপনি এখানে ৯ নম্বর ছবিতে দেখতে পারেন। বাঁধের পরে ভাটিতে Net Erosion হচ্ছে, আগে net deposition হত - সুতরাং পলি কিভাবে জমছে বুঝলাম না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

স্বাধীন এর ছবি

দিগন্ত আপনি যদি বুঝার চেষ্টা করতেন তবে উদাহরণের প্রয়োজন পরে না। মন্তব্যটিতে কষ্ট পেলে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন জাহিদ ঠিক আগের মন্তব্যেই বলেছে কেন সুরমা-কুশিয়ারায় পলি সঞ্চয় বাড়বে। মন্তব্যটি খেয়াল করুন-

এখানে লক্ষ্যনীয় হচ্ছে যেখানে ক্ষয় হচ্ছে সেখানেত আর পলি সঞ্চয় হচ্ছেনা।

এই একটি বাক্যেই আপনার জবাব আছে। কিন্তু তারপরেও আপনি না বুঝে আপনার উদাহরণ দেখাচ্ছেন। তো আমি আরেকটু ব্যাখ্যা করি, তাতে যদি আপনি বুঝতে সক্ষম হোন। প্রথমেই স্বীকার করেছে জাহিদ এবং আমিও স্বীকার করে নেই আমরা যা বলেছি তা হল কন্সেপশনের উপর নির্ভর করে। আসলে ঠিক কোথায় কোথায় ক্ষয় হবে আর কোথায় কোথায় পলি জমবে তা এক্সাক্টলি জানা সম্ভব মর্ফোলজিকাল মডেল স্টাডি করে। কিন্তু আমরা নিজেরাই যেহেতু সেই সব মডেল বানাই তাই স্টাডি না করেও আমাদের একটি ধারণা থাকে কি ধরণের ফলাফল আমরা পেতে পারি। সেই ধারণাটুকু না থাকলেতো মডেল যাই দিবে অন্ধের মত তাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। আপনি যে উদাহরণ দিচ্ছেন তা অন্য নদীর ক্ষেত্রে একই হবে এ ধরণের চিন্তাই সর্ব প্রথম ভুল। প্রতিটি নদীর আচরণ ভিন্ন। না হলেতো এক এনালাইসিস দিয়েই সব নদীতে স্ট্রাকচার বসানো যেত।

আপনার উদাহরণে যে যুক্তি দিয়েছেন তা ঠিক আছে। বাঁধ যেহেতু পলি আটকে দিবে তাই ভাটিতে পলির পরিমান কমতে পারে। কিন্তু কথা হচ্ছে বাধের পরে যে নদীর কয়েকশত কিলোমিটার রয়েছে তার কি হবে। খেয়াল করে দেখবেন, আগে যখন বাঁধ ছিল না তখন নদীর পুরো অংশেই ক্ষয় এবং সঞ্চয় হতো। যখন বাঁধ ছিল না তখন প্রতি বর্ষা মৌসুমে নদীর সর্বত্র ক্ষয় হতো আবার বন্যার পানি সরে যাবার সময় পলি জমা হত। এভাবেই চলতো ধারবাহিক ভাবে। কিন্তু এখন চিত্রটি ভিন্ন। এখন বাঁধের পরবর্তী ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার (সংখ্যাটি আনুমানিক, এক্সাক্ট সংখ্যা মডেল থেকে জানা যাবে। মডেলের কাজ শুধু এক্সাক্ট সংখ্যাগুলো দেওয়া, কিন্তু কন্সেপশন একই থাকবে) শুধু ক্ষয় হবে কারন বাঁধ সব পলি আটকে দিয়েছে। আগে যেখানে এই অংশেও পলি জমা এবং ক্ষয় হতো। আপনার কথাই ঠিক এখানে net erosion হবে। তাহলে এই যে ক্ষয় হবে সেটাতো কোথাও জমবে। সেটা জমবে net erosion এর পরের এলাকায় যেখানে net deposition হবে। এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং সেটি স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশের মাঝেই পড়ছে। এখানে পলির পরিমাণ আগের চেয়ে কম হলেও চিত্রটি এরকমই হতে বাধ্য। ঠিক বাঁধের পর net erosion হবে এবং তাঁর পর net deposition হবে। আশা করি বুঝাতে পেরেছি। এখন আপনি যদি এটার সিমুলিউশন করেন, আমি যা বলেছি ঠিক তাই পাবেন।

দিগন্ত এর ছবি

তাহলে এই যে ক্ষয় হবে সেটাতো কোথাও জমবে। সেটা জমবে net erosion এর পরের এলাকায় যেখানে net deposition হবে।

দেখুন আমার আইডিয়াগুলো বাংলাদেশের পত্রিকা ও লেখকদের লেখা থেকেই পাওয়া। এই ক'দিন আগেই পড়লাম সেডিমেন্টেশন কমে যাওয়ায় সমস্যা হবে।

এবার বলি -
১) net deposition কোথাও না কোথাও নিশ্চয় হবে কিন্তু আগের থেকে বেশী কি কম সেটাই প্রশ্ন। গোটা বাংলাদেশেই (প্রায় সব নদীতেই) net deposition হয়। আমার বক্তব্য পলি বাঁধে আটকে গেলে কিছু অংশে net deposition এখনও হবে কিন্তু সেই পরিমাণ অনেক কম। এমনকি ইয়াংসির মত সমগ্র অববাহিকাতেই net deposition বন্ধ হয়ে যেতেও পারে।
২) বাংলাদেশের প্রকৃতি যদি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে আলাদ হয় তবে সেটা একমাত্র সিমুলেশন স্টাডি করেই বের করা সম্ভব। সেই ধরণের দিকনির্দেশনা আপনি পাবেন এই সিরিজের তৃতীয় লেখায়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

স্বাধীন এর ছবি

বাংলাদেশের প্রকৃতি অন্য নদীর থেকে ভিন্ন নয়, এবং হবেও না। বাঁধের কারনে পলি আটকে যাবে এবং পলির পরিমাণ কমবে এত কোন সন্দেহ নেই। এখন পলি ক্ষয় হয়ে যে নতুন পলি আসবে তা আগের তুলনায় কম হবে সেটাও ঠিক আছে। আপনি যে লিঙ্ক দিয়েছেন উনি এই পলির পরিমাণ কমার কথাই বলেছেন। এবং আপনিও এই পলির পরিমাণ কমার কথাই বারংবার বলে যাচ্ছেন। কিন্তু নদীর ক্ষয় বা পলি জমার কথা উনি বলেন নি। আর বলবেন কিভাবে? উনি হচ্ছেন একজন অর্থনীতিবিদ।

আমি যেটা বলেছি সেটা হল নদীর কোন পলিই না আসুক, কিন্তু যেটা হবে বাঁধের পরবর্তী অংশে শুধুই ক্ষয় হবে এবং তার পর শুধুই জমবে যতক্ষণ না নদী তার পরবর্তিত অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে পারে। এখন নদীতে যে পলি কম আসছে সেটার এফেক্ট দেখা যাবে আরো পরে, মোহনাতে। সেখানে এখন আগের চেয়ে পলি কম আসবে যেটা হচ্ছে ইয়াংসি ব-দ্বীপ এর ক্ষেত্রে। দু'টো ঘটনা এখানে ভিন্ন। একটিতে পলি কমার কারণে একদম মোহনাতে বা নদীর শেষে কি হচ্ছে। আরেকটি হচ্ছে ঠিক বাঁধের পরের কয়েকশত কিলোমটার এ কি হচ্ছে। এখানে আমি একটি ছবি দিলাম যেন আপনার বুঝতে সুবিধে হয়। বাঁধের কারনে আগে নদীর যে slope(কাল রেখা) ছিল তা পরিবর্তিত হয়ে নতুন slope ধারণ করবে। যেখানে লাল রেখার অংশে ক্ষয় হবে এবং নীল রেখার অংশে পলি জমবে। আশা করি এবার পরিষ্কার করতে পারলাম।

sedimentation

দিগন্ত এর ছবি

সেখানে এখন আগের চেয়ে পলি কম আসবে যেটা হচ্ছে ইয়াংসি ব-দ্বীপ এর ক্ষেত্রে। দু'টো ঘটনা এখানে ভিন্ন। একটিতে পলি কমার কারণে একদম মোহনাতে বা নদীর শেষে কি হচ্ছে। আরেকটি হচ্ছে ঠিক বাঁধের পরের কয়েকশত কিলোমটার এ কি হচ্ছে।

আপনি ইয়াংসী নদী দিয়ে দেওয়া লিঙ্ক দুটো পড়ুন (প্রথমদ্বিতীয়)। শুধু বদ্বীপ নয়, দুটোতেই কয়েকশো কিলোমিটার অন্তর সেডিমেন্টেশন লোড মেপে ও তাদের বিয়োগফল থেকে ডিপোসিশন মাপা হচ্ছে। একটি লিঙ্কে Thalweg গভীরতা মেপে তার প্রভাবও দেওয়া আছে।

আপনার ছবিতে দেখুন - যত নদী বদ্বীপ অঞ্চলে আসবে তত ডিপোসিশন বাড়বে আর বাঁধের ঠিক পরে ডিপোসিশন কমবে। কিন্তু ইয়াংসী (বা নীল, সেনেগাল) নদীর ব-দ্বীপের আয়তনই কমছে - অর্থাৎ ব-দ্বীপে পলি কম জমছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

এই ক'দিন আগেই পড়লাম সেডিমেন্টেশন কমে যাওয়ায় সমস্যা হবে।

আমিও পড়লাম। আমার ধারণা এটি সাধারন একটি মন্তব্য এবং উনি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞও নন। আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে বাংলাদেশের এই নদীগুলো " এলোভিয়াল রিভার" যার কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে।

গোটা বাংলাদেশেই (প্রায় সব নদীতেই) net deposition হয়। আমার বক্তব্য পলি বাঁধে আটকে গেলে কিছু অংশে net deposition এখনও হবে কিন্তু সেই পরিমাণ অনেক কম।

দিগন্ত আপনি নদীর স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সাথে এর কৃত্রিম প্রক্রিয়া গুলিয়ে ফেলছেন। স্বাভাবিক ভাবে নদী উজান থেকে যে পরিমান পলি নিয়ে আসে তা মোহনার দিকে নাব্যতা কমে যায় বলে গতবেগ কমে যায় ফলে পলি নদীর বুকে সঞ্চিত হয়। যমুনা ( ব্রহ্মপুত্র) " ব্রেইডেড রিভার" ( যে নদীর মধ্যে শুষ্ক কালে অসংখ্য ছোট ছোট চ্যানেল থাকে) বলে এর পলি সঞ্চয়ের হারও বেশী। উজান থেকে আসা নদীগুলো মোহনার কাছাকাছি এলে নদীর নাব্যতা ( Slope) কমে যায় ফলে বেগ কমে যায় এবং পলির অভিকর্ষ বলের প্রভাব তার গতিবেগকে অতিক্রম করে এবং পলি নিচে পড়ে যায়। বর্ষা কালে যেহেতু পানির প্রবাহ বেশী থাকে ফলে গতিবেগ বাড়ে এবং এই সঞ্চিত পলির কিছু অংশ আবার সাগরে পতিত হয়। এইটিই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এলোভিয়াল রিভার গুলির।

কৃত্রিম ভাবে যখন নদীর এই সাম্যতা বা " Equilibrium" কে আমরা নষ্ট করি নদী তখন তার নিজেকে পরিবর্তন করে ( গতিপথ বা আকার) এই সাম্যতা আবার নিয়ে আসার চেষ্টা করে। আগে বরাক নদীতে স্বাভাবিক ভাবে যে পরিমান পলি আসত বাঁধের কারনে তা আটকে পড়ায় নদীত সাম্যতা নষ্ট হবে তার অভিযোজন হবে বাঁধের ভাটিতে নদীক্ষয়ের মাধ্যমে। এখন যেহেতু এই নদীক্ষয় ভারতীয় অংশে হবে তাই ক্ষয়িত পলির পুরোটাই প্রবাহিত হবে হবে বাংলাদেশে।যেহেতু বাঁধের কারনে নদীর প্রবাহ বর্ষা কালে কমে যাবে অনেক তাই এর গতিবেগ কমে যাবে ফলে এই বিপুল পরিমান পলি বহন করার ক্ষমতা এই নদীর থাকবেনা ফলে তা সঞ্চিত হবে। আগে বর্ষা কালে মূলত নদী ক্ষয় হতো আর বর্ষার শেষের দিকে তা সঞ্চিত হত আর এখন বর্ষা কালেও সঞ্চিত হবে। বিশেষ করে বাঁধের কারনে যতদিন নদীর এই সাম্যতা ফিরে না আসবে ততদিন এই প্রক্রিয়া থাকবে।

তার চেয়েও বিশেষ দিক এই বরাক নদী বাংলাদেশে এসেই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে সুতরাং এই কনফ্লুয়েন্সে সবচেয়ে সমস্যা আমি আশা করছি। অনেক ক্ষেত্রেই যা হয় তা হলো পলিগুলো এসে কনফ্লুয়েন্সে জমা হলে যে শাখানদীর প্রবাহ তুলিনামূলক ভাবে কম তার প্রবাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একটা জিনিস পরিষ্কার হওয়া ভাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখানে কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে অমলসিদ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত। যা পরিবর্তন তা এই অংশেই বেশী হবে।


বাংলাদেশের প্রকৃতি যদি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে আলাদা হয় তবে সেটা একমাত্র সিমুলেশন স্টাডি করেই বের করা সম্ভব।

দিগন্ত ভাল মানের গানিতিক মরফোলজিকাল মডেলও কিন্তু সঠিক ভাবে সেডিমেন্ট ডিপোজিশন বা ইরোশন দিতে পারেনা। এখনো বানিজ্যিক মরফোলজিকাল মডেলগুলি পুরো ভৌতিক প্রক্রিয়াকে নিয়ে আসতে পারেনা যা করে তা হলো কিছু "ইম্পিরিকাল" সমীকরণ থেকে পলির পরিবর্তন বের করে এবং এই সমীকরনগুলো নদী থেকে নদীতে পরিবর্তিত হয়। এই ইম্পিরিকাল সমীকরনগুলো তৈরী করা হয় ল্যাবরেটরী পরীক্ষা থেকে যা প্রাকৃতিক নদীতে প্রয়োগ করে ক্যালিব্রেট করা হয়। তাই মডেল স্টাডির সাথে বাস্তবিক কিছু জ্ঞান, ধারনাও বাঞ্ছনীয়। গানিতিক মডেল আমাদের লাল নীল রঙের চিত্র দেয় কিন্তু কিভাবে সেটি হিসেব করছে সেটি বুঝাটাও এখানে গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

এখন যেহেতু এই নদীক্ষয় ভারতীয় অংশে হবে তাই ক্ষয়িত পলির পুরোটাই প্রবাহিত হবে হবে বাংলাদেশে

আপনার প্রায় সব যুক্তিগুলোই ইয়াংসী সহ পৃথিবীর সব বড় নদীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তাও আমি পলি জমার হার বেড়ে যাওয়ার উদাহরণ পাচ্ছি না।

বাংলাদেশে।যেহেতু বাঁধের কারনে নদীর প্রবাহ বর্ষা কালে কমে যাবে অনেক তাই এর গতিবেগ কমে যাবে ফলে এই বিপুল পরিমান পলি বহন করার ক্ষমতা এই নদীর থাকবেনা ফলে তা সঞ্চিত হবে।

প্রবাহ ও গতিবেগ ক্ষয়ের সাথেও সম্পর্কযুক্ত।

আমার ধারণা এটি সাধারন একটি মন্তব্য এবং উনি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞও নন।

বেশ আপনি এই লিঙ্ক দেখতে পারেন। এটি আপনিও দিয়েছেন আপনার লেখায়।

আমার মনে হয় আমি আর আপনি একই কথা বলে চলেছি শেষ কিছুক্ষণ ধরে, হয়ত আমার এ বিষয়ে ধারণা কম তাই বুঝছি না - অথবা অনেক পরষ্পরবিরোধি মতামত পড়ে গুলিয়ে গেছে। এই আলোচনা এখানেই শেষ থাক।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অমিত এর ছবি

পরিবেশগত মিলের কথা চিন্তা করলে কি চিনের ইয়াংসি নদীর উদাহরণের থেকে ফারাক্কা বাধের উদাহরণ আমাদের দেশের জন্য যথাযথ হবে ?

দিগন্ত এর ছবি

না, কারণ ফারাক্কা ব্যারেজ শুখা মরসুমে জল কমিয়ে দেয়, আর ইয়াংসী বা টিপাইমুখ বর্ষায় জল কমিয়ে দেয়। আপনি এই লেখাটা পড়তে পারেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

ভারতের বিশেষজ্ঞেরা বুঝেছেন যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যথেষ্ট প্রস্তুত নয়। তাই সহজ কিছু ধারনার ক্ষেত্রেও তারা দাবি করছেন এর জন্য যথেষ্ট গবেষনা থাকতে হবে। মনে হচ্ছে টেকনিকাল বিষয়গুলো দেখিয়ে শেষপর্যন্ত তারা রাজনৈতিকভাবে বিষয়টিকে নিজেদের ইচ্ছামত ডিরেকশনে নেবার চেষ্টা করবে।
ভাবটা এমন "আমরা বলছি এই প্রজেক্টে তোমাদের ভাল হবে। তোমরা যদি বল ক্ষতি হবে প্রমান কর।" যদি প্রমান করার চেষ্টা করা হয় তাহলে দেখা যাবে সেই প্রমান হয়ত তারা মানছেন না। আজকের পত্রিকা দেখে অন্তত সেটাই মনে হচ্ছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।